এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • অনেক সাহসে সর্ষে

    de
    অন্যান্য | ২০ জুন ২০১২ | ১০৭২৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কাজু | 131.242.160.180 | ২০ জুন ২০১২ ১৩:৫১558920
  • দে-দি পর্তুগালের ভ্রমণবেত্তান্ত কই?
  • de(test) | 213.199.33.2 | ২০ জুন ২০১২ ১৩:৫৪559031
  • এবারের ভূস্বর্গ ভ্রমণ নানা ছড়ানোর কারণেই বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিলো। তাই ভাবলাম একটু লিখি। অবশ্য শেষ করতে পারবো কিনা কেজানে।

    স্বর্গের কাছাকাছি
    এবছর ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি। আপিসে চায়ের টেবিলে আলোচনায় জানা গেলো আশেপাশে চেনাজানা,অল্পচেনা, আধাচেনা সবাই এবার স্বর্গ ভ্রমণে বেরোবে, কারণটা এল টি সি। এবার হোমটাউনের এল টি সিই স্বর্গে যাওয়ার পাস। বাড়ী ফিরে এসে প্ল্যান বানানো হল, শ্রীনগর আর লে যাবার। যদিও বাড়িতে সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছা শ্রীনগর থেকে লে বাই রোড যাওয়ার কিন্তু কত্তা রোডের ধকল নিতে ইচ্ছুক নন – অগত্যা পুরোটাই হাওয়া-ভ্রমণ। সাতাশে এপ্রিল বেরনো হবে, মুম্বই থেকে দিল্লী, সেখান থেকে শ্রীনগরে কয়েকদিন কাটিয়ে লে। লে থেকে দিল্লী হয়ে ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন আটই মে ।
    ছাব্বিশ তারিখ আপিস থেকে ফিরে ব্যাগ গোছাতেই রাত একটা। পরের দিন চারটেতে কোনমতে সকলকে ঠেলেঠুলে তুলে বাক্সপ্যাঁটরা ডাঁই করে মেরুতে তুলে সান্তাক্রুজ। আটটা পঞ্চাশে দিল্লী। শ্রীনগরের ফ্লাইট প্রায় বারোটায় – দিল্লী এয়ারপোর্ট এখন এত ভাল হয়েছে যে সময় কাটানোতে তেমন একটা অসুবিধের কিছুই নেই । বুকশপ, চাট, ফুচকা, ভেলপুরি (দোকানটার নাম বোধহয় দিল্লী স্ট্রীট), মোমো ইত্যাদী বিভিন্ন সময়-অতিবাহিতকরণের উপাদান দিয়ে খানিক খন কাটানোর পর জানা গ্যালো – বিলম্বিত উড়ান – আরো দু ঘন্টা বসতে হবে। শেষমেষ ওই দু ঘন্টাকে টেনে চার ঘন্টা করে ভারতী হাওয়া উড়লেন। মাঝে একবার জম্মুতে আধ-ঘন্টার বিরতি। তখন থেকেই এয়ার-আন্টিরা বলতে থাকলেন, ক্যামেরা বন্ধ করার কথা আর শ্রীনগরে পৌঁছে এয়ারপোর্টে ছবি না তুলতে।
    কিছু অত্যুৎসাহী জনতা অবশ্য তাও ফটাফট শাটার টিপে যাচ্ছিলো, খানিক পরে এয়ারাঅন্টি দুই গুঁফো বিশালদেহী জওয়ানকে ডেকে নিয়ে এলেন। তার এসে ক্যামেরা নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় ফটো সেশান বন্ধ হলো। তবে ফ্লাইটের মধ্যে ফটো তোলাতেও কেন এতো আপত্তি সেটা অবশ্য বুঝতে পারা গেলো না।

    শ্রীনগর এয়ারপোর্টে পৌঁছে অবশ্য ফটো তুলতে না পারার জন্য আমারো একটু আপসোস হচ্ছিলো। পুরো ৩৬০ ডিগ্রী ভিউতে এয়ারপোর্ট বিল্ডিং টুকু বাদদিলে শুধুই বরফে ঢাকা পাহাড়। অপূর্ব দৃশ্য। তবে ফ্লাইট থেকে এক্সিট অব্দি কয়েকশো ফুটের মধ্যেই অন্তত পঞ্চাশ জন গোমড়ামুখো সাতচল্লিশধারীকে দেখে আর ফটো তোলার কথা মনে রৈলো না। পরে শ্রীনগরে ঘুরতে গিয়ের সেনার সংখ্যা সাধারণ দোকান-পাট বা বাজার হাটেও অনেক বেশী মনে হয়েছে।
  • de | 213.199.33.2 | ২০ জুন ২০১২ ১৩:৫৬559139
  • কাজু, পত্তুগালের চাইতে এইটা অনেক বেশী ইন্টারেস্টিং ছিলো -- আগে এটা শেষ করি।
  • | 24.99.142.79 | ২০ জুন ২০১২ ১৪:০৪559150
  • হেমিস গেছিলে?
  • de | 213.199.33.2 | ২০ জুন ২০১২ ১৪:২৬559161
  • এদিকে প্রায় চার/পাঁচ ঘন্টা ফ্লাইট লেট! হোটেল থেকে গাড়ী পাঠাবে বলেছিলো কিন্তু এতো দেরী দেখে তারা বোধহয় ফিরেই যাবে -- এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে লাগেজ কালেক্ট করে বেরোচ্ছি। আমার ফোন তো বোবা। শ্রীনগরে সব মোবাইলই পোস্ট পেড। ভোডাফোন আর এমটিএনএল ছাড়া আর বোধহয় খুব কম ফোনই চলে। সে যাই হোক, বাইরে বেরিয়ে অবাক হলাম -- নাম লেখা কার্ড নিয়ে ড্রাইভার অপেক্ষারত! নাম বল্লো মুনির। ডাকনাম মুন্নাভাই। এর পরের দিন কয়েকে আরো প্রায় জন পাঁচেক মুন্নাভাইয়ের সাথে আলাপ হয়েছিলো -- ড্রাইভার + মুন্নাভাই এই কম্বিটা বোধহয় খুব চলে শ্রীনগরে।

    মালপত্র গাড়িতে তুলে পথের চারপাশে দেখতে দেখতে আর রানিং কমেন্ট্রি শুনতে শুনতে চলেছি। তখন প্রায় সাড়ে পাঁচটা, আশেপাশের স্কুল/ কলেজগুলো বোধহয় ছুটি হচ্ছিলো। কমবয়েসী সুন্দর সুন্দর ছেলেমেয়েদের ভিড়ে রাস্তার দুপাশ বেশ ভর্তি। গাড়ী চললো ডালগেটের দিকে - -যেদিকে আমাদের হোটেল, নাম সিটি প্লাজা। মাঝে ঝিলম নদী পড়লো, কাশ্মিরী উচ্চারণে জেহেলাম। ডাল-লেকের সামনে দিয়ে ঘুরে ডালগেট রোডেই আমাদের হোটেল। হোটেলের রিসেপশনিস্ট আর ম্যানেজার দুজনেই অতি ভদ্রলোক, যদিও হোটেলটা আমার মোটামুটি লেগেছিলো! তবে যেকোন কাজের জন্য প্রচুর কমবয়েসী ছেলেপুলে সবসময় রেডী -- একবার বল্লেই তারা ছুটে ছুটে সব করে ফেলে। মাঝারি গোছের হোটেলেও এতো কর্মচারী দেখে আমার একটু খটকা লেগেছিলো। পরে জানলাম, ট্যুরিস্ট সিজনে প্রচুর ছেলেপুলে পকেটমানির জন্য এইসব হোটেলগুলোতে আর আরো নানা ট্যুরিস্ট অ্যাকটিভিটি তে যুক্ত থাকে। বেশীর ভাগটাই স্কুলে পড়ে।
  • Nina | 22.149.39.84 | ২০ জুন ২০১২ ২১:৩০559183
  • দেবু
    খুব ভাল লাগছে রে---ফটোগুলো বাড়ী গিয়ে দেখতে পাব। ডিটেলসে লেখ বহুবছর আগের দেখা ভূস্বর্গ---তোর চোখ দিয়ে অবার দেখি---
    লে ও সেই কত বছর আগে দেখা !
  • pi | 82.83.85.246 | ২০ জুন ২০১২ ২১:৩৫559194
  • দেদি, ৩০ নং ফোটোটা কি তার আগের ছবির জলের ক্লোজ আপ ? বেশ সুন্দর এসেছে ঃ)
  • সোমনাথ২ | 217.239.86.106 | ২০ জুন ২০১২ ২৩:১১559205
  • দারুণ........ এই প্রথম কাশ্মীর এর কোনো রিসেন্ট ছবি দেখছি (সিনেমা বাদ দিয়ে) ....সাধে কি আর বলে ভূস্বর্গ ! সুইজারল্যান্ড এর দেশী সংস্করণ ।
  • hu | 22.34.246.72 | ২১ জুন ২০১২ ০০:১০558921
  • সবকটা ছবিতেই আকাশের রঙ কি সুন্দর!
  • Tim | 208.82.23.38 | ২১ জুন ২০১২ ০০:১৬558932
  • ভারি সুন্দর ছবি হয়েছে। খুব ভালো লাগলো।
  • de | 190.149.51.69 | ২১ জুন ২০১২ ১৩:৪৭558943
  • অনেক ধন্যবাদ সবাইকে!

    নীনাদি,

    চেষ্টা কচ্চি একটু লেখার, দেখি কি দাঁড়ায়! ঃ)

    পাই, ঐ ফটোটা মেয়ের তোলা -- আমরা যখন পারিপার্শ্বিকের প্রকৃতিতে ফোকাস করি, উনি একটু অ্যাবস্ট্রাক্টের দিকে যান! ৪২, ৪৬, ৩৬ এই সবগুলো ওর ক্যামেরা থেকে নেওয়া। এর পরের ছবিগুলোতেও গ্রামের পরিবেশ, সাধারণ লোকজনের ছবি বেশ ভালো তুলেছে।

    এই একই ফটো আমার অবশ্য সাউদার্ন হেমিস্ফিয়ারে তোলার খুব ইচ্ছে, অ্যান্টিক্লকওয়াইজ করিয়োলিস ফোর্স ঃ))

    সোমনাথ২,
    এর পরের ফটোগুলো দেখলে আরো বেশী বেশী করে সুইৎজারল্যান্ডের সঙ্গে সিমিলারিটি আছে বলে মনে হবে। চেষ্টা করছি তাড়াতাড়ি তুলতে। ঝাড়াই-বাছাই করা খুব মুশকিল!

    হুচি আর টিম,

    আমরা যে ক'দিন ছিলাম, আকাশের মুখ একটু বর্ষা মাখানোই ছিলো -- আসার আগের দিন আর লে যাওয়ার দিন পুরো নীল আকাশ দেখতে পেয়েছিলাম , দুটো দুই রকমের সুন্দর!
  • de | 213.199.33.2 | ২১ জুন ২০১২ ১৪:১৫558954
  • হোটেলের ঘরে কোনমতে লাগেজগুলোকে ঠুসে দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ভারতী হাওয়ার একখান কেক আর পনির-পাফ (অখাদ্য) কখন হজম হয়ে গেছে! তখন প্রায় সন্ধে। উল্টোদিকে একখান ধাবা, নাম কৃষ্ণা ধাবা! নামেই মালুম হলো ভেজ। জিজ্ঞেস করে জানা গেলো, ননভেজ খেতে গেলে কিছুদূর যেতে হবে। আমরা যদিও চা-স্যান্ডুইচ বা চা-সামোসা ধরণের কিছু খুঁজছিলাম, সন্ধেবেলা বাঙালী ভদ্রলোকে ডিনার খায় না! তা চারিপাশে সে সব বস্তু পাওয়ার মতো কোন দোকান পাওয়া গেলো না। এমনিতে পরেও এই ধরণের ফাস্ট ফুডের রেস্তোরা বেশ কমই চোখে পড়েছে। অগত্যা উল্টো দিকের দোকানে ঢুকে আলু-পরোটা আর চা। ওখানে আলু-পরোটাও দেখলাম তন্দুরে বানানো।

    খেয়েদেয়ে একখান অটো ধরে সোওজা ডাল-লেক। হোটেলে অবশ্য বলেছিলো পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ - কিন্তু বেশ উপচে পড়া ড্রেন চারিপাশে, ট্যুরিস্টে গিজগিজ করা রাস্তা, ফুটপাথ নেই আর ট্রাফিক পুলিশের দেখা না মেলার জন্য নিয়ন্ত্রণহীন স্পীডে চলা গাড়ি এইসব ফ্যাক্টর গুলো মাথায় রেখে অটোই সেফ মনে হলো। অটো-ভাড়া হোটেলে বলে দিয়েছিলো, কুড়ি/তিরিশ টাকার বেশী দেবেন না। আমাদের মুখেই সম্ভবতঃ মুরগী হওয়ার সকল রকম সম্ভাবনা বিরাজমান থাকায় অটোআলা পঞ্চাশের কমে যাবে না বল্লো!

    বেশ ঠান্ডা -- টেম্পারেচার খুব একটা কম নয় কিন্তু হু হু করে হিমেল হাওয়া দিচ্ছে! ডাল-লেকের সামনে এসে রীতিমতো কাঁপুনি দিচ্ছিলো। একটু ঘুরে ফিরে দেখা হলো চারপাশটা। ডাল-লেক, আলোয় ঝলমল করা হাউসবোট, পাড়ের চারিদিকে পসরা সাজিয়ে বসা মেলার মতো দোকানদারী, দেখে মনেই রইলো না -- একটু আগেই হোটেলের ম্যানেজার সাবধান করে দিচ্ছিলো রাতবিরেতে বেশী এদিক-উদিক না ঘোরার, কারণ "শ্রীনগর মে কভিভি কুছভি হো সকতা হ্যায়"। তবে ওরি মধ্যে কয়েক গজ দূরে দূরেই শক্ত মুখে বন্দুক ধরে পাগড়িওয়ালাদের দাঁড়িয়ে থাকা একটু তাল কেটে দিচ্ছিলো।
  • de | 213.199.33.2 | ২১ জুন ২০১২ ১৪:৪৭558965
  • একটু ঘুরে ফিরে এলাম সে রাত্তিরে। রাত্তিরে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়লো, সঙ্গে টিপ-টিপ বৃষ্টি। হোটেলের হিটীং ব্যবস্থা ততো ভালো নয় দেখা গেলো, রিসেপশনে জানাতে তিনটে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে গেলো। রাত্তিরে আর দূরে কোথাও খেতে গেলাম না, বৃষ্টি আর ঠান্ডার জন্য বেরোতে ইচ্ছে করলো না। হোটেলের ক্যান্টিনেই বাফে থেকে ডাল, ভাত, মুরগীর ঝোল খাওয়া হলো -- প্রচুর তেল/ঘি-ঢালা রান্না। যে ক'দিন ছিলাম, সব খাবারে লাল রং আর ঐ ভাসতে থাকা তেল, ওটাই একটু অসুবিধের কারণ ছিলো।

    পরদিন সকালে খুব ভোরে ঘুম ভাঙলো! নতুন জায়গায় এমনিতেই আমার প্রথমদিন ঘুম হয় না! বাথরুমে গিয়ে দেখা গেলো, ট্যাপের নীচে হাত ধরলে ফ্রীজ হয়ে যাচ্ছে, মানে গরমজল আসছে না। ইদিকে লেখা আছে ২৪ ঘন্টা গরম জল পাওয়া যাবে। রিসেপশনে বোধহয় সবাই ঘুমোচ্ছে, কেউ ফোন তুল্লো না। ভাবলাম নীচে গিয়ে দেখি -- একটু ভয়-ভয়ও করছিলো অবশ্য করিডরে বেরিয়ে। নীচে গিয়ে দেখি লুঙ্গি পরে ব্রাশ হাতে দুই বঙ্গসন্তান রিসেপশনিস্টকে তুলে ধমকাচ্ছে "চবিব্শ ঘন্টা গরম পানি কিঁউ লিখা হ্যায়" -- এর মধ্যেই এক কর্মচারী গিয়ে সেন্ট্রাল হীটিং অন করে এলো, বাঙালী দাদারা আমার দিকে ফিরে বল্লেন " আপনি ঘরে চলে যান বৌদি, জল গরম হয়ে গেছে"!

    সকালবেলা ব্রেকফাস্টে আগের দিনই বলে দেওয়া ছিলো পুরী-সবজী খাবো! অতিরিক্ত তেল-চপচপে পুরী আর আলু কি সবজী! চায়ের সাথে তাই খেয়ে বাইরে বেরোলাম -- সকাল ন'টা। বাইরে দেখলাম ভীষণ হ্যান্ডু দেখতে একটি ছেলে কালো রঙের ট্রাভেরা(শেভ্রোলে) নিয়ে ওয়েট করছে। নাম বল্লো সেলিম। আজকে আমাদের লোক্যাল সিটি ট্যুর! মোস্টলি দু-ধরনের গাড়ীই চোখে পড়ছিলো -- ৮০% ট্রাভেরা আর বাকি টয়োটার জীপ আর ইনোভা বাকী ১০% করে! আর কোন গাড়ীই দেখলাম না প্রায়।
  • শ্রাবণী | 127.239.15.102 | ২১ জুন ২০১২ ১৫:০৪558976
  • ঐ অত ঠান্ডায় তেল ঘি ওরম খেতে হয় একটু আধ্টু.....ও নিয়ে খুঁতখুঁত করা ঠিক না, আলু পরোটার ওপর সাদা ধবধবে মাখন চুপচুপিয়ে.........না হলে আর কী খাওয়া!:)
  • de | 213.197.30.2 | ২১ জুন ২০১২ ১৫:৪৪558987
  • না প্রথম জাস্ট দেড়দিন ভালোই লেগেছিলো, তারপর থেকেই তেল-ছাড়া খাবারের জন্য প্রাণ আঁকুপাকু করে -- কত পারসেন্ট অ্যাবজর্ব হচ্ছে, সেকথা মনে করেও আঁতকে উঠি ঃ)--
  • hu | 22.34.246.72 | ২১ জুন ২০১২ ১৯:০৫558998
  • দে-দি, সত্যি করে সাদার্ন হেমিস্ফিয়ারে জল উল্টোদিকে ঘুরতে দেখা যায়? আমি পেরুতে গিয়ে টয়লেট ফ্লাশ করে দেখলাম। অ্যান্টিক্লকওয়াইজ ঘুরল। কিন্তু তারপর একজায়গায় পড়লাম টয়লেটে কোন দিকে জল ঘুরবে সেটা টয়লেট বোলের মেকানিজমের ওপর নির্ভর করে।

    লেখাটা খুব ভালো লাগছে। আর সত্যিই তো অত ঠান্ডায় একটু তেল-ঘি না খেলে চলবে কেন?
  • pi | 82.83.85.246 | ২১ জুন ২০১২ ১৯:৩০559009
  • দেদি, ওকে ছবি তোলা নিয়ে লেগে থাকতে বোলো..ঃ)

    লেখ চলুক !
  • Nina | 22.149.39.84 | ২১ জুন ২০১২ ২১:১৫559020
  • দেবু
    ওখানে গুস্তাভা আর রিস্তা (মাংসর) খেলি?
    খুব ভাল লাগছে
  • de | 190.149.51.69 | ২২ জুন ২০১২ ১৮:০৪559032
  • হুচি,
    তুমি যখন পেরুর লেখাটা লিখছিলে, আমার তোমাকে এটাই জিজ্ঞেস করার ইচ্ছে ছিলো -- পরে ভুলে গেসলাম! বেসিনের কথা যা লিখলে সেটা বোধহয় ঠিক -- কিন্তু এমনি কোন গর্ত দিয়ে জল বেরোলে(পাই যে ছবির কথা বললো) নিশ্চয়ই অ্যান্টি-ক্লকওয়াইজই বেরোবে!

    নীনাদি,

    ল্যাম্বের মীটবলটাকেই তো গুস্তাভা বলে তাই না? ওটা খেয়েছি। রিস্তাটা জানিনা তো!

    পাই,

    বলে দেবো অবশ্যই! ঃ))
  • de | 190.149.51.69 | ২২ জুন ২০১২ ১৮:১৫559043
  • লোক্যাল ট্যুর সম্বন্ধে হোটেলের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো – ওনার সাজেশন অনুযায়ী প্রথমে টিউলিপ গার্ডেন দিয়ে শুরু করা উচিত। এশিয়ার সব থেকে বড় টিউলিপ গার্ডেন এখানে , তবে যারা অন্য়্ত্র টিউলিপ গার্ডেন দেখেছেন তারা হয়তো জানবেন যে টিউলিপ বেশ স্বল্পায়ু। মার্চ-এন্ড থেকে এপ্রিল-এন্ড-- এই টুকুই আয়ু। সেদিন ২৮-শে এপ্রিল। বৃষ্টি পড়লেই টিউলিপ চোখ বুজে ফেলে আর তখন বাগানেও জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। গত দু-তিন দিন ধরে অল্প অল্প বৃষ্টি পড়া চলছে। সুতরাং বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই দেখে ফেলা ভালো।

    এই গার্ডেন টা জাবারওয়ান হিলের পাদদেশে। পাহারের গায়ে তাজ-গ্রুপের সুন্দর সেভেন স্টার হোটেল দূর থেকে দেখা যায়। প্রায় বারো হেক্টর জায়গা জুড়ে কুড়ি লক্ষ টিউলিপ ফুটে থাকে পীক-সিজনে। এখানেই সিলসিলার সেই গানের শ্যুটিং হয়েছিলো। গুলাম নবি আজাদ যখন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ওনারই পরিকল্পনায় গড়ে ওঠে এই ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল টিউলিপ গার্ডেন। প্রত্যেক বারের মতো এবারও গার্ডেন খোলার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী ওনার মাকে নিয়ে এসে ঘুরে গেছিলেন। এত সব বেত্তান্তো শোনালো সেলিম-ভাই, আমাদের সেদিনকার সারথী -- যতজন আমাদের গাড়ী চালিয়ে নিয়ে বেরিয়েছে তাদের মধ্যে বেস্ট। যেকটা স্পটে ও আমাদের নিয়ে গেলো প্রত্যেকটার ডিটেলস এতো সুন্দর গল্পের মতো করে বলে গেছে যে ইতিহাসে চির-নিরাসক্ত আমিও মন দিয়েই শুনে ফেলছিলাম।

    টিউলিপ গার্ডেনের সামনে পৌঁছে অবশ্য দেখা গেলো কপাল খারাপ – বাগান জাস্ট আগের দিনই বন্ধ হয়েছে, বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিক সময়ের থেকে একটু আগেই বন্ধ হয়েছে এবার। তবে চারিপাশে শুধু কাঁটাতারের বেড়া – আর বেড়ার ফাঁক দিয়ে দিব্বি ছবি তোলা গেলো। অ্যালবামের ১০ থেকে পনেরো নম্বর আর ২৫ নম্বর ছবি টিউলিপ গার্ডেনের। ১০ নম্বর ছবিতে আমাদের সঙ্গে সেলিম-ভাই দাঁড়িয়ে আছে। টিউলিপ গার্ডেনের ঠিক উল্টো দিকে বট্যানিক্যাল গার্ডেনের একটা এক্সটেনশন, সেখান থেকে দূরে পাহারে গায়ে পরি-মহল (২৪ নম্বর), আসলে পীর মহল।

    শাহ জাহানের বড় ছেলে, দারা শিকো ওনার শিক্ষক পীর মুল্লাহ শাহের ভাবনা-চিন্তা করার জন্য বানিয়ে ছিলেন ১৬৪০ সালে। মুঘল সম্রাটদের, বিশেষতঃ দারা শিকোর খুবই পছন্দের শহর ছিলো শ্রীনগর। সারা শহর জুড়েই অসংখ্য বাগ-বাগিচা তৈরী করে গেছিলেন তাঁরা।
    আহা এমন একখান রাজা-গজা ছাত্তর পেলে বর্তে যেতুম – সারাদিন পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে পেতুম – তা না ছাঃ চাঃ!!

    এরপরের গন্তব্য চশ্মশাহী, ফর্ম্যাল নাম জবাহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল গার্ডেন। এখানে একটা ন্যাচারাল স্প্রিং আছে। স্প্রিং এর একদম শুরুটা চুয়াল্লিশ নম্বর ছবিতে আছে। এই জল অনেককে দেখলাম বোতলে ভর্তি করে নিয়ে যচ্ছে। ২৬ থেকে ৪৬ নম্বর ছবি একানেই। শ্রীনগর জুড়ে দু-রকমের গাছ খুব বেশী – উইলো আর চিনার। চিনার গাছকে আমাদের এখানকার অশ্বত্থ গাছের মতো স্ট্যাটাস দেওয়া হয়ে থাকে – বিশাল মোটা গুঁড়িওয়ালা গাছ, চেস্ট নাটের মতো ফল হয়ে আছে (চল্লিশ নম্বর ছবি)। সারা গার্ডেন জুড়ে বিভিন্ন স্কুলের ছেলেমেয়েরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুনলাম যে এখানে প্রায় দেড়-লক্ষ ফুলের গাছ আছে। মালীরা সেসব গাছের বীজ বিক্রীও করছে। পঞ্চাশ টাকা প্যাকেট। আমিও কিনলাম, তারপরেই দেখি মালী ভদ্রলোক বলছেন ‘ম্যাডাম পার্স মে ছুপা লিজিয়ে’ – বিক্রী করা বোধহয় বারণ!
  • সোমনাথ২ | 217.239.86.106 | ২২ জুন ২০১২ ১৯:৪৯559054
  • দে ,যদ্দুর জানি silsila সিনেমার গানটার শুটিং Netherland এর বিখ্যাত tulip গার্ডেন kukenhof এ হয়েছিল ...কাশ্মীরে হয়নি ....ফুট কাটার জন্য দুঃখিত । লেখাটা দারুণ হচ্ছে , চালিয়ে যান, সঙ্গে আরও ছবি upload করুন।
  • Nina | 22.149.39.84 | ২২ জুন ২০১২ ২০:১২559065
  • দেবু
    চিনারটা এখানকার মেপল। কাশ্মিরী শালে দেখবি অনেক চিনার পাতা এমব্রয়েডারি করা থাকে। আমি কাশ্মীরের চিনার গাছের প্রেমে হাবুডুবু--এমন ম্যানলি সুপুরুষ গাছ আমি আর কোথাও দেখিনি----এখানকার মেপল চিনারে কাছে প্যাংলা।
    রিস্তা টা ল্যাম্বের চাপ টাইপের উইথ গ্রেভি যতদূর মনে পড়ছে--বড্ড চর্বি আমি খাইনি তবে আমার বর হাপুস হুপুস খেত। আমি আর আমার দেড় বাছরের ছেলে খেতাম নাখ-ফল যেমন সুন্দর দেখতে তেমন ভাল খেতে।
    আমরা লাস্ট যখন গেছি ---১৯৮০--তখন ঐ গার্ডেনে সেদিন অমিতাভ রেখার শুটিং চলছে বলে বন্ধ ছিল--আমরা ওদিকে যেতেই পারিনি--তবে কোন সিনেমা তাজানিনা।
    খুব খুব ভাল লাগছে---তোর সঙ্গে আবার মনে মনে কাশ্মীর ভ্রমণ!
  • kiki | 69.93.240.175 | ২২ জুন ২০১২ ২২:১০559076
  • অবশেষে................

    খুব ভালো হচ্ছে.......... :)
  • de | 130.62.162.150 | ২২ জুন ২০১২ ২৩:৩২559087
  • সোমনাথ২,
    আমি কিন্তু সিলসিলা দেখিনি -- এটা বিশুদ্ধ শুনে কমেন্ট করা, হোটেলের কেউ বলেছিলো ঃ))
  • de | 130.62.162.150 | ২২ জুন ২০১২ ২৩:৪২559109
  • প্রত্যেকটা বাগানের সামনে একটু দূরেই আলাদা করে পার্কিং লট, সেখানেই গাড়ী দাঁড় করানো হছে, মোবাইল নেটওয়ার্ক খুব খারাপ, ড্রাইভারের সঙ্গে কন্ট্যাক্ট করাই মুশকিল অতো গাড়ীর ভীড়ে। সমস্ত ট্যুরিস্ট গ্রুপ গুলোরই দেখছিলাম এই সমস্যা হচ্ছে। তবে সেলিম-ভাই থাকায় আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। আমরা বেরিয়ে দাঁড়ালেই একগাল হেসে ঠিক গাড়ী নিয়ে সামনেই হাজির! সুকান্ত অবশ্য একটু মুখ-গোমড়া করছিলো যে যেখানটায় ও দাঁড়িয়ে আছে সেখানে মোটেই যাচ্ছে না, আমার আর মেয়ের সামনেই আসছে – আমরা অবশ্য সেই অভিযোগে পাত্তা দিই নি!

    এরি মধ্যে টুক-টাক কথা বার্তা হচ্ছে -- কাশ্মীর আর কাশ্মিরীদের সম্বন্ধে কৌতূহল সমতলের মানুষদের সহজাত !
    পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক গত বেশ কয়েক মাস ধরে। মুখ্যমন্ত্রী দেখলাম একাই গাড়ী চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, পিছনে শুধু একটাই পাইলট-কার, তাতেও কোন হুটার নেই। তবে সেলিম-ভাই দেখলাম রাজনৈতিক নেতাদের ওপর অসম্ভব খেপে আছে। ওর মতে, কাশ্মীর আর কাশ্মিরীদের কেউ ভালো বাসে না, সব রাজনৈতিক নেতা নিজেদের ফায়দা তোলার জন্য কমবয়সীদের উস্কে দেয়। উস্কানির কারণ বেশীর ভাগ সময়েই প্ররোচনা-মূলক কথাবার্তা, যেকোন গুজব ইত্যাদী। আমি জিজ্ঞেস করলাম --সাধারণ মানুষ শোনে কেন এইসব নেতাদের কথা?
    “ কি করবে, কমবয়েসী, বেকার ছেলেপুলের সংখ্যা এতো বেশী, কোন কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই, এই ঠান্ডায় থাকার উপযুক্ত ঘরবাড়ী থেকে খাবার-দাবার সবকিছুরই এতো অভাব, মানুষের মেজাজ তো অমনিতেই খিঁচড়ে থাকে! ট্যুরিস্ট সিজন চলে মেরেকেটে ছ-সাত মাস, এই কয় মাসই উপার্জন। অক্টোবর-নভেম্বর থেকে ঠান্ডা পড়ে যায়, দোকান-পাট বেশীর ভাগই বন্ধ থাকে – শীতে প্রায় সময়েই জম্মু থেকে আসার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়ে কোন খাবার/জ্বালানী/নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যদি আসা বন্ধ হয়ে যায়। যতটুকু জিনিস থাকে তা অগ্নিমূল্য হয়। বেশীর ভাগ সাধারণ মানুষকেই তাই সেপ্টেম্বর নাগাদ আটা-চাবল-দাল-তেল-জ্বালানী ইত্যাদীর অন্তত পাঁচ-ছমাসের জন্য স্টোর করে রাখতে হয়। মাত্র ছ’মাসের আয়ে এটা করা কি সোজা কথা?”

    “তাও তো এখন আমার ছোটবেলার থেকে পরিস্থিতি এখন অনেকই শুধরেছে – আমার যখন সাত-আট বছর বয়েস, নব্বই-একানব্বই সাল – অবস্থা আরো সঙ্গীন ছিলো তখন। মাসের পর মাস জুড়ে কার্ফিউ, দেখলেই গোলি, খাবার নেই, অসুখ করলে ওষুধ নেই, কত লোক ঘরের মধ্যে বিনা চিকিৎসাতেই মারা গেছে। কয়িবার দস-দস দিন তক ভুখা রহতে থে হমলোগ! স্কুল-উল সব বন্ধ রহতে থে, পড়াই মে বহত হোঁশিয়ার থে, মগর পেট নহী চলতা-- একদিন পড়াই ছোড়কর ড্রাইভার বন গয়ে! আগর অউর থোড়া পড় সকতা, তো ম্যায় ভি আপলোগোকে তরহা সরকারী নোকরী কর সকতে থে!”
  • de | 130.62.162.150 | ২২ জুন ২০১২ ২৩:৪২559098
  • প্রত্যেকটা বাগানের সামনে একটু দূরেই আলাদা করে পার্কিং লট, সেখানেই গাড়ী দাঁড় করানো হছে, মোবাইল নেটওয়ার্ক খুব খারাপ, ড্রাইভারের সঙ্গে কন্ট্যাক্ট করাই মুশকিল অতো গাড়ীর ভীড়ে। সমস্ত ট্যুরিস্ট গ্রুপ গুলোরই দেখছিলাম এই সমস্যা হচ্ছে। তবে সেলিম-ভাই থাকায় আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। আমরা বেরিয়ে দাঁড়ালেই একগাল হেসে ঠিক গাড়ী নিয়ে সামনেই হাজির! সুকান্ত অবশ্য একটু মুখ-গোমড়া করছিলো যে যেখানটায় ও দাঁড়িয়ে আছে সেখানে মোটেই যাচ্ছে না, আমার আর মেয়ের সামনেই আসছে – আমরা অবশ্য সেই অভিযোগে পাত্তা দিই নি!

    এরি মধ্যে টুক-টাক কথা বার্তা হচ্ছে -- কাশ্মীর আর কাশ্মিরীদের সম্বন্ধে কৌতূহল সমতলের মানুষদের সহজাত !
    পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক গত বেশ কয়েক মাস ধরে। মুখ্যমন্ত্রী দেখলাম একাই গাড়ী চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, পিছনে শুধু একটাই পাইলট-কার, তাতেও কোন হুটার নেই। তবে সেলিম-ভাই দেখলাম রাজনৈতিক নেতাদের ওপর অসম্ভব খেপে আছে। ওর মতে, কাশ্মীর আর কাশ্মিরীদের কেউ ভালো বাসে না, সব রাজনৈতিক নেতা নিজেদের ফায়দা তোলার জন্য কমবয়সীদের উস্কে দেয়। উস্কানির কারণ বেশীর ভাগ সময়েই প্ররোচনা-মূলক কথাবার্তা, যেকোন গুজব ইত্যাদী। আমি জিজ্ঞেস করলাম --সাধারণ মানুষ শোনে কেন এইসব নেতাদের কথা?
    “ কি করবে, কমবয়েসী, বেকার ছেলেপুলের সংখ্যা এতো বেশী, কোন কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই, এই ঠান্ডায় থাকার উপযুক্ত ঘরবাড়ী থেকে খাবার-দাবার সবকিছুরই এতো অভাব, মানুষের মেজাজ তো অমনিতেই খিঁচড়ে থাকে! ট্যুরিস্ট সিজন চলে মেরেকেটে ছ-সাত মাস, এই কয় মাসই উপার্জন। অক্টোবর-নভেম্বর থেকে ঠান্ডা পড়ে যায়, দোকান-পাট বেশীর ভাগই বন্ধ থাকে – শীতে প্রায় সময়েই জম্মু থেকে আসার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়ে কোন খাবার/জ্বালানী/নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যদি আসা বন্ধ হয়ে যায়। যতটুকু জিনিস থাকে তা অগ্নিমূল্য হয়। বেশীর ভাগ সাধারণ মানুষকেই তাই সেপ্টেম্বর নাগাদ আটা-চাবল-দাল-তেল-জ্বালানী ইত্যাদীর অন্তত পাঁচ-ছমাসের জন্য স্টোর করে রাখতে হয়। মাত্র ছ’মাসের আয়ে এটা করা কি সোজা কথা?”

    “তাও তো এখন আমার ছোটবেলার থেকে পরিস্থিতি এখন অনেকই শুধরেছে – আমার যখন সাত-আট বছর বয়েস, নব্বই-একানব্বই সাল – অবস্থা আরো সঙ্গীন ছিলো তখন। মাসের পর মাস জুড়ে কার্ফিউ, দেখলেই গোলি, খাবার নেই, অসুখ করলে ওষুধ নেই, কত লোক ঘরের মধ্যে বিনা চিকিৎসাতেই মারা গেছে। কয়িবার দস-দস দিন তক ভুখা রহতে থে হমলোগ! স্কুল-উল সব বন্ধ রহতে থে, পড়াই মে বহত হোঁশিয়ার থে, মগর পেট নহী চলতা-- একদিন পড়াই ছোড়কর ড্রাইভার বন গয়ে! আগর অউর থোড়া পড় সকতা, তো ম্যায় ভি আপলোগোকে তরহা সরকারী নোকরী কর সকতে থে!”
  • de | 130.62.162.150 | ২২ জুন ২০১২ ২৩:৪৯559131
  • আমরা সমতলের সরকারী নোকরীওয়ালে – চুপ করে শুনতে থাকি। এরই মধ্যে ফারুক আবদুল্লার প্রাসাদ, জেহেলামের ধারে একরের পর একর জমি শুদ্ধ বাগন-বাড়ি, তার মধ্যে গলফের কোর্ট এইসব দেখানো হলো। মেহবুবা মুফতির বিশাল প্রপার্টি, হরি সিংয়ের রাজবাড়ি, এখন যেখানে ওবেরয় গ্রুপের হোটেল – এইসব দেখা হলো। ওমর আবদুল্লাকে দেখলাম সেলিম-ভাই ‘অকম্মার ধাড়ী’ বল্লেও চোর বল্লো না! তারপরেই অ্যাডিশন “ অবশ্য চুরি করে আর রাখবে কোথায়, বাপ যা করে রেখে গেছে!” এরই মধ্যে আমরা কি কাজ করি সেটা জিজ্ঞেস করা হলো -- সায়েন্টিস্ট শুনে কাজের ধরণ ইন্টারেস্ট নিয়ে বুঝতে চাওয়া আর চুপ করে শোনা এই দুটোই সেলিম-ভাইকে অনেক আলাদা করে দেয় বাকি আর পাঁচজনের থেকে।
    এমনি কথায় কথায় পাহাড় ধরে নেমে গাড়ি দাঁড়ায় বট্যানিক্যাল গার্ডেনে – ৪৭ থেকে ৫৭ নম্বর ছবি ওখানেই। যেদিকেই তাকাই, সবুজের ব্যাকগ্রাউন্ডে ফুলের মেলা চোখ জুড়িয়ে দেয়। এখানে বেশ বড় একটা লেকও আছে, বোটিং করা যায়, নামটা মনে পড়ছে না। এখানে বসে একটু চা আর চিপস খাওয়া হলো। এরপর যাবো নিশাত বাগ – ১৬৩২ সালে জাহাঙ্গীরের শালাবাবু, আসফ জাহ, নূরজাহানের ভাই বানিয়েছিলেন। এটা ডাল-লেকের ঠিক সামনে। ৮১ নম্বর ছবিতে পুরো স্টেপ গুলো দেখা যচ্ছে, মুঘল আমলে নাকি পুরো জায়গাটা জলে ভর্তী থাকতো। ৬০ নম্বর ছবিতে ডাল লেক ক্রস করে যে ব্রিজ এই নিশাত বাগ অব্দি আসতো তারই ভগ্নাংশ। এখানে মেয়েকে কাশ্মিরী ড্রেস পরিয়ে ফটো তোলানো হলো। একটু গন্ডগোল অবশ্য হয়েছিলো। কথা হলো, ড্রেস পরিয়ে একটাই ছবি তোলা হবে, সেটা ওরা ওদের ক্যামেরায় তুলে দেবে। মেয়ে খুবই বিরক্ত, আমারি জোরাজুরিতে ড্রেস পরলো। এরপর ফটোগ্রাফার নানা রকম ধরনে ফটো তুলেই যাচ্ছে, তুলেই যাচ্ছে, আমরা থামতে বল্লে বলছে কয়েকটা তুলি, যেটা পছন্দ হবে নেবেন। পরে পছন্দ করার সময়ে জোরাজুরি-- সবগুলোই নিন, এতো ভালো উঠেছে। অনেক বুঝিয়ে তাকে একটাই ফটো নেওয়া হলো – কিন্তু বাকিগুলো সে কিছুতেই ডিলিট করবে না! আমার বর আবার প্রচন্ড খুঁতখুঁতে এই ব্যাপারে। যাই হোক, আরো খানিকটা বোঝানোর পর, সেযাত্রা ফটো ডিলিট হলো।
  • de | 130.62.162.150 | ২২ জুন ২০১২ ২৩:৪৯559120
  • আমরা সমতলের সরকারী নোকরীওয়ালে – চুপ করে শুনতে থাকি। এরই মধ্যে ফারুক আবদুল্লার প্রাসাদ, জেহেলামের ধারে একরের পর একর জমি শুদ্ধ বাগন-বাড়ি, তার মধ্যে গলফের কোর্ট এইসব দেখানো হলো। মেহবুবা মুফতির বিশাল প্রপার্টি, হরি সিংয়ের রাজবাড়ি, এখন যেখানে ওবেরয় গ্রুপের হোটেল – এইসব দেখা হলো। ওমর আবদুল্লাকে দেখলাম সেলিম-ভাই ‘অকম্মার ধাড়ী’ বল্লেও চোর বল্লো না! তারপরেই অ্যাডিশন “ অবশ্য চুরি করে আর রাখবে কোথায়, বাপ যা করে রেখে গেছে!” এরই মধ্যে আমরা কি কাজ করি সেটা জিজ্ঞেস করা হলো -- সায়েন্টিস্ট শুনে কাজের ধরণ ইন্টারেস্ট নিয়ে বুঝতে চাওয়া আর চুপ করে শোনা এই দুটোই সেলিম-ভাইকে অনেক আলাদা করে দেয় বাকি আর পাঁচজনের থেকে।
    এমনি কথায় কথায় পাহাড় ধরে নেমে গাড়ি দাঁড়ায় বট্যানিক্যাল গার্ডেনে – ৪৭ থেকে ৫৭ নম্বর ছবি ওখানেই। যেদিকেই তাকাই, সবুজের ব্যাকগ্রাউন্ডে ফুলের মেলা চোখ জুড়িয়ে দেয়। এখানে বেশ বড় একটা লেকও আছে, বোটিং করা যায়, নামটা মনে পড়ছে না। এখানে বসে একটু চা আর চিপস খাওয়া হলো। এরপর যাবো নিশাত বাগ – ১৬৩২ সালে জাহাঙ্গীরের শালাবাবু, আসফ জাহ, নূরজাহানের ভাই বানিয়েছিলেন। এটা ডাল-লেকের ঠিক সামনে। ৮১ নম্বর ছবিতে পুরো স্টেপ গুলো দেখা যচ্ছে, মুঘল আমলে নাকি পুরো জায়গাটা জলে ভর্তী থাকতো। ৬০ নম্বর ছবিতে ডাল লেক ক্রস করে যে ব্রিজ এই নিশাত বাগ অব্দি আসতো তারই ভগ্নাংশ। এখানে মেয়েকে কাশ্মিরী ড্রেস পরিয়ে ফটো তোলানো হলো। একটু গন্ডগোল অবশ্য হয়েছিলো। কথা হলো, ড্রেস পরিয়ে একটাই ছবি তোলা হবে, সেটা ওরা ওদের ক্যামেরায় তুলে দেবে। মেয়ে খুবই বিরক্ত, আমারি জোরাজুরিতে ড্রেস পরলো। এরপর ফটোগ্রাফার নানা রকম ধরনে ফটো তুলেই যাচ্ছে, তুলেই যাচ্ছে, আমরা থামতে বল্লে বলছে কয়েকটা তুলি, যেটা পছন্দ হবে নেবেন। পরে পছন্দ করার সময়ে জোরাজুরি-- সবগুলোই নিন, এতো ভালো উঠেছে। অনেক বুঝিয়ে তাকে একটাই ফটো নেওয়া হলো – কিন্তু বাকিগুলো সে কিছুতেই ডিলিট করবে না! আমার বর আবার প্রচন্ড খুঁতখুঁতে এই ব্যাপারে। যাই হোক, আরো খানিকটা বোঝানোর পর, সেযাত্রা ফটো ডিলিট হলো।
  • de | 130.62.162.150 | ২২ জুন ২০১২ ২৩:৫১559140
  • সরি, দুবার করে আসছে --
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন