"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২৫ - করণ বলে, বাবুজী, আপনি তো আমায় সিনেমায় এ্যাক্টিং করার মতো করতে বলছেন। আমি কী পারবো? বলি, চেষ্টা করে দ্যাখোই না। তবে চাপ নিয়ো না, এসব আমার নিছক খেয়াল। ওদের নিস্তরঙ্গ জীবনে বেড়াতে আসা এক প্রবীণ বাঙ্গালী আঙ্কলের খেয়াল দেখে করণও মজা পায়। স্পোর্টিংলি বলে, চলুন তাহলে দেখি, আপনি যা বলছেন, পারি কিনা ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২৪ - অনেকের ধারণা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ১৪ বা ২০ বছর। তা কিন্তু নয়, সরকার চাইলে কাউকে আমৃত্যু কারাগারে বন্দী রাখতে পারে। তবে নতুন, হার্ডকোর অপরাধীদের জন্য কারাগারে স্থান সংকুলানের জন্য জেলারের সুপারিশে সাত দশ বছর জেল খাটা কিছু শান্ত, ভদ্র, নিরীহ দণ্ডিতদের মুক্ত বন্দীশালায় এনে রাখা হয়। তাতে বন্দী পিছু সরকারের খরচও হয় অনেক কম ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২৩ - এই লেখায় চরিত্রগুলির নাম উল্লেখ না করতে আমি রঘুবীর মীনাজীর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই জায়গাটিরও আসল নামের বদলে করলুম - সূরজনগর - After all what's in a name? ... ...
এরপর আমরা চললাম আরেকটি গন্তব্যে, মাঝসমুদ্রে ব্যানানা বোটে চড়তে। এই বোট বা নৌকোটি রাবারের তৈরী আর হাওয়া ভরে ফোলানো। দেখতে ঠিক পাকা কলার মতো-ই আর রং-ও হলুদ। উপরে ছয় জন করে বসতে পারে, একটি করে আঙটা লাগানো আছে ধরে থাকার জন্যে। এর সামনে একটি মোটরচালিত বোটে এই ব্যানানা বোট বেঁধে দেওয়া হয় আর দুরন্ত গতিতে মোটরবোট চলতে শুরু করলে এই ব্যানানা বোট-ও কোনোমতে টাল সামলে পাল্লা দিয়ে জল কেটে দৌড়োয়। জলের ফোয়ারা, দুরন্ত গতির সাথে শরীরের ভারসাম্য রাখা আর অসীম সমুদ্রের বুকে ছুটে চলা, একেবারে রোমহর্ষক ব্যাপার বটে। সবাই মিলে খুব উপভোগ করলাম এই রাইড। ... ...
লাক্সর মন্দির থেকে কার্নাকের মন্দির পর্যন্ত ছিল একটি সুপ্রাচীন রাস্তা, যার নাম ‘Alley of Sphinxes’ বা ‘Avenue of Sphinxes’। এই রাস্তাটি ছিল প্রায় দু-কিলোমিটার দীর্ঘ। আমরা বাস থেকেই দেখলাম সেই রাস্তা আর তার দুপাশে স্ফিংক্স-এর সারি, যদিও অধিকাংশ-ই ভাঙা। বাসের একদিকে রয়েছে লাক্সর মন্দির, অন্যদিকে কার্নাক। আর আমাদের বাস এই অ্যাভিনিউ-এর উপর দিয়ে একটি সেতু পার হয়ে এগিয়ে চলল। এই স্ফিঙ্কস-গুলির কিছু তৈরী হয়েছিল ফারাও তুতানখামুনের আমলে, কিছু তৃতীয় আমেনহোটেপের আমলে আর বাকিটুকু ফারাও প্রথম নেকতানেবো-র সময়ে। প্রায় মিনিট পনেরো পরে আমরা এসে দাঁড়ালাম কার্নাক মন্দিরের পার্কিং-এ। ... ...
“কবর দাও বা চিতায় পোড়াও, মরলে সবাই মাটি” না, প্রাচীন মিশরের মানুষ অবশ্যই এভাবে ভাবতেন না, বরং জীবনানন্দের কথা ধার করে বলা যায় “মানুষের মৃত্যু হ’লে তবুও মানব থেকে যায়”; আর মৃত্যুর পরের মানবটির জন্যে গড়ে ওঠে একের পর এক স্থাপত্য, ভাস্কর্য, শিল্পকলা! মরলে মানুষ কোথায় যায়, মৃতেরা এ-পৃথিবীতে না ফিরলেও প্রাচীন মিশরে আনুবিস আর ওসাইরিসের পরীক্ষায় পাশ করলে আর এক সুখের দুনিয়ায় (‘দুয়াত’) পৌঁছে যাওয়া যেত। যেখানে যমদূত-দের চাবুক খেতে না হলেও দেবতাদের তুষ্ট করার জন্যে চাষবাস ইত্যাদি করতে হতো আর মৃত্যুর পরেও জীবিতাবস্থার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যেত। আত্মা নাকি অবিনশ্বর, তায় যদি পাওয়া যায় তিন তিনখানা আত্মা, তাহলে আর দেখে কে! প্রাচীন মিশরের মানুষ বিশ্বাস করতেন জীবিতাবস্থায় মানুষের একটি আত্মা থাকে, তা হল ‘কা’, এই কা শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর মৃত্যুর পর আরও দুই আত্মা এসে হাজির হয়, একজন হল ‘আখ’, আরেকজন ‘বা’। ‘বা’ পাখির রূপ ধরে সমাধি থেকে বেরিয়ে দিনের বেলায় বাইরের পৃথিবীতে ঘুরতে পারে (এরপর মিশরের আকাশে পাখি দেখলে কি মনে পড়বে ভাবুন একবার); আর আখ হল সেই আত্মা যাকে পরীক্ষায় বসতে হয় ওসাইরিস, আনুবিস, মাত প্রমুখ দেবদেবীর সামনে। এই যে পিরামিডে বা পরবর্তীতে ফারাও বা রাণীদের সমাধিতে মমির সঙ্গে কেটে রাখা প্রত্যঙ্গ, ধনদৌলত, ব্যবহৃত জিনিসপত্র এসব দেওয়া হত, তা ঐ কা-এর সুবিধার্থে। মমিফিকেশনের কথা তো আগেই দ্বিতীয় পর্বে বলেছি, এবার বুক অব দ্য ডেড-এর কথা, কারণ আজ আমরা যাব ভ্যালি অব দ্য কিংস-এ। ... ...
এখন তো বছরের সেই সময়টা শুরু হয়ে গেছে জাপানে যখন লক্ষ লক্ষ বিদেশী পর্যটক সেই দেশে পাড়ি জমায়। জাপান বছরের মার্চ-এপ্রিল-মে এই তিন মাসের মধ্যে খুব সময়ের জন্য সেজে ওঠে চেরী ফুলের সম্ভারে, যাকে ওরা বলে ‘সাকুরা’। সেই সাকুরা দেখতেই পর্যটকদের আগমন। আজ তো নতুন বছরের প্রথম দিন, ভাবলাম সেই চেরী ফুলের গল্প ভাগ করে নেওয়া যাক। ... ...
অষ্টম পর্ব: বুডাপেস্ট ... ...
আফ্রিকায় নেকড়ে না থাকলেও নীলনদে কুমীরের কোনো অভাব ছিল না। এবং সেসব নাকি ছিল বেশ হিংস্র, বিশেষতঃ এই কোম ওম্বো-র আশেপাশে তাদের প্রচুর সংখ্যায় মিলত। মিশরের মানুষজন নীলনদ পারাপার করতেও ভয় পেতেন রীতিমতো। সেই ভয় আর বিপদ কাটাতে সুতরাং আবির্ভাব হলো দেবতা সোবেক-এর। সোবেক এর দেহ মানুষের হলেও মুখমন্ডল কুমীরের। হোরাসের মুখ যেমন বাজপাখির। সোবেক-এর সঙ্গে হাথোর কেন এক মন্দিরে যুগ্মভাবে পূজিত, সে রহস্য এখনও অধরা! ভক্তরা যেভাবে তাদের ভগবান-কে পেতে চায়; নইলে এই সোবেক ছিলেন হোরাসের কাকা সেথ-এর অনুসারী। অতএব হোরাসের পরম শত্রু। বলা হয়, সেথ যখন হোরাসের কাছে পরাজিত হলেন, তার সঙ্গীসাথীরা কুমীরের রূপ ধরে নীলনদ বেয়ে পলায়ন করেন, সোবেক তাই এই কুমীর-এর প্রতীক এবং দেবতা। আর সোবেক-এর পুজো করলে কুমীরের হাত থেকে মুক্তি। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২২. পরদিন সকালে শৈলেশকে পয়সাকড়ি মিটিয়ে দিয়ে বলি, ইচ্ছে তো করছে এখানেই থেকে যাই আরো দিন দুয়েক। এমন নির্জনতা বহুদিন পাইনি কোথাও। কিন্তু আরো কিছু জায়গা দেখার বাসনা নিয়ে বেরিয়েছি বাড়ি থেকে, তাই আজ এগারোটা নাগাদ বেরিয়ে পড়বো। শৈলেশ বলে, তিনদিন থাকলেন এখানে, একদিনও খেলেন না আমাদের কাছে। আমার বৌয়ের মাথার গণ্ডগোল হলেও রান্নাটা কিন্তু খারাপ করে না। আপনি বুজুর্গ ব্রাহ্মণ, একটু অতিথি সেবার সুযোগ অন্ততঃ দিন। এতে গৃহস্থের মঙ্গল হয়। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২১. বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে। আহা রে - মরে গেছে নাকি! তার শুয়ে থাকার ভঙ্গি - পিছনে ঘুরঘুর করা কুকুর দেখে আচমকা মনে পড়ে যায় সুদানের দুর্ভিক্ষের ওপর তোলা, দক্ষিণ আফ্রিকার ফটো-জার্নালিস্ট কেভিনের ছবিটির কথা - The Struggling Girl. ছবিটি ১৯৯৪ সালের মার্চে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিল। কেভিনের জন্ম আমার দশদিন আগে কিন্তু আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে সে স্বেচ্ছায় চলে গেছে এই ধরাধাম ছেড়ে। পুরস্কৃত হওয়ার চারমাস পরেই সে আত্মহত্যা করে। ব্যক্তিগত দারিদ্র্যর সাথে সুদানের মর্মান্তিক দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ্য করার মর্মপীড়া হয়তো তাকে ঠেলে দিয়েছিল জীবনের কিনারায়। ছবিটি দেখলে আমার একটাই ক্যাপশন মাথায় আসে - The waiting vulture. তবে কেভিনের ছবিটির মতো ধৈর্য্যসহকারে অপেক্ষারত মরা মাসখেকো হুডেড ভালচার নয় - সমাজে চতুর্দিকে ছড়িয়ে আছে নানা পোষাক পরা শকুন, তাদের তীক্ষ্ম নির্মম ঠোঁটে বহুকিছু ছিঁড়ে খেতে - জীবিকা - জীবন - সম্মান। তাদের কেউ কেউ দৃশ্য - অনেকেই অদৃশ্য ... ...
আবু সিম্বেল মন্দির লেক নাসের-এর পশ্চিম তীরে আর নীলনদের দ্বিতীয় ক্যাটারাক্ট বা খরস্রোতের কাছে (প্রথমটি ছিল আসোয়ানে)। প্রথম মন্দিরটি অর্থাৎ ফারাও দ্বিতীয় রামেসিসের মন্দিরটি দেবতা আমুন, পিতাহ এবং রা-হোরাখতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত। দ্বিতীয় মন্দিরটি অর্থাৎ রানী নেফারতারির মন্দিরটি দেবী হাথোরের উদ্দেশ্যে নিবেদিত। এই দুটি মন্দির-ই আসোয়ান হাই ড্যাম তৈরীর সময় জলস্তরের উচ্চতা বেড়ে ডুবতে বসেছিল। ইউনেসকোর সহায়তায় মন্দির-দুটিকে খন্ড খন্ড করে মাপ অনুযায়ী কেটে এনে প্রায় ২০০ মিটার দূরে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে এনে আবার একইভাবে বসানো হয়, প্রায় চার বছর ধরে এই বিপুল কর্মযজ্ঞ চলেছিল। বলা হয়, বেলজোনি, যিনি এই মন্দির দুটিকে নতুন করে আবার জনসমক্ষে আনেন, তাঁকে আবু সিম্বেল নামে একটি বালক পথ দেখিয়ে এই মন্দিরের চত্বরে পৌঁছে দিয়েছিল, সেই থেকেই এই জায়গার নাম হয় আবু সিম্বেল। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ২০. পরিচিত ভ্রমণের জায়গা হিসেবে - উত্তরে কালিঞ্জর কেল্লা, পূবে পূণ্যতীর্থ মৈহার, দক্ষিণে কাটনী এবং পশ্চিমে খাজুরাহো আর পান্না জাতীয় উদ্যান। এসবের মাঝে রয়েছে, মধ্যপ্রদেশের এক অখ্যাত প্রান্তিক গ্ৰাম কছগাঁও। এরই কাছে রয়েছে একাদশ তীর্থংকর শ্রেয়াংসনাথজীর নামানুসারে জৈনতীর্থ শ্রেয়াংসগিরি। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছেও স্থানটির বিশেষ গুরুত্ব আছে সপ্তম খ্রীস্টাব্দের প্রাচীন চৌমুখনাথ মহাদেব মন্দিরের জন্য - যেটি ASI এর অধীনে থাকলেও আজও নিয়মিত সেখানে পূজার্চনা হয়। সেবার পথে নামার আগে ঘরে বসে গুগল ম্যাপ ঘাঁটাঘাঁটি করছিলুম। আচমকা পেয়ে গেলুম সন্ধান - মায়াবী নির্জন নাচনার। বেঁচে থাক গুগল ম্যাপ। এর দৌলতে খুঁজে পেয়েছি প্রচলিত ট্যূরিস্ট সার্কিটের বাইরে এমন বেশ কিছু অখ্যাত খাজানা যা ভরিয়ে দিয়েছে আমার একাকী ভ্রমণের আনন্দের ডালি - যেমন এই নাচনা ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৯. এ লেখাটি ‘রিয়াবুতু’ নামক ত্রিপুরার একটি ওয়েবজিন প্রকাশ করেছিল ২৪.১.২৪. তবে সেখানে লেখাটি পাঠিয়েছিলাম সংক্ষিপ্ত আকারে। এখানে রইলো বিশদে। বেতয়া নদীর তীরে উত্তরপ্রদেশের ললিতপুর জেলার একটি প্রান্তিক গ্ৰাম দেবগড়। স্থানটি জৈন ও হিন্দু ধর্মের প্রেক্ষিতে পুরাতাত্ত্বিকদের কাছে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ওখানকার পুরাকীর্তিগুলি আছে ASI এর তত্ত্বাবধানে। দেবগড় পাহাড়ে রয়েছে ভগবান মহাবীর বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ২০১৯ এর ৭ ও ৮ই মার্চ পর্যটকবিরল নির্জন সুন্দর সেই স্থানে দুটি রাত ছিলাম। সেখানে কয়েকজন স্থানীয় মানুষের সাথে আলাপচারিতার অভিজ্ঞতা, ধর্মশালার ম্যানেজার ও এক কর্মী পরিবারের সহৃদয়তা এবং সর্বোপরি এক নির্লোভ অটোচালক রামুর আচরণ আমায় অভিভূত করেছিল। তাই পাঁচবছর পরেও স্মৃতিতে তা অমলিন। এ লেখার প্রোটাগনিস্ট - রামু ... ...
গিজা থেকে দাশুর প্রায় ঘন্টাদেড়েকের রাস্তা, পঞ্চাশ কিলোমিটার মতো, দুই-তৃতীয়াংশ যাওয়ার পর যেখান থেকে মেমফিসের রাস্তা আলাদা হয়ে গেছে, শুরু হলো ম্যাজিক। রাস্তার দুপাশের ছবি যেন হঠাৎ কোনো জাদুকাঠির ছোঁয়ায় বদলে গেল! সবুজ শীতের ফসলের ক্ষেত আর খেজুর গাছের সারি। ঘন নীল আকাশের গায়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, অপূর্ব শোভা এই রাস্তার, সঙ্গে ভর-দুপুরে প্রাণ-জুড়নো ঠান্ডা হাওয়া! সায়িদি বললো, সাক্কারা আর দাশুরের খেজুরের বাগান খুব প্রসিদ্ধ। আর এখানকার এক বাগানের খেজুরের স্বাদ আর মিষ্টত্ব অন্য বাগানের থেকে আলাদা! পরে খেয়ে দেখেওছিলাম সত্যি তাই। আমরা সাক্কারার রাস্তা ছাড়িয়ে আগে চলে গেলাম দাশুরের পথে। দূর থেকে স্টেপ পিরামিড দেখতে পেলাম। দাশুরের পিরামিড চত্বর একেবারেই খাঁ খাঁ মরুভূমির মধ্যে, ঢোকার সময় রীতিমতো গাড়ির লাইসেন্স ইত্যাদি দেখেশুনে ঢুকতে দেওয়া হলো, এই এলাকাটি মিশরীয় সেনার আওতায় ... ...
লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো-এর জন্যে আমরা ঢুকলাম গিজা কমপ্লেক্সের পিছন দিকে। এখান থেকে প্যানোরামিক একটি ভিউ পাওয়া যায় পুরো অঞ্চলটির। খোলা শান-বাঁধানো চত্বরে প্রায় হাজার খানেক বসার চেয়ার। এর একেবারে সামনেই রয়েছে ফারাও খাফ্রের পিরামিড, তার ডানপাশ ঘেঁষে সামনেই গ্রেট স্ফিংক্স। আরও ডানদিকে ফারাও খুফুর পিরামিড। আর খাফ্রের পিরামিডের বাঁদিকে বেশ কিছুটা দূরে ফারাও মেনকাউরে-র পিরামিড। দিনক্ষণ দেখে আসিনি বটে, শুধু আমাদের বিশেষ দিনটুকু মধ্যমণি করে আসা, তাও যখন এই আঁধারে অপ্রত্যাশিতভাবে পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় চারদিকে ‘সমুদ্র সফেন’, আর সেই অপূর্ব জ্যোৎস্না সাড়ে চার হাজারের ইতিহাস ধুইয়ে দিচ্ছে চোখের সামনে, সেটুকু দেখে আনন্দে মন ভরে উঠবেই। এই আমাদের প্রথম পিরামিড দেখা, এমন অপার্থিব আবহে! একবার বিরাট থালার মতো চাঁদের দিকে তাকাই, আর একবার পিরামিডের দিকে, সে-শোভা বর্ণনা করার ভাষা নেই! কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে সাতটায় শুরু হলো আমাদের শো। মিশরের ফারাও যুগের প্রাচীন ইতিহাস আর সঙ্গে আলোর খেলা - পিরামিড, স্ফিংক্স, আর পাথরের গায়ে প্রাকৃতিক প্রোজেক্টর স্ক্রীন-এর উপর। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৮. এ লেখাটি “ভ্রমণ আড্ডা” বার্ষিক সংখ্যা ২০২০ তে প্রকাশিত হয়েছিল। ওটা এক অন্য গোত্রের পত্রিকা। বিগত ২৫ বছর ধরে ভদ্রেশ্বর থেকে বছরে একবার বেরোয়। বইয়ের মতো আকার। ১৭০-৮০ পাতার পরিসর। ছবিছবা থাকে না। তবে এখানে ছবি রাখায় বাধা নেই - তাই কয়েকটি ছবি রইলো পুনশ্চের পরে ... ...
সপ্তম পর্ব : বুডাপেস্টের পথে ... ...
আলেকজান্দ্রিয়া – ৩৩২ খ্রীষ্টপূর্ব – ম্যাসিডোনিয়ার সম্রাট তৃতীয় আলেকজান্ডার (ওরফে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট) পারস্য জয় করে আজকের গাজা পার হয়ে এসে ঢুকে পড়লেন মিশরে। পারস্যের অত্যাচার আর লুন্ঠন থেকে বাঁচতে মিশর-ও বাধ্য হয়ে বেছে নিল ‘লেসার ইভিল’ আলেকজান্ডারকে (যদিও তাঁর দিগবিজয়ে যাঁরা বাধা দিয়েছেন তাঁদের উপর অত্যাচারের কোনো মাত্রা রাখেননি , পুরু বা পোরাসের গল্প সত্যি ইতিহাস কিনা তা নিয়ে আজকের দিনে ধন্দ আছে) , তায় আবার যুদ্ধবিগ্রহে তিনি মিশরের প্রাচীন ফারাওদের মতো-ই পারদর্শী! তার উপর প্রথমেই মিশরে এসে তিনি দেখতে চাইলেন ‘এপিস বুল’-কে এবং সম্মান জানালেন! ব্যস, মিশরীয়রা মুগ্ধ, নির্ঘাৎ সেই প্রাচীন যুগের-ই কোনো মহান ফারাও এসে গেছেন তাঁদের রক্ষা করতে। সুতরাং নীলনদের উপত্যকা সহজেই বিনা বাধায় ম্যাসিডোনিয়ান সাম্রাজ্যের আওতায় এসে গেল। কিন্তু আলেকজান্ডার আরও উত্তরে গেলেন হোমারের ওডিসি-তে পড়া ফারোস দ্বীপের সন্ধানে, পেলেন এবং তাঁর নিজের নামে একটি শহর স্থাপন করলেন , ব্যবসা-বাণিজ্য আর ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ আর রাজ্যগুলিতে যাতায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগকারী স্থান হিসেবে। ... ...