এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সিউড়ি-কীর্নাহার-হেতমপুর-ফারাক্কা-বিডনস্ট্রীটের গল্প

    Abhyu
    অন্যান্য | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৯১৪১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • i | 134.168.164.92 | ১৫ মার্চ ২০১৪ ১৯:০১626729
  • আহা!
  • byaang | 132.166.153.124 | ১৬ মার্চ ২০১৪ ০২:৫৩626730
  • এক যে ছিল বাদলিদিদা। তার মুখের ভাঁজে ভাঁজে গল্প লেখা। পুরনো গল্প পড়া শেষ হলে, সেখানে নতুন গল্প চলে আসত রোজ। মুখটা প্রতিদিনই দেখতাম, আর প্রতিদিন মুখের ভাঁজগুলো বদলে যেত। মনে হত এই ভাঁজটা তো আগের দিন ঐ জায়্গায় ছিল না। আর কালকের সেই ভাঁজদুটো, সেগুলো-ই বা গেল কোথায়! বাদলিদিদার মুখে লেখা গল্পগুলো কি শুধু আমি একাই পড়তে পারতাম? দিদাও কি পারত না? মা? মা-ও কি পারত? প্রতিটা ভাঁজে একটা করে গল্প। গল্পগুলো পড়ে আমি নিজের মনেই রেখে দিতাম। কাউকে বলতাম না সেই গল্পগুলো। ভালোকে না, ছোটোকে না। এমনকি কোলকাতাতে ফিরে তিন্নি বা অর্পিতাকেও বলতাম না। সোমাদিকেও না।

    বাদলিদিদার জন্য রোজ সকাল থেকে সেই মাঠটায় দাঁড়িয়ে থাকতাম। কখনো কখনো মাঠটা দিয়ে হেঁটে যেতাম, বাদলিদিদার বাড়ি যাব বলে। ঐ যে মাঠের শেষে ছিল একটা টিলা, আর তার পিছনে কবরস্থান, সেই কবরস্থানের পাশ দিয়ে চলে গেছিল একটা সরু বাঁকা রাস্তা, কিশলয়ে যেমন রাস্তা আঁকা ছিল, ঠিক সেইরকম আঁকাবাঁকা রাস্তা। আঁকাবাঁকা রাস্তা না হলে বাদলিদিদাদের গ্রামে পৌঁছানো যায় না কক্ষনো। সেই রাস্তা দিয়ে গেলে পড়ত আরও কত পাড়া। তারপর আসত বাদলিদিদাদের গ্রাম - আড্ডা-কুতুর গ্রাম। পাশাপাশি দুই গ্রাম আড্ডা আর কুতুর।

    বাদলিদিদার গ্রামে যাওয়ার জন্য কতবার আমি হাঁটা শুরু করেছি, শেষ হয় নি হাঁটা, মাঠটা যে ছিল অফুরান। পৌঁছাতে পারি নি কক্ষনো। শুনেছিলাম আমার বাবা পৌঁছেছিল। বাবা নাকি আড্ডা গ্রামের ইস্কুলে পড়াত, বাবার ইস্কুলের ছেলেদের গল্পও শুনেছি বাবার মুখে। বাবা চেয়েছিল ওদের কাছে যেতে, বাবা পেরেছিল। আমিও চেয়েছিলাম, পারি নি কক্ষনো। ভাবতাম হঠাৎ করে কখনো বাদলিদিদার গ্রামে চলে গিয়ে বাদলিদিদাকে চমকে দেব। তারপর বাদলিদিদার বাড়ি, হাঁস, মুরগি, গরু সব দেখা হলে আড্ডা গ্রামের ইস্কুলে যাব। গিয়ে ছেলেদের বলব, সেই যে আমার বাবা তোমাদের পড়াত, আমি তার মেয়ে। তোমাদের আমার বাবার কথা মনে পড়ে না? আমার বাবা কত মজা করতে পারে, খুব ভালো অঙ্কও জানে। তোমাদের আমার বাবার জন্য মনকেমন করে না? আমি অনেকদিন আমার বাবাকে দেখি নি, আমার খুব মনকেমন করে। কবে আবার বাবাকে দেখব, জানি না তো। ছেলেগুলো নিশ্চয়ই আমাকে নিয়ে খুব মজা করবে। বাবা নাকি ওদের সঙ্গে চা দিয়ে মুড়ি খেত, আমাকেও কি ওরা লাল চায়ে লাল মুড়ি দেবে? খেয়েটেয়ে বাদলিদিদার সঙ্গে বাড়ি চলে আসব।

    বাদলিদিদার বাড়ি যাব বলে যতবার হাঁটা শুরু করেছি, আদ্ধেক মাঠ পেরোতে না পেরোতেই দেখি বাদলিদিদাই হেঁটে আসছে আমার দিকে, টিলাটার পাশ দিয়ে। বাদলিদিদার কাছে দৌড়ে গিয়ে হাত ধরব বলে দৌড়েও বাদলিদিদার কাছেই পৌঁছতে পারি নি। বাদলিদিদাই বরং তাড়াতাড়ি হেঁটে এসে আমার হাত ধরত। কী করে যে পারত বাদলিদিদা, মাথায় অত বড় ঝুড়ি নিয়ে অত তাড়াতাড়ি হাঁটতে! পারতেই হবে বাদলিদিদাকে, নয়তো আমাদের বাড়ি অব্দি পৌঁছবে কী করে!

    বাদলিদিদার হাসি মুখটা বড় প্রিয় ছিল আমার। মুখে কত্তো কত্তো মোটা মোটা ভাঁজ, তার উপরে যখন হাসে, গালে দুটো ছোট্টো গর্ত হয়ে যায়। আর মুখটা ঝক্ঝক করে। আমিও তাকিয়ে তাকিয়ে গল্পগুলো পড়তে আরম্ভ করি। গালের সবচেয়ে উপরের ভাঁজটায় লেখা আছে, আজ সকালে বাদলিদিদা যখন পুকুরে নেমে স্নান করছিল, তখন বাদলিদিদার হাঁসদুটো বাদলিদিদার চারদিকে গোল করে ঘুরে ঘুরে পাহারা দিচ্ছিল। বাদলিদিদা আসলে একটা রাজকন্যে, আর বাদলিদিদার হাঁসদুটো বাদলিদিদার রাজপ্রহরী। কিন্তু ওরা এম্নি এম্নি এরকম সেজে থাকে, কারণ ওদের সেটাই মজা লাগে।

    এবার বাদলিদিদার ঠোঁটের পাশের ভাঁজের গল্পটা পড়ি - বাদলিদিদা যখন আজ বাড়ি ফিরে যাবে, তখন বাদলিদিদার গ্রামটা ঠান্ডা আরাম মতন হয়ে যাবে, আর বাদলিদিদার সুন্দর নরম মাটির কুঁড়ে ঘরটা, তার পিছনদিকে যে পলাশ গাছটা আছে সেখানে বাদলিদিদার বাছুরটা দাঁড়িয়ে থাকবে। ওর তো খুব খিদে পেয়েছে। আহা গো বেচারা, ওর সকালের জলখাবারের দুধ তো বাদলিদিদা আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে, ও বেচারা তো সেই সকাল থেকে না খেয়ে আছে। বাদলিদিদা ওকে জড়া করে আদর করে ওকে ওর মায়ের কাছে যেতে দেবে। ওর মাও নিশ্চয়ই ওকে চেটে চেটে আদর করবে। বাদলিদিদা তখন ওদের দুজনকেই নরম তুলতুলে পাটশাক খেতে দেবে। আমার দিদার রান্না করা পাটশাকই খেতে কত ভালো হয়। রান্না না করা পাটশাক খেতে নিশ্চয়ই আরো ভালো। আমি যেদিন বাদলিদিদার বাড়ি পৌঁছে যাব সেদিন আমিও একটু গরুর মুখের এঁটো পাটশাক নিয়ে খাব।

    এরকম করে বাদলিদিদার মুখের দিকে চেয়ে চেয়ে আশ আর মেটে না, কত কত গল্প। সবগুলো পড়ে নিতে হবে। কিছু ভয়ঙ্কর গল্পও আছে। ডাকাতের গল্প, হাঁসুয়ার গল্প, কাস্তের গল্প। সেগুলো পড়তেও খুব লোভ। কবরস্থানের পিছনে তো প্রায়ই ডাকাত পড়ে। মা বলেছে। তাই নাকি বাদলিদিদাদের গ্রামের সব্বাই কোমরের কাছে একটা অস্ত্র রাখে। আমি ভাবতেই পারি না, বাদলিদিদার মতন এত তকতকে পরিষ্কার আর ঝক্ঝকে মুখের মানুষের কোমরে নাকি কাস্তে গোঁজা আছে! হতেই পারে না। মা সবসময় চায় আমি যেন সব বড়দের ভয় পাই, তাই আমাকে ভয় দেখাতে এসব বলে। বাদলিদিদার কোমরে কাস্তে থাকলে কোমরে ফুটত না? শাড়িটা রক্তে লাল হয়ে যেত না? এই জন্য মায়ের উপর রাগ হয়।

    বাদলিদিদার হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে বাদলিদিদার চক্চকে চামড়ার শরীরটার দিকে তাকিয়ে ভাবি, আমার কেন এরকম লম্বা একটা শরীর হল না আর এরকম চক্চকে গায়ের রং। বাদলিদিদা যখন আমাকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে পৌঁছায়, পৌঁছে ঝুড়িটা মাথা থেকে নামিয়ে উঠোনে রাখে, তখন দেখি ঝুড়িটায় কত সব নানা রকমের ছোটো বড় কলসি, ঘটি আর ঘট রাখা। প্রতিটার মুখ সাদা কাপড় দিয়ে বাঁধা। আর ঘটিগুলোর নীচে ছোট্টো ছোট্টো রিং, খড় দিয়ে বানানো।

    দিদাও একটা ডেকচি আর একটা সসপ্যান নিয়ে আসে। কীসব মাপের কথা বলে। আর বাদলিদিদাও কীসব বলে যেন নানারকমের ঘটি তুলে তার থেকে দুধ ঢেলে দেয় দিদার ডেকচিতে আর কড়াইয়ে। সব ঘটি আর কলসীগুলো খালি হয় না, ওগুলো নিয়ে বাদলিদিদা আরো অন্য সব বাড়িতে যাবে। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে দুধ ঢালা দেখি। যেই দুধ ঢালা হয়ে যায়, এবার আমি আমার ডান হাতটা বাড়াই। বাদলিদিদার সামনে আমার হাত পেতে দিই। ভাব্খানা হল, দাও, এবার আমার পাওনাটা দাও।

    সিউড়িতে তো সব্বাই ম্যাজিক জানে, তাই বাদলিদিদাও জানবেই। বাদলিদিদাও এবার হাসিমুখে আমার হাতের উপর নিজের হাত রাখে, আর আমি বাদলিদিদার হাতটা বুঝতে না পারলেও হাতে যে আমার দুটো ছোটো গোলমতন জিনিস দেওয়া হল, সেটা বুঝতে পারি। এই হাতই তো আমি এতক্ষণ ধরেছিলাম, যতক্ষণ মাঠে হাঁটছিলাম, একবারের জন্যও বুঝতে পারি নি বাদলিদিদার হাতে এই গোল জিনিসদুটো আছে। বলেছিলাম না, বাদলিদিদা একটা রাজকন্যে আসলে। আর রাজকন্যেরা তো জাদু জানবেই। বাদলিদিদা হাত তুলে নিলেই দেখি, আমার হাতে দুটো ছোট ডিম। একটা বাদলিদিদার হাঁসের ডিম, আরেকটা বাদলিদিদার মুর্গির ডিম। একটা আমি খাব, আরেকটা ছোটোমামা। ছোটোমাসি কি তাহলে একদিনও পাবে না? ছোটোমাসির ভাগেরটার জন্য আবার হাত বাড়াই। এবার দিদা বলে "ছিঃ, ওরকম হাত বাড়াতে নেই, চাইতে নেই। বাদলি, তুমি কিন্তু এই ডিমদুটোর পয়সা নিও আমার থেকে। রোজ রোজ এরকম দিও না। প্রথমদিন দিয়েছ, ঠিক আছে, তাই বলে রোজ রোজ দিও না। ওতে ছেলেপুলের স্বভাব খারাপ হয়।" বাদলিদিদা হেসে কী যেন বলে। বাদলিদিদার সব কথা আমি বুঝতে পারি না। কিন্তু কথার শেষে "বটে" বলার সুরটা কান ভরে নিয়ে নিই। ঐ সুরটা আমার খুব ভালো লাগে। বাদলিদিদার সব কথাগুলো বুঝতে না পারলেও, আমি জানি কী বলে। বলে, "ওকে আমি ডিম দিলে তুমি কেন তার দাম দেবে? ও কি তোমার একার নাতনী? আমার কেউ হয়্না? ও তো আমার নাতনীও বটে।"

    এবার বাদলিদিদা চলে যাবে, সেই খড়ের রিংগুলোর উপর আবার ঘটি আর কলসিগুলো বসিয়ে নেয়। ঝুড়িটা মাথায় তুলে নেয়। পিছন ফেরে। দরজার দিকে এগিয়ে যায়। আর আমি দেখতে থাকি গোরাকাকুর দুলিয়া বইটার ছবিটা কেমন করে আঁকা হয়। রোজ দেখি। রোজই আঁকা হয়। থাকুক না বইটা কোলকাতায়। ছবিটা তো সিউড়িতে আঁকা। যাতে কেউ বুঝতে না পারে বাদলিদিদা রাজকন্যে, তাই বাদলিদিদার মুখটা ইচ্ছে করে অন্যরকম করে দিয়েছে গোরাকাকুর বইটায়।

    বাদলিদিদার পিছন পিছন এগিয়ে যাই দরজার বাইরে অব্দি। দাঁড়িয়ে বাদলিদিদার চলে যাওয়া দেখি। মনে মনে বলি, আজ হল না, কিন্তু কাল ঠিক পৌঁছে যাব বাদলিদিদার বাড়ি আর আড্ডা ইস্কুল। ওখানে আজও বাবার বন্ধুরা আছে, বাবার ক্ষিতীশদা আর কৈটিশদা। তাদের সঙ্গেও দেখা করে আসব। বলে আসব, বাবা কিন্তু এখনো তোমাদের গল্প করে। তোমরা ভেবো না, আমার বাবা ভুলে গেছে তোমাদের। বাবা কিচ্ছু ভোলে না। বাবার এখনো উনিশ সতেরোর নামতা মনে আছে।

    বাদলিদিদা চলে গেলে মা আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে আসে ঘরে। আমাকে বকে। আমার হাঁটু অব্দি নাকি লাল ধুলে উঠে গেছে। আমার নাকি ঘরে মন টেঁকে না। টই টই করে বেড়াই। আমি নাকি ইতুলক্ষ্মী না। আমি অলক্ষ্মী। অলক্ষ্মীদেরই হাঁটুতে আর কনুইতে সবসময় কাটা থাকে। অলক্ষ্মীরাই সেই কাটাগুলোর চটানগুলো খুঁটে খুঁটে আবার রক্ত বার করে। মা এসব বলে আর কুয়ো তলায় বসে বসে আমার পা রগড়ে রগড়ে ধুলো ধোয়।

    ইতুলক্ষ্মী না কেন বলল? আমি তো ইতুপুজোর দিন জন্মেছিলাম, তাই মায়ের ঠাকুমা, মনে দাদাজীর বৌ, সে আমাকে ইতুলক্ষ্মী নাম দিয়েছিল। মায়ের ঠাকুমা বলেছিল, ঘরে ইতুলক্ষ্মী এসেছে। সে আমাকে খুব ভালোবাসত, কিন্তু আমার তাকে মনে নেই।

    মা আরো কত কী বলতে থাকে। বলে যে, বাদলিদিদা নাকি খুব গরীব। বাদলিদিদাকে আমি ভালোবাসলে কক্ষনো এরকম রোজ রোজ ডিম চাইতে পারতাম না। বাদলিদিদা ঐ ডিম বাজারে বেচলে নাকি যে পয়্সা পাবে, সেই দিয়ে বাদলিদিদা নিজের খাবার কিনতে পারবে। আমি মোটেই বিশ্বাস করি না মায়ের এসব কথা। বাদলিদিদা কখনো গরীব হতে পারে!! বাদলিদিদা যে একটা রাজকন্যে। যার রাজপ্রহরীরা হাঁস সেজে তাকে ঘিরে থাকে। সেইসব গল্প তো আমি বাদলিদিদার মুখের ভাঁজে আগেই পড়ে নিয়েছি।
  • sosen | 111.63.238.227 | ১৬ মার্চ ২০১৪ ০৯:২৯626731
  • :)))
  • byaang | 132.167.222.27 | ১৬ মার্চ ২০১৪ ০৯:৩৮626732
  • হাসিস কেনে?
  • sosen | 111.63.238.227 | ১৬ মার্চ ২০১৪ ১০:২১626733
  • সেই ছোট ছবিটা মনে পড়ছে
  • byaang | 132.167.222.27 | ১৬ মার্চ ২০১৪ ১০:৩৮626734
  • কোনটা? দুলিয়া?
  • sosen | 111.63.185.153 | ১৬ মার্চ ২০১৪ ১০:৪৪626735
  • না না, ফেসবুকে পুতুল হাতে একটা ক্ষুদি
  • | ১৬ মার্চ ২০১৪ ১৯:৫৯626736
  • তারপর?
  • hu | 188.91.253.21 | ১৯ মার্চ ২০১৪ ১১:৩৫626737
  • ছবির মত লেখা!
  • kk | 81.236.62.176 | ১৯ মার্চ ২০১৪ ১৯:৫৮626739
  • ভীষণ ভালো হচ্ছে লেখাটা। কিন্তু ঐ সিন্দুকের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা মেয়েটা আর বাদলিদিদার জন্য আমার কেমন যেন মনখারাপ করছে :-(
  • Abhyu | 86.164.62.98 | ০৭ মে ২০১৪ ০৪:০৩626740
  • name: byaang mail: country:

    IP Address : 122.79.37.89 (*) Date:06 May 2014 -- 10:04 PM

    তাহলে আমার ছোটমাসীর পাড়ার ভোটের প্রচার শোনো।

    দুপুর দুটো নাগাদ দরজায় বেল। ছোটমাসী দরজা খুলে দেখে এক বয়স্ক ভদ্রলোক করিডোরে বসে আছেন , এক কমলা পাঞ্জাবিপরা লোক একটা ম্যাগাজিন রোল করে সেই দিয়ে ঐ মাটিতে বসা ভদ্রলোককে মারার ভঙ্গী করে হাত উঁচিয়ে আছে। পিছনে আরো ৪-৫জন বয়স্ক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে ছোটমাসীর দিকে তাকিয়ে আছে। আর মাটিতে বসা ভদ্রলোক ছোটমাসীকে বলছেন "দেখেচেন আমাদের কেমন মাচ্চে?"

    এখানে বলে রাখা ভালো, আমার ছোটমাসী নিজের চোখে যা দেখে, সেটা বিশ্বাস করে না। সেই যে কলেজে পড়ার সময়ে রাত্তিরবেলায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলেছিল "দ্যাখ দ্যাখ দিদি চশমাপরা ভদ্রমহিলা কেমন আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন!" তখন মা তাকিয়ে দেখে একটা নেড়িকুকুর বসে আছে আর তার চোখদুটো জ্বলছে। সেই নিয়ে সবাই হাসাহাসি করার পর থেকেই ছোটমাসীর মেন্টাল ব্লক হয়ে গেছে। নিজের চোখে কিছু দেখলে তা আর বিশ্বাস করে না।

    তো এইদিন ঐ মারামারির দৃশ্য দেখেও বিশ্বাস করতে পারছিল না। হাঁ করে তাকিয়ে দেখছিল আর বোঝার চেষ্টা করছিল সত্যি দেখছে না মিথ্যে। এমন সময়ে ভদ্রলোক আবার বললেন "দেখচেন তো কেমন মাচ্চে আমাদের?"
    তখন ছোটমাসী একটু ঘাবড়ে গিয়ে বলেছে "দুপুরবেলায় লোকের বাড়ির দরজায় এরকম মারামারি করতে আছে?" তখন লোকগুলো বলেছে "শুধু বাড়ির দরজায় কেন এবার তিনোমুলিরা বাড়ির ভিতর ঢুকে সবাইকে মারবে। ওদের গদি থেকে সরান। সিপিএমকে ফিরিয়ে আনুন। ওরা আমাদের মাচ্চে।"
  • byaang | 132.167.205.39 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৪১626741
  • আবার লিখি?
  • d | 144.159.168.72 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৫৮626742
  • হ্যাঁ হ্যাঁ প্লীজ। এক্ষুণি
  • byaang | 132.167.205.39 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৮:০৫626743
  • বেলা হয়ে আসে, আমার মনকেমন করতে থাকে দিনটা এবার ঝুপ ঝুপ করে দৌড়ে দৌড়ে শেষ হয়ে যাবে বলে। বাড়িতে এখন শুধু আমি, মা, দিদা আর দাদাজি। দিদার বড় খাটে শুয়ে শুয়ে পা দোলাই। জানলা দিয়ে আমগাছ্গুলোর ডালে ডালে লেজঝোলা পাখিটাকে লাফিয়ে বেড়াতে দেখি। খুব ইচ্ছে করে কেউ একটা এক্ষুনি চলে আসুক। দরজায় এক্ষুনি কেউ কড়া নাড়ুক। আমি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলে হয়তো দেখব দাদুভাই শার্ট্প্যান্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে! নাকি বাবাকে দেখব! বাবা বা দাদুভাই কেউ একটা চলে আসতে পারে না? মা একদিন কোলকাতার বাড়িতে দুপুরবেলায় শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ছিল। আমিও পাশে শুয়ে শুয়ে পড়ছিলাম একটু একটু করে। মা বুঝতে পেরেছিল আমি মায়ের পাশে শুয়ে শুয়ে ঐ বইটা একটু একটু করে পড়ছি, কিন্তু কিছু বলে নি সেদিন আমাকে। সেই বইটাতেও এরকম ছিল, হৈমন্তী বলে একজন তার ছেলেকে বলছিল তার কদিন ধরে যাকে দেখতে ইচ্ছে করছে, সেই এসে হাজির হচ্ছে। তখন সেই ছেলেটা তার বাবার ছবিটার দিকে তাকিয়েছিল। এখন আমি চোখ বন্ধ করলেই সেই ছেলেটার ঘরটা দেখতে পাই। ঘরটায় কেমন একটা কমলা কমলা আলো। একটু একটু অন্ধকার। দেওয়ালে ছেলেটার বাবার ছবিও দেখতে পাই। ছেলেটার জন্য মনখারাপ করে আমার। নিজের জন্যও।

    সত্যি সত্যি কড়া নাড়ে কেউ দরজায়। আমি লাফিয়ে উঠে দৌড়ে গিয়ে উঠোন পেরিয়ে দরজা খুলে দিই। দিদা পিছন পিছন আসে, "কে? কে?" বলে চেঁচায়, কিন্তু ততক্ষণে তো আমি দরজা খুলে দিয়েছি। না দাদুভাই আসে নি, বাবাও না। এসেছে কুটুবুড়ি। কুটুবুড়ি বলতে নেই আমি জানি, মা আমাকে বলেছে বড়দিদা বলে ডাকতে। কিন্তু মা নিজেই কুটুবুড়ি বলে। কুটুবুড়ির সামনে বলে না, কুটুবুড়ি চলে গেলে, তখন কুটুবুড়ি বলে হাসে। কুটুবুড়িকে দেখলেই আমার কার যেন একটা কথা মনে পড়ে যায়। টিভিতে একটা সিনেমায় দেখেছিলাম তাকে। সেও কুটুবুড়ির মতন শুধু সাদা শাড়ি পরে, ব্লাউজ পরে না। সেও এরকম করে কুটুবুড়ির মতন নীচু হয়ে হাঁটে। সোজা হয়ে হাঁটতে পারে না। তার মুখেও সব দাঁত নেই, কুটুবুড়ির মুখেও সব দাঁত নেই। সেও খালি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত, কুটুবুড়িও একটু বেলা হলেই রোজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কুটুবুড়ি আমাদের বাড়িতে এসে অনেক দেরি করলেও কেউ কুটুবুড়িকে খুঁজতে আসে না। কুটুবুড়িকে দিদা একটা আসন পেতে দেয়, বসতে বলে। কুটুবুড়ি বাবু হয়ে বসতে পারে না, উবু হয়ে বসে। বসে দিদাকে বলে "আজ কি রাঁধলে?" দিদা সব রান্নার নাম বললেও মাছ রান্নার কথা বলে না। কুটুবুড়িই তখন জিজ্ঞাসা করে "আর মাছ? মাছের কী হল?" দিদা কোনোরকমে বলে "ঐ একটু ঝাল"। না বললেই যেন ভালো হত তেমন করে বলে। কুটুবুড়িকে কাঁসার বাটিতে করে একটু তরকারি খেতে দেয় দিদা। কুটুবুড়ি অনেকক্ষণ ধরে ঐ একটু তরকারি একটু একটু করে খায়। খেতে খেতে দিদার সঙ্গে কত কিছু কথা বলে। দিদা বেশি কিছু বলে না, কুটুবুড়িই বলে যায়। একা একা। দিদা শুধু মাঝে মাঝে কুটুবুড়ির প্রশ্নের উত্তর দেয়। আমি দিদার পিঠ ধরে দোল খাই। কুটুবুড়ি খুন খুন করে কত কিছু বলে যায়। মা বারান্দায় বসে বইয়ে মুখ ঢেকে হাসে। আমি মায়ের মুখ দেখতে পাই না। কিন্তু মাকে থরথর করে কাঁপতে দেখে বুঝে যাই মা খুব হাসছে কুটুবুড়ির কথা শুনে।

    কুটুবুড়ি সব জিনিসের নাম ভুল উচ্চারণ করে, ঐজন্য মা হাসে। কুটুবুড়ি কোলাপসিবল গেটকে বলে কোলাপ গেট, ট্রাফিক পুলিশকে বলে টফিপুলিশ, এইরকম সব কথা। কুটুবুড়ি দিদাকে জিজ্ঞাসা করে , "হ্যাঁ গো শুনেছ সেই কিনিকো বলে বইটা আবার এসেছে? ঘরের ছেলেমেয়েগুলো সব কাল গেল দেখতে, আমি বললাম, আমি কবে আছি কবে নেই, আমাকেও তোরা নিয়ে চল। তা তারা বললে 'দিদা তুমি ও ইংরিজি বুঝবে না'। আমি বললাম তোদের দাদু যখন ছিল আমাকে কিন্তু কিনিকো দেখিয়েছিল, তখন তোদের মাও জন্মায় নি। ও মুখপোড়া বাঁদরের কান্ড দেখে ভয়ে খুব কেঁদেছিলাম। তা সে কথা শুনে আমার নাতিনাতনিদের সে কী হাসি! চল গো বৌ, তুমি আমি দুজনায় দেখে আসি।"

    দিদা বলে "আমার কি যাওয়ার সময় আছে মাসিমা? এতগুলো ছেলেপুলে নিয়ে একার সংসার। বোঝেনই তো সব। কাল রাতে আবার চোর এসেছিল বাগানে। সে কী বিড়ির গন্ধ! ঘরে এই বয়সী মেয়েগুলো আছে, ভয়ে মরি আর কি!। মোটা টর্চটা হাতে চেপে ধরে কাঠ হয়ে শুয়ে রইলুম ভোরের আলো ফোটা অব্দি। একটু বাদেই তো সব চলে আসবে স্কুল-কলেজ থেকে, এসে ভাত খাবে। বাড়িতে রুগ্ন শ্বশুরমশাই আছেন, সব ফেলে কী করে সিনেমা দেখতে যাই বলুন?"

    আমি দিদার পিঠ ধরে দোল খেতে খেতে বলি, "দিদা আমিও কিনিকো দেখতে যাব, আমিও কিনিকো দেখতে যাব। মা রান্না করুক, আমরা সিনেমা দেখতে যাই। ভালো এসে রাতের রুটি করবে।"

    "আবার! আবার বড়দের কথার মাঝে কথা বলছ! কতদিন বলেছি বড়দের কথার মধ্যে কথা বলবে না। যাও ঘরে যাও, গিয়ে পড়তে বোসো।" মা আমাকে বকে ওঠে। আমার রাগ হয়ে যায়, আমি মায়ের কথার উত্তর দিই না। ওখান থেকে যাইও না। মা এবার দিদাকে কড়া গলায় বলে, "মা, তাড়াতাড়ি কাজ সারো। বেলা বাড়িও না। রোজ তোমার স্নান করতে অবেলা হয়ে যায়। তাড়াতাড়ি করো।" মা আসলে রাগ করছে কুটুবুড়ির উপর। কুটুবুড়িকে বসিয়ে রেখে দিদা অন্য কাজে যায় না বলে দিদার দেরি হয়ে যায়, তাই মা রাগ করছে। কুটুবুড়ি হয়তো বুঝতে পারে নি মা কুটুবুড়ির উপর রাগ করছে। ঠাকুর, কুটুবুড়ি যেন বুঝতে না পারে!

    দিদার কানে কানে ফিসফিস করে বলি "দিদা, অনেকক্ষণ তো হয়ে গেল, কেউ তো কুটুবুড়িকে বাড়ি নিয়ে যেতে এল না। আমি তাহলে মাঠে গিয়ে দাঁড়াই? একটু বাদে আমি কুটুবুড়িকে বাড়ি নিয়ে যেতে আসব?"

    দিদা একটু হাসে। আমাকে কিছু বলে না, কুটুবুড়িকে বলে, "মাসিমা, আপনাকে আরেকটু তরকারি দেব?"

    কুটুবুড়ি বলে "দেবে? তা দাও। সাথে একটু মুড়িও দেবে নাকি?"

    আমার কুটুবুড়ির জন্য কান্না পেয়ে যায় এবার। ঐ তরকারিটায় আলু, কুমড়ো, পটল সব একসঙ্গে আছে, সেটা আবার মুড়ি দিয়ে মেখে কেউ খেতে পারে? কিন্তু আমার দিদা তো ম্যাজিক জানে। ম্যাজিক দিয়ে বুঝতে পেরে যায় আমি চাই না কুটুবুড়ি পটল, কুমড়োর তরকারি মেখে মুড়ি খাক। তাই দিদা মুড়িতে নারকেল কোড়া আর বাতাসা গুঁড়ো করে ছড়িয়ে দেয়, ছাঁচের মিষ্টিও দেয়। কুটুবুড়িকে মুড়ির বাটি দিয়ে বলে "এইটা খান এখন। আমি গরম গরম দুটো পরোটা ভেজে দিই, পরে তরকারি দিয়ে খাবেন। নাহয় বাড়িই নিয়ে গিয়ে খাবেন।"

    কুটুবুড়ি বলে, "সেই যে কদিন আগে বালুসাই বানিয়েছিলে, বড় তার হয়েছিল। আর বানাও নি?"

    দিদা বলে "সে তো বেশি করে বানাই নি। ঠিক আছে, আবার বানাব। আপনাকে দেব। নিয়ে যাবেন।"

    কুটুবুড়ি বলে, "না নিয়ে যাব না। তোমার বাড়ি বসে খাব।"

    মায়ের দিকে তাকাই, মা খুব রাগ রাগ মুখে বিড়বিড় করে কী যেন বলছে। দিদার দিকে রাগ রাগ চোখে তাকাচ্ছে। দিদা দেখেও দেখছে না।

    কুটুবুড়ি আবার দিদাকে জিজ্ঞাসা করে "শুনেছ, বিলেতের রাজপুত্তুর নাকি ডাইনি নামের একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে? আমি বলি, আ মোলো যা, রাজপুত্তুরের বৌয়ের ও কী নাম গো!"

    একটা উঁ উঁ করে আওয়াজ শুনে তাকিয়ে দেখি মা মুখে আঁচল দিয়ে হাসি চাপতে গিয়ে আরো বেশি করে হাসছে। ঠাকুর, কুটুবুড়ি যেন মাকে দেখতে না পায়! কুটুবুড়ি মায়ের দিকে তাকায় না। কিন্তু চুপ করে যায়। আর কিচ্ছু বলে না। চুপ করে বসে থাকে। দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে।

    আর আমি পারি না। এক দৌড়ে উঠোন পেরিয়ে দরজার লক্ষ্মী খিল খুলে আমার লাল টুকটুকে মাঠে চলে যাই। যাওয়ামাত্রই মাঠের হাওয়া আমাকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে জড়িয়ে ধরে। আমি মাঠকে বলি, "কুটুবুড়িকে নিয়ে হাসে কেন? আমি যদি অন্য কাউকে নিয়ে হাসতাম, আমাকে কি তাহলে মারত না? বকত না?" মাঠ খানিকটা লাল ধুলো উড়িয়ে আমাকে মাখিয়ে দেয়। আমাকে হাসাতে চায়। আমার রাগ কমাতে চায়। একটু একটু করে আমার সঙ্গে হেঁটে আমাকে কুটুবুড়ির বাড়ি পৌঁছে দেয়।

    কুটুবুড়ির বাড়ি গিয়ে দেখি কুটুবুড়ির মেয়ে , সে আমার দিদার থেকেও বড়, সে বসে বসে সেফটিপিন দিয়ে দাঁত খুঁটছে। আমি তাকে বলি "তোমার ভাত খাওয়া হয়ে গেছে?" মা যদি শুনত, আমি কাউকে একথা জিজ্ঞাসা করেছি, তাহলে আমার গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারত। কাউকে এসব কথা জিজ্ঞাসা করতে নেই।

    কুটুবুড়ির মেয়ে খুব হাসে। হেসে বলে "কেন? তুমি আমাদের সঙ্গে আজ ভাত খাবে?"

    আমার হঠাৎ খুব লজ্জা হয়ে যায়, কোনোরকমে ঘাড় নেড়ে না বলি। খুব জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে করে "তোমার মাকে খুঁজতে আস না কেন তুমি?" কিন্তু পারি না। সব কথা হারিয়ে যায়। এক দৌড়ে পালিয়ে আসি।

    পালিয়ে আর কোথায় আসব? মাঠটাতেই আসি। মাঠও খুব হাসে আমাকে দেখে। আমি দৌড় লাগাই। মাঠও আমার পিছন পিছন দৌড় লাগায় অনেকটা ধুলো উড়িয়ে নিয়ে, আমাকে ধরতে পারলে আবার আমাকে ধুলো মাখিয়ে দেবে বলে। কে জানে পারে কিনা! কারণ আমি জিতে গেছি। দৌড়ে গিয়ে দরজার কড়া নেড়ে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলি, "দিদা, দিদা, ওনাকে ওনার মেয়ে খুঁজছে। খুঁজছে না, খুঁজছে না। খুঁজছেন, খুঁজছেন।"

    মা দরজা খোলে। আমি ঢুকতে ঢুকতে বলি, "ওনার মেয়ে ওনাকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। আমি বলেছি আমাদের বাড়ি আছেন উনি। আমি এক্ষুনি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি। মনুমামা তো সাইকেল নিয়ে খুঁজতে বেরোচ্ছিল!"

    কুটুবুড়ি নড়ে বসে, উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মনে হয়।

    মা আমাকে হিঁচড়ে কুয়োতলায় নিয়ে যেতে থাকে ধুলো ধোয়ানোর জন্য। ঐ যে মাঠের সঙ্গে রেসে আমি জিতে গেছিলাম না, তাও আমার পা ধুলোয় লাল করে দিয়েছে। তাহলে কি আমি জিতি নি?
  • | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২১:৩৭626744
  • আঃ চাদ্দিকের একগাদা খারাপ খারাপ লেখাপত্রের মধ্যে একমাঠ শান্তি।
  • souvik | 132.175.8.43 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২১:৫৮626745
  • সত্যি এতো ভালো লেখা বহুদিন পড়িনি।
  • Ishani | 24.96.181.91 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২২:১৯626746
  • খুউউব ভালো !
  • kumu | 11.39.26.8 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২২:৪৯626747
  • বড় মধু বড় মায়া।
  • Abhyu | 138.192.7.51 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২৩:০১626748
  • বাহ
  • nina | 78.37.233.36 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৬:৫৮626750
  • উফ! বেঙি কি যে বলি--বাক্যি হরে গেছে----থামিসনা লিখে যা লিখে যা আরও আরও লিখে যা-----লীলাব্যাঙ------
  • dd | 125.241.102.67 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১২:৩৮626751
  • এই অতীব সুখপাঠ্য ল্যাখাটি পড়তে পড়তে যেটা বুঝছি যে বাল্য বা শৈশবের স্মৃতি কথা মে' মানুষেই ভালো লিখতে পারে। মে'রা খুব পাকা হয় আর চাদ্দিকে খুব ভালো করে নজর দিতে পারে। দেখুন, খ্যাল করে। সোসেন,সিংগুল ডি,পাল্লিন ইঃ।ইঃ।

    বেং'র লেখাট খুব মনোমুগ্ধকর লাগচে,
  • সিকি | 131.241.127.1 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৩:০৬626752
  • অতীব সুখপাঠ্য। কার কথা যেন মনে পড়িয়ে দিল, ঠিক করে মনেও আসছে না ছাই। লাভের মধ্যে একদলা মনখারাপ গলার কাছটাতে এসে আটকে গেল।
  • de | 190.149.51.67 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৩০626753
  • আহা! রত্নখনি! ব্যাং সিরিয়াসলি লেখালেখি নিয়ে ভাবো - এরপরে সময় ফুইরে যাবে!
  • hu | 188.91.253.22 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৩৮626754
  • আমি ব্যাঙদিকে পোচোন্ডো পোচোন্ডো হিংসে করি।
  • byaang | 116.198.1.109 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৩৯626755
  • আমি কি তাহলে চার্লি চ্যাপলিন হয়ে গেছি? নাকি সুখেন দাস হয়েছি রে বাবা! লোকের দুঃখের কথা বললেও সবাই এত সুখ পাচ্ছে কেমন করে !!!!
  • byaang | 116.198.1.109 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৪১626756
  • ক্যানো রে হিংসে করিস ক্যানো?
  • সিকি | 135.19.34.86 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৪৪626757
  • আমি যে হিংসেয় অলরেডি ঘনো সোবুজ হয়ে গেছি সে কথাটা আর লজ্জায় লিখলাম না, পছে লোকে আমায় তিনো ভেবে নেয়।
  • hu | 188.91.253.22 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৪৬626758
  • বেশ করি হিংসে করি। একজন কেন এত ভালো লিখবে? এত্ত এত্ত ভালো লিখবে?
  • byaang | 116.198.1.109 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৫০626759
  • ভালো !! এটা ভালো লেখার নমুনা!!! আমি কোথায় ভাবছি এটা পড়ে সব্বার দুঃখু উথলে উঠবে, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদবে সবাই। তার বদলে এ কী রিঅ্যাকশন পাঠককুলের!!! কেউ কোনো রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে না, কারুর চোখজ্বালা করছে না!! ঃ(
  • সিকি | 135.19.34.86 | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৫:৫৪626761
  • আমি যে গলাব্যথা লিখলাম, সেটা বুঝি কিছু না?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন