এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা— এই যোজনায় আপনার কি পাওয়ার কথা? আপনি কি পাচ্ছেন?

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৬০২ বার পঠিত
  • ২০০৮-এর ১লা এপ্রিল দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের জন্য ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বা RSBY নামে এক স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছেন। অন্য স্বাস্থ্যবিমায় যার নামে বিমা তাকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। এই বিমায় কিন্তু সরকার সেই ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে দেন, ও গরীব মানুষ বিনামূল্যে একটা নির্দিষ্ট মূল্যমান অবধি অনেক চিকিৎসা সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানেই পেতে পারেন। কিন্তু গরীব মানুষ কি জানেন তাঁর কি পাওয়ার কথা? যা পাওয়ার কথা তা তিনি পাচ্ছেন কি?

    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা কাদের জন্য?
    এটা হল গরীব মানুষদের জন্য করা একটা স্বাস্থ্য বিমা। সাধারণত বিমা করলে যিনি বিমা করেন, অর্থাৎ বিমাকারীকে, কিছু টাকা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিমা কোম্পানিকে দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় বিমাকারীকে বিমা কোম্পানিকে কোনও টাকা দিতে হয়না। সরকার সেই টাকাটা দিয়ে দেন। বিমাকারীকে একটা কার্ড করাতে হয়। একে বলে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডে তথ্য সঞ্চিত থাকে—কারা পরিবারের সদস্য, ওই বছরে কতটা টাকা চিকিৎসার জন্য পরিবার ব্যয় করেছে আর কতটা টাকা তাঁরা আরও ব্যয় করতে পারেন, ইত্যাদি সবই ওই স্মার্ট কার্ড থেকে উপযুক্ত যন্ত্র দ্বারা দেখে নেওয়া যেতে পারে।
    •কিভাবে স্মার্ট কার্ড করাতে হয়?
    সরকার এই কার্ড করার জন্য বিভিন্ন গ্রামে শিবির করেন। দারিদ্র-সীমার নীচে থাকা সমস্ত পরিবারকে আগে থেকে করা তালিকার সাহায্যে চিন্হিত করা থাকে। তাঁদের সবাইকে পঞ্চায়েত অফিসের মাধ্যমে শিবিরে ডাকা হয়। সেখানে বিমাকারীকে পরিবার-পিছু এককালীন ত্রিশ টাকা দিয়ে কার্ড করাতে হয়। একটি কার্ডে এক পরিবারের পাঁচজন পর্যন্ত বিমার আওতায় আসতে পারেন। কোনও পরিবারে পাঁচজনের বেশি সদস্য থাকলেও কিন্তু পাঁচজনের বেশি বিমার সুবিধা পাবেন না। কোন পাঁচজন পাবেন সেটা পরিবারের প্রধান ঠিক করে দেন।
    •একটা স্মার্ট কার্ডে ক’টা ফটো থাকে?
    একটিই ফটো থাকে পরিবারের প্রধানের। বাকিদের ফটো তোলা হয়, এবং সরকারি কমপিউটারে সেটি থাকে, যাতে প্রয়োজন হলে বা বিতর্ক হলে দেখা যায় যে অন্যদের সবাই সত্যিই পরিবারের সদস্য কিনা। ফটো ছাড়াও থাকে সবার আঙ্গুলের ছাপ – তারও কাজ ওই একই।
    •স্মার্ট কার্ড করার শিবির অনুষ্ঠিত হবার কতদিনের মধ্যে পরিবারটি স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে পারেন?
    আগে ফটো তোলার শিবির হবার পরে স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে কয়েক মাস লেগে যেত। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফটো তোলার দিনই ওই শিবির থেকেই স্মার্ট কার্ড হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে তারপর কয়েকদিনের অপেক্ষা।
    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে কী কী চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়?
    যেখানেই হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার সে সমস্ত ক্ষেত্রেই RSBY-এর স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে চিকিৎসার সুযোগ আছে। হাসপাতাল সরকারি হোক আর বেসরকারি, বা হোক নার্সিং হোম, সবক্ষেত্রেই একই সুযোগ। শুধু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের ক্ষেত্রে তাদের নামটা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার তালিকায় নথিভুক্ত থাকতে হবে। যেহেতু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমগুলো সরকার থেকেই পয়সা পেয়ে যায়, এবং সেই পয়সাটা খুব কম কিছু নয়, তাই আজকাল খুব বড় বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোম ছাড়া অধিকাংশ নার্সিং হোম বা বেসরকারি হাসপাতাল RSBY-এর তালিকায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করছে। ফলে বহু জায়গায় এই বিমার সুবিধা মিলছে।
    •যেসব ক্ষেত্রে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার হয় না সেক্ষেত্রে বিমাকারী কি খরচ পাবেন?
    বেশ কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন না হলেও বিমাকারী সম্পূর্ণ সুবিধা পাবেন। একে পরিভাষায় বলা হয় ‘ডে কেয়ার’। যেমন ধরুন ছানি কাটার অপারেশন করে ডাক্তারবাবু রোগীকে একদিন ভর্তি রাখতে না-ও পারেন। সকালে অপারেশন করে সন্ধ্যেয় ছেড়ে দিতে পারেন। তবু রোগী কিন্তু বিমার পুরো সুবিধা পাবেন। এরকম কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্র আছে—যেমন কিডনির রোগীর জন্য ডায়ালিসিস। এইসব নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের একটি তালিকা আছে। এর বাইরে অন্য চিকিৎসার জন্য যদি রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হন তো তাঁকে বিমার সুবিধা দেওয়া যাবে না, নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে চিকিৎসা চালাতে হবে।
    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে আউটডোর চিকিৎসা অর্থাৎ ডাক্তারের ফি ও ওষুধের খরচ কি তাহলে এই বিমা থেকে পাওয়া যাবে না?
    সাধারণভাবে বলতে গেলে, না, পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেখানেও বিশেষ পরিস্থিতিতে এই খরচ পাওয়া যেতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি হবার আগে ভর্তি হবার জন্য কিছু পরীক্ষা করাতে হলে বা কিছু ওষুধ খেতে হলে হাসপাতাল সেই বিমাকারীকে সেসব বিনাপয়সায় করিয়ে দিতে পারে – কিন্তু প্রমাণ রাখতে হবে দেখাতে হবে যে তিনি যথাযথ ডাক্তারি পরামর্শক্রমে হাসপাতালে ভর্তি হবার আগের ধাপ হিসেবেই ওই পরীক্ষাগুলি করিয়েছিলেন, এবং পরে নিয়মমাফিক ভর্তিও হয়েছিলেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় হাসপাতালটি রোগীকে বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পাঁচদিনের ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে দেবে – সেটার খরচও হাসপাতাল বিমার টাকা থেকেই পেয়ে যাবে।
    •‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা কী?
    ‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা হল এই যে কিছু বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব কিছু হাসপাতাল নিখরচায় করে দেবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তি হবার আগের ওষুধ, অপারেশন, ভর্তি থাকাকালীন শয্যা, নার্সিং, চিকিৎসা, ওষুধ, খাবার, ও ছেড়ে দেবার পরে দরকারি ওষুধ ও ডাক্তারের কাছে ফলো-আপ – এই সব মিলিয়ে একটা থোক টাকা ধরা থাকে। পুরোটাই হাসপাতাল করে দেবে ও রোগীর কাছ থেকে এক পয়সা নেবে না – পরে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাছ থেকে পুরোটাই পেয়ে যাবে। ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর লিস্টে নেই, কিন্তু প্যাকেজে আসতে পারে, এমন কিছু কিছু চিকিৎসাতেও হয়তো হাসপাতাল আগেভাগে অনুমতি নিয়ে রোগীকে ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর সুবিধা দিতে পারে।
    •কোন কোন মেডিকাল রোগের ক্ষেত্রে ভর্তির সুবিধা পাওয়া যাবে?
    ব্যাক্টেরিয়াল মেনিঞ্জাইটিস, ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস-ঘটিত ব্রংকাইটিস, জল বসন্ত, ডেঙ্গু-জ্বর, ডিপথেরিয়া, আমাশা, মৃগী, ফাইলেরিয়াসিস, খাদ্য থেকে বিষ-ক্রিয়া, হেপাটাইটিস, ম্যালেরিয়া, হাম, প্লেগ, নিউমোনিয়া, সেপ্টিসিমিয়া, সব ধরনের যক্ষ্মা, টিটেনাস, টাইফয়েড, ভাইরাল জ্বর, মূত্র নালীর জীবাণু-সংক্রমণ, শ্বাসতন্ত্রের নীচের অংশের সংক্রমণ, ইত্যাদি যে সব রোগে ভর্তি থাকার দরকার হতে পারে, সে সব ক্ষেত্রে বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিনে সর্বোচ্চ মাত্র ৫০০টাকা খরচ বিমা কোম্পানি দেয়।
    •মেডিকাল রোগী কি কি পাবেন?
    জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, সব ধরনের ডাক্তারের ফি, রক্ত, অক্সিজেন, ওষুধ, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে মেডিকাল রোগীদের প্যাকেজে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। কিন্তু বলা বাহুল্য দিনে ৫০০ টাকা এসবের জন্য একান্তই অপর্যাপ্ত।

    •মেডিকাল রোগী আইসিইউ-তে ভর্তি হলে কি পাবেন?

    জেনেরাল ওয়ার্ডের মত সব কিছুই পাবেন। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দিনে ৭০০টাকা অবধি বিমা কোম্পানি দেবে।

    •সার্জিকাল রোগীর কি কি সুবিধা পাওয়ার কথা?

    অধিকাংশ অপারেশনের প্যাকেজ নির্দিষ্ট আছে। এই প্যাকেজে জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, নার্সিং-এর খরচ, শল্যচিকিৎসক, অজ্ঞান করার চিকিৎসক ও অন্যান্য চিকিৎসকের ফি, অজ্ঞান করার গ্যাস ও ওষুধ, রক্ত, অক্সিজেন, ওটি ভাড়া, শল্যচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ওষুধ-পত্র, প্রস্থেসিস ও ইমপ্ল্যান্টের দাম, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। সার্জিকাল প্যাকেজগুলোতে অর্থের পরিমাণ কিন্তু পর্যাপ্তই।

    কি অপারেশন?কত দিন ভর্তি থাকবেন?প্যাকেজে অর্থের পরিমাণ (টাকায়)
    ড্যাক্রাওসিস্টোরাইনোস্টমি (নেত্রনালীর অপারেশন)১ ৯০০০
    টনসিল অপারেশন (দুইদিকের)১৭০০০
    টনসিল অপারেশন (একদিকের)১৫৫০০
    অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২৬০০০
    অ্যাপেন্ডিক্সের ফোঁড়ার পূঁজ বার করা ২৭০০০
    স্তন কর্তন৩১২,২৫০
    স্তনের টিঊমার কেটে বাদ দেওয়া (একদিকের)২৫০০০/৬২৫০
    পেট কেটে পিত্তথলি বাদ দেওয়া ৩১৩,২৫০
    মলদ্বারের ফিসার কেটে বাদ দেওয়া২৭০০০
    মলদ্বারের পাশে ফিসচুলা অপারেশন২৭৫০০
    এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া ৩১০,০০০
    অপারেশন পরবর্তী ইনসিশনাল হার্নিয়া৩১২,২৫০
    আম্বিলিকাল হার্নিয়া ৩৮৪৫০
    ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া৩৭০০০
    একদিকের হাইড্রোসিল২৩৭৫০/৪০০০
    দুদিকের হাইড্রোসিল২৫০০০
    অর্শ ২৫০০০
    সিবেসিয়াস সিস্ট ভর্তি হবে না১২০০
    পেট কেটে জরায়ু কর্তন৫১০০০০/১২৫০০
    যোনি পথে জরায়ু কর্তন ৫১০০০০
    স্বাভাবিক প্রসব২২৫০০
    সিজারিয়ান সেকশন৩৪৫০০
    ল্যাপ অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২১১০০০
    ল্যাপ কোলিসিস্টেক্টমি৩১০০০০
    ছানি (একচোখের)ভর্তি হবে না ৩৫০০
    ছানি (দুই চোখের) ভর্তি হবে না ৫০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (একদিকের)৩৭০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (দুইদিকের) ৩১০,০০০
    মূত্রনালীপথে প্রস্টেট-কর্তন৩১৪,২৫০
    পেট কেটে প্রস্টেট-কর্তন২১৫,৭৫০
    মূত্রনালীকে বাড়ানো (ইউরেথ্রাল ডায়লেটেশন)১২২৫০
    সব প্যাকেজের সাম্প্রতিক অর্থমূল্যের জন্য ওয়েবসাইট দেখুন।

    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে গিয়ে রোগী কার সঙ্গে কথা বলে এইসব সুবিধা সম্পর্কে জানবে?
    যে সব হাসপাতাল বা নার্সিং হোম রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় নথিভুক্ত, সেখানকার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হল RSBY-এর জন্য একটি নির্দিষ্ট কাউন্টার রাখা। সেখানে এইসব সুবিধা কিভাবে পাওয়া যায় সেব্যাপারে রোগীকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। এমনকি যদি সেখানকার স্মার্ট কার্ড মেশিনটি কোনও কারণে কাজ না করে, সেই অজুহাতে রোগীকে ফেরানো বা টাকা চাওয়া চলবে না; হাসপাতালের দায়িত্ব হল যেভাবে হোক ওই কার্ডটির ব্যবহার করা। রোগীর দায়িত্ব কেবল যথাযথ কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে পৌঁছানো। পরিবারে নথিভুক্ত যে কোনও সদস্যের হাতের ছাপ দিলেই কার্ডটি মেশিনে নথিভুক্ত হবে, কার্ডে কত টাকা আছে জানা যাবে, এবং তত টাকার চিকিৎসা হাসপাতাল বা নার্সিং হোম (ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে) বিনা পয়সায় করাতে বাধ্য। তার চাইতে বেশি টাকা লাগলে সেটা আগেভাগে জানিয়ে রোগীর কাছ থেকেই সেই অতিরিক্ত পয়সাটা নিতে হবে।
    •তার মানে স্মার্ট কার্ড থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি রোগী পকেট থেকে খরচা করবে?
    আগেই বলা হয়েছে, পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচ সদস্য পিছু বছরে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা। ধরুন পরিবারে বাবা, মা, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলের হাইড্রোসিল চিকিৎসার জন্য চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে, এক মেয়ের পিত্তপাথুরির জন্য দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, মায়ের গর্ভাশয় কেটে বাদ দিতে গেছে চোদ্দহাজার টাকা। তাহলে মোট আটাশ হাজার টাকা একবছরে খরচ হয়েই গেছে। এবার বাবার চোখ অপারেশনের জন্য যদি সাড়ে তিন হাজার টাকা লাগে তো রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্মার্ট কার্ড থেকে দুহাজার টাকার বেশি দেবেনা, বাকি দেড় হাজার টাকা পকেট থেকে দিতে হবে। কিন্তু এই অপারেশনটা যদি সেই বছরের পরে করা যায় তো কার্ডে আবার ত্রিশ হাজার টাকা জমা করবেন সরকার, এবং বাবার চোখ অপারেশনের জন্য সাড়ে তিন হাজার হাজার টাকা পুরোটাই সেখান থেকে পাওয়া যাবে। কার্ডের হিসেবে কবে নতুন বছর শুরু হবে সেটা জানতে হবে। সেটা কার্ড দেবার সময়ে বলে দেওয়া হয়, তাছাড়া হাসপাতালে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টার থেকেও সেটা জেনে নেওয়া যায়।
    •যে সব অসুখ আগে থেকে আছে সে ক্ষেত্রে কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা পাওয়া যাবে?
    সাধারণত স্বাস্থ্যবিমা করার আগে থেকে কোনও অসুখ থাকলে বিমা কোম্পানিগুলো সেই অসুখ বা তার ফলে উদ্ভূত কোনও অসুখের চিকিৎসার জন্য টাকা দেয় না। ধরা যাক কোনও ডায়াবেটিস রোগী সাধারণ কোম্পানির কাছে পয়সা খরচ করে স্বাস্থ্যবিমা করালেন – বিমা কোম্পানি দেখে নিল বিমা করার আগে থাকতেই তাঁর ডায়াবেটিস রোগ আছে। এবার ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে খরচ করলে বিমা কোম্পানি একপয়সাও দেবে না। শুধু তাই নয়, ধরা যাক তাঁর ডায়াবেটিস-এর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে গেল, ডায়ালিসিস করতে হল। বিমা কোম্পানি ডায়ালিসিস-এর জন্যও একপয়সাও দেবে না। এদিক থেকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা অনেক বেশি, কেননা বিমা করার আগে থাকতে কোনও অসুখ থাকলেও সেব্যাপারে চিকিৎসার খরচ এই বিমাতে পাওয়া যাবে। তাই এই বিমা করার সময়ে বিমাকারীর কোনও অসুখ আছে কিনা সেসব পরীক্ষাও করা হয়না।
    •প্রসবকালীন খরচ কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়?
    হ্যাঁ। আগেই বলেছি স্বাভাবিক প্রসবে প্যাকেজ ২৫০০ টাকার, জটিল প্রসব বা সিজারিয়ান সেকশনে ৪৫০০ টাকা।
    •RSBY-তে রাহা খরচ পাওয়া যায়?
    একটা খরচ রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়, যা আর কোনও বিমায় পাওয়া যায় না। তা হল হাসপাতালে ভর্তির জন্য যাতায়াতের খরচ, বা রাহাখরচ। প্রতিবার হাসপাতালে ভর্তির জন্য বিমাকারী যাতায়াতের খরচ হিসাবে ১০০ টাকা পান। তবে একটি বিমা চালু থাকা অবস্থায় বিমাকারী পরিবার সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকার বেশি রাহাখরচ পাবেন না, তারপর হাসপাতালে ভর্তি হলেও নিজের খরচে যেতে-আসতে হবে। এই রাহাখরচ পাবার জন্য কোনও ট্রেন-বাসের টিকিট বা ওইরকম কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে হয়না।
    পরিষেবা-প্রদানকারী হাসপাতাল/নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কাকে জানাবেন?
    নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে দেখবেন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবীমা যোজনার একটি বোর্ড বা ব্যানারে RSBY-কার্ড হোল্ডারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য/ হাসপাতালের দায়িত্ব ও অধিকার লেখা আছে। সেখানে জেলার কিয়স্কের নম্বর পাবেন। টোল ফ্রি একটি নম্বর আছে ১৮০০-৩৪৫-৫৩৮।
    এছাড়া রাজ্যের সর্বোচ্চ নোডাল এজেন্সি-র কথা জেনে রাখুন—
    Director, ESI (MB) Scheme,
    Govt. of West Bengal,
    P-233, C.I.T. Scheme-VIIM, Bagmari Road, Kolkata-700054
    Contact No: (033)2355-6385 /6162 , 033-23556384(RSBY Cell)

    বাস্তবে RSBY-এর সুযোগ গরীব মানুষ কতটা পাচ্ছেন?
    •মাস খানেক আগে কুলপি-তে এক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক এক ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা গেল। উপস্থিত RSBY-কার্ড হোল্ডারদের অধিকাংশকে নিজের পকেট থেকে অতিরিক্ত খরচ করে চিকিৎসা পেতে হয়েছে। অ্যাপেন্ডিসেক্টমি বাবদ কার্ড থেকে কাটা হয়েছে ৬০০০ টাকা, ওষুধ-পথ্য-নার্সিং খরচ ইত্যাদি দেখিয়ে আরও হাজার সাতেক খরচ পকেট থেকে। সিজারের খরচ কার্ড থেকে এসেছে, সঙ্গে লাইগেশনের খরচ নেওয়া হয়েছে দেড় হাজার টাকা। ইত্যাদি, ইত্যাদি...।
    •কার্ড রিনিউয়ালের জন্য অনেকের কাছ থেকে ৫০টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, যদি এটা বিনামূল্যে করার কথা।
    •মুর্শিদাবাদের নিয়মিত সামাজিক কাজে যান এমন এক সিনিয়ার স্ত্রীরোগবিদের পর্যবেক্ষণ—প্রচুর বেড়ে গেছে জরায়ু-কর্তন অর্থাৎ হিস্টেরেক্টমির হার, স্ত্রীরোগবিদরা দিনে ২-৩টে করে হিস্টেরেক্টমি করছেন—অধিকাংশই যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া। (গত বছর প্রচারিত আমির খানের সত্যমেব জয়তের চতুর্থ এপিসোড মনে করুন। সেখানেও দক্ষিণের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলের কথা বলা হয়েছিল যেখানে মহিলাদের জরায়ু নেই।)
    • একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্প ও রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগঃ ২০১২ সাল থেকে এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর একটি প্রকল্প RSBY-এর সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট তথা MGNREGA – এর একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্পে বেশিদিন কাজ করেছেন (১৫ দিন বা তার বেশি) তাঁর ও তাঁর পরিবারকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যারা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন তাঁদের অধিকাংশই গরীব সেটাও ঠিক। কিন্তু এদের আলাদা করে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-তে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারটা গ্রামের গরীব মানুষেরা এখনও বুঝে উঠতে পারেন নি, ফলে এই সুযোগে গ্রামের করিতকর্মা মাতব্বরেরা বেশ কিছু বাবুলোকের নামও এই নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমাতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে এইসব বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দিয়েছিলেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নেন, আর গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন। ফলে রেকর্ড অনুযায়ী, ওই কার্ডগুলোর মালিকরা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন। যদিও এঁরা সত্যিকারের কাজ কিছু করেন নি, ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে চাপ দিয়ে কম কাজকে বেশি কাজ বলে জবরদস্তি করে দেখিয়ে সরকারের MGNREGA – র টাকা মেরে দিয়েছেন। কিন্তু খাতায়-কলমে তাঁরা ১৫ দিনের বেশি কাজ করেছেন বলে দেখানো আছে, ফলে তাঁরাই আবার নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমার অধিকারী হয়ে যান!
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র কার্ড ও তার সুবিধাভোগীদের নানা অভিজ্ঞতাঃ
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক প্রাপকের নামে ছাপানো স্লিপ আসে ও সেগুলো তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন তাঁরা পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে যেখানে এজেন্সিটি ক্যাম্প করেছে সেখানে এসে ফটো তোলার জন্য লাইন দেন। সকালের দিকে তুলনায় ফাঁকা থাকে, কেননা গ্রামের মানুষ তখন রুজি-রোজগারের ধান্দায় ক্ষেতে খামারে। এখানে প্রথমে ত্রিশটাকা দিয়ে রসিদ নেওয়া, তারপর ঘরের মধ্যে ক্যামেরার সামনে পরিবারের পাঁচজনের ছবি তোলা, পাঁচজনের বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া – পরিবারের কাজ শেষ। গ্রাম-পঞ্চায়েতের একজন কর্মচারী তাঁর বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে পরিবারটিকে সনাক্ত করতে সাহায্য করেন। ব্যাস - সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের কর্তার হাতে কার্ডটি তুলে দেওয়া হয়। কার্ডে পরিবার-প্রধানের মুখের ছবি ও নাম থাকে। বিগত বছরগুলোতে কিন্তু কার্ড পরে দেওয়া হতো। অনেক সময় ফটো তোলার পরে কার্ড মিলতে বছর গড়িয়ে যেত। তাই এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। যেমন পাট ছাড়ানোর সময়ে মানুষ সকালে আসতে পারেন না, তিনটের পর থেকে ভিড় জমান, আর রাত্রি আটটা পর্যন্ত কাজ করেও শেষ করা যায় না।
    কার্ড করতে আসা পরিবারগুলোর কথা থেকে জানা যায়, গত বছর কোনও পরিবার অপারেশন করিয়েছে, টাকা লাগেনি। কেউ হয়তো এসেছেন - কার্ড করানোর পরে তবে তাঁর বাবার চোখের ছানি কাটাতে পারবেন। কিন্তু ছুবান ভাই, পানসুন্দুরী বেওয়ারা অন্য কথা বলেন। কার্ড করে তাঁরা পরিবারের মানুষকে তালিকাভুক্ত নার্সিং হোমে ভর্তি করিয়েছেন, অপারেশন হয়েছে। তারপর ছুটির সময়ে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ কার্ডটি নিয়ে দুঃখ-দুঃখ মুখ করে বলেছেন – আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না, জাল কার্ড? নাকি আঙ্গুলের ছাপটা ভালো করে নেয় নি? যাহোক, তাঁদের তো টাকাটা দিতে হবে। তখন তাঁরা ধার-কর্জ করে টাকা দিয়ে এসেছেন। আসলে নার্সিং হোম কার্ড নিয়ে টাকা বের করে নিল, আর নিরক্ষর মানুষগুলোর কাছ থেকেও টাকা নিল – তাঁরা বুঝতেই পারলেন না।
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা – সব ঠিক আছে কি?
    MGNREGA –তে গ্রামের মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে নানা বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনাতেও সেরকম দুর্নীতি ঘটছে। সরকারের টাকা মারা যাচ্ছে, গরীবের কার্ড হচ্ছে না, হলেও অনেক নার্সিং হোম টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। এটা একটা চিন্তার বিষয়। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টারে কিভাবে কত টাকা নেওয়া হল সেটা সরল গরীব গ্রামীণ মানুষ, যাঁদের অনেকে আবার নিরক্ষর, তাঁরা ধরতেই পারেন না।
    কিছু দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও মুর্শিদাবাদের কিছু অভিজ্ঞতার কথা আগেই বলেছি।
    •এছাড়া আপনি কার্ড নিয়ে দেখাতে গেলেন—ভর্তির প্রয়োজন নেই তবু ভর্তি করে নেওয়া হল। নামমাত্র চিকিৎসা করে মিথ্যা নথিপত্র দিয়ে বেশি টাকা তুলে নেওয়া হল—এমনটা হচ্ছে।
    •ছোট কোন অপারেশন হল, যার প্যাকেজ-মূল্য কম। নথিপত্রে দেখানো হল বড় অপারেশন হয়েছে। বেশি টাকা কার্ড থেকে কেটে নেওয়া হল। আপনার পকেট থেকে টাকা গেল না বটে, কিন্তু এ বছরের মধ্যে পরিবারের কাউকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তখন বরাদ্দ কিন্তু কম হয়ে থাকবে।।
    মানুষকে সচেতন করার জন্য এ লেখা যাতে তাঁরা RSBY-এর সুবিধা নিতে পারেন, কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়—RSBY-ই কি সমাধান? গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ করছে, কিন্তু সেটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয়, বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিং হোমে। সরকার যে খরচ করছে তা কিন্তু জনসাধারণের করের-ই টাকা। তাহলে টাকার অভাবে সরকার ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে এগোতে পারছেন না, এটা তো বলা যায় না।
    সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।
    দ্বাদশ পরিকল্পনার আগে যোজনা কমিশন ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে কি কি করণীয় সে বিষয়ে সুপারিশ করতে এক উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেন। ডা শ্রীনাথ রেড্ডির নেতৃত্বাধীন সে দলের সুপারিশ ছিল সরকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় সামান্য বাড়িয়ে প্রাথমিক, দ্বিতীয় ও সর্বোচ্চ স্তরের চিকিৎসা বিনামূল্যে সমস্ত নাগরিককে দিক। তাঁরা স্বাস্থ্যবিমার বিরুদ্ধে বলেন, স্বাস্থ্যপরিষেবার বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেন। যোজনা কমিশন বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ মানে নি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ বাক্যবন্ধটুকু রেখে দিয়ে তারা বলছে সরকার পরিষেবা-প্রদানকারীর ভূমিকা থেকে সরে এসে ব্যবস্থাপনার কাজ করবে। তাদের প্রস্তাব কেবল গরীব মানুষদের জন্য RSBY নয়, সব নাগরিকের জন্যই এমন বিমা ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে প্রিমিয়াম (জনগণের পয়সায়) দেবে সরকার, একটা নির্দিষ্ট সীমা অবধি খরচ কার্ডধারী পাবেন, তার ওপরে খরচ করতে হবে নিজেকে।
    স্বাস্থ্যবিমা সমাধান হতে পারে না, সবার জন্য স্বাস্থ্যের সবটুকু প্রয়োজন সরকারকে মেটাতে হবে এই আমাদের দাবী হওয়া উচিত। কিন্তু যতক্ষণ না তা হচ্ছে, ততদিন RSBY-এর যতটা সুবিধা আপনার প্রাপ্য বুঝে নিন—আপনার প্রাপ্যে যেন ভাগ না বসায় স্বাস্থ্য-ব্যবসায়ী।

    এই রচনায় অফুরান সাহায্য নিয়েছি ডা জয়ন্ত দাসের। তিনি যে পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক সেই ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’ পত্রিকার দশম সংখ্যায় প্রকাশিত বাবু সাহার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বিষয়ক একটি প্রবন্ধের প্রচুর সাহায্য নিয়েছি আমার রচনায়।

    দুর্বার ভাবনা পত্রিকার সেপ্টেম্বর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৬০২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৫৩47207
  • তালে, লিস্টটা 'সরকারি' এবং এনরোলমেন্ট 'সরকারি' অফিসারের সামনে হবে। এদিকে আপত্তি সরকারি লোকজনের দুর্নীতি নিয়েই এবং এই সিস্টেম নাকি তাকে বাইপাস করছে ! ঃ)
  • guru | 127.194.192.99 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১২:১৪47163
  • হ্যাঁ, মেডিকাল ইনসিওরেন্স এর কভারেজ মোটামুটি বার্ষিক প্রিমিয়ামের ১০ গুন হয়। এলইসির কভারেজ বার্ষিক প্রিমিয়ামের ২০ থেকে ৩০ গুণ হয়। ভারতে। জীবন আনন্দ-এ প্রথম বছর ৩৩০০ প্রিমিয়াম দিয়েই মরে গেলে নমিনি ১ লাখ পাবে। হাতে হাতে। ইনসিওরেন্স কোং এর লাভের জায়গা হল, একসাথে সব লোক একই বছরে সবচেয়ে বেশি টাকার ক্লেম করে না। মানে সেই প্রোবাবিলিটি কম। আমার অফিসের ৩০০ চাকুরের সবাই একই বছরে ২ লাখ করে ক্লেম করবে না। তারোপর শিক্ষিত স্বচ্ছল ফ্যামিলির রোগভোগের টাকা তোলার সম্ভাবনা কম। তবু কখনো কখনো বড় খরচ হয়। ডিপার্টমেন্টের একজনের ইউটেরাস রিমুভাল হল। বড় খরচ। স্টিল গাঁই গুঁই না করে টাকা দিয়ে দিয়েছে। কর্পোরেট লেভেলে বেশি খেলতে যায় না। গরীব নিরক্ষরদের সাথে অবশ্যই খেলতে যাবে। সচেতনতা বাড়ান।
  • guru | 127.194.192.99 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১২:২১47164
  • অন্তত প্রথম ২-৩ বছর গ্রামে গঞ্জে সব গরীবেরা নিজেদের গুচ্ছ রোগভোগের চিকিৎসা করাতে থাকলে লাভ আছে। তবে ঐ শেষ পর্যন্ত লাভ ইনসিওরেন্স কোং এরই হয়, প্রোবাবিলিটি ইত্যা। বি পি এল কার্ডের বাৎসরিক মনিটরিং হয়? মানে খুব গরীব ঘরের ছেলে পড়াশুনো করে ভালো চাকরি পেয়ে পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করল। কার্ড ল্যাপ্স হবে? এই সমস্ত কেসের সোসাল মনিতরিং বেশি দরকার। সরকারী দূর্নীতির মোকাবিলা করতে অরাজনৈতিক লোকাল সংস্থা গঠন করুন। NGO দের ইনভলভ করুন। সচেতনতা বাড়ান ও মোবিলাইজ করুন।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৫০47170
  • সরকারকে পার ফ্যামিলি ৩৮০ টাকা প্রিমিয়াম দিতে হয় ? এটা কোথায় আছে ?

    যাগ্গে, ঐ হিসেব ধরে নিলেও, ঐ টাকা প্রতি ফ্যামিলিকে ধরানোর কথা তো বলা হচ্ছে না। সরকার সর্বমোট যা খরচ করছে, সেই ১৫ কোটি টাকা ( + আরো কিছু টাকা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর পিছনে খরচ করছে) ঐ বিপিএল পপুলেশনের চিকিৎসা বাবদ খরচ করবে। ১১ টা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র কেন, ৫১ টা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিপিএল পপুলেশনের বছরে পরিবার প্রতি ৩০০০০ টাকার চিকিৎসা বিনামূল্যে হবার প্রভিশন থাকবে। এতে চিকিৎসার খরচ উঠেও ঐ ৫১ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো পরিষেবার পিছনে খরচ হবে।
    যা পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য ভালো।
    দুটো প্রসেস পুরো সমান্তরাল হতে হবে, এমন তো নয়।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৫৫47171
  • ৪০০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে ১০০ কোটি টাকা চিকিৎসার খরচ হচ্ছে, এটা কোন একটা স্টাডিতে বেরিয়েছিল শুনেছিলাম। ইন্সিওরেন্স কোং গুলোর ক্ষতি কোথায়, লাভ ই তো লাভ।
    আর অনেক আগেই লিখেছিলাম, বেলুড় শ্রমজীবী থেকে একটা স্টাডি হচ্ছে এনিয়ে। ১০০ টি বিপিএল পরিবার নিয়ে ( এই পরিবারগুলিকে আমরা সার্ভে করে চিহ্নিত করেছিলাম)। এবার প্রিমিয়াম বাবদ যে খরচ হচ্ছে ( সেটা ৬৭০ ধরা হয়েছিল, সেটাই সরকারকে দিতে হচ্ছিল বলে শুনেছিলাম), সেই পরিমাণ টাকা ঐ প্রোজেক্টের জন্য বরাদ্দ করে এক বছর ধরে ওঁদের সব চিকিৎসা বিনামূল্যে করা হবে। চিকিৎসা বাবদ কত খরচ হচ্ছে, তার আইডিয়া পেতে।
  • Arpan | 52.106.175.148 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৫৬47172
  • প্রত্যেক স্টেটেই তো টেন্ডার ডেকে সার্ভিস প্রোভাইডার ঠিক করার কথা - কাজেই প্রকৃত প্রস্তাবে না থাকারও কিছু নেই।

    ওমনাথকেঃ এলাইসি হেল্থ ইন্সুরান্সে বিজনেস করে না। মূলত টার্ম আর লাইফ ইন্সুরেন্সে ওদের কারবার।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৩১47210
  • কিন্তু এই পয়েন্টটা তো তোলা হয়েছিল এই বলে যে এই পদ্ধতিতে সরকারি দুর্নীতির আর সুযোগ থাকবে না ! নন-বিপিএল দের কার্ড ইস্যু করা হবেনা ! সে সুযোগ তো এখনও পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান।
  • ঈশান | 60.82.180.165 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০২:১০47208
  • তাহলে স্টেপগুলো, আরেকবার।
    ১। সরকার লিস্টি বানাবে। (সেন্সাস থেকে পাওয়া যাবেনা)
    ২। বীমা কোং সরকারি আপিসারের উপস্থিতিতে কার্ড দেবে।
    ৩। সরকার সেই লিস্টি মেলাবে।

    সরকারের কাজ কিভাবে কমল, আকা বুঝিয়ে দিক। ঘাপার চান্সই বা কিভাবে কমল? বীমা কোং যত লোককে এনরোল করতে পারবে তত লাভ, জালি হলে তাদের ভালই। হাসপাতালেরও ভালো। সরকারি আপিসারেরও ভালো। ত্রিপাক্ষিক উইন উইন উইন গেম।

    এরপর আবার সরকারে ঘাড়ে আছে হাসপাতালের কোয়ালিটি কন্ট্রোল। ওরে বাবা।
  • জয়ন্ত | 127.194.81.51 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৪৪47211
  • guru, "২ এর পার্ট "কার্ড দেবে" একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ।" এইটে ভুলে যাওয়া হচ্ছে, সেটা ধরে নিচ্ছেন কেন? কে বা কারা ভুলে গেল? প্রশ্ন এটাই যে RSBY করে আদৌ লাভ হচ্ছে কিনা। সেখানে "RSBY কার্ড দেওয়াটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ, আর সেটা বেসরকারি ঘাড়ে চাপিয়ে দারুণ করেছে সরকার।" এটা বলাটা ঘোড়ার সামনে গাড়ি জোতা। RSBY কার্ড করার খানিকটা পরিশ্রম কম খরচে করা হল। কিন্তু সেই কম খরচটাও তো ইন্সুরেন্স কোম্পানি ধরে রেখেই তার কোটেশন দেবে। অর্থাৎ এই 'কম খরচ'টা তো সরকারি খরচ। RSBY কার্ড করার ব্যাপারটা না থাকলে সেই খরচটা করার দরকার হতো না।

    Arpan, আপনি লিখলেন, "কেউ পড়া করে না।
    What is the enrollment process?

    An electronic list of eligible BPL households is provided to the insurer, using a pre-specified data format. An enrollment schedule for each village along with dates is prepared by the insurance company with the help of the district level officials. ... " ইত্যাদি ইত্যদি।

    Arpan, কী দেখে যে আপনার মনে হল আপনি ছাড়া আর কেউ এই জিনিসটা পড়েনি বা বোঝেনি বলুন তো? আপনার এই electronic list of eligible BPL households, যেটা কিনা insurerকে দেওয়া হচ্ছে, সেটা তো BPL lists, স্টেট গভর্ণমেণ্টের করা, সেটাকেই ইলেক্ট্রনিক ফর্মাটে কনভার্ট করা। "However, state governments alone are responsible for the accuracy of their BPL lists."

    রিলেটেড আর একটা কথা বললেন আকা, "জয়ন্ত সত্যিই বুঝলাম না ঠিক কি বলতে চাইলেন। আমি এইটুকু বুঝেছি।

    ১। কে কে গরীব সেটা আইডেন্টিফাই করে তাদের একটি কার্ড দেবে একটি প্রাইভেট কোম্পানি তাকে ইন্সিওরেন্স কোম্পানি বলুন বা যাই বলুন। এটার লাভ হল, যে তারা শুধুমাত্র নিজেদের লাভের কথা ভেবেই ভুলভাল লোককে কার্ড দেবে না। যেমন বিপিএল কার্ডের ক্ষেত্রে হয়েছে।"

    আকা আপনি নিজের পোস্টটাই দেখুন একবার। RSBY site থেকে নিয়েছেন আপনি, "However, state governments alone are responsible for the accuracy of their BPL lists. Preparation of BPL data in the specified format is necessary for implementing the scheme in the district."

    তারপর আপনি বললেন বিপিএল লিস্ট সরকার ঠিকই বানায় কিন্তু কার্ড দিতে ভুল করে। "আর সরকার লিস্টি বানানোতে ছড়িয়েছে এই কথা বলি নি। সেই লিস্ট অনুযায়ী কার্ড দিতে ছড়িয়েছে। এটাও পাঠে ভুল।" ঈশান যখন বললেন, এটা আকা কী করে জানলেন, তখন আকার অদ্ভুত স্পেশাল প্লীডিং, বিপিএল কার্ড ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে ঘাপলা নেটে খুঁজলেই পাওয়া যাবে।

    "অন ট্রাভেল, ফোন থেকে বেশি লেখা অসম্ভব। হ্যাঁ [RSBY লিস্ট বানানোতে] ঘাপলা তো হতেই পারে।" আবার আকা, আবার স্পেশাল প্লীডিং। আজাইরা তককো জিনিসটা কী বুঝতে দেরী হচ্ছে না আর।
  • জয়ন্ত | 127.194.81.51 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০০47212
  • আকা আমাকে বলছেন, "আপনি যে উদাহরণটি দিলেন সেটি স্পেকুলেটিভ। ধরে নিচ্ছেন ইন্সিওরেন্স কোম্পানির কোন ক্ষমতাই থাকবে না। সেই অ্যাজাম্পশনের কারণ কি জানি না। প্রায় সব ইন্সিওরেন্স কোম্পানির নিজস্ব ডাক্তার থাকে।" আকা, আপনি প্রায়ই বলছেন অন্যদের নাকি 'পাঠে ভুল' হচ্ছে। তা আমি এবাবদে কী বলেছিলাম সেটি আপনি পাঠ করেছেন সেব্যাপারে নিশ্চয়ই সন্দেহ নেই।

    দেখুন তো, আমি কি বলেছি ইন্সিওরেন্স কোম্পানির নিজস্ব ডাক্তার নেই বলেই তারা ডাক্তার-হাসপাতালের জালি ধরতে পারবে না? সরি, আমার নিজের কথার লম্বা কোট করতেই হলঃ

    "ইন্সুরেন্স কোম্পানি তখন জালি ধরতে ব্যবস্থা নেবে। সেটাও নিখরচার নয়। এবং যতোই খরচা করুক না কেন, ফুলপ্রুফ নয়। যেমন অ্যাপেন্ডিক্স। পেটে ব্যথা হলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস -- এটা ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। ডাক্তার ডায়াগনোসিস করেছেন, এবং কেটেছেন। তবু ধরুন ইন্সুরেন্স কোম্পানি বলল, সব কাটা অ্যাপেন্ডিক্স-এর বায়োপ্সি করতে হবে। ইন্সুরেন্স কোম্পানিকেই সেক্ষেত্রে অ্যাপেন্ডিক্স বায়োপ্সির অতিরিক্ত খরচ দিতে হবে। কিন্তু কে বায়োপ্সিটা করাবে? নার্সিং হোম করালে, নিশ্চিন্ত থাকুন, সব কাটা বায়োপ্সির রিপোর্টে আসবে অ্যাপেন্ডিক্স ইনফ্লেমড। ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে করাতে গেলে অজস্র ওভারহেড, খরচ অনেক বাড়বে, এবং করিয়েও তারা ডাক্তারের দিকে আঙ্গুল তুলে বলতে পারবে না -- মশায় ভুল করেছেন কেন, টাকা মারার ধান্দা, না? বলতে পারবে না, কেননা ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিসে ভুল হয়। তাদের প্রমাণ করতে হবে, ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিসে যে সংখ্যায় ভুল হয়, কোনও ডাক্তার বা নার্সিং হোম তার চেয়ে অনেক বেশি ভুল করছেন, যা স্ট্যাটিসটিক্যালি সিম্পল-ভুল হতে পারে না। এই করে একটা ডাক্তার বা নার্সিং হোমকে ব্ল্যাকলিস্ট করতে পারবে। কিন্তু আমাদের ডাক্তার বা নার্সিং হোমগুলোর মধ্যে এই প্রবণতা এত বেশি, 'শ্রীরাধিকে চন্দ্রাবলী, কারে ধরে কারে ফেলি' দশায় পৌঁছাতে দেরি হবে না। আর শুধু অ্যাপেনডিক্স কেন? নর্মাল ডেলিভারিকে সিজার করলে কেমন করে ধরবেন? (স্বাভাবিক প্রসব ২৫০০/-, সিজারিয়ান সেকশন ৪৫০০/-)। কোলেসিস্টেকটমি করে পাথর বেরোল না স্টক থেকে পাথর রেখে দেওয়া হল সেটা দেখতে ইন্সুরেন্স কোম্পানি কি ওটি-তে পাহারাদার বসাবে? সবার ইউএসজি রিপোর্ট দেখবে? দেখতে পারে, সেসব 'ম্যানেজ' হয়ে যাবে।"

    আকা আমাকে আবার লিখেছেন, "তো, আপনার মূল বিরোধীতার সুরটা বদলেছে, প্রথমে ছিল আইডিওলজিকাল, বেসরকারীকরণ, মুনাফা ইত্যাদি। এখন আপনি অপরাশেনল ইস্যু নিয়ে কথা বলছেন। একটা সিস্টেম এখনও ভালো করে ইমপ্লিমেন্টেড হয় নি তাই নিয়ে স্পেকুলেট করে কি লাভ?"

    আকা, আমার মূল সুরটা এই যে সরকারের দায়িত্ব হল সবার জন্য স্বাস্থ্যের করা। ইন্সুরেন্স করে করলে, করতে পারলে, আমার কেন আপত্তি হবে? ইন্সুরেন্স করে করা সম্ভব নয় আমাদের দেশে বর্তমান পরিস্থিতিতে। কেন সম্ভব নয় সেটা বলতে কেন চাইব না? সেটা তো বাস্তবের ভিত্তিভূমি থেকেই বলব। অপরাশেনল ইস্যু নিয়েই বলব।

    "একটা সিস্টেম এখনও ভালো করে ইমপ্লিমেন্টেড হয় নি তাই নিয়ে স্পেকুলেট করে কি লাভ?" সত্যিই তো, দেশে ভাল করে মুসলমান শরিয়তি (হিন্দু মনুবাদী / নাজি / কম্যুনিস্ট ) শাসন চালু হয়নি, সেগুলো শুরু করার আগে কেউ খামোকা 'স্পেকুলেট' করে বাধা দেবেন না প্লীজ। লাগলে, তখন বলবেন।
  • জয়ন্ত | 127.194.81.51 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৩৭47213
  • দেখুন কতরকমের অতিরিক্ত খরচ RSBY তে ইন্সুরেন্স কোম্পানির সাহায্যে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হেলথকেয়ার ডেলিভারি করতে গিয়ে হচ্ছে।

    ১। কার্ড করানোর খরচ (বিপিএল লিস্ট বা সেজাতীয় লিস্ট আলাদা করে বানানোর খরচ ধরলে সেটা আরও বেশি হবে)।
    ২। বিমা কোম্পানির মুনাফা।
    ৩। বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বেশি বিল করে পয়সা নেওয়া।
    ৪। বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত 'ক্ষতিকর চিকিৎসা' করে পয়সা নেওয়া।
    ৫। চালাক কিছু বেনিফিসিয়ারি আর বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসে চিকিৎসা না করে চিকিৎসা হয়েছে দেখিয়ে পয়সা তুলে ভাগ-বাটোয়ারা করবে, সে খরচ।
    ৬। ইন্সুরেন্স কোম্পানি এসব ঠেকাতে যে চেষ্টা করবে (অনেকটা অক্ষম খানিকটা সক্ষম) তার কস্ট ।

    ৭। ইন্সুরেন্স কোম্পানির জালি (আকাকে কোট করছি) --
    "ভারতে অনেক ভাবে জালি হতে পারে।
    কেস ১ঃ কোম্পানি ৫ জনের বদলে ৩ জনকে ইন্সিওরেন্স দিল, তাদের পুরো খরচা দিয়েও কোম্পানির ৭ টাকা লাভ।
    কেস ২ঃ হতে পারে হসপিটাল ২ টাকার চিকিৎসা করিয়ে লিখিয়ে নিল ৬ টাকার চিকিৎসা হয়েছে। পরে ইন্সিওরেন্স কোম্পানির সাথে ৪ টাকা ভাগ করে নিল।

    ৮। সরকারের তরফ থেকে এগুলো রোখার চেষ্টা হবেই। [আকাঃ কেস ১ এর জালি কি করে রুখবেনঃ এরিয়ায় যতজন দরিদ্র আছে তাদের লিস্টি মিলিয়ে মিলিয়ে চেক করুন কার্ড পেল কিনা। এখন বোধহয় কোন ডিস্ট্রিক্ট অফিসিয়ালের সামনে এটা হয়।] যেহেতু সব ধরা যাবে না, সেহেতু ৭ নং কস্ট কমবে যেমন, ৮ নং কস্ট তেমন বাড়বে।

    আমার মনে হয়, এখন প্রিমিয়াম যা ধার্য করা আছে তাতে ইন্সিওরেন্স কোম্পানির লাভ অনেক থাকছে, যেমন পাই বলেছেন। তার মানে আমার তালিকায় ২ নং খরচ এখনও পর্যন্ত অনুপাতে বেশি। কিন্তু এই ছবিটা দ্রুত বদলাবে হয়তো। কেননা মানুষ যত জানতে পারবেন এই বিষয়ে, এমন মানুষ যারা কোনওদিন চিকিৎসা করাতে যেতেই পারেন নি (এবং আমার বিচারে এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভালো ব্যাপার, আমি ওভারঅল RSBY ঠিক মনে না করলেও) তাঁরা চিকিৎসা করাতে যাবেন। কিন্তু তার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে আমার তালিকায় ৩, ৪, ও ৫ নং খরচ। ফলে ইন্সিওরেন্স কোম্পানি প্রিমিয়াম বাড়াতে বলবে। এবং তার মধ্যে অবশ্যই আকা-কথিত ইন্সুরেন্স কোম্পানির জালিগুলো থাকবে ও বাড়বে। কেননা কন্ট্রারি টু আকা'স এক্সপেক্টেশন, সেটা ঠেকাতে সৎ অফিসার ততোজনই পাওয়া যাবে যতোজন সরকারি হেলথ সার্ভিস সৎভাবে ও দক্ষভাবে চালাতে চেষ্টা করেন।

    বাই দ্য ওয়ে, সরকারি হেলথ সার্ভিস সৎভাবে ও দক্ষভাবে চালানো হচ্ছে, এই কথাটা যারা সরকারি ব্যবস্থাকেই চাইছেন RSBY ইত্যদি ইন্সুরেন্স কোম্পানির বদলে, তাঁদের মুখে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার মোটেই মনে হয়না সরকারি হেলথ সার্ভিস সৎভাবে ও দক্ষভাবে চালানো হচ্ছে। তবে সেটাকে সৎ ও দক্ষ করা যতোটা শক্ত, ঠিক ততোটাই শক্ত RSBY ইত্যদি ইন্সুরেন্স-বেসড ব্যবস্স্থ্যাকে সৎ ও দক্ষ করান।
  • guru | 69.160.210.2 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:১০47209
  • ১। ন্যূনতম টাকার বিডিং এর ভিত্তিতে সরকার বীমা কোং স্থির করবে।
    ২। সরকার বিপিএল লিস্টি বানাবে ও কার্ড দেবে।
    ৩। সেই লিস্টি একটা ফর্ম্যাটে নানা হাত ঘুরে বীমা কোং এর কাছে পৌঁছবে।
    ৪। বীমা কোং লিস্টি মিলিয়ে আর কার্ড দেবে। তার একটা লিস্টি বানাবে।
    ৫। সরকার লিস্টি মিলিয়ে দেখে নেবে বিপিএল তালিকায় সবার হাতে আর কার্ড পৌঁছেছে কিনা।
    আগে সরকার শুধু ২ করত, এখন ১,২,৫ তিনটে কাজ। কোং স্থির করবে, বিপিএল লিস্টি বানাবে, আর তালিকার সঙ্গে বিপিএল তালিকা মেলাবে।

    এইটে বলে খুব মজার, ভুলে যাওয়া হচ্ছে, ২ এর পার্ট "কার্ড দেবে" একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। গুচ্ছ মেশিন, বায়োমেট্রিক্স, কার্ড ম্যানেজমেন্ট ও সে বাবদ দেশব্যপী বিশাল সংখ্যক টেকনিকালি কমপিটেন্ট কর্মচারী নিয়োগ, ও ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট। এইটেই সরকার ঘাড় থেকে নামাল। লিস্ট করা বা মিলিয়ে দেখা বেসিকালি ক্লারিকাল জব। ওতে সরকারি ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিদ্ধহস্ত। যেমন আধার কার্ডের এই টেকনিকাল দিকটাও টেন্ডার ডেকে আউটসোর্স করা হয়েছে।
  • guru | 127.194.212.98 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৫৭47222
  • এই প্রশ্নটা আমারও। RSBY এর সমালোচনা যারা করছেন তাদের নিজেদের কাছে অন্য কি মডেল অলরেডি রয়েছে, যেটা এর বদলে ইমপ্লিমেন্ট করা উচিত ছিল বলে মনে হয়? আর একটা ডেটা লাগবে, RSBY বাবদ যে খর্চা করা হচ্ছে সেটা কি বাৎসরিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ টাকার বাইরের না, মোট স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ টাকা থেকে RSBY? জনিত টাকা বাদ দিয়ে বাকি টাকাটুকু শুধু খরচ হবে আগের সমস্ত খাতে? অর্থাৎ RSBY চালু হওয়ায় অন্যান্য নর্মাল স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় কতখানি কমেছে? কিভাবে? স্পেকুলেশন নয়, কোনো ডেটা আছে?
  • guru | 127.194.212.98 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৫৭47221
  • এই প্রশ্নটা আমারও। RSBY এর সমালোচনা যারা করছেন তাদের নিজেদের কাছে অন্য কি মডেল অলরেডি রয়েছে, যেটা এর বদলে ইমপ্লিমেন্ট করা উচিত ছিল বলে মনে হয়? আর একটা ডেটা লাগবে, RSBY বাবদ যে খর্চা করা হচ্ছে সেটা কি বাৎসরিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ টাকার বাইরের না, মোট স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ টাকা থেকে RSBY? জনিত টাকা বাদ দিয়ে বাকি টাকাটুকু শুধু খরচ হবে আগের সমস্ত খাতে? অর্থাৎ RSBY চালু হওয়ায় অন্যান্য নর্মাল স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় কতখানি কমেছে? কিভাবে? স্পেকুলেশন নয়, কোনো ডেটা আছে?
  • Arpan | 52.107.175.153 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:১৬47215
  • জয়ন্ত, ঐ পোস্টটি যার বা যাদের উদ্দেশ্যে ছিল (এই থ্রেডে পোস্টটির অবস্থান দেখলেই বোঝা যাবে) আশা করি তারা বুঝতে পেরেছে।

    ধন্যবাদ।
  • জয়ন্ত | 127.194.84.97 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২০47216
  • আকা, আমার "স্পেশাল প্লীডিং" ও "আজাইরা তককো" কমেন্টদুটো withdraw করছি। আমি হয়তো আপনার কথা বুঝতে পারিনি।

    তবে বিপিএল লিস্ট ও তার সমস্যা নিয়ে অসুবিধেটা আমার প্রায়োরিটি লিস্টে রাখিনি। কেননা আপনি নেট থেকে যদি কিছু সেরকম দেন যে বাই অ্যান্ড লার্জ লিস্ট বানানো ঠিক, কার্ড দেওয়া ভুলভাবে হয়েছে, তো সেটা মেনে নিতে আমার কোনও আপত্তি নেই। সেটা হতে পারে।

    আমার মনে হয়, নতুন করে লিস্ট বানানো হলে যে খরচ হবে সেটা হয়তো যুক্তিযুক্ত হবে না। কারণ এক-একটা প্রোগ্রামের জন্য এক-একটা নতুন লিস্ট বানানোর খরচ অনেক। আর তাতেও যে কি করে সঠিক লিস্ট হবে, আমি সত্যিই বুঝিনি।
  • জয়ন্ত | 127.194.84.97 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৪47217
  • Arpan, আপনি লিখেছিলেন, "কেউ পড়া করে না। হতে পারে আপনি কাউকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। আমি বুঝতে পারিনি। সেক্ষেত্রে আমার কমেন্টটি withdraw করছি। আমি পড়া করেছি -- এইরকম মানে হয় তো আপনার শেষ মন্তব্যের? ধন্যবাদ।

    আপনার 'কেউ' শব্দটা আমাকে বিভ্রান্ত করেছে।
  • guru | 127.194.209.114 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৪২47218
  • কেউ এর দলে আমি ছিলাম, আছি, হাত তুললাম।
  • জয়ন্ত | 127.194.86.84 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩৭47223
  • guru,
    আমি জানিনা RSBY এর টাকাটা কোথা থেকে দেওয়া হচ্ছে। তবে কিছু রিপোর্ট পড়ে মনে হচ্ছে যে লেবার মিনিস্ট্রি, বা তাঁরা ফিফিউস করলে সরাসরি প্ল্যানিং কমিশন।
    http://articles.economictimes.indiatimes.com/keyword/rashtriya-swasthya-bima-yojana/recent/2

    "RSBY এর সমালোচনা যারা করছেন তাদের নিজেদের কাছে অন্য কি মডেল অলরেডি রয়েছে, যেটা এর বদলে ইমপ্লিমেন্ট করা উচিত ছিল বলে মনে হয়?" এটার এককথায় উত্তর হবে না। পুরো শ্রীনাথ রেড্ডি হাই পাওয়ার কমিশনের ৭০০ বা ৮০০ পাতার রিপোর্টটা এর উত্তর হতে পারে। লিঙ্ক আগেই দিয়েছি। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে ইন্সুরেন্স-বেসড বেসরকারি প্রভাইডার দিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা আমাদের দেশে কাজে আসবে না। আর কিভাবে সরকার তার নিজস্ব পরিষেবা ইনফ্রাস্ট্রাকচার দিয়ে রাইট টু হেলথ বাস্তবায়িত করতে পারে সেটা বলা আছে।

    আমার মনে হয় এক্সিস্টিং / ইভলভিং পরিকল্পনার সমালোচনা করা সম্ভব সেই পরিকল্পনার বর্তমান অসুবিধে আর সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ অসুবিধেগুলো দেখিয়ে। এই সমালোচনাটা সমস্ত ইনফর্মড নাগরিকের কাছ থেকে আসতে পারে। কিন্তু অন্য মডেল তৈরি করতে গেলে অনেক বেশি স্টাডি আর অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। আমরা আমাদের দেশের (বা লেনিন বা ওবামার, বা পাকিস্তানের, বা রাশিয়ার) পরিকল্পনার সমালোচনা করি। সেটার প্রাকশর্ত হিসেবে কি আমাদের ভারত বা আমেরিকার বা অতীত ও বর্তমানের রাশিয়ার বা পাকিস্তানের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নীতি কী হবে, অর্থনীতি কী হবে বা হতে পারত -- সেটা নিয়ে 'অন্য মডেল' দিতে হবে? তাহলে সেটা প্রকারান্তরে বলা যে সমালোচনাটা কেবল অতি এলিটের অধিকার।

    আরেকটা কথা। আমার ধারণা (ফিগার কিছু কিছু দেখেছি, কিন্তু এখন খুঁজে আচ্ছি না), ভারতে কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তরগুলি যা খরচ করেন, তার তুলনায় RSBY এর খরচ খুবই কম। ১% হবে কিনা সন্দেহ। কিন্তু এর মানে এই নয় যে "ধুত্তোর, এই কটা পয়সা দিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করছে সরকার, তাতে কাঠি করার কি আছে?"

    অভিমুখটা দেখা খুব জরুরি।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৪৪47224
  • 'সকলের জন্য স্বাস্থ্য' এই লক্ষ্যে বিপিএল পপুলেশনের জন্য স্বাস্থ্য, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ,এটা দিয়ে তো শুরু হতেই পারতো। বিপিএল কার্ড দেখালে ( R কার্ডের লিস্ট তার থেকে আলাদা কিছু হচ্ছে না, বা তাতেও একই ঘাপলা থাকতে পারে, সে নিয়ে আলোচনা হয়ে গেছে), যেকোনো সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে তাঁরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন,এটা করতে অসুবিধা কোথায় ? মানে, কী কী অসুবিধা হতে পারে জানতে চাইছি।
  • guru | 127.194.203.114 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:০০47225
  • ১) এটা কি এখন বিপিএল কার্ড হোল্ডার রা পান না? পাই সিওর জানে?
    ২) ধরলাম প্রাথমিক চিকিৎসায় পান, বড় অপারেশন, হসপিটালাইজেশনে পান না, (ফ্রি বেড ইত্যা বাদে)। তো এইটে ইমপ্লিমেন্ট করলে কি পরিমাণে সরকারী টাকা নয়ছয় / আত্মস্যাৎ হতে পারে সেটা পাই স্পেকুলেট করতে পারে? প্রতিপ্রশ্ন না করে শুধু কয়েকটা পয়েন্ট লিখে স্পেকুলেশনটা দাঁড় করানো হোক।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৩৩47226
  • এখন সরকারি হাসপাতালে বিপিএল পপুলেশনের জন্য হসপিটালাইজেশন, অপারেশনে, ওষুধ, নানা খাতে টাকা লাগে বলে জানি।
    এটা ইম্প্লিমেন্ট করলে কী পরিমাণে টাকা নয়ছয় হতে পারে সেটা স্পেকুলেট করতে পারছি না। মানে, এখন যা হয় তার বাইরে আর আলাদা কী হবে জানিনা। এখন ওষুধ পাচার, মেশিন বসানোর জন্য কমিশন খাওয়া এইসব সরকারি হাসপাতালে হয় বলে শুনেছি। কিন্তু ছোট কোন অপারেশন কে বড় কিছু দেখানো, বা প্রয়োজন না থাকলেও অপারেশন, এইগুলো তো হয়না বা হবেনা।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৪৮47228
  • রাখির দেওয়া প্রথম লিংকের পেপারটার ১ নং টেবিলটা দেখছিলাম। প্ল্যানিং কমিশনের লিস্ট আর RSBY এর লিস্টে তো কোন মিল নেই !
    On March 31, 2011, there were 10 such States; of these, the RSBY number was within the range of BPL households estimated according to the two methods in five States (Gujarat, Himachal Pradesh, Punjab, Tripura and Uttar Pradesh). In the other States, the numbers were outside the range; in two (Chandigarh and Goa) the RSBY number underestimated the BPL numbers, and in three States (Delhi, Haryana, and Kerala) the number of BPL households was overestimated. The reasons for these discrepancies were not clear.
  • rakhi | 213.147.88.194 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৫৬47219
  • "For people living below poverty line, an illness not only represents a permanent threat to their income earning capacity, in many cases it could result in the family falling into a debt trap. When the need to get the treatment arises for poor families they often ignore it because of lack of resources, fearing wage loss, or wait till the last moment when it’s too late."
    these are the starting line from the RSBY portal about the card. so "wait till the last moment "is not what the card ensures to do.
    how can it be done without 'outdoor' facility? how they could be asked to show awareness when the whole idea is so impractical and artificial!
    i must admit that we are working in a very very small way. but just visiting few villages have lifted the curtain of ignorance from our mind about current health condition. the incidents i have referred earlier are real. we did found RSBY card among trash hand bills. there are houses which don't have RSBY card even they are BPL card holders even though their village had that facility of RSBY.
    there are numerous incidents where fever is not given any attention and later on turned into something 'serious' and then 30000 a year for a family of five is simply not enough. specially we were alarmed to see rising cases of handicapped and specially abled ppl without any medication.
    there are family members half of whom are APL and half BPL and no RSBY card.
    my point is, RSBY is serving very much like profit making insurance companies. let it claim that. why claim to address such a bigger issue of "HEALTH" when it not even addressing medication properly!
    it is no more a problem of awareness. its apathy from one section and absolute mistrust from the other. way more serious and grave
  • π | 172.129.44.87 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৫৮47229
  • ঐ পেপারের শেষের দিকেই ESI স্কিমের কথা বলা হয়েছে। যার বেসিসে RSBY র রিফর্ম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ESI সরকারি ইন্সিওরেন্স, সরকারি হাসপাতালে।
    এই সিস্টেমটাই বা নয় কেন ?
  • জয়ন্ত | 127.194.89.92 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১০:৫০47220
  • Rakhi is right, "why claim to address such a bigger issue of "HEALTH" when it is not even addressing medication properly!" But imho, RSBY gives something which was not there, and I think it is of some use to some of them.

    My questions are, whether the same amount could have been used more fruitfully is some other way, and whether the scheme may be used to have an additional handle on the (potential and real) users, so that they do not ask for the Right to Health.

    রাখি ঠিকই বলেছেন যে স্বাস্থ্য নামক বড় ব্যাপারটি আব্দই দিন, RSBY ওষুধ বা চিকিৎসার মিনিমাম দাবিটুকু পূরণে অসমর্থ।

    কিন্তু তবু, আমি বলব, প্রশ্নটা তুলাদন্ডে এইভাবে মাপা যেতে পারে। RSBY আমাদের সম্পদের (টাকা, ম্যানপাওয়ার ইত্যাদি) যতোটা ব্যবহার করে যতটুকু স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সার্ভিস দিতে পারছে, সেই সম্পদ দিয়ে কি অন্যভাবে আরও কিছু পাবার বাস্তব সম্ভাবনা ছিল? এবং RSBY কি তার (বাস্তব ও সম্ভাব্য) ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটা অতিরিক্ত সেফটি ভাল্ভ হিসেবে কাজ করছে না, যার ফলে তাঁরা 'স্বাস্থ্যের অধিকার' দাবিটা তুলতেই পারবেন / চাইবেন না?
  • aka | 23.13.123.100 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১২:০৫47214
  • জয়ন্ত, আমি রুটি ও রুজির জন্য ট্রাভেল করছি, অধিকাংশ সময়ে ফোন থেকে অ্যাকসেস করছি, তাতে ব্ড় পোস্ট করা, কপি পেস্ট করার অসুবিধা। এমনকি এই লম্বা ব্লগও ঠিকমতন লোড হচ্ছে না। তাই নেটে খুঁজতে বলেছি। বাকিটা পরে।
  • জয়ন্ত | 127.194.82.95 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৩৩47230
  • আমি সাত বছর একটা ই এস আই করপোরেশন হাসপাতালে কাজ করেছি। মানে রাজ্যের হাতে, রাজ্যের শ্রমদপ্তরের হাতে, যেসব ই এস আই হাসপাতাল আছে সেগুলো (যেমন কলকাতায় মানিকতলা ই এস আই হাসপাতাল) সেটার থেকে এর ম্যানেজমেন্ট আলাদা। কেন্দ্রসরকারের অধীনে একটি করপোরেশন হল ই এস আই করপোরেশন, সেটা প্রত্যক্ষভাবে এই হাসপাতালটা চালাত। জোকায়, আপনারা কেউ হয়তো এটার কথা জেনে থাকবেন।

    তারপর আমি এখন একটি চ্যারিটেবল হাসপাতালে আছি, একটি কর্পোরেট হাসপাতালে আছি, এবং প্র্যাক্টিস করি।

    আমার অভিজ্ঞতায়, জোকা ইএসআই করপোরেশন হাসপাতালে যেসব বিভাগে স্পেশালিস্ট আছেন / ছিলেন সেখানে পরিষেবার মান কর্পোরেট হাসপাতালের তুল্য, তবে স্পেশাল কিছু ব্যাপার (যেমন ধরুন হার্ট সার্জারি বা ক্যানসার চিকিৎসার) ব্যবস্থা নেই। সেটার জন্য দিল্লী পাঠানোর ব্যবস্থা আছে, কিন্তু সেখানে কজন যান আর কীরকম মানের চিকিৎসা পান আমি জানিনা। হাসুপাতাল পরিস্কার, লোকদেখানো আড়ম্বর নেই, হাসপাতাল থেকে ইনফেকশন ইত্যাদি যা করপোরেট হাসপাতালে একটা দুঃস্বাপ্ন, সেটাও আমার ধারণা কম ছিল । কোনও স্ট্যটিসটিক্স নেই, কিন্তু যেসব কারণে ইনফেকশন হয় সেটা এখানে বেশি ভাল করে মনিটর করা হত। আর রোগী ইনফেকশনএর ফলে বেশিদিন থাকলে ডাক্তারদের ইনসেনটিভ ছিল না, পয়সা বেশি পেত না।

    জোকা ইএসআই করপোরেশন হাসপাতালে যেসব বিভাগে স্পেশালিস্ট নেই, সেখানে মান একটু খারাপ, কারণ এই নয় যে জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসারেরা খারাপ। ব্যাপার হল, এঁদের বিভিন্ন বিভাগে ঘোরানো হয়, আর প্রেস্টিজ পেতে গেলে অফিসিয়াল কাজ (স্টোর দেখা ইত্যাদি, যেখানে স্পেশালিস্টরা মাথার ওপরে বসার সম্ভাবনা নেই) সেখানে যেতে হয়। সুতরাং ক্লিনিক্যাল কাজের ইনসেন্টিভ নেই।

    কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে জোকা, মানিকতলা এরকম কয়েকটা জায়গা বাদ দিলে, ইএসআই পরিষেবা বেশ খারাপ, এবং সাদা হাতি। হাওড়ার বালটিকুরিতে আমি পার্ট টাইম স্পেশালিস্ট হিসেবে হজ করেছি, কী পরিমাণ ফাঁকিবাজি আর রোগীকে অবহেলা না দেখলে প্রত্যয় হয় না। অথচ এঁরাই মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে ট্রান্সফার হয়ে গেলে বেশ ভাল কাজ করেন। আর একটা কথা। ইএসআই বেনেফিশিয়ারিরা, বাই অ্যান্ড লার্জ, ইএসআই-কে ফালতু মনে করেন। জোকার হাসপাতালে যেসব রোগী নিয়মিত আসতেন তাঁরা বলতেন ভাল, কিন্তু নতুন রোগীর হাবভাবে বেশ বোঝা যেত আস্থা নেই।

    খুব সহজ ও লিনিয়ার কোনও ইক্যূয়েশন করা মুশকিল।
  • aka | 79.73.9.7 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:০২47231
  • জয়ন্ত, তাহলে এটা মানলেন সরকার মানেই কেসি দাসের রসগোল্লা নয়। কাল লক্ষ্মীপুজো সেরে লিখব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন