এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • হিন্দী আগ্রাসনের প্রেক্ষিতঃ দেশ, রাষ্ট্র ও ভাষা

    Samrat Amin লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ জুন ২০১৯ | ১৯৩৩৩ বার পঠিত
  • ফেব্রুয়ারী মাস প্রেমের মাস, ভাষারও মাস । শুধুই প্রেমের কুহুতান নয়, "অমর একুশে" ডাক দেয় এ মাসেই । আমার ভায়ের রক্তে রেঙে লাল হয়েছে ঢাকার রাজপথ, অমর একুশেই । হোক না পদ্মার ওপারের গল্প, তবুও বরকতরা তো আমারই ভাই, আমারই রক্ত । যে ভাষার জন্য তাদের আন্দোলন সেটা আমারই মায়ের ভাষা, যে সংস্কৃতির জন্য তাদের লড়াই সেটা আমারই সংস্কৃতি । অনেক লম্বা সে প্রেক্ষাপট । স্বাধীনতা-উত্তর দূর্বল রাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্র (পশ্চিম পাকিস্তান) চেয়েছিল "পূর্ব পাকিস্তানের" উপর সাংস্কৃতিক আধিপত্য বজায় রাখতে । উর্দু ভাষা ও উর্দু কেন্দ্রিক সংস্কৃতি বাংলা ও বাঙালী সমাজজীবনে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল ক্ষমতালোলুপ পাকিস্তান রাষ্ট্র । রাষ্ট্রভাষা হিসাবে উর্দুকে মেনে নেয় নি বরকত রফিকের মতো স্বাধীনচেতা নির্ভিক আত্মমর্যাদাসম্পন্ন তরতাজা যুককেরা । সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে রক্ত দিয়ে । সেদিনের প্রতিরোধ যদি ঢাল হয়ে রুখে না দাঁড়াত তাহলে উর্দু ভাষা ও সাংস্কৃতির খোলসে রাষ্ট্রীয় থাবা বাংলাদেশকে পিষে দিত ।

    রাষ্ট্রের (State) সঙ্গে দেশের (Nation) এ লড়াই চিরন্তন । এমন হাজারো লড়াইয়ের সাক্ষ্য বহন করে ইতিহাস । আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাস ভূগোল ঘাঁটলে ছত্রে ছত্রে পাবেন দৃষ্টান্ত । এমনকি মানচিত্র থেকে আমাদের ভারত নামক রাষ্ট্রও বাদ নেই । যখন বলা হয় "বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য", তখন ভারতবর্ষের মধ্যেই অজস্র খন্ড ভারতের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া হয় । বহু ভাষাভাষীর মিলনমেলা এই ভারতবর্ষ, যা কোনভাবেই একমাত্রিক বা একস্তরীয় নয় । যেমন বাংলা, তামিল, মারাঠী বা অন্য জাতি রাষ্ট্রীয় অখন্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ঐকান্তিকভাবে নিজ নিজ জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পরিচিতি নিয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে, ভারতবর্ষের নীতিগত দর্শন এটাই । কিন্তু বহুমাত্রিক ভারতবর্ষকে যদি একটি বিশেষ ভাষা ও সংস্কৃতির ছাঁচে ঢেলে একবগগা দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই ক্ষমতাবান রাষ্ট্র, তখনই নেমে আসে বিপদ, জাতির অস্তিত্বের সংকট ।

    বাঙালী হিসাবে আমরা এই বিপদের সম্মুখীন । আর বিপদের অভিসম্পাত যদি রাষ্ট্রীয় মদতে নেমে আসে তবে আরও চিন্তার বিষয় । তাই সময়ের দাবি রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট হিন্দি আগ্রাসন রুখে দেওয়ার । আপনি যখন দেখছেন যে আপনার এলাকার রাস্তার মাইলষ্টোনের লেখা গুলো হঠাৎ বাংলা থেকে হিন্দিতে বদলে যাচ্ছে, যখন দেখছেন নোটবন্দীর পর ৫০০ টাকার নোটে হঠাৎ দেবনাগরি হরফের ব্যবহার শুর হচ্ছে, যখন দেখছেন আপনার এলাকার কেন্দ্রীয় সরকারী দপ্তর বা ব্যাঙ্কিং সেক্টরে হিন্দীভাষীদের দাপাদাপি শুরু হচ্ছে, যখন দেখছেন "জয় মা কালী"র থেকে "জয় শ্রীরাম" বেশি বার উচ্চারিত হচ্ছে, যখন দেখছেন শাক্তদেবির আরাধনার বদলে "রাম নবমী" নিয়ে বেশি হইচই হচ্ছে, যখন দেখছেন সুফীবাদের উদার আধ্যাত্মিকতা পিষে যাচ্ছে ওয়াহাবি-সালাফি কট্টরপন্থায়, যখন দেখছেন কেন্দ্রীয় সরকারী চাকরির পরীক্ষায় ইংরেজীর সঙ্গে হিন্দি ভাষায় প্রশ্নপত্র প্রদানের রীতি শুরু হচ্ছে, যখন দেখছেন বাংলার শহর কোলকাতা বা আসানসোলে হিন্দি ভাষায় কথোপকথনের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠছে, যখন দেখছেন আপনার এলাকার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে হিন্দি আছে কিন্তু আপনার ভাষা বাংলা নেই, তখন বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না অন্য একটি ভাষাকেন্দ্রিক সংস্কৃতি মানে হিন্দি বাংলার ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে ।

    চোখ কান খোলা থাকলে হিন্দি আগ্রাসনের পদচিহ্ন ঠাওর করা যায় । অনেকে ভাবতে পারেন, হিন্দি তো ভারতের "রাষ্ট্রভাষা" তাই এগুলো নিয়ে আপত্তি তোলার কিছু নেই । এই ভুল ভাবনাটা একটা বড় অংশের বাঙালীর মাথায় আছে । হিন্দি কোনকালেই ভারতের রাষ্ট্রভাষা ছিল না, আজও নেই। তাহলে এই ভাষাটিকে আমরা "রাষ্ট্রভাষা" জ্ঞান করতে লাগলাম কবে থেকে ? হ্যাঁ, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অবশ্যই আছে । স্বাধীনতার পূর্বে হিন্দিভাষী নেতানেতৃরা হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন, পারেন নি । কারন এর বিপরীতে যুযুধান ছিল উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর ভাষ্য । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য হিন্দি হিন্দুদের ভাষা ও উর্দু মুসলিমদের ভাষা এই বিভেদবোধ ইংরেজরাই তৈরি করেছিল । ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে হিন্দু ছাত্রদের দেবনাগরী হরফে হিন্দি ভাষায় আর মুসলিম ছাত্রদের ফারসী হরফে উর্দু ভাষায় রিডিং মেটেরিয়ালস দেওয়া হত । কারনটা খুবই স্পষ্ট, বিভেদের প্রাচীর তৈরি করা । যাই হোক, দ্বন্দ নিস্পত্তির জন্য কিছু ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী নেতা এই দুই ভাষার মিশ্রণে "হিন্দুস্তানী" নামক এক ভাষাকে "রাষ্টভাষা" হিসাবে প্রমোট করার চেষ্টা করেন । এই ভাষায় বোম্বে ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রিতে দু-তিনটে সিনেমাও রয়েছে বলে শোনা যায় । কিন্তু বলিউডকে ব্যবহার করেও ভাষাটি কল্কে পায় নি । এর অন্য একটি কারন হল দেশ ভাগের পর উর্দুকে পাকিস্তান রাষ্ট্র হাইজ্যাক করে নিয়ে চলে গেল, হিন্দীর জন্য পড়ে রইল ফাঁকা মাঠ । অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল হিন্দুস্তানী ।
    ভারত স্বাধীন হওয়ার পর হিন্দিভাষী নেতানেতৃরা ভেবেছিলেন অনায়াসেই হিন্দিকে অহিন্দিভাষীদের উপর চাপিয়ে দিতে পারবেন । দেশের সংবিধান রচিত হওয়ার পর হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর তোড়জোড় শুরু হল । কিন্তু কয়েকটা মাত্র রাজ্যের প্রাদেশিক ভাষাকে "রাষ্ট্রভাষা" বানাতে গেলে গোটা দেশের নিরিখে সমাজ ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষা হতে হবে, কিন্তু উত্তর ভারত ছাড়া হিন্দির ব্যবহার ছিল না । তাছাড়া দক্ষিন ভারতের দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠীর মানুষদের প্রতিবাদের ভাষ্য ছিল যথেষ্ট কড়া । তাঁরা নিজস্ব ভাষার পাশাপাশি ইংরাজিতে সড়গড় ছিল, কিন্তু হিন্দি তাদের অপছন্দের ভাষা । এমতাবস্থায় দরকার ছিল ভারতের বিভিন্ন জাতি ভাষা পরিচিতির মানুষদের সমাজ ও ব্যবহারিক জীবনে হিন্দিকে ছড়িয়ে দেওয়া। অলিখিতভাবে হিন্দিকে ভারতের "লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা" বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হল, তার জন্য নির্ধারিত হল ১৫ বছর সময়।

    পাকিস্তান রাষ্ট্র বলপূর্বক বাংলাদেশের উপর উর্দু চাপানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্ত ভারত রাষ্ট্র সেই একই কাজ শুরু করেছিল জনসাধারনের অনুমতিক্রমে এবং এই অনুমুতি ছিল আইডিওলজিক্যাল এবং ম্যানিপুলেটেড । মানে চয়েস দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অপশন একটাই, এরকম একটা ব্যপার । রাষ্ট্র জানত যে জোরপূর্বক অহিন্দিভাষীদের হিন্দি গেলানো যাবে না, আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে গেলাতে হবে । পপুলার মিডিয়া হিসাবে বোম্বে ফিল্ম বিনোদন জগতকে তোল্লায় দেওয়ার কাজ শুরু হল। ১৯৪০ থেকে ১৯৬০ এই সময়টা বোম্বে ফিল্ম জগতের স্বর্ণযুগ । মারাঠাদের রাজ্যে মারাঠাদের শহর বোম্বেতে একটি হিন্দিভাষাকেন্দ্রিক বিনোদন জগৎ এভাবে ফুলেফেঁপে উঠল কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এটা আমাদের অনেক আগেই ভাবা উচিৎ ছিল । এটা ঠিক যে এসম্পর্কীয় কোন প্রমানস্বরুপ তথ্য নেই কিন্তু ব্যক ক্যালকুলেশন করলে অঙ্কটা খাপে খাপ মিলে যায় ।

    অল ইন্ডিয়া রেডিওতে হিন্দি ভাষায় সম্প্রচার, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির হিন্দিতে দেওয়া বয়ান, কেবল হিন্দিতে লেখা দেশাত্মবোধক গানগুলো জাতীয় ক্ষেত্রে প্রমোট করা, হিন্দিতে জাতীয় ধ্বনী, বাংলায় লেখা জাতীয় সঙ্গীতের হিন্দিকরন সবই হিন্দিকে "লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা" বানানোর যে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা তারই অঙ্গ । "কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংগঠন" গঠনের প্রসঙ্গটাও আনা যায় । এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজারের উপর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, মাধ্যম ইংরাজি, এবং দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে কেবল হিন্দি, অন্য ভাষার জায়গা নেই । মানে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়টা আপনার নিজের এলাকায় হলেও বাংলা ভাষা চর্চা সেখানে নাজায়েজ । কিন্তু এতসব কিছু করেও রাষ্ট্র সংবিধান প্রণয়নের ১৫ বছর হতে চললেও অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে নি । তড়িঘড়ি ১৯৬৩ তে সংসদে "অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাক্ট" পাস হয় । হিন্দি এবং ইংরাজীকে দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং সরকারিভাবে নীতি গৃহিত হয় যে বিদেশী ভাষা ইংরেজির ব্যবহার ধীরে ধীরে কমিয়ে পুরোপুরিভাবে হিন্দি কায়েম করা হবে । এই দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে হিন্দির স্বীকৃতিটাই আমাদের ভ্রান্ত ধারনায় জারিত হয়ে "রাষ্ট্রভাষা" হয়ে গেছে । ১৯৬৫ তে এই আইন লাগু হলে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে তামিল নাড়ুর কলেজপড়ুয়ারা, অনেকে আত্মাহুতি দেন । হিন্দির দালালি তারা মেনে নেয় নি। এমন নাছোড়বান্দা আন্দোলন তাদের ভাষিক জাতীয়তাবাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ।

    এহেন প্রতিবাদের জেরে কিছুটা পিছু হটে রাষ্ট্র । তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী ঘোষনা দেন যে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগন যতদিন চাইবে ততদিন ইংরাজি দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে টিকে থাকবে । কিন্তু আদতে পর্দার আড়ালে অহিন্দিভাষীদের উপর হিন্দি চাপানোর নীতি থেকে সরেনি রাষ্ট্র । তার জলন্ত প্রমান ১৯৬৮ সালের "ত্রিভাষা সুত্র" নীতি । এই নীতি অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিসরে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে নিজ ভাষা, জাতীয় ক্ষেত্রে হিন্দি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইংরাজি ভাষা, সর্বমোট তিনটি ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক । এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরুপ ব্যঙ্গ করে তামিল নাড়ুর তৎকালীন মূখ্যমন্ত্রী সিএন আন্নাদুরাই বললেন --- " জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে দুটি আলাদা আলাদা ভাষার জন্য তদবির করার অর্থ হল দেওয়ালে বেড়াল বার করার জন্য একটা বড় ফুটো রাখা আছে, তবুও আবার ইঁদুরের জন্য আর একটা ছোট ফুটো করা হল, কিন্তু বেড়ালের জন্য রাখা বড় ফুটোতেই তো দুটো কাজ হয়, তাহলে আবার ছোট ফুটো করা কেন ?" ত্রিভাষা সুত্রকে এভাবেই তামিল ও তেলেগু মানুষজন ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিল ।

    অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন দেশীয় ভাষা হিন্দির থেকেও কি বিদেশী ভাষা ইংরাজী আপন যে তার জন্য ওকালতি করতে হবে ? কিন্তু প্রশ্নটা "আপন-পর" এর নয়, যৌক্তিক বুদ্ধির । কেউ মানুক আর না মানুক, ইংরাজি এখন গ্লোবাল ল্যাঙ্গুয়েজ, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিরুদ্ধশূন্য অপ্রতিদ্বন্দ্বী "লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা" । এটা বিগত দুই শতকের প্রায় বিশ্বজোড়া ঔপোনিবেশিক ইংরেজ শাসনের ফসল । তাই বাস্তববোধ বলে ভারতের কোন ভাষাকেই এই পর্যায়ে উন্নীত করা প্রায় অসম্ভব । ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্য বহগুনে সমৃদ্ধ, বিশ্বজোড়া কদর । কম্পিউটার ইন্টারনেটের যুগে ভাষাটি না শিখতে চাওয়া মানে প্রভূত সাহিত্যরস এবং বিজ্ঞানভিত্তিক ও সমাজতাত্ত্বিক বৃহৎ জ্ঞানভান্ডার থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখা । কিন্তু হিন্দির সেই লেভেলের ষ্টেটাস নেই, তুলনায় বাংলা ভাষার মাধূর্য এবং শব্দনির্মান ক্ষমতা ও গঠন কাঠামো হিন্দির থেকে উন্নত । বাংলা সাহিত্যেও হিন্দি সাহিত্যের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে । আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইংরাজি শেখাটা যখন আবশ্যিকতা, তখন জাতীয় স্তরে ভাষাটি থেকে গেলে অতিরিক্ত একটি অপ্রয়োজনীয় ভাষা শিক্ষার চাপ থাকে না। অন্যদিকে জাতির জাতীয় ও সাংস্কৃতিক সত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার নিজের মায়ের ভাষা তো থাকছেই ।

    পরিশেষে একটা কথা বলার । কোন ব্যাক্তিবিশেষ হিন্দিভাষীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের জায়গা থেকে নয়, বরং হিন্দি আগ্রাসন সম্পর্কিত বাঙালী জাতির সচেতনতা ও সেটাকে শুধু ঠেকানোর কথা বলেছি । হিন্দিও একটা জনগোষ্ঠীর মায়ের ভাষা, হিন্দিকে ঘিরেও একটা অংশের মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে । এই জায়গাতে ভাষার চরিত্রটি নিরীহ । কিন্তু সাংস্কৃতিক আধিপত্য কায়েমের জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হলে সেই নিরীহ ভাষাটিই হিংস্র হয়ে যায় । যাকে তাত্ত্বিকরা "ভাষাসন্ত্রাস" বলেন । ভাষা নদীর মতো । সময়ের সাথে সাথে নিজের চলার পথে অনেক কিছুকে নিজের করে নেয় । কিন্তু জোর করে সে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করতে চাইলে ফল মারাত্মক । তেমনি ভাষা একটি জাতির সংস্কৃতির আধার । ভাষার উপর কোপ পড়লে সাংস্কৃতিক শোষনের পথ প্রশস্থ হয় । শোষিত হতে হতে একসময় দেখা যাবে বাংলা ও বাঙালীয়ানার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে । বিশ্ব-সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বাংলার কোন জায়গায় থাকবে না । বহির্দেশের মানুষ "ভারত" বলতে শুধু বুঝবে হিন্দি ভাষা, হিন্দি সাহিত্যে আর গো-বলয়ী চালচলন । বাংলা আর বাংলার সংস্কৃতি এভাবে খাবি খাবে, আর আমরা চোখের সামনে দেখব ? মেনে নেব ? এটা মেনে নেওয়া যায় ?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ জুন ২০১৯ | ১৯৩৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • lcm | 9006712.229.0112.212 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৮:০৭48930
  • বড়েস,
    "...বেশিরভাগই চুরি করা সুর..." --- বেশির ভাগ নয়, কিছু গান।
  • S | 2390012.156.561223.1 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৮:১০48931
  • লসাগুদা, যেসব গানগুলো রিমিক্স হচ্ছে সেগুলোর তো বেশিরভাগই আরডির। আরডির ব্যাপরে কি আর বলবো?
  • lcm | 9006712.229.0112.212 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৮:২১48933
  • বড়েস,
    এটা ঠিক এর টই নয়, এবং, আর এরা কেউ রবীন্দ্রনাথ নন। রবীন্দ্রনাথের গানের ক্ষেত্রেও এমন আছে। মানে বলতে চাইছি যে গানের ক্ষেত্রে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমন হয়েছে।
    আরডি ৩০০ ফিল্মে হাজারের ওপর গানে সুর দিয়েছে।
  • একক | 340112.124.566712.174 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৮:৪২48934
  • আড্ডি ফাড্ডি চলছে চলুক না ।আবার রবিবাবু কেন :) উনি বহু জায়গা থেকে সুর নিয়েছেন কিন্তু তার উল্লেখ ও সর্বত্র আছে , সেই সময়ে যখন ইউটিউব ছিলোনা এবং উনি নিজে চেপে গেলে বাঙালি সেই সময়ে বসে জানতেও পারতোনা যে ত্যাগরাজার সুর বাংলা গানে ব্যবহার হচ্ছে ।

    বাই দ্য ওয়ে, আড্ডি প্যাচালে রুচি নাই , কিন্তু বড়ো এস একটা কাজের জিনিস বললেন শোনার অভ্যেস নিয়ে ।যে অনেকদিন ধরে লোকে শুনলেই বেটার মিউজিক এমন নয়। তো , বারংবার শোনা সুর এবং তাকে ঘিরে রিওয়ার্ড ফিলিং এই নিয়ে বিশদে গবেষণা হচ্ছে আজকাল । আমেরিকান পপ কালচারে কিভাবে ট্র্যাশ মিউজিক , টপ টেন হয় যুগ যুগ ধরে সেসব নিয়ে নিউরোলোজির গবেষকদের কাজ । খুঁজে পেতে পড়ে ফেলুন , ভাল্লাগবে নিশ্চই :)
  • lcm | 9006712.229.0112.212 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:০১48935
  • ভারতে সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ-এর স্পটে হিন্দি-র সঙ্গে লড়াইটা ইংরেজির।
  • dc | 670112.203.6767.115 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:০২48936
  • "লোকে আশা, লতা, কিশোর, রফির যে গান গুলো বারবার শোনে, রিমিক্স করে শোনে সেগুলোর বেশিরভাগই চুরি করা সুর"

    S এর সাথে একমত। এই গানগুলোর অনেকগুলোই চুরি করা। আর ওরকম সাইটও অনেকদিন হলো বানানো হয়েছে যেখানে চুরি করা গানের লিস্ট আছে। এই গানগুলো বারবার শুনলেও আবার শুনতে ভাল্লাগে। গোল্ডেন সংস।
  • S | 2390012.156.561223.1 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:০৮48938
  • সংস্কৃত/উর্দু।
  • lcm | 9006712.229.0112.212 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:০৮48937
  • আর যদি তিনটে ম্যান্ডেটরি ভাষা হয়, তাহলে ৪০% হিন্দিভাষীদের তিনটে ভাষা কি হবে - হিন্দি, ইংরেজি এবং বাংলা/তামিল/মালয়ালি/অহমিয়া... ... ?
  • dc | 670112.203.5667.19 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:২৬48939
  • ইন ফ্যাক্ট ছোটবেলায় যখন পুরনো ঈংরেজি সিনেমাগুলো দেখতাম, যেগুলো কিনা হলিউড ক্লাসিকস, আর হঠাত হঠাত একটা দুটো সুর চিনে ফেলতাম যার নকল করে কোন ক্লাসিক হিন্দি গান বানানো হয়েছে, তখন খুব মজা লাগতো।
  • lcm | 9006712.229.0112.212 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:৩২48940
  • তা কি করে হবে, তাহলে অহিন্দিভাষীদের ৪ টে ভাষা শিখতে হবে, যেমন ধরো বাঙালিদের --- বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, সংস্কৃত/উর্দু ।
  • dc | 670112.203.5667.19 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:৩৬48942
  • আর শুধু গান নয়, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরও অনেক চুরি করা হয়েছে। খোটে সিক্কে সিনেমাটা যতোবার দেখতাম ততোবার এনিও মরিকোনের সেই ইমর্টাল উকুলেলে স্কোর মনে পড়তো। ছোটবেলায় এই কম্পারিসনগুলো করতে খুব মজা লাগতো।
  • dc | 670112.203.5667.19 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:৩৬48941
  • আর শুধু গান নয়, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরও অনেক চুরি করা হয়েছে। খোটে সিক্কে সিনেমাটা যতোবার দেখতাম ততোবার এনিও মরিকোনের সেই ইমর্টাল উকুলেলে স্কোর মনে পড়তো। ছোটবেলায় এই কম্পারিসনগুলো করতে খুব মজা লাগতো।
  • সোমনাথ | 5690012.220.013412.250 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:৩৭48899
  • লেখাটি ভাবনা জাগানো ।

    কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বেশীর ভাগ বাঙালীর এই নিয়ে কোনো চিন্তা নেই , এমনকি হিন্দীমিশ্রিত বাংলা বলে গর্ব অনুভব করে । নিজের ভাষা সম্বন্ধে সচেতন করতে গেলেও শুনতে হয় যে " তুই বড্ড বাড়াবাড়ি করিস " ।
    হিন্দী অনান্য ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে একটি , এবং সেটি শেখা বা বলা কোনমতেই নিন্দনীয় নয় । নুতন ভাষা শেখা সবসময় ভালো । সমস্যা হল হিন্দী জেনে গর্ব অনুভব করা, বা হিন্দীকে বাংলার (বা অন্য ভারতীয় ভাষার ) তুলনায় উত্‍কৃষ্ট মনে করা ।
  • dc | 670112.203.4567.67 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:৪৯48943
  • আর শোলের একটা ছোট্ট ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর চুরি করা হয়েছিল ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট এর একটা মাউথ অর্গ্যান পিস থেকে।

    কাজ করি গে, S অনেক পুরনো স্মৃতি উস্কে দিলেন ঃ-)
  • lcm | 9006712.229.0112.212 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ০৯:৫৫48944
  • ১৯৬৮-এ থ্রি ল্যাঙ্গুয়েজ ফরমূলা -
    ... 1968 National Policy Resolution which provided for the study of "Hindi, English and modern Indian language (preferably one of the southern languages) in the Hindi speaking states and Hindi, English and the Regional language in the non-Hindi speaking States"

    হিন্দিভাষীদের একটি দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা শেখার উল্লেখ রয়েছে।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৩ জুন ২০১৯ ১০:২৯48945
  • লসাগুদা, যেটা পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেটা হলো আমরা যে ক্লাস ৭-৮ এ হিন্দি/সংস্কৃত নিতাম, সেটাকে ক্লাস ১ থেকে শুরু করতে বলা হয়েছে। অতেব মোট ভাষা তিনটেই থাকছে।
  • দিয়েগো | 340123.99.231223.224 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০১:০২49014
  • ""পপুলার মিডিয়া হিসাবে বোম্বে ফিল্ম বিনোদন জগতকে তোল্লায় দেওয়ার কাজ শুরু হল। ১৯৪০ থেকে ১৯৬০ এই সময়টা বোম্বে ফিল্ম জগতের স্বর্ণযুগ । মারাঠাদের রাজ্যে মারাঠাদের শহর বোম্বেতে একটি হিন্দিভাষাকেন্দ্রিক বিনোদন জগৎ এভাবে ফুলেফেঁপে উঠল কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এটা আমাদের অনেক আগেই ভাবা উচিৎ ছিল ।""

    তাহলে আরো একটি প্রসঙ্গ ভাবুন। মুম্বাই / মহারাষ্ট্রে কিন্তু মারাঠি এখনো একদম ড্যাংড্যাং করে চলছে। আর সেটা শিবসেনা না থাকলেও চলতো। ওদের লড়াইটা কিন্তু চাকরির, ভাষার নয়। আপনার লজিক অনুযায়ী এতদিনে তো মারাঠি ভাষা উঠে যাওয়ার কথা ছিল। যায়নি তো। বরং উল্টোটাই হয়েছে - মারাঠি সাহিত্য, মারাঠি সিনেমা, মারাঠি সংস্কৃতির কিস্সু ক্ষতি করতে পারেনি হিন্দি ।

    হিন্দি একটি নিখাদ- ই কেজো ভাষা। কম দিন তো হলো না স্বাধীনতার । যে ভাষা গুলো হারিয়ে গেছে বা যাচ্ছে , হিন্দি বলয়ের বাইরে তার একটাকেও কিন্তু হিন্দি ভাষা দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়নি। আর ভারতের মুখ্য ভাষাকে মধ্যে একটাকেও হিন্দির সাধ্য নেই প্রতিস্থাপন করার । তা আপনি পেরিয়ার -স্টাইল তামিল বিপ্লব দিয়ে করুন, বা কন্নডা / তেলুগু / মারাঠির মতন soft revolution দিয়ে ।

    ঘটনাচক্রে প্রায় ২০ বছর দক্ষিনে আছি। বেশ ভালোই কন্নডা (ভাষাটার নাম কন্নড নয়) বলি। চলনসই তেলুগু । ছেলে যে স্কুলে পড়ে সেখানে তার দ্বিতীয় ভাষা বাংলা (yes sir , খাস কর্নাটকে) । কন্নডা ভাষা চমৎকার বেঁচে আছে - বিবেক শানবাগ-এর ঘ্যাচার-ঘোচার এর তুলনার লেখা হিন্দি কেন, সাম্প্রতিককালে ভারতের কোনো ভাষায়-ই হযতো খুব বেশি হয়নি (যদিও আমি ইংরেজি অনুবাদে-ই পড়েছি) । সিনেমা চলছে, সাহিত্য চলছে, আর বেঙ্গালুরু-র মতন কসমোপলিটান শহরে এতো এতো ছেলেমেয়ে কন্নডা ভাষায় থিয়েটার করছে । পাশাপাশি হিন্দি আছে, ইংলিশ আছে, তাতে কার কী এসে যায় ?

    ঐসব আগ্রাসন ট্যাগ্রাসন রাখুন । চায়ের পেয়ালায় তুফান তোলার জন্যে আলোচনাটা ঠিক আছে, কিন্তু তার বেশি কিছু নয়।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০১:৩৮48946
  • এমনিতেই স্কুলের ছাত্রদের উপর বড্ড বেশি চাপ। অন্ক, দুই ধরনের সায়েন্স, ইতিহাস, ভুগোল। বহু স্কুলে এর বাইরে একগাদা হাবিজাবি বিষয় থাকে। এতো কিছু পড়ার পরে আলাদা করে ভাষা শেখার সময় থাকে?

    প্রথম ভাষা নাহয় বুঝলাম; জন্মসুত্রে সবাই বলতে আর শুনে বুঝতে পারে; বেশিরভাগ ছাত্র গড়গড় করে পড়তেও পারে। তার বাইরে আরো দুটো ভাষা শিখতে গেলে এক তো অন্য বিষয় পড়ার সময় কমবে, দুই, ভাষাগত কনফিউশান তৈরী হবে, তিন, দ্বিতীয় ভাষাটাও ঠিকমতন শেখা হবেনা।

    একদিকে বাচ্চাদের পড়ার সময় কমিয়ে, পরীক্ষার চাপ সড়িয়ে, স্কুলের ব্যাগের সাইজ লিমিট করে দিয়ে অন্যভাবে বিকাশের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে এক্দল লোক নিজেদের ভোটব্যান্ক পলিটিক্স খেলতে গিয়ে দেশের শিক্ষাব্যব্স্থার সর্বনাশ করতে নেমেছে।
  • Ishan | 2312.106.9002323.218 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০১:৪২49015
  • মারাঠি ভাষা, নাটক এবং সিনেমার যথেষ্ট ক্ষতি করেছে বলিউড। তবে, থ্যাংকস টু স্থানীয় সরকার, ততটা পারেনি, যতটা পারার কথা। মারাঠি সিনেমা টিনেমার জন্য আলাদা করে নিরাপত্তার (প্রোটেকশন আর কি) ব্যবস্থা আছে মহারাষ্ট্রে।
  • দিয়েগো | 340123.99.231223.224 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০১:৫০49016
  • যেমন?
    স্বাধীনতার পরে অর্ধেকের বেশি সময়েই তো স্থানীয় সরকার আর কেন্দ্রীয় সরকার এক ছিল মহারাষ্ট্রে । আপনি একটু বিস্তারিত ভাবে বলবেন? নিরাপত্তার ব্যাপারটা কি কেন্দ্রীয় সরকারের মত্ নিয়ে করা? তাহলেও তো বক্তব্য টা দঁড়ায় না।
  • Ishan | 2312.106.9002323.218 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০১:৫৭49017
  • বিস্তারিত বলার কিছু নেই। বোম্বে ছিল বাম ট্রেড ইউনিয়নের ঘাঁটি। মেরে ধরে খুন করে সেই ঘাঁটি উৎখাত করা হয়। তাতে বড় সহযোগী শক্তি ছিল শিবসেনা, যাদের স্লোগান মারাঠি জাতিয়তাবাদ। শিবসেনা এবং মারাঠা জাতিয়তাবাদকে ব্যবহার করতে এবং সন্তুষ্ট রাখতে নানা ব্যবস্থা নিতে হয়েছে স্থানীয় সরকারকে এবং এখনও হচ্ছে।

    সন-তারিখ ধরে কবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলতে পারবনা। মনে নেই। তবে সিনেমার ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের হলে মারাঠি সিনেমা দেখানো বাধ্যতামূলক (কত শতাংশ একটা)। এছাড়াও রাজ্য বোর্ডে মারাঠি পড়া বাধ্যতামূলক। এইসব।
  • দিয়েগো | 340123.99.231223.224 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০২:০৬49018
  • ""মারাঠি ভাষা, নাটক এবং সিনেমার যথেষ্ট ক্ষতি করেছে বলিউড""

    এটাও তো ১০০% মেনে নিতে পারলাম না। মারাঠি ভাষায় গুচ্ছ গুচ্ছ ভালো লেখা বেরোচ্ছে , থিয়েটার বেরোচ্ছে, বেরিয়েছেও স্বাধীনতার পরে - অন্ততঃ চেনাজানাদের মধ্যে যাদের নাম জানি (যদিও আমার জ্ঞান খুব একটা সাংঘাতিক নয়, তবে ভারতীয় ভাষার অনুবাদ পড়ি একটু আধটু), পুলা দেশপান্ডে, খাণ্ডেকার, বাবুরাও বাগুল - কি নাট্যকার বিজয় তেন্ডুলকর সবাই তো স্বাধীনতার পরে। সিনেমার কথা তো ছেড়েই দিন - হিন্দি তামিল ছাড়া , যদি 'অস্কার বিদেশী সিনেমার জন্য নির্বাচন' একটি নির্ণায়ক হয়, আমার মনে হয় প্রতি ৩-৪ বছরে একটা মারাঠি সিনেমা নির্বাচিত হয়। যথেষ্ট ক্ষতির পরে যদি এই স্ট্যান্ডার্ড হয়, তাহলে বলে হবে যে ভাষাটাই আমাদের থেকে উন্নত - তা তো নয়।

    অন্যদিকে যদি হিন্দি সাহিত্য ধরেন, ওই ধর্মবীর ভারতী, শ্রীলাল শুক্লা ছাড়া তো আর কোনো নাম পাই না। হয়তো অনুবাদ হয়নি।
  • দিয়েগো | 340123.99.231223.224 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০২:১৪49019
  • ট্রেড ইউনিয়ন এর ব্যাপারটা তো সবাই জানে। তার সঙ্গে ভাষার কি সম্পর্ক? শিবসেনার মূল বক্তব্য কখনোই ভাষার উন্নয়ন ছিল না। মারাঠি মানুষের চাকরি, আর কিছুমাত্রায় মারাঠি জাতীয়তাবাদ।
    দেখুন, আমি আপনার বক্তব্যটা ফেলে দিচ্ছি না - কিছুমাত্রায় ব্যাপারটা আমিও জানি । কিন্তু এই বলতে চাই যে, মূল লেখাটার যেটা বক্তব্য , সেটার সঙ্গে একমত হতে পারছি না। যুক্তি দিয়ে বোঝালে নিশ্চই হবো।
  • Ekak | 340112.124.566712.69 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০২:৩১49020
  • মরাঠিতে নাটক লেখার পুরোনো ঐতিহ্য আছে । সেটাই বহমান থেকেছে পরবর্তীকালে । বাংলায় নাটক লেখা কোই ? রবিবাবু -গিরিশবাবুদের যুগের পর , সবই তো অনুবাদ নাটক । মরাঠি সরকার ,নাটক চর্চার জন্যে অনুদান - উৎসাহ এসব দিয়েছে ঠিকই , কিন্তু অতগুলো দমদার নাট্যকার না থাকলে আদতে লেখাটা হতোনা ।

    তুলনায় , বাংলায় নাট্যজগতে দলাদলি -রাজনৈতিক চুল চেরা বিবাদ - গুরুবাদ এইগুলো গেঁড়ে বসেছে দিন কে দিন এবং এখন পুরোটাই একটা কমার্শিয়াল থিয়েটারের "জাত খোয়ালাম কিন্তু মান পেলুম না " ভার্সনে পরিণত হয়েছে ।

    এগুলো ,নিয়ে আলাদা করে ভাবা প্রয়োজন । সরকার ছিল তাই মারাঠিরা পারলো -আর আমরা পারলুম না , এরকম সরলরৈখিক নয় ব্যাপার টা ।
  • ন্যাড়া | 1278.202.5634.85 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০২:৩৬48949
  • ইসকা এক জব্বর টোটকা হমকা পাস হ্যায়। সব্বাই বাঙালি হিন্দিমে কথা বোলনা শুরু করোগে তো হিন্দিই আস্তে আস্তে বাংলা হো যায়েগা।
  • sm | 2345.110.344512.32 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০২:৪১48951
  • এখানে অজস্র ভীষণ জনপ্রিয় হিন্দি ফিল্ম সংস আছে।রাগভিত্তিক বা রাগাশ্রয়ী।পুরোনো থেকে হালফিলের সিনেমার গান,সব ই আছে।যেগুলো নিশ্চয় বিদেশী সংগীত চুরি করে করা হয় নি।
    দুই,এস ডি,নৌসাদ, রৌশন, মদনমোহন এদের নাম প্রথমে করা হয়েছিল এবং জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ,এরা কত শতাংশ সুর বিদেশী মিউজিক থেকে চুরি করেছেন?
    উত্তরে আর ডির লিস্ট চলে এলো।
    কিন্তু এঁরাই প্রথম হিন্দি ফিল্ম সংগীত কে আলাদা বৈশিষ্ট দিয়েছেনব জনপ্রিয় করেছেন।
    নৌসাদ বৈজু বাওরা, পাকিজা ,গঙ্গা যমুনা করেছেন।মদন মোহন মৌসম,বাওয়ার্চি,হীর রানঝা করেছেন,সলিল চৌধুরী ও কতো সিনেমায় মিউজিক স্কোর করেছেন।
    এঁরা প্রত্যেকেই দিকপাল ছিলেন।স্বকীয়তা ছিল।
    প্রথমজন যেমন হিন্দুস্থানী ক্ল্যাসিকাল মিউজিক থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন,শেষোক্ত জন ভারতীয় ও পাশ্চাত্য দুটোতেই দক্ষ ছিলেন।
    এঁরা সব চুরি করেছেন বললে তো সত্যের অপলাপ হয়।
  • ন্যাড়া | 1278.202.5634.85 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০২:৪১48950
  • গানের আলোচনা পড়কে দুটো প্রশ্ন পায়া হ্যায়।

    ১। বেটার গান কাকে বোলতা হ্যায় তা কোন শেখা রাহা হ্যায়? ম্যায় শিখুঙ্গা।

    ২। চুরি নেহি করা হ্যায় এমন মিউজিক ডিরেক্টরকা লিস্ট মাংতা হ্যায়। হ্যায়?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন