এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষেঃ জুলে, লাদাখ!

    সিকি
    অন্যান্য | ২৩ জুন ২০১২ | ১১৩৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ০০:০১558251
  • দ্যাখেন, গপ্পো শুরু করার আগে আগেই একটা ডিসক্লেইমার দিয়ে দেওয়া ভালো, সইত্যের পথ থেকে আমি বিচ্যুত হতে পারব না, ফলে এমন বেশ কিছু কথা আমি লিখব যাতে আমার পারিবারিক শান্তিপ্রক্রিয়া বেশ ভালোরকমভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। আপনারাও আমায় খুব খারাপ পোকিতির লোক বলে ভেবে নিতে পারেন সময়ে সময়ে, কিন্তু এই বিশেষ সর্ষেটি আমি একদম সদা-সত্য-কথা-বলিব স্টাইলেই লিখব।

    কেমন হল বেড়ানো? এক কথায় ইউনিক, এক বাটি কাজু-কিশমিশ-খোবানি সমৃদ্ধ পায়েসের ওপরে টপিং হিসেবে ঘন কালমেঘের জুস ঢেলে দিলে গোটা ব্যাপারটা যেমন দাঁড়ায়, আমার গোটা ট্যুরটা ঠিক তেমনই দাঁড়িয়েছে। গোটা টিমের মধ্যে একা আমি বাদে বাকি প্রত্যেকটা হিউম্যান বিয়িং ছিল ঐ কালমেঘের রস, ইনক্লুডিং আমার বউ এবং মেয়ে। স্বপ্নের যাত্রা কীভাবে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে পারে সময়ে সময়ে ... যাক সে কথা। গল্পে আসি।

    প্রথমে গৌড়চন্দ্রিকা।
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ০০:১৩558362
  • http://www.bcmtouring.com/ নামে একটা ওয়েবসাইট আছে, যেটা বেসিক্যালি লে-লাদাখ দিওয়ানাতে ভর্তি। সাইটটার সন্ধান পাই প্রথম দুহাজার দশ সালে, যখন কমনওয়েলথ গেমসের সময়ে কোথাও একটা বেরিয়ে আসার প্ল্যান করছিলাম। বউ যেহেতু কেসচা, তাই এলটিসি পায়, ঐ আমাদের দে-দিদিমণির মতই। আর একটা হোম-টাউন এলটিসিকে অল-ইন্ডিয়া এলটিসিতে কনভার্ট করে নেওয়া যায় যদি গন্তব্য হয় জম্মু কাশ্মীর। কিন্তু অক্টোবরে লে যাওয়া সম্ভব নয় বলে আমরা সেবার বেরিয়ে এসেছিলাম আঁধার মাণিক্যের দেশে। আন্দামান বেড়ানোর সে গপ্পো তো আপনারা সব পড়েছেন। কিন্তু লে-লাদাখটা কীভাবে যেন আমার মাথার মধ্যে গেঁথে গেল, আর বেরলো না।

    পড়তে শুরু করলাম। ট্র্যাভেলগ, ইটিনেরারি, হিস্তোরি, জিওগ্রাফি। পৃথিবীর উচ্চতম ডেস্টিনেশন, বাইকার্স প্যারাডাইস, কত লোক যে প্রত্যেক বছর দিল্লি থেকে, পুণে থেকে, হায়্দরাবাদ থেকে, সুদূর চেন্নাই থেকে গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালিয়ে আসছে শুধুমাত্র লে দেখবে বলে, কতরকমের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছে, সব পড়তে লাগলাম, স-ব। পড়তে পড়তে চোখের সামনে আমি লে-র সমস্ত রাস্তাঘাট দেখতে পেতে শুরু করলাম। গেলবছর ঠিক করেও ফেলেছিলাম বেরিয়ে পড়ব, ব্ল্যাঙ্কি আর দময়ন্তীকে সেই মর্মে পটিয়েও ফেলেছিলাম, কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিকিনীর করুণ আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারি নি, নয়নভরা জল এনে সে বলেছিল, এ বছরে নয়, পরের বছর চল, আমিও যেতে পারব তা হলে।

    ২০১১তে ওর কিছু অসুবিধে ছিল, তাই এক কথায় আমার সোলো ট্রিপ ক্যানসেল করে ফেলেছিলাম। অবশ্য আরেকটা কারণও ছিল।

    লে যাবার দুটো রাস্তা। একটা মানালি হয়ে রোহতাং পাস দিয়ে, আরেকটা শ্রীনগর হয়ে কারগিল দিয়ে। নেশাড়ু বাইকাররা একদিক দিয়ে গিয়ে অন্যদিক দিয়ে ফেরে। একে বলে ফুল সার্কিট করা। তো, প্রায় হাজার বারোশো কিলোমিটার লম্বা এই রাস্তা বাইকে পাড়ি দিতে গেলে যে ধরণের বাইক লাগে, সে বাইক আমার ছিল না। মানে এখনও নেই। আমার বাইকটা নেহাতই পাতলা, ঐ খাড়াই রাস্তায় চলবে না। কিন্তু ভেবেছিলাম দিল্লি থেকে শক্তপোক্ত একটা বাইক ভাড়া করে নিয়ে যাব, তো গেলবছরের মত সে চিন্তাকে দূরে সরিয়েছিলাম।

    কিন্তু লে আমার পিছু ছাড়ে নি। এ বছরের গোড়া থেকেই তাই আটঘাট বাঁধছিলাম। বিসিএমট্যুরিংয়ের সাইট থেকেই কিছু লোকজন পেয়ে গেলাম যারা এ বছর জুন মাস নাগাদ বাইক নিয়ে বেরোবে, তাদের সাথে গাঁটছড়া বাঁধলাম। এবং সবকিছু প্রায় ঠিকঠাক হয়ে যাবার পরে সিকিনী বলল, আমি কেন যাব না? মেয়ে কেন যাবে না?
  • aishik | 132.179.44.101 | ২৪ জুন ২০১২ ০০:১৫558473
  • এইবার কেলো, একদিকে লে -লাদাখ আরেকদিকে কাশ্মির, আমি কি করি?
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ০০:২৪558584
  • অনেক বোঝালাম, দ্যাখ, এটা একটা ম্যাসকুলিন ট্যুর, অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপ, মেয়ে না থাকলে তোকে পিলিয়নে বসিয়েই হয় তো বেরিয়ে পড়তাম, কিন্তু এই ট্রিপে অনেক ঝামেলা, হাই অলটিটিউড সিকনেস, লম্বা লম্বা জার্নি ইত্যাদি তুই বাইকের পেছনে বসে সইতে পারবি না। পিলিয়ন নিয়ে অত লম্বা ড্রাইভ করাও হয় তো খুব সুখকর ব্যাপার হবে না। তাচ্চেয়ে বরং আমি এইবার ঘুরে আসি, পরে না হয় তোদের নিয়ে আবার যাব।

    কিন্তু ভবি ভুললেন না। পরে আবার কেউ এক জায়গায় যায়? এইবারেই চল, আমি এলটিসি কনভার্ট করিয়ে নিচ্ছি। হোমটাউনের জায়গায় জম্মু কাশ্মীর। সবাই মিলেই যাব।

    আমিও আমার গোঁ ছাড়ব না। লে যাবার আসল মজাটা হল লে যাবার রাস্তাটা। মানালি হয়ে বা শ্রীনগর হয়ে। যদি প্লেনেই যাবো আসব তা হলে তো কেরালা যাওয়া যায়, মধ্যপ্রদেশ যাওয়া যায়, গোয়া যাওয়া যায়, লে-লাদাখ আমি প্লেনে যেতে রাজি নই।

    দুদিন কথাবার্তা মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে গেল। ঘনঘোর আমাবস্যা। অবশেষে আমিই বললাম, ঠিক আছে, তা হলে দুদিকের কথাই থাকুক। আমি বাইক নিয়ে যাবো না, এমনিতেই বউ মেয়ে নিয়ে বাইকে যাওয়া পসিবল নয়, কিন্তু একপিঠ আমরা গাড়িতে যাবো, একপিঠ প্লেনে ফিরব। আর যাই হোক না কেন, ভবিষ্যতে আমি কিন্তু একবার বাইকে চেপে যাবই যাব, তখন আর কোনও চোখেজ্জল নাকেজ্জল মানব না। ... বাইকে চেপে লে-বিজয় ততদিনে আমার গাঢ় স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা আমি এ জীবনে পূর্ণ করবই করব।

    ভদ্রমহিলা মোটামুটি রাজি হলেন। বরফ গলল।

    এবার প্ল্যান প্রোগ্রাম করার পালা।

    মানালি রুট দিয়ে বাই রোড গিয়ে লে ফিরে আসা সম্ভব নয়, কারণ তা হলে এলটিসি পাওয়া যাবে না। মানালিটা হিমাচল প্রদেশে পড়ে, জম্মু কাশ্মীরে নয়। অতএব, শেষমেশ ঠিক হল, শ্রীনগর পর্যন্ত বাই এয়ার। আর ফেরা হবে লে থেকে দিল্লি। মানালি রুট আপাতত বাদ, পরে আমি একা যখন যাবো তখন ফুল সার্কিট করে নেব মনের সুখে।

    পথের দেবতা তখন বুঝি অলক্ষ্যে মুচকি হাসিয়াছিলেন।
  • পাই | 82.83.84.10 | ২৪ জুন ২০১২ ০১:৩০558631
  • শেষে সিকির হাত থেকে গৌড়চন্দ্রিকা !! ঃ((
    কালমেঘ এফেক্ট ?
    অবিশ্যি গৌরচন্দ্রিকাটা খাসা হয়েছে। মূল গানের আশায় বসে ঃ)
  • achintyarup | 24.99.23.93 | ২৪ জুন ২০১২ ০১:৫০558642
  • আমিও
  • Nina | 78.34.167.250 | ২৪ জুন ২০১২ ০২:১২558653
  • আমিও ঃ)
  • Tim | 108.249.6.161 | ২৪ জুন ২০১২ ০৩:৪৯558664
  • জ্জিও! ব্যাপক শুরু হয়েছে। ছবিছাবাও দিস মাঝে মাঝে।
  • Abhyu | 107.81.106.92 | ২৪ জুন ২০১২ ০৪:২১558675
  • আমিও দেখেছি গৌড় - বলিনি কিছু। এই গুগুল লে আউটে বড্ড টাইপো হয়
  • aishik | 132.179.52.58 | ২৪ জুন ২০১২ ০৭:৪৩558252
  • আর কই? আরো চায়।
  • siki | 151.0.9.25 | ২৪ জুন ২০১২ ০৮:৫২558263
  • asombhob loadshedding cholchhe ekhane, inverter fail kore jachhe. Aaj dupure bosbo abaar.
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ১৪:৩৮558274
  • অফিসে কেবল নিজের টিমের দুজনকে ছাড়া আর কারুক্কে বলি নি, লাদাখ যাবো, কীভাবে যাবো। আমার পুরো প্রজেক্ট টিম আসলে পুণেতে, আমরা তিনজন কেবল গুরগাঁওতে বসি, তো আমি বাদে বাকি সেই দুজনকেই জানিয়ে রেখেছিলাম যাতে ছুটিছাটা পাবার কোনো অসুবিধে না হয়। সিকিনীরও কেস তাই, কিন্তু সেখানে কেসটা সেখানে একটু অন্যরকম হয়ে গেল। চৌহান নামে একটি আপার ডিভিশন ক্লার্ক লে যাবার প্ল্যান শুনে হঠাৎ সিকিনীকে ধরে বসল, সে-ও সপরিবারে যাবে আমাদের সাথে এবং রাস্তাঘাটের সমস্ত খরচা শেয়ার করবে।

    এইখানে সিকিনীর আপিস এবং চৌহানের বৃত্তান্তটা একটু খোলসা করে বলে নেওয়া দরকার।

    সিকিনী কাজ করে ডিফেন্স মিনিস্ট্রিতে, সে তো সবাই জানেন। ডিফেন্স মানে মিলিটারি, মানে স্থলসেনা, নেভিসেনা এবং এয়ারফোর্সসেনা। তার বাইরেও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজকর্ম ইত্যাদি চলে সেনাভবনীবং সাউথ ব্লক থেকে, সেটা চালায় কেন্দ্রীয় সরকারের কেন্দ্রীয় সচিবালয় ক্যাডার, মানে সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট। সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট সার্ভিস, বা সিএসএসের লোকজন ডিফেন্স মিনিস্ট্রিতে কাজ করে সিভিলিয়ান হিসেবে। যেমন অন্যান্য মিনিস্ট্রিতেও কাজ করে। সিকিনী হল এই সিএসএস ক্যাডারের লোক। এককালে পাওয়ার মিনিস্ট্রিতে ছিল, পরে প্রমোশন পেয়ে ডিফেন্স মিনিস্ট্রিতে আছে বছর তিনেক হল। আবার পরে প্রমোশন হলে মিনিস্ট্রি বদলে যাবে, এই রকম।

    সিকিনী ডিফেন্সের যে সেকশনটা চালায়, সেটাকে বলে ডি-মেড। মানে, ডিফেন্স মেডিকেল। তার সেকশন অফিসার। সারা দেশে এমনকি বিদেশেও ভারতীয় মিলিটারির যত হাসপাতাল, সেবাকেন্দ্র, ডাক্তার, ইত্যাদি আছে, তার কোথায় কত বাজেট বরাদ্দ হবে, কোন ডাক্তারের পোস্টিং কোথায় হবে, কার প্রমোশন হবে, কে কর্নেল হবে, কে লেফটেন্যান্ট হবে, কোন হাসপাতালে কোন যন্ত্র কেনা হবে, কোন যন্ত্র স্ক্র্যাপ হিসেবে বেচা হবে, সমস্ত কিছু খতিয়ান রাখে এই ডি-মেড সেকশন।

    ফলে, বুঝতেই পারছেন, ঘোটালা আর ঘাপলা লেগেই থাকে এখানে। আর যেহেতু জায়গাটা ডিফেন্স, সাধারণ সিভিলিয়ান এবং মিডিয়ার প্রবেশ এখানে নিষিদ্ধ, ফলে এসব জায়গার ঘাপলা কোনোদিন প্রকাশ পায় না কোত্থাও, কোটি কোটি টাকা এদিক থেকে ওদিক চলে যায়, নয়ছয় হয়ে যায় দেশের "সুরক্ষা" নামে একটা হাস্যকর জিনিসের নামে, এবং বছর বছর ডিফেন্স বাবদ, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বেড়েই চলে বাজেটে। কোটি বেড়ে হয় কয়েকশো কোটি, হাজার কোটি, লক্ষ কোটি।

    আপনার আমার পয়সা। কেউ কোনোদিন জানতে পারি না। সিকিনীর দৌলতে কিছুকিঞ্চিত জানতে পাই, কিন্তু একা সেকশন অফিসার এইসব বড় বড় নেক্সাসে নিতান্তই চুনোপুঁটি। এখানে ছড়ি ঘোরান বড় বড় আন্ডার সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, মেজর, কর্নেল, সেনাপ্রধান, প্রাইম মিনিস্টার্স অফিস। তাঁদের রেকমেন্ডেশন অনুযায়ীই ডি-মেডের কর্মচারীদের বিভিন্ন ফাইলে সই করে ছাড়পত্র জমা দিতে হয়। আর একেকটা হাসপাতাল, একেকজন মিলিটারি ম্যান অন্যায়ভাবে অন্যজনকে সুপারসীড করে বেশি টাকা পেয়ে যান, ভালো প্রমোশন পেয়ে যান।

    সিকিনীর কাছেও অনেক অফার এসেছে। আসে। জিই, সিমেন্স, উইপ্রো, যারা মেডিকেল অ্যাপারেটাস ইকুইপমেন্টস সরবরাহ করে, তারা পরের বছরের টেন্ডার জেতার জন্য যে কোনো লিমিট ক্রশ করতে রাজি থাকে। লাখ কোটি টাকার বান্ডিল সেখানে কিছুই না। সেসব অফার অ্যাক্সেপ্ট করলে এতদিনে আমাদের সাউথ এক্সে বা হাউজ খাসে দুত্তিনটে ভিলা হয়ে যেত। পারি নি। পারি না। বেসিক্যালি মধ্যবিত্ত তো!

    কিন্তু সব মানুষ তো একরকমের হয় না! এই যেমন চৌহান। যেদিন থেকে সিকিনী ডিফেন্স জয়েন করেছে, সেদিন থেকে চৌহানের নামে অনেক গল্প শুনে এসেছি। পাতি একটা ক্লার্ক হয়েও তার কীভাবে উঁচু উঁচু র‍্যাঙ্কের অফিসারদের সাথে ওঠাবসা থাকে, তাদের পার্টিতে সিভিলিয়ান হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে মদ খাবার আমন্ত্রণ পেতে থাকে, কীভাবে তার বাড়িতে পেটি পেটি মদের বোতলের সাপ্লাই আসে, দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়েও কীভাবে অতি ল্যাভিশলি তাদের সংসার চলে, প্রচুর গল্প শুনেছি। লোকটা একবর্ণ ইংরেজি লিখতে পারে না, কিন্তু ওরেটিং পাওয়ার অসাধারণ। আগেই লিখেছি, লোকটা সামান্য ক্লার্ক। কোনো ক্ষমতা নেই নিজে থেকে কিছু করবার। কিন্তু ওপরমহলকে প্রভাবিত করার এক অসামান্য ক্ষমতা আছে তার। কাকে প্রমোশন দিতে হবে, কাকে হটিয়ে দিতে হবে, কোন হাসপাতালকে বেশি এইড দিতে হবে, জিই না সিমেন্স, কার টেন্ডারকে পাশ করাতে হবে, এ সমস্তই ইনপুট সে দিয়ে থাকে ওপরতলার সেক্রেটারিদের, যাঁরা আসলে ডিসিশন পাশ করান, সঙ্গে লাভের বখরাও দিয়ে থাকে। আপাদমস্তক করাপ্টেড বলতে যা বোঝায়, চৌহান হচ্ছে তাই।

    এ হেন লোক যখন বলে বসল, ম্যাডাম, হম ভি চলেঙ্গে আপলোগোঁকে সাথ, ম্যাডামের ক্ষমতা হল না "না" করার।
  • de | 130.62.178.128 | ২৪ জুন ২০১২ ১৭:১৬558285
  • দারুণ হচ্ছে, চলুক চলুক!
  • I | 24.99.99.78 | ২৪ জুন ২০১২ ২০:৩২558296
  • সিকিনী'র দশা দেখো, সিকি বলে-"একা যাই,''
    কিনী বলে-"এইবেলা দঙ্গলে চলো ভাই !''
    ঝোপে বসা চৌহানো পারিল কি জানিতে?
    সিকি-কিনী জেরবার, চৌহানে টানিতে।
    গোলেমালে হরিবোল লাদাখের সর্ষে
    সিকিগুরু ভনে, শুনে চণ্ডালে হর্ষে।।
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ২১:৪২558307
  • ক্লার্ক, কিন্তু চলন বলন অনেক উঁচুস্তরের বলে চৌহান প্রতি বছর কোথাও না কোথাও বেড়াতে যায় বউ বাচ্চা নিয়ে। আর প্রতি জায়গাতেই সে থাকে আর্মি অ্যাকোমোডেশনে। ডি-মেড বলে প্রতি শহরের মিলিটারি বেস হসপিটাল, ফিল্ড হসপিটাল ইত্যাদি জায়গায় যে সমস্ত হাইফাই গেস্টরুম থাকে, যেখানে সাধারণত ডিফেন্স পার্সোনেলদের থাকার কথা, সেখানে সিভিলিয়ান হয়ে সে আরামসে ঘর বুক করে রাখে, সেই হাসপাতাল বা সেই এস্ট্যাবলিশমেন্টের কম্যান্ডিং অফিসার ইত্যাদিদের পটিয়ে বা "কাজ করে দেবো" " ফাইল আগিয়ে দেবো" ইত্যাদি টোপ দেখিয়ে ঘ্যামা ঘ্যামা রুমে সম্পূর্ণরূপে সেই সব অফিসারদের পয়সায় আরাম করে আসে। বেড়াতে যাওয়ার মানে তার কাছে হল আর্মি গেস্টহাউসে হাত পা ছড়িয়ে ফ্রি-তে বউ বাচ্চা নিয়ে ল্যাদ খাওয়া আর আর্মি মেসে ফ্রি-তে গান্ডেপিন্ডে সাঁটানো। বলতে নেই, সৈনিকদের জন্য দেশের সমস্ত সম্পদই উৎকৃষ্ট কোয়ালিটির হয়, এমনকি আর্মি মেসের রান্না খেলেও আর ঘরের রান্না মুখে রুচবে না।

    ফলে লে-লাদাখ, তথা জম্মু-কাশ্মীর, যেখানে পুরো রাজ্যটাই আর্মির কন্ট্রোলে, সেখানে যেতে যে চৌহান উৎসাহিত হবেই, সে আর নতুন কথা কী? সিকিনী অনেক চেষ্টা করল তাকে নিরস্ত করতে, আপনি আলাদা যান না, আমাদের সাথে ঘুরতে আপনার ভালো লাগবে না, আমরা আর্মি অ্যাকোমোডেশনে থাকতে ইন্টারেস্টেড নই, অযাচিত ফ্রি-শেল্টার নিতে আমরা চাই না, ইত্যাদি থেকে শুরু করে শেষে আমার নামেও অনেক বলার চেষ্টা করল। সিকি কিন্তু মদ খাওয়া ইত্যাদি ব্যাপারগুলো একদম ভালো চোখে দ্যাখে না, আমাদের সঙ্গে গিয়ে আপনাকে যদি দ্যাখে কোনো আর্মি অফিসারের সঙ্গে বসে আপনি ড্রিঙ্ক করছেন, সে কিন্তু পছন্দ করবে না, তাকে অফার করতে গেলে কিন্তু সে উলটে আপনাদের পাঁচকথা শুনিয়ে দেবে, আপনারও সেসব ভালো লাগবে না ... অনেক রকম ভাবে তাকে নিরস্ত করার চেষ্টা করা হল, কিন্তু চৌহান আমাদের সাথে কী আঠা পেয়েছিল কে জানে, সে কিছুতেই সাথ ছাড়ল না। -- আপনি চিন্তা করবেন না ম্যাডাম, থাকার জায়গা আমি এমন এমন ভালো জায়গায় করব আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন, আপনি শুধু অ্যাকোমোডেশনের দায়িত্ব আমার ওপর ছেড়ে দিন। বাকি আপনাদের ঘোরার প্ল্যান আমাকে দিয়ে দিন, আমি সেই অনুযায়ী বুকিং করে নেব, আপনার কোনো অসুবিধে হবে না।

    লে-লাদাখ বাই রোড ঘোরার অনেক খরচা, সঙ্গে একটা পার্টি থাকলে ঘোরার খরচাটা শেয়ার হয়ে যাবে, এই চিন্তা করে আমিও শেষমেশ রাজি হয়ে গেলাম। কী আর হবে, আমার তো কলিগ নয়, বেশি কিছু বাওয়ালি করতে এলে আমি ঝাড় লাগিয়ে দেব। আমি ওসব বয়েসে বড় বউয়ের কলিগ ইত্যাদি মানি না। আমার প্ল্যান আমি হাইজ্যাকিত হতে দেব না, ব্যস।

    বিসিএমট্যুরিং-এর অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আমাদের পাড়ার লোক, সে এবং ওই সাইটের অনেকেই অন্তত বার চার-পাঁচ লে ঘুরে এসেছে গাড়িতে, বাইকে। তার সঙ্গে মেলে, ফোনে এবং তার বাড়িতে বসে আমাদের ট্যুর প্ল্যান ফাইনালাইজ করলাম। ব্যাপারটা দাঁড়াল এইরকমঃ

    ৯ জুনঃ শ্রীনগরে পৌঁছে হাউসবোটে রাত্রিযাপন।
    ১০ জুনঃ শোনমার্গ। রাত্রিযাপন ওখানেই।
    ১১ জুনঃ কারগিলে রাত্রিযাপন। প্রথম ডোজ ডায়ামক্স।
    ১২ জুনঃ লে পৌঁছে রাত্রিযাপন। দ্বিতীয় ডোজ ডায়ামক্স।
    ১৩ জুনঃ অ্যাক্লাইমেটাইজেশন। লোকাল সাইটসিয়িং। দরকার হলে তৃতীয় ডোজ ডায়ামক্স।
    ১৪ জুনঃ নুব্রা ভ্যালির জন্য যাত্রা। ডিস্কিট / হুন্ডারে রাত্রিযাপন।
    ১৫ জুনঃ হুন্ডারে ক্যামেল সাফারি। তারপরে তুর্তুকে রাত্রিযাপন।
    ১৬ জুনঃ ফেরত এসে আবার হুন্ডারে বা ডিস্কিটে রাত্রিযাপন।
    ১৭ জুনঃ লে-তে ফেরত। বিশ্রাম।
    ১৮ জুনঃ প্যাংগং লেক। সেখানে রাত্রিযাপন।
    ১৯ জুনঃ সেখান থেকে সো-মোরিরি লেক। সেখানে রাত্রিযাপন।
    ২০ জুনঃ লে-তে ফেরত। লে-তে রাত্রিযাপন।
    ২১ জুনঃ বাফার ডে। দরকার হলে কেনাকাটা ইত্যাদি।
    ২২ জুনঃ ভোরের ফ্লাইটে দিল্লি ফেরত।

    চৌহানকে সেই অনুযায়ী প্ল্যান পাঠিয়ে দেওয়া হল, আর চৌহান সেই মার্চ মাস থেকে জম্মু কাশ্মীরের যাবতীয় ফিল্ড / বেস হসপিটালের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করল। ডাল লেকে হাউসবোট বুকিং হয়ে গেল। মিশ্র নামে এক ফৌজি অফিসার চৌহানের থেকে আমার ফোন্নং নিয়ে সেই কী ঝুলোঝুলি, আপনারা ১১ তারিখে গুলমার্গে থাকুন, আপনাদের আমি নিজের খচ্চায় গন্ডোলা চড়াব, নিজের খচ্চায় রাখব। ১২ তারিখে আপনারা লে-র জন্য স্টার্ট করুন, ১৩ তারিখে লে পৌঁছে যান।

    লে-হালুয়া। তাকে বললাম, স্যার, গুলমার্গটা তো পুরো উল্টোদিকে পড়ে, ওটা তো লে-র রাস্তায় পড়ে না, আর দ্বিতীয়ত আমাদের পক্ষে তো অতদিন শ্রীনগরে বা গুলমার্গে থাকা সম্ভব নয়, কারণ পরের শিডিউলগুলো বিগড়ে যাবে। তো সে বলে, স্যার আপনি আমাকে আপনার প্ল্যান পাঠিয়ে দিন, আমি আপনাকে রিশিডিউল করে পাঠিয়ে দেব। গুলমার্গ হয়ে যাবে, আর কে বলেছে আপনাকে গুলমার্গ লে-র রাস্তায় পড়ে না? ম্যাপে ওরকম ভুলভালই দেখানো থাকে, গুলমার্গ ইজ ভেরি মাচ ইন লে-লাদাখ রুট।

    আমি তো হাঁ। বলে কী রে? গুগুল ম্যাপ, উইকিম্যাপিয়া, গুগুল আর্থ, সর্বত্র দেখাচ্ছে শ্রীনগরের বাঁদিকে ষাট কিলোমিটার দূরে গুলমার্গ, আর শ্রীনগর থেকে ডানদিকে আশি কিমি দূরে সোনমার্গ, রাস্তা এগিয়ে যাচ্ছে দ্রাস, কারগিল হয়ে লে-র দিকে, এন এইচ ওয়ান-এ। মানে গুলমার্গ থেকে লে যেতে হলে সেই শ্রীনগর হয়েই যেতে হবে। নান্যপন্থা বিদ্যতে।

    ফৌজির লোকেদের এমনিতেই বদনাম থাকে, ফৌজি ট্রেনিং-এর সময়ে তাদের মাথা থেকে চুলের সঙ্গে চেঁছে ঘিলু পুরো বের করে নেওয়া হয়, যেটুকু ঘিলু তারপরেও বেঁচে থাকে সেটা হাঁটুতে আশ্রয় নেয়। ফলে ফৌজি লোকেদের বুদ্ধিবৃত্তির ওপরে ভরসা করতে হলে আপনার নিজের ঘিলুও হাঁটুতেই থাকতে হবে। লোকটিকে মিষ্টি কথায় বারণ করে একটা মেল করে দিলাম, আমাদের জন্য প্লিজ চেষ্টা করবেন না, আমরা গুলমার্গ যাবো না।

    ফ্রি-তে গুলমার্গে হস্পিটালিটির এমন প্রথম সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় চৌহান খুবই ক্ষুব্ধ হল। কিন্তু সঙ্গ ছাড়ল না।
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ২২:১২558318
  • এরপর আর আমাকে জিজ্ঞেস না করেই ঝটপট লে-তে, ডিস্কিটে, প্যাংগঙে সে নিজের মর্জিমত কীসব বুকিং ফুকিং করে রাখল, আমি শুধু জানলাম আমাকে আর থাকার জায়গা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না, সবই নাকি সে অমুক কর্নেল আর তমুক মেজরকে দিয়ে করিয়ে রেখেছে। (পরে জেনেছিলাম তার বেশির ভাগটাই ঢপ, প্রায় কোথাওই বুকিং কনফার্মড ছিল না)। প্যাংগঙে আর সোমোরিরি লেকের ধারে নাকি রাতে টেন্টে থাকা যাবে না, এত ঠাণ্ডা হয়, তাই নিকটবর্তী ফিল্ড হসপিটালে থাকা হবে।

    আমি হাঁ করে বলার চেষ্টা করেছিলাম, তা হলে যে এত লোক দলে দলে যাচ্ছে, ফ্যামিলি নিয়ে লেকের ধারে টেন্টে রাত কাটাচ্ছে, তারা কি খুব কষ্টে থাকে? অত আরামে থাকতে হলে খামোকা লে-তেই বা যাচ্ছি কেন?

    কিন্তু সিকিনী এইবারে চৌহানের পক্ষ নিল। না-না, সত্যিই তো, অত ঠাণ্ডায় এই বাচ্ছা নিয়ে টেন্টে থাকব কী করে? ওই ফিল্ড হসপিটালই ভালো।

    অগত্যা। টেন্টের আশা পরিত্যাগ করে চৌহানের ওপরেই ভরসা রাখলাম। ওদিকে শ্রীনগরের হাউসবোটের বুকিংও নাকি আর্মির চ্যানেল দিয়ে সে ডিসকাউন্টেড রেটে করিয়ে রেখেছে। এমনিতে নাকি জুন মাসে ছহাজার টাকার নিচে হাউসবোটের ঘর বুক হয় না, সেটা সে তিন হাজার টাকায় করিয়ে নিয়েছে। খাওয়া সমেত।

    বেশ। ভালো কথা। তারপরে যা হয় দেখা যাবে ভেবে বাকি খোঁজখবর নিতে শুরু করলাম।

    একজন আর্মি মেডিকেল অফিসার আছেন আমাদের গুরুতেই, তিনি অনেকদিন আগে গেছোদাদা নামে লিখতেন, এখন নীপা। আম্বালাতে পোস্টেড ছিলেন, পাঠানকোটে চলে এসেছেন এ মাসের শুরুতেই, একসময়ে তিনি লে-তে, শ্রীনগরে দীর্ঘদিন পোস্টেড ছিলেন। তাঁর সাথেও আমার প্ল্যান নিয়ে আলুচানা চালালাম। মোটামুটি আমার প্ল্যানই ফাইনাল সাব্যস্ত হল। সিকিনী পইপই করে বলেছিল, চৌহান কিন্তু অসুবিধে হচ্ছে দেখলেই তোর প্ল্যান পাল্টাবার চেষ্টা করবে, একদম সায় দিবি না। আমরা আমাদের প্ল্যানেই চলব, ওর না পোষালে ও আলাদা থাকবে, আলাদা ঘুরবে।

    আমি একপায়ে রাজি। টাকাপয়সা যা আছে, তাই দিয়ে খচ্চা একটু বেশি পড়লেও আমি একাই পুরো ট্রিপ ঘুরে আসতে পারব। কিন্তু কোনোমতেই আমার প্ল্যান হাইজ্যাক হতে দেব না, তাও কোনো আর্মি অফিসারের কথায়। কারণ ইতিমধ্যেই লে-তে, কারগিলে পোস্টেড অনেক আর্মি অফিসারের বক্তব্য আমার কানে এসে পৌঁছেছে যে, লে-তে কী এমন দেখার আছে, আমাদের প্ল্যান নাকি খুব হেকটিক, "আরাম" করার সময় পাওয়া যাবে না, লেক দু একটা না দেখলেও নাকি কিছু এসে যায় না, সমস্ত চৌহান মারফত আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমি সবিনয়ে জানিয়েছি, আপনার আরামের অসুবিধে হলে আপনি আরাম করবেন, কোনো অসুবিধে নেই। আমি আরাম করার জন্য লে বেড়াতে যাচ্ছি না।

    কোনোভাবেই আমাকে বাগাতে না পেরে চৌহান কহিলেন শেষে ক্রুর হাসি হেসে, আচ্ছা, সে দেখা যাবে। লে-তে পৌঁছে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করে নেওয়া যাবে খন।

    তাই সই। এইভাবে বিভিন্ন আক্রমণ প্রতিআক্রমণ ইত্যাদির থেকে সযত্নে আমার প্ল্যানড ট্রিপকে বাঁচাতে বাঁচাতে এপ্রিল চলে গেল, মে চলে গেল। এসে গেল নয়ই জুন।

    গৌড়চন্দ্রিকা সেশ। এইবার আসল গপ্পো শুরু।

    (আপিসে গুরু খোলে না, তবে আমি অফলাইনে লিখে রাখব। কাল রাতে আবার পরের পোস্ট।)
  • Nina | 78.34.167.250 | ২৪ জুন ২০১২ ২৩:১২558329
  • উফ! সিকি ---শুরু কর শুরু --তর সইছে না---
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৪ জুন ২০১২ ২৩:৩৪558340
  • কাল :)
  • প্পন | 122.133.206.25 | ২৪ জুন ২০১২ ২৩:৪১558351
  • বাঁশ কেন ঝাড়ে/ এসো মোর ***

    বাকিটা শুনবার জন্য তর সইছে না। ঃ)
  • ঐশিক | 213.200.33.67 | ২৫ জুন ২০১২ ০৯:৫৮558363
  • তাপ্পর?
  • kumu | 132.160.159.184 | ২৫ জুন ২০১২ ১৩:২৫558374
  • চৌহানকে কাটিয়ে দ্যাও,দিয়ে বাইক নে বেইরে যাও,প্ল্যান ওয়ান ফলো করো।
  • Rit | 213.110.243.21 | ২৫ জুন ২০১২ ১৪:৩৭558385
  • বাহ।
  • ঐশিক | 213.200.33.67 | ২৫ জুন ২০১২ ১৪:৪৩558396
  • শামিক্দা তুমিও এই ভাবে ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে লিখছ? কি জন্তন্না, না পড়ে থাকতে পারছি নে, আর পড়লে মনখারাপ ,ইদিকে লে-লাদাখ উদিকে কাশ্মির আর প্লান চলছে জুলুক যাবার, চাকরি গেল বলে
  • Nina | 22.149.39.84 | ২৫ জুন ২০১২ ২১:৪২558407
  • ওরে সিকি গেলি কই----------
  • kumu | 132.161.152.103 | ২৫ জুন ২০১২ ২২:০১558418
  • শমীক,ঐশিক।
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৫ জুন ২০১২ ২২:০৩558429
  • লিখছি লিখছি। খেতে বসার আগে আজকের কিস্তি তুলে দেব।
  • kumu | 132.161.152.103 | ২৫ জুন ২০১২ ২২:০৬558440
  • খেয়ে নিয়ে লেখো,খালি পেটে থেকো না।
  • Nina | 22.149.39.84 | ২৫ জুন ২০১২ ২২:০৮558462
  • প্লিজ ছবির লিংক ও দিস---
  • Nina | 22.149.39.84 | ২৫ জুন ২০১২ ২২:০৮558451
  • প্লিজ ছবির লিংক ও দিস---
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৫ জুন ২০১২ ২২:২০558474
  • সোনমার্গে যে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা যায় নি, সেটা জানা গেছিল জার্নি শুরু হবার ঠিক এক সপ্তাহ আগে। চৌহান যথারীতি অভয় দিয়ে বলেছিল চিন্তা করার কিছু নেই, শ্রীনগরের আর্মি ট্রানজিট ক্যাম্পে দ্বিতীয় দিনের জন্য থাকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। তৃতীয় দিন আমরা শ্রীনগর থেকেই সরাসরি স্টার্ট করব। এমনিতেও সোনমার্গে দেখার কিছু নেই, এক মন্দাকিনী গ্লেসিয়ার ছাড়া। সে যাবার পথে দেখে নিলেই হবে।

    আরেক দিন যখন এক্সট্রা থাকছিই শ্রীনগরে, তখন আর শ্রীনগর থেকে দুঘণ্টার দূরত্বে গুলমার্গে গন্ডোলা চেপে ঘুরে আসছি না কেন? তাই তড়িঘড়ি গন্ডোলার জন্য অনলাইন টিকিট বুক করে ফেললাম সাতজনের জন্য। গন্ডোলার দুটো ফেজ। প্রথম ফেজটার জন্য অনলাইন টিকিট কাটা যায়, দ্বিতীয় ফেজের টিকিট কাটতে হয় প্রথম ফেজ যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখানে গিয়ে। সে নাকি এক দারুন অভিজ্ঞতা।

    যাই হোক, নয়ই জুন যাত্রা শুরু। সক্কাল সক্কাল দিল্লি এয়ারপোর্টে পৌঁছবার পরে জানা গেছিল ফ্লাইট কিঞ্চিৎ ডিলেইড, কারণ শ্রীনগরের নাকি "ওয়েদার" ভালো নয়। কী ধরণের খারাপ সেটা অবশ্য আর জানার কোনো উপায় নেই তখন। মাত্র পঁয়ত্রিশ মিনিট লেটে ফ্লাইট যখন উড়ল, জানলার ধারের সীটে বসা আমার সার্থক হল। ধীরে ধীরে দিল্লির ফ্যাকাশে ধোঁয়াটে মেঘ-ভরা রিলিফ কেটে গিয়ে ধীরে ধীরে নিচে দেখা গেল নিচু পাহাড়, তারপরে আস্তে আস্তে উঁচু খাড়া খাড়া পাহাড়, এবং অবশেষে বিশাল বিশাল বরফে-ঢাকা পাহাড়, নাম-না-জানা নদীর বাঁক এবং গভীর গভীর গিরিখাত।

    ঠিক একঘণ্টা পনেরো মিনিটের মাথায় প্লেন যখন নামল শ্রীনগরের এয়ারপোর্টে, প্রথমেই যেটা চোখে পড়ল, সেটা হচ্ছে কারবাইনধারী জেঅ্যান্ডকে পুলিশ। প্লেনটাকে পুরো ঘিরে ফেলল তারা অপরিসীম দ্রুততায়। তারপরে দেখি প্রায় সমস্ত টারম্যাক রানওয়ে জুড়েই উদ্যত কারবাইনধারী পুলিশ ছেয়ে আছে।

    লাগেজ নেবার কনভেয়ার বেল্টের সামনেই সুন্দরভাবে সাজানো একটা হাউসবোটের মডেল, সেখান থেকে হাউসবোটের বুকিং করা যায়। ফটো তুলতে যেতেই একজন পুলিশ মানা করল, এখানে ফটো তোলা একেবারেই নিষেধ। কী আর করা, ক্যামেরা আবার পাউচে ভরে বেরনো গেল।

    বাইরে নীলচে সানগ্লাস পরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন একজন ফৌজি অফিসার। তিনি নাকি আমাদের জন্য গাড়ি বুক করে রেখেছেন আর্মির স্পেশাল কনসেশনাল রেটে। সবার সঙ্গে পালা করে হ্যান্ডশেক করার পরে আমরা গাড়িতে উঠে বসলাম, শ্রীনগরের বুকে তখন ঝিরিঝিরি ঝরছে ইল্‌শেগুঁড়ি বিষ্টি। সামনে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের রিলিফ, দুধারের দোকানপাট সব কাঠের, সেখানে নামকরণের মধ্যে কেবলই সেনাবাহিনীর নামের প্রাধান্য, আর্মি জেনারেল স্টোর, আর্মি প্রভিশন স্টোর, ফৌজি জেনারেল স্টোর ইত্যাদি। বাসনকোসন আটার প্যাকেট ইত্যাদির সঙ্গে সেখানে সার দিয়ে ঝুলছে ইন্ডিয়ান আর্মির উর্দি।

    রাস্তায় যতক্ষণ চললাম, প্রতি দুশো মিটারের মধ্যে একজন করে কার্বাইনধারী খাকি উর্দি নজরে পড়ল। এরা সবসময়ে থাকে? এই বৃষ্টিতেও? পুরো শ্রীনগরে? পুরো জম্মু কাশ্মীরে? শহরের প্রতিটা বিল্ডিং-এর পাঁচিলের এপাশ ওপাশ থেকে উঁকি মারছে থোকা থোকা গোলাপ। কত না রঙ তাদের, কত না রূপ। মনে হল এদের জন্য বোধ হয় কোনো যত্ন করতে হয় না, এমনিই ফোটে। থোকায় থোকায় লাল গোলাপ, গোলাপী গোলাপ, হলুদ, সাদা, গেরুয়া, ছোটো-মাঝারি-থোকা ... আর তার সাথে সাথে দেওয়ালের সাথে প্রায় মিশে খাকি পোষাকের একজন পুলিশ, হাতে উদ্যত কারবাইন। ওয়েলকাম টু কাশ্মীর।

    মাঝে মাঝে সুন্দর সুন্দর সাজানো বাগান, জনপদ ইত্যাদি দেখতে দেখতে হঠাৎ করে সামনে এসে গেল ডালগেট। ডাল লেকের পাড় দিয়ে চলে গেছে টানা রাস্তা, বাঁদিকে সামান্য জল, দেখলে মনে হয় একটা বড়সড় খাল, তার এপারে সারসার রংবেরঙের শিকারা, ওপারে সারি সারি হাউসবোট। অগুনতি। বিভিন্ন ডিজাইনের হাউসবোট। এত সরু ডাল লেক? এটা আদৌ ডাললেক তো?

    এপার থেকে ইশারা করতেই ওপার থেকে নিউ ম্যানহাটান হাউসবোট থেকে একজন হাত নেড়ে ভাসিয়ে দিল শিকারা। তাতে লোড হল আমাদের সুটকেস এবং সবশেষে আমরা। দুলতে দুলতে আমরা পৌঁছে গেলাম হাউসবোটে। দুই হাসিমুখ ছেলে ফজল আর আবদুল, এসে নিয়ে গেল আমাদের সুটকেস, আর আমরা উঠে এসে পা দিলাম হাউসবোটের ভেতরে কার্পেটমোড়া মেঝেতে।

    সুদৃশ্য ড্রয়িং হলে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতেই ফজল বলল, শিকারা ট্রিপে যাবেন তো? তিন ঘণ্টার শিকারা ট্রিপ, পাঁচশো টাকা। ... যাবো না মানে? আলবাত যাবো। কিন্তু একটা কথা খোলসা করে বলো তো ভাই ফজল, ডাল লেক এই রকমের সরু, এটা আমরা ডাল লেকেই আছি তো? ফজল বেশ ফিচেল একটা হাসি দিয়ে বলল, এটা ডাল লেকের শুরু, শিকারা আপনাদের যেখানে নিয়ে যাবে সেইখানে দেখবেন ডাল লেকের এপার ওপার দেখতে পাচ্ছেন না। আগে আপনারা খেয়ে নিন।

    বলে রাখা সত্ত্বেও দুপুরে ওরা নন ভেজের ব্যবস্থা করতে পারে নি। তাই অতি চমৎকার ভেজ তরকারি দিয়েই দুপুরের খাওয়া সারলাম। তুলতুলে হাতরুটি, ভাত, মটর পনীর ইত্যাদি। খেয়ে দেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে শুরু হল আমাদের শিকারা ভ্রমণ। সেই শাম্মী কাপুরের কাশ্মীর কি কলি থেকে যে জিনিস দেখে আসছি, একেবারে সেই জিনিসে সওয়ারি আমরা। সেই হার্ট সাইনের মত দেখতে দাঁড়, আর লাল-হলুদ-গোলাপি রঙের শিকারা, আর কয়েক বার দাঁড় বাইতেই সামনে উন্মুক্ত হল সুবিশাল ডাল লেক। যতদূর চোখ যায়, শুধু টলটলে জল, জল গিয়ে মিশে গেছে নীলচে ধূসর পাহাড়ের গায়ে, ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে শিকারার দল, সে যে কী অপূর্ব দৃশ্য ... ও, আপনাদের ছবি দেখাই নি বুঝি? এই নিন, ছবির লিংক। আপাতত শুধু শ্রীনগরের ছবিই তুলেছি।

    https://picasaweb.google.com/109619061153939324777/qzRjOH#

    ভাসমান দোকানের পসরা, শিকারায় করে ফুলের ডালি নিয়ে বেচতে আসা, আইসক্রীম বেচা মাঝিভাই, কাশ্মীরি ড্রেস নিয়ে ফটো তুলতে আসা ছোকরা কাশ্মীরি, এই সবের মাঝখান দিয়ে কখন যে তিনটে ঘণ্টা কেটে গেল, বুঝতেই পারলাম না। পুরো স্বপ্নের সফর শেষ হল যেন।

    সন্ধ্যে নামার একটু আগে পাড়ে গিয়ে একটা অটো নিয়ে গেলাম লাল চক। শ্রীনগরের বিখ্যাত বলুন বা কুখ্যাত, লাল চক, অনেক খুন জখম পাথর-ছোঁড়াছুঁড়ির সাক্ষী এই লাল চক। সেদিনের লাল চক দেখে কিন্তু তার কিছুই মনে হল না। সেই উঁচু টাওয়ার, তার সামনেই একটা ঘেরা লন মত তৈরি করে তাতে সুদৃশ্য বসবার চেয়ার, আর রাস্তার দুধার জুড়ে দোকানপাটের পসরা। কিছু নিতান্ত জরুরি টুকিটাকি কেনাকাটা করার ছিল, সেসব সেরে আবার অটো ধরে ডালগেট, আবার হাতছানি দিয়ে শিকারা ডেকে নিজেদের হাউসবোটে ফেরত।

    সন্ধ্যেবেলায় ঝিলিমিলি জলের ওপরে সারি সারি হাউসবোটের আলোর আলপনা, চিকেন পকোড়া ... চৌহানের দান, সন্ধ্যেবেলায় তো তার বোতল না খুললে দিন কাটে না, তাই চাট হিসেবে চিকেন পকোড়া কিনিয়ে আনিয়েছিল, কিছুটা আমাদের দিয়ে বাকিটা প্যাক করে বোতল গেলাস নিয়ে সে ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঢুকল, আর আমরা বসে রইলাম হাউসবোটের ডেকে, বারান্দায়। চুপ করে দেখতে লাগলাম জলের ওপর আলোর আলপনা।

    কখন জানি না, সিকিনী তার মোবাইলে আস্তে করে চালিয়ে দিয়েছিল মহম্মদ রফি। মেরি আওয়াজ সুনো, পেয়ার কা রাজ সুনো; এহ্‌সান তেরা হোগা মুঝ পর; দিন ঢল জায়ে হায়, রাত ন জায়ে; ... কখন যে মেহফিল জমে গেল, বুঝতে পারলাম না।

    তার পর? কাল সকাল সকাল উঠে বেরবো গুলমার্গ। গন্ডোলা রাইড করব। প্রথম ফেজের টিকিট তো কেটে রাখাই আছে। প্রিন্ট আউটটা সাবধানে গুছিয়ে নিয়ে ঘুমোতে গেলাম যখন, তখন রাত একটা বাজে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন