এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সর্ষেঃ অন্যভাবে, অন্যরকম লাদাখ

    সিকি লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১২ জুন ২০১৫ | ২৪৩৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Abhyu | 118.85.88.75 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ০৯:৫৮678754
  • অনেক অভিনন্দন। লেখাটাও দুর্দান্ত হয়েছে।
  • sinfaut | 69.88.164.132 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১০:০১678755
  • শাবাশ সিকি।
  • তাপস | 126.203.157.43 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১১:৩২678756
  • আমার চেনা জানা কেউই কি এরকম পেরেছে? মনে পড়ল না। না, যাত্রার কথা বলছি না।

    একটা মানুষ স্বপ্ন দেখল, সেটা জানলাম। সে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার জন্যে তার অধ্যবসায়, বিপত্তি, বাধা, অতিক্রম, স্বপ্নপূরণ, পূরণের অনুপুঙ্খ বর্ণনা। না, এরকম কিছুর গোটাটার সাক্ষী থাকিনি কখনও। তাই অনেকটা ধন্যবাদ। শেয়ারিং এর জন্যে।

    আর এই যাত্রার একটা ল্যাগ কমপ্লিট করতে পারার জন্যে কুর্নিশ।

    চরৈবেতি।
  • pi | 83.197.98.233 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১২:০০678757
  • অন্যভাবে, অন্যরকম সিকি .. অনেক সাবাশি রইলো আর আরো আরো অন্যরকম ( এরকমই হতে হবে বলছিনা) কিছুর অপেক্ষা রইলো ঃ)
  • Arpan | 125.118.217.212 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৪:৪৬678758
  • সিকিকে একবার এদিকপানে আসার নেমন্ত করে রাখলাম। একসাথে ঘাটস আর গোয়া ট্রিপ প্ল্যান করা যাবে।

  • Paakhi | 81.162.234.248 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৭:৪০678759
  • বেশ। ভাল লেগেছে বক্তব্য, বলার ধরন।
  • Div0 | 132.172.195.210 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৮:২১678760
  • গুড ওয়ান সিকি। শুধু ওই এক্সট্রীম হীট সামলানোর জন্য প্রিকশান কিছু নিসনি দেখে একটু অবাক হলাম। বাফ-টা ছাড়া।
    অল ইন অল - তোর বাকেট লিস্টের লাদাখ বাক্সে চেক পড়লো :)

    প্রঃ বেরোনোর আগে / লেহ'তে / ফিরে সার্ভিসিং'এর সময় কি নর্ম্যাল 4T ইঞ্জিন অয়েল নিলি না সিন্থেটিক?
  • শিবাংশু | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৯:২৭678761
  • সিকি একটা মস্তো কাজ করেছে। যাত্রাটি ও লেখাটি সম্পূর্ণ করেছে, নিখুঁত।

    একটা একক যুগলবন্দি, অনবদ্য.....
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৯:৩৪678762
  • এবং ফটো, কিছু ফটো সত্যিই সুন্দর হয়েছে
  • সিকি | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২১:৫৪678764
  • পড়ে ফেলবার জন্য সব্বাইকে ধন্যবাদ, এমন কিছু ভালো লেখা হয় নি এটা, জাস্ট যা ঘটেছিল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ ন্যারেশন লিখে গেছি। গোটা ব্যাপারটাই এত বেশি অ্যাডভেঞ্চারাস হয়েছে যে সব মিলিয়ে মোটামুটি দাঁড়িয়ে গেছে। টুকরোটাকরা কিছু কিছু গল্প বাদ পড়ে গেছে। ফেরার সময়ে কারগিলে সুরু নদীর ধারের হোটেলে যখন আরাম করছি, হঠাৎ আসাদজীর ফোন - সেই আসাদজী, যাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল খারদুং গ্রামে। ভায়রাভাই আর তিনি পালা করে ননস্টপ গাড়ি চালিয়েছেন গতকাল থেকে - একটু আগে দিল্লি পৌঁছেছেন - দু দিনে। আমরা কেমন আছি, কতদূর পৌঁছলাম, সেসব খোঁজ নেবার জন্য ফোন করেছিলেন। ভালো লাগল, কত অল্প আলাপে মানুষ আপন হয়ে যায়।

    গুরদীপের কোলে যখন তার দশমাসের বাচ্চা খেলা করছিল - আবিষ্কার করলাম পঞ্জাবী ভাষাতেও কোল-কে কোলই বলে। অনেকেই হয় তো জানেন, বাংলা আর পঞ্জাবী দুই ভাষাতেই what মানে "কী"। এই প্রথম জানলাম, lap মানেও দুই ভাষাতেই কোল, যাকে হিন্দিতে গোদ বা গোদি বলে। ... হাল্কাছলে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি তো সর্দার নও, ছেলেকে সর্দার বানাবে? গুরদীপ হেসে ফেলল, নাঃ, ছেলেকে আর সর্দার বানাবো না। বড় কষ্টের জীবন - ওই সারাজীবন পাগড়ি পড়ে থাকা, গরমে মাথা চুলকোয়, হেব্বি কষ্ট হয়।

    আই-দিদিকে এই প্রসঙ্গে বলি, সর্দার কমিউনিটিকে আমার খুব ভালো লাগে এইজন্য যে, তারা নিজেদের নিয়ে যা-তা লেভেলে পলিটিকাল ইনকারেক্ট খিল্লি করে, জোকস চালায়, ওরা নিজেরাও কখনও কখনও মাথার পাগড়িকে "বন্দ্‌গোবি" বলে রেফার করে - সর্দার জোকসের কালেকশন সর্দারদের কাছে যত আছে, আমাদের কাছে তত নেই। "বাঁধাকপি" তাই পঃইঃ শব্দ হলেও - অন্তত সর্দারদের কাছে খুব অচ্ছুৎ শব্দ নয়।

    পটাশম্যাম, ফরিদা, গুরুচন্ডালির পাতার বাইরেও সমানে উৎসাহ জুগিয়ে গেছে(ন) লেখাটা চালিয়ে যাবার জন্য, আরও অনেকেই।

    অরিজিৎকেও থ্যাঙ্কু। অরিজিৎকে একটা সর্ষে লেখার জন্য অনুরোধ করেছিলাম, তো বলল যে লেখার মতন ভালো লাগে নি ওর, লাদাখ। ঠিক কথা - সবার ভালো লাগার কথা নয়। তবু অনুরোধ, অন্তত যে সময়টা তোমরা নুব্রাতে আটকে ছিলে, সেই কটা দিন যদি একটু শর্টে লিখতে পারো, আমার লেখাটার একটা কমপ্লিমেন্টারি হবে সেটা।

    অভ্যু, সিফোঁ, তাপস, পাই - সক্কলকে ধন্যবাদ। হ্যাঁ, একটা ল্যাগ কমপ্লিট হল বটে। অর্পণ, লোভ দেখিয়ে দিলে, এখন কত বছর ধরে স্বপ্ন দেখব, কে জানে। পাখিদাকেও ধন্যবাদ।

    সান্দা, বাকেট লিস্টে লাদাখ বাক্সে চেক পড়ল কিনা এখনও বলতে পারছি না, আরেকবার তো যেতেই হবে - মানালি রুট বাকি রয়ে গেল যে! কলকাতা থেকে শুদ্ধসত্ত্ব, দিল্লি থেকে বাউ, তারাও রেগুলার ফলো করেছে আমার লেখাটা আর প্ল্যান করছে আবার একটা একসাথে লাদাখ জার্নির প্ল্যান করা যায় কিনা, তোরা তো আছিসই।

    প্রিকশন নিই নি, কিচ্ছু। শেষমুহূর্তে ওইভাবে খোলা ময়দানে একা হয়ে গিয়ে টোটাল ঘেবড়ে গেছিলাম। তা ছাড়া দিল্লির গরমে আমি তো প্রতি বছরই টইটই করে ঘুরি, ভেবেছিলাম ওই রকমই কিছু এক্সপিরিয়েন্স হবে হয় তো, হাত মুখ ঢাকা ছিল, কিন্তু গরম যে এমন মারাত্মক হবে, জাস্ট কল্পনা করতে পারি নি। উত্তর ভারতের গরম, বড় নির্দয়। পরের বারে প্ল্যান করলে মাঝরাতে স্টার্ট করব, দিনের বেলায় ঘুমিয়ে নিয়ে রাত আটটা নটায় স্টার্ট করলে পরদিন সকাল নটার মধ্যে জম্মু ঢুকে পড়তে পারব। আর নাইলন দড়ি, হে হে, নৈব নৈব চ। বানজি কর্ডের এখন বড়সড় কালেকশন আমার কাছে, আর সমস্যা হবার কথা নয়। আর বেরোলে, আমার পালসার নিয়েই বেরোব। অন্য কিচ্ছু নয়। মায়াবী গাড়ি একটা।

    বাজাজ সার্ভোর 4T ইঞ্জিন অয়েল নিয়েছি, বেরোনোর ঠিক আগে, আর লে থেকে ফেরার সময়ে। তার পরে আর ভরি নি। গাড়ি দুর্দান্ত চলছে। একই মাইলেজ। কোনও নয়েজ নেই।

    ফিরে এসে পরের দিন যখন বাজাজের সার্ভিস সেন্টারে গেছি, লোকটা এল জব কার্ড নিয়ে, ওকে জাস্ট বললাম, ভাই, লাদাখ থেকে ফিরেছি, গাড়িটা বাজিয়ে দেখে নাও, যা যা দরকার সেগুলো সারিয়ে নাও, আর ডানসিকে একটা ভিউ ফাইন্ডার লাগিয়ে দাও - লোকটার মুখের ভাব বদলে গেল পুরো। যে সম্ভ্রম, শ্রদ্ধা ফুটে উঠল ওর চোখে, ওই দৃষ্টিটা আমি মনে রাখব, বেশ ভালো লাগছিল। তারপরে সার্ভিস সেন্টারের আরও কয়েকজন এগিয়ে এল, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করল আমার জার্নির বিবরণ, কেটিএম ডিউকের লোকেরা বারবার করে বাইকের পারফরমেন্স নিয়ে জিজ্ঞেস করছিল। বললাম, বাইকের পারফরমেন্স নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই।

    ফিরে আসার পরের শনিবার। সকাল বেলায় একটা ফোন এল, শিবাংশুদা। এয়ারপোর্টে বসে আছে, লে যাচ্ছে বেড়াতে। ওয়েদার কেমন, এই সব জিজ্ঞেস করছিল। শিবাংশুদা, আমার লেখা শেষ, এইবারে তোমার সর্ষের অপেক্ষায় রইলাম।
  • Arpan | 59.248.241.101 | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২৩:২৪678765
  • সিকি, আরো গোটা দুই জিনিস লিখে দাও। কেজো জিনিস, এই টইতে না লিখে অন্যত্রও লিখতে পারো।

    ১। এন্ড টু এন্ড টোটাল খরচ আর হাই লেভেল ব্রেকাপ

    ২। আর ঐ উইকটা যাবার জন্য কেন বেছেছিলে? কোন বিশেষ কারণ ছিল?
  • শিবাংশু | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২৩:২৬678766
  • মহাকালের সংসার ও একটি নদী
    --------------------------------------

    গঙ্গা এখানে উত্তরবাহিনী।

    পুরাণে বলে, ধরিত্রী শেষনাগ বাসুকীর ফনার উপর অবস্থিত। সূর্য তাকে প্রদক্ষিণ করে। সত্যপ্রতিষ্ঠা হয়ে যাবার কয়েকশতক পরেও কিছু মানুষ এখনও এরকম বিশ্বাসে স্থির। হয়তো সংখ্যালঘু, কিন্তু তাঁরা রয়েছেন। এঁদের মধ্যে বড়ো অংশ হলেন নীলরক্ত বনারসিবাবুরা। শেষনাগ অংশটির সত্যাসত্য নিয়ে তাঁদের বেশি মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তাঁরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন কাশীনগর শিবের ত্রিশূলের উপর অবস্থিত। স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, তিনলোকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান বারাণসি। এখানে নাকি কখনও ভূমিকম্প হয়না। ক্বচিৎ কখনও কাশী বিশ্বনাথ ক্লান্ত বোধ করলে ত্রিশূলদন্ডে যখন একটু হেলান দিয়ে বসেন, তখন সামান্য মাটি কাঁপলেও কাঁপতে পারে। এটুকু ছাড় শিবকে দেওয়াই যেতে পারে। নদী ও মন্দির কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করার পর বর্তমান অবস্থায় তারা কাছাকাছি রয়েছে। এই স্থানটি ইতিহাসপূর্ব কাল থেকে ছিলো আর্যাবর্ত্মের মহাশ্মশান। তার এই গৌরবময় ঐতিহ্য কালচক্রের সীমানা পেরিয়ে এসেছে। শ্মশানই মহাকাল, সংহারের দেবতা শিবের প্রিয় ভূমি, এখানেই তাঁর উপযুক্ত অধিষ্ঠান ।

    একটু খেয়াল করলে শিবের সঙ্গীসাথী ভূত-গণ-প্রেত-ভৃঙ্গিদের মধ্যরাত পেরোবার পর কচৌড়িগলিতে মিঠাই খেতে আসতে দেখা যায়।

    তুলসিকথা
    -----------------
    বনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তরের দিকে একটু এগোলেই লংকা এলাকা। সেখানে রয়েছে অতিবিখ্যাত সংকটমোচন মন্দির। সেখান থেকে আরো একটু উত্তরে গেলে দুর্গাকুন্ড, পাশে আনন্দবাগ নামে একটি পার্ক। আরো একটু উত্তরে গেলে লোলার্ককুন্ড। ব্রাহ্মণ্যধর্ম শিকড় জমানোর আগে এটি বৈদিকধর্মের একটি উপাসনাস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। এই স্থানটিকে পুষ্কর তীর্থও বলা হয়। কাছের জলাশয়টির নাম কুরুক্ষেত্র তালাও। সংকটমোচন থেকে দুর্গাকুন্ড পর্যন্ত যে এলাকা, তার একটু পূর্ব দিয়ে বয়ে চলেছে নদী। শহরের দক্ষিণতম দু'টি ঘাট, তুলসিঘাট আর অস্সিঘাট, সেখানেই রয়েছে। তুলসি আর অস্সি, এই নামপদ যুগল পরস্পরের সঙ্গে এমনভাবে ওতোপ্রোত জড়িত যে পৃথক করা যায়না। অস্সি প্রাচীনতর । তুলসিদাস ঘাটের নাম পরবর্তীকালে লোকে দিয়েছে। অস্সি নদী, বর্তমানে অস্সি নালা, এই মূহুর্তে অস্সি ঘাটের থেকে অনেকটা দক্ষিণে সরে গিয়েছে। একসময় সেটি অস্সি ঘাটের কাছে গঙ্গায় মিলে যেতো। সেখানেই থাকতেন গোস্বামী তুলসিদাস। তুলসিঘাটে তাঁর খড়ম ও প্রতিষ্ঠিত হনুমানমন্দিরটি রয়েছে এখনও।
    ---------------------------------------------------------
    রঘুকুলরীত অজহুঁ চলি আওয়ে
    প্রাণ যায় পর বচন ন জায়ে

    দীর্ঘকাল ধরে গাঙ্গেয় অববাহিকায় গোস্বামী তুলসিদাস একটি ধারণা, ব্যক্তিবিশেষ ন'ন। মধ্যযুগের প্রধান সন্তদের মতো তাঁর সম্পর্কেও অগণিত কিম্বদন্তী, লোককথা বা কল্পিত আখ্যান প্রচলিত আছে। তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে এতো ধরনের ভিন্নমুখী বর্ণনা রয়েছে যে কোনটি স্বীকৃত সত্য , কোনটা বা গল্পকথা ঠাহর হয়না। চার-পাঁচটি জন্মসন, প্রায় ততোগুলো জন্মস্থান নিয়ে লোকে নিজেদের মধ্যে বচসা করে। তবে সরকারিভাবে এখন ঘোষণা করা হয়েছে ১৫৩২ খ্রিস্টাব্দে চিত্রকূটের কাছে রাজপুর গাঁয়ে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর সমসাময়িক ও পরবর্তীকালের বিশিষ্ট ভক্তকবি ও পন্ডিতেরা তাঁকে নিয়ে যতো লিখেছেন, ভারতবর্ষের আর কোনও সারস্বতসাধকের তা নসিব হয়নি। আমার নিজের ধারণায় বঙ্গদেশে বিশের শতকে যে মাত্রায় আমরা নিজেদের জীবনচর্যা ও যাপনবৃত্তে রবীন্দ্রনাথ'কে গ্রহন করেছি, তিনচারশো বছর ধরে তুলসিদাস'কে বিস্তীর্ণ গাঙ্গেয় ভূভাগের আপামর মানুষ সেই মাত্রার গুরুত্ব ও প্রেয়ত্ব সহকারে গ্রহণ করে এসেছে। ব্রাহ্মণ্যচিন্তার বহুমুখী গভীরতা ও ঐশ্বর্য এবং ভক্তিবাদের প্রেম অনুভূতি এই দু'টির সমন্বয়ে তুলসিদাস একটা স্বীকৃত মূল্যবোধের জনক। এই মূল্যবোধটি আজকের বিচয়তো সামন্ততন্ত্র
  • শিবাংশু | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২৩:২৬678767
  • মহাকালের সংসার ও একটি নদী
    --------------------------------------

    গঙ্গা এখানে উত্তরবাহিনী।

    পুরাণে বলে, ধরিত্রী শেষনাগ বাসুকীর ফনার উপর অবস্থিত। সূর্য তাকে প্রদক্ষিণ করে। সত্যপ্রতিষ্ঠা হয়ে যাবার কয়েকশতক পরেও কিছু মানুষ এখনও এরকম বিশ্বাসে স্থির। হয়তো সংখ্যালঘু, কিন্তু তাঁরা রয়েছেন। এঁদের মধ্যে বড়ো অংশ হলেন নীলরক্ত বনারসিবাবুরা। শেষনাগ অংশটির সত্যাসত্য নিয়ে তাঁদের বেশি মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তাঁরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন কাশীনগর শিবের ত্রিশূলের উপর অবস্থিত। স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, তিনলোকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান বারাণসি। এখানে নাকি কখনও ভূমিকম্প হয়না। ক্বচিৎ কখনও কাশী বিশ্বনাথ ক্লান্ত বোধ করলে ত্রিশূলদন্ডে যখন একটু হেলান দিয়ে বসেন, তখন সামান্য মাটি কাঁপলেও কাঁপতে পারে। এটুকু ছাড় শিবকে দেওয়াই যেতে পারে। নদী ও মন্দির কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করার পর বর্তমান অবস্থায় তারা কাছাকাছি রয়েছে। এই স্থানটি ইতিহাসপূর্ব কাল থেকে ছিলো আর্যাবর্ত্মের মহাশ্মশান। তার এই গৌরবময় ঐতিহ্য কালচক্রের সীমানা পেরিয়ে এসেছে। শ্মশানই মহাকাল, সংহারের দেবতা শিবের প্রিয় ভূমি, এখানেই তাঁর উপযুক্ত অধিষ্ঠান ।

    একটু খেয়াল করলে শিবের সঙ্গীসাথী ভূত-গণ-প্রেত-ভৃঙ্গিদের মধ্যরাত পেরোবার পর কচৌড়িগলিতে মিঠাই খেতে আসতে দেখা যায়।

    তুলসিকথা
    -----------------
    বনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তরের দিকে একটু এগোলেই লংকা এলাকা। সেখানে রয়েছে অতিবিখ্যাত সংকটমোচন মন্দির। সেখান থেকে আরো একটু উত্তরে গেলে দুর্গাকুন্ড, পাশে আনন্দবাগ নামে একটি পার্ক। আরো একটু উত্তরে গেলে লোলার্ককুন্ড। ব্রাহ্মণ্যধর্ম শিকড় জমানোর আগে এটি বৈদিকধর্মের একটি উপাসনাস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। এই স্থানটিকে পুষ্কর তীর্থও বলা হয়। কাছের জলাশয়টির নাম কুরুক্ষেত্র তালাও। সংকটমোচন থেকে দুর্গাকুন্ড পর্যন্ত যে এলাকা, তার একটু পূর্ব দিয়ে বয়ে চলেছে নদী। শহরের দক্ষিণতম দু'টি ঘাট, তুলসিঘাট আর অস্সিঘাট, সেখানেই রয়েছে। তুলসি আর অস্সি, এই নামপদ যুগল পরস্পরের সঙ্গে এমনভাবে ওতোপ্রোত জড়িত যে পৃথক করা যায়না। অস্সি প্রাচীনতর । তুলসিদাস ঘাটের নাম পরবর্তীকালে লোকে দিয়েছে। অস্সি নদী, বর্তমানে অস্সি নালা, এই মূহুর্তে অস্সি ঘাটের থেকে অনেকটা দক্ষিণে সরে গিয়েছে। একসময় সেটি অস্সি ঘাটের কাছে গঙ্গায় মিলে যেতো। সেখানেই থাকতেন গোস্বামী তুলসিদাস। তুলসিঘাটে তাঁর খড়ম ও প্রতিষ্ঠিত হনুমানমন্দিরটি রয়েছে এখনও।
    ---------------------------------------------------------
    রঘুকুলরীত অজহুঁ চলি আওয়ে
    প্রাণ যায় পর বচন ন জায়ে

    দীর্ঘকাল ধরে গাঙ্গেয় অববাহিকায় গোস্বামী তুলসিদাস একটি ধারণা, ব্যক্তিবিশেষ ন'ন। মধ্যযুগের প্রধান সন্তদের মতো তাঁর সম্পর্কেও অগণিত কিম্বদন্তী, লোককথা বা কল্পিত আখ্যান প্রচলিত আছে। তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে এতো ধরনের ভিন্নমুখী বর্ণনা রয়েছে যে কোনটি স্বীকৃত সত্য , কোনটা বা গল্পকথা ঠাহর হয়না। চার-পাঁচটি জন্মসন, প্রায় ততোগুলো জন্মস্থান নিয়ে লোকে নিজেদের মধ্যে বচসা করে। তবে সরকারিভাবে এখন ঘোষণা করা হয়েছে ১৫৩২ খ্রিস্টাব্দে চিত্রকূটের কাছে রাজপুর গাঁয়ে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর সমসাময়িক ও পরবর্তীকালের বিশিষ্ট ভক্তকবি ও পন্ডিতেরা তাঁকে নিয়ে যতো লিখেছেন, ভারতবর্ষের আর কোনও সারস্বতসাধকের তা নসিব হয়নি। আমার নিজের ধারণায় বঙ্গদেশে বিশের শতকে যে মাত্রায় আমরা নিজেদের জীবনচর্যা ও যাপনবৃত্তে রবীন্দ্রনাথ'কে গ্রহন করেছি, তিনচারশো বছর ধরে তুলসিদাস'কে বিস্তীর্ণ গাঙ্গেয় ভূভাগের আপামর মানুষ সেই মাত্রার গুরুত্ব ও প্রেয়ত্ব সহকারে গ্রহণ করে এসেছে। ব্রাহ্মণ্যচিন্তার বহুমুখী গভীরতা ও ঐশ্বর্য এবং ভক্তিবাদের প্রেম অনুভূতি এই দু'টির সমন্বয়ে তুলসিদাস একটা স্বীকৃত মূল্যবোধের জনক। এই মূল্যবোধটি আজকের বিচয়তো সামন্ততন্ত্র
  • শিবাংশু | ০৫ জুলাই ২০১৫ ২৩:২৮678768
  • একটা অন্যলেখার খসড়া ভুল করে এখানে চলে এলো। মার্জনা করবেন। :-)
  • Nina | 83.193.157.237 | ০৬ জুলাই ২০১৫ ০০:১৪678769
  • :-D প্রথমে ঘাবড়ে গেলুম --লাদাখ আর কাশী এত মেশামেশি?!
    তারপর দেখি এটি একটি সুন্দর ভুল আর তাই পাহাড়ের রূপকথার সঙ্গে নদী তটে জনপদের গাথা ও গুনগুনিয়ে নিলাম -----এটির শুরু থেকে শেষ --তার অপেক্ষায় রইলাম-----শিবাজি।

    সিকি
    গতকাল পাইকিশোরিকে বলছিলাম সিকি একেবারে আধুলি নয় টাকা নয় একেবারে আকবরি মোহর হয়ে গেছে লাদাখ গিয়ে।

    আমি মন্ত্র মুগ্ধ ও এই পুরো ট্রাভেল লগটির চটির জন্য বসে থাকব---বই চাই বই ---সিকি এই পুরো আখ্যান ব্যাখ্যান ছবি সব একসঙ্গে একটি বইতে ---কালেক্টেবল আইটেম হয়ে থাকবে! ব্রাভো !!!

    ছোটবেলায় যেমন কি্ছ বই কিম্বা সিনেমা দেখলে ভেতরটা নাড়িয়ে দিত --রাত্রে স্বপ্নেও তাদের নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম ---
    আর আজ বহুদিন পর জীবনের বিকেলবেলায় পরপর দুরাত্রি শুধু লাদাখ আর সিকি আর পাহাড় আর সর্দারজীদের কোলের ছেলে - এইসব নানাবিধ নিয়েই স্বপ্নেরা মাতিয়ে রাখল সারাক্ষণ!
    কিমাশ্চর্য্যম !!
  • Rectangular Parallelepiped | 125.112.74.130 | ০৬ জুলাই ২০১৫ ০৯:৪৮678770
  • আমরা নুব্রাতে আটকাইনি তো, কোথাওই আটকাইনি - ওই দুই আড়াই ঘন্টার বসে থাকাগুলো বাদ দিলে। আর সেটা প্রায় প্রতি রাস্তাতেই হয়েছে - জোজিলা-য় ধ্বস, কারগিল থেকে লেহ্‌-র রাস্তায় মিলিটারী কনভয়ের জ্যাম, তারপর পুরো চার-পা তুলে উল্টনো কচ্ছপের মত পড়ে থাকা লরি, খারদুংলার ঠিক আগে কেরোসিনের লরির চাকা বরফে স্কিড করে খাদে ঝুলে দেড় ঘন্টা আটকে যাওয়া ইত্যাদি প্রভৃতি।

    লিখলে তুর্তুক নিয়ে লিখবো হয়তো, যদি সময় পাই। ইদানিং রাত দশটার আগে সেইটা বিশেষ পাওয়া যায় না।

    "খাচ্ছিলো তাঁতী তাঁত বুনে, কাল হল এঁড়ে গরু কিনে"

    বা

    "পড়ার কোনো শেষ নাই, পড়ার চেষ্টা বৃথা তাই"
  • | 144.159.168.107 | ০৬ জুলাই ২০১৫ ১০:০৭678771
  • সব মিলিয়ে জার্নি কমপ্লীট করবার জন্য অভিবাদন।

    এমনিতে সেই পুণে আসা ইস্তক এরকম গপ্পূ বেশ কিছু শুনেছিও। আমাদের অফিসের কিছু ছেলে প্রতিবারই বাইক নিয়ে লাদাখ যায়, কেউ কেউ তিন কিম্বা চারবারও গেছে। কেউ কেউ বাইক কার্গো চাপিয়ে চন্ডীগর বা আরেকটু আগে কোথাও নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে যায়, বেশীরভাগই তাই করে। দুই একজন সরাসরি পুণে থেকেই বাইক চালিয়ে যায়, সে অবশ্য বেশ বে-এ-শ কম। তো এইরকম ধরণের গপ্পো অফিস ব্লগে পড়েছি। তো, আমাদের অফিসের ছেলেদের স্ট্যান্ডার্ড টাইম দেখি ১৫ অগাস্টের আগেপরে ছুটি জুড়ে। নাহলেও মিড-জুলাই অনওয়ার্ডস। আরেকটা খুব জনপ্রিয় পথ দেখি অফিসে কোঙ্কনঘাট।

    যাই হো সিকির এই সময়টা বেছে নেবার কারণ কি অফিসের ছুটি ইত্যাদি?
  • de | 24.139.119.173 | ০৬ জুলাই ২০১৫ ১১:২৬678772
  • টুপি খুললাম, সিকি। অপূর্ব লেখা হয়েছে - তোমার পথের বন্ধুদেরও খুব ভাল লাগলো। আসলে ওই সাহস করে বেরিয়ে পড়াটাই আসল - পথে চলতে চলতে বন্ধু আপনি মিলে যায়। পালসারের গায়েও একটু হাত বুলিয়ে দিলাম। আরো আরো অভিযানে যাও তুমি আর তোমার পালসার!
  • সিকি | ০৬ জুলাই ২০১৫ ১৯:৪৮678773
  • অর্পণ,

    তিরিশ হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলাম। প্রথম দু রাত একা ছিলাম হোটেলে, তারপর থেকে শেয়ারিংয়ে থাকা। কুল্লে সতেরো হাজার টাকা খরচা হয়েছিল, অল ইনক্লুসিভ।

    ব্রেক আপ লিখব বলে একটা ছোট নোটবই আর পেন নিয়ে বেরিয়েছিলাম, কিন্তু কারগিলের হোটেলে পেনটা ফেলে বেরিয়ে পড়ার পরে আর হিসেব লেখা হয় নি। যতদূর মনে পড়ছে, শুরু করেছিলাম দিল্লিতে ছশো টাকার তেল ভরে, তারপরে জালন্ধরে ছশো টাকা, পরদিন জম্মুতে চারশো টাকা, পরদিন শ্রীনগরে তিনশো টাকা, তার পরদিন কারগিলে পাঁচশো টাকা ... অফলাইনে যোগ করে দেখলাম সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার পেট্রল লেগেছে। এর পরে জম্মুতে বেশি দামের হোটেলে চোদ্দশো দিয়ে ছিলাম, শ্রীনগরে ছিলাম আটশো টাকা দিয়ে, এর পরে শেয়ারিংয়ে কারগিলে চারশো, লে-তে দুদিনে তেরোশো, ইত্যদি প্রভৃতি, কদিন বেশ জম্পেশ খাওয়াদাওয়াও করেছি, কিছু কেনাকাটা হয়েছে, ইঞ্জিন অয়েল কিনতে হয়েছে, সব মিলিয়ে সতেরো হাজার মত। জার্নির আগে যে সব কেনাকাটা করেছি সেগুলো জুড়লাম না, যেমন ভায়াটেরার ব্যাগ, এলবো আর নীগার্ড, বালাক্লাভা, গেটার। সেগুলো জুড়লে আরও হাজার চার পাঁচ।

    লাদাখ রিটার্ন বলে একটা ফেসবুক গ্রুপ আছে, সেখানে কাল একজন পোস্ট করেছেন, আসানসোল থেকে লে গেছেন এবং ফিরে এসেছেন। আর্মি কানেকশন থাকায় সিয়াচেন বেস ক্যাম্প পর্যন্ত গেছিলেন। টাটা ন্যানো গাড়িতে।
  • সিকি | ০৬ জুলাই ২০১৫ ২১:১৭678775
  • অর্পণ আর দ দুজনেই একটা কমন প্রশ্ন করেছে, এই উইকটা কেন বেছে নিলাম।

    উত্তরটা দু রকমের, প্রথমে সহজ উত্তরটা দিয়ে দিই। আগের বারে স্টার্ট করেছিলাম ছয়ই জুন। এবারেও ছয়ই জুনই শুরু করার ছিল, কিন্তু এক সপ্তাহ পিছিয়ে নিয়েছিলাম অফিসের তাগাদায়। মোটামুটি ধারণা ছিল জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে মানালি রুট খুলে যায়, প্রতি বছরই তাই হয়, তাই ক্যালকুলেশন করে নিয়েছিলাম, ফেরার সময়ে মানালি খোলা পাবো। কিন্তু লে-তে যে এ বছর এই রকমের ঝড়বৃষ্টি হবে, এত স্নো-ফল হবে, রাস্তা খুলবে না, এইটা অ্যান্টিসিপেট করতে পারি নি। মানালি খুলেছে এ বছর তেরোই জুন। আমি বাড়ি ফেরার দুদিন পরে। তার পরেও এক দুদিন বন্ধ হয়েছে হেভি স্নোফলের কারণে।

    অন্য উত্তরটা একটু অস্বস্তিকর, এই টই খোলার শুরুর দিন থেকেই ভেবেছিলাম লিখব কিনা, অনেকটা দোনামোনা করেই লিখছি। উত্তরটা বেশ লম্বা।

    আমি গত আড়াই বছর ধরে বাড়িতে বসে। অফিস যাই নি। সেই ২০১২র ডিসেম্বরে দুবাই এবং আমেদাবাদ থেকে ফিরে এসে থেকে আমি বাড়িতে। ... যাই নি বলতে, একেবারে যাই নি তা নয়, মাঝে আড়াই মাসের জন্য ব্যাঙ্গালোর ছিলাম, আর এক মাসের জন্য সিডনি গেছিলাম। তার বাইরে - আমি বাড়িতে। না, বেকার নই, আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে যেটা খুব ইমপর্ট্যান্ট - অ্যালোকেশন, সেই ভার্চুয়াল এক দুখানা অ্যালোকেশন আমার ছিল, আছে, কিন্তু সমস্তই ভার্চুয়াল। মাইনে পাই, কিন্তু তিন বছর হয়ে গেল এই কোম্পানিতে, আজও পুরো দিল্লি এনসিআরে আমার বসার একটা চেয়ার নেই, সিস্টেম নেই কোনও অফিসে।

    গল্পটা শুনতে বেশ মজার লাগে, এই বাজারে একটা লোক বসে বসে মাইনে পায় - কাজ করতে হয় না, তা নয়, করি, কিন্তু সে কাজ এমন কিছু না। ফলে ধীরে ধীরে দিনের পর দিনে একটা বিশাল শূন্যতা গ্রাস করে বসেছে আমাকে। ডিপ্রেশন, ফ্রিকোয়েন্ট মুড ফ্লাকচুয়েশন - সমস্তই এই আড়াই বছরে জেঁকে বসেছে আমার মধ্যে। এই আড়াই তিন বছর ধরে আমার রিয়েল লাইফে কোনও বন্ধু নেই, কোনও কোলিগ নেই, সকালে সিকিনী অফিস চলে যায়, মেয়ে স্কুলে চলে যায়, আমি একা পড়ে থাকি ঘরে, একাকীত্ব এড়াবার জন্য আরও বেশি আঁকড়ে ধরি এই ভার্চুয়াল জগৎটাকে। অফিসের সামান্য কাজ, সেটুকুও হয়ে ওঠে না সারাদিনে।

    অফিসে একটি ভার্চুয়াল টেকনোলজি এক্সেলেন্স গ্রুপের আমি মেম্বার। ম্যানেজারটি বাঙালি এবং বদের ডিম। আমার দ্বারা হওয়া সম্ভব এমন কোনও কাজ তিনি দিতে পারেন নি পুরো সময়টা জুড়ে, নিজের অনসাইট ট্রিপ নিয়েই তিনি ব্যস্ত থকেন প্রতি মস। আজ কানাডা, কাল জোহানেসবার্গ, পরশু জার্মানি ঘুরে ঘুরে টেকনোলজির বাণী দিয়ে বেড়ান আর প্রজেক্টের এস্টিমেশন, আর্কিটেকচার ডকুমেন্ট ইত্যাদি ক্লেরিকাল জব তিনি আমাদের দিয়ে করান। গত দেড় বছর ধরে ভদ্রভবে বলে এসেছিলাম আমাকে ছেড়ে দেবার জন্য, তিনি ভদ্রভাবে শোনেন নি। আসলে, নিজেকে উঁচু দেখাবার জন্য, অ্যাপ্রেইজালে ভালো রেটিং পাবার জন্য কারুর ঘাড়ে তো পা রাখতে হয়। আমি সেই রকম একটি ঘাড় হয়ে ছিলাম তাঁর জন্য। সারা বছর তিনি দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াবেন আর আমাকে কাজ দেবেন না, আর অ্যাপ্রেইজালের সময়ে বলবেন, এ-হে-হে, তুমি সারা বছরে একটাও অনসাইট করতে পারো নি, দেখাবার মতন তেমন কাজও করতে পারো নি, তোমায় এর চেয়ে ভালো রেটিং আমি কী করে দিই?

    ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছিল এই এপ্রিল মাসে। ফ্রাস্ট্রেশনের মোটামুটি শেষ সীমায় ততদিনে পৌঁছে গেছি আমি। সমস্ত বিষ উগরে লোকটাকে ঝেড়ে কাপড় পরিয়েছিলাম। তার সঙ্গে জানিয়েছিলাম, দু সপ্তাহের মধ্যে আমার রিলিজের ব্যবস্থা না করলে অমি ওর নামে এসক্যালেশন করব। ভদ্রতার মুখোশ খুলে লোকটিও সেদিন উত্তাল ক্যাঁইম্যাঁই করে ঝগড়া করে আলটিমেটলি ফোন কেটেছিল।

    পরদিন আবার ফোন, এবার অন্যমূর্তি। অতি বিনয়ী। যাদিও আমি তাতে আর গলি নি। তিতিবিরক্ত হয়ে গেছিলাম।

    মে মাসের শেষে মুক্তি পাই, এবং সাথে সাথে প্রচুর লোক ঝাঁপিয়ে পড়ে আমার ওপর। কেউ হায়দ্রাবাদ থেকে আমায় আমেরিকা নিয়ে যেতে চায়, কেউ চেন্নাই থেকে, কেউ সরাসরি সাউথ আফ্রিকা নিয়ে যেতে চায়, এমনি একজন আমাকে তক্ষুনি তক্ষুনি বিলেতে নিয়ে আসতে চাইলেন।

    আমার একখানি বিলেতের ভিসা আছে। গেলবছর করানো হয়েছিল, আমার যাওয়াও এক রকম ফাইনাল ছিল, কিন্তু কোথা হইতে কী হইয়া যায়, আমার যাত্রা ক্যানসেল হইয়া যায়। ভিসাটি রয়ে গেছে, ভ্যালিড এ বছর অক্টোবর পর্যন্ত।

    নতুন ম্যানেজারকে খুব সন্তর্পণ বলেছিলাম - জুন মাসে গেলে হয় না? মানে, আমার একটা বেড়ানোর প্ল্যান আছে। ম্যানেজারটি খুব করুণ মুখে বললেন, ঠিক আছে, বলে দেখছি, ক্লায়েন্ট তো পারলে অজকেই চায় - তোমার কতদিনের প্ল্যান?

    আমার লাদাখের প্ল্যান আসলে ছিল ৬ থেকে ২১শে জুন। স্রেফ অফিসের কথা ভেবে - প্রায় আড়াই বছর বাদে একটা কাজ পাবো, বিলেত যাবো - এইসব ভেবে লাদখের ট্রিপ এক সপ্তাহ আগিয়ে নিয়ে এলাম। বললাম, আমি ১২ তারিখের মধ্যেই ফিরে আসব। ম্যানেজার বললেন, ঠিক আছে, ফিরে এসেই কিন্তু তোমাকে লংডং চলে আসতে হবে।

    এই হল হেতু আমার ট্রিপ আগিয়ে নিয়ে যাবার, এখন ভাবলে হাসি পায়, রাগও হয়, আজও আমি বাড়িতে বসে আছি, খুব তাড়াতাড়ি যে গিয়ে উঠতে পারব লন্ডন, তারও কোনও গ্যারান্টি নেই, আর এর চক্করে দিল্লির দুটি প্রজেক্টকে আমি না করে দিয়েছিলাম, ফলে এখন নতুন করে আবার দিল্লিতে প্রজেক্ট খুঁজে পাবারও চান্স কম।

    অ্যালোকেশন আছে, মাইনে পাই, কাজ আছে কিংবা নেই - আমি একলা বসে থাকি ঘরের মধ্যে। গুরুচন্ডালির লোকগুলো ছাড়া আমার গত আড়াই বছরে কোনও বন্ধু নেই।

    কিছুদিন আগে ভাটে পেসিমিস্টিক দু চার লাইন লিখেছিলাম বলে অরিজিৎ না কে যেন লিখেছিল না, মিলাক্রা? না, মিলাক্রা নয়, আমি জানি, আসল কারণ এই। আমি এই টইতেও আগে লিখেছি, আমার পক্ষে সোম-মঙ্গল-বুধ-বৃহস্পতি-শুক্র বারগুলো কাটানো এত কঠিন, এত কঠিন, এর চেয়ে খুব সোজা ছিল শেষরাতে বাইক নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া। আমি শান্তি চাইছিলাম, মুক্তি চাইছিলাম। নিজের পরিচিত ছকের জীবন থেকে পালাতে চাইছিলাম। আমার কোনও স্পেশাল ক্ষমতা নেই, কোনও ধক নেই, জাস্ট মরিয়া হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম একা একা, নইলে আমিও হয় তো জার্নি পোস্টপোন করতাম সঙ্গী না পাওয়া পর্যন্ত।

    কী রকম ভয় ধরে গেছিল, মনে হচ্ছিল, আমি বোধ হয় এ জীবনে আর কোনও রিয়েল লোকজনের সাথে মিক্স করতে পারব না, এই ভার্চুয়াল জগতের চক্করে। পথ জুটিয়ে দিল পথের সাথী, দেখলাম - না, লোকজনের সাথে এখনও মিশতে পারছি, অসুবিধে হচ্ছে না।

    নিজেকে চিনতে চাইছিলাম - লিখেছিলাম না?
  • Arpan | 125.118.152.90 | ০৬ জুলাই ২০১৫ ২১:৪১678776
  • উরিস্লা!
  • Pallin | 195.97.81.100 | ০৬ জুলাই ২০১৫ ২২:০৭678777
  • সিকি , পড়লাম। ধন্যি তোর সাহস আর অধ্যবসায় !
    ফরিদাদির মতন করে হাই ফাইভ ড্যুড বলে গেলম।
  • h | 127.248.139.173 | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৮:২০678778
  • সিকি, পরম করুণাময় তোমায় অনেক সাহস দিয়েচেন এবং তুমি বেড়ানোর নেশায় সে সাহস কাজে লাগিয়েচো, এইটা তো খুব ই ভালো। কিন্তু তুমি যে চাকরির প্রসংগ এনেছো যেটা ব্যক্তিগত যদিও, হয়্তো তোমার আমাদের সংগে শেয়ার করতে ভালো লেগেচে। আমার একটা কূট পয়েন ছিল, অনসাইট অপরচুনিটি তে কি এমন পেতে যাতে সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এর কাজ ভীষণ মৌলিক ভাবে বদলে যেত বা সৃজনশীল কাজের সুযোগ খুব বেড়ে যেত, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন কোং এ যেমন কাজ হয় তার তুলনায়? নাকি সমস্যাটা কাজ নিয়ে না, সমস্যাটা হল, যে ফ্রেমওয়ার্কে চাগরি, তাতে দু চার পিস অন সাইট না হলে বৎসরে, প্রোমোশন হয় না বা বাজে অ্যাপ্রাইজাল হয়, সমস্যা টা এটা?

    মানে আমি যেটা আদৌ ধরতে পারিনি, যে কারো সংগে মিশতে না পারাটার কারণ অনসাইট না পাওয়া কি করে হতে পারে। তোমার অসংখ্য লোক কে বোর লাগে সেটা ফাইন, সেতো সকলের ই লাগে। আর অনলাইন এর বন্ধু রা ব্রিক অ্যান্ড মর্টার বন্ধুদের থেকে কি এমন আলাদা সেটা অবশ্য অন্য প্রসংগ। জীবন কে চেনা র তো প্রয়োজনের শেষ নেই, নিজেকে আবিষ্কারের ও শেষ নেই, আমি তার সংগে অনসাইটের কি মৌলিক সম্পর্ক থাকতে পারে বুঝি নি। অনেক সময় হয়, বিভিন্ন রাজনইতিক বিষয়ে এত সংরঅনশীল লাগে মানুষের মতামত, মনে হয় বিদেশে পালাই। মানে ভীষন সাতরংগা জার্মান কে গিয়ে একটু গ্রীস নিয়ে জিগ্যেশ করে দেখতে পারো, সমস্ত লিবেরালিজম গয়া কাশী হয়ে গিয়ে সংরক্ষনশীল কুস্তিগীর হয়ে যাবে, সেটা তো অন্য সমস্যা।

    একাকীত্ত্বের সমস্যা গভীর হতে পারে। সেটা নিয়ে আমার বক্তব্য নাই, কিন্তু তার সংগে অনসাইট জুড়ো না মাইরি। আমার আবার অনসাইটে গেলেই প্রচন্ড একাকীত্ত্ব হয়।
  • h | 127.248.139.173 | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৮:২২678779
  • মানে সন্ধের আগে অব্দি, তার পরে তো দুনিয়া লা হাবানা অথবা সাহিত্যের ইতিহাস বা ইতিহাসের সাহিত্য ইত্যাদি।
  • h | 127.248.139.173 | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৮:২৫678780
  • তোমার সমস্যাকে ছোটো না করেই বলছি, ছোটো করার কাজ টা তোমাকেই করতে হবে গুরু। কি বয়স তোমার বলো? এতো চাপ নিয়ো না। গ্রীস টাও তো দেখতে হবে, সুদু লাদাখ না। বড় সমস্যা গুলোর জইন্য তো সময় চাই ;-)
  • h | 127.248.139.173 | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৮:৩২678781
  • এতো অল্পো বয়সে, বই লিখেছো, লেখক হয়েছো, এতো দুনিয়া দেকেছো, এত কিছু বিষয়ে আগ্রহ পেয়োচো, টেকনোলোজি দিয়ে কাজ এবং সুন্দর অকাজ দুটো কেই এতো সাহায্য করোচো, করুণাময় ঈশ্বরের কৃপায় মেয়েও দেখতে দেখতে বড় হয়ে যাবে, ইনশাল্লাহ, তোমাদের মতই গুণী ও হবে, হোয়ার ইজ দ্য চাপ বাডি?
  • সিকি | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৮:৪৫678782
  • হনু ক্যামন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে যাচ্ছে দিন কে দিন।

    অনসাইটের জন্য আমি লালায়িত ছিলাম না কোনওদিনও। সমস্যাটা একাকীত্বের। আর হ্যাঁ, আমি যে গ্রুপে ছিলাম দু মাস আগে পজ্জন্ত, সেখানে অ্যাপ্রেইজালের একটা প্যারামিটার হল এইটা - তুমি প্রতি কোয়ার্টারে কটি জিওগ্রাফিতে গিয়ে টেকনিকাল কনছাল্টেশন করোচো। এর সাথে আরও প্যারামিটার ছিল অবশ্য, পুরো বছরে তোমাকে একশো মিলিয়ন ডলারের বিজনেস এনে দিতে হবে, বছরে পাঁচটা টেকনিকাল পেপার লিখতে হবে - এইসব। তো, যে সারা বছর জাস্ট বসে থাকে, সে যে কী করে এইসব করবে আমি বুঝে উঠতে পারি নি। তারোপর বস যদি বদ হয়, জীবনে দুঃখ্কষ্টের পরিমাণ আরো বেড়ে যায় - ভাবো, চেতন ভগতের বস যদি বদ না হত, চেতন ভগত কি আজকের মতন এমন বিগড়ে যেত?

    আমার লাইনে টেকনিকালি অনেক অনেক রকমের খ্যাঁচাকল আছে - সে সব এখানে আলোচনা না করই ভালো, মোদ্দা কথা, আমার লাইনের কাজ দিল্লিতে বিশেষ হয় না - বাকি পৃথিবীতে হয় অবিশ্যি, ভারতেও অন্যান্য শহরে হয়। সব মিলিয়ে ঐ পাল্লিনের মতন রিমোট অ্যালোকেশন - এবং দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আমার কোনও স্টেটাস আপডেট হয় না, কারণ কাজই আসে না। জাস্ট টাইমশীট ভরি আর মাইনে পাই। এই কোম্পানিতে জয়েন করার আগে অবধি পরিস্থিতি ঠিক এই রকম ছিল না, অফিস ছিল, সবচেয়ে বড় কথা, কাজ ছিল। এই অফিসটি, অফ লেট, আমার অনেক কিছু তছনছ করে দিয়েছে। আমি শুধু দিল্লিতে একটি বসবার চেয়ার চেয়ে চলেছি গত তিন বছর ধরে - পাই নি।

    অনসাইটের গপ্পোটা সম্পূর্ণ আলাদা - সেটার সঙ্গে আমার একাকীত্ব বা ডিপ্রেশনের কোনও সম্পর্ক নেই। ঐ পরম করুণাময় ঈশ্বরের দয়ায় আমি যা মাইনেকড়ি পাই তাই দিয়ে একদুবার নিজের পয়সাতেই দুনিয়া দেখে আসতে পারি। অফিসের দেওয়া অনসাইট তো জাস্ট বাহানা - আসলে দেশ দেখার চেয়ে ইন্টারেস্টিং জিনিস কিছু আছে নাকি ভুবনে? (অর্পণ নোট ইট - ভুবন বানান ঠিক লিখেছি)
  • h | 127.248.139.173 | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৮:৫৪678783
  • ও ওকে। নাও আই নো। খোলসা করে না বললে পরিষ্কার হছিলো না। দিল্লী তে যে সমস্যা কিছু একটা আছে, সেটাও আবিষ্কার হল ;-) জাস্ট জোকিং। হ্যাঁ প্রত্যেকটা সমস্যাই ঝাড়ের। আশা করি লাদাখ কিংবা লন্ডন ছাড়াই কোন একটা ম্যাজিকে সল্ভ হবে।
  • Arpan | 125.118.42.159 | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৯:২৯678784
  • পথের দেবতা কূট হাসিয়া বলেন মূর্খ বালক, একশো মিলিয়ন ডলারের বিজনেস আনিয়া তুমি সসম্মানে একখানি চেয়ার বাগাইয়া লইও। ততদিন তোমাদের মর্ম্মর জীবন-স্বপ্ন সুনীল পালসারের দলে ভরিয়া থাকুক।
  • সিকি | ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৯:৩৬678786
  • :)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন