এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • বাংলা গান ও সুমন

    ন্যাড়া
    গান | ২৫ আগস্ট ২০১২ | ৮২১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dukhe | 127.194.249.42 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:১৬568862
  • সুকান্ত-সলিল-হেমন্ত ত্র্যহস্পর্শ বলে কথা !
  • কল্লোল | 111.62.115.58 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:২১568863
  • কথা হচ্ছিলো গানে রাজনীতি নিয়ে ও তার প্রাসঙ্গিকতা।
    ঐ যে বল্লাম, ১৯৭৫-৭৬। তখন কোন ধরনের বাম রাজনীতি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা আর সাধ করে পুলিশে ধরা পড়া একই বিষয়।
    একটু সময়টা ধরা যাক। ১৯৭৩-৭৪। আমরা কজন উল্টোডাঙ্গা খালধারের বস্তিতে বাচ্চাদের পড়াতে যেতাম। অবশ্যই উদ্দেশ্য ছিলো তাদের মা-বাবাদের কাছে পৌঁছানো, যাঁরা নরম কাঠের চামচ (মূলতঃ আইসক্রীম/দৈয়ের) তৈরী শিল্পে অসংগঠিত শ্রমিক ছিলেন। তাদের নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ান করবো। একমাস যাতায়াত করতে করতেই আমাদের দুই বন্ধু পুলিশের হাতে। ৭৭এর আগে আর কখনো ঐ এলাকায় পা রাখতে পারিনি। একজন যে প্রথ্ম ধরা পড়ে মিত্রা, উল্টোডাঙ্গা থানার ওসি তার মামা, তাকে চিনতে অস্বীকার করে।
    তো এইরকম একটা পরিস্থিতিতে মঞ্চে ব্যর্থ বিপ্লব নিয়ে গান গাইতে গেলেও তাকে সান্ধ্যভাষায় কথা বলতে হতো। বাউলরা তাদের তত্ত্ব গানে যেভাবে নিয়ে আসে। যখন বাউল গেয়ে ওঠে - চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে / আমরা ভেবে করবো কি - তখন অদীক্ষিত শ্রোতা শোনে চাঁদের কথা, আর তাই নিয়ে ক্ষ্যাপামো। চাঁদের গায়ে আবার চাঁদ লাগে নাকি! অথ্চ সেই একই আসরে দীক্ষিত শ্রোতা শোনে চারিচন্দ্রের গুহ্য কথা। কিভাবে লজ্জা-ঘেন্না-ভয় থেকে মুক্তি পেতে হয়।
    তো, প্রসঙ্গহীনতা নিয়ে কথা হচ্ছিলো - কথা দিয়া বন্ধু ফির‌্যা না আইলা। অদীক্ষিত শ্রোতা শোনে হাফসোল। যে জানে সে জানে, বিপ্লব ফাঁকি দিয়ে গেছে।
    কথা দিয়া -
    গানটা স্মৃতি থেকে লিখতে গিয়ে স্তবক উল্টে গেছে। সুর ও গাওয়া নিয়ে আগেই কথা অহ্যে গেছে, তাই আর লিখলাম না।
  • কল্লোল | 111.62.115.58 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:২৪568864
  • * কথা হয়ে গেছে
  • dukhe | 127.194.249.42 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:২৮568865
  • দীক্ষিত শ্রোতা সহজেই বোঝেন "তোরা যে যা বলিস ভাই" শেয়ারবাজারে খেলার গান।

    ডিঃ - বিশুদ্ধ ফক্কুড়ি (মামুর কল উ-কার সরিয়ে দিচ্ছে)।
  • aka | 85.76.118.96 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:৩০568866
  • আরও দীক্ষিত শ্রোতা যেমন ডিডিদা সহজেই বোঝেন আসলে উহা সোনার বাট কেনার গান। ঃ)))
  • কল্লোল | 111.62.115.58 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২৩:২৬568867
  • এবার চৈত্রের কাফন। আরেকটা সান্ধ্যভাষায় রাজনৈতিক গান। তার আগে সুভাষ মুখুয্যে মশাইয়ের কবিতা পড়ুন - ছেলে গেছে বনে। কবিতাটা নেটে কোথাও পেলাম না। বইটা আনন্দ থেকে প্রকাশিত।
    নকশাল ছেলেদের নিয়ে লেখা - বনবাসে গেছে ওরা - এরকম একটা কোন জায়গা থেকে।

    তার জবাব দিতে গেয়ে ওঠে মহীন -

    যে গেছে বনমাঝে চৈত্র বিকেলে / যে গেছে ছয়াপ্রাণ বনবিথীতলে / বন জানে অভিমানে গেছে সে অবহেলে / যে গেছে অশ্রুময় বন অন্তরালে
    আকাশে কেঁপেছে বাঁশিসুর / আঁচলে উড়েছে ময়ূর / চলে যাই / বলেছিলে চলে যাই / মহুল তরুর বাহু ছুঁয়ে / যে গেছে অশ্রুময় বন অন্তরালে
    সে বুঝি শুয়ে আছে / চৈত্রের হলুদ বিকেল / সেখানে চূর্ণফুল / ঝরে তার আঁচলে / সেখানে চূর্ণফুল / ঝরে তার কাফনে

    যে বন্ধুদের ফেলে এসেছি খরপথ চলার দিনে, যে বন্ধুকে ফেলে এসেছি পাঁচিলের ওপারে, তাকে মনে করতে, আর সেই মনে করা লুকিয়ে ফেলতে, আর কিইই বা লেখা যেতো।
    গানটি রেকর্ড হয়েছিলো ১৯৭৯এ।

    ইলেকট্রিক অর্গানে ফিউনারেল হাইম। বন্ধু আমার ঘুমিয়ে আছে, মাটি আঁকড়ে ঘুমিয়ে আছে। ঝলসে ওঠে গিটার ঠিক তখনই। আমাদের যৌথ যন্ত্রনা আমাদের সমবেত অক্ষম রাগ ঝরে পরে প্রতিটি স্ট্রামিংএ। আবারও থ্রি পার্ট হার্মোনি ভেসে আসে ফেলে আসা সময়ের, ফেলে আসা যাপনের রেশ ধরে - যে গেছে বন মাঝে চৈত্র বিকেলে........... প্রথ্ম স্তবক শেষ হতে আবার ঝলসে ওঠে রিদম গিটার, আর তখনই তখনই কান্না কান্না কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে লিড গিটার। কান্না আর অক্ষম রাগ মিশে তৈরী হয় ভোকাল রিফ্রেন। সুরের চলন পাল্টে যায় - আকাশে কেঁপেছে বাঁশিসুর / আঁচলে উড়েছে ময়ূর / চলে যাই / বলেছিলে চলে যাই / মহুল তরুর বাহু ছুঁয়ে - আবারও সুর ফিরে আসে ফেলে আসা যাপনে। এভাবেই শেষ হয় গান ফেলে আসা বন্ধুর কপালে চুমো খেয়ে, তার কাফনে চূর্ণফুল ছড়িয়ে।
    এভাবেই জন্ম হয় একটা রাজনৈতিক গানের - ভাসা ভাসা কিন্তু অমোঘ।
  • কল্লোল | 111.62.115.58 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২৩:২৮568868
  • যে গেছে বনমাঝে -
  • aranya | 154.160.226.53 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০০:৩৩568869
  • @রোকেয়া, মহীনের ক্রিকেট শুনলাম, লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ।
    খাজা কথা, মিউজিক ভাল - এলসিএম যেমন বলেছেন।
  • শিবাংশু | 127.197.245.154 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০১:০৪568870
  • তিনটি ডাক্প্রসঙ্গে
    বলরাম হাড়ি ১০।৪০
    ন্যাড়া ১০।৪৪
    aka ১২।৫৩

    সময়ের নাড়ি-

    চুরানব্বই সালে সুমনের সঙ্গে যখন সরাসরি ওঁর গান নিয়ে আড্ডা হয়েছিলো তখন তিনি আমায় বলেছিলেন,তাঁর গান পাঁচ বছর পরে কেউ শুনবে না। কারণ তিনি একটা বিশেষ সময়ের গায়ক। আমি বলেছিলুম, আপনি সময়ের প্রয়োজনকে ধরে ফেলার একটা বিশেষ ক্ষমতা আয়ত্ব করেছেন। যদিও তখন তাঁর গান গাওয়ার পূর্বতন ইতিহাস বিষয়ে খুব একটা ওয়াকিফ হাল ছিলুম না,কিন্তু তাঁর প্রাথমিক সঙ্গীত শিক্ষা ও 'নাগরিক' পর্ব পর্যন্ত কিছু ধারণা ছিলো। তার মধ্যে এমন কিছু পাওয়া যায়নি যার থেকে 'তোমাকে চাই'য়ের কোনও পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে। পরে আমার মনে হয়েছে সুমন সময়কে আবিষ্কার করেননি, সময় সুমনকে অবলম্বন করেছিলো। সময়ের নাড়িতে সুমন হাত রাখেননি,সুমনের নাড়িতে সময় হাত রেখেছিলো। সাধারণ শহুরে শ্রোতার কান ও মন সেই সময় উপলব্ধ বাংলা গানের মধ্যে শূশ্রূষা পাচ্ছিলো না। 'মহীন' ও অন্যান্য বাংলা ব্যান্ডের নির্দ্দিষ্ট নিবেদিত শ্রোতার দল অবশ্যই ছিলেন, কিন্তু যাকে জনমুগ্ধতা বলা যেতে পারে,সেই সাফল্য তাঁদের ছিলোনা। মূলত কলকাতার কলেজের ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রভাবী কোনও সঙ্গীত ধারাকে বাংলাগানের স্রোত বদলের একমাত্র ইঙ্গিত হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াটা বোধ হয় সমীচীন হবেনা। যাবতীয় বাহ্যিক রূপকল্পে ভিন্নতর হলেও সুমন ভালো বাংলাগানের যেটা ফর্টে,অর্থাৎ সাবলীল ও কাব্যগুণী লিরিক ও মেলোডিক সুরের প্রতি বিশ্বস্ততা, দুটোর ঐতিহ্যকেই স্বীকার করেছিলেন।

    এই সব গান যখন সুমন গাইতে এলেন তখন তাঁর কণ্ঠের নমনীয়তা বেশ কমে গেছে। তবে মন্দ্রে গলা মোটামুটি সাবলীলভাবে নামছিলো। অর্থাৎ বাঙালি গায়কদের মধ্যে দুর্লভ ব্যারিটোন গভীরতা তিনি আয়ত্ব করে নিয়েছিলেন।এই ব্যারিটোন স্বরের গায়কদের যেটা অসুবিধে, তাঁরা ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সূক্ষ্ম অলংকরনগুলির প্রতি সুবিচার করতে পারেননা। অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে সব পর্দায় নিখুঁতভাবে বা শাস্ত্রসম্মতভাবে সুর খেলাতে পারেন না। দুজন ব্যতিক্রম আছেন, যদিও পূর্ণত নয়, আংশিক বলা যায়, কুন্দনলাল সহগল ও তাঁর স্বঘোষিত শিষ্য কিশোর কুমার। মীড়ের জায়গায় ট্রেমেলো দিয়ে তাঁদের মেলোডিকে ধরে রাখতে হয়। তবে কাব্যগীতিতে যেহেতু কথার মেজাজটি ধরাই প্রধান লক্ষ্য, তাই বোতল থেকে তেল ঢালার মতো মসৃণ মেলোডি, যা এতোদিন বাংলাগানের মূলস্রোত ছিলো, সে সম্বন্ধে সুমন নতুনভাবে ভাবলেন। তাঁর যেটা দুর্বলতা হতে পারতো,সেটাকে তিনি বিশেষত্ব হিসেবে ব্যবহার করলেন। অর্থাৎ মেলোডিকে স্ট্যাকেটো শৈলিতে পরিবেশন। সুরের পর্দার প্রতি সনিষ্ঠ থাকছেন, মন্দ্র,মধ্য,তারা, কোনও সপ্তকেই কণ্ঠ বেসুর হচ্ছেনা।কারণ যেখানে বেসুর হবার সম্ভাবনা থাকে, অর্থাৎ এক সপ্তকের একটা পর্দা থেকে অপর সপ্তকের সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা পর্দায় যখন কণ্ঠকে একশ্বাসে নিয়ে যেতে হয়,তখন তিনি নিজের কণ্ঠস্বরের সীমাবদ্ধতাকে মনে রেখে ছেদ দিচ্ছেন, যেটা তাঁর নিজস্ব লিরিকের ছন্দে ও যতিতে মিলে যাচ্ছে। এই পরীক্ষাটি আরো অধিক মাত্রায় সফল হয়েছিলো এই কারণে যে যন্ত্রানুষঙ্গের সিংহভাগের দায় তিনি একাই বহন করতেন। মঞ্চে গাইতে এসে আগে রেকর্ড করা ট্র্যাকের ঐ মাত্রায় ব্যবহার আগে কেউ বাংলা গানে করেছেন কি না জানিনা।

    বাংলাগান পরিবেশনার ক্ষেত্রে তাঁর এই সম্পূর্ণ নতুন প্যাকেজে উপস্থাপনা, যা মেলোডিতে নিমজ্জিত বাঙালি শ্রোতার শ্রুতি অভ্যেসের প্রতিও সমান বিশ্বস্ত, তাঁকে সেই সময় বাংলা গানের মোড় ফেরানোর প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। তিনি যে নিজেকে ব্লটিং কাগজ হিসেবে গণ্য করছেন, তাতে কোন বিস্ময় নেই। কারণ শচীনকত্তার সুরসংযোজন ও যন্ত্রানুষঙ্গ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে যে আলাপ হয়েছিলো তাতে এ ব্যাপারটি স্পষ্ট ছিলো, তিনি নিজেকে চলিত ঐতিহ্যের থেকে বিচ্ছিন্ন কোন একক হিসেবে মনে করেন না। আসলে তাঁকে অনন্য করেছে সঙ্গীত নিয়ে তাঁর ধারাবাহিক গভীর চিন্তার বিবর্তন।

    এখানে একটা কথা বলা জরুরি, শুদ্ধ শ্রোতা হিসেবে সঙ্গীতকে উপভোগ করা ও একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে, সৃজনের সমস্ত স্তরের দায় সামলে তার থেকে পরিতৃপ্তির স্বাদ পাওয়া এক ব্যাপার নয়। সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গীত সৃষ্টির পিছনে বহু শারীরিক, বৌদ্ধিক শ্রম জড়িয়ে থাকে। তাই সঙ্গীত মূল্যায়ণের ক্ষেত্রে একজন শুদ্ধ কর্ণনির্ভর শ্রোতা ও একজন পারফর্মিং শিল্পীর ভাবনা অনেক সময়েই পৃথক হয়। একজন প্রকৃত শিল্পীর জন্য এই মূহুর্তে শ্রোতার তাৎক্ষণিক মুগ্ধতা নিশ্চয় কাম্য, কিন্তু তাঁর মূল লক্ষ্য হবেন ভবিষ্যতের শ্রোতারা। ঐতিহ্য নদীর মতন। তার বাঁক বদল হয়, কিন্তু মরুপথে হারানো তার ভবিতব্য নয়। ভবিষ্যতের শ্রোতার সঙ্গীতবোধও শেষ পর্যন্ত ঐতিহ্যের থেকেই প্রাণরস খুঁজে নেয়।

    'কথা দিয়া বন্ধু' বিষয়ে ন্যাড়ার সঙ্গে আমি একমত। এই টইটিতে 'মহীন' সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনা করা বোধ হয় সঙ্গত নয়,কারণ সুমনই এখানে উপজীব্য।

    aka-র মফস্সলের লোকে সুমন শুনতো না একথাটি আমার অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলেনা। আমি নিজে শুধু কলকাতারই নয়, বাংলারও বাইরের শ্রোতা । কিন্তু সুমনের আদরে কখনও খামতি দেখিনি।এছাড়া বাংলার মফস্সলের কয়েকটি ছোটো শহর, যেমন মেদিনিপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, বোলপুরে সেসময় ক্যাসেটের দোকান থেকে পুজো মন্ডপ, সব জায়গাতেই সুমনের গানের প্রচার দেখেছি।

    আঁতেলপনার যদি প্রসঙ্গ আসে, তবে দাদুর থেকে বড়ো আঁতেল বাংলাগানে এখনও কেউ নেই।
  • aka | 85.76.118.96 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:০০568872
  • শিবাংশুদা বলাই ভালো যে এ আমার অবজার্ভেশন। আমি মফস্বলের ছেলে। সুমন যখন শুনেছি তখনও আমি মফস্বলে। বন্ধুদের গান শুনিয়েছি, বেশির ভাগেরই ভালো লাগে নি। দশ ফুট বাই দশ ফুট, পাগল এসব শুনে অনেকেরই বক্তব্য গানের কি ভাষা? পিছুটি চোখের কোনে ইত্যাদি। কিন্তু সাউন্ড এফেক্ট, একেবারে নতুন ধরণের গান শুনে খুব খারাপ লেগেছে তা নয়।

    তারপর যখন কলেজে গেলাম শহরে। সেখানে গিয়ে দেখি সবাই সুমন বলতে পাগল। গীটার নিয়ে লোকে গেয়ে চলেছে সুমনের গান। নচিকেতার নাম বললে কেমন একটু নীচু চোখে দেখা হত।

    ওদিকে আমার সেই বন্ধু যারা সুমনের গান শোনে নি তারা কেউ পড়ছে হুগলী মহসিনে, কেউ ঋষি বঙ্কিম কলেজে। তারা আবার নচিকেতা বলতে পাগল। কলেজ ফেস্টে এসে নচি বলেছে ঐ যে ব্যলকনি তে বসে থাকা মামণিরা যদি পাত্তা না দেয় তাহলে পরোয়া করি না, এই বেশ ভালো আছি। ছেলেপুলে পাগলা হয়ে গেছে। নচিকেতা তাদের হৃদয়ের কাছে, সুমন আঁতেল। পুজো প্যান্ডেলে সুমনের তোমাকে চাইয়ের পরেই শুরু হয়েছে নীলাঞ্জনা, এই বেশ ভালো আছি, কিংবা ভীড় করে ইমারত আকাশটা ছেয়ে আছে, গ্রন্থকীটের দল বানায় যে নির্বোধ। এই চোর আর পেটকাটি চাঁদিয়াল মনে হয় প্রায় একই রকম গান, শুধু দুই ধরণের শ্রোতার সাথে কানেক্ট করে।

    তো এই হল আমার অ্যানেকডোট। এবারে এখান থেকে জেনারালাইজ করেছি কারণ শহরের কলেজে এবং আমার মফস্বলের বন্ধুরা দুটো ডিফারেন্ট সেটকে রিপ্রেজেন্ট করে। একদল পেটকাটি চাঁদিয়াল শোনে, অন্য দল চোর শোনে। মনে হল এটা বোধহয় জেনারালাইজ করা যায়।

    রবীন্দ্র সংগীত কি করে সাধারণ মানুষের ভালো লাগার বিষয় হয়ে উঠল সেটা বোধহয় অন্য অ্যানালিসিস দাবী করে। সে আপনারাই আরও ভালো জানেন।
  • কল্লোল | 125.241.92.181 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:৩৩568873
  • ১৯৭৮। বাংলা কাব্যগীতিতে প্রথম UFO নিয়ে গান। অ-উ-ব অজানা উড়ন্ত বস্তু।
    আধো আলো আঁধারে / কোন এক নগরে / মেস ঘরে থাকি চারজন / ট্রাম গাড়ি টেম্পোরা / শব্দের আল্পনা / দিয়ে ঘিরে রাখে সারাক্ষন / রাত কিবা কিবা দিন ঘেমো ঘরে আলোহীন / ভৌতিক কেরানীরা রই / আবছায়ে নড়িচড়ি / থুতনিতে রুখু দাড়ি / এই কোলাহলে নিরজন /
    অজানা ইথার শরীর / শুধুই দেওয়াল জুড়ে / কাটে সারাদিন সময়ের কঠিন করত / নিশাচর ইঁদুরেরা / ছিঁড়ে চলে দিন বোনা / রোদহীন ছায়ার বনাত / তবু সব শনিবারে / তারা সব আসে ফিরে / ছাদে উঠে যায় চারজন / টিভির অ্যান্টেনা যেন বা মাছের কাঁটা / বেড়ালের তরে আয়োজন
    শহর আলোয় উজল / ধোঁয়াশায় আকাশ পিছল / ছাদে এসে নামে ভীনগ্রহী ফ্লাইং সসার
    জেনো সব কেরানীরা / এইভাবে ঘোরে তারা / পড়ে থাকে যতো অফিসার

    খুব স্পষ্টতঃ বিটলসের Yellow Submarine ছাপ। সুরেও সেই মৃদু দোলা। শেষ পংক্তির আগে যে অষ্পষ্ট কথা হাসি সবই ভীষনভাবে Yellow Submarine থেকে প্রাণিত।
    মজাটা বিষয় বৈচিত্রে। ফ্লাইং সসার ও মেসবাড়ীর কেরানীরা। এই কম্বিনেশনটা অদ্ভুত। আর শেষে এসে উপরতলার মানুষদের বিদ্রুপ। আজ যখন সরকারী চাকরীর বাইরে কেরানী বলে কিছু হয় না, কর্পোরেটে সকলেই অফিসার (লোয়ার, মিডল ও আপার ম্যানেজমেন্ট), তখন এই বিদ্রুপ অনেকটাই হারিয়ে যায়। শুধু আমাদের মতো কিছু পাব্লিক মনে রাখে, একদিন সে কেরানী থেকে জুনিয়ার অফিসার হয়ে গেছিলো, একই কাজ করতে করতে। তাদের অফিসার করে দেওয়া, যাতে একদিন স্টাফ ইউনিয়ান বলে কিছু না থাকে।

    অ-উ-ব
  • নচিভক্ত | 127.194.199.233 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:৩৯568874
  • শিবাংশুদা কে একটাই অনুরোধ, অনুগ্রহ করে টইয়ের নাম দেখে আলোচনার গন্ডি সম্প্রসারণে কার্পণ্য করবেন না। যে শিরোনামেই হোক, প্রকৃত প্রস্তাবে আধুনিক বাংলা গান বা আরো শিকড়সন্ধানী অর্থে মূলতঃ বাংলা গান নিয়েই মতামত প্রকাশের পরিসর সন্ধান করতে চাইছি সকলে, নিঃসন্দেহে। যখন যে টইতে যে প্রেক্ষিতের সম্প্রসারণ অবধারিত মনে হয়, তার শিরোনাম-নির্ধারিত কন্ঠরোধে তাই আপত্তি রইল।
  • কল্লোল | 125.241.92.181 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:৪৯568875
  • সুমনের টইতে মহীন নিয়ে এতো কথা লেখার কথা ছিলো না। হয়তো মহীন নিয়ে আলাদা একটা টই হতেই পারতো। আমি শুধু বাংলা কাব্যগীতিতে প্রাক সুমন নিয়ে কথা বলতে চাইছিলাম।
    সুমনের জনপ্রিয়তা নিয়ে কথা বলার মানে হয় না। সেটা স্বতসিদ্ধ।
    কিন্তু শুরুটা হয়েছিলো ৯০এর সুমনের অনেক আগে। তাতে মহীন, রঞ্জনপ্রসাদ, শমী ব্যানার্জি, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, ৮০র সুমন এঁরা পথ হেঁটেছিলেন। এঁরা পথিকৃত।
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.247.129 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:৫১568876
  • মহীন সম্ভবত বাংলায় প্রথম সুররিয়াল লিরিক এনেছিল। সংবিগ্ন পাখীকুল , বা এটা

  • সিদ্ধার্থ | 141.104.247.129 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:৫৩568877
  • ও হ্যাঁ, অ উ ব তো বটেই
  • cb | 121.93.108.166 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:৫৮568878
  • বেহালা চৌরাস্তার বলছে তো এই গানটা
  • সিদ্ধার্থ | 141.104.247.129 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৮:০১568879
  • বেহালা চৌ পরে ওদের ক্যাসেটে রেখেছিল গানটা
  • নচিভক্ত | 127.194.199.233 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৮:১৮568880
  • সংক্ষেপে মহীনের ঘোড়াগুলির তিনটে অ্যালবামের ডিটেলস লিখে দিলাম।

    প্রথম অ্যালবাম ঃ সংবিগ্ন পাখিকুল ও কলাকাতা বিষয়কঃ গাথানি রেকর্ডস - ১৯৭৭
    গানঃ হায় ভালোবাসি । সংবিগ্ন পাখিকুল । কলকাতা কলকাতা । মেরুন সন্ধ্যালোক।

    দ্বিতীয় অ্যালবাম ঃ অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব ঃ হিন্দুস্তান রেকর্ডস - ১৯৭৮
    গানঃ অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব । সুধীজন শোনো।

    তৃতীয় অ্যালবামঃ দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি ঃ ভারতী রেকর্ডস - ১৯৭৯
    গানঃ এই সুরে বহুদূরে । চৈত্রের কাফন

    এরপরে অ্যালবাম বেরোয় সেই '৯৫ তে, আবার বছর কুড়ি পরে, '৯৬ তে ঝরা স্ময়ের গান, '৯৭ তে মায়া, '৯৯ তে খ্যাপার গান। সেই সব গান নিয়ে আপাতত আমরা কথা বলছি না।

    মহীনের প্রাক-সুমন গান সংক্রান্ত আলোচনা, এই আটটা গানেই সীমাবদ্ধ থাকবে আশা করি। যে আটটা গান কল্লোলদার মতে বাংলা গানের লোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। যে আটটা গান কল্লোলদার মতে হয়তো '৯২ এর সুমন, '৯৩ এর নচিকেতা, '৯৪ এর অঞ্জন, মৌসুমী ও শিলাজিৎ এরও আতুড়ঘর ই হবে।

    আলোচনা শুনছি।
  • কল্লোল | 125.184.105.0 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১০:০২568881
  • আমার কথা শেষ।
    ঘুচুক রাতের শেষ - এটা ভানু (তপেশ)র গান। মহীন আমলেই গানটা তৈরী তবে রেকর্ড হয়েছে অনেক পরে বেহালা চৌরাস্তার অ্যালবামে।
    ভানু মহীনের আদি ঘোড়া, তবে এক বছর পরেই ছেড়ে গেছিলো। মনিদার একটা সাংঘাতিক ডিক্টেটরশিপ ছিলো। ভানুর ভালো লাগতো না।
  • শিবাংশু | 127.197.249.92 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১১:২৯568883
  • aka ও নচিভক্ত,

    আপনাদের পর্যবেক্ষণে কোনও ভুল নেই। এ রকম তো ঘটতো-ই। আমিও দেখেছি এসব উন্মাদনা। তবে সুমন-নচিকেতাকে ঘিরে এই রকম এলিটিস্ট-সাব অল্টার্ন ভেদরেখা টানার উদ্যম আমাকে প্রভাবিত করেনা। ব্যক্তিগতভাবে নচিকেতার গান শুনতে গেলে আমার তাঁর শক্তির থেকে দুর্বলতার দিকটা বেশি কানে বাজে। তবে কি তিনি শক্তিহীন পারফর্মার? আমার বিচারে এর উত্তরটি অতো সহজ নয়। অন্য একটি টইতে নচিকেতার যাবতীয় 'দুর্বলতা' সত্ত্বেও প্লেইং টু দা গ্যালারির ক্ষমতার কথা আমি বলেছি। প্রথম জীবনে প্রচুর পুরোনো হিন্দি ছবির শ্রেষ্ঠ গানগুলি তিনি অভ্যেস করতেন, ফলে কণ্ঠস্বরে ও পরিবেশনায় জনরুচির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটা কৌশল তাঁর অধীত ছিলো। 'ক্ল্যাসিক্যাল বেস' নামক একটি লাল হেরিং যে তাঁর আয়ত্বে এ কথাটা তিনি ও তাঁর ভক্তরা সময়সুযোগ পেলেই প্রচার করতেন। এই 'ক্ল্যাসিক্যাল বেস' ব্যাপারটি যে আদতে কী, তা গায়ে দেয়, না মাথায় মাখে এখনও ঠিক বুঝতে পারিনা।

    বাংলা গানের গায়নশিল্পী হিসেবে আমার প্রথম কর্তব্য, যে গানটি আমি গাইবো তার প্রবলকোমল লিরিকগুণের মেজাজটির প্রতি বিশ্বস্ত থেকে এমনভাবে সুরের পর্দা লাগাবো যাতে কথাশব্দের অভিঘাত সঠিক মাত্রায় শ্রোতার কানে, মনে ও শেষ পর্যন্ত মস্তিষ্কে আঘাত করতে পারে। এই আঘাত গজালঠোকা জবরদস্তি হবে না। কারণ গান মানুষকে 'ভিতর' থেকে বদলে দেয়, প্রসাধিত মায়া দিয়ে মন ভোলানোর জন্য অনেক কিছু সাধন আছে, গান তার মধ্যে পড়েনা। নচিকেতার সঙ্গীতপদ্ধতির মধ্যে এই প্রসাধিত মায়ার আধিক্য আমার কানে বেজেছে।

    'ক্ল্যাসিকাল বেস' মানে কী? কণ্ঠের স্থিতিস্থাপকতা? অনায়াসে মীড়,মুড়কি,গমক, মূর্চ্ছনা, তানকারি, সপাট, হলক পরিবেশন করে শ্রোতাকে 'চমকে' দেওয়া? এ সবই তো অলংকারমাত্র, গান নয়। বাংলাগানের যে ছাঁচটির কথা আমি অন্যত্র বহুবার লিখেছি সেটা আবার বলি, গানের শরীরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তবেই তো অলংকার পরানোর প্রশ্ন আসছে। প্রাণহীন শরীরে অলংকারের ভার কোন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে? যখন গানের শরীর ও আত্মা নিরাভরন,নিরলংকার, নিরহংকার সাজ প্রত্যাশা করছে, তখন তাকে অকারণ সাজ পরানো শৈল্পিক শর্তের বিপ্রতীপে যাবে।

    অন্য একটি টইতে কেউ একজন বাংলাগানের প্রধান লিরিক রচয়িতা হিসেবে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কয়েকজন একালের পদ্যকারদের নাম লিখে দাবি করেছিলেন, তাঁরা ছাড়া কেউ 'বাংলা গান' লেখার কৌশল জানেননা। নিতান্ত ব্যক্তিগত মত এবং তা অনেকের হাসির উদ্রেকও করেছিলো, কিন্তু তার মধ্যে অনুধাবনের ব্যাপার হলো বাংলা গানে পদ্যকারের প্রাধান্য বিষয়ে স্বীকৃতির প্রসঙ্গটি। অর্থাৎ শব্দ মুখ্য, সুর আধারমাত্র। আমাদের দেশে অন্যান্য প্রান্তের প্রচলিত সঙ্গীত ধারার সঙ্গে বাংলাগান এই বিচারে আলাদা হয়ে যায়। ফিল্মগীতির এলাকার বাইরে একমাত্র উর্দুগানে শব্দের প্রতি এই রকম আনুগত্য দেখা যায়। কিন্তু উর্দু প্রকৃত অর্থে বাংলার মতো কোন জনগোষ্ঠীর ভাষা নয়। গত দুশো বছর ধরে লালন থেকে নিধুবাবু যে ফ্রেমটি তৈরি করে দিয়েছিলেন এবং তাঁদের উত্তরসূরিরা তাকে যে সার্থকতা দিয়েছেন, তা অন্য কোনও ভাষাগোষ্ঠীর ভাগ্যে ঘটেনি।

    সুমনের গানের মধ্যে সেই ঐতিহ্যটি অনুসরণ করার একটা ফল্গুধারা কানে বাজবে, যা নচিকেতার মধ্যে আমি পাইনি। নচিকেতা ফিল্মি কেতার গায়ক,সহজপথে লোকপ্রিয়। যেখানে তাঁর মনে হয় তাঁর গান শ্রোতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে বিফল হচ্ছে, তিনি অনায়াস কুশলতায় নাটকীয়তার আশ্রয় নিতে জানেন। সময় নয়, বাজার তাঁর কাছে যা প্রত্যাশা করছে,সেটা নির্ভুল ধরতে পারেন এবং সেটাই তাঁর USP । ব্যক্তিগতভাবে আমি সুমন বা নচিকেতা কাউকেই চিনিনা এবং কোন স্বার্থসম্বন্ধের প্রশ্নও আসেনা, কিন্তু একজন সাধারন শ্রোতা হিসেবে সুমনের প্রতি আমার পক্ষপাত উল্লেখিত কারণগুলির জন্যই বেশ প্রকট।

    আর লিখবো না, কারণ সুমনের সুরসংযোজন বিষয়ে ন্যাড়া কী লিখছেন সেটাই আপাতত এই টইয়ের মুখ্য উপজীব্য।

    কল্লোলদা,

    'মহীনে'র মূল্যায়ণ বিষয়ে তোমার এই অমূল্য আলোচনা একটা পৃথক টইয়ে দিলে হয়না। এই নিয়ে তোমার সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে, কিন্তু লিখিতরূপের একটা অন্য অনুশাসন থাকে। পাঠকদের সঠিক অনুধাবন করার জন্য তা জরুরি।

    আর কবিতায় 'রাজনীতি' কীভাবে আসে বা তার লক্ষণ কী, গুরুতে সেই নিয়ে পুরাকালে আমার সঙ্গে তোমার এবং অন্য চন্ডালদের নানা কোলাহল কী তোমার স্মরণে আছে? আমি কিন্তু এখনও অবস্থান পাল্টাইনি... ঃ-)

    সিকি হাজির হো...?
  • সিকি | 96.96.160.7 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১২:৫৮568884
  • আছি তো! :)
  • সিকি | 96.96.163.13 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৩:১৭568885
  • না, মহীন আলাদা নয়, এখানেই থাক। তুল্যমূল্য আলোচনাটা তা হলে এক জায়গাতেই ডকুমেন্টেড থাকছে। এই তুলনাটা হওয়া জরুরি। সময়, শ্রোতা, টেকনোলজি ইত্যাদি বিভিন্ন প্যারামিটারের পার্থক্য সত্ত্বেও মহীন আর সুমন কীভাবে দুটো আলাদা সময়ের কাছে আলাদাভাবে ধরা পড়েছে, সেটা থাক।
  • ন্যাড়া | 132.172.180.100 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৮:২৯568886
  • এও তো লোকগানই | লোকগান থেকে ধার নেওয়া একটা বাংলা গান দেখি যেখানে এই গঠন ব্যবহার করা
    হয়েছে -

    শুন শুন গো সবে শুন দিয়া মন |
    বিচিত্র কাহিনী এক করি বরণন ||
    এক দেশে এক বনের ধারে ছোট্ট নদীর তীরে |
    ছিল এক রাখাল ছেলে এক ছোট্ট কুটিরে ||
    আপন বলে তার
    কেউ ছিল না দুনিয়ার |
    সারাটা দিন ধেনু চরাত বনে |
    থামায়ে ডাকাডাকি,
    শুনিত পশুপাখি
    যখন বাজাত বেণু নিজেরই মনে |
    পশুপাখি, হরিণ, হাতি সাথী ছিল তার |
    সঙ্গে তাদের হেসেখেলে দিন যে যেত তার ||
    বুঝত সে তাদের কথা, তারা বুঝত তার |
    এমনি করে কয়েক বছর হয়ে গেল পার ||
    হঠাৎ কী হল মনে
    ভাবল রাখাল কী কারণে
    মানুষের সঙ্গ বিনা আর থাকা না যায় |
    যাছিল ঝুলি করি
    তাই নিয়ে সে দিল পাড়ি
    যাবার আগে সবার কাছে নিল সে বিদায় ||

    একেবারে খাপে খাপে মিলছে না, কিন্তু মূলধারাটা বোঝা যাচ্ছে | এটাও বলা যায় লোকগান যেহেতু কথা প্রধান, মানে নিজের
    আবেগ কথা দিয়ে বলা এবং, যদি শ্রোতার কথা ভাবা হয়, তাহলে শ্রোতার সঙ্গে ইমোশনাল কমিউনিকেশন কথার মধ্যে
    দিয়ে - তাই লোকগানের গঠন সরলরৈখিক, একই গানের ভেতর সুরে বৈচিত্র্য কম রাখা হয় যাতে শ্রোতার মন কথা থেকে
    বিক্ষিপ্ত না হয়ে পড়ে, এবং গান থেকে গানে সুরের একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায় | রামপ্রসাদ সেন তাঁর শ্যামাসঙ্গীতের
    ক্ষেত্রেও এই একই ডিভাইস ব্যবহার করেছেন | আমি এই লোকগানের আলোচনায় দলগত যে লোকগান সেগুলো বাদ
    রাখছি - যেমন জারি, সারি, ছাতপেটার গান ইত্যাদি | সেখানে সুরের একঘেঁয়েমি - কিন্তু ভিন্ন কারণে |

    সুমন তাঁর অধিকাংশ গানে এই পুনরাবৃত্তির গঠনকে আশ্রয় করলেন | একটু এগিয়ে এও বলতে পারি - রবীন্দ্রনাথ যে গানে
    সুর আর কথার সমপ্রাধান্যের জন্যে সারাজীবন সাধনা করে গেছেন (যাকে তিনি অর্ধনারীশ্বর সম্পর্ক বলে অভিহীত করতেও
    দ্বিধা করেননি), সেই বাংলা গান তাঁর পরের যুগ থেকে মূলতঃ গীতিকারের তুলনামূলক অক্ষমতার কারণে সুরপ্রধান হয়ে
    পড়ে | এই সঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার যে রবীন্দ্রনাথ যুগন্ধর হলেও মূলতঃ শব্দের কারিগর | জীবনের তৃতীয় পর্যায়ের গানে
    ছাড়া, তাঁর গানেও কথার ভার বেশি | তবু, একমাত্র রবীন্দ্রনাথই, বাংলা গানের বহমান ধারায় কথা ও সুরের আপেক্ষিক
    সমতা রক্ষা করতে পেরেছিলেন সবথেকে ভালভাবে |

    কিন্তু পরবর্তীতে সেই তুলাদন্ড একেবারেই ঝুঁকে পড়ে সুরের দিকে | পরে কেন - দ্বিজেন্দ্রলাল রায় থেকে শুরু করে দিলীপকুমার
    রায়, নজরুল ইসলাম, হিমাংশু দত্ত, সলিল চৌধুরী, সুধীন দাসগুপ্ত - এদের সবাই মুলতঃ সুরবিহারী | নজরুল আর সলিল
    চৌধুরী কথা ও সুরের সমতা রক্ষার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সবসময়ে পেরে ওঠেননি | সলিল না হয় সম্পূর্ণ সুরভোলা, কিন্তু
    নজরুল তো তখনকার অগ্রগণ্য কবিও | তাহলে তাঁর গানে কেন সুর কথার দুর্বলতাকে বার বার ছড়িয়ে গেছে সেটা ভেবে দেখার |
    সলিল বরং কখনও কখনও যুগের গীতিকার হয়ে উঠতে পেরেছেন | কিন্তু আমার ধারণা, এবং অ্যানেকডোটালি যা জানি তাতে
    মনে হয় যে, উনি কথাকে সবসময়ে সেরকম গুরুত্ব দিয়ে ওঠেন নি |

    সুমন এসে কথা ও সুরের সমতার গল্পটাকে পাল্টে দিলে এক ধাক্কায় - স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় যাই হোক | নব্বইয়ে সুমনের শুরু থেকে
    বাংলা গান হয়ে পড়ল বাচিক | সুরের ব্যাপারটা এদিক-ওদিক থেকে ধার করে সামলে নেওয়া যাবে - এই হল ভাবখানা |
    চন্দ্রবিন্দু যার উজ্জ্বল উদাহরণ |

    এই প্রেমিস থেকে আমাদের দেখতে ও শুনতে হবে সুমনের গান |
  • ন্যাড়া | 132.172.180.100 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৮:৩১568887
  • (আগের পোস্টটা বাতিল, কাট-অ্যান্ড-পেস্ট এরর)

    এর বাইরে আর একটা গঠন হল ব্যালাড বা পাঁচালীর গঠন | বা কথকতা | যেখানে গান ২-২-২-২ ... করে চলতে থাকে |
    যেমন ধরুন লক্ষ্মীর বারমাসি পাঁচালি -

    বছরে বৈশাখ মাস প্রথম যে হয়।
    পূজা নিতে এস গো মা আমার আলয়ে।।
    জৈষ্ঠ্য মাসে ষষ্ঠী পূজা হয় ঘরে ঘরে।
    কৃপা করি এস ওমা পূজা যে বা করে।।
    আষাঢ়ে আসিতে মাগো নাহি কর দেরী।
    পূজা হেতু রাখি মোরা ধান্য-দূর্বা ধরি।।
    শ্রাবণের ধারা দেখ চারিধারে পড়ে।
    পূজিবারে শ্রীচরণ ভেবেছি অন্তরে।।
    ভাদরের ভরা নদী কূল বয়ে যায়।
    কৃপা করে এস গো মা যত শীঘ্র হয়।।
    আশ্বিনে অম্বিকা সাথে পূজা আয়োজন।
    ...

    এও তো লোকগানই | লোকগান থেকে ধার নেওয়া একটা বাংলা গান দেখি যেখানে এই গঠন ব্যবহার করা
    হয়েছে -

    শুন শুন গো সবে শুন দিয়া মন |
    বিচিত্র কাহিনী এক করি বরণন ||
    এক দেশে এক বনের ধারে ছোট্ট নদীর তীরে |
    ছিল এক রাখাল ছেলে এক ছোট্ট কুটিরে ||
    আপন বলে তার
    কেউ ছিল না দুনিয়ার |
    সারাটা দিন ধেনু চরাত বনে |
    থামায়ে ডাকাডাকি,
    শুনিত পশুপাখি
    যখন বাজাত বেণু নিজেরই মনে |
    পশুপাখি, হরিণ, হাতি সাথী ছিল তার |
    সঙ্গে তাদের হেসেখেলে দিন যে যেত তার ||
    বুঝত সে তাদের কথা, তারা বুঝত তার |
    এমনি করে কয়েক বছর হয়ে গেল পার ||
    হঠাৎ কী হল মনে
    ভাবল রাখাল কী কারণে
    মানুষের সঙ্গ বিনা আর থাকা না যায় |
    যাছিল ঝুলি করি
    তাই নিয়ে সে দিল পাড়ি
    যাবার আগে সবার কাছে নিল সে বিদায় ||

    একেবারে খাপে খাপে মিলছে না, কিন্তু মূলধারাটা বোঝা যাচ্ছে | এটাও বলা যায় লোকগান যেহেতু কথা প্রধান, মানে নিজের
    আবেগ কথা দিয়ে বলা এবং, যদি শ্রোতার কথা ভাবা হয়, তাহলে শ্রোতার সঙ্গে ইমোশনাল কমিউনিকেশন কথার মধ্যে
    দিয়ে - তাই লোকগানের গঠন সরলরৈখিক, একই গানের ভেতর সুরে বৈচিত্র্য কম রাখা হয় যাতে শ্রোতার মন কথা থেকে
    বিক্ষিপ্ত না হয়ে পড়ে, এবং গান থেকে গানে সুরের একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায় | রামপ্রসাদ সেন তাঁর শ্যামাসঙ্গীতের
    ক্ষেত্রেও এই একই ডিভাইস ব্যবহার করেছেন | আমি এই লোকগানের আলোচনায় দলগত যে লোকগান সেগুলো বাদ
    রাখছি - যেমন জারি, সারি, ছাতপেটার গান ইত্যাদি | সেখানে সুরের একঘেঁয়েমি - কিন্তু ভিন্ন কারণে |

    সুমন তাঁর অধিকাংশ গানে এই পুনরাবৃত্তির গঠনকে আশ্রয় করলেন | একটু এগিয়ে এও বলতে পারি - রবীন্দ্রনাথ যে গানে
    সুর আর কথার সমপ্রাধান্যের জন্যে সারাজীবন সাধনা করে গেছেন (যাকে তিনি অর্ধনারীশ্বর সম্পর্ক বলে অভিহীত করতেও
    দ্বিধা করেননি), সেই বাংলা গান তাঁর পরের যুগ থেকে মূলতঃ গীতিকারের তুলনামূলক অক্ষমতার কারণে সুরপ্রধান হয়ে
    পড়ে | এই সঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার যে রবীন্দ্রনাথ যুগন্ধর হলেও মূলতঃ শব্দের কারিগর | জীবনের তৃতীয় পর্যায়ের গানে
    ছাড়া, তাঁর গানেও কথার ভার বেশি | তবু, একমাত্র রবীন্দ্রনাথই, বাংলা গানের বহমান ধারায় কথা ও সুরের আপেক্ষিক
    সমতা রক্ষা করতে পেরেছিলেন সবথেকে ভালভাবে |

    কিন্তু পরবর্তীতে সেই তুলাদন্ড একেবারেই ঝুঁকে পড়ে সুরের দিকে | পরে কেন - দ্বিজেন্দ্রলাল রায় থেকে শুরু করে দিলীপকুমার
    রায়, নজরুল ইসলাম, হিমাংশু দত্ত, সলিল চৌধুরী, সুধীন দাসগুপ্ত - এদের সবাই মুলতঃ সুরবিহারী | নজরুল আর সলিল
    চৌধুরী কথা ও সুরের সমতা রক্ষার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সবসময়ে পেরে ওঠেননি | সলিল না হয় সম্পূর্ণ সুরভোলা, কিন্তু
    নজরুল তো তখনকার অগ্রগণ্য কবিও | তাহলে তাঁর গানে কেন সুর কথার দুর্বলতাকে বার বার ছড়িয়ে গেছে সেটা ভেবে দেখার |
    সলিল বরং কখনও কখনও যুগের গীতিকার হয়ে উঠতে পেরেছেন | কিন্তু আমার ধারণা, এবং অ্যানেকডোটালি যা জানি তাতে
    মনে হয় যে, উনি কথাকে সবসময়ে সেরকম গুরুত্ব দিয়ে ওঠেন নি |

    সুমন এসে কথা ও সুরের সমতার গল্পটাকে পাল্টে দিলে এক ধাক্কায় - স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় যাই হোক | নব্বইয়ে সুমনের শুরু থেকে
    বাংলা গান হয়ে পড়ল বাচিক | সুরের ব্যাপারটা এদিক-ওদিক থেকে ধার করে সামলে নেওয়া যাবে - এই হল ভাবখানা |
    চন্দ্রবিন্দু যার উজ্জ্বল উদাহরণ |

    এই প্রেমিস থেকে আমাদের দেখতে ও শুনতে হবে সুমনের গান |
  • PT | 213.110.246.230 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৯:৫০568888
  • একজন দেবব্রত বিশ্বাসকে কি প্রয়োজন সুমনের গানকে ম্যাঙ্গো পাবলিকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য? নাকি সুরের কাঠামোর জন্য সুমন বিস্তার লাভ করলেন না?
  • aranya | 78.38.243.161 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:১৬568889
  • ভাল লাগল, চৈত্রের কাফন - যে গেছে বনমাঝে।

    বাংলা গান নিয়ে যাবতীয় কথাবার্তা এই টই-তেই চলুক।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২০:৪২568890
  • এপারে ৯০ এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে জেনারেল এরশাদ সরকারের পতনের পর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলায় প্রথম সুমনের অডিও ক্যাসেট শোনা হয়। তখন বইমেলায় দেদার বাজতো অডিও ক্যাসেটে গান-কবিতা, শেখ মুজিব, জিয়াউর রহমান, এমনকি হাসিনা ও খালেদা। রাস্তা জুড়ে চটপটি, ফুচকা, পোস্টার, খেলনাপাতি, হাড়িকুড়ি, এমনকী আসবাবপত্রের দোকানপাটও ছিলো, বাংলা একাডেমীর বইমেলার বাইরের আদলটি ছিলো মিনাবাজারের, বৈশাখি মেলার।

    সেই সময়ে বাংলা ভাষাকে ইংরেজী উচ্চারণে, না হয় কিম্ভুদ উচ্চারণ ও সুর দিয়ে রক, মেটাল, হেভি মেটাল ব্যান্ডের কান ঝালাপালা চিৎকারের দারুণ খরার ভেতর সুমনের "তোমাকে চাই" ছিলো তরুণ-তাজা প্রাণে এক পশলা বৃষ্টির মতো নবধারা জল। ...

    সদ্য ছাত্রত্ব পেরুনো বা ছাত্রত্ব পেরিয়ে যাওয়ার কালে সুমন অনেকের অস্তিত্বের অনেকখানিই আয়েসে দখল করেন। সে সময় ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে, লিটল ম্যাগাজিনের আড্ডায়, পাঠচক্রে, চা কাপে ঝড় তোলেন উডেন গিটারের শিল্পী...ক্যাসেটে ক্যাসেটে কপি হতে হতে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে তার আশ্চর্য ভরাট কণ্ঠস্বর।

    তার "পেটকাটি চাঁদিয়াল", "তোমাকে ভাবাবোই ভাবাবো" বা "বাহবা শাবাশ! বড়দের দল"...দ্রুত দখল করে যুবমন, নচিকেতা, অঞ্জন দত্ত-ও খানিকটা সমান তালে ["লাল ফিতে সাদা মোজা", পরে অবশ্যই মৌসুমী ভৌমিক ও অন্যান্য]। ...

    তিনি এখানে বিশেষভাবে আবির্ভূত হন মেলোডিয়াস সুরে দিন বদলের গানে, স্মরণ করিয়ে দেন প্রায় বিস্তৃত কবি শহীদ কাদেরীর ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধকেও [কবিতা থেকে গান-- "তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা"]। ...

    মাঝে তার বাংলাদেশ সফর, শীর্ষ দৈনিকগুলোতে সাক্ষাৎকার [তখনো বেসরকারি টিভি চ্যানেল+এফএম রেডিও শুরু হয়নি, মোবাইল ফোনের কথাও আমরা জানতাম না, ফোন ছিলো এনালগ, সরকারি টিভি বিটিভিতে সুমনের স্থান হয়নি]...ষোলআনা বাঙালিয়ানায় খুব আপন মনে হয় তাকে...জনপ্রিয় হতে হতে...সুমনের গানেই একেকজন বোধহয় খুঁজে পান নিজস্ব "সঞ্জিব পুরোহিত"কে এবং "১০ ফুট বাই ১০ ফুট" চক্রের ভেতর। ...
    সম্ভবত, ওই সব সুরের ছোঁয়ায় রাতারাতি এপারে বদলে যায় মধ্যবিত্ত, প্রজন্ম ১৯৭১-এর গানের রুচি [মাফ করবেন, চলতি টই-লেখক গানের শ্রোতামাত্র, এই লাইনে বিদগ্ধ কেনো কেউকেটা একেবারেই নন, অতএব ভুলত্রুটি নিজগুনে মার্জনীয়], সাতের দশকে আজম খান যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে যে ভাঙা সমাজ, প্রেম ও স্বপ্নের কথা বলেছিলেন, তাই যেনো অন্যসূরে, অন্য কথায়, অন্যভাবে উপনিবেশ গড়ে তাজা প্রাণে। একে একে তৈরি হয় এদেশীয় আরো নানা মেলোডেয়াস গানের দল ["দলছুট" ইত্যাদি]।

    তারা ফরহাদ মজহারের ১৯৭১ উত্তর কবিতাকে গানে তুলে আনেন ["এই নষ্ট শহরে"], প্রায় অজানা কবি সাজ্জাদ শরীফকে ["রাত সাবধান"], কামরুজ্জামন কামু নামের উত্তরবঙ্গের আরেক সাংবাদিক-কবিকেও ["বায়েস্কোপের নেশা আমায় ছাড়ে না"] এবং অতি অবশ্যই বাউল শাহ আব্দুল করিমকেও ["গাড়ি চলে না"]। ...

    রুচি বদলের এই নিরব জমিনটি সুমনই তৈরি করেন [পুনর্বার: সম্ভবত]। এরপর একের পর এক ব্যান্ড ও বাউল গান, জীবনমুখি গান, কবিতা থেকে গান, আড্ডায় লেখা গানের বিস্ফোরণ ঘটে, ছোট ছোট বিস্ফোরণ ঘটেই চলে [আহ আনুশের!]

    মাঝে সুমন-সাবিনা প্রেম, ধর্ম ত্যাগ, দলবাজী, তৃণমূল কংগ্রেসী মেজাজ-- ইত্যাদি তার পুরনো আসনটিকে কখনো কোথাও টলিয়ে দেয়? কে জানে? সুমন কবির [সাবেক চট্টপাধ্যায়] ক্রেজ ততো দিনে অনেকটাই ফ্যাকাশে।

    এপারেই শিল্পীর শিল্পবিপ্লব ঘটায় "ক্লোজ আপ ওয়ান" নামক করপোরেট শিল্পী তৈরির বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর হুল্লোড়। এসএমএস ভোটবন্যায় রাতারাতি স্টার বনে যান খুদে গানরাজ একেকজন কচিকণ্ঠ [দাঁতের মাজনের শিল্পীরা এক/দেড় দশক পর এখন কে কোথায় কতোটা গানের অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত, তা ভিন্ন প্রসঙ্গ হলেও এই ভাবনাটি না হয় ঢেঁড়াচিহ্নের নীচেই থাক], ইন্সট্যান্ট নুডলসের মতো দ্রুত তারা প্রতিষ্ঠা পান গাড়ি,বাড়ি, অ্যালবাম, টিভি শো, এমনকী মোবাইল ফোনের রিং টোনেও। ...

    আর এই সেদিন সাপলুডুর যোগসূত্রে বা টিভি চ্যানেল টিউন করতে করতে এবং আদিবাসী ভাবনার কারণে করোটির গভীরে হানা দেন সুমন, সব ভাবনা ছপিয়ে যায় লালগড় বিদ্রোহ ["কোয়ায় গণ? কোথায় তন্ত্র? বোকার স্বর্গে বাস, বড্ডো শিক্ষা দিচ্ছে আমায়, লালমোহের লাশ" http://t.co/eRCLXCa6 ]।

    জিও!
  • নচিভক্ত | 127.194.204.87 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২৩:৪৫568891
  • বাংলা গানের গা থেকে পদ্যগন্ধ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে সুমন তাকে দিয়েছিলেন গদ্যের রাজপোষাক। স্বপ্নালু রোমান্টিজমের মোড়ক হ্যাঁচকায় খুলে সুমন বাংলা গানে দিলেন সাংবাদিক বাস্তবতা। এভাবে বললে কি খুব ভুল বলা হবে?
  • curious | 131.241.218.132 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১০:২২568892
  • timeline টা একটু কনফিউস করছে ।সুমনের তোমাকে চাই ক্যাসেট ৯২ তে বেরিয়েছিল না? আর নচির এই বেশ ভালো আছি ৯৩ ,পুজো তে ঢেলে বেজেছিল। অঞ্জন এর শুনতে কি চাও ৯৪ পুজোয় বেরোয়। সুমন নচি নব্বই তে উত্তুঙ্গ জনপ্রিয়তা পেয়ে গ্যাছে বলা কি ঠিক?
  • নচিভক্ত | 69.160.210.2 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৩:১৮568894
  • মহীনের যে আটটা গান নিয়ে কথা হচ্ছে, সুমনের সাথে তুলনা হচ্ছে, এক জায়গায় থাক, আলোচনার সুবিধার্থে। যদিও কিছু কল্লোলদা লিখেছেন, আবার একত্রে সংকলিত করে রাখলাম।

    প্রথম অ্যালবামঃ সংবিগ্ন পাখিকুল ও কলাকাতা বিষয়কঃ গাথানি রেকর্ডস - ১৯৭৭
    গানঃ হায় ভালোবাসি ।

    ভালোবাসি জোছনায় কাশবনে ছুটতে
    ছায়াঘেরা মেঠোপথে ভালোবাসি হাঁটতে
    দূর পাহাড়ের গায়ে গোধূলীর আলো মেখে
    কাছে ডাকে ধানক্ষেত সবুজ দিগন্তে
    তবুও কিছুই যেন ভালো যে লাগেনা কেন
    উদাসী পথের মাঝে মন পড়ে থাকে যেন
    কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও

    ভালো লাগে ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ভাসতে
    প্রজাপতি বুনো হাঁস ভালো লাগে দেখতে
    জানলার কোনে বসে উদাসী বিকেল দেখে
    ভালোবাসি একমনে কবিতা পড়তে
    তবুও কিছুই যেন ভালো যে লাগেনা কেন
    উদাসী পথের মাঝে মন পড়ে থাকে যেন
    কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও

    যখন দেখি ওরা কাজ করে গ্রামে বন্দরে
    শুধুই ফসল ফলায় ঘাম ঝরায় মাঠে প্রান্তরে
    তখন ভালো লাগে না লাগে না কোন কিছু
    সুদিন কাছে এসো ভালোবাসি একসাথে আজ সব কিছু

    ভালোবাসি পিকাসো বুনুয়েল দান্তে
    বিটলস ডিলান আর বিঠোফেন শুনতে
    রবিশংকর আর আলি আকবর শুনে
    ভালো লাগে ভোরে কুয়াশায় ঘরে ফিরতে
    তবুও কিছুই যেন ভালো যে লাগেনা কেন
    উদাসী পথের মাঝে মন পড়ে থাকে যেন
    কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও

    যখন দেখি ওরা কাজ করে গ্রামে বন্দরে
    শুধুই ফসল ফলায় ঘাম ঝরায় মাঠে প্রান্তরে
    তখন ভালো লাগে না লাগে না কোন কিছু
    সেদিন কাছে এসো ভালোবাসি একসাথে আজ সব কিছু

    গানঃ সংবিগ্ন পাখিকুল ।

    রানওয়ে জুড়ে পড়ে আছে শুধু কেউ-নেই-শূন্যতা
    আকাশে তখন থমকিয়ে আছে মেঘ
    বেদনা বিধুর রাডারের অলসতা
    কিঞ্চিত সুখী পাখীদের সংবেগ

    এমন বিশাল বন্দরে বহুকাল
    থামেনি আকাশবিহারী বিমানযান
    এখানে ওখানে আগাছার জঞ্জাল
    শূন্য ডানায় বায়ু বীত-গতি বেগ
    এমন ছবিতে কিশোরী মানায় ভালো
    ফ্রকে মুখ গুঁজে কাঁদে চুল এলোমেলো

    চারণ দেখেছে এই ছবিখানি তাই
    হৃদয়ে জমেছে শূন্যতা উড়ু মেঘ
    চারণ ভোলেনা এই ছবিখানি তাই
    বড় মায়া লাগে বড় তার উদ্বেগ
    আকাশে তখন ঝড় এসে যাবে বলে
    থমকিয়ে আছে মেঘ

    গানঃ কলকাতা কলকাতা ।

    ভেসে আসে কলকাতা কুয়াশা তুলিতে আঁকা,
    শহরতলির ভোর মনে পড়ে
    কাঠচাঁপা আর কৃষ্ণচূড়ার শৈশব শুধু খেলা করে
    স্মৃতির ভেতর ট্রামের ধ্বনি বিবাগী সুর গড়ে
    এই প্রবাসে ক্যালেন্ডারের পাতাই শুধু ঝরে
    কলকাতা ও কলকাতা, কলকাতা ও কলকাতা

    গুলতি ছোঁড়া ঘুড়ি ওড়ার অগস্ট দুপুর কে দেবে ফিরে
    পরবাসের হৃদয় জুড়ে এই অভিমান শুধু ঝরে
    স্টীমার ঘাটের ভোঁ কেন আজ আবার উদাস করে
    ভেসে আসে কলকাতা শুধু কুয়াশার ভোরে
    কলকাতা ও কলকাতা, কলকাতা ও কলকাতা

    গানঃ মেরুন সন্ধ্যালোক।

    দিন চলে যায়, সন্ধ্যেবেলায়, বসে একা উদাস হাওয়ায়
    যতো ভাবি সুর
    বন্পথ দূর, সুবাসী বায়ে মহুয়া মুকুল
    ভেসে আসে গান, সাঁঝুলি আলোয়
    মহুয়া মেদুর শিমুলিয়া সুর

    জো জো দারু রে সিতাজুবা কা না সিতা জুবা কা না
    সিতা হুঁ কাঁই কাঁই জুবা হুঁ জাই জাই
    দুলাংগাতি জো জো জোমকে
    আনতুরা মিনাল পিকোলি রে কাঁই না না
    তুলি ছুপে হো। ইতাম তুতে কানা ইতাম তুতে
    দুলাংগাতি জো জো জোমকে

    দিন চলে যায়, সন্ধ্যে বেলায়, বসে একা উদাস হাওয়ায়

    দ্বিতীয় অ্যালবাম ঃ অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব ঃ হিন্দুস্তান রেকর্ডস - ১৯৭৮
    গানঃ অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব ।

    আধো আলো আঁধারের কোন এক নগরের
    মেস ঘরে থাকি চারজন
    ট্রাম গাড়ি টেম্পোরা শব্দের আল্পনা
    দিয়ে ঘিরে রাখে সারা'খন
    রাত কিবা কিবা দিন ঘেমো ঘরে আলোহীন
    ভৌতিক কেরানীরা রই
    আবছায়ে নড়িচড়ি থুতনিতে রুখু দাড়ি
    এই কোলাহলে নিরজন

    অজানা ইথার শরীর শুধুই দেওয়াল জুড়ে
    কাটে সারাদিন সময়ের কঠিন করাত
    নিশাচর ইঁদুরেরা ছিঁড়ে চলে দিনভরা
    রোদহীন ছায়ার বনাত
    তবু সব শনিবারে তারা সব আসে ফিরে
    ছাদে উঠে যায় চারজন
    টিভির অ্যান্টেনা যেন বা মাছের কাঁটা
    বেড়ালের তরে আয়োজন

    শহর আলোয় উজল
    ধোঁয়াশায় আকাশ পিছল
    ছাদে এসে নামে ভীনগ্রহী ফ্লাইং সসার

    জেনো সব কেরানীরা এইভাবে ঘোরে তারা
    পড়ে থাকে যতো অফিসার

    গানঃ সুধীজন শোনো।

    শুধু আজ নয় প্রতিদিন
    সাত পাঁচ ভাবনা আর সূঃস্বপ্ন মেখে ঘুম ভাঙে আমার
    তোমরা কেমন আছো?
    তোমরা কি আমলকি গাছের ছায়ায় মোষের বিষন্ন ডাক শুনে আনমনা হও
    আগেকার মতো?

    শোনো সুধীজন, শোনো প্রইয়জন
    শোনো সুধীজন, শোনো প্রইয়জন

    শুধু আজ নয় প্রতিরাত
    তোমাদের পরকাল ভেবে
    তোমাদের কথা ভেবে ঘুমহীন রাত জাগি
    নগরবাসীরা শোনো
    তোমাদের অন্যায়ে আমাদের অবহেলা মিশে কোন নরক মাতায়
    তা জানো কি?

    শোনো সুধীজন, শোনো প্রইয়জন
    শোনো সুধীজন, শোনো প্রইয়জন

    শুধু শেষ নয় শুরুতেই
    বড়শির আঁকশিতে বিঁধে, আকাশের দিকে পিঠ হাজার চড়ক ঘুরছে
    নিচে শত হাততালি মেরে উল্লাসে ফেটে গেছ কতোবার
    ঝুলন্ত মানুষের ব্যথাছবি রাঙা চোখে চেয়ে
    তা মানো কি?

    শোনো সুধীজন, শোনো প্রইয়জন
    শোনো সুধীজন, শোনো প্রইয়জন

    তৃতীয় অ্যালবামঃ দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি ঃ ভারতী রেকর্ডস - ১৯৭৯
    গানঃ এই সুরে বহুদূরে ।

    এইসুরে বহুদূরে চলে যাবো, চলে যবো -
    পথ দেখাবো, পথ, দেখাবো
    আসলে এসো না এই নতুনপুরে
    আর ভাবনা নেই
    আপনাতেই সুর ঝরাবো, সুর ঝরাবো
    সব সরাবো সদ সরাবো
    সবকিছু যা আছে পুরোনোতেই

    ফিরবো না পিছনে
    আর অন্ধকারে
    শব্দবিহীন শব্দের এই আঁধারে।

    আর দেরি নয়, দেরি নয়
    মন চলে মন চলে
    ছাউনিতলে ছউনিতলে
    যেখানে পাবো ভোরের স্বপ্নজয়

    গানঃ চৈত্রের কাফন

    যে গেছে বনমাঝে চৈত্র বিকেলে
    যে গেছে ছায়াপ্রাণ বনবিথীতলে
    বন জানে অভিমানে গেছে সে অবহেলে
    যে গেছে অশ্রুময় বন অন্তরালে

    আকাশে কেঁপেছে বাঁশিসুর
    আঁচলে উড়েছে ময়ূর
    চলে যাই / বলেছিলো চলে যাই
    মহুল তরুর বাহু ছুঁয়ে
    যে গেছে অশ্রুময় বন অন্তরালে

    সে বুঝি শুয়ে আছে চৈত্রের হলুদ বিকেল
    সেখানে চূর্ণফুল ঝরে তার আঁচলে
    সেখানে চূর্ণফুল ঝরে তার কাফনে

    এই সম্বল, মহীনের, সুমনের আগে তাদের গানের ভান্ডারে,সব মিলিয়ে প্রকাশিত কনটেন্টে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন