এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • বাংলা গান ও সুমন

    ন্যাড়া
    গান | ২৫ আগস্ট ২০১২ | ৮৩৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • b | 135.20.82.164 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৩:৪৪568895
  • বাঃ।
  • কল্লোল | 111.63.195.149 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৭:২৭568896
  • নচিভক্ত। একটু তথ্যগত ভ্রান্তি। এই গানকটা ৭০এর মহীনের প্রকাশিত গান। তার মানে এই নয় যে আর গান ছিলো না।
    তা যাই হোক, হাতের কাছে এগুলোই পাওয়া যাচ্ছে।
  • নচিভক্ত | 69.160.210.2 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৭:৪৩568897
  • ** ""প্রকাশিত কনটেন্টে"" , লিখেছি, কল্লোলদা।
  • siki | 96.96.161.9 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৭:৪৫568898
  • জো জো দারু রে সিতাজুবা কা না সিতা জুবা কা না -- এই গানটা আমি শুনি নি। বাড়ি ফিরে শুনতে হবে যদি কোথাও পাই। তবে সামহাউ ওয়ার্ডিং দেখে আমার খুব ছোটবেলায় ব্রতচারীতে শেখা একটা অজানা ভাষার গান মনে পড়ে গেল। কে জানে, সুরটা একইরকমের কিনা!

    গানটা ছিল এই রকমঃ

    জু জু দারুজে সিতারুবা বাইয়া
    জু জু জু বাইয়া
    সিতারুবা বাইয়া
    দোলনা গাসি কোকো ঝুম, তে-এ-এ

    ধান কুআ মিনাল পিকা
    তেরে নেরে নাইয়া
    হোলি কুপে হো --
    আটান টুটি টাইয়া
    আ-টান টুটি
    আটান টুটি টাইয়া
    দোলনা গাসি কোকো ঝুম
    তে-এ-এ।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৮:২০568899
  • @ নচিভক্ত,

    ["বাংলা গানের গা থেকে পদ্যগন্ধ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে সুমন তাকে দিয়েছিলেন গদ্যের রাজপোষাক। স্বপ্নালু রোমান্টিজমের মোড়ক হ্যাঁচকায় খুলে সুমন বাংলা গানে দিলেন সাংবাদিক বাস্তবতা। "]

    এ ক ম ত। চমৎকার বলেছেন। চলুক। ♥
  • প্পন | 126.202.159.77 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:৩৬568900
  • বিপ্লব, সঞ্জীব চৌধুরীকে নিয়ে একটু বিস্তারিত লিখবেন?
  • ন্যাড়া | 132.179.24.99 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২৩:৩৩568901
  • গান ধরে ধরে আলোচনা করা তো সম্ভব নয়, তাই আমি ছোট ছোট করে সুমনের কতকগুলো সুর বৈশিষ্ট্য ও গায়ন
    বৈশিষ্ট্যর উল্লেখ করব |

    (হাতের কাছে ঠিক সময়ে বইপত্তর খুঁজে পাওয়া অসম্ভব, বিশেষতঃ বাড়ি-বদলের পরে | কাজেই, মন থেকে লিখছি |)
    সত্যজিৎ রবীন্দ্রনাথের গাওয়া গান শুনে বলেছিলেন যে রবীন্দ্রনাথের গানে চার-আনা আবৃত্তি | সত্যজিতের কথার সত্যতা
    অনেকটা বোঝা যায় রবীন্দ্রনাথের শেষ বয়সের "তবু মনে রেখ" শুনলে (
    )
    |

    সুমনের প্রথম অ্যালবামের গানগুলো, বিশেষতঃ গীটারে গাওয়া গানগুলো, শুনলে সেই একই উপলব্ধি হয়, যে এই
    গানে চারআনা আবৃত্তি লুকিয়ে আছে | আবৃত্তি বলব না, বরং কথকতা লুকিয়ে আছে | এটা সুমনের গায়নের খামতি
    নয়, এটা ওনার গানের ভঙ্গি, এটাই ওনার স্বরপ্রয়োগের কায়দা | এটা আরও স্পষ্ট বোঝা যায় নাগরিকের অ্যালবামে
    একই গানের গাওয়া শুনলে | যতদূর মনে পড়ছে ওই অ্যালবামের "তোমাকে চাই", "তুই হেসে উঠলেই",
    "মনখারাপ-করা বিকেল", "কখনও সময় আসে" এরকম কটা গান ছাড়া আর অন্য গানে কথকতা মেশানো |

    দেবাশিস দাসগুপ্তর লেখায় আমরা পড়েছি কী করে আবৃত্তি থেকে "অবাক পৃথিবী" গান হয়ে উঠেছিল | এবং গান
    হয়ে ওঠার পর তাতে আর কথকতার ছোঁয়া ছিল না | সুমনের গানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সেরকম নয় | তাঁর সুরে কথা বলার
    ছোঁয়া লেগে থাকে | মনে করুন "কখনও সময় আসে" গানে যেখানে সুমন গাইছেন "ঠিক যেন পড়ে পাওয়া চোদ্দআনা" |
    এই বাক্য আবৃত্তি করলে একজন কথক যেভাবে "ঠিক" শব্দের উচ্চারণ করবেন ওই "ঠিক" শব্দের সুরে একেবারে
    সেই নোটগুলোই ব্যবহার করা হয়েছে, খালি একমাত্রা বেশি লেগেছে | কিংবা "হাল ছেড়ো না" গানে "বরং কণ্ঠ ছাড়
    জোরে" অংশের 'কণ্ঠ' শব্দে যে সুরপ্রয়োগ, সেখানেও একই কনসেপ্ট | খুঁজে খুঁজে এরকম আরও উদাহরণ দেওয়া যায় |

    অর্থাৎ এই ধরণের গানে সুমন তার আটপৌরে কথাকে উচ্চকিত সুরেলা আবৃত্তি হিসেবে ধরতে চাইলেন, এরকম কী
    ভাবা যায় না ?
  • বলরাম হাড়ি | 223.210.236.146 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০০:১৩568902
  • এইটাই বলব ভাবছিলাম। সুমন সুরে কথা বলেন।

    ট্র্যাডিশনটা বাংলাদেশে ছিল। পালাকীর্তনে, কথকতায়, যাত্রায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গীতিনাট্যে ব্যবহার করেছেন। বাল্মীকি প্রতিভা বা চিত্রাঙ্গদায় কথোপকথনে সুর বসিয়েছেন। কিন্তু যখন আলাদা গান লিখেছেন তখন সেটা ঠিক আর কথায় সুরের বদলে সুরের কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কি গীতিনাট্যতেও। রাজপুত্র যখন "ওগো শান্তপাষাণমুরতি" গান তখন সেটা ঠিক সম্বোধন মনে হয় না। সলিল চৌধুরী মনে হয় প্রথম এই চাঁছাছোলা কথোপথনের ভাবটা নিয়ে এলেন। "এই রোকো" স্মর্তব্য। সুমন আরও সরাসরি, আরও ব্যাপকভাবে। "ও গানওয়ালা" বলে যখন ডাকছেন তখন একেবারে সরাসরি ডাক দিচ্ছেন, প্রাত্যহিক সম্বোধনের থেকে একটু সুরেলাভাবে ডাকছেন এই যা।
  • ... | 127.194.206.144 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০০:২৬568903
  • একটা তথ্যঃ
    অনুশ্রী-বিপুলের প্রথম অ্যালবাম বোধয় ৯১ তে "আমরা হাঁটি যেখানে মাটি"। দ্বিতীয় অ্যালবাম ৯২ তে ঝিম ঝিম নিশা লাগে। সেদিক দিয়ে নাগরিক কবিয়াল হিসেবে গান বানানোর ইতিহাসে উল্লেখ দাবি করেন মনে হয়।
  • ... | 127.194.206.144 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০০:৪২568905
  • নাগরিকের যা ডিটেলস আছে এক্ষুনি, নেটে, তা হল

    Kantha- Suman, Madhurita, Nibedita, Getosri, Kallol, Shibsankar, Jay
    Guitar-Kousik, Dhruba
    Key bord- Kishor, Suman
    Percussion- Kanad(Papai)
    Katha Sur O Parichalana- Suman

    Ganer Talika

    Third world theke
    Ekushe ain
    E bhanga shahortae
    Baro najehal akasta
    Amar dubahu prasarito kare
    Aro balo aro katha
    Bhagoban kato bhalo
    Gariahater mor
    Kakhono tumi jadi
    Kau hante
    Kakhyapathe ghurei jabo
    Manusher itihas
    Mane kare nao
    Stabdhatar gan
    Tin bandarer gan
    Tomar kather rang

    আর কল্লোলদার দেওয়া তথ্য থেকে মেম্বাররাঃ

    টিটো, টুকটুক, টুকি(ইনি নারী-ফলে গিটারিস্ট টুকি নন) - এদের ভালো নাম আমি ভুলে গেছি, যোগাড়ও করা গেলো না - সুমন চট্টো, গৌতম ভট্ট, শিবশঙ্কর, সুজয়, মধুঋতা(পরে কনকর্ড ট্রায়োর এক কন্যা), ইলা, কৌশিক, ধ্রুব বসু রায় (পরে মৌসুমীর সাথে গিটার বাজাতেন)।
    এরা অনেকেই শেষ পর্যন্ত ছিলেন না। শেষ-মেশ ছিলো সুমন-কৌশিক-ইলা-টিটো-টুকটুক-ধ্রুব।

    যাকগে, কিন্তু ন্যাড়াদা কথিত গান তো এখানে নেই। আমি কোথাও থেকে নামিয়েছিলাম, হার্ডডিস্ক দেখতে হবে। তবে কথকতা বিন্দুমাত্র ছিল না মনে হচ্ছে, কেবল গান পেয়েছিলাম "অন্য কথা অন্য গান" -এ।
  • Rana | 133.237.160.200 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০২:০৩568906
  • বহুদিন বাদে গুরুতে এলাম। প্রায় ৪-৫ বছর তো হবেই। এলাম কারণ আজ অফিসে বসে মেল চেক করতে করতে দুম করে দেখি সোমনাথ (পাপ্পুদা) মেল করে এই পাতার লিঙ্ক টা পাঠিয়েছে।

    কাব্যি করব না, যে "বহু যুগের পার হতে আষাঢ় এল" (এটা কাব্যি করার উৎক্‌ষ্ট্তম পন্থা), তবে অনেক দিন বাদে এসে বেশ ভালো লাগল। বিশেষত এই রকম একটা অত্যুৎক্‌ষ্ট থ্রেড পড়তে পড়তে কাজ কম্ম প্রায় মাথায় উঠে গেলো।

    প্রথমে ভাবলাম, সবাই সব কিছু তো এতো সুন্দর করে লিখেছে, আর এতো বিস্তারিত ধাপে ধাপে লেখা, যে এতে আমার মতো অর্বাচীনের লেখা হয়তো, বিনয় না করেই, থ্রেডটার উৎকর্ষতা খর্ব করতে পারে। আর সত্যি, ন্যাড়া বাবু আর কল্লোল বাবুকে অত্যন্ত ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে গুছিয়ে লেখার জন্য। অনেক অজানা কিছু জানলাম, অনেক আধা খ্যাঁচড়া জ্ঞান শুক্ল পক্ষের পূর্ণ শশধরের ন্যায়, পরিপূর্ণ হল এবং সব চেয়ে বেশি অবাক হলাম ওনাদের লিখন পদ্ধতির গ্‌হিনীপনা দেখে। ঠিক যা যা বলতে চেয়েছেন, ঠিক যেন তাই তাই লেখা। ধান ভানতে শিব রজ্ঞনীর মাহাত্ম্যকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে!

    দু তিনটে কথা মাথাতে ঘোরাঘুরি করছে। সবার আগে, মহীন আর সুমনের গীতলিপির তুলনা, বা বলা ভালো, আলোচনার মাঝে যে দিকটা একটু মনে হলো নজর এড়িয়ে গেছে তা হল, সুরের একটা কম্পারেটিভ স্ট্রাকচারাল বিশ্লেষণ।

    মহীনের গানের দু তিনটে সিগনেচার স্ট্রাকচার আমি লক্ষ্য করেছি, যেমন ১/ মাইনর স্কেলে প্রগ্রেসন (যেমন, কলকাতা কলকাতা, তোমায় দিলাম, সংবিগ্ন পক্ষীকূল, চৈত্রের কাফন, অ উ ব ইত্যাদি) ২/ লোকগীতি (অতি রক নয়, স্বাভাবিক বাংলা লোকগীতি, বর্তমান লোকগান শিল্পীরা অনেক বেশি পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন) (যেমন, ময়মনসিংহ গীতিকা, দরিয়া ইত্যাদি), ৩/ একটি মাত্র অদ্ভুত ফিউশন, টেলেফোন। এর বাইরে মহীনের স্ট্রাক্চার খুঁজে বের করা খুব কঠিন, তা আজকের দিনে, সদ্য তিন মাস গিটার শেখা ছেলে ছোকরাও হয়তো জানে।

    তবে মহীনের গানের সেই মিউজিকাল এলিমেন্টটা কি? একথা জোর দিয়ে বলা যায় যে, শুধু মাত্র লিরিকের জোরে কোনো গান চলেনা, এবং সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে, মহীনের লিরিক কোনোদিনই তাদের একমাত্র U.S.P ছিলো না।

    আমার মনে হয়, যারা কিছুটা ওয়েস্টার্ণ ক্লাসিকাল জানে, তারা ভাল ব্যাপারটা বুঝতে পারবে। মহীনের গান শুনলে স্পষ্ট বোঝা যায়, লোকগুলি যা করেছে জেনে করেছে। একটা উদাহরন দিলে কিছুটা বোঝা যেতে পারে।

    চৈত্রের কাফনের 2nd verse এর আগে থেকে প্রথম দুটি লাইন, "আকাশে কেঁপেছে বাঁশিসুর / আঁচলে উড়েছে ময়ূর / চলে যাই / বলেছিলে চলে যাই / মহুল তরুর বাহু ছুঁয়ে" পর্য্যন্ত, চট করে শুনলে মনে হয়, গানটা অন্য স্কেলে চলে গেল, বা নিদেন পক্ষে কিছু একটা অন্য রকম হল। যা হল, তাকে অসলে সাঙ্গীতিক পরিভাষাতে Mode Change বলা হয়। মূল গানটি চলে A Natural Minor স্কেলে, ব্যতিক্রম, b7 এর বদলে ন্যাচারাল 7th বা শুদ্ধ নিখাদ। অতএব, হিন্দুস্থানী মতে গান্ধার ও ধৈবত কোমল। সেখানে 2nd verse এ গিয়ে ব্যবহার করা হল, E Phrygian মোড, ঐ একই ব্যতিক্রমের সাথে। অর্থাৎ সব স্বর এক রেখে, হঠাৎ সপ্তকের অন্য একটি স্বর কে সা ধরে নেয়া। E Phrygian মোডটি A Minor এর পরিপ্রেক্ষিতে একটু চমকপ্রদ এবং বিপদ জনক পছন্দ, কেননা, এটি E স্কেলের একদম অপ্রচলিত (বিলিতি সঙ্গীতে, এ দেশের হিসাবে, E তে ভৈরবী রাগিনী) রূপকে নির্দেশ করে। তোমায় দিলাম এ, অন্তরাতে, A Minor থেকে তার রিলেটিভ মেজরের (C Major) শিফ্টও প্রসঙ্গ্যক্রমে উল্লেখ্য।

    দ্বিতীয়ত, হারমনি। মহীনের আগে, এমনতর কেউ কোরেছে কিনা সন্দেহ। সলিল চৌধুরি কে মনে রেখেই বলছি। সলিল চৌধুরী পারতেন না বলা ভুল হবে, তাঁর সঙ্গীত জ্ঞান ছিল অনন্য সাধারন। আমার মনে হয় তিনি স্বেচ্ছাক্‌ত ভাবেই, Harmonic Consonance and Disonance কে নিয়ে খুব একটা পরীক্ষার পর্য্যায়ে জান নি। Harmony ভারতীয় সঙ্গীতের অঙ্গ নয়, সলিল আমার মনে হয়,সযত্নে, গানের অঙ্গে অলঙ্কারের মত তাকে ব্যবহার করেছেন। সেখানে কলকাতা কলকাতা, অ উ ব বা চৈত্রের শুনলে, চট করে ঘোর লেগে যায়। হঠাৎ Simon & Garfunkel এর নাম মাথাতে এসে যায়। বাংলা গানে আমার যা শোনা, মহীন এ বিষয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ।

    ত্‌তীয়ত, যন্ত্র সঙ্গীতের ব্যবহার। অ উ ব তে পিয়ানো আর ভায়োলিন মার্ক, কলকাতা আর চৈত্রে অর্গান, চৈত্রে Spanish Flamenco styling এ গীটার এই সবি, এই পুরো যন্ত্রানুযোজনা আগে পুরো অনাস্বাদিত ছিল। এখনো শুনলে বোঝা যায়, শিল্পীরা কি পরিমান পারদর্শী এবং knowledgeble ছিলেন।

    ঘুম পেয়ে গেছে, কাল অফিস ও আছে। পরে আবার সময় সুযোগ বুঝে লেখা চালাবো।
  • একক | 24.96.153.181 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০২:৩৬568907
  • হাতি-ঘোড়া তলে গেছেন । আমি এট্টু পাকামি করে যাই ?

    মহিনের খ্যাতি কম কারন ওনারা যত ভালো লিরিসিস্ট + কম্পসার তত ভালো গায়ক নন । গৌতম বাদে ।

    কিন্তু

    কিন্তু

    গায়েন হলো সেই যে পটল তুল্লেউ লোকে তার গান গায় । শুধু রেকর্ড শোনে না । গায় ।

    উদিকে চাক বেরি থেকে ইদিকে নিধু বাবু ............অনেকে জানেই না কার গান। গেয়ে চলেছে ।

    আর গায় মহিন । ভবিষ্যতেও গাইবে । 'বিনীতা কেমন আছো' একদিন যে গাইবে জানবেও না কার গান।

    বাকিরা শুধু রেকর্ডে বাঁচবেন ।।
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৮:৩৪568908
  • রানা। এতোদিন কোথায় ছিলেন? মাফ করবেন, সেই জীবনান্দীয় ভাষা ধার করতে হলো বলে, এছাড়া এ অধমের আর কোন কথা মনে এলো না।
    গানের টেকনিকাল জায়গায় আমি পাঁড় অশিক্ষিত না হলেও অর্ধ শিক্ষিত বল্লে ভুল হয় না। গান গাই, গান শুনি, আর গান নিয়ে অধিকারীজনের সাথে আড্ডা মারি। আমার দৌড় এটুকুই।
    লক্ষ করবেন গান নিয়ে আমার বিশ্লেষনে সুরের দর্শন প্রাধান্য পায়। সুরের টেকনিকাল বিষয় নিয়ে কথ বলার অধিকারী নই, যতটুকু জানি ততটুকু দিয়ে গানের টেকনিকাল বিশ্লেষন হয় না।
    মহীনের গান আপনার লেখাটি অসাধারন। আপনাকে মহীনের তরফ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি মহীনদের বন্ধু মাত্র। মনিদা, বাপি, বুলা, ভানু আমার ভালো বন্ধু, বিশেষ করে বাপি। সেই অধিকারে ওদের তরফ থেকে ধন্যবাদ দিলাম।
    আপনি নিয়মিত আসুন গুরুতে, ন্যাড়া, শিবাংশুর সাথে আপনিও আমাদের গানাড্ডায় চলে আসুন, আমরা ম্যাঙ্গো পাব্লিক সম্বৃদ্ধ হই।
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৮:৩৫568909
  • * মহীনের গান নিয়ে
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১১:০১568910
  • রানা। অসুবিধা না হলে আপনার মেই আইডি দেবেন। কয়েকটা গান পাঠাতাম।
  • Rana | 212.75.197.116 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১১:৪০568911
  • নিশ্চয়ই, [email protected] বা [email protected]. আগাম ধন্যবাদ জানিয়ে রাখলাম।
  • Rana | 212.75.197.116 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১১:৫২568912
  • উপরের লেখাটিতে কেবল একটি সংশোধন। চ্ট করে মনে পড়্ল, চৈত্রের কাফনের যে স্কেল স্ট্রাকচার, সেটা Natural Minor নয়, A Harmonic Minor। E Phrygian Modal Shiftment ও এই নিয়মেই হয়েছে।

    কল্লোল বাবু কে ধন্যবাদ। মহীনের এতো কাছে ছিলেন বলেই হয়তো, ওনার আমার লেখাটা কিছু পদবাচ্য লেগেছে। ক্‌তিত্ব পুরোটাই মহীনের।
  • .... | 69.160.210.2 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৭:২০568913
  • তাইলে যা দাঁড়াল। লিরিকে সুমনের কাছে বলে বলে গোল খাবে মহীন। মহীনের গান "লেখা" ব্যপারটা তেমন কিছু নয়। চেষ্টাকৃত কবিতাপ্রচেষ্টা মাত্র। সুর ভালো কিন্তু বেসিকালি স্পেসিফিক স্ট্রাকচারে বাঁধা। বিশেষ কিছু বৈচিত্রসমৃদ্ধ নয়। অ্যারেঞ্জমেন্ট খুবই ভালো। আরে সে তো এব্রাহাম মজুমদার। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষক। হাতে রইল কভার ডিজাইন। আঁতলামির চুড়ান্ত। হাতে নিয়ে দেখলে আর কেনার ইচ্ছে করবে না, এমন সুররিয়ালিস্ট। অ্যাকাডেমীতে না টাঙিয়ে ছবি এঁকে এল পি রেকর্ডের খাপে সেঁটেছে। মঞ্চসজ্জা পরিকল্পনা নিয়ে কথা বললে তো শেষমাঠে থাকবেন শুধু শিলাজিৎ। ;-)
  • রোকেয়া | 213.110.243.22 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৭:৫৩568914
  • একটু পাকামি| "শোনো সুধীজন"-ও কি ওই 'সিগনেচার টিউন' ভেঙ্গে বেরোনো নয়?
  • বিপ্লব রহমান | 233.27.95.164 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৭:৫৮568917
  • এপারের শিল্পী সঞ্জিব চৌধুরী ছিলেন প্রজন্ম-৭১ এর চেয়ে বছর আটেকের বড়ো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়েছিলেন তিনি। পড়াশুনা শেষ করে নয়ের দশকের শুরুতে তিনি যোগ দেন সে সময়ের শীর্ষ দৈনিক ভোরের কাগজে। তিনি ছিলেন পত্রিকাটির ফিচার বিভাগের সম্পাদক।

    সঞ্জিব দা'ই প্রথম এপারের সংবাদপত্রে ফিচার পাতা প্রকাশের দুঃসাহস দেখান। তার সম্পাদনায় 'মেলা' নামের প্রথমে এক রঙা, তারপর দু রঙা হয়ে চার রঙা চার পৃষ্ঠার (ব্রড শিট) ফিচার পাতা প্রকাশিত হয়। এই পাতাটিকে ঘিরে রাতারাতি পত্রিকাটি পাঠকের মনে স্থান করে নেয়।

    সঞ্জিব দা ছিলেন অসম্ভব দিলখোলা একজন মানুষ। সবসময় হাসিখুশী, আড্ডাবাজ। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে তিনি বয়সের ব্যবধান একদম মানতেন না। সব সময় একদল ক্ষুদে সাংবাদিক কাম ফিচার রাইটার কাম প্রদায়ক কাম কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়ে ঘিরে থাকতো তাকে।

    ছোটবেলাতেই তিনি গান শিখেছিলেন, শখে চর্চ্চাটি ধরে রেখেছিলেন, আড্ডাবাজীর সূত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়র ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনের আঙিনায় প্রায়ই তিনি এসে হাজির হতেন লিটল ম্যাগের আড্ডায়। তাকে চা-সিগারেট-চপ-সিঙ্গারা ঘুষ দিয়ে অবলীলায় শুনে নেওয়া যেতো উদাত্ত কণ্ঠের গান। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয়। পরিচয়টি আরো ঘনিষ্ট হয় ১৯৯৮ সালে ভোরের কাগজে রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেওয়ার কর্মসূত্রে।

    প্রায় সন্ধ‌্যাতেই কোনো না কোনো পানশালায় সাংবাদিকদের আড্ডায় তার দেখা মিলতো। অনিবার্যভাবে বিশাল আড্ডার পানাহারের খরচ সঞ্জিব দা উদাত্তচিত্তে একাই বহন করতেন।

    সে সময় তার "দলছুট" নামক ছোট্ট গানের দলটি তৈরি হয়ে গেছে। তারা ফরহাদ মজহারের ১৯৭১ উত্তর কবিতাকে গানে তুলে আনেন ["এই নষ্ট শহরে"], প্রায় অজানা কবি সাজ্জাদ শরীফকে ["রাত সাবধান"], কামরুজ্জামন কামু নামের উত্তরবঙ্গের আরেক সাংবাদিক-কবিকেও ["বায়েস্কোপের নেশা আমায় ছাড়ে না"] এবং অতি অবশ্যই সিলেটের বাউল শাহ আব্দুল করিমকেও ["গাড়ি চলে না"]। ...প্রথম অ্যালবামের "গাড়ি চলে না" গানটি তখন মানুষের মুখে মুখে ফিরতো [আর এখন মোবাইল ফোনের রিংটোনে "আমার সারাটা দিন, মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি"]।

    এখানে-সেখানে স্টেজ শো করে আয়-রোজগার ভালোই করতেন। তাই খরচেও তিনি ছিলেন ব্যপক উদার। রীতিমতো দু হাতে টাকা ওড়াতেন তিনি। একদমই বিষয় চিন্তা তার ছিলো না। বলতে দ্বিধা নেই, সে সময় তার চিন্তা-জগতকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন যে সব সিনিয়র সাংবাদিক কাম কথিত শুভাকাঙ্খিরা, তারা অনেকেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তার পয়সাতেই পানাহার করতেন; তাকে সৎ পরামর্শ দিয়ে অভিভাবকত্ব দেখানোরও কেউ ছিলো না। এই অর্থে তারা কেউই প্রকৃত বন্ধু ছিলেন না কোনো মতেই।

    গানের জগতে ডুবে থাকতে থাকতে, সাংবাদিকতায় তার সময় কমে আসে। ভোরের কাজ ছেড়ে তিনি যোগদেন বিএনপি সমর্থিত দৈনিক যায় যায় দিন-এ [তখন এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন শফিক রেহমান], সেটি ২০০৩-৪ সালের কথা। ততোদিনে ক্ষমতাসীন বিএনপির গডফাদাররা কালো টাকা পুঁজি করে একাধিক বেসরকারি টেলিভিশন খুলে ফেলেছেন। এসব টিভিতেও সঞ্জিব দা'র দলছুট [এবং বাপ্পা মজুমদার] নিয়মিত শো করতেন।

    তবে খুব শিগগিরই তিনি পানাসাক্ত হয়ে পড়েন; ব্যক্তিগতভাবে, মনের গহিনে কোথাও কী তিনি ভীষণ অসুখি ছিলেন [মানুষ মূলত একা: আবুল হাসান]? আড্ডাবাজীর হল্লাবোল, দ্রব্যগুনের দারুণ উল্লাস এবং অনিবার্য অনুরোধের আসরে সঞ্জিব দা'র খোলা গলার গানের সুরশব্দে সে অনুচ্চারিত কথন কখনো বায়ন হয়নি। তবে স্ত্রী, ছোট্ট সন্তানটির জন্য তার সময় ক্রমেই কমে আসছিলো। ...

    এভাবে একটি সময় জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে যেতে যেতে খুব দ্রুতই তিনি একই সঙ্গে বোতলজাত হয়ে পড়েন। প্রায় সময়ই হাতে থাকতো একটি ছোট্ট থার্মোফ্লাক্স। হুইস্কি, সোডা, বরফ মেশানো থাকতো ওতে। স্টেজ শো'তে গানের ফাঁকে ফাঁকে ফ্লাক্সের প্লাস্টিকের কাপে চুমুক দিয়ে নিতেন। তিনি যতক্ষণ জেগে থাকতেন, প্রায় ততক্ষণই প্রায় পানাসক্তে মেতে থাকতেন। ... অতি অত্যাচারে হৃদযন্ত্র-যকৃত খুব দ্রুত বিগড়ে যেতে থাকে। দু-তিনবার হাসপাতালও ঘুরে আসেন তিনি। কিন্তু কোনো কিছুই তাকে শেষ পর্যন্ত ফেরাতে পারেনি।

    সঞ্জিব চৌধুরী, আমাদের অনেক প্রিয় সঞ্জিব দা এমনি করে একদিন হাসপাতাল ঘুরে চলে যান না ফেরার দেশে। তার মৃত মুখটি দেখে চেতনায় গাঁথা জীবন্ত মুখটির ইমেজ মুছে ফেলার ইচ্ছে ছিলো না। তবু তার মরদেহ যখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়, তখন হাজার হাজার ভক্ত-শ্রোতাদের ভীড়ে টিভির পর্দায় ঠিক চেনা গেছে ফুলে ঢাকা কফিনটিকে ঘিরে থাকা লাইট হাউসের মতো আশ্চর্য উজ্জ্বল মাতাল কথিত বন্ধুজন।

    সঞ্জিব চৌধুরীকে নিয়ে খুব আবেগময় একটি লেখা লিখেছিলেন কোনো একজন সাবেক সহকর্মী। তিনি তার হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেনর ওইসব বন্ধুজনকে। তবে হিসেবটি সম্ভবত [পুনর্বার, সম্ভবত] সঠিক নয়, সঞ্জিব চৌধুরী প্রিয় সঞ্জিব দা হয়তো সজ্ঞানে একটু একটু করে আত্নহত্যাই করেছিলেন ["এই জীবন লইয়া আমি কী করিবো?"]।

    ____

    প্পন, আপনাকে ধন্যবাদ। সঞ্জিব চৌধুরী ও বাপ্পা মজুমদারের এক টুকরো যুগল এইখানে।

  • বিপ্লব রহমান | 233.27.95.164 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৮:০৭568918
  • ** লেখায় বেশকিছু বানান ভুল ও টাইপো থেকেই যাচ্ছে। অগ্রিম ক্ষমা প্রার্থণা।
  • প্পন | 126.202.121.30 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ ১৯:২২568919
  • বিপ্লব, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার অনুরোধে সাড়া দেবার জন্য। ভালো থাকবেন।
  • Rana | 133.237.166.31 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০১:৪৮568920
  • মহীনের সাকুল্যে গান আছে, সম্পাদিত আর নিজেদের মিলে মেরে কেটে গোটা পঁয়্তাল্লিশ কি পঞ্চাশ। মানে যা জনগনের কাছে সহজলভ্য। এর মধ্যে ৪টে গান একদম সুপার হিট।

    দরিয়া (এই গানটার কোনো মহীনীয় সংকলন আমি কখনো শুনিনি, কারো কাছে থাকলে দয়া করে দেবেন), তোমায় দিলাম, প্‌থিবী আর টেলিফোন। প্রথম গানটার স্‌ষ্টি নিতান্ত নাগরিক ঘরানায় হলেও, এই গান আমি শান্তিনিকেতনে বাউলদের গলাতেও শুনেছি। যারা মহীনের লিরিক, সুর, গায়্কীর সমালোচনা করছেন, তারা শুধু ভেবে দেখবেন, এই ক্‌তিত্ব বাংলাতে আর কোন ব্যান্ডের বা আধুনিক গায়কের আছে? কিছুটা হয়ত, ভূমির বারান্দায় রোদ্দুরের থাকতে পারে, কিন্তু দরিয়া গানের বিচারে আরো মাটির অনেক কাছে। যারা গানটা আগে শোনেনি, তারা শুনলে হঠাৎ করে লোকগীতি ভাবতেই পারেন। আমি রবীন্দ্রসঙ্গীতের একনিষ্ঠ ভক্ত, এবং আমার মতে এদেশের এখনও অবধি সব থেকে সেরা গীতিকার এবং সুরকার তিনিই। কিন্তু রবীন্দ্রনাথও একদম মাটির কাছে আসতে আসতে গিয়েও, কোথাও যেন একটু এলিটিস্টিক থেকে যান। সরল উদাহরন,

    ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি
    নিয়ে যাবি কে আমারে ও বন্ধু আমার
    না পেয়ে তোমার দেখা
    একা একা দিন যে আমার কাটে নারে ।

    বুঝিগো রাত পোহালো
    বুঝি ঐ রবির আলো
    আভাসে দেখা দিল গগণ পারে,
    সমুখে ঐ হেরি পথ, তোমার কি রথ
    পৌঁছুবেনা মোর দুয়ারে ।

    আকাশের যত তারা
    চেয়ে রয় নিমেষহারা
    বসে রয় রাত প্রভাতের পথের ধারে,
    তোমারি দেখা পেলে
    সকল ফেলে, ডুববে আলোক পারাবারে ।

    প্রভাতের পথিক সবে
    এলো কি কলরবে
    গেল কি গান গেয়ে ঐ সারে সারে,
    বুঝিবা ফুল ফুটেছে
    সুর উঠেছে, অরুণ বীনার তারে তারে ।

    এখানে দেখুন, পুরো গানটার শেষে এসে, যখন শেষ অন্তরাতে আসছে (আভোগ নয়, এটি আগে ন্যাড়ার বলা লোকগানের গঠন শৈলির গান), তখন গানটা আলাদা হচ্ছে লোকগান থেকে। ত্‌তীয় অন্তরা থেকেই রবীন্দ্রনাথের স্বকীয়তা স্পষ্ট, আর শেষ অন্তরাতে তো যখন বলা হচ্ছে, "অরুণ বীনার তারে তারে" তখন তো তা স্পষ্ট। কোনো লোকগানের গীতিকার, যারা প্রথামত গ্রাম বাংলার ভিত থেকে উঠে এসেছে, "অরুণ বীনা" শব্দ চয়ন বা স্‌ষ্টি, তাদের কাছে প্রয় অসম্ভব।

    দরিয়া পর্য্যায়ের আর একটি গানই পাই যার এমন সর্বজনগ্রাহী আবেদন আছে, "লাল পাহাড়ি"। দুটো গানের ডেমোগ্রাফ যদিও আলাদা, দরিয়া ভাটিয়ালি, লাল পাহাড়ি ঝুমুর।

    প্‌থিবী, তোমায় দিলাম আর টেলিফোন এই তিনটে গান বাংলাতে ব্যান্ড যদ্দিন থাকবে, তদ্দিন থাকা উচিত। এখনো অবধি আমি জানি না, এমন কোনো বাংলা ব্যান্ড আছে কি না, যারা এই তিনটে গানের অন্তত একটা করেনি।

    অতএব দেখা যাচ্ছে অন্তত চারটে কালোত্তীর্ণ গান মহীন বানিয়েছে, যা সময়ের ঘুণপোকাদের থেকে বেশ কিছুটা নিরাপদ। সেদিক থেকে যদি দেখা যায়, হয়তো সুমনের শুধু একটা গান এত সংখ্যক টার্গেট অডিয়েন্স ক্যাপচার করে, "তোমাকে চাই"। নচিকেতার নীলাজ্ঞনা আর শিলাজিতের বাজল ছুটির ঘন্টা। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের আমি বাংলায় গান গাই।

    বাকি মহীন বা মহীন সম্পাদিত হিট গান বললেই মনে পড়ে, মানুষ চেনা দায়, গঙ্গা, আমার প্রিয় কাফে, ঘরে ফেরার গান, ভালো লাগে, কথা দিয়া বন্ধু, দক্ষিন খোলা জানলা, পড়াশোনায় জলাজ্ঞলী, ভিক্ষেতে যাবই। জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে প্রায় ২৫-৩০% সফল on all productions, মানে হিট গান সংখ্যা/ মোট গান সংখ্যা। সুমনের হিট রেশিও এত বেশী নয়। নচি বা শিলাজিতের ও নয়।

    আমার মনে হয়, গুনগত দিক থেকে এঁদের তুলনা করাটা ঠিক হবে না। কেউ সুমন ও অজ্ঞনের তুলনা চাইলে করতে পারেন। এরা একই রকম ঘরানার গায়ক। নচিকেতা অনেক বেশি বাংলা মূল ধারার গায়ক এবং যদি দয়া করে মনে করেন, এক্দম প্রথম দিকের ক্যাসেট গুলিতে নচিকেতা র‌্যাপ ধর্মী বাংলা গানও (কে যায়, এই বেশ ভালো আছি) গাইতেন, যা তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য অনেকটা অনুঘটকের কাজ করেছিলো। শিলাজিত শুরু থেকেই স্বকীয়। বাংলা গানে সাউন্ড ইজ্ঞীনিয়ারিং বা বিভিন্ন শব্দ নিয়ে এত পরীক্ষা নীরিক্ষা এর আগে শোনা যায় নি।

    তবে মহীনের অন্তত ৯০% গান এতো সাঙ্গীতিক শাস্ত্রীয় ধারা থেকে সম্‌দ্ধ যে তার সাথে তুলনা করা যায় দ্রাবিড়ের টেস্ট ব্যাটিং এর। ধরুন, ঘুচুক রাতের শেষের মতো অখ্যাত এবং জনমতে খাজা গানেও, শুরুর বেহালার স্টেকাটো মার্ক আর পিজ্জিকাটো শুনে দেখুন, মাঝখানে Waltz ভেঙ্গে পিয়ানোতে ad libitum এ রান শুনুন, আর গানে যখন বলছে, এক যে রাজার দেশে, পাশ থেকে ব্যাক আপের গলাতে সত্যি বলছি তে পুরো বিলিতি ক্লাসিকাল waltz এর ড্রাম আর বাস এর ডিসেন্ড।

    ইচ্ছে আছে কাল থেকে সুমন নিয়ে একটু লিখব।
  • aka | 178.26.203.155 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০২:১৪568921
  • দরিয়া মানে দরিয়ায় আইলো তুফান?

    ওটার সুর তো আমার - 'হামে তো লুট লিয়া মিলকে হুসনে বালো নে' র মতন মনে হয়। যদিও হিন্দিটাও হয়ত কোন লোকসংগীত থেকে অনুপ্রাণিত হবে।
  • কল্লোল | 111.62.62.26 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৬:৫০568922
  • দরিয়া।
    আগেও কোথাও লিখেছি, তবু এখানেও থাকুক।
    তখন নাগমতীর শ্যূট চলছে। ওদুকে গাবু(মনিদা-পুঁটুর সন্তান) আসন্নপ্রায়। আমরা হাসপাতালে বসে। আর মনিদা বাপিকে ক্রমাগত খুঁচিয়ে যাচ্ছে - একটা ফকিরি গান চাই। বাপিদাও ঠ্যাঁ টানছে - সুর দাও, লিখে দিচ্ছি। সেই সময় পাশে কোথাও রেডিওতে এই গানটা হচ্ছিলো - হমে তো লুট লিয়া মিলকে হুস্নওয়ালোঁনে। মনিদা বল্লো ওটাই সুর। এই গানটা খুবই বিখ্যাত কাওয়ালী, বহু মানুষ গেয়েছেন। তবে বেশী বিখ্যাত মহম্মদ রফির গাওয়া গানটি। ইউটিবে সার্চ মারলে বহু গায়কের গাওয়া ভার্সন পাওয়া যাবে।
    বাপি ওখানে বসেই গানটা লিখেছিলো। গাবুরও জন্ম সেদিনই।

    প্রথম দুটি পংক্তির সুর ঐ গানের প্রথম দুটি থেকে নেওয়া।
    দরিয়ায় আইলো তুফান আয় কে যাবি রে / হেসে হেসে যাবি ভেসে মদিনা নগরে
    প্রথম দুটো লাইনের কাওয়ালী সুর থেকে - ধরো হাল শক্ত হাতে - ভাটিয়ালী তে কোন গ্লিচ ছাড়া চলে যাওয়া বেশ বড় মাপের ফিউশন। এ কাজ করেছেন রাহুল - স্বপ্ন আমার হারিয়ে গেছেতে সোল-টাকিং ব্লুজ-ভাটিয়ালী।
    সবচেয়ে বড় কথা আজও ট্রেনে বাসে এই গানটা গাওয়া হয় লোক সঙ্গীত বলে। এমন ভাগ্য কটা গানের হয়েছে।

    আর ধরতাই ধার নেওয়া - কে নেন নি? শচীনকত্তা - এক্ষুনি মনে পড়ছে তেরে মেরে মিলন কি য়ে র‌্যায়না, রাহুলের - ছুঁ কর মেরে মন কো / কিয়া তুনে কেয়া ইশারা

    একটা ঝোঁক ভালো লাগছে না। কাউকে বড় করার জন্য কাউকে ছোট করা।

    সুমনের জনপ্রিয়তা, ওঁর গানের গলা, ওঁর লিরিক নিয়ে তাচ্ছিল্য করছে না কেউ। আমার তর্ক "প্রথম" লেবেলটা নিয়ে। বাংলা কাব্যগীতিতে চাঁদ ফুল লাতা পাতার লিরিক ও একেবারে অন্য ধাঁচের সুর ও প্রেজেন্টেশনে ৯০এর সুমন প্রথম নয়।
  • কল্লোল | 111.62.62.26 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৭:০২568923
  • আর একটা কথা। আব্রাহাম। আজ আব্রাহাম যেখানে পোঁছেছে, তার কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে আব্রাহামেরই। কিন্তু বেহালার অক্সফোর্ড মিশনের অনাথ বোর্ডার আবুকে পরম মমতায় তুলে এনে মহীনে সামিল করে নেওয়া থেকে তাকে হাত খুলে কাজ করতে দেওয়া, নিজেদের সাঙ্গীতিক বোধ ভাগ করে নেওয়া, এককথায় একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে তাকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার কাজ মহীন ও মহীন ভেঙ্গে গেলে মনিদা অক্লান্তভাবে করে গেছে। সে কথা আব্রাহামও বহু জায়গায় স্বীকার করেছে।
    প্রতিভা থাকলেই হয় না, তাকে চিনে নিয়ে পালনও করতে হয়, সে কাজটাই মহীন করেছে। যার ধারাবাহিকতায় পরের ঐ চারটি অ্যালবাম - যেখানে বহু ভালো বাংলা ব্যান্ড গান উঠে এলো। শুধু নিজেদের গান নয়, অন্যের ভালো গানকেও তুলে আনার দায়িত্ন্ব পালন করেছে মহীন।
    সিনেমায় দরিয়া গাওয়ানো হয় পবনকে দিয়ে। তখনও পবন দাস বাউল অতি অখ্যাত বোড়ালবাসী বাউল। পবনও স্বীকার করে ওর আজকের এতো নামডাকের পিছনে মহীন। ভুমির সুরজিত উঠে আসে পরের ঐ অ্যালবামগুলো থেকেই।
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৮:৫১568924
  • আরও একজন। দেবজ্যোতি মিশ্র। অসম্ভব সৃষ্টিশীল, সঙ্গীতান্তপ্রাণ এই মানুষটি ওঁর সঙ্গীত জীবন শুরু করেন ৮০ কলকাতায় সলিল চৌধুরীর অ্যারেঞ্জার হিসাবে। মজার তথ্য, তার আগে দেবু সমতান নামে একটি গানের দলে বেহালা বাজাতো, যেখানে সুমনও কিছুদিন গান গেয়েছে, হারমোনিকা বাজিয়েছে।
    সলিল চৌধুরীর অ্যারেঞ্জার হওয়াটা চট্টিখানি কথা নয়। শুনেছি অলোকনাথ দে'র মতো অ্যারেঞ্জার নিয়মিত ধমক খেতেন সলিল চৌধুরীর কাছে। সলিল চৌধুরী মারা যারাব পর দেবু, টেলিভিশনে ছুটকো ছাটকা কাজ করছিলো। সুরকার হিসাবে ওকে প্রথম তুলে ধরে মহীন, ওদের সম্পাদিত অ্যালবামে - আমার দক্ষিন খোলা জানালায়। এই গানের ভিডিয়োটাও মনিদার শ্যূট করা।
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৯:০৭568925
  • রানা, মেলিয়েছি, মেল চেকান।
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৯:১১568926
  • মহীন মহীন করতে করতে, তিনটে নাম এলোনা বা সামন্য এলো - প্রতুল, নগর ফিলোমেল আর স্কুল অফ পিপলস আর্ট (সোপা) বা তার বকলমে বিনয় চক্রবর্তি। পরে এদের নিয়ে লিখবো।
  • শ্রী সদা | 127.194.192.16 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ ০৯:২০568928
  • আমার ব্যক্তিগত ভাবে মহীনের অরিজিন্যাল গানগুলোর লিরিক খুব দুর্বল মনে হয়, অনেকটা বাংলাদেশের আজম খাঁ ঘরানার। তোমায় দিলাম, মানুষ চেনা দায়, ধাঁধার থেকেও জটিল তুমি - এগুলোর লিরিক অনেক বেশী পরিনত, কিন্তু এগুলো মহীনের গান নয়, গড়ের মাঠ বলে একটা ব্যান্ডের গান, তাদের প্রচারের আলোয় নিয়ে আসার কৃতিত্ব অবশ্যই মহীনের। এই টইতে দেখলাম অনেকেই এগুলোকে মহীনের ঘোড়াগুলির গান বলেছেন।
    সুমন বনাম মহীন তর্ক বোধহয় অনন্তকাল চললেও শেষ হবেনা, কিন্তু আমার সবসময়ই মনে হয়েছে যে কাগজ কলম নিয়ে বসলে হয়তো "কথা দিয়া বন্ধু" বা "কলকাতা" র সমমানের (লিরিকের দিক দিয়ে) একটা গান আমি বা আমার মতো যে কেউ লিখে ফেলতে পারে, কিন্তু "জাতিস্মর" বা "তোমাকে চাই" লেখার জন্যে একজন সুমনকেই দরকার, যে কেউ পারবে না। মহীনের ঘোড়াগুলি অবশ্যই খুব ব্রিলিয়ান্ট উদ্যোগ, কিন্তু সুমন আলাদা লেভেলের স্রষ্টা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন