এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বিজ্ঞান এবং

    T
    অন্যান্য | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৬৩২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ishan | 80.199.224.22 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১০723271
  • আর ঈশ্বর ধারণা বিষয়ে পপারের অবস্থানটা জানা গেলনা কেন? আমি একেবারেই বিভ্রান্ত না, কিন্তু ওটা আপনাদের মুখে শোনা দরকার।
  • একক | 53.224.129.60 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৭723272
  • "ইশ্বরের " একটা ডেফিনিশন পাওয়া যাবে ? প্রথম থেকেই জিগাবো ভাবছি কিন্তু আপনেরা যেভাবে মানিকদা -মৃনাল্দা স্টাইলে ইশ্বরকে টানছেন তাতে মনে হলো ডেফিনিশন সবার কাছে এক ও ক্লিয়ার । তাই আর জ্বালাইনি :( তবে একটা লিখিত ডেফিনিশন পেলে ভালো হয় ।
  • aranya | 154.160.226.94 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৩৬723273
  • সাহিত্যেরই ডেফিনিশন পাওয়া যাচ্ছে না, আর ইশ্বরের ডেফিনিশন

    অবিশ্যি সাহিত্য = ঈশ্বর এমনও হতে পরে, সেক্ষেত্রে একটা ডেফিনিশন পেলেই কাজ চলে যাবে :-)
  • 3g | 213.219.201.58 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৪১723274
  • টই গন টু জিজি
  • Ishan | 80.199.224.22 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:০৪723275
  • জিজি কেন খুব ভ্যালিড প্রস্ন তো।

    সমস্যা হল ভ্যালিড এবঙ্গ বেসিক সমস্যাগুলোকে পাশ কাটিয়ে অমুক এই বলিয়ছেন তমুক সেই বলিয়াছেন বলেই আমাদের চর্চা চলে।
    তবে আমার প্রশ্ন জেনেরিক ঈশ্বর নিয়ে না। পপারের ঈশ্বর ধারণা নিয়ে।
    জেনেরিক ঈশ্বর আমি তুলেছি , তাই টার উত্তর আমি দেব। মানে এককেত প্রশ্নের। তবে মোবলি থেকে হবেনা।
  • dc | 132.174.114.159 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:০৩723276
  • ঈশানের পরের কিস্তির অপেক্ষায় আছি। গুলিসুতো ইত্যাদি নিয়ে কোন প্রব্লেম নেই, তবে পুরোটা না পড়লে তো কমেন্ট দেওয়া যাবেনা।
  • শৌভ | 181.61.153.164 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:১৪723277
  • প্রথমে আকা-বাবুর প্রশ্নের বা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দু'কথা বলি। উনি দু'টি সমস্যার কথা বলেছেন--১) বৈজ্ঞানিকের ব্যক্তিগত অসততা, বা নৈতিক অবস্থান, ২) জ্ঞানের অসম্পূর্ণতা, ও সেইহেতু সাময়িকভাবে গ্রহণযোগ্য কিন্তু শেষে পরিত্যজ্য এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া।

    এখন, প্রথম সমস্যাটার কোনো সমাধান দেখি না, বা তাকে উন্মূল করার কোনো উপায়ও জানা আছে বলে মনে হয় না। সামগ্রিকভাবে, বৃহত্তর শুভবোধ ক্রিয়াশীল থাকবে, এমন একটি আশ্বাসবাক্য ব্যতীত অন্য কোন বক্তব্যও, এই সমস্যার ক্ষেত্রে, আমার নেই।

    দ্বিতীয় সমস্যাটি আরো সূক্ষ্ম ও জটিল। চিকিৎসাবিজ্ঞান-সমেত আরো কিছু শাখা কতদূর বিজ্ঞান, তা নিয়ে সংশয় ও বিতর্ক বহুদিন ধরেই রয়েছে (বলে রাখি, এখানে কোনোভাবেই চিকিৎসাবিদ্যার উপযোগিতা বা ব্যবহারিক মূল্যকে সংশয়িত করতে চাইছি না)। চিকিৎসাবিজ্ঞান একটি ফলিত বিজ্ঞান। অর্থাৎ, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যার কিছু নিয়ম বা প্রিন্সিপল-কে এখানে ব্যবহারিকভাবে, মানুষের বা জীবের ওপর, প্রয়োগ করা হয়। এখন, এই প্রয়োগের ব্যাপারটা এতগুলো অন্য ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভরশীল (যা, ওই মূল সূত্রগুলি নির্মাণের সময়ে আদৌ বিবেচিত হয়নি), যে এই প্রয়োগের ফলাফল, শেষ অবধি, ১০০% নিশ্চয়তার সঙ্গে বলা সম্ভব নয়। এই ফ্যাক্টরগুলির মধ্যে রয়েছে বয়স, মানুষভেদে শারীরিক গঠনের তারতম্য, শরীরের ভেতরের রাসায়নিক উপাদানগুলির পরিমাণগত তারতম্য বা বিভিন্নতা, খাদ্যাভ্যাস, লিঙ্গ ইত্যাদি প্রভৃতি। এই কারণেই, একটি ওষুধ বা সল্ট আবিষ্কার হওয়ার পর, তাকে প্রথমে মনুষ্যেতর প্রাণীর ওপর প্রয়োগ করে দেখা হয় তার কী কী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, তারপর শুরু হয় ক্লিনিকাল ট্রায়াল। তারও হাজার পদ্ধতি-প্রকরণ-ধাপ ইত্যাদি। এই করে, হাজারের মধ্যে একটি সল্ট অবশেষে বাজারজাত হওয়ার উপযোগী বলে বিবেচিত হয়। তাও, পরবর্তী পাঁচ বছরেই যে তা ক্ষতিকারক বলে প্রমাণিত হবে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। মেডিসিনের ক্ষেত্রে সে-কারণেই বলা হয়--"Half of what is true today will be proven to be incorrect in the next five years. Unfortunately we don't know which half that is going to be."

    অতএব, চিকিৎসাবিজ্ঞানের মত ফলিত বিজ্ঞানের সমস্যা থাকবেই, বিশেষ করে তার প্রয়োগের ক্ষেত্রটি যখন মানবশরীরের মত একটি জটিল ব্যবস্থা। হেপাটাইটিস বি তো ছেড়েই দিন (যদিও, হেপাটাইটিস বি-র টীকাকরণ জরুরি, এবং এখন শিশুর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকও), সামান্য ওরাল রিহাইড্রেশান সলিউশনে সোডিয়াম আর গ্লুকোজের অনুপাত নিয়ে ধন্দের শেষ নেই। অবশেষে, এই ২০০২ সালে WHO নতুন ফর্মুলা চালু করেছে, কেননা য়াগের ফর্মুলা অনুযায়ী সোডিয়াম আর গ্লুকোজের মিশ্রণ অনুর্দ্ধ ৫-বছরের শিশুদের পক্ষে ক্ষতিকারক ছিল।
  • sm | 53.251.90.77 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৩৪723278
  • ঈশানের যুক্তি পরম্পরা বেশ ভালোই লাগছে। প্রথম দিকে মনে হচ্ছিলো পপার অবসেসড লোকজন পপার মানেই বিজ্ঞান এরকম একটা ধারণা দিতে চেয়েছিলেন। এখন তারা অনেকটাই সফ্ট হয়েছেন।এটাই প্রমান করে; সব ধারণাই পরিবর্তনশীল।
    বিজ্ঞান মানেই অভ্রান্ত ও অনুকরণ যোগ্য; এই ধারণার ও পরিবর্তন দরকার।
    খোলা মনে বিচার করার জন্য এই পক্ষে- বিপক্ষে সব পোস্টই জরুরি।
  • অঙ্ক কি কঠিন | 87.247.181.163 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৯:৩৫723279
  • ঈশ্বর আর বিজ্ঞানের ডেফিনিশন দুটো (নাকি একটাই) কেউ লিখে দেবেন ?
  • শৌভ | 181.61.153.164 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৯:৫৯723281
  • এবার ঈশানবাবুর প্রশ্নের বা প্রশ্নসমূহের নিকটে আসি।

    ১) "গুলিসুতো একটি স্বয়ঙ্গ সম্পূর্ণ তত্ত্ব হলে বিগ্গ্যানের দিক থেকে কোনো সমস্যা হয় কি?" স্বয়ংসম্পূর্ণ তত্ত্ব বলতে ্ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন আমি বুঝতে পারলুম না। সোজা কথায়, একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ক) আমাদের জাগতিক অভিজ্ঞতাকে বা তার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পূর্বধারণাকে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হবে, এবং খ) তা এমনকিছু নির্দিষ্ট ঘটনার পুর্বাভাস দিতে পারবে, যা আমরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মিলিয়ে নিতে পারব। এখন, স্বয়ংসম্পূর্ণ" কথাটিকে যদি তার আভিধানিক অর্থে গ্রহণ করি, তাহলে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আমার জানা নেই, যা নিজেই সমস্ত জাগতিক ঘটনার ব্যাখ্যা ও পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। এটা অনেকটা সেই কাল্পনিক থিওরি অফ এভিরিথিং-এর মত শোনাচ্ছে। এ-ধরণের তত্ত্বের, পপার ছাড়াও, আরো অনেক শত্তুর রয়েছে, কুর্ট গোডেল তাঁদের একজন। তবে, সে-সবের আলোচনা এখন থাক।

    ২) "আর ঈশ্বর ধারণা বিষয়ে পপারের অবস্থানটা জানা গেলনা কেন? আমি একেবারেই বিভ্রান্ত না, কিন্তু ওটা আপনাদের মুখে শোনা দরকার।"

    ঈশ্বরের ধারণা ও পপারের অবস্থান নিয়ে দু'ধরণের আলোচনা সম্ভব। ক) এখানে যেহেতু কেবল পপারের ডিমার্কেশন থিওরি নিয়েই আলোচনা হচ্ছে, তাই ঈশ্বরের তত্ত্ব ডিমার্কেশন থিওরি অনুযায়ী একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কি না, তা বিচার করা যেতে পারে, খ) ডিমার্কেশন থিওরি ছাড়িয়ে, পপারের যে বৃহত্তর বিশ্বদর্শন (ডিমার্কেশন থিওরি তার একটি অংশমাত্র), তার ভিত্তিতে পপার ঈশ্বরের অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব-চরিত্র ইত্যাদি নিয়ে কী বলেছেন তা পর্যালোচনা করা যেতে পারে। যেহেতু, "ঈশ্বরের ধারণা বিষয়ে পপারের অবস্থান" বলতে এই দুইয়ের যেকোন একটি বা উভয়কেই বোঝানো যায়, অতএব, আমি, সাবধানতাহেতু, দুটিকেই ছুঁয়ে যাব।

    ক) ঈশ্বরের ধারণা বলতে যদি আমরা এই ধরণের কিছু বাক্যসমষ্টি বুঝি--"ঈশ্বর অস্তিত্ববান", "ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টি করেছেন", "ঈশ্বর পরম করুণাময়" ইত্যাদি--তাহলে তা ডিমার্কেশন থিওরি অনুযায়ী বিজ্ঞানের আওতাভুক্ত নয়, বরং মেটাফিজিক্সের অংশমাত্র। কেন?

    এই কেন-র উত্তরে যাওয়ার আগে, আরেকবার, পরিষ্কার করে দিই যে, ডিমার্কেশন থিওরি-র মূল উদ্দেশ্য বিজ্ঞানের জ্ঞানকাণ্ডটির (অর্থাৎ, এপিস্টেমোলজি) বিজ্ঞানবহির্ভূত জ্ঞানকাণ্ডের পার্থক্য এবং সীমারেখা নিরূপন। বিজ্ঞান বলতে এখানে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ইত্যাদি, এবং বিজ্ঞানবহির্ভূত বিষয় বলতে দার্শনিক অধিবিদ্যা (ফিলজফিকাল মেটাফিজিক্স), মার্ক্সবাদ তথা রাজনীতিবিজ্ঞান, ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ইত্যাদি।

    পপারের আগে যে লজিকাল এম্পিরিসিস্টরা এইধরণের ডিমার্কেশন করতে চেষ্টা করেছিলেন, যেমন কারনাপ, তাঁরা ভেরিফায়েবিলিটি ক্রাইটেরিয়নকেই এই বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তাঁরা বলতেন, যে স্টেটমেন্টগুলিকে বাস্তব পর্যবেক্ষণ দ্বারা ভেরিফাই করা যাবে, তাকেই আমরা অর্থপূর্ণ (cognitively meaningful ) স্টেটমেন্ট বলব, এবং বিজ্ঞান এইধরণের অর্থপূর্ণ স্টেটমেন্টের সমাহার। বাকি যে স্টেটমেন্টসমূহ, যা দার্শনিক অধিবিদ্যা, নন্দনতত্ত্ব ইত্যাদির মূল, তা ননসেন্সিকাল, এবং জগৎসম্বন্ধে জ্ঞান-আহরণের পন্থা নয়। এঁদের যাত্রার প্রস্থানভূমি ছিল হ্বিটগেনস্টাইনের এবং রাসেলের অ্যানালিটিকাল ফিলজফি।

    এখন ধরা যাক, আমি বললাম, "ইউনিকর্ণ আছে।" আপনি বলবেন, ইউনিকর্ণ আজ অবধি কেউ দেখেনি, অতএব এই বাক্য অর্থহীন। আমি বলব, আজ দেখা যায়নি বলে কাল দেখা যাবে না, এমন কোন প্রমাণ আছে? বা এখন দেখা না-গেলেও বহু আগে কখনো দেখা যায়নি, তারই বা কী প্রমাণ? অতএব, একে ননসেন্সিকাল বলা চলবে না। অতএব, "ইউনিকর্ণ আছে", এই বাক্যটি বিজ্ঞান। আবার উল্টোভাবে দেখানো যায়, "মানুষমাত্রেই মরণশীল", এই সরল ও জাগতিক-অর্থে সত্য বাক্যটিকে ভেরিফায়েবিলিটির সমর্থক লজিকাল পজিটিভিস্টরা মেনে নিতে পারবেন না। কেননা, একে কনক্লুসিভলি ভেরিফাই করা সম্ভব নয়। আগে যারা বেঁচে ছিল, তারা মরে গেছে বটে, কিন্তু আজ যারা বেঁচে আছে, তারা সক্কলে আগামীদিনে মরে যাবে তা কী করে জানা যাবে?

    পপার দেখলেন, এই ধরণের ইউনিভার্সাল স্টেটমেন্ট ভেরিফায়েবিলিটি দিয়ে পরখ করা সম্ভব নয়। তিনি বললেন, কোনো স্টেটমেন্টকে বৈজ্ঞানিক হতে গেলে, ফলসিফায়েবল হতে হবে। যেহেতু, "ইউনিকর্ন আছে", এই বাক্য ফলসিফায়েবল নয়, তাই তা বৈজ্ঞানিক নয়। কিন্তু "সমস্ত রাজহাঁস শাদা হয়", এই বাক্য বা হাইপথিসিসটি ফলসিফায়েবল (একটিমাত্র কালো রাজহাঁস আবিষ্কার করা মাত্রই হাইপথিসিসটি ভুল প্রমাণ করা যাবে), অতএব এটি একটি বৈজ্ঞানিক হাইপথিসিস। আবার, "ইউনিকর্ণ আছে" এ-কথা মেনে নিয়ে যদি আমি বলি, "অমুক অক্ষাংশ ও তমুক দ্রাঘিমায় একুশে সেপ্টেম্বর দুপুর বারোটায় একটা ইউনিকর্ন দেখা যাবে", এই বাক্যটি বৈজ্ঞানিক বলে বিবেচিত হবে, কেননা সেইমুহূর্তে ওই অবস্থানে উপস্থিত একজন দর্শক অনায়াসে নিশ্চিত করে বলতে পারবে ইউনিকর্ণ দেখা গিয়েছিল কি না।

    ঈশ্বরসংক্রান্ত যে বক্তব্যগুলি উপরে বলা হয়েছে, তা এই ধরণের ইউনিভার্সাল এক্সিস্টেনশিয়াল স্টেটমেন্ট। এরা ফলসিফায়েবল নয়। বা, এই বক্তব্যগুলিকে সত্য বলে মেনে নিলে, এরা এমন কোনো প্রেডিকশান করতে পারবে না, যা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ফলসিফাই করার সম্ভাবনা থাকবে। আবার, যদি এমন কোনো প্রেডিকশান (২০১২-তে ঈশ্বর পৃথিবী ধ্বংস করে দেবেন) কেউ করেও, তাহলে তা ফলসিফায়েড হলে, অ্যাড-হক বা অক্সিলিয়ারি হাইপথিসিস জুড়ে সেই তত্ত্ব বা ধারণাকে নতুন করে নির্মাণের কোনো প্রয়াসও করা যাবে না। এই কারনে, ঈশ্বরের ধারণা, পপার-প্রস্তাবিত ডিমার্কেশন তত্ত্বের নিরিখে, একটি দার্শনিক আধিবিদ্যক ধারণা। মনে রাখা উচিত, পপার, কারনাপ বা অন্যান্য লজিকাল পজিটিভিস্টদের মত, বিজ্ঞানই একমাত্র সত্য জ্ঞানের পথ, এমনটা বলেননি। অন্য পদ্ধতিতেও উপযোগী জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব, একথা তিনি অস্বীকার করেননি।

    খ) ঈশ্বর সম্পর্কে পপারের নিজস্ব ধারণা--পপার মনে করতেন, ব্রহ্মাণ্ড নিজেই একটা সৃজনশীল অস্তিত্ব যা নিজেই নতুন জিনিশ সৃষ্টি করে চলে। কিন্তু এর পেছনে পর্দানশীন সৃষ্টিকর্তা ভগবানের অস্তিত্ব আছে, এ-কথা তিনি মানতেন না। এই দিক থেকে, খুব আশ্চর্যজনকভাবে, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী, ভারতীয় দর্শনের কিছু শাখার (বিশেষত সাংখ্য ও বেদান্তের কিছু অংশ) সঙ্গে মিলে যায়। অর্থাৎ, তিনি ক্রিয়েশনিস্টদের বিশ্বসৃষ্টির ধারণার সঙ্গে একমত ছিলেন না। আবার, বিবর্তনবাদ সম্পর্কে তাঁর মত ছিল, প্রাণের বিবর্তন হয়েছে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের অভিমুখে, একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে, কিন্তু সেই উদ্দেশ্যের পেছনে ভগবানের হাত নেই। ১৯৬৯ সালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "I don't know whether God exists or not. ... Some forms of atheism are arrogant and ignorant and should be rejected, but agnosticism—to admit that we don't know and to search—is all right. ... When I look at what I call the gift of life, I feel a gratitude which is in tune with some religious ideas of God. However, the moment I even speak of it, I am embarrassed that I may do something wrong to God in talking about God." He objected to organised religion, saying "it tends to use the name of God in vain"।
  • aka | 79.73.9.37 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৮:৫৪723282
  • ঈশ্বর আছে কিনা জানি না।

    ভূত আছে কিনা জানি না।

    কিন্তু ঈশ্বর যদি ক্রিয়েশনিস্টদের ডেফিনিশন অনুযায়ী হয় তাহলে একটাই প্রশ্ন - ঈশ্বরকে ক্রিয়েট করলেন কে?
  • শৌভ | 192.77.122.47 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৪৫723283
  • আমার একেবারে প্রথম পোস্টে ঠিক এই কথাই বলেছিলাম তো! ঠিক একইভাবে, বিগ ব্যাং মেনে নিলেও, সেই দেশকালপদার্থশক্তির বিন্দুবৎ মন্ড, যার ঘনত্ব অসীম, কীভাবে সৃষ্টি হল, তারও কোনো সদুত্তর বিজ্ঞান দিতে পারবে না। বলবে, যেহেতু বিগ ব্যাং-এর মুহূর্তে সময়ের উৎপত্তি, অতএব তার আগে কী হয়েছিল, কী ছিল, এই প্রশ্নগুলোই অবান্তর।

    আসলে, এইগুলোই আমাদের জ্ঞানের সীমা, বা জ্ঞান আহরণের পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা।
  • ranjan roy | 192.68.23.133 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৫১723284
  • এটা সেই আদি রিডাক্শনিস্ট আর্গুমেন্ট।

    পূর্বপক্ষঃ
    সমস্ত অস্তিত্ববান বস্তুরই একটি সৃষ্টিকর্তা থাকে।
    আদি সৃষ্টিকর্তা হলেন ঈশ্বর।
    তাহলে তাঁরও কোন সৃষ্টিকর্তা থাকবে।
    তাহলে ঈশ্বর আদি সৃষ্টিকর্তা হতে পারেন না। অর্থাৎ আদি পিতা ঈশ্বরের ধারণাটি বিরোধাভাসী, অতঃ ভ্রামক।

    উত্তরপক্ষঃ
    কেবল সমস্ত সৃষ্ট জিনিসেরই সৃষ্টিকর্তা হয়।
    সৃষ্ট মানে যা একটি নির্দিষ্ট স্থান ও কালে অস্তিত্ববান হয় ও ধ্বংস হয়।
    ঈশ্বর এই লুপের বাইরে ,
    কারণ উনি স্থান-কালের সীমার ঊর্দ্ধে।
    কারণ উনি কোন নির্দিষ্ট স্থান বা সময়ে অস্তিত্ববান বা ধ্বংস হন না।
    অর্থাৎ উনি সৃষ্ট হন না।
    অর্থাৎ ওঁর অস্তিত্ববান হওয়ার জন্যে কোন সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন নেই।
    অর্থাৎ, উনি স্বয়ম্ভু।
    অর্থাৎ উনি যে আদি সৃষ্টিকর্তা এই ধারণাটি বিরোধাভাস মুক্ত, এতদ্বারা প্রমাণিত হইল।ঃ)))
  • শৌভ | 192.77.122.47 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৫৪723285
  • হ্যাঁ। এ নিয়ে, ভারতে, সাংখ্যের সঙ্গে বেদান্তের শত্রুতা তো চিরকালীন।
  • ranjan roy | 192.68.23.133 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:১১723286
  • শৌভ,
    আপনার চমৎকার লেখা খুব মন দিয়ে আগ্রহের সঙ্গে পড়ছি।
    কিন্তু একটি লাইনে সামান্য আপত্তি আছেঃ
    "পপার মনে করতেন, ব্রহ্মাণ্ড নিজেই একটা সৃজনশীল অস্তিত্ব যা নিজেই নতুন জিনিশ সৃষ্টি করে চলে। কিন্তু এর পেছনে পর্দানশীন সৃষ্টিকর্তা ভগবানের অস্তিত্ব আছে, এ-কথা তিনি মানতেন না। এই দিক থেকে, খুব আশ্চর্যজনকভাবে, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী, ভারতীয় দর্শনের কিছু শাখার (বিশেষত সাংখ্য ও বেদান্তের কিছু অংশ)"
    --- এই ঈশ্বরহীন "ব্রহ্মাণ্ড নিজেই একটা সৃজনশীল অস্তিত্ব যা নিজেই নতুন জিনিশ সৃষ্টি করে চলে", এটা বেদান্তের মানে উত্তরমীমাংসার সঙ্গে নয় পূর্ব মীমাংসার সঙ্গে খাপে খাপ মেলে।
    বেদান্ত ব্রহ্মকে উপাদান কারণ (মেটেরিয়াল কজ) এবং নিমিত্তকারণ ( সাফিশিয়েন্ট কজ বা ক্যাটালিস্ট) হিসেবে মানে। ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি ও ধ্বংস মানে।
    পূর্বমীমাংসা বলে সমগ্র সৃষ্টি কখনই একসঙ্গে ধ্বংস বা সৃষ্ট হয় না। সবসময়ই এর কোন একটা ক্ষুদ্র অংশ ধ্বংস হচ্ছে, আর একটা ক্ষুদ্র অংশ সৃষ্ট হচ্ছে। তাই এটা সতত গতিশীল। এদের মতে দেবতা বলে কিছু নেই।
    আপনার বর্ণিত পপারের ঈশ্বরের অবধারণার অনেক কাছাকাছি। হ্যাঁ, সাংখ্যের ঈশ্বরহীন প্রকৃতি-পুরুষ /চতুর্বিংশতি তত্ত্বের সঙ্গেও মিল আছে।
  • শৌভ | 192.77.122.63 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৩৮723287
  • রঞ্জনবাবু, আপনি ঠিকই বলেছেন। পূর্বমীমাংসার কথাই লিখতে চেয়েছিলাম। অন্যমনস্কতাহেতু বেদান্ত লিখে বসেছি। পূর্বমীমাংসা খুবই আশ্চর্য দর্শন, তার শব্দপ্রমাণের বিষয়টিও ভাষার দর্শনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত আগ্রহোদ্দীপক। সে অবিশ্যি আলাদা আলোচনা। ওদিকে, ন্যায়শাস্ত্রও আবার ঈশ্বরের, মানে সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের, ধারণায় সন্দিহান। নয় কি?
  • যা দেখা যাচ্ছে | 55.250.56.108 | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩৫723288
  • তাইলে সাংখ্য, পূর্বমীমাংসা ও ন্যায়শাস্ত্র এই তিনটে বিজ্ঞান, তাই তো?
  • sswarnendu | 198.154.74.31 | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:০১723289
  • অনেকদিন বাদে গুরুতে এলাম...তাই টইটা গোটাটা পড়ে উঠলাম বটে, কিন্তু অনেক কথা তামাদি হয়ে গেছে... যাই হোক, আপাতত হাতের কাছেরগুলোকে নিয়েই দু পয়সা দি...

    ১) "তিনি বললেন, কোনো স্টেটমেন্টকে বৈজ্ঞানিক হতে গেলে, ফলসিফায়েবল হতে হবে। " --- বস্তুত এর আগেও নেসেসারি ও সাফিসিয়েন্ট কন্ডিশন নিয়েও আলোচনা হয়েছে... মোটামুটিভাবে নেসেসারি কিন্তু সাফিসিয়েন্ট নয় এমন একটা কন্সেনশাস এও উপনীত হয়েছে আলোচনা... কিন্তু আমি একটা সোজা জিনিস বুঝছি না... সেটা হচ্ছে ' বৈজ্ঞানিক স্টেটমেন্ট' এই শব্দের একটা এই ফলসিফায়েবিলিটি-নিরপেক্ষ একটা ধারণা/ডেফিনিশন/মানে তো লাগবে... তবেই তো সেই ধারনার জন্য ফলসিফায়েবিলিটি নেসেসারি কিনা, সাফিসিয়েন্ট কিনা, দুটোই কিনা এইসব বুঝব? সেইটা কি? নইলে যদি বলি " We define a scientific statement to be any statement which is falsifiable" তাহলে আর নেসেসারি, সাফিসিয়েন্ট এই আলোচনা অর্থহীন... "কোনো স্টেটমেন্টকে বৈজ্ঞানিক হতে গেলে, ফলসিফায়েবল হতে হবে। " এটাও অর্থহীন... কারণ এটা tautological. ঈশানের পুরোন উদাহরণ এ ফেরত গেলে, মানুষ এই ধারনাটার উচ্চতা-নিরপেক্ষ ধারণা থাকলে তবেই 'ছ ফুটের বেশী উচ্চতা হলে তবেই মানুষ' এরকম স্টেটমেন্ট ফলসিফায়েবল কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলতে পারে, নইলে 'ছ ফুটের বেশী উচ্চতা হলেই মানুষ' এইটাই মানুষের ডেফিনিশন হলে জিরাফ, হাতি সবই মানুষ... আর বেঁটেরা মানুষ নয়, by definition...এবং তাতে ফলসিফায়েবিলিটির প্রশ্নই নেই, কারণ কোন একটা লেয়ার এ ডেফিনিশন ফলসিফায়েবিলিটির উর্ধ্বে না হলে কোন এপিস্টেমোলজিই সম্ভব না...

    ২) "ঈশ্বরসংক্রান্ত যে বক্তব্যগুলি উপরে বলা হয়েছে, তা এই ধরণের ইউনিভার্সাল এক্সিস্টেনশিয়াল স্টেটমেন্ট। এরা ফলসিফায়েবল নয়। বা, এই বক্তব্যগুলিকে সত্য বলে মেনে নিলে, এরা এমন কোনো প্রেডিকশান করতে পারবে না, যা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ফলসিফাই করার সম্ভাবনা থাকবে। " --- এর অনুসিদ্ধান্তটা স্পষ্ট হল না... ইউনিভার্সাল এক্সিস্টেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট যা ফলসিফায়েবল নয় ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ফলসিফায়েবল এমন প্রেডিকশনের সম্ভাবনা নেই এমন স্টেটমেন্ট নিয়ে কি করা হবে? বিজ্ঞানের এপিস্টেমোলজিতে তার স্থান নেই এমন কিছু বলতে চাওয়া হচ্ছে কি? যেকোন ঘটনার লজিকাল কোহেরেন্ট এক্সপ্ল্যানেশন সম্ভব ও তা আমাদের সেই ঘটনা-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রেডিক্টিভ পাওয়ার দেবে--- এইটাও ঠিক একই রকম একটা ইউনিভার্সাল এক্সিস্টেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট, যা ফলসিফায়েবল নয়, কারণ প্রেডিক্টিভ পাওয়ারের ফলসিফিকেশন হলেও সর্বদাই ' সঠিক এক্সপ্ল্যানেশন এখনো পাওয়া যায়নি" এই উত্তর আসতে পারে ( ভেবে দেখুন এসেও থাকে, আমরা যাকে সাধারণভাবে বিজ্ঞান বলে ভাবি তার এটাই সবচেয়ে নরমাল উত্তর ) ...
    আর ঠিক এই স্টেটমেন্টটাই বিজ্ঞানের এপিস্টেমোলজির ভিত্তিভূমি... এইবার কেউ বলতে পারেন এই স্টেটমেন্টটাও বিজ্ঞানের এপিস্টেমোলজির মেটাফিজিক্স ( দার্শনিক আধিবিদ্যক ধারণা/ দার্শনিক অধিবিদ্যা অর্থে ) [ বাস্তবিকই তাইই ] ... তাহলে আর এইটা বলা চলে না যে বিজ্ঞানের ডিসকোর্সে মেটাফিজিক্সের জায়গা নেই।
  • ranjan roy | 192.68.23.133 | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:০১723290
  • শৌভ,
    একদম ঠিক। ঈশ্বরের দার্শনিক ধারণা নিয়ে একটি আলাদা টই খুললে কেমন হয়?
    স্বর্নেন্দু,
    ঠিক মনে হচ্ছে। অধিবিদ্যা প্রসঙ্গে।
  • ঈশান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:২৯723292
  • স্বর্ণেন্দুর সঙ্গে একমত। শৌভর পোস্টগুলো পছন্দ হল। বেশ খেটেখুটে লেখা। বক্তব্য বিষয়ে আসছি।
  • ঈশান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২৮723293
  • কোথা থেকে শুরু করি? প্রথমে ঈশ্বর থেকেই শুরু করা যাক। পপারের কোটেশন থেকে। যদিও আমার প্রশ্ন ঠিক এই বিষয়ে ছিলনা, কিন্তু আপাতত এইটা দিয়েই শুরু করা যাক। পপার বলেছেনঃ "I don't know whether God exists or not. ... Some forms of atheism are arrogant and ignorant and should be rejected, but agnosticism—to admit that we don't know and to search—is all right."

    এটা একটা অবস্থান। আমরা সকলেই এরকম নানা অবস্থান নিয়ে থাকি। এবং তর্ক করে থাকি। কেউ বলি ঈশ্বর আছেন। কেউ বলি নেই। কেউ অ্যাঅনস্টিক। কিন্তু, কথা হল, যে, এগুলো সবই অবস্থান। কোনোটা কি ঈশ্বরের সংজ্ঞা? কোনোটাই না।

    আরেকটু ব্যাখ্যা দিই। ধরুন, ব্রহ্মান্ড একটা মরুভূমি। সেখানে তিন কন্যা দাঁড়িয়ে আছে, একজনের নাম তর্কাতীতা, একজনের নাম বিবাদিনী, তৃতীয়জন বুদ্ধিমতী। তর্কাতীতা বলল, 'এখানে কোথাও জল আছেই'। অর্থাৎ, সে 'জল' এর অস্তিত্বে বিশ্বাসী। বিবাদিনী শুনে বলল, 'ধুর জল কোথাও নেই'। সে, যারে কয় জলের ব্যাপারে অ্যাথেইস্ট। তৃতীয়জন, বুদ্ধিমতী, সে বলল, 'জল থাকতেও পারে, নাও পারে, খুঁজে দেখা দরকার'। সে অ্যাগনস্টিক।

    এই তিনজনের মধ্যে মতে প্রবল অমিল। কিন্তু একটা ব্যাপারে তিনজনেই একমত। যে, তিনজনই 'জল' ব্যাপারটায় বিশ্বাসী। তিনজনেই জানে 'জল'এর সঙ্জ্ঞা কী এবং সে নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই। ফলত 'জল' জিনিসটা কী এ নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো তর্ক নেই। তর্ক আছে শুধু সেটা এখানে আছে কিনা তাই নিয়ে।

    অ্যানালজিটা ঈশ্বরে টেনে আনুন। বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সন্দেহপ্রবণ, তিন পক্ষই তক্কো শুরু করার আগে 'ঈশ্বর' কী এ ব্যাপারে একটা মতানৈক্যে পৌঁছেছেন। অ্যাজ ইফ তিনজনেই 'ঈশ্বর' ব্যাপারটা জানেন, এবং সেটায় বিশ্বাস করেন। তক্কো কেবল, বস্তুটা এখানে (অর্থাৎ জগতে) আছে কী নেই, তা নিয়ে।

    এবার কূট প্রশ্ন হল, এই তিনপক্ষ কি সত্যই জানেন, 'ঈশ্বর' কী? সেটা একটু দেখা যাক।

    ঈশ্বর সম্পর্কে দু ধরণে সংজ্ঞা হয়। এক, 'তিনিই জগতের মূল' বা 'তিনিই সারাৎসার'। এসবের কোনোটাই ভেরিফায়াবল না, ফলসিফায়াবলও না। এ নিয়ে তক্কো করারও কিছু নেই। এগুলো বস্তুত, চক্রাকার স্টেটমেন্ট, বা অঙ্কের ভাছায় আইডেন্টিটিও বলা যায়। 'জগতের সারাৎসারকেই ঈশ্বর বলা হয়' এবং 'ঈশ্বরই জগতের সারাৎসার' এই দুটো বাক্য একসঙ্গে মিলে এই চক্রটি সম্পূর্ণ করে। এই বস্তু নিয়ে তর্ক সম্ভবই না। কারণ, ধরুন, আপনি বললেন, 'ঈশ্বর না, জগতের সারাৎসার হল বিগ ব্যাং'। অপরপক্ষ বললেন, 'তা যদি হয়, তবে ওইটাই ঈশ্বর'। এ থেকে বলাবাহুল্য কিছু ডিডাক্ট করাও সম্ভব না।

    দ্বিতীয় ধরণের যে সংজ্ঞা হয় ঈশ্বরের, সেগুলো কোনোটা ভেরিফায়েবল, কোনোটা ফলসিফায়াবল। সেগুলো ঠিক সংজ্ঞা না, বরং ঈশ্বরের গুণ বা গুণপনার বর্ণনা। যেমন, "ঈশ্বর সাতদিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেন"। এ পরিষ্কার ভেরিফায়াবল এবং ফলসিফায়াবল (যদিও সরাসরি করা সম্ভব না, কিন্তু লজিকালি করা যায়)। একই ভাবে বিবলিকাল সৌরজগতের যে বর্ণনা, সেটাও ভেরিফায়াবল এবং ফলসিফায়াবল। ঈশ্বরের গুণ বা গুণপনা সংক্রান্ত এ রকম নানা ধারণা, কেউ ভেরিফায়াবল কেউ ফলসিফায়াবল, কেউ দুটোই।

    (কর্মফল, আত্মা, ইত্যাদি নানা প্রচলিত যে ধারণা আছে সবার ক্ষেত্রেই এই একই গপ্পো)।

    এবার প্রশ্ন হল, এই দুই ধরণের সংজ্ঞা নিয়েই কি বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী-সন্দেহপ্রণ তিনপক্ষই একমত? একটুও না। কারণ ঐতিহাসিকভাবে ঈশ্বরের গুণ বা গুণপনার হাজার রকম ভ্যারিয়েশন বেরিয়েছে। কিছু ফলসিফায়েড হয়েছে (যেমন সাত দিনে পৃথ্বী সৃষ্টি), তখন ঈশ্বরের তথাকথিত এজেন্টরা মেনেও নিয়েছেন। এবং তারপরে ঈশ্বরের গুণের বর্ণনাটা স্লাইট বদলে দিয়েছেন। নানা ক্ষেত্রে বর্ণনা নিয়ে নানা বিবাদ হয়েছে, তখন সেসব বদলে গেছে। নানা মত তৈরি হয়েছে। মোটকথা গুণপনা বস্তুটাই প্লাস্টিক। এতবার বদলেছে, তার কোনো ইয়ত্ত্ব নেই। এবং ভবিষ্যতেও বদলাতেই পারে। অসুবিধে কিছু নেই।

    একমাত্র কোনটা অচঞ্চল? প্রথম সংজ্ঞাটা? যা আসলে অর্থহীন, এবং চক্রাকার? নাঃ তাও না। কারণ নানা ধর্মমত, অনেক ক্ষেত্রেই ওটাকেও এড়িয়ে গেছে। বা অস্বীকার করেছে।

    তাহলে অচঞ্চল কোনটা? কোনোটাই না। "ঈশ্বর" নামক শব্দটা বাদ দিয়ে সবটাই পরিবর্তনশীল। একমাত্র যা ধ্রুব তা হল "ঈশ্বর" নামক শব্দ বা বর্গটা। শৌভ ইউনিকর্নের উদাহরণ দিয়েছে। সেটা এখানে একেবারে খাপে খাপ। যিনি বলেন, ইউনিকর্ন আছে, বা যিনি বলেন নেই, তাঁদের কাছে কোনটা অচঞ্চল? না "ইউনিকর্ন" বর্গটা। সেটা স্পেসিফিকালি কি জিনিস কারো জানা নেই। "ঈশ্বর" ও তাই।

    ফলত, ইউনিকর্ন নিয়ে তর্ক, বা ঈশ্বর নিয়ে তর্ক, দুটোই অর্থহীন। "মঙ্গলগ্রহের বাতাসে ঝালমুড়ির গন্ধ পাওয়া যায় কি যায়না" এই নিয়ে তর্কের মতো (গন্ধ ব্যাপারটাই মঙ্গলগ্রহে পাওয়া সম্ভব না)। কিংবা অন্ধকারে জানলার বাইরে জুজু থাকে কিনা এই নিয়ে তর্কের মতো (জুজু বস্তুটা কী সেটাই জানা নেই)। তবুও আমরা করি। কেন? কারণ বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী-সন্দেহপ্রবণ, সকলের মাথাতে "ঈশ্বর" নামক বর্গটা ঢুকে আছে। এর গুণপনাকে নিজেদের মতো বাঁকিয়ে চুরিয়ে নিয়ে আমরা পৃথিবীকে ব্যাখ্যা করি, বা এর অস্তিত্বকে অস্বীকার করি।
  • ঈশান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৩০723294
  • *** " তিন পক্ষই তক্কো শুরু করার আগে 'ঈশ্বর' কী এ ব্যাপারে একটা মতানৈক্যে পৌঁছেছেন"। এটা "মতৈক্যে পৌঁছেছেন" হবে।
  • sswarnendu | 198.154.74.31 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৫723295
  • "এগুলো বস্তুত, চক্রাকার স্টেটমেন্ট, বা অঙ্কের ভাছায় আইডেন্টিটিও বলা যায়।"--আমি আমার পোস্টে ঈশানকে সুন্দর একটা শব্দ যোগালুম, tautology...শুনতেও বেশ ভাল, অথচ হয় সাদা চামড়ার ভাষা বলে নয় আমি লিখলুম বলে ঈশান পাত্তাই দিলে না :( :( :(

    যাক ঠাট্টা থাক, আমার পোস্ট এ ১) অংশটায় এই মতৈক্য নিয়েই একটা প্রশ্ন ছিল... ঈশ্বর সংক্রান্ত মতৈক্য নিয়ে নয়, 'বিজ্ঞান' সংক্রান্ত মতৈক্য নিয়ে... কারণ ঈশানের এই শেষ তিনটে পোস্টে লেখা যুক্তি একিভাবে প্রযোজ্য বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও... বিজ্ঞান কারে বলে এই সংক্রান্ত ধারণা ছাড়া 'বিজ্ঞান ফলসিফায়েবল স্টেটমেন্টের সমাহার' আর ' ফলসিফায়েবল স্টেটমেন্ট দের সমাহারই বিজ্ঞান' এও ওই একই রকম টটোলজি...
  • ঈশান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০০723296
  • আঃ টটোলজি, কথাটা মনে পড়েনি। :-)
  • T | 165.69.191.255 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:৪৫723297
  • না, টটোলজি নয়। সার্কুলার রিজনিংকে টটোলজি বলে না। :)

    তবে সার্কুলার রিজনিং কেউ দিচ্ছেও না।

    ফলসিফায়াবেল স্টেটমেন্ট মাত্রেই বিজ্ঞান বা বেড়াল নয়। আরো কিছু তার সাথে যোগ হবে। প্রাথমিক ভাবে অ্যাক্সিওম, সেখানে থেকে কালেকশন অব সিঙ্গুলার টেস্টেবল স্টেটমেন্টস, সেখানে থেকে ফলসিফায়াবল স্টেটমেন্ট বা হাইপোথিসিস, তারপরে প্রেডিকশন মিললে তবে সেটি একটি গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত করা হ'ল। যে গ্রুপকে কাজ চালাবার খাতিরে বিজ্ঞান নাম দেওয়া হয়েছে, বেড়ালও বলা যেত। অ্যাক্সিওমের পেছনে মেটাফিজিক্স বা দর্শন ইত্যাদি থাকতে পারে, কিন্তু সে আলোচনা বোধহয় হচ্ছে না।

    শুরুটা 'মহাকর্ষ বলে কিছু একটা আছেই' এইভাবে হচ্ছে না। শুরুটা পর্যবেক্ষণ থেকে হচ্ছে এবং 'এই তার ব্যাখ্যা' এই জাতীয় কিছু দিয়ে। আইনস্টাইন, মহাকর্ষ (/ঈশ্বর/জল) তো আছেই অতএব এসো তার ব্যাখ্যা করি, এই ভাবে শুরু করেননি। ফিজ্যিক্যাল ল গুলি নন অ্যাকসিলারেটেড ফ্রেমে একই থাকবে ইত্যাদি দিয়ে শুরু হয়ে তারপর শেষে দেখা গেল, গ্রহের চলন বলন জাতীয় ঘটনাও ব্যাখ্যা করে দেওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ থিয়োরীর ডায়মেনশন বাড়ল।

    অর্থাৎ ইউনিভার্সাল এগসিস্টেনশিয়াল স্টেটমেন্ট দিয়ে শুরুটা হচ্ছে না। শুরুটা হচ্ছে একটি ভৌত ঘটনা দিয়ে। এই ভৌত ঘটনার পেছনে কোন অ্যাবস্ট্র্যাক্ট হনুর হাত আছে সেটা একলাফে সায়েন্স বিচার করতে যাচ্ছে না। সে আদপেই চিন্তিত নয়। সায়েন্সের জার্নিটা হচ্ছে সিঙ্গুলার ফলসিফায়েবল স্টেটমেন্ট থেকে ক্রমশঃ আরো বৃহত্তর ফলসিফায়েবল স্টেটমেন্টে যাওয়ার। শেষাবধি সেটা একটা ইউনিভার্সাল এগজিস্টেনশিয়াল স্টেটমেন্ট হতেও পারে, নাও হতে পারে, তাতে কিছু এসে যায় না। কিন্তু ঈশ্বরবালাদের জার্নিটা এর ঠিক উল্টোদিক থেকে।

    তো, এখনো অবধি যেহেতু আইনস্টাইন অভ্রান্ত, (কারণ পরীক্ষা মারফত ) সেজন্য বলা যায় যে ইউনিভার্সের ল গুলি সমস্ত অবজার্ভারের কাছে একই। ইন দ্যাট কেস জলের সেমান্টিক্স নিয়ে বিজ্ঞান মাথা ঘামাবে না।
  • ঈশান | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:২৪723298
  • টি যথারীতি স্টেপজাম্প করেছে। একে তো Date:20 Sep 2016 -- 12:09 AM এইটার উত্তর দেয়নি। তদুপরি, আগেভাগেই মহাকর্ষে ঢুকে পড়েছে। মহাকর্ষ নিয়ে সেই লিখেছিলাম তিনদিন আগে। এই দানে কী লিখি তার জন্য অপেক্ষা করো আগে। আর্গুমেন্ট না পড়েই খন্ডন করাটা কোন ধরণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি রে ভাই।

    পুঃ সার্কুলার রিজনিং কিন্তু বলা হয়নি কোথাও, আর্গুমেন্টও না। স্টেটমেন্ট বলা হয়েছে।
  • T | 165.69.191.255 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৪৫723299
  • ঈশ্বর পরিবর্তনীয় না অপরিবর্তনীয় না কিচ্ছু যায় আসে না, প্রথমে এই নিয়ে পপার কোথাও কিছু লিখেছেন কিনা খুঁজে দেখি, তবে তো বলব। তো, সেটা তুমি নিজেও খুঁজে নিতে পারো। মানে পপার নিজেই কোথাও ঈশ্বরের 'পপারীয় ধারণা' সম্পর্কে কিছু বলেছেন কি না। আমার উপর ছাড়লে সময় লাগবে।

    তোমার মহাকর্ষ আর্গুমেন্ট পড়েই তো বললাম। স্টেপজাম্প আবার কোথায় করলাম।
  • dc | 132.174.114.159 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৪৮723300
  • ঈশানের 11:28 PM পোস্ট পড়লাম। আরো লিখুন, তার পর রিপ্লাই দেওয়া যাবে।

    তবে এখানটা অসুবিধে মনে হলোঃ ""ঈশ্বর" নামক শব্দটা বাদ দিয়ে সবটাই পরিবর্তনশীল। একমাত্র যা ধ্রুব তা হল "ঈশ্বর" নামক শব্দ বা বর্গটা"

    যা বুঝেছি, আপনি একটা শব্দ নিয়েছেন, "ঈশ্বর", আর তার দুরকম প্রচলিত সংজ্ঞা দিয়েছেন। যদিও নিজেই লিখেছেন যে দ্বিতীয়টা সংজ্ঞা নয়, প্রপার্টির বর্ণনা (আর সেটা ঠিক লিখেছেন)। তাহল দেখলাম, একটা শব্দ "ঈশ্বর" আর তার একটা সংজ্ঞা। ঠিক আছে।

    কিন্তু তারপরে লিখলেন এই সংজ্ঞাও পাল্টাতে পারে। তো যে শব্দের সংজ্ঞা পাল্টাতে পারে সেই শব্দ কিভাবে অচঞ্চল থাকে? ধরুন আমি একটা শব্দ বানালাম, "জ্যাবারওয়াকি" (লুইস ক্যারলের কাছে ক্ষমা চেয়ে)। তারপর সেই শব্দটার একটা সংজ্ঞা দিলাম - "জ্যাবারওয়াকি পরম দয়ালু, সকালবেলা খায় শাঁকালু"। খানিক পর কয়েকজনের সাথে প্রবল তর্কের ফলে সেই সংজ্ঞা পাল্টে গেল - "জ্যাবারওয়াকি খুব হিংস্র, দুপুরে গোরু খায় অজস্র"! তো সংজ্ঞাই যদি পাল্টে যায় তাহলে সেই শব্দটাও তো পাল্টে গেল (কারন শব্দটা অ্যাবস্ট্রাক্ট কিছু নয়, শব্দটার একটা স্পেসিফিক মিনিং আছে)। তখন আমরা "জ্যাবারওয়াকি"র বদলে "গোরুচোর" ব্যবহার করতে পারি। মিনিং পাল্টে যাচ্ছে অথচ শব্দটা একই থাকছে, এটা পরষ্পরবিরোধী মনে হচ্ছে। আর যদি বলতে চান যে নানারকম মিনিংকে একই শব্দর সাথে জুড়ে দেব তাহলে কিন্তু আপনার আর্গুমেন্টের এই অংশটা ট্রিভিয়াল হয়ে যায়।
  • dc | 132.174.114.159 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৫৫723301
  • ১। "ঈশ্বর" নামক শব্দটা বাদ দিয়ে সবটাই পরিবর্তনশীল।

    ২। যিনি বলেন, ইউনিকর্ন আছে, বা যিনি বলেন নেই, তাঁদের কাছে কোনটা অচঞ্চল? না "ইউনিকর্ন" বর্গটা।

    ওপরের দুটো স্টেটমেন্টই আরো বুঝিয়ে বললে ভালো হয়। একটা শব্দর সাথে প্রথমে একটা সংজ্ঞা জুরলেন, তারপর সেই সংজ্ঞা পাল্টে দিলেন, তারপর বললেন সংজ্ঞা পাল্টে গেল কিন্তু শব্দটা অচঞ্চল থাকল। এখানে ভুল হচ্ছে মনে হচ্ছে।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৪:২০723304
  • স্বর্ণেন্দুবাবুর পরিষ্কার ও প্রাঞ্জল প্রশ্নের জন্য কুর্নিশ। উনি যে-প্রশ্নগুলো উত্থাপন করেছেন, তা দর্শনের একেবারে গোড়ার কথা, আঁতের কথা, এবং সেইহেতু, প্রশ্নগুলি, দর্শনের এতাবৎকালের যাবতীয় অর্জনকেই খতিয়ে দেখতে প্রণোদিত করে। আমি এক আনাড়ি দর্শনজিজ্ঞাসু পাঠকমাত্র, দর্শনশাস্ত্রে কোনো প্রথাগত শিক্ষা আমার নেই। এমনকী, আমার এই আনাড়ি পাঠও যথেষ্ট খন্ডিত ও আংশিক। ফলে, স্বর্ণেন্দুবাবুর গূঢ় প্রশ্নগুলির প্রতি কতখানি সুবিচার করা সম্ভব, আমার পক্ষে, তা নিয়ে নিজের মনেই যথেষ্ট সংশয় ও দ্বিধা রয়েছে। তবুও, চেষ্টা করে দেখা যাক। এবং, এই চেষ্টাটি এক ঢিলে দুই পাখি মারার প্রয়াস, কেননা এর মাধ্যমেই, ঈশানবাবুর প্রশ্ন বা ব্যাখ্যার টীকাভাষ্য দেওয়ার প্রযত্নও পরিলক্ষিত হবে।

    উত্তর দেওয়ার আগে, শিবের গীত গাওয়ার মত বা গৌরচন্দ্রিকার ঢঙে, বিংশ শতকের শুরুতে পাশ্চাত্যদর্শনের, বিশেষ করে তার ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যা-নামক শাখাটির, একটি বিশেষ বিবর্তনের দিকে ফিরে দেখা যাক। এই বিশেষ বিবর্তনটির নাম অ্যানালিটিকাল ফিলজফি, যা অনুপ্রাণিত হয়েছিল এর আগের শতাব্দীগুলিতে বিজ্ঞানের, অর্থাৎ পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যার, অভূতপূর্ব অগ্রগতির দ্বারা। কয়েকজন দার্শনিক ভাবতে শুরু করেছিলেন, বিজ্ঞান যে-ভাবে আমাদের জগতকে সূত্রবদ্ধ করতে পারে, যেভাবে আশ্চর্য অনায়াসে ব্যাখ্যা করতে পারে জাগতিক ঘটনাসমূহ (এমনকী, তা আপাতদৃষ্টিতে আমাদের সাধারণবুদ্ধির পরিপন্থী হলেও অন্তিমবিচারে "সত্য" বলে প্রমাণিত হয়), তার মূল রহস্যটা কী? যুক্তিপরম্পরার মাধ্যামে আমরা কীভাবে এই জগৎকে বুঝতে পারি, ও প্রকাশ করতে পারি? সেই যৌক্তিক কাঠামোটিকে সূত্রাকারে প্রকাশ করা কি সম্ভব, যাতে করে মানুষের জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াটাকে একেবারে চূড়ান্তভাবে ব্যাখ্যা করে ফেলা যায়? এবং এই ব্যাখ্যার সুবাদেই আমাদের অর্জিত জ্ঞানের প্রকৃত চরিত্রটিও দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে ওঠে? এই ধরণের ভাবনাচিন্তা থেকেই অ্যানালিটিকাল ফিলজফির জন্ম, এবং তার জন্মদাতা প্রখ্যাত দার্শনিক, নৈয়ায়িক ও গণিতজ্ঞ গটলব ফ্রেগে। ফ্রেগে দেখাতে চেয়েছিলেন, সমগ্র গণিতকে লজিকের মাধ্যমে ডিরাইভ করা সম্ভব। অর্থাৎ, গণিত আসলে লজিকের সম্প্রসারণ ছাড়া কিছু নয়। এর জন্য তাঁকে ঢেলে সাজাতে হয় লজিকের ভাষা, কেননা আরিস্ততলের সময়কাল থেকে চলে আসা, কেবল উদ্দেশ্য-বিধেয় দ্বারা নির্মিত বাক্যসমষ্টি, গাণিতিক সত্যকে যুক্তির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না। ফ্রেগের তত্ত্ব নিয়ে বিশদ আলোচনায় যাব না (তার একটা কারণ অবশ্যই আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা), শুধু এটুকুই বলা যাক যে তাঁর চিন্তা পরবর্তীকালের প্রায় প্রত্যেক যুক্তিবাদী দার্শনিককে ভাবিয়েছে, পীয়ানো, রাসেল, হ্বিটগেনস্টাইন থেকে শুরু করে টারস্কি, গোডেল পর্যন্ত। এঁদের সবাইকেই যেটা ভাবিত করেছিল, তা হল ভাষা, যুক্তি ও জ্ঞানের আন্তঃসম্পর্ক। প্রসঙ্গত উল্লেখ থাক যে, ভিয়েনা স্কুলের দার্শনিকরা--কারনাপ, হান, নিউরাথ বা পপার--যুগপৎ ফ্রেগে ও হ্বিটগেনস্টাইনের তত্ত্ব দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

    এবার প্রাসঙ্গিক কথা (আগের শিবের গীতটুকু যে পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক ছিল না, আশা করি, পাঠক তা অনতিবিলম্বেই বুঝতে পারবেন)। আমাদের প্রাথমিক প্রস্থানভূমিটিকে, বা বলা ভাল, অ্যানালিটিকাল ফিলজফির প্রস্থানভূমিটিকে, প্রথমে আমরা কয়েকটি প্রশ্ন ও তার উত্তরের আকারে বিন্যস্ত করি। এগুলো হল আমাদের প্রাথমিক প্রেমাইস।

    ১) প্রশ্নঃ আমাদের জ্ঞানের বিষয় কী? উত্তরঃ বাহ্যবিশ্ব ও তার অন্তর্গত সকল বস্তু (এখানে, বস্তু বা অবজেক্ট মানে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জড়বস্তু শুধু নয়, বিমূর্ত অস্তিত্বও)। এই আমাদের অন্টোলজি।

    ২) প্রশ্নঃ এই জ্ঞান কীভাবে পাব? উত্তরঃ আমাদের চিন্তার (থট) যৌক্তিক কাঠামোর (লজিক) মাধ্যমে, যথাযথ বিন্যাসে।

    ৩) প্রশ্নঃ আমাদের চিন্তার ও যুক্তির বাহন কী? বা এই জ্ঞান কীভাবে প্রকাশ করা সম্ভব? উত্তরঃ ভাষার মাধ্যমে।

    অর্থাৎ, জগৎ, চিন্তা/যুক্তি এবং ভাষা একসঙ্গে আমাদের জ্ঞানের মধ্যে জড়ামড়ি করে আছে। ভেবে দেখুন, ভাষা কী আশ্চর্য এক জিনিশ যে তাকে ছাড়া আমাদের পক্ষে কোন চিন্তাভাবনা করাই সম্ভব নয়, এবং তাকে ছাড়া এই জগৎ সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট জ্ঞানের প্রস্তাবনাও অসম্ভব!

    এখন, ভাষার একটা নির্দিষ্ট কাঠামো আছে। ভাষাকে ভাঙলে আমরা পাই বাক্য, এবং বাক্যকে বিশ্লেষিত করলে পাই শব্দ। কিন্তু এই শব্দগুলি একটি নির্দিষ্ট সজ্জাক্রম না মানলে, সেই শব্দরাশি দ্বারা প্রকাশিত বাক্য, বাহ্যজগতের সাপেক্ষে, অর্থময় হয় না। ধরুন আমি বললাম, "আমার রুমালটি নীল"। এখন এই কথাটি অর্থপূর্ণ, যদিও সত্য কি না তা বলা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি পকেট থেকে রুমালটা বের করে দেখাচ্ছি যে তা সত্যিই নীল। আবার, আমার রুমালটি যদি আসলে লালরঙের হয়, তাহলেও আমার বক্তব্যের অর্থ নষ্ট হয় না (কেননা রঙ একটি ধর্ম, যা স্বভাবতই রুমালের রয়েছে), যদিও বক্তব্যটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কিন্তু আমি যদি বলি, "আমার রুমালটি অন্ধকার", তাহলে তা আর অর্থপূর্ণ থাকে না। কেননা রুমালের সাপেক্ষে "অন্ধকার" শব্দটি প্রযোজ্য নয়।

    এবার, কয়েকটি বাক্যকে এইভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা যাক।

    ক) পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার।
    খ) The whole is greater than the part.
    গ) আমার খুব আনন্দ হচ্ছে।
    ঘ) এটি একটি ত্রিভূজাকৃতি বৃত্ত।

    প্রথম বাক্যটি অর্থপূর্ণ এবং বাহ্যজগতের সাপেক্ষে সত্য। আবার আমি যদি বলতাম, "পৃথিবীর কক্ষপথ বৃত্তাকার", তাহলেও কথাটি অর্থপূর্ণ হত, কিন্তু সত্য হত না। জ্যামিতিক ধর্ম অনুযায়ী কক্ষপথের একটি দ্বিমাত্রিক আকার থাকবে এবং বৃত্ত বা উপবৃত্ত একটি নির্দিষ্ট জ্যামিতিক আকার ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু পৃথিবীর ক্ষেত্রে তার কক্ষপথটির আকার উপবৃত্তাকার। পৃথিবী ও কক্ষপথ এই দুটি যদি নির্দিষ্ট অবজেক্ট হয়, তাহলে এদের দুজনের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে কক্ষপথটির চরিত্র হয়ে দাঁড়াচ্ছে উপবৃত্তাকার। অর্থাৎ, অর্থপূর্ণ (sensible) বাক্য দু'প্রকার--যা বাহ্যজগতের সাপেক্ষে "হয়", আর যা "হয় না" (হ্বিটগেনস্টাইনের কথায় case আর not the case )।

    দ্বিতীয় বাক্যটি ইউক্লিডের কমন নোশান। এই বাক্যটি তার সামগ্রিকতায় সেইভাবে অর্থপূর্ণ নয় (কীভাবে জানব সমগ্র কী, অংশ কী) কিন্তু সাধারণ বুদ্ধিতে জানি যে তা সত্য (কেননা যেকোন একটা বস্তু, ধরুন একটা চেয়ার, নিয়ে যদি তাকে ভাঙি, তাহলে দেখব যে তার পায়াগুলি গোটা চেয়ারের তুলনায় আয়তনে ছোট)। এই ধরণের কিছু লজিকাল বাক্য স্বীকার না করলে আমরা জগৎ সম্পর্কে ধারণা করতে পারি না। জ্যামিতি ও গণিতের অধিকাংশ সিদ্ধান্তই এই ধরণের বাক্যের সমাহার। এইধরণের বাক্যকে আমরা বলব, অর্থনিরপেক্ষ (senseless)।

    তৃতীয় বাক্যটি একটি সলিপসিজম। একমাত্র আমিই জানি যে তা সত্য। আমার বাইরে আর কারোর এ-বিষয়ে নিঃসন্দিগ্ধ হওয়া সম্ভব নয়।

    চতুর্থ বাক্যটি অসম্ভব বাক্য। ত্রিভূজ আর বৃত্ত এই দুটি জ্যামিতিক আকারের ধারণা আমাদের পরিষ্কার বলে দিচ্ছে এই বাক্যটি গোলমেলে, এই বাক্যটি অসম্ভব।

    এই দুটি বাক্যই, হ্বিটগেনস্টাইনের কথামত, অর্থহীন বা nonsense।

    অর্থাৎ, আমরা দেখছি, ভাষার মধ্যে অজস্র সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে, অজস্র স্টেটমেন্টের বা প্রপোজিশনের সম্ভাবনা। এর মধ্যে কিছু প্রপোজিশন বাহ্যজগত সম্পর্কে আমাদের ব্যক্তিনিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে। কিছু প্রপোজিশন কেবলমাত্র যৌক্তিক স্বতঃসিদ্ধমাত্র, যেগুলো না মানলে আমাদের জ্ঞান আহরণের পথটাই বন্ধ হয়ে যায়। আবার কিছু বাক্য কেবলমাত্র আমার ক্ষেত্রে সত্য, বাকিদের কাছে তার কোনো সত্যতা বা অর্থ নেই। আর সবশেষে, কিছু বাক্য যা কোনোমতেই সম্ভব নয়, অর্থাৎ বাহ্যজগত সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে তার কোনো ভূমিকাই নেই।

    এবার, জগতকে যদি একটি বৃত্ত হিসেবে কল্পনা করি, তাহলে সেই বৃত্তের পরিধির মধ্যে যা কিছু আছে, তা সেইসব সেন্সিবল বাক্যসমূহের সমাহার যা বাস্তবিকভাবে "হয়"। আর এইসব সেন্সিবল বাক্যসমূহের সামগ্রিকতা নির্ধারণ করে দেয় সেইসব সেন্সিবল বাক্যসমূহ যা "হয় না"। বৃত্তের পরিধিতে রয়েছে লজিকাল স্বতঃসিদ্ধগুলি। গণিত ও লজিকের প্রপোজিশনগুলি এইখানে অবস্থিত। আর পরিধির বাইরে রয়েছি আমি (বিষয়ী/সাবজেক্ট) যে জ্ঞান আহরণ করছে। কেবলমাত্র আমার ক্ষেত্রেই সত্য এমন বাক্যসমূহ, অতএব বাহ্যজগতের অংশ নয়। ঠিক একইভাবে, পূর্ণত অসম্ভব বাক্যগুলিও বাহ্যজগতের অংশ নয়, এবং তারা এই বৃত্তের বাইরে, অর্থাৎ, জ্ঞানের সীমার বাইরে।

    এই হল, অ্যানালিটিকাল ফিলজফির সাপেক্ষে জগৎ ও জ্ঞানের স্বরূপ। এই দর্শনের বিচারে, অতএব, মেটাফিজিকাল বাক্যসমূহ ("ঈশ্বর জগতের স্রষ্টা"), বা নান্দনিক অভিব্যক্তিসমূহ ("উটের গ্রীবার মত নিস্তব্ধতা") বাস্তবজগতের বাইরের বিষয় (ঈশ্বর জগৎস্রষ্টা হলে, স্বাভাবিকভাবেই তিনি সৃষ্টির অংশ নন, অতএব বাহ্যজগতের মধ্যে তাঁর কোনো স্থান নেই) এবং বাহ্যজগত সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের সহায়ক নয়। এই প্রস্থানভূমি থেকেই কারনাপের ভেরিফায়েবিলিটি বা পপারের ফলসিফায়েবিলিটির উদ্ভব। এবং পপার-প্রস্তাবিত বেসিক স্টেটমেন্ট (যাকে আমি বৈজ্ঞানিক বাক্য বলে অ্যাপ্রক্সিমেট করেছি) এইধরণের প্রপোজিশনের একটি বিশেষ বর্গ ছাড়া কিছু নয়।

    এই দৃষ্টিভঙ্গীর স্বপক্ষে বা বিপক্ষে নানান যুক্তিতর্ক রয়েছে, এবং, আবারও বলি, সেসব বিচার করে একটা কোনো স্থিরসিদ্ধান্তে আসা, আমার মত মূঢ়ের পক্ষে ধৃষ্টতা। আমি শুধু অবস্থানটা খোলসা করলাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন