এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা— এই যোজনায় আপনার কি পাওয়ার কথা? আপনি কি পাচ্ছেন?

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৮১৪ বার পঠিত
  • ২০০৮-এর ১লা এপ্রিল দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের জন্য ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বা RSBY নামে এক স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছেন। অন্য স্বাস্থ্যবিমায় যার নামে বিমা তাকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। এই বিমায় কিন্তু সরকার সেই ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে দেন, ও গরীব মানুষ বিনামূল্যে একটা নির্দিষ্ট মূল্যমান অবধি অনেক চিকিৎসা সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানেই পেতে পারেন। কিন্তু গরীব মানুষ কি জানেন তাঁর কি পাওয়ার কথা? যা পাওয়ার কথা তা তিনি পাচ্ছেন কি?

    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা কাদের জন্য?
    এটা হল গরীব মানুষদের জন্য করা একটা স্বাস্থ্য বিমা। সাধারণত বিমা করলে যিনি বিমা করেন, অর্থাৎ বিমাকারীকে, কিছু টাকা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিমা কোম্পানিকে দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় বিমাকারীকে বিমা কোম্পানিকে কোনও টাকা দিতে হয়না। সরকার সেই টাকাটা দিয়ে দেন। বিমাকারীকে একটা কার্ড করাতে হয়। একে বলে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডে তথ্য সঞ্চিত থাকে—কারা পরিবারের সদস্য, ওই বছরে কতটা টাকা চিকিৎসার জন্য পরিবার ব্যয় করেছে আর কতটা টাকা তাঁরা আরও ব্যয় করতে পারেন, ইত্যাদি সবই ওই স্মার্ট কার্ড থেকে উপযুক্ত যন্ত্র দ্বারা দেখে নেওয়া যেতে পারে।
    •কিভাবে স্মার্ট কার্ড করাতে হয়?
    সরকার এই কার্ড করার জন্য বিভিন্ন গ্রামে শিবির করেন। দারিদ্র-সীমার নীচে থাকা সমস্ত পরিবারকে আগে থেকে করা তালিকার সাহায্যে চিন্হিত করা থাকে। তাঁদের সবাইকে পঞ্চায়েত অফিসের মাধ্যমে শিবিরে ডাকা হয়। সেখানে বিমাকারীকে পরিবার-পিছু এককালীন ত্রিশ টাকা দিয়ে কার্ড করাতে হয়। একটি কার্ডে এক পরিবারের পাঁচজন পর্যন্ত বিমার আওতায় আসতে পারেন। কোনও পরিবারে পাঁচজনের বেশি সদস্য থাকলেও কিন্তু পাঁচজনের বেশি বিমার সুবিধা পাবেন না। কোন পাঁচজন পাবেন সেটা পরিবারের প্রধান ঠিক করে দেন।
    •একটা স্মার্ট কার্ডে ক’টা ফটো থাকে?
    একটিই ফটো থাকে পরিবারের প্রধানের। বাকিদের ফটো তোলা হয়, এবং সরকারি কমপিউটারে সেটি থাকে, যাতে প্রয়োজন হলে বা বিতর্ক হলে দেখা যায় যে অন্যদের সবাই সত্যিই পরিবারের সদস্য কিনা। ফটো ছাড়াও থাকে সবার আঙ্গুলের ছাপ – তারও কাজ ওই একই।
    •স্মার্ট কার্ড করার শিবির অনুষ্ঠিত হবার কতদিনের মধ্যে পরিবারটি স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে পারেন?
    আগে ফটো তোলার শিবির হবার পরে স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে কয়েক মাস লেগে যেত। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফটো তোলার দিনই ওই শিবির থেকেই স্মার্ট কার্ড হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে তারপর কয়েকদিনের অপেক্ষা।
    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে কী কী চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়?
    যেখানেই হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার সে সমস্ত ক্ষেত্রেই RSBY-এর স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে চিকিৎসার সুযোগ আছে। হাসপাতাল সরকারি হোক আর বেসরকারি, বা হোক নার্সিং হোম, সবক্ষেত্রেই একই সুযোগ। শুধু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের ক্ষেত্রে তাদের নামটা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার তালিকায় নথিভুক্ত থাকতে হবে। যেহেতু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমগুলো সরকার থেকেই পয়সা পেয়ে যায়, এবং সেই পয়সাটা খুব কম কিছু নয়, তাই আজকাল খুব বড় বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোম ছাড়া অধিকাংশ নার্সিং হোম বা বেসরকারি হাসপাতাল RSBY-এর তালিকায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করছে। ফলে বহু জায়গায় এই বিমার সুবিধা মিলছে।
    •যেসব ক্ষেত্রে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার হয় না সেক্ষেত্রে বিমাকারী কি খরচ পাবেন?
    বেশ কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন না হলেও বিমাকারী সম্পূর্ণ সুবিধা পাবেন। একে পরিভাষায় বলা হয় ‘ডে কেয়ার’। যেমন ধরুন ছানি কাটার অপারেশন করে ডাক্তারবাবু রোগীকে একদিন ভর্তি রাখতে না-ও পারেন। সকালে অপারেশন করে সন্ধ্যেয় ছেড়ে দিতে পারেন। তবু রোগী কিন্তু বিমার পুরো সুবিধা পাবেন। এরকম কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্র আছে—যেমন কিডনির রোগীর জন্য ডায়ালিসিস। এইসব নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের একটি তালিকা আছে। এর বাইরে অন্য চিকিৎসার জন্য যদি রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হন তো তাঁকে বিমার সুবিধা দেওয়া যাবে না, নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে চিকিৎসা চালাতে হবে।
    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে আউটডোর চিকিৎসা অর্থাৎ ডাক্তারের ফি ও ওষুধের খরচ কি তাহলে এই বিমা থেকে পাওয়া যাবে না?
    সাধারণভাবে বলতে গেলে, না, পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেখানেও বিশেষ পরিস্থিতিতে এই খরচ পাওয়া যেতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি হবার আগে ভর্তি হবার জন্য কিছু পরীক্ষা করাতে হলে বা কিছু ওষুধ খেতে হলে হাসপাতাল সেই বিমাকারীকে সেসব বিনাপয়সায় করিয়ে দিতে পারে – কিন্তু প্রমাণ রাখতে হবে দেখাতে হবে যে তিনি যথাযথ ডাক্তারি পরামর্শক্রমে হাসপাতালে ভর্তি হবার আগের ধাপ হিসেবেই ওই পরীক্ষাগুলি করিয়েছিলেন, এবং পরে নিয়মমাফিক ভর্তিও হয়েছিলেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় হাসপাতালটি রোগীকে বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পাঁচদিনের ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে দেবে – সেটার খরচও হাসপাতাল বিমার টাকা থেকেই পেয়ে যাবে।
    •‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা কী?
    ‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা হল এই যে কিছু বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব কিছু হাসপাতাল নিখরচায় করে দেবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তি হবার আগের ওষুধ, অপারেশন, ভর্তি থাকাকালীন শয্যা, নার্সিং, চিকিৎসা, ওষুধ, খাবার, ও ছেড়ে দেবার পরে দরকারি ওষুধ ও ডাক্তারের কাছে ফলো-আপ – এই সব মিলিয়ে একটা থোক টাকা ধরা থাকে। পুরোটাই হাসপাতাল করে দেবে ও রোগীর কাছ থেকে এক পয়সা নেবে না – পরে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাছ থেকে পুরোটাই পেয়ে যাবে। ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর লিস্টে নেই, কিন্তু প্যাকেজে আসতে পারে, এমন কিছু কিছু চিকিৎসাতেও হয়তো হাসপাতাল আগেভাগে অনুমতি নিয়ে রোগীকে ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর সুবিধা দিতে পারে।
    •কোন কোন মেডিকাল রোগের ক্ষেত্রে ভর্তির সুবিধা পাওয়া যাবে?
    ব্যাক্টেরিয়াল মেনিঞ্জাইটিস, ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস-ঘটিত ব্রংকাইটিস, জল বসন্ত, ডেঙ্গু-জ্বর, ডিপথেরিয়া, আমাশা, মৃগী, ফাইলেরিয়াসিস, খাদ্য থেকে বিষ-ক্রিয়া, হেপাটাইটিস, ম্যালেরিয়া, হাম, প্লেগ, নিউমোনিয়া, সেপ্টিসিমিয়া, সব ধরনের যক্ষ্মা, টিটেনাস, টাইফয়েড, ভাইরাল জ্বর, মূত্র নালীর জীবাণু-সংক্রমণ, শ্বাসতন্ত্রের নীচের অংশের সংক্রমণ, ইত্যাদি যে সব রোগে ভর্তি থাকার দরকার হতে পারে, সে সব ক্ষেত্রে বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিনে সর্বোচ্চ মাত্র ৫০০টাকা খরচ বিমা কোম্পানি দেয়।
    •মেডিকাল রোগী কি কি পাবেন?
    জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, সব ধরনের ডাক্তারের ফি, রক্ত, অক্সিজেন, ওষুধ, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে মেডিকাল রোগীদের প্যাকেজে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। কিন্তু বলা বাহুল্য দিনে ৫০০ টাকা এসবের জন্য একান্তই অপর্যাপ্ত।

    •মেডিকাল রোগী আইসিইউ-তে ভর্তি হলে কি পাবেন?

    জেনেরাল ওয়ার্ডের মত সব কিছুই পাবেন। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দিনে ৭০০টাকা অবধি বিমা কোম্পানি দেবে।

    •সার্জিকাল রোগীর কি কি সুবিধা পাওয়ার কথা?

    অধিকাংশ অপারেশনের প্যাকেজ নির্দিষ্ট আছে। এই প্যাকেজে জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, নার্সিং-এর খরচ, শল্যচিকিৎসক, অজ্ঞান করার চিকিৎসক ও অন্যান্য চিকিৎসকের ফি, অজ্ঞান করার গ্যাস ও ওষুধ, রক্ত, অক্সিজেন, ওটি ভাড়া, শল্যচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ওষুধ-পত্র, প্রস্থেসিস ও ইমপ্ল্যান্টের দাম, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। সার্জিকাল প্যাকেজগুলোতে অর্থের পরিমাণ কিন্তু পর্যাপ্তই।

    কি অপারেশন?কত দিন ভর্তি থাকবেন?প্যাকেজে অর্থের পরিমাণ (টাকায়)
    ড্যাক্রাওসিস্টোরাইনোস্টমি (নেত্রনালীর অপারেশন)১ ৯০০০
    টনসিল অপারেশন (দুইদিকের)১৭০০০
    টনসিল অপারেশন (একদিকের)১৫৫০০
    অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২৬০০০
    অ্যাপেন্ডিক্সের ফোঁড়ার পূঁজ বার করা ২৭০০০
    স্তন কর্তন৩১২,২৫০
    স্তনের টিঊমার কেটে বাদ দেওয়া (একদিকের)২৫০০০/৬২৫০
    পেট কেটে পিত্তথলি বাদ দেওয়া ৩১৩,২৫০
    মলদ্বারের ফিসার কেটে বাদ দেওয়া২৭০০০
    মলদ্বারের পাশে ফিসচুলা অপারেশন২৭৫০০
    এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া ৩১০,০০০
    অপারেশন পরবর্তী ইনসিশনাল হার্নিয়া৩১২,২৫০
    আম্বিলিকাল হার্নিয়া ৩৮৪৫০
    ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া৩৭০০০
    একদিকের হাইড্রোসিল২৩৭৫০/৪০০০
    দুদিকের হাইড্রোসিল২৫০০০
    অর্শ ২৫০০০
    সিবেসিয়াস সিস্ট ভর্তি হবে না১২০০
    পেট কেটে জরায়ু কর্তন৫১০০০০/১২৫০০
    যোনি পথে জরায়ু কর্তন ৫১০০০০
    স্বাভাবিক প্রসব২২৫০০
    সিজারিয়ান সেকশন৩৪৫০০
    ল্যাপ অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২১১০০০
    ল্যাপ কোলিসিস্টেক্টমি৩১০০০০
    ছানি (একচোখের)ভর্তি হবে না ৩৫০০
    ছানি (দুই চোখের) ভর্তি হবে না ৫০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (একদিকের)৩৭০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (দুইদিকের) ৩১০,০০০
    মূত্রনালীপথে প্রস্টেট-কর্তন৩১৪,২৫০
    পেট কেটে প্রস্টেট-কর্তন২১৫,৭৫০
    মূত্রনালীকে বাড়ানো (ইউরেথ্রাল ডায়লেটেশন)১২২৫০
    সব প্যাকেজের সাম্প্রতিক অর্থমূল্যের জন্য ওয়েবসাইট দেখুন।

    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে গিয়ে রোগী কার সঙ্গে কথা বলে এইসব সুবিধা সম্পর্কে জানবে?
    যে সব হাসপাতাল বা নার্সিং হোম রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় নথিভুক্ত, সেখানকার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হল RSBY-এর জন্য একটি নির্দিষ্ট কাউন্টার রাখা। সেখানে এইসব সুবিধা কিভাবে পাওয়া যায় সেব্যাপারে রোগীকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। এমনকি যদি সেখানকার স্মার্ট কার্ড মেশিনটি কোনও কারণে কাজ না করে, সেই অজুহাতে রোগীকে ফেরানো বা টাকা চাওয়া চলবে না; হাসপাতালের দায়িত্ব হল যেভাবে হোক ওই কার্ডটির ব্যবহার করা। রোগীর দায়িত্ব কেবল যথাযথ কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে পৌঁছানো। পরিবারে নথিভুক্ত যে কোনও সদস্যের হাতের ছাপ দিলেই কার্ডটি মেশিনে নথিভুক্ত হবে, কার্ডে কত টাকা আছে জানা যাবে, এবং তত টাকার চিকিৎসা হাসপাতাল বা নার্সিং হোম (ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে) বিনা পয়সায় করাতে বাধ্য। তার চাইতে বেশি টাকা লাগলে সেটা আগেভাগে জানিয়ে রোগীর কাছ থেকেই সেই অতিরিক্ত পয়সাটা নিতে হবে।
    •তার মানে স্মার্ট কার্ড থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি রোগী পকেট থেকে খরচা করবে?
    আগেই বলা হয়েছে, পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচ সদস্য পিছু বছরে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা। ধরুন পরিবারে বাবা, মা, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলের হাইড্রোসিল চিকিৎসার জন্য চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে, এক মেয়ের পিত্তপাথুরির জন্য দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, মায়ের গর্ভাশয় কেটে বাদ দিতে গেছে চোদ্দহাজার টাকা। তাহলে মোট আটাশ হাজার টাকা একবছরে খরচ হয়েই গেছে। এবার বাবার চোখ অপারেশনের জন্য যদি সাড়ে তিন হাজার টাকা লাগে তো রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্মার্ট কার্ড থেকে দুহাজার টাকার বেশি দেবেনা, বাকি দেড় হাজার টাকা পকেট থেকে দিতে হবে। কিন্তু এই অপারেশনটা যদি সেই বছরের পরে করা যায় তো কার্ডে আবার ত্রিশ হাজার টাকা জমা করবেন সরকার, এবং বাবার চোখ অপারেশনের জন্য সাড়ে তিন হাজার হাজার টাকা পুরোটাই সেখান থেকে পাওয়া যাবে। কার্ডের হিসেবে কবে নতুন বছর শুরু হবে সেটা জানতে হবে। সেটা কার্ড দেবার সময়ে বলে দেওয়া হয়, তাছাড়া হাসপাতালে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টার থেকেও সেটা জেনে নেওয়া যায়।
    •যে সব অসুখ আগে থেকে আছে সে ক্ষেত্রে কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা পাওয়া যাবে?
    সাধারণত স্বাস্থ্যবিমা করার আগে থেকে কোনও অসুখ থাকলে বিমা কোম্পানিগুলো সেই অসুখ বা তার ফলে উদ্ভূত কোনও অসুখের চিকিৎসার জন্য টাকা দেয় না। ধরা যাক কোনও ডায়াবেটিস রোগী সাধারণ কোম্পানির কাছে পয়সা খরচ করে স্বাস্থ্যবিমা করালেন – বিমা কোম্পানি দেখে নিল বিমা করার আগে থাকতেই তাঁর ডায়াবেটিস রোগ আছে। এবার ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে খরচ করলে বিমা কোম্পানি একপয়সাও দেবে না। শুধু তাই নয়, ধরা যাক তাঁর ডায়াবেটিস-এর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে গেল, ডায়ালিসিস করতে হল। বিমা কোম্পানি ডায়ালিসিস-এর জন্যও একপয়সাও দেবে না। এদিক থেকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা অনেক বেশি, কেননা বিমা করার আগে থাকতে কোনও অসুখ থাকলেও সেব্যাপারে চিকিৎসার খরচ এই বিমাতে পাওয়া যাবে। তাই এই বিমা করার সময়ে বিমাকারীর কোনও অসুখ আছে কিনা সেসব পরীক্ষাও করা হয়না।
    •প্রসবকালীন খরচ কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়?
    হ্যাঁ। আগেই বলেছি স্বাভাবিক প্রসবে প্যাকেজ ২৫০০ টাকার, জটিল প্রসব বা সিজারিয়ান সেকশনে ৪৫০০ টাকা।
    •RSBY-তে রাহা খরচ পাওয়া যায়?
    একটা খরচ রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়, যা আর কোনও বিমায় পাওয়া যায় না। তা হল হাসপাতালে ভর্তির জন্য যাতায়াতের খরচ, বা রাহাখরচ। প্রতিবার হাসপাতালে ভর্তির জন্য বিমাকারী যাতায়াতের খরচ হিসাবে ১০০ টাকা পান। তবে একটি বিমা চালু থাকা অবস্থায় বিমাকারী পরিবার সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকার বেশি রাহাখরচ পাবেন না, তারপর হাসপাতালে ভর্তি হলেও নিজের খরচে যেতে-আসতে হবে। এই রাহাখরচ পাবার জন্য কোনও ট্রেন-বাসের টিকিট বা ওইরকম কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে হয়না।
    পরিষেবা-প্রদানকারী হাসপাতাল/নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কাকে জানাবেন?
    নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে দেখবেন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবীমা যোজনার একটি বোর্ড বা ব্যানারে RSBY-কার্ড হোল্ডারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য/ হাসপাতালের দায়িত্ব ও অধিকার লেখা আছে। সেখানে জেলার কিয়স্কের নম্বর পাবেন। টোল ফ্রি একটি নম্বর আছে ১৮০০-৩৪৫-৫৩৮।
    এছাড়া রাজ্যের সর্বোচ্চ নোডাল এজেন্সি-র কথা জেনে রাখুন—
    Director, ESI (MB) Scheme,
    Govt. of West Bengal,
    P-233, C.I.T. Scheme-VIIM, Bagmari Road, Kolkata-700054
    Contact No: (033)2355-6385 /6162 , 033-23556384(RSBY Cell)

    বাস্তবে RSBY-এর সুযোগ গরীব মানুষ কতটা পাচ্ছেন?
    •মাস খানেক আগে কুলপি-তে এক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক এক ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা গেল। উপস্থিত RSBY-কার্ড হোল্ডারদের অধিকাংশকে নিজের পকেট থেকে অতিরিক্ত খরচ করে চিকিৎসা পেতে হয়েছে। অ্যাপেন্ডিসেক্টমি বাবদ কার্ড থেকে কাটা হয়েছে ৬০০০ টাকা, ওষুধ-পথ্য-নার্সিং খরচ ইত্যাদি দেখিয়ে আরও হাজার সাতেক খরচ পকেট থেকে। সিজারের খরচ কার্ড থেকে এসেছে, সঙ্গে লাইগেশনের খরচ নেওয়া হয়েছে দেড় হাজার টাকা। ইত্যাদি, ইত্যাদি...।
    •কার্ড রিনিউয়ালের জন্য অনেকের কাছ থেকে ৫০টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, যদি এটা বিনামূল্যে করার কথা।
    •মুর্শিদাবাদের নিয়মিত সামাজিক কাজে যান এমন এক সিনিয়ার স্ত্রীরোগবিদের পর্যবেক্ষণ—প্রচুর বেড়ে গেছে জরায়ু-কর্তন অর্থাৎ হিস্টেরেক্টমির হার, স্ত্রীরোগবিদরা দিনে ২-৩টে করে হিস্টেরেক্টমি করছেন—অধিকাংশই যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া। (গত বছর প্রচারিত আমির খানের সত্যমেব জয়তের চতুর্থ এপিসোড মনে করুন। সেখানেও দক্ষিণের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলের কথা বলা হয়েছিল যেখানে মহিলাদের জরায়ু নেই।)
    • একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্প ও রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগঃ ২০১২ সাল থেকে এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর একটি প্রকল্প RSBY-এর সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট তথা MGNREGA – এর একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্পে বেশিদিন কাজ করেছেন (১৫ দিন বা তার বেশি) তাঁর ও তাঁর পরিবারকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যারা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন তাঁদের অধিকাংশই গরীব সেটাও ঠিক। কিন্তু এদের আলাদা করে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-তে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারটা গ্রামের গরীব মানুষেরা এখনও বুঝে উঠতে পারেন নি, ফলে এই সুযোগে গ্রামের করিতকর্মা মাতব্বরেরা বেশ কিছু বাবুলোকের নামও এই নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমাতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে এইসব বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দিয়েছিলেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নেন, আর গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন। ফলে রেকর্ড অনুযায়ী, ওই কার্ডগুলোর মালিকরা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন। যদিও এঁরা সত্যিকারের কাজ কিছু করেন নি, ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে চাপ দিয়ে কম কাজকে বেশি কাজ বলে জবরদস্তি করে দেখিয়ে সরকারের MGNREGA – র টাকা মেরে দিয়েছেন। কিন্তু খাতায়-কলমে তাঁরা ১৫ দিনের বেশি কাজ করেছেন বলে দেখানো আছে, ফলে তাঁরাই আবার নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমার অধিকারী হয়ে যান!
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র কার্ড ও তার সুবিধাভোগীদের নানা অভিজ্ঞতাঃ
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক প্রাপকের নামে ছাপানো স্লিপ আসে ও সেগুলো তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন তাঁরা পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে যেখানে এজেন্সিটি ক্যাম্প করেছে সেখানে এসে ফটো তোলার জন্য লাইন দেন। সকালের দিকে তুলনায় ফাঁকা থাকে, কেননা গ্রামের মানুষ তখন রুজি-রোজগারের ধান্দায় ক্ষেতে খামারে। এখানে প্রথমে ত্রিশটাকা দিয়ে রসিদ নেওয়া, তারপর ঘরের মধ্যে ক্যামেরার সামনে পরিবারের পাঁচজনের ছবি তোলা, পাঁচজনের বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া – পরিবারের কাজ শেষ। গ্রাম-পঞ্চায়েতের একজন কর্মচারী তাঁর বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে পরিবারটিকে সনাক্ত করতে সাহায্য করেন। ব্যাস - সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের কর্তার হাতে কার্ডটি তুলে দেওয়া হয়। কার্ডে পরিবার-প্রধানের মুখের ছবি ও নাম থাকে। বিগত বছরগুলোতে কিন্তু কার্ড পরে দেওয়া হতো। অনেক সময় ফটো তোলার পরে কার্ড মিলতে বছর গড়িয়ে যেত। তাই এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। যেমন পাট ছাড়ানোর সময়ে মানুষ সকালে আসতে পারেন না, তিনটের পর থেকে ভিড় জমান, আর রাত্রি আটটা পর্যন্ত কাজ করেও শেষ করা যায় না।
    কার্ড করতে আসা পরিবারগুলোর কথা থেকে জানা যায়, গত বছর কোনও পরিবার অপারেশন করিয়েছে, টাকা লাগেনি। কেউ হয়তো এসেছেন - কার্ড করানোর পরে তবে তাঁর বাবার চোখের ছানি কাটাতে পারবেন। কিন্তু ছুবান ভাই, পানসুন্দুরী বেওয়ারা অন্য কথা বলেন। কার্ড করে তাঁরা পরিবারের মানুষকে তালিকাভুক্ত নার্সিং হোমে ভর্তি করিয়েছেন, অপারেশন হয়েছে। তারপর ছুটির সময়ে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ কার্ডটি নিয়ে দুঃখ-দুঃখ মুখ করে বলেছেন – আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না, জাল কার্ড? নাকি আঙ্গুলের ছাপটা ভালো করে নেয় নি? যাহোক, তাঁদের তো টাকাটা দিতে হবে। তখন তাঁরা ধার-কর্জ করে টাকা দিয়ে এসেছেন। আসলে নার্সিং হোম কার্ড নিয়ে টাকা বের করে নিল, আর নিরক্ষর মানুষগুলোর কাছ থেকেও টাকা নিল – তাঁরা বুঝতেই পারলেন না।
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা – সব ঠিক আছে কি?
    MGNREGA –তে গ্রামের মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে নানা বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনাতেও সেরকম দুর্নীতি ঘটছে। সরকারের টাকা মারা যাচ্ছে, গরীবের কার্ড হচ্ছে না, হলেও অনেক নার্সিং হোম টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। এটা একটা চিন্তার বিষয়। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টারে কিভাবে কত টাকা নেওয়া হল সেটা সরল গরীব গ্রামীণ মানুষ, যাঁদের অনেকে আবার নিরক্ষর, তাঁরা ধরতেই পারেন না।
    কিছু দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও মুর্শিদাবাদের কিছু অভিজ্ঞতার কথা আগেই বলেছি।
    •এছাড়া আপনি কার্ড নিয়ে দেখাতে গেলেন—ভর্তির প্রয়োজন নেই তবু ভর্তি করে নেওয়া হল। নামমাত্র চিকিৎসা করে মিথ্যা নথিপত্র দিয়ে বেশি টাকা তুলে নেওয়া হল—এমনটা হচ্ছে।
    •ছোট কোন অপারেশন হল, যার প্যাকেজ-মূল্য কম। নথিপত্রে দেখানো হল বড় অপারেশন হয়েছে। বেশি টাকা কার্ড থেকে কেটে নেওয়া হল। আপনার পকেট থেকে টাকা গেল না বটে, কিন্তু এ বছরের মধ্যে পরিবারের কাউকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তখন বরাদ্দ কিন্তু কম হয়ে থাকবে।।
    মানুষকে সচেতন করার জন্য এ লেখা যাতে তাঁরা RSBY-এর সুবিধা নিতে পারেন, কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়—RSBY-ই কি সমাধান? গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ করছে, কিন্তু সেটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয়, বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিং হোমে। সরকার যে খরচ করছে তা কিন্তু জনসাধারণের করের-ই টাকা। তাহলে টাকার অভাবে সরকার ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে এগোতে পারছেন না, এটা তো বলা যায় না।
    সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।
    দ্বাদশ পরিকল্পনার আগে যোজনা কমিশন ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে কি কি করণীয় সে বিষয়ে সুপারিশ করতে এক উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেন। ডা শ্রীনাথ রেড্ডির নেতৃত্বাধীন সে দলের সুপারিশ ছিল সরকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় সামান্য বাড়িয়ে প্রাথমিক, দ্বিতীয় ও সর্বোচ্চ স্তরের চিকিৎসা বিনামূল্যে সমস্ত নাগরিককে দিক। তাঁরা স্বাস্থ্যবিমার বিরুদ্ধে বলেন, স্বাস্থ্যপরিষেবার বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেন। যোজনা কমিশন বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ মানে নি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ বাক্যবন্ধটুকু রেখে দিয়ে তারা বলছে সরকার পরিষেবা-প্রদানকারীর ভূমিকা থেকে সরে এসে ব্যবস্থাপনার কাজ করবে। তাদের প্রস্তাব কেবল গরীব মানুষদের জন্য RSBY নয়, সব নাগরিকের জন্যই এমন বিমা ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে প্রিমিয়াম (জনগণের পয়সায়) দেবে সরকার, একটা নির্দিষ্ট সীমা অবধি খরচ কার্ডধারী পাবেন, তার ওপরে খরচ করতে হবে নিজেকে।
    স্বাস্থ্যবিমা সমাধান হতে পারে না, সবার জন্য স্বাস্থ্যের সবটুকু প্রয়োজন সরকারকে মেটাতে হবে এই আমাদের দাবী হওয়া উচিত। কিন্তু যতক্ষণ না তা হচ্ছে, ততদিন RSBY-এর যতটা সুবিধা আপনার প্রাপ্য বুঝে নিন—আপনার প্রাপ্যে যেন ভাগ না বসায় স্বাস্থ্য-ব্যবসায়ী।

    এই রচনায় অফুরান সাহায্য নিয়েছি ডা জয়ন্ত দাসের। তিনি যে পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক সেই ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’ পত্রিকার দশম সংখ্যায় প্রকাশিত বাবু সাহার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বিষয়ক একটি প্রবন্ধের প্রচুর সাহায্য নিয়েছি আমার রচনায়।

    দুর্বার ভাবনা পত্রিকার সেপ্টেম্বর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৮১৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aka | 78.190.40.129 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৪৫47149
  • মনিটরিংঃ

    এই থ্রেডে লেখাপত্তর পড়ে আবার মনে হল লোকে পার্সেপশনে চলে। ডিটেল কিন্তু আছে। আর পুরো ব্যবস্থাটা নতুন, এখনও সাকসেস স্টোরিও খুব বেশি নেই, আর ভেঙে পড়েছে এমন স্টোরিও বেশি নেই।

    যদি মনে করেন একটি সিস্টেম এল এবং ভারতে বিনা বাঁধায়, বিনা করাপশনে, প্রথমদিন থেকে এফিশিয়েন্ট হবে তাহলে সেটা হবার নয়। যদি বলেন এই সিস্টেমেও দূর্নীতি হচ্ছে, হতে পারে, কিন্তু আপাদমস্তক পড়ে মনে হল যে এই ব্যবস্থায় ট্র্যাকিংএর ব্যবস্থা খুব ভালো। সরকারী ব্যবস্থার ভেঙে পড়ার ও টাকা নয়ছয়ের উদাহরণের সাথে মেলাতে গেলে আপাতত যেটুকু দেখেছি তা নগণ্য।

    সব মিলিয়ে একটি সিস্টেমকে জাম্পস্টার্ট দেবার চেষ্টা, সাথে ভালো প্ল্যানিং। আমি আরও দেখব। সময় গেলে বোঝা যাবে এ শুধু পেপারে নাকি ঠিকঠাক ইমপ্লিমেন্টেডও হবে। আপাতত আর কিছু বলার নেই, বললে রিপিটিশন হবে।

    মনিটরিং কি করে হয়ঃ

    Information relating to transactions that take place each day at each hospital is sent through a phone line to a district server. A separate set of pre-formatted tables are generated for the insurer and for the government respectively. This allows the insurer to track claims, transfer funds to the hospitals and investigate in the case of suspicious claim patterns through on-site audits
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:১৮47150
  • দুর্নীতি আপাততঃ বাদ। বাংলা কথা হল পুরো ব্যবস্থাটাই আগের চেয়ে বেশি অদক্ষ। কারণ ট্র্যাকিং মেকানিজমটা শুধু টেকনলজি নয়, মানুষের কাজ। সেটা হিসেবে নেই।
    টেকনোলজি অংশটা আলাদা করে খুবই ভালো। ওটা হওয়া দরকার।

    আর পাসপোর্ট নিয়ে একটি জিনিস জানার আছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন এখনও হয়? তাতে কি পয়সা লাগে, না লাগেনা?
  • সিকি | 127.192.16.231 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৪৭47151
  • এখনও হয়। পয়সা লাগে। তবে তৎকালে করালে আগে পাসপোর্ট বাড়িতে আসে, পরে পিভি হয়, তখন পুলিশকে পয়সা না দিয়ে রোয়াব দেখানো যায়। পুলিশেরও ক্ষমতা আছে তৎকালে পাওয়া পাসপোর্টকেও ক্লিয়ারেন্স না দেবার। সেক্ষেত্রে এমনিতে কোনও অসুবিধে হয় না, দিব্যি দেশেবিদেশে ঘুরে বেড়ানো যায়, কেবল ওয়ার্ক পারমিট বানাবার সময়ে যখন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে হয়, তখন সেই পয়সা দিতেই হয়। এই আর কি।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:১৫47152
  • তাহলে বেসরকারীকরণ হয়েছে কোন অংশটা? শুধু অ্যাপ্লিকেশন জমা নেওয়া?
  • জয়ন্ত | 127.194.83.32 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:১৭47141
  • একটা সিস্টেমের কথা ভাবা হল, যেখানে সরকারি ব্যবস্থা এড়িয়ে কাজ হবে, ফলে এফিসিএন্সি বাড়বে। কিন্তু সরকারকে সেটা মনিটর করতে দেওয়া হল। কম সরকারি লোকে মনিটর করবেন, তাঁরা সৎ হবেন, ফলে করাপশন থাকবে না বা কমবে। আর ইন্সুরেন্স কোম্পানি নিজের লাভের জন্য, বেসরকারি হাসপাতাল ইন্সুরেন্স কোম্পানির চাপের জন্য, ভাল কাজ করবে।

    এপর্যন্ত শুনে কেউ কনভিন্সড হতে পারেন, হ্যাঁ, পরিকল্পনা ভাল। ডিটেলে পড়ে আমার অবশ্য ভাল মনে হয়নি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হয়েছে; তবে সেটা সবার মনে হবে তা নয়।

    কিন্তু এর কাজকর্ম দেখেও কারও যদি মনে হয়, না, এফিসিএন্ট ব্যবস্থা, তাহলে খুব সমস্যা। সেই কু দেখিবনা শুনিবনা বলিবনা। ব্যঙ্গ না, আমি দুর্ভাগ্যক্রমে এই সিস্টেমটা প্রায় প্রত্যেকদিনই দেখছি। অনেকে খুশি, এবং তার মধ্যে অনেক গরীব মানুষ, জেনুইন বেনেফিসিয়ারি, আছেন। কিন্তু সিস্টেম এফিসিএন্সি? বেশ খারাপ।

    একদিকে অনেক গরীব মানুষ, জেনুইন বেনেফিসিয়ারি, উপকার পেয়েছেন। অন্যদিকে একটা নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে। এঁরা এতদিন প্রাইভেট মেডিক্যাল সিস্টেমের কাছে অপাংক্তেয় ছিলেন। এখন জাতে উঠেছেন। বিনা পয়সায় সুবিধাভোগীর বদলে কনজিউমার হয়েছেন। কিন্তু সেটা হওয়াতে হাজার শকুনির চোখ এঁদের দিকে। সহজেই এঁদের বুঝিয়ে কম সার্ভিস দিয়ে বেশি টাকা কেটে নেওয়া যায়। কার্ড থেকে টাকা কেটে নিয়ে বলা যায়, টিপছাপ মিলল না, নগদ টাকা দাও। অকারণে অপারেশন করা যায়।

    মনিটরিং? হ'লে ভাল ছিল, কিন্তু তার লক্ষণ দেখছি না যে। কেন হচ্ছে না, কেন হবার বেশি সম্ভাবনা নাকি ছিল, সেসব তত্ত্বালোচনা দরকার, কিন্তু এখনও দেখছি না যে সরকারি ব্যবস্থার চাইতে মনিটরিং বেটার। যেটা দেখছি সেটা হল সাইফনিং অফ ফান্ড। সরকারি টাকা, মানে আমার টাকা, ইন্সুরেন্স কোং আর নার্সিং হোম খেয়ে নিচ্ছে। সেটা আটকাতে প্রচার করার মতো লোকের অভেব (কেন অভাব তা আকা-ই সবচে ভাল বলেছেন-- ক্ষমতাশালীদের মধ্যে দু-একজনের বেশি সৎ লোক পাবেন না)। এমন অবস্থা কিকরে বদলাবে বুঝছি না।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৩47153
  • আর আরেকটা বড় কনসার্ন হল, এভাবে যে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার হাল পুরো ইসেতে পাঠানো হচ্ছে, এর পরে বিপিএল ঊর্ধ্ব বাকি সাধারণ মানুষের কী হাল হবে ? যাঁরা বিপিএল নন সেই সব মানুষ চিকিৎসা করাতে গিয়ে নতুন করে বিপিএল হবেন। এমনিতেই এখনই সেটা হয়, আরো বাড়বে।
  • Blank | 69.93.196.176 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৮47154
  • আর পয়সা লাগে জমা দেওয়ার সময়। পয়সা না দিলে এই ডকু চাই, ঐ ডকু চাই বলে ঘোরাবে
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৩১47142
  • 'বেসরকারি হাসপাতালগুলো ইন্সিওরেন্স কোম্পানীর চাপের জন্য ভাল কাজ করবে। ' সে সিস্টেমও তো এটাতে হয়নি। ভাল কাজ বলতে পরিষেবার কোয়ালিটির কথা বলছি। এই গোটা সিস্টেমটায় সেটার মনিটরিং এর খাতায় কলমে ব্যবস্থাই বা কোথায় ?
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৪৭47143
  • পাসপোর্ট সার্ভিস বেসরকারী হাতে গিয়ে কিন্তু দেখা যাচ্ছে জাস্ট ভাবা যায় না ভালো হয়েছে। একটা ঘটনা, যে দালাল, ফড়ে, পার্টিক্যাডারদের - অস্বস্তি সত্ত্বেও সরকার কড়া হাতে হ্যান্ডেল করতে পারে না, তাদের "এখন তো ঐ কোম্পানি সব দেখছে, এখন তো এসব ভেতর থেকে ব্যবস্থা করা যাবে না, একটু বোঝ" বলাটা সহজ হয়।
  • ঈশান | 60.82.180.165 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৫১47144
  • আবার পূর্ত দপ্তর দীর্ঘদিনই এই মডেলে চলছে। মানে বেসরকারি ঠিকাদাররা রাস্তা বানায়, সরকারি দপ্তর মনিটার করে। তাতে এফিশিয়েন্সি কিছু বাড়েনি। বরং ঘুষ খাবার একটা জায়গা বেড়েছে। পুরোটাই সরকার কী চাইছে, তার উপর নির্ভর করছে।
  • aka | 78.190.40.129 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:২৭47155
  • এইটা বুঝছি না, মেডিকেইডের সাথে সরকারের হাসপাতাল তৈরির তো কোন বিরোধ নেই। দরিদ্রদের জন্য যদি ফ্রিতে কিছু দিতে হত সরকারকে এমনিতেই খরচ করতে হত, যদি নিজে সবকিছু ম্যানেজ করত তাহলে ৮১০ কোটির কিছুটা যেত নিজের লোকজন রিক্রুট করতে, এবং অন্যান্য খরচে। এখন সেই ম্যানেজমেন্টটা অন্য কাউকে দেওয়াতে উনিশ বিশ পার্থক্য। এর সাথে আমি অন্তত হাসপাতাল তৈরির কোন বিরোধ দেখতে পেলাম না।

    আর শুধু টেকনলজি নয় তো, অডিটের ব্যবস্থা আছে।

    This allows the insurer to track claims, transfer funds to the hospitals and investigate in the case of suspicious claim patterns through on-site audits
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩৫47156
  • সেটা নিয়ে জয়ন্তদা উপরেই লিখেছেন। কিছুটা তুলি।
    'সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হবে, তেমন ভরসা উবে গেছে। আর আজকাল সেখানেও পয়সা নেওয়া শুরু হয়েছে। এমন সময় R এর আবির্ভাব কোনও নিছক সমাপতন নয়। প্রথমে মানুষ দেখবেন, তাঁদেরও খাতির আছে। এতদিন দুচ্ছেই করা থেকে বদলে এখন নার্সিং হোম তাঁদের আসুন বসুন করছে। তাঁর চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তারবাবু মেডিক্যাল রেপ-এর সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত থাকছেন না। এভাবে প্রাইভেট ভাল, গরমেন্ট খারাপ, এটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। এরপর এঁরা কোন দুঃখে দাবি তুলবেন, সরকারি হাসপাতালে সুবন্দোবস্ত হোক? তুলবেন না। পার্টির নেতার কাছে R কার্ডের জন্য ধর্না দেবেন। সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার গঙ্গাযাত্রায় বাধা থাকবে না। সঙ্গে সঙ্গে সরকারি ডাক্তারি শিক্ষাব্যবস্থাটাকেও বিসর্জন দেওয়া যাবে।'

    পুণ্যদার লেখা থেকেও তুলি।
    'গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ করছে, কিন্তু সেটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয়, বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিং হোমে। সরকার যে খরচ করছে তা কিন্তু জনসাধারণের করের-ই টাকা। তাহলে টাকার অভাবে সরকার ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে এগোতে পারছেন না, এটা তো বলা যায় না।
    সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।'

    অন্য অনেক পোস্টেও লেখা হয়েছে। আর এটাও লেখা হয়েছে, এই চিকিৎসার পিছনে কত খরচ হচ্ছে। সেটা এই বিপুল পরিমাণে অর্থব্যয়ের চেয়ে অনেক কম। সরকারের মানে আমাদের সেই টাকাটা ইন্সিওরেন্স কোম্পানি বা বেসরকারি হাসপাতালের পিছনে না গিয়ে সরকারি হাসপাতাল পরিষেবায় গেলে সাধারণভাবে সব মানুষেরই অনেক বেশি উপকার হত।
  • aka | 78.190.40.129 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:০৪47157
  • কিন্তু পার্টির নেতার কাছে ধর্ণা দিয়ে তো R কার্ড পাওয়া যাবে না তো।

    আবার বলব ভালো করে ভেবে দেখতে।

    দুটো আলাদা পলিসি এক, গরীবদের জন্য সরকারী খরচে ফ্রি বা বলা ভালো নির্দিষ্ট নিয়মে চিকিৎসার ব্যবস্থা, দুই, সবার জন্য চিকিৎসার সুব্যবস্থা। ভারতে সাধারণ লোকের জন্য চিকিৎসার পেছনে সরকারী ইনভেস্টমেন্ট খুব কম। এটা একটা ইস্যু। অন্যদিকে এটাও ইস্যু এবং কম বড় নয় যে গরীবদের জন্য কিছুই নেই।

    সরকার ঠিক করেছে গরীবদের জন্য কিছু টাকা খরচ করবে। ধরা যাক সেটার পরিমাণ ১০০ টাকা। এই ১০০ টাকার মধ্যে ৮০ টাকা সরাসরি পরিষেবায় যাবে আর ২০ টাকা যাবে সেই পরিষেবা ম্যানেজ করতে। দুটো অপশন ছিল সরকার নিজেই ২০ টাকা খরচ করে পরিষেবা ম্যানেজ করতে পারত। বা এই ২০ টাকা অন্য কাউকে আউটসোর্স করে দিল। হয়ত সরকার খরচ করলে এই ২০ টাকার জায়গায় ১৬ টাকা খরচ হত যেহেতু প্রফিট থাকত না, আবার হতে পারত এই ২০ টাকার জায়গায় ২৫ টাকা খরচ হল কারণ, দূর্নীতি, ইনফিশিয়েন্সি ইত্যাদি।

    সরকার তাই টেকনলজির সাহায্যে ভালো মনিটরিংয়ের বন্দোবস্তো করে, এই ২০ টাকার ম্যানেজমেন্টের কাজটি আউটসোর্স করেছে প্রাইভেস্ট সংস্থাকে। আর প্রাইভেট সংস্থার টিকি বাঁধা আছে, যদি ঠিক কাজ করে তবে প্রফিট করবে, যদি দূর্নীতি করে তাহলে পরের বার বরাত যাবে।

    আর R কার্ড নিয়ে গরীব মানুষ সরকারী বা বেসরকারী যেকোনো জায়গাতেই পরিষেবা নিতে পারবে।

    এবারে এটা করে দ্বিতীয় ইস্যু অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে সবার জন্য স্বাস্থ্যের ভালো ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরির কোনো সুরাহা এতে হল না। কিন্তু সেটা অন্য দাবী।

    উল্টোদিকে ধরা যাক সরকার ঠিক করল না এসব না করে সবার জন্য স্বাস্থ্যর ব্যবস্থা ঠিক করলে গরীবদের অবস্থা আপনা আপনিই ঠিক হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে তাতে ১০০ টাকার থেকে অনেক বেশি টাকা লাগবে, আর সময়ও অনেক অনেক বেশি লাগবে। ততদিনে বহু গরীব বিনা চিকিৎসায় থাকবে। এটা পুরো মেডিকেইড সিস্টেমকে জাম্প স্টার্ট দেবার প্রচেষ্টা। আমি এর মধ্যে কোন দূরভিসন্ধি দেখতে পাই নি। বরং মনে হয়েছে মানবিক।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:১৪47158
  • এখন ৮০ টাকাটাও তো সরকারি পরিষেবায় যাচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছে। আর ভাগটা বোধহয় ৮০,২০ হবে না। ২৫, ৭৫ হবে। আগে তাই নিয়ে অনেকবার লিখেছিলাম। সরকারের খরচের সিংহভাগ যাচ্ছে ইন্সিওরেন্স কোম্পানির পিছনে।
    আর সবার জন্য স্বাস্থ্য করার জন্যও তো বসে থাকতে বলা হচ্ছে না, এই পরিমাণ টাকা সরকার এখনি খরচ করতে পারে, করছে। তো, সেই সুবিধাটা সরাসরি বিপিএল পপুলেশনের জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে দেওয়া হচ্ছে না কেন ? সরাসরি এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দিলে এর থেকে অনেক কম টাকা খরচ করে হয়ে যেত, বাকি টাকা খরচ হত সরকারি পরিষেবা উন্নত করতে।
  • guru | 127.194.199.131 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:২২47159
  • ইনসিওরেন্সের কেস আপানারা জানেন না? বুঝে নিন। আমাদের আপিসে প্রতি বছর সিটিসি থেকে ১৮০০০ কেটে নেওয়া হয়, মেডিকেল ইনসিওরেন্সের প্রিমিয়াম হিসেবে। ২ লাখ না কত যেন ভ্যালু। মানে বছরে ২ লাখ অবধি চিকিৎসার খরচ আপনি পাবেন। এবার বাবার ছানি অপারেশন হল ।দুই চোখের। ১৫০০০ করে প্রতি চোখের সিলিং ছিল। আমি ৩০০০০ পেয়ে গেলাম। সেই বছরে আমি লাভ করলাম। ১৮ প্রিমিয়াম দিয়ে ৩০ ফেরত নিলাম। তবে ইনসিওরেন্স কোং এর লাভ কোথায়? আমি ৩ বছর চাকরি করছি, ঐ একবারই মেডিকাল ইমার্জেন্সি হয়েছে। অর্থাৎ এখনো অবধি ৫৪ হাজার আমি প্রিমিয়াম দিয়েছি, ফেরত পেয়েছি ৩০ হাজার। কোম্পানীর হিসেবে কিন্তু আমাকে সুবিধেই দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর ২ লাখ অবধি মেডিকাল এর টাকা আমি তুলতে পারতাম। পুরো ফ্যামিলির জন্যে।
    অর্থাৎ ৩০হাজার বছরে একটা পরিবারকে মেডিকাল ফেসিলিটি দেওয়ার জন্যে সরকার কে কিন্তু প্রিমিয়াম খুবই কম দিতে হচ্ছে। হয়তো ৩০০০। এবার এই ৩০০০ করে পরিবারপিছু টাকা সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোয় ঢেলে খুব কিছু সুবিধে হত না বছরে। লটারির মতো। ১০০ টা পরিবারের জন্যে ৩লাখ টাকা সরকার খরচ করছে। ইনসিওরেন্স কোং এর থেকে কিন্তু ৩০ লাখ টাকা গরীবেরা বের করে আনতে পারে। এক বছর পরেই ইনসিওরেন্স কোং লাটে উঠে যাবে। পরের বছর অন্য কোং কে ধরা হবে। কারণ ঐ কোং গত বছরের হিসেব দেখিয়ে প্রিমিয়াম বাড়িয়ে নিতে চাইবে। আমাদের কোং এও তাই হয়। প্রতি বছর নতুন নতুন ইনসিওরেন্স কোং কে বরাত দেওয়া হয়। এটা সচেতনতা থেকে হবে।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৪৬47160
  • ৩ লাখ টাকা প্রিমিয়ম নিয়ে ৩০ লাখ টাকার চিকিৎসা? ওমনাথ তো বীমা সংস্থাকে গৌরী সেনের দানছত্র কোংএ পরিণত করল। :)

    আকাকে পরে লিখছি।
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৩১47145
  • ঐ ডাইরেক্ট পিপুল ম্যানেজমেন্ট টা চাপের। ঠিকাদার একজন লোক। তার জায়গায় একটা সংস্থা হলে, সরকারী দপ্তরের মনিটরিং ব্যপারটা থ্রু সাইফাই সিস্টেম হলে, ধরুন পুরোটাই অনলাইন কোনো সফটওয়ার সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে, হলে, এই আপিস কেরানী খাতাপত্র ঘুষ সই ফাইল নড়ানোর গল্পগুচ্ছ হাটালে এফিসিয়েন্সি বাড়তই। আপনি কি মনিটরিং সিস্টেমের এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কথাই বলেন? ই-গভর্নেন্স ইত্যাদি? তো, সেখানে কিছু সফটওয়ার কোম্পানীর ও সেই ইন্ডাস্ট্রির কর্মীদের করে কম্মে খাওয়ার সুযোগ করে দেওয়াটাও কিন্তু ইনক্লুডেড। বেটার পরিসেবা জনিত এক্স্ট্রা খরচটা তারা খাবে, এই তো? জনতার ট্যাক মুচড়ে একস্ট্রা টাকা ঠিকই নেওয়া হবে।
  • aka | 78.190.40.129 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৫৬47161
  • বীমা হল টাকা খরচ করে মনের শান্তি। আমাদের গাড়ির জন্য মাসে মাসে ইন্সিওরেন্স কিনি। ১০ বছরে খুব কম করে হলেও ১৫০০০ ডলার ইন্সিওরেন্সের পেছনে গেছে। এখনই অবধি একবারই ক্লেম করেছি তাতে খুব বেশি হলে লেগেছিল ২০০০ ডলার। মানে বাকি ১৩০০০ ডলার শুধুই খরচ। কিন্তু এতে করে আমার মনের শান্তি কিনলাম, যদি এর মধ্যে গাড়ি টোটাল হত? রিস্ক মিনিমাইজেশন।

    এবারে আর একটু বোধহয় লেখার বাকি আছে RSBY নিয়ে। তো সরকার এই ১০০ কোটি টাকা খরচ করার জন্য মধ্যে এক প্রাইভেট কোম্পানিকে রেখেছে। ধরা যাক ৪ টি এমন কোম্পানি আছে। প্রতি কোম্পানিকে সরকার থোক ২৫ টাকা দিল। এতে করে তাকে তার জায়গার সমস্ত দরিদ্রকে পরিষেবা দিতে হবে। ধরা যাক তার এরিয়াত ৫ জন দরিদ্র। আর প্রতি দরিদ্রের জন্য ধার্য্য আছে ৬ টাকা করে। যদি প্রতি দরিদ্র চিকিৎসার জন্য যায়, তাহলে কোম্পানির ক্ষতি হল কারণ সেক্ষেত্রে ৩০ টাকা খরচ করল। আবার যদি যদি ৪ জন যায় তাহলে কোম্পানি ১ টাকা লাভ করল।

    কোম্পানিগুলো বিদেশে এই রিস্ক দুই ভাবে নিয়ন্ত্রন করে। এক, যদি সত্যিই দেখে এতে কুলোচ্ছে না তাহলে সরকারের সাথে টাকা বাড়ানোর জন্য নেগোশিয়েট করে, আর দুই, মেম্বারদের স্বাস্থ্য সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল করার জন্য বিভিন্ন আউটরিচ প্রোগ্রাম করে। এথিকাল ওয়েতে। আইন কানুন ইত্যাদি রয়েছে ঠিক এইভাবে কাজ গুলো করতে।

    ভারতে অনেক ভাবে জালি হতে পারে।

    কেস ১ঃ কোম্পানি ৫ জনের বদলে ৩ জনকে ইন্সিওরেন্স দিল, তাদের পুরো খরচা দিয়েও কোম্পানির ৭ টাকা লাভ।
    কি করে রুখবেনঃ এরিয়ায় যতজন দরিদ্র আছে তাদের লিস্টি মিলিয়ে মিলিয়ে চেক করুন কার্ড পেল কিনা। এখন বোধহয় কোন ডিস্ট্রিক্ট অফিসিয়ালের সামনে এটা হয়।

    কেস ২ঃ হতে পারে হসপিটাল ২ টাকার চিকিৎসা করিয়ে লিখিয়ে নিল ৬ টাকার চিকিৎসা হয়েছে। পরে ইন্সিওরেন্স কোম্পানির সাথে ৪ টাকা ভাগ করে নিল।
    কি করে রুখবেনঃ অটোমেটেড ওয়েতে, সাসপিসাস ক্লেম ডিফাইন করে মেশিন দিয়ে সেরকম ক্লেম এলেই ঘ্যাঁক করে ধরা। জালি ধরা পড়লে দৃষ্টান্তমূলক ফাইন + বরাত জীবনের মতন ক্যানসেল, হসপিতালের জমানত বাজেয়াপ্ত।

    হবে কি? বলা মুশকিল, তবে গিভেন সিনারিও আমার মনে হয়েছে এটাই বেস্ট পসিবল সলিউশন। নয় অনেক বেশি টাকা লাগবে, বা অনেক বেশি সময় লাগবে, বা দূর্নীতির জন্য লাভের গুড় পিঁপড়েয় খাবে, যেমন বিপিএলে হচ্ছে। আর ঠিক এই কারণেই বিপিএল কার্ড নয় কারণ সেটি অলরেডি ভুলভাল লোকের হাতে।
  • aka | 78.190.40.129 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:১৫47162
  • ও লাস্ট কথাঃ

    এবারে সরকারের কিছু যায় আসে না যদি কোম্পানিটি ২৫ টাকা থেকে ২০ টাকা লাভ করে যতক্ষণ না ন্যায্য কারুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না, বা ন্যায্য কাউকে কার্ড দেওয়া হচ্ছে না। এবারে প্রতিটা কোম্পানিই যদি ২০ টাকা লাভ করে তাহলে ১০০ টাকার মধ্যে ৮০ টাকা ইন্সিওরেন্স কোম্পানির ঘরে গেল। কিন্তু সেটা বাই ডিজাইন। পুরোটা সরকার করলে এই ৮০ টাকা সরকারের ঘরে থাকত। কিন্তু অন্যদিকের রিস্ক গুলো হল R কার্ডের পরিণতি শেষে বিপিএল কার্ডের মতন হল, সরকার দেশের প্রান্তরে প্রান্তরে কার্ড বিলি করাই অর্গানাইজ করে উঠতে পারল না, অনেক সময় লাগল।

    সত্যি যদি মনিটরিং ঠিক করে হয় তাহলে এই মার্জিন এত হবে না, কারণ আমাদের দেশের লোকের স্বাস্থ্যের সার্বিক অবস্থা, আর যারা এদ্দিন চিকিৎসা ঠিকমতন করায় নি তাদের অবস্থা আরও খারাপ। অতএব এই ৮০ঃ২০ রেশিও যদিও বা দু একজায়গায় দেখা যায়, তাহলেও বেশিদিনের নয়।
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৫৩47146
  • ইনসিওরেন্স কোংগুলোকে এই যে টাকা পাওয়ার উপায় করে দেওয়া হল, সরকার জনতার ট্যাক্সের পয়সা দিয়ে সেটা করলেন - কেন? সরকারের কি লাভ হল? খুব সহজ, ইনসিওরেন্স কোং গুলো এই খাওয়ার ভাগ বখরা সরকার ও রুলিং পার্টির লোকেদের, মন্ত্রিদের হাতে দিয়ে আসছে (বেসরকারী হাসপাতালের সাথে মিলেমিশে নেগোশিয়েট করে যদ্দুর সম্ভব খাওয়া দাওয়ার পরে)। এই সমস্ত পলিসি মেকিং-এর জন্যেই মন্ত্রিদের সুইস ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টগুলো গায়ে গতরে বেড়ে উঠছে।

    ঠিক। হতেই পরে। কিন্তু আরো একটা দিক রয়েছে। আপনার কোং বিড করে অর্জিত কোনো কাজ আউটসোর্স করে? কেন করে? আপনার পাড়ার দরজি মাপ নিয়ে ভালো জামা প্যান্ট তৈরি করে আপনার কিনে দেওয়া কাপড়ে? তবে আপনি ব্র্যান্ডেড পোষাক কেনেন কেন? আপনার পাড়ার ছুতোর মিস্ত্রি আপনার কিনে দেওয়া মাল মশলা কাঠ প্লাই দিয়ে ভালো আসবাব তৈরি করে দেয়? তা হলে আপনি বেশি দাম দিয়ে রেডিমেড ফার্নিচার কেনেন কেন, এমনকি যখন জানেন সেগুলো ততখানি টেকসই ও নয়, ডাস্টউডের তৈরি? বাড়িতে ভালো খাবার দাবার তৈরি করতে পারেন তো? স্বাস্থ্যকর? হোটেলে কেন খেতে যান?
  • Blank | 180.153.65.102 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ১১:২৮47147
  • পাসপোর্ট আপিসের অবস্থাও তাই। নিজের চেষ্টায় কিছুতেই ডেট মেলেনা। আপিসের নীচে দালাল ঘোরে ১০০০ থেকে ৩০০০ অব্দি রেট - মুহুর্তে ব্যবস্থা হয়ে যায়।
    আর ইদানিং আপিসের মধ্যে বেসরকারী সংস্থাটির কর্মচারীরা ঘুষ খায়।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:০০47173
  • আর বিহারে তো পড়লাম, ইন্সিওরেন্স কোং ঠিক করে কোন কোন হাসপাতাল তালিকাভুক্ত হবে! সেটা তো সাঙ্ঘাতিক । এটা অন্য রাজ্যেরও নিয়ম কিনা কেউ কনফার্ম করুন।
  • জয়ন্ত | 127.194.80.167 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:০১47174
  • ইন্সুরেন্স সম্পর্কে অনেক কথা বললেন অনেকে, খুব ভাল হল। এবার অনেকটা নিশ্চিন্তে লিখতে পারব।

    ধরুন পরিবারপিছু ৩৮০ টাকা নিয়ে একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানি (সরকারি না বেসরকারি, তাতে এখানে কিছু এসে যাবে না, Arpan ও cm খেয়াল করবেন প্লীজ) ইন্সিওর করেছে। ১০০ টি পরিবারকে সে ইন্সিওর করেছে, তিন লাখ আশিহাজার টাকা পকেটে ভরেছে। এইবার একবছর তাকে ইন্সিওরড সমস্ত পরিবারকে স্বাস্থ্যখরচ (নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে, যেমন পুণ্যদা লিখেছেন) দিতে হবে। যদি প্রত্যেকটি পরিবার তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে, তাহলে তাঁরা টাকা নেবেন। হয়তো এতেই কোম্পানির পুরো টাকাটাই খরচ হয়ে যাবে না। কিন্তু হাসপাতালগুলো যদি জালি করে বেশি ভর্তি করে, বেশি অপারেশন করে, তাহলে তাদের লাভ। এক্ষেত্রে কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবেই বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের কথা বলছি, কেননা সরকারি হাসপাতালে এরকম করে কারও লাভ নেই। এটা করলে ইন্সুরেন্স কোম্পানির খরচ বাড়বে। কতোটা বাড়বে তার কোনও সীমা নেই। কেননা আমার জানা আছে, একটা গ্রামের প্রায় একশটা অ্যাপেনডিক্স কেটেছে একটা নার্সিং হোম, সেটাও RSBY লাগু হবার আগে।

    ইন্সুরেন্স কোম্পানি তখন জালি ধরতে ব্যবস্থা নেবে। সেটাও নিখরচার নয়। এবং যতোই খরচা করুক না কেন, ফুলপ্রুফ নয়। যেমন অ্যাপেন্ডিক্স। পেটে ব্যথা হলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস -- এটা ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। ডাক্তার ডায়াগনোসিস করেছেন, এবং কেটেছেন। তবু ধরুন ইন্সুরেন্স কোম্পানি বলল, সব কাটা অ্যাপেন্ডিক্স-এর বায়োপ্সি করতে হবে। ইন্সুরেন্স কোম্পানিকেই সেক্ষেত্রে অ্যাপেন্ডিক্স বায়োপ্সির অতিরিক্ত খরচ দিতে হবে। কিন্তু কে বায়োপ্সিটা করাবে? নার্সিং হোম করালে, নিশ্চিন্ত থাকুন, সব কাটা বায়োপ্সির রিপোর্টে আসবে অ্যাপেন্ডিক্স ইনফ্লেমড। ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে করাতে গেলে অজস্র ওভারহেড, খরচ অনেক বাড়বে, এবং করিয়েও তারা ডাক্তারের দিকে আঙ্গুল তুলে বলতে পারবে না -- মশায় ভুল করেছেন কেন, টাকা মারার ধান্দা, না? বলতে পারবে না, কেননা ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিসে ভুল হয়। তাদের প্রমাণ করতে হবে, ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিসে যে সংখ্যায় ভুল হয়, কোনও ডাক্তার বা নার্সিং হোম তার চেয়ে অনেক বেশি ভুল করছেন, যা স্ট্যাটিসটিক্যালি সিম্পল-ভুল হতে পারে না। এই করে একটা ডাক্তার বা নার্সিং হোমকে ব্ল্যাকলিস্ট করতে পারবে। কিন্তু আমাদের ডাক্তার বা নার্সিং হোমগুলোর মধ্যে এই প্রবণতা এত বেশি, 'শ্রীরাধিকে চন্দ্রাবলী, কারে ধরে কারে ফেলি' দশায় পৌঁছাতে দেরি হবে না। আর শুধু অ্যাপেনডিক্স কেন? নর্মাল ডেলিভারিকে সিজার করলে কেমন করে ধরবেন? (স্বাভাবিক প্রসব ২৫০০/-, সিজারিয়ান সেকশন ৪৫০০/-)। কোলেসিস্টেকটমি করে পাথর বেরোল না স্টক থেকে পাথর রেখে দেওয়া হল সেটা দেখতে ইন্সুরেন্স কোম্পানি কি ওটি-তে পাহারাদার বসাবে? সবার ইউএসজি রিপোর্ট দেখবে? দেখতে পারে, সেসব 'ম্যানেজ' হয়ে যাবে।

    aka on 16 October 2013 01:26:56 IST তে লিখেছেন,
    "ভারতে অনেক ভাবে জালি হতে পারে।
    কেস ১ঃ কোম্পানি ৫ জনের বদলে ৩ জনকে ইন্সিওরেন্স দিল, তাদের পুরো খরচা দিয়েও কোম্পানির ৭ টাকা লাভ।
    কি করে রুখবেনঃ এরিয়ায় যতজন দরিদ্র আছে তাদের লিস্টি মিলিয়ে মিলিয়ে চেক করুন কার্ড পেল কিনা। এখন বোধহয় কোন ডিস্ট্রিক্ট অফিসিয়ালের সামনে এটা হয়।
    কেস ২ঃ হতে পারে হসপিটাল ২ টাকার চিকিৎসা করিয়ে লিখিয়ে নিল ৬ টাকার চিকিৎসা হয়েছে। পরে ইন্সিওরেন্স কোম্পানির সাথে ৪ টাকা ভাগ করে নিল।
    কি করে রুখবেনঃ অটোমেটেড ওয়েতে, সাসপিসাস ক্লেম ডিফাইন করে মেশিন দিয়ে সেরকম ক্লেম এলেই ঘ্যাঁক করে ধরা। জালি ধরা পড়লে দৃষ্টান্তমূলক ফাইন + বরাত জীবনের মতন ক্যানসেল, হসপিতালের জমানত বাজেয়াপ্ত।"

    ---- আকা, আপনি যেভাবে বলেছেন সেগুলো সাধারণভাবে ইন্সুরেন্স সম্পর্কে প্রযোজ্য, RSBY-তেও প্রযোজ্য। কিন্তু আমার মনে হয়, আমার লেখা এই জালিগুলো আপনি যেকোনও কারণেই হোক কনসিডার করেননি। কাইন্ডলি কনসিডার করুন।

    আকা, আপনি বলেছেন, (aka on 15 October 2013 19:15:56 IST)
    "এই থ্রেডে লেখাপত্তর পড়ে আবার মনে হল লোকে পার্সেপশনে চলে। ডিটেল কিন্তু আছে।" ডিটেলের দিকে নজর দিয়ে আপনার কী কী ইতিবাচক দিক চোখে পড়েছে জানাবেন কিন্তু আমার এই ডিটেলগুলো একটু ভেবে দেখুন। আপনি বলেছেন, "কিন্তু আপাদমস্তক পড়ে মনে হল যে এই ব্যবস্থায় ট্র্যাকিংএর ব্যবস্থা খুব ভালো।" কিকরে মনে হল বুঝলাম না।

    যাইহোক, এইসব জালির ফলে ইন্সুরেন্স কোম্পানির খরচ বাড়বে তিন দিক দিয়ে। এক, জেনুইন কেস। দুই, জালি কেস। তিন, জালি কেস আটকানোর (অনেকটা অক্ষম) চেষ্টা। ফলে তারা সরকারকে বলবে, পরিবারপিছু টাকা বাড়াও। সরকার যতোই দরাদরি করুক না কেন, কিছু টাকা বাড়াতে হবে, নইলে কোনও কোম্পানি আসবে না। ক্রমে সরকারের স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়বরাদ্দের বড় অংশ RSBY খেয়ে যাবে।

    তখন সরকার চেষ্টা করবে RSBY তুলে দিতে? অনেকে এটাকে পরীক্ষামূলক বলছেন। তার মানে সফল না হলে তুলে দেওয়া যাবে। আমি বলব, যাবে না। কেননা তখন একদিকে ক্ষমতাশালীদের মধ্যে RSBY-এর অনেক স্টেকহোল্ডার এসে যাবে। চিটফান্ডের মতো (যদিও সারদা বা সঞ্চয়িতা প্রকৃত চিটফান্ড নয়, আমি প্রচলিত অর্থে বলছি।), তুলতে গেলে ছোটোবড়ো অনেকের অসুবিধা হবে। এমনকি যারা এর সুযোগ পেয়েছেন, তুলতে গেলে তাঁদের আপত্তি থাকবে ও ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে তাদের আপত্তির কথা সরকার বা দলকে মাথায় রাখতে হবে।
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:০৯47175
  • হ্যাঁ, তাই তো বললাম, এলাইসির মতো কোনো কোং যে মেডিক্লেমের বিজনেস করে। তো দেখা গেল এই New India Assurance Co Ltd ই তেমন একটা কোং।
    ৩৮০ প্রিমিয়াম টা উপরে যে টেবিলটা পেস্ট করেছি তাতে 14. North 24 Parganas এর রো তে আছে।

    ১১ টা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র কেন, ৫১ টা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিপিএল পপুলেশনের বছরে পরিবার প্রতি ৩০০০০ টাকার চিকিৎসা বিনামূল্যে হবার প্রভিশন থাকবে। এতে চিকিৎসার খরচ উঠেও ঐ ৫১ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো পরিষেবার পিছনে খরচ হবে। - এটা কিচ্ছু বোঝা গেল না। ১১ টা সরকারী আর ৪০ টা বেসরকারী হাস্পাতালের এনরোলমেন্ট হয়েছে। মানে বাকিদের ইনফাস্ট্রাকচার নেই বলেই তো মনে হয়, যাদি বাকি বেসরকারী হাসপাল স্বেচ্চায় এই ঝক্কি তে না যাওয়া মনস্থ না করে। পরিবার লিছু ৩৮০ টাকা সরকার খরচ করতে পারছে। ৩০০০০ টাকা কি করে খরচ করার প্রোভিসন থাকবে? চিকিৎসার খরচ উঠবে মানে? কেস স্টাডি খুবই ভালো কথা। বেলুড় ১০০ টা নিয়ে করছে, সরকার দেশের সব পরিবারকে নিয়ে করছে। ৪-৫ বছর স্টাডি করে কোন দিকে যাবে ডিসিসন নিতে পারে, বা আরো দশ বছর স্টাডি করতে পারে। যা খুশি।
  • aka | 79.73.9.7 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:১৯47176
  • জয়ন্ত, লিখব।

    আপনি আগে লিখুন তো যে আপনার কিকরে মনে হল

    ১) RSBY তে মন্ত্রী ধরে R কার্ড পাওয়া যাবে?

    ২) আর ডিটেল পড়ে মনিটরিং খারাপ কেন মনে হল?
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:২০47177
  • বেসরকারি হাসপাতাল এটাকে ঝক্কি মনে করবে কেন ? তাদের তো কেউ ঘাড় ধরে করাচ্ছে না ? জয়ন্তদার পোস্ট পড়লেই বোঝা যাবে, তারাও এটা করার জন্য উদ্গ্রীব কেন।
    ঐ ৫১ কোটি টাকার কিছু অংশ বাকি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতির পিছনেও খরচ হবে, যাতে তারা এনরোল্ড হতে পারে।

    একটু আগে ওমনাথ তো নিজেই লিখলো, সবার, মানে বেশিরভাগেরই ৩০০০০ টাকা খরচের প্রয়োজন পড়ে না। ইন্সিওরেন্স কোম্পানীগুলো সেভাবেই চলে। এখন বেসরকারি হাসপাতাল গুলো থাকায় যেন তেন প্রকারেণ ৩০০০০ খরচ হবে, প্রয়োজন না থাকলেও। জয়ন্তদা যেটা বিস্তারিত লিখেছেন। এই অকারণ চিকিৎসাটাও তো পুরো অনভিপ্রেত।
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:২১47178
  • এই হচ্ছে কথা। ইনসিওরেন্স কোং কেস খেতে পারে। যেমন বললাম, কিছুদিন পর প্রিমিয়াম বাড়ানোর দাবি করতে পারে। (যদি যথেষ্ট সচেতনতার ফলে লোকে ঠিকঠাক চিকিৎসা করায় ও প্রাপ্য টাকাপয়সার হিসেব বুঝে নেয়। এটা হবে না, কারণ বিপিএল জনতাকে ধরা হয়েছে, তাদের এই সচেতনতা তৈরি করতে গুচ্ছ সময় লাগবে। তদ্দিন ইনসিওরেন্স কোং গুলো গুচ্ছ লাভ করে নেবে। RSBY সাইটে এনরোলমেন্ট আর হসপিটালাইজেশনের রেট দেখুন) তখন আবার টেন্ডারিং হবে। ইত্যাদি। একটা কোং এর ক্ষতির পরিমাণ দেখে অন্য সবাই টেন্ডারে বেশি প্রিমিয়ামের দাবি করবে। ইত্যাদি। বললুম যে আমার কোং বছরে বছরে ইনসিওরেন্স কোং পাল্টায়।

    পুরো ব্যপারটার মধ্যে যে আন্ডারলাইং পলিটিক্স আছে সেটা একমাত্র জয়ন্তবাবুই ঠিকঠাক ধরছেন। পলিটিক্স আর কোরাপশন বাদ দিয়ে এই RSBY এর কোনো সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। থিওরেটিকালি জিনিসটা ভালো। এলাইসির মতোই।
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৩৩47179
  • ৫১ নয় ১৫ কোটি। যেন তেন প্রকারে খরচা বেসরকারী হাসপাতাল মাত্রেই করে। RSBY থাক বা না থাক। সেই জন্যেই সচেতনতা। কিন্তু বেসরকারী হাসপাতালগুলোকে এই সার্কিট থেকে বাদ দিতে হলে মাত্র ১১ টা সরকারী হাসপাতাল কে নিয়ে কাজ করতে হবে গোটা উঃ ২৪ পরগণায়। ১৫ কোটি শুনতে অনেক মনে হলেও ৩৯৫৬০৬ = ৪ লাখ পরিবার কে এক বছর ধরে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবার পক্ষে যথেষ্টই কম । পরিবার পিছু বছরে ৩৮০ টাকা খুবই কম। ঘটনা, সব পরিবারের এই টাকা লাগছেনা, কিন্তু সত্যি বলতে সেও সচেতনতার অভাবে। বিপিএল এর নীচের পরিবারের যা স্বাস্থ্যের অবস্থা হওয়ার কথা তাতে এর চেয়ে অনেক বেশি ই লাগার কথা, অন্তত প্রথম কয়েক বছর। বাকি জেলাগুলোর আর রাজ্যগুলোর ইনসিওরার এর ডিটেলস নিলে বোঝা যাবে কতটা বেসরকারি আর কতটা সরকারী ইনসিওরেন্স কোং টেন্ডার জিতেছে। এখান থেকে অরেকটা পলিটিক্সের অ্যাঙেল বেরিয়ে আসতে পারে।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৪০47180
  • বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বাদ দিলে অনেক সরকারি হাসপাতাল ঢুকতে পারতো। তখন তারাও পরিষেবা পরিকাঠামো উন্নত করতে বাধ্য হত। সরকারি ব্যবস্থা খারাপ হবার বড় কারণ সেটাকে ভাল করার চাপটা কমে যাচ্ছে, এই পয়েন্টটা ভুলে গেলে চলবে কেন ? চাপ কমে যাচ্ছে, তাই আরো খারাপ হচ্ছে, আরো খারাপ হচ্ছে, তাই আরো চাপ কমছে। এটা তো ভিশাস সাইকেল। কোথাও তো একটা ভাঙা দরকার। বেসরকারিকরণ বেশি করে হলে সেই সাইকেলটাকে আরো ভালোভাবে চলতে দেওয়া হবে। এটাই রাজনীতি। জয়ন্তদার পোস্টটা আবারো পেস্ট করি ঃ
    ''সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হবে, তেমন ভরসা উবে গেছে। আর আজকাল সেখানেও পয়সা নেওয়া শুরু হয়েছে। এমন সময় R এর আবির্ভাব কোনও নিছক সমাপতন নয়। প্রথমে মানুষ দেখবেন, তাঁদেরও খাতির আছে। এতদিন দুচ্ছেই করা থেকে বদলে এখন নার্সিং হোম তাঁদের আসুন বসুন করছে। তাঁর চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তারবাবু মেডিক্যাল রেপ-এর সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত থাকছেন না। এভাবে প্রাইভেট ভাল, গরমেন্ট খারাপ, এটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। এরপর এঁরা কোন দুঃখে দাবি তুলবেন, সরকারি হাসপাতালে সুবন্দোবস্ত হোক? তুলবেন না। পার্টির নেতার কাছে R কার্ডের জন্য ধর্না দেবেন। সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার গঙ্গাযাত্রায় বাধা থাকবে না। সঙ্গে সঙ্গে সরকারি ডাক্তারি শিক্ষাব্যবস্থাটাকেও বিসর্জন দেওয়া যাবে।';
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০২:০২47181
  • বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বাদ দিলে অনেক সরকারি হাসপাতাল ঢুকতে পারতো না। ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও বেসিক কোয়ালিফিকেশনে আটকে যেত। আগে সেগুলোকে উন্নত করে তবে RSBY চালুকরতে হত। ততদিন BPL রা ঠিকঠাক সেবা পেত না। RSBY এর সাথে সরকারী হাসপাতাল ভালো করার চাপ কমার যোগ কোথায়? RSBY কত টাকা দেয়? দু চোখের ছানির জন্যে ৫০০০ টাকা। বাবার কেস এ খরচ লেগেছে ১৮হাজার করে ৩৬ হাজার। ৬ পকেট থেকে। তো বেসরকারী হাসপাতালে তো এই বাড়তি টাকা টা রোগীকে দিতে হবে। সে তো এমনিতেই যাবে না। RSBY কার্ড দেখালে কি বেসরকারী হাসপাতাল ৫০০০ টাকাতেই চোখের ছানি অপারেশন করতে বাধ্য? না। তারা তাদের যা রেট তাই নেবে। বিপিএল হোল্ডারের কার্ড থেকে ঐ ৫০০০ তারা তুলবে। বাকিটা রোগীকেই দিতে হবে। তো এই অতিরিক্ত খরচসাপেক্ষ বেসরকারী হাসপাতালের বিপরীতে সরকারী হাসপাতালের পরিকাঠামো বাড়ানোর চাপ টা তো দেওয়াই যায়। সব সময়েই। BPL হোল্ডাররা ছাড়াও বাকি লোকেরাও আছেন। জয়ন্ত বাবু পলিতিক্সটাকে অ্যাড্রেস করছেন। খুব ভালোভাবে করছেন। সেটাই তো বললাম সেই ফাইনপ্রিন্ট, ইনটেনশন, কোরাপশন আছে কিনা, পলিসি বানাবার পিছনে কোন লবির হাত আছে, কেন, সেগুলোই এক্সপোজ করা দরকার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন