এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে: আঁধার মাণিক্যের দেশে

    Samik Mukherjee
    অন্যান্য | ১৮ অক্টোবর ২০১০ | ৩৪০৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • til | 220.253.185.165 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ০৩:৪৩458898
  • আমরা বন্ধুবান্ধব মিলে যেখানেই যাই, গাড়ীতে চাল, ডাল মশলা- একটা ছোট্ট ইউনিট মত, ঢাউস elaborate ব্যবস্থা নয়- নিয়ে যাই, মায় ছোট্ট রাইস কুকার অবধি, প্লাস সামান্য সবজিও। বেড়াতে গিয়ে কোথায় খাবার জায়গা, কোথায় সুপার মার্কেট খোঁজো এসব ঝামেলাই নেই; মোটেল বা ক্যারাভান পার্কে তো কিচেন থাকেই। শস্তা বলে শস্তা!
    ম্যাকডোনাল্ডের এক কাপ গরমজল সঙ্গে একটা টিব্যাগ দু টাকায় কেনার চাইতে, ফ্লাস্কে ১০ পয়সায় ঐ একই চা দু টুকরো আদা ফেলে দিলেই তো ব্যস। তবে হ্যাঁ, দামী পেপার কাপ ইত্যাদি কিনে রাখি, চা চলকে যেন না পড়ে।
    তাছাড়া ম্যাকডোনাল্ডের wrap আর আমাদের রুটির মধ্যে ডিমের ভুজিয়ার মধ্যে তফাত কি?
    অবশ্য যার যেটা পছন্দ!
  • Arpan | 122.252.231.10 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ০৭:৫৪458899
  • রিমি :-)))))
  • shrabani | 124.124.86.38 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ০৯:৫০458900
  • কি করে জানা গেল আমার খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ছাড়া যত্রতত্র বসে পিজা বার্গার চাওমিন খেতে দেখলে ভালো লাগে বা নোংরা লাগেনা শুধু ভাতেই আপত্তি, আমি তো লিখিনি সেটা?
    আর সেরকম টা হলেও সেটা নেহাতই আমার ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার। আমি কোনোদিন এভাবে ঘুরিনা, আমার চেনা জানা কেউও না, আইডিয়াটা তাই অভিনব লেগেছিল। এখানে জানলাম অনেকেই করে থাকে। জানা ছিলনা, জানা হয়ে গেল!

  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১২:২১458901
  • বেড়িয়ে এসে হোটেলে ফিরে ভাড্ডাল্ডিম্ভাজা বা ভাড্ডাল্ডিমসেদ্ধ খেতে চাইলে ওই সেল্ফ-সার্ভিস লজ্‌ খুঁজুন। বিলেতে প্রচুর পাওয়া যেত - ইয়র্কশায়ারে, হাইল্যান্ডসে - আমরা কয়েকবার থেকেছি। আস্ত ডুপ্লে বাড়ি বা কটেজ ভাড়া দিয়ে দেয়, মাঝে মাঝে খুব শস্তায় পাওয়া যায় - ওপরে দুটো ঘরে থাকলে, আর নীচে রান্নাঘরে সব ইন্তেজাম আছে - বাসনপত্র ইত্যাদি - শুধু নিজে চাল্ডাল্ডিম কিনে রেঁধে নাও।
  • Lama | 203.99.212.53 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৪:৪৭458902
  • অবশ্যই যার যার নিজের পছন্দ। তবে কিনা, যে কথাটা শুনলে পরান যায় জ্বলিয়া রে সেটা হল, "যাচ্ছেতাই জায়গা! মাছভাত পাওয়া যায় না।' আরে মহায়, আপনি পোঁদার্পন করছেন বলেই চেন্নাইএর লোকজন রাতারাতি মাগুর মাছের ঝোল খাওয়া ধরবে সেটাই আশা করেন নাকি?

    আমি অবশ্য স্বভাব অলস, বেড়াতে গিয়ে বা না গিয়ে কখনোই রান্না করতে পারি না। তাছাড়া রান্নাই যদি করব তাহলে বেড়াব কখন? (আমার ব্যক্তিগত মতামত) তবে কেউ কেউ নিশ্চয় পারেন। তাঁদের উৎসাহ এবং টাইম ম্যানেজমেন্ট প্রশংসনীয়।

    বিলেত আমেরিকার অনেক পান্থশালায় তো রান্নাবান্নার ব্যবস্থা রয়েছে (আমি অবশ্য বিগত সফরে প্রতিদিনই কারো না কারো বাড়িতে নেমন্তন্ন খেয়ে কাটিয়েছি, তাই ঘরে রান্না করতে হয় নি। শুধু ঝকঝকে তকতকে কিচেনেটখানার একটা ফটো তুলে বউকে পাঠিয়েছিলাম)।

    আজকাল দেশেও অনেক হোটেল/ রিসর্টে রান্নাঘর থাকছে- ভালই তো। (অবশ্য ভেলোরে অনেক বছর আগেই দেখেছিলাম, কারণ ওখানে কেউ বেড়াতে আসে না, আসে চিকিৎসা করাতে। খাওয়া দাওয়াটা গৌন হয়ে যায়)
  • til | 220.253.185.165 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৪:৫১458903
  • এই ক্যারাভান পার্কগুলো চমৎকার, আগে সচল ছিল, উদ্যমী ও পয়সাওয়ালা লোকগুলো বাড়ী টেনে বেড়াতো; সেগুলো এখন স্টেশনারি, আর আমার মত নিম্নবিত্তদের পক্ষে বেশ কাজের। সত্যি স্পেস ডিজাইন দেখবার মত, একই সঙ্গে শোবার, কিচেন, ডাইনিং টেবিল, ফ্রীজ মায় বাথরুম, শাওয়ার অবধি। কিছু কিছুতে অবশ্য পাশেই শাওয়ার ব্লকে যেতে হয়।
    সারাদিন ঘুরে ফিরে খিচুড়ী, আলুভাজা মন্দ লাগে না। বিশেষত: এই পার্কগুলো শহরের প্রান্তে বা সমুদ্রের ধারেই হয়। দক্ষিণার দিক দিয়ে অনেক অনেক কম প্লাস প্রাইভেসি, ইচ্ছে মতন খাও দাও, সময়ের বাঁধন নেই।
  • til | 220.253.185.165 | ০৪ নভেম্বর ২০১০ ১৫:১৩458904
  • ওহ, থালা, প্লেট, pots and pans তো থাকেই, এমনকি বাসন মাজার ছোবড়া ও লিকুইড অবধি; এক লিটার দুধ ও কিছু চা , কফি , চিনি শুরু করবার জন্যে। পরেরটা অবশ্য আমাদেরকেই কিনে আনতে হবে। বেদুইনদের মত- কেবল তাঁবুটাই নেই। তবে হ্যাঁ, জাবার আগে সব যেমন ছিল তেমনি ক্লীন করে যেতে হবে নতুবা কুচুৎ করে টাকা কাটা!
  • ranjan roy | 122.168.205.1 | ০৫ নভেম্বর ২০১০ ১৬:২২458905
  • নৌকো চললো। বেশ কিছু তামিল। সবাই নীচু গলায় বলাবলি করলো এরা সব লিট্টের লোক।
    শ্রীলংকা থেকে তাড়া খেয়ে এসেছে। সময়টা ১৯৯২ যে!
    একটু পরে বোট যেই মাঝ সমুদ্রে এল, সামনের গলুইয়ের কাঠের ক্রস দোলার চোটে আকাশে উঠছে আর নামছে। আমার ভ্যাবাচাকা অবস্থা দেখে কথিত লিট্টের দল অট্টহাসি হেসে বল্ল---
    বাবুমশায়, একে বলে পিচিং। এ কিছুই নয়।
    কাল যখন ফিরবেন তখন এর সঙ্গে যুক্ত হবে "রকিং', অর্থাৎ হরাইজন্টাল দোলন।
    মাঝে নীল আইল্যান্ডে আধাঘন্টা থামল। আমি সঞ্জীব চাটুজ্জের বইয়ের কল্যাণে নীল দ্বীপে অবতরণকারী বাঙালীদের সঙ্গে গালগল্প জুড়লাম। বল্লাম-- ওখানে একজন পরিতোষ চক্রবর্তী বলে পুরুতমশায় আছেন। ওরা হৈ-হৈ করে বল্লো ঐযে কন্ঠী গলায় ছাতা বগলে টেকো শ্যামলা ভদ্রলোক নেমে যাচ্ছেন উনিই আপনার পুরোহিত পরিতোষবাবু। আমাকে ওরা বল্লেন-- নেমে
    আসুন মশায় নীলে। আমাদের ওখানে থেকে কাল হ্যাভলকে যাবেন।
    স্টীমারে নীল থেকে উঠে ভেন্ডারেরা বিক্রি করতে লাগলো চমৎকার সব রসগোল্লা, চমচম,
    ক্ষীরকদম্ব। দাম কম, স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। রত্না অনেকখানি কিনলেন।
    সাড়ে তিনঘন্টায় পৌঁছলাম হ্যাভলকে।
    এবার প্যানিক। সামান্য কটি ঘরের গভর্নমেন্ট রেস্টহাউস, তাতে ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই। কেন?
    লেফটেন্যান্ট গভর্নর রঞ্জিত সিং দয়াল সেদিন
    ওখানে এসেছেন, একটু দূরের একটি দ্বীপে
    সোলার স্টেশনের উদ্‌ঘাটন করবেন। ফলে পোর্ট
    ব্লেয়ারের সমস্ত সরকারি দফতরের ছোট-মেজ-বড় সবাই একদিন আগেই ওখানে
    হাজির। ওই কপোত-কপোতী দিল্লির কোন আই এ এস পরিবারের ছেলে -ছেলেবৌ।
    তাই এখানের আই এ এস আংকলকে ধরে আগে থেকেই রিজার্ভেশন করিয়ে নিয়েছে। আমার সিপিএম ট্রেড ইউনিয়ন নেতা
    ন'কাকার চিঠি কোন কাজে এল না।
    জানলাম এই জেনারেল অপারেশন ব্লুস্টার এর নায়ক, হরমন্দির সাহিবের ওপর গোলা দাগার কম্যান্ডার। ফলে ওনার নাম খলিস্তানীদের হিটলিস্টে বেশ ওপরে আছে।
    তাই ভারত সরকার সুরক্ষার খাতিরে ওনাকে আন্দামানের প্রশাসনিক দায়িত্বে পাঠিয়েছে।
    কারণ, পোর্ট ব্লেয়ার বেশ বড় ন্যাভাল বেশ। আর হামলা জলপথে বা বায়ুপথে আসবে, ফলে স্ক্রীনিং সহজ।
  • ranjan roy | 122.168.23.22 | ০৫ নভেম্বর ২০১০ ১৮:৩২458906
  • ওসব তো হল, এখন হরিদাস পাল কোথায়
    যাবে?পাওয়া গেল একটি হোটেল, নারকেল
    গাছের নীচে, সমুদ্রের ব্যাক ওয়াটারের পাড়ে।
    নীচের তলায় খাওয়ার ব্যবস্থা। সুরমাই আর
    লালচে রঙের সমুদ্রের ভেটকি।
    আমার গলা দিয়ে নামলো না। তবু বাচ্চারা খেল। তারপর একটি রেজিস্টারে কমেন্ট লিখতে হবে। দেখি কোন জিওভান্নি, কোন মন্টগোমেরি সবার কমেন্ট আর সিগনেচার।
    কিন্তু এখন পায়খানায় যাই কি করে? অনেক
    অনুরোধে সরকারি অতিথিশালায় বৌ-বাচ্চাকে
    বাথরুমে যেতে দিল, আমাকে নয়। বৌ তো বাচ্চা দুটোকে নিয়ে একেবারে স্নান করে বেরিয়ে এল।
    শেষে সমস্ত হ্যাভলক চষে বেড়ালাম। বিশাল রিসর্ট তৈরি হচ্ছে। কিন্তু ফিনিশড্‌ নয়, আমার অনুরোধে কারো মন গললো না।
    পায়খানায় এϾট্র পেলাম না।
    শেষে সমুদ্রের ব্যাক ওয়াটারে একটি খালি নৌকোর আড়ালে কম্ম সারলাম, বৌ-বাচ্চা গার্ড দিল। মাথায়ও একটু জল ছিটোলাম।
    ছোটবেলা থেকেই দেখেছি আমাকে কেউ চাঁদা দেয় না।
    উত্তরবঙ্গের বন্যার জন্যে কৌটো ঝাঁকালেও না, কৃষ্ণাগ্লাস ফ্যাকটরির ধর্মঘটি শ্রমিকদের জন্যেও না।

    তারপরে সারাদিন ঘুরে বেড়ালাম, অসম্ভব
    সুন্দর ছোট্টো সাদা বেলাভূমির দ্বীপ। কোন আফশোষ রইলো না।
    থাকার জন্যে প্রায় নারকেল গাছের ওপর
    দোতলা সমান কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে একটি ছোট্ট কাঠের ঘর। তাতে কোনরকমে
    দুটো খাট গায়ে গায়ে পাতা। পাখা নেই।বলাতে একটি টেবিল ফ্যান দিল। কিন্তু সেটি ঘরের সকেটে ফিট হোল না। ফলে
    সারারাত গরম আর ঘামের মধ্যে কাটানো।
    বাচ্চারা মশারির মধ্যে শুলো। আমি আর স্ত্রী হলদেটে বাল্ব জ্বালিয়ে দেখতে লাগলাম অসংখ্য ছারপোকা মশারির ফাঁক দিয়ে
    ঢোকার চেষ্টা করছে। সারারাত্তির দমকা হাওয়া আর পশলা পশলা বৃষ্টি। বাথরুম পেলেও সেই দোতলা সমান কঠের সিঁড়ি দিয়ে অন্ধকারে নীচে নামতে হবে। কোন শালা নামে? ভূতের ভয় নেই!

  • ranjan roy | 122.168.23.22 | ০৫ নভেম্বর ২০১০ ১৮:৩৭458908
  • [ ডি: আমার বর্ণনা শুনে কেউ যেন আন্দামান সম্বন্ধে ভুল ধারণা পোষণ করবেন না। আজকের আন্দামান , মায় হ্যাভলক অতীব ট্যুরিষ্ট ফ্রেন্ডলি পরিকাঠামো সম্পন্ন জায়গা। হ্যাভলকে ভালো ভালো থাকার জায়গা হয়েছে। শমীকের বর্ণনা
    পড়ুন। ১৯৯২ কে ভুলে যান।]
    পরের দিন মেঘলা গোমড়ামুখো সকাল। " কাপ্তান কইছে সাইক্লোন হতি পারে''।
  • Manish | 59.90.135.107 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ১১:২৮458910
  • Ranjan এবার এই টইটাকেও একটু তুলে ধরুন।
  • de | 59.163.30.2 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ১৩:০৩458911
  • বাবা-মা এসেছেন আমার কাছে মুম্বইতে, আম্মো বেশ মাসখানেক পরে ফিরলাম -- উইকএন্ডে জমাটি একটা আড্ডা হলো শমীকের লেখা আঁধার মাণিক্যের লেখাটা নিয়ে আমাদের সব্বার! মানে বাবা-মা আর আমরা তিনজন। আমি পড়ে যাচ্ছিলাম একটানা আর সব্বাই চুপ করে শুনছিলো। শেষ হওয়ার পর -- আমার বাবা-মায়ের মন্তব্য-- শমীকবাবুর লেখা এরপর থেকে যেখানেই বেরোবে, আমায় জানাবি, পড়ে দেখবো। এতো ভালো আর স্বাভাবিক স্টাইল আজকাল খুব কম পড়ি! --

    ভাবলাম শমীককে জানাই আর সেইসঙ্গে একটা ধন্যবাদও দিই -- এতো সুন্দর একটা সন্ধেবেলার জন্য!
  • de | 59.163.30.2 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ১৩:১৪458912
  • ইস! রিমির সাথে কি মিল আমাদের! আমরা একবার সামারে একটা এট্টু লম্বা ট্যুরে বেরিয়েছিলাম -- ড্রেসডেন, বার্লিন, প্রাগ, ভিয়েনা হয়ে বুদাপেস্ট অব্দি! এর মধ্যে দুজায়গায় কনফারেন্স ছিলো, তো সেখানে হোটেলে কিচেনেট ছিলো -- মানে অর্গ্যানাইজাররা ওম্নিই অ্যারেঞ্জ করেছিলেন। তবে ঐ পারস্পরিক টানাপোড়েনে প্রথম জায়গাটায় আর রাঁধা হয়নি :)) , বার্গার কিং আর ম্যাক ভরসা। পরের হোটেলটায়, অনেকদিন বাড়ির খাদ্য না খাওয়ার দু:খে রাঁধতে বাধ্য হয়েছিলাম -- সাধারণ ডাল-ভাত-ডিমভাজা-আলুসিদ্ধ খেয়ে মেয়ের তৃপ্তিভরা মুখটা আজও মনে পড়ে!
  • til | 220.253.185.165 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ১৬:০৩458913
  • একটি অ্যাঙ্গলো ইন্ডিয়ান পরিবার আছে মেলবোর্নে, গৃহিণী আবার পারসী। তাদের মেয়ে Tracey। কি ডিনার ছিল আজকে?
    ডল* অ্যান্ড রাইস।
    btw নানের ফান্ডা এই পারসী মহিলাই দেন, রান্না জানেন বটে!
    * আ কার দিতে ভুলি নাই।
  • Nina | 64.56.33.254 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ২০:০৫458914
  • আমার ছেলে যখন কলেজ গেল --বাড়ী এসেছে ক্রিসমাসের ছুটিতে । তিনমাস ধরে হস্টেলের আমেরিকান খাবার পর, বাড়ীতে ডিনারে বসেছে। ওর প্রিয় মুসুর ডাল, আলুভাতে ডিমসেদ্ধ একসাথে মাখা, আর ঘিমাখা ভাত--মুখে গরস দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। আমি বলি কি রে খা, মুখে নিয়ে বসে আছিস কেন? বল্ল
    আহ!! মুখে কি আরাম!!
  • Arpan | 204.138.240.254 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ২০:২২458915
  • ডল প:বঙ্গের প্রতিবেশী এক রাজ্যে গেলেও শোনা যায়।

    আরো উদাহরণ শুনতে চান:

    ডিড দ্য বস লিভ অলরেডি?

    না না, বসের কথা হচ্ছে না! বাস মিস করেছেন কিনা জানতে চাইছে।
  • ranjan roy | 122.168.251.60 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ২১:২৫458916
  • পরের দিন সক্কালে উঠে সমুদ্রের ব্যাকওয়াটারে "ফ্রেশ' হয়ে তাড়াতাড়ি করে স্টীমারে উঠলাম। গতকাল পায়ে হেঁটে অসাধারণ সুন্দর নির্জন সমুদ্রতট ঘুরেছি। আর কি আশ্চর্য্য! টিন আর বাঁশের চাটাইয়ের অসংখ্য বাড়ি, বাড়ির পেছনে কলাগাছ, উঠোনে লাউমাচা,
    পুঁই! চারদিকে বাংলা কথা,( দিদিগো,
    লক্ষ্মীপূজা কি বারে?)
    বেশ কিছু "বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ জল লয়ে যায় ঘরে' দেখে আমার মুড ফ্রেশ। আদৌ"" মা
    বলিতে প্রাণ করে আনচান'' করছিল না।
  • sana | 58.106.156.197 | ১০ নভেম্বর ২০১০ ০৭:২৪458917
  • রজ্ঞন দার লেখা পড়লে মনে হয় না পড়ছি,মনে হয় সামনে বসে গল্প শুনছি! অদ্ভুত একটা গতি আছে লেখায়।
    হ্যাঁ,অর্পন,আমিও জানি,ওড়িয়া বন্ধুর ডল,বস,টেবুল....এসব শুনে প্রথমে কেমন কনফিউজ হয়ে যেতাম,এখন অভ্যেস হয়ে গেছে।
  • Manish | 59.90.135.107 | ১৫ নভেম্বর ২০১০ ১৩:৩২458919
  • Ranjan

    বাংলার বধু.........................

    তাপ্পর????????????????????
  • ranjan roy | 122.168.248.138 | ১৫ নভেম্বর ২০১০ ২৩:২৮458920
  • কি আর কই? কোথাও ল্যাড-বাথ না পেয়ে ( সবই নির্মীয়মান) সমুদ্রের লোনা জলে আশ্রয় নিতে হল। বৌ-বাচ্চা একটু দূরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিল।
    তারপর সকাল সাতটায় আমাদের স্টীমার
    ছাড়বে। কিন্তু ক্যাপ্টেন আর সারেং বেঁকে বসল।
    ওরা এম এস তারমুগলী লাক্সারী লাইনারে করে ফেরার আগে লেফটেনান্ট গভর্নর কর্নেল রঞ্জিত সিং দয়াল যে রেড কার্পেট বিছানো
    সালামী পাবেন, নেভির গান-স্যালুট হবে - সেসব না দেখে নড়বে না।
    এদিকে জেটির কাছে ছোট এক নৌকো
    টালমাটাল করছে, তার মাঝি বল্লো---- আজকের দিনটা থেকে যান। আবহাওয়া
    ভালো নয়। কত বড় বড় ঢেউ উঠছে দেখছেন? আমি ভোর ভোর রওনা দিইচি
    লাম। সমুদ্রের দশ মাইল ভেতর অব্দি গিয়ে ফিরে এসেছি।
    ক্যাপ্টেনকে বল্লাম। উনি হাত নেড়ে উড়িয়ে দিলেন।-- মিথ্যে ভয় পাবেন না।
    আমিও থাকতে রাজি নই। সমুদ্রকে নোংরা করা কতবার পোষায়?
    যাকগে, সকল আটটায় আমাদের স্টীমার লরেন্স ছাড়ল। অমি মনে মনে বল্লাম--
    দরিয়ার পাঁচপীর বদর! বদর!
    বর্শাকালের নিমনচাপের সময় যেমন দেখায় তেমনিআকাশের অবস্থা। মাঝে মাঝেই বৃষ্টির এক এক পশলা এসে আমাদের হালকা ভিজিয়ে দিচ্ছে। খুব খারাপ লাগছে না।
    আমি মন দিয়ে যাত্রীদের দেখতে থাকি।
  • ranjan roy | 122.168.248.138 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ০০:০৩458921
  • ছোট্ট স্টীমার, কিন্তু বেশ সাফ সুতরো। ওদিকে " যমুনা'' খানিকটে বড়, কিন্তু বড্ড নোংরা। এটাই ভাল। হায়! "" আগে যদি জানতো হাসন বাঁচবে কত দিন''!
    মাঝখানে ক্যাপ্টেনের ঘর -কাম-ইঞ্জিন রুম পুরো ডেককে দুভাগে ভাগ করে রেখেছে। আমরা সামনের দিকে বসেছি, যাতে সমুদ্রের রূপ ভাল করে দেখতে পাই। মোল্ডেড ওয়ারের চেয়ার
    গুলো খোলা ডেকের ফ্লোরের সাথে নাট-বোল্ট দিয়ে আঁটা। পাশে ধরার জন্যে খোলা রড, ওপরে উন্মুক্ত আকাশ। আমাদের পাশাপাশি সেই "" হর্নবিল নেস্ট'' নামক সরকারী অতিথিশালা থেকে সঙ্গ নেয়া দিল্লিবাসী সদ্যবিবাহিত জোড়া।
    ডেকের সামনে গলুইয়ের জায়গাটায় একটা কাঠের ক্রস লাগানো। ও হরি! জাহাজের নাম যে লরেন্স।
    প্রথমে এমন কিছু বুঝতে পারলাম না। হ্যাভলক আইল্যান্ডের শ্যামলিমা ক্রমশ: দূরে মিলিয়ে গেল। এমন সময় শুরু হল " দে দোলা, দে দোলা''। কেঠো হাসি হাসতে হাসতে দেখলাম সামনের
    গলুইয়ের ক্রশটি প্রায় আকাশ ছুঁয়ে আবার নেমে আসছে। আমরাও চেয়ারে বসে নাগরদোলার মতন ওপরে উঠছি নীচে নামছি মতন অবস্থা। কাল তো এতটা হয় নি।
    যাদের লিট্টে বলা হচ্ছিল সেই তামিল জনগণ বোঝাতে লাগলো যে ভয়ের কিছু নেই। কালকে হচ্ছিল খালি পিচিং, অর্থাৎ সামনে পেছনে একটু অর্থোগোনাল প্রোজেকশনের মতন দুলুনি। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রকিং, অর্থাৎ বাঁয়ে-
    ডাইনে হরাইজন্টাল দুলুনি, তাই অমন লাগছে। খানিকক্ষণ পরে ঝড় উঠল বেড়ে। আকাশ ও সমুদ্র যেন মিশে গিয়েছে। আলো কমে আসছে। আর হটাৎ ফুঁসে উঠলো
    সমুদ্র।
    ঢেউয়ের চেহারা? !পাতাল ফুঁড়িয়া উঠিল যেন রে জ্বালাময়ী শত নাগিনী! তেলুগু
    পৌরাণিক ফিল্মে সহস্রফণা বাসুকি নাগ যেমন দেখায়।
    খানিকক্ষণ পরে দেখি লিট্টেদেরও অবস্থা
    খারাপ। ওরা হ্যাভলকের মিষ্টিজলের উৎপাদ লাউকুমড়ো- তরিতরকারি কিনে নিয়ে যাচ্চে পোর্ট ব্লেয়ারের দোকানের জন্যে। ক'জন রেলিং চেপে বমি করলো তার পর পেছনের ডেকে চলে গেল। আমার অবস্থা খারাপ। রত্না গা-গুলোনোর ওষুধ দিল। এরেই কি
    পুরানো দিনের গল্পে পড়া সী-সিকনেস কয়?
    রত্না ডাকলো-- রায়, একটা জিনিস খেয়াল করেছো? আমাদের নৌকো আর এগুচ্ছে না, গোল গোল ঘুরছে!
    --- আ আমি খেয়াল করবো? আমার অবস্থা একবার দিল্লিতে প্রগতি ময়দানে রোলার
    কোস্টার চড়ে যেমনি হয়েছেল, পেটের ভেতর গুল্লু-গুল্লু পাকিয়ে পাকিয়ে উঠছে।
    কিন্তু দেখলাম দাড়িওয়ালা ক্যাপ্টেন হ্যাডকের মত দেখতে ক্যাপ্টেন এবং হাফপ্যান্ট পরা
    সারেং বাইরে এসে চোখে দূরবীণ লাগিয়ে কী দেখছেন। জিগাইয়া উত্তর পেলাম--- আজ ওয়েভ বড্ড বেশি। আমাদের ছোট স্টীমার ঢেউ কেটে এগুতে পারছে না। তাই ঘুরপাক খাচ্ছে।
    -- তাই বুঝি? কেন যে আমাকে লোকে শুধু শুধু ভয় দেখায়?
    এইসব কার্যকারণ সম্পর্ক আমি রত্না কে ও সেই কপোত-কপোতীকে বোঝাতে লাগলাম।
    "" গুরুজীর জয়, কানে কানে কয়, রে পুত্র! ভয় নাহি''।
    মেয়েটি বল্লো-- কাকু, আপনি বাকিটা মন দিয়ে শোনেন নি।
    ওরা ওয়ারলেসে প্রথমে পোর্ট ব্লেয়ার , পরে হ্যভলক আইল্যান্ড কনট্যাক্ট করার চেষ্টা করছে, কিন্তু কোথাও যোগাযোগ হচ্ছে না।
  • Nina | 64.56.33.254 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ০১:৫৪458922
  • প্লিজ্‌জ্‌জ্‌জ্‌জ এখানে ঝুলিয়ে রাখা চলবেনা--জমে উঠেছে---
  • ranjan roy | 122.168.235.117 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ০৭:৩৪458923
  • এবার একটা বিরাট ঝাঁকুনি খেয়ে স্টীমার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল, তারপর একটি নির্দিষ্ট দিকে চলতে লাগল।
    উল্টো দিকে যাচ্ছে? কি ব্যাপার! টালমাটাল পায়ে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে ধরে জানলাম যে পোর্ট ব্লেয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় নি, কিন্তু হ্যাভলকের সঙ্গে হয়েছে। ওরা বলছে নো প্রবলেম, ফিরে এস।
    -- মানে, আবার সেই সমুদ্রের মাঝে প্রকৃতির
    ডাকে সাড়া, আর প্রায় গাছের ওপর ছারপোকা অধ্যুষিত বিছানা?
    --- আরে না,স্থানীয় ব্যাপারিরা হ্যাভলকে রাত কাটাবে,ঝড় থামলে পরের দিন ফিরবে। কিন্তু
    ট্যুরিষ্টরা লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে ওই লাক্সরি লাইনার "তারমুগলি' করে আজ সন্ধ্যে বেলায় ফিরবে। এইসব ঝড়-ঝাপটা অক্টোবর মাসে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বড় জাহাজের কাছে কিস্যু না। ওইসব পিচিং-রকিং তেমন টের পাবেন না।

    বেশ, বেশ। সঞ্জীব চাটুজ্জে মশায়ও সরকারি অতিথি হয়ে এই জাহাজেই চড়ে আন্দামান বেরিয়েছিলেন। রঞ্জনও ওই জাহাজে চড়ে একদিন লেখক না হোক , কপি রাইটার হবে।
    ঝড় ঠেলতে ঠেলতে ফিরিয়ে নিয়ে চললো
    হ্যাভলকের দিকে। এতক্ষণে কষ্ট করে
    দু'ঘন্টায় যদ্দূর এসেছি তা ঝড়ের আনুকূল্যে প্রায় ৪৫ মিনিটে উল্টো দিকে কভার করছি। ওই তো
    আবার দেখা যাচ্ছে হ্যাভলকের সবুজপাড়। বেশ গুন গুন করছি -- সুনীল সাগরের শ্যামল কিনারে।
    রত্নাকে বল্লাম- নীল আইল্যান্ডে কেনা ছানার মিষ্টিগুলো বের কর। গোটা দুই চমচম খেয়েছি কি না, আবার ঝাঁকুনি! আবার
    ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গভীর সমুদ্রের দিকে মুখ করল আমাদের "লরেন্স'।
    সারেং আবার চোখে দূরবীণ লাগিয়েছে।
    জানালো- প্রোগ্রাম চেঞ্জড্‌। পোর্ট ব্লেয়ারের সঙ্গে কনট্যাক্ট হয়েছে। ওরা বলছে--- ফিরে এস। স্কেডিউল ব্রেক করা চলবে না। কোন ভয় নেই। আমরা হেলিকপটার ইত্যাদি নিয়ে তৈরি আছি। মনিটর করছি।

    দুস্‌ শালা! রঞ্জনের কপালে লাক্সারি লাইনার চড়া নেই। আবার সেই আকাশপাতাল এক করা ঝড়, আবার সেই রকিং অর পিচিং।
    না:, এবার আর ভয় পাবো না। ঝড় যেন একটু কমে এসেছে। কিন্তু সামনের ডেকে
    আমাদের নিয়ে মাত্র তিনটি পরিবার। অন্যদের মন দিয়ে দেখতে থাকি।
    জনা পাঁচেকের একটি বাঙালী পরিবার।
    কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে শালা-ভগ্নিপতি ও বছর পনেরোর ভাগ্নে।
    হাসিমুখের ফ্যাটফেটে ফর্সা ওই ভগ্নিপতি ভদ্রলোককে কোথাও দেখেছি মনে হয়!
    -- কোথথেকে আসছেন?
    --- কোলকাতা থেকে।
    -- নর্থ না সাউথ?
    -- সাউথ। কেন বলুন তো?
    --- সাউথ? তাহলে নাকতলা? থার্ড স্কীম?
    --- আরে, আপনি আমাকে চেনেন?
    -- ২৪ বচর আগে, মানে ১৯৬৮তে
    নাকতলার মোড়ের কালীপূজোয় আমরা একসঙ্গে ভিয়েৎনাম যুদ্ধের ওপর ফোটো
    এগজিবিশন করিয়েছিলাম। আপনার বাড়ির
    নাম ""চুকাই'' তো? গায়ের রঙের জন্যে
    পাড়ায় আমরা কমরেড চুখারভ বলতাম।
    সবাই হেসে গড়িয়ে পড়লো।
    --জামাইবাবু, আপনার গায়ের রঙের জন্যে এখানেও কেউ চিনে ফেলেছে।
    কিন্তু মধুর রসের বাক্যালাপ বেশিক্ষণ চললো না। আবার ঝড় আছড়ে পড়েছে। ভীমবেগে
    দোলাচ্ছে আমাদের খেলনা জাহাজকে।
    প্রাণপণে পাশের রড চেপে ধরে চোখ বুজে ফেলি।
  • Manish | 59.90.135.107 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ১১:১০458924
  • Ranjan

    থার্ড স্কিমটা কোথায়। কৃষ্ণা স্টুডিওর কাছাকাছি?
  • kd | 59.93.206.123 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ১৩:১৮458925
  • আরিব্বাস! সমুদ্রের ঝড় তো ভয়াবহ জিনিস। তা রঞ্জন, বেঁচে ফিরেচো তো? তাড়াতাড়ি বলো, বড্ডো উৎকণ্ঠায় আছি।
  • ranjan roy | 122.168.243.156 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ১৯:১৪458926
  • থার্ড স্কিম টা আনন্দ আশ্রম, বান্টি সিনেমা
    ছাড়িয়ে, কবি বুদ্ধদেব বসুর বাড়ির পাড়াটা হল
    থার্ড স্কিম।
  • ranjan roy | 122.168.14.37 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ২০:০৭458927
  • ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াল।
    অনেক দূর থেকে এক্‌গাদা ঢেউ ধেয়ে আসছে, আপাতনিরীহ। কিন্তু হটাৎ তারা জলতলের নীচে পাতালে সেঁদিয়ে গেল।
    ভাবলেন আপদ গেছে।
    কোথায় কি! একটু পরে তারা আপনার আরো কাছে এসে পড়েছে কিন্তু তখন তাদের উচ্চতা প্রায় দ্বিগুণ। আবার তারা তলিয়ে গেল। আপনি ভাবছেন ওরা আপনার স্টিমারের
    নাগাল পাবে না, স্টিমার জলের সাথে রাগবি খেলে আড়াআড়ি কেটে বেরিয়ে যাচ্ছে।
    কিন্তু সেই সহস্রলহরী শেষমুহূর্তে পাকা
    খেলুড়ের মত স্পীড বাড়িয়ে আপনার
    জাহাজের ঠ্যাং টেনে ধরল।
    ডেকের ওপর আপনাদের ভিজিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল। আপনি হাঁফ ছাড়লেন।কিন্তু
    সমুদ্রদেবতা আপনার স্বস্তি পাওয়া দেখে
    হাসলেন বোধহয়। আবার একই ভাবে একটি সহস্রলহরী আপনার দিকে তাড়া করে আসছে। একই ভাবে, ভিজিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে। আবার! আবার!
    যেন লিলি বা ম্যাসির বিরুদ্ধে নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছেন। প্রতিটি বল লাফিয়ে উঠছে, আর আপনি ঠিকমত ডাক করতেও পারছেন
    না।
  • ranjan roy | 122.168.14.37 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ২০:৫৫458928
  • এরমধ্যে রত্না আবার ক্যাপ্রি না কি যেন একটা পরে ""পীড়িত যাত্রীদের'' মধ্যে বমির ওষুধ বিলি করে বেড়াচ্ছে, নিজেকে বোধহয় ফ্লোরেন্স
    নাইটিংগেল ভাবে!
    আরে, ডুবে গেলে এইসব ওষুধপত্তর কোন কাজে আসবে?
    এবার ব্যপারটা দাঁড়াল টিভিতে দেখা ওল্ড
    স্পাইসের সেই অ্যাডের মত, যাতে ওয়াটার র‌্যাফটিং করা ছেলেটির ওপর সহস্রফণা
    কালো ঢেউ অবিরাম আছড়ে পড়ছে।
    --রায়, চোখ খোল্‌, দেখ, দেখ এক ঝাঁক
    ফ্লাইং ফিশ।
    দেখি সত্যিই । গোটা আটেক কালচে
    কালবাউস মাছের মত হাওয়ায় যেন স্থির হয়ে আছে। তারপর তলিয়ে গেল।
    --- আরে এবার ডানদিকে দেখো। বাব্বা,
    ঝাঁকের পর ঝাঁক।
    আবার আমি চোখ বুজলাম।
    -- রায়, নীলদ্বীপের চমৎকার মিষ্টিগুলো না খেয়েই মরবি!
    -- রাখো ইয়ার্কি! পেটের মধ্যে রোলার কোস্টার চড়ার মত গুলিয়ে উঠছে, আর এদিকে--।
    -- রায়, চল না আপার ডেকে গিয়ে ঝড় দেখি! আরে ডুবে গেলে তো ল্যাঠা চুকলো। যদি বেঁচে ফিরি তাহলে এমন চমৎকার দৃশ্য! মনের অ্যালবামে ধরা থাকবে সারাজীবন।
    --রাখো তোমার কাব্যি! আমি যাবো না, ব্যস্‌।
    --- দূর ভীতু বাঙলী!
    -- হ্যাঁ, আমি শালা ভীতু বাঙালী। যাবো না, ব্যস্‌।
  • ranjan roy | 122.168.14.37 | ১৬ নভেম্বর ২০১০ ২১:০৬458930
  • কিন্তু নাকতলা থার্ড স্কীমের নতুন প্রজন্ম লাফিয়ে উঠেছে।-- কাকিমা, চলুন বাবার ক্যামেরা নিয়ে ওপরের ডেকে গিয়ে ফোটো তুলি।
    দু'জনে টালমাটাল জাহাজের ওপরের ডেকে রেলিং ধরে উঠলো।
    ঠিক করে দাঁড়াবে তবে তো ছবি তুলবে! মিনিট পনেরো পরে দুজনেই দাঁত বের করে
    নীচে নেমে এল। ঝড় দেখে ওরা মহাখুশি! কিন্তু লোনা জলের ঝাপটায় ক্যামেরার লেন্স গেছে ভিজে, ক্যামেরার মালিক উঠেছে হায়
    হায় করে। নাকতলা ফিরে বাচ্চাটার কপালে দু:খু আছে দেখছি।
    হটাৎ স্টিমার জলের লেভেল ছেড়ে কয়েক ইঞ্চি শুন্যে উঠে আবার জলের ওপর আছড়ে পড়লো। স্টিমারের এবং যাত্রীদের বডিতে বয়ে গেল এক কাঁপুনি ধরানো শিহরণ। কেউ একজন জ্ঞানী ফুট কাটলেন।
    --- এটা ডেঞ্জারাস্‌, বডি ক্র্যাক হতে
    পারতো।
    ক্যাপ্টেন এবং সারেং আবার ডেকের ওপর,
    চিন্তিত মুখে। জিগ্যেস করলাম-- সত্যি?
    ওনারা কোন জবাব দিলেন না।
    তলপেটে চাপ বেড়েছে। পেছনে গিয়ে দেখিপ্রচুর লোক সামনেই পায়খানা- পেচ্ছাপ করে ভাসিয়ে রেখেছে। এবার সত্যি বমি পেল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন