এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমি আমার বেলুড় জীবন নিয়ে একটা লেখা লিখছিলাম, highly non linear, কারণ linearity আমার ধাতে নেই, এন্তার বানান ভুল আছে, লেখার প্রথম তিনটে কিস্তি দিলাম, লোকজনের ভালো লাগলে আরো দেব,

    Nishan Chatterjee
    অন্যান্য | ০৯ মে ২০১২ | ২৭৬৭৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • vijay | 25.219.169.69 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১৬:৫৯546835
  • ণিশান,

    গল্পো কি শেশ হোয়ে গেচে?
    খুব ভালো লগ্ছিলো
    আর এক্তু নরেন্দ্রপুর হোলে ভলো হোতো, অনেক্দিন শুনি নি।
  • NISHAN | 110.2.110.72 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:০৭546836
  • অনেকদিন বাদে আবার ফিরে আসছি বলে খিস্তির সম্ভাবনা প্রভূত, যাকগে ভেবে বিশেষ লাভ নেই, গপপো শেষ হয়নি, আমি শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম, আবার শুরু করছি, বিশেষ pause দেবো না, নরেন্দ্রপুর TIFR New York সব আসবে :)
  • নিশান | 110.2.110.72 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:০৯546837
  • *************
    বেলুড়ের নীরস জীবনে রসের বিলক্ষণ অভাব ছিলো, তবে আমাদের বিভাগে কিছু অদ্ভুত ঘটনা এবং জনতা প্রায়শঃই দেখা যেতো, লিখিনি অনেকদিন পাবলিক খাপ্পা বা নিরুৎসাহ, আমার ক্ষুদ্র জীবনে সামান্য খ্যাতির বাতি হাফ জ্বলতেই আমি নিজে বাতি জ্বেলে বসলাম, তাও আবার লাল রঙের!

    যাহোক, স্মৃতিরোমন্থন ভারী সঙ্গীন জিনিস, সঠিক বেগ না এলে নামানো বড়ই দুষ্কর, অতঃপর ক্ষমা চেয়ে আবার শুরু করছি।

    এ গল্প এস.আরের।

    নামে আর কিছু দরকার নেই, এস. আর ই যথেষ্ট! নিজে বলতেন এসসস. আর।

    সে যাকগে পড়াতেন আমাদের মেকানিক্স। যার মধ্যে পার্টিকল ডাইনামিক্স, স্ট্যাটিক্স, রিজিড ডাইনামিক্সের মত ভয়াবহ ঘাঘু বিষয় লুকিয়ে আছেন। যাঁরা সততঃই ঘিলু ভেজে ফেলে থাকেন, এবং যাদের শিক্ষালাভ করে বাস্তবিক জীবনে উন্নয়ন এবং উন্নতি হয় না। এঁরা সন্ত্রাসবাদী প্রকৃতির বিষয়। অতএব ক্লাসে এসে মাথায় মোষের শিঙের মত পাকানো চুল নিয়ে এসস. আর যখন বলতেন "লোওনির বইটা খোলো তো..." আমার বিলক্ষণ দাঁতকপাটি লেগে যেতো। কিসব অঙ্ক রে বাবা, "গরুর গাড়ির চাকার স্পোক বেয়ে পোকা এগুচ্ছে, তোমরা চট করে ইকুয়েসসান অফ মোসান টা লিখে ফেলো তো!" আরে বাবা পোকা এগুচ্ছে শান্তিতে এগোক না, আমি জেনে কি করবো?

    সে যাই হোক, আমার মতে এসস. আর ক্লাসে ভূতের গল্প বলতেন। মেকানিক্সের অঙ্কের মূল মুশকিল হোলো, একটা বদখৎ কিছু চালাকি আছে, সেইটে না জানলে অঙ্ক নামানো কারো বাবার সাধ্যি নেই ( যে প্রথম নামিযেছিলো সে কিভাবে নামালো সে কূট প্রশ্নে যেতে চাই না), অতএব আমার মত লোকের পক্ষে অঙ্ক মুখস্থ ছাড়া গতি নেই (ঠিক এই কারণে রাসেল গণিত ছেড়ে দর্শন পড়তে আরম্ভ করেন!)। শুভময় রাণা ঠিক এইটে কাজে লাগাতেন, থুড়ি সুভময়। তিনি বলতেন "যদি অঙ্ক না কমন পড়ে, পেনটি চুসসে বাড়ি ফিরে আসসবে!"

    এবং এই বাণী এমন জিঘাংসা নিয়ে তিনি বলতেন যে আমার গা বেয়ে গিরগিটি চলার মতো জুগুপ্সার সৃষ্টি হত।

    আমি মোটেই সুবিধার ছেলে ছিলাম না, অতএব কয়েকদিন বাদে আমি ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করলাম।

    কিন্তু পাঠক ভুলে গেলে চলবে না, বেলুড় জ্ঞানের পরাকাষ্ঠা, অন্ধের যষ্টি এবং পুলিশের ডাণ্ডার বৃশ্চিক লগ্নে ত্রয়হস্পর্শ হলে জন্ম নেয়, অতএব দিনকতকের ভেতর আমার ডাক পড়লো ওপরতলা থেকে, এবং নির্দেশিকা জারী হোলো, এরপর ক্লাসে না গেলে বাবাকে ডেকে পাঠানো হবে, অতএব পুনর্মূষিক ভব, এবং ক্লাসে আবার যেতে শুরু করলাম!

    ভদ্রলোকের ছুঁচোল, ঈষৎ পাকানো গোঁফ, ছোট ছোট চোখ, একমুখ হাসি(সাধারণতঃ), লম্বা, দোহারা, মাথার মাঝে ইন্দ্রলুপ্ত, আর কপালের উপরে দু গোছা চুল দুদিকে পাকিয়ে উঠে গেছে আফ্রিকান মোষের শিঙের মত, ক্লাসে তিতিবিরক্ত হয়ে এসবই লক্ষ্য করতাম! তখন বোলেরোর একটা বিজ্ঞাপন টিভিতে প্রায়ই দিতো, যেটায় গাড়ির মাথায় শিঙ গজিয়ে গেছিলো, তার অনুসরণে আমরা শুভময়ের নতুন নাম রাখলাম বোলেরো।

    তিনি আসতেন সুদূর সিবপুর থেকে, ভায়া সালকিয়া। প্রত্যেক শনিবারই তাই তিনি ৪০ মিনিটের ক্লাসে তিরিশ মিনিট দেরীতে এসে, দৌড়তে দৌড়তে এসে বলতেন “যাও রেইসস্টারটা নিয়ে এসো তো” বাকি দশ মিনিট আমরা সসালকিয়ার রোমহর্ষক কাহিনী শুনতাম।

    “আরে সে কি বলবো, সালকিয়ায় জল জমে আছে বুঝলে? লাল জল, টক্ টক্ কচ্ছে! পায়ে লাগলেই সেপটিক!”

    “আরে পারিজাত সিনেমার সামনে আমি একটার পর একটা বড় বাস ছেড়ে দিচ্ছি, ভাবছি বড় বাসে তো ১৫ মিনিটের রাস্তা লাগিয়ে দেবে ৪৫ মিনিট!”

    আরেকদিন বললেন

    “আর বোলো না, বেলুড় বাজারের মুখে মিনিটা জ্যামে আটকে গেলো, আটকে আছে তো আছেই, এই ধরো কুড়ি মিনিট!”

    প্রসঙ্গত বেলুড় বাজার থেকে কলেজ হেঁটে আসতে লাগে ৫ মিনিট!

    তিনি সালকিয়ার এই ভয়াবহ বিষাক্ত জল থেকে নিজের পাগুলি কিকরে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তা আজও আমার কাছে রহস্য বিশেষ!

    *******
  • নিশান | 110.2.110.72 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:১১546838
  • এস আর কে নিয়ে বলতে গেলে একটা বিশ্বকোষে কুলোবে না। মানুষ হিসাবে অতি চমৎকার, মিশতেন বন্ধুর মত, কিন্তু যা পড়াতেন সেইটেই হোলো আতঙ্কের।

    পড়াতেন ফলিত গণিত। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত না ঘরকা না ঘাটকা প্রকৃতির একটি বিষয়। না কাজে লাগে বিয়েতে না কাজে লগে শ্রাদ্ধে! না গণিত না পদার্থবিদ্যা একটি ত্রিশঙ্কু প্রকৃতির অখাদ্য বিষয় বিশেষ। না কোন মানসিক উন্নতি ঘটে না কোন বৈষয়িক উন্নতি, এ জিনিস মান্ধাতার আমলে স্বয়ং মান্ধাতা পড়িয়েছিলেন, কাকে জানা নেই! পৃথিবীর আর কোথাও এ জিনিস নিয়ে কারো বিশেষ আগ্রহ নেই (থাকা উচিৎও নয়)! কিন্তু কলিকাতার সুপ্রাচীন জামার রঙ দেখে চাকরি দেবার সংস্কৃতিতে এ জিনিস আজও অবাধে চলে ফিরে বেড়াচ্ছে! এস আর পড়াতেন এরকমই কয়েকটি বিষয়। যাতে দায়িত্বসহকারে মানুষের মননকে এড়িয়ে যাওয়া হয়!

    বিশুদ্ধ গণিত নিযে তাঁর আচরণ ছিলো দেখবার মত “কি আছে তোমাদের ঐ পিওরে, সসুধুই তো গ্রুপ চেক আর রিং চেক!” গণিতের ছাত্র এতে আমোদ পাবেন নিশ্চিৎ।

    লোকে স’ য়ে সিলিপ কেটে থাকে, যারা এতক্ষণ এসস আর এর কথোপকথনে জোড়া জোড়া স দেখে ঘাবড়েছেন, তাদের জানাই এসস আর এর স’ য়ে তেল মাখানো ছিলো, তার প্রকাশের জন্যেই জোড়া স এর আমদানী। তবে একটা ব্যাপার ছিলো। সাধারণ স’ য়ে সিলিপ কাটা লোকের ক্ষেত্রে দেখা যায় শ টা স এ ঘেঁষে আসছে, আবার স খানিকটা মাপের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। এসস আরের ক্ষেত্রে শ তেল মাখানো সিলিপে হড়কে চলে যেত উত্তরপ্রদেশ, কিন্তু অনেকক্ষেত্রে স হয়ে যেত শ! আর হোতো বেশি ইংরিজিতে, সম্ভবতঃ উনি নিজেও সেটা জানতেন আর তাই পড়ানোর সময় খালি বলতেন “ শো দ্যাট, যাতে… “ আর “সো দ্যাট, দেখাও যে!”

    অবশ্য এসস আর কে ইংরাজীতে বেশ খানিকটা বলতে শুনেছি মাত্র একবার, ডিফারেনসসিয়াল ইকুয়েসান পড়াতে গিয়ে, “ইন দা লাসসট ক্লাসস উই হ্যাভ ডিসসকাসসড দ্যাট…” অ্যাদ্দূর শুনে আমি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি!

    তবে একটা কথা স্বীকার করতে হবে ভদ্রলোককে কোনদিন রাগতে দেখিনি বিশেষ, একদিন বাদ দিয়ে। না রাগার এই সুযোগ নিয়ে আমরা প্রায়ই কামাই করতাম, দেরীতে ক্লাসে আসতাম। কোনদিনই বিশেষ কিছু উচ্চবাচ্য শুনিনি। একদিন ক্লাস চলছে, প্রায় পনের মিনিট চলার পর বাপী আর ঘেঁচু দরজায় এসে দাঁড়ালো। “স্যার আসব”, ঘুরে তাকালেন শুভময়, মাথার শিং উদ্যত, গোঁফের কোণা গেছে পাকিয়ে, ভুরুতে ভাঁজ, এক আঙুল তুলে বললেন, নাটকীয় ভাবে, “নাআআআআআ..আআ”

    আমরা ঘাবড়ে ঘ!

    ওনার বলার ধরণেই কিছু একটা ছিলো যা আমাকে ওনার পড়ানো বিষয়ের সম্বন্ধে সন্দিহান করে তুলেছিলো। একদিন ক্লাসে বলছেন, আমি ঢুলছি, “ধরো একটা হলো স্স্ফীয়ারের মধ্যে আরেকটা ছোট স্ফীয়ার পাক দিয়ে দিয়ে উঠছে….” জিনিসটা দৃশ্যগত হতেই আতঙ্কে আমার চটকা ভেঙে গেলো, আর উনি “ইকুয়েসান ওফ মোসানটা বল তো?” বলার আগেই আমি বলে বসলাম “স্যর এগুলো কি আমাদের থার্ড ইয়ারে আছে নাকি?”

    উনি আমার দিকে “ওরে অবোধ” গোছের একটা অমায়িক হাসি দিয়ে বললেন “হে হে, এসসব পাবে রাজাবাজারের এম এসস সসিতে!” সত্যাসত্য জানা নেই।

    কিন্তু এই বলের মধ্যে বল ব্যাপারটা ওনার বেশ প্রিয় ছিলো, জনশ্রুতি, বেলুড়ের প্রবাদ, আমাদের এক সিনিয়ার আই এস আই এর লিখিত পরীক্ষায় পাস করে মৌখিকের ডাক পায়, তাকে পাকড়াও করে নাকি এসস আর বলেন “ওরা কিন্তু ইণ্টারভিউতে খুব ফাণ্ডামেন্টাল প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, যেমন ধরো একটা বলের মধ্যে আরেকটা বল ঘুরতে ঘুরতে উঠছে, চট করে ইকুয়েসান অফ মোসানটা বলে ফেলো দেখি!”

    থার্ড ইয়ারে আমি এসস আরের ক্লাস করেছি বলে মনে পড়ে না।

    বেলুড়ের ঘটনা লিখতে গিয়ে বুঝতে পারছি লোকজন কি পরিমাণ বিরক্ত হচ্ছেন। লেখার সময়ের ঠিকঠাক নেই, নিয়ম কানুন নেই, আবার গল্প মাঝে মাঝে লাফিয়ে লাফিয়ে এদিক ওদিক যাচ্ছে, পাক খাচ্ছে, ফিরে আসছে। সত্যি কথা বলতে লিখতে গিয়ে আবিষ্কার করছি, স্মৃতি ঠিক সরলরেখা মেনে চলে না, স্মৃতি জট পাকানো উলের গোলার মত। আমি বাইরে থেকে সুতো ধরে টানছি আর কোনটা কিভাবে পাক লেগে উঠে আসছে সেটা আমি নিজেও আন্দাজ করতে পারছি না।

    এই এসস আরর কে নিয়ে বলতে গিয়ে মাথায় এলো বিষয়ের কথাটা, যে মানুষের মননকে টিপে মেরে ফেলা হয়, আবার অন্য দিক দিয়ে দেখছি বেলুড়ে ধর্মভাব গিলিয়ে খাওয়ানো হোতো। রোজ সকাল পাঁচটায় উঠে আমাদের প্রার্থনায় যেতে হোতো, সন্ধেবেলা গরমকালে ৬টার সময় আর শীতকালে ৫:৩০টার সময় খোঁয়াড়ে ঢুকতে হোতো, এবং তারপর প্রার্থনায় যেতে হোতো। ছেলেপিলের মধ্যে অধার্মিক, বকধার্মিক, ধার্মিক ও অতি ধার্মিক ছেলে পিলে ছিলো।

    সবকিছুর মত অতি ধার্মিক এবং বকধার্মিকরা রাজত্ব করতো। এবং বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় প্রবাদের সার্থকতা বজায় রেখে বকধার্মিকরা এমন কীর্তি স্থাপন করতো যে চমক লেগে যেতো। এক বকধার্মিকের বিছানায় একবার এক সাধারণ ছেলে বসে পড়ায় বকধার্মিক তাকে জানায় যে তার মত ব্রহ্মচারীর বিছানায় বসে ছেলেটি বিছানা অশুচি করে ফেলেছে। আমাদের মহারাজ জানতে পেরে বকধার্মিককে কিছু কড়া কথা বলেন।

    আরো এক বকধার্মিক ছিলো যে বার বার ফেল করেও ধর্ম কোটায় করে কম্মে খেতো!

    এদের অশেষ উৎসাহে আর সব ব্যাচের মত তৃতীয় বর্ষের শেষের দিকে আমাদের প্রার্থনা স্বেচ্ছুক হয়ে যায়নি। আমি মনে করিনা বাধ্যতামূলক প্রার্থনায় কোন ভক্তি প্রমাণ হয়। সে যাই হোক, কর্তার ইচ্ছায় কর্ম অতএব আমরা শেষ পর্যন্ত পরলোকের পারাণি সংগ্রহ করলাম!

    এতে করে আমার মধ্যে ধর্মবিদ্বেষ দেখা দিলো চরম মাত্রায়। সকালের পাঁচটায় ওঠা আমার নিতান্তই বাড়াবাড়ি মনে হোতো, বিশেষতঃ শীতকালে রীতিমত অত্যাচার মনে হোতো।

    এমনই এক শীতের সকালে চাদর মুড়ি দিয়ে প্রেয়ার হলে বসে ডুলছি, গানের পর্ব চুকতে আরম্ভ হোলো গীতাপাঠ। আমার পিছনে বসে এক মহাপুরুষ গাঁক গাঁক করে পাঠ আরম্ভ করতেই আমার সকালের মৌতাত ছুটে গেলো। আমি পেছন ফিরে দাঁত খিঁচিয়ে বললাম “ভাই আস্তে পড়” ও বলে “কেন?”, আমার মেজাজ ততক্ষণে বিরক্তই ছিলো, আমি বলে ফেললাম “তোর গলায় কোন সুর নেই”...

    প্রেয়ার শেষ হতেই ছেলে গেলো মহারাজের কাছে, মহারাজ দৌড়ে এলেন আমার ঘরে, বললেন “তুই ওর প্রেয়ারে বাধা দিয়েছিস?” আমি বললাম “আমার প্রেয়ারে বিশ্বাস নেই!”

    তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন “কেনো?”

    আমি বললাম “দুটো জিনিস হতে পারে, এক) ভগবান আছেন, সেক্ষেত্রে আমি যদি বিশ্বাস করি তাহলে আমি যেকোন জায়গায় বসে ডাকলেই তিনি শুনতে পাবেন, আলাদা করে প্রেয়ার হলে যাবার দরকার নেই, আর যদি বিশ্বাস না করি সেক্ষেত্রে জোর করে প্রেয়ার করালে গিয়ে আমি তো মনে মনে গালাগাল দেবোই, আর তাতে যে আমার মঙ্গল হবে না এ তো জানা কথাই, আর দুই) ভগবান নেই! সেক্ষেত্রে তো প্রেয়ার হল থাকারই কোন মানে হয় না”

    এরকম সুন্দর যুক্তির পর কোথায় তিনি আমাকে মিষ্টি খাওয়াবেন, তা নয় ভয়ানক রকম খেপে গিয়ে চেঁচিয়ে, অবাঙালী টানে বলে উঠলেন “তুই এখনি বেরিয়ে যা!”

    ****
  • sosen | 125.242.149.230 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:২২546839
  • আরে নিশান ঘুম ভেঙ্গে উঠলো!!!
  • cm | 122.79.39.38 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:৩৪546840
  • মেকানিক্সের অঙ্কের বর্ণনাটি বেশ হয়েছে। নিশানকি স্নেডনের পিডিই বইখান দ্যাখসে।
  • শঙ্খ | 118.35.15.41 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৭:৫০546841
  • বাহ বাহ... এই লেখাটা মিস করছিলুম। ফাটাফাটি!!
  • siki | 132.177.166.58 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:১০546842
  • পাগলা, পাগলা। জাস্ট অসাম শালা।
  • | 127.194.80.251 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:২৬546843
  • বাহ নিশান অনেক দিন পরে। লেখো আরো লেখো । তোমার চমৎকার লেখার হাত। তাও ওপরে নস্ট্যালজিক বিদ্যামন্দির। যাকে বলে "সোনায় সোহাগা"।

    এই প্রসঙ্গে ক`'টি খবর।

    ১। সেই জেটি ঘাটে আর বসতে দেয় না । কেবল মাত্র যাত্রী রাই বসতে পারে । তাও অল্প সময়ের জন্যে। এর পেছনে মনে হয় বিদ্যামন্দিরের ছেলেপিলে ই বেশী দায়ী। কত বিকেল থেকে সন্ধ্যে গড়িয়েছে ও ই জেটি ঘাটে। অপুর্ব র কেনা সিগু তে প্রথম চুমুক এখানে ই।

    ২। পরের রি -ইউনিয়ন ৯th ফেবু ২০০৪

    ৩। এবারে ২০০১ থেকে ২০১৩ ডিসে অবধি অবসর গ্রহন এমন সব শিক্ষক মশাই দের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

    ৪। GB মিটিং এ সিদ্ধান্ত। সঞ্জীব মহারাজের দাবি অনুযায়ী সমস্ত অবসর প্রাপ্ত অশিক্ষক কর্মচারের দের ও এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে। আমি হোস্টেল কর্মী দের কথা ট তুললাম। যথ দীনবন্ধু দা,রাম দা এনারা। সেই প্রস্তাব ও পাস হয়ে গেল।

    ৫। এবারে গননাথ মহারাজ (স্বামী মেধসানন্দ) থাকছেন । শুধু রি-ইউনিয়ন এ থকবেন বলেই উনি এবরে পুজোর সময় আসেন নি।
  • নিশান | 110.2.110.72 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৩৫546845
  • @ব

    কি দুঃখের খবর, সেই জেটি, জয়শ্রী যাবার পথের দুদণ্ড বিশ্রাম, সন্ধেবেলা বিড়ি খাবার সুলভ স্থান, এবং এই সেই জায়গা, যার কাছে আমি ভুল করে কেপির মুখে ধোঁয়া ছেড়ে ফেলেছিলাম! এ কি খবর দিলে :(

    রি ইউনিয়ানে যাওয়া অসম্ভব, তবে অশিক্ষক কর্মচারীদের সংবর্ধনার সাথে কিছু সহবৎ শিক্ষা দেওয়া হোক, সকলকে না, অমিয়, কালু, ঝাঁকড়া চুলো পিংকির অ্যাসিস্টেণ্ট ইত্যাদিদের!

    গণনাথ মহারাজ কে চিনি চিনি মনে হচ্ছে, হয় নরেন্দ্রপুর সুত্রে নাহলে সিউড়ি সুত্রে!
  • নিশান | 110.2.110.72 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৩৮546846
  • লোকে ভুলে যায়নি দেখে আনন্দ পেলাম, ঘুম ছাড়াতে অতি বলবর্ধক ওষুধের মত কাজ করে, আমি ঘুমোইনি একের পর এক বাঁশ dodge করতে করতে অনুভব করলাম বাঁশ থাকবেই, অতএব কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীর মত বাঁশ চেপে মুখে হাসি বজায় রাখাই স্বাস্থ্যকর :) ... আরো আসছে!

    স্নেডনের পিডিই দেখিনি, আর দুবছর ইভান্সের পিডিই নিয়ে ধস্তাধস্তির পর দেখার ইচ্ছেও বিশেষ বেঁচে নেই। তবে লোনির মেকানিক্সের সাথে যার তুলনা হয় তাকে একবার অন্তত দর্শনের লোভ ছাড়তে পারছি তাও মনে হচ্ছে না, গুগল করে দেখি!
  • π | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ০৯:৫১546847
  • নিশান, খাসা হচ্ছে, চালিয়ে যা !
  • | 127.194.86.69 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ১০:০৪546848
  • উনি বোধ্হয় সেই ৯৫ বা ৯৬ থেকে জাপানে। তোমাদের সময়ে বোধহয় প্রভাকর মহারাজ প্রিন্সিপাল চিলেন।

    KP মানে কি কার্তিক চন্দ্র পাল? নিপাট ভালো মানুষ। উনি ; কেউ কিছু বোঝার আগেই ( বা যদি কেউ ওনার আগেই করে ফেলে সেই ভয়ে)। অঙ্ক দিয়ে ই সাথে সাথে সেটা কষতে শুরু করে দিতেন। আরো অদ্ভুত ভাবে লিখতেন (ডায়াগোনালি এবং ভুলেও কিছু মুঝতেন না)।

    বছর কয়েক আগে বিদ্যামন্দিরের গেছি তখন SKCও রিটয়ার করেন নি। স্যার র সাথে একটু গল্প করছি টিচার্স রুমে। হটাৎ KC এলেন এক ব্যান্ডিল খাতা নিয়ে । SKCকে কিছু একটা বলতে। আমি বললাম " স্যার, ভালো আছেন?" উনি বললেন হ্যাঁ। তর পরে আমাকে জিগালেন "আর স্যার আপনি ভালো আছেন?" আমি খুব অবাক হয়ে কী বলবো ভাবচি। তখন SKC এক ধমক দিলেন। বললেন "আপনাকে স্যার বলছে। আপনি ও ওকে স্যার বলছেন? ও তো আমাদের ছাত্র। তখন KP এক গাল হেসে বললেন " ও আমি ভাবলুম আমাদের ডিপে নতুন কোন স্যার জয়েন করেছেন বুঝি!!" ঃ))
  • | 24.97.27.98 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ১০:১৯546849
  • দারুণ লাগছে নিশান। জলদি জলদি আরো।
  • de | 69.185.236.54 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ১১:০২546850
  • বাঃ! খুব ভালো!
  • Tim | 188.91.253.11 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ১১:০২546851
  • নিশানের লেখা পড়ছি, ভালো লাগছে।
  • শিবাংশু | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ১১:৫৩546852
  • ভালো লাগছে ....
  • Bhagidaar | 218.107.71.70 | ২১ নভেম্বর ২০১৩ ১২:০৪546853
  • বুকমার্ক করে রাখলাম, উইকেন্ডের খোরাক।
  • nishan | 110.2.110.72 | ২৩ নভেম্বর ২০১৩ ১২:১৭546854
  • পাকল নামে বাকলের সাথে মিল থাকলেও কাজে মিল গাছের বাকল ছাড়ার সঙ্গে! পেকে যাওয়া জিনিসটাকে আরেকটু আগুনে জ্বাল দিলে পাকল ধরার কাছাকাছি যায়।

    আমার সম্যক রকম পাকল ধরে ইশকুলে পড়ার শেষের দিকে।

    প্রাক ইণ্টারনেট যুগ শেষের পর্যায়ে, বাজারে ধীরে ধীরে সাইবার কাফে আসতে আরম্ভ করেছে। আমরা ইশকুলের ক্লাস টেনের ছেলেরা মাঝে মাঝেই কলেজের ছেলেদের কাছ থেকে গেটপাস চেয়ে বাইরে বেরোতাম।

    এরকমই এক দিনে আমার এক বন্ধুর কৃপায় আমার জ্ঞানচক্ষু উন্মেষিত হল।

    মেন গেট থেকে বেরিয়ে দু পা হাঁটলেই পলাশদার কাফে, পলাশদা কথা দিয়েছিলো আমরা যাই করিনা কেন পলাশদা কাগজ থেকে মুখ তুলবে না।

    ভয়ানক রকমের দুঃস্থ ইণ্টারনেটের পথ বেয়ে তাই ঢুকে গেলাম অদ্ভুত জগতে। আধঘণ্টা লাগতো একটা ছবি ফুটে উঠতে, তাতেই বা কিসের পরোয়া?

    এবং বাচ্চা ছেলে নতুন খেলনা পেলে যেমন খেলতেই থাকে আমরাও মেতে উঠলাম এই নবতম উদ্ভাবন নিয়ে।

    মাধ্যমিক এসে গেলো কয়েক দিনের মধ্যেই, এবং পাস করে এগারো ক্লাসে, নরেন্দ্রপুর কলেজে ঢুকে, জীবনের নতুন আঙ্গিকের সাথে পরিচয় ঘটলো! কেবল টিভি।

    গৌরাঙ্গ ভবনের কমন রুমে একপিস কেবল টিভি (লিখতে গিয়ে ভাবছি Cable কথাটা বাংলায় কিভাবে লিখব, আর প্রতিশব্দও জানা নেই, যাকগে জনতা বুঝলেই আমার পরিশ্রম সার্থক!)। এলো শনিবার রাতের রেন টিভি।

    প্রতি শনিবার প্রায় ২০০ ছেলে রাত বারোটা নাগাদ ভিড় করে ফেলছে কমনরুমে…

    সেই প্রথম অভিজ্ঞতা চলমান কিছু “জিনিস” দেখার।

    তারপরই বাজারে এলো বটতলা সাহিত্য, যা পড়ে নির্মল আনন্দ পাওয়া যেতাম, আমরা সেগুলিকে সংক্ষেপে ডাকতাম, যেমন “যুমেকা” কিম্বা “আলাম” ইত্যাদি, (পুরো নাম পাঠকের জন্য হোমওয়ার্ক!)

    লিখতে গিয়ে মনে পড়ছে একদা একটা গল্প পড়েছিলাম, “ডিম খায় দারোগাবাবু” যে গল্পে ডিমও ছিলো না, দারোগাবাবুও না!

    যাইহোক, বেলুড়ে এসে যখন পড়লাম, বুঝলাম কোনো অদ্ভুত উপায়ে বেলুড়ে গোপন সুড়ঙ্গ পথে নিশ্চয় হিমালয়ের সাথে যোগাযোগ আছে, সবসময় নেপথ্যে “ওম” মন্ত্র গম্ভীর নিনাদে বেজে চলেছে, এবং দিব্যজ্যোতিতে মহারাজদের মাথা চকচক করে উঠছে!

    সে যাই হোক, কয়েকদিনের ভেতর আবিষ্কার করলাম দিব্যভূমিতেও বটতলা বাজার করে ফেলেছে! নরেন্দ্রপুরে আমরা টেবিলে ছড়িয়ে রাখতাম, এখানে ছেলেপিলে প্লাস্টিকে জড়িয়ে বাগানে পুঁতে রাখতো! বিশ্বাস হচ্ছে না তো? কিন্তু নিজের চোখে দেখা ঘটনা!

    আদতে রামকৃষ্ণ মিশনে অবদমিত বাসনার চাষ হয়। মেয়ে দেখলেই উল্টো পথে হাঁটতে হবে এরকম ধারণা মাথায় ছ্যাঁদা করে ঢোকাতে গিয়ে কেউ খেয়াল করতো না ছ্যাঁদার পথ দিয়ে খানিকটা ঘিলু বেরিয়ে গেলো, এবং সেই জায়গাটা যেটা দিয়ে মানুষ মানুষ হয়, হাজারটা অপূর্ণতা, হাজারটা ছেলেমানুষী, হাজারটা ঝাড়ি মারা, এবং বেশ খানিকটা ভদ্রতা।

    আমিও এর প্রভাবমুক্ত ছিলাম না, কালে কালে ঠেকে হাবুল শেখে প্রবাদের যথার্থতা প্রমাণ করে রীতিমত ঠেকে শিখেছি।

    নরেন্দ্রপুরে সাতের ক্লাসে আমাদের জোর করে পাকল ধরিয়ে দেওয়া হয়, এবং নানারকম নীতি নির্দেশিকা জারী করে এমন কিছু জিনিস শেখানো হয়, যেগুলো তখন না শিখলেও চলতো, বা প্রকৃতির নিয়মমত সঠিক বয়সে, সঠিক ভাবে শিখলেই মঙ্গল হত।

    অনেকেই আমার মতের বিরুদ্ধে যেতে পারেন, কিন্তু এ আমার ব্যাক্তিগত মতামত, এবং আমার অভিজ্ঞতাপ্রসূত বলে আমার পক্ষে বদলানোও বিশেষ সম্ভব নয়।

    যাকগে নরেন্দ্রপুরের কথা পরে বলা যাবে ‘খন!

    নরেন্দ্রপুরে ফ্রাস্টুর ফলন পশ্চিমবঙ্গের গমের ফলন হলে বেলুড়ের ফলন ছিলো মোটামুটি পাঞ্জাবের সমান। লোকজনের সান্ধ্য বিনোদন ছিলো বেলুড় মঠে গিয়ে মেয়ে দেখা। কেন জানিনা নানা মুনির কাছ থেকে নানা

    “আরে আজকে যা দেখলাম না মেয়েটাকে”

    “উরি বাসরে… কথা বললি… কথা বললি….?”

    “না, তবে বেলুড় গার্লসের, প্রায়ই আসে…”

    গোছের বিজ্ঞাপন পেয়েও বিশেষ আকর্ষণ পাইনি।

    কিন্তু বয়স আমারও বাড়ছে, ২০ বছর, এবং জানার আগ্রহও প্রচুর, এবং রেন টিভিতে পরিপূর্ণ জ্ঞানের বড়ই অভাব ছিলো, তাই এক পূজোয় বাড়ি ফেরার পথে চন্দননগর হয়ে ফেরার পথে, “জোনাকি” তে দেখে আমার চোখ ফুটলো, যে এরকমও জিনিস হয়!

    এবং আমার পাকল সম্পূর্ণ হোলো!

    এখন কথা হচ্ছে বেলুড় নিয়ে, যেখানে

    রেডিও মানা
    টিভি মানা
    নারী সংসর্গ অবাঞ্ছিত
    গান মানা
    সন্ধে ছটার মধ্যে ভিতরে ঢুকতে হবে এবং হবেই
    সন্ধের প্রার্থনায় তোমাকে পাওয়া না গেলে পরের দিন আছোলা বাঁশ বাঁধা (তেল ছাড়া)

    অতএব ফ্রাস্টু, পাকল, অন্য সিনেমা দেখতে যাবার সময় নেই, হাতখরচের অপ্রতুলতা সব মিলিয়ে দেড় টাকা ভাড়ায় আমরা সুলভে নদী পার হতে আরম্ভ করলাম, এবং প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে বরানগর মিশনের ঠিক সামনে “জয়শ্রী” বলে একটি মহাতীর্থ আবিষ্কার করলাম।

    কখনও দুপুরে, কখনও সন্ধের প্রার্থনার পর গেট টপকে আমরা যেতে শুরু করলাম!

    আমরা যারা হারামির গাছ প্রকৃতির ছিলাম, প্রায়শঃই যেতাম, আমার মূল আগ্রহ ছিলো নিয়ম ভাঙায়, এত ভয়ানক রকম কড়াকড়ি করেও যে আমাকে চেপে রাখা যাবে না, কেবলমাত্র এই অনুভূতির জন্যেও অনেকবার গিয়েছি।

    যেমন একবার জানা গেলো নৌকা বন্ধ, আমরা ততক্ষণে বাইরে, যা পরিস্থিতি তাতে ভেতরে ঢুকতে গেলে সেসময় ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশী, আর বেলুড়ের মত উৎকৃষ্ট জায়গায় কিছু করারও নেই, অতএব আমরা বাসে করে চললাম উত্তরপাড়া “গৌরী”।

    শীতকাল, সোয়েটার এবং মাফলারে সমৃদ্ধ হয়ে আমরা চলেছি, আমাদের এক বন্ধুর বাড়ি ছিলোই উত্তরপাড়াই, সেই আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে নিয়ে চললো অভিভাবকের মত।

    এখন জয়শ্রীর মূল চমক ছিলো, স্থান নির্বাচন! বরানগর মিশনের ঠিক উল্টো দিকে, আর গৌরী উত্তরপাড়ার একটা সুপারমার্কেটের ভেতর। কিন্তু ঢুকতে গিয়ে আমরা আবিষ্কার করলাম আমাদের উত্তরপাড়ার বন্ধুর মামা পাশের এক দোকানে বসে গপপো করছে।

    কেলো করেছে, আমরা জলদি জলদি মাফলারে মুখ ঢেকে সটকে পড়লাম।

    পরে, অনেক পরে গৌরীতে ঢোকার সৌভাগ্য হয়েছিলো।

    আমার দ্বিতীয় বর্ষের শেষের দিকে এগজিবিশান হয়! তার আগুপিছুর কথা, এর আগে আগে বলেছি, যাকগে এগজিবিশানের আগের কদিন দিব্য মাঝারী অবাধ স্বাধীনতা ছিলো।

    কেমিস্ট্রি বিল্ডিঙে অবাধে বিড়ি খাওয়া চলতো।

    সে যাই হোক এক বন্ধুবর প্রস্তাব দিলেন “চল গৌরী যাওয়া যাক…”

    বেরোন হোল, অটোয় বালিঘাট গিয়ে, আরেকটা অটো ধরে গৌরী।

    টিকিট কেটে ঢোকা হোলো, সামনের দিকে দেখি লোকে সিটের অভাবে শতরঞ্চি পেতে বসে রয়েছে, হলের ভিতরেই কয়েকজন ফস ফাস বিড়ি ধরিয়ে ফেললো!

    মিনিট পনেরো পরে হঠাৎ কারেণ্ট চলে গেছে। জেনারেটরেও কিছু একটা সমস্যা! অতএব আমরা আবার একই বিপাকে। বাকি সন্ধে কি করা যাবে। বাজে মোটে ৬:৪৫! হঠাৎ মাথায় এলো কোন্নগরের বর্ডারে তারা বলে আরেক পিস ছবিঘর আছে। আমরা ৩ নম্বর বাস ধরে দৌড় দিলাম…

    সেখানে একটি কোরিয়ান ভূতের সিনেমা দেখে ফিরে এলাম, ফেরার সময় একটু গলিপথে ঢুকতে হোলো, তাছাড়া বিশেষ সমস্যা হয়নি।

    প্রসঙ্গত মনে পড়লো জয়শ্রী যাবার সময় একদিন, আমার এক গণিত বিভাগের বন্ধু যাবার ইচ্ছে প্রকাশ করলো। জেটিতে গিয়ে দেখি কেপি এবং এস পি, আমাদের লজ্জায় অবস্থা খারাপ। কেপি কিছু জিজ্ঞেস করেননি, আমরা বেঁচে গেলাম উপরন্তু নৌকোভাড়া বেঁচে গেলো!

    সে যাই হোক, আত্মজীবনী তে আত্মরক্ষা করতে নেই। অতএব সে লাইনে হাঁটলাম না। বেলুড়ে ফ্রাস্টুর চাষ হোতো, আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আমরা পাকল ধরে ঝুনো নারকেলে পরিণত হয়েছিলাম। কিন্তু কালে কালে বাইরে নানা ঠোকর খেয়ে শিখেছি কত ধানে কত চাল।
  • sikk | 132.177.144.180 | ২৩ নভেম্বর ২০১৩ ১৪:৪০546856
  • হায়, চন্দননগরের জোনাকি। কত স্মৃতি ...
  • Abhyu | 34.181.4.209 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:২৪546857
  • তার্পর?
  • Ranjan Roy | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:১৭546858
  • আহা! আমাদের মিশনের পাঁচিলের ওপারে জয়শ্রী সিনেমা হল। এপাশ দিয়ে দেখতে পেতাম সৌমিত্র-সাবিত্রী অভিনীত কোন নতুন ছবির সাইনবোর্ডে তুলির টানে কিভাবে ওঁদের আদ্ল ফুটে উঠছে বা সুপ্রিয়া সৌমিত্র'র "অয়নান্ত"।
    -দ্যাখ, দ্যাখ, পুউরো সুপ্রিয়া।
    -- কিন্ত সৌমিত্রের ছবিটা কেমন মাকুন্দ, মাকুন্দ!
    -- ভাগ শালা! সৌমিত্রকে মাকুন্দ বললে খোমা বিগড়ে দেব।

    ক্লাস টেনে পড়ি।
    কিছুদিন পরে জয়শ্রীর সামনের ফুটপাথ থেকে "সচিত্র কোকশাস্ত্র" আট আনা সাপ্তাহিক ভাড়ায় পাওয়া যেতে লাগল। যে পড়তে দেরি করবে সে পুরো ভাড়াটা দেবে, এই নিয়মে।

    আমরা অচিরেই ক্যাপিটালিস্ট-প্রলেতারিয়েত ছাড়াও মানুষের আরও মৌলিক শ্রেণীবিন্যাস ও শ্রেণীসংগ্রামের কথা শিখে গেলাম।
    জয়শ্রীকে ভোলা যায় নি।
  • debu | 180.213.132.253 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৩:৩৯546859
  • বালি বঙ্গশিশু র কথা ওঠ্লনা?
  • Bhagidaar | 216.208.217.6 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৫:৪৭546860
  • বঙ্গধেড়েরা আবার কি কল্লে?
  • Bhagidaar | 216.208.217.6 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৫:৫৪546861
  • আহা কত পুরনো জায়গার নাম নিশান বাচ্চা ছেলে। গৌরী মার্কেটের (সুপার মার্কেট বলতে পারলামনা) ভেতরে ঢোকার আগে উত্তরপাড়া ছেড়েছি, তবে তার আগে আমাদের সান্ধকালীন আড্ডার জায়গা ছিল লাইব্রেরির মাঠ, গঙ্গার ঘাট আর গৌরীর আশপাশ।
  • bratin | 125.248.113.253 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৭:৫১546862
  • সেই গৌরী হ্স্ল কবে উঠে গেছে!! ঃ((
  • bratin | 125.248.113.253 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৭:৫১546863
  • হল
  • sumeru | 127.194.80.41 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০০:০১546864
  • ১৩র নভেম্বরেই দেখলুম জোনাকী ভাঙ্গা চলছে। হায় স্মৃতি।
  • বোরোলিন | 79.210.246.27 | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:২২546868
  • অভ্যুর 19 Feb 2014 -- 08:39 AM লিংটায় তো কিছু দেখা যায়্না। নাকি আমিই একা দেখতে পাইনে? কে জানে!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন