এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  বিবিধ

  • ইসলাম ও ইসলামফোবিয়া

    3-dots
    আলোচনা | বিবিধ | ১৫ নভেম্বর ২০১৫ | ১৫১৪২ বার পঠিত
  • প্যারিস থেকে চিত্রশিল্পী সাহাবুদ্দিনঃ
    "এত ভয় আগে কখনও পাইনি। এত অসহায় আগে কখনও মনে হয়নি নিজেকে। মুম্বইতে যে রকম হামলা হয়েছিল, প্যারিসে হুবহু সে রকমই দেখলাম। মুম্বইয়ের ঘটনা টিভিতে দেখেছিলাম। ভয়ঙ্কর! এ বার প্যারিসে নিজেই সেই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেলাম। এমন জঘন্য কাজ কারা ঘটাতে পারে! কোন ধরনের মানুষ তারা? অথবা আদৌ মানুষ কি? আমার সত্যিই আতঙ্কের ঘোর কাটছে না। গোটা রাত ঘুমতে পারিনি। এখন কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ব, তেমন মানসিক স্থিতিতে পৌঁছতে পারছি না।"
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • anirban | 208.128.204.144 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০১:১৫687852
  • What’s your reaction to the attacks in Paris earlier this month, and what do you think of the current Western strategy of bombing ISIS?

    Chomsky: The current strategy plainly is not working. The ISIS statements, both for this and the Russian airliner, were very explicit: you bomb us and you will suffer. They are a monstrosity, and these are terrible crimes, but it doesn’t help to hide our heads in the sand.

    The best outcome would be if ISIS were destroyed by local forces, which could happen, but it will require that Turkey agree. And the outcome could be just as bad if the jihadi elements supported by Turkey, Qatar, and Saudi Arabia are the victors.

    The optimal outcome would be a negotiated settlement of the kind being inched towards in Vienna, combined with the above. Long shots.

    Like it or not, ISIS seems to have established itself pretty firmly in Sunni areas of Iraq and Syria. They seem to be engaged in a process of state building that is extremely brutal but fairly successful, and attracts the support of Sunni communities who may despise ISIS but see it as the only defense against alternatives that are even worse. The one major regional power that is opposing it is Iran, but the Iran-backed Shiite militias are reputed to be as brutal as ISIS and probably mobilize support for ISIS.

    The sectarian conflicts that are tearing the region to shreds are substantially a consequence of the Iraq invasion. That’s what Middle East specialist Graham Fuller, a former CIA analyst, means when he says that “I think the United States is one of the key creators of this organization.”

    Destruction of ISIS by any means that can be imagined might lay the basis for something worse, as has been happening quite regularly with military intervention. The state system in the region imposed by French and British imperial might after World War I, with little concern for the populations under their control, is unraveling.

    The future looks bleak, though there are some patches of light, as in the Kurdish areas. Steps can be taken to reduce many of the tensions in the region and to constrain and reduce the outlandishly high level of armament, but it is not clear what more outside powers can do apart from fanning the flames, as they have been doing for years.https://www.jacobinmag.com/2015/11/noam-chomsky-interview-isis-syria-intervention-nato/
  • দ্রি | 101.109.247.173 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০১:২৬687854
  • নোয়াম চমস্কি যাই বলুন, রাশিয়ান বমিং পর সিরিয়ায় আইসিসের অবস্থা বিশেষ সুবিধের নয়।
  • . | 205.154.83.193 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:৪৯687855
  • মাস শুটাউটের জন্য কাদের প্রোফাইলিং করা উচিত কে জানে! তবে অ্যামেরিকায় এখনো ইসলামিক টেরোরিজম ইনসিডেন্ট হয়নি তার জন্য যেমন হোমল্যান্ডের প্রশংসা প্রাপ্য তেমনি শুটাউট আটকাতে না পারার জন্য গালাগাল প্রাপ্য। অপদার্থ এফবিআই+পুলিশের+অন্যদের এখনি স্টেপ নেওয়া উচিত যাতে মাস শুটাউট না হয়।
  • Debabrata Chakrabarty | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৩৯687856
  • নিউ অর্লিয়েন্স বা আম্রিগায় ক্যাম্পাস বা অন্যত্র এই গণহারে মাসশুটাউট গুলোর জন্য কাদের কাদের প্রোফাইলিং করা উচিত, একটু জানার ইচ্ছে রইলো। প্রথমত সাইকিয়াট্রিস্ট , দ্বিতীয়ত আন্টি দিপ্রেসান্ট তৃতীয়ত গান কালচার
  • ঈশান | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৫০687857
  • বড়ো করে লিখব ভেবে দেখলাম, অনেক পড়াশুনো করতে হবে, অন্তত ডেটা ফেটা তো আর মুখস্থ নেই। ছোটো করেই লিখি। সন তারিখ একটু এদিক ওদিক হতে পারে, একটু চেক করে পড়বেন।

    বাওয়ালের উপকরণ ১।
    এই গপ্পের শুরু ষাটের দশকে। ইজরায়েল প্রসঙ্গে বা মধ্যপ্রাচ্যের কাটাকুটি প্রসঙ্গে ঢোকা হবেনা, জাস্ট আন্তর্জাতিক চিত্রটা একটু দেখা যাবে। ষাটের দশকের চিত্র, এই ২০১৫ সালের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা সবাই জানেন। তখনও জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের রমরমা। তৃতীয় বিশ্বে সোভিয়েতের বিপুল প্রভাব। এছাড়াও শোনা যাচ্ছে, চারদিকে বিপ্লব হবে। কিউবান মিসাইল ক্রাইসিস জলজ্যান্ত বাস্তব। ভিয়েতনাম যুদ্ধে ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে, আমেরিকা হারবে। বিশ্বজুড়ে ভুতের কেত্তন, প্যারিসে ছাত্র অভ্যুত্থান হবে এই দশকের শেষের দিকে, ইত্যাদি।

    এই সময় পশ্চিমী দেশ এবং বড়ো কর্পোরেশনগুলো যে জিনিসটার অভাবে সবচেয়ে বেশি ভুগছিল, তার নাম মতাদর্শ। প্রাচুর্য ইত্যাদি সবই ছিল, কিন্তু কমিউনিজমের পাল্টা মতাদর্শ বলে কিছু তৈরি হয়নি। প্রচুর বিক্ষুব্ধ, দলত্যাগী কমিউনিস্ট (যেমন কামু) ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু মতাদর্শ কিসুই হয়নি। এমনকি পোস্ট স্ট্রাকচারালিজমের জনকরা, অর্থাৎ, ফুকো, লেভি স্ত্রাস বা আলথুসার নানা আভাঁগার্দ তত্ত্ব বানিয়ে চলেছেন, কিন্তু সেসবই বিপ্লবের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াচ্ছে (প্রসঙ্গত ফুকো এবং সাত্রে বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে ছাত্রদের সঙ্গে হাতে হাত দিয়ে দাঁড়িয়েছিলন, একসঙ্গে)।

    এই বাজারে, অর্থাৎ, ওই ষাটের দশকেই আরেকটি ছোট্টো ঘটনা ঘটেছিল, যা সাধারণের নজর এড়িয়েছিল। মিল্টন ফ্রিডম্যান নামক একজন পাঁচফুটিয়া অর্থনীতিবিদ, একখানা বই লিখেছিলেন, যার নাম "ক্যাপিটালিজম অ্যান্ড ফিডম"। বিপ্লবের ডামাডোলে সাধারণের চোখ এড়ালেও, এইটিই ক্রমশ হয়ে ওঠে পশ্চিমী রাষ্ট্র ও কর্পোগুলির বাইবেল। ফ্রিডম্যান আরও অনেক লেখা লেখেন পরে। সেসব একাধারে দর্শন, এবং অগ্রগতির ম্যানিফেস্টো। যাঁরা বলেন, একবিংশ শতকের ক্যাপিটালিজমের কোনো কার্ল মার্ক্স নেই, তাঁরা ভুল বলেন। মিলটন ফ্রিডম্যান হলেন পশ্চিমী রাজনীতি এবং অর্থনীতি (যা রাজনীতির পোঁ ধরেই চলে)র বিপুলাকার এক কম্পাস।

    ফ্রিডম্যানের অর্থনীতি নিয়ে আমরা এখানে আলোচনা করবনা। মোটামুটি শিকাগো স্কুল বলতে যা বোঝায় তাইই। অর্থাৎ, প্রতিযোগিতা এবং যোগ্যতমের উদবর্তন, সরকারি হস্তক্ষেপ গুটিয়ে নেওয়া, এই হল দুই মেজর পয়েন্ট। এবং এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে কাজ তৈরি হবে, ইনোভেশন হবে, এবং কার্কেট সেই কাঙ্খিত ইকুইলিব্রিয়াম এনে দেবে, যা কোনো সরকারি রেগুলেশন আনতে অক্ষম।

    এই পর্যন্ত ঠিকই আছে, বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু অজানা কিছু নয়। যেটা সাধারণভাবে নজরে পড়েনা, সেটা হল, ফ্রিডম্যান এই কাঙ্খিত লক্ষ্যে কিকরে পৌঁছতে হবে, তার কিছু দিকনির্দেশও করেছেন। সেগুলো একদিনে তৈরি হয়নি। ধাপে ধাপে হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই ঘরানাটা সম্পূর্ণ এক। এই দিকনির্দেশের মূল কথা হল, পৃথিবী ক্রমশ রেগুলেশনের জালে এত জড়িয়ে গেছে, যে, ধাপে ধাপে মুক্ত বাজার আনা অসম্ভব। ধরুন, আপনি অমুক জায়গায় খাবারে ভরতুকি তুললেন, তা নিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এত চিল্লামিল্লি হবে, যে ওই রাস্তায় বেশিদূর এগোনো যাবেনা। তাই আওচোনা ভোটাভুটি এইসব গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ হবেনা, যা করতে হবে এক ঝটকায়। রোলিং স্টোন গ্যাদার্স নো মাস। একবার এসকেপ ভেলোসিটি দিতে পারলে বাকিটা গড়গড়িয়ে এমনিই চলবে।

    সোজা বাংলায় মার্ক্সের বিপ্লবের বিপরীতে ফ্রিডম্যান এখানে পাল্টা বিপ্লবের তত্ত্ব দিচ্ছেন। এই বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ হল ইনিশিয়াল ধাক্কা, এবং লক্ষ্য হল রেগুলেশনহীনতা। এই জন্য ফ্রিডম্যানের কাছে গণতন্ত্র, জনগণের ভয়েস, এসব অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় বাধা, যা চরম অভীষ্টে পৌঁছনো আটকে দেয়। বরং ডিক্টেটরশিপ বেটার চয়েস (এটা অবশ্য নিজ মুখে বলেননি, কিন্তু করে দেখিয়েছেন, সে কথায় পরে আসব)। মোট কথা, স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে পশ্চিমের আঁতাতের তত্ত্বটি ফ্রিডম্যানের নির্মিতি। একই সঙ্গে ফ্রি মার্কেট এবং ইনিশিয়াল ধাক্কা, এই দুটোই, আমরা দেখব, পশ্চিমের পরবর্তী কাজকর্মে খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি পয়েন্ট। স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে আঁতাতেরও এই হল তাত্ত্বিক ভিত্তি।
  • .. | 205.154.83.193 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৫২687858
  • গান কালচার মানে NRA তো? এটা ভালো আইডিয়া। এফবিআই নাইন-ইলেভেন এর পর থেকেই রিলিজিয়াস প্রোফাইলিং করছে আর ইসলামিক টেরোরিজম কিছুটা আটকাতে পেরেছে, সেরকম NRA মেম্বারদের প্রোফাইলিং করতে পারে তাতে যদি মাসশুটিং কমানো যায়। অ্যামেরিকাতে প্রচুর মস্ক ইনফিলট্রেট করেছে, তেমনি শুটিং ক্লাব আর রেন্জগুলো ইনফিলট্রেট করে দেখতে পারে। তবে যতক্ষন না মাসশুটিং কমাচ্ছে ততক্ষন এই ইস্যুতে এফবিআই-পুলিশ-হোমল্যান্ডকে অপদার্থ গাধা বলে গালাগাল দেবো।
  • ঈশান | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:০৭687859
  • বাওয়ালের উপকরণ ২।

    ডিউইট আইজেনহাওয়ার, তাঁর প্রেসিডেন্সির শেষে আমেরিকার উদ্দেশ্যে একটি সতর্কবাণী আউড়ে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, মিলিটারি এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠচে ক্ষমতার ক্ষেত্রে, এইরকম একটা কথা (ভাবতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটা একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন)।

    তা, এই কমপ্লেক্সটি বাস্তব। ফ্রিডম্যানকে পেয়ে তারা হাতে চাঁদ পায়। অচিরেই এই চিন্তার ধরণটির নাম হয় শিকাগো স্কুল। পরবর্তীতে, মানে ওই ষাটের দশকেই, লাতিন আমেরিকা থেকে গাদা ছাত্রকে স্কলারশিপ দিয়ে নিয়ে আসা হয় শিকাগো ইউনিভার্সিটিতে। তারা এই অর্থনীতিতে শিক্ষা পায় এবং নিজ দেশে ফিরে প্রচার ও অন্যান্য কাজে মার্কিনীদের কাজে লাগে। এই অর্থনীতিবিদদের ব্র্যান্ডটির চালু নাম ছিল "শিকাগো বয়েজ"। নেটে এই নামটি দিয়ে সার্চ মারুন, যা পাবার পেয়ে যাবেন। এশিয়ায় অনুরূপ কম্মোটি যারা করেন, সেই অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বার্কলে ফেরত। এঁদেরও কি একটা নাম হয় (বার্কলে ব্যান্ডিটস টাইপের :-)), কিন্তু সেটা আমি ভুলে গেছি। নেটে দেখে নিন।

    এ ছিল শুরুয়াত। শুধুই তত্ত্ব। এরপরে আসে হাতেকলমে কজের যুগ। ১৯৭৩। ফ্রিডম্যান এবং মার্কিনী মিলিটারি ইনডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের প্রথম এক্সপেরিমেন্টের ক্ষেত্র হয় লাতিন আমেরিকার চিলি নামক একটি দেশ। সেখানে পপুলার ফ্রন্ট নামক একটি বামপন্থী সরকার এক দশকের কিছু বেশি সময় ধরে রাজত্ব করছিল। পরের ভোটেও তাদের আসার সম্ভাবনা প্রবল হওয়ায়, জেনারাল পিনোচেত একটি ক্যু ঘটান। তার পিছনে মিলিটারি ইনডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের হাত এতই স্পষ্ট ও বহুল প্রচারিত, যে সে আলোচনায় যাবনা। যেটা বলার, সেটা হল, নতুন সরকারের অর্থনীতিবিদরা ছিলেন শিকাগো বয়েজ। ফ্রিডম্যানকে সেখানে দেবতার আসন দেওয়া হয়। তিনি নিজেও চিলি পরিদর্শনে এসে পিনোচেতকে নানা টিপ এবং নির্দেশাবলী দিয়ে যান। পুরোটাই ছিল খুল্লামখুল্লা। পরবর্তীতে চিলিতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে ফ্রিডম্যান "চিলির মিরাকল" আখ্যা দেন। মিরাকল কী হয়েছিল সে অন্য তক্কো। সেখানে ঢুকবনা। এখানে প্রতিপাদ্য এই, যে, এর আগে আমেরিকা লাতিন আমেরিকায় অনেক ক্যু ঘটিয়েছে। কিন্তু এটিই ছিল প্রথম ক্যু, যা পশ্চিমী
    ক্যাপিটালিজমের লিখিতপড়িত আইডিওলজি দিয়ে চালিত। তাত্ত্বিক নির্দিষ্ট পথে পশ্চিম হাতেকলমে এই প্রথম স্বৈরতন্ত্রের হাত ধরে। এরপরে খুন-জখম যা হবার সবই হয়। ক্ল্যান্ডেস্টাইন ইন চিলে সকলেই পড়েছেন টেন। নেরুদার কথাও সবাইই জানেন। ও আর বলার কিছু নেই।

    বলার যেটা, যে, এটা হল স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে পশ্চিমের আঁতাতের দ্বিতীয় ভিত্তি। তত্ত্বের পর হাতেকলমে।
  • ঈশান | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:২৬687860
  • বাওয়ালের উপকরণ তিন।

    এসবের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের কী সম্পর্ক? সম্পর্ক এই, যে, ওই সময় থেকেই "মুক্ত অর্থনীতি" ই "স্বাধীনতা"র ফোকাল পয়েন্ট হয়ে ওঠে। এর অগে সাম্য, অর্থাৎ গণতন্ত্র ছিল পুঁজিবাদী "স্বাধীনতা"র বেঞ্চমার্ক। ফ্রিডম্যান অবতার আসার পর, অর্থাৎ মোটামুটি ষাটের দশকের পর থেকে "মুক্ত বাজার" হয়ে ওঠে "স্বাধীনতা"র আসল শব্দার্থ। তার জন্য যার খুশি হাত ধরা যায়। থিয়োরিটিকালিই। ধরলেও আপনি স্বাধীনতার ই যোদ্ধা।

    হুবহু এই মানসিকতার কথা বলেছেন জন পার্কিন ওই কনফেশনস অফ অ্যান ইকনমিক হিটম্যানে। এই লেখায় ওই বই থেকে কোনো রেফারেন্স এখনও দিইনি, শুধু মিলটাই লক্ষ্যণীয়, সেটা এখানে মেনশন করলাম মাত্র। বস্তুত মুক্তবাজারের লক্ষ্যে যে যুদ্ধের ডাক, তার সঙ্গে জিহাদিদের ডাকের বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। মেটাফরিক্যালি এবং ট্যাকটিকালি।

    তা, এই চিন্তার ঘরানা গোটা এশিয়ার রাজনীতিতেই ছাপ ফেলে। একদিকে সোভিয়েত এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট প্রভাব কমানোর জন্য যেকোনো গোঁড়া স্বৈরতন্ত্রী মতাদর্শের সঙ্গে হাত মেলানোর তত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি হয়। এবং একই সঙ্গে বহুজাতিক কর্পোগুলিরও অবাধ ব্যবসার সুবিধে হয়। চালু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলিকে ঠিকঠাক ধাক্কা দিতে পারলে তবেই একটা দেশকে বহুজাতিকের মৃগয়াক্ষেত্র বানিয়ে ফেলতে সুবিধে হয়। ফলে এই মতাদর্শ এই পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্যও হয়ে ওঠে। ইন্দোনেশিয়ায় হয় এর প্রথম সফল এক্সপেরিমেন্ট। গোঁড়া ইসলামী এবং স্বৈরতন্ত্রী শক্তিকে একজোট করে জেনারাল সুহার্তোর নেতৃত্বে হয় ক্যু। প্রচুর, মানে প্রচুর কমিউনিস্ট মারা যান। স্বৈরতন্ত্র এবং গোঁড়া শক্তি জেতে। এবং একই সঙ্গে অর্থনীতিতে ক্ষমতায় আসেন বার্কলে ফেরত অর্থনীতিবিদরা, যাদের কী যেন একতা বলা হত, আমি ভুলে গেছি।

    গোঁড়ামি, স্বৈরতন্ত্র, কর্পোদের জন্য খোলা দরজা এবং পশ্চিমী মিত্রতা, এদের আঁতাতের যুগ শুরু হয়ে যায় এশিয়ায়। পাকিস্তান আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যে এর পর থেকে তাইই দেখব আমরা। একই স্টিরিওটাইপ। এবং পুনরাবৃত্তি।

    এই হল পশ্চিমী "স্বাধীনতা"র স্টিরিওটাইপ, যা এই বাওয়ালের তৃতীয় উপকরণ।
  • ঈশান | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৩০687862
  • এরপর আরব আসবে, কিন্তু ঘুম পেয়ে গেছে। বাকি কাল।
  • ঈশান | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৩৩687864
  • বার্কলে মাফিয়া। টার্মটা মনে পড়েছে।
  • aranya | 154.160.5.101 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৩৩687863
  • বাংলাদেশও যেন আসে
  • aranya | 154.160.5.101 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৩৭687865
  • এদিকে রাশিয়া আর ফ্রান্স বোধহয় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করছে।
    এইসময়ে পড়লাম গত এক বছরে বিমান থেকে ছোড়া ব্যারেল বোমায় প্রায় ৭০০০ জন মারা গেছে, তাদের মধ্যে ১৪৩৬ জন শিশু

    http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=19465&boxid=7111389
  • SC | 117.206.249.8 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ১২:৪৮687866
  • একদিকে তো রাজনীতি। কিন্তু মনে রাখবেন, ISIS একটা হিউমান স্টোরি ও বটে। সেটাই এখানে কিছুটা পয়েন্ট আউট করতে চেয়েছি।
    এই যে অনেকের ISIS এর দিকে ধেয়ে যাওয়া, সুমন থেকে ইউরোপ এর কচি কচি ছেলেদের, এটা আসলে একটা সভ্যতার failure ।
    সেই failure এর ফাঁকফোকরে চুপি চুপি বাড়ে ISIS ।
    মার্কিন লেখিকা joyce carol oates twitter এ সেদিন কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। এস usual , প্রচুর লোক না বুঝে আলফাল খিস্তি করে দিয়েছে।
    কিন্তু প্রশ্নগুলো সহজ নয়।
    http://www.nytimes.com/2015/11/24/books/joyce-carol-oates-celebratory-joyous-islamic-state-twitter.html

    পি টি দা সেদিন যে rational সমাজের ঢাক পেটাচ্ছিলেন, আজ ওই দাঁড়িওয়ালা লোকটার ভিডিও দিয়ে সেই সমাজের failure গুলোকেই মেনে নিলেন।
    "What is clear is that human beings can't live for long--do not care to reproduce--without meaning in their lives."

    দাঁড়ি টাকে নিয়ে খিল্লি করলেও ওর কথাগুলো এতগুলো মানুষকে ডিপ কোনো একটা জায়গায় কেন আঘাত করছে, বুঝতে হবে। ISIS এর বিরুদ্ধে অস্ত্র ঐটাই, বোমার থেকেও অনেক বিষাক্ত।
  • SC | 117.206.249.8 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ১২:৫১687867
  • In an email, Ms. Oates said she posted to Twitter several times on the subject after reading coverage in The New York Times about the treatment of women in the Islamic State.
    “Based on that piece, I wondered how is it possible that human beings would choose to live such grim, narrow lives, driven by the harshest sort of fanaticism and continually under the scrutiny of religious police, without any sort of happiness or fellow feeling?” she wrote. “It is a choice that bewilders many of us, I would think — not just me.”

    Ross Douthat, a New York Times columnist, was among those to weigh in on her question. “If you don’t recognize that for at least some of the Islamic State’s young volunteers there is a feeling of joy and celebration involved in joining up, then you’re a very long way from understanding the caliphate’s remarkable appeal,” he wrote.
  • me | 127.194.46.170 | ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ২২:৫১687868
  • শুধু শিয়া সুন্নি নয় আরো অনেক ভাগ আছে - যেমন আরব সুন্নি ,কুর্দ সুন্নি ,তুর্কমান সুন্নি ,আলাঅয়ী, ইরাকি শিয়া, ইরানি শিয়া । ইন ফ্যাক্ট তুরস্কের রাশিয়ান ফাইটার প্লেন নামানো তো তুর্কমান সুন্নি আর সিরিয়ান আলাঅয়ী দের বিরোধের ফল ।
    http://www.smh.com.au/world/payback-and-vested-interests-drove-turkey-to-shoot-down-russian-jet-20151124-gl75jj.html
  • ঈশান | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:৫০687869
  • বাওয়ালের উপকরণ ৪।

    যে বছর চিলিতে আলেন্দেকে সরিয়ে ফ্রিডম্যানীয় চিন্তাভাবনার সফল এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছিল চিলিতে, সেই বছরই (সাল গুলো, রেফারেন্সের জন্য দেওয়া, একটু মিলিয়ে নেবেন, এক-দু বছর এদিক ওদিক হতে পারে) অর্থাৎ ১৯৭৩ সালেই পৃথিবীতে আরো একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। আরব দুনিয়া বনাম ইজরায়েলের শেষ এবং এখনও পর্যন্ত ডিসাইসিভ যুদ্ধটি ঘটে যায়। নিক্সন ইজরায়েলকে দুই বিলিয়ন ডলার সাহায্য দেবার কথা ঘোষণা করেন। এবং তেল উৎপাদনকারী আরব দেশগুলো একযোগে কুয়েতে একটা মিটিং করে এর জবাবে শুরু করে অয়েল এমবার্গো। পশ্চিম তথা আমেরিকার উপর একযোগে প্রয়োগ করা হয় "তেল অবরোধ"এর অস্ত্র। তেলের উৎপাদন খুব কেয়ারফুলি কমিয়ে দেওয়া হয়, বিশ্বজুড়ে তেলের দাম হু হু বেড়ে যায়। তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো প্রবল লাভের মুখ দেখে, বিশ্বজুড়ে ক্যাপিটালিস্ট অর্থনীতিতে প্রবল ধাক্কা পড়ে, যা পরে অয়েল শক নামে পরিচিত হয়।

    আরবের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সকলেই এই ব্যবস্থার পক্ষে ছিলেন। কেউ বেশি কড়া, কেউ কম। যে দেশের অবস্থান ছিল, সবচেয়ে কড়া ঘটনাচক্রে তার নাম ইরাক। ইরাকি প্রতিনিধিরা, এবং তাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট, খুব স্পষ্ট করে বলেন, শুধু এইটুকু নয়, আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তেলকে জাতীয়করণ করা হোক, তাড়ানো হোক বিদেশী কোম্পানিগুলিকে। বাকি আরব দেশগুলো এই পথে হাঁটেনি। কিন্তু ইরাকি ভাইস প্রেসিডেন্ট ওই সময় নাগাদই নিজের দেশে এটা করে দেখান। তেল এবং অন্যান্য শিল্পকে সে দেশে জাতীয়করণ করা হয়। বহুজাতিক এবং পশ্চিমী স্বার্থে সবচেয়ে বেশি আঘাত দেয় ওই দেশ। ঘটনাচক্রে সেই ভাইস প্রেসিডেন্টের নাম ছিল সাদ্দাম হুসেন।

    এই স্পর্ধা তেলের দুনিয়ায় সেসময় কেউ দেখাননি। পরে আরেকজন দেখিয়েছিলেন, তাঁর নাম হুগো শাভেজ। এই স্পর্ধা সহ্য করার কোনো প্রশ্নই নেই পশ্চিমের। তাই ইরাকের সঙ্গে পশ্চিমের দীর্ঘস্থায়ী শত্রুতার শুরু হয়।
  • PT | 213.110.246.230 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:১১687870
  • "পি টি দা সেদিন যে rational সমাজের ঢাক পেটাচ্ছিলেন, আজ ওই দাঁড়িওয়ালা লোকটার ভিডিও দিয়ে সেই সমাজের failure গুলোকেই মেনে নিলেন।"
    এই মরেচে, আমি আবার কি করলাম? প্রথমতঃ ঢাকটা কোথায়? আর আমি ভিডিওটা দিলাম মানে আমি failure মেনে নিলাম এ কেমন উদ্ভট যুক্তি ? কিছু বুঝলাম না SC।

    ইতিহাসের খাতিরেঃ
    আমেরিকার বাঁদরামোর শুরু বোধহয় ১৯৫৪-তে গুয়াতেমালার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে।
  • dd | 116.51.25.14 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:১৪687871
  • কিন্তু হু ইস দিস "দাঁড়ি"ওয়ালা লোক ?

    আমীর খান,রামকৃষ্ণ, কার্ল মার্ক্স? রবীন্দ্রনাথ,হজরত মুহাম্মদ? ঈশেন?
  • dd | 116.51.25.14 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:২৬687873
  • আর ঈশেন খুবি ঘুম কাতুরে। ওর খালি খালি ঘুম পায়। টেনে মেনে এক প্যারা লিখতে পারে।

    কিন্তু ইরাকের অনেক আগেই মধ্য প্রাচ্যে সব থেকে বড়ো শত্রু তো ছিলো ইরান? বা আম্রিগানরা যেমন বলেন আইরাণ। সেটা আবার এই ইকুয়েশনে মিললো না।
  • ঈশান | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৪৭687874
  • ১। গুয়াতেমালা, ইউনাইটেড ফ্রুট কোং আর জর্জ বুশ (বড়ো ও ছোটো), এ আগেই লিখেছি, এই টইতেই।

    ২। ইরানের বিপ্লব সত্তরের শেষের দিকে। তার আগে শাহ তো শত্তুর ছিলেন না সেভাবে। বরং তার আগের শাসক মোসাদকে সরিয়ে এই দ্বিতীয় শাহকে ক্ষমতায় আনতে পশ্চিমের কিঞ্চিৎ সমর্থন ছিল। শাহের ক্ষমতায় আসা এই লেখার সিলেবাসের বাইরে। কিন্তু খোমেইনি প্রসঙ্গে পরে আসছি।
  • ঈশান | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:০৪687875
  • বাওয়ালের উপকরণ ৫।

    মনে রাখতে হবে, সময়টা তখনও সত্তর। রাগ হল আর মনের সুখে পিটিয়ে দিলাম, এ যুগ তখনও আসেনি। তখনও প্রবল প্রতাপে রাজত্ব করছে দুই মেরু দুনিয়ার দ্বিতীয় সম্রাট সোভিয়েত ইউনিয়ন( যে সম্রাটের কথা এই লেখায় আমরা কনভিনিয়েন্টলি কাটিয়ে দিচ্ছি)। তখন প্রক্সি ওয়ারের যুগ। এবং ঠান্ডা যুদ্ধের।

    অতএব, পশ্চিমকে অনিবার্যভাবেই ফিরতে হয় চিলি এবং ইন্দোনেশিয়া মডেলে। তৃতীয় বিশ্বের অবশিষ্ট গণতান্ত্রিক দেশগুলি তখনও অনেকাংশে সোভিয়েত প্রভাবিত। অতএব পশ্চিমের চাই এমন মতাদর্শ, যাদের সঙ্গে খোলা বাজারের কোনো বিরোধ নেই, কিন্তু প্রবল গোঁড়া, যাদের সোভিয়েত ব্লকে ঝুলে পড়ার চান্স খুব কম।

    ইন্দোনেশিয়ায় এরকম শাসকগোষ্ঠী খুঁজে বার করা যায়নি, তাই ক্যু ঘটাঅতে হয়েছিল। কিন্তু আরবে রেডিমেড পাওয়া গেল এই জিনিস। খুঁজে পাওয়া গেল এক রাষ্ট্র, যার নাম সৌদি আরব। এর শাসকরা মূলত কট্টরতম ওয়াহাবি চিন্তনে বিশ্বাসী, গণতন্ত্রের কাছেপিঠেও নেই। ওই দেশে মহিলাদের বাইরে মুখ দেখানো নিষিদ্ধ, প্রকাশ্যে কোতল করা হয় অপরাধীদের। বস্তুত সৌদি চিন্তনের সঙ্গে আজকের আইসিসের চিন্তনের কোনো তফাত নেই। তো, এদের পক্ষে সোভিয়েতের দিকে ঝোঁকা যে অসম্ভব, সে নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকতে পারেনা।

    কিন্তু প্রশ্ন ছিল এরা মুক্ত বাজারের দিকে ঝুঁকবে কি? একটু বাজিয়ে দেখা যায় সৌদি শাসক সম্প্রদায় "আধুনিকীকরণ" চাইছেন। অতঃপর পৃথিবীর ইতিহাসে একটি অদ্ভুত কান্ড দেখা যায়। বহুজাতিকদের তরফে সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তিতে আসরে নামেন স্বয়ং মার্কিন সরকার। চুক্তি অনুযায়ী আধুনিকীকরণের খরচা সৌদি কোষাগার থেকে সোজা আসবে মার্কিন ট্রেজারিতে। সেখান থেকে বরাত দেওয়া হবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলিকে। চুক্তিটি খুবই অদ্ভুত, তাতে আরও কিছু টুইস্ট ছিল, আমার ডিটেলে মনে নেই। বিশদ বিবরণের জন্য এই বইটি দেখে আমাকে আপডেট করে দিতে পারেনঃ Inside the Mirage: America's Fragile Partnership with Saudi Arabia । লেখক Thomas W. Lippman। মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের রাজত্ব খুব স্পষ্ট হয়ে দেখা যায়।

    সৌদির সঙ্গে পশ্চিমের বন্ধুত্বের শুরু হয়। মডেল ইন্দোনেশিয়া আর চিলির মতই। একই স্টিরিওটাইপ, তবে এটা আরও স্মুদ। কারণ কোনো রক্তপাত কোনো অভ্যুত্থান ঘটাতে হয়নি। আইডিওলজি ছিল রেডিমেড। হাতের কাছে। বলাবাহুল্য, বেখটেল বা হ্যালিবার্টনের মতো বহুজাতিক গুলি, বহু ডলারের ব্যবসা পায়। এবং সৌদি, উন্নয়নজনিত কারণে বহুজাতিকদের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশী হয়ে পড়ে।
  • b | 135.20.82.164 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:১৪687876
  • ঈশান, বার্কলে নয়, চিকাগো।
  • aranya | 154.160.98.91 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:২২687877
  • বেখটেল আর হ্যালিবার্টন - ইরাক যুদ্ধে লাভবান কোং-দের মধ্যেও একেবারে সামনের সারিতে
  • ঈশান | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:২৭687878
  • নানা বার্কলেও। শিকাগো বয়েজ -- হইল লাতিন আমেরিকান কয়েনেজ। বার্কলে মাফিয়া -- ইন্দোনেশিয়ান কয়েনেজ। আর ইশকুলটি শিকগো স্কুল। এটা নির্ভুলই লিখেছি।
  • b | 135.20.82.164 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৩৯687879
  • তাই? তাহলে ভুল জানতাম। বার্কলে বরাবরই মাকু নকুদের আড্ডা এরকম শুনেছিলাম।
  • ঈশান | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ১০:০০687880
  • বাওয়ালের উপকরণ ৬।

    এর মধ্যে ইরানে বিপ্লব হয় সত্তরের শেষের দিকে। ফুকোসহ ইউরোপিয়ান র‌্যাডিকালদের প্রচন্ড চুক্কি দিয়ে বামপন্থীদের বদলে ক্ষমতা দখল করেন কট্টর শিয়া নেতা খোমেইনি। পূর্ববর্তী শাহ ছিলেন কিঞ্চিৎ মার্কিনপন্থী। এবং আন্দোলনটিতে পশ্চিমবিরোধিতা তীব্র ছিল। এই দুই দিক মিলিয়ে কট্টরপন্থী খোমেইনি ও ছিলেন তীব্র মার্কিনবিদ্বেষী। এই প্রথম একটি জঙ্গী ইসলামী গোষ্ঠীকে দুনিয়ায় মাথা তুলতে দেখা যায়। ঘটনাচক্রে তারা আবার শিয়া রাষ্ট্রও। অর্থাৎ সুন্নি সৌদির তীব্র বিরোধী। এই সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতিজ্ঞায় মার্কিন এবং সৌদি বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়। একই সঙ্গে ইসলামী গোঁড়ামির জগতে একটি বিভাজন স্পষ্ট হয়। শিয়া গোঁড়ামি হয়ে দাঁড়ায় একান্তভাবে মার্কিনবিরোধী। উল্টোদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি ধর্মান্ধরা হয়ে ওঠে মার্কিনপন্থী। ইরান ছাড়াও এদের আরও একটি সাধারণ শত্রু ছিল। "নাস্তিক" সোভিয়েত ইউনিয়ন।

    আশির দশকে সোভিয়েত অনুপ্রবেশ হয় আফগানিস্তানে। ইরান এবং আফগানিস্তান এই দুই "শক" এর মোকাবিলায় তৈরি হতে থাকে সৌদি এবং আমেরিকার যৌথ মোকাবিলার ছক। এই ছকের গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য অংশ ছিল আজকে আমরা যাকে "সন্ত্রাসবাদী" বলি সেই কট্টর মুসলিম সুন্নি চরমপন্থী সংগঠনগুলিকে সক্রিয়ভাবে গড়ে তোলা। একই সঙ্গে গোটা দক্ষিণপূর্ব এশিয়া জুড়ে কট্টর মতাদর্শকে আর্থিক এবং ইন্টেলেকচুয়াল সমর্থন দেওয়া। গোটা দক্ষিণপূর্ব এশিয়া জুড়েই এই কর্মটি ঘটানো হয়, যে কাজে সৌদি এবং মার্কিনীদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তান। সবকটাই ডিক্টেটরদের দেশ। কিন্তু তাতে কিছু এসে যায়না। আমরা এখন ঢুকে পড়েছি সেই ফ্রিডম্যানীয় যুগে যেখানে মুক্ত বাজার মানে "স্বাধীনতা"। গণতন্ত্র মানে আর স্বাধীনতা নয়।

    এই সময়েই জন্ম হয় ওসামা বিন লাদেনের। এর আগে ইদি আমিন আশ্রয় পান সৌদি আরবে। এর ভিতরের ইতিহাস এখনও ক্লাসিফায়েড। কিন্তু ইউ এস নিউজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট এর "The Saudi connection" শীর্ষক একটি রিপোর্টে পাওয়া যাচ্ছে, শুধু আফগান মুজাহিদিনদেরই সে সময় ৩.৫ বিলিয়ান ডলার সাহায্য দেওয়া হয়েছিল। রিপোর্টটি আরও বলছে, সরাসরি কোটই করা যাকঃ

    "Starting in the late 1980s — after the dual shocks of the Iranian revolution and the Soviet war in Afghanista n — Saudi Arabia's quasi-official charities became the primary source of funds for the fast-growing jihad movement . In some 20 countries the money was used to run paramilitary training camps, purchase weapons, and recruit new members .. .

    Saudi largess encouraged U.S . officials to look the other way, some veteran intelligence officers say. Billions of dollars in contracts, grants, and salaries have gone to a broad range of former U.S. officials who had dealt with the Saudis: ambassadors, CIA station chiefs, even cabinet secretaries . . .

    Electronic intercepts of conversations implicated members of the royal family in backing not only Al Qaeda but also other terrorist groups."

    সুন্নি সন্ত্রাসবাদ আকাশ থেকে পড়েনি। কেয়ারফুলি, মতাদর্শ এবং অর্থ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বস্তুটিকে। ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দেশে দেশে। পুরোটাই সেই ফ্রিডম্যানীয় মডেলে।
  • lcm | 118.91.116.131 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ১০:১৪687881
  • বার্কলে মাফিয়া ছিল তো - ঈশান একদম ঠিক লিখেছে।
    ঈশানের এই পর্বটা দারুণ হচ্ছে। এটাকে পরে একটা আলাদা টইতে তুলে রাখতে হবে।
  • lcm | 118.91.116.131 | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ১০:১৫687882
  • *এই সিরিজটা দারুণ হচ্ছে
  • ঈশান | ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ১০:১৬687884
  • বাওয়ালের উপকরণ ৭।

    এই ফ্রিডম্যানীয় মডেল এবং প্রক্সি ওয়ার নানা ফ্রন্টে সাফল্যমন্ডিত হয়। একদিকে চিলি, ইন্দোনেশিয়া আরবের মতো দেশগুলিতে প্রবল প্রফিট হয়, পশ্চিমী অর্থনীতি কিঞ্চিৎ চাঙ্গা হয়। সাময়িকভাবে হলেও, হয়। অন্যদিকে যুদ্ধের ফ্রন্টে অন্তত এশিয়ায় সোভিয়েত ব্লকের অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়া যায়। ধর্মান্ধরা মরীয়া লড়াইতে বাকি ভাড়াটে সৈনিকদের থেকে অনেক বেশি পোক্ত, এ সবাই ই জানে।

    সবচেয়ে বেশি সুদূরপ্রসারী ফল হয় আদর্শগত ক্ষেত্রে। "গণতন্ত্র = স্বাধীনতা" এই সমীকরণকে ঠেলে ফেলে "মুক্ত বাজার = স্বাধীনতা", এই সমীকরণ মতাদর্শগত ক্ষেত্রে বিপুল প্রভাব ফেলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম, মুক্ত বাজারের জিহাদিরা, নানা ব্র্যান্ডের মার্কসবাদীদের সরিয়ে মতাদর্শের বাজারে সুবিধাজনক অবস্থানে আসেন। ইউরোপ এবং আমেরিকায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবার সোশাল ওয়েলফেয়ারে ছাঁটকাট শুরু হয়, থ্যাচার এবং রেগনের হাত ধরে।

    শিকাগো বয়েজ এবং তার ডেরিভেটিভরা সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েন। "বাজারই মোক্ষ, উহাই স্বাধীনতা" এরকম একটা ধারণা দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সোভিয়েত মতাদর্শ ক্রমশ ব্যাকফুটে চলে যায়। এই লেখায় অপ্রাসঙ্গিক হলেও, কেবলমাত্র সময়সীমা টা বোঝানোর জন্য বলে রাখা যাক, ভারতেও উদারীকরণের সূচনা হয় এই সময়েই। রাজীব গান্ধী ১৯৮৪ সালে প্রথম দরজা খোলেন মুক্তবাজারে জন্য। পরে, যথারীতি দায়িত্ব নেন মনমোহন সিং নামক একজন অর্থনীতিবিদ। তিনিও আইএমএফ ফেরত। শিকাগোতে পড়ুন বা না পড়ুন। :-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন