এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমেরিকায় দশ বছর।

    Monorama Biswas
    অন্যান্য | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ | ৩০২৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Monorama Biswas | 71.167.46.249 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৭:৩৬485157
  • .

    ..

    ..

    ..

    ..

    .
    .

    .

    .

    ..

    ..

    ..

    ..

    ..

    Home
    Profile

    Account.

    ..

    BrowseNotes.

    Friends' Notes.

    Pages' Notes.

    MyNotes.

    MyDrafts.

    NotesAboutMe.

    Tagged.

    .
    MyNotes

    Editimportsettings

    SeeAll

    PeopleYouMayKnow.

    SelimaTasneemChhonda
    75mutualfriends

    AddFriend.

    NasreenSultana
    65mutualfriends

    AddFriend.

    SeeAll

    Sponsored.

    CERECCovers

    cereccovers.com

    CustomcoversforyourCERECequipment..

    Plantagon

    Businessasusualisover.InvestinsocialentrepreneurshipbyjoiningPlantagonNon-ProfitAssociationfromthestart..

    Like·NkSenlikesthis.

    life'sDHA

    VegetarianDHAOmega-3Showyoursupport..

    Like·25,973peoplelikethis.

    Earn50kbonuspoints

    Limited-timeoffer:Earn50Kbonuspointswhenyouspend$10KwiththeNewBusinessGoldRewardsCard.Learnmore..

    Edit

    আমেরিকায় দশ বছর।.

    byMonoramaBiswasonTuesday, September13, 2011at9:52pm
    .

    আমেরিকায় দশ বছর।

    আজ দশ বছর হল

    আমেরিকা এসেছি। আমেরিকার ভিসা পাওয়ার প্রায় এক বছর পর আমি ছেলে দুটো নিয়ে নিউইয়র্ক

    আসি। ঢাকাতে মিরপুরে আমার একটা ডেন্টাল ক্লিনিক ছিল, এই ক্লিনিকটা ছিলো অনেকটা

    আমার সন্তানের মত। ওকে চিরদিনের মত ছেড়ে আসতে আমার খুব কষ্ট হয়েছিলো। এই জন্যেই অনেকটা ঢিলেমী করেছিলাম ।

    তাছাড়া অন্তু, আমার ছোট ছেলে খুব ছোট ছিলো, দেশে আমার কত মানুষ সাহায্য করার,

    বিদেশে এত ছোট ছেলে নিয়ে একা একা সবকিছু কিভাবে সামলাবো –এটাও একটা ভয় ছিল। সব

    মিলিয়ে ওদের বাবা কে বললাম ‘তুমি একাই যাও, চাকরী কর, বাসা ঠিক কর-আমি পরে আসছি।‘

    এর মধ্যে আমার রুগীরা, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন জেনে গেল আমি ওদের ছেড়ে আমেরিকা চলে যাব। আমার

    এই সব শুভাকাংগীর মধ্যে দুই দল হয়ে গেল। এক দলের কথা- কোন দু:খে আমেরিকা যাবে, এই

    খানে আমার কিসের অভাব? আরেক দলের বক্তব্য হল-আমেরিকার ভিসা পেয়ে কেউ বসে

    থাকে? দু’দলেরই জুড়ালো যুক্তি ছিলো। আমার

    এক বান্ধবী আমার বাসায় বেড়াতে এলো, কলেজের টিচার, আমাকে বলল, ‘ আমেরিকা যায় মানুষ

    বেশী টাকা রোজগারের জন্যে, তোমার তো আর তা দরকার নেই, তুমি এখানে থেকেই বেশী টাকা

    রোজগার করতে পারো, তাছাড়া শ্বশুর ও বড় লোক,-তো তুমি যাবে কোন দু:খে ?’

    ওর কথার উত্তরে বললাম ‘ আমি সারা ইউরোপ ঘুরে দেখতে চাই-সেটা বাংলাদেশে থাকলে পারবো না।‘ আমার কথা

    শুনে বান্ধবী আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকল। কিছুই বললো না। বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত

    গ্রামের মেয়ের এমন শখ কেন---এটাই মনে হয় অনুধাবন করার চেষ্টা করছিলো। আমি এখন বিনে পয়সায় ইউরোপ ঘুরার সুযোগ

    পেয়েছি—যেটা আমেরিকা আসার কারনেই সম্ভব হয়েছে।

    মানুষের মহ্‌ৎ আর স্‌ৎ ইচ্ছে পূরন হয় – এটা আমি বিশ্বাস করতে পছন্দ করি।

    ১৫ ই সেপ্টেম্বর,

    ২০০১ , আমি ব্রিটিশ এয়ার লাইনে নিউইয়র্ক আসি। ঐ দিন ই খুব ভোরে ঢাকা ত্যাগ করি। ৯/১১

    এর পর এইটাই ছিলো ঢাকা থেকে প্রথম ফ্লাইট। সারা রাত জেগে বসে থাকি প্লেন চলবে কিনা

    এই অনিশ্চয়তায়। ব্রিটিশ এয়ার লাইন এর অফিসে ফোন করে জানতে পারি যে তারা কিছুই জানে

    না-ফ্লাইট চলবে কিনা। ৯/১১ এর পর আমেরিকাগামী সব ফ্লাইট বন্ধ। আমি বাংলাদেশে থাকতে

    ইন্টারনেটের সূচনা লগ্ন থেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। ইন্টারনেট থেকেই আমি বাসায়

    বসে জানতে পারলাম, প্লেন চলবে।

    ১৫ ই সেপ্টেম্বর খুব ভোরে আমার পরম প্রিয় বাংলাদেশ, দেশের মানুষ , আমার প্রান প্রিয় ভাই-বোন আর মা বাবা ছেড়ে

    প্লেনে চড়ে বসলাম।

    হিথরো এয়ার পোর্টে

    এসে পড়লাম একটা চরম অনিশ্চয়তায়। প্লেন বদল করতে হল, কিন্তু কেউ ই জানে না সেখান

    থেকে প্লেন আমেরিকা যাবে কিনা। লাগেজ গুলো আমাকে কালেক্ট করতে হল। ছোট দু’টো

    বাচ্ছা নিয়ে আমি বেশ অসহায় বোধ করতে লাগলাম, তবে আমি ভয় পাই নি এই টা বলতে পারি।

    বাচ্ছাদের জন্যে কোনো চেক পোস্টেই তেমন কোনো প্রশ্ন করেনি। তাড়াতাড়িই ছেড়ে দিয়েছে।

    নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পরে নিউইয়র্ক জে এফ কে এয়ারপোর্ট এ এসে পৌছিলাম, তখন সন্ধ্যা রাত, লাল লাল আলো

    ঝলমলে শহর দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগছিলো।

    ঢাকা শহর আর নিউইয়র্ক শহর –পার্থক্য এত বেশী যে সব কিছুতেই বিস্ময় বোধ ই বেশী

    ছিলো। এত ধূলা মুক্ত বাতাস, এত পরিষ্কার রাস্তা ঘাট, সুসজ্জিত-সুপরিকল্পিত বাড়ী ঘর

    –এ যেন সত্যি ই ভূস্বর্গে এলাম । কিন্তু

    স্বর্গে এলে কি? আমি তো আমার সাত ভাই-বোন, মা বাবা আর সব আত্মীয় স্বজন রেখে এলাম!

    স্বর্গ সুখ কি একা একা উপভোগ করা যায়?

    আমারিকা আসার আগেই আমি জেনে এসেছি- এই দেশে আসার পর আমি কি কি অসুবিধার মধ্যে পড়বো। নতুন দেশ, ভিন্ন ভাষা –সম্ভাব্য সব বিপদের কথা আমি দেশে থাকতেই ওয়াকেবহাল ছিলাম। তাই এই দেশে আসার পর জলের মাছ ডাঙায়

    উঠালে যেমন হয়- আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। আসার সাথে সাথেই একটা কাজ পাই। আড়াই দিন

    কাজ করার পরই কাজ থেকে বাদ পড়ি, কিন্তু আমার একটুও খারাপ লাগেনি। কারন আমি জানতাম ‘সকালে Hire, বিকালে fire’। আমাদের প্রথম বাসা ছিলো জ্যাকসন হাইটস এ। সাবলেট

    থাকতাম। বাসাটা ছিল ছারপোকায় ভর্তি । আমি ছেলেদের নিয়ে শুধু জ্যাকসন হাইটস এর

    রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম। ওরা খুব খুশী।
    এইখানে আসার পর ই জানলাম আমার হাসবেন্ডের কোনো চাকরি নেই। এতেও আমি অবাক হইনি। ছেলেদের কে সাথে

    নিয়েই চাকরি খুঁজতাম , ছোট খাট চাকরি পেয়েও গেলাম। তাই দিয়েই বাসা ভাড়া আর খাওয়ার

    খরচ চালাতাম। সে এক কঠিনতর জীবন। হাসবেন্ড বলে সে অড জব করতে পারবে না, আমার কাছে

    অড জব বলে কিছু নেই। সব ই কাজ, কাজের

    বিনিময়ে ডলার। আমার তো কাজ করার পারমিশান ছিলো না, তাই খুব অল্প বেতনে বাঙ্গালী এক

    ডেন্টিস্টের ক্লিনিকে কাজ নিই। দিনে দশ

    ঘন্টা করে কাজ করতাম। কয়েক মাস পর গ্রীন কার্ডের জন্যে এপ্লাই করি। সে এক বিশাল

    সমুদ্র একা সাঁতার কেটে পাড়ি দেওয়ার মত অবস্থা। তবে এই সময় দেশ থেকে আমার ভাই-বোন

    খুব সহযোগীতা করেছে, ওরা খুব সাহায্য করেছে। কিছু কিছু বন্ধুও দেশ থেকে উল্লেখ

    যোগ্যভাবে সাহায্য করেছে। তার মধ্যে অশোক ভৌমিক একজন। উনার ছেলে আমার ছেলের সাথে

    পড়তো। তাছাড়া আমার রুগীও ছিলো উনারা। এদেশের কিছু কিছু বাঙ্গালীরাও আমাকে সাহায্য

    করেছে। অধিকাংশ বাঙালি- নিজেরাই অসহায়, অন্য কে সাহায্য করবে কি ভাবে। তাছাড়া সবাই

    অতি পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে চলেছে-তাই হয়তো অন্য কেউ তারই পাশে থেকে উপরে উঠে

    যাবে-এইটা মনে হয় মানতে চাইতো না, বা কেউ মানতে পারে না। এটা মানুষের স্বভাব। তাছাড়া বাঙ্গালীদের স্বভাব একটু ঈর্ষা পরায়ন। আমি যে মেয়ে মানুষ হয়ে ছয়দিন দশ ঘন্টা করে কাজ

    করা, কাজ শেষে বাজার করা, রান্না করা, ছেলেদের পড়াশুনা করানো -এই গুলো অনেকেই পছন্দ করতো না। আমার সমালোচনা

    করতো, এই গুলো আবার কিছু কিছু আমি অবগত ছিলাম। যেমন আমার টাকার প্রতি অনেক লোভ, তাই এত কাজ করি

    ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার ছেলে দুটো পড়াশুনায় ভাল, ওরা বেবী সিটারের বাসায় বসেই হোম

    ওয়ার্ক করে ফেলতো। আমি অনেক দিন রান্না করতে করতে অন্তুর পড়াতাম। চার বছরের মধ্যে

    গ্রীন কার্ড হয়ে গেলো, সঙ্গে সঙ্গে কলেজে ভর্তি হয়ে গেলাম। নিজের জমানো টাকা দিয়েই

    পড়াশুনা শেষ করলাম। এই দেশে পড়াশুনা যেমন সহজ, তেমন ই কঠিন। সময় দিতে হয়। সারাদিন

    কলেজ, বাসায় রান্না, এ যেন সময়ের সাথে এক ঘোর তর যুদ্ধ। সব সময় সাথে একটা বড় ব্যাগ থাকতো,

    সেই ব্যাগে বই। ট্রেনে বসে পড়তাম। সময় নষ্ট করার সময় ছিলো না। তিন বছর পর পাশ

    করলাম, লাইসেন্স পেলাম ডেন্টাল হাইজিনিস্ট হিসেবে। তারপর চাকরি। প্রায় দুই বছর হলো

    চাকরি করছি। এর মধ্যে এই দেশের নাগরিক হয়ে গেছি।

    অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে বিগত দশ বছর অতিবাহিত করলাম। তবুও বলবো এই দেশে এসে আমি ভুল করিনি।

    প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ দেশ আমি বেশ উপভোগ ই করছি। কষ্ট করার মানসিকতা থাকলে

    এই দেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করা কোনো কঠিন কাজ নয়। বরং বাংলাদেশে এইটা সম্ভব নয়। আর

    পাঁচ বছরের মধ্যে আমি এই দেশের কোনো

    বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই। তারপর পিএইচ ডি। না হয় আর দশ বছর

    লাগবে। ‘মহ্‌ৎ ইচ্ছা মানুষকে মহ্‌ৎ করে গড়ে তোলে’

  • Monorama Biswas | 71.167.46.249 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৮:০৪485268
  • আমেরিকায় দশ বছর।

    আজ দশ বছর হল আমেরিকা এসেছি। আমেরিকার ভিসা পাওয়ার প্রায় এক বছর পর আমি ছেলে দুটো নিয়ে নিউইয়র্ক আসি। ঢাকাতে মিরপুরে আমার একটা ডেন্টাল ক্লিনিক ছিল, এই ক্লিনিকটা ছিলো অনেকটা আমার সন্তানের মত। ওকে চিরদিনের মত ছেড়ে আসতে আমার খুব কষ্ট হয়েছিলো। এই জন্যেই অনেকটা ঢিলেমী করেছিলাম । তাছাড়া অন্তু, আমার ছোট ছেলে খুব ছোট ছিলো, দেশে আমার কত মানুষ সাহায্য করার, বিদেশে এত ছোট ছেলে নিয়ে একা একা সবকিছু কিভাবে সামলাবো –এটাও একটা ভয় ছিল। সব মিলিয়ে ওদের বাবা কে বললাম ‘তুমি একাই যাও, চাকরী কর, বাসা ঠিক কর-আমি পরে আসছি।‘

    এর মধ্যে আমার রুগীরা, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন জেনে গেল আমি ওদের ছেড়ে আমেরিকা চলে যাব। আমার এই সব শুভাকাংগীর মধ্যে দুই দল হয়ে গেল। এক দলের কথা- কোন দু:খে আমেরিকা যাবে, এই খানে আমার কিসের অভাব? আরেক দলের বক্তব্য হল-আমেরিকার ভিসা পেয়ে কেউ বসে থাকে? দু’দলেরই জুড়ালো যুক্তি ছিলো। আমার এক বান্ধবী আমার বাসায় বেড়াতে এলো, কলেজের টিচার, আমাকে বলল, ‘ আমেরিকা যায় মানুষ বেশী টাকা রোজগারের জন্যে, তোমার তো আর তা দরকার নেই, তুমি এখানে থেকেই বেশী টাকা রোজগার করতে পারো, তাছাড়া শ্বশুর ও বড় লোক,-তো তুমি যাবে কোন দু:খে ?’
    ওর কথার উত্তরে বললাম ‘ আমি সারা ইউরোপ ঘুরে দেখতে চাই-সেটা বাংলাদেশে থাকলে পারবো না।‘ আমার কথা শুনে বান্ধবী আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকল। কিছুই বললো না। বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ের এমন শখ কেন---এটাই মনে হয় অনুধাবন করার চেষ্টা করছিলো। আমি এখন বিনে পয়সায় ইউরোপ ঘুরার সুযোগ পেয়েছি—যেটা আমেরিকা আসার কারনেই সম্ভব হয়েছে।
    মানুষের মহ্‌ৎ আর স্‌ৎ ইচ্ছে পূরন হয় – এটা আমি বিশ্বাস করতে পছন্দ করি।
    ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০১ , আমি ব্রিটিশ এয়ার লাইনে নিউইয়র্ক আসি। ঐ দিন ই খুব ভোরে ঢাকা ত্যাগ করি। ৯/১১ এর পর এইটাই ছিলো ঢাকা থেকে প্রথম ফ্লাইট। সারা রাত জেগে বসে থাকি প্লেন চলবে কিনা এই অনিশ্চয়তায়। ব্রিটিশ এয়ার লাইন এর অফিসে ফোন করে জানতে পারি যে তারা কিছুই জানে না-ফ্লাইট চলবে কিনা। ৯/১১ এর পর আমেরিকাগামী সব ফ্লাইট বন্ধ। আমি বাংলাদেশে থাকতে ইন্টারনেটের সূচনা লগ্ন থেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। ইন্টারনেট থেকেই আমি বাসায় বসে জানতে পারলাম, প্লেন চলবে।
    ১৫ ই সেপ্টেম্বর খুব ভোরে আমার পরম প্রিয় বাংলাদেশ, দেশের মানুষ , আমার প্রান প্রিয় ভাই-বোন আর মা বাবা ছেড়ে প্লেনে চড়ে বসলাম।
    হিথরো এয়ার পোর্টে এসে পড়লাম একটা চরম অনিশ্চয়তায়। প্লেন বদল করতে হল, কিন্তু কেউ ই জানে না সেখান থেকে প্লেন আমেরিকা যাবে কিনা। লাগেজ গুলো আমাকে কালেক্ট করতে হল। ছোট দু’টো বাচ্ছা নিয়ে আমি বেশ অসহায় বোধ করতে লাগলাম, তবে আমি ভয় পাই নি এই টা বলতে পারি। বাচ্ছাদের জন্যে কোনো চেক পোস্টেই তেমন কোনো প্রশ্ন করেনি। তাড়াতাড়িই ছেড়ে দিয়েছে।
    নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পরে নিউইয়র্ক জে এফ কে এয়ারপোর্ট এ এসে পৌছিলাম, তখন সন্ধ্যা রাত, লাল লাল আলো ঝলমলে শহর দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগছিলো। ঢাকা শহর আর নিউইয়র্ক শহর –পার্থক্য এত বেশী যে সব কিছুতেই বিস্ময় বোধ ই বেশী ছিলো। এত ধূলা মুক্ত বাতাস, এত পরিষ্কার রাস্তা ঘাট, সুসজ্জিত-সুপরিকল্পিত বাড়ী ঘর –এ যেন সত্যি ই ভূস্বর্গে এলাম । কিন্তু স্বর্গে এলে কি? আমি তো আমার সাত ভাই-বোন, মা বাবা আর সব আত্মীয় স্বজন রেখে এলাম! স্বর্গ সুখ কি একা একা উপভোগ করা যায়?
    আমারিকা আসার আগেই আমি জেনে এসেছি- এই দেশে আসার পর আমি কি কি অসুবিধার মধ্যে পড়বো। নতুন দেশ, ভিন্ন ভাষা –সম্ভাব্য সব বিপদের কথা আমি দেশে থাকতেই ওয়াকেবহাল ছিলাম। তাই এই দেশে আসার পর জলের মাছ ডাঙায় উঠালে যেমন হয়- আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। আসার সাথে সাথেই একটা কাজ পাই। আড়াই দিন কাজ করার পরই কাজ থেকে বাদ পড়ি, কিন্তু আমার একটুও খারাপ লাগেনি। কারন আমি জানতাম ‘সকালে Hire, বিকালে fire’। আমাদের প্রথম বাসা ছিলো জ্যাকসন হাইটস এ। সাবলেট থাকতাম। বাসাটা ছিল ছারপোকায় ভর্তি । আমি ছেলেদের নিয়ে শুধু জ্যাকসন হাইটস এর রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম। ওরা খুব খুশী।
    এইখানে আসার পর ই জানলাম আমার হাসবেন্ডের কোনো চাকরি নেই। এতেও আমি অবাক হইনি। ছেলেদের কে সাথে নিয়েই চাকরি খুঁজতাম , ছোট খাট চাকরি পেয়েও গেলাম। তাই দিয়েই বাসা ভাড়া আর খাওয়ার খরচ চালাতাম। সে এক কঠিনতর জীবন। হাসবেন্ড বলে সে অড জব করতে পারবে না, আমার কাছে অড জব বলে কিছু নেই। সব ই কাজ, কাজের বিনিময়ে ডলার। আমার তো কাজ করার পারমিশান ছিলো না, তাই খুব অল্প বেতনে বাঙ্গালী এক ডেন্টিস্টের ক্লিনিকে কাজ নিই। দিনে দশ ঘন্টা করে কাজ করতাম। কয়েক মাস পর গ্রীন কার্ডের জন্যে এপ্লাই করি। সে এক বিশাল সমুদ্র একা সাঁতার কেটে পাড়ি দেওয়ার মত অবস্থা। তবে এই সময় দেশ থেকে আমার ভাই-বোন খুব সহযোগীতা করেছে, ওরা খুব সাহায্য করেছে। কিছু কিছু বন্ধুও দেশ থেকে উল্লেখ যোগ্যভাবে সাহায্য করেছে। তার মধ্যে অশোক ভৌমিক একজন। উনার ছেলে আমার ছেলের সাথে পড়তো। তাছাড়া আমার রুগীও ছিলো উনারা। এদেশের কিছু কিছু বাঙ্গালীরাও আমাকে সাহায্য করেছে। অধিকাংশ বাঙালি- নিজেরাই অসহায়, অন্য কে সাহায্য করবে কি ভাবে। তাছাড়া সবাই অতি পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে চলেছে-তাই হয়তো অন্য কেউ তারই পাশে থেকে উপরে উঠে যাবে-এইটা মনে হয় মানতে চাইতো না, বা কেউ মানতে পারে না। এটা মানুষের স্বভাব। তাছাড়া বাঙ্গালীদের স্বভাব একটু ঈর্ষা পরায়ন। আমি যে মেয়ে মানুষ হয়ে ছয়দিন দশ ঘন্টা করে কাজ করা, কাজ শেষে বাজার করা, রান্না করা, ছেলেদের পড়াশুনা করানো -এই গুলো অনেকেই পছন্দ করতো না। আমার সমালোচনা করতো, এই গুলো আবার কিছু কিছু আমি অবগত ছিলাম। যেমন আমার টাকার প্রতি অনেক লোভ, তাই এত কাজ করি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার ছেলে দুটো পড়াশুনায় ভাল, ওরা বেবী সিটারের বাসায় বসেই হোম ওয়ার্ক করে ফেলতো। আমি অনেক দিন রান্না করতে করতে অন্তুর পড়াতাম। চার বছরের মধ্যে গ্রীন কার্ড হয়ে গেলো, সঙ্গে সঙ্গে কলেজে ভর্তি হয়ে গেলাম। নিজের জমানো টাকা দিয়েই পড়াশুনা শেষ করলাম। এই দেশে পড়াশুনা যেমন সহজ, তেমন ই কঠিন। সময় দিতে হয়। সারাদিন কলেজ, বাসায় রান্না, এ যেন সময়ের সাথে এক ঘোর তর যুদ্ধ। সব সময় সাথে একটা বড় ব্যাগ থাকতো, সেই ব্যাগে বই। ট্রেনে বসে পড়তাম। সময় নষ্ট করার সময় ছিলো না। তিন বছর পর পাশ করলাম, লাইসেন্স পেলাম ডেন্টাল হাইজিনিস্ট হিসেবে। তারপর চাকরি। প্রায় দুই বছর হলো চাকরি করছি। এর মধ্যে এই দেশের নাগরিক হয়ে গেছি।
    অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে বিগত দশ বছর অতিবাহিত করলাম। তবুও বলবো এই দেশে এসে আমি ভুল করিনি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ দেশ আমি বেশ উপভোগ ই করছি। কষ্ট করার মানসিকতা থাকলে এই দেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করা কোনো কঠিন কাজ নয়। বরং বাংলাদেশে এইটা সম্ভব নয়। আর পাঁচ বছরের মধ্যে আমি এই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই। তারপর পিএইচ ডি। না হয় আর দশ বছর লাগবে। ‘মহ্‌ৎ ইচ্ছা মানুষকে মহ্‌ৎ করে গড়ে তোলে’
  • prateek | 180.151.34.130 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৮:৪৮485379
  • খুব হনেস্ট লেখা,ভালো লাগল।
  • siki | 123.242.248.130 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৮:৫৫485490
  • ফ্যান্টাস্টিক! ভালো লাগল খুব।
  • aka | 75.76.118.96 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৮:৫৬485515
  • আমারও ভালো লাগল।
  • pi | 72.83.92.218 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৯:০৬485526
  • ভাল, কিন্তু মহ্‌ৎ কাকে বলে ?
  • SC | 24.3.206.153 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ০৯:১২485537
  • খুব ভালো লাগলো পড়ে।
  • Shn | 59.144.10.250 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ১৬:২১485548
  • ভালো লাগলো। আরও কিছু দিন বাদে আপনার ইচ্ছে পূরণের গল্প পড়তে চাই। শুভেচ্ছা রইল।
  • Nina | 12.149.39.84 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ১৮:৫৪485559
  • বাহ! খুব ভাল লাগল। মহৎ ইচ্ছ কি এখানে honest ambition ? মানুষের কষ্ট সার্থক হল--দেখলে মনটা আরও আশাবাদি হয়।
    শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
  • ab | 192.17.112.81 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:০১485158
  • কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন - "আমেরিকাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়/ নিজ দেশে থাকা যেন নরকের প্রায় হে নরকের প্রায়'।
  • nyara | 203.83.248.37 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:১২485180
  • আর স্যামুয়েল জনসন বলেছে, "Patriotism is the last refuge of a scoundrel.
  • Tim | 198.82.20.16 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:১২485169
  • আমারো ভালো লাগলো এই অকপট লেখা।

    আমেরিকাপ্রিয় বলে যখন কেউ কাউকে খিল্লি করেন, আমার প্রশ্ন পায়। জিগ্যেস করতে ইচ্ছে হয়, অন্যের ক্ষতি না করে, স্রেফ সুযোগ আর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের ভালো চাওয়ার মধ্যে অপরাধ কোথায়? যেখানে আমার জীবদ্দশায় নিজের দেশে প্রথম বিশ্বের সুবিধেগুলো আমি পাবোনা জানি। স্বার্থপর? নিজের দেশে থাকা কোটিকোটি মানুষও কি তাই নন?
  • rimi | 168.26.205.19 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:১৮485191
  • আরে মানুষের স্বভাবই এরকম এবিদা। খেতে পেলে শুতে চায়।
    একসময় গ্রামের লোকেরা কলকেতায় এসে থাকার জন্যে হেদিয়ে মরত, কেননা "কলকাতায় পয়সা দিলে বাঘের দুধও মেলে"। আর ছেলে বৌ নিয়ে কলকাতায় চলে গেলে বুড়ো বাবা মা রেগে আগুন কিম্বা দু:খে পাথর হয়ে যেত।

    এখন কলকাতার জায়গায় হয়েছে আমেরিকা। চিন্তা নেই, আমেরিকা শিগ্গিরি এপাড়া ওপাড়া হল বলে। বিজ্ঞানীরা এখন অন্য গ্রহের সন্ধান করছেন, এই দুদিন আগেই দেখলাম ১৬টা নতুন গ্রহ পাওয়া গেছে, যেখানে জল থাকা সম্ভব। এরপরে ছেলেপুলে সেই নতুন গ্রহে থাকতে ছুটবে, অনেক ফাঁকা, অনেক রকম সুযোগ সুবিধা, হয়ত সেই গ্রহের অ্যালিএনদের বিয়ে টিয়েও করবে, আর পৃথিবীতে থেকে যাওয়া মানুষেরা রেগে কাঁই হবে।
  • pi | 128.231.22.133 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:২৬485202
  • অকপট স্বীকারোক্তি হিসেবে ভাল লাগছে। কোটি কোটি লোকই তাই , স্বার্থপর হওয়াতে দোষেরও কিছু নাই, কতজনের তো কতরকম ইচ্ছা থাকে,সবই ঠিক আছে, ইচ্ছাপূরণের গল্প হিসেবে ভাল লাগছে পড়তে।
    কিন্তু এটাকে 'মহৎ' প্রচেষ্টা, 'মহান' স্বপ্ন, এই মহত্ব আরোপনটা একটু অস্বস্তিকর লাগছে। সে কেউ নিজে সর্বস্ব ত্যাগ করে বিপ্লব করার স্বপ্ন বা চেষ্টাকে এমন মহিমান্বিত করে দাগিয়ে দিলেও লাগতো, সে প্রচেষ্টা আমার নিজের কাছে ব্যক্তিগতভাবে মহান মনে হলেও লাগতো। :)
  • pi | 128.231.22.133 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৪২485224
  • যারা যেতে পারলো না, সেই অক্ষমদের আস্ফালন কি গদগদ দেশপ্রেমের কারণে আপত্তি, এর বাইরেও তো কেস থাকে।
    যে ইচ্ছা পূরণের জন্য এত কষ্ট করা, সেই ইচ্ছাটা কারুর কাছে ( কারুর নিজের কাছে টা বোল্ড , আন্ডারলাইন, অ্যাবসলিউট সেন্সে কিছু নয়) খুব ফাঁপা, অর্থহীন মনে হতেই পারে, সেক্ষেত্রে তার জন্য করা কষ্টটাও নিরর্থক লাগতে পারে। লাগলে কেউ বলতেই পারে। তাতে দোষের কী আছে ?
    সে রিঅ্যাকশন নিয়েই বা এত রিঅ্যাকশনের কী আছে ? :)
  • Nina | 12.149.39.84 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৪২485213
  • এইখানে মহৎ টা ঠিক ঐ ভাবে বোধহয় বলা হয়নি।
    যেমন এখানে বাংলা দেশের দোকানে মাছ কিনলে বলে
    নিয়া জান ভাবি, রাঁধেন ভাল কইরা, খুব মজা হইঅব'
    তা এখানে ঐ মজা টা যেমন --সেই মজা নয় :-))
    (ডি: আমার ধারণা এটা, ভুল হতেই পারে।)
  • aka | 168.26.215.13 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৪৫485235
  • মহত্বের কোন গ্লোবাল স্ট্যাণ্ডার্ড নেই, লেখিকা যা বলেছেন সেটা ওনার কাছে মহত আমার কাছে নাই হতে পারে। কিন্তু লোকে কিছু অ্যাচিভ করলে (বিশেষত যা মনে প্রাণে চায়) একটা সেন্স অফ অ্যাকমপ্লিশমেন্ট তৈরি হয় সেটা অনেক মানুষকেই আর চারপাঁচজন নন-অ্যাচিভারের থেকে মানসিকতায় আলাদা করে তোলে। (বাংলা পরীক্ষাটা এখন একবার দিতে দেয় না? ভাবসম্প্রসারণে ফাটিয়ে দিতাম)

  • Tim | 198.82.20.16 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৪৭485246
  • অর্থহীন, ফাঁপা কারণ নিয়ে রিয়্যাকশন? নিজের দেশে থেকে যাঁরা দিবারাত্র সেই "" অর্থহীন, ফাঁপা"" কারণের পিছনে ছোটেন, তাঁদের তো কই রঙ্গলালের প্যারডি শুনতে হয়না!
  • aka | 168.26.215.13 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৪৯485257
  • এমনটা কি করা যায় না একেবারেই?

    রাতে দেশে আর্লি ডিনার করে প্লেনে উঠব লাঞ্চটা এখানে করে ওখানে গিয়ে ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুমোতে যাব বেলা বারটায় উঠব।

    দেশে থাকার মজা আর আমেরিকায় কাজ করার মজা। সবই একসাথে।
  • Tim | 198.82.20.16 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৫১485269
  • নিজস্ব এয়ারপোর্ট আর জেট হলেই হয়।
    ও আর কয়েক বিলিয়ন ডলার লাগবে। অত টাকা থাগলে আর কেউ কাজই বা করবে ক্যানো?
  • kd | 59.93.194.41 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৫৩485280
  • কেউ যদি নিজের চেষ্টায় অন্যের কোন ক্ষতি না করে নিজের ইচ্ছেপূরণ করতে পারে, সেটাই "মহৎ প্রচেষ্টা'। সকলেই যদি তা করতে পারে, ভাবো একবার, দুনিয়াটা কেমন হবে!
  • pi | 128.231.22.133 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২২:৫৬485291
  • তিমি, সেটা কি নিশ্চিত করে বলা যায় ? দেশে থাকা কেউ এরকম কিছু লিখেছেন কি ? আর সেটা ab ই ভালো বলতে পারবেন, লিখলে তিনি আরেকটা প্যারোডি শোনাবেন কিনা :)

  • pi | 128.231.22.133 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০১485302
  • আরে কাব্লিদা, আমার পোস্টটা আরেকবার পড়ো।
    আমার কোন প্রচেষ্টাকে মহৎ মনে হতেই পারে, যেটাকে মনে হবে তাকে বলবোও। কিন্তু কেউ নিজে নিজেই সেটা দাগিয়ে দিলে বা প্রোজেক্ট করতে চাইলে অস্বস্তি হয়, এই আর কি। বল্লাম তো, কোন সর্বস্বত্যাগী স্বাধীনতা সংগ্রামী কি বিপ্লবী লিখলেও সেই অস্বস্তিটা লাগতো :)

    তবে নিনাদি যা বল্লো, এটা হয়তো ভাষার অন্যরকম ব্যবহারও হতে পারে।
  • pinaki | 122.174.11.50 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০২485324
  • সোদপুরের ঘটনাটা এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল। গতকালের খবর। এক বৃদ্ধ নিজের স্ত্রীকে খুন করে নি:সঙ্গতা থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছেন। কয়েকদিন ধরে দুজনে মিলে প্ল্যান করে নিজেদের সমস্ত সম্পত্তি উইল করে দান করে গ্যাছেন। আমাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছে ঘটনাটা। আমাদের দেশে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের দেখার জন্য কোনো সামাজিক সাপোর্ট সিস্টেম নেই। নিজেরা ভালো থাকতে চাওয়া কোনো দোষের নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য হল - আমাদের মত দেশ বলেই নিজেদের ভালো থাকতে চাওয়ার পরিণতিগুলো অনেক ক্ষেত্রেই খুব মর্মান্তিক হয়। বিশেষত: বাবা মায়েদের ক্ষেত্রে। দেশটা আমেরিকা হলে এই অস্বস্তিগুলো উঠতো না। আমার জীবন আমার জীবন, বাবা মায়ের জীবন বাবা মায়ের জীবন ভেবে নেওয়া যেত কোনো অপরাধবোধ ছাড়াই। কিন্তু বাস্তব তো সেটা নয়। তাই যতই আমরা 'প্র্যাকটিকাল' হওয়ার চেষ্টা করি না কেন, আমার ধারণা একই সাথে আমরা হয়তো একটা অপরাধবোধও বয়ে নিয়ে চলি। তাই রঙ্গলালের প্যারডিকে জাস্টা ইগনোর করে যেতে পারি না। গায়ে টেনে নিই। আমার মনে হয় সেটা এক অর্থে আমাদের সুস্থতারও লক্ষণ।
  • Tim | 198.82.20.16 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০২485313
  • ইপিস্তো,
    এটা এবি কে জিগ্যেস করার দরকার নেই। ব্রেন ড্রেন, প্রথম বিশ্বের ভোগবাদী জীবনের প্রতি লিপ্সা, এসকেপিজম, ইত্যাদি প্রভৃতি শব্দ ও কনসেপ্টকে আধার করে যত পোবোন্ধো রচিত হয়েছে, তার দশ পার্সেন্টও কি নিজের দেশে থেকে একইরকম সো-কলড স্বার্থপরতাকে নিন্দে করে লেখা হয়েছে?
    আমি বাইল্যকালে আজকালের একনিষ্ঠ পাঠক ছিলাম। ইশকুল, কলেজে বেশ বিশ্বাস করতাম সেই কনসেপ্ট। কিন্তু পরে সেইগুলোকেই অসার এবং খিল্লিযোগ্য মনে হয়েছে। এবং একচোখোমি।
  • pi | 128.231.22.133 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০৪485335
  • তিমি, হয়নি তো। হলে ভাল হতো ( আমার মতে)।
    লিখে ফ্যালো :)
    তাগাদা শুরু কল্লুম বলে :)
  • aranya | 144.160.226.53 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০৬485357
  • আমরা প্রায় সকলেই তো নিজের বা বড়জোর নিজের পরিবারের ভালর জন্য লড়ে যাচ্ছি, তার বাইরে মুষ্টিমেয় কিছু লোক যারা অন্য মানুষের, অনেক মানুষের উন্নতির চেষ্টা করে, সে বিপ্লব, সমাজসেবা যাই হোক না কেন - তাদের কি মহান বলা যায়? তাহলে একটা গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড হয়।
  • ppn | 112.133.206.18 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০৬485346
  • কমরেড পিনাকীকে মস্ত বড় ক্ক।
  • Tim | 198.82.20.16 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:০৭485368
  • ক্ষি কেলো! :-(
  • Tim | 198.82.20.16 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ ২৩:১০485380
  • পিনাকীদাকে ক, কিন্তু এর সাথে রঙ্গলালের প্যারডি গায়ে টানার কথা আসে কেন? বাবা মায়ের জন্য দেশে ফেরাও তো পরিবারের জন্যই হলো, না কি? এবং সেটাও তো সো কলড স্বার্থপরতাই হলো।
    আমি শুধু এইটাই বলছি, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ বাদে সকলেই নিজস্ব ইন্টারেস্টেই চলেন। সেটাকে খিল্লি করতে হলে নিজেকে দিয়ে শুরু করতে হয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন