এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বিজ্ঞান এবং

    T
    অন্যান্য | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৬৩০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:০৮723238
  • শোনো বাপু
    ১। আমি তোমায় লিখিয়ে ছাড়িনি, লেখার জন্য সাধিনি। সকলেরই নানা কাজকম্মো আছে এবং তুমি সম্পূর্ণ স্বইচ্ছায় লিখছ।

    ২। "একটা পরিবর্তনশীল ধারণা (মহাকর্ষ) আর একটা নির্দিষ্ট ধারণা (ঈশ্বর) এই দুটো আলাদা" -- এটা অবশ্যই ডিসি বলেছেন। আর তুমি বলেছ "অর্থাৎ পপার 'রহস্যময় ঈশ্বর' কে কোনোভাবেই এক্সক্লুড করেন নি। বরং ধরে রেখেছেন। উনি মহাকর্ষকে ঈশ্বর দিয়ে রিপ্লেস করার সুযোগ দিয়ে রেখেছেন।"

    এই দুটো পরস্পরবিরোধী না? যদি না হয় তো তোমাকে তোমার কথাটার ব্যাখ্যা দিতে হবে তো। :-)
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২২723239
  • যা দেখছি এরপর লিখতে গেলে এপসাইলন আলফা বিটা দিয়ে লিখতে হবে।

    আমার বক্তব্য ছিল পপার রহস্যময় ঈশ্বরকে এক্সক্লুড করেনি নি, কারণ ঐ গুলিসুতো মাফিক মহাকর্ষকে 'ঈশ্বর' এই বাংলা শব্দটা দিয়ে রিপ্লেস করে দিলেও পপারের কিছু যায় আসছে না। ওঁর দাবী একটাই, ভবিষ্যতে ঐ 'মহাকর্ষ' অর্থাৎ 'গুলিসুতো' অর্থাৎ 'ঈশ্বর' থিয়োরীতে কমতি পড়লে 'মহাকর্ষ' বা 'গুলিসুতো' বা 'ঈশ্বর' যাই হোক না কেন সেটাতে বদল আনতে হবে। ফলে মহাকর্ষকে গুলিসুতো বা ঈশ্বর দিয়ে রিপ্লেস করলেও তাকে ধ্রুব করা যেতে পারে না। অর্থাৎ মহাকর্ষের বদলে ঈশ্বর ধরলেও তাকে পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারো ভাই বলে চুনৌতি শোনানো হচ্ছে।

    কিন্তু তুমি ধরেছ মহাকর্ষ ও ঈশ্বর এক। এর বিরুদ্ধে ডিসির বক্তব্য (যা আমার মনে হয়) একটা পরিবর্তনশীল ধারণা (মহাকর্ষ) আর একটা নির্দিষ্ট ধারণা (ঈশ্বর) এই দুটো আলাদা। তো তাহলে আমার কথা আর ডিসির কথার মধ্যে পরস্পরবিরোধীতা কোথায়।

    আরো কিছু ব্যাখ্যা লাগবে?
  • ঈশান | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২৫723240
  • হ্যাঁ। তোমার আর ডিসির 'ঈশ্বর' ধারণা আলাদা। তোমারটা পরিবর্তনশীল, ডিসির টা ধ্রুব। এর মধ্যে কোনটা পপারিয় ধারণা?
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৩০723241
  • আরেকটু লিখে দিই।

    অর্থাৎ ঈশ্বর যদি একটা নির্দিষ্ট ধারণা হয়, ডিসি এটাকে চ্যালেঞ্জ করে বলছেন তাহলে এ সায়েন্সের সাথে এক কিছুতেই হতে পারে না। আর আমি বলছি, ঈশ্বর যদি নির্দিষ্ট ধারণা হয় তবে তত্ত্বানুযায়ী তা যেকোনো সময় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লে আর উঠে দাঁড়াবে না, ফলে সায়েন্স হওয়ার সুযোগ নেই (আত্তীকরণ নেই), তার কারণ সেটা একটা নির্দিষ্ট ধারণা।
    আর ঈশ্বর যদি নির্দিষ্ট না হয় তবে সেটা খাপ খাওয়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। তখন সে সায়েন্স হলেও হতে পারে। কি বিরোধ?
  • T | 190.255.250.149 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৩৩723242
  • আজকের মতো যথেষ্ট হ'ল। পরের আবার দেখা যাবে। আমি ইন্সট্যান্ট কফি খেতে চললাম।
  • ranjan roy | 132.176.179.18 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৩৬723243
  • একটু অনধিকার চর্চা করছিঃ
    "একটা পরিবর্তনশীল ধারণা (মহাকর্ষ) আর একটা নির্দিষ্ট ধারণা (ঈশ্বর) এই দুটো আলাদা" -- এটা অবশ্যই ডিসি বলেছেন।
    --- কিন্তু ঈশ্বরের ধারণাও ( প্রপার্টি, ক্যারেকটারিস্টিক, বা কনসেপ্ট) কি পরিবর্তনশীল নয়?
  • ranjan roy | 132.176.179.18 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৫০723244
  • সত্যের সন্ধান ?
    -- এ নিয়ে ডিসির সঙ্গে অনেকটা একমত।
    ১) অ্যাবসলুট ট্রুথ বলে কিছু হয় না।
    অবজেক্টিভ ট্রুথ হয়।
    আসলে ট্রুথ হল অনেকগুলো রিলেটিভ ট্রুথের সমষ্টির একটি ইজ্নফাইনিট সিরিজ। ওই সিরিজের টার্মগুলোর, মানে ইন্ডিভিজুয়াল রিলেটিভ ট্রুথগুলোর ভ্যালু স্পেস ও টাইমে বদলে যাবে।

    ২) বিজ্ঞানের অনুসন্ধানের লক্ষ্য আরও আরও ফান্ডামেন্টাল ট্রুথ এ পৌঁছে যাওয়া। আজ যেটা বেসিক বা ফান্ডামেন্টাল বা অ্যাক্সিয়মেটিক, কাল নতুন বা আরও গভীর ফান্ডামেন্টাল ট্রুথ বেরোলে আজকেরটা নতুন ফান্ডামেন্টালের একটি পার্টিকুলার অ্যাপ্লিকেশন হয়ে থাকবে।
    নিউটোনিয়ান মেকানিক্স বাতিল না হয়ে আরও ফান্ডামেন্টাল মেকানিকসের পার্টিকুলার কেস ( ফর রিজিড বডি) হয়ে বেঁচে রয়েছে।
    আলোর কর্পাসকুলার থিওরি, ওয়েভ থিওরি একই ভাবে বাতিল না হয়ে আরও ফান্ডামেন্টাল কোয়ান্টাম থিওরির পার্টিকুলার কেস হয়ে রয়েছে।

    ৩) মার্ক্সের ক্যাপিটাল ধরেছে ক্যাপিটালিজমের লং রান ডায়্নামিক্সকে আর কেইন্স শর্ট রান স্ট্যাটিক্স কে।
  • ঈশান | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০৯723245
  • কিন্তু প্রশ্নটা রয়েই গেল।

    অপশন এক। ঈশ্বরের ধারণা একটি অপরিবর্তনশীল নির্দিষ্ট ধারণা।

    অপশন দুই। ঈশ্বরের ধারণা একটি পরিবর্তনশীল ধারণা।

    অপশন তিন। পরিবর্তনশীল না অপরিবর্তনীয় আমি জানিনা। বা কোনো অবস্থান নেবনা। কিংবা 'ও যা ইচ্ছে হয় হোক, আমার কি।'

    এর কোনটা পপারিয় অবস্থান? পরের দিন এলে এইটার উত্তর দিও। লম্ফ দিয়ে অন্য জায়গায় শুরু কোরোনা।

    রঞ্জনদা, এইটা খুবই ভাইটাল কোশ্নো। পরে আসব এখানে। গুলিসুতো, মহাকর্ষ, ঈশ্বর -- এদের আন্তঃসম্পর্ক নিয়েই পরের কিস্তি। তার আগে এইটার উত্তর একটু পেয়ে নিই।

    পুঃ গুলিসুতো কে লঘু করবেন্না। এর চেয়ে ঢের সিরিয়াস বিষয় সম্পর্কে আইনস্টাইন বলেছিলন, "ঈশ্বর পাশা চালেননা (does not play dice)"। তাস-পাশা যদি চলতে পারে, গুলিসুতোও অবশ্যই চলবে।
  • Rit | 213.110.242.20 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৩৮723246
  • তবে আইনস্টাইনের একটা নির্মোহ ব হওয়া খুব দরকার। এটা সময়ের দাবী।
  • sinfaut | 11.39.96.118 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১০:১৬723248
  • ডিসি বা টি কেই ঈশ্বরের ধারনা নিয়ে প্রশ্ন করেছে ইশান। তবু আমি ক্লিয়ার করার চেষ্টা করি। ক্লিয়ার না হয়ে আরো ঘেঁটে গেলে ডিসি ও টি পর্যায়ক্রমে না ও না বলে দিলেই আর কথা বাড়াবো না।

    ডিসি যখন বলেন, ঈশ্বরের ধারনা অপরিবর্তনীয় তখন ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী ঈশ্বরের যে রূপ সেই অর্থে বলেন। ঈশ্বরবিশ্বাসীরাও এমন অপরিবর্তনশীল ঈশ্বরকেই মেনে চলেন। অন্তত যে ধর্মে গাইডলাইন আছে।

    অন্যদিকে, টি এখানে ঈশ্বরের প্রসঙ্গ তোলেন বিজ্ঞানের সাথে তার চরম বিপ্রতীপ অবস্থান সত্ত্বেও সেই ধারনা পপারের ফলসিফায়েবিলিটি টেস্টে পরীক্ষা করা যেতে পারে। এখানে ঈশ্বরের বদলে মাদুলি, শনির দৃষ্টি যা খুশি হতে পারে। ধরে নেওয়া যেতে পারে ঈশ্বর এখানে যে কোন অবৈজ্ঞানিক মতবাদের প্লেসহোল্ডার। তো এমন কোন মতবাদও যদি কেউ প্লেস করে পপারের তত্ত্বের তার প্রতি কোন অবজ্ঞা থাকবে না, যতক্ষন পর্যন্ত সেই তত্ত্ব ভেরিফায়েবল ও ফলসিফায়েবল।

    তাই, এই ডিসি আর টি এর ঈশ্বর আলাদা তাই পপারের ধারনাও দুজনের মাথায় আলাদা আর তাই পপারের তত্ত্ব বিভ্রান্তিকর এমন সরলীকরণের দরকার নেই।
  • dc | 132.174.97.27 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১০:৩৫723249
  • কিছুটা একমত, কিছুটা না।

    প্রথমত, ঈশ্বর নিয়ে আমার আলাদা করে কোন বক্তব্য নেই, কারন ঈশ্বর নিয়ে আমার সেরকম কোন আগ্রহও নেই। আরেকবার মনে করিয়ে দি, অন্য টইতে ঈশানের সাথে আমার তর্ক শুরু হয়েছিল ঈশানের লেখা এই বাক্যটির থেকেঃ
    ""এখন 'পবিত্র গ্রন্থ' এবং যাজকদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। যাদেরকে আমরা যথাক্রমে 'বিজ্ঞান' ও 'এক্সপার্ট' বলি"

    এর উত্তরে আমি প্রাথমিকভাবে বলতে চেয়েছিলাম যে 'বিজ্ঞান' কে 'পবিত্র গ্রন্থ' বলা যায় না কারন 'বিজ্ঞান' এ কোনকিছুই "পবিত্র" বা অপরিবর্তনীয় না। আরও লিখেছিলাম, "থিওরির সাথে অবসার্ভেশান মিলে যাওয়াই একমাত্র 'বিজ্ঞান' এর একমাত্র প্যারামিটার না। আরেকেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রিন্সিপল হলো অক্যামস রেজর। "মঙ্গলগ্রহের চারধারে একটা অদৃশ্য টিপট ঘুরছে", "মাদার টেরেসা মিরাকল করে ক্যান্সার সারাতেন", "গণেশ দুধ খায়", এরকম যাবতীয় স্টেটমেন্টকে অক্যামস রেজর দিয়ে পরীক্ষা করা যায়।"

    (sinfaut এর সাথে সামান্য আপত্তি এখানে, যে "ঈশ্বরের ধারনা অপরিবর্তনীয়" এটা হয়তো তর্কের সময়ে কোথাও মনে হয়েছে, কিন্তু এটা আমার প্রাথমিক স্ট্যান্ড না। মানে "বিজ্ঞান সতত পরিবর্তনশীল, তাই একে পবিত্র গ্রন্থ বলা যায় না", আর "ঈশ্বরের ধারনা অপরিবর্তনীয়" এই দুটো স্টেটমেন্টের মধ্যে অল্প হলেও তফাত আছে)

    তো এই ধরনের কিছু প্রিন্সিপল, যার একটি অবশ্যই ফলসিফায়েবিলিটি, এগুলো সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে যে সায়েন্স ইস অলওয়েজ ইন এ স্টেট অফ ফ্লাক্স। এর পরে ঈশান "বিজ্ঞান এর সাধারন লক্ষন" বলে কিছু একটা নিয়ে আসায় আরো কনফিউশান তৈরি হয়, তবে এখন বোধায় সেটা মিটেছে।

    আর হ্যাঁ, অতি অবশ্যই, টি ফলসিফায়েবিলিটির কিছু কিছু দিক তুলে ধরেছেন, আমিও কিছু কিছু দিক। এর লিমিটেশান নিয়েও বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে, শৌভও খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। "পপারের তত্ত্ব বিভ্রান্তিকর" এটা হয়তো এখানে কয়েকজনের আলাদা আলাদা পোস্ট পড়ে ঈশানের মনে হচ্ছে। সেজন্যই ঈশানের গুলিসুতোর পরের কিস্তির অপেক্ষায় আছি।
  • dc | 132.174.97.27 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১০:৪৯723250
  • এই টইটা পড়ে যদ্দুর দেখছি, এই কনটেক্সটে ঈশ্বরের উল্লেখ বোধায় ঈশানই প্রথম করেছেন, "পরিমাপের অংশটুকু বাদ দিলে "ঈশ্বরের ইচ্ছা"র সঙ্গে এর কোনো তফাত নেই। "ঈশ্বরের ইচ্ছা"র পরিমাপ করা যায় কিনা সেটা অন্য প্রসঙ্গ। কিন্তু মহাকর্ষ এখানে এক রহস্যময় বস্তু, যা কেবল এক লজিকাল কনস্ট্রাক্ট, অবিকল ঈশ্বরেরই মতো।" IP Address : 183.24.110.20 (*) Date:18 Sep 2016 -- 04:59 AM

    (খুব তাড়াহুড়োয় দেখেছি, এর আগেও ঈশ্বরের উল্লেখ এসে থাকলে সরি চেয়ে নিলাম)

    কিন্তু ঈশান যেভাবে "মাধ্যাকর্ষন" কে "ঈশ্বর" হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন সেটায় একটু মুশকিল আছে, সেটা আগেও লিখেছি।

    মুশকিলটা হলো, ঈশান হিকস আর নিউটনে গিয়ে থেমে গেছেন। অবশ্যই বলা যেতে পারে, হুকস আর নিউটনের "মাধ্যাকর্ষন" আর "ঈশ্বর" এর তফাত নেই কারন দুটো ধারনাই রহস্যময়। কিন্তু এর পরে যে "বিজ্ঞান" থেমে থাকে নি, এর পরেও আইনস্টাইন আরো কিছুটা ব্যাখ্যা করেছে, এখনো যে নেচার অফ গ্র্যাভিটি নিয়ে আরো নতুন সব হাইপোথিসিস (ফলসিফায়েবল) আসছে, এটা উল্লেখ না করার ফলে ঐ "সতত পরিবর্তনশীল" জায়গাটা ধরা পড়ে নি। ঘুরেফিরে প্রথমে যেটা বলতে চেয়েছিলাম সেটাই আবার লিখি, 'বিজ্ঞান' কে 'পবিত্র গ্রন্থ' বলা যায় না কারন 'বিজ্ঞান' এ কোনকিছুই "পবিত্র" বা অপরিবর্তনীয় না। কোন ফিক্সড লজিকাল কনস্ট্রাক্ট নেই।
  • সামারি | 172.247.72.201 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:০০723251
  • নিতান্ত সরল অর্থ , অতি পরিষ্কার ,
    বহু পুরাতন ভাব , নব আবিষ্কার ।
    ত্র্যম্বকের ত্রিনয়ন ত্রিকাল ত্রিগুণ
    শক্তিভেদে ব্যক্তিভেদ দ্বিগুণ বিগুণ ।
    বিবর্তন আবর্তন সম্বর্তন আদি
    জীবশক্তি শিবশক্তি করে বিসম্বাদী ।
    আকর্ষণ বিকর্ষণ পুরুষ প্রকৃতি
    আণব চৌম্বকবলে আকৃতি বিকৃতি ।
    কুশাগ্রে প্রবহমান জীবাত্মবিদ্যুৎ
    ধারণা পরমা শক্তি সেথায় উদ্ভূত ।
    ত্রয়ী শক্তি ত্রিস্বরূপে প্রপজ্ঞে প্রকট —
    সংক্ষেপে বলিতে গেলে , হিং টিং ছট্‌ ।
  • Rit | 213.110.242.8 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:০৩723252
  • একদম। ঃ)
  • dc | 132.174.97.27 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:০৪723253
  • ব্যাপক :d
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:৪৭723254
  • অ্যানালজি, উপমা, উৎপ্রেক্ষা ইত্যাদির ফাঁদে পা না-দিয়ে বরং আসুন, মহাকর্ষতত্ত্বের উদ্ভব ও বিবর্তনের জ্ঞানতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াটাকে বিশ্লেষণ করে দেখি, তা পপারের ডিমার্কেশন থিওরিকে (অর্থাৎ যা বৈজ্ঞানিক এবং অবৈজ্ঞানিক প্রতর্কের মধ্যে, একটি বিশেষ জ্ঞানতাত্ত্বিক কাঠামো অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট সীমারেখা টানে বলে দাবি) মান্যতা দেয় না কি ফলসিফাই করে। এবং কেন ও কীভাবে এই তত্ত্বের পরিবর্তন বা বিবর্তন (গুলিসুতো বা ঈশ্বরের ধারণার মত) পপারীয় বা পপারীয় নয়।

    ধরা যাক ১৬৭০ থেকে ১৬৮০-র মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে এই গল্পের শুরু। ততদিনে সৌরজগতের কেপলার-প্রস্তাবিত মডেলটি মোটামুটি সর্বজনমান্য ও বিজ্ঞানসম্মত বলে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে (সে-ও হয়তো এক ফলসিফিকেশনের খেলা, তবে আপাতত আমাদের সিলেবাসের বাইরে)। অর্থাৎ, সৌরজগতের গ্রহগুলি যে একটি এলিপটিক্যাল কক্ষপথে ঘোরে এবং সূর্য যে সেই কক্ষপথের দুই ফোকাল পয়েন্টের একটিতে অবস্থান করে, সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা নেই। এখন, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে, সার আইজাক নিউটন তাঁর পিঙ্কিপ্রিয়া মাথামোটিকা গ্রন্থে, আঁক কষে, কেপলারের প্রথম ও দ্বিতীয় সূত্রের সাহায্যে, সূর্যের চারিদিকে ঘূর্ণ্যমান যে-কোনো গ্রহের ত্বরণের ফর্মূলা বের করে ফেললেন। এর থেকে দেখা গেল সেই ত্বরণের অভিমুখ সূর্যের দিকে, আর তার মান সূর্য থেকে গ্রহটির দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। নিউটন এর থেকে ধারণা করলেন যে, সূর্যই গ্রহগুলির ত্বরণের ভৌত কারণ। এবার, নিজের গতিসংক্রান্ত সূত্রের সঙ্গে (বল=ভর X ত্বরণ ) এই ধারণাটিকে মিলিয়ে তিনি বললেন যে, প্রত্যেকটি গ্র্হের ওপর সূর্যের একটি আকর্ষক বল কাজ করে এবং এই বল গ্রহটির ভরের সমানুপাতিক কিন্তু সূর্য থেকে তার দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। কিন্তু এটাতেও নিউটনের মন ভরল না। যেন ঠিক ততখানি সুষম ও সার্বজনীন হয়ে উঠল না তত্ত্বটা (পরে, পপার বলবেন যে-তত্ত্ব যত বেশি সার্বজনীন, ফলত যার ফলসিফিকেশনের সম্ভাবনা অনেক বেশি, বিজ্ঞান সর্বদা সেই তত্ত্বকেই প্রাধান্য দেয়, বা উচ্চতর বর্গের তত্ত্ব বলে গ্রহণ করে)। ফলে, তিনি একে আরো সাধারণীকৃত করে মহাকর্ষের সার্বজনীন তত্ত্বের প্রস্তাবনা করলেন।

    এবার মহাকর্ষের এই তত্ত্বটি অনেকগুলি বেসিক স্টেটমেন্টের জন্ম দেয়, যার বেশ বড় অংশ আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার সঙ্গে খাপে খাপে মিলে যায়। যেমন, ওপর থেকে ছেড়ে দিলে, অন্য কোন বিপরীতমুখী বলের অনুপস্থিতিতে, একটি বস্তু সর্বদা পৃথিবীর দিকে পতিত হয়। এগুলি, মহাকর্ষতত্ত্বের করোবরেটর। আবার একইসঙ্গে, মহাকর্ষতত্ত্বের ভিত্তিতে আমরা কিছু ভবিষ্যদ্বাণীও করতে পারি--মঙ্গলবার রাত বারোটার সময়ে বৃহস্পতি আকাশের অমুক দিকে অমুক কৌণিক দূরত্বে অবস্থান করবে। এখন এই ভবিষ্যদ্বাণী খুব সহজেই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়, অর্থাৎ এটি পরীক্ষাযোগ্য। এটি, এবং এই ধরণের প্রেডিকশনগুলি, অতএব, মহাকর্ষতত্ত্বের (এমনকী, নিউটনীয় মেকানিক্সের) সম্ভাব্য ফলসিফায়ার।

    আমরা, মহাকর্ষতত্ত্বকে বিচার করার জন্যে আকাশে দূরবীন তাক করে বসে রইলাম। দেখা গেল শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি আর শনির বাস্তবিক অবস্থান, নিউটনের তত্ত্বের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত অবস্থানের সঙ্গে অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। কিন্তু, গোল বাঁধল ইউরেনাসকে নিয়ে। দেখা গেল, আলেক্সিস বুভারের কষা আঁক অনুযায়ী যে-সময়ে যেখানে ইউরেনাসের থাকার কথা, সেখানে আদৌ তাকে দেখা যাচ্ছে না। এর ফলে, দুটো সম্ভাবনা উঠে এল--নিউটনের তত্ত্ব ভুল, অথবা আমাদের পর্যবেক্ষণ নিখুঁত নয়, বা অন্য কোনো বাহ্যিক প্রভাব আমাদের পর্যবেক্ষণকে বিকৃত করছে। মজার কথা, বৈজ্ঞানিকরা কিন্তু মহাকর্ষতত্ত্বকে অত সহজে ভুল বলে দাগিয়ে দিলেন না। বরং, জোর দিলেন বাহ্যিক প্রভাবের ওপর। এবং সেই অনুমানের ভিত্তিতেই ১৮৪৫ নাগাদ জন অ্যাডামস সৌরজগতের অষ্টম গ্রহটির প্রস্তাবনা করলেন, তার সম্ভাব্য ভর ও অবস্থান-সমেত।

    পপারের কিছু সমালোচক বলবেন, এই ঘটনাটি পপারের তত্ত্বের বিরুদ্ধে যায়। কেননা নিউটনের তত্ত্বের ফলসিফিকেশন সত্ত্বেও বৈজ্ঞানিকরা তড়িঘড়ি তত্ত্বটিকে নাকচ করলেন না। কিন্তু এখানে মনে রাখা উচিত, ইউরেনাসের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে আসলে যে- হাইপথিসিসটি আমরা পরীক্ষা করছিলাম, তা একটি যৌগিক হাইপথিসিস।

    (নিউটনীয় ধ্রুপদী বলবিদ্যা) + (৭-টি গ্রহসমন্বিত সৌরজগতের তত্ত্ব) = ইউরেনাসের অবস্থান

    এখন, নিউটনীয় বলবিদ্যা বাতিল না-হলেও, ৭-টি গ্রহসমন্বিত সৌরজগতের তত্ত্বটি কিন্তু এখানে ফলসিফায়েড এবং সেইহেতু বাতিল হল। বা, ঠিক বাতিল হল না, একটি অক্সিলিয়ারি হাইপথিসিস (নেপচুনের অস্তিত্ব) যোগ করে তাকে বদলে ফেলা হল। আমরা পেলুম একটি পরিবর্তিত সৌরজগতের ধারণা।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:৪৯723255
  • এবার চলে আসি বিংশ শতকের শুরুর দিকে, ১৯০৫ সালে। সম্পূর্ণ অন্য এক প্রস্থানভূমি থেকে (আলো ও তরিচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের প্রকৃতি) আইনস্টাইন তাঁর স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটির প্রস্তাব করলেন। সেই তত্ত্ব-অনুযায়ী, নিউটনের ইনারশিয়াল রেফারেন্স ফ্রেমের ধারণাটা সমস্যায়িত হল। কেননা, সমস্ত ইনারশিয়াল রেফারেন্স ফ্রেম তুল্যমূল্য, নিউটনের এই প্রস্তাবনাটির সঙ্গে আইনস্টাইন জুড়ে দিলেন একটি অতিরিক্ত শর্ত (অক্সিলিয়ারি হাইপথিসিস)--আলোর গতিবেগ যে-কোনো ইনারশিয়াল রেফারেন্স ফ্রেমেই সমান ও ধ্রুবক। অতএব, নিউটনের অ্যাবসলিউট স্পেস ও অ্যাবসলিউট টাইমের ধারণা আর বলবৎ রইল না। এইভাবে, আমরা পেলাম একটি পূর্ণাঙ্গতর ধ্রুপদী বলবিদ্যা।

    কিন্তু আইনস্টাইন এতেও সন্তুষ্ট হলেন না। আবারও, সেই অধিকতর সার্বজনীন ও সাধারণীকৃত তত্ত্বের উদ্দেশ্যে যাত্রা তাঁকে প্ররোচিত করল মহাকর্ষকে এই তত্ত্বের আওতায় আনতে। ফলে, ১৯১৫ সালে তিনি জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটির প্রস্তাবনা করলেন। এবং বললেন, মহাকর্ষ আসলে স্থানকালের সহজাত জ্যামিতিক ধর্ম। অর্থাৎ স্থানকালের বক্রতা সেখানে উপস্থিত যেকোন বস্তুর এনার্জি ও ভরবেগের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। দেখা গেল, এই তত্ত্ব দিয়ে খুব সহজেই বুধের আজব কক্ষপথকেও ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ১৯১৯ সালে এডিংটন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হলেন যে, সূর্যের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে কোয়াসার থেকে আগত রশ্মি বেঁকে যায়। এবং, এর ফলে, আইনস্টাইনের প্রস্তাবিত তত্ত্বের সম্ভাব্য ফলসিফায়ারটি ভ্রান্ত প্রমাণিত হল। এবং, পপারের মতে, আইনস্টাইনের তত্ত্বটি ঠিক, এমন কথা বলা না-গেলেও, জানা গেল তা আমাদের জগতের ঘটনাসমূহকে সন্তোষজনকভাবে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। এবং, জেনারাল থিওরি অফ রিলেটিভিটি মহাকর্ষের একটি পূর্ণাঙ্গতর রূপ।

    লক্ষ্য করুন, একটি তত্ত্ব যদি পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ফলসিফায়েড হয়, তাহলেও তাকে পরিত্যাগ করা হয় না, বরং নতুন অ্যাড হক, বা অক্সিলিয়ারি হাইপথিসিস যোগ করে তাকে নতুন রূপ দেওয়া হয়, বা একটি পূর্ণাঙ্গতর তত্ত্বের প্রস্তাবনা করা হয়। শর্ত একটাই, এই অক্সিলিয়ারি হাইপথিসিসগুলিকেও টেস্টেবল ও ফলসিফায়েবল হতে হবে। এখানেই বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের সঙ্গে প্রাক-বৈজ্ঞানিক বা অবৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ফারাক। অবৈজ্ঞানিক তত্ত্বের প্রেডিকশান বাস্তব পর্যবেক্ষণ দ্বারা ফলসিফায়েড হলে, তাতে নতুন ফলসিফায়েবল অক্সিলিয়ারি হাইপথিসিস যোগ করে নতুন আকার দেওয়া হয় না,বরং তার অনুসারীরা গোঁড়ার মত বাস্তব পর্যবেক্ষণকেই আক্রমণ করতে থাকেন। এর উদাহরণ হিসেবে পপার মার্ক্সিজমকে চিহ্নিত করেন। যদিও, সেই আলোচনায় ঢুকতে চাই না, কেননা তাতে আলোচনা সম্পূর্ণ অন্যদিকে ঘুরে যাবে।

    এখানে একটি সমস্যার কথা বলব।

    "খুব ভারি বস্তুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে আলো বেঁকে যায়"--এটা একটা বেসিক স্টেটমেন্ট, যা জেনারাল থিওরি অফ রিলেটিভিটির সম্ভাব্য ফলসিফায়ার। এডিংটনের পর্যবেক্ষণ থেকে দেখা গেল,ীকটি বিশেষ নক্ষত্র থেকে আগত আলো সূর্যের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে সত্যিই বেঁকে গেল। কিন্তু, পপারের তত্ত্ব অনুযায়ী, এইধরণের একটি পর্যবেক্ষণলব্ধ সমর্থন বেসিক স্টেটমেন্টকে চূড়ান্তভাবে সত্য প্রমাণ করতে পারে না। অতএব, একটি নির্দিষ্ট নক্ষত্র থেকে আগত আলো সূর্যের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে বেঁকে গেল, এই পর্যবেক্ষণ থেকে আমরা কি সত্যিই নিঃসন্দিগ্ধ হয়ে বলতে পারি যে যে-কোনো ভারি বস্তুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে যেকোন আলোকরশ্মিই বেঁকে যাবে? অর্থাৎ, যে বেসিক স্টেটমেন্টটি সম্ভাব্য ফলসিফায়ার, তারও ফলসিফিকেশন সম্ভব। এবং সেই ফলসফায়ারেরও ফলসিফিকেশন। এভাবে চলতে থাকলে তো আমরা কোনোদিনই কোনো নির্দিষ্ট ধারণার কাছে পৌঁছতে পারব না। পপার এখানে বলবেন যে এক-জায়গায় গিয়ে এই প্রক্রিয়াটিতে দাঁড়ি টানার প্রয়োজন আছে। এবং কোথায় গিয়ে, কীভাবে এই দাঁড়ি টানা হবে, তা নির্ভর করছে সামগ্রিক বৈজ্ঞানিকসমাজের ঐকমত্যের ওপর। এই ব্যাখ্যাটি খুব যে সন্তোষজনক এমন নয়, এবং এর পক্ষে বিপক্ষে নানান সূক্ষ্ম চুলচেরা আলোচনা রয়েছে। আমার আনাড়ি ক্ষুদ্রবুদ্ধিতে তাদের যথাযথ মূল্যায়ণ সম্ভব নয়। শুধু পপারের উক্তি উদ্ধৃত করেই ক্ষান্ত হই--"Every test of a theory, whether resulting in its collaboration or falsification, must stop at some basic statement or other which we decide to accept. If we do not come to any decision, and do not accept some basic statement or other, then the test will have led nowhere… This procedure has no natural end. Thus if the test is to lead us anywhere, nothing remains but to stop at some point or other and say that we are satisfied, for the time being."
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:৫৪723256
  • এবার ঈশানবাবু যদি, মহাকর্ষতত্ত্বের এই উদ্ভব ও বিবর্তনসংক্রান্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর আপত্তির জায়গাগুলো তুলে ধরেন, কোনো উপমা-উৎপ্রেক্ষা-গুলিসুতো ছাড়া, তাহলে ব্যাপারটা খোলতাই হয়।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:৪২723257
  • য়ারেকটা কথাও ছোট্টো করে, যাওয়ার আগে, বলে রেখে যাই। বিজ্ঞানই যে জ্ঞান আহরণের একমাত্র বা শ্রেষ্ঠ পন্থা, এমন মৌলবাদী দাবি কিন্তু পপার করেননি। তাঁর ডিমার্কেশন তত্ত্ব দিয়ে তিনি দ্যাখাতে চেয়েছিলেন জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অ্যাপ্রোচটা ১) ঠিক ইন্ডাকটিভ নয়, ২) তা অন্যান্য জ্ঞান আহরণের পন্থা থেকে আলাদা। এর মানে কিন্তু আদপেই এই নয় যে, অন্যান্য পন্থায় আহরিত জ্ঞান আমাদের কোনভাবেই সমৃদ্ধ করে না।
  • শৌভ | 113.224.105.10 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৬:১০723259
  • ঈশানবাবুর গুলিসুতোর পোস্টটা ফিরে পড়তে গিয়ে মনে হল, উনি বলতে চাইছেন মহাকর্ষের ধারণা আদিকাল থেকেই মানুষের মনে বদ্ধমূল ছিল, নিউটন তাকে গাণিতিক ফর্মূলায় ছকেছেন মাত্র। তাই কি?

    অ্যাস্ট্রনমির ইতিহাস বহু প্রাচীন। খুব নিখুঁত করে বলতে গেলে, অ্যাস্ট্রনমি নয়, বরং তার একটি বিশেষ বিভাগ অ্যাস্ট্রোমেট্রির প্রচলন (অর্থাৎ আকাশে গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান নির্ধারণ, গ্রহণের দিনক্ষণ নির্ণয় ইত্যাদি) একেবারে সেই প্রাথমিক সভ্যতার উন্মেষের সময়কাল থেকেই। এই অবস্থান নির্ধারণের প্রয়াস ক্রমশ রূপান্তরিত হয় সূর্য ও তার সাপেক্ষে গ্রহগুলির অবস্থানের একটি পূর্ণাঙ্গ সৌরজাগতিক মডেল নির্মাণের ইচ্ছায়। সেখান থেকেই টলেমির জিওসেন্ট্রিক মডেল, বা আরিস্তার্কুসের হেলিওসেন্ট্রিক মডেলের প্রস্তাবনা। ক্রমশ তার থেকে কোপার্নিকাসের মডেল যা আবার গালিলেও ও কেপলারের হাতে সংশোধিত হয়। এখন, এনাদের মনে কী ছিল আমি জানি না, কিন্তু এনাদের প্রকাশিত তত্ত্বের কোথাও এই সৌরজগতের মডেলের (অর্থাৎ, সূর্যের চারিদিকে গ্রহের আবর্তনের) কোনো কারণ নির্দেশ করা হয়নি। এমনকি, কেপলারও তাঁর তিনটি সূত্রের কোথাও সূর্য ও গ্রহগুলির মধ্যে ক্রিয়াশীল বলের (তা মহাকর্ষ হোক বা গুলিসুতো) কোনো ধারণার উল্লেখ করেননি। কেপলারের সূত্র থেকে গ্রহের ত্বরণ মাপতে গিয়ে নিউটন প্রথম দেখেন যে এই ধরণের একটি বলের ধারণা অনিবার্যভাবেই চলে আসছে (অবশ্যই এর পেছনে তাঁর গতিসংক্রান্ত সূত্রগুলির ভূমিকাও অনস্বীকার্য)। ফলে, সেখানেই প্রথম মহাকর্ষের ধারণার সূত্রপাত।

    অতএব, মহাকর্ষের ধারণা গোড়া থেকেই ছিল, নিউটন থেকে আইনস্টাইন হয়ে হকিং-পেনরোজ হয়ে অশোক সেন অবধি কেবল তার গাণিতিক রূপটাই বদলেছে, এমন ধারণা খুব একটা যুক্তিসঙ্গত ঠেকছে না।

    আমার এক বন্ধু বলছিল, গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের অস্তিত্ব না কি সেই আদিকাল হ'তে ব্রহ্মাণ্ডের কোণায় কোণায় অনুরণিত মহানাদ বা ব্রহ্মনাদের ধারণাকেই সমর্থন করে। :)
  • aka | 79.73.9.37 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:১১723260
  • আমি মনে হয় বুইতে পেরেছিঃ

    পপার না হয় বললেন বিজ্ঞান মানে হল গিয়ে যা কিনা নিজেকেই নিজে কন্ট্রাডিক্ট করার পথ খুঁজবে ক্রমাগত। কখনই কোন থিওরি, ধারণা আসলে একদম ঠিক এই ব্যপারটাই নেই। একটা জার্নি, সেই জার্নির একটা নির্দিষ্ট পয়েন্টে কোন ধারণা সমস্ত অংক, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি মেনে হয়ত সঠিক, তার মানে এই নয় যে কদিন বাদেও সেটাই ঠিক হবে। কারণ সত্য বিজ্ঞানীরা সেই থিওরীকেও ক্রমাগত কন্ট্রাডিক্ট করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ হল গিয়ে হ্যাপি পাথ বাংলায় বললে।

    কিন্তু এর বাইরেও তো পৃথিবী আছে, আছে রাজনীতি, আছে টাকা - পয়সা, আছে ম্যালপ্রাকটিস। এবারে বিজ্ঞান ব্যপারটা অনেক সময়েই খানিক হিং টিং ছট আমাদের মতন সাধারণ মানুষের কাছে। তার সুযোগ কি বিজ্ঞানীরা নেন না? নেন তার অনেক অনেক উদাহরণ আছে। ধরুণ কোথাথেকে কোন একটি মাথার খুলি পাওয়া গেল, বিজ্ঞানীরা অনেক অনুসন্ধান করে বললেন এই হল গিয়ে আদিমতম মানুষের মাথার খুলি, অনেক অনেক বছর বাদে জানা গেল না আসলে ওরাংওটাংয়ের মাথার খুলি কাজে লাগানো হয়েছিল। এই বিজ্ঞানীরা পপারের দর্শনে বিজ্ঞানী নন, কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে এনারাও বিজ্ঞানী, যতক্ষণ না বোঝা গেল পাতি ঢপ দিয়েছে।

    এবারে কথা হল এই যে বেশ কিছু বিজ্ঞানী ঢপ ফপ চালাচ্ছেন, এতে করে বিজ্ঞানের ওপরেও মানুষের অবিশ্বাস বাড়ছে। পপার যতই বিজ্ঞানের দর্শ ড্কুমেন্ট করুন পাশাপাশি এও সত্যি যে সাধারণ মানুষের লিমিটেড জ্ঞানের সুযোগও বিজ্ঞানীরা নিয়ে থাকেন ও নিচ্ছেন।
  • dc | 132.174.82.76 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৪৩723261
  • আকা, অবশ্যই। বিজ্ঞানীরা মানুষ, আর মানুষের তৈরি বিজ্ঞান। তাতে হাজার রকম দলাদলি, ঈর্ষা, পরের কাজ মেরে দেওয়া, ফ্রড সমস্ত কিছু আছে। ব্যাপারটা হলো যদি লং টার্ম ভিউতে দেখেন, একশো কি দেড়শো বছরের, তাহলে ওভারল একটা ট্রেন্ড পাবেন যে আমাদের বডি নলেজ আস্তে আস্তে বাড়ছে। এবার সেই পুরো বডিটা ইটসেলফ ভুল কিনা, আদৌ "নলেজ" বলে কিছু হয় কিনা, আমরা আমাদের অ্যানথ্রোপোসেন্ট্রিক ভিউপয়েন্ট রিয়েলিটির ওপর চাপিয়ে দিয়েছি কিনা, রিয়েলিটি বলে আদৌ কিছু আছে কিনা, আমরা যেমন লজিকালি প্রোগ্রেস করতে চাই সেরকম লজিকাল প্রোগ্রেসান আদৌ সম্ভব কিনা, কজালিটি ব্যাপারটা পুরোটাই আমাদের মনগড়া কিনা এরকম হাজারটা প্রশ্ন তো আছেই। এরকম হওয়ারও খুব বেশী সম্ভাবনা যে "রিয়েলিটি" র পুরোটা জানা হিউম্যান ব্রেনের পক্ষে সম্ভবই না, তার জন্য আরো শক্তিশালী প্রসেসিং পাওয়ার দরকার। মানে আমরা কি জানিনা তাও আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব না। এইসব কিছু লিমিটেশান মেনে নিয়েই "বিজ্ঞান" নামের স্ট্রাকচারটা।
  • aka | 79.73.9.37 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৪৭723262
  • বেশ মনে আছে ছেলেবেলায় হেপাটাইটিস বি এর প্রতিষেধক নিতে শুরু করেছিলাম। গোটা তিনেক ইঞ্জেকশন বেশ কয়েকমাস অন্তর অন্তর। খুব ধুঁয়ো উঠল নাও নাও। ওবাবা একখানা নিতে না নিতেই আবার রিপোর্ট বেরল না না নিও নি, ও নিলে নার্ভের ক্ষতি হয়।

    আপনি বলবেন ধর্ম, কুসংস্কার মেনে লাভ নেই, মেনে নিলাম। ওদিকে বিজ্ঞান মানব তারও এই হাল। সে পপারের যতই দর্শন বলুন না কেন, সব প্র্যাকটিসই কি পপারের দর্শন মেনে হয়? না চলছে। আপনি বলবেন, দাদা যা পপারের দর্শন মেনে নয় তা বিজ্ঞান নয়, আমি কি অতসত বুঝি? ভালো করে ভেবে টেবে যদি বলেন হেপাটাইটিস বি র টীকা নেব, নাকি নেব না, তাইলে বুঝি যে সে ধর্মের থেকে বিজ্ঞান আলাদা। নইলে যতই পপার দেখান, অমুক দেখান, তমুক দেখান প্র্যাক্টিসে আমার মানে সাধারণ মানুষের খুবই অসুবিধা হয়।
  • dc | 132.174.82.76 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৫০723263
  • আমি এটুকু বলতে পারি ছোটবেলায় টিকা ফিকাকে খুব ভয় পেতাম। তখন যদি পপার জানতাম তো ডাক্তারকে নাহয় দুকথা শুনিয়ে আসতে পারতাম :d
  • aka | 79.73.9.37 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৫১723264
  • ডিসি - ইন দা লং রান উই অল আর ডেড। ঃ)
  • aka | 79.73.9.37 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:০০723265
  • তো, বিজ্ঞান মনস্ক হব সে না হয় বুঝলাম কিন্তু তার সাথে বিজ্ঞানের লিমিটেশন নিয়েও কথা হওয়া জরুরী। বিজ্ঞান মানেই কেসি দাসের রসগোল্লা আর ধর্ম মানেই পাড়ার দোকানের কিটকিটে দানাদার এই বাই পোলারাইজেশন নিয়েই মনে হয় তক্কো চলছে। মানে যতটুকু বুইলাম। তাতে পপার চ, মমার চ, হয়ে ব্যপারটা খানিক বেলাইন হয়ে গেছে বলে মনে হল।

    আমার নিজস্ব মত হল, বিজ্ঞানে যতই গ্রে এরিয়া থাকুক, বিজ্ঞানই ভরসা। কিন্তু তার সাথে এই আলোচনাও জরুরী যে গ্রে এরিয়া আছে।
  • dc | 132.174.82.76 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:০৩723266
  • অফ কোর্স ঃ)
  • Rit | 213.110.242.20 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:১২723267
  • আকা,
    একদম ঠিক। এটা খুব কাছ থেকে দেখছিও।
  • ranjan roy | 132.176.179.18 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:৩৩723268
  • "আমার নিজস্ব মত হল, বিজ্ঞানে যতই গ্রে এরিয়া থাকুক, বিজ্ঞানই ভরসা। কিন্তু তার সাথে এই আলোচনাও জরুরী যে গ্রে এরিয়া আছে।"
    --- একদম খাপে খাপ!
  • Ishan | 80.199.224.22 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০০723270
  • আজ আর লেখা হলনা। খালি একটা প্রশ্ন করে যাই। গুলিসুতো একটি স্বয়ঙ্গ সম্পূর্ণ তত্ত্ব হলে বিগ্গ্যানের দিক থেকে কোনো সমস্যা হয় কি?
    হতশ্রদ্ধা না করে লজিকালি উত্তর দেবেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন