এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা— এই যোজনায় আপনার কি পাওয়ার কথা? আপনি কি পাচ্ছেন?

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৮২০ বার পঠিত
  • ২০০৮-এর ১লা এপ্রিল দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের জন্য ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বা RSBY নামে এক স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছেন। অন্য স্বাস্থ্যবিমায় যার নামে বিমা তাকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। এই বিমায় কিন্তু সরকার সেই ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে দেন, ও গরীব মানুষ বিনামূল্যে একটা নির্দিষ্ট মূল্যমান অবধি অনেক চিকিৎসা সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানেই পেতে পারেন। কিন্তু গরীব মানুষ কি জানেন তাঁর কি পাওয়ার কথা? যা পাওয়ার কথা তা তিনি পাচ্ছেন কি?

    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা কাদের জন্য?
    এটা হল গরীব মানুষদের জন্য করা একটা স্বাস্থ্য বিমা। সাধারণত বিমা করলে যিনি বিমা করেন, অর্থাৎ বিমাকারীকে, কিছু টাকা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিমা কোম্পানিকে দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় বিমাকারীকে বিমা কোম্পানিকে কোনও টাকা দিতে হয়না। সরকার সেই টাকাটা দিয়ে দেন। বিমাকারীকে একটা কার্ড করাতে হয়। একে বলে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডে তথ্য সঞ্চিত থাকে—কারা পরিবারের সদস্য, ওই বছরে কতটা টাকা চিকিৎসার জন্য পরিবার ব্যয় করেছে আর কতটা টাকা তাঁরা আরও ব্যয় করতে পারেন, ইত্যাদি সবই ওই স্মার্ট কার্ড থেকে উপযুক্ত যন্ত্র দ্বারা দেখে নেওয়া যেতে পারে।
    •কিভাবে স্মার্ট কার্ড করাতে হয়?
    সরকার এই কার্ড করার জন্য বিভিন্ন গ্রামে শিবির করেন। দারিদ্র-সীমার নীচে থাকা সমস্ত পরিবারকে আগে থেকে করা তালিকার সাহায্যে চিন্হিত করা থাকে। তাঁদের সবাইকে পঞ্চায়েত অফিসের মাধ্যমে শিবিরে ডাকা হয়। সেখানে বিমাকারীকে পরিবার-পিছু এককালীন ত্রিশ টাকা দিয়ে কার্ড করাতে হয়। একটি কার্ডে এক পরিবারের পাঁচজন পর্যন্ত বিমার আওতায় আসতে পারেন। কোনও পরিবারে পাঁচজনের বেশি সদস্য থাকলেও কিন্তু পাঁচজনের বেশি বিমার সুবিধা পাবেন না। কোন পাঁচজন পাবেন সেটা পরিবারের প্রধান ঠিক করে দেন।
    •একটা স্মার্ট কার্ডে ক’টা ফটো থাকে?
    একটিই ফটো থাকে পরিবারের প্রধানের। বাকিদের ফটো তোলা হয়, এবং সরকারি কমপিউটারে সেটি থাকে, যাতে প্রয়োজন হলে বা বিতর্ক হলে দেখা যায় যে অন্যদের সবাই সত্যিই পরিবারের সদস্য কিনা। ফটো ছাড়াও থাকে সবার আঙ্গুলের ছাপ – তারও কাজ ওই একই।
    •স্মার্ট কার্ড করার শিবির অনুষ্ঠিত হবার কতদিনের মধ্যে পরিবারটি স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে পারেন?
    আগে ফটো তোলার শিবির হবার পরে স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে কয়েক মাস লেগে যেত। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফটো তোলার দিনই ওই শিবির থেকেই স্মার্ট কার্ড হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে তারপর কয়েকদিনের অপেক্ষা।
    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে কী কী চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়?
    যেখানেই হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার সে সমস্ত ক্ষেত্রেই RSBY-এর স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে চিকিৎসার সুযোগ আছে। হাসপাতাল সরকারি হোক আর বেসরকারি, বা হোক নার্সিং হোম, সবক্ষেত্রেই একই সুযোগ। শুধু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের ক্ষেত্রে তাদের নামটা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার তালিকায় নথিভুক্ত থাকতে হবে। যেহেতু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমগুলো সরকার থেকেই পয়সা পেয়ে যায়, এবং সেই পয়সাটা খুব কম কিছু নয়, তাই আজকাল খুব বড় বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোম ছাড়া অধিকাংশ নার্সিং হোম বা বেসরকারি হাসপাতাল RSBY-এর তালিকায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করছে। ফলে বহু জায়গায় এই বিমার সুবিধা মিলছে।
    •যেসব ক্ষেত্রে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার হয় না সেক্ষেত্রে বিমাকারী কি খরচ পাবেন?
    বেশ কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন না হলেও বিমাকারী সম্পূর্ণ সুবিধা পাবেন। একে পরিভাষায় বলা হয় ‘ডে কেয়ার’। যেমন ধরুন ছানি কাটার অপারেশন করে ডাক্তারবাবু রোগীকে একদিন ভর্তি রাখতে না-ও পারেন। সকালে অপারেশন করে সন্ধ্যেয় ছেড়ে দিতে পারেন। তবু রোগী কিন্তু বিমার পুরো সুবিধা পাবেন। এরকম কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্র আছে—যেমন কিডনির রোগীর জন্য ডায়ালিসিস। এইসব নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের একটি তালিকা আছে। এর বাইরে অন্য চিকিৎসার জন্য যদি রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হন তো তাঁকে বিমার সুবিধা দেওয়া যাবে না, নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে চিকিৎসা চালাতে হবে।
    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে আউটডোর চিকিৎসা অর্থাৎ ডাক্তারের ফি ও ওষুধের খরচ কি তাহলে এই বিমা থেকে পাওয়া যাবে না?
    সাধারণভাবে বলতে গেলে, না, পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেখানেও বিশেষ পরিস্থিতিতে এই খরচ পাওয়া যেতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি হবার আগে ভর্তি হবার জন্য কিছু পরীক্ষা করাতে হলে বা কিছু ওষুধ খেতে হলে হাসপাতাল সেই বিমাকারীকে সেসব বিনাপয়সায় করিয়ে দিতে পারে – কিন্তু প্রমাণ রাখতে হবে দেখাতে হবে যে তিনি যথাযথ ডাক্তারি পরামর্শক্রমে হাসপাতালে ভর্তি হবার আগের ধাপ হিসেবেই ওই পরীক্ষাগুলি করিয়েছিলেন, এবং পরে নিয়মমাফিক ভর্তিও হয়েছিলেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় হাসপাতালটি রোগীকে বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পাঁচদিনের ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে দেবে – সেটার খরচও হাসপাতাল বিমার টাকা থেকেই পেয়ে যাবে।
    •‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা কী?
    ‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা হল এই যে কিছু বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব কিছু হাসপাতাল নিখরচায় করে দেবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তি হবার আগের ওষুধ, অপারেশন, ভর্তি থাকাকালীন শয্যা, নার্সিং, চিকিৎসা, ওষুধ, খাবার, ও ছেড়ে দেবার পরে দরকারি ওষুধ ও ডাক্তারের কাছে ফলো-আপ – এই সব মিলিয়ে একটা থোক টাকা ধরা থাকে। পুরোটাই হাসপাতাল করে দেবে ও রোগীর কাছ থেকে এক পয়সা নেবে না – পরে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাছ থেকে পুরোটাই পেয়ে যাবে। ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর লিস্টে নেই, কিন্তু প্যাকেজে আসতে পারে, এমন কিছু কিছু চিকিৎসাতেও হয়তো হাসপাতাল আগেভাগে অনুমতি নিয়ে রোগীকে ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর সুবিধা দিতে পারে।
    •কোন কোন মেডিকাল রোগের ক্ষেত্রে ভর্তির সুবিধা পাওয়া যাবে?
    ব্যাক্টেরিয়াল মেনিঞ্জাইটিস, ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস-ঘটিত ব্রংকাইটিস, জল বসন্ত, ডেঙ্গু-জ্বর, ডিপথেরিয়া, আমাশা, মৃগী, ফাইলেরিয়াসিস, খাদ্য থেকে বিষ-ক্রিয়া, হেপাটাইটিস, ম্যালেরিয়া, হাম, প্লেগ, নিউমোনিয়া, সেপ্টিসিমিয়া, সব ধরনের যক্ষ্মা, টিটেনাস, টাইফয়েড, ভাইরাল জ্বর, মূত্র নালীর জীবাণু-সংক্রমণ, শ্বাসতন্ত্রের নীচের অংশের সংক্রমণ, ইত্যাদি যে সব রোগে ভর্তি থাকার দরকার হতে পারে, সে সব ক্ষেত্রে বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিনে সর্বোচ্চ মাত্র ৫০০টাকা খরচ বিমা কোম্পানি দেয়।
    •মেডিকাল রোগী কি কি পাবেন?
    জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, সব ধরনের ডাক্তারের ফি, রক্ত, অক্সিজেন, ওষুধ, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে মেডিকাল রোগীদের প্যাকেজে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। কিন্তু বলা বাহুল্য দিনে ৫০০ টাকা এসবের জন্য একান্তই অপর্যাপ্ত।

    •মেডিকাল রোগী আইসিইউ-তে ভর্তি হলে কি পাবেন?

    জেনেরাল ওয়ার্ডের মত সব কিছুই পাবেন। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দিনে ৭০০টাকা অবধি বিমা কোম্পানি দেবে।

    •সার্জিকাল রোগীর কি কি সুবিধা পাওয়ার কথা?

    অধিকাংশ অপারেশনের প্যাকেজ নির্দিষ্ট আছে। এই প্যাকেজে জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, নার্সিং-এর খরচ, শল্যচিকিৎসক, অজ্ঞান করার চিকিৎসক ও অন্যান্য চিকিৎসকের ফি, অজ্ঞান করার গ্যাস ও ওষুধ, রক্ত, অক্সিজেন, ওটি ভাড়া, শল্যচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ওষুধ-পত্র, প্রস্থেসিস ও ইমপ্ল্যান্টের দাম, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। সার্জিকাল প্যাকেজগুলোতে অর্থের পরিমাণ কিন্তু পর্যাপ্তই।

    কি অপারেশন?কত দিন ভর্তি থাকবেন?প্যাকেজে অর্থের পরিমাণ (টাকায়)
    ড্যাক্রাওসিস্টোরাইনোস্টমি (নেত্রনালীর অপারেশন)১ ৯০০০
    টনসিল অপারেশন (দুইদিকের)১৭০০০
    টনসিল অপারেশন (একদিকের)১৫৫০০
    অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২৬০০০
    অ্যাপেন্ডিক্সের ফোঁড়ার পূঁজ বার করা ২৭০০০
    স্তন কর্তন৩১২,২৫০
    স্তনের টিঊমার কেটে বাদ দেওয়া (একদিকের)২৫০০০/৬২৫০
    পেট কেটে পিত্তথলি বাদ দেওয়া ৩১৩,২৫০
    মলদ্বারের ফিসার কেটে বাদ দেওয়া২৭০০০
    মলদ্বারের পাশে ফিসচুলা অপারেশন২৭৫০০
    এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া ৩১০,০০০
    অপারেশন পরবর্তী ইনসিশনাল হার্নিয়া৩১২,২৫০
    আম্বিলিকাল হার্নিয়া ৩৮৪৫০
    ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া৩৭০০০
    একদিকের হাইড্রোসিল২৩৭৫০/৪০০০
    দুদিকের হাইড্রোসিল২৫০০০
    অর্শ ২৫০০০
    সিবেসিয়াস সিস্ট ভর্তি হবে না১২০০
    পেট কেটে জরায়ু কর্তন৫১০০০০/১২৫০০
    যোনি পথে জরায়ু কর্তন ৫১০০০০
    স্বাভাবিক প্রসব২২৫০০
    সিজারিয়ান সেকশন৩৪৫০০
    ল্যাপ অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২১১০০০
    ল্যাপ কোলিসিস্টেক্টমি৩১০০০০
    ছানি (একচোখের)ভর্তি হবে না ৩৫০০
    ছানি (দুই চোখের) ভর্তি হবে না ৫০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (একদিকের)৩৭০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (দুইদিকের) ৩১০,০০০
    মূত্রনালীপথে প্রস্টেট-কর্তন৩১৪,২৫০
    পেট কেটে প্রস্টেট-কর্তন২১৫,৭৫০
    মূত্রনালীকে বাড়ানো (ইউরেথ্রাল ডায়লেটেশন)১২২৫০
    সব প্যাকেজের সাম্প্রতিক অর্থমূল্যের জন্য ওয়েবসাইট দেখুন।

    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে গিয়ে রোগী কার সঙ্গে কথা বলে এইসব সুবিধা সম্পর্কে জানবে?
    যে সব হাসপাতাল বা নার্সিং হোম রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় নথিভুক্ত, সেখানকার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হল RSBY-এর জন্য একটি নির্দিষ্ট কাউন্টার রাখা। সেখানে এইসব সুবিধা কিভাবে পাওয়া যায় সেব্যাপারে রোগীকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। এমনকি যদি সেখানকার স্মার্ট কার্ড মেশিনটি কোনও কারণে কাজ না করে, সেই অজুহাতে রোগীকে ফেরানো বা টাকা চাওয়া চলবে না; হাসপাতালের দায়িত্ব হল যেভাবে হোক ওই কার্ডটির ব্যবহার করা। রোগীর দায়িত্ব কেবল যথাযথ কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে পৌঁছানো। পরিবারে নথিভুক্ত যে কোনও সদস্যের হাতের ছাপ দিলেই কার্ডটি মেশিনে নথিভুক্ত হবে, কার্ডে কত টাকা আছে জানা যাবে, এবং তত টাকার চিকিৎসা হাসপাতাল বা নার্সিং হোম (ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে) বিনা পয়সায় করাতে বাধ্য। তার চাইতে বেশি টাকা লাগলে সেটা আগেভাগে জানিয়ে রোগীর কাছ থেকেই সেই অতিরিক্ত পয়সাটা নিতে হবে।
    •তার মানে স্মার্ট কার্ড থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি রোগী পকেট থেকে খরচা করবে?
    আগেই বলা হয়েছে, পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচ সদস্য পিছু বছরে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা। ধরুন পরিবারে বাবা, মা, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলের হাইড্রোসিল চিকিৎসার জন্য চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে, এক মেয়ের পিত্তপাথুরির জন্য দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, মায়ের গর্ভাশয় কেটে বাদ দিতে গেছে চোদ্দহাজার টাকা। তাহলে মোট আটাশ হাজার টাকা একবছরে খরচ হয়েই গেছে। এবার বাবার চোখ অপারেশনের জন্য যদি সাড়ে তিন হাজার টাকা লাগে তো রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্মার্ট কার্ড থেকে দুহাজার টাকার বেশি দেবেনা, বাকি দেড় হাজার টাকা পকেট থেকে দিতে হবে। কিন্তু এই অপারেশনটা যদি সেই বছরের পরে করা যায় তো কার্ডে আবার ত্রিশ হাজার টাকা জমা করবেন সরকার, এবং বাবার চোখ অপারেশনের জন্য সাড়ে তিন হাজার হাজার টাকা পুরোটাই সেখান থেকে পাওয়া যাবে। কার্ডের হিসেবে কবে নতুন বছর শুরু হবে সেটা জানতে হবে। সেটা কার্ড দেবার সময়ে বলে দেওয়া হয়, তাছাড়া হাসপাতালে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টার থেকেও সেটা জেনে নেওয়া যায়।
    •যে সব অসুখ আগে থেকে আছে সে ক্ষেত্রে কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা পাওয়া যাবে?
    সাধারণত স্বাস্থ্যবিমা করার আগে থেকে কোনও অসুখ থাকলে বিমা কোম্পানিগুলো সেই অসুখ বা তার ফলে উদ্ভূত কোনও অসুখের চিকিৎসার জন্য টাকা দেয় না। ধরা যাক কোনও ডায়াবেটিস রোগী সাধারণ কোম্পানির কাছে পয়সা খরচ করে স্বাস্থ্যবিমা করালেন – বিমা কোম্পানি দেখে নিল বিমা করার আগে থাকতেই তাঁর ডায়াবেটিস রোগ আছে। এবার ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে খরচ করলে বিমা কোম্পানি একপয়সাও দেবে না। শুধু তাই নয়, ধরা যাক তাঁর ডায়াবেটিস-এর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে গেল, ডায়ালিসিস করতে হল। বিমা কোম্পানি ডায়ালিসিস-এর জন্যও একপয়সাও দেবে না। এদিক থেকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা অনেক বেশি, কেননা বিমা করার আগে থাকতে কোনও অসুখ থাকলেও সেব্যাপারে চিকিৎসার খরচ এই বিমাতে পাওয়া যাবে। তাই এই বিমা করার সময়ে বিমাকারীর কোনও অসুখ আছে কিনা সেসব পরীক্ষাও করা হয়না।
    •প্রসবকালীন খরচ কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়?
    হ্যাঁ। আগেই বলেছি স্বাভাবিক প্রসবে প্যাকেজ ২৫০০ টাকার, জটিল প্রসব বা সিজারিয়ান সেকশনে ৪৫০০ টাকা।
    •RSBY-তে রাহা খরচ পাওয়া যায়?
    একটা খরচ রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়, যা আর কোনও বিমায় পাওয়া যায় না। তা হল হাসপাতালে ভর্তির জন্য যাতায়াতের খরচ, বা রাহাখরচ। প্রতিবার হাসপাতালে ভর্তির জন্য বিমাকারী যাতায়াতের খরচ হিসাবে ১০০ টাকা পান। তবে একটি বিমা চালু থাকা অবস্থায় বিমাকারী পরিবার সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকার বেশি রাহাখরচ পাবেন না, তারপর হাসপাতালে ভর্তি হলেও নিজের খরচে যেতে-আসতে হবে। এই রাহাখরচ পাবার জন্য কোনও ট্রেন-বাসের টিকিট বা ওইরকম কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে হয়না।
    পরিষেবা-প্রদানকারী হাসপাতাল/নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কাকে জানাবেন?
    নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে দেখবেন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবীমা যোজনার একটি বোর্ড বা ব্যানারে RSBY-কার্ড হোল্ডারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য/ হাসপাতালের দায়িত্ব ও অধিকার লেখা আছে। সেখানে জেলার কিয়স্কের নম্বর পাবেন। টোল ফ্রি একটি নম্বর আছে ১৮০০-৩৪৫-৫৩৮।
    এছাড়া রাজ্যের সর্বোচ্চ নোডাল এজেন্সি-র কথা জেনে রাখুন—
    Director, ESI (MB) Scheme,
    Govt. of West Bengal,
    P-233, C.I.T. Scheme-VIIM, Bagmari Road, Kolkata-700054
    Contact No: (033)2355-6385 /6162 , 033-23556384(RSBY Cell)

    বাস্তবে RSBY-এর সুযোগ গরীব মানুষ কতটা পাচ্ছেন?
    •মাস খানেক আগে কুলপি-তে এক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক এক ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা গেল। উপস্থিত RSBY-কার্ড হোল্ডারদের অধিকাংশকে নিজের পকেট থেকে অতিরিক্ত খরচ করে চিকিৎসা পেতে হয়েছে। অ্যাপেন্ডিসেক্টমি বাবদ কার্ড থেকে কাটা হয়েছে ৬০০০ টাকা, ওষুধ-পথ্য-নার্সিং খরচ ইত্যাদি দেখিয়ে আরও হাজার সাতেক খরচ পকেট থেকে। সিজারের খরচ কার্ড থেকে এসেছে, সঙ্গে লাইগেশনের খরচ নেওয়া হয়েছে দেড় হাজার টাকা। ইত্যাদি, ইত্যাদি...।
    •কার্ড রিনিউয়ালের জন্য অনেকের কাছ থেকে ৫০টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, যদি এটা বিনামূল্যে করার কথা।
    •মুর্শিদাবাদের নিয়মিত সামাজিক কাজে যান এমন এক সিনিয়ার স্ত্রীরোগবিদের পর্যবেক্ষণ—প্রচুর বেড়ে গেছে জরায়ু-কর্তন অর্থাৎ হিস্টেরেক্টমির হার, স্ত্রীরোগবিদরা দিনে ২-৩টে করে হিস্টেরেক্টমি করছেন—অধিকাংশই যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া। (গত বছর প্রচারিত আমির খানের সত্যমেব জয়তের চতুর্থ এপিসোড মনে করুন। সেখানেও দক্ষিণের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলের কথা বলা হয়েছিল যেখানে মহিলাদের জরায়ু নেই।)
    • একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্প ও রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগঃ ২০১২ সাল থেকে এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর একটি প্রকল্প RSBY-এর সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট তথা MGNREGA – এর একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্পে বেশিদিন কাজ করেছেন (১৫ দিন বা তার বেশি) তাঁর ও তাঁর পরিবারকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যারা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন তাঁদের অধিকাংশই গরীব সেটাও ঠিক। কিন্তু এদের আলাদা করে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-তে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারটা গ্রামের গরীব মানুষেরা এখনও বুঝে উঠতে পারেন নি, ফলে এই সুযোগে গ্রামের করিতকর্মা মাতব্বরেরা বেশ কিছু বাবুলোকের নামও এই নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমাতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে এইসব বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দিয়েছিলেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নেন, আর গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন। ফলে রেকর্ড অনুযায়ী, ওই কার্ডগুলোর মালিকরা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন। যদিও এঁরা সত্যিকারের কাজ কিছু করেন নি, ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে চাপ দিয়ে কম কাজকে বেশি কাজ বলে জবরদস্তি করে দেখিয়ে সরকারের MGNREGA – র টাকা মেরে দিয়েছেন। কিন্তু খাতায়-কলমে তাঁরা ১৫ দিনের বেশি কাজ করেছেন বলে দেখানো আছে, ফলে তাঁরাই আবার নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমার অধিকারী হয়ে যান!
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র কার্ড ও তার সুবিধাভোগীদের নানা অভিজ্ঞতাঃ
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক প্রাপকের নামে ছাপানো স্লিপ আসে ও সেগুলো তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন তাঁরা পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে যেখানে এজেন্সিটি ক্যাম্প করেছে সেখানে এসে ফটো তোলার জন্য লাইন দেন। সকালের দিকে তুলনায় ফাঁকা থাকে, কেননা গ্রামের মানুষ তখন রুজি-রোজগারের ধান্দায় ক্ষেতে খামারে। এখানে প্রথমে ত্রিশটাকা দিয়ে রসিদ নেওয়া, তারপর ঘরের মধ্যে ক্যামেরার সামনে পরিবারের পাঁচজনের ছবি তোলা, পাঁচজনের বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া – পরিবারের কাজ শেষ। গ্রাম-পঞ্চায়েতের একজন কর্মচারী তাঁর বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে পরিবারটিকে সনাক্ত করতে সাহায্য করেন। ব্যাস - সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের কর্তার হাতে কার্ডটি তুলে দেওয়া হয়। কার্ডে পরিবার-প্রধানের মুখের ছবি ও নাম থাকে। বিগত বছরগুলোতে কিন্তু কার্ড পরে দেওয়া হতো। অনেক সময় ফটো তোলার পরে কার্ড মিলতে বছর গড়িয়ে যেত। তাই এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। যেমন পাট ছাড়ানোর সময়ে মানুষ সকালে আসতে পারেন না, তিনটের পর থেকে ভিড় জমান, আর রাত্রি আটটা পর্যন্ত কাজ করেও শেষ করা যায় না।
    কার্ড করতে আসা পরিবারগুলোর কথা থেকে জানা যায়, গত বছর কোনও পরিবার অপারেশন করিয়েছে, টাকা লাগেনি। কেউ হয়তো এসেছেন - কার্ড করানোর পরে তবে তাঁর বাবার চোখের ছানি কাটাতে পারবেন। কিন্তু ছুবান ভাই, পানসুন্দুরী বেওয়ারা অন্য কথা বলেন। কার্ড করে তাঁরা পরিবারের মানুষকে তালিকাভুক্ত নার্সিং হোমে ভর্তি করিয়েছেন, অপারেশন হয়েছে। তারপর ছুটির সময়ে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ কার্ডটি নিয়ে দুঃখ-দুঃখ মুখ করে বলেছেন – আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না, জাল কার্ড? নাকি আঙ্গুলের ছাপটা ভালো করে নেয় নি? যাহোক, তাঁদের তো টাকাটা দিতে হবে। তখন তাঁরা ধার-কর্জ করে টাকা দিয়ে এসেছেন। আসলে নার্সিং হোম কার্ড নিয়ে টাকা বের করে নিল, আর নিরক্ষর মানুষগুলোর কাছ থেকেও টাকা নিল – তাঁরা বুঝতেই পারলেন না।
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা – সব ঠিক আছে কি?
    MGNREGA –তে গ্রামের মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে নানা বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনাতেও সেরকম দুর্নীতি ঘটছে। সরকারের টাকা মারা যাচ্ছে, গরীবের কার্ড হচ্ছে না, হলেও অনেক নার্সিং হোম টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। এটা একটা চিন্তার বিষয়। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টারে কিভাবে কত টাকা নেওয়া হল সেটা সরল গরীব গ্রামীণ মানুষ, যাঁদের অনেকে আবার নিরক্ষর, তাঁরা ধরতেই পারেন না।
    কিছু দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও মুর্শিদাবাদের কিছু অভিজ্ঞতার কথা আগেই বলেছি।
    •এছাড়া আপনি কার্ড নিয়ে দেখাতে গেলেন—ভর্তির প্রয়োজন নেই তবু ভর্তি করে নেওয়া হল। নামমাত্র চিকিৎসা করে মিথ্যা নথিপত্র দিয়ে বেশি টাকা তুলে নেওয়া হল—এমনটা হচ্ছে।
    •ছোট কোন অপারেশন হল, যার প্যাকেজ-মূল্য কম। নথিপত্রে দেখানো হল বড় অপারেশন হয়েছে। বেশি টাকা কার্ড থেকে কেটে নেওয়া হল। আপনার পকেট থেকে টাকা গেল না বটে, কিন্তু এ বছরের মধ্যে পরিবারের কাউকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তখন বরাদ্দ কিন্তু কম হয়ে থাকবে।।
    মানুষকে সচেতন করার জন্য এ লেখা যাতে তাঁরা RSBY-এর সুবিধা নিতে পারেন, কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়—RSBY-ই কি সমাধান? গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ করছে, কিন্তু সেটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয়, বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিং হোমে। সরকার যে খরচ করছে তা কিন্তু জনসাধারণের করের-ই টাকা। তাহলে টাকার অভাবে সরকার ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে এগোতে পারছেন না, এটা তো বলা যায় না।
    সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।
    দ্বাদশ পরিকল্পনার আগে যোজনা কমিশন ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে কি কি করণীয় সে বিষয়ে সুপারিশ করতে এক উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেন। ডা শ্রীনাথ রেড্ডির নেতৃত্বাধীন সে দলের সুপারিশ ছিল সরকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় সামান্য বাড়িয়ে প্রাথমিক, দ্বিতীয় ও সর্বোচ্চ স্তরের চিকিৎসা বিনামূল্যে সমস্ত নাগরিককে দিক। তাঁরা স্বাস্থ্যবিমার বিরুদ্ধে বলেন, স্বাস্থ্যপরিষেবার বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেন। যোজনা কমিশন বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ মানে নি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ বাক্যবন্ধটুকু রেখে দিয়ে তারা বলছে সরকার পরিষেবা-প্রদানকারীর ভূমিকা থেকে সরে এসে ব্যবস্থাপনার কাজ করবে। তাদের প্রস্তাব কেবল গরীব মানুষদের জন্য RSBY নয়, সব নাগরিকের জন্যই এমন বিমা ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে প্রিমিয়াম (জনগণের পয়সায়) দেবে সরকার, একটা নির্দিষ্ট সীমা অবধি খরচ কার্ডধারী পাবেন, তার ওপরে খরচ করতে হবে নিজেকে।
    স্বাস্থ্যবিমা সমাধান হতে পারে না, সবার জন্য স্বাস্থ্যের সবটুকু প্রয়োজন সরকারকে মেটাতে হবে এই আমাদের দাবী হওয়া উচিত। কিন্তু যতক্ষণ না তা হচ্ছে, ততদিন RSBY-এর যতটা সুবিধা আপনার প্রাপ্য বুঝে নিন—আপনার প্রাপ্যে যেন ভাগ না বসায় স্বাস্থ্য-ব্যবসায়ী।

    এই রচনায় অফুরান সাহায্য নিয়েছি ডা জয়ন্ত দাসের। তিনি যে পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক সেই ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’ পত্রিকার দশম সংখ্যায় প্রকাশিত বাবু সাহার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বিষয়ক একটি প্রবন্ধের প্রচুর সাহায্য নিয়েছি আমার রচনায়।

    দুর্বার ভাবনা পত্রিকার সেপ্টেম্বর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৮২০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • জয়ন্ত | 127.194.80.204 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৪47232
  • আকা, কেসি দাস-এর সঙ্গে একবার কথা বলে দেখব তাঁদের রসগোল্লাটা জিলিপির আকৃতির কিনা। হলে, সরকার ও বেসরকার, উভয়ের সঙ্গে কিছু মিল থাকতে পারে।

    আর আমার মত তো বরাবরই যেমন লিখছি এখানে সেইরকম, এটাকে মানলাম মানে আমার অনেকদিনের মত মেনে নিলাম। এরকম বিচ্ছিরি বাংলা ভাষা আমি লিখিনি জীবনে, "আমি আমার অনেকদিনের মতটাকে মেনে নিলাম"!! আপনি বলছেন, কি আর করি, ভাষাতে তো আর্ষপ্রয়োগ বলে একটা ব্যাপার চালু আছে অনেকদিন।
  • :-) | 127.194.193.233 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৫৫47233
  • আর্যপ্রয়োগ শব্দটিতে আকা তলপেটে হাল্কা করে অবচেতনে ব্যথা পেলেন কি?
  • জয়ন্ত | 127.194.81.98 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:২৭47234
  • কথাটা কি 'আর্যপ্রয়োগ' নাকি? খেয়েছে, আমি তো 'আর্ষপ্রয়োগ' জানতাম। সে যাক গে, ব্যথা দেবার প্রশ্নই ওঠে না।

    আসলে 19 October 2013 09:03:40 IST তে করা আমার মন্তব্য, যেখানে আমি ইএসআই-এর সরকারি ব্যবস্থাকে 'সাদা হাতি' বলছি, সেটা দেখে আকা সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বলেছেন, "জয়ন্ত, তাহলে এটা মানলেন সরকার মানেই কেসি দাসের রসগোল্লা নয়।" কিন্তু আমি একদিন আগেই বলেছি, বর্তমান সরকারি ব্যবস্থাটাকে 'ঠিক' বলার কোনও ইচ্ছে RSBY-সমালোচনাকারীদের নেই। অন্তত আমার নেই। আমার আগেরদিনের পোস্টটার শেষ প্যারা দেখুনঃ (18 October 2013 01:07:24 IST)

    "বাই দ্য ওয়ে, সরকারি হেলথ সার্ভিস সৎভাবে ও দক্ষভাবে চালানো হচ্ছে, এই কথাটা যারা সরকারি ব্যবস্থাকেই চাইছেন RSBY ইত্যদি ইন্সুরেন্স কোম্পানির বদলে, তাঁদের মুখে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার মোটেই মনে হয়না সরকারি হেলথ সার্ভিস সৎভাবে ও দক্ষভাবে চালানো হচ্ছে। তবে সেটাকে সৎ ও দক্ষ করা যতোটা শক্ত, ঠিক ততোটাই শক্ত RSBY ইত্যদি ইন্সুরেন্স-বেসড ব্যবস্স্থ্যাকে সৎ ও দক্ষ করান।"
  • aka | 79.73.9.7 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০৮47235
  • এখানে লেখা বাকি আছে, লিখব আজ রাতের দিকে।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:২৪47236
  • অনেক কিছু বলার আছে, আপাতত ছোট্ট করেঃ

    ১। ঈশানের লিস্টিতে আসল জিনিষটাই নেই। তাহল পুরো ব্যপারটাকে প্রফিটেবল করার দায়িত্ব ইন্সিওরেন্স কোম্পানির হাতে। দুই ভাবে করতে পারে, এক জালি করে, দুই সঠিক উপায়ে। জালি করলে সরকার ধরবে। ভালো কাজ করলে প্রফিট করবে। এই কাজের সাথে অনেক কিছু যুক্ত। যেমন লোকজনের স্বাস্থ্য সম্বন্ধে জ্ঞান দেওয়া, কড়া হাতে হসপিটালকে ম্যানেজ করা ইত্যাদি। এগুলো সরকার থিওরেটিকালি নিজেই করতে পারে। খুব দ্রুত সারা ভারতে এগুলো করতে গেলে যা দরকার তা ভারত সরকার করতে পারবে না।

    ২। বিপিএল লিস্টি আর বিপিএল কার্ড। প্রথমটি সেন্সাস থেকে হয়, দ্বিতীয়টি রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। লিস্টিতে দেখা গেল রমানাথ সরকার বিপিএল, কার্ডও হল ওনার নামে শুধু কার্ডে ছবি ও সই শ্যামাপ্রসাদ বসুর। যিনি বাকি জীবন বিপিএল কার্ডের সুযোগ নিতে রমানাথ হয়ে রইলেন। এটা আমি দেখেছি। এই করেই লিস্টি ও কার্ড যারা পেয়েছে দুই মেলে না।

    ৩। বিপিএল লিস্টিতেও ভুল থাকতে পারে। কিন্তু কথা হল কবে ভুল ঠিক হবে তারজন্য বসে থাকবেন? কোনো লিস্টি কখনো সম্পূর্ন ঠিক হয়েছে? উত্তর চাই। কোথাও একটা শুরু করতে হবে। গরীবদের স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব খারাপ। না হয় খানিক ভুল নিয়েই শুরু হল।

    ৪। এবং শেষ কথা, অল্টারনেটিভ দিন। নইলে সমস্ত ব্যবস্থায় খুঁত ধরে বসে থাকলে লোকে শুশিবাই বলবে। অলটারনেটিভ না দিতে পারলে, বেস্ট অফ দা ওয়ার্স্টকে মেনে নিন।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:০১47239
  • জয়ন্ত,

    ভারতে পোলিও ইরাডিকেশনের জন্য চারটি কন্ট্রিবিউশন কাজ করেছে

    ১। সরকারের ইচ্ছে
    ২। হু'র কন্ট্রিবিউশন
    ৩। রোটারি ইন্টারন্যাশনালের কন্ট্রিবিউশন
    ৪। এবং বিল ও মিরিন্দা গেটস ফাউন্ডেশন

    সরকার একা করতে পারত বলে মনে হয় না। আপনার অন্য মত/দেখা হলে শুনতে রাজি আছি।

    বাকি কথা পরে।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:১৩47240
  • পরে লিখছি, পরে লিখছি বলে আকা আসল কোচ্চেনটাই কাটিয়ে দেয়। আকা দাবী করেছিল বিপিএল লিস্টি পাওয়া যাবে সেন্সাস থেকে। সেটার কী হল? উত্তর নাই।

    যে পয়েন্টগুলো নতুন করে বলেছে, সেগুলোও আগেই উত্তর দেওয়া হয়েছে। সে নাহয় আরেকবার লিখে দেব। :)
  • জয়ন্ত | 127.194.82.146 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:১৯47237
  • aka on 16 October 2013 23:19:33 IST তে আকা লিখেছেন, অনেকটাই কোট করে --
    "প্রসেস অনুযায়ীঃ
    ১। RSBY provides health insurance for the enrolled BPL families ... Respective State Governments need to convert their existing BPL data in this format ... However, state governments alone are responsible for the accuracy of their BPL lists."
    তারপর আবার এখানে আকা লিখছেন, " বিপিএল লিস্টি আর বিপিএল কার্ড। প্রথমটি সেন্সাস থেকে হয়, দ্বিতীয়টি রাজ্য সরকারের দায়িত্ব।" RSBY যে state government দেরই কেবল তাদের BPL lists এর জন্য responsible করছে, সেটা কি আমার পাঠে ভুল হচ্ছে?

    নিজের বানানো অল্টারনেটিভ না দিয়েও একটা ব্যবস্থায় খুঁত ধরা খুব খারাপ কাজ বলে মনে হয় না। শুচিবাই আবার কিসের? নিজের অলটারনেটিভ না দিয়ে শ্রীনাথ রেড্ডি রেকমেন্ডেশনকে ইমপ্লিমেন্ট করতে বললে অসুবিধা কোথায়?

    গরীবদের স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব খারাপ। না হয় শ্রীনাথ রেকমেন্ডেশন নিয়েই শুরু হোক।

    আকা, "ঈশানের লিস্টিতে আসল জিনিষটাই নেই। তাহল পুরো ব্যপারটাকে প্রফিটেবল করার দায়িত্ব ইন্সিওরেন্স কোম্পানির হাতে"। তো আসল জিনিসটা থাকলে কী সুবিধা হচ্ছে? ইন্সিওরেন্স কোম্পানি এই প্রিমিয়ামে প্রফিটেবল না করতে পারলে পরের বছর কন্ট্র্যাক্ট নেবে না। একবছর লাভ করে নিয়ে, প্রতিবার হিসেব করবে লাভ বাড়ছে না কমছে। সেই অনুযায়ী বেশি প্রিমিয়াম চাইবে। সেটা আমাকে (মানে সরকারকে) দিতে হবে। সেটা সরকারি না বেসরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানি তাতে কিছু এসে যায় না।

    প্রফিটেবল করার "কাজের সাথে অনেক কিছু যুক্ত। যেমন লোকজনের স্বাস্থ্য সম্বন্ধে জ্ঞান দেওয়া, কড়া হাতে হসপিটালকে ম্যানেজ করা ইত্যাদি। এগুলো সরকার থিওরেটিকালি নিজেই করতে পারে। খুব দ্রুত সারা ভারতে এগুলো করতে গেলে যা দরকার তা ভারত সরকার করতে পারবে না।" ইন্সুরেন্স কোম্পানি আরও পারবে না। খালি প্রফিটের গাজর সামনে আছে বলেই তো ঘোড়াকে পিটিয়ে গাধা (হ্যাঁ, ঠিক পড়ছেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো টাকা নেবার ব্যাপারে ঘোড়া) করতে পারবে না।

    লোকজনকে স্বাস্থ্য সম্বন্ধে এফেক্টিভলি জ্ঞান দেওয়ার জন্য অসরকারি এজেন্সির যে সামাজিক ভূমিটা দরকার হয় সেটা মনে হয় এদেশে নেই। মানে তাদের নেটওয়ার্ক নেই, আর মানুষের শিক্ষা নেই, একসেস নেই, বিশ্বাস নেই।

    পোলিও টিকা নিয়ে কাজ করার কথা দেখেশুনে (আমি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলাম না) মনে হয়েছে সরকার ছাড়া কেউ কাজটা করতে পারত না। টার্গেট ডেট থেকে ১৬ বছর পরেও পারত না। যাক গে, এসব স্রেফ পারসেপশন, গুরুত্ব না দিতেই পারেন।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৩47241
  • কি উত্তর দেব বুঝি নাই। বললাম তো জালিটা কোথায় হয়েছে। এবারে হতেও পারে বিপিএল লিস্টিতে জালি/ভুল আছে। থাকতেই পারে। একেবারে সঠিক লিস্টি ভারতে কোথায় কবে হয়েছে। ঐ নিয়েই শুরু করতে হবে, নইলে অ্যাস্পিরিনের অভাবে গরীবরা রোজ মরছে। আইডিয়াল হল না বলে বসে থাকার সময় নেই।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৬47238
  • লিস্ট আর কার্ডের ব্যাপারটা আমিও বুঝলাম না।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৮47243
  • তবে যে শুনেছিলাম, ইন্সিওরেন্স কোং এল বলে এতে জালি হবেনা। সেটাই এটার অ্যাডভান্টেজ !

    আর আমি এই উত্তরও পেলাম না, সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিপিএল তালিকাভুক্তদের/ কার্ডহোল্ডারদের পুরো ফ্রি তে চিকিৎসা দেবার বন্দোবস্ত করতে কী হয়েছিল ?
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৮47242
  • নাঃ, তোমার দাবী ছিল বিপিএল লিস্টি বানানোর দরকার নাই, ওটা সেন্সাস থেকেই পাওয়া যাবে। সে বিষয়ে এখনকার অবস্থান জানতে চাইছি।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৪১47244
  • RSBY তে পড়ে দেখলাম বিপিএল তালিকা থেকে নেওয়া হবে, সেটা কোথা থেকে আসবে জানি না।

    সরকারী হাসপাতালের ইনফ্রাস্ট্রাকচার যথেষ্ট নয়। কোথাও ডাক্তার নেই, কোথাও যন্ত্রপাতি নেই, কোথাও হাসপাতালটাই নেই।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৪১47245
  • আর দ্বিতীয় কারণ হল এটা একটা স্মার্ট কার্ড যাতে ট্র্যাকিং আরও ভালো করা যায়।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:১৭47246
  • এই ব্যবস্থাটা চালু হলে সরকারি হাসপাতাল ভাল করা যেত। টাকাটা সরকারি হাসপাতাল ভাল করার পিছনে লাগানো যেত।

    আর ট্র্যাকিং ভালো করে কী কী কাজে আসবে ?
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩২47247
  • যেটাকে গরীবদের চিকিৎসার জন্য দেওয়া হচ্ছে সেটা সেই খাতেই লাগবে। সরকারী হাসপাতাল রিভাইভাল অন্য ট্র্যাক। সেটা প্যারালালি চলতে পারে।

    Comment from aka on 15 October 2013 23:34:17 IST 78.190.40.129 (*) #

    এই পোস্টটি এবং পরের পোস্টটি পড়ে দেখতে হবে।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৪০47248
  • সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা পরিকাঠামো ঠিক করা গরীবদের চিকিৎসা দেবারই পার্ট। আর বারে বারে রাজনীতির পার্টটা ইগনোর করে যাওয়া হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালকে ভাল করার জন্য চাপের ফ্যাক্টরটা।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৪৫47249
  • সে অনেক বড় প্রোজেক্ট। একসাথে সারা ভারতে শুরু করা অসম্ভব বলে আমার মনে হয়েছে।

    এর বাইরে কোন রাজনীতি আমার চোখে পড়ে নি।

    আমিও বারবার বলছি অলটারনেটিভ মডেল দেখাতে। বেটার হলেই মেনে নেব। এখন যদি কোন মডেল এস্টাবলিশড করতে ২০ বছর সময় লাগে তাতে আরও অনেক গরীব মরবে। শুধুমাত্র সরকারী হাসপাতালের রাজনীতির জন্য সেটা আমার আন অ্যাক্সপ্টেবল।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৫১47250
  • এখনি সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতালাগুলোতে বিপিএল পপুলেশনের জন্য ফ্রিতে চিকিৎসা শুরু হোক না। সেটা করার তো কোন চেষ্টাই করা হয় নি। চেষ্টা না করে জানা গেল কীকরে সেটা চলবে না ?

    আর ট্র্যাকিং এর কী কী সুবিধা ?
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:০২47251
  • নেই তো এখন। সরকারী ব্যবস্থা তো অপ্রতুল। শুধু কলকাতা দিয়ে বিচার করলে হবে? যেখানে হাসপাতাল আছে সেখানে ডাক্তার নেই, যন্ত্র নেই। এগুলো তো নতুন কিছু না। নইলে সবাই সরকারী হাসপাতালের জন্য কলকাতা ছোটে কেন?

    ট্র্যাকিং তো ইনফরমেশনের জন্য। বহুবিধ সুবিধা আছে।

    ঘাপলা হচ্ছে কিনা

    কোন রোগ কোন অঞ্চলে বেশি হচ্ছে

    কোন বয়সের রোগীদের জন্য কি চিকিৎসা বেশি হচ্ছে

    বহু বহু সুবিধা।
  • জয়ন্ত | 127.194.87.107 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:০৮47252
  • আকা, ভারতে সরকার একা স্মল পক্স বা পোলিও কোনটাই ইরাডিকেট করেনি। পোলিওর ক্ষেত্রে ইউনিসেফ, হু, গেটসফাউন্ডেশন ও রোটারি ছিল। আমার যে বক্তব্যটা আপনার বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় -- সরকারের বদলে ইন্সুরেন্স কোম্পানি এইরকম প্রিভেন্টিভ ব্যবস্থায় স্টেকহোল্ডার হলে তাঁরা পাবলিকের কাছে পৌঁছতেই পারতেন না। ইউনিসেফ, হু, গেটসফাউন্ডেশন ও রোটারি থাকলেও পারতেন না।

    পাই, আপনি লিখেছেন, "এই ব্যবস্থাটা চালু হলে সরকারি হাসপাতাল ভাল করা যেত। টাকাটা সরকারি হাসপাতাল ভাল করার পিছনে লাগানো যেত।" কোন ব্যবস্থার কথা লিখেছেন?

    আকা, আপনি যেহেতু আমার অনেক আগে করা এই কমেন্টের সম্পর্কে কিছু লেখেন নি, সেহেতু আবার লিখছি। আমার পয়েন্টগুলো যদি আলোচনার যোগ্য বিবেচনা না করেন তাহলে সেটাও জানিয়ে দিন।

    "ইন্সুরেন্স কোম্পানির সাহায্যে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হেলথকেয়ার ডেলিভারি করতে গিয়ে RSBY তে যে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে --

    ১। কার্ড করানোর খরচ (বিপিএল লিস্ট বা সেজাতীয় লিস্ট আলাদা করে বানানোর খরচ ধরলে সেটা আরও বেশি হবে)।
    ২। বিমা কোম্পানির মুনাফা।
    ৩। বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বেশি বিল করে পয়সা নেওয়া।
    ৪। বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত 'ক্ষতিকর চিকিৎসা' করে পয়সা নেওয়া।
    ৫। চালাক কিছু বেনিফিসিয়ারি আর বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসে চিকিৎসা না করে চিকিৎসা হয়েছে দেখিয়ে পয়সা তুলে ভাগ-বাটোয়ারা করবে, সে খরচ।
    ৬। ইন্সুরেন্স কোম্পানি এসব ঠেকাতে যে চেষ্টা করবে (অনেকটা অক্ষম খানিকটা সক্ষম) তার কস্ট ।

    ৭। ইন্সুরেন্স কোম্পানির জালি (আকাকে কোট করছি) --
    "ভারতে অনেক ভাবে জালি হতে পারে।
    কেস ১ঃ কোম্পানি ৫ জনের বদলে ৩ জনকে ইন্সিওরেন্স দিল, তাদের পুরো খরচা দিয়েও কোম্পানির ৭ টাকা লাভ।
    কেস ২ঃ হতে পারে হসপিটাল ২ টাকার চিকিৎসা করিয়ে লিখিয়ে নিল ৬ টাকার চিকিৎসা হয়েছে। পরে ইন্সিওরেন্স কোম্পানির সাথে ৪ টাকা ভাগ করে নিল।"

    এই অতিরিক্ত খরচ করে ট্র্যাকিং কিন্তু সেরকম বিরাট ভাল কিছু হবে না। ট্র্যাকিং এর জন্য পাবলিক অ্যাওয়ারনেস দরকার। যার গলব্লাডার খামোকা কাটা হল, সে কিন্তু মেডিক্যাল অথরিটিকে চ্যালেঞ্জ আগেও করতে পারত না, এখনও পারবে না। সুতরাং এটা চলবে।

    আমার মনে হয় RSBY-এর ইতিবাচক দিকটা হল, কিছু লোক কিছুই পাচ্ছিলেন না, এখন তাঁরা খাতির পাচ্ছেন। গ্রামের লোক শহরে পয়সা নিয়ে বাজার করতে গেলে যেরকম উদ্দেশ্যমূলক খাতির পান, অনেকটা সেরকম। কিন্তু সেটাও তো পেতেন না। আর অনেকে কিছু চিকিৎসার সুযোগ তো পাচ্ছেন, যেটা সরকারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও পাননি বললেই চলে। কবে সরকারি ব্যবস্থা তাঁদের ঠিকঠাক দেখবে, তাঁদের রোগ কি ততদিন অপেক্ষা করবে? এই পরিপ্রেক্ষিতে RSBY কে ব্যবহার করা, আর তাতে যাতে মানুষ না ঠকেন সেটা যতটা সাধ্য ততটা দেখা আমাদের কাজ।

    কিন্তু তার মানে এই নয় যে RSBY-এর নেতিবাচক দিকগুলো দেখব না। ধন্যবাদ।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:১২47253
  • বিপিএল পপুলেশনকে ফ্রি তে চিকিৎসা দেবার ব্যবস্থার কথা বলেছি।

    'আর অনেকে কিছু চিকিৎসার সুযোগ তো পাচ্ছেন, যেটা সরকারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও পাননি বললেই চলে।' এটা কেন হয়েছে বলে মনে হয় ?
  • জয়ন্ত | 127.194.87.107 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৫৫47254
  • পাই, 'আর অনেকে কিছু চিকিৎসার সুযোগ তো পাচ্ছেন, যেটা সরকারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও পাননি বললেই চলে।' কারণ সরকার সেভাবে মনিটরিং করেন নি। এতদ্বারা 'সরকার করতে পারেননি, পারেননা, পারবেন না,' এতসব কিছু কিন্তু মোটেও বলা হচ্ছে না। একটা উদাহরণ দিই।

    জোকা-স্থিত ইএসআই করপোরেশন হাসপাতালে চিকিৎসা মোটের ওপর ভাল, অনেকক্ষেত্রেই বেসরকারি
    কর্পোরেট হাসপাতালের মতো, পরিষ্কার হাসপাতাল, এবং সেখানে হাসপাতাল-থেকে-ইনফেকশন কম -- এরকম একটা কথা বলেছিলাম মনে আছে? আবার বালটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে কাজ হয়না, রোগীরা সার্ভিস পাননা, নোংরা, অব্যবহৃত ভাঙ্গা ঘর, দেখলেই মনে হয় এখানে মরতে এলাম নাকি? অথচ দুটোতেই ইএসআই ইন্সুরেন্স বেনেফিসিয়ারি। কেন?

    জোকার একটা ঘটনা বলি। ডাক্তার নিয়ে ঘটনাটা, কিন্তু অন্য কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ হতে পারত। বছর সাত-আট আগে সেখান থেকে জনা-দশেক ডাক্তারকে দশদিনের নোটিসে বদলি করা হয়। অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভাষায়, রুটিন বদলি। আসল ঘটনা হল, তাঁদের সবার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেছিল, তাঁরা হাসপাতালে তাঁদের ডিউটি-আওয়ার্সে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করছিলেন। অনেকেই প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করতেন, সেটা আইনি নয়। কিন্তু সবাইকে বদলি না করে কেবল ডিউটি-আওয়ার্সে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করছিলেন যারা তাঁদের বদলি করা হল। বক্তব্য পরিষ্কার। কাজের সময় অন্য কিছু করা চলবে না। তারপর তাঁদের বিরুদ্ধে এনকোয়ারি, ডাকা, তাঁদের জবানবন্দি শোনা। তারপর শাস্তি -- প্রমোশন আটকানো, এবং প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের টাকা ফেরত।

    রাজ্যসরকারের ইএসআই হাসপাতালে প্রাইভেট প্রাক্টিস করার জন্য যে ডাক্তাররা দুটোর মধ্যে হাসপাতাল খালি করে বেরিয়ে যান, তাঁরাও নন- প্র্যাক্টিসিং ডাক্তার। এবং তাঁদের থাকতে বললেও থাকেন না। কোনও ব্যবস্থা হয়না। মানিকতলায় রাজ্যসরকারের ইএসআই হাসপাতালে একটু কড়াকড়ি আছে। বেলুড়ে রাজ্যসরকারের ইএসআই হাসপাতালে এক সুপার কিছুদিন কড়াকড়ি করেছিলেন, দিব্যি ভাল কাজ হচ্ছিল। এখন চৌপাট বলে শুনেছি।

    Why'আর অনেকে কিছু চিকিৎসার সুযোগ তো পাচ্ছেন, যেটা সরকারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও পাননি বললেই চলে।'? "God is in the details"!
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৫৮47255
  • জয়ন্ত,

    এই দুটি পোস্ট পড়ে দেখতে অনুরোধ করব। আমার মনে হয় আপনার প্রশ্নের উত্তর এখানে রয়েছে।

    Comment from aka on 15 October 2013 23:34:17 IST 78.190.40.129 (*) #

    এই পোস্টটি এবং পরের পোস্টটি পড়ে দেখতে হবে।

    আর দ্বিতীয়ত, খাতির নয়, যাঁদের কিছুই ছিল না তাঁরা প্রয়োজনে নূন্যতম চিকিৎসা টুকু পাচ্ছেন। যেটা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় ততই ভালো।

    আগে যাঁরা সরকারী ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ার জন্য অ্যাকসেস পেতেন না, তাঁরা বর্তমানে বেসরকারী হাসপাতালে বিনা পয়সায় যাওয়ার সুযোগ পেয়ে বেসিক চিকিৎসা করাতে পারছেন।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০৮47256
  • ধুর, আকা বেসিক জায়গাটাই এড়িয়ে যাচ্ছে। আরো একবার লিখি।

    আগে সরকার কি করত?
    ১। বিপিএল লিস্টি বানাতো
    ২। কার্ড দিত।

    এখন সরকার কি করবে?
    ১। বিপিএল লিস্টি বানাবে।
    ২। কার্ড দেবে।
    ৩। বীমা কোং এর সঙ্গে দরাদরি করবে।
    ৪। আর কার্ড দেওয়া হল কিনা মনিটার করবে।
    ৫। বেসরকারি হাসপাতালের উপর নজরদারি করবে।

    কাজ বাড়ল না কমল? যারা দুটো কাজ ঠিক করে করতে পারেনা, তারা পাঁচটা কাজ কিকরে করবে? -- এইটার সোজা উত্তর চাই।

    আর, বীমা কোম্পানির প্রফিট মেকিং টা এখানে কোনো সমস্যারই শর্টকাট সমাধান দিচ্ছে না। যত বেশি নথিভুক্তিকরণ তত বেশি প্রফিট। সরকারি মনিটারিং না থাকলে জালি বাড়বেই। জালির পন্থাগুলি আর নাই বললাম।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:২৪47257
  • আবারও লিখি যেটা ঈশানও বারবার এড়িয়ে যাচ্ছে এবং বাদ দিয়েছে

    ১। সরকার এটা করলে নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে চালানোর ঝক্কিটাও সরকারকে নিতে হত। সেটা এখন ইন্সিওরেন্স কোম্পানি নিচ্ছে।

    ২। আর দ্বিতীয়ত, বিপিএল কার্ডের মাধ্যমে বিনা পয়সায় চিকিৎসা শুধুমাত্র সরকারী হাসপাতালেই হত, যা কিনা অপ্রতুল। শুধু কাজ বাড়া বা কমা নয়। পুরো সিস্টেমটাকে জাম্প স্টার্ট দেবার জন্যই করা।

    Comment from aka on 15 October 2013 23:34:17 IST 78.190.40.129 (*) #

    এই পোস্টটি এবং পরের পোস্টটি পড়ে দেখতে হবে।

    ৩। তৃতীয়ত, বিপিএল কার্ড স্মার্ট কার্ড নয়, অতএব প্রতি মানুষ প্রতি টাকার ক্যাপ রাখার হিসেবটাও সরকারকেই করতে হত, যদি ধরে নিই সেটা স্মার্ট কার্ড দিয়ে রিপ্লেস করা হবে তাহলে ছবি তোলা থেকে, ডিস্ট্রিবিউশন সরকারকে করতে হত। এখন সরকারের একজন প্রতিনিধির সামনে হবে। বাকি সব ইন্সিওরেন্স কোম্পানির দায়িত্ব। এটা ওমনাথ আগেই লিখেছে। আগে যদি পাঁচজন লাগত এখন একজন লাগবে।

    ৪। বেসরকারী বা সরকারী কোন হসপিটালের ওপরেই সরকার রেগুলার "নজরদারী' করবে না। সেটা করবে ইন্সিওরেন্স কোম্পানি। তবে ট্র্যাকিং মেকানিজম থাকায় কোন হসপিটালে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের হার বেড়ে গেলে সরকার অডিট করতে পারে। বলা ভালো "নজরদারীর ওপর নজরদারী" করবে তবে গোদা ম্যান পাওয়ার দিয়ে নয় টেকনলজি লাগিয়ে। সেই জন্যই ট্র্যাকিং মেকানিজম ইত্যাদি। সরকার নিজে করলে নিত্যনৈমিত্তিক ট্র্যাকিংঅটাও সরকারকে করতে হত। এমনকি হাসপাতালের সাথে দর কষাকষি অবধি।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৩৪47258
  • ১। আমি তো বলিনি, সরকারই সবটা করুক। ভোটার আইডেন্টিটি কার্ড বানানো, ডিসট্রিবিউশন, পুরোটাই আউটসোর্সড ছিল। সিএমসি আর কিছু স্থানীয় ভেন্ডার করেছে। সে নিয়ে কোনো আপত্তি ওঠেনি, এক্ষেত্রেও বিষয়টা শুধু কার্ড বিতরণ হলে কোনো আপত্তি ই উঠতনা।

    ২। হাসপাতালের উপর বীমার নজরদারি ব্যাপারটার মানে কি? বীমা কোং এর একটাই ইনসেনটিভ, বেশি প্রিমিয়াম পাওয়া, আর হাসপাতালে কম চিকিৎসা হওয়া। বীমা কোং এর উপর নজরদারির দায়িত্ত্ব ছাড়া মানে কোয়ালিটি কমপ্রোমাইজ করা। আকা বরং বিশদে বুঝিয়ে দিক, বীমা, হাসপাতাল, এদের উভয়ের কোয়ালিটি স্রেফ প্রফিট মেকানিজমের উপর দাঁড়িয়ে ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে এনশিওর করা যায়।

    ৩। সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ। বলা হচ্ছে, সরকারের কাঁধ থেকে দায়িত্ত্ব ঝেড়ে ফেলার জন্য এটা করা হচ্ছে। প্রকৃত প্রস্তাবে সরকারের দায়িত্ব আজকের থেকে এই সিস্টেমে অনেক বেশি বাড়ল। আকা আশা করি একমত। সরাসরি জানতে চাই।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৪৪47259
  • একটা প্রশ্ন ছিল। বিপিএল পপুলেশন তো বেশিরভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম গঞ্জের লোক। তাঁদের কাছে বেসরকারি হাসপাতাল কতটা সহজলভ্য ? ক'জন নিজেদের দিনের পর দিনের রোজগার নষ্ট করে দূরে কোথাও চিকিৎসা করাতে যেতে? শ্রীরামপুরের মতন জায়গায় দেখেছি, একটু গ্রামের দিকে, সেখানে তিন চারটে বাস স্টপ দূরে থাকা শ্রমজীবী হাসপাতালেই লোকে নেহাত দরকার না পড়লে গিয়ে উঠতে পারেননা। দিনের রোজগার নষ্ট হবে , সাথে যাতায়াতের খরচ হবে বলে। আন্ডারইউটিলাইজেশনের সমস্যা শুধু সচেতনতা নেই বলেই তো নয়, বাস্তব সমস্যাও আছে। রাখি এই নিয়ে লিখেওছিল, বাস্তবে কী হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে কি সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেসরকারি হাসপাতালের পেনিট্রেশন বেশি ? ইন্সিওরেন্স কোং গুলি তো নিজের ইচ্ছেমত প্যানেলে হাসপাতাল ঢোকায় এখন, সরকারের সেখানেও কোন সে নেই। সরকারি হাসপাতালে ব্যবস্থা নেই বলে প্যানেলে ঢুকছে না, নাকি ইন্সিওরেন্স কোং এর সাথে আঁতাত আছে বলে বেসরকারি হাসপাতালগুলি ঢুকছে, সেই বা কে বলবে ?

    আর দ্বিতীয় কথা হল, এই প্রিমিয়াম বাবাদ যে পরিমাণ টাকা অ্যালটেড, সেটা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বাবদ খরচ করলে তো একসাথে চিকিৎসার খরচ ও উঠতো, আর সেই চিকিৎসা দেবার জন্য হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা পরিকাঠামোও গড়ে উঠতো। এই লাইনে কেন ভাবা হবে না, বুঝতে পারছিনা।
  • aka | 76.168.178.113 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৫৩47260
  • Comment from aka on 16 October 2013 01:26:56 IST 78.190.40.129 (*) #

    পড়ে দেখতে হবে।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৫৪47261
  • এটা মহারাষ্ট্রের RSBY এর হাল।
    The state labour minister Hassan Mushrif told TOI that though RSBY has been there in Maharashtra since 2008, not many have benefited from the scheme which provides a cover of Rs30,000 annually. "It is only the insurance companies which have benefited and not the economically backward class for which it is meant. Since the public health department did not participate in RSBY, there are no government hospitals empanelled in the scheme. Even 30-35% of the smart cards issued by the companies were found to be bogus," he said.

    গুজরাতের একটা স্টাডিঃ

    The average hospital admission rate for the period 2010–2011 was 40/1,000 enrolled. Women, elderly and those belonging to the lowest caste had a higher hospitalisation rate. Forty four per cent of patients who had enrolled in RSBY and had used the RSBY card still faced OOP payments at the time of hospitalisation. The median OOP payment for the above patients was US$ 80 (interquartile range, $16–$200) and was similar in both government and private hospitals. Patients incurred OOP payments mainly because they were asked to purchase medicines and diagnostics, though the same were included in the benefit package.

    এই যে আউট অব পকেট পেমেন্টটা কার্ডহোল্ডার হওয়া সত্ত্বেও রোগীদের করতে হচ্ছে, সেটা এই স্কিমে কাদের কোন ইন্সেন্টিভ দিয়ে আটকানোর বন্দোবস্ত হল ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন