এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমি আমার বেলুড় জীবন নিয়ে একটা লেখা লিখছিলাম, highly non linear, কারণ linearity আমার ধাতে নেই, এন্তার বানান ভুল আছে, লেখার প্রথম তিনটে কিস্তি দিলাম, লোকজনের ভালো লাগলে আরো দেব,

    Nishan Chatterjee
    অন্যান্য | ০৯ মে ২০১২ | ২৭৬৮৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৪ মে ২০১২ ১৩:০২546702
  • শুধু তাইই না রামকৃষ্ণ মিশনের কোড বুকে লেখা আছে নেশার মধ্যে একমাত্র তামাকই গ্রাহ্য, মদ গাঁজা নিয়ে আপত্তির কারণ বোঝা গেলো, কিন্তু বিবেকানন্দের কথাকে ঠেলে তামাক নিযে বাড়াবাড়ি সত্যিই অসহ্য :)
  • cb | 202.193.164.9 | ১৪ মে ২০১২ ১৩:১৪546703
  • লেখাটা কি শেষ হয়ে গেছে?
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৪ মে ২০১২ ১৩:৩৬546704
  • না, দেরি আছে, তবে বোর হলে আলাদা কথা :)
  • cb | 202.193.164.10 | ১৪ মে ২০১২ ১৪:০৭546705
  • লেখা নিয়মিত চলুক এবং দেরী করে শেষ হোক। :p
  • manish | 127.200.95.69 | ১৪ মে ২০১২ ১৭:২৮546706
  • জমে gechhe
  • Manish | 127.200.95.69 | ১৪ মে ২০১২ ১৭:৩০546707
  • <রঞ্জন এর লেখা দেখতে chaai
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৪ মে ২০১২ ২০:২৮546708
  • কিছু বর্ণময় চরিত্র
    ******************

    মানুষের চরিত্রে তিনরকম গুণ থাকে, তামসিক, রাজসিক, আর সাত্ত্বিক, রামকৃষ্ণের গল্প আছে এ নিয়ে, কালো ডাকাত, লাল ডাকাত আর সাদা ডাকাতের গপপো, সাত্ত্বিক লোক আমি দেখেছি, আমার মায়ের কলিগ ছিলেন আনোয়ার কাকা, তাঁর মত মানুষ আমি খুব কম দেখেছি, তাঁর কথা নাহয় বলবো পরে একদিন, কিন্তু রাজসিক লোক ছিলেন আমাদের বিভাগীয় প্রধান মোহনলাল সিনহা রায়, সংক্ষেপে এম.এস.আর, আর তামসিক ছিলো বাপি! বাপি খেপলেও আমার কিছু করার নেই, বাপির কথা আমি মুখ চেপে ধরলেও বলবোই!

    আজ বাপির কথা।

    আমার সুহৃদ, এবং আমার বেলুড় জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘসময়ের রুমমেট, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে আমরা রুমমেট ছিলুম, একসাথে বিড়ি খেয়ে কেস খেয়েছি সে তো তোমরা জানোই, বাপির আসল নাম নাহয় উহ্যই থাক, পরে বাপি এর তলায় কিছু লিখলে তোমরা আপনেই জানতে পারবে আমি আর সে ঝামেলায় গেলুম না।

    বাপি তাহলে বাপি হয়ে উঠলো কিকরে? বাপির বাড়ি হাওড়ায়, এবং বেলুড়ে আসার পর থেকে বাপি সবাইকে বাপি বলে ডাকতো, মানে "আরে বাপি শোনো না", "কি বাপি ভালো তো", মানে আমরা যেমন মামা, ভাই বলি, বাপি সবাইকে বাপি বলে ডাকতো, কাল বড় ভয়ানক জিনিস, খানিকটে মোবিয়াস ব্যাণ্ডের মত, কাজেই কালক্রমে হয়ে দাঁড়ালো, বাপি আর কাউকে বাপি বলে ডাকে না, সবাই বাপিকে বাপি বলে ডাকে।

    প্রথম দিকে বন্ধুত্ব তেমন ছিলো না, বলতে নেই বাপির ওরকম কাকু মার্কা চেহারা দেখে আমি ঘাবড়েই গেছিলাম খানিকটা, আমার আর সব্যর মধ্যে তখন পারস্পরিক বিশ্বাস বেড়ে উঠছে, আমরা একসাথে হাতিবাগানে সিনেমা দেখতে যেতাম, একদিন বিবেকানন্দর বাড়ি দেখার নাম করে ধর্মতলা থেকে মাল টেনে ফিরে এসেছি, কাজেই সিগারেট খেতে আর কি এমন, মানে শয়তানটা যদিও দাবী করে আমার পাল্লায় পড়ে ফুঁকতে শিখেছে, কিন্তু ঈশ্বর সাক্ষী ছোঁড়া আগে থেকেই ফুঁকতো, পাতি চেপে গেছিলো, তো বাপি একদিন আমাদের সাথে বেরোলো, বাপি হাওড়া জেলার হিরো, কিন্তু সিগারেট টা দেবার পর, দীর্ঘদিনের খেলোয়াড় বাপি সিগারেটটা ধরলো এমনভাবে যে আমার মাথায় ধাঁধালেগে গেলো, সাধারণভাবে লোকে সিগারেট খাওয়ার সময়, হাতের চেটো থাকে গায়ের দিকে আর পিঠ টা উল্টো দিকে, কিন্তু বাপির সবই উল্টো।

    এহেন বাপি কিন্তু খেলোয়াড় ছিলো, দুমদাম, বেমক্কা কোনো নোটিশ ছাড়া বিপদ এবং প্রেমে পড়তো।

    বাপি খেপে গেলেই পাত্তা না দেবার হাবভাব করতো, মানে মুখবন্ধ করে জিভ দিয়ে গালে নানারকম নকশা আঁকতো এবং সুর ভাঁজতো, এইটা একটা পেটেণ্ট বাপীয় জিনিস, এ জিনিস আর কোথাও দেখিনি, কিন্তু বাপির প্রতিভা ছিলো অন্য জায়গায়, সেটা হোলো ঐ তামসিক গুণ, বাপি ভয়ানক ঘুমোতে ভালোবাসতো, মানে বাপির আদত প্যাশন ছিলো ঘুম।

    আমরা যখন তিন কেলাসে, থাকতাম শ্রী ভবনের দোতলায়, একদিন রাতে শোয়ার সময় দেখলাম, বাপি নিজের বিছানায় শুয়ে জানালা দিয়ে ঠ্যাং বার করে উদাস হয়ে কি একটা ভাবছে, আমি ঘুমিয়ে তো গেলাম, সকালে উঠে দেখি বাপি জানলা দিয়ে পা বের করেই ঘুমোচ্ছে, বেলুড়ের মত মশা-সঙ্কুল জায়গায় এটা কিভাবে সম্ভব, আমার কাছে আজো রহস্য!

    দুই কেলাসে এই মহাপুরুষকে আরো কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়, দুই কেলাসে আমার, সব্যর, এবং বাকিদের মতামত শুনে সবগুলো খাট কে একজায়গায় জড়ো করা হোলো, এইবারেই আসল কেলো, মানে বাপি মনে মনে ধরে নিলো, যেহেতু চাদরের তলা দিয়ে আলাদা চৌকি দেখা যাচ্ছে না অতএব ওটা একটাই খাট, এবং যেহেতু ঘরে বাপির একটা খাট থাকার কথা, এই একটা খাটই বাপির, এবং যত্রতত্র যখন তখন বডি ফেলে দিলেই হোলো!

    রোজ রাতে আমাদের ১১টার সময় আলো বন্ধ করে দেওয়া হোতো যারা Shawshank Redemption বা Prison Break দেখেছে, কিম্বা বেলুড়ে পড়ার ভাগ্য করেছে তারা বুঝবে নিশ্চিৎ, এই সময়টাতে মানে ১০:৩০ নাগাদ বাপি বডি ফেলতো,

    একদিন আবিষ্কার করলাম, এরকম একটা সময়ে, যখন আমার চোখ ঘুমে ঢুলে আসছে, বাপি তখন বুকের উপর অ্যানালিসিস এর বই নিয়ে দিব্য ঘুমিয়ে আছে, ডাকা হচ্ছে কিছুতেই আর ওঠে না, অবশেষে যখন উঠলো ১১টা পেরিয়ে গেছে এবং আলো বন্ধ হয়ে গেছে, আমাকে অবাক হবার শেষ সীমায় ঠেলে বাপি উঠেই বইটা খুলে বসে গেলো। ঐঅন্ধকারের মাঝে, সবাই খ্যাক খ্যাক করে হাসছে, কিন্তু বাপি কি আর ভোলবার ছেলে, হাওড়া মেদিনীপুরের কাছে বলে বিদ্যাসাগরের সাথে বাপির দূরত্ব আমাদের চেয়ে বেশী, এরকম একটা ধারণার বশবর্তী হয়ে বাপি পড়েই চলেছে!

    আমি থাকতে না পেরে বললাম "ভাই আলো বন্ধ হয়ে গেছে কাল পড়িস নাহয়" ওবাবা ছোকরা আমার উপর উত্তাল মেজাজ দেখিয়ে জানালো, আমরা না জ্বালালে নাকি ও এতক্ষণে একটা অধ্যায় শেষ করে ফেলতো!

    আরেকবার দেখা গেলো বাপি আবার নিদ্রিত, এবার সব্যর খাটে, অনেকক্ষণ ডাকার পর বাপি উঠলো, আমরা অন্ধকারেই বোঝার চেষ্টা করছি কি করছে, বোঝা গেলো, বাপি এখন কথা বলার মুডে নেই, জিভ দিয়ে গালে নকশা করছে! হঠাৎ দেখি কাঁধে গামছা ঝুলিয়ে, হাতে মগ নিয়ে বাপি বেরুচ্ছে, কে একটা বললো, কোথায় যাচ্ছিস ভাই, বাপির সরল স্বীকারোক্তি দাড়ি কামাতে! রাত ১১টায় ঘুম থেকে উঠেই একটা লোক কিভাবে দাড়ি কামাতে যেতে পারে এটা আমার কাছে রহস্য বিশেষ!

    --------------

    আরেকজন ছিলো মতি! তার প্রতিভা অবশ্য অন্যত্র, সে বাঘ চরানো সুন্দরবনের ছেলে, শোনা যায় মতির কাকা নাকি একবার পুং বাঘের বিশেষ জায়গায় খুঁচিয়ে বাঘকে ভাগিয়ে দিয়েছিলো, মতির বাড়ির পাশ দিয়েই নদী গেছে, এবং সেই নদীতে জলের চেয়ে মাছ বেশী, এবং হাত ডোবালেই ইলিশ ওঠে, মানে এত হারে উঠছে যে দুবেলা খেয়ে এবং বেচেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ফলতঃ ওরা বিকেলে মুড়ির সঙ্গে ইলিশ খায়!!!

    তবে সবচেয়ে দুর্দান্ত গপপো হোলো, মতির কোন এক বন্ধুর বাড়িতে নাকি বাঘ আসতো, মানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমাদের বাড়িতে খাওয়া দাওয়ার পর যেমন বিড়ালটা কুকুরটা আসে, তেমনই সে ছেলের বাড়িতে "বাঘটা" আসতো! আর খাওয়া দাওয়া শেষ না হলে তারা হাত ঘুরিয়ে বলতো, "এই যাঃ এখনো খাওয়া হয়নি", বাঘ তখন ব্যাজার মুখে লেজ গুটিয়ে চলে যেত আবার দশ পনেরো মিনিট বাদে ফিরতো!

    বলাই বাহুল্য এ গপপো হজম করা শিবের অসাধ্য!

    এছাড়া জনশ্রুতি বা মতিশ্রুতি ছিলো, যে মতি যখন উচ্চ মাধ্যমিক দেবার জন্য এগোচ্ছে তখন নাকি সে সোনারপুরে থাকতো দিবারাত্র বিড়ি সিগারেট আর খাটের তলায় মদের বোতোল গড়াগড়ি যেতো, কথাটা হচ্ছিলো ফুলচাঁদের দোকানে, আমি খেয়াল না করে কথা শুনতে শুনতেই মতির দিকে একটা সিগারেট বাড়িয়ে দিয়েছি, মতিও এসব গপপো দিয়ে আর না করতে পারেনি! একটান দিয়েই দেখি, কেশে অস্থির, আমি ফুলচাঁদকে বলে জল টল দিলাম, খানিক ঠাণ্ডা হয়ে মতি বললো "আরে আসলে অনেক দিন টাচে নেই তো..."

    কয়েকদিন বাদে মতি আবার ফাঁসলো, এবার কেরোসিনের রুমে, কেরোসিন ভারী নিরীহ ছেলে, সাতচড়ে রা নেই, তাকে গিয়ে মতি ধরেছে, প্রশ্ন "আচ্ছা তুই যখন ছুটিতে বাড়ি যাস, কতক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকিস?"

    কেরো ভেবেচিন্তে বললো "রাত আটটা মত"

    মতি একটা ঘ্যামচাক হাসি দিয়ে বললো "মোটে আটটা, আমি তো ২টো কি ৩টের আগে বাড়িই ঢুকিনা"

    মতি আশা করেছিলো সবাই হাসবে, কেউ হাসেনি, ওদিকে সুমন ফস করে বলে উঠলো "মতি, ওরকম সময় তো রাস্তায় চোর, ডাকাত আর রেপিস্ট ছাড়া কেউ থাকে না, তুই ঠিক কোনটা?"

    ব্যস কেলো! মতি ভুল জায়গায় খাপ খুলেছে

    মতি আমতা আমতা করে বললো "মানে অনেক দিন বন্ধুর বাড়ি গিয়ে লেট হয়ে যায়"

    আরো কিছুক্ষণ চাটা হোলো মতি বললো "মানে বন্ধুর বাড়ি থেকে আগে ফিরে খেয়ে নি তারপর আবার আড্ডা মারতে যাই!"

    আরো চাট, মতি থাকতে না পেরে বললো "মানে অনেক দিন বাড়ি ফেরার পর, আমি আর দাদা উঠোনে ২টো অব্দি বসে গপপো করি"

    বোঝো কাণ্ড! লোকজনের ঢপের কোনো বাপ মা আর রইলো না!

    -----------------

    যার কথা না লিখলে এ চরিত্রকথন শেষ হবার নয়, তাঁর কথা লিখতে বসি এবার, লোকজন বলতেই পারে বাপি এবং মতির সাথে মিল কোথায়? মিল হোলো আন্তর্জাতিক মানের ঢপ এবং ঘটনা সরবরাহে, কিন্তু এ ঘোর কলিতে দু একটা গুল দিলেই লোকে বাজে হয়ে যায় না, রামকৃষ্ণদেব বলতেন সত্য কথা কলির তপস্যা, আর সবাই যে তপস্বী হবে এমন দাবী না করাই ভালো, আর তাছাড়া মুনিনাঞ্চ মতিভ্রমঃ! অতএ কিনা মুনিরাও মতির সংস্পর্শে এলে ভুলভাল করে ফেলে। কাজেই আর কোথাও না হোক আমার লেখায় যেহেতু তিনি মতির কাছাকাছি এসেছেন, দু একটা ভুলভাল করার অবশ্যই অধিকার আছে!

    ভদ্রলোকের নাম মোহনলাল সিনহা রায়, সংক্ষেপে MSR, মানে ওটা একেবারে আগমার্কা গোছের কথাবার্তা।

    ভয়ানক চেহারা, ভয়ানক বদরাগী, নিজের ভুল বাপের জম্মে স্বীকার করে না, কিন্তু মানুষ খাঁটি!, কলেজের দোতলা থেকে একটা সেতু যেত লাইব্রেরীতে, সে সেতুতে আমরা বিশেষ যাতায়াতের সুযোগ পেতাম না, সেখানে সবচেয়ে সাধারণ দৃশ্য ছিলো, মোহনলাল দাঁড়িযে সিগারেট পান করছেন।

    ভদ্রলোক কলেজকে ভারী ভালোবাসতেন, প্রাক্তন ছাত্র, কিন্তু আসল পার্থক্য অন্য জায়গায়, বোধহয় বেলুড়ের অন্যতম লোক যিনি ছাত্রদের নিজের পিতৃদত্ত সম্পদ মনে করতেন না! ছিলেন গণিত বিভাগের প্রধান, কিন্তু পাসের ছেলেদেরও খেয়াল রাখতেন, একবার নকলীবাবা, এবং "যার নাম করতে নেই সে" দুজনে মিলে পদার্থবিদ্যার একটি ছেলেকে বের করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। মোহনলাল দাবী করেন তিনি ছেলেটিকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন এবং তিনি মনে করেন না তাকে বের করার কোন যুক্তি আছে!

    দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে খেলার মাঠে, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, আকাশে কালো মেঘ ভিড় করে আসছে, আর ইয়ে বেলুড়ের মেঘে কোন আবেগঘন ব্যপার ছিলো না, কারণ চারদিকে সোমত্ত ছেলে, আর বৃষ্টি মানে বিকেলে বাইরে গিয়ে সিগারেট খাওয়া ভারী মুশকিল, আর কে না জানে ভেজা হাতে তামাকের গন্ধ টেকে বেশী! তো তার মাঝে নকলী বাবা নকল বক্তৃতা দিয়েই চলেছে, প্রসঙ্গতঃ নকলী নিজেও প্রাক্তনী, এবং নকলী যখন পড়তো তখন মোহনলাল পড়াতেন, কাজেই মোহনলাল কোনোকালেই নকলীকে রেয়াৎ করেন নি, এবং নকলীও সমঝে চলতো!

    এই নকল বক্তৃতার মাঝে জনগণ আতঙ্কে দিশেহারা, মানে গেল গেল একটা রব, মোহনলাল গিয়ে বললেন "বাবা, অনেক তো হোলো তাড়াতাড়ি শেষ করো! মেঘ করছে"

    মোহনলালের মুখে চোপা করতে নেই, এই সুশিক্ষে আমি বেলুড়ের প্রথম দিনেই পেয়ে গেছিলাম, কিন্তু গেরুয়া সময়বিশেষে মানুষের পশ্চাতে লাঙ্গুলের জন্ম দিযে থাকে, অতএব নকলী দাঁত কেলিযে বলে উঠলো " নানা স্যর, চিন্তা করবেন না, আমি চিরকাল দেখছি বিদ্যামন্দিরের কিছু হলেই মেঘ হয়, কিন্তু কোনদিন বৃষ্টি হতে দেখি না"

    একটা তিরিশ সেকেণ্ডের নিশ্ছিদ্র নীরবতা, মোহনলাল মাপছেন, এবং আমি নিশ্চিৎ মনে মনে ভাবছেন ঠিক কোন কোণে চড়টা মারলে দাঁতগুলো খুলে পড়বে, সে তো আর করা গেলো না, তিনি ঢোক গিলে বললেন "তুমি যতদিন বিদ্যামন্দিরে আছো, বিদ্যামন্দিরের আকাশ থেকে কালো মেঘ কখনো সরবে না!"

    আমরা তো চুপ, হাসি পাচ্ছে, এদিকে জানি হাসলে নকলী পরে সুদে আসলে বুঝিয়ে দেবে "যত হাসি তত কান্না বলে গেছেন রাম সন্না" অতএব চেপে গেলাম পাতি, মাঠ থেকে বেরিয়ে খ্যাক খ্যাক করে হাসতে আরম্ভ করলাম।

    মোহনলাল পড়াতেন বীজগণিত, রোমাঞ্চকর ক্লাস, তার চেয়েও রোমাঞ্চকর খাতা দেখা, তার সাথে বিনামূল্যে কিলটা, চড়টা, ডাস্টারের বাড়িটা তো আছেই,

    সে যা গেল গেল, ক্লাসে পড়ানোর সময় তাঁর দাবী ছিলো নিশ্ছিদ্র মনোযোগ! বাপী একদি কেলাসে বসে, মোহনলালের কেলাসে বসে বাইরের প্রকৃতি দেখছিলো, হঠাৎ নজর পড়াতে তিনি বলে উঠলেন "কি দেখছিস?" বাপী চটকা ভেঙেই বুঝে গেছে কেলো আসন্ন, সে ঘেমে নেয়ে বললে "কিছু না" ব্যস দ্বিতীয় প্রশ্ন "কি পড়ালাম বলতো" স্বভাবতঃই বাপীর জানা ছিলো না, আর দেখে কে! একটা ছোটোখাটো ঝড় আছড়ে পড়লো বাপীর উপর!

    আরেকবার খাতা দিচ্ছেন, একটি ছেলে, ধরা যাক তার নাম ঘেঁচু, সে পেয়েছে ৪ কি ৫, তিরিশের মধ্যে, মোহনলাল বললেন "তুই খুব বাজে করেছিস কিন্তু!" ঘেঁচু দ্রিঘাংচুর মত জিজ্ঞেস করে বসলো "কিসে স্যার, অ্যালজেব্রায়?" বোঝো কাণ্ড, খাতা দিচ্ছেন, পড়ান অ্যালজেব্রা আর কিই বা হতে পারে, তিনি শুধু বললেন "এদিকে আয়" আমি তো বুঝেই গেছি এবার কি হবে, ঘেঁচু বোঝেনি, সে কাল্পনিক চুয়িং গাম চিবোতে চিবোতে এগিয়ে গেল, মোহনলাল বললেন চশমা খোল, আমার নরেন্দ্রপুরের অভিজ্ঞতায় আমি নিশ্চিৎ ছিলাম কি হতে পারে, এ সেই ঘড়ি খোলা মারের নতুন বিধি, সেখানে শিক্ষক ঘড়ি খুলতেন ঘড়ির বারোটা বাজার আশঙ্কায়, কিন্তু মোহনলাল ছাত্রদরদী এবং ছাত্রের চশমাদরদী, ঘেঁচু বোঝেওনি, চশমাও খোলেনি এবং তার পরই কর্ণমূলে সপাট চড়, চশমা ছিটকে ৫ ফুট দূরে!

    তবে এগুলো তো একদিক মোহনলালের আদত প্রতিভা ছিলো গপপো বলায়!

    একটা সাধারণ লোক কিভাবে সাইকেল চড়ে? সে ডান পাটা চালিয়ে দেয় সিটের উপরে, তারপর হাতল ধরে প্যাডেল করতে শুরু করে, আর কিছু অসাধারণ লোক, মানে আমার মত পাঁচফুটিয়ারা, হয় মহিলা সাইকেল চড়ি, কিম্বা, একটা প্যাডেলে ভর দিয়ে চলতে আরম্ভ করলে, টপকে উঠে চালাতে শুর করি! আর মোহনলাল কিভাবে সাইকেল চড়তেন ছোটবেলায়?

    তিনি সাইকেলের হাতল ধরে ঠেলে দিতেন সামনে, তারপর সেই গড়ায়মান সাইকেলকে ধাওয়া করে দৌড়ে এসে টুক করে চেপে পড়তেন! যুগপুরুষ আর কাকে বলে!

    ছোটবেলায় তিনি নাকি মহিষারোহী হয়ে ঘুরে বেড়াতেন, আর দিবারাত্র সাঁতার কাটতেন, নারকেল গাছের মাথা থেকে জলে ঝাঁপ দিতেন! তো এসব গপপো যেদিন কেলাসে হচ্ছে, তিনি প্রথম দাবী করলেন, তিনি প্লেন বাদ দিয়ে প্রায় সবই চালাতে পারেন! অবশ্যাম্ভাবী ভাবে আমার মুখ দিযে বেরিয়ে গেলো "স্যর ট্রেন", সব্য আর সৌমাল্য চোখ গোল গোল করে আমার দিকে ঘুরে তাকিয়েছে! আর আমিও বুঝতে পেরেছি কেলেঙ্কারী হোলো বলে, মোহনলাল কথাটা শুনতে পেয়েছিলেন, কিন্তু বুঝতে পারেননি কার শ্রীমুখ থেকে বেরিয়েছে, ফলে সেযাত্রা আমি রেহাই পেয়ে গেলাম আমার মাথায় গাঁট্টার তেহাই থেকে, আর মোহনলাল এ বিষয়ে আলোকপাত না করে পাতি আবার জলে ঝাঁপ দিলেন।

    থাকতেন বালিতে, অতএব দাবী, চিরকাল গঙ্গায় সাঁতরেছেন এমনকি বান ডাকার সময়ও, আমরা শুনছি আর হাসি চাপছি, হঠাৎ ঘেঁচু, যে নিজেও কিনা বালীবাসী, ফট করে বলে বসলো "আমার সাথে সাঁতারে পারবেন?" বোঝো কাণ্ড, মোহনলাল নিজে বলছেন এর আবার প্রতিবাদ হয় নাকি? মোহনলাল না দমে বললেন "ঠিক আছে একটা দিন স্থির কর তুই আর আমি একসাথে গঙ্গায় সাঁতার কাটবো!" তারপরই এলো সেই যুগান্তকার গঙ্গাবিজয়বৃত্তান্ত!

    মোহনলাল তখন পাটনায়! দুই বন্ধুর সাথে গঙ্গার ধারে আড্ডা দিচ্ছেন, এর মধ্যে কোন এক অর্বাচীন বললো পাটনার গঙ্গা নাকি সাঁতরে পেরোনো ভারী কঠিন, আরে বাবা বলছিস বল। কার সামনে বলছিস ভেবে দেখবি তো, মোহনলালকে দুআনার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লে তিনি ১৮ আনা করে থাকেন, অতএব বন্ধুকে তিনি জানালেন তিনি ডুবসাঁতারে পেরোবেন, মোহনলাল জাঙ্গিয়াসর্বস্ব হয়ে নেমে পড়লেন গঙ্গায়, এদিকে দুর্দম জোয়ার ঠেলে ঢুকছে, মোহনলাল কি আর দমেন, তিনি আদ্দেক রাস্তা ডুবসাঁতারে পার করে ভুস করে ভেসে পেছনে ফিরে দেখলেন, বন্ধুরা যুগপৎ আতঙ্কিত ও বিস্মিত হয়ে তাঁকে খুঁজছে, তিনি মুচকি হেসে আবার ডুব দিলেন এবং সেই ডুবে একধাক্কায় ওপার!

    একেই বলে ক্ষ্যামতা বাবা মোহনলালের সাথে কথা হবে না!

    এমনকি মোহনলাল অঙ্কের দুটো সুত্র উল্টে দিলেও কথা হবে না, যতক্ষণ না নিজে বুঝে আবার পরিবর্তন করছেন!

    মোহনলাল একজন অধ্যায়, আমার জীবনের তো বটেই, বেলুড়েরও, আজ বেলুড়ের গণিত বিভাগ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে তার পেছনে সেই মোহনলাল, জায়গা জায়গায় গিয়ে আমাদের পড়ানোর লোক জোগাড় করতেন, আমার পর পর পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়া সত্ত্বেও অবিচল আস্থায় আশা দিযে গেছেন চিরকাল, আর স্বপ্ন দেখেছেন আমি নতুন কিছু আমদানী করবো একদিন না একদিন। আর আমিও যে বেলুড়ের সামনের রাস্তা ঝাঁট না দিযে কিছু করে কম্মে খাচ্ছি, তার কমপক্ষে ৫০ শতাংশ দায় একা মোহনলালের!

    প্রত্যেকটা ক্লাস ছিলো রঙীন, নানা গল্প, কিছু মারধোর, কিছু অঙ্ক আর একটি দুর্দমনীয় ব্যক্তিত্ব এবং বৃহৎ হৃদয়,

    এক সকালে ঘুমচোখে ভাবছি কালকের ক্লাসটায় কিছু বাড়ির কাজ দিযেছেন মোহনলাল, কখন এবং কিভাবে শেষ করবো, হঠাৎ শুনলাম, চটকা ভেঙে, শম বলছে, "আজ সকালে ৩:৩০ এ মোহনলাল মারা গেছেন"

    চটকা ছুটে গেল এক লহমায়, অমর্ত্যর মৃত্যুতে লেগেছিলো জোর, সে ধাক্কা হয়তো আজও খুব গভীরে খানিকটা রয়ে গেছে, কিন্তু এই প্রথম মৃত্যু এসে সপাট নির্মম চড় মারলো আমার গালে, সে চড়ের ওজন মোহনলালে পনেরটা চড়ের চেয়েও বেশী!

    আমরা দল বেঁধে হেঁটে চললাম বালীর দিকে, মোহনলালের বাড়িতে সেবছর দোলযাত্রায় নেমন্তন্ন ছিলো আমাদের, তখনও হয়তো যেতাম হেঁটেই, কিন্তু এ হাঁটায় কোন আনন্দ নেই, বিষাদের ভারে পায়ের ওজন বেড়ে গেছে, অনেকে কাঁদছে, আমি কাঁদার উপরে চলে গিয়েছি, কাল পর্যন্ত যার বাঘ মারার গপপো শুনে এসেছি, সামান্য কাল বিকেলেও যে লোকটা পৃথিবীর অন্যতম জীবন্ত লোক ছিলো সামান্য হৃদয়ঘটিত কারণে এতটা দূরে চলে যাবেন এইটুকু সময়ের ব্যবধানে এটা আমার মাথার ভিতরে পোকার মত কুরে খাচ্ছিলো!

    ঘরে ঢুকে দেখলাম, মোহনলাল, সিংহের মত শুয়ে আছেন শেষশয্যায়, গোটা ঘর মৃত্যুর গন্ধ, আর তাঁর পায়ে হাত রেখে বুঝলুম, জীবন মানেই উত্তাপ, হঠাৎ করে যেন ভীষণ ঠাণ্ডা হয়ে গেলো চারদিক।

    ফিরে এলাম, দুপুরে কলেজে এসে পৌঁছলো তাঁর দেহ, মোহনলালের সুহৃদ ছিলেন স্বপন কুমার চক্রবর্ত্তী, তিনিও স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব, তাঁর কথা হবে আরেকদিন, আজ শুধু এটুকুই, যে তাঁরা কলেজ জীবন থেকে কর্মজীবন একসাথে কাটিয়েছেন, দুজনেই বেলুড়ের ছাত্র ছিলেন, আর দুজনেই বেলুড়ের অধ্যাপক, দুজনেই অঙ্কের! স্বপন কাঁদছেন হাউ হাউ করে, সুহৃদের পা ধরে, আর আমার মনে হচ্ছে এ ভাগ্য যেন কারো না হয়, বন্ধুর পা ধরে কাঁদার, আশেপাশে সবাই কাঁদছে, নকলী জানতো মোহনলাল আমাকে ভারী ভালোবাসতেন, সব্যকে তো বাসতেনই, তাই আমাদের দায়িত্ব হোলো গাড়ির আর দুজন লোকের সাথে মোহনলালের দেহ নামিয়ে আনার, ছাত্রের ধর্মই তাই, ছাত্র অর্থাৎ কিনা যে ছত্র ধারণ করে শিক্ষকের মাথার উপর, যে শিক্ষকের ভার বহন করে, আমিও করতেই চেয়েছিলাম, শুধু এভাবে না!

    সব্য কাঁদছে, সৌমাল্য, শোভন, হিমাদ্রী, এমনকি বাপিও, আমি সামলাচ্ছি, কান্না কিছু গিলে নিয়েছি, আর কিছুটা অবিশ্বাস তখনো, হয়তো গোটাটাই দুঃস্বপ্ন মাত্র!

    নাঃ শ্মশানে যাইনি, আজও মৃত্যু আমাকে একইরকম ভাবে বিস্মিত এবং দুঃখিত করে, আমার কাঁধে ভর দিয়ে মোহনলাল উঠে গেলেন কাচ ঢাকা গাড়িতে, চলে গেলেন অন্য কোথাও, আর আমরা যারা ছায়ামাত্র, যারা তাঁকে দেখলাম জানলাম হাসলাম বুঝলাম কিম্বা অনেকটা না বোঝা রয়ে গেলো, পেছনে রয়ে গেলাম কিছু স্মৃতি আর কিছু অবিশ্বাস নিয়ে।

    ******
    ক্রমশঃ
    ******
  • siki | 132.177.179.81 | ১৪ মে ২০১২ ২১:৩০546709
  • উরিশ্‌শালা!

    নিশান অর্হুস ইউনিতে ছিলেন? অর্হুস শহরে আমি একতু ঘুরে বেরিয়েছিলাম দিন দুয়েকের মত, ওর কাছেই সিল্কেবর্গ নামে একটা ছোট গেরামে ছিলাম মাস দেড়েক।
  • ranjan roy | 24.96.15.187 | ১৪ মে ২০১২ ২৩:১৫546710
  • নিশান,
    অসাধারণ! চালিয়ে যান।
  • শ্রী সদা | 127.194.201.2 | ১৪ মে ২০১২ ২৩:১৭546712
  • নিশানদা, দুর্দান্ত হচ্ছে।
  • pi | 138.231.237.8 | ১৪ মে ২০১২ ২৩:১৯546713
  • নিশান তো দারুণ গান গাস ! তোর গান নিয়েও মহারাজরা ঐসব বলতেন !
  • PM | 233.223.129.49 | ১৪ মে ২০১২ ২৩:৪০546714
  • নিশান, চমৎকার লিখছেন ভাই। MSR কেও নায়ক মনে হলো।

    তবে একটা কথা বলা দরকার। বেলুড়ের ম্যাথ ডিপার্টমেন্ট আজকের যে জায়্গায় পৌছেছে তার জন্য সবচেয়ে যার অবদান তিনি হলেন SB। তোমরা হয়্তো তাঁকে দেখো নি। ডিপার্টমেন্ট-টা ওনার হাতে গড়া। যদি রেসাল্ট দেখো তো দেখবে যে ওনার সময় ১০ বারে ৬ বার-ই বিদ্যামন্দির থেকে CU তে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছে। MSR ও ওনার-ই ছাত্র। MSR কে আমরা হেড ডিপ হিসেবে দেখি নি। নিশ্চই উনিও সফল ছিলেন।

    সে যাক গে, MSR কে নিয়ে আমার একটা গল্প মনে পড়ে গেলো। ২য় বর্ষে MSR আমাদের পাশ-এর ম্যাথ এর ক্লাস নিতেন। ওনার একটা ক্লাস ছিলো শনিবার 12.30 (লাস্ট ক্লাস)। এবার শনিবার 1.30 শে রাখী আর পারিজাত ( সিনেমা হল) এ শো টাইম। প্রতি শনি বার কিছু ছেলে পালা করে সিনেমা দেখতে যেতো MSR এর ক্লাস কেটে। বাকিরা ওদের হয়ে প্রক্সি দিতো। স্যার বুঝতে পারতেন , কিন্তু কিছু বলতেন না। একবার হয়েছে কি একটা দারুন হিট কোনো সিনেমা এসেছে, খুব সম্ভবত মাধুরীর কোনো ছবি। সেই শনিবার ২০ জনে মিলে ৬০ জনের প্রক্সি দিয়েছিলো। এতোটা বাড়াবাড়ি MSR-ও সহ্য করতে পারলেন না। সোজা প্রভাকর মহারাজ (তখন VP)-কে ডেকে আনলেন। অ্যাটেন্ডন্স খাতায় ৬০ জনের অ্যাটেন্ডেন্স , ক্লাস-এ ২০ জন। কেউ স্বীকার করছে না প্রক্সির কথা----সে এক কুরুক্ষেত্র কান্ড ঃ)

    ও হ্যা, বলা হয় নি। হস্টেল-এ থেকে ক্লাস বাঙ্ক করলে ক্লাস পিছু ১ টাকা ফাইন ছিলো। মাসের শেষে সেই ফাইনের রিপোর্ট বাড়িতে পোস্ট করে পাঠানো হোতো। আশা করি বোঝা গেলো কেনো প্রক্সি দেখার দরকার হতো ঃ)। প্রভাকর মহারাজ প্রিন্সিপাল হবার পরে এই প্রথা উঠে যায়।

    এরকম অদ্ভুত নিয়ম কানুন থাকতে পারে কলকাতার বুকে কোনো কলেজ-এ আদ্দেক লোক বিশ্বাস -ই করবে না হয়তো
  • অপু | 24.99.53.253 | ১৪ মে ২০১২ ২৩:৫২546715
  • নিশান দারুন হচ্ছে।

    MSR র কাছে পড়ার সুযোগ পাই নি। তবে SKC র কাছে হয়েছে? তোমাদের শচীন বক্সী বোধহয় পড়ান নি। উনিও এক কিংবদন্তী শিক্ষক। SM আর KP কে পেয়েছিলে নিশ্চয় ই?
  • | 60.82.180.165 | ১৫ মে ২০১২ ০০:২৩546716
  • খুব ভাল্লাগছে।চমৎকার।
  • pi | 138.231.237.8 | ১৫ মে ২০১২ ০০:৫৪546717
  • নিশান, একটু মেইল দেখিস।
  • Fevi | 227.162.209.11 | ১৫ মে ২০১২ ০১:২৬546718
  • মোহনবাবু সম্ভবত বেলুড়ে আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন।
  • aranya | 154.160.226.53 | ১৫ মে ২০১২ ০২:০৮546719
  • নিশান সুন্দর লিখছে। MSR-এর কথা শুনে আমার প্রিয় প্রধান শিক্ষক, জয়গোপাল স্যারের কথা মনে পড়ল, উনি মারা যাওয়ার পর কল্যাণীর অর্ধেক ছেলেমেয়ে ওর বাড়ীতে ভেঙে পড়েছিল।
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৫ মে ২০১২ ০২:৫৯546720
  • ধন্যবাদ রঞ্জনদা, দয়া করে আপনি বলবেন না :)

    @Siki: আমি ছিলুম দু বছর, কিন্তু ভাষাগত নানা সমস্যা থাকায় নিউ ইয়র্কে চলে আসি।

    @শ্রী সদা: অনেক ধন্যবাদ :)

    @পাই আপা: মেইল দেখলাম, গান নিয়ে খালি সঞ্জীব বলতো, আমাদের মহারাজ আমার গান ও তবলা দুইই পছন্দ করতেন, সঞ্জীবের মতে আমার গলায় সুরের কোন মা বাবা নেই, আমি বিশেষ প্রতিবাদ করিনি কারণ সত্যিই আমার কোন formal training নেই গানে!

    @PM: আরে মোহনলাল তো হিরোই, আপনাদের সময় অতটা খাপ খুলতে পারেনি, শচীন বক্সী আমাদের সময় পড়াতেন না, আমাদের সময় ছিলেন MSR, SKC, KP, SR, পরে MSR মারা যাবার পর কিছু পার্ট টাইম কে আনা হয়, তাদের মধ্যে সন্দীপ জানা বলে একজন ছিলেন যিনি খুব ভালো পড়াতেন, তবে আমার মতে ফাইনের ব্যবস্থাটাই ভালো ছিলো, আমাদের আমলে ফাইনের বদলে পাতি গার্জেন কল হোতো, আপনাদের সময় ছিলো কিনা জানিনা, তবে আমাদের সময়ের রেজিস্টারগুলো চমকপ্রদ ছিলো, অন্য স্কুল কলেজে নামের পাশে খোপ থাকে, প্রেজেণ্ট থাকলে ল্যামডা লেখা হয়, না থাকলে a। বেলুড়ে শুধু Date এর পাশে বড় খোপ থাকতো আর যে যে থাকতো না তাদের রোল নাম্বার লেখা হোতো :-o এমন রেজিস্টার আমি আর কোথাও দেখিনি, আর আপনি আমার সিনিয়ার দয়া করে আপনি বলবেন না :)

    @অপু দা: SM মানে সুবীর মুখার্জী? শ্রীরামপুরের? তাহলে পেয়েছি, আর KP তো ছিলেনই, এমনিতে চরম কিপটে ছিলো, কিন্তু একবার জয়শ্রী যাবার সময় নৌকায় দেখা হয়ে গেছিলো, নানা ঢপ দিতে হয়েছিলো সত্যি কিন্তু KP র মত কিপটে লোক আমার ভাড়ার ১টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন :P

    @Fevi: আমারো, দু বারই, ১১-১২ এও, অনার্সেও, তবে তার আগে একপিস পরীক্ষাও হয়েছিলো অনার্সে :)

    @অরণ্য: কিছু কিছু লোক এরকমই থাকে, আমাদের ইশকুলে এরকম আরেকজন ছিলেন, অজিত সেনগুপ্ত, প্রবাদপ্রতীম শিক্ষক, এবং দুর্দান্ত লোক :)

    @ম: অনেক ধন্যবাদ :) আরো আসবে... আসতে থাকবে....
  • riddhi | 138.62.92.91 | ১৫ মে ২০১২ ০৩:১৬546721
  • নিশানের লেখা অসম্ভব ভাল লাগছে।
  • অপু | 24.99.227.19 | ১৫ মে ২০১২ ০৮:৩৫546723
  • না সমরেশ মজুমদার। আমাদের কোর-অর্ডিনেট জিওমেট্রি পড়াতেন। প্রথম ক্লাশেই বলেছিলেন। আমি জানি তোমাদের মধ্যে ৯০% ছেলে পুলে ৮০%+ পাবে। বাকি ২০% র জন্যে আমি ঃ-))। অবশ্য ২০০৪ এ উনি রিটায়ার করে যেতে পারেন । ঠিক জানি না।
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৫ মে ২০১২ ১২:৫৬546724
  • না ওনাকে পাইনি, তবে তোমরাও সুবীর মুখার্জীকে মিস করে গেছ, ভদ্রলোকের দুটো পায়ের পাতা থেকে যদি লাইন টানা যায় সেটা যেখানে ছেদ করবে তার সাথে নাভি যোগ করলে একখানা সমবাহু টেট্রাহেড্রন পাওয়া যাবে, ক্লাস নিতেন শনিবার ২টো থেকে ৬টা প্রায় :(

    @ঋদ্ধি: অনেক ধন্যবাদ, :) লোকজনের ভালো লাগছে জানলে উৎসাহ পাওয়া যায় :)
  • Blank | 180.153.65.102 | ১৫ মে ২০১২ ১৩:৪১546725
  • ব্যাপক লাগছে পড়তে। চালিয়ে যাও বস
  • প্পন | 212.91.136.71 | ১৫ মে ২০১২ ১৪:০৭546726
  • নিশান, ভালো হচ্ছে বস। আপডেট হলেই এসে পড়ে ফেলছি।
  • PM | 131.241.218.132 | ১৫ মে ২০১২ ১৫:২০546727
  • বলতে ভুলে গেলুম MSR কে আমাদের ব্যাচ এর ম্যাথ এর ছেলেরা "ম্যাসাকার" নামে ডাকতো। নামটার উৎস কি জানি না।

    গত সপ্তাহে কলেজ গেছিলাম Shell এর এক রিক্রুটার কে নিয়ে । ইন্ডাস্ট্রিয়াল এর MSc ব্যাচ থেকে রিক্রুট করার জন্য। সে এসেছিল অন্য কাজে। তাকে পাকড়ে আমি আর আমার এক ব্যাচ মেট বিদ্যমন্দির নিয়ে গেছিলাম। সে ফিরে খুব ভালো রিপোর্ট সাবমিট করেছে।

    তখন স্টাফ রুম-এ স্যারেদের সাথে দেখা। সেদিন SKC ও এসেছিলেন আড্ডা মারতে। আমাদের পাশ-এ পড়িয়েছিলেন ২০ বছর আগে । দেখার সাথে সাথে নাম ধরে ডাকলেন। আমি ভাবতেই পারি নি যে উনি আমার নাম মনে রাখবেন। রিটায়ার করার পরেও আগের মতো হই হই করেন।
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৫ মে ২০১২ ১৬:৫৫546728
  • @Blank ও প্পন : অনেক ধন্যবাদ :)

    @PM: আমরাও ম্যাসাকার বলেই ডাকতাম, SKC ভালো লোক, একটু কিপটে এই যা, কিছু খাওয়াতে বললেই পকেট থেকে কয়েন বার করে বলতেন, দেখ বাবা, এই মাত্র কয়েকটা টাকা পড়ে আছে, এ তো আমার বাড়ি যেতেই খরচা হয়ে যাবে :P তবে অসাধারণ পড়াতেন আর ছাত্রদের খুব ভালোবাসতেন।
  • SS | 109.120.125.223 | ১৫ মে ২০১২ ১৮:৫৫546729
  • নিশানের লেখার হাত খুব সুন্দর আর সাবলীল। দারুণ লাগছে পড়তে।
  • | 24.96.148.191 | ১৫ মে ২০১২ ২১:৪৬546730
  • আমিও সেদিন কত ভাল বললাম, আমারে একটাও ধন্যবাদ দেন নি নিশান। ঃ-(
    যাই হোক, শ্রীরামপুরের সুবীর মুখার্জী? হাই পাওয়ারের চশমা আর 'হ্যাঙারে পাঞ্জাবী' মত দেখতে তাই তো?
  • সিকি | 132.177.179.81 | ১৫ মে ২০১২ ২২:১০546731
  • হুগলি জেলা, হুগলি জেলা।

    ইয়েপ, ইয়েপ!
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৬ মে ২০১২ ০৮:৪৬546732
  • আরে আমি ভাবলুম দ এর শরীর খারাপ করেছে বড়ি দিলেই প্যাঁচা হয়ে যাবে, তাই বলা হয়নি, তবে আজ অনেক ধন্যবাদ :)

    আর অবশ্যই ওরকম মাল বাজারে আর কপিস আছে, একমেবাদ্বিতীয়ম সুবীর মুখুজ্যে, যার কাছে রিভিউএর খাতা গেলে ৫৫ কমে ৪৫ হয়ে যায়!
  • নিশান | 82.89.200.226 | ১৬ মে ২০১২ ০৮:৫৪546734
  • SS প্রচুর উৎসাহ পেলাম :) এরকম উৎসাহ পেলে লিখতেও ভালো লাগে :)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন