এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বিজ্ঞান এবং

    T
    অন্যান্য | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৬২৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:০১723205
  • মহাকর্ষ নিয়ে কথাবার্তা একেবারেই মাথার ওপর দিয়ে গেল। মজার কথা, পপার যখন তাঁর ডিমার্কেশন তত্ত্বের প্রস্তাবনা করেন, তখন তিনি যা বলতে চেয়েছিলেন, তা আসলে বিজ্ঞানের বেকনীয়-নিউটনীয় ব্যাখ্যার ঠিক উলটো। বেকন বা নিউটনের বক্তব্য ছিল, বিজ্ঞানের প্রাথমিক প্রস্থানভূমি হল "বিশুদ্ধ" পর্যবেক্ষণ। অর্থাৎ, বৈজ্ঞানিক প্রথমে এক বা একাধিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন (যখন তাঁর মাথায় কোন নির্দিষ্ট তত্ত্বের ভ্রূণটুকুও অনুপস্থিত)। অতঃপর, সেই পর্যবেক্ষণগুলিকে ব্যাখ্যা করার তাগিদে একটি তত্ত্বের প্রস্তাবনা করেন ও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসেন। অর্থাৎ, বিজ্ঞানের মূল হাতিয়ার ইন্ডাকটিভ রিজনিং। পপার বলেন, এই ধারণাটাই ভুল। বিজ্ঞান বিশুদ্ধ ইন্ডাকটিভ রিজনিং দিয়ে হয় না। এবং "বিশুদ্ধ" পর্যবেক্ষণ সোনার পাথরবাটির মতই অলীক। কেননা, সিদ্ধান্ত (বা, তার জায়মান ভ্রূণ) এবং তার সত্যতা প্রতিপাদনের জন্য জরুরি পর্যবেক্ষণ হাত-ধরাধরি করে চলে। অর্থাৎ, যেকোন পর্যবেক্ষণ আসলে তত্ত্ব-দ্বারা অনুপ্রাণিত। আইনস্টাইন যখন জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটির প্রস্তাবনা করেন, তখন স্পেস-টাইম কার্ভেচারের কোনো প্রত্যক্ষ, পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অথচ, স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটির অসম্পূর্ণতা দূর করার জন্যে (অর্থাৎ, মহাকর্ষকে রিলেটিভিটির আওতায় আনার জন্যে) আইনস্টাইনের মনে হয়েছিল একটি পূর্ণাঙ্গতর তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সূর্যের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে, কোয়াসার থেকে আসা আলো বেঁকে যায় কি না, সেটা পর্যবেক্ষণের কথা কারোর মাথাতেও আসত না, যদি না আইনস্টাইনের তত্ত্বটির সত্যতা প্রতিপাদনের প্রয়োজনীয়তা থাকত। এমনকি, যদিও অনেকে মনে করেন, স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটি সরাসরি মাইকেলসন-মর্লির ব্যর্থ পরীক্ষার দ্বারা অনুপ্রাণিত, আইনস্টাইন নিজে কিন্তু বলেছিলেন, ঈথারের উপস্থিতি আলোর আপেক্ষিক গতির বিষয়ে তাঁর সন্দেহ জেগেছিল ম্যাক্সওয়েলের তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের সমীকরণটি নিয়ে ভাবতে গিয়ে--"If I pursue a beam of light with the velocity c I should observe such a beam of light as a spatially oscillatory electromagnetic field at rest. However, there seems to be no such thing, whether on the basis of experience or according to [the theory of electricity and magnetism]. From the very beginning it appeared to me intuitively clear that, judged from the standpoint of such an observer, everything would have to happen according to the same laws as for an observer who, relative to the earth, was at rest. For how, otherwise, should the first observer know, i.e.. be able to determine, that he is in a state of uniform motion?" আইনস্টাইন নিজেও বিশ্বাস করতেন, বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের শুরুয়াত হয় একটি "ইনটুইটিভ" প্রক্রিয়ায়। যেখানে তত্ত্ব, সম্ভাব্য ব্যাখ্যা, অতীত পর্যবেক্ষণ সব হাত-ধরাধরি করে থাকে।

    পপারের মতে, বিজ্ঞানের যাত্রার সূচনাবিন্দু হল একটি সমস্যার সমাধানের প্রয়াস (প্রবলেম সলভিং)। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বৈজ্ঞানিক একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রস্তাবনা করেন। এই প্রস্তাবনাটিকে আমরা "বেসিক স্টেটমেন্ট" বলতে পারি এবং ধরা যাক, এই "বেসিক স্টেটমেন্ট"টি এক বা একাধিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এখন, এই বেসিক স্টেটমেন্টটি, দুনিয়ার সমস্ত বেসিক স্টেটমেন্টকে দু-ভাগে ভাগ করে--ক) একদল বেসিক স্টেটমেন্ট যা আমাদের প্রস্তাবিত বেসিক স্টেটমেন্টের সাপেক্ষে "ইনকনসিস্টেন্ট" অথবা যাকে আমাদের "বেসিক স্টেটমেন্টটি" নিষিদ্ধ বা অসম্ভাব্য বলে ঘোষণা করে--এগুলো হল আমাদের প্রস্তাবিত তত্ত্বের সম্ভাব্য ফলসিফায়ার (কেননা, এগুলোর একটা বা একাধিক সত্যি হলে, আমাদের তত্ত্বটি মিথ্যা প্রতিপন্ন হবে), খ) আরেকদল বেসিক স্টেটমেন্ট যা আমাদের তত্ত্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, বা যেগুলি আমাদের তত্ত্বের সাপেক্ষে সম্ভবপর (অর্থাৎ, যে স্টেটমেন্টগুলি সত্য হলে, আমাদের তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠিত হবে)।

    পপারের মতে, যেসব তত্ত্বের ক্ষেত্রে, বেসিক স্টেটমেন্টের এই দুটি সেট শূন্য নয়, অর্থাৎ, যে-তত্ত্বের সাপেক্ষে (ক) এবং (খ) এই দুই-ধরণের বেসিক স্টেটমেন্টেরই অস্তিত্ব রয়েছে, তা বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব। যেমন, পদার্থবিদ্যা বা রসায়ন। আবার, যে-তত্ত্বের সাপেক্ষে (খ)-গোত্রের বেসিক স্টেটমেন্ট রয়েছে, কিন্তু (ক)-গোত্রের স্টেটমেন্ট নেই, অর্থাৎ যা, তাদের বর্তমান আকারে, ফলসিফায়েবল নয় অথচ ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজনীয় জ্ঞানের যোগান দেয়, তা প্রাক-বৈজ্ঞানিক (প্রি-সায়েন্স)। যেমন, সাইকো-অ্যানালিসিস। এবং, যে-তত্ত্বের ক্ষেত্রে (ক) এবং (খ) কোনো গোত্রেরই বেসিক স্টেটমেন্টের উপস্থিতি নেই, বা, যার সাপেক্ষে এই দুই ধরণের নির্দিষ্ট বিভাজন সম্ভবই নয়, তারা ছদ্ম-বিজ্ঞান (সিউডো-সায়েন্স)। যেমন, জ্যোতিষ বা ফ্রেনোলজি।
  • ranjan roy | 132.176.179.18 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৪:১৬723206
  • ব্রাভো! শৌভ, ব্রাভো!
    আমার মত বিশুদ্ধ আর্টসের ছাত্তরও বেশ বুঝতে পেরেছে। পপার এখন আর তত পপার চ, মমার চ,--লাগছে না।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৫:০৩723207
  • আরেকটা জিনিশ একটু ব্যখ্যা করা দরকার। থিওরি আর পর্যবেক্ষণ হাত-ধরাধরি করে চলে--এর আসল মানেটা কী? পপারের মতে, বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ কোনো নিশ্চেষ্ট (প্যাসিভ) প্রক্রিয়া নয়। বেসিক স্টেটমেন্ট আসলে নিষ্ক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষিত ঘটনার বর্ণনামাত্র নয়। বরং, বেসিক স্টেটমেন্ট হল, একটি নির্দিষ্ট তত্ত্ব-কাঠামোর সাপেক্ষে বিজ্ঞা্নী-কর্তৃক প্রস্তাবিত বাহ্যিক ঘটনার ব্যাখ্যান বা স্পষ্টীকরণ। অর্থাৎ, বৈজ্ঞানিক কোনো একটি বা একাধিক বাহ্যিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন সেইমুহূর্তে প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য তাত্ত্বিক কাঠামোর সাপেক্ষে (অর্থাৎ প্রচলিত তত্ত্বগুলির ফলসিফায়ার বা করোবরেটর হিসেবে)। যদি তা করোবরেটর হয় তো মিটেই গেল। আর যদি ফলসিফায়ার হয়, তাহলে পুরোন তত্ত্বকে বাতিল করে নতুন তত্ত্বের প্রস্তাবনা প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। অর্থাৎ, বেসিক স্টেটমেন্টের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের কার্যকারণ সম্পর্ক থাকলেও, বেসিক স্টেটমেন্ট যে কেবল প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের ওপরেই নির্ভরশীল বা তদ্দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এমন নয়। অর্থাৎ তা ইন্ডাকটিভ নয়। স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া থেকে উদ্ধৃত করি--"He accordingly asserts that basic statements themselves are open-ended hypotheses: they have a certain causal relationship with experience, but they are not determined by experience, and they cannot be verified or confirmed by experience."

    এখানে একটা সমস্যা রয়েছে। ধরা যাক, আমি প্রস্তাব করলুম থিওরি X। এবার, B, C, D এই বেসিক স্টেটমেন্টগুলি হল তার সম্ভাব্য ফলসিফায়ার। যদি থিওরি X সত্যিই টেস্টেবল (এবং, তজ্জন্য ফলসিফায়েবল) হয়, তাহলে B , C , D এই বেসিক স্টেটমেন্টগুলিকেও প্রকৃতপ্রস্তাবেই সত্য বা মিথ্যা হতে হবে (সেক্ষেত্রে এগুলি আর সম্ভাব্য ফলসিফায়ার থাকবে না, বরং বাস্তবিকই ফলসিফায়ার হয়ে উঠবে)। কিন্তু, এই বেসিক স্টেটমেন্টগুলি সত্য না মিথ্যা তা জানব কী করে, যদি এরা পর্যবেক্ষণ বা অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণসাপেক্ষ না হয়? আর যদি এদের সত্যতা বা অসত্যতা সম্বন্ধে আমরা নিঃসন্দিগ্ধ হতে না-ই পারি, তাহলে এরা বাস্তবিকই ফলসিফায়ার কি না, তা-ই বা জানা যাবে কীভাবে? অর্থাৎ, পপারের বিরোধীরা বলেন, এখানে ইন্ডাকটিভ রিজনিং-কে এড়াতে গিয়ে পপার নিজেও একটি ইন্ডাকটিভ রিজনিং-এর ফাঁদে পা দিয়েছেন। এর উত্তরে, পপার তাঁর "লজিক অফ সায়েন্টিফিক ডিসকাভারি"-তে বলছেন, "basic statements are not justifiable by our immediate experiences, but are … accepted by an act, a free decision"। এই উত্তরের পক্ষে বিপক্ষে নানান মত রয়েছে।

    আরেকটা সমস্যা আছে পপারের তত্ত্বের। সেটা এই যে, পপারের মতে ফলসিফায়ার একেবারে চূড়ান্তভাবে একটি তত্ত্বের ভাগ্যনির্ধারণ করে। অর্থাৎ, একটা পর্যবেক্ষণ যদি প্রস্তাবিত তত্ত্বের বিরুদ্ধে যায়, তাহলেই তত্ত্বটি বাতিলযোগ্য। কিন্তু, বাস্তবে ব্যাপারটা ঠিক এমন হয় না। ধরা যাক, বিজ্ঞানীরা যখন সূর্যের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে কোয়াসার থেকে আগত রশ্মির গতিপথ নিরূপণ করছিলেন, তখন তাঁদের পর্যবেক্ষণে কোনোরকম বিক্ষেপ ধরা পড়ল না। এটা কিন্তু নানান কারণে হতে পারে। হয়তো, সেইমুহূর্তে সৌরঝঞ্ঝার কারণে পর্যবেক্ষণে ভুলচুক হল। বা, কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পর্যবেক্ষণ সঠিক হল না। অর্থাৎ, করোবরেটর যেমন নিঃসন্দেহে একটি তত্ত্বের যাথার্থ্য প্রতিপাদন করে না, তেমনি, ফলসিফায়ারও একেবারে নিঃসন্দেহে একটি তত্ত্বকে বাতিল করতে পারে না। যখন একটি তত্ত্বের সাপেক্ষে পর্যবেক্ষণগত অসংগতির সংখ্যা একটা নির্দিষ্ট গ্রহণযোগ্য সীমা অতিক্রম করে, তখনই তত্ত্বের ব্যররথতা স্বীকৃত হয়। অথবা, একটি বিকল্প তত্ত্বের প্রস্তাবনা জরুরি হয়ে ওঠে।

    যদিও, এই ব্যাখ্যাটিকে ফলসিফায়েবিলিটির ব্যররথতা বলতে আমি নারাজ। কেননা, অ্যানোমালি বা অসংগতিকে ব্যাখ্যা করার জন্যে ওই তত্ত্বের যে মডিফিকেশন প্রয়োজন, তা কিন্তু, শেষ অবধি, পূর্বপ্রচলিত তত্ত্বটির ব্যররথতা না-হলেও, অসম্পূর্ণতাই নির্দেশ করে।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৫:২৬723208
  • নাম্বার থিওরির কথা যখন উঠেছে, তখন এ-কথাও বলা যাক যে, নাম্বার থিওরি পপারের ফলসিফায়েবিলিটির সবচে' বড় শত্তুর, এমনটাও পপারের সমালোচকরা বলে থাকেন। ২+২=৪, এটা তো কোনোভাবেই ফলসিফায়েবল নয়। মানে, এর সাপেক্ষে এমন কোন স্টেটমেন্টই নেই যাকে এর ফলসিফায়ার বলা সম্ভব। অথচ, ২+২=৪ যে সত্যি তাতে তো সন্দেহ নেই। এবং ২+২=৪ এর ওপরে ভিত্তি করেই (মানে, পাটিগণিতের যাথার্থ্যের ওপরে ভিত্তি করেই) দাঁড়িয়ে আছে বাহ্যিক জগত সম্বন্ধে আমাদের যাবতীয় প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। এইধরণের বিরোধিতার জবাবে পপার তাঁর "টু সেন্স থিওরি"-র প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ২+২=৪ এই স্টেটমেন্টের দু'টি রূপ রয়েছে। বিশুদ্ধ গণিতের বিচারে ২+২=৪ এই স্টেটমেন্টটি অকাট্য, যুক্তিগ্রাহ্য ও তর্কাতীতভাবে সত্য। কিন্তু, একে যখন বাহ্যিক জগতের অভিজ্ঞতার সাপেক্ষে বিচার করি, যখন বলি, "২টো আপেল + ২টো আপেল = ৪টে আপেল", তখন তা ফলসিফায়েবল।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৫:২৮723209
  • পাছে কুম্ভীলকবৃত্তির অভিযোগ ওঠে, তাই আগেভাগেই জানিয়ে দি', পপারের সমালোচনার বিষয়ে যা লিখেছি, তার অনেকটাই স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলজফি থেকে নেওয়া। আগ্রহীরা পুরোটা পড়ে দেখতে পারেন-- http://plato.stanford.edu/entries/popper/#CriEva
  • dc | 132.164.214.132 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:১৫723210
  • বাঃ শৌভর লেখাগুলো ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে পপারের ফলসিফিকেশান আর প্রচলিত এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্স যে প্রায় উল্টো পথেই চলে সেটা বেশ ভালো লিখেছেন। ইন ফ্যাক্ট পপার তাঁর প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন এটা দেখে যে সায়েন্টিস্টরা, বাই নেচার, পজিটিভ এভিডেন্সের ওপর বেশী গুরুত্ব দেয় নেগেটিভ এভিডেন্সের থেকে। কেউ যদি একটা হাইপোথিসিস খাড়া করে তাহলে সে সেই হাইপোথিসিসের স্বপক্ষে প্রমান যোগাড় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, একের পর এক স্বপক্ষে প্রামান বার করেই যেতে থাকে। এই প্রেক্ষিতেই পপার বলেছিলেন যে এক হাজার পজিটিভ এভিডেন্সের থেকে (যা কিনা ফলস ইনডাকশান প্রতিষ্ঠা করতে পারে) একটা নেগেটিভ এভিডেন্সও ভালো। সেখান থেকেই ফলসিফায়েবিলিটি।
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:৫৬723211
  • আপনারা এত পপার পড়েছেন, তবু এই সোজা জিনিসটা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে কেন বুঝছিনা। আরেকবার ভালো করে বলি।

    প্রথে মাথা থেকে নিউটন, আইনস্টাইন, মাইকেলসন-মর্লি, এইসব হাবিজাবি বার করে দিন। দুদন্ড চোখ বুজে বসুন। মনে করুন, আপনি এখন ১৬৬৭ সালে। কিছুদিন আগে দূরবীন আবিষ্কার হয়েছে, আর আপনি সদ্য জেনেছেন, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহরা সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে।

    এমতাবস্থায়, কল্পনা করুন, আমি, জনৈক হরিদাস বা কেসি পাল, সকালে এসে আপনাকে বললাম, 'পৃথিবী কেন সূর্যের চাদিকে ঘোরে জানেন? গিলিসুতোর কারণে'। আপনি হাঁ করে তাকিয়ে আছেন, তখন আমি বিশদে ব্যাখ্যা দিলামঃ 'মহাবিশ্বের প্রতিটি কণার সঙ্গে প্রতিটি কণা অদৃশ্য গুলিসুতো দিয়ে আটকানো আছে'। আপনি বললেন, 'তাতে কি?'। আমি বললাম, 'গুলিসুতোয় টেনশন নেই? তার জোরে পৃথ্বী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে।'

    এর জবাবে, আপনার প্রথম প্রশ্ন হওয়া উচিত, 'কোথায় গুলিসুতো? থাকলে তো ধরা যেত।' অর্থাৎ কিনা আপনি প্রমাণ চাইবেন, বা ফলসিফায়ার নির্মাণ করবেন (যেভাবে দেখবেন)। কিংবা আমার মতো কেসি পালকে ততটা গুরুত্ব না দিলে শুনেই খ্যা-খ্যা করে হাসবেন।

    কিন্তু, ধরা যাক, কোনো অজ্ঞাত কারণে, এর কোনোটাই আপনি করলেননা। খুব বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, 'গুলিসুতো? ক্কী আশ্চর্য, বুঝতেই পারিনি'। আমার ছোটোভাই তখন আপনাকে বলল, 'এই সেই গুলিসুতো, যা অদৃশ্য, যাকে ছোঁয়া যায়না, এবং এর টেনশনও অদ্ভুত। দুটো কণার ভরের গুণফলের সমানুপাতিক, এবং দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।' এবং তারপর হিসেব করে মিলিয়ে দিল, যে, এইরকম গুলিসুতো থাকলে সত্যই পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরবে। সে অঙ্কে কোনো ভুল নেই। এবং 'প্রতিটি কণা একে অপরের সঙ্গে গুলিসুতো দিয়ে আটকানো' এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা পেল।

    অ্যাবসার্ড লাগছে? লাগার কিছু নেই। এটা 'মহাকর্ষ'এরই গপ্পো। মহাকর্ষও এভাবেই এসেছে। আমি শুধু মহাকর্ষের জায়গায় 'গুলিসুতো' ব্যবহার করেছি। সেটা দিয়ে পুরোটা ভালো ব্যাখ্যা হয়।

    তো, ভালো করে ভেবে দেখুন। 'মহাকর্ষ' বা 'গুলিসুতো' কোনোটাই কিন্তু পূর্বানুমান নয়। তত্ত্বের অংশ এবং 'সত্য'। সেটা ধরে নিয়ে তারপর তার নানা ধর্ম নির্মিত হয়। নানা ইকুয়েশন তৈরি হয়। সেগুলো নিয়ে ডিবেট হয়। এসব ধর্মগুলি ফলসিফায়াবল। কিন্তু গুলিসুতো? সে সমস্ত প্রশ্নচিহ্নের ঊর্ধে। ফলসিফায়াবল না। অন্তত ধ্রুপদী পদার্থবিদ্যায় না।

    ধ্রুপদী পদার্থবিদ্যা ছেড়ে এলে এরপর নানা জিনিস ঘটবে। আমার নাতির নাতি শ দুই বছর পরে গুলিসুতোর নতুন ব্যাখ্যা দেবে। বলবে 'গুলিসুতো যে ছোঁয়া যায়না, তা নয়। খুব মোটা জিনিসের কাছে গুলিসুতো বেঁকে যেতে পারে।' কিংবা, 'গুলিসুতোর মধ্যে দিয়ে তরংগ তাৎক্ষণিকভাবে আসেনা। আসতে সময় লাগে'। আমরা একে বলব 'সাধাণ ও আপেক্ষিক গুলিসুতোতত্ত্ব।' এছাড়াও থাকবে কোয়ান্টাম গুলিসুতোতত্ত্ব। যা বলবে, 'গুলিসুতো কণা দিয়েও তৈরি হতে পারে, আবার একে তরঙ্গও বলা যেতে পারে'। এইভাবে অনেকদিন চলার পর, যদি দেখা যায় গুলিসুতো খুবই একটা কদাকার জিনিস হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তখন গুলিসুতোর জায়গায় অন্য কোনো প্যারাডাইম আসবে। পৃথিবী আর সূর্যের চারিদিকে গুলিসুতোর কারণে ঘুরবেনা। অন্য কোনো কারণ আসবে। কিন্তু তখনও অ্যাপ্রক্সিমেশনের কারণে সাধারণ কাজকম্মে গুলিসুতো তত্ত্বই ব্যবহৃত হয়ে চলবে। ইত্যাদি প্রভৃতি।

    এইটা বোঝা গেল কিনা আগে বলুন। তারপরে পরের পয়েন্ট।
  • dc | 132.164.214.132 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:২০723212
  • আমরা ছোটবেলায় একটা খেলা খেলতাম। আমি একটা বন্ধুকে জিগ্যেস করতাম, এটা কেন হয় বলতো? বন্ধুটা একটা উত্তর দিতো। আমি ওমনি জিগ্যেস করতাম, কেন? সে আরো কিছু বলতো। আবার আমি জিগ্যেস করতাম কেন? এরকম কয়েকবার কেন কেন জিগ্যেস করার পর বন্ধু হাত তুলে দিয়ে বলতো, জানিনা। আমিও চেপে ধরতাম, দেখেছিস, তুই এটাও জানিসনা, তুই তো দেখছি কিছুই জানিসনা! তো পরে "সায়েন্স" নিয়ে ডিবেটেও কয়েক জায়্গায় দেখেছি এরকম হতে। বৃষ্টি কেন হয়? কারন বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ে। আর্দ্রতা কেন বাড়ে? কারন সমুদ্রের থেকে জল ইভাপোরেট করে। কেন ইভাপোরেট করে? এই করতে করতে জলের মলিকিউলার স্ট্রাকচার ইত্যাদি পেরিয়ে, হাইড্রোজেন বন্ডিং ইত্যাদি পেরিয়ে একটা জায়গায় গিয়ে বলতে হয় এটা আমরা এখনো জানিনা। ব্যস প্রমান হয়ে গেল, এটাও জানা নেই, তাহলে তো সায়েন্স কিস্যু জানেনা, ওটা কোন কাজেরই না।

    ঈশান কি এইরকম কিছুর দিকে যাচ্ছেন? মানে আগে গ্র্যাভিটির মেকানিকাল এক্সপ্ল্যানেশান দেওয়ার চেষ্টা করা হতো, তার পর রিলেটিভিস্টিক এক্সপ্ল্যানেশান, তারপর কোয়ান্টাইজেশান (এলকিউজি) বা জিওমেট্রিক (স্ট্রিং) এক্সপ্ল্যানেশান, এই সব ছাড়িয়ে শেষ উত্তর গ্র্যাভিটি কি আমরা এখনো জানিনা, অর্থাত গ্র্যাভিটি আর ঈশ্বর এক। মানে এটা হলে অবশ্যই কোন তর্ক থাকেনা, কারন "সায়েন্স" এখনো প্রায় কিছুই জানেনা ঃ)
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:২৮723213
  • ধ্যার বাবা, আগে বেসিকটা বোঝো। আইনস্টাইনের এগজ্যাম্পলটা একারণেই যে, অঙ্কটা প্রমাণিত হলেও আইনস্টাইনের থিয়োরী 'সত্য' বলে বলা যাবে না। পপার এটাই বলেছিলেন, যে ভেরিফাই করা যায় না। মহাকর্ষকে গুলিসুতো বললেও সেটা কি বা সেটার 'সত্যতা' যাচাই করা যায় না। প্রশ্নটা 'কোথায় গুলিসুতো' নয়, 'বেশ গুলিসুতো আছে, এইবার ধরে নিয়ে আঁক কষে দেখাও যে গুলিসুতো থিয়োরী ফ্যাক্টকে এক্সপ্লেন করতে পারছে' এইরম হবে। সত্য দর্শনের জন্য ফলসিফায়ার নির্মাণ করা হয় না।

    সেদিন থেকে এইসবই গোলাচ্চ।
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:২৯723215
  • এখানে 'সত্য' মানে অ্যাবসোলিউট ট্রুথ, ঐ ডিসির এগজ্যাম্পল মাফিক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট অব এভরিথিং। ভাষা নিয়ে যেন পড়ো না আবার।
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৩৬723216
  • আমায় কিছু বোঝানোর আগে বাংলা বক্তব্যটা বোঝা গেছে কিনা জানানো হোক। পপার টপার পরে হবে। সমস্ত কিছুই ঠিক ইনস্ট্যান্ট কফি না। :-)
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৪০723217
  • হ্যাঁ সেই, সে নমুনা দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে। যাক গে, আমি কাটিয়ে দিলাম। ডিসি লেগে থাকুন।
  • dc | 132.164.214.132 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৪২723218
  • নানা সিরিয়াসলি, ঈশান আগে বাড়ুন।
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৪৪723219
  • হ্যাঁ, নমুনা তো আমিই দেখলাম। আমার আর্গুমেন্ট একই সঙ্গে ঠিক এবং ভুল, পপারের মতে। :-) লজিকাল আর্গুমেন্ট দিলে সেটা অন্তত রিজলভ করতে। এভাবে এক গাছ থেকে আরেক গাছে লম্ফ দিয়ে কী আর আর্গুমেন্ট হয়?
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৪৬723220
  • নিশ্চয়ই বাড়ব। তবে টেইম লাগবে। নানা জিনিসে ফেঁসে আছি একই সঙ্গে। :-)
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৪৭723221
  • হ্যাঁ হ্যাঁ, নিজেই নিজেকে সার্টিফিকেট দিয়ে যাও। কোনো অসুবিধে নেই তো।
  • avi | 125.187.34.170 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:০৮723222
  • dc ৯ঃ২০ পিএম এর অভিজ্ঞতা আমারও আছে। এই পযায়েই প্রশ্নগুলো আসতো। ঃ)
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:০৯723223
  • কোথায় আবার সার্টিফিকেট দিলাম? আমি একই সঙ্গে ঠিক আর ভুল কীকরে হলাম জানতে চেয়েছিলাম তো শুধু। জবাবে শুধু স্মার্ট স্মার্ট কথাবার্তা আসিতেছে। :-)
  • dc | 132.164.214.132 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:১৭723224
  • আচ্ছা আর নিজেদের মধ্যে তর্ক না করে ঈশান সময় নিয়ে পরের পোস্ট করে ফেলুন, তারপর দেখি রিপ্লাই দেওয়া যায় কিনা ঃ)
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:২৮723226
  • তুমি যে একই সঙ্গে ঠিক এবং ভুল সেটা তুমি নিজেই দাবী করেচ (সার্টিফিকেট)। ডিসি এক বলেছেন, তুমি আরেক বুঝেছ। সেরকমই আমি এক বলেছি তুমি আরেক বুঝেছ। তারপর নিজেই ভাবছ তুমি একই সাথে ঠিক এবং ভুল এবং সেটাও পপারের ভাবনাচিন্তা অনুসারে। :) কতরকম ভাবনা মাইরি।

    আমার যা মনে হয় লিখেছি। সে জবাব তোমার অগোছালো লেগেছে, তো কি করা যাবে। একই কথা বারবার বলা যাবে না, সবাইয়েরই কাজ আছে।

    আর আমি বা ডিসি এখানে টিম ফর্ম করে পপারের জয়পতাকা বইছি না যে 'নিজেদের মধ্যে আগে ঠিক করুন' জাতীয় আয়েশি কথাবার্তা চালাবে। তোমার কিছু বলার থাকলে নিজেই থিয়োরী নামাও না, কে আর স্মার্ট কথাবার্তা বলে বাধা দেবে।

    শৌভর লেখায় কয়েকটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার আছে, সে নিয়ে পরে সময় করে লিখব। আর কিসু না।
  • Rit | 213.110.242.20 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:২৯723227
  • গোটা টই পড়ার সময় নেই। আপাতত গুটি কয়েক অংক নিয়ে ব্যস্ত। তবে বিজ্ঞানের এই ফিলোজফিক্যাল ডিরেকশন টা ভয় লাগে।
    টামুতে থাকতে ল্যাবে এক পাকিস্তানি ছেলে ছিল। সে আমাকে একলা পেলেই ইন্দো পাক ইত্যাদি নিয়ে বক বক করতো। সে ঠিক আছে। একদিন হঠাৎ বলে, এই যে বিশাল ইউনিভার্স, জানতে ইচ্ছে করে না এটা কিকরে এলো? এতো নিখুঁত, ইত্যাদি। আমি বুঝলাম এবার কোনদিকে যাবে। আমি বললাম, নাহ, ইচ্ছে করে না। একটা পাতি ডাইনামিক প্রোগ্রামিং করতে পারলেই আমি খুশী। সহজ সহজ কাজ এখনও করা যায় না, আবার মহাবিশ্ব!!
    যাই হোক, অংকের লোকরা একটা জিনিসে বিশ্বাস করেন, সেটা হল লজিক। ট্রুথ বা হোল ট্রুথ বলে কিছু হয় না, যেটা হয়, সেটা হল অ্যাক্সিওম থেকে শুরু করে লজিক্যাল ডিডাকশন দিয়ে থিওরেমে পৌঁছনো। রাস্তায় পড়বে লেমা, আর থিওরেমের পর করোলারী। এই তো গল্প। এখন অ্যাক্সিওম ভুল হলে ফাইনাল রেজাল্ট গুলো ভুল, তবে লজিক্যাল ডিডাকশন টায় কোনও ভুল নেই, ওটাই মজা।
    বিজ্ঞান আর একটু জটিল, এখানে একটা রিয়েলিটির দিক আছে। কিন্তু আমরা ত্রিমাত্রিক বিশ্বে বসবাস করি, আমাদের পার্সেপশন খুবই লিমিটেড। সত্যের সন্ধান আমরা পাবো আশাও করি না। কিন্তু সত্যের সন্ধান না পেয়েও যদি প্লেন চলে, ওষুধে রোগ সারে অত গভীর সত্য জেনে হবেটাই কি?

    বিজ্ঞান ঠিক সত্যের সন্ধানই যে করছে তাও মনে হয় না। সে কারনেই এই ধর্ম ভার্সাস বিজ্ঞান বা সোশিওলজি ভার্সাস বিজ্ঞান ইত্যাদি ডিস্কোর্সগুলো দেখলে পালিয়ে যাই। বা কোনও বিজ্ঞানী যখন সত্য, ঈশ্বর ইত্যাদি বলতে শুরু করেন বেশ ভয় করে।
    টা টা।
  • শৌভ | 181.79.64.230 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৩০723228
  • পড়লুম উত্তর প্রত্যুত্তর গুলিসুতো ইত্যাদি। কাল আপিশ থেকে লিখব। :) শুধু একটাই কথা বলে যাই। সায়েন্টিফিক প্যারাডাইমের আলোচনায় গুলিসুতো-টুতোর মত উদ্ভটরসের আমদানি করলে বিষয়টা গুলিয়ে যাওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা, কেননা ন্যায়শাস্ত্রের (পপারও আদতে লজিশিয়ান) আলোচনায় প্রত্যেকটি শব্দ ও বাক্যের প্রভূত ওজন রয়েছে। একটু ইদিক-ওদিক হলেই ঘেঁটে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৩৪723229
  • প্রথম লাইনে 'আমার ও ডিসির কথা অনুযায়ী' আগে বসবে। আর পরে বসবে ফলে পপার ভুল। তাড়াহুড়ো আছে। কপি পেস্ট করে দেওয়া হ'ল,
    "আমার আর্গুমেন্ট একই সঙ্গে ঠিক এবং ভুল, পপারের মতে।"
  • Rit | 213.110.242.20 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৩৯723230
  • শৌভর দুটো লেখা বেশ ভালো লাগলো। বাকি কাল পড়ব। তুলে রাখি।
  • dc | 116.207.63.151 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৪৩723232
  • "ন্যায়শাস্ত্রের (পপারও আদতে লজিশিয়ান) আলোচনায় প্রত্যেকটি শব্দ ও বাক্যের প্রভূত ওজন রয়েছে। একটু ইদিক-ওদিক হলেই ঘেঁটে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।"

    অতি মূল্যবান কথা।
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৪৩723231
  • প্রচুর ওজোন টোজন দিয়েই তো লিখেছিলাম। কেউ না বোঝায় গুলিসুতো আনতে হল, কী করব? তবে ওটা একেবারেই উদ্ভট রস না। বাংলা ভাষায় ওটাকে বলে অ্যানালজি। :-)

    আর টি। আমি যে ডিসির কথা ঠিকই বুঝেছি, সেটা ডিসি সার্টিফাই করেছেন, আমি না। পড়ে দেখোনি, কী আর করা যাবে। ক্যাটেগরিকালি তিনটে প্রশ্নও করা হয়েছিল, উত্তর দাওনি। সেও আর কী করা যাবে। ইনস্ট্যান্ট কফিরই বাজার। :-)
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৫৩723233
  • টির সুবিধের জন্য একটা ছোটো সংকলন করে দিইঃ

    আমার পোস্ট
    --------------
    এইটা ভালো হয়েছে। ঃ-)

    টি লেখেছেঃ "অর্থাৎ পপার 'রহস্যময় ঈশ্বর' কে কোনোভাবেই এক্সক্লুড করেন নি।
    বরং ধরে রেখেছেন। উনি মহাকর্ষকে ঈশ্বর দিয়ে রিপ্লেস করার সুযোগ দিয়ে রেখেছেন।"

    আর ডিসি লিখেছেনঃ "ঈশ্বরের ইচ্ছা"র পরিমাপ করা যায় কিনা সেটা অন্য প্রসঙ্গ। কিন্তু মহাকর্ষ এখানে এক রহস্যময় বস্তু, যা কেবল এক লজিকাল কনস্ট্রাক্ট, অবিকল ঈশ্বরেরই মতো।"

    আপনার এই কনক্লুশানটা কেন ভুল মনে হয় বুঝতে পেরেছেন।"

    অর্থাৎ, পপারের মতে একই সঙ্গে আমি ভুল এবং ঠিক (পপার সেটা আগেই বুঝে ফেলেছিলেন)। আগে আপনারা দুজনে এটা ফয়সালা করুন।
    ------

    টির ব্যাখ্যাঃ
    -----------------
    ডিসি লিখেছেন,

    "আপনার এই কনক্লুশানটা কেন ভুল মনে হয় বুঝতে পেরেছেন। "সায়েন্স" এ ফিক্সেড লজিকাল কনস্ট্রাক্ট কিছু নেই। ক্রমাগত প্র্যালোচনা চলে।"

    এই যে তোমার বক্তব্যটা "ঈশ্বরের ইচ্ছা"র পরিমাপ করা যায় কিনা সেটা অন্য প্রসঙ্গ। কিন্তু মহাকর্ষ এখানে এক রহস্যময় বস্তু, যা কেবল এক লজিকাল কনস্ট্রাক্ট, অবিকল ঈশ্বরেরই মতো।" এর বিরুদ্ধে ডিসি বলতে চেয়েছেন ঈশ্বর, সেটি সায়েন্স, হলেও কেবলমাত্র কোনো ফিক্সড লজিক্যাল কন্সট্র্যাক্ট নয়, পরিবর্তনশীল। আমি যা বুঝলাম।

    -------
    আমার পরের পোস্টঃ
    -----------
    এবার টি এর দ্বিতীয় দাবী। ডিসি বলতে চেয়েছেন, "এর বিরুদ্ধে ডিসি বলতে চেয়েছেন ঈশ্বর, সেটি সায়েন্স, হলেও কেবলমাত্র কোনো ফিক্সড লজিক্যাল কন্সট্র্যাক্ট নয়, পরিবর্তনশীল।" আমার বুদ্ধি বলে, আপনি ঈশ্বরের ধারণাকে কোনোভাবেই সায়েন্স বলতে চাননি। বরং সায়েন্সের যেকোনো ধারণা, ঈশ্বরের মতো কোনো ফিক্সড লজিকাল কনস্ট্রাক্ট নয়, সেই জন্য আমার "মহকর্ষ অবিকল ঈশ্বরের মতো" বাক্যটি "ভুল" এটাই বলতে চেয়েছেন। কনফার্ম করুন।

    -----
    ডিসির উত্তরঃ
    ---------
    "মহাকর্ষ ও ঈশ্বরের ধারণা অবিকল এক" - আমি এটার উল্টোটা বলছি। মহাকর্ষ আর ঈশ্বরের ধারনা আলাদা।

    -----

    এর থেকে বঙ্গভাষায় কী বোঝা যায়?
  • dc | 116.207.63.151 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৫৫723234
  • "কিন্তু সত্যের সন্ধান না পেয়েও যদি প্লেন চলে, ওষুধে রোগ সারে অত গভীর সত্য জেনে হবেটাই কি?"

    এখানে কিন্তু একমত হলাম না। সত্য বলে কিছু হয় কিনা জানিনা, কিন্তু গভীর থেকে গভীরতর নলেজ সংগ্রহ না করলে কিন্তু আমরা এক জায়গায় আটকে যাবো। রিলেটিভিটি না জানলে আজকের জিপিএস তৈরি হতো না, তাহলে প্লেন চালাতেও অসুবিধে হতো। আসল কথা হলো আমাদের বডি অফ নলেজ ক্রমাগত রিফাইন করা আর বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া।
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:০৪723235
  • সেই লিখিয়েই ছাড়বে। শোনো,
    আমার মনে হয়েছিল (আন্ডারলাইন),

    তুমি যখন লিখছ মহাকর্ষ আর ঈশ্বরের ধারণা একই রকম, তো ডিসি (যেহেতু অলরেডী নানানরকম মহাকর্ষ থিয়োরী ভবিষ্যতে আসতেই পারেন ভাবেন) পালটা বলছেন যে একটা পরিবর্তনশীল ধারণা (মহাকর্ষ) আর একটা নির্দিষ্ট ধারণা (ঈশ্বর) এই দুটো আলাদা। যেটা পরে ডিসি কনফার্মও করেছেন। :)

    বঙ্গভাষায় লেখা হ'ল।
  • avi | 125.187.34.170 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:০৪723237
  • হ্যাঁ, ফ্যারাডেকে নাকি একজন বলেছিলেন যে ওনার মত এক পণ্ডিত মানুষের কতগুলো খেলনা বানিয়ে কী লাভ হল? তাতে নাকি উনি বলেছিলেন, একটু বেশি জানলাম, সেটাই তো লাভ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন