এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ‘দাদাগিরি’-র ভূত এবং ভূতের দাদাগিরি

    Debasis Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯ | ২১৪৬৯ বার পঠিত
  • রণে, বনে, জলে, জঙ্গলে, শ্যাওড়া গাছের মাথায়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে, ছাপাখানায় এবং সুখী গৃহকোণে প্রায়শই ভূত দেখা যায়, সে নিয়ে কোনও পাষণ্ড কোনওদিনই সন্দেহ প্রকাশ করেনি । কিন্তু তাই বলে দুরদর্শনে, প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানেও ? আজ্ঞে হ্যাঁ, দাদা ভরসা দিলে এই একুশ শতকেও ভূতের ‘কামব্যাক’ সম্ভব । দাদা বার বার পাহাড়প্রমাণ বাধা ঠেলে ভারতীয় ক্রিকেট দলে ‘কামব্যাক’ করেছেন, আর আমরা সব অধীর উত্তেজনায় আপিস কাচারি কামাই করে সে সব দেখেছি । তাহলে, তাঁর অঙ্গুলি হেলনে যে হাই ডেফিনিশন টিভির পর্দায় ভূতেরা ফিরে আসবে, সে কি আর খুব বেশি কথা হল ?

    গতকাল ভর সন্ধেবেলাতেই ‘জি বাংলা’ চ্যানেলের ‘দাদাগিরি’ অনুষ্ঠানে সঞ্চালক সৌরভ গাঙ্গুলির সামনে হাজির হলেন এক মহিলা, তিনি ভুত খুঁজে বেড়ান, এবং এই আশ্চর্য কর্মকাণ্ড সুসম্পন্ন করার জন্য তাঁর নাকি একটি গোটা দলই আছে ! তিনি ওঝা-গুণিনদের মতন গেঁয়ো তন্ত্রমন্ত্রের ভরসায় থাকেন না, দস্তুরমত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ভুত খোঁজেন । যদিও সৌরভ গাঙ্গুলি, মানে আমাদের দাদা, বারবারই তাঁকে ভরসা দিয়ে বলেছেন যে ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁর মনে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই এবং কোনওকালে ছিল না, তবু সেই অকুতোভয় মহিলা ভূতের ‘প্রমাণ’ হিসেবে বিস্তর যন্তরপাতি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, আমাদের মত অজ্ঞ অকিঞ্চনকে প্রাজ্ঞ ও রোমাঞ্চিত করে তোলবার জন্য । তা, বন্ধুদের তরফে তীব্র প্ররোচনা-কবলিত অবস্থায় প্রাজ্ঞ ও রোমাঞ্চিত হবার চেষ্টায় ত্রুটি রাখার উপায় আমার ছিল না । সে চেষ্টার ফলাফল শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াল সেটা বলবার জন্যই এই লেখা, তবে তার আগে একটু ভাল করে দেখে নেওয়া যাক, এই মহিলা ওই অনুষ্ঠানে ক্যামেরার সামনে ঠিক কী কী বললেন এবং করলেন । মহিলার নাম ‘ঈশিতা দাস সান্যাল’, এবং আমরা এরপর থেকে সাধারণত তাঁকে সে নামেই ডাকব ।

    আমরা টিভির পর্দায় যা দেখলাম, তার মোদ্দা কথাগুলো এই রকম । এই ঈশিতা দাস সান্যাল জানালেন, কোথাও ভূতের উপদ্রব হচ্ছে খবর পেলেই তিনি তাঁর ভূতান্বেষী বন্ধুদের নিয়ে সেখানে ছুটে যান এবং তাঁদের বিচিত্র সব যন্ত্রপাতি দিয়ে ভূত খুঁজে দেখেন । এ রকম দুটি ‘অভিজ্ঞতা’-র কথা তিনি ওই অনুষ্ঠানে বর্ণনা করলেন । প্রথমটি কার্শিয়াং-এর ‘ডাওহিল’ অঞ্চলের কথা, যেখানে রয়েছে ‘ডেথ রোড’ নামে একটি রাস্তা, যার নাকি ভূতের উপদ্রবের ব্যাপারে ভীষণই বদনাম । সেখানে নাকি তাঁরা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র এবং তাপমাত্রা মাপার বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছিলেন, এবং সে সব যন্ত্রে অস্বাভাবিক ‘রিডিং’ পেয়েছেন, যা নাকি ভূতের অস্তিত্বেরই প্রবল ইঙ্গিত । ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র নাকি সেখানে অস্বাভাবিকরকম জোরালো, এবং তাপমাত্রা যা হওয়া উচিত তার চেয়ে বেশি । তাছাড়া, সেখানে আরও অনেক ‘অস্বাভাবিক’ ঘটনা ঘটে । যেমন, বারবারই তাঁরা গাড়ি থেকে নামলেই বৃষ্টি পড়তে থাকে এবং গাড়িতে উঠলেই থেমে যেতে থাকে, হঠাৎ করে তাঁদের ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়, আলো নিভে যায়, এবং তাঁর এক সঙ্গীর পিঠের ওপরে নখের জোরালো আঁচড় পড়ে রক্তপাত হয়ে যায়, গায়ে পোষাক পরা অবস্থাতেই ! আরেকটি ঘটনা ঘটে ইছাপুরের এক ‘প্রেত-উপদ্রুত’ ফ্ল্যাটবাড়িতে, যেখানে ওই আবাসনের জমিটির পুরোনো মালিক, যিনি কলহপ্রবণ ছিলেন এবং জলে ডুবে মারা যান, তাঁর ‘আত্মা’ নাকি এসে কলহ সৃষ্টি করতে থাকে আবাসনের বাসিন্দাদের মধ্যে । তার ‘প্রমাণ’ হিসেবে অনুষ্ঠানে দেখানো হয় একটি ভিডিও, যেখানে ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বসে আছেন একটি ছোট্ট যন্ত্রের সামনে, যার মাধ্যমে তাঁরা নাকি আত্মাকে কিছু প্রশ্ন করছেন এবং উত্তর পাচ্ছেন (আমার মনে হল যন্ত্রটি একটি সাধারণ স্মার্টফোন মাত্র, যাতে বিশেষ একটি ‘অ্যাপ’-এর সাহায্যে প্রশ্নকর্তার কথাগুলোরই উদ্ভট প্রতিধ্বনি হয়, এবং তা বানানো মোটেই কঠিন নয়) । ঈশিতার বলা নিছক গল্পগুলো বাদ দিলে ‘প্রমাণ’ হিসেবে যে দুটো ভিডিও দেখান হল তার দুটোই সম্পূর্ণ অকাজের । কার্শিয়াং-এর রাস্তায় তাঁর সঙ্গীর পিঠের আঁচড় যখন দেখানো হল, তখন অন্ধকারের মধ্যে শুধু পিঠটাই দেখানো হল, কারুর মুখ দেখা গেল না, আহত হবার মুহূর্তটির কোনও বিস্তারিত বর্ণনাও স্বয়ং আহতের মুখ দিয়ে শোনানো হল না । ঘটনাটি যে ঠিক ওই অঞ্চলেই ঘটছে, সে ব্যাপারেও ভিডিও-তে কোনও ইঙ্গিত রাখা হল না (যেমন, ঘটনাটি ঘটবার মুহূর্তেই তাকে ক্যামেরা দিয়ে ফলো করা, বা, পিঠের ক্লোজ আপ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা জুম আউট করে গোটা চিত্রটি তুলে ধরা বা ওই জাতীয় কিছু) । আর, ইছাপুরের ফ্ল্যাটের ঘটনায় শোনা গেল কিছু কষ্টশ্রাব্য উদ্ভট অবোধ্য প্রতিধ্বনি, যার আসলে কোনও মানেই হয়না । ‘ঘটনা’-র দশা যদি এই, তো তাহলে দেখা যাক ‘যন্ত্রপাতি’-গুলোর দশাটা ঠিক কেমন ।

    কী কী বৈদ্যুতিন যন্ত্র ঈশিতা দেখিয়েছেন, সে দিকে একটু তাকানো যাক । প্রথমত, একটি যন্ত্র যা দিয়ে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র-র প্রাবল্য মাপা যায় (‘ই এম এফ মিটার’) । এ দিয়ে আসলে দেখা হয় মূলত কোনও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের কাছাকাছি অঞ্চলের বিকিরণ (বেতার তরঙ্গের বিকিরণ), যাতে বোঝা যায় যন্ত্রটি ঠিকঠাক চলছে কিনা । আমাদের বাড়িতে সব সময়ই নানা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চলে, কাজেই সেখানে ওই মিটার নিয়ে নানা জায়গায় ঘুরঘুর করলে নানা রকম ‘রিডিং’ আসবে, সেটাই স্বাভাবিক । রাস্তাতেও ইলেক্ট্রিকের লাইন বা ওই ধরনের জিনিসের ধারকাছ দিয়ে গেলে মিটারের রিডিং বেড়ে যাবে, তার সঙ্গে ভূতের মোটেই সম্পর্ক নেই । দ্বিতীয়ত, তাপমাত্রা মাপার গোটা দুই যন্ত্র । এক্ষেত্রেও, বনে-জঙ্গলে বা বাড়িতে যেখানেই থাকুন না কেন, বাড়ির বিশেষ গঠন, জানলা-দরজা-গাছপালা থেকে দূরত্ব, ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার বা অন্যান্য যন্ত্রপাতির দুরত্ব, ঠিক কোন দিক থেকে রোদ কীভাবে এসে পড়ছে বা হাওয়া বইছে তার খুঁটিনাটি, এইসবের ওপর নির্ভর করে তাপমাত্রা ওঠানামা করতেই পারে, তাতেও ভুত বেচারার দোষ নেই । তৃতীয়ত, একটি লেজার ও একটি ইনফ্রা-রেড ‘প্রক্সিমিটি ডিটেক্টর’, যা যথাক্রমে লেজার ও ইনফ্রা-রেড রশ্মি বিকিরণ করে এবং সামনে কিছু থাকলে সে রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে যন্ত্রে ফিরে গিয়ে কাছাকাছি থাকা কোনও কিছুর অস্তিত্বের সংকেত দেয়, দূরত্বও জানিয়ে দেয় (মনে রাখবেন, কঠিন বস্তুর অস্তিত্ব, ভূতের নয় মোটেই)। চারপাশের বাধা এড়িয়ে ধাক্কা না খেয়ে নিজে নিজেই চলাফেরা করতে পারে এমন স্বয়ংক্রিয় রোবট-এ প্রায়শই এ ধরনের ‘সেন্সর’ ব্যবহার করা হয়, তবে কিনা, তারা ভূত দেখতে পায় এমন দাবি রোবট বিশেষজ্ঞরা আজ পর্যন্ত করেননি । আর তবে যন্ত্র বলতে বাকি রইল সেই প্রতিধ্বনি-অ্যাপওয়ালা প্ল্যাঞ্চেট-প্রবণ অত্যাশ্চর্য স্মার্টফোন, যাতে বিনোদন বলতে উদ্ভট প্রতিধ্বনি, আর ‘প্রমাণ’ বলতে লবডঙ্কা ! ভূতুড়ে বাণী যদি শোনাতেই হয়, তো তার মধ্যে বেচারা প্রশ্নকর্তার কথার বিকৃত প্রতিধ্বনি ঢোকালে তাতে যে কী ছাই সুবিধে হয়, সে বোধহয় শুধু ভূতপ্রেমীই জানে !

    কিন্তু, ভূতাকাঙ্খীদের আসল গণ্ডগোল ভূতুড়ে আঁচড় বা আগড়ম বাগড়ম যন্ত্রপাতিতে নেই, আছে তাঁদের কথাবার্তার মধ্যে, ভূতুড়ে কর্মকাণ্ডের ‘বৈজ্ঞানিক’ ব্যাখ্যার মধ্যে । এঁরা ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড’, ‘এনার্জি’, এইসব কথা এমন অনায়াসে এবং এমন নিপাট অর্থহীনতার সঙ্গে বলতে পারেন, যেগুলো শুনলেই বোঝা যায়, এগুলো খায় না মাথায় মাখে সে ব্যাপারে তাঁরা বিন্দুবিসর্গও জানেন না । ঈশিতার বক্তব্য, আমাদের শরীর মন ও তার কাজকর্মের মধ্যে যেহেতু প্রচুর ‘এনার্জি’ থাকে, এবং ‘এনার্জি’ যেহেতু সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না, অতএব আমরা মরে গেলেই নাকি সেই এনার্জি ধ্বংস না হয়ে ভূত হয়ে যায়, এবং পিঠে আঁচড় দেওয়া থেকে শুরু করে অন্য নানা বিচিত্র বেয়াদবি করে ভদ্রলোকেদের কাজকর্মে অত্যন্ত অসুবিধের সৃষ্টি করে । আচ্ছা, তাই নাকি ? কিন্তু, তাহলে কয়েকটা সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর দিন দেখি ! সকালবেলা গাড়ির ট্যাঙ্কে তেল ভর্তি করে বেরিয়ে সারাদিন ঘোরাঘুরির পর দিনের শেষে যখন তেল পুড়ে শেষ হয়ে গিয়ে আবার পেট্রোল পাম্পে হাজির হতে হয়, তখন আগের তেলটা কি মোটরগাড়ি-দেহ থেকে বেরিয়ে ‘তেলভূত’ হয়ে ঘুরে বেড়ায় ? টর্চের ব্যাটারি পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার ভেতরকার শক্তি বুঝি ‘ব্যাটারিভূত’ হয়ে নিশুতি রাতে আপনার ছাদে হাঁটাহাঁটি করে ? কালীপুজোয় পুড়ে যাওয়া লাখো লাখো বাজি কি তবে সবই ‘ফুলঝুরি ভূত’ আর ‘চকলেট বোমা ভূত’ হয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের মাথায় গিয়ে চাপে ? নাঃ, এ যে অবাস্তব সে কথা বোধহয় সকলেই বুঝবেন ।

    ভূতুড়েবিজ্ঞানীদের কথায় গণ্ডগোলটা ঠিক কোথায় ? ‘এনার্জি’ যে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না, এ তো বিজ্ঞানেরই কথা, একে তো আর অস্বীকার করা যায় না । ভুলটা তবে কোথায় হচ্ছে ? ভুলটা হচ্ছে ‘প্রসেস’ আর ‘ফাংশন’ জাতীয় ধারণার সাথে ‘সাবস্টেন্স’ আর ‘কোয়ান্টিটি’ জাতীয় ধারণাকে গুলিয়ে দেওয়ার মধ্যে । উদাহরণ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করা যাক । একটা মোটরগাড়ি ও তার তেলটা হচ্ছে ‘সাবস্টেন্স’ বা বস্তু, তেলের ভেতরে আছে শক্তি নামক একটি বস্তুধর্ম বা ‘কোয়ান্টিটি’ যাকে আমরা বস্তুর কর্মক্ষমতা হিসেবে মাপতে পারি, মোটরগাড়ির ভেতরে বিশেষ ব্যবস্থায় তেলটা ক্রমাগত পুড়ে পুড়ে শক্তি সরবরাহ করে যেভাবে ইঞ্জিনটাকে চালু রাখছে সেটা হচ্ছে ‘প্রসেস’ বা প্রক্রিয়া, আর এই প্রক্রিয়ায় মোটরগাড়িটি যে আমাদেরকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় অনায়াসে বয়ে নিয়ে যেতে পারছে সেটা হচ্ছে তার ‘ফাংশন’ বা ক্রিয়া । ঠিক তেমনিই, আমাদের দেহ ও খাবারদাবার হচ্ছে ‘সাবস্টেন্স’ বা বস্তু, খাবারের ভেতরে নিহিত আছে শক্তি নামক একটি বস্তুধর্ম বা ‘কোয়ান্টিটি’, আমাদের দেহের ভেতরে বিশেষ ব্যবস্থায় খাবারটা ক্রমাগত হজম হয়ে শক্তি সরবরাহ করে যেভাবে শরীর ও তার কাজকর্মকে চালু রাখছে সেটা হচ্ছে ‘প্রসেস’ বা প্রক্রিয়া, আর এই প্রক্রিয়ায় আমাদের শরীর ও মস্তিষ্ক যেভাবে এক অসাধারণ ছন্দে আমাদেরকে অনায়াসে বাঁচিয়ে রাখতে পারছে সেটা হচ্ছে তার ‘ফাংশন’ বা ক্রিয়া । আমাদের আহার-নিদ্রা-মৈথুন-চিন্তা-ভালবাসা-ক্রোধ-ঘৃণা সবই এই ‘ফাংশন’ । জটিলতা ও সূক্ষ্মতায় অবশ্যই আমাদের সাথে মোটরগাড়ির কোনও তুলনা হয়না, কিন্তু তা সত্ত্বেও দুয়ের মধ্যে এই মিলগুলো ভীষণ মৌলিক ও বাস্তব । কাজেই, এখন নিশ্চয়ই পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, ‘প্রসেস’ এবং ‘ফাংশন’ চালু রাখার জন্য ‘এনার্জি’ বা শক্তি অপরিহার্য, কিন্তু দুটো জিনিস মোটেই এক নয় । আমাদের শ্বাসনালী রুদ্ধ হয়ে গেলে, বা মোটরগাড়ির ইঞ্জিনে তেল আসবার নলটি বন্ধ হয়ে গেলে, দেহ বা গাড়ির পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটতে পারে, ভেতরে খাদ্য বা তেল রূপে শক্তিভাণ্ডার সম্পূর্ণ অটুট থাকলেও । আবার উল্টোদিকে, সে ভাণ্ডার শেষ হয়ে গেলেও ভেতরের ব্যবস্থাটি অটুট থাকলে ‘প্রসেস’ এবং ‘ফাংশন’ আবারও চালু করে দেওয়া যায়, খাদ্য বা তেল পেটে পুরলেই । এই কথাগুলো মাথায় রাখলে কেউ আর নিশ্চয়ই এমনটা বলবেন না যে, আমরা (বা মোটরগাড়ি) শেষ হয়ে গেলে আমাদের (বা মোটরগাড়ির) ‘এনার্জি’ বেরিয়ে গিয়ে ভূত হয়ে ঘুরে বেড়ায়, বা ভূতবিজ্ঞানীর পিঠ চুলকোয় ।

    তাছাড়া, ‘থার্মোডিনামিক্স’ বা তাপগতিবিদ্যার আরও একটি নিয়ম বা প্রাকৃতিক সত্য এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য । এ বিদ্যার অনেকগুলো নিয়ম আছে, তার মধ্যে দ্বিতীয় নিয়মটি হল, শক্তিকে একবার কাজে লাগিয়ে নিলে সে ধ্বংস না হলেও আর কর্মক্ষম অবস্থায় থাকে না, তাপ হিসেবে বস্তুর মধ্যেকার এক রকমের বিশৃঙ্খলা হয়ে থেকে যায়, তখন আর তাকে মোটেই কাজে লাগানো যায় না, ভূতুড়ে বাড়ির অন্ধকার ছাদে হাঁটাহাঁটি করে নিরীহ গেরস্তের কাজ বাড়ানোর তো প্রশ্নই ওঠে না । এ যদি না হত, তাহলে আর বারবার আমাদের তেল কয়লা পোড়াতে হত না, একই জ্বালানিতে চিরকাল কাজ চলত ।

    আসলে, ভূত বা 'আত্মা'-র ধারণাটি হল 'প্রসেস' বা ‘ফাংশন’-কে 'সাবস্টেন্স' বা বস্তু বলে ভুল করবার একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত । জীবিতের তুলনায় সদ্যমৃত মানুষের (বা অন্য প্রাণির) দৈহিক তফাৎ কিছুই বোঝা যায় না, অথচ সে আর সাড়া দেবে না, কথা বলবে না, ভালবাসবে না, এমনকি রাগও করবে না । তাহলে নিশ্চয়ই কোনও এক রহস্যময় সূক্ষ্ম বস্তু আছে, যার নাম দেওয়া যাক 'আত্মা' --- দেহের মধ্যে তার থাকা বা না থাকাটাই তবে তফাৎ গড়ে দিচ্ছে ! আধুনিক মানুষ জানে যে বাইরে থেকে দেখতে এক হলেও আসলে জীবিত ও মৃত দেহের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ, এবং ওই দৈহিক তফাতটাই হল প্রাণ-মন থাকা বা না থাকারও কারণ । দেহ পচতে শুরু না করলে তফাত বোঝা যায় না, মনে হয় মানুষটা বুঝি ঘুমিয়ে আছে, এখুনি জেগে উঠতেও পারে, কিন্তু আসলে মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বিপাকীয় ক্রিয়া থেমে যায়, কোষগুলো মরে যেতে থাকে, রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, মস্তিষ্কের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় । অথচ, আদিম মানুষের পক্ষে তা বোঝা অসম্ভব ছিল । তারা না জানত শব-ব্যবচ্ছেদবিদ্যা, না বুঝত আধুনিক শারীরবিদ্যা ও কোষতত্ত্ব, না ছিল তাদের হাতে মাইক্রোস্কোপ । তারা তাই বুঝতে পারে নি যে, প্রাণ-মন হল আসলে 'দেহ' নামক এক মহা জটিল বস্তু-সমবায়ের 'ফাংশন' বা ক্রিয়া --- জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার পারিপার্শ্বিকের সাথে বিভিন্ন স্তরে অবিরাম চলতে থাকা এক আশ্চর্য মিথষ্ক্রিয়া । এই অতি গভীর ও সমৃদ্ধ প্রক্রিয়াকেই প্রাচীন মানুষ দেখেছিল এক সূক্ষ্ম বস্তু রূপে । এমন নয় যে তারা আমাদের চেয়ে বোকা ছিল । তারা জানত, ভেতরে ঢুকে থাকা বস্তু অন্য বস্তুর ধর্মকে পালটে দিতে পারে । কলসীর ভেতরে জল ঢাললে তার ওজন বেড়ে যায়, আবার তা বার করে নিলে সে ওজন কমেও যায় । জলের মধ্যে নুন বা চিনি মেশালে স্বাদ নোনতা বা মিষ্টি হয়ে যায়, আবার নানা প্রক্রিয়ায় আলাদা করে নিলে সে স্বাদ চলেও যায় । কাজেই, 'আত্মা' নামক সূক্ষ্ম বস্তু ঢুকে পড়ে দেহে প্রাণ-মন সঞ্চার করবে আর বেরিয়ে গিয়ে তাকে মড়া বানিয়ে দেবে, এ চিন্তা তাদের কাছে খুব বেশি অসম্ভব বলে মনে হয় নি । প্রাচীন মানুষের ক্ষেত্রে এইসব ভুল দোষের ছিল না, বরঞ্চ এগুলো তাদের চিন্তাশীলতা, অনুসন্ধিৎসা ও কল্পনাশক্তিরই প্রমাণ ।

    কিন্তু, আজকের দিনেও যারা এই প্রাচীন ভুল কাজে লাগিয়ে লোক ঠকায়, টেলিভিশনের মত আধুনিক বিজ্ঞাননির্ভর প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কুসংস্কার প্রচারের গণ-আয়োজন করে, তারা কেমন লোক ?

    আঙুলটা তাই উঠুক এদের বিরুদ্ধেই ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯ | ২১৪৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Atoz | 237812.69.4545.151 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১০:২২48641
  • ভূত ভগবান দাদা দিদি পিসি মাসি রাজ্যপাল ইত্যাদি প্রভৃতি নিমিত্তমাত্র, বাজার যা করাবে তাই করতে হবে।
    আপনারা কেউ রাজ্যপালের আঁকাটা দেখলেন? আমার তো মনে হল অদ্ভুত কানওয়ালা এক এলিয়েনকে এঁকেছেন। ঃ-)
  • S | 236712.158.780112.30 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১০:২৬48642
  • কই?
  • Kaju | 237812.69.563412.135 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৩৫48627
  • টি-বাবু, সরি আমি ভিডিও চাইনি, ৩টি বা অন্ততঃ আঁচড়ের বিষয়টি লিখিত ভাবে পোস্কার করে জানতে চেয়েছি, যে সেটা কোন নকশাবাজি দিয়ে করা যায়? "জ্যাকেট জামা গেঞ্জিতে বিন্দুমাত্র আঁচড় বা ছেঁড়া না হয়ে কীভাবে ছেলেটির পিঠে ওরকম লম্বা লম্বা আঁচড় পড়ল?" উত্তর নেই মানে সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যাখ্যা দেয়া গেল না। বেশ। ওরম জ্বালা ধরানো অসহ্য আঁচড় কেউ সেধে কাটায় না নিশ্চয়ই শুধু ভূত প্রমাণ করতে? ভূত প্রমাণ করলে কি ভূতের রাজার ৩ বর পাওয়া যায় সত্যি সত্যি?
  • sm | 236712.158.895612.204 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৫৫48628
  • কাজু আমি এপিসোড টি দেখিনি।কিন্তু dermatographism বা dermatographia হলো একধরনের এলার্জি রোগ।যেখানে ক্ষেত্র বিশেষে কোন রোগীর গায়ে নখ বা পেন্সিল করে দাগ দিলে বা সংখ্যা লিখলে সেটি আঁচড় এর মতো চামড়ার ওপর ফুটে ওঠে।
    একটি লিংক দিলাম
    ওই dermatographism শব্দ দিয়ে গুগল ইমেজে সার্চ করুন প্রচুর ফটো পাবেন
    বিষয় টি পরিষ্কার হবে।
    https://www.sciencedirect.com/topics/medicine-and-dentistry/dermographism
  • S | 890112.162.674523.58 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০৯48629
  • এগুলোকে তো লোকে শয়্তানের আঁচর, ভুতের আঁচর বলে। আমার ধারণা ছিল কোনও সময় হয়তো কেটে গিয়ে থাকবে বা ঘুমের মধ্যে নিজের নখের আঁচর দিয়ে থাকবে আর তাই খেয়াল নেই।
  • Kaju | 237812.69.563412.81 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৩৮48630
  • এসেমদা, এটাই কিনা সে প্রশ্নের উত্তর কখনোই সামনে আসবে না, কিন্তু নতুন একটা জিনিস জানা হল। ধন্যবাদ। ঃ) অন্যগুলোর ভিডিও নেই, সৌরভের কথার না, এমনকি বিক্রমের সেম কেস তারও না, তাই সে নিয়ে তো বলাই যাবে না, এটার ভিডিও ছিল বলেই আরো জিগেস করা।
  • b | 236712.158.676712.140 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১৩48644
  • খেয়েচে। এবার দিদিপিসির সাথে লাগলো বলে। অবশ্য দিদিপিসি অনেকদিন ছবি আঁকেন না।
  • lcm | 236712.158.565623.141 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৩48645
  • বিচার করুন - -

    গভর্নর জ্যাগ্‌ডিপ্‌ -


    সিএম ম্যাম্‌টা -
  • Atoz | 237812.69.4545.137 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৫48646
  • রাজ্যপালের আঁকায় ছবির লোকটার কান দুটো দেখুন শুধু। ঃ-)
  • S | 236712.158.780112.108 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩০48647
  • জনগণ ছবি হয়ে গেছে।
  • Amit | 236712.158.23.215 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫০48648
  • খুব ভালো লাগলো দেবাশিস বাবুর মূল লেখাটা পড়ে। এইসব কুসংস্কারের প্রতিবাদ হওয়াটা খুব জরুরি। যে যেখানেই করুন না কেন, প্রতিটা প্রতিবাদ ই দরকারি। হয়তো কোনো এক দিন শিক্ষা বা সোশ্যাল ইনফ্রা সেই লেভেল এ পৌঁছবে যখন সাধারণ লোকে এসব ভাওতা বাজিতে তে আর বিশ্বাস করবে না। কিন্তু সেটা আসতে আরো ক শো বছর লাগবে জানা নেই, ততদিন এই প্রতিবাদ গুলোই ভরসা।

    এই প্রোগ্রাম গুলোতে যেসব সেলেব রা যায়, তাদের একটা মিনিমাম সামাজিক দায়িত্বিবোধ ও থাকা উচিত। শুধু পাবলিকের মধ্যে এসব কুসংস্কার জনপ্রিয় বলেই তেনারা পয়সার জন্যে বা পাবলিসিটির জন্যে এসব সস্তা প্রোপাগান্ডাতে অংশ নেবেন, সেটা দেখেও খারপ লাগে। অন্তত সৌরভের তো আর যাই হোক, পয়সার দরকার না থাকার ই কথা।

    অবশ্য আমাদের খারাপ লাগলে ই বা তেনাদের কি এসে যায় আর। যে যার মর্জির মালিক।
  • Atoz | 237812.69.4545.151 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৬48649
  • হনুমানযন্ত্র ফন্ত্র র বিজ্ঞাপণ অবধি অক্লেশে করে এরা, সবই টাকা আর বাজার। গ্রহরত্ন-আংটি, চন্দ্রজল, বশীকরণ ----সবই তো রমরম করে চলছে।
    এই ভূত দেখিয়ে দাদাগিরির টিআর্পি হু হু করে তালগাছে উঠেছে। ফেবুতে এই নিয়ে শয়ে শয়ে পোস্ট। যে লোকেরা দাদাগিরির কেয়ারও করতো না এতদিন, তারাও এখন ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
  • Amit | 236712.158.23.209 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২২48650
  • এটাই অবাক লাগে যে আগে ভেবেছিলাম টিভি, ইন্টারনেট এর পপুলারিটি যত বাড়বে দিনে দিনে, লোকে বেটার লাইব্রেরি, রিসার্চ, সাইন্স ডকুমেন্টারী এসবের বেশি বেশি একসেস পাবে। যত বেশি জানবে, তত লোকে বিজ্ঞানমনস্ক হবে, কুসংস্কার গুলো ততই কমে আসবে।

    এতো উল্টো হচ্ছে পুরো।
  • aranya | 236712.158.2367.66 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৯48651
  • কাজু, সৌরভ যে ভুত দেখেছে, সবই হ্যালুসিনেশন হতে পারে। আর পিঠে আঁচড়ের ব্যাপার-টা বড়েস যেমন বলল - নিজেত নখে অনেক সময় কেটে যায়, লোকে বলে শয়তানের আঁচড়।
    আমি নিজে খুবই চাই, অলৌকিক কিছু থাকুক, তাহলে লাইফ একটু ইন্টারেস্টিং হয়, আর মৃত্যুতেই এই সচেতন অস্তিত্বের শেষ নয় জানলে বেশ ভালও লাগে, কিন্তু হায়, আমার সামনে তেমন কিছুই ঘটে না।
  • aranya | 890112.162.9001223.99 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫০48652
  • নতুন বাড়িতে আসার পর, আমার দু বছর বয়সী মেয়েকে বৌ একদিন খাওয়াচ্ছিল, হঠাৎ সে বলল - মা সিঁড়িতে ওটা কে বসে আছে?
    মা - কে বসে আছে, কাউকে তো দেখছি না
    মেয়ে - ঐ ছেলেটা
    মা - কেমন দেখতে?

    অতঃ পর মেয়ের বিকট দাঁত খিঁচোনো মুখভঙ্গি, মা প্রায় অজ্ঞান, তারপর মেয়েকে ট্যাঁকে গুঁজে বাড়ী ছেড়ে লম্বা।

    দু বছরের বাচ্চার কি বানিয়ে বলার মত কল্পনাশক্তি থাকে - কে জানে।

    আগের মালিকের নামে একটা বাচ্চাদের হাসপাতাল থেকে চিঠি আসত অনেকদিন পর্যন্ত। তাদের কোন বাচ্চা হয়ত অসুস্থ হয়ে মারা যায়, তারই আত্মা মায়ার বাঁধন কাটাতে না পেরে ঘুরে বেড়ায় - ভুতে বিশ্বাস করলে এমনটা ভাবতাম হয়ত
  • aranya | 890112.162.9001223.99 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৩48653
  • এই বাড়ীতেই আরেক দিন, মা ওপরের বারান্দা থেকে দেখল মেয়ে হেঁটে বাথরুমে গেল, তারপর নিচে এসে দেখে মেয়ে সোফায় শুয়ে অঘোরে ঘুমোচ্ছে।
    হ্যালুসিনেশন
  • S | 890112.162.674523.52 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৪48654
  • অরণ্যবাবুর পোস্টগুলো খুব ইন্টারেস্টিং।

    "মৃত্যুতেই এই সচেতন অস্তিত্বের শেষ নয় জানলে বেশ ভালও লাগে"
    এইটাই এলিয়েন, ভুত, কর্মা, ভগবান সব বিশ্বাসের আসল কারণ। আপনাকে যদি বলে দেওয়া হয় যে এইখানেই সব শেষ, তাহলে ভালো মানুষ থাকার কোনও আর ইন্সেন্টিভ থাকেনা। বিলিভিং ইন সামথিং গ্রেটার মেকস আওয়ার লাইফ মোর কমফর্টেবল, মোর সিকিওর্ড।

    সোল ব্যাপারটা অন্য আইডিয়া। এইযে আজকেও আমরা রবিঠাকুর নিয়ে পাতার পর পাতা আলোচনা করি, সেইটাই সোল। তাঁর ফিজিকাল প্রেজেন্স বহুদিন হল নেই, কিন্তু একজন মানুষ তো মাচ মোর দ্যান জাস্ট রক্ত মাংস। মানুষের আসল পরিচয় তার চিন্তায়। সেইটা অবিনশ্বর।

    অরণ্যবাবু প্রথম গল্পটা আগেও দিয়েছিলেন গুরুতে, আমার মনে আছে। অনেকে বলে যে বাচ্চারা অনেক বেশি সেনসিটিভ হয়, তাই আত্মার প্রেজেন্স ব্ঝতে পারে। তবে বাচ্চা হয়তো টিভি, বই, ম্যাগাজিনে কিছু দেখেছে, তার থেকেও বানাতে পারে গল্প। বাচ্চাদের কল্পনা শক্তিও অনেক বেশি হয় কিনা।
  • | 237812.69.563412.229 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০২48655
  • অজ্জিতের ছানা ঋক যখন কুট্টি ছানা ছিল তখন বাথটবে ড্রাগন না ডাইনোসর কি একটা পুষত, তার সাথে খেলা গল্প সব করত। ছোটাইয়ের কন্যা চিনি যখন কুট্টি ছিল তখন খাতের তলায় কাদের সব পুষত যাদের ছোটাই কখনো দেখতে পয় নি।
    এগুলো সবই গুরুর পুরানো পাতায় ডকুমেন্টেড।

    তো এইসব দেড় দুই বছরের বাচ্চাদের পোষা প্রাণীগুলোও নিশ্চয় আছে। কী বলেন?
  • | 237812.68.454512.90 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০৩48656
  • *খাটের তলায়।
  • Amit | 236712.158.23.211 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:২৭48657
  • আসলে এই ঘটনা গুলো যখন ঘটে তখন যে একটা সাডেন শক লাগে, সেটা এড়ানো বাবা মা বা অন্য যে কেও বড়ো কারোর পক্ষেও বেশ শক্ত। পরে যুক্তি দিয়ে ভাবলে বা বাচ্চার কাউন্সেলিং করলে হয়তো তখন বেরিয়ে আসে যে ওরা হয়তো কোনো কোনো গল্প পড়ে বা শুনে শুনে একটা কিছু কল্পনা করে নিচ্ছে, সেটাকেই আসল ভাবছে। লিভিং ইন ফ্যান্টাসি তো বাচ্চাদের গিফট।

    কিন্তু বাবা বা মা একা একা ই বাড়িতে আছেন বাচ্চার সাথে, তখন হটাৎ করে বাচ্চা র এরকম একটা রিঅ্যাকশন হলে বেশ ঘাবড়ে যাবে সবাই। রোবট তো আর নয় কেও, অতো যুক্তি দিয়ে ভাবার অবস্থা থাকে না সব সময়, ইম্পালস রিঅ্যাকশন কাজ করে। পরে ঠান্ডা মাথায় ভাবলে তখন সত্যি টা বা হালুসিনেশন টা বেরিয়ে আসে অনেক সময়েই।
  • | 236712.158.676712.20 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:০৩48658
  • ভুত আর হোমিওপ্যাথি এই দুইয়ের অত্যাচারে প্রাণ ওষ্ঠাগত।

  • Bhut | 237812.68.457812.87 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:০৬48659
  • @aranya, অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতাকে হ্যালুসিনেশন ভেবে নেওয়াই কম্ফর্টেবল। সেটাই ভাবুন না।
  • ন্যাড়া | 237812.68.124512.123 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৩৬48660
  • আমি সময়বিশেষে ভূত, ভগবান, রাম জন্মভূমি, অস্ট্রেলোপিথেকাস, মিসিং লিংক, অরণ্যদেব, বামফ্রন্টের আমলে পশ্চিমবঙ্গর উন্নতি - সবেতেই বিশ্বাস করি। এও কি হ্যালু?
  • | 237812.69.453412.116 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:০৪48661
  • তাতে সন্দ আছে নকি?

    'আচ্ছে দিন' কি এস্টাবলিশড? :-p
  • Amit | 237812.68.6789.17 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:১২48662
  • বাকি গুলো একদম ঠিক আছে। কিন্তু বামেদের আমলে পব র উন্নতি তে বিশ্বাস করে ন্যাড়া বাবু প্রাণে বড়ো দাগা দিয়ে গ্যালেন। :(
  • ভিন্নমত | 236712.158.566712.63 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:৪১48663
  • সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রিয়েলিটি শো 'দাদাগিরি'-তে প্রেতচর্চা এবং তা নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ-এর পর আমারও কিছু বলতে ইচ্ছে হল

    সব থেকে সংগঠিত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক আগ্রাসনের নাম আধুনিকতা। দেশে দেশে অঞ্চলে অঞ্চলে যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র‍্য, তাকে ধ্বংস করে সারা পৃথিবীকে ইউরোপের ছাঁচে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল শিল্পবিপ্লবের আগে থেকেই, বিশ্বায়নে তা আরও বেড়ে গেছে। রেনেসাঁসের গর্বে দাম্ভিক ইউরোপিয়ানরা আধুনিকতার দোহাই দিয়ে উত্তর, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশিয়ানিয়ায় নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে, আফ্রিকায় মানুষকে ক্রীতদাস বানিয়ে সমুদ্র পেরিয়ে বিক্রি করেছে অন্য দেশে, সারা দুনিয়ায় সাম্রাজ্য তৈরি করে প্রকৃতিকে লুঠ করেছে নির্বিচারে। এখনও সেই লুঠ চালাচ্ছে কর্পোরেটরা, আধুনিক জাতিরাষ্ট্রগুলোর মদতে।

    আধুনিকতা পৃথিবীকে উপহার দিয়েছে পুঁজিবাদ, ফ্যাসিবাদ, বিশ্বযুদ্ধ, আণবিক বোমা আর পরিবেশ দূষণ। বিশ্ব পুঁজির নিয়ন্ত্রকরা নিজেদের স্বার্থে তালিবান বানিয়েছে, আল-কায়দা, ইসলামিক স্টেট বানিয়েছে, হিন্দুরাষ্ট্রের আগ্রাসনে অর্থ জুগিয়েছে৷ আধুনিকতাই জন্ম দিয়েছে হিটলার, ইদি আমিন, স্ট্যালিনের মতো একনায়কদের।

    আধুনিক বিজ্ঞান সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের অন্যতম হাতিয়ার। আমরা দেখেছি, পুঁজিপতিরা কীভাবে বিজ্ঞানকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে, কীভাবে রাষ্ট্রশক্তি বিজ্ঞানের সাহায্যে নিজের ক্ষমতা নিরংকুশ করছে। উন্নয়নের নামে মানুষকে উচ্ছেদ করেছে, প্রকৃতিকে ধ্বংস করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত রাশিয়া, গণপ্রজাতন্ত্রী চিন, সৌদি আরব, ভারত, বাংলাদেশ -- সব রাষ্ট্রই।

    ইতিহাস সাক্ষী আছে, আধুনিক রাষ্ট্র যেভাবে প্রযুক্তির সাহায্যে জনগণের ওপর নজরদারি চালায়, প্রাগাধুনিক সমাজে তা ছিল না। এমনকি, আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায়, রাজশক্তি গ্রামীণ সমাজে হস্তক্ষেপ করতে খুব বেশি সাহস পেত না, আদিবাসীরাও নিজেদের মতো থাকতেন। প্রকৃতি-পরিবেশ তখন বিষাক্ত হয়ে যায়নি, রোগ-বালাই ছিল অনেক কম। চিকিৎসাব্যবস্থা তখন পণ্য ছিল না --- প্রাগাধুনিক চিকিৎসা সবার কাছেই সহজলভ্য ছিল৷ সেই চিকিৎসার সাহায্যেই মানুষ ছিল অনেক সুস্থ, বলশালী ও প্রাণবন্ত। নৃতত্ত্ববিদরা দেখিয়েছেন, বিভিন্ন আদিবাদী সমাজে ওঝা বা পুরোহিতরা এমন সব ভেষজ ওষুধ জানেন, আধুনিক চিকিৎসকদের কাছে যা অজানা। ধর্মবিশ্বাসে নামে অনেক নিপীড়ন হয়েছে, অত্যাচার হয়েছে হাজার হাজার বছর ধরে, আবার ধর্মের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ উঠে এসেছে। অন্যদিকে, মাত্র কয়েকশো বছরে উন্নয়নের নামে যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে প্রকৃতিকে, যেভাবে মানুষের কারণে গোটা পৃথিবী মৃত্যুর মুখে এসে দাঁড়িয়েছে, এরকম সংকট আধুনিকতার আগে কেউ দেখেনি।

    মানব সমাজে আদিকাল থেকেই রয়েছে অনেক রকম বিশ্বাস। আধুনিক বিজ্ঞান দিয়ে সেগুলোকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। প্রয়োজনও নেই। সবাইকে যে একই ধাঁচে চিন্তা করতে হবে, ইউরোপের বাইরে এই মৌলবাদ আধুনিকতার আগে শাখা প্রশাখা ছড়ায়নি। মধ্যযুগের ইউরোপে যেভাবে চার্চের সর্বগ্রাসী দাপট দেখেছি, যেভাবে সাম্প্রদায়িকতা, ইসলাম-বিদ্বেষ, ইহুদি-বিদ্বেষ দেখেছি, পৃথিবীর বাকি দেশগুলোতে তা ছিল অজানা৷ সেই সব বিদ্বেষ আর ঘৃণা এখন প্রগতিশীলতার মুখোশ পরে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন যারা অন্য রকম বিশ্বাস নিয়ে চলতে চায়, তাদেরকে দেগে দেওয়া হয় বিজ্ঞানের শত্রু বলে, উন্নয়নের শত্রু বলে, এমনকি দেশদ্রোহী বলেও। তারপর তাদেরকে হেনস্থা করা হয়, নিকেশ করা হয়, প্রয়োজনে রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে। এই তো আধুনিকতার স্বরূপ।

    বিজ্ঞান থাকুক, তার সঙ্গে অন্য বিশ্বাসগুলোও থাকুক, তাদের প্রচারগুলোও থাকুক। বেঁচে থাকুক যুক্তিবাদ, প্রশ্ন, অবিশ্বাস, ধর্মবিশ্বাস, জাদুবিশ্বাস -- সবাই। সেটাই বহুস্বর। সেটাই গণতন্ত্র। বৈচিত্র‍্য ছাড়া পৃথিবীটা বড়ো ফ্যাকাসে হয়ে যায়, মৌলবাদী হয়ে যায়।

    শ্রেয়ণ
    ১৯ নভেম্বর ২০১৯
  • S | 890112.162.674523.124 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:১৫48671
  • স্ট্রম্যান?
  • b | 237812.68.454512.210 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:২৫48664
  • শ্রেয়ণ কি মোহনবাগানের ডিফেন্ডার হবেন? একজন প্রচন্ড ইস্টবেঙ্গল ফ্যান হিসেবে খুব চাইছি।
  • Debasis Bhattacharya | 236712.158.566712.63 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:০৩48665
  • যাঁরা মন্তব্য করেছেন এবং করছেন তাঁদের সবাইকেই আবারও ধন্যবাদ, যুক্তিতর্কের স্পিরিটকে তুলে ধরার জন্য শুধু নয়, সংলাপে রস-সঞ্চারের জন্যও । দুয়েকজনকে একটু বিশেষ করে সম্বোধন করা যাক ।

    ‘সুকি’,
    আপনার মন্তব্যটি ভাল লাগল, কিন্তু একটু অবাকও করল । র‍্যান্ডি আর আসিমভ থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছেন মানে, আপনার আন্তর্জাতিক যুক্তিবাদী লেখাপত্র পড়ার অভ্যাস আছে, খুব কম বাঙালিই যে অভ্যাসের শরিক । কিন্তু, সে অভ্যাস আছে, অথচ এইটা এখনও জানেন না যে, প্রবীর ঘোষ একজন জোচ্চর ভুয়ো চিকিৎসক মাত্র ? না যদি জেনে থাকেন, তো অনুগ্রহ করে একটু খোঁজখবর নেবেন । এখানে সে নিয়ে বেশি কথা বলব না, কারণ ঘোষ মহাশয় এখানে আলোচ্য নন । শুধু এইটুকু বলি, প্রবীর ঘোষের বইপত্র একটু সতর্ক হয়ে পড়বেন, কারণ, ওতে অজ্ঞতাপ্রসূত ভুল এবং ইচ্ছাকৃত মিথ্যে --- দুটোই ভুরি ভুরি আছে । আমার ধারণা, যুক্তিবাদ চর্চার পক্ষে বইগুলো খুব নিরাপদ নয় ।

    ‘ন্যাড়া’,
    কমিউনিজ্‌ম্‌ আর বাজার অর্থনীতির সমর্থকদের মধ্যে অযুক্তি ও অন্ধত্ব থাকতেই পারে, আছেও, মানুষ তো ! কিন্তু এ দুটোকে ভুত আর ভগবানের সাথে এক করে দেওয়া বোধহ্য় ঠিক নয় । এ দুটো আর যা-ই হোক, অস্তিত্বহীন নয় ।

    ‘Ekak’,
    আমার প্রবন্ধ আপনার ভাল লাগায় আনন্দিত । ভর হলে ওঝা না ডেকে ডাক্তার ডাকতে হবে, এবং সে জন্য চিকিৎসার পরিকাঠামো উন্নত হতে হবে, এ কথা সর্ববাদীসম্মত । তবে, আমার মনে হয়, আরও ভাল হয় যদি ‘ভর’ জিনিসটাই আদৌ না ঘটে । ভূতপ্রেতের কুসংস্কার তাড়াতে পারলে সেটা সম্ভব, নাস্তিকদের ভূতে ভর হয় না । সেই জন্যই তর্ক-বিতর্ক-বিশ্লেষণ এগুলো খুব জরুরি । ভূত নেই এটা সব সময়ে জনে জনে বোঝাবার দরকার পড়ে না । এই ধরুন, গুরুচণ্ডাঌ-র এই লেখাটিই হাজারখানেক শেয়ার হয়েছে, এবং অন্তত হাজার পাঁচেক লোক এটা পড়েছেন । যদি ‘দাদাগিরি’ অনুষ্ঠানে কুসংস্কার প্রচারের বদলে তার বিরোধিতা করা হত, তাহলে আরও অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের অন্ধবিশ্বাসে আরও বড় ধাক্কা লাগতে পারত ।

    ‘aranya’,
    দু বছরের বাচ্চার কল্পনাশক্তি বড়দের থেকেও অনেক বেশি হতে পারে । কিন্তু এখানে আপনার সমস্যার যে যৎসামান্য ইঙ্গিত এখানে পেলাম তাতে আমার মনে হচ্ছে, হ্যালুসিনেশন আপনার মেয়ের হয়নি, হচ্ছে তার মায়ের । আপনারা যেভাবে ভুত দেখছেন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় বাড়ি ছাড়ছেন, সে সব পড়ে বেশ একটু দুঃখই হল । আপনাদের কুসংস্কার কিন্তু দ্রুতই আপনাদের শিশুর মনে সঞ্চারিত হবে বা ইতিমধ্যেই হয়েছে, সেটা একদমই ভাল কথা নয় । আপনারা এ থেকে বেরিয়ে আসুন, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক/মনোবিদের সাহায্য সাহায্য নিন ।

    ‘ভিন্নমত’,
    কুসংস্কারকে ‘ভিন্নমত’ বলে চালানোটা আধুনিকতারই এক উপজাত ফ্যাশান, এর মধ্যে সত্য আর মিথ্যার তফাতকে অস্বীকার করবার যে পাপটি নিহিত আছে সেটা সাধারণত উদারমনস্কতার ভানের আড়ালে চাপা পড়ে থাকে । যুক্তি-তর্ক বাদ দিয়ে শুধু ‘বহুস্বর’-এর ভরসায় মৌলবাদের বিরোধিতা করা বৃথা । সব স্বরকেই যদি বাঁচাতে চান, তাহলে মৌলবাদও তো একটি ‘স্বর’, তাকে বাদ দেবেন কোন নীতিতে ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন