এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কুস্বাস্থ্য

    pi
    অন্যান্য | ০২ নভেম্বর ২০১১ | ৯৪৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • bb | 69.161.181.162 | ১৯ অক্টোবর ২০১২ ১৫:৪৩504624
  • ইন্দ্রানী আপনার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে আমার প্র্শ্ন, আমরা কি আরও কিছু করতে পারি? সচেতনতা বাড়ানোর জন্য?
  • de | 69.185.236.52 | ১৯ অক্টোবর ২০১২ ১৫:৪৬504625
  • ইন্দ্রাণীদি -- একটা স্ক্যান্ড কপি কি আপলোড করা যাবে কোথাও?
  • i | 134.149.168.71 | ১৯ অক্টোবর ২০১২ ১৬:২১504626
  • বিবি,
    আপনারা সাজেস্ট করুন আর কি করা যায়। লেখাপত্রের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া আরও কিছু চিন্তা মাথায় আছে। সেসব কতদূর করতে পারব এখনও জানি না। কিছু যদি দাঁড় করাতে পারি, এখানেই জানিয়ে যাবো।

    দে,
    আমি দেখব কি করা যায়।
  • a x | 138.249.1.198 | ২০ অক্টোবর ২০১২ ০১:৫৬504627
  • থ্যান্কু আই।
  • pi | 24.96.55.240 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:১৮504629
  • ইন্দ্রাণীদির লেখাটা এবারের 'স্বাস্থ্যের বৃত্তে' বেরিয়েছে। বেরিয়েছে, হসপিটাল অ্যাকোয়ার্ড ইন্ফেকশন নিয়ে আরো কয়েকটি ভাল, জরুরি প্রবন্ধ।

    সিকি, ইন্দ্রাণীদির পোস্টটা পড়ো, সেপটিসিমিয়া নিয়ে আন্দাজ পাবে।
  • siki | 24.97.148.192 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:২৬504630
  • পেলাম।

    ধন্যবাদ, পাই।
  • pi | 127.194.7.110 | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:৪৩504631
  • বেশ কয়েকটি হাসপাতালে নায্যমূল্যের ওষুধের দোকান চালু হল। আরো অনেক আগেই হওয়া দরকার ছিল, যাহোক, বেটার লেট ..
  • aka | 178.26.203.155 | ১২ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:৩২504633
  • ন্যায্যমূল্য কি করে কে ঠিক করছে?
  • | 24.97.188.137 | ১৮ জানুয়ারি ২০১৩ ০৮:৫৮504635
  • কদিন আগে এক সংবাদপাঠিকা সন্তান প্রসব করতে গিয়ে সেপ্টিসেমিয়ায় মৃত। সন্তান জন্মের পর একদিন নাকি মোটামুটি সুস্থ ছিলেন, তারপরই আক্রান্ত হন।

    যথারীতি সব চুপচাপ, কারো কোনও হেলদোল নেই।
  • i | 147.157.8.253 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০২:০৮504636
  • এর আগে এই টইতে লিখেছিলাম- আবার লিখছি কিছু আপডেট সহ-
    গত বছর আমার মা এবং বন্ধুকে হারিয়েছি। আমার মা মারা গিয়েছিলেন সেপটিসিমিয়ায়। হাঁটুর একটা ছোট্ট অস্ত্রোপচার করিয়েছিলাম কলকাতারা একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে বাড়িতে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরই গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করাই আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ২২ দিন অসহনীয় কষ্ট ভোগ করেন মা। ডিসেন্বরে আমার বন্ধু মারা যায়, এক্টোপিক প্রেগনেন্সি থেকে। কলকাতা শহরে দু জন ডাক্তার তার ভুল চিকিৎসা করেন। ডাক্তারদের গাফিলতির পাশাপাশি মনে হয়েছে, আমরাও অনেক অসুখ বা পরিস্থিতি সম্পর্কে কম জানি। চিকিৎসকরা আমাদের সব জানান না, আমরাও জানি না বলে জিজ্ঞাসা করতে পারি না। আমরা সবাই মিলে যদি ফেসবুকে নিজের অভিজ্ঞতা, হেল্পলাইন নম্বর, বিভিন্ন রোগ, বা কোথাও কোনও লেখা, মেডিকাল আইন পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নিই, তা হলে কি কিছুটা সুরাহা হয়।।
    কোথাও একটা শুরু করা দরকার। তারপর এগোবো। ।
    এই পত্রিকাটি একটি ফোরাম হতে পারে। আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, একটা শুরু করার, http://www.facebook.com/swasthyerbritte.patrika
  • সে | 203.108.233.65 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১৬:০৬504637
  • গত কয়েক বছর ধরেই আমিও হারিয়েছি বেশ কয়েকজন নিকটাত্মীয় ও বন্ধুকে। সমস্তই কোলকাতায়। i এর পোস্টের সঙ্গে একমত এবং সেইসঙ্গে ডাক্তারদের কাছ থেকে খুবই রুঢ় ব্যবহার পেয়েছি। প্রথমত পেশেন্ট পার্টির সঙ্গে কথা বলতে চান না ডাক্তারেরা, যেটুকু না বললেই নয় সেটুকুই বলেন। প্রশ্ন করলে রেগে যান দুর্ব্যবহার তো করেনই। কত কম সময়ে কত বেশি টাকা আয় করা যায় সেদিকেই নজর।
    এছাড়া একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিল দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ। আমার যে বন্ধুটি মারা যায়, তার ভাই আমাকে বিল দেখিয়ে বলল - দাদা তো লাস্ট দশদিনে কিছুই খায় নি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলো জ্ঞান থাকলেও ফ্লুইড চলেছে- কিকরে শুধু খাবারের বিলই একলাখ চার হাজার হয়?
    প্রায় সাড়ে ছয় লাখ দেবার পরে বডি ছাড়ানো হয়েছিলো। এই অন্যায় আর কতদিন চলবে?
  • পুণ্যব্রত গুণ | 24.99.232.241 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ০১:৩৮504639
  • রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিঃ অবধারিত মৃত্যু যা প্রতিহত করা যায়

    ডিম্ববাহী নালীতে ডিম শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হল, কোষ বিভাজন শুরু হল—ভ্রূণের এবার নালী বেয়ে জরায়ুতে গিয়ে বাসা বাধার কথা। তা না হয়ে যদি ভ্রূণ ডিম্ববাহী নালীতেই বাড়তে থাকে তাহলে বিপদ অবধারিত। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা র দ্রুত ডাক্তারী সাহায্য নেওয়া এবং চিকিৎসকের সমস্যাটাকে চিনতে পেরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া মৃত্যুকে ঠেকাতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, লিখছেন ডা পুণ্যব্রত গুণ।

    ‘স’-কে বাঁচানো যেত
    মনে হয় ‘স’-কে এখনও ভুলে যাননি। এক অতিপরিচিত নিউজ চ্যানেলের অতিপরিচিত মুখ। মাস খানেক আগে এক রবিবার ভোরে বাড়ীর বাথরুম যেতে গিয়ে ‘স’ প্রবল পেটে ব্যথায় মাটিতে বসে পড়েন, চোখ আঁধার হয়ে যায়, শরীর নেতিয়ে পড়ে, বমিতে খাবার উঠে আসে। সকালে পাড়ার জেনেরাল ফিজিশিয়ান দেখে বলেন এলার্জিক শক হয়েছে, ভর্তি করে একটু স্যালাইন দিতে হবে। তিনি রেফার করেন কাঁকুরগাছি-ফুলবাগান এলাকার মাঝারি মাপের এক মোটামুটি নামকরা নার্সিং হোমে, ডা ‘মা’-র কাছে। ডা ‘মা’ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ—এম বি বি এস, ডিপ কার্ড, এম আর সি পি।
    ‘চ’ নার্সিং হোমে ‘স’ ভর্তি হলেন মেডিকাল স্পেশালিস্ট ডা ‘মা’-র অধীনে। ১২ টা নাগাদ ডা ‘মা’ ‘স’-কে দেখে বললেন প্যানক্রিয়াটাইটিস-এর ব্যথা, আই সি ইউ-তে ভর্তি করে নেওয়া হল, চিন্তার কিছু নেই, পরিবারের লোকজনকে বলা হল বাড়ী চলে যেতে। চারটে-সোয়া চারটে নাগাদ বাড়ীর লোক জানলেন ‘স’-র রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৬ গ্রাম%-এ নেমে এসেছে (পুরো স্বাভাবিক বা ১০০% বলা হয় ১৪.৫ গ্রাম% থাকলে), পেটের ভেতর রক্ত-ক্ষরণ হচ্ছে। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করাতে হবে, রক্ত দিতে হবে। রবিবার বলেই কিনা জানি না ‘চ’ নার্সিং হোমে আল্ট্রাসোনগ্রাফি হল না। বাইরে থেকে মেশিন এনে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা হল—রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি, অপারেশন করতে হবে।
    রক্ত আনানো হয়েছিল বটে। সেই রক্ত চালানোতেও বিপত্তি। অর্ধ-শিক্ষিত সেবিকারা জানেনই না রক্ত কোথায় কিভাবে রাখতে হবে। অপারেশন করার আগেই শকে মারা গেলেন ‘স’।
    হাসপাতালের ও ডাক্তারের গাফিলতিতে, ডাক্তারের অতিরিক্ত যন্ত্র-নির্ভরতায় প্রাণ গেল বছর ৩৫-এর এক প্রতিষ্ঠিতা সাংবাদিকের।
    না ডাক্তারকে মেডিকাল নেগলিজেন্সের মামলার সম্মুখীন হতে হবে না। মর্মাহত পরিবার ময়না-তদন্ত করান নি। সংবাদ-মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে ‘স’-এর। যে কোন মৃত্যুতেই ডাক্তাররা ডেথ-সার্টিফিকেটে যা লেখেন আরকি!

    ভুল থেকে শেখা
    আমার ভুলে মারা গিয়েছিলেন এক রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির রোগিনী। আজ থেকে ২৫ বছর আগে, ১৯৮৭-র ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে।
    এক বছর হয়েছে সবে শহীদ হাসপাতালে যোগ দিয়েছি। তখন হাসপাতালে ডাক্তার বলতে শৈবালদা (জানা) আর আমি। আশিসদা (কুন্ডু) পারিবারিক কারণে বাংলায় ফিরে এসেছেন, ফিরেছেন চঞ্চলাদিও (সমাজদার)। বিনায়কদা (সেন) শহীদ হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠনের প্রস্তুতি নিতে। মেডিকাল কলেজে দুবছর সার্জারিতে হাউসজব করে গিয়েছিলাম বলে শল্যচিকিৎসার দায়িত্বে আমি। শৈবালদা মেডিসিন ও অবস্ট্রেটিক রোগী ও রোগিণীদের দায়িত্বে। সকালে অপারেশন ৭টা থেকে, তারপর দুজন মিলে ওর্য়াডে রাউন্ড দিয়ে ৯-৩০টা থেকে আউটডোরে ১২-৩০টা অবধি। বিকেলে আবার ৪-৩০টা থেকে ৭-৩০টা অবধি আউটডোরে, দিনের শেষে আবার রাউন্ড দিয়ে কোর্য়াটারে ফেরা।
    এর মধ্যে মোপেড চালানো শিখতে গিয়ে পা ভেঙ্গে শৈবালদা বিছানায়। একা হাসপাতাল চালাচ্ছি। সকালে আউটডোরে কাজ করার সময় দুজন রোগী এলেন পেটের নীচে ডানদিকে ব্যথা নিয়ে—এপেন্ডিসাইটিস। আউটডোর সেরে দুজনের এপেন্ডিসেক্টমি সেরে বিকেলের আউটডোরে বসতে যাব, এক মহিলা এলেন পেটে ব্যথা নিয়ে তলপেটে ডানদিকে, পেটে হাত ছুঁইয়ে দেখে নিলাম ডানদিকে ব্যথা—এপেন্ডিসাইটিসই হবে! রাইলস টিউব (নাক দিয়ে পাকস্থলীতে ঢোকানো নল) আর আই ভি ফ্লুইড (অন্তঃশিরা দ্রবণ) চালাতে বলে দিলাম, অপারেশন করতে হলে আউটডোরের পর করব।
    রাতের রাউন্ডে গিয়ে দেখি রোগিনীর পেট ব্যথা কম, নাড়ীর গতি-রক্তচাপও ভালো। মুখে খেতে চাইছেন। তাহলে অপারেশন করব না, ফ্লুইড চলুক, মুখে অল্প জল দেওয়া হোক।
    ঘুমিয়ে পড়েছি, মাঝ রাতে কর্ত্যবরতা নার্স জানালেন, রোগিনী নড়াচড়া করতে গিয়ে ফ্লুইড খুলে ফেলেছেন। ঘুম চোখে জেনে নিলাম পালস-বিপি ঠিক আছে, তাহলে মুখে খেতে দেওয়া হোক। উঠে রোগিনীকে দেখে আসিনি।
    দেখতে যেতে হল ভোর রাতে, রোগিনী তখন গ্যাস্প করছেন। তখন কিছু করার ছিল না।
    মহিলা ঝরন-দল্লী খনির রেজিং শ্রমিক, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই লোহাপাথর ভাঙ্গার কাজ করতেন। মহিলা ছিলেন ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘের এক মুখিয়া (নির্বাচিত প্রতিনিধি)। স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই চিনতাম।
    আকস্মিক ঘটনাক্রমে অবাক স্বামী-হাসপাতালের কর্মীরা।
    আমি জিজ্ঞাসাবাদ করলাম, যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি মহিলা বেঁচে থাকতে। দুমাস তাঁর মাসিক ঋতুচক্র বন্ধ ছিল। তারপর হঠাৎ করে পেটে ব্যথা—এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটেই এমনটা হয়। ঠিকঠাক ইতিহাস নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন করলে তিনি বেঁচে যেতেন।
    আমি স্বামীর মুখোমুখি হলে অপরাধবোধে ভুগতাম, তারপর যে সাত বছর দল্লী-রাজহরায় ছিলাম। পরের দিনই হাসপাতালের কর্মীদের নিয়ে বসে আমার ভুল স্বীকার করেছিলাম, যদিও আমি ভুল করেছি এমনটা তাঁরা বুঝতে পারেননি আমি বলার আগে। শংকর গুহ নিয়োগীর সঙ্গে কথা বললাম, অনেকটা গির্জায় গিয়ে পাপ-স্বীকারের মত আর কি!
    তবে এরপর আর কোনদিন কোন মহিলার চিকিৎসা করার সময় তার মাসিক ঋতুচক্রের ইতিহাস নিইনি এমনটা হয়নি। এখন ১৮ বছর কাজ করি যেখানে, সেই মৈত্রী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তো প্রত্যেক মহিলার বিস্তারিত মাসিক ঋতুচক্রের ইতিহাস নেওয়া হয়, প্রতিবার জেনে নেওয়া হয় তাঁর শেষ মাসিক ঋতুচক্র কবে শুরু হয়েছিল। যে ঘটনাটা বললাম তেমন কিছু ঘটাতো দূরের কথা, গর্ভাবস্থায় যেসব ওষুধ দেওয়া বা যেসব পরীক্ষা করা ভ্রূণের পক্ষে ক্ষতিকর, সেগুলোকেও আমরা এড়িয়ে যেতে পারি এর ফলে।

    একজনকে বাঁচাতে পেরেছিলাম
    খনি শহর দল্লী-রাজহরা দুর্গ শহর থেকে ৮৪ কিলোমিটার দূরে, ভিলাই থেকে ৯১ কিলোমিটার দূরে। ১৯৯২-এ সেখানে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি হত না। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করাতে পাঠাতে হত দুর্গ বা ভিলাইয়ে। ইতিহাস নিয়ে আর শারীরিক পরীক্ষা করেই রোগ-নির্ণয় করতাম আমরা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নির্ভুল হত।
    দুর্গ জেলার সি পি আই-এম-এর জেলা সম্পাদক থাকতেন দল্লী-রাজহরায়, তাঁর স্ত্রী এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দল্লী-রাজহরা শাখায় কাজ করতেন।
    মাস দুয়েক মাসিক ঋতুচক্র বন্ধের পর পেটে হঠাৎ তীব্র ব্যথা নিয়ে এক সন্ধ্যায় মহিলা ভর্তি হলেন মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত পুষ্পা হাসপাতালে। ডাক্তার রোগ-নির্ণয় করলেন রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। কিন্তু অপারেশনের ঝুঁকি নিতে চাইলেন না, কেন না রোগিনী তখন শকে। অজ্ঞান করার যন্ত্র বয়েল’স এপারেটস-এর উপযোগী অক্সিজেন সিলিন্ডারে গ্যাস নেই এই অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে ভিলাই-এ রেফার করে দেওয়া হল।
    এবার স্বামী ভদ্রলোক বাধ্য হয়ে মাঝরাতে নিয়ে এলেন শহীদ হাসপাতালে। আমাদের বয়েল’স এপারেটস নেই। আমরা অপারেশন করতাম আদিম যুগের, কিন্তু অতীব নিরাপদ, ‘ওপেন ঈথার এনাস্থেসিয়া’ দিয়ে।
    অপারেশনতো করব কিন্তু, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ২.৪ গ্রাম%। দল্লী-রাজহরায় ব্লাড ব্যাংক নেই। কিন্তু আমাদের ছিল এক অভিনব পরিষেবা। ৪০০-রও বেশী স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের এক তালিকা ছিল, যে তালিকার দাতাদের আধ-এক ঘন্টার মধ্যে রক্তদানের জন্য পাওয়া যেত, যদি না পরিবারের কারুর সঙ্গে রক্তের গ্রুপ মেলে। এছাড়া আরেকটা ছোট তালিকা ছিল দাতাদের যাদের সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায়। সেই তালিকায় থাকতেন হাসপাতালের ডাক্তার-কর্মীরা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
    মনে আছে মহিলার জন্য প্রথম বোতল রক্ত দিয়েছিল শীতল। শীতল ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার এক কর্মী, রাজনন্দগাঁও জেলার নাদিয়া মঠের জমি দখল বিরোধী আন্দোলনের নেতা। হাসপাতালের সামনে তার চায়ের দোকান। আরও রক্তদাতাদের ডেকে পাঠানো হল। আর শুরু করা হল অটোট্রান্সফিউশন।
    অটোট্রান্সফিউশন মানে রোগীর নিজের ক্ষরিত রক্ত তাকেই চালানো। পেটের ভিতর পিলে (spleen) ফেটে গেলে বা ডিম্ববাহী নালিস্থ গর্ভ ফেটে গেলে পেটে যে রক্ত জমে সে রক্ত সে রোগীর শিরায় চালানো যায় কোন ক্ষতি ছাড়াই।
    মেডিকাল কলেজে দেখেছি—পেট খুলে মপে রক্ত শুষে ছাঁকনির উপর তা নিংড়ে বোতলে ভরে রোগীর শিরায় চালাতে। আমার রোগী এতটাই শকে, যে তা সম্ভব ছিল না। দাতার শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয় যে সেট দিয়ে, তার শিরায় ঢোকানো সূঁচ রোগীর পেটে ঢুকিয়ে দিলাম, বোতলে রক্ত জমা হতে লাগল। নিজের রক্ত ও দাতার রক্তে মহিলার শক সামলে নিয়ে অপারেশন শুরু হল, ছোট্ট অপারেশন, ভোরের আলো ভালোভাবে ফোটার আগেই অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এলেন রোগিনী।
    ২০ বছর আগে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধাহীন খনিশহরে মহিলার প্রাণ বেঁচেছিল। ২০ বছর পর মেট্রোপলিসে একই রোগে প্রাণ হারালেন ‘স’।
    কেন তা পরে আলোচনা করা যাবে।
    আসুন আগে জেনে নিই ‘এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি’ ব্যাপারটা কি।

    এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে যাওয়া
    এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি
    জরায়ুর বাইরে গর্ভসঞ্চারকে বলে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। সাধারণত এমনটা হয় ডিম্ববাহী নালী (fallopian tube)-তে, তাছাড়া হতে পারে ডিম্বাশয় (ovary), পেটের গহ্বর (abdominal cavity) বা জরায়ু-গ্রীবা (cervix)-এ। যতদিন যায়, ভ্রূণ বড় হয়, আশেপাশের কোষকলাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেমন ফেটে যায় ডিম্ববাহী নালী। প্রবল রক্তপাতে জীবন-সংশয় হয়। তাই এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি একটা জরুরী অবস্থা, যার চিকিৎসা জরুরী ভিত্তিতে করতে হয়।

    •কেন হয় এমনটা?
    নিষিক্ত ডিম ডিম্ববাহী নালীতে আটকে যেতে পারে যদি নালীতে কোন জন্মগত অস্বাভাবিকতা থাকে বা কোন কারণে যদি নালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়ে থাকে। ক্ষতির প্রধান কারণ তলপেটের জীবাণুসংক্রমণ (pelvic inflammatory disease)। নালীতে কোন রকম শল্যক্রিয়া হয়ে থাকলেও এমন হতে পারে। কপার-টির মত জরায়ুর মধ্যে যন্ত্র ঢুকিয়ে জন্ম-নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিতে বা কেবল প্রজেস্টেরনযুক্ত মুখে খাবার গর্ভনিরোধক বড়িতে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির হার বেশী।

    •কি ভাবে বুঝবেন?
    বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ে প্রথম দু মাসের মধ্যে। অনেক সময় অন্তঃসত্ত্বা বুঝতেই পারেন না, যে তাঁর গর্ভসঞ্চার হয়েছে। হঠাৎ করে অসহ্য পেটে ব্যথা। যোনিপথ দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। পেটের ভেতর রক্তক্ষরণের জন্য রোগিনী শকে চলে যান—ফ্যাকাশে হয়ে যান, ঘাম হতে থাকে, মূর্ছা যান।

    •রোগ-নির্ণয় কি ভাবে?
    এখন বইতে লেখা যোনিপথে আল্ট্রাসাউন্ডের প্রোব ঢুকিয়ে রোগ-নির্ণয় করার কথা অথবা ল্যাপারোস্কোপি করে দেখা। এই পদ্ধতিতে রোগ-নির্ণয় করে চিকিৎসা করতে গেলে কিন্তু আমাদের গরীব দেশে অধিকাংশ এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির রোগিনী মারা পরবেন—ব্যবস্থা কোথায় এসবের?
    আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন আমরা জুনিয়র ডাক্তার, তখন দুটো মাত্র আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন খোদ মেডিকাল কলেজে—একটা স্ত্রীরোগ বিভাগে, অন্যটা রেডিওলজি বিভাগে। কিভাবে তখন এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে গেলে রোগ-নির্ণয় করা হত? ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা থেকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগ-নির্ণয় হয়ে যেত। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পেটের ওপর দিয়ে বা যোনিপথে পেটের গহ্বরে সূঁচ ঢুকিয়ে রক্ত আছে কিনা দেখে নেওয়া হত। এ পদ্ধতিতে বিপদ নেই বললেই চলে, খরচ অনেক কম, যে কোন জায়গায় যে কোন সময়ে করতে বাধা নেই।

    চিকিৎসা
    এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে যাওয়ার আগে ধরা পড়লে মেথোট্রেক্সেট (যা ক্যান্সার বা রিউম্যাটয়েড আর্থাইটিস বা সোরিয়াসিস-এর ওষুধ হিসেবে বেশি পরিচিত) দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। ভ্রূণ, গর্ভফুল ও আশে-পাশের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকলা বার করতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপারেশন লাগে। রক্তপাত বেশী হলে রক্ত দেওয়াটা জরুরী। ক্ষতিগ্রস্ত ডিম্ববাহী নালী সারানো না গেলে কেটে বাদ দেওয়া হয়।

    এরপর গর্ভসঞ্চার হবে কি?
    একটা স্বাভাবিক ডিম্ববাহী নালী থাকলেই গর্ভসঞ্চার সম্ভব, তবে সম্ভাবনা একটু কমে যায়। দুটো নালীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে ‘টেস্ট টিউব বেবি’ ছাড়া উপায় নেই।


    ‘স’-এর মৃত্যু যে সব কথা আবার মনে করিয়ে দিল
    •একজন বিশেষজ্ঞ সাধারণ একটা রোগ ধরতে পারলেন না কেন? পুরোটা অবহেলা বলে ব্যক্তির ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়াটা সমীচীন হবে না। ডাক্তারী পাশ করার পর বিভিন্ন বিভাগে ঘুরে ঘুরে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করলে স্বাধীন ভাবে ডাক্তারী করার লাইসেন্স পাওয়া যায়। আগে ইন্টার্নশিপের পর যে বিষয়ে কেউ স্পেশালাইজ করবেন, সে বিষয়ে অন্তত এক বছর হাউস জব করলে এম ডি/এম এস-এর প্রবেশিকায় বসার ছাড়পত্র পাওয়া যেত। এম ডি/এম এস-এর আসন সংখ্যা ছিল কম, বেশীর ভাগকেই জেনেরাল ফিজিশিয়ান হিসেবে জীবন কাটাতে হত। তাই হাউস জব-ইন্টার্নশিপে হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ কম সদ্য-ডাক্তারই ছাড়তেন। আর এখন ইন্টার্নশিপের শেষেই পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটের প্রবেশিকায় বসা যায়। তাই অধিকাংশ ইন্টার্নই ইন্টার্নশিপে কাজ না করে-শিখে এম সি কিউ (টিক মারা অবজেকটিভ প্রশ্নোত্তর) মুখস্থ করেন। এঁরা কোনও এক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ তো হন, কিন্তু নিজের বিষয়ের বাইরে কোন রোগ চিনতে বা সামলাতে তাঁদের অসুবিধা হয়। তাই-ই হয়ত মেডিসিনের ডাক্তার ‘মা’ রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি চিনতে পারেন না!
    •আরেকটা ক্রমবর্ধমান রোগ রোগ-নির্ণয়ে যন্ত্রনির্ভরতা। শরীরে এক আঙ্গুল রেখে অন্য হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঠুকে ঠুকে অস্বাভাবিক তরল জমা বা গ্যাস জমা বোঝা যায়, আমরা আজকাল আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা অন্য কোনও স্ক্যান না করে বুঝতে পারি না। মলদ্বারে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেখা যায় প্রস্টেট বড় কিনা, আজকাল এভাবে কেউ বোধ হয় দেখেনই না।......

    যদি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনটাই না থাকত কলকাতায় তাহলে হয়ত, ‘স’-কে প্রাণ হারাতে হত না! বিতর্কিত বক্তব্য? বোধকরি তাই-ই। কিন্তু অন্য দেশের টেকনোলজি উপড়ে নিয়ে এসে এদেশে পুঁতে দিলে গাছ হবে না আগাছা সেটা ভেবে দেখার সময় বোধকরি এসেছে। আমরা মেডিকেল কলেজে যন্ত্রনির্ভর ডাক্তারি শিখব, তারপর গ্রামে গিয়ে হঠাত করে বিনা-যন্ত্রে, বা ক্লিনিক্যাল দক্ষতার ওপরে নির্ভর করে সব কিছু করতে পারব, এটা ভাবা একটু বাস্তববোধের অভাবই সূচিত করে নয় কি? যতদিন চিকিৎসাশিক্ষায় গ্ল্যামারের চাইতে বাস্তব পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচানোকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়া হচ্ছে ততোদিন বোধকরি বহু ‘স’ এইরকম নিধিরাম সর্দারের হাতে বলি হবেন।

    লেখক পরিচিতিঃ ডা. পুণ্যব্রত গুণ, এম বি বি এস, হাওড়ার একটি জনগণের নিজস্ব হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের কর্মী।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 24.99.232.241 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ০১:৩৮504640
  • রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিঃ অবধারিত মৃত্যু যা প্রতিহত করা যায়

    ডিম্ববাহী নালীতে ডিম শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হল, কোষ বিভাজন শুরু হল—ভ্রূণের এবার নালী বেয়ে জরায়ুতে গিয়ে বাসা বাধার কথা। তা না হয়ে যদি ভ্রূণ ডিম্ববাহী নালীতেই বাড়তে থাকে তাহলে বিপদ অবধারিত। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা র দ্রুত ডাক্তারী সাহায্য নেওয়া এবং চিকিৎসকের সমস্যাটাকে চিনতে পেরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া মৃত্যুকে ঠেকাতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, লিখছেন ডা পুণ্যব্রত গুণ।

    ‘স’-কে বাঁচানো যেত
    মনে হয় ‘স’-কে এখনও ভুলে যাননি। এক অতিপরিচিত নিউজ চ্যানেলের অতিপরিচিত মুখ। মাস খানেক আগে এক রবিবার ভোরে বাড়ীর বাথরুম যেতে গিয়ে ‘স’ প্রবল পেটে ব্যথায় মাটিতে বসে পড়েন, চোখ আঁধার হয়ে যায়, শরীর নেতিয়ে পড়ে, বমিতে খাবার উঠে আসে। সকালে পাড়ার জেনেরাল ফিজিশিয়ান দেখে বলেন এলার্জিক শক হয়েছে, ভর্তি করে একটু স্যালাইন দিতে হবে। তিনি রেফার করেন কাঁকুরগাছি-ফুলবাগান এলাকার মাঝারি মাপের এক মোটামুটি নামকরা নার্সিং হোমে, ডা ‘মা’-র কাছে। ডা ‘মা’ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ—এম বি বি এস, ডিপ কার্ড, এম আর সি পি।
    ‘চ’ নার্সিং হোমে ‘স’ ভর্তি হলেন মেডিকাল স্পেশালিস্ট ডা ‘মা’-র অধীনে। ১২ টা নাগাদ ডা ‘মা’ ‘স’-কে দেখে বললেন প্যানক্রিয়াটাইটিস-এর ব্যথা, আই সি ইউ-তে ভর্তি করে নেওয়া হল, চিন্তার কিছু নেই, পরিবারের লোকজনকে বলা হল বাড়ী চলে যেতে। চারটে-সোয়া চারটে নাগাদ বাড়ীর লোক জানলেন ‘স’-র রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৬ গ্রাম%-এ নেমে এসেছে (পুরো স্বাভাবিক বা ১০০% বলা হয় ১৪.৫ গ্রাম% থাকলে), পেটের ভেতর রক্ত-ক্ষরণ হচ্ছে। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করাতে হবে, রক্ত দিতে হবে। রবিবার বলেই কিনা জানি না ‘চ’ নার্সিং হোমে আল্ট্রাসোনগ্রাফি হল না। বাইরে থেকে মেশিন এনে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা হল—রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি, অপারেশন করতে হবে।
    রক্ত আনানো হয়েছিল বটে। সেই রক্ত চালানোতেও বিপত্তি। অর্ধ-শিক্ষিত সেবিকারা জানেনই না রক্ত কোথায় কিভাবে রাখতে হবে। অপারেশন করার আগেই শকে মারা গেলেন ‘স’।
    হাসপাতালের ও ডাক্তারের গাফিলতিতে, ডাক্তারের অতিরিক্ত যন্ত্র-নির্ভরতায় প্রাণ গেল বছর ৩৫-এর এক প্রতিষ্ঠিতা সাংবাদিকের।
    না ডাক্তারকে মেডিকাল নেগলিজেন্সের মামলার সম্মুখীন হতে হবে না। মর্মাহত পরিবার ময়না-তদন্ত করান নি। সংবাদ-মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে ‘স’-এর। যে কোন মৃত্যুতেই ডাক্তাররা ডেথ-সার্টিফিকেটে যা লেখেন আরকি!

    ভুল থেকে শেখা
    আমার ভুলে মারা গিয়েছিলেন এক রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির রোগিনী। আজ থেকে ২৫ বছর আগে, ১৯৮৭-র ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে।
    এক বছর হয়েছে সবে শহীদ হাসপাতালে যোগ দিয়েছি। তখন হাসপাতালে ডাক্তার বলতে শৈবালদা (জানা) আর আমি। আশিসদা (কুন্ডু) পারিবারিক কারণে বাংলায় ফিরে এসেছেন, ফিরেছেন চঞ্চলাদিও (সমাজদার)। বিনায়কদা (সেন) শহীদ হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠনের প্রস্তুতি নিতে। মেডিকাল কলেজে দুবছর সার্জারিতে হাউসজব করে গিয়েছিলাম বলে শল্যচিকিৎসার দায়িত্বে আমি। শৈবালদা মেডিসিন ও অবস্ট্রেটিক রোগী ও রোগিণীদের দায়িত্বে। সকালে অপারেশন ৭টা থেকে, তারপর দুজন মিলে ওর্য়াডে রাউন্ড দিয়ে ৯-৩০টা থেকে আউটডোরে ১২-৩০টা অবধি। বিকেলে আবার ৪-৩০টা থেকে ৭-৩০টা অবধি আউটডোরে, দিনের শেষে আবার রাউন্ড দিয়ে কোর্য়াটারে ফেরা।
    এর মধ্যে মোপেড চালানো শিখতে গিয়ে পা ভেঙ্গে শৈবালদা বিছানায়। একা হাসপাতাল চালাচ্ছি। সকালে আউটডোরে কাজ করার সময় দুজন রোগী এলেন পেটের নীচে ডানদিকে ব্যথা নিয়ে—এপেন্ডিসাইটিস। আউটডোর সেরে দুজনের এপেন্ডিসেক্টমি সেরে বিকেলের আউটডোরে বসতে যাব, এক মহিলা এলেন পেটে ব্যথা নিয়ে তলপেটে ডানদিকে, পেটে হাত ছুঁইয়ে দেখে নিলাম ডানদিকে ব্যথা—এপেন্ডিসাইটিসই হবে! রাইলস টিউব (নাক দিয়ে পাকস্থলীতে ঢোকানো নল) আর আই ভি ফ্লুইড (অন্তঃশিরা দ্রবণ) চালাতে বলে দিলাম, অপারেশন করতে হলে আউটডোরের পর করব।
    রাতের রাউন্ডে গিয়ে দেখি রোগিনীর পেট ব্যথা কম, নাড়ীর গতি-রক্তচাপও ভালো। মুখে খেতে চাইছেন। তাহলে অপারেশন করব না, ফ্লুইড চলুক, মুখে অল্প জল দেওয়া হোক।
    ঘুমিয়ে পড়েছি, মাঝ রাতে কর্ত্যবরতা নার্স জানালেন, রোগিনী নড়াচড়া করতে গিয়ে ফ্লুইড খুলে ফেলেছেন। ঘুম চোখে জেনে নিলাম পালস-বিপি ঠিক আছে, তাহলে মুখে খেতে দেওয়া হোক। উঠে রোগিনীকে দেখে আসিনি।
    দেখতে যেতে হল ভোর রাতে, রোগিনী তখন গ্যাস্প করছেন। তখন কিছু করার ছিল না।
    মহিলা ঝরন-দল্লী খনির রেজিং শ্রমিক, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই লোহাপাথর ভাঙ্গার কাজ করতেন। মহিলা ছিলেন ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘের এক মুখিয়া (নির্বাচিত প্রতিনিধি)। স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই চিনতাম।
    আকস্মিক ঘটনাক্রমে অবাক স্বামী-হাসপাতালের কর্মীরা।
    আমি জিজ্ঞাসাবাদ করলাম, যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি মহিলা বেঁচে থাকতে। দুমাস তাঁর মাসিক ঋতুচক্র বন্ধ ছিল। তারপর হঠাৎ করে পেটে ব্যথা—এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটেই এমনটা হয়। ঠিকঠাক ইতিহাস নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন করলে তিনি বেঁচে যেতেন।
    আমি স্বামীর মুখোমুখি হলে অপরাধবোধে ভুগতাম, তারপর যে সাত বছর দল্লী-রাজহরায় ছিলাম। পরের দিনই হাসপাতালের কর্মীদের নিয়ে বসে আমার ভুল স্বীকার করেছিলাম, যদিও আমি ভুল করেছি এমনটা তাঁরা বুঝতে পারেননি আমি বলার আগে। শংকর গুহ নিয়োগীর সঙ্গে কথা বললাম, অনেকটা গির্জায় গিয়ে পাপ-স্বীকারের মত আর কি!
    তবে এরপর আর কোনদিন কোন মহিলার চিকিৎসা করার সময় তার মাসিক ঋতুচক্রের ইতিহাস নিইনি এমনটা হয়নি। এখন ১৮ বছর কাজ করি যেখানে, সেই মৈত্রী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তো প্রত্যেক মহিলার বিস্তারিত মাসিক ঋতুচক্রের ইতিহাস নেওয়া হয়, প্রতিবার জেনে নেওয়া হয় তাঁর শেষ মাসিক ঋতুচক্র কবে শুরু হয়েছিল। যে ঘটনাটা বললাম তেমন কিছু ঘটাতো দূরের কথা, গর্ভাবস্থায় যেসব ওষুধ দেওয়া বা যেসব পরীক্ষা করা ভ্রূণের পক্ষে ক্ষতিকর, সেগুলোকেও আমরা এড়িয়ে যেতে পারি এর ফলে।

    একজনকে বাঁচাতে পেরেছিলাম
    খনি শহর দল্লী-রাজহরা দুর্গ শহর থেকে ৮৪ কিলোমিটার দূরে, ভিলাই থেকে ৯১ কিলোমিটার দূরে। ১৯৯২-এ সেখানে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি হত না। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করাতে পাঠাতে হত দুর্গ বা ভিলাইয়ে। ইতিহাস নিয়ে আর শারীরিক পরীক্ষা করেই রোগ-নির্ণয় করতাম আমরা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নির্ভুল হত।
    দুর্গ জেলার সি পি আই-এম-এর জেলা সম্পাদক থাকতেন দল্লী-রাজহরায়, তাঁর স্ত্রী এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দল্লী-রাজহরা শাখায় কাজ করতেন।
    মাস দুয়েক মাসিক ঋতুচক্র বন্ধের পর পেটে হঠাৎ তীব্র ব্যথা নিয়ে এক সন্ধ্যায় মহিলা ভর্তি হলেন মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত পুষ্পা হাসপাতালে। ডাক্তার রোগ-নির্ণয় করলেন রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। কিন্তু অপারেশনের ঝুঁকি নিতে চাইলেন না, কেন না রোগিনী তখন শকে। অজ্ঞান করার যন্ত্র বয়েল’স এপারেটস-এর উপযোগী অক্সিজেন সিলিন্ডারে গ্যাস নেই এই অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে ভিলাই-এ রেফার করে দেওয়া হল।
    এবার স্বামী ভদ্রলোক বাধ্য হয়ে মাঝরাতে নিয়ে এলেন শহীদ হাসপাতালে। আমাদের বয়েল’স এপারেটস নেই। আমরা অপারেশন করতাম আদিম যুগের, কিন্তু অতীব নিরাপদ, ‘ওপেন ঈথার এনাস্থেসিয়া’ দিয়ে।
    অপারেশনতো করব কিন্তু, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ২.৪ গ্রাম%। দল্লী-রাজহরায় ব্লাড ব্যাংক নেই। কিন্তু আমাদের ছিল এক অভিনব পরিষেবা। ৪০০-রও বেশী স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের এক তালিকা ছিল, যে তালিকার দাতাদের আধ-এক ঘন্টার মধ্যে রক্তদানের জন্য পাওয়া যেত, যদি না পরিবারের কারুর সঙ্গে রক্তের গ্রুপ মেলে। এছাড়া আরেকটা ছোট তালিকা ছিল দাতাদের যাদের সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায়। সেই তালিকায় থাকতেন হাসপাতালের ডাক্তার-কর্মীরা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
    মনে আছে মহিলার জন্য প্রথম বোতল রক্ত দিয়েছিল শীতল। শীতল ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার এক কর্মী, রাজনন্দগাঁও জেলার নাদিয়া মঠের জমি দখল বিরোধী আন্দোলনের নেতা। হাসপাতালের সামনে তার চায়ের দোকান। আরও রক্তদাতাদের ডেকে পাঠানো হল। আর শুরু করা হল অটোট্রান্সফিউশন।
    অটোট্রান্সফিউশন মানে রোগীর নিজের ক্ষরিত রক্ত তাকেই চালানো। পেটের ভিতর পিলে (spleen) ফেটে গেলে বা ডিম্ববাহী নালিস্থ গর্ভ ফেটে গেলে পেটে যে রক্ত জমে সে রক্ত সে রোগীর শিরায় চালানো যায় কোন ক্ষতি ছাড়াই।
    মেডিকাল কলেজে দেখেছি—পেট খুলে মপে রক্ত শুষে ছাঁকনির উপর তা নিংড়ে বোতলে ভরে রোগীর শিরায় চালাতে। আমার রোগী এতটাই শকে, যে তা সম্ভব ছিল না। দাতার শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয় যে সেট দিয়ে, তার শিরায় ঢোকানো সূঁচ রোগীর পেটে ঢুকিয়ে দিলাম, বোতলে রক্ত জমা হতে লাগল। নিজের রক্ত ও দাতার রক্তে মহিলার শক সামলে নিয়ে অপারেশন শুরু হল, ছোট্ট অপারেশন, ভোরের আলো ভালোভাবে ফোটার আগেই অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এলেন রোগিনী।
    ২০ বছর আগে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধাহীন খনিশহরে মহিলার প্রাণ বেঁচেছিল। ২০ বছর পর মেট্রোপলিসে একই রোগে প্রাণ হারালেন ‘স’।
    কেন তা পরে আলোচনা করা যাবে।
    আসুন আগে জেনে নিই ‘এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি’ ব্যাপারটা কি।

    এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে যাওয়া
    এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি
    জরায়ুর বাইরে গর্ভসঞ্চারকে বলে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। সাধারণত এমনটা হয় ডিম্ববাহী নালী (fallopian tube)-তে, তাছাড়া হতে পারে ডিম্বাশয় (ovary), পেটের গহ্বর (abdominal cavity) বা জরায়ু-গ্রীবা (cervix)-এ। যতদিন যায়, ভ্রূণ বড় হয়, আশেপাশের কোষকলাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেমন ফেটে যায় ডিম্ববাহী নালী। প্রবল রক্তপাতে জীবন-সংশয় হয়। তাই এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি একটা জরুরী অবস্থা, যার চিকিৎসা জরুরী ভিত্তিতে করতে হয়।

    •কেন হয় এমনটা?
    নিষিক্ত ডিম ডিম্ববাহী নালীতে আটকে যেতে পারে যদি নালীতে কোন জন্মগত অস্বাভাবিকতা থাকে বা কোন কারণে যদি নালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়ে থাকে। ক্ষতির প্রধান কারণ তলপেটের জীবাণুসংক্রমণ (pelvic inflammatory disease)। নালীতে কোন রকম শল্যক্রিয়া হয়ে থাকলেও এমন হতে পারে। কপার-টির মত জরায়ুর মধ্যে যন্ত্র ঢুকিয়ে জন্ম-নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিতে বা কেবল প্রজেস্টেরনযুক্ত মুখে খাবার গর্ভনিরোধক বড়িতে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির হার বেশী।

    •কি ভাবে বুঝবেন?
    বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ে প্রথম দু মাসের মধ্যে। অনেক সময় অন্তঃসত্ত্বা বুঝতেই পারেন না, যে তাঁর গর্ভসঞ্চার হয়েছে। হঠাৎ করে অসহ্য পেটে ব্যথা। যোনিপথ দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। পেটের ভেতর রক্তক্ষরণের জন্য রোগিনী শকে চলে যান—ফ্যাকাশে হয়ে যান, ঘাম হতে থাকে, মূর্ছা যান।

    •রোগ-নির্ণয় কি ভাবে?
    এখন বইতে লেখা যোনিপথে আল্ট্রাসাউন্ডের প্রোব ঢুকিয়ে রোগ-নির্ণয় করার কথা অথবা ল্যাপারোস্কোপি করে দেখা। এই পদ্ধতিতে রোগ-নির্ণয় করে চিকিৎসা করতে গেলে কিন্তু আমাদের গরীব দেশে অধিকাংশ এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির রোগিনী মারা পরবেন—ব্যবস্থা কোথায় এসবের?
    আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন আমরা জুনিয়র ডাক্তার, তখন দুটো মাত্র আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন খোদ মেডিকাল কলেজে—একটা স্ত্রীরোগ বিভাগে, অন্যটা রেডিওলজি বিভাগে। কিভাবে তখন এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে গেলে রোগ-নির্ণয় করা হত? ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা থেকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগ-নির্ণয় হয়ে যেত। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পেটের ওপর দিয়ে বা যোনিপথে পেটের গহ্বরে সূঁচ ঢুকিয়ে রক্ত আছে কিনা দেখে নেওয়া হত। এ পদ্ধতিতে বিপদ নেই বললেই চলে, খরচ অনেক কম, যে কোন জায়গায় যে কোন সময়ে করতে বাধা নেই।

    চিকিৎসা
    এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে যাওয়ার আগে ধরা পড়লে মেথোট্রেক্সেট (যা ক্যান্সার বা রিউম্যাটয়েড আর্থাইটিস বা সোরিয়াসিস-এর ওষুধ হিসেবে বেশি পরিচিত) দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। ভ্রূণ, গর্ভফুল ও আশে-পাশের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকলা বার করতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপারেশন লাগে। রক্তপাত বেশী হলে রক্ত দেওয়াটা জরুরী। ক্ষতিগ্রস্ত ডিম্ববাহী নালী সারানো না গেলে কেটে বাদ দেওয়া হয়।

    এরপর গর্ভসঞ্চার হবে কি?
    একটা স্বাভাবিক ডিম্ববাহী নালী থাকলেই গর্ভসঞ্চার সম্ভব, তবে সম্ভাবনা একটু কমে যায়। দুটো নালীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে ‘টেস্ট টিউব বেবি’ ছাড়া উপায় নেই।


    ‘স’-এর মৃত্যু যে সব কথা আবার মনে করিয়ে দিল
    •একজন বিশেষজ্ঞ সাধারণ একটা রোগ ধরতে পারলেন না কেন? পুরোটা অবহেলা বলে ব্যক্তির ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়াটা সমীচীন হবে না। ডাক্তারী পাশ করার পর বিভিন্ন বিভাগে ঘুরে ঘুরে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করলে স্বাধীন ভাবে ডাক্তারী করার লাইসেন্স পাওয়া যায়। আগে ইন্টার্নশিপের পর যে বিষয়ে কেউ স্পেশালাইজ করবেন, সে বিষয়ে অন্তত এক বছর হাউস জব করলে এম ডি/এম এস-এর প্রবেশিকায় বসার ছাড়পত্র পাওয়া যেত। এম ডি/এম এস-এর আসন সংখ্যা ছিল কম, বেশীর ভাগকেই জেনেরাল ফিজিশিয়ান হিসেবে জীবন কাটাতে হত। তাই হাউস জব-ইন্টার্নশিপে হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ কম সদ্য-ডাক্তারই ছাড়তেন। আর এখন ইন্টার্নশিপের শেষেই পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটের প্রবেশিকায় বসা যায়। তাই অধিকাংশ ইন্টার্নই ইন্টার্নশিপে কাজ না করে-শিখে এম সি কিউ (টিক মারা অবজেকটিভ প্রশ্নোত্তর) মুখস্থ করেন। এঁরা কোনও এক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ তো হন, কিন্তু নিজের বিষয়ের বাইরে কোন রোগ চিনতে বা সামলাতে তাঁদের অসুবিধা হয়। তাই-ই হয়ত মেডিসিনের ডাক্তার ‘মা’ রাপচারড এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি চিনতে পারেন না!
    •আরেকটা ক্রমবর্ধমান রোগ রোগ-নির্ণয়ে যন্ত্রনির্ভরতা। শরীরে এক আঙ্গুল রেখে অন্য হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঠুকে ঠুকে অস্বাভাবিক তরল জমা বা গ্যাস জমা বোঝা যায়, আমরা আজকাল আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা অন্য কোনও স্ক্যান না করে বুঝতে পারি না। মলদ্বারে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেখা যায় প্রস্টেট বড় কিনা, আজকাল এভাবে কেউ বোধ হয় দেখেনই না।......

    যদি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনটাই না থাকত কলকাতায় তাহলে হয়ত, ‘স’-কে প্রাণ হারাতে হত না! বিতর্কিত বক্তব্য? বোধকরি তাই-ই। কিন্তু অন্য দেশের টেকনোলজি উপড়ে নিয়ে এসে এদেশে পুঁতে দিলে গাছ হবে না আগাছা সেটা ভেবে দেখার সময় বোধকরি এসেছে। আমরা মেডিকেল কলেজে যন্ত্রনির্ভর ডাক্তারি শিখব, তারপর গ্রামে গিয়ে হঠাত করে বিনা-যন্ত্রে, বা ক্লিনিক্যাল দক্ষতার ওপরে নির্ভর করে সব কিছু করতে পারব, এটা ভাবা একটু বাস্তববোধের অভাবই সূচিত করে নয় কি? যতদিন চিকিৎসাশিক্ষায় গ্ল্যামারের চাইতে বাস্তব পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচানোকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়া হচ্ছে ততোদিন বোধকরি বহু ‘স’ এইরকম নিধিরাম সর্দারের হাতে বলি হবেন।

    লেখক পরিচিতিঃ ডা. পুণ্যব্রত গুণ, এম বি বি এস, হাওড়ার একটি জনগণের নিজস্ব হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের কর্মী।
  • pi | 78.48.231.217 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ০১:৫১504641
  • লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ, পুণ্যদা।
  • aka | 81.91.97.20 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ১০:৩০504642
  • "যদি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনটাই না থাকত কলকাতায় তাহলে হয়ত, ‘স’-কে প্রাণ হারাতে হত না! বিতর্কিত বক্তব্য? বোধকরি তাই-ই। কিন্তু অন্য দেশের টেকনোলজি উপড়ে নিয়ে এসে এদেশে পুঁতে দিলে গাছ হবে না আগাছা সেটা ভেবে দেখার সময় বোধকরি এসেছে। আমরা মেডিকেল কলেজে যন্ত্রনির্ভর ডাক্তারি শিখব, তারপর গ্রামে গিয়ে হঠাত করে বিনা-যন্ত্রে, বা ক্লিনিক্যাল দক্ষতার ওপরে নির্ভর করে সব কিছু করতে পারব, এটা ভাবা একটু বাস্তববোধের অভাবই সূচিত করে নয় কি? যতদিন চিকিৎসাশিক্ষায় গ্ল্যামারের চাইতে বাস্তব পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচানোকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়া হচ্ছে ততোদিন বোধকরি বহু ‘স’ এইরকম নিধিরাম সর্দারের হাতে বলি হবেন।"

    এই জায়গাটা বুঝলাম না।
  • a x | 109.45.100.61 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ১১:০০504644
  • উত্তর এখানে ছিল তো -

    "আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন আমরা জুনিয়র ডাক্তার, তখন দুটো মাত্র আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন খোদ মেডিকাল কলেজে—একটা স্ত্রীরোগ বিভাগে, অন্যটা রেডিওলজি বিভাগে। কিভাবে তখন এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফেটে গেলে রোগ-নির্ণয় করা হত? ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা থেকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগ-নির্ণয় হয়ে যেত। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পেটের ওপর দিয়ে বা যোনিপথে পেটের গহ্বরে সূঁচ ঢুকিয়ে রক্ত আছে কিনা দেখে নেওয়া হত। এ পদ্ধতিতে বিপদ নেই বললেই চলে, খরচ অনেক কম, যে কোন জায়গায় যে কোন সময়ে করতে বাধা নেই।"

    তারও আগে আছে রক্ত চালানোর কথা। এই সহজ ট্রেনিং গুলো না পেয়ে, আল্ট্রার মেশিন নেই বলে অপেক্ষা করতে করতে স' মারা গেলেন।
  • kc | 204.126.37.78 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ১১:০৪504645
  • বাঃ। লেখাটা খুউব ভাল লাগল।
  • bb | 24.96.106.11 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ১৩:১২504646
  • লেখাটা খুব ভাল লাগল। তবে আজকাল ডাক্তারদেরওঅনেক অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয় শুধু মাত্র অভিঞ্জতার ভিত্তিতে কাজ করলে। তাই তারাও অনেক সাবধান হয়ে গেছেন।
  • aka | 81.92.63.114 | ১৭ মার্চ ২০১৩ ২২:১১504647
  • অক্ষ, এই জায়গাটা পড়েছি, কিন্তু আধুনিক ব্যবস্থা থাকলে তার সুযোগ নেওয়া হবে না কেন? লাস্ট প্যারাটা একটু বেশি জেনেরিক বলে মনে হল।

    লেখাটা ভালো লেগেছে।
  • rimi | 85.76.118.96 | ১৮ মার্চ ২০১৩ ০১:৪৪504648
  • লেখাটা আমারো ভালো লাগল।

    আরো একটা পয়েন্ট, যেটা জরুরী বলে মনে হয়, সেটা হল সাধারণ লোকেদের সচেতনতা বাড়ানো। বিবাহিত বা সেক্সুয়ালি অ্যাকটিভ মেয়েদের পিরিয়ড একমাস বন্ধ থাকলেই প্রেগন্যান্সি কি না সেটা পরীক্ষা করা উচিত। কম খরচে এবং খুব সহজে বাড়িতেই ইউরিন টেস্ট করে দেখার কিট তো আমি জানি ২০০১ সালেই খড়দার মতন মফস্বলে পাওয়া যেত। প্রত্যন্ত গ্রামের অশিক্ষিত মেয়েদের কথা তো বাদই দিলাম। শিক্ষিত শহরের মেয়েরাও সাধারণ স্ত্রীরোগঘটিত বেসিক তথ্যগুলো জানেন না। যেগুলো জানা থাকলে ডাক্তার রোগী দুজনেরই অনেক সুবিধা হয়।
  • pi | 78.48.231.217 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০২:১৩504649
  • তুললাম।
  • pi | 78.48.231.217 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৭:৪৩504650
  • মেডিক্যাল নেগলিজেন্সের কোন কেস থাকলে ডঃ স্বপন জানার ( Society for Social Pharmacology) সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ।

    নংঃ ৯৮৩০৮২৯০২০
  • | 24.97.72.91 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৭:৫৭504651
  • আচ্ছা এইখানে লিখি।

    ২০০৬ সালে হঠাৎ করে আমার ডানহাতের তালুতে ব্যথা শুরু হয়। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ?এ উঠে বসে থাকতে হত, তালু থেকে ব্যথাটা কনুইয়ের দিকে ছড়িয়ে যেত। উঠে বসে হাত ঝুলিয়ে রাখলে আবার ঠিকঠাক। দিনের বেলায় যখন তখন হাতের প্রথম তিন আঙুলে ঝিঁঝি ধরে যায়। তো ভালমত বেড়ে ওঠায় কোন্নগরে ডঃ সুমিত মিত্র, অর্থোপেডিককে দেখালাম। তিনি দেখে একটা বিটকেল টেস্ট করিয়ে জানালেন যে অসুখটা হয়েছে তার নাম কার্পাল টানেল সিনড্রোম। ওষুধ দিলেন আর রাত্রে শোয়ার সময় হাতে একটা পিজবোর্ড জাতীয় শক্ত কিছু কবজির ভিতর দিকে রেখে মাফলার দিয়ে জড়িয়ে শুতে বললেন। আরো বললেন বাজেভাবে হাত ঝুলিয়ে রেখে অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফল। অফিসে পুরো হাত সমান ভাবে ছড়িয়ে রাখা যায় এমন ডেস্কের ব্যব্স্থা করে নিতে বললেন।
  • | 24.97.72.91 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৮:০৭504652
  • দিব্বি কমে গেল এইসব করে। তার পরেও দুই তিনবছর ঐ একটু ঠান্ডা বাড়লে অল্প্স্বল্প ঝিঁঝি ধরত ডানহাতের তিন আঙুলে, তা বাদে ঠিক।

    ২০১০ এর ডিসেম্বরে হঠাৎ আবার খুব বেড়ে গেল। জানুয়ারি মাসে এমন অবস্থা হল যে তালা খুলতে পারি না, হাত থেকে চাবি পড়ে যায়, রুমালটাও হাতে রাখতে পারি না, ২-৩ সেকেন্ডের মধ্যে হাত থেকে অবশ হয়ে পড়ে যায়। কলম ধরে লেখা তো দুরের কথা, টাইপ করতেও পারি না। সবচেয়ে বাজে ব্যপার হল এবারে বাঁ হাতেও সমস্যা শুরু হল। ডানহাতের মত অত নয়, কিন্তু শুরু হল।

    তখন নিউ টাউনে থাকি, অ্যাপোলো কাছেই, গেলাম সেখানে। এক মিলিটারি ডাক্তার বন্ধুর রেফারেন্স নিয়ে তার ব্যাচমেটের কাছেই গেলাম। ইনি পুরানো রিপোর্ট, প্রেসক্রিপশান ইত্যাদি দেখে হাতের কিছু স্ট্রেস টেস্ট জাতীয় করলেন। তারপর সরাসরি অপারেশান করাতে বললেন। আমি তক্ষুণি অপারেশান করাতে ঠিক রাজী হতে পারলাম না। আমি একাই গেছিলাম দেখাতে। উনি মোটামুটি 'ঠিক আছে আপনি ভর্তি হয়ে যান, আমাকে ফোন নাম্বারগুলো দিন আমি আপনার বাড়ীর লোককে ডেকে আনছি' আমি তো হাঁ। এরকম ভাবে অপারেশান হয় নাকি, গেলাম আর জোর করে ভর্তি করে নেবে!! উনি সে ছাড়বেনই না, আর আমিও কিছুতেই ভর্তি হব না।
  • | 24.97.72.91 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৮:২৩504653
  • ভয় দেখিয়ে সুবিধে না হওয়ায় তখন ডাক্তার আমাকে খুব ভরসা দিয়ে বললেন এইতো হাতের তালুতে কুচ করে একটু কেটে আপনার হাতের এই টানেলের ভেতরে চেঁছে দেব, আজ আর কাল ছুটি নিলেই হবে, পরশু থেকেই অফিস যেতে পারবেন -- ইত্যাদি বলে ভরসা দেবার চেষ্টা করলেন। আমি তাতেও রাজী হলাম না। পরিস্কার বললাম সেকেন্ড ওপিনিয়ান না নিয়ে আমি মোটেই অপারেশান করাব না আর সেকেন্ড ওপিনিয়ান আমি অ্যাপোলোর বাইরের কারো থেকেই নেব।

    তখন উনি একটা ওষুধ লিখে দিলেন আর বললেন স্প্লিন্ট কিনে হাতে লাগাতে, দিন পনেরোর খুব বেশী হলে মাস দেড়েকের মধ্যে অপারেশান করিয়ে ফেলতে। এই স্প্লিন্টের কথা কিন্তু উনি এর আগে বলেন নি। তা প্রেসক্রিপশান নিয়ে গেলাম অ্যাপোলোর মধ্যেই যে ওষুধের দোকানটা আছে সেটায়। ওষুধ তো মোটামুটি পাওয়া গেল, স্প্লিন্ট এক হাতের আছে, তাও আমার পাঞ্জার মাপের তুলনায় অনেক বড়। সবচেয়ে বড় কথা একহাতের দাম হল ১৮০০ টাকা। ওরা বলল অন্তত ৩০০ টাকা অ্যাডভান্স দিয়ে গেলে ওরা আমার হাতের মাপ নিয়ে অর্ডার করবে, আমি ৪ দিন বাদে পাব। আমি রাজী হতে পারলাম না। যদি দেড়মাসের মধ্যে অপারেশান করতেই হয়, তাহলে এত দামী জিনিষ কিনে কী করব! ওটা তো অপচয়। আর সবচেয়ে বড় কথা জিনিষটা দেখে আমার কিরকম যেন দামটা অ্যাবসার্ড লাগছিল
  • | 24.97.72.91 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৮:৪৫504655
  • যাইহোক ওষুধ তো তক্ষুণি খেলাম, সেরকমই বলেছিলেন দিনে তিনটে করে ট্যাবলেট। অ্যাপোলো থেকে সোজা অফিস, সেক্টর-৫ এর BIPL, দূরত্ব সামান্যই। কিন্তু অফিস পৌঁছতে না পৌঁছাতেই আমার চোখ জুড়ে আসতে লাগল, হাত পা কিরকম অবসন্ন, চোখে সবকিছুই কেমন হলদেটে দেখছি। কি ভাগ্যিস সেদিন অফিসে সেক্ন্ড হাফে একজন ডাক্তার বসার কথা (সপ্তাহে তিনদিন অফিসে বসেন)। খুব কষ্টে ঘন্টা তিনেক কাটালাম। অফিসের ডাক্তারবাবু দেখে বললেন মনে হচ্ছে খুব কড়া ঘুমের ওষুধ পড়েছে। প্রেশার মাপলেন, প্রেশার বেশ কম। আমার এমনিতে একটু বেশীর দিকেই থাকে, ওটাই নর্মাল। ডাক্তারবাবু বললেন দুধ দিয়ে কড়া চা খেতে। সেই খেয়ে মাথা টলমল করা আর হাত পা অবশ অবশ হওয়াটা একটু কমল।

    আমি এমনিতেই খুব ঘুমকাতুরে। একবার কোনও কারণে অনেকদিন আগে ডাক্তার ঘুমের ওষুধ দিয়েছিলেন, সে অ্যালপ্রোজোলাম ২৫ এর আর্ধেক ট্যাবলেট খেয়েই আমি ১২ ঘন্টা অকাতরে ঘুমোতাম। এই ওষুধে যে এত কড়া ঘুমের ওষুধ আছে, সেটা উনি আগে বলবেন তো!! ডক্টর একটা নাম্বার দিয়েছিলেন, অপারেশান নিয়ে মনস্থির করতে পারলেই যেন যোগাযোগ করি, সেই জন্য। সেই নাম্বারে ফোন করে দেখা গেল সেটা ওঁর সেক্রেটারির কাছে যাচ্ছে এবং তিনি কিছুতেই ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলাবেন না। প্রেরদিন সকালে গিয়ে দেখাতে হবে। সেক্রেটারিদিদি পরামর্শ দিলেন বেশী অসুবিধে লাগলে, শরীর বেশী খারাপ মনে হলে যেন অ্যাপোলোর এমার্জেন্সিতে চলে যাই, উনি বলে রাখছেন ওদের, ওরা ভর্তি নিয়ে নেবে।
  • sch | 126.203.217.154 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৮:৫৬504656
  • tarpor?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন