এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • মঠের দেশে, পরণকথার দেশে

    I
    অন্যান্য | ১৩ অক্টোবর ২০১১ | ৬৪৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • I | 59.161.191.157 | ২২ অক্টোবর ২০১১ ২১:৪৪494648
  • কাকে সেনড করা যাবে?
  • I | 14.96.184.157 | ২৩ অক্টোবর ২০১১ ১৭:৫৮494649
  • লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান ( পূর্ব পাকিস্তানের নব নিযুক্ত গভর্নর ও জিওসি) আশা প্রকাশ করেন, দশই এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশ( তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ) সম্পূর্ণভাবে বিরোধীশূন্য হয়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তী ঘটনা-প্রবাহ যে ইয়াহিয়া ও তাঁর নানাবিধ খান-শাগরিদদের সে দুরাশাকে চুরমার করে দিয়েছিল , সেকথা সকলেরই জানা।
    ২৫-শে মার্চ রাতেই গ্রেপ্তারের কিছু আগে শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে সই করেন । ঘোষণাটি এইরকম :

    Today Bangladesh is a sovereign and independent country. On Thursday night, West Pakistani armed forces suddenly attacked the police barracks at Razarbagh and the EPR headquarters at Pilkhana in Dhaka. Many innocent and unarmed have been killed in Dhaka city and other places of Bangladesh. Violent clashes between E.P.R. and Police on the one hand and the armed forces of Pakistan on the other, are going on. The Bengalis are fighting the enemy with great courage for an independent Bangladesh. May Allah aid us in our fight for freedom. Joy Bangla.

    চট্টগ্রামের কিছু ছাত্রের হাতে শেখ মুজিবের এই ঘোষণাপত্রটি টেলিগ্রামের মাধ্যমে এসে পৌঁছয়। ২৬শে মার্চ সকাল থেকে চট্টগ্রাম শহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাটি প্রচার করা হয়। সন্ধ্যা নাগাদ চট্টগ্রামের কালুরঘাটে চালু করা হয় স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র। ২৭শে মার্চ সেখান থেকে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি পাঠ করেন। বঙ্গোপসাগরে ভাসমান একটি জাপানী জাহাজ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সেই মেসেজটির সিগন্যাল পিক আপ করে ও সেটি আবার রেডিও অস্ট্রেলিয়া ও পরবর্তীকালে বিবিসির মাধ্যমে পুন: প্রচারিত হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
  • I | 14.96.157.158 | ২৩ অক্টোবর ২০১১ ২২:১৭494650
  • প্রথম দফার স্বত:স্ফুর্ত নেতৃত্বহীন প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে গেলেও মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা ক্রমেই বাড়তে থাকে। প্রতিদিনই পাক আর্মির বাংলাদেশী সৈন্যরা এবং অজস্র সিভিলিয়ান তরুণ-হ্যাঁ, তরুণীরাও- মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিতে থাকেন। বাংলার বর্ষার নদী ক্রমেই ফুলে-ফেঁপে ওঠে; "রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইন্টার, এবার শালারা দেখুক বাংলার জেনারেল মনসুন'-এই কথা লিট্যারালি ও মেটাফোরিক্যালি-দুই অর্থেই সত্যি হয়ে উঠতে থাকে। বর্ডার বরাবর-পূর্ব পাকিস্তান ও সন্নিহিত ভারতবর্ষের পশিমবঙ্গ, আগরতলায় মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প ও প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপিত হয়। ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার চলমান এই মুক্তিযুদ্ধকে আগে থেকেই পরোক্ষভাবে সামরিক ও রাজনৈতিক সাহায্য দিয়ে আসছিল। সমগ্র বাংলাদেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করে মুক্তিবাহিনীর কম্যান্ডার ইন চীফ এম.. জি. গনি প্রতিটি সেক্টরের জন্য একজন করে কম্যান্ডার নিযুক্ত করেন। নিয়মিত সামরিকবাহিনীর সঙ্গে গড়ে তোলা হয় প্রশিক্ষিত গেরিলা বাহিনী, মূলত: অসামরিক তরুণদের নিয়ে। অগাস্ট মাস বরাবর আর্বান গেরিলা তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে। এঁদের মূল লক্ষ্য ছিল ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। বিস্ফোরক হিসেবে এঁরা মূলত: ব্যবহার করতেন ফার্নিচারের দোকানে ব্যবহৃত পুটির মত দেখতে নিরীহদর্শন হলুদ রংয়ের প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ, সংক্ষেপে পিকে; এছাড়া অস্ত্র হিসেবে স্টেনগান, গ্রেনেড, এস. এম . জি, কখনো কখনো রকেট লঞ্চার।

    অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে মুক্তিবাহিনীর নিয়মিত সৈন্যরা ৩৭০টি বর্ডার আউটপোস্টের মধ্যে ৯০টি দখল করে নেয়। সাময়িকভাবে হলেও লালমণিরহাট এয়ার-স্ট্রিপের দখল চলে যায় মুক্তিবাহিনীর হাতে, যার স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব ( ভারতীয় রসদ-অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই বিমান অবতরণের কাজে) ছিল অপরিসীম। রাজধানী ঢাকায় গেরিলা আক্রমণে যথেষ্ট নাজেহাল হয় সামরিক সরকার।
  • I | 14.96.157.158 | ২৩ অক্টোবর ২০১১ ২২:৪৪494651
  • জাহানারা ইমাম, শহীদ-জননী , ছিলেন এরকম এক গেরিলা যোদ্ধার মা। তাঁর জ্যেষ্ঠ সন্তান রুমী অপারেশন সার্চলাইটের কিছুদিন পরেই মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে যোগ দিতে ঢাকা ছেড়ে আগরতলার কাছে মেলাঘরে (সেক্টর টু) চলে যান। এই রুমী পরে ঢাকা শহরে ফিরে এসে দু:সাহসী সব গেরিলা আক্রমণ চালিয়েছিলেন; অবশেষে পাকিস্তানের ঘাতক-বাহিনী গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাঁকে ইন্টারোগেশনের নাম করে তুলে নিয়ে যায়। আর কোনোদিন তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।

    ---

    "... দেখতে কেমন তুমি? কি রকম পোশাক আশাক
    প'রে করো চলাফেরা? মাথায় কি আছে জটাজাল?
    পেছনে দেখাতে পারো জ্যোতিশ্চক্র সন্তের মতন?
    টুপিতে পালক গুঁজে অথবা জবর জং , ঢোলা
    পাজামা কামিজ গায়ে মগডালে একা শিস দাও
    পাখির মতই কিংবা চা-খানায় বসো ছায়াচ্ছন্ন?
    দেখতে কেমন তুমি? অনেকেই প্রশ্ন করে, খোঁজে
    কুলুজি তোমার আতিপাতি ! তোমার সন্ধানে ঘোরে
    ঝানু গুপ্তচর, সৈন্য, পাড়ায় পাড়ায়। তন্ন তন্ন
    করে খোঁজে প্রতি ঘর।

    আমি উঠে বসে জিগ্যেস করলাম, "কার কবিতা এটা?'
    "ঢাকার এক বিখ্যাত কবির। নামটা ভুলে গেছি। শাহাদত ভাই আর আলম মাঝে-মাঝে ওঁর কাছ থেকে নিয়ে যায় ওপারে। মেলাঘরে আমরা কবিতাগুলো পড়ি। ভালো লাগলে দু-একটা কপি করে রাখি, তারপর ওগুলো কলকাতায় কার কাছে যেন পাঠিয়ে দেওয়া হয়।'
    " এটা তো তোদের নিয়েই লেখা বলে মনে হচ্ছে।'
    "হ্যাঁ, এটার নাম "গেরিলা'- বাকিটা শোন :

    পারলে নীলিমা চিরে বের
    করতো তোমাকে ওরা, দিতো ডুব গহন পাতালে।
    তুমি আর ভবিষ্যৎ যাচ্ছো হাত ধরে পরস্পর।
    সর্বত্র তোমার পদধ্বনি শুনি, দু:খ-তাড়ানিয়া।
    তুমি তো আমার ভাই, হে নতুন, সন্তান আমার ।''
    (একাত্তরের দিনগুলি : জাহানারা ইমাম )

    রুমী যে কবির নাম সেদিন নিরাপত্তার খাতিরে বলতে চান নি, এখন আমরা সবাই জানি, তাঁর নাম শামসুর রাহমান।
  • aranya | 68.38.243.161 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ০৮:৪১494652
  • খুব ভাল লাগছে ইন্দো, বিষণ্ন-ও লাগছে। হু আ-র মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ওপর উপন্যাস 'জ্যোছনা ও জননীর গল্প' পড়ছি, তার সাথে তোমার লেখা।
    বাংলাদেশে পাক অর্মির এই জেনোসাইডের কোন বিচার হল না, আর হবেও না। যুদ্ধজয়ের পরপরই ভারত চাপ দিলে হয়ত কিছু হতে পারত।
  • kallol | 119.226.79.139 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ১৪:২৩494654
  • যাত্তারা। ভারত আবার চাপ দেবে কি? ভারতের চাপেই তো পাকিস্তান পাউদের বিচার হলো না। তাদের তো পাউ বলে জামাই আদরে ঘরে ফিরিয়ে দিলো ভারতই।
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ১৮:১২494655
  • ইন্দোদাদা, খুব দু:খিত ঐদিন ঐটইটা ঘেঁটে দেবার জন্যে। দুদিন ইন্টার্নেট ছিল না, ফোন থেকে কিছু লিখতে গিয়ে কেমন করে যেন গুরুতে একটা ভুল পোস্ট হয়ে গেল, এই টইতে।

    তুমি লেখ। ভালো লাগছে বললেও কিছুই আসলে বলা হয় না। নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে ফেললাম আবার, আর ঢাকার একটা নিমন্ত্রণও বাগিয়ে নিলাম :-)
  • Nina | 12.149.39.84 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ১৯:৩৪494656
  • খুব মন দিয়ে পড়ছি---যত পড়ছি তত --আরও পড়তে মন চাইছে, আরো জানতে মন চাইছে।
    তোমার লেখা বড় মনকাড়া, ডাগদার!
  • I | 14.96.209.42 | ২৫ অক্টোবর ২০১১ ০১:০৩494658
  • মরিয়া হয়ে পাকিস্তানের সামরিক সরকার ৩রা ডিসেম্বর , ১৯৭১-এ উত্তর-পশ্চিম ভারতের পুঞ্চ-রাজৌরি সহ ১১টি এয়ার বেসে ( আগ্রা ছিল এদের অন্যতম ) বিমান -হানা শুরু করে, যার নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন চেঙ্গিজ খান। ইজরায়েল এয়ার-ফোর্সের অপারেশন ফোকাস-এর অনুসরণে এই বিমান হানার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধকে পশ্চিম রণাঙ্গনে সরিয়ে আনা, পশ্চিম সীমান্তে মোতায়েন ভারতীয় বিমান বাহিনীর ওপরে বড় ধরণের আঘাত হানা, যাতে অদূর- ভবিষ্যতে পূর্ব রণাঙ্গনে ভারতীয় বিমান -বাহিনী কোনো বড়সড় ইমপ্যাক্ট ফেলতে না পারে। কিন্তু পাকিস্তান ইজরায়েল নয়, সামরিক সরকার তার বুকের ওপর বসে থাকলেও নয়। বড়জোর ৫০টি বিমান তারা এই বিমান -হানায় ব্যবহার করেছিল। এবং ভারত আগে থাকতেই এধরণের আক্রমণ আঁচ করে জরুরি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। ফল হয় এই যে, বড়সড় ক্ষতি তো দূরস্থান, পাক বিমান হানার ঘন্টা কয়েকের মধ্যে ভারতীয় বিমান বাহিনী রিট্যালিয়েট করতে শুরু করে। পরদিন ভারতীয় বিমান হানার তীব্রতা আরো বাড়ে।

    এই বিমান হানা উল্টে ভারতকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে নামার সুযোগ করে দেয়। এতদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণ কেবল রাজনৈতিক সমর্থন এবং লজিস্টিক্স যোগানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, এইবার ভারত খুলে আম যুদ্ধ ঘোষণা করে। ভারতীয় বিমান বাহিনী-নেভাল ফোর্স -পদাতিক বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে বন্দর শহর করাচি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। পাক নেভি বিরাট ধাক্কা খায়।
    ওদিকে পূর্ব পাকিস্তানে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের আক্রমণে শামসের নগর, লালমুণিরহাট,তেজগাঁও ও কুর্মিটোলা-র এয়ার স্ট্রিপ গুঁড়িয়ে যায়; পাকিস্তানের বিমান বাহিনী ( ১৪ নং স্কোয়াড্রন ) পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়ে। যুদ্ধ ঘোষণার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের আকাশ সীমা চলে যায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর দখলে। যুদ্ধজাহাজ আই এন এস বিক্রান্ত থেকে বোমারু বিমান হামলা চালানো হয় চট্টগ্রাম , কক্স বাজার ও বরিশালের ওপর; ফলত: পাকিস্তান নেভি'র ইস্টার্ণ উইং একরকম গুঁড়ো হয়ে যায়। নবগঠিত বাংলাদেশ নেভির অপারেশন জ্যাকপট আক্রমণে এর অনেক আগেই অবশ্য ( ১৬ই অগাস্ট, ১৯৭১) পাকিস্তান নেভি বড়ধরণের ক্ষতিস্বীকার করেছিল।

    স্থল-জল-অন্তরীক্ষ সর্বত্র পর্যুদস্ত-আহত-অবরুদ্ধ পাক সেনা বাহিনীর পক্ষে এরপর আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভবপর ছিল না। ১৬ই ডিসেম্বর , ১৯৭১ সাল- ভারতীয় সময় বিকেল ৪টে ৩১ মিনিটে রমনা ময়দানে পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর পক্ষে লে: জেনার‌্যাল এ . কে. নিয়াজি ভারতের লে: জেনার‌্যাল জগজিৎ সিং অরোরা-র কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণ করেন ৯০ হাজার প্রিজনার অফ ওয়ার , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বিপুল পরিমাণ আত্মসমর্পণের আর কোনো নজির বিশ্ববাসী দেখেনি।

    জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। ত্রিশ লক্ষ বাঙালীর প্রাণের বিনিময়ে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে।

    ---
  • aranya | 144.160.98.31 | ২৫ অক্টোবর ২০১১ ০২:০৫494659
  • কল্লোল-দা, আমি ওটাই বলতে চেয়েছিলাম, ভারত যদি পাউ বলে জামাই আদরে ঘরে না ফিরিয়ে, হত্যাকারী, ধর্ষক ও অত্যাচারী হিসাবে বিচারের চেষ্টা করত ......
  • kallol | 115.241.124.22 | ২৫ অক্টোবর ২০১১ ০৮:৩৯494660
  • অরণ্য ভাই আমার। একমত। কিন্তু, ওসব বাদ্দে। ইন্দো বড়ো ভালো লিখছে। আমাদের আলুচানা অন্যত্র হোক। এ টইটা ইন্দোর টই হয়েই থাকুক।
    ইন্দো। আরও লেখো, অনেক লেখো।
  • siki | 123.242.248.130 | ২৫ অক্টোবর ২০১১ ০৮:৫৫494661
  • সুপল্লাইক, সুপাল্লাইক।

    আমি যদিও ইন্দোদাদারে এসেমেস পাঠাবো না।
  • PM | 86.96.228.84 | ২৫ অক্টোবর ২০১১ ১১:৫৯494662
  • I খুব ভালো লাগল লেখা।

    আমি মুক্তি যুদ্ধের ওপোর দুটো ইন্টারেস্টিং বই পরলাম সম্প্রতি...
    ক) পাকিস্থানী জেনেরলে্‌দর মন (মুনতাসীর মামুন): এটাতে যুদ্ধের সময়কার পাক সামরীক কমান্ডার দের সক্ষাৎকার আছে। এটা একটা নতুন দৃস্টিকোন থেকে মুক্তিযুদ্ধ-কে দেখা।
    খ) মুক্তি যুদ্ধের পুরবাপর (এ কে খন্দকার/মইদুল হাসান) : এটাতে মুক্তি যুদ্ধের ঠিক পরের ঘটনাবলি, রাজনৈতিক টানাপোরেন-এর বর্ননা পাবেন

    দুটো বৈ-ই নেট-এ পাওয়া যাচ্ছে
  • I | 14.96.201.137 | ২৬ অক্টোবর ২০১১ ০০:৫৩494663
  • সাভার থেকে বেরিয়ে আবার ফিরে চললাম ঢাকা'র দিকে। সুষেণ জানাল , পথেই পড়বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানকার বিলে প্রচুর পাখী দেখা যায়। রফিক ভাইও হ্যাঁ হ্যাঁ করে মাথা নাড়লেন। ছবি পাওয়ার আশায় আমি উত্তেজিত, তাহলে চলো জাহাঙ্গীরনগর !

    বিশাল এলাকা জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়। গেটে পুলিশ দাঁড়িয়ে, সব গাড়িকে ঢুকতে দেয় না। আমাদের গাড়িটি সচিবালয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়, সামনের কাচে সচিবালয়ের নাম-লেখা স্টিকার লাগানো; পুলিশ একগাল হেসে বলল- দেইখ্যাই বুজজি, সচিবালয় !
    কিন্তু সব ভালো যার শেষ ভালো হল না। বছরের এই সময়ে বিলে কোনো পাখী থাকে না। পাখী আসে শীতকালে, তারা সব পরিযায়ী পাখী, এখন তারা দূর সাইবেরিয়ায় ছানা-পোনা মানুষ করতে ব্যস্ত। ক্যাম্পাসের ভেতরটা ঘন সবুজ, অজস্র গাছপালা, দেখে সঙ্গীতা'র শান্তিনিকেতনের কথা মনে পড়ে গেল। খুব বেশী ছাত্রছাত্রী নেই, এখন বোধ হয় পূজার ছুটি। প্রেমট্রেমও কেউ বিশেষ একটা করছে না। এ কেমন কাণ্ড ? প্রেম কেন করবে না ! এরাও কি তাহলে সব পরিযায়ী পাখী হয়ে গেল?

    ঢাকায় ঢুকতে ঢুকতে বেলা বাড়ল। অফিস আওয়ার নয়, তবে স্কুল-টুল ছুটি হচ্ছে, সরু রাস্তায় ছাত্রছাত্রীদের দঙ্গল, হাল্কা করে জ্যাম শুরু হয়ে গেছে। আমরা চলেছি "৩২ নম্বর'। আসলে এটি একটি বাড়ির নম্বর, ৩২ নম্বর ধানমণ্ডি , শেখ মুজিবের বাসভবন। ১৫ই অগাস্ট, ১৯৭৫ সালের ভোরবেলা এই বাড়িতেই বঙ্গবন্ধু সপরিবারে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে খুন হন। রক্ষা পান শুধু তাঁর দুই কন্যা , শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, তাঁরা তখন পশ্চিম জার্মানীতে ছিলেন।
    বাড়িটিকে এখন একটি মিউজিয়ামে পরিণত করা হয়েছে; ঢাকার লোকেরা একে "৩২ নম্বর' বলেই জানেন।
  • I | 14.96.201.137 | ২৬ অক্টোবর ২০১১ ০১:৩৭494664
  • আশেপাশের আর পাঁচটা বাড়ি যেমন, এটিও সেইরকম- বাইরে থেকে একটি সাধারণ দোতলা বাড়ি। পাশের বাড়িগুলোর সঙ্গে দূরত্বও তেমন নেই, আশপাশের সবক'টা বাড়িই বেশ গায়ে গা লাগানো। তিনতলা বাড়ি, সামনে ঢোকার মুখে মাধবীলতার কেয়ারি। একটু আগে ছুটকোছাটকা বৃষ্টি হয়ে গেছে। এখানে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ নিষেধ।

    বাড়ির সামনেই অপ্রসন্নমুখে এক ভদ্রমহিলা কিছু বই-পুস্তক নিয়ে বসে আছেন; এগুলো বিক্রির জন্য। নিচতলায় বড় হলঘরে ছবির গ্যালারী। যে সব ছবি এখন ইতিহাসের অংশ, মওলানা ভাসানী-র সঙ্গে মিছিলে হাঁটছেন শেখ মুজিব, রমনা ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ দিচ্ছেন শেখ মুজিব, আয়ুব খানের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছেন শেখ মুজিব। মুক্তিযুদ্ধের অজস্র ছবি-প্রশিক্ষণরত মুক্তিবাহিনী, ঢাকার রাজপথে প্রতিবাদী মানুষমিছিল, মিছিলের পুরোভাগে এগিয়ে এসেছে একটি খালি-গা শিশু, তার হাফ-প্যান্টটি সম্ভবত: বোতামবিহীন, কোমরের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা। উদ্যত হাত তার আকাশের দিকে, সেই পিচ্চি, কত বয়স হবে তার, আমার টুংকাইয়ের বয়সী? এটি একটি বিখ্যাত ছবি, আমি ইন্টারনেটে এই ছবি আগে দেখেছি ; আজকে কিন্তু দেখে মন হুহু করে উঠল। স্থানমাহাত্ম্য ! কোথায় গেল এই শিশুটি, কী নাম ওর, ও কি বেঁচে আছে এখন স্বাধীন বাংলাদেশে? ও কি হাড্ডি খিজিরের সন্তান , মিছিলে একলা ছেড়ে দিল , কেমন মা -বাবা ওর , কোথায় তারা? আদৌ কি কখনো ছিল তারা, ওর মা, ওর বাবা? ও কি অযোনিসম্ভব এক শিশু, - "ভাত দে'- বলে ওর ন্যাংটো পা তুলে দিয়েছে আকাশে? দ্রোহজাতক- আমি মনে মনে বলি- বেঁচে থাকলে তোমার বয়স আমার চেয়ে সাত-আট বছর বেশীই হবে , কেমন আছো তুমি? চুলে কি পাক ধরেছে, মাথায় কিস্তি টুপি, দাড়িতে মেহেদি, অনাহারে-অর্ধাহারে তোমার চামড়া কি ঝুলে পড়েছে, যমুনার পলি খেয়ে ফেলেছে তোমার নখ? তোমার আর আমার পথ কোনোদিনই মিলবে না, আমি স্বাধীনতার পুষ্ট সন্তান, তুমি শহরের রাজপথে খিদেয় পুড়তে পুড়তে একদিন নিজেই আগুন হয়ে উঠেছিলে, তারপর থেকে আর কেউ তোমার মানুষমুখ কোনোদিন দেখতে পেল না। উনপঞ্চাশ আগুনে মিশে গেছো তুমি, আবার কখন কোন রাজপথে জ্বলে উঠবে তুমি, পাবক, সে শুধু তুমিই জানো !

    (ছবির লিংকটি দেওয়া হল :)
  • I | 14.96.201.137 | ২৬ অক্টোবর ২০১১ ০১:৫৩494665
  • আশেপাশের আর পাঁচটা বাড়ি যেমন, এটিও সেইরকম- বাইরে থেকে একটি সাধারণ দোতলা বাড়ি। পাশের বাড়িগুলোর সঙ্গে দূরত্বও তেমন নেই, আশপাশের সবক'টা বাড়িই বেশ গায়ে গা লাগানো। তিনতলা বাড়ি, সামনে ঢোকার মুখে মাধবীলতার কেয়ারি। একটু আগে ছুটকোছাটকা বৃষ্টি হয়ে গেছে। এখানে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ নিষেধ।

    বাড়ির সামনেই অপ্রসন্নমুখে এক ভদ্রমহিলা কিছু বই-পুস্তক নিয়ে বসে আছেন; এগুলো বিক্রির জন্য। নিচতলায় বড় হলঘরে ছবির গ্যালারী। যে সব ছবি এখন ইতিহাসের অংশ, মওলানা ভাসানী-র সঙ্গে মিছিলে হাঁটছেন শেখ মুজিব, রমনা ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ দিচ্ছেন শেখ মুজিব, আয়ুব খানের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছেন শেখ মুজিব। মুক্তিযুদ্ধের অজস্র ছবি-প্রশিক্ষণরত মুক্তিবাহিনী, ঢাকার রাজপথে প্রতিবাদী মানুষমিছিল, মিছিলের পুরোভাগে এগিয়ে এসেছে একটি খালি-গা শিশু, তার হাফ-প্যান্টটি সম্ভবত: বোতামবিহীন, কোমরের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা। উদ্যত হাত তার আকাশের দিকে, সেই পিচ্চি, কত বয়স হবে তার, আমার টুংকাইয়ের বয়সী? এটি একটি বিখ্যাত ছবি, আমি ইন্টারনেটে এই ছবি আগে দেখেছি ; আজকে কিন্তু দেখে মন হুহু করে উঠল। স্থানমাহাত্ম্য ! কোথায় গেল এই শিশুটি, কী নাম ওর, ও কি বেঁচে আছে এখন স্বাধীন বাংলাদেশে? ও কি হাড্ডি খিজিরের সন্তান , মিছিলে একলা ছেড়ে দিল , কেমন মা -বাবা ওর , কোথায় তারা? আদৌ কি কখনো ছিল তারা, ওর মা, ওর বাবা? ও কি অযোনিসম্ভব এক শিশু, - "ভাত দে'- বলে ওর ন্যাংটো পা তুলে দিয়েছে আকাশে? দ্রোহজাতক- আমি মনে মনে বলি- বেঁচে থাকলে তোমার বয়স আমার চেয়ে সাত-আট বছর বেশীই হবে , কেমন আছো তুমি? চুলে কি পাক ধরেছে, মাথায় কিস্তি টুপি, দাড়িতে মেহেদি, অনাহারে-অর্ধাহারে তোমার চামড়া কি ঝুলে পড়েছে, যমুনার পলি খেয়ে ফেলেছে তোমার নখ? তোমার আর আমার পথ কোনোদিনই মিলবে না, আমি স্বাধীনতার পুষ্ট সন্তান, তুমি শহরের রাজপথে খিদেয় পুড়তে পুড়তে একদিন নিজেই আগুন হয়ে উঠেছিলে, তারপর থেকে আর কেউ তোমার মানুষমুখ কোনোদিন দেখতে পেল না। উনপঞ্চাশ আগুনে মিশে গেছো তুমি, আবার কখন কোন রাজপথে জ্বলে উঠবে তুমি, পাবক, সে শুধু তুমিই জানো !

    (ছবির লিংকটি দেওয়া হল :)

  • I | 14.96.97.97 | ২৬ অক্টোবর ২০১১ ০৭:৩৩494666
  • আরো দেখলাম। ঢাকা পুনর্দখলের পর রাজপথ দিয়ে সার বেঁধে অবরুদ্ধ নগরীতে ঢুকছেন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা, অস্ত্র কাঁধে নিয়ে, পরনে মিলিটারি পোশাক। কাদের সিদ্দিকির নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী মুজিবের সামনে অস্ত্র সমর্পণ করছেন স্বাধীনতার পরে। দেখে চমকে উঠেছিলাম, এক মুখ নরম কার্লি দাড়িতে যেন চে গুয়েভারা। ফিরে এসেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ লড়তে। বাংলার চে গুয়েভারা। কাদের সিদ্দিকি।

    চে'র কথায় মনে এল ফিদেলের কথা। দেওয়ালের আর এক পাশে ফিদেলের সাথে করমর্দনরত মুজিবের ছবি, দুজনেই হাসছেন। রয়েছে অন্যান্য রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে ছবিও ; রয়েছেন সামরিক পোশাক পরা ছিপছিপে এক রাষ্ট্রনেতা, হাত মেলাচ্ছেন মুজিবের সঙ্গে, প্রথম দর্শনে চেনাই যাচ্ছে না তাঁকে। লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গদ্দাফি। ইতিহাসের কেমন হাসি, আর কিছুকাল পরে মুজিব-হত্যার দুই মুখ্য নায়ক মেজর ফারুক ও রশিদ বাংলাদেশ ছেড়ে আশ্রয় নেবেন লিবিয়ায়, গদ্দাফি-স্নেহে পালিত হবেন ত্রিপোলি-গেহে। এরও অনেক পরে মুয়াম্মার গদ্দাফি চিঠি লিখবেন শেখ হাসিনাকে, কোরানের সূরা উদ্ধৃত করে অনুরোধ জানাবেন পিতৃঘাতকদের ক্ষমা করে দিতে।

    দোতলায় উঠলাম। এই অংশে মুজিব-পরিবারের শয়নকক্ষ, ডাইনিং রুম , গোসলখানা। ৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট রক্তস্নানের পর যে অবস্থায় পাওয়া গেছিল, সেটি প্রায় অবিকৃত রাখার চেষ্টা হয়েছে। সর্বত্র অগণন বুলেটের ছিদ্র, সেগুলোকে পুরু স্বচ্ছ কাচের টুকরো দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। দেয়ালে বুলেট, আলমারিতে বুলেট, বুক কেসে বুলেট, বুলেটবিদ্ধ বই, বাথ টাবে বুলেট , ছাদের আনাচে কানাচে বুলেট। ছাদের মাঝখানে ছেতরে লেগে আছে কার রক্তমাখা চুল, সেটিও কাচ দিয়ে ঢাকা। দেখলাম সেই সিঁড়ির ধাপ, মুজিবকে যেখানে বুলেটে বুলেটে ঝাঁঝরা করে হত্যা করা হয়েছিল। সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে গড়িয়ে নেমেছিল রক্তধারা, সেটিকে কাচ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে, তার ওপরে রক্তগোলাপের পাপড়ি ছড়ানো। এক দেওয়ালে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা, অন্য দেওয়ালে একটি তৈলচিত্র -গুলিবিদ্ধ মুজিব যন্ত্রনায় মুখ বিকৃত করে পড়ে যাচ্ছেন।
    হত্যাকারীরা কাউকেই রেহাই দেয় নি, কো-অর্ডিনেটেড অ্যাটাকে ৩২ ধানমণ্ডি ছাড়াও ঢাকার অন্যত্র মুজিবের বাকি সব আত্মীয়দেরও সেই ভোর রাত্রে হত্যা করা হয়। ঢাকার রাস্তায় ভারি ট্যাংক নামে। মুজিবের নিজস্ব প্যারামিলিটারি ফোর্স রক্ষীবাহিনীকে ট্যাংক দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। ধানমণ্ডির আবাসে, মুজিব , তাঁর স্ত্রী, তাঁর তিন ছেলে, দুই পুত্রবধূ সবাইকে খুন করা হয়। ছোট ছেলে শেখ রাসেল (আট বছর বয়সী) অনেক কাকুতিমিনতি করে-আমাকে আমার মায়ের কাছে নিয়ে চলো। আমাকে ছেড়ে দাও, তোমরা যা বলবে আমি তাই করবো। আমাকে আমার হাসু আপার কাছে জার্মানীতে পাঠিয়ে দাও, আমি আর কোনোদিন বাংলাদেশে ফিরবো না। শোনা যায় শিশুর কান্নায় বিগলিত হয়ে একজন হাবিলদার তাকে লুকিয়ে রাখেন; কিন্তু অল্প সময় পরেই একজন উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসার তাকে খুঁজে পেয়ে গুলি করেন।

    বেরিয়ে এলাম। ভারী মন। আকাশটাও ভারী। ভীষণ নিরিবিলি চারদিকে,পেঁপে পাতায় জল ঝুলে আছে, পেছনদিকের এক হাইরাইজের তেতলায় স্কার্ফ-বাঁধা একটি মেয়ে হাসছে, একটি ছেলে ঝুঁকে তার সঙ্গে কথা বলছে, ওরা কি প্রেমিকপ্রেমিকা? পায়রার বাসায় পায়রারা শুধু বুক ফুলিয়ে মাথা নাড়িয়ে বকবকম করছে, হয়তো প্রেমনিবেদন। মুজিবের পায়রা পোষার শখ ছিল। পায়রার ঘরে কি এইসব রক্ত-আর্তনাদের কোনো সাক্ষী আছে, কোনো প্রত্যক্ষদর্শী? পায়রারা কি এত বছর বাঁচে? থাকলে সে কি বলছে আজ, কিছু কি বলছে, এত রক্তপাত, ভাইয়ের হাতে ভাইয়ের খুন, মানুষের নির্বিকার হত্যালীলা, রক্ত-মেদ-বসা'র স্রোত দেখে সে বোবা হয়ে যায় নি তো?
  • lcm | 69.236.173.108 | ২৬ অক্টোবর ২০১১ ১১:৩১494667
  • দুরন্ত...
  • I | 14.99.71.161 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ০০:৫৮494669
  • মুজিবের শাসনকাল বড় সুখের সময় ছিল না। সদ্যস্বাধীন দেশ, চারিদিকে অরাজকতা, চরম দুর্নীতি। স্বজনপোষনের অভিযোগ উঠছিল শাসকদের বিরুদ্ধে। অজস্র ছোট ছোট দল, তারা মুক্তিবাহিনীর নাম করে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছে, স্বাধীনতার পরেও তারা অস্ত্র সমর্পণ করেনি। লুঠমার চলেছে গ্রামে গ্রামে। সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টি-র অতি বাম ঝোঁক , তারা সশস্ত্র বিপ্লবের লক্ষ্যে হিংসার রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে মুজিব গড়ে তুললেন রক্ষীবাহিনী, তারা একমাত্র মুজিবের প্রতি অনুগত একটি প্যারা মিলিটারি বাহিনী। এই রক্ষীবাহিনীর খুব সুনাম ছিল না, তাদের হাতে খুন হয়ে যেতে হয়েছে বহু বিরোধী নেতা-কর্মীকে। রক্ষীবাহিনীকে মুজিব সংবিধান-বহির্ভুত ক্ষমতা দিয়েছিলেন। সে এক অন্ধতার সময় , কার মায়াবাণে বশীভূত যোদ্ধারা চরম আত্মঘাতে মত্ত; যে যাকে পারছে মারছে, কিছুদিন আগেও অথচ এরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে।
    মুজিবের ছিল সমাজতান্ত্রিক ঝোঁক, তিনি বাংলাদেশকে একটি সেকুলার রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন; সংবিধানের মূল নীতি হিসেবে "জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র' গৃহীত হয়। সেই মুজিব পরের দিকে প্রাতিষ্ঠানিক ইসলামের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়েন। ইসলামিক অ্যাকাডেমি-কে পুনরুজ্জীবিত করা হয়, ১৯৭২ সালে এই সংস্থাটিকে পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ শেষে আগের মত আর "জয় বাংলা' উচ্চারণ করতেন না, বলতেন "খোদা হাফেজ'। যুদ্ধাপরাধীদের গণ-ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়, এদের অনেকেই অতি দক্ষিণপন্থী জামাত/রাজাকার/আল-বদর/আল-শামস-এর সদস্য।

    তবে শিশুরাষ্ট্রের টালমাটাল গণতন্ত্রের গায়ে প্রথম বড় আঘাতটি হানলেন মুজিব ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি, যেদিন তিনি বাংলাদেশে জরুরী অবস্থা জারি করলেন। তৈরী হল মুজিবের নতুন দল -আওয়ামী লীগ ও কৃষক সমিতি পার্টি মিলিয়ে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি আওয়ামী লীগ, সংক্ষেপে বাকশাল। অন্য সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষিত হল, নিষিদ্ধ হল অনেক পত্রপত্রিকা। তারপরের ইতিহাস তো সকলেরই জানা।
  • hu | 12.34.246.73 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ০১:০৩494670
  • এই টইটা আপডেট হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকি।
  • siki | 122.177.162.177 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ১৩:৪৭494671
  • তারপর?
  • I | 14.99.37.77 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ২১:২৩494672
  • দেশটির ইতিহাস বড় রক্তমাখা। স্বাধীনতার আগে যেমন, স্বাধীনতার পরেও তেমনি। রক্তধারার বিরাম নেই। ৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট মুজিব খুন হলেন সপরিবারে; তার তিন মাস পর খুন করা হল ক্যুদেতা-পুর্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজুদ্দিন আহমেদ ও আরো বেশ কিছু উঁচুতলার আওয়ামী লীগ নেতাকে। মুজিব হত্যার অব্যবহিত পরে ক্ষমতা গ্রহণ করলেন মুজিবের একদা-সহকর্মী খোন্দকার মুস্তাক আহমেদ; মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে সেনা-প্রধান নিযুক্ত করা হল। মেজর ফারুক ও রশিদকে বেশ কয়েক ধাপ ডিঙিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত করা হল। তাঁদের জন্য আইনী রক্ষাকবচের ব্যবস্থা হল।

    সেই বছরই নভেম্বর মাসে ( ৩রা নভেম্বর) একটি কাউন্টার-ক্যু-তে ক্ষমতা পুনর্দখল করলেন মুজিবপন্থী ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ। জেনারেল জিয়াকে পদচ্যুত ও গৃহবন্দী করা হল। কিন্তু এই ক্ষমতা দখল বড় স্বল্পস্থায়ী। ঠিক চারদিন বাদে ৭ই নভেম্বর অপর একটি ক্যুদেতায় ক্ষমতা অধিকার করলেন বামপন্থী কর্নেল আবু তাহের ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সমর্থক আরো কিছু সেনা অফিসার। ৭ই নভেম্বরকে জাতীয় সিপাহি-জনতা বিপ্লব দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হল। জেনারেল জিয়াকে মুক্ত করে তাঁকে সেনাবাহিনীর শীর্ষে পুন:প্রতিষ্ঠিত করলেন আবু তাহের।

    এইভাবে শেষ হল ১৯৭৫ সাল; থামল সামরিক অভ্যুত্থানের পালা- এক বছরের মধ্যে তিন তিনটি অভ্যুত্থান। কিন্তু মৃত্যুধারা থামল না। জেনারেল জিয়া ধীরে ধীরে ক্ষমতা দখল করলেন। দিশাহারা বাংলাদেশ আর্মির মধ্যে শৃঙ্খলা আনলেন। এবং ভাগ্যের এমনই পরিহাস, লে : কর্নেল আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করলেন ২৪শে নভেম্বর, তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনে। এই আবু তাহের ১৭ দিন আগে তাঁর গৃহবন্দীত্ব ঘুচিয়ে তাঁকে সেনাপ্রধানের পদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। মিলিটারি ট্রাইব্যুনালের বিচারে দোষী সাব্যস্ত লে: কর্নেল আবু তাহের, সামজবিপ্লবের স্বপ্ন-দেখা আবু তাহের, স্বাধীনতার লড়াইয়ের বীর যোদ্ধা আবু তাহের ১৯৭৬ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা সে¾ট্রাল জেলে ফাঁসির দড়িতে প্রাণ দিলেন।
  • Nina | 12.149.39.84 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ২১:৫৩494673
  • বড় কষ্টকর --বড্ড রক্ত!
  • I | 14.99.37.77 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ২৩:৫২494674
  • আড়াইটে বাজে। পেটে জানান দিচ্ছে খিদের ছুঁচোরা, আমরা এবার যাচ্ছি বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দিকে, সেখানে লাঞ্চ সারব।
    বসুন্ধরা একটি ঝাঁ চকচকে শপিং মল, বেসমেন্ট নিয়ে ন' কি দশ তলা হবে। তার ডোম -শেপ-এর ছাদ আকাশে উঠে গেছে, সেটি কাচ দিয়ে মোড়া, গায়ে রঙীন অলংকরণ; তার মধ্য দিয়ে দুপুরের আলো এসে সেটিকে ঝিলমিলে ও স্নিগ্‌ধ করেছে। সুষেণ বেশ গর্বিত, ঢাকা শহর এমন একটি শপিং মলের অধিকারী হওয়ায়। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সে এদিক সেদিক দেখাতে চায়, কিন্তু আমাদের তখন ওয়ান পয়েন্ট প্রোগ্রাম-লাঞ্চ খাবো। খিদে পেয়েছে। সুষেণ, দেখা গেল, ঢাকা শহরে থাকলেও ঢাকা ভ্রমণের গাইড হিসেবে তেমন যোগ্য নয়; সে জানেনা ফুড কোর্ট কোন ফ্লোরে। তার কথামত ৬ নং লেভেলে গিয়ে দেখা গেল সেখানে সামান্য ক'টি খাবার দোকান, ইতিমধ্যে আদ্ধেক ঝাঁপ ফেলা, সেখানে লাঞ্চের আব্দার করার তেমন মানে হয় না। রফিক ভাই বলছেন, এখানে খেতে আসা কেন, এখানে সব খাবারের তো দ্বিগুণ দাম, বাইরে খেলেই তো হত । ওদিকে অঞ্জনা মামী বলে দিয়েছেন-ফুড কোর্টে খাইবেন ভাইগ্না, দাম তেমন বেশী না।
    অগত্যা আমাদেরই নামতে হল আসরে, জানা গেল ৮নং লেভেলে ফুড কোর্ট । চলো তবে ৮নং। ফুড কোর্টে সারি সারি দোকান, একই রকম দেখতে,রং চংয়ে, ঝলমলে, অধিকাংশই দাবী করছে তারা ইন্ডিয়ান স্পাইসি কারি বিক্কিরি করে। এদের মধ্যে একটাকে আরবিট্রারিলি বেছে নিয়ে খেতে বসা হল। খাবার বেশ ভালো,নানারকম জিনিষপত্তর মেশানো একটা ভাত ( সঙ্গীতা এই মুহূর্তে পাশে না থাকায় খাবারের নামটা কনফার্ম করতে পারছি না, তবে কিছুতেই ফ্রায়েড রাইস বা পোলাও নয়) আর ফ্রায়েড চিকেন (সঙ্গে কোক/ লাচ্ছি), সুস্বাদু, দোকানের নাম "ইন্ডিয়ান স্পাইসি' হলেও মশলাদার নয় মোটে। চিকেন ফ্রাইয়ের ব্যাটারের স্বাদ অবিকল কে এফ সি'র মত। খেয়ে উঠে সুষেণ কিছুতেই দাম দিতে দিল না, যদিও একজন ( আমি) ওর হাতদুটো চেপে ধরে রেখেছিল; কিন্তু দোকানের ছেলেরা মুচকি হেসে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিতে অস্বীকার করল। তাদের যুক্তি, আপনারা আজ আছেন, কাল চলে যাবেন, আমাদের তো থাকতে হবে- সুষেণকে দেখিয়ে-ঐ ওনার সাথে, উনি আমাদের বাঁধা কাস্টমার। তাছাড়া আপনারা মেহমান, আপনাদের দাম দেওয়া ভালো দেখায় না।
  • aranya | 144.160.226.53 | ২৭ অক্টোবর ২০১১ ২৩:৫৯494675
  • ইন্দো-কে অনেকবার ভার্চুয়ালি পিঠ চাপড়ে দিলাম। এই লেখাগুলো পড়তে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
  • I | 14.99.37.77 | ২৮ অক্টোবর ২০১১ ০১:৩৭494676
  • খেয়েদেয়ে বেরোতে বেরোতে সাড়ে চারটে। আমরা রয়েছি ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে, এই তো সামনেই হোটেল সোনারগাঁও, একটু যেতেই একুশে টিভি'র ট্রান্সমিশন সেন্টার, আরো কি কি সব , সুষেণ সমানে কানের পাশে রিলে করে যাচ্ছে, আমার প্রায় কিছুই মনে থাকছে না।।বাইরে কী অদ্ভুত রাঙা আলো হয়েছে, বসুন্ধরা মেগা মার্কেট সেই আলোয় ঝলমল করছে, গোটা ঢাকা শহরটাই। আ:, এই আলো থাকতে থাকতে যদি শহীদ মিনারে পৌঁছতে পারতাম ! কিন্তু জ্যাম, শুধু জ্যাম চারিদিকে, দেখে দেখে চিত্ত মোর হয়েছে বিকল। গাড়ি একটুও নড়ছে না, হাজারে হাজারে রিকশা ও অটোমোবাইল কোলাহল করছে মহাপুরুষের উক্তির মত। ঢাকার বিখ্যাত নিউমার্কেট ডাইনে রেখে, বাংলাবাজারকে বাঁয়ে ফেলে গাড়ি ঢিকিস ঢিকিস করে চলছে, আলো পড়ে আসছে দ্রুত। আমার একটুও ভাল্লাগছে না। রফিক ভাইয়ের সঙ্গে গল্প করছি আমি, রফিক ভাই ফরিদপুরের মানুষ, কিন্তু জন্মেছেন-বড় হয়েছেন ঢাকাতেই। বড্ড এক্সপেন্সিভ শহর ঢাকা, তাই নিয়ে দু:খ করলেন। কলকাতা যাবেন? শুনে হাসলেন। অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, বড়ে দিলওয়ালে। রফিক ভাইকে রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন করি, বলেন সবাই সমান-তবে আওয়ামী লীগের ছেলেপেলেরা বড় বেশী দাদাগিরি দেখায় সরকারে এলে। ঢাকা খুব একটা সেফ শহর না, এই যে দেখেন না সিএনজি গুলার ড্রাইভারের সিট আর প্যাসেঞ্জারের সিটের মাঝখানটা লোহার জাল দিয়ে আটকানো। যাতে রাতবিরাতে সিএনজি'র ড্রাইভারকে ধরে মারধর-চুরিছিনতাই করতে না পারে। আগে এরকম হয়েছে অনেক, তাই এই সাবধানতা। তবে উল্টোটাও হয়, ড্রাইভারও কখনোসখনো প্যাসেঞ্জারের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ছিনতাই করে।

    বিকেলের মরা আলোয় আমরা শহীদ মিনারের সামনে পৌঁছই। আমার একটু হতাশ লাগে, আমি আরেকটু বেশী গ্র্যাঞ্জার আশা করেছিলাম, বিশেষত: সাভার দেখে আসার পর। দাঁত কিড়মিড় করি , কাকে যেন তেড়ে গালাগাল দিলে তবে মনের ঝাল মেটে; এই ম্যাড়মেড়ে কালচে আলোয় ফটো ওঠে কখনো, ছ্যা :!

    শহীদ মিনার চত্বর কেমন অগোছালো, যেন সে মায়ের অভালোবাসার সন্তান। পেছনে ঐ লাল সূর্যের মত বৃত্তটি নেই কেন, ছবিতে দেখেছি যে কত ! এর সামনেই বুঝি জড়ো হয় সারা ঢাকার মানুষ একুশের ভোরে ! আমার কেমন বিশ্বাস হতে চায় না। বেশ কিছু মানুষ সপরিবারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ইত:স্তত ছড়ানো-ছিটনো কিছু প্রেমিকযুগল,সিঁড়ির ধাপে বসে আছেন, চা খাচ্ছেন-গল্প করছেন; কিছু তরুণ-তরুণী একা একা, তাঁরা সম্ভবত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রী-সঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করছেন। কিম্বা হয়তো একা একা কাটিয়ে দিচ্ছেন ঢাকা শহরের বুকে ফুরিয়ে আসা একটি বিকেল। একজন যুবক বেরে টুপি পরা, ঈষৎ ট্যারা, নন-শ্যালান্টলি বসে আছেন- অদ্ভুত ভালো প্রোফাইল হয়। একটি তরুণী উদাস মুখে ঝালমুড়ি খাচ্ছেন, তাঁর চুলে জড়িয়ে থাকতে পারলে পুরুষরা ধন্য হবে; মেয়েটির কামিজে ঘুরিয়ে -ফিরিয়ে লেখা "দুষ্টু মেয়ে', ঐটাই ডিজাইন, স্বাধীন দেশের এই স্বাধীন কন্যা ( আমার ভাবতে ইচ্ছে করে) ঝালমুড়ির সঙ্গে তারিয়ে তারিয়ে চাখছেন ধীরে ধীরে আলো-জ্বলে ওঠা শ্রোণীভারাদলসগমনা মহানগরীর এই সন্ধ্যা। বাচ্চারা বল খেলছে, একটি শিশু একটা লাল বলকে ছুঁড়ে অনেক উঁচুতে তুলে দিচ্ছে, ঐ লাল বলটাই আমার স্বাধীনতার রক্ত- বৃত্ত, বাংলা ভাষার একুশে ফেব্রুয়ারী সূর্য। রোগা, ক্ষয়াটে চেহারার এক যুবক সাবানের বুদ্বুদ ওড়াচ্ছেন, স্বপ্নের মত সেই বুদ্বুদেরা উড়ে যাচ্ছে আলোহীন শহীদ মিনারের আকাশে, তারপর একসময় অলক্ষ্যে ফেটে যাচ্ছে; কেউ তাঁর কাছ থেকে বাবল্‌স কিনছে না। বিষণ্ন মুখের এক কিশোর বুড়ির চুল নিয়ে বসে আছে । খদ্দের নেই।
  • Tim | 198.82.19.100 | ২৮ অক্টোবর ২০১১ ০১:৫০494677
  • বড়ো ভালো হচ্ছে। কবে যাওয়া হবে, আদৌ হবে কিনা জানিনা, তবে সব ছবির মত দেখতে পাচ্ছি এই লেখায়।
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৮ অক্টোবর ২০১১ ০২:১১494678
  • আমি যাবো। যাবই। ইন্দোদাদার লেখা পড়ার পরে বাংলাদেশ নিজের চোখে না দেখলে মরে শান্তি পাবো না। ইন ফ্যাক্ট, এই লেখা পড়েই ঝুলোঝুলি করে এক বাংলাদেশীর নিমন্ত্রণ পর্যন্ত জোগাড় করে ফেলেছি গত সপ্তাহে, শুধু দিনক্ষণ ইত্যাদি ঠিক হয় নাই।
  • Nina | 12.149.39.84 | ২৮ অক্টোবর ২০১১ ০২:৫৪494680
  • কি জীবন্ত লেখা!!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন