এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পর্বে পর্বে কবিতা - তৃতীয় পর্ব

    pi
    অন্যান্য | ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ | ৫৪৬১৬ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 132.176.185.252 | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৯507730
  • আরে কী আশ্চর্য! ডিডি যে! বহুবছর অজ্ঞাতবাসের পর।
    ভিন্টাজ ডিডি!
    তবে সুক্কুরবারের বদলে শনিবারের সন্ধ্যে!
    তাই কি কবিতার মেজাজে একটু বদলের হাওয়া?
  • b | 135.20.82.164 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৬:০৯507731
  • কারিকুলাম ভিটা
    -------------------

    ঢেউ গুণে সময় কাটায়
    এইখানে বসে একজন
    বাসনা দিয়েছে ছুটি তাই
    মনে বাজে অকালবোধন।

    শব্দের অগোছালো রাশি
    ঢেকে দেয় সুদৃশ্য বাগান
    সন্তানের মুখে ফুটে ওঠে
    পঞ্চমীর চাঁদের আঘ্রাণ।

    ছায়াপথে ফুটে ওঠা নীল
    না পাওয়া সে মায়াবী হরিণ
    কৃষিকাজে আনাড়ি যদিও
    ভালোবাসে মানবজমিন

    পড়শীর সাথে দেখা হবে
    এই ভেবে কাটে বনবাস
    বার বার ভেঙে যায়, তবু
    আরশি নগরে সিসিফাস।
  • ranjan roy | 132.162.177.26 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৬:৫৪507732
  • ক্যাবাৎ! ক্যাবাৎ!
  • শ্ব | 53.224.129.51 | ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০৯:৫৬507733
  • যখ # ৩
    --------

    শক্ত ইঁটের মধ্যে
    পাথর , পাথরের মধ্যে গলতে থাকা
    ম্যাগমা , তার ভেতরে দুটো কান ঝোলা খরগোশ
    ভুলগাছের পাতা খেয়ে চোখ ছিরকুটে মরে গ্যালো ।

    হাঁ মুখ থামার আগে
    একটা ঝাঁকুনি , একটা কিচ কিচ আওয়াজ ,
    উবু দাঁতের প্লাস্টিক থেকে -

    ডক্টর সামন্ত পকেটে হাত রেখে বেড়িয়ে আসছেন
    দেখে আমি ভিডিও গেম খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি ,

    কেননা ,যতই মেঘ করুক
    প্রতিটা নোডের বিহেভিয়ার আর প্রপার্টি
    সাজানো হয়ে গেছে , এখন আমার -

    পকেট ভর্তি চিট কোড, বারান্দা ভর্তি হাভাতে ,
    কলাবতী মাটির তলায় ওদের চাপা দেব , সব
    সেট , শুধু কারেন্ট চলে গেলে ক্লান্তিকর :
    ঘড়িও থাকেনা ।।

    [ ১২ কার্তিক ১৪২৩ - কৃষ্ণ চতুর্দশী - চিত্রা নক্ষত্র ]
  • শ্ব | 53.224.129.44 | ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:৫৪507734
  • বারিষুযা
    ~~~~~

    রগে বন্দুক রেখে লিখতে বললে
    অনাগত বারুদের গন্ধ আমাকে
    প্রেমিক করে তোলে ,

    মৃদু ধোয়া , ব্যারেলের উত্তাপ মুছে
    নেওয়া জিন্সের ক্রোচে , এসব দেখবোনা আর ?
    ফিরে তাকাবোনা

    ছেড়ে যেতে যেতে -

    আনত সমাধিস্থলে ,
    সাদা পাথরের গায়ে হেমাটোন ছিটে ?

    নতুন কিছুই নেই , ঘন্টাঘরে
    দারোয়ান দেশে , শুধু এই তীব্র সালফার ভেবে
    প্রতিবার , হে বারিষুযা

    আমার হাতেই স্টক উঠে আসে , দেখবার
    শুধু দেখবার লোভে
    জামা পাল্টাই ফের , তুমি থাকো ,

    আমি ফিরি আসন্ন লোকালয়ে মাঝে ।।
  • ফরিদা | ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ১০:৪৬507735
  • ফুল নয়, পাতার উৎসব আজ, অসময়ে অসম্ভব কুয়াশায় ছুটি পড়ে গেল
    ঝিল থেকে বাষ্পরা ঘুম ভেঙে উঠে থম মেরে আছে
    ঘন নীল ট্রাম থেকে মানবশাবক নেমে গেল অচেনা স্টপেজে
    ওদিকে রান্নাঘরে মাখন মরিচ মেশে গোলাপি সসেজে।

    তুমি এসো। কয়েকটা পুরনো জামা যদি পারো তুলে এনো
    রথের মেলার কিছু হাবিজাবি, যা তুমি সহজে কেনো ফুটপাথ থেকে-

    ফুল নয় পাতার উৎসব আজ, হঠাৎ ছুটির দিন অকাল কুয়াশা দেখে।
  • ranjan roy | 192.64.117.122 | ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ১১:৪১507736
  • --"রগে বন্দুক রেখে লিখতে বললে
    অনাগত বারুদের গন্ধ আমাকে
    প্রেমিক করে তোলে ,

    মৃদু ধোয়া , ব্যারেলের উত্তাপ মুছে
    নেওয়া জিন্সের ক্রোচে , এসব দেখবোনা আর ?
    ফিরে তাকাবোনা

    ছেড়ে যেতে যেতে -

    আনত সমাধিস্থলে ,
    সাদা পাথরের গায়ে হেমাটোন ছিটে ?"
    --শুধু এই প্যারাটুকু লিখতে পারার জন্যে দু'দিন উপবাসে থাকা যায়। আমেন!
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১২:৪৮507737
  • [শ্রীকান্ত বর্মার "মগধ" কাব্যগ্রন্থ থেকে কিছু নির্বাচিত কবিতার অনুবাদ। এই কবিতাগুলোকে "জরুরী অবস্থা"কে সমর্থন করার প্রায়শ্চিত্ত/যন্ত্রণা বলে অনেকে বলেন।]

    (১)

    কাশীতে শবদেহ
    ===============
    দেখেছ কাশী,
    যেখানে মৃতদেহ আসে আর যায়
    একই রাস্তায়?

    মড়া নিয়ে কিসের মাথাব্যথা ?
    মড়া আসবে , মড়া যাবে।

    জিজ্ঞেস কর তো --
    ওই দেহটি কার ?
    রোহিতাশ্বের কি ?
    না, না; যত মড়া সব কি করে রোহিতাশ্ব হবে!

    হলে তো দূর থেকে চেনা যাবে,
    দূর থেকে না হলে কাছ থেকে,
    আর কাছ থেকেও যদি চেনা না যায়
    তবে ও রোহিতাশ্বই নয়।
    আর রোহিতাশ্ব হলেই বা কি,
    - কী আসে যায়!

    বন্ধু,
    তোমরা দেখেছ কাশী;
    যেখানে একই পথ দিয়ে মৃতদেহ আসে আর যায়।
    তোমারা সরে গিয়ে রাস্তা দিয়েছ ,
    রাস্তা দিয়েছ আর প্রশ্ন করেছ,
    -- কে যাচ্ছে ?
    সে যেই যাক,
    বা না যাক,
    তোমাদের তাতে কি এসে গেছে ?
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১৩:৩৪507738
  • (২)
    কোশাম্বী
    ---------------
    বাসবদত্তা শুধোয়--
    কী ছিল কোশাম্বীর আগে?

    শোন বাসবদত্তা।
    কোশাম্বীর আগে ছিল কোশাম্বী;
    কোশাম্বীর পরেও কোশাম্বী,
    কোশাম্বীর বদলে শুধু কোশাম্বীই পাওয়া যায়।

    এইভাবে কোশাম্বীর ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতে
    বাসবদত্তা একদিন পৌঁছে গেল
    কোশাম্বীতে।

    (৩)
    হস্তিনাপুর
    ========
    ওই লোকটার কথা একটু ভাব তো,
    যে হস্তিনাপুরে এসে বলতে থাকে
    -- না , না; এ হস্তিনাপুর নয়। এ হস্তিনাপুর হতেই পারে না।

    ভাব একটু সেই লোকটার কথা,
    যে আজ বড় একলা।
    কখনও হয়ত মহাভারতের যুদ্ধে লড়েছিল,
    আজ তাতে কার কি আসে যায়?

    যদি সম্ভব হয় তো একটু ভাব
    হস্তিনাপুরের কথা।
    যার জন্যে কিছু দিন পরে পরেই ভীষণ সব যুদ্ধ হয়ে গেছে।
    কিন্তু তা নিয়ে আজ কারও কোন মাথাব্যথা নেই,
    --শুধু সেই লোকটা;
    যে হস্তিনাপুরের এসেও বারবার বলতে থাকে
    -- না না; এ হস্তিনাপুর নয়।
    -----

    (৪)
    হস্তিনাপুরে কেউ কথা শোনে না
    -------------------------------------
    আমি আবার বলছি-
    ধর্ম না রইলে কিছুই থাকবে না!
    কে শোনে আমার কথা!
    হস্তিনাপুরে কথা শোনার অভ্যেস নেই যে!

    যে শুনছে
    সে হয় বদ্ধ কালা,
    নয় তাকে না শোনার জন্যেই চাকরি দেওয়া হয়েছে।

    আমি আবার বলছি-
    ধর্ম না রইলে কিছুই থাকবে না!
    কে শোনে আমার কথা!

    ওহে হসিনাপুরের বাসিন্দে!
    শোন বা না শোন, আমি বলছি সাবধান হও!
    তোমদের এক শত্রু এখানে গোকুলে বাড়ছে।
    তার নাম-- বিচার!
    আর মনে রেখ,
    আজকাল মহামারীর মত --ছড়াচ্ছে,ছড়িয়ে পড়ছে এই বিচার!
  • ফরিদা | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১৫:৩১507740
  • প্রাথমিক সাদা কালো দিন (২য় পর্ব)

    অথবা বোধনমাত্র, তাই সাদা অন্ধকার, হাওয়া নাই, বৃক্ষ নিস্প্রদীপ

    কাগজের পাখিরা রাত জেগে চেঁচিয়েছে কাল অনেকক্ষন ধরে।

    এমন বুভুক্ষা বহুদিন প্রত্যক্ষ করে নি কেউ -

    এমন আকাশ কেউ দেখে নি কো যাতে শুধু মূর্তিমান স্থানু ধুলোদের ঢেউ

    সূর্য আড়াল করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    এখন মাছ নয়, তৃষ্ণাকে মহার্ঘ করতে ঘোলা হয় পুকুরের জল

    পৃথিবীর যাবতীয় ছেঁদো কথা, ছল যার সবিশেষ উচ্চারণে বারংবার

    উচ্চকিত চির অমরত্ব আকাঙ্খায় মানুষকে মানুষের শত্রু করে তোলে

    এমন স্পর্ধা দেখে প্রাকৃতিক কাল চিল বেগ চেপে ল্যাজ তুলে পালিয়েছে

    এতটুকু ছোঁয়াচ যদি এড়ানই যায় – এমনকি সামান্য বিষ্ঠায়।

    অথবা বোধনমাত্র, টিম টিম করে চলিতেছে বোধ হীন মানুষের অন্তিম শেষ ক-টি সীন -

    মনে থাকে পৃথিবীর, মুক্তির অপেক্ষায় ফের দ্বিতীয় পর্বের প্রাথমিক সাদা-কালো দিন।
  • de | 24.139.119.174 | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১৬:০৯507741
  • বাঃ, ফরিদা অনেকদিন পর!
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১৭:২৬507742
  • (৫)
    উজ্জয়িনী যাবার পথ
    ----------------------
    যাঁরা উজ্জয়িনী যেতে চান তাদের জন্যে একটি ঘোষণাঃ
    এই পথ উজ্জয়িনী যায় না;
    আবার শুনুন, এই পথই উজ্জয়িনী যায়।

    কালকেও আমি সবাইকে বলছিলাম,
    -সাবধান! এই পথ কিন্তু উজ্জয়িনী যায়।
    আর আজকে সবাইকে পথ দেখাচ্ছি এই বলে
    -সাবধান! এ পথ কিন্তু উজ্জয়িনী যায় না।

    শুনুন যাত্রীগণ,
    সত্যিটা হল যে সব পথই উজ্জয়িনী নিয়ে যায়।
    তবে এটাও সত্যি যে কোন পথই উজ্জয়িনী নিয়ে যায় না।

    উজ্জয়িনী সারাক্ষণ পথের অপেক্ষায় বসে থাকে।
    উজ্জয়িনী সব পথের থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

    তাহলে
    যারা উজ্জয়িনী যেতে চায় তারা কোথায় যাবে?
    তারা উজ্জয়িনী যাবে আর বলবে --না, এ উজ্জয়িনী নয়।
    কারণ, আমরা তো ওই পথে আসিনি
    যে পথ উজ্জয়িনী নিয়ে যায়
    বা যায় না।

    (৬)
    অবন্তী রাজ্যে এক নামগোত্রহীন
    -----------------------------------------------
    যদি বলি আমি মগধের কেউ নই,
    আমি আসলে অবন্তীর
    তাতে কি কিছু আসবে যাবে?

    অবশ্যই।
    তোমাকে অবন্তীর ধরে নেব
    তাই মগধকে ভুলতে হবে।

    আর তুমি
    ভুলতে পারবে না মগধকে,
    সারা জীবন অবন্তীতে কেটে যাবে
    কিন্তু অবন্তীকে জানা হবে না।

    তখন উল্টো গাইবে
    অবন্তীর কেউ নই গো
    আমি আসলে মগধের
    কিন্তু কেউ মানবে না।
    কাকুতি মিনতি করবেঃ
    " সত্যি বলছি, আমি মগধের,
    অবন্তীর নই"।
    কারও কিছু আসবে যাবে না।

    তুমি মগধের
    কেউ মানবে না।
    তোমাকে অবন্তীতে
    কেউ চিনবে না।
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১৭:৫২507743
  • (৭)
    পাটলিপুত্র
    -------------
    ও মশায়,
    একটু শুনুন।
    আপনি আর আমি
    যে পাটলিপুত্রের জন্যে লড়ছি
    তা অন্য সবার কাছে খালি একটা কিংবদন্তী!

    শুনলেন তো,
    এটা নিয়ে ওরা একটু মাথা ঘামাতেও রাজি নয়,
    বলে কিনা-- কোন পাটলিপুত্র?

    মশায়,
    এবার উত্তরটা আপনিই দিন
    ওদের বোঝান
    -- এ হল সেই পাটলিপুত্র
    যার জন্যে সংগ্রাম করছেন
    বিম্বিসার অজাতশত্রু চন্দ্রগুপ্ত
    আপনি আমি
    ভাল করে বোঝাতে পেরেছেন তো?

    মশাই,
    শুনলেন ওদের টিটকিরি?
    " মূর্খের দল! একটা কিংবদন্তীর জন্যে লড়ে যাচ্ছ?"

    (৮)
    নালন্দা
    --------
    আমি তো যাব তক্ষশিলায়,
    তুমি কোথা চললে?
    নালন্দা।

    না; এ রাস্তা নালন্দয় যাবে না।
    যেত কখনও
    এখন আর না।
    নালন্দা অন্য পথ ধরেছে।
    এখন এই পথ ধরে তুমি পৌঁছে যাবে
    নালন্দা নয়, তক্ষশিলায়।
    কী? যাবে নাকি তক্ষশিলায়?

    নালন্দাযাত্রী বন্ধুগণ
    আকছার এই হচ্ছে
    যে রাস্তা তৈরি হয়
    তা আমাদের সেখানে নিয়ে যায় না
    যেখানে যাবার কথা
    যেমন ধরুন নালন্দা।
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ১৮:৩৮507744
  • (৯)
    মথুরার বিলাপ
    ---------------
    শুনতে পাচ্ছ মথুরার কান্না?

    এটাই হয়
    যখন মথুরা আর নেই
    তখন শোনা যাবে
    মথুরা কাঁদছে
    মথুরা! মথুরা!

    মথুরা তো এক সামান্য উদাহরণ মাত্র
    অবন্তীর কথাই ধর।
    কান পেতে শোন

    শুনতে পেলে?
    ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে
    অবন্তী! অবন্তী!

    বলেছিলাম না--
    যখন মথুরা আর নেই
    অবন্তী হারিয়ে গেছে
    তখন লোকে হাহাকার করে-
    মথুরা! অবন্তী!

    হয়তো মানুষের এটাই স্বভাব
    ধ্বংস হয়ে স্মৃতিমাত্র হয়ে যাওয়া
    নগরীর জন্যে আর্তনাদ করা।

    কিন্তু
    মথুরা আর অবন্তী
    শুধু স্মৃতিশেষ নয়।

    আর যদি হয়ও
    কেউ কি মানবে
    মথুরা ও অবন্তী
    আজ শুধু স্মৃতিমাত্র!

    (১০)
    কোশল এক গণরাজ্য
    --------------------
    কোশল আমার কল্পনায় এক গণরাজ্য বটেক।
    সেখানে প্রজা সুখী নয়
    কারণ কোশল গণরাজ্য শুধু আমার কল্পনায়।

    নাগরিক
    সারাদিন শুধু জুয়ো খেলে
    আর যে খেলে না
    সে খালি ঝিমোয়।

    নাগরিক
    সারাদিন গাল-গল্প করে
    আর যে করে না
    সে খালি ঝিমোয়।

    নাগরিক
    সারাদিন তিতকুটে হয়ে থাকে
    যে থাকে না
    সে শুধু ঝিমোয়।

    নাগরিক
    কোসলের অতীতগৌরব নিয়ে গর্বিত হয়
    যে হয় না
    সে শুধু ঝিমোয়।

    কোশল আমার কল্পনায় এক গণরাজ্য বটেক।
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ২১:০৪507745
  • (১১)
    অম্বপালী
    (আম্রপালী)
    ------------
    ঘুমে অচেতন বৈশালী
    একা জাগে অম্বপালী

    ঘন অন্ধকার
    অন্য কোন ভুবনে ধীরে ধীরে ভোর।

    ঝরে পড়ছে নক্ষত্রের দল।

    বৈশালীতে মানুষেরা
    জন্ম নেয়, মরে যায়।

    বৈশালী কি ঘুমিয়ে পড়েছে,
    না কি মরে গেছে?
    অম্বপালী স্বপ্ন দেখে শিউরে উঠছে।

    ভয় পেয়ো না অম্বপালী।

    (১২)

    অশ্বারোহী
    -------------------
    কলিঙ্গ গিয়েছিল যে অশ্বারোহী
    আর যে ফিরে এল
    দুজন কি এক?

    লোকজন ওকে কী বলে--
    বিজয়ী না খুনি?
    ওকে কি নগরবধূরা বরণ করে?
    না কি ও ঘুরে বেড়ায় একা একা?

    বল হে অশ্বারোহী
    তোমার পথের শেষ কোথায়?
  • Ranjan Roy | ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ২২:২১507746
  • (১৩)
    হোম
    -------
    চাইলে গা বাঁচাতে পারতাম
    কিন্তু কী করে?
    যে পিছলে যাবে
    সে তো সৃষ্টি করতে পারবে না!

    প্রথমে ঝলসে গেলাম,
    তারপর জ্বলে উঠলাম দাউদাউ করে
    শেষে ফাটল ধরল।

    কাঁদতে পারতাম
    কিন্তু যে কাঁদে
    সে সইবে কী করে?

    এ না আত্মোৎসর্গ ,
    না আত্মপীড়ন
    না নিজেকে শাস্তি দেওয়া
    তাহলে
    -- এ তবে কী?
    পারতাম অন্যের ঘাড়ে
    দোষ চাপাতে,
    অন্যের দিকে আঙুল তুলতে

    কিন্তু কী করে?
    যে অন্যের ঘাড়ে চাপাবে
    সে কী করে গড়বে?

    (১৪)

    ধর্মযুদ্ধ
    -------
    কী করে এটা সম্ভব
    যে দুদিকেই নিহতের সংখ্যা সমান সমান?

    কী করে এটা সম্ভব
    যেই একপক্ষের পতাকা ধূলোয় লুটোবে
    অমনি অন্যেরও তাই হবে?
    একপক্ষে যে ক'জন বিধবা
    অন্য পক্ষের সধবার সংখ্যা
    তাকে ছাড়িয়ে যাবে না?

    কী করে এটা সম্ভব
    যে এক রাজধানীতে
    যেই কান্নার রোল
    অন্য রাজধানীতেও
    হাহারবে বিলাপ?

    দুদিকেই পশ্চাত্তাপ
    দুদিকেই ন্যায়
    দুদিকেই অন্যায়
    দু'পক্ষই অস্ত্র নামিয়ে রাখল
    দু'পক্ষই বিজয়ী হল!

    আমি বলছি
    এ অসম্ভব।

    একতরফা হত্যা
    একতরফা জয়
    একতরফা দর্প
    একতরফা ভয়
    একতরফা বিধবা
    একতরফা সধবা
    একতরফা বিলাপ
    একতরফা সন্তাপ
    একতরফা হর্ষ
    একতরফা পশ্চাত্তাপ
    একতরফা ধরম
    একতরফা শরম

    দু'দিকে নিহতের সংখ্যা সমান হয় না।
  • শ্ব | 53.224.129.53 | ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০৫:১৪507747
  • যখ # ৫
    ~~~~~

    সারাদিনে ইচ্ছেপূরণ
    বলতে সিগারেটে আড়াই টান দেওয়ার পর
    হাগা পাওয়ার অনুভূতিটুকু ,

    এছাড়া যা যা মাথায় থাকে
    যেমন যতটা সম্ভব ঘুমিয়ে নেওয়া দরকার
    আর নিজের মুখের গন্ধে
    একটা সাদা কুরকুরে মাকড়সা
    থিম হয়ে বসে থাকে , তাকে বুঝিয়ে বলা
    যে আজও টিপিন
    নিয়ে কেও আসবেনা তবে শেকল ধরে নেবে
    আসা আলোর কাচ্চিল
    থেকে সময় বুঝে চেটে নিতে পারলে তিনটে
    পার্পল রঙের মুরগি তো ফ্রী পাওয়া যেতেই পারে !

    তবে এসব এমনি এমনি হয়না , নিডল ঢোকানই
    থাকে , মাঝে মাঝে ফ্লো চেক
    করে যায় যে বুড়ো পশমিনা যোন্তিম তার
    নাম শ্বেতাঃ , এরকম নাম নিয়ে

    যারা ঘোরে তাদের নরমালি দুটি লেজ
    থাকে ঘন ও বেগুনি ফ্রীল , তবে ;

    এক্ষেত্রে প্রচন্ড ঘুম সাদা ভালকান ভেকু সেকী বিচ্ছিরি কুয়াশা রে বাপ ।।
    .

    [১১. শুক্ল একাদশী , উত্তরভাদ্রপদ নক্ষত্র,অয়নাংশ: ২৪º৫'২৮"]
  • Ranjan Roy | ১৩ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০৩507748
  • (১৫)
    চম্পানগরীর যাত্রী
    -------------------
    ব্যস্, শুধু চম্পানগরী যাব।
    এই পথ শুধু চম্পানগরীই যায়।
    যারা অন্য কোথাও যেতে চায়
    তারা অন্য পথ ধরুক গে,
    কিন্তু আমাদের, মানে চম্ম্পানগরীর যাত্র্রীদের
    এইসব প্রশ্ন তুলে যেন ভ্রমিত না করে, যেমন
    -- এই পথে কি চম্পা যাওয়া যাবে?

    যারা চম্পা যেতে চায়
    তাদের কোন প্রশ্ন করার অধিকার নেই--
    এ নয়, -- চ্ম্পানগরী কোথায় আছে?
    এও নয়,--চ্ম্পানগরী কোথায় নেই?
    এটা না, - চম্পা কি আছে?
    এটাও না, -- এটা সত্যি যে চম্পা আগে ছিল, এখন নেই?
    আমাদের তো, ব্যস্, শুধু চম্পানগরী যেতে হবে।

    (১৬)
    কান্যকুব্জযাত্রীদের মিনতি
    --------------------------
    বন্ধুগণ,
    কোথায় চলেছেন আপনারা?
    আমরা সবাই কান্যকুব্জ যাচ্ছি।
    কেননা সবাই ওখানেই যাচ্ছে।
    যে কোথাও যায় না, সে কান্যকুজ চলেছে।
    যে কোথাও কোথাও যায়, সে ও কান্যকুব্জ চলেছে।
    যে কান্যকুব্জকে ভালবাসে, সে কান্যকুব্জ চলেছে;
    যে কান্যকুব্জকে হিংসে করে, সে ও কান্যকুব্জ চলেছে।

    যে কান্যকুব্জের বিষয়ে কোন কিছুই জানে না,
    সে চলেছে কান্যকুব্জ,
    যে কান্যকুব্জের বিষয়ে সবকিছুই জানে ,
    সে ও চলেছে কান্যকুব্জ,

    এমন কে আছে যে কান্যকুব্জ যাচ্ছে না!
  • অনিকেত পথিক | ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৮:০৫507749
  • # কথা ছিল
    সব ভুলে যাব
    রোদ্দুরে জোছ্‌নায় মিশে যাওয়া
    এইসব ডাকনাম
    নিঃশর্তে তুলে নেব চরাচর থেকে
    যদি চাও।

    তারপর পাতা জুড়ে যত কাটাকুটি
    সেইসব একক সংশোধনের কথা
    তুমিও জানতে চেয়ো না
    প্রতিশোধ নেই ক্ষমাও নেই কোত্থাও
    শুধু ঘাসের আগায় যে শিশিরবিন্দু
    তার খোলা চোখে এখনও রয়ে গেছে
    আমাদের দু-একটা না-রাখা প্রতিশ্রুতি
    নিঃসঙ্কোচে তুলে নাও
    ভুলে যাও
    কিচ্ছু বদলাবে না
    আমিও ভুলে গেছি সব।।
  • Shakti kar bhowmik | ১০ জানুয়ারি ২০১৭ ২১:২০507751
  • কর্পূরের কাজল
    ---------------
    তোমার করপুটে কর্পূরের কাজল
    যত্নে তুলে রাখো রূপোর কাজল লতায়।
    একটু হয়তো দেরি হবে
    দেখো সে হয়তো রাত্রির শেষ যামে চলে এলো,
    কতো ব্যথা নিয়ে তুমি জেগে আছো,
    জেগেই থেকো কিন্তু ঠিক আসবেই।
    উপযুক্ত কালিমা তাকে ঝিকিয়ে তুলবে।
    পৌষরাতের শেষ প্রহরে অনেক স্বপ্নিল তাকাবে যখন -
    আঁখিপল্লবের ওপরের একটু বাড়তি ছায়া -
    তাকে যেন খরতাপে কিছু শান্ত রাখে।
    অনেক দহন যেন সহনের সীমা না ছুঁতে পারে।
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:১১507752
  • দেওয়ালি
    তিলে তিলে গড়েছে বারুদের বুক
    হৃদয়ের সোনালী আগুন, রোশনাই
    বহু যত্নে, স্রষ্টার কুশলী আঙ্গুল
    আবেগ-আর্দ্রতা, আঁখিজল, মায়া-পিছুটান
    সন্ধ্যার নিবিড় ডাক, হিমেল অঘ্রান
    চেঁছে ফেলে নিপুণ নির্মম হাতে
    পাঁজরের প্রতি হাড় দহনের তাতে
    শুকিয়ে নিয়েছে, পরম দাহ্যতার বর
    চেয়ে সূর্যের কাছে, ওরা শুয়ে আছে
    টানটান, পাশাপাশি, সৌর তেজোরাশি
    শুষে নিতে, কোষে কোষে , প্রতি নিঃশ্বাসে
    অন্তিম পরীক্ষা আজ রাতের আকাশে

    উচ্চাশার মেঘলোক কেউ যাবে ফুঁড়ে
    দিগন্তে রঙের ফোয়ারায় অনুপম
    আঁকবে ছবি কেউ, নৃত্যের বক্রছন্দে
    আগ্নেয় আল্পনা কেউ ফোটাবে মাটিতে

    ........

    সূর্যের দীপ্ত চোখ ভরে ওঠে জলে
    মেঘের অছিলায়, ঢেকে ছায়ার আঁচলে
    দু ফোঁটা আর্দ্রতা দিয়ে, করুনার কণা
    দু একটি হৃদয়ের বহ্নি-বাসনা
    ঈষৎ শমিত করে যদি, আহা
    উজ্জ্বল মৃত্যুর এই উৎসব, হা হা
    শব্দে বয়ে যাওয়া হাড়-হিম হাওয়া
    দহনান্তে ব্যর্থ ছাই ওড়াবে প্রান্তরে
    তখনো দু একজন যদি মাটির অন্দরে
    ঘাসের গহনে যদি মুখ গুঁজে থাকে
    আরো কোনো বর্ষায় তটিনীর বাঁকে
    নতুন সবুজ চরে, পরিযায়ী ঝাঁকে

    মিশে স্বাধীন আকাশে, বসন্ত-বাতাসে
    অনাবিল আবিরের গন্ধ নিয়ে শ্বাসে
    আরো কিছু আয়ু পাবে, দেখছে যেতে পারে
    আরো কটি মধুঋতু, এই কথা ভেবে
    সূর্যের সজল চোখ, ঘন মেঘ ভারে
    চরাচর ভরে ওঠে করুন আঁধারে।
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:১৫507753
  • এয়ারপোর্টে, কবিতা ১

    দুটি পথ গিয়েছিলো বেঁকে
    কবে, ঠিক কতদিন আগে, একে অন্যের থেকে
    দূরে সরে যেতে যেতে
    অভিমানে, আর্তিতে, ক্ষুরধার বেদনার
    ছুরিতে আঘাত পেতে
    দু হাতের সেতু ভেঙে যাওয়া
    তোমার কবিতায়
    দেখেছি অনেক পরে, স্মৃতির অতল
    থেকে বিস্মৃতপ্রায়
    নিটোল মুক্তোর মতো একেকটি মুহূর্ত
    সমস্ত কালির দাগ, রক্তের রেখা
    অমল অশ্রুজলে ধুয়ে মুছে গিয়ে
    হৃদয়ের অক্ষরে ভালোবাসা লেখা
    শুধু ভালোবাসা, নাম গোত্র হীন
    মুক্তির অদৃশ্য বাঁধনে
    জড়ানো রয়েছে, ছিল, অগোচর স্তর
    ঘিরে যাপিত জীবনে
    পথ দুটি কাছ দিয়ে হেঁটে
    যায়, অলক্ষ্যে ছুঁয়ে
    অস্বচ্ছ বিভাজিকার দুই প্রান্ত বেয়ে
    আকুল মায়ায় নুয়ে
    নিবিড় ধরতে চায় একে অন্যের হাত
    দেয়াল হাতড়ায়
    অন্ধের মতো, হৃদয়ের অতীন্দ্রিয় চোখ
    দিয়ে চেনা যায় ?
    চেনা যায় পুরোনো দিনের স্পর্শ গন্ধ
    আবেগ মাখানো স্বর ?
    দুটি পথ কাছে আসে, তবু মাঝে
    অলঙ্ঘ্য আরক্ষা-স্তর
    ঠেলে দিয়ে ভিন্ন তলে, বলে দেয়
    এখনো আসে নি সময়
    জন্মান্তর ছুঁয়ে থাকা জাতিস্মর প্রহর
    এখনো তাদের নয়
    কাছে এসে আজো তাই পরাবৃত্তে বেঁকে
    দূরে সরে যাওয়া
    পথ দুটি পৃথক উড়ালে, করুণ আকাশে রেখে
    কিছু সাদামাটা চাওয়া
    সময়ের বাঁকে কোনো অশ্বত্থ ছায়ায়
    দুদণ্ডের দেখহ হোক
    মধ্যে ঢাকা গোধূলির মিতবাক আলো
    বৃষ্টিভেজা নীড়ের পালক
    ঝরুক কপালে গালে, সময়ও থামুক
    একবার, শুধু একবার
    তার পর জীবনকে যেতে দেব আরো
    কুড়ি কুড়ি বছরের পার
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:১৮507754
  • `মধ্যে ঢাকা ' না হয়ে `মেঘে ঢাকা' হবে আর তার আগের লাইন এ দেখহ না হয়ে `দেখা'
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:১৯507755
  • এয়ারপোর্টে ২

    তোমার কথা নয়, তোমাকে
    শুনতে পেলাম, দেখা হবে না যদিও
    চোখ দিয়ে কি দেখা যায় শুধু
    তোমার কণ্ঠস্বরে দেখা হল আগুনের তাপে
    পোড়া ক্লান্ত এক হৃদয়ের সাথে
    উর্ধশ্বাস তাড়নায় উড়ে চলা
    নীড়-হারা মা পাখির আর্তিময় গলা,
    সবকিছু সময়ের দেয়ালে আটক
    পড়ে গেছে, তাই আর বলা
    হয়ে উঠলোনা, মুক্ত আকাশের মতো
    একটুকরো বাসা এই বুকে
    ছিল, আছে, দ্বার খুলে মাঝে মাঝে
    তার কাছে চেয়ে নিও ভোরের বাতাস
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:২০507756
  • অরূপ অন্ধকার

    অরূপ অন্ধকার যেমন লেগে থাকে পাতার
    ভাঁজে ভাঁজে, মেঘের আদল ছুঁয়ে মায়াবী ছায়ায়
    নিপাট উজ্জ্বল আলোর ক্যানভাসে রূপকার
    হয়ে ভাঙে গড়ে চিবুকের খাঁজে চোখের তারায়
    ভাষা দেয়, নক্ষত্র-নিবিড় আকাশ দীঘির অপার
    জলে ডুব দিয়ে শান্ত আঁধার জড়ানো শেওলায়
    অপেক্ষায় থাকে কবে পাবে মাটির আধার
    যে মাটি বিমূর্ত রূপের স্বপ্ন জাগ্রত কায়ায়
    লেপে দেবে একদিন, রূপদক্ষ ভাস্কর আঁধার
    ফোটাবে নৃত্যের ভাষা সর্ব অঙ্গে ছায়ার রেখায়।
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৪:২৩507757
  • চাঁদ

    গোধূলি-সন্ধিতে আশ্চর্য গোল রক্তমাখা চাঁদ
    সমস্ত আকাশ জুড়ে, সন্ধ্যা-আরতির ঠিক আগে
    তারারা ওঠে নি এখনো , এই বিরল সুযোগে
    যন্ত্রণার যাবতীয় ইতিহাস দেখাতে চেয়ে চাঁদমুখ
    চাকার ঘষায় কাঁকুরে পথের মতো রক্তাক্ত
    একটু পরেই একে একে জেগে উঠবেন সপ্তর্ষিরা
    ধনুর্বান হাতে কালপুরুষ নেমে দাঁড়াবেন সদর দেউড়িতে
    লুব্ধকের তীব্র দৃষ্টি পাহারা দেবে আকাশের পবিত্র উঠোন

    তার আগে পরিপাটি প্রসাধন সেরে কুসুম রঙে
    লাল থেকে কমলা হয়ে ঈষৎ পীতাভ সাদা
    হয়ে শেষে পরিপূর্ণ মহৎ শুভ্রতায় মধ্যগগনে
    পাটরানী হয়ে বসতে হবে রোজকার মতো

    তারপর রাতের বয়স হলে আলোর অন্তঃপুরে
    চুপিসারে সরে যাওয়া নৈমিত্তিক চক্রপথে
    রক্তাক্ত আনন ফেরানো থাকবে যেদিকে দ্রষ্টাহীন
    বোবা শূন্যতা হাঁ করে আছে অতল খাদের মতো

    দেশকাল তলে কোনো এক আশ্চর্য
    ফাটল পেয়ে আজ রক্তক্ষত
    বেআব্রু করেছে নীরব বিস্ফোরণে মহাকাশ জুড়ে
    নেহাত ই ক্ষনিকের এই অন্তর্ঘাত, তবু মেঘে মেঘে
    হয়তো রেখেছে যাবে গোপন রক্তের রেখা
    গগনের গহন কন্দরে চুঁইয়ে নামবে
    অনাগত কালিক মাত্রায়, অগম স্থানাঙ্কে
    স্থিতির খোলস ফুঁড়ে উঠবে হয়তো
    প্রথম উদ্ভিদের মতো
    একদিন
  • Shakti kar bhowmik | ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ২০:০২507758
  • সুনীতিদি-
    -------------------
    তুমি মুক্তি চাও সুনীতিদি!
    সুনীতিদি ,মুক্তি মানে কি গো?
    যদি মুক্তি পাই ----
    আকাশে মাটিতে জলে শূন্যে মিশিয়া যাবো?
    তোমার ভয় হয় না সুনীতিদি,
    যদি শুধু অন্ধকারে ভাসিয়া চলিতে হয়, ঘোর অন্ধকার?
    একলা পথে যেতে যেতে যদি কারো সঙ্গে না হয় দেখা।
    যদি কেউ দৃঢ় আলিঙ্গনে অভয় না দেয় নিশিরাতে।
    তুমি মুক্তি চাও? আমি ভয় পাই সুনীতিদি।

    আমি ক্রুদ্ধ সন্তানের মুখে অপলক তাকাই অনিমিখ,
    কবে যেন চোখ চেয়ে হেসে স্তন্যপান করিতেছে শিশু।
    আমার বিধ্বস্ত প্রাঙ্গণে স্বপ্নে ভেসে থাকে বিহ্বল বিবাহ মণ্ডপ।
    আমার নেভানো উনুনে কেন যে ভাসিয়া আসে কবেকার মিষ্টান্ন -সৌরভ।
    আমি ভয় পাই সুনীতিদি,-----
    মৃত্যুর অপর পারে আবার জীবন চাই।
    পুরোনো বাবার মতো ঘামেভেজা বাবা,
    রুচিশীলা পুরোনো শাশুড়ী।
    মা আমার চাই ,সে অনন্যা মিঠুমাসি, কেন তাঁকে পাবো না আবার ?
    আবার সাজানো ঘরে সাজিব নিজের মনে।
    মৃত্যু হোক এইবার। তবু যেন ফিরে আসি হাঁস নয় পাখি নয়। -
    মানুষের বেশে।

    আবার গাহিব জেনো সুতীব্র প্রত্যয়ে -
    আমায় নাহলে প্রভু --
    "তোমার প্রেম হোত যে মিছে।"
  • nabagata | 24.139.222.72 | ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ১৩:৫৯507759
  • দ্বার রুদ্ধ হয়েছিল উচ্চকিত কলরবে
    অথচ, খুলে যায় আঙুলের আলতো ছোঁয়ায়
    ভেতরে তো খোলাই ছিল একের পর এক
    ঘরের দুয়ার , ঘোরানো সিঁড়ির হাতলে
    ভর দিয়ে অপলক দাঁড়িয়ে থাকা
    না-হওয়া মুহূর্তরা, উঠোনে গোল হয়ে
    রঙিন ছত্রাক, পরীরা নেচে গেলে যেরকম হয়
    গোলাপি পদ্মের আভায় এখানে দিন রাত
    থেমে ছিল, অভিমানী মিহিন ঊর্ণায়
    লেগে ছিল না বলা কথারা

    সেদিন তো রক্ত ঝরেছিল
    কাঁটা -বেঁধা পদতলে, অন্ধ হাহাকার
    ধুলোয় উড়েছিল, বেদনার অশ্বখুরে
    তছনছ হয়েছিল ঘাসের শ্যামল শান্তি
    তারপর সব স্তব্ধ হয়ে এলে
    বন্ধ ফটকের গায়ে স্বর্ণলতা
    ছেয়ে গেলো প্রশান্ত বিস্মৃতির মতো
    বটের প্রগাঢ় ঝুরি নেমে
    পরম মমতায় ঢেকে দিলো রক্তাক্ত
    ভাঙ্গনের যাবতীয় দগদগে ক্ষত
    দরজার ওপারে স্বপ্নিল কৈশোর০চোখ
    মেলে না-হওয়া মুহূর্তরা জেগে ছিল
    বিভোর স্থবির সময়ে, আজ অনায়াসে
    মুক্ত দুয়ার বেয়ে আলোর নদীতে ভাসে
    বয়ে যাওয়া সময়েরা, হয়ে-ওঠা জীবনেরা
    হাত ধরে না হওয়া জীবনের, যেন চিরদিন
    একসাথে হেঁটেছিলো, বেঁচে ছিল, এক নিঃশ্বাসে
    পরস্পর হাত ধরে ভেসে যাবে নির্ভার আকাশে
  • | ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ১০:০৯507760
  • আহা অনেকদিন বাদে এ টইটা আপডেট হচ্ছে।
  • i | 116.69.193.160 | ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:৪২507762
  • বিবিধ প্রকরণ

    সকাল থেকে মাথায় ঘুরছে
    তন্নিষ্ঠ শব্দটা
    বলা নেই কওয়া নেই
    কোথা থেকে এলো
    যাবেই বা কোথায়
    এই সব ভাবতেই
    তন্নিষ্ঠ আউট
    বিবিধ প্রকরণ ইন

    কি মনে হয় বলুনতো?
    জানেন আপনি
    শব্দগুলো আদৌ সমান্তরাল নয়
    ৩০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে পরস্পর ছুঁয়েছে।
    এখনও বুঝলেন না
    কি বলতে চাই?

    ট্র্যান্স্লেশনের খাতা
    নয়।
    জ্যামিতির বই ও নয়।
    এ যদি আমার প্রেমপত্র হয়,
    তাড়িয়ে দেবেন?

    ***********************************************************
    হ্যানসেল

    তোর কাছে এসেছি
    আগুন জ্বালাবো বলে।
    চকমকি পাথরগুলি
    দুই পকেট ভরে নিয়ে
    বদলে রাস্তায় ছড়িয়ে দিয়েছি
    ছেঁড়া রুটি গুঁড়ো গুঁড়ো
    পাখিরা উড়ে এসে খেয়ে যাক
    কোনো চিহ্ন যেন না থাকে

    আগুন নিভে গেলে
    ছাইগাদায় কুকুরকুন্ডলী
    রোঁয়াওঠা ধুলোবালি
    ছেঁড়া কম্বল
    ভঙ্গুর মাটির ভাঁড়ে পিপাসার জল-

    ফিরে যাব বলে তো আসি নি এখানে।

    ***********************************************************
    আল্ট্রা ভায়োলেট

    সূর্যের হাত খুব লম্বা
    আকাশ থেকে ছুঁয়ে দিচ্ছে
    তোমার বারান্দা, ক্যাকটাস, বসবার মোড়া, এলো চুল-
    তোমার বুকের ওপর শুধু ছায়াটুকু-

    তুমি রেলিংএ হাত রেখে -
    ঘাড় ঝুঁকিয়ে ডাকলে-জিমি জনি গ্লসি ফ্লসিইইই-
    তোমার প্রশ্রয়টুকু বুঝে নিয়ে
    সরলরেখায় রোদ নামল তোমার গলায়, চিবুকে-

    তারপর ঠোঁট ছুঁতে গিয়ে দেখলো
    তোমার হাত বাইছে একবিন্দু পিঁপড়ে -
    কালো ও তুমুল আলাভোলা-

    তোমার শরীরভরা রোদ পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে ছায়ায়

    **********************************************************
    উল

    বেড়ালছানারা খেলা করে
    ক্রমাগত
    স্বপ্নের ভেতরে
    রামধনু রঙের মত তিনটে বেড়াল
    ওঠে নামে খেলা করে
    কয়লার গাদায়
    কাছে এলে দেখা যায়
    আলো নয় রং নয়
    উলের সূতোয়
    জড়ানো রয়েছে সব
    বেড়ালের ছানা।
    লাটাই খুঁজতে গিয়ে
    উল্টো সোজা হাতে বোনা
    ছেঁড়া খোঁড়া উলের ব্লাউজ

    গোঁজা দেখি কয়লার গাদায়।

    ***********************************************************
    চেনা কাক

    দেরি হবে আজ- এতো জানাই।
    শয্যার মল্লিকাকুসুম
    রজনীগন্ধার মালাদুটি
    চন্দনের সাজ
    কতদিন পর আবার এসব
    গুছিয়ে আসতে
    সময় লাগবে বৈকি

    কাক বসে আছে ছাদের আলসেয়
    চেনা কাক
    থাক বসে
    অপেক্ষায়

    আজ কিছু দেরিতে প্রাতরাশ হবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন