এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • বাঙ্গলা গানের নতুন ধারা

    kallol
    গান | ১৪ মার্চ ২০১২ | ৮৬২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৪ মার্চ ২০১২ ১৫:২৯535193
  • আগে আমার গান সম্পর্কিত ধারনা পরিষ্কার করে নেই।
    গান মানে সুরারোপিত বাণী। সেটা বাংলা ভাষায় হলে বাংলা গান। এর সাথে বাণিজ্যিক ভাবে প্রকাশিত হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। মানে রেকর্ড/ক্যাসেট/সিডিতে ছাপা গানই শুধু গান নয়। তার বাইরেও অজস্র গান হয়েছে/হচ্ছে, তাদেরও আলোচনায় রাখতে হবে।
    মূলত : সেই জায়গা থেকেই আমার মত, সুমন নয়, তারও অনেক আগে থেকেই বাংলা গানে নতুন ধারা বহমান। সুমন তার একজন অংশীদার অবশ্যই, তবে সেটা ৯০এর সুমন নয়, বরং ৮০র সুমন, নাগরিকের সুমন, অন্য কথা অন্য সুরের সুমন এবং তার আগে ও পরে আরও অনেকে। একটা কথা আরও বলে রাখা প্রয়োজন, আমি এক্ষেত্রে আলোচনার সুবিধার জন্য ৭০দশককে শুরুর সীমারেখা ধরছি। পেছানোই যায়, তো কত পিছাবো........... আইপিটিএ, রবীন্দ্রনাথ, নিধুবাবু........
    তাই আমি বাংলা গানের নতুন ধারা বলতে মূলত: ৫০/৬০ দশকে বাংলা আধুনিক গান বলতে যে জঁরটা বোঝায় তার ধারাবহিকতায় নতুন ধারার কথা বলতে চাইছি।

    ন্যাড়া, শিবাংশু আরও কে কে আছো হাত লাগাও ভাই।
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৪ মার্চ ২০১২ ১৬:২১535246
  • আর হ্যাঁ। আলোচনাটি অবশ্যই প:ব:এর বাংলা গান নিয়ে। ওপার বাংলার আধুনিক গানও খুবই সম্বৃদ্ধ। কিন্তু লজ্জার কথা আমি তার হদিশ বড় জানি না।
  • pi | 72.83.76.34 | ১৪ মার্চ ২০১২ ১৭:৫৩535257
  • সলিল চৌধুরীর গানগুলোকে কোন ধারায় ফেলা হবে ?
  • PT | 203.110.243.23 | ১৪ মার্চ ২০১২ ১৭:৫৯535268
  • বাংলাদেশের বারি সিদ্দিকির এই গানটি শুনুন। আমার অনবদ্য লেগেছে। বারির গানগুলো এক অন্য ধারার গান।

  • kallol | 115.241.37.205 | ১৫ মার্চ ২০১২ ০৬:৫০535279
  • পিটি। অসংখ্য ধন্যবাদ বারি সিদ্দিকির গানের জন্য। গানের দর্শনের জায়গা থেকে ওঁর সাথে আমার মেলে।
  • kallol | 115.241.37.205 | ১৫ মার্চ ২০১২ ০৭:৩৩535290
  • কিছু আগেকার কথা।
    ১৯৪৯ থেকে সলিল চৌধুরীর গাঁয়ের বধু থেকে শুরু করে সুকান্তের, সত্যেন দত্তের কবিতায় সুরারোপ থেকে শুরু করে ৫০এর দশকে নিজের লেখা গান অন্য ধারার সুত্রপাত করছিলো বাণিজ্যিক বাংলা গানে। সে সময় বাণিজ্যিক ধারার বাইরে যে গান হতো তার তথ্য আজ পাওয়া বেশ দুষ্কর। তবু কিছু গান ছিটকে চলে এসেছে তখনকার মানুষজনের স্মৃতিতে। অপরেশ লাহীড়ির টক্কা টরে খবর এসেছে / ঘর ভেঙ্গেছে দারুণ ঝড়ে। এই সব গানও বাণিজ্যিক ভাবে প্রকাশিতই দারুণ জনপ্রিয়ও ছিলো তার সময়, কিন্তু পরে আর ততো আলোচিত নয়। রিক্সাওয়ালা শিরোনামে একটি গান ছিলো, আমি ৯০এ শিলিগুড়িতে বসে সেই গানের স্রষ্টার গলায় শুনেছি। স্রষ্টার নাম দিলীপ সরকার। কিংবা সুধীন দাসশগুপ্তের (কথা ও সুর) চার দেওয়ালের মধ্যে নানান দৃশ্যকে। এদের সাথে অবশ্যই বলতে হবে মিন্টু দাশগুপ্ত আর দুই বেচারার কথা। এঁদের সমাজ বাস্তবতা উঠে আসতো শ্লেষ আর ব্যাঙ্গের হাত ধরে, কিন্তু আঙ্গিকটি প্যারডি, জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার গানের প্যারডি। সে সময় অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন এঁরা। বাংলার কোন গানের অনুষ্ঠান এঁদের বা এঁদের গুরু মেনে পাড়ায় পাড়ায় যাঁরা গাইতেন, তাঁদের ছাড়া ভাবাই যেত না।
    আসলে সময় পাল্টাচ্ছিলো। সেও এক পরিবর্তনের সময়। পশ্চিম বাংলা ৬০এর দশক। ৬২র চীন-ভাতর সীমান্ত যুদ্ধের প্রাথমিক উগ্র জাতীয়তাবাদী বাড়াবাড়ি স্তিমিত। ক্রমশ: নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। চাল-ডাল-তরকারী-মাছ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যচ্ছে। একবেলা রুটি আর সপ্তাহে দুদিন (হয়তো শনি-মঙ্গল) নিরামিশ চালু হচ্ছে বাঙ্গালী ভদ্রলোকের সংসারে। রেশন দোকান আর তার লাইন প্রবাদে পরিণত হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতেই অপরেশ লাহীড়ি গেয়ে উঠছেন যেখানে যাও / লাইন লাগাও। ভাঙ্গছে কমিউনিষ্ট পার্টি। বিপ্লব, সশস্ত্র বিপ্লবই মুক্তি আনবে এমন বিশ্বাস প্রতিটি রক্তকণায় বহন করছে তরুণ পশ্চিম বাংলা। যা কিছু পুরোনো সংস্কার ও মূল্যবোধ এক কথায় খারিজ হয়ে যাচ্ছে ""বুর্জোয়া" বলে। ভিয়েৎনাম, কিউবা স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আর নেতাজী বা ক্ষুদিরাম নয় বাঙ্গালী মননে ঢুকে পড়ছেন চে-ফিদেল-নগুয়েন ভ্যান ত্রয়। ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলন জঙ্গী হয়ে উঠছে সরকারী ট্রাম ও বাসের সাথে জ্বলছে পশ্চিম বাংলার তারুণ্য। খাদ্য আন্দোলন। বুক পেতে তপ্ত সিসের বুলেটের মালায় কাল বাসরে চার কন্যা অমিয়া-প্রতিভা-লতিকা-গীতা। কংগ্রেসী মৌরসীপাট্টা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও। সেক্সপিয়র তুলে রেখে রাস্তায় নামছেন উৎপল দত্ত - দিন বদলের পালা। বন্ধুকে শালিধানের চিঁড়ায় আপ্যায়নের সাথে সাথে নির্মলেন্দু গেয়ে উঠছেন সভায় সভায় - আমার নাম তোমার নাম / ভিয়েৎনাম ভিয়েৎনাম। বাংলা গান, হোক না সে মূল ধারার বাণিজ্যিক গান, সে কি আর আগুনের আঁচ থেকে দূরে থাকতে পারে! কিশোরকুমার গাইছেন পূজোয় - জিনিসের দাম বেড়েছে / মানুষের দাম কমেছে, কিংবা ছোট্ট অমিত বাবার সাথে গেয়ে উঠছে -
    - খোকা
    - বাবা
    - শোনো
    - বলো
    - এই দুনিয়ার কি হাল হলো / ওয়ান ফোর্থ সাদা আর থ্রি ফোর্থ কালো
    আমি-তুমি-চাঁদ-ফুল-লতা-পাতার পাশে জায়গা করে নিচ্ছে এই সব গানও। জমি তৈরী হচ্ছিলো।

  • kallol | 119.226.79.139 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:১৪535301
  • এরকম একটা আবহে, যখন নতুনকে বুকে টেনে নেবার আর পুরোনোকে টান মেরে ছুঁড়ে ফেলে দেবার পালা চলছে সারা শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙ্গালী সমাজ জুড়ে, তখন উঠে আসছে নতুন আঙ্গিকের গান আর গানের মানুষেরা। ১৯৫৮ সালে গোড়া পত্তন হয়েও কমিউনিষ্ট পার্টির বৃত্তের বাইরে বের হতে পারেনি যে ক্যালকাটা ইউথ কয়্যর, তারাও জনপ্রিয়তা পেতে লাগলো - বৃত্তের বাইরে পরিচিত পেতে শুরু করলো ""রুমা গুহঠাকুরতার দল"" বলে।
    অন্য রকম গানের খোঁজে হৃষিণ মিত্র সুর করলেন দিনেশ দাসের প্রবাদ হয়ে যাওয়া "কাস্তে" কবিতায়।
    বেয়নেট হোক যতো ধারালো / কাস্তেটা শান দিও বন্ধু / শেল আর বোম হোক ভারালো / কাস্তেটা শান দিও বন্ধু /
    বাঁকানো চাঁদের সাদা ফালিটি / তুমি বুঝি খুব ভালোবাসতে / চাঁদের শতক আজ নহে তো / এ যুগের চাঁদ হলো কাস্তে...............
    সুর করলেন জীবনানন্দ - হায় চিল....... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসতে। অন্য হাওয়া লেগেছে পালে।
    নাটকে অঙ্গার পেরিয়ে তখন কল্লোল ডাক দিচ্ছে - চলছে চলবে। সিনেমায় মৃণাল সেন ক্রোধে ফেটে পড়ছেন - ইন্টারভিউ। আঁচ গায়ে লাগছে সত্যজিতের প্রতিদ্বন্দী। রাগী কবিতায় ফেটে পড়ছেন ব্যান্ডমাস্টার তুষার। এমনকি তখন ঘৃণিত সুনীলকে লিখতে হচ্ছে - চে, তোমার মৃত্যু আমায় অপরাধী করে। শুরু হয়ে গেছে সুবিমল মিশ্র বিনয় মজুমদার, মলয় রায়চৌধুরীদের ক্ষুধার্ত গদ্য-পদ্য।
    সবার সাথে সবার মতে মেলে না - এ ওকে গাল পাড়ছে বুর্জোয়া ডেকাডেন্ট বলে, কিন্তু নতুনের অভিযান জারী।
    আর এর মাঝেই ফেটে পড়ছে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষে নকশালবাড়ী।
  • Sddhartha Sen | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:১৭535312
  • সুমনের একটা ভাল বৈ আচে। কোন পথে গেল গান। বাংলা গানের দিকবদলকে ধরা আচে। বই টার পিডিএফ আছে আমার কাছে। যদি কারোর পড়তে ইচ্ছে করে, জানাবেন
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:১৮535323
  • লিং? না মেইল?
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:২০535194
  • ইমেল।
  • gandhi | 203.110.247.221 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:২৩535205
  • সুমনের বইটি আপলোডানো যাবে???
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:২৭535216
  • আমি তো আপলোড করতে পারি না! যদি কেউ পারে তাকে মেল করে দিতে পারি
  • pi | 72.83.76.34 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:২৮535227
  • বইটা না আপলোডানৈ ভাল। গান্ধী কোলকাতায় না ? একদিন গিয়ে কিনে ফেলো না।
  • gandhi | 203.110.247.221 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:৩১535238
  • কলকাতায় যাইনি বহুদিন।।
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১১:৩৫535242
  • আরে এই সাইটটা দারুণ তো! আগে দেখিনি
  • PM | 86.96.162.8 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১২:০৫535243
  • সুমনের বইটা আমি পড়েছি। ভলো আংগিক-এ লেখা। কিন্তু তথ্যের দিক থেকে মনে হয়েছে অসম্পুর্ন। তবে সুমন ভুমিকাতেই এটা বলে দিয়েছে।

    কল্ললদা যে জায়গা থেকে লিখছেন সেটা নতুন দৃষ্টিকোন। যাদি ওনাকে দিয়ে একটা বই লেখানো যায় এ ব্যাপারে তো দারুন হবে। বাংলায় গান নিয়ে বই সত্যি দুর্লভ। পাই এই প্রজেক্টটা নেবেন নাকি পরের বইমেলার জন্য? আমি কলকাতা ফিরছি সিগ্গির। কল্লোলদা যদি চান আমাকে তথ্য সংগ্রহের কাজে লাগাতে পারেন।

    আর একটা কথা ঐ সময়ের মেন স্ট্রীম এর গান নিয়ে যদি কারোর আগ্রহ থাকে তো পুলক বন্ধোপাধ্যায় এর আত্মজীবনী পড়ে দেখতে পারেন।

    দুটো বই-ই bengaliupload.com এ পাবেন
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১২:২১535244
  • গান তখন মিছিলে হাঁটছে, পুলিশের মোকাবিলা করছে, কংগ্রেসী গুন্ডা ঠ্যাঙ্গাচ্ছে। উঠে আসছে প্রতুল মুখোপাধ্যায় ছদ্ম নাম জেন........ মুক্ত হবে প্রিয় মাতৃভূমি / সেদিন সুদূর নয় আজ / দেখ লাল সূর্য্যের আলোয় লাল / পূর্ব সমুদ্রের পাড় - চীনা সুরের মায়ায় ভেসে যাচ্ছে ধর্মতলা থেকে কলেজ স্ট্রিট। মাওয়ের লংমার্চের কবিতা গাইছে কেউ কালীঘাট ফাঁড়ি ওড়ানোর অ্যাকশন যাওয়ার পথে..... থাক না হাজার অযুত বাঁধা / দীর্ঘ দূর যাত্রায় / কিসের ভয় / সাহসী মন লাল ফৌজের / লাফিয়ে হই পার। অজিত পান্ডে পাল্টে দিচ্ছে গানের কথা - তরাই কান্দে গো সপ্ত কন্যার লাগিয়া রূপ নিচ্ছে তরাই জ্বলছে গো......... ব্যারিকেডে গান বাঁধছে দীপেশ, শ্রীকাকুলামের শহীদ নির্মলা আর পঞ্চাদ্রীকে মনে রেখে - শ্রীকাকুলাম জ্বালিছে / আমার বুকে তার আগুন নিভে যাবে না। গান বাঁধছে তালতলার মেঘনাদ (বাবু দাশগুপ্ত - কলকাতা আকাশবাণীর রবীন্দ্রসঙ্গীতে বি-হাই) গোপীবল্লভপুরে লেবা টুডুদের সাথে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে - দিন যায় রাত যায় চাঁদ যায় মেঘ যায় /মন মোর ছুটে যায় দূরে ঐ পাহাড়ী গাঁয় / যেথা ওড়ে লাল নিশান / বাজে মুক্তির বিষাণ / সোনালী ধানের স্বপ্ন ধায় / দূরে ঐ পাহাড়ী গাঁয়। আদিবাসীদের মাতাল করা সুর মাতিয়ে দিচ্ছে ডিহি কলকাতার অলিগলি। গান বাঁধছেন নাম ভুলে যাওয়া গায়েন - হো নকশাল নকশালবাড়ির মা / তর বুকত রকত ঝরে / তর রকতে রাঙ্গা নিশান লয়্যা / বাংলার চাষী জয়ধ্বনি করে............
    এসব গান গড়ে ওঠে মানুষের বুকে লড়াইয়ের ময়দানে, ছড়িয়ে যায় হাওয়ায় হাওয়ায় তরাই থেকে সাগরে। না, এদের রেকর্ড-ক্যাসেটে ছাপার দরকার পরে নি।
    গানগুলির মান নিয়ে আজ প্রশ্ন ওঠে, আজ যখন সুখী গৃহকোনে বসে একান্তে শোনা যায় এদের। সেদিন এরাই ছিলো নতুনের দূত, বাংলা গানের নতুন মশাল। তবু এসব গান আদতে রাজনৈতিক গান। সাধারন মানুষের নয় বরং দিন বদলের সৈনিকদের গান।
    ধীরে ধীরে রাত নামে। স্ফুলিঙ্গ যা দাবানলে পরিণত হবার কথা ছিলো, কথা রাখে নি। মানুষ ও সময় ছায়াচ্ছন্ন। পশ্চিম বাংলার তারুণ্যের ঠিকানা দেশজোড়া জেল ও সাব জেলে। স্তিমিত জ্যোৎস্নায় বেহালার শেষ প্রান্তে অক্সফোর্ড মিশনের মাঠে সদ্য জেলফেরৎ প্রাণ বন্ধু পরিবেষ্টিত প্রাণ গেয়ে ওঠে - ফিরে আসবো / মাগো কেঁদো না / ফিরে আসবো.............
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:০২535245
  • না। তখনো মহীনের ঘোড়াগুলি হয়ে ওঠেনি সেভাবে। বাপি আর ভানু গিটার বাজায় গান গায়। মনি তখনও বাধ্যতামূলক প্রবাসে, ভুপালে। মে অ্যান্ড বেকারের ওষুধ বেচছে। ফিরে এলো মনি ১৯৭৫। একসাথে বসে ওরা। সাথে মনির দুই ছোট ভাই বুলা আর বিশু। হয়ে ওঠে গান - ভেসে আসে কলকাতা / কুয়াশা তুলিতে আঁকা........ ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে মহীনের ঘোড়াগুলি। বাংলা গান, আমার তোমার বাংলা গান নতুন ভাষা পায় নতুন প্রকাশভঙ্গী উঠে আসে। কিছুকাল বাদে আসে রঞ্জন। অশ্বমেধের ঘোড়া উড়ান দেয় সারা কলকাতা জুড়ে। এই দামালদের ধারন করার মত হৃদয় তখনো তৈরী হয় নি এ বাংলায়, তবু গান, গানের পর গান - অজানা উড়ন্ত বস্তু, চৈত্রের কাফন, হায় ভালোবাসি, কলকাতা বিষয়ক, পরিত্যক্ত রানওয়ের গান............. দিন বদলের লড়াইয়ে হার কোথাও অদম্য জেদ হয়ে উঠে আসে, পাল্টে দিতে হবে - চল পাল্টাই। পাল্টে যায় বাংলা গানের মুখ।
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:০৮535247
  • সমীর রায়ের কবিতা নিয়ে আমার দুখানা গানের কথা জানা আছে। একটা প্রতুলের `আলু বেচো ছোলা বেচো`। আরেকটা `স্টালিনের কফিনবাহকেরা স্টালিনকে মেরেছে লেনিনকে আহত করেছে`। অনন্ত সিং দের দলে এই গানটা গাওয়া হত শুনেছি।

  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:১০535248
  • আলিপুর জেলে নক্সাল বন্দীরা একটা গান গাইতেন। কার গান, জানি না। কেউ কি জানেন? গানটা হল

    সব যুদ্ধ থেমে যাবে একদিন
    রণক্ষেত্র ঢেকে যাবে ঘাসে
    জং ধরে পড়ে রবে রাইফেল
    ডুবে যাবে যত বোমারু।

    পার্কের বুকে করবে খেলা শিশুরা
    মুক্তির পথে হাঁটবে যুবরা
    বন্ধুর পথ দেখে পিছিয়ে যাবে না তো কেউ
    মুক্তিপথের পথিকেরা।
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:১২535249
  • তবে সমীর রায় কবি হিসেবেও বেশ ভাল ছিলেন। রমেশ পাল, যতি্‌দন পারিস চোখ এঁকে যা, বা রণপায়ে হেঁটে যাব..

    সরি, ডাইভার্ট করছি
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:২৩535250
  • আমি এই ভার্সনটা জানতাম, স্কাউটে শিখেছিলাম:

    পার্কের 'পরে করবে খেলা শিশুরা,
    মুক্তির আলোকে হেঁটে যাবে যুবরা।
    সেনানীর শুভ্র সমাধিতে-
    রেখে যাবে ফুল, দেশপ্রেমী মানুষেরা
    সব যুদ্ধ.....
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:২৬535251
  • হঁ, স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা করছে।

    লাস্টে ছিল
    আঘাতে আঘাতে আকাশে ঝড় ওঠে
    রক্তের রেখাতে হৃদয়ে ঢেউ ছোটে
    বন্ধুর পথ দেখে পিছিয়ে যাবে না তো কেউ
    মুক্তিপথের পথিকেরা

    গানটা কার?
  • siki | 155.136.80.36 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:৩২535252
  • ঝিকি এবং সিদ্ধার্থ, দুজনেই বোধ হয় একটু ভুল করছেন। লাইনগুলো হল:

    ট্যাঙ্কের 'পরে করবে খেলা শিশুরা (পার্কে নয়)
    মুক্তির আলোকে হেঁটে যাবে যুবরা
    সেনানীর শুভ্র সমাধিতে দিয়ে যাবে ফুল
    দেশপ্রেমিক মানুষেরা
    সব যুদ্ধ ...

    মানে, আমি যা শুনেছি।
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৩:৪৫535253
  • ঠিক, ট্যাঙ্কের 'পরে।
  • siki | 155.136.80.36 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৪:২২535254
  • প্রায় হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলার গান। উনিশশো উনআশি, আশি। বাবা তখন "পার্টি' করত। আমরা থাকতাম বর্ধমানে, নতুন পল্লিতে। সমিতি হত, আর সমিতিতে গুছিয়ে গণসঙ্গীত হত। বাবার কোলে চড়ে আমি সেইসব গান যে কত শুনেছি। বাড়িতে রিহার্সাল হত, সেই কবে শিখেছিলাম, আজও ভুলি নি।

    খুবই অবান্তর হয়ে যাবে, কিন্তু কয়েকটা গান এখানে রেখে যেতে ইচ্ছে হল।

    চারটি নদীর গল্প শোনো
    দেখছে পৃথিবীর লক্ষ নয়ন
    ভারতের গঙ্গা, চীনের ইয়াংসি
    মিসিসিপি, ভিয়েতনামের মেকং।

    ... সেই চার দেশে চার নদী
    চার দিকে চার নদী
    বইছিল একা একা যে যার দেশে
    একদিন তারা পেল যে সাড়া
    ঢেউয়ের তালে তালে দুলে দুলে মোহনায়
    গড়িয়ে পড়ল সমুদ্রে এসে।
    উন্মুক্ত সমুদ্রে এসে।

    ------

    কারা মোর ঘর ভেঙেছে স্মরণ আছে
    সে আমার রক্তে রোওয়া দিন
    চেতনায় হানছে আঘাত
    চেতনায় হানছে আঘাত
    চেতনায় হানছে আঘাত, জাগ জনতা
    দুরন্ত দুর্দিন।

    ------

    শহীদের রক্তে লাল দিগন্তে
    নূতন সূর্য ওঠে পূর্বে
    না, পালা শেষ নয়
    সংগ্রাম চলছে ও চলবে।

    উত্তাল স্লোগানে পিছনে ও সামনে
    অবিরাম সতর্ক সাথীরা
    পিছু হটি ... ???? সম্মুখ সংঘাতে
    শহীদের রক্তের চায় দাম।

    মেহনতী মানুষের সংহত ইচ্ছায়
    বাধার তুষারগিরি গলবে
    না, পালা শেষ নয়,
    সংগ্রাম চলছে ও চলবে।

    ------

    কমরেড এসো, কমরেড এসো
    কমরেড চিনে নাও, কে তোমার আপন?
    শ্রমিকের সঙ্গে থাকবে তুমি, কারণ
    খেটে খাওয়া তুমি একজন।

    মানুষ তো মানুষেরই পরিচয়
    কিন্তু খাবার তো তার কিছু দরকার?
    শুধু নীতির ক্যানেস্তারা পিটবে যদি, বলো
    খালিপেটে কত আর সয়?

    ------

    এই সবের সঙ্গে ছিল, জন হেনরি, এসো মুক্ত করো, সব যুদ্ধ থেমে যাবে, কাল রাতে জো হিল তোমায় স্বপ্নে দেখেছি, আরও কত গান! সেই আশি সালের পর আর শুনি নি, আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি থেকে।
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৪:২৯535255
  • গানটা আমরাও খুব গাইতাম। দারুন হার্মোনি করা যেত। সিকির ভার্সন ঠিক।

    সব যুদ্ধ থেমে যাবে একদিন, একদিন
    রণক্ষেত্র ছেয়ে যাবে ঘাসে ঘাসে
    জং ধরে পড়ে রবে রাইফেল
    ডুবে যাবে যত বোমারু
    #
    ট্যাঙ্কের বুকে করবে খেলা শিশুরা
    মুক্তির আলোয় হাঁটবে যুবরাএর
    সেনানীর শুভ্র সমাধিতে
    দিয়ে যাবে ফুল
    দেশপ্রেমী সন্তানেরা

    গানটা আমি জেলে বড়ো শুনিনি। তার মানে এই নয় যে গাওয়া হতো না। তবে মনে হয় না এই গান ৬৭-৭০এর জেলে গাওয়া হতো। গানটি মুলত: যুদ্ধ বিরোধী গান। তখন ""জং ধরে পড়ে রবে রাইফেল"" বলার মতো নকশালদের মানসিকতা নয়। যুদ্ধ কাম্য, ন্যায় যুদ্ধ। যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আর, শেষ লাইন লক্ষ্য করুন - দেশপ্রেমী সন্তানেরা - এরকম একটা জাতীয়তাবাদী লাইন তখন নকশালেরা মোটেও পছন্দ করতো না।
    আমার যতদূর মনে পড়ে এটা সিপিআইএর কারুর রচনা। আমরা কোন বন্ধুর মারফত (সম্ভবত: হেমাঙ্গদার মাস সিঙ্গার্সের কেউ) এই গানটা পাই ৭৭এর পর। তখন খুব গাওয়া হতো।
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৪:৩৫535256
  • এই গানটা কেউ শুনেছেন, এটাও যুদ্ধবিরোধী গান ;
    আজ জত যুদ্ধবাজ, দেয় হানা হামলাবাজ
    আমাদের শান্তিসুখ, করতে চায় লুটতরাজ
    জোট বাঁধো, তৈরী হও, যুদ্ধ নয় তোল আওয়াজ।
    তোল আওয়াজ, তোল আওয়াজ
    যুদ্ধ নয় যুদ্ধ নয় তোল আওয়াজ
  • kallol | 119.226.79.139 | ১৫ মার্চ ২০১২ ১৫:৩০535258
  • ক্যালকাটা ইউথ কয়্যারের গওয়া, সম্ভবত: সলিল চৌধুরীর বা ওনার দুই শিষ্য অভিজিতবাবু/অনলবাবুর করা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন