এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমি আমার বেলুড় জীবন নিয়ে একটা লেখা লিখছিলাম, highly non linear, কারণ linearity আমার ধাতে নেই, এন্তার বানান ভুল আছে, লেখার প্রথম তিনটে কিস্তি দিলাম, লোকজনের ভালো লাগলে আরো দেব,

    Nishan Chatterjee
    অন্যান্য | ০৯ মে ২০১২ | ২৭২৮৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 24.99.174.184 | ২১ মে ২০১২ ২৩:৫৯546802
  • ওকে, cb,
    আমাকে দাদু ডেকো।ঃ)))
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২২ মে ২০১২ ০০:০৮546803
  • তাই হবে দাদু :D
  • cb | 202.193.160.9 | ২২ মে ২০১২ ০৮:৪৩546804
  • রায়দাদু..:)
  • S | 109.26.200.89 | ২২ মে ২০১২ ০৮:৫৩546805
  • নামের সাথে বয়সের একটা বাক্স রাখলে ভালো হয়। কাকে কি নামে সম্বধন করবো বোঝা যাবে। নয়তো কোনো বালককে বাবু বলে, বয়স্ক লোককে নাম ধরে ডেকে ফেলার চাপ থাকবে।
  • গান্ধী | 213.110.243.21 | ২৪ মে ২০১২ ১০:০১546807
  • ও নিশান। আজ যে ২৪ হয়ে গেল
  • Tim | 108.249.6.161 | ২৪ মে ২০১২ ১০:১৭546808
  • ইকিরে! সদা এদের সবার চে ছোট? আমি আবার ভাবতুম গান্ধী সর্বকনিষ্ঠ। ক্ষি দিঙ্কাল!
  • গান্ধী | 213.110.243.21 | ২৪ মে ২০১২ ১০:২৭546809
  • সদা নামের আগে শ্রী বসিয়ে বড় হচ্ছে
  • অপু | 24.96.105.142 | ২৪ মে ২০১২ ১১:০৮546810
  • সদা, একদম বাচ্ছা ছেলে। সেদিন খেতে গিয়ে দেখলুম। স্বপ্নিল চোখ আর এক গাল কচি কচি 'উঠতে পারি কিন্তু কেন উঠবো' টাইপস দাড়ি
  • শ্রী সদা | 69.97.138.68 | ২৪ মে ২০১২ ১১:১৮546812
  • বাপস কি ডেসক্রিপশন !
  • Tim | 108.249.6.161 | ২৪ মে ২০১২ ১১:২৭546813
  • হুঁ আমি ফার্স্ট টাইম পড়ে ভাবলাম সদা রেস্তোরায় আধবোজা চোখে দাড়ি চিবুচ্ছে।
  • একক | 24.96.80.17 | ২৪ মে ২০১২ ১৩:২২546814
  • যারা দাদা/দিদি শুনতে পছন্দ করেন বলে ফেলুন . বয়েস যতই হোক তাই ডাকবো . বাকিদের নাম ধরে :) আমাকে সব্বাই নাম ধরে ডাকতে পার(ইস/ও/এন) .
  • Abhyu | 107.81.106.150 | ২৫ মে ২০১২ ০৬:৪০546815
  • নিশান - যেদিন পেপার ডিউ সেদিন সন্ধ্যে বেলা একটা টই খুললি হেল্প চেয়ে - তাহলে এতদিন এই টইতে লিখিস নি কেন? :)
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১১:২৬546816
  • আরে আমি দুদিন সময় চেয়েছি :)
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৪:০৫546817
  • আপডেট দিতে পারিনি বলে আমার পুরোন দু পিস কবিতা টুকে দিলুম আপাতত লোকে এটা একটু পড়ে দেখুক, না পড়া থাকলে

    New York Journal 8
    ~~~~~~~~~~~~~~~~

    অবিনাশ
    তুমিও বিনাশ হলে
    কবিতা বিক্রি করা ধুপওলা
    উঠেছিলো আজও
    সমস্ত কাজও
    তখনি ফুরিয়ে গেলো
    সন্ধের উজান বওয়া ট্রেনে

    প্রত্যেকটা বাঁক যাতে,
    আমার সহযাত্রিণীকে আমি
    দেখতে দেখতে ক্রমশঃ হারাই
    দুখানা জানলার কাচে
    আলো থমকে লেগে আছে
    পলক পড়েছে তবু
    ছবি কি হারায়

    অবশেষে বিষাদের পরে,
    সমস্ত ঘড়ির কাঁটা
    ষোলবার ষোলকলা পূর্ণ করে তবে
    আমিও ঠেকেছি এসে
    অনন্ত স্টেশন শেষে
    সিঁড়িদেরও পারে।

    কি করি সমস্ত রাস্তা,
    কোথায় তামাক সস্তা
    কোথায় ধূপের গন্ধে
    কবিতারা বাঁচে,
    সমস্ত অচেনা গন্ধ
    এদিকে রাস্তা বন্ধ
    সেদিকে সময় স্তব্ধ
    এগারোটা পাঁচে,

    এগারোটা পাঁচে,
    অবিনাশ, তুমিও বিনাশ হলে,
    তারারা বিনষ্ট হোলো,
    মেঘেদের ধাঁচে,
    তারা সব পুড়ে গেলো,
    বৃষ্টি হয়ে ঝরে গেলো,
    এ শহরে,
    সে আজও পড়ে আছে।

    উন্মাদের পাঠক্রম-১ (অনিমেষ ও পুরুষ)
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~


    রাত্রি যত বাড়ে তত কুকুরের ডাক,
    অবিনাশ নষ্ট হোলো এগারোটা পাঁচ

    এগারোটা দশে পাঁচ মিনিটের পরে
    অনিমেষ জন্ম নিলো চিলেকোঠা ঘরে!

    জন্মেই ভাসিয়ে দিচ্ছে যত কিছু ছাই
    নির্নিমেষে নিরাকার, যা চাই না চাই!



    যে ধ্বংস হয়নি তার অস্থি কোথা পেলে?
    আমার যা কিছু ভস্ম নদী জলে ফেলে,

    চলে এসো মোহানায়, মাছেদের ঝাঁক
    যা কিছু হাড়ের টুকরো লুটে পুটে খাক



    সে কাম ভাসিযে দিচ্ছি যমুনার জলে
    সমস্ত কিছুই যাহা সুফলে কুফলে

    সে কোন পুরুষ যার শিশ্ন অধোমুখী
    সমস্ত মাপের বাপ খাতা মধ্যে টুকি

    জানালা বন্ধ, দরজা, ভেজানো কপাট
    যতই দেখছি তত জ্বলে যাচ্ছে ঝাঁট



    সমস্ত নিমেষ দাও ধুয়ে অগোচরে
    রাত্রির সমুদ্র খাক পুলিশে, খোচরে!

    অনিমেষে ঘড়ি বন্ধ সময়ের ঘোর।
    খুঁটে খাচ্ছে চেটে খাক কালীতলা মোড়!

    উন্মাদের পাঠক্রম -২ (দুর্যোগ)
    ~~~~~~~~~~~~~~~~


    দাঁড়াও লাইন দিযে যত আছো নারী
    মৃতবৎসা, ক্ষীণবৎসা, ঘরোয়া, বাজারি!

    স্তন যার শুষ্ক অতি, আঁচলে আধুলি!
    কোলেতে অপুষ্ট ছানা, কোমরে মাদুলি!



    দুর্ভিক্ষ বাজারে আসছে, কার্তিকেয় মাসে।
    শিব জাগছে সদারঙ্গে প্রমোদ বাতাসে!



    এদিকে ব্রহ্মা ছিলো ধুরন্ধর ছেলে,
    দুটো হাত কাটা পড়লো, পেটো বাঁধতে গেলে!

    এমত আশ্চর্য রীতি তবু পঙ্গু নয়!
    বাকি দুটি হাত, তারা ভারী কর্মময়!



    দাঁড়াও নারীরা সব, তাকে দেখে শেখো!
    কিছু রুজ পমেটম বৃষ্টি গালে মেখো!

    তা যদি না হয় তবে সদারঙ্গে ভাসো!
    আগেই বলেছি শিব, ধ্বংস হয়ে আসো।



    এসো বৃষ্টি
    বন্যা এসো
    খরা এসো
    ত্বরা!

    সমস্ত দুর্যোগ
    এসো
    ভিক্ষাপাত্র ভরা!
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৪:০৫546818
  • আপডেট দিতে পারিনি বলে আমার পুরোন দু পিস কবিতা টুকে দিলুম আপাতত লোকে এটা একটু পড়ে দেখুক, না পড়া থাকলে

    New York Journal 8
    ~~~~~~~~~~~~~~~~

    অবিনাশ
    তুমিও বিনাশ হলে
    কবিতা বিক্রি করা ধুপওলা
    উঠেছিলো আজও
    সমস্ত কাজও
    তখনি ফুরিয়ে গেলো
    সন্ধের উজান বওয়া ট্রেনে

    প্রত্যেকটা বাঁক যাতে,
    আমার সহযাত্রিণীকে আমি
    দেখতে দেখতে ক্রমশঃ হারাই
    দুখানা জানলার কাচে
    আলো থমকে লেগে আছে
    পলক পড়েছে তবু
    ছবি কি হারায়

    অবশেষে বিষাদের পরে,
    সমস্ত ঘড়ির কাঁটা
    ষোলবার ষোলকলা পূর্ণ করে তবে
    আমিও ঠেকেছি এসে
    অনন্ত স্টেশন শেষে
    সিঁড়িদেরও পারে।

    কি করি সমস্ত রাস্তা,
    কোথায় তামাক সস্তা
    কোথায় ধূপের গন্ধে
    কবিতারা বাঁচে,
    সমস্ত অচেনা গন্ধ
    এদিকে রাস্তা বন্ধ
    সেদিকে সময় স্তব্ধ
    এগারোটা পাঁচে,

    এগারোটা পাঁচে,
    অবিনাশ, তুমিও বিনাশ হলে,
    তারারা বিনষ্ট হোলো,
    মেঘেদের ধাঁচে,
    তারা সব পুড়ে গেলো,
    বৃষ্টি হয়ে ঝরে গেলো,
    এ শহরে,
    সে আজও পড়ে আছে।

    উন্মাদের পাঠক্রম-১ (অনিমেষ ও পুরুষ)
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~


    রাত্রি যত বাড়ে তত কুকুরের ডাক,
    অবিনাশ নষ্ট হোলো এগারোটা পাঁচ

    এগারোটা দশে পাঁচ মিনিটের পরে
    অনিমেষ জন্ম নিলো চিলেকোঠা ঘরে!

    জন্মেই ভাসিয়ে দিচ্ছে যত কিছু ছাই
    নির্নিমেষে নিরাকার, যা চাই না চাই!



    যে ধ্বংস হয়নি তার অস্থি কোথা পেলে?
    আমার যা কিছু ভস্ম নদী জলে ফেলে,

    চলে এসো মোহানায়, মাছেদের ঝাঁক
    যা কিছু হাড়ের টুকরো লুটে পুটে খাক



    সে কাম ভাসিযে দিচ্ছি যমুনার জলে
    সমস্ত কিছুই যাহা সুফলে কুফলে

    সে কোন পুরুষ যার শিশ্ন অধোমুখী
    সমস্ত মাপের বাপ খাতা মধ্যে টুকি

    জানালা বন্ধ, দরজা, ভেজানো কপাট
    যতই দেখছি তত জ্বলে যাচ্ছে ঝাঁট



    সমস্ত নিমেষ দাও ধুয়ে অগোচরে
    রাত্রির সমুদ্র খাক পুলিশে, খোচরে!

    অনিমেষে ঘড়ি বন্ধ সময়ের ঘোর।
    খুঁটে খাচ্ছে চেটে খাক কালীতলা মোড়!

    উন্মাদের পাঠক্রম -২ (দুর্যোগ)
    ~~~~~~~~~~~~~~~~


    দাঁড়াও লাইন দিযে যত আছো নারী
    মৃতবৎসা, ক্ষীণবৎসা, ঘরোয়া, বাজারি!

    স্তন যার শুষ্ক অতি, আঁচলে আধুলি!
    কোলেতে অপুষ্ট ছানা, কোমরে মাদুলি!



    দুর্ভিক্ষ বাজারে আসছে, কার্তিকেয় মাসে।
    শিব জাগছে সদারঙ্গে প্রমোদ বাতাসে!



    এদিকে ব্রহ্মা ছিলো ধুরন্ধর ছেলে,
    দুটো হাত কাটা পড়লো, পেটো বাঁধতে গেলে!

    এমত আশ্চর্য রীতি তবু পঙ্গু নয়!
    বাকি দুটি হাত, তারা ভারী কর্মময়!



    দাঁড়াও নারীরা সব, তাকে দেখে শেখো!
    কিছু রুজ পমেটম বৃষ্টি গালে মেখো!

    তা যদি না হয় তবে সদারঙ্গে ভাসো!
    আগেই বলেছি শিব, ধ্বংস হয়ে আসো।



    এসো বৃষ্টি
    বন্যা এসো
    খরা এসো
    ত্বরা!

    সমস্ত দুর্যোগ
    এসো
    ভিক্ষাপাত্র ভরা!
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৪:০৫546819
  • যাঃ দুবার হয়ে গেলো, ফালতো!
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৪:১৫546820
  • কম্পিটিশানের বাজারে টিকে থাকতে নিশানের খুচরো আপডেট

    কিছু প্রেম

    মোহনলালের মৃত্যু ঘা আমাকে দিয়েছিলো, কিন্তু তা বুঝতে বুঝতে প্রচুর সময় পেরিয়ে গেছিলো, সেসময়টাতে আমি দরকার বোধ করতুম একটি কাঁধের, যে আমার যাবতীয় অবান্তর সমস্যা আমার সাথে ভাগ করে নেবে। মোহনলালের মারা যাবার কদিন বাদের ঘটনা, সুবীর মুখার্জী পড়াতে শুরু করেছেন, যাকে আমি প্রথমে গণিত বিভাগের বেয়ারা বলে ভুল করেছিলাম, এবং দুদিন বাদে ভুল ভেঙে আবিষ্কার করলাম, ভদ্রলোক স্বনামধন্য সুবীর মুখার্জী যার কাছে রিভিউয়ের খাতা গেলে ৫৮ থেকে ৩৮ হয়ে ফিরে আসে! দিনকাল যথারীতি বোরিং, প্রাণে সুখ নেই, এবং সেকালে সুর্যের আলো, বিকেলের মেঘ বেলুড়ের আবহাওয়াতেও প্রেম করার জন্য রীতিমত উসকাচ্ছে!

    আমি তখনও ১১-১২র সেই বিখ্যাত আলপটকা প্রেম আঁকড়ে ধরে বসে আছি, নিজেকে মজনু ভেবে আরবিট রকমের সুখ হচ্ছে এবং কবিতা লিখে দিস্তে দিস্তে খাতা ভরিয়ে ফেলছি, এরকমই এক সময় আমার কক্ষসঙ্গী ঘেঁচু আমাকে নিয়ে পড়লো! কিছু একটা ছোটখাটো দু-তিন দিনের ছুটি পড়েছে প্রাণপণে গুছোচ্ছি, পরের মেনলাইন লোকাল মিস করলে কপালে বিস্তর দুর্ভোগ আছে, এরকম সময় ঘেঁচু (বারবার ভুল করে আসল নাম লিখে ফেলতে যাচ্ছি, কোনক্রমে পড়ে ফেললেও দয়া করে কেউ নামটা মনে রাখবেন না :P ) আমাকে বললে "নিশান তোর খুব দুঃখ? না?" বলাই বাহুল্য এরকম একটা প্রশ্নের জন্য মোটেও তৈরী ছিলাম না, ঘাবড়ে ঘ হয়ে তাকানোতে সে বললো "মানে তোর কোন গার্লফ্রেণ্ড নেই কিনা!" মানে সে সত্য সম্বন্ধে আমিও অবগত, এবং বলতে নেই একটা দুটো ঝাড়ি মারার চেষ্টা আমিও চালাচ্ছিলাম, তাও দুঃখ বিশেষ ছিলো বলে মনে পড়ছে না, মানে কবিতায় যা দেখা যেত তা আদতে "বিপিনবাবুর দুঃখবিলাস" রোজ রাতে শুয়ে, ছাদের দিকে তাকিয়ে ভাবা আহা, আমার কি দুঃখ, কিছু দীর্ঘতর শ্বাস টানা, এবং তৎপর জল খেয়ে ঘুম! কাজেই আমি পাতি থ!

    আমি বললুম "হ্যাঁ, মানে,...ঠিক সেরকম না!"

    ঘেঁচু থামে না, সে বললো " আমি তোর জন্য একটা মেয়ে দেখতে পারি!"

    তখনকার পরিস্থিতি হোলো, আমার ব্যাগ গোছানো হয়ে গেছে, দরজার মুখে দাঁড়িয়ে আছি, বেরোব বলে তৈরী!

    আমি দাঁত কেলিয়ে বললাম "দেখগে যা!"

    বলে দৌড়!

    তিনদিন বাদে ফিরলাম, এ ঘটনা মাথাতেও নেই, মনে সত্যিকার দুঃখ, দুদিন ছুটি কাটিয়ে জেলখানায় প্রত্যাবর্তন! ঘেঁচু ফিরলো বিকেলে, বালীনিবাসী, বাক্সপ্যাঁটরার বালাই নেই, সময় করে একসময় চলে এলেই হোলো। এসেই বললো "হয়ে গেছে" আমি মনে মনে ভাবছিলাম আবার কবে ছুটি পড়বে, পূজোর কত দেরী এইসব! এরকম আচমকা ধাক্কায় ফিরে এসে বললাম " কি হয়ে গেছে ভাই?"

    ঘেঁচু জানালো আমার হয়ে মেয়ে সে দেখে ফেলেছে, মেয়ে ১২ কেলাসে পড়ে ( আমরা দ্বিতীয় বর্ষে), উত্তরপাড়ার কোন এক ইস্কুলে, এবং ঘেঁচু আমার হয়ে কথা দিয়ে ফেলেছে যে আমি এই মঙ্গলবারেই দেখা করবো! আমার অবস্থা কহতব্য নয়, ইয়ার্কি মেরে বলে যাওয়া কথার এ ফলাফল স্বপ্বেও ভাবিনি!

    পুরো কেসটাই তালগোল, আর ছোট মেয়ের সাথে প্রেম করার কোন বাসনা আমার ছিলো না! তবুও নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো, আর কথা যখন দিয়েছে দেখা নাহয় করেই আসি, এসব সাতপাঁচ ভেবে রাজী হলাম!

    হাজার একটা খটকা মাথায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলো, ছোট মেয়ে, আমাকে চেনে না, এর মাঝে কেস খাওয়ালে তো চিত্তির!

    মঙ্গলবার সেজেগুজে, কলেজের পেছনে অপেক্ষা করছি, ঘেঁচু এসে বললো চল। ঘেঁচু আরবিট হতে পারে, কিন্তু ঘেঁচুর কু-উদ্দেশ্য ছিলো না, আর ঘেঁচুর দ্বিতীয় মহৎ গুণ ছিলো কোনদিন একবারের জন্যেও আমার সাথে কোন বিশ্বাসঘাতকতা করেনি, কাজেই অবিশ্বাসের প্রশ্ন ছিলো না, বাপিদার দোকান থেকে সিগারেট কিনে হাঁটা দিলাম বালীর উদ্দেশ্যে। ঘেঁচুর নিজস্ব সাইকেল আছে, আরেকটা সাইকেল তার পাড়াতুতো দাদার কাছ থেকে ধার করা হোলো, যার চাকা তাপ্পি সমৃদ্ধ, এবং চালালেই পাহাড়ে চালানোর অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়! সেই দুটি দ্বিচক্রযান নিয়ে চাপ দিলাম প্যাডেলে।

    বালী ব্রিজ আসার আগেই তুমুল বৃষ্টি, থামার উপায় নেই কথা দেওয়া আছে, আর কে না জানে "মরদ কা বাত, হাথি কা দাঁত" অতএব বৃষ্টি, গাড়ি এবং জিটি রোড অগ্রাহ্য করে দুর্দম বেগে মুখ মুছতে মুছতে আমরা এগিয়ে চললাম। মোটামুটি ১৫-২০ মিনিট বৃষ্টিতে ভিজে অবশেষে এসে পৌঁছলাম ইশকুলের সামনে, এবার অপেক্ষা, কখন বেরোয়,

    ছুটি হোলো দুটো সিগারেটের পর, মেয়েরা বেরোচ্ছে, ঘেঁচু দূর থেকে মেয়েটাকে দেখে বললো ঐটা, আমার তো দেখেই চক্ষু চড়কগাছ, এ তো বাচ্চা মেয়ে, মেয়ে আমাদের দেখেই উল্টো দিকে হাঁটা দিয়েছে, আর ঘেঁচু গিয়ে পাকড়াও করেছে পেছন থেকে, "বলেছিলাম না তোর সাথে একজন দেখা করবে" (বোঝা গেল কথা দেবার ব্যাপারটা আদ্যন্ত ঢপ)! মেয়েটা ঘাবড়ে বলে "নানা! আমি পারবো না"(বোঝো কাণ্ড! কি পারার কথা বলা হয়েছিলো আল্লাই জানেন), ঘেঁচু কিন্তু দমবার পাত্র নয়, সে বলে" তুই আমার পাড়াতেই থাকিস, কাজটা কিন্তু ভালো করলি না" আমার তো শুনেই হয়ে গেছে, এসব আবার কি, আমি বললাম ভাই ঢের হয়েছে এবার আয়, এবং আবার ভিজতে ভিজতে বেলুড় প্রত্যাবর্তন।

    এই ঘটনার পর দীর্ঘদিন মেয়েদের নামোচ্চারণ করিনি!

    ছেলেপিলে দেখতাম, বিকেল হলেই দঙ্গল বেঁধে বেলুড় মঠে যেতো মেয়ে দেখতে, এখন ব্যাপারটা হোলো, বেলুড়ের মরুভুমিতে এরকম জিনিসে আমারও আগ্রহ ছিলো না এমনটা দাবী করছি না, কিন্তু সন্ধে হলে, অচেনা আধচেনা মেয়েদের চেয়ে অনেক বেশী টানতো সিগারেট,

    বিকেল হলেই ফুসফুস বলতো কিছু বিষ ধৌঁয়া চাই, আর সে কারণে আমার মেয়ে দেখতে চেয়েও দেখা হয়ে ওঠেনি।

    যেমন জল-চোর সন্ধে হলেই সেজেগুজে, গায়ে পাউডার পমেটম লাগিয়ে বেরিয়ে পড়তো জাল ফেলতে, শোনা যায় একবার এক মাছের পেছনে এমন হারে ঘুরেছিলো, যে সেই মাছ শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরের চাতালে উঠে আঃ তু তু বলে ডেকেছিলো, যেকোন লোক হলে পরের দিন আর লাইন মারতে যেত না, কিন্তু জল-চোর মন-চোর হবার জন্য এমন কলির কেষ্ট হয়ে উঠেছিলো কেউই আটকাতে পারেনি।

    কিন্তু কি আর করা যাবে। "অভাবে স্বভাব নষ্ট, বাকিটা অভ্যেসে", কাজেই অলমতি বিস্তরেণ!

    তাহলে আমরা সবাই রাজার দেশে আমার প্রেমটা হোলো কিকরে? মানে চতুর্দিকে সোমত্ত ছেলের মাঝে আমি মেয়ে পেলাম কোথায়?

    দায়ী শ্রীরামপুর কলেজ, শ্রীরামপুর থেকেই সুবীর মুখুজ্যে আসতেন পড়াতে, ভয়ানক বোরিং পড়ান আর তার উপর শনিবার বাকি সবার যখন হাফ ডে, অঙ্কের ছেলেরা তখন ২টো থেকে ৬টা মহান কেলাস মারাচ্ছে! মানে বিড়ি ফৌঁকারও সময় নেই, ফলতঃ আমি মোটামুটি চারদিন গিয়ে আর যাইনি, কিন্তু যখন তাঁর থেকে শ্রীরামপুরের প্রদর্শনী দেখার আমন্ত্রণ এলো, আমি না করলুম না।

    সেদিন, দ্বিতীয় বর্ষে, পৌষ কিম্বা মাঘ মাসে, আমরা বেরোলাম ১৩ জনের দল মিলে শ্রীরামপুরের উদ্দেশ্যে, জনগণ টিকিট কেটেছিলো, আমি ও ধার সে আমলে মাড়াতুম না, কারণ মনে মনে নিয়ম ভাঙার একটা আনন্দ হোতো।

    প্রথম মনে পড়ে শ্রীরামপুর স্টেশনে নেমে চপ খাওয়া, ও জিনিস আর কখনো ওখানে খেয়েছি বলে মনে পড়েনা, তবে দেবভোগ্য জিনিস ছিলো সন্দেহ নেই। সেই চপ এবং জল খেয়ে, রাতের মত নিশ্চিন্ত হয়ে ঢেকুর তুলতে তুলতে রওয়ানা দিলাম বাংলার প্রথম কলেজের উদ্দেশ্যে! লোকে লোকারণ্য, আমাদের প্রদর্শনী কদিন বাদেই, কাজেই আমাদের দায়িত্ব ভালো করে নজর করে দেখা, কারণ আমাদের চেষ্টা হওয়া উচিৎ যাতে ওদের চেয়ে ভালো হয়( আমার না বিভাগীয় বক্তব্য)!

    কিছুক্ষণ দেখে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে বসলাম গঙ্গার ধারে, সব্যসাচীও এসে বসলো, বাবুয়ানী করে কয়েকটা নেভি কাট কিনে দর্শন আলোচনায় মন দিলাম, সন্ধে হয়ে গেছে কয়েক ঘণ্টা আগে, ওপারে ব্যারাকপুরে কিছু আলো দেখা যাচ্ছে টিমটিম করে জ্বলে চলেছে, কোন শব্দ নেই, মাঝে মাঝে কিছু ভটভটি বাদ দিয়ে, আকাশ নীলচে কালো, বাতাসে শীতের আবছা কামড়, সব মিলিয়ে বেশ মন্দ লাগছিলো না, কিন্তু কোন ভালো জিনিসটা আর পৃথিবীতে বেশীক্ষণ টেকে, আমরা সময় দেখে গেটের দিকে রওনা দিলাম, জানা গেলো ছেলেপিলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কোন এক মেয়ে এসে বাপিকে বলেছে "কাকু একটু সরে দাঁড়াবেন" বাপি ঈষৎ বিরক্ত, তাও হাঁ করে খেস্তাচ্ছে, বাকিরা হাসছে, আমরা আসার পর সবাই দল বেঁধে ফের স্টেশনের অভিমুখে।

    স্টেশনে পৌঁছে দেখি আমাদেরই এক বন্ধু, পদার্থবিদ্যার! সে দু মাস বেলুড়ে পড়ে আর হজম করতে না পেরে, শ্রীরামপুরে ঢুকেছে, তার আরেক বান্ধবীর সাথে কথা বলছে, এমন সময় সে আমাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলো। ছোকরা দুমাস পড়লেও আমার "Angry Young Man" হাবভাবের সাথে পরিচিত ছিলো, তাই সে দাবী করলো তার সুপরিচিত কোন মেয়ে যার ডাকনাম "কিছু একটা" র সাথে আলাপ করিয়ে দেবে।

    বলার সাথে সাথে চোখ গেছে স্টেশন প্রান্তে, এবং দূরবর্তী মেয়েকে দেখে পরমুহূর্তে বোধ হোলো সেই "কিছু একটা", মাথার মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি কিছু চিন্তাভাবনা বয়ে গেলো, বাকি কথা শোনার অপচেষ্টা আর করিনি, মাথামোটার মত সব জেনেশুনে, মেয়েটির পেছনে লাইন দিলাম মহিলা কামরায় ওঠার জায়গায়!

    *******
    ক্রমশঃ
    *******
  • গান্ধী | 213.110.243.21 | ২৫ মে ২০১২ ১৫:১১546821
  • নিশান বড় হবে একদিন। সঠিক জায়গায় pause মারতে শিখেছে
  • অপু | 132.248.183.1 | ২৫ মে ২০১২ ১৫:১৬546823
  • বেলুড়ের সেই স্মৃতি বিজড়িত জেটি ঘাট নিয়ে দু পয়সা হবে না?
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৬:০২546824
  • হবে হবে! সে আমলে লাইটার কিনতাম না, দেশলাই ভরসা, তো জেটিতে সন্ধেবেলা বসে যখন আড্ডা মারতাম বিড়ি ধরাতে ঝাঁট জ্বলে যেত! সিগারেট জ্বালানো সোজা, ঘষে মুখটা কাছে এনে একটান দিলেই কেল্লাফতে, বিড়ি তো জ্বলতে কয়েক সেকেণ্ড বেশি সময় নেয়! কাজেই বিড়ি জ্বলতে চাইতো না, আর কোন শালা আমাকে দেশলাই দিতো না, দরকারে লোকে জ্বালিয়ে দুটান দিয়ে আমাকে দিতো!

    পরে থার্ড ইয়ারে ঐ জেটিতেই প্রেম করেছি, মায় বেলুড় মঠেও :D

    শালা গান্ধী আমার ক্লাসমেট আমাকে বড় হবার জ্ঞান দিচ্ছে! :P
  • গান্ধী, | 213.110.243.21 | ২৫ মে ২০১২ ১৬:২৯546825
  • এর ঠাকুর লোকের ভালো চাইতে বারন করেছেন । আশির্বাদ করলাম কোতায়
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৬:৩০546826
  • তা অবশ্যি বটে, কূট প্রশ্ন এবং আপাতগ্রাহ্য :) অতএব চলিবে, আর সেক্ষেত্রে "এর ঠাকুর" ভুল বলেছেন!
  • গান্ধী, | 213.110.243.21 | ২৫ মে ২০১২ ১৬:৩৩546827
  • মাঝে "জন্য" আছে
  • নিশান | 82.89.200.226 | ২৫ মে ২০১২ ১৬:৩৬546828
  • তাহলে আমি এর বাদ দিলাম :)
  • Abhyu | 107.81.99.89 | ২৭ মে ২০১২ ০৮:১৭546829
  • অতি মনোরম, এবং সুখপাঠ্য (অর্থাৎ আরো লিখুন)
  • aka | 85.76.118.96 | ২৭ মে ২০১২ ০৮:২০546830
  • নিজেকে প্রথমবার বেশ বুড়ো মনে হচ্ছে, যাই ফ্রেডি শুনি।
  • নিশান | 106.232.46.125 | ২৩ জুন ২০১২ ১১:১৯546831
  • হঠাৎ করে কাল বয়েস বেড়ে গেলো এক বছর, আর সময়ে অসময়ে কিছু শুকনো পাতা আর সূর্য ডোবার আলো বলে দিলো বুড়িয়ে যাচ্ছি, আর সব ঘটনা মনে হোলো কেমন দূরে দূরে সরে যাচ্ছে।

    তাই হয়তো অনেক ছেঁড়া সময়ের মাঝে অনেক কিছু ছেঁড়া ঘটনা আমাকে থামিয়ে দিচ্ছে, এখন বেলুড়ের শেষের আদ্ধেকে প্রেমটা হলেও ছিলো ভয়ানক জরুরী, আসবে অনেক বার ঘুরে ফিরে পেঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানা ভাবে, আর কাঁহাতক সর্বনাম ভালো লাগে, তাই ধরা যাক মেয়েটির নাম পৃথা, আসল নামের কাছাকাছি হোলো না, কিন্তু লালকে সাদা আর সাদাকে লাল বলবো প্রথমেই বেছে নিলে ক্ষতি নেই!

    প্রেম তো হোলো, জুন গড়িয়ে জুলাই, জুলাই গড়িয়ে আগস্ট এবং গ্রীষ্ম গড়িয়ে বর্ষার জলে ভাসার মুখে আমরা বেরোলুম প্রথম ডেটে, ভারী মজা লাগছিলো, এ অভিজ্ঞতা আগে হয়নি, আমার জন্য স্টেশনে অপেক্ষায় থাকবে জেনেই বেশ রোমাঞ্চের সৃষ্টি হোলো, সে যা হোক, গেলুম দেখলুম, সময় কাটালুম গপপো করলুম এবং ছটার আগে খোঁয়াড়ে ফিরেও এলুম।

    সেদিনের পর থেকে মোটামুটি সে সপ্তাহে ( এবং পের সপ্তাহগুলিতেও) রোজই বিকেলে কোথাও না কোথাও দেখা করতাম, মূলতঃ শ্রীরামপুর অঞ্চলে।

    এরকমই একদিন, বিকেল বেলা, দৌড়তে দৌড়তে চাপলাম ব্যাণ্ডেল লোকালে, তখন কাঁচা বয়েস দেশের অর্থনীতি নিয়ে বিশেষ চিন্তাভাবনার অবকাশ ছিলো না, কাজেই টিকিট কাটার ধার মাড়াইনি। হিন্দমোটর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার মুখে হঠাৎ দেখি কিছু লোক টুপটাপ উঠে পড়লো কামরায়। মামাদের গন্ধ পেয়েই আমার ছয় কিম্বা তার বেশি ইন্দ্রিয় সজাগ হয়ে উঠলো, কিন্তু তাতে আর কি লাভ?

    একজন মামা পেছন থেকে আলতো করে ডেকে বললেন, “ভাই টিকিট?”

    ম্লান মুখে বললাম “নেই!”

    মামা বললেন “বেশ তো করে নিন না!”

    যেন কতদিনের চেনা, আমি ধড়ে প্রাণ ফিরে বললাম “কত দেব?”

    মামা নির্বিকার মুখে বললেন “২৫০!”

    ভয়ানক বিপদ আমাকে গাছের ডালে উল্টো করে ঝোলালেও বড়জোর ৩০ টাকা বেরুবে! আর ধরা পড়লে কপালে কি নাচছে সে আর বলার নয়!

    মিশনের ছাতা আছে সত্যি, কিন্তু স্থানভেদে ছাতার ব্যবহার বদলে যায়, যেমন নরেন্দ্রপুরে সেই ছাতা বাইরের প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে আবরণ জোগালেও বেলুড়ে ব্যাপারটা ছিলো বাইরে বাওয়ালে পড়লে ফেরার পর ছাতা খানাকে ডাঙশের মত ব্যবহার করা!

    অতএব এরা ধরে কোথাও নিয়ে গেলে আমার কপালে বিস্তর দুঃখ, তার মধ্যে না বলে যাওয়া, এবং সর্বোপরি প্রেম করতে যাোয়া ধরা পড়লে আমার দুঃখে কুকুর শেয়ালকেও কাঁদতে হবে!

    মিনমিন করে জানালাম ৩০ টাকা আছে, বিস্তর দরাদরির পর ২০ টাকা দিয়ে রক্ষা পেলাম।

    নেমে দেখলাম পৃথা এক বান্ধবী সমভিব্যহারে বসে আছে, মনটা খুশি হোলো বটে কিন্তু আর দেরি না করে একখানা বেলুড়ের টিকিট কেটে এসে পাশে বসলাম!

    লাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে নামলাম ধানক্ষেতের ধারে, কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধে নেমে এলো, আর আমরা পথ ধরলুম যে যার দিকের! এর মধ্যে কখন যে আগামীকাল দেখা হবার কথা হোলো সেটা খেয়াল নেই!

    পরের দিন লাঞ্চ করে ঘরে এসে ঘরে মানিব্যাগটা পকেটে ঢোকাচ্ছি, কে একটা চিল্লিয়ে জানালো আমার ফোন এসেছে।

    নিচে গিয়ে ধরতেই প্রথম পাঁচ মিনিট কথার তোড়ে কিছু বুঝলাম না, অবশেষে বুঝলাম, আজ বেরোনর কথা ছিলো, এবং আমি আসিনি দেখে তিনি আবিষ্কার করেছেন আমি ভুলে গেছি, এবং তিনি অতিশয় ক্ষিপ্ত।

    পরনে লাল চেক জামা, এবং পাজামা ছিলো, আমি বিশেষ না ভেবে দৌড়লাম বেলুড় মঠ স্টেশনের দিকে, লাইন ধরে দেড় কিমি দৌড়নোর পর বেলুড় স্টেশনে ওঠার মুখে দেখি ব্যাণ্ডেল লোকাল ঢুকছে, হাতে সময় নেই, কিছু না ভেবেই উঠে পড়েছি, এবং সামনেই মামা!

    সাড়ে সর্বনাশ, কালকেই ধরা পড়েছি আজ না পড়লেই নয়? গত্যন্তর না দেখে পাতি রেলের কামরায় বসে মামাকে বীরভুমের ভাষায় বোঝালাম লেখাপড়া জানি না, আমার স্টেশন এলে বলে দিতে, মামা অতি সদয় ভালো মানুষ, স্টেশনের আগেই জানালেন, আমি দরজায় দাঁড়িয়ে, দেখি আমাকে দেকে সাদা সালোয়ার পরা এক তন্বী হাত নাড়ছে, আমার তো ভয়ে প্রাণ ধুকপুক, যদি একবার পেছনের টিটি দেখতে পায় তাহলে এক তো বিনা টিকিট তার উপর ঠগবাজি দুইতেই ফাঁসবো, আমি নির্বিকার ভাবে পার হয়ে ট্রেন থামার পর নামলাম, এসে হাত ধরে বললাম “কোথায় যাবি?”

    উপরে গনগন করছে সুর্য, কলেজ কেটে প্রথম দিনের প্রেম, ঘামে চকচক করা লাল হয়ে যাওয়া মুখের দিকে তাকাতে কেমন একটা ভালো লাগলো।

    ঠিক হোলো বোটানিকাল গার্ডেন যাওয়া!

    অতএব চলো শিবপুর, যদিও বেলুড়ের গণিত বিভাগের ছাত্রদের কাছে শিবপুরের অন্য মাহাত্ম্য আছে তবু, সেই শিবপুর!

    ঢুকে দিব্যি লাগলো, বেশ সবুজ, একটা হাল্কা উষ্ণ ভাপের মত হাওয়া, মাঝে মাঝে হাল্কা ঠাণ্ডা হাওয়া মিলিয়ে মিশিয়ে বসলাম এক বেঞ্চের ধারে, পৃথা ক্লান্ত, আমার কাঁধে মাথা, গালে অল্প টোল পড়েছে, সাদা সালোয়ার ঘামে হাল্কা ভেজা, চারিদিকে সেই গরম দম বন্ধ করা ভাপ আশ্চর্য একটা নেশা ধরিয়ে ঘুরে মরছে, প্রথম আবিষ্কার করলাম সবুজের আলাদা গন্ধ হয়, পৃথার চোখ আধবোজা, গাল কপাল ঘামে চকচক করছে, নাকের ঠিক ডগায় শিশিরের মত একটা ঘামের বিন্দু লেগে রয়েছে, হাল্কা শ্বাসে নাকের পাটা কাঁপছে, চাদ্দিকে একটা ঝিঁঝির ডাক, আর ঘাম এবং চন্দন মেশানো নেশা ধরানো গন্ধের মাঝে ঠোঁটগুলোকে হঠাৎ ভয়ানক মায়াময় মনে হোলো, পুষ্ট গোলাপি এবং ভেজা...

    নেশা লেগে যাচ্ছে কেমন ঘোরের মত, আমার মাথা নেমে আসছে ঠোঁটের দিকে, আমার ঠোঁট ছুঁচ্ছে আবেগ, আর চারিদিকে ঝিঁঝিরা আরো জোরে ডেকে চলেছে

    তারপর আর কিছু মনে নেই।
  • গান্ধী | 69.93.211.1 | ২৩ জুন ২০১২ ১৩:৩৫546832
  • হুম্ম। এবার আর তাপ্পোর জিগ্গাসা করলাম না। তবে এতোদিনে সময় হলো?
  • ranjan ROY | 24.97.125.153 | ২৩ জুন ২০১২ ২২:১২546834
  • "হে সময়! উত্তাল সময়!"
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন