এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • অচলায়তনের দেয়ালের ফোকর ও ভালবাসা

    ranjan roy
    অন্যান্য | ১৩ জুন ২০১৬ | ১২১১৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিকি | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২৩708306
  • পুরো কবিতাটা এই রকম -

    শয়ে শয়ে মিলে গেল
    প্রজাপতি উড়ে গেল
    মা বলল ইসকুল যা
    বাবা বলল বেরিয়ে যা
    আমাদের ইসকুল দুই তিন তলা
    টিফিনেতে খেতে দেয় পাঁউরুটি কলা
    আমাদের দিদিমণি আইবিএ পাশ
    পড়া না পারলে মারে ঢুঁশ ঢাঁশ।
  • সিকি | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২৬708307
  • ব্রতচারী আমিও করেছি। কিন্তু জ-সো-ভা টা কী? জ্ঞাশ্রসঐআ জানি, ছুসগুলিজিসসহাশদগাআ জানি কিন্তু জসোবা জসোভা তো শুনি নি!
  • ranjan roy | 192.69.111.196 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৪০708308
  • জ-য় সো-নার বা ংলা! জ-য় সো-নার ভা-রত!
  • Sayantani | 11.39.38.36 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৫708309
  • রঞ্জন বাবু সব আপনারা খেয়াল করলে আমি গরিব স্কলার থিসিস এ কি লিখবো? :পি
    যাই হোক লেখাটা বেশ লাগছে!
  • Du | 118.19.103.238 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:১৫708310
  • রঞ্জনদা, ছোট ছেলেটা আপনার ভেতরে ইনট্যাক্ট রয়ে গিয়েছে টাইম ক্যাপসুলে।
  • Abhyu | 107.81.102.173 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:১৫708311
  • লাগো কাজে কোমর বেঁধে খুলে দেখো জ্ঞানের চোখ
    কোদাল হাতে খাটে যারা তারাই আসল ভদ্রলোক।

    সবই বেশ চলছিল কিন্তু শেষটায় পেটে ক্ষিদের জ্বালায় খাবো ক্ষীর আর মালাই ব্যাপারটা পুরো সিপাহী বিদ্রোহে নাচে বনের পশু পক্ষী কেস মনে হত :)
  • Atoz | 161.141.85.8 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:১৭708312
  • ক্ষীর আর মালাইয়ের পার্টটা আমাদের সবচেয়ে বেশি পছন্দের ছিল। ঃ-)
  • সিকি | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৯:০১708313
  • একটা কেনু গান ছিল। প্রোগ্রামের উদ্বোধনী হিসেবে গাওয়া হত।

    স্বাগত, স্বাগত, স্বাগতওওও
    স্বাগত হে হেথা শুভ অতিথিইইই।
  • Abhyu | 107.81.102.173 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৯:০৭708314
  • উদ্বোধনী গান হিসেবে সবারে করি আহোবান-আ-আ-আ-আ-আ-ন এর কোনো বিকল্প নেই।

    রঞ্জনদা লিখুন নইলে এই ভাট চলবেই
  • b | 24.139.196.6 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:০৩708316
  • বাপ্রে। ব্রতচারী হলে দেখছি অ্যাক্রিনিমে কথা বলতে হয়। আক্ষিপে কিম্বা আহাপে।
  • ranjan roy | 192.69.111.196 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:০৯708317
  • ৯)
    সম্পাদক পদ হইতে শ্রীমান প্রদ্যুম্নের অপসারণের পিছনে একটি গল্প আছে। এই গল্পের উৎস ওই শিশুসুলভ কবিতাটি, পোদোর সম্পাদকসুলভ আভিজাত্যবোধ ও ক্ষমতার অহংকার ।
    এটাই কমিটির মিটিংয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। না, একটু ভুল হল। এব্যাপারে কমিটির সমর্থন ও সহানুভূতি আমার সঙ্গেই ছিল। আসল অভিযোগ হল আমি উপরোক্ত কারণের বশে , বিশেষতঃ ক্রোধ ও মাৎসর্য্য রিপুর দাস হইয়া ক্লাস এইটের বর্বর গুন্ডাপ্রকৃতির ছেলেদের সঙ্গে ,মারপিটে জড়াইয়া পড়িয়া উত্তমমধ্যম প্রাপ্ত হইয়া ক্লাস টেনের প্যাট্রিশিয়ানদের প্রেস্টিজে গ্যামাক্সিন ঢালিয়া দিই।
    ফলে ক্লাস টেন নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিনিয়র ক্লাসের সমান রক্ষার্থে হা-রে -রে রবে ক্লাস এইটের সঙ্গে ক্লাস-ওয়ারে জড়াইয়া পড়ে।
    অগত্যা ম্যানেজমেন্টের হস্তক্ষেপে সিজ-ফায়ার ঘোষণা হয়, কিন্তু ক্লাস এইট ও সেভেন আমাদের দেওয়াল পত্রিকায় কোন লেখা দিবে না ঘোষণা করায় সিনিয়রদের কূটনৈতিক ও রণনীতিগত লোকসান হয়।
    শেষে আমাকে না জানাইয়া গুরু ও তাঁহার দক্ষিণ হস্ত ক্লাস এইটের নেতাদের সঙ্গে গোপনে আলোচনা চালায়। উহারা সমস্ত ঘটনা ভুলিয়া শেক হ্যান্ড করিতে রাজি হয় ও ম্যাগাজিন বয়কটের সিদ্ধান্ত বাতিল করে-- কিন্তু শর্ত রাখে যে নষ্টের গোড়া শ্রীমান পোদোকে পত্রপাঠ সম্পাদকের পদ হইতে নামাইতে হইবে।
    ব্যাপারটা এই রকম। ক্লাস এইটের কতগুলো বখা ছেলের গ্রুপ ধীরে ধীরে আমাদের চক্ষুশূল হয়ে উঠছিল। নাইনের ছেলেদের সঙ্গে আমাদের ভাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং গড়ে উঠেছিল, কয়েকজন ব্যক্তিগত বন্ধু হল। পড়াশুনো, লাইব্রেরির বই পড়া , নাটক ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে। ওরাও আমাদের মতই প্রথম ও ফিফথ পিরিয়ডে ব্যাক বেঞ্চে বসে ঘুমোত। স্যারেদের ও ডে-স্কলার ছেলেদের হাসির ও বিদ্রূপের খোরাক হত । আবার অ্যানুয়াল পরীক্ষায় মেরিট লিস্টে উপরের দিকে থাকত।
    কিন্তু ক্লাস এইটের ব্যাচটা একটা ব্যাচ বটে! এদের মধ্যে বেশ কজন আমাদের ও নাইনের ব্যাচের থেকে ফেল করে ভিড় জমিয়েছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল, য্খন তখন কড়কড়ে নোট বের করে। এও সহ্য হচ্ছিল। জানা গেল এদের পালের গোদা দুজনের হরমোন অত্যধিক ক্ষরণের কারণে প্রায়ই বেশ কিছু বাচ্চা এদের শিকার হচ্ছে। এ নিয়ে এরা বেশ গর্বিত। এমনকি লুকোনোর চেষ্টাও করে না।
    আমদের পাঁচজনের টিম এদের ব্যুহ ভেদ করতে ব্যর্থ হল। যে তিনজন মুখ খুলতে রাজি হল তারা স্বামীজির সামনে গিয়ে বেঁকে বসল। মারের ভয়!
    পরে সেই মাফিয়ারাই ওই বাচ্চাদের নিয়ে মেজমহারাজের কাছে (প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ) নালিশ করাল যে ক্লাস টেনের আমরা ক'জন নাকি ওদের ভয় দেখিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করাতে নিয়ে যাচ্ছিলাম। বোধহয় আমাদের অন্য কোন ব্যক্তিগত ইস্যু আছে।
    মেজ মহারাজ চিবিয়ে চিবিয়ে ইংরেজিতে আমাদের যা বললেন তা দুটো লাইনে বলা যায়ঃ
    ডক্টর, কিওর দাইসেল্প্ফ!
    অয়েল ইন ইয়োর ওন মেশিন!
    ওই ঘটনার পর থেকে ওরা -আমরা হল; আমরা একে অপরের ক্লাস-এনিমি হয়ে গেলাম।

    এই অবস্থায় একদিন ওদের ক্লাসের দুজন বাচ্চামত ছেলে হাতে করে দুটো কবিতা নিয়ে আমাদের ঘরে এল। দেয়াল পত্রিকায় ছাপতে হবে। ওদের দেখেই আমার মাথায় রক্ত চড়ে গেল।
    সেই দুটো বাচ্চা! যারা বয়ান বদলে আমাদের মুর্গী করেছিল!
    তবু বিক্রমাদিত্যের সিংহাসনে বসলে জাজমেন্ট দেওয়ার আগে পূর্বাগ্রহ মুক্ত থাকাই আদর্শ আচরণ বিধি।
    আমি ও বিপ্লব লেখাগুলো পড়তে লাগলাম।
    তারপর গম্ভীর মুখে বললাম-- এটা কী লিখেছ?
    --কবিতা।
    --কোথায় কবিতা?
    ও অবাক হয়ে মিনমিন করে বলল--কেন, পোদোদা? আপনার হাতেই তো ধরা রয়েছে। দেখুন না--বর্ষাকাল।
    পোদোদা! হাড়পিত্তি জ্বলে গেল।
    গম্ভীর মুখে বললাম, - হুঁ, বর্ষাকালই বটে!
    বর্ষা আসিল, ডাকিয়া উঠিল আকাশের যত মেঘ?
    এটা কবিতা হয় নি, শুধু অন্ত্যমিল মিলিয়ে একটা গোদা বাহ্যিক বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এটা ছাপা যাবে না। পরেরবার চেষ্টা কর।
    অন্য বাচ্চাটা করুণ মুকেহ বিপ্লবকে বলল --আমারটা তো ঠিক আছে?
    বিপ্লব খেঁকিয়ে উঠল।
  • ranjan roy | 192.69.111.196 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২১708318
  • -- এটা? এটা তো ডাহা চুরি! গতবারের স্কুলের বার্ষিক ম্যাগাজিন থেকে টুকলি!
    বাচ্চাটার চোখে হতাশা ও আতংক।
    --না, টুকলি নয়।
    বিপ্লব উঠে গিয়ে ওর তাক হাতড়ে একটা বিস্কিট রঙের ম্যাগাজিন বের করে এনে দ্রুত হাতে পাতা ওল্টাতে লাগল।
    --পেয়েছি; এই যে! শোন্‌।
    " ৩২ নম্বর বাসের তলায় ব্যাঙ রাজার মৃত্যু"
    ----------------------------------------------
    হৈ চৈ পড়ে গেছে সারা বরানগরে,
    ব্যাঙেদের মহারাজা মারা গেছে আহা রে!
    ------ ।
    একেবারে কমা-সেমিকোলন পর্য্যন্ত টোকা। না, না; এসব চালাকি চলবে না।
    -- বিপ্লবদা , একটু দেখুন। দুটো এক নয়। ওটা হল ৩২ নম্বর বাসের তলায়, আর আমি লিখেচি--৩৪ নম্বর বাসের তলায়।
    বিপ্লব খ্যা -খ্যা করে হাসতে লাগল।
    -- ওরে একটু চুপ কর। ৩২ নম্বরকে ৩৪ নম্বর করে দিলেই কবিতা আলাদা হয়ে গেল?
    -- দেখুন, দুটো বাসই তো এসপ্ল্যানেড থেকে বরানগর যায়, তবে?
    আমার আর সহ্য হল না। উঠে ঠেলতে ঠেলতে বাচ্চাদুটোকে ঘর থেকে বের করে দিলাম। বললাম--কবিতা লেখা? কবি? খালি ২ কে ৪ করে লিখলি তো হয়ে গেল? ইয়ার্কিরও একটা সীমা আছে। তোদের গোটা ক্লাসটাই এইরকম গবেট নাকি?

    দুটো দিন কেটে গেল।
    বিকেলে ফুটবল পেটাতে না গিয়ে ম্যাগাজিনের লেখাগুলোর ফাইল খুলে বসেছিলাম, আমি আর বিপ্লব।
    নরেশ আর সুদীপ এল। ক্লাস এইটের সেই মাফিয়া টাইপের ছেলে গুলো। সুদীপের একটু রোমশ চেহারা। এই বয়সেই গোঁফের রেখা দেখা দিচ্ছে।
    ওকে দেখা মাত্র আমার মাথায় খুন চড়ে গেল। শুনেছিলাম নতুন ছেলেদের পেছনে লাগার সময় ওর দুটো চ্যালা অনিচ্ছুক বাচ্চাটার হাত ধরে রাখে। আর গত পূজোর সময় ওর বাড়ির লোক নিয়ে যেতে এসেছিল। ও নাকি তখন ঘরের মধ্যে একটি ছেলের সঙ্গে রাসলীলায় মত্ত ছিল। বন্ধ ঘরের মধ্য থেকে বাড়ির লোককে বলে -- একটু অপেক্ষা কর। প্যাকিং করছি, জামাকাপড় বদলাচ্ছি--সময় লাগবে।
    ওরা ঢুকল, একটু পেছনে আগের সেই বাচ্চা দুটো।
    -- এই যে, এডিটর! এদের কবিতাগুলো রিজেক্ট করলে কেন?
    -- একটা কবিতা হয় নি, অন্যটা টুকে লেখা--তাই।
    --কোনটা কবিতা আর কোনটা নয়, কে ঠিক করবে? তুমি?
    --আলবাৎ; এটাই আমার কাজ। আমাদের পত্রিকার একটা স্ট্যান্ডার্ড আছে।
    ---- বেশ, কোনটা তোমার কাছে কবিতা? ওই ফালতু " টিফিনেতে খেতে দেয় পাঁউরুটি-কলা"?
    নরেশ দোহার দেয়,-- ওই কবিতাটার টাইটেল আবার "হেডশ্বর"! গুরুজনদের স্যারেদের নিয়ে ইয়ার্কি করলেও ম্যাগাজিনের স্ট্যান্ডার্ড থাকে, তাই না পোদো?
    বিপ্লব তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলে-- অ্যাই, নরেশ! মুখ সামলে। তোর দু'বছরের সিনিয়র, প্রদ্যুম্নদা বলবি।
  • Ekak | 53.224.129.40 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৪০708319
  • এই ব্রতচারী জিনিষটা দেখলেই ঝাঁট জ্বলতো । কোনোকালে করা বাধ্যতামূলক ছিলোনা এবং আস্তে আস্তে উঠে যায় পুরোপুরি , বাঁচা গ্যালো .। শালা "চলো কোদাল চালাই " এর পরের পরের লাইন মিল হচ্ছে "খাবো ক্ষীর আর মালাই " । আমাদের গ্রামের বাড়িতে কোনোদিন কোনো কোদাল চালানো চাষি -কামিন কে ক্ষীর আর মালাই জুটতে দেখিনি । হ্যা তাঁরা ধামা ধামা মুড়ি আর তরকারি পেতেন অফুরন্ত । সঙ্গে ডাল তরকারি ভাত ও ।কখনো পুকুরের মাছ । কিন্তু "ক্ষীর মালাই " বলতে যে স্ট্যান্ডার্ড বোঝায় সেটা কোনোদিন না । এটা এই বয়েসের উপলব্ধি না , ওই নীচু ক্লাসেই লেখকের শখের মজদুরি আর দুবেলা আরামে থেকে ডি-ক্লাস (ভুলে মনের বালাই ) হওয়ার আঁতলামো দেখে গা রি রি করতো । খাতা -পিতা লোকজন গরীবের দুঃখ নিয়ে সাহিত্য করলে সন্দেহের চোখে দেখি তখন থেকেই । অবশ্য আমাদের এক স্যার বোঝবার চেষ্টা করেছিলেন যে ব্রতচারী কে গ্রিক বডি এন্ড মাইন্ড ডেভেলপমেন্ট হিসেবে দেখলেই তো হয় , বাট সরি সেই যুক্তি ব্রতচারী ক্ষেত্রে ইম্প্রেসিভ কিছু লাগে নি ।
  • ranjan roy | 192.69.111.196 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:১৬708320
  • ওরা হেসে উঠল।
    তারপর বলল,-- দু'বছর আগে আমরা ক্লাসমেট ছিলাম, তখন থেকেই ও আমাদের পোদো। কী রে , ঠিক বলেছি না?
    আমি কোন কথা বলি না।
    সুদীপ আবার বলে-- তাহলে আমাদের ক্লাসের দুটো কবিতা রিজেক্ট করছ?
    আমি ওদের ঘাড়ের ওপর দিয়ে বাচ্চাদুটোকে দেখি--উকিল ধরে এনেছিস? লাভ হবে না। ঘরে ফিরে যা।
    ওরা তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।
    সুদীপদের বলি--শোন, ক্লাস -টাস নয়। একটু ভাল কবিতা নিয়ে এস, নিয়ে নেব।
    ওরা চোখে চোখে কথা বলে।
    তারপর সুদীপ বলে-- আধুনিক কবিতা চলবে? গদ্য কবিতা?
    --হ্যাঁ হ্যাঁ। নিয়ে এস।
    --অ্যাই নরেশ, তোর সেই আধুনিক কবিতাটা দেখা তো আমাদের সম্পাদককে, স্ট্যান্ডার্ডটা দেখে নিক।
    নরেশ ভালমানুষের মত মুখ করে একটা চোথা কাগজ বের করে আমার হাতে দেয়।
    আমি ভাঁজ খুলে হতভম্ব , এটা কী?
    --কেন , আধুনিক কবিতা।
    আমার মুখের ভাব দেখে বিপ্লব কাগজটা ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে চোখ বোলায়, তারপর হা-হা করে হেসে ওঠে আমাকে ফেরৎ দেয়।
    কাগজটায় কয়েকটি রেলস্টেশনের নাম একটি বিশেষ অর্ডারে লেখা রয়েছে।
    " টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ,
    টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ,
    ঢাকুরিয়া--যাদবপুর।
    গড়িয়া-সোনারপুর,
    বজবজ-বজবজ।"
    আমি কিছু বলার আগে বিপ্লব হাসতে হাসতেই বলে-- সরি ! এইসব অশ্লীল লেখা ছাপতে পারব না।
    অশ্লীল লেখা! ওরা আকাশ থেকে পড়ে।
    -- ওতে কোন শব্দটা অশ্লীল? নাকি দু'ক্লাস উঁচুতে পড়েন বলে যা খুশি কমেন্ট করবেন?
    আমি রাগের চোটে কাগজটা নিয়ে কুচিকুচি করে ছিঁড়তে থাকি।
    ওরা হাঁ-হাঁ করে ওঠে।
    --এটা কী হল সম্পাদক মশাই? আপনার লেখা রিজেক্ট করার রাইট আছে; কিন্তু ছিঁড়ে ফেলা?
    --- পছন্দ না হয় ফেরৎ দিয়ে দে। ছিঁড়লি কী করে?
    --বেশ করব, এই সব অশ্লীল ইয়ার্কি আমার সঙ্গে নয়, অন্য কোথাও মারাবি!
    ওরা কাগজটা কেড়ে নেবার চেষ্টায় আমার সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। প্রথম চড় বোধহয় আমিই মেরেছিলাম। কিন্তু ওরা তৈরি হয়েই এসেছিল। আমি বা বিপ্লব কেউই মারামারিতে অভ্যস্ত নই, একটু লালুটাইপ। ফলে দুজনেই বেশ মার খেলাম। আমার বরাদ্দে একটু বেশি জুটল।
    তারপর ক্লাস-স্ট্রাগল, সিজফায়ার ইত্যাদি। ওরা চ্যালেঞ্জ করে মহারাজকে বলল-- আমি ব্যক্তিগত কারণে ওদের গ্রুপের কারও কবিতা ছাপতে চাই না। তাই ওদের একটি ভাল আধুনিক কবিতাও ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছি।
    আমরা বললাল--যা তা অশ্লীল লেখা!
    --ওরা বলল বাজে কথা, পোদো কাগজটা দেখাক।
    কী করে দেখাব, ছিঁড়ে ফেলেছি যে!
    হেডস্যারকে দিয়ে তদন্ত করানো হল। উনি বললেন--প্রদ্যুম্ন, কাগজ নেই তো কি হয়েছে, তুমি মুখে বল বা লিখে দাও যে ওরা কী অশ্লীল শব্দ লিখেছে--মেনে নেব।
    ওরা মুচকি মুচকি হাসতে লাগল।
    আমার কাছ থেকে শুনে হেডস্যার সন্দিগ্ধ মুখে মাথা নাড়তে লাগলেন।
    এ তো ক'টা রেলস্টেশনের নাম-- অশ্লীল কোথায়?
    আমার মুখে বাক্যি নেই।
    আমার অভিযোগ খারিজ হয়ে গেল, বন্ধুরা বলল আমার বোকামি আর গোঁয়ার্তুমি আমাদের গোটা ব্যাচের হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দিল।

    সেই থেকে আমরা ও ক্লাস এইটের ব্যাচ আশ্রমের বাকি জীবনে তীব্র জীবনমরণের শ্রেণীসংগ্রামে বৃত হইলাম।
  • Sayantani | 190.215.95.65 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৩708321
  • একক, ওটা বাঙালি ভদ্রলোকের সৌখিন শরীর চর্চা। ওতে কেনই বা কৃষক মজুরের কথা ভাববে? হ্যা, ওই শ্রমের মূল্য বোঝার একটা প্রিটেনশন রাখতে হয়। যাই হোক।
  • Ekak | 53.224.129.62 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০৬708322
  • না , আমি ভাবতে বলিনি তো :) কিন্তু সেক্ষেত্রে চলো মুগুর ভাঁজাই লিখলেই হয় :) আমি আসলে খানিক ফিউডাল পরিবেশে বেড়ে উঠেছি তো । কামিন -মেঝেন -নাপতেনি তাদের কোলে ঘুরলেও তাঁরা যে কোথায় কতটা আলাদা খুব স্পষ্ট ছিল ছোট থেকে । লিবারাল ন্যাকামি গুলো অসহ্য লাগতো ।

    মানে , ধরো আমি নাইকের শু পরে জিম করছি আর পেছনে বাজছে , জন হেনরি এই চুতিয়াপ্পা জীবনে কেটে ফেললেও পারবোনা । আমি জন নোই । আমার ওই একাত্মবোধের প্রিটেনশন ও দরকার নেই ।
  • Ekak | 53.224.129.62 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১০708323
  • যাক , রঞ্জনদার গপ্পো জমেছে , আর ঘাঁটবোনা :) এমনিতেই বজবজ বজবজ শুনে , স্কুল জীবনের এরকম অনেক নিষ্পাপ ইনিউএনডময় ছড়া মনে পরে যাচ্ছে :))
  • Atoz | 161.141.85.8 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৫২708324
  • আহা, ওটাই তো স্টাইল।
    নিজের নাইকি টাইকি আদিদাস টাদিদাস অ্যাপোলো কাপোলো রেব্যান টেব্যান সামলে তারপরে ওরকম একটা লিবেরাল লিবেরাল ভাব বার করতে হয়, দলিত নিপীড়িত দের জন্য গলা কাঁপিয়ে মঞ্চে বলা, টিভিতে দুচাট্টি বাইট---- তব্যে না?
    ;-)
  • Abhyu | 106.10.148.226 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৭:১৬708325
  • আচ্ছা বোকা বোকা প্রশ্নটা করেই ফেলি - ঐ বজবজ কবিতাটা অশ্লীল কেন?
  • Atoz | 161.141.85.8 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৭:৩০708328
  • অরবিন্দকে বাংলা পড়াতে এসে দীনেশচন্দ্র না কার যেন ঘোর দুর্দশা হয়েছিল, সে গপ্পো মনে পড়ে গেল। কিছুতেই বিলেত-ফেরৎ অরবিন্দকে বোঝাতেও পারেন না, এদিকে অনুবাদও অসম্ভব। অরবিন্দ খালি বলেন, হবে না কেন, ট্রানস্লেট কেন করা যাবে না?
    ঃ-)
  • ranjan roy | 192.69.55.9 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ২১:৪১708329
  • ১০)
    সেই ঐতিহাসিক এডিটোরিয়াল বোর্ডের মিটিং আমাদের ঘরেই হয়েছিল। তাতে তিনজন বোর্ড মেম্বার ছাড়া অন্য বন্ধুরাও ছিল।
    সবাই আমাকে খ্যাপাতে লাগল।
    বলল আমি ওই অত্যাধুনিক কালজয়ী কবিতাটি ছাপিয়ে একটা শোরগোল তুলে দিতে পারতাম। তার বদলে বোকামি করে অমর হবার সুযোগ হেলায় হারালাম।
    --দেখ, গুরু। তুমিও ভাল করেই জান যে কবিতা-টবিতা নয়, ওটা একটা অশ্লীল ছড়া -- যেটা নিয়ে শুধু হ্যা-হ্যা করে হাসা যায়, যেমন বিপ্লব হেসেছিল। কিন্তু ছাপানো?
    -- অশ্লীল কেন? কোন অশ্লীল শব্দ তো হেডস্যারও খুঁজে পান নি।
    গুরু গম্ভীর, কিন্তু চোখে দুষ্টুমি।
    --আরে হেডস্যারের কথা ছাড়। তুমি ভাল করেই জান যে এর মধ্যে প্রচ্ছন্ন ভাবে একটা শরীরের ব্যাপার নিয়ে ছ্যাবলা ইয়ার্কি আছে।
    প্রশান্ত ফিচেল হেসে বলল-- রবি ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু -এঁদের কবিতায় ও কত শরীরের বর্ণনা আছে, তাতে কবিতা অশ্লীল হয়ে গেল। তোর ভাটপাড়ার টুলো পন্ডিত হওয়া উচিত পোদো।
    -- ফালতু কথা বলবি না তো! তুই কবিতার কি বুঝিস? রবি ঠাকুরের কবিতায় শরীর?
    এবার বিপ্লব ফিকফিকিয়ে হাসে।
    -- হল না পোদো। রাগের চোটে যুক্তি হারাচ্ছিস।
    রবিঠাকুর লেখেন নি-- নিরাবরণ বক্ষে তব নিরাভরণ দেহে?
    বুদ্ধদেব তো আরও এককাঠি এগিয়ে-- বক্ষ তব ঢাকিয়া দিনু চুম্বনেরই চাপে! ভাব তো-- এর চেয়ে নরেশের ওই " টালিগঞ্জ -বালিগঞ্জ" বেশি অশ্লীল কি? হেডস্যার তো ধরতেই পারেন নি।
    আমি মরিয়া হয়ে বলি--ওটা কোন কবিতা হল? টিফিনেতে খেতে দেয় পাঁউরুটি কলা-- এতে অন্ত্যমিল -ছন্দ - একটা তির্যক প্রতিবাদ এসব রয়েছে। নরেশের ওটায় বখামি ছাড়া আর কি আছে? কয়েকটা স্টেশনের নাম লিখলে সেটা কবিতা হয় কি করে?
    বিপ্লব আবার দাঁত বের করে।
    -- শুধু স্টেশনের নাম? ওই বজবজ-বজবজের দ্বিত্ব একটি রেলওয়ে টাইমটেবিলের পাতাকে কাব্যিক সুষমায় মন্ডিত করিয়াছে। একেবারে অনেক- কথা- যাও যে বলে -কোন কথা না বলি--হয়েছে।
    সবাই টেবিল চাপড়ে হেসে ওঠে। আমি রেগে মেগে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার উপক্রম করছি , ক্লাস সেভেনের কিশোর দৌড়তে দৌড়তে ঢুকে হাঁপাতে থাকে।
    -- আরে অমিয়দা, বিপ্লবদা! আপনারা সব্বাই চলুন। শীগ্গির শীগ্গির! আমাদের সুনীল স্যার আবার পরীক্ষায় ফেল করেছেন। উনি কাঁদতে কাঁদতে খেলার মাঠের পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। কিছু একটা হয়ে যেতে পারে।

    আমরা ঝগড়া ভুলে ঘর থেকে বেরিয়ে দৌড় লাগাই। ঘরে তালা দেওয়ার কথা কারও মনে নেই।
  • ranjan roy | 192.69.55.9 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ২১:৫৭708330
  • সুনীলদা আমদের আশ্রমের একটি চরিত্র যাকে সবাই ভালবাসে। এই ভালবাসার সঙ্গে কোথায় একটু করুণা মেশানো, কারণ ওঁর ডান পায়ের পাতা দোমড়ানো মোড়ানো; বেঁটে খাটো মানুষটি চলেন দুলে দুলে। পড়ান প্রাইমারি স্কুলে। আশ্রমে পেটভাতায় থাকেন আর রাত্তিরে ক্লাস সিক্স ও সেভেনের আশ্রমিক বাচ্চাদের ইংরেজি টেক্স্ট ও ট্রান্সলেশন পড়ান।
    ওঁর সঙ্গে পরিচয় হলে মনে হয় ছোটবাচ্চাদের ভাল করে পড়ানো ছাড়া ওঁর জীবনে কোন উদ্দেশ্য নেই। বিয়ে করেন নি। একটি সাদা হাফ শার্ট , ধুতি ও হাওয়াই চপ্পল--ব্যস্‌। একজন মানুষের আর কি চাই!
    ওঁর ভক্ত সংখ্যা অনেক। অনাবিল হাসি, একেবারে শিশুর মত। আর উনি খুব ভাল ভূতের গল্প বলতে পারেন। বলর ভঙ্গীতে ও মুখে নানারকম শব্দ করে উনি পরিবেশ এমন করে দেন যে নাইনে পড়ার সময়ও আমরা একে অন্যের গা ঘেঁষে বসতাম।
    আমাদের উনি পড়াতেন না, কিন্তু সুনীলদা কবে গল্প বলবেন বললেই একটু ভেবে বলতেন শুক্রবার সন্ধ্যেয়। আমরা নিজেদের পড়াশুনো ছেড়ে ওঁর ক্লাসে ভিড় করতাম। অনিল মহারাজ দেখেও দেখতেন না।
    সবচেয়ে বিখ্যাত গল্প হল-- যুদ্ধের সময় ছিটকে পরা এক বন্ধু স্ট্যানলি না ব্রিয়ারলি, অন্য ছোটবেলার বন্ধুর থেকে ইয়র্কশায়ারে গাঁয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পেল।
    তারপর কি হইল সবাই জানে।
    পরে আমাকে এক স্যার বলেছিলেন ওটা ওঁদের ম্যাট্রিকের কোর্সে একটি ইংরেজি কবিতার ন্যারেশন।
  • ranjan roy | 192.69.55.9 | ০১ অক্টোবর ২০১৬ ২৩:৪৬708331
  • কিন্তু এই সর্বজনপ্রিয় সুনীলদাও একেক্দিন খেপে উঠতেন। ওঁর টিউটোরিয়ালের বেয়াড়া বাচ্চাদের ভালবেসে বুঝিয়ে সুজিয়ে যেদিন পোষ মানাতেন পারতেন না , সেদিন খুব হতাশ হয়ে খানিকক্ষণ মাথা নীচু করে মাটিতে পাতা সতরঞ্চির উপর বসে থাকতেন। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে নিজের গালে চড় মারতেন -- মুখে আওয়াজ করতেন 'ত্যাট্‌ ত্যাট্‌!'
    দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বলতেন--আমি এক ক্যালানে মাস্টার, সারাজীবন ধরে কেলিয়ে যাব।
    ছেলের দল হেসে কুটিপাটি।
    এরপর খোঁড়া পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এক খাট থেকে অন্য খাটে বাঁদরের সর্দারগুলোকে তাড়া করে বেড়াতেন। কেউ ভয় পেত না, উনি কাউকে জোরে মারতে পারতেন না, নিজেকেই শাস্তি দিতেন।
    অন্য ক্লাসের ছেলেরা এসে তামাশা দেখত। তারপর বড়রা বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিরস্ত করত। তখন ওঁর চোখে জল। বাঁদর ছাত্রগুলোকে জড়িয়ে ধরতেন।
    এ হেন সুনীলদা কিছুতেই আর ম্যাট্রিকের বেড়া ডিঙোতে পারলেন না।আমাদের চোখের সামনে বার তিনেক প্রাইভেটে পরীক্ষা দিলেন-- প্রত্যেকবার একই ফল, অন্ততঃ দুই বিষয়ে ফেল। একটা অবশ্যই অংক।
    পরীক্ষার দুদিন আগে থেকে ছুটি নিতেন , একবেলা উপোস করে হলে যেতেন, ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করতেন। আমরা জেনেছিলাম --পাস করলে মিডল সেকশনে পড়াতে পারবেন, মাইনে বাড়বে।
    এত ভাল পড়াতেন , ফেল কেন হচ্ছেন --এ এক রহস্য। আমরা এটাকে ভগবানের অবিচার মনে করতাম। পরীক্ষার ফল বেরোনোর আগে আমরাও ওঁর জন্যে প্রার্থনা করতাম--ঠাকুর, অনেক পরীক্ষা নিয়েছ, এবার তো পাশ করিয়ে দাও। পাঁচ সিকে মানত করছি।
    স্যারকে বলেছিলাম--কোন চিন্তা করবেন না। আমরা সবাই আপনার জন্যে প্রেয়ার করেছি। এবার কেউ ঠেকাতে পারবে না।
    কোথায় সুনীলদা?
    ওই যে বেঁটে মত ধুতি পরা লোকটি খোঁড়াতে খোঁড়াতে দ্রুত পায়ে প্রেয়ার হলের দিকে যাচ্ছে।
    আমাদের আগেই উনি পৌঁছে গেছেন হলে।
    আমরা ঢুকেই দাঁড়িয়ে পড়লাম। কেউ কেউ বারান্দায় থেমে গিয়ে জানলা দিয়ে দেখতে লাগলাম।
    প্রায়ান্ধ লোকজনহীন হল। শুধু ঠাকুর-মা-স্বামীজির ছবির সামনে পিলসূজের উপর পেতলের প্রদীপের শিখা। সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন সুনীল স্যার--আমাদের সুনীলদা। চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে দুই গাল। কেঁপে কেঁপে উঠছে ঠোঁট। অস্ফুট স্বরে শোনা যাচ্ছে বুকভাঙা হাহাকার-- ঠাকুর, এ কী করলে তুমি, ঠাকুর!
  • ranjan roy | 192.69.185.198 | ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ২৩:৫৯708332
  • ১১)
    এই বিংশশতাব্দীর কোলকাতার ক্যান্টারবেরি টেলস্‌ এ কত বিচিত্র জলছবির সমাহার। কত বর্ণাঢ্য চরিত্র। যেমন ছাত্রপ্রাণ খঞ্জ সুনীলদা, তেমনি একজন হলেন অন্ধ পাখোয়াজ বাদক নগেশদা।
    শুধু শারীরিক পঙ্গুত্বে নয়, এঁদের দুজনের আসল মিল কাজের প্রতি সমর্পণে, নিজেকে উজাড় করে দেওয়ায়। আমার বালকবুদ্ধির মাপকঠিতে আশ্রমের ভাল কিছু জিনিসের মধ্যে এই দুজন প্রায় নায়কের স্থানে বসে আছেন।
    প্রতিদিন সন্ধ্যেয় আরাত্রিক 'খন্ডন ভব বন্ধন' শুরু হওয়ার আগে দেখা যেত উনি কারও হাত ধরে বা একাই হাতড়ে হাতড়ে মাপা পা ফেলে প্রেয়ার হলে ঢুকছেন। পোদো ওর কাছে গিয়ে বসে একটা বড় আটার ভিজে তাল নিয়ে ওনার নির্দেশমত পাখোয়াজের বাঁয়ার দিকটায় চেপে চেপে বসিয়ে দিত।
    অতি বিলম্বিত লয়ে চৌতালে শুরু হত আরাত্রিক। বলিষ্ঠ হাতের চাপড়ে বাজত চৌতালের ঠেকা। খঞ্জনি হাতে পোদো মেলাতে গিয়ে ঘেমে যেত। তারপর দুনি চালে রিপিট হত। পোদো ওনার হাতে দেখানো মাত্রা ও ইশারায় চারপাশের বন্ধুদের সামনে ঘ্যাম নিয়ে খঞ্জনি বাজাতো।
    যেই না শেষের চার লাইনে 'নমো নমো প্রভু বাক্যগুণাতীত' আর 'ধে ধে ধে লঙ্গ রঙ্গ ভঙ্গ, বাজে অঙ্গ সঙ্গ মৃদঙ্গ'--- ত্রিতালে ও একতালে জলদ বাজত, নগেশদার পাখোয়াজও গুরু গুরু মেঘগর্জনের মত কথা বলে উঠত। শেষে তেহাই -টেহাই দিয়ে সমে এসে নগেশদা কাঁধের গামছা দিয়ে ঘাম মুছতেন। পোদোর বুকের মধ্যে ঝরণা কল কল বইত আর ও প্রেয়ার ভুলে গিয়ে একটা বড় সড় পেতলের খঞ্জনি নিয়ে পাখোয়াজের বাঁয়ার দিক থেকে সেই ভিজে আটার শুকিয়ে যাওয়া দলাটিকে ঘষে ঘষে তুলত যতক্ষণ না নগেশদা হাত বুলিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে বলতেন --ঠিক আছে।
    কালীপূজার রাত। চারদিকে তুবড়ি, ফুলঝুরি হাউয়ের সমারোহ। দোদুমার ও চকলেট বোমের কানফাটানো আওয়াজ।
    জন্মবুড়ো পোদোর এর চেয়ে মন টানে প্রেয়ার হলের বারান্দায় জাজিম পেতে সারারাত্তির কালীকীর্তনের জমাটি আসর। কত খেয়ালিয়া ধ্রুপদীয়া এসেছেন। তবলা ও পাখোয়াজে সেই আদি ও অকৃত্রিম নগেশদা। আজ উনি একটা ধোপদুরস্ত শাদা শার্ট পড়েছেন, ধুতিও নীল লাগিয়ে কাচা। শীতের হালকা আমেজ, তাই গায়ে একটি চারটাকার মেটে রঙের মলিদা। আর আজকে খোঁচা খোঁচা কাঁচাপাকা দাড়ির জায়গায় পরিপাটি করে কামানো গাল।
    এসেছেন সুদূর হরিনাভি থেকে ধ্রুপদীয়া সংগীতাচার্য অমরনাথ ভট্টাচার্য। ধপধপে ফর্সা, টাক মাথা, চোখে ছানি, বয়েস সত্তর পেরিয়ে আশি ছোঁয় ছোঁয়। গায়ে গরদের পাঞ্জাবি ও মুখে এক অভিজাত গাম্ভীর্য।
    যে কেউ গান গাইবে বলছে সে নগেশদার কানের কাছে ফিসফিস করছে আর উনি উঁচু আওয়াজে বলছেন--গুরুদেব , এবার বিশ্বনাথ একটি হামীর ( বা জয়জয়ন্তী) গাইতে চায়, আপনি অনুমতি দিন। উনি মাথা নাড়লে সে নবীন গায়ক তাঁর হাঁটু ছুঁয়ে প্রণাম করে তানপুরা পিড়িং পিড়িং সেরে গান ধরছে।
    এর পর অমরনাথ নিজে গাইতে লাগলেন। আগের মত দম নেই , লম্বা তান করতে পারছেন না, তবু সুর লাগানো দেখে ভক্তেরা আহা আহা করে উঠছে।
    এদিকে পূজো শেষ, রাত ফুরিয়ে এল। এবার শান্তিজল নেবার পালা। যজ্ঞের আগুন কখন নিভে গেছে।
    সবাই উঠি উঠি করছে; নগেশদা বললেন--গুরুদেব একটি ঝাঁপতাল গেয়ে শেষ করলেন। অমরনাথ ধরলেন ভৈরবীতে ঝাঁপতাল-- ভবানী দয়ানী, মহাবাক্যবাণী।
    গান শেষ হল। কারও মুখে কথা নেই। নগেশদার অক্ষিগোলকহীন কোটর থেকে জল গড়াচ্ছে।
  • ranjan roy | 192.69.185.198 | ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩১708333
  • একজন নতুন ওয়ার্ডেন এসেছেন-- বিজিত দত্ত। উনি নরেন্দ্রপুর থেকে ইকনমিক্সে অনার্স পাশ করে সাউথ সিঁথিতে কোলকাতা ইউনিভার্সিটির ইকনমিক্স বিল্ডিংয়ে এম এ'র ক্লাস করছেন। দক্ষিণ কোলকাতা থেকে দমদমের কাছে ইকনমিক্স বিল্ডিংয়ে রোজ যাতায়াত করে ক্লাস করা প্রায় না-মুমকিন।
    তাই ব্যব্স্থা হল যে উনি আমাদের ওয়ার্ডেন হওয়ার শর্তে আশ্রমে পেটভাতায় থাকবেন, এখানে থাকলে সময়মত ক্লাসে হাজির হতে পারবেন। উনি অন্য ওয়ার্ডেনদের মত ধুতি পড়তেন না। আসমানি নীল রঙের স্লিপিং স্যুট পরে থাকতেন। আশ্রমের মধ্যে সেটা প্রায় ফ্যাশন শোয়ের মর্যাদা লাভ করল।
    লম্বা ফর্সা চোপসানো গাল ও গর্তে বসা চোখের বিজিতদার মুখে সারাক্ষণ একটি অনাবিল হাসি লেগে থাকত। উনি আমাদের পড়াতেন না, টেবিল টেনিস খেলতে শেখাতেন। গল্প বলতেন--নানারকমের গল্প। ইউনিভার্সিটির ক্লাসে বন্ধুদের হয়ে প্রক্সি দেওয়া ডাকসাইটে মেয়েদের গল্প। এবং অবশ্যই কিছু যৌনগন্ধী গল্প ও জোকস্‌।
    আস্তে আস্তে উনি আমাদের বন্ধু হয়ে গেলেন।
    একদিন ক্লাস সেভেনের একটা নতুন ভর্তি হওয়া বাঁদর ছেলে ওনাকে শুনিয়ে শুনিয়ে ছড়া শোনালঃ
    খ্যাঁচাদাদা যায়,
    নীল পাজামা গায়,
    বড় বড় মেয়েরা কেউ ফিরে না তাকায়,
    খ্যাঁচা ফিরে ফিরে চায়।
    উনি আমাদের ঘটনাটা বলেন নি। কিন্তু আমরা ছেলেটাকে ডেকে এনে ভাল করে চাঁটালাম। পরে বিজিতদা যখন ছেলেটার ঘরে রাত্তিরে দরজা কেন বন্ধ নয় দেখে ঠেলে ঢুকতে গেলেন , অন্ধকারে ৪৫ ডিগ্রিতে ভেজিয়ে রাখা দরজাটার মাথায় রাখা এনসিসির বুট ও একটা মুড়ো ঝাঁটা ওঁর মাথায় পড়ল। চিৎকার চেঁচামেচির পরে আলো জ্বললে দেখা গেল ঝাঁটার মধ্যে গুঁজে রাখা একটা কালির দোয়াতও মুখ খুলে রাখা ছিল!
  • ranjan roy | 120.227.159.229 | ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ২৩:০৩708334
  • ওই ঘটনার পর থেকে ওয়ার্ডেন বিজিত দত্ত আমাদের সঙ্গে আরও মাই ডিয়ার হয়ে গেলেন। একেবারে হৃদমাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না !
    যদিও নীচুক্লাসের ছেলেপুলেরা কিঞ্চিৎ হতাশ।
    কিন্তু আমাদের কপালটাই খারাপ। এই মধুচন্দ্রিমা বেশি দিন চলেনি। কোনটাই বা চলে!
    দুমাসের মাথায় ঘটনাচক্রে সেই বিজিতদার সঙ্গেই ক্লাস টেন ও ইলেভেনের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায় দাঁড়িয়ে গেল।
    টালা পার্কে বিরাট মেলা। তাতে চিন-ভারত সীমান্ত সংঘর্ষের পর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিরাট একজিবিশন। আবার টেলিভিশন রাখা আছে। সেখানে গিয়ে চার আনা দিয়ে আপনিও গান গাইতে পারেন। পুরো পাবলিক আপনাকে পর্দায় গাইতে দেখবে। তবে দিনটা রোববার। ঠিক হল, আগে দুপুর বেলায় আমরা ময়দানে যাব। ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডানের ম্যাচ দেখব। তারপর সেখান থেকে টালা পার্কের প্রদর্শনী দেখে আশ্রমে ফিরব। পুরো প্রোগ্রাম ছকে নিয়ে আমরা সেক্রেটারি মহারাজের সঙ্গে দেখা করলাম।
    উনি ও মেজ মহারাজ রাজি। কিন্তু এতগুলো ছেলে, প্রায় পনের জন , তার জন্যে আশ্রমের ডজ ভ্যানটা দেওয়া সম্ভব নয়। সবাইকে বাসে যেতে হবে। আর একজন ক্যাপ্টেন হয়ে আগে ভাগে সবার থেকে ভাড়ার টাকাটা জমা নেবে।
    সব হিসেবমত চলছিল।
    কিন্তু সেই চোরাগোপ্তা শ্রেণীসংগ্রাম! একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা। ক্লাস এইটের ছেলেগুলো মহারাজকে গিয়ে বলল-- ওরা যাচ্ছে, তো আমরা কি দোষ করলাম? আমাদেরও পারমিশন দিন।
    --তোমরা ছোট।
    --কীসের ছোট? আমরা দুজন তো প্রদ্যুম্নের সঙ্গেই পড়তাম। আমরা দুজন ক্যাপ্টেন হয়ে আমাদের ক্লাসের ছেলেগুলোকে সামলে সুমলে নিয়ে যাব।
    -- এ হয় না। এতগুলো বাচ্চাকে তোমাদের দুজনের ভরসায় ছাড়া যায় না। হ্যাঁ, যদি কোন ওয়ার্ডেন সঙ্গে যেতে রাজি হন, তো ভেবে দেখতে পারি।
    ওরা হোমওয়ার্ক করেই এসেছিল।
    নরেশ বলল-- ঠিক বলেছেন মহারাজ। আমরা এটা আগেই ভেবেছি। নীচের তলার ওয়ার্ডেন বিনুদা রাজি হয়েছেন। আমরা শুধু পয়সা তুলে ওনার হাতে জমা দেব। উনি দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন --কোন অসুবিধে হবে না।
    বড় মহারাজ পুরো একমিনিট নরেশের দিকে তাকিয়ে রইলেন , তারপর বললেন--আচ্ছা, ঠিক আছে। তোমরা যাবে।
    কিন্তু মেজমহারাজ সেই ধর্মক্লাসের সময় থেকেই আমাদের উপর চটে ছিলেন। উনি বললেন--একযাত্রায় পৃথক ফল কেন হবে? ক্লাস টেনের ছেলেরাও ওদের ওয়ার্ডেনকে সঙ্গে নিয়ে যাক, নইলে হবে না।
    ক্লাস এইট মহা খুশি।
    আমরা বল্লাম-- কুছ পরোয়া নেই। বিজিত দত্তকে রাজি করানো কোন ব্যাপার নয়। কিন্তু কোথায় খচ হচ করছিল-- সিনিয়র ব্যাচের কোন মান-ইজ্জত নেই? ক্লাস এইটের নিয়ম আমাদের জন্যেও?

    ভুল বলিনি। উনি রাজি হয়েছেন ---বড় ও মেজমহারাজ দুজনকেই জানিয়ে দিলাম। ব্যস্‌, হোস্টেলে সাজো সাজো রব। সবাই গড়ের মাঠের ফুটবল দেখার নামে প্রায় নাওয়া খাওয়া ভুলে গেছে। পরিমল দে বলে-- খড়দহ না বালি কোথাকার যেন--একজন নতুন প্লেয়ার খেলবে, তার পায়ের কাজ নাকি দেখার মত।
    কেউ কেউ বলল-- ও আমাদের পাড়ার ছেলে, জানিস? ওর পাড়ার নাম জংলা।
  • ranjan roy | 120.227.159.229 | ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ২৩:৩৬708335
  • যাওয়ার দিন আমরা খেয়ে দেয়ে তৈরি হয়েছি --কিন্তু বিজিতদার দেখা নেই। উনি সকাল থেকেই বেপাত্তা, কোথায় গেছেন কেউ জানে না। আমরা জানি উনি ঠিক সময়ে এসে পড়বেন।
    ঘড়ির কাঁটা অন্যদিনের থেকে তাড়াতাড়ি ঘুরছে। এইটের ছেলেরা সেজেগুজে ওদের ওয়ার্ডেন বিনুদার সঙ্গে বেরিয়ে গেল। যেতে যেতে নরেশ ট্যারা চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওর সঙ্গীকে বলল-- একটা ইংরেজি প্রোভার্ব শুনেছিস? ম্যান প্রোপোজেস, গড ডিসপোজেস্‌!
    ওর সঙ্গী দোহার ধরল--ধুস্‌, ওসব পুরনো। আজকের লেটেস্ট শুনে নে। টেন প্রোপোজেস্‌, বিজিত ডিস্পোজেস্‌! হ্যা-হ্যা হ্যা-হ্যা!
    নাঃ, বিজিতদার কোন পাত্তা নেই। শেষে কি আমরা যারা পুরো প্রোগ্রামটাই বানালাম --আমরাই যেতে পারব না?
    আমরা তৈরি হয়ে বড় ও মেজ মহারাজকে ধরলাম।
    --আমরা সিনিয়র, ওয়ার্ডেন ছাড়াই যেতে দিন। কোন গন্ডোগোল হবেনা।
    মেজ মহারাজ গম্ভীর মুখে মাথা নাড়েন। তা হয় না। ওয়ার্ডেন আসলে তবেই, নইলে নয়।
    এমন সময় প্রশান্ত দৌড়তে দৌড়তে অফিসে ঢুকল। বিজিতদা এসে গেছেন। কোন সমস্যাই নেই।
    আমরা আবার লাফালাফি করে দোতলায় নিজেদের ঘরে। বিজিতদা জামাকাপড় ছেড়ে বিছানায় পাজামা পরে লম্বা হয়েছেন।
    -- এ কী স্যার ! শিগগির তৈরি হয়ে নিন। একদম সময় নেই। এক্ষুণি বেরোতে হবে।
    --কোথায়?
    --কোথায় মানে? আগে গড়ের মাঠ, তারপর টালা পার্ক।
    --তোমরা যাও।
    -- কী বলছেন! আপনি না গেলে অমাদের যেতে দেওয়া হবে না, জানেনই তো!
    --আমি টায়র্ড, পারব না ।
    --এসব কি বলছেন বিজিতদা? সেদিন যে কথা দিলেন?
    উনি মুচকি মুচকি হাসছেন।
    -- মিন্টু দাশগুপ্তের লেটেস্ট প্যারডি গানটা শুনেছ? সঙ্গম সিনেমার গানের?
    'আমার চিঠিখানা পাবার পর, আমাকে তুমি নিজে ভুল বুঝো না।
    যে কথা দিয়েছিলেম গো,
    সেকথা আমি ফিরিয়ে নিলেম গো।'
    তোমরা অন্য কোন ওয়ার্ডেনকে বল।
    -- বিজিতদা! স্যার! প্লীজ, এখন সময় নেই। উঠুন, জামাপ্যান্ট পরে নিন।
    --বললাম তো! অনেকগুলো ক্লাস ছিল। ভীষণ টায়ার্ড। অন্য কাউকে--
    গুরু অমিয়দা খিঁচিয়ে ওঠে।
    --আগে বলেন নি কেন? এখন বলছেন? শেষ সময়ে কাকে বলব? ইয়ার্কি মারার আর--
    ছিটকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছেন রোগা তালঢ্যাঙা বিজিতদা--যেন নোয়ানো বাঁশের ঝাড়ের একটা কচি ।
    --বেরিয়ে যাও! অল অফ ইউ! জাস্ট গেট আউট!

    পরের দিন রাত্তিরে দশটা নাগাদ একটা গুজব কানাঘুষোয় গোটা আশ্রমে ছড়িয়ে পড়ল। রাত আটটা থেকে ন'টার মধ্যে যখন ফার্স্ট ব্যচ খেতে বসেছে, ঘরগুলো খালি, তখন কে বা কারা সুজিতদার ঘরের জানলা দিয়ে ওঁর বিছানায় কোন কড়া অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছে। বিছানার চাদর ফুটো ফুটো, ভাঁজকরা লেপে পুড়ে তুলো বেরিয়ে পরেছে। হ্যাঙারে ঝোলানো দুটো টেরিলিনের শার্ট-- সেগুলোও গেছে।
    সুজিতদা প্রায় হিস্টিরিয়াগ্রস্ত।
    --ওরা আমাকে মারতেই চেয়েছিল। ভাগ্যিস খেতে গিয়েছিলাম। ঠাকুর রক্ষে করেছেন।
  • Abhyu | 107.81.102.173 | ০৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:০৪708336
  • ভালো লাগছে
  • Abhyu | 107.81.102.173 | ০৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:০৯708337

  • ranjan roy | 120.227.159.229 | ০৯ অক্টোবর ২০১৬ ২০:৪৫708339
  • ধন্যবাদ অভ্যু।
    তোমার সৌজন্যে অজয় চক্কোত্তি, পরভীন সুলতানা, মিশ্রবন্ধু ও আরও দুজনের "ভবানী দয়ানী ' শুনলাম। আগের দুটো বছর মহালয়ার সকালে আকাশবাংলায় রাশিদ খানের শুনেছি--সেটাও বড় ভাল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন