এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • হিন্দী আগ্রাসনের প্রেক্ষিতঃ দেশ, রাষ্ট্র ও ভাষা

    Samrat Amin লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ জুন ২০১৯ | ১৯৬২৪ বার পঠিত
  • ফেব্রুয়ারী মাস প্রেমের মাস, ভাষারও মাস । শুধুই প্রেমের কুহুতান নয়, "অমর একুশে" ডাক দেয় এ মাসেই । আমার ভায়ের রক্তে রেঙে লাল হয়েছে ঢাকার রাজপথ, অমর একুশেই । হোক না পদ্মার ওপারের গল্প, তবুও বরকতরা তো আমারই ভাই, আমারই রক্ত । যে ভাষার জন্য তাদের আন্দোলন সেটা আমারই মায়ের ভাষা, যে সংস্কৃতির জন্য তাদের লড়াই সেটা আমারই সংস্কৃতি । অনেক লম্বা সে প্রেক্ষাপট । স্বাধীনতা-উত্তর দূর্বল রাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্র (পশ্চিম পাকিস্তান) চেয়েছিল "পূর্ব পাকিস্তানের" উপর সাংস্কৃতিক আধিপত্য বজায় রাখতে । উর্দু ভাষা ও উর্দু কেন্দ্রিক সংস্কৃতি বাংলা ও বাঙালী সমাজজীবনে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল ক্ষমতালোলুপ পাকিস্তান রাষ্ট্র । রাষ্ট্রভাষা হিসাবে উর্দুকে মেনে নেয় নি বরকত রফিকের মতো স্বাধীনচেতা নির্ভিক আত্মমর্যাদাসম্পন্ন তরতাজা যুককেরা । সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে রক্ত দিয়ে । সেদিনের প্রতিরোধ যদি ঢাল হয়ে রুখে না দাঁড়াত তাহলে উর্দু ভাষা ও সাংস্কৃতির খোলসে রাষ্ট্রীয় থাবা বাংলাদেশকে পিষে দিত ।

    রাষ্ট্রের (State) সঙ্গে দেশের (Nation) এ লড়াই চিরন্তন । এমন হাজারো লড়াইয়ের সাক্ষ্য বহন করে ইতিহাস । আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাস ভূগোল ঘাঁটলে ছত্রে ছত্রে পাবেন দৃষ্টান্ত । এমনকি মানচিত্র থেকে আমাদের ভারত নামক রাষ্ট্রও বাদ নেই । যখন বলা হয় "বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য", তখন ভারতবর্ষের মধ্যেই অজস্র খন্ড ভারতের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া হয় । বহু ভাষাভাষীর মিলনমেলা এই ভারতবর্ষ, যা কোনভাবেই একমাত্রিক বা একস্তরীয় নয় । যেমন বাংলা, তামিল, মারাঠী বা অন্য জাতি রাষ্ট্রীয় অখন্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ঐকান্তিকভাবে নিজ নিজ জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পরিচিতি নিয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে, ভারতবর্ষের নীতিগত দর্শন এটাই । কিন্তু বহুমাত্রিক ভারতবর্ষকে যদি একটি বিশেষ ভাষা ও সংস্কৃতির ছাঁচে ঢেলে একবগগা দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই ক্ষমতাবান রাষ্ট্র, তখনই নেমে আসে বিপদ, জাতির অস্তিত্বের সংকট ।

    বাঙালী হিসাবে আমরা এই বিপদের সম্মুখীন । আর বিপদের অভিসম্পাত যদি রাষ্ট্রীয় মদতে নেমে আসে তবে আরও চিন্তার বিষয় । তাই সময়ের দাবি রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট হিন্দি আগ্রাসন রুখে দেওয়ার । আপনি যখন দেখছেন যে আপনার এলাকার রাস্তার মাইলষ্টোনের লেখা গুলো হঠাৎ বাংলা থেকে হিন্দিতে বদলে যাচ্ছে, যখন দেখছেন নোটবন্দীর পর ৫০০ টাকার নোটে হঠাৎ দেবনাগরি হরফের ব্যবহার শুর হচ্ছে, যখন দেখছেন আপনার এলাকার কেন্দ্রীয় সরকারী দপ্তর বা ব্যাঙ্কিং সেক্টরে হিন্দীভাষীদের দাপাদাপি শুরু হচ্ছে, যখন দেখছেন "জয় মা কালী"র থেকে "জয় শ্রীরাম" বেশি বার উচ্চারিত হচ্ছে, যখন দেখছেন শাক্তদেবির আরাধনার বদলে "রাম নবমী" নিয়ে বেশি হইচই হচ্ছে, যখন দেখছেন সুফীবাদের উদার আধ্যাত্মিকতা পিষে যাচ্ছে ওয়াহাবি-সালাফি কট্টরপন্থায়, যখন দেখছেন কেন্দ্রীয় সরকারী চাকরির পরীক্ষায় ইংরেজীর সঙ্গে হিন্দি ভাষায় প্রশ্নপত্র প্রদানের রীতি শুরু হচ্ছে, যখন দেখছেন বাংলার শহর কোলকাতা বা আসানসোলে হিন্দি ভাষায় কথোপকথনের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠছে, যখন দেখছেন আপনার এলাকার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে হিন্দি আছে কিন্তু আপনার ভাষা বাংলা নেই, তখন বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না অন্য একটি ভাষাকেন্দ্রিক সংস্কৃতি মানে হিন্দি বাংলার ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে ।

    চোখ কান খোলা থাকলে হিন্দি আগ্রাসনের পদচিহ্ন ঠাওর করা যায় । অনেকে ভাবতে পারেন, হিন্দি তো ভারতের "রাষ্ট্রভাষা" তাই এগুলো নিয়ে আপত্তি তোলার কিছু নেই । এই ভুল ভাবনাটা একটা বড় অংশের বাঙালীর মাথায় আছে । হিন্দি কোনকালেই ভারতের রাষ্ট্রভাষা ছিল না, আজও নেই। তাহলে এই ভাষাটিকে আমরা "রাষ্ট্রভাষা" জ্ঞান করতে লাগলাম কবে থেকে ? হ্যাঁ, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অবশ্যই আছে । স্বাধীনতার পূর্বে হিন্দিভাষী নেতানেতৃরা হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন, পারেন নি । কারন এর বিপরীতে যুযুধান ছিল উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর ভাষ্য । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য হিন্দি হিন্দুদের ভাষা ও উর্দু মুসলিমদের ভাষা এই বিভেদবোধ ইংরেজরাই তৈরি করেছিল । ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে হিন্দু ছাত্রদের দেবনাগরী হরফে হিন্দি ভাষায় আর মুসলিম ছাত্রদের ফারসী হরফে উর্দু ভাষায় রিডিং মেটেরিয়ালস দেওয়া হত । কারনটা খুবই স্পষ্ট, বিভেদের প্রাচীর তৈরি করা । যাই হোক, দ্বন্দ নিস্পত্তির জন্য কিছু ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী নেতা এই দুই ভাষার মিশ্রণে "হিন্দুস্তানী" নামক এক ভাষাকে "রাষ্টভাষা" হিসাবে প্রমোট করার চেষ্টা করেন । এই ভাষায় বোম্বে ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রিতে দু-তিনটে সিনেমাও রয়েছে বলে শোনা যায় । কিন্তু বলিউডকে ব্যবহার করেও ভাষাটি কল্কে পায় নি । এর অন্য একটি কারন হল দেশ ভাগের পর উর্দুকে পাকিস্তান রাষ্ট্র হাইজ্যাক করে নিয়ে চলে গেল, হিন্দীর জন্য পড়ে রইল ফাঁকা মাঠ । অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল হিন্দুস্তানী ।
    ভারত স্বাধীন হওয়ার পর হিন্দিভাষী নেতানেতৃরা ভেবেছিলেন অনায়াসেই হিন্দিকে অহিন্দিভাষীদের উপর চাপিয়ে দিতে পারবেন । দেশের সংবিধান রচিত হওয়ার পর হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বানানোর তোড়জোড় শুরু হল । কিন্তু কয়েকটা মাত্র রাজ্যের প্রাদেশিক ভাষাকে "রাষ্ট্রভাষা" বানাতে গেলে গোটা দেশের নিরিখে সমাজ ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষা হতে হবে, কিন্তু উত্তর ভারত ছাড়া হিন্দির ব্যবহার ছিল না । তাছাড়া দক্ষিন ভারতের দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠীর মানুষদের প্রতিবাদের ভাষ্য ছিল যথেষ্ট কড়া । তাঁরা নিজস্ব ভাষার পাশাপাশি ইংরাজিতে সড়গড় ছিল, কিন্তু হিন্দি তাদের অপছন্দের ভাষা । এমতাবস্থায় দরকার ছিল ভারতের বিভিন্ন জাতি ভাষা পরিচিতির মানুষদের সমাজ ও ব্যবহারিক জীবনে হিন্দিকে ছড়িয়ে দেওয়া। অলিখিতভাবে হিন্দিকে ভারতের "লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা" বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হল, তার জন্য নির্ধারিত হল ১৫ বছর সময়।

    পাকিস্তান রাষ্ট্র বলপূর্বক বাংলাদেশের উপর উর্দু চাপানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্ত ভারত রাষ্ট্র সেই একই কাজ শুরু করেছিল জনসাধারনের অনুমতিক্রমে এবং এই অনুমুতি ছিল আইডিওলজিক্যাল এবং ম্যানিপুলেটেড । মানে চয়েস দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অপশন একটাই, এরকম একটা ব্যপার । রাষ্ট্র জানত যে জোরপূর্বক অহিন্দিভাষীদের হিন্দি গেলানো যাবে না, আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে গেলাতে হবে । পপুলার মিডিয়া হিসাবে বোম্বে ফিল্ম বিনোদন জগতকে তোল্লায় দেওয়ার কাজ শুরু হল। ১৯৪০ থেকে ১৯৬০ এই সময়টা বোম্বে ফিল্ম জগতের স্বর্ণযুগ । মারাঠাদের রাজ্যে মারাঠাদের শহর বোম্বেতে একটি হিন্দিভাষাকেন্দ্রিক বিনোদন জগৎ এভাবে ফুলেফেঁপে উঠল কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এটা আমাদের অনেক আগেই ভাবা উচিৎ ছিল । এটা ঠিক যে এসম্পর্কীয় কোন প্রমানস্বরুপ তথ্য নেই কিন্তু ব্যক ক্যালকুলেশন করলে অঙ্কটা খাপে খাপ মিলে যায় ।

    অল ইন্ডিয়া রেডিওতে হিন্দি ভাষায় সম্প্রচার, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির হিন্দিতে দেওয়া বয়ান, কেবল হিন্দিতে লেখা দেশাত্মবোধক গানগুলো জাতীয় ক্ষেত্রে প্রমোট করা, হিন্দিতে জাতীয় ধ্বনী, বাংলায় লেখা জাতীয় সঙ্গীতের হিন্দিকরন সবই হিন্দিকে "লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা" বানানোর যে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা তারই অঙ্গ । "কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংগঠন" গঠনের প্রসঙ্গটাও আনা যায় । এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজারের উপর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, মাধ্যম ইংরাজি, এবং দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে কেবল হিন্দি, অন্য ভাষার জায়গা নেই । মানে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়টা আপনার নিজের এলাকায় হলেও বাংলা ভাষা চর্চা সেখানে নাজায়েজ । কিন্তু এতসব কিছু করেও রাষ্ট্র সংবিধান প্রণয়নের ১৫ বছর হতে চললেও অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে নি । তড়িঘড়ি ১৯৬৩ তে সংসদে "অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাক্ট" পাস হয় । হিন্দি এবং ইংরাজীকে দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং সরকারিভাবে নীতি গৃহিত হয় যে বিদেশী ভাষা ইংরেজির ব্যবহার ধীরে ধীরে কমিয়ে পুরোপুরিভাবে হিন্দি কায়েম করা হবে । এই দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে হিন্দির স্বীকৃতিটাই আমাদের ভ্রান্ত ধারনায় জারিত হয়ে "রাষ্ট্রভাষা" হয়ে গেছে । ১৯৬৫ তে এই আইন লাগু হলে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে তামিল নাড়ুর কলেজপড়ুয়ারা, অনেকে আত্মাহুতি দেন । হিন্দির দালালি তারা মেনে নেয় নি। এমন নাছোড়বান্দা আন্দোলন তাদের ভাষিক জাতীয়তাবাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ।

    এহেন প্রতিবাদের জেরে কিছুটা পিছু হটে রাষ্ট্র । তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী ঘোষনা দেন যে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগন যতদিন চাইবে ততদিন ইংরাজি দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে টিকে থাকবে । কিন্তু আদতে পর্দার আড়ালে অহিন্দিভাষীদের উপর হিন্দি চাপানোর নীতি থেকে সরেনি রাষ্ট্র । তার জলন্ত প্রমান ১৯৬৮ সালের "ত্রিভাষা সুত্র" নীতি । এই নীতি অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিসরে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে নিজ ভাষা, জাতীয় ক্ষেত্রে হিন্দি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইংরাজি ভাষা, সর্বমোট তিনটি ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক । এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরুপ ব্যঙ্গ করে তামিল নাড়ুর তৎকালীন মূখ্যমন্ত্রী সিএন আন্নাদুরাই বললেন --- " জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে দুটি আলাদা আলাদা ভাষার জন্য তদবির করার অর্থ হল দেওয়ালে বেড়াল বার করার জন্য একটা বড় ফুটো রাখা আছে, তবুও আবার ইঁদুরের জন্য আর একটা ছোট ফুটো করা হল, কিন্তু বেড়ালের জন্য রাখা বড় ফুটোতেই তো দুটো কাজ হয়, তাহলে আবার ছোট ফুটো করা কেন ?" ত্রিভাষা সুত্রকে এভাবেই তামিল ও তেলেগু মানুষজন ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিল ।

    অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন দেশীয় ভাষা হিন্দির থেকেও কি বিদেশী ভাষা ইংরাজী আপন যে তার জন্য ওকালতি করতে হবে ? কিন্তু প্রশ্নটা "আপন-পর" এর নয়, যৌক্তিক বুদ্ধির । কেউ মানুক আর না মানুক, ইংরাজি এখন গ্লোবাল ল্যাঙ্গুয়েজ, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিরুদ্ধশূন্য অপ্রতিদ্বন্দ্বী "লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা" । এটা বিগত দুই শতকের প্রায় বিশ্বজোড়া ঔপোনিবেশিক ইংরেজ শাসনের ফসল । তাই বাস্তববোধ বলে ভারতের কোন ভাষাকেই এই পর্যায়ে উন্নীত করা প্রায় অসম্ভব । ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্য বহগুনে সমৃদ্ধ, বিশ্বজোড়া কদর । কম্পিউটার ইন্টারনেটের যুগে ভাষাটি না শিখতে চাওয়া মানে প্রভূত সাহিত্যরস এবং বিজ্ঞানভিত্তিক ও সমাজতাত্ত্বিক বৃহৎ জ্ঞানভান্ডার থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখা । কিন্তু হিন্দির সেই লেভেলের ষ্টেটাস নেই, তুলনায় বাংলা ভাষার মাধূর্য এবং শব্দনির্মান ক্ষমতা ও গঠন কাঠামো হিন্দির থেকে উন্নত । বাংলা সাহিত্যেও হিন্দি সাহিত্যের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে । আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইংরাজি শেখাটা যখন আবশ্যিকতা, তখন জাতীয় স্তরে ভাষাটি থেকে গেলে অতিরিক্ত একটি অপ্রয়োজনীয় ভাষা শিক্ষার চাপ থাকে না। অন্যদিকে জাতির জাতীয় ও সাংস্কৃতিক সত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার নিজের মায়ের ভাষা তো থাকছেই ।

    পরিশেষে একটা কথা বলার । কোন ব্যাক্তিবিশেষ হিন্দিভাষীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের জায়গা থেকে নয়, বরং হিন্দি আগ্রাসন সম্পর্কিত বাঙালী জাতির সচেতনতা ও সেটাকে শুধু ঠেকানোর কথা বলেছি । হিন্দিও একটা জনগোষ্ঠীর মায়ের ভাষা, হিন্দিকে ঘিরেও একটা অংশের মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে । এই জায়গাতে ভাষার চরিত্রটি নিরীহ । কিন্তু সাংস্কৃতিক আধিপত্য কায়েমের জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হলে সেই নিরীহ ভাষাটিই হিংস্র হয়ে যায় । যাকে তাত্ত্বিকরা "ভাষাসন্ত্রাস" বলেন । ভাষা নদীর মতো । সময়ের সাথে সাথে নিজের চলার পথে অনেক কিছুকে নিজের করে নেয় । কিন্তু জোর করে সে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করতে চাইলে ফল মারাত্মক । তেমনি ভাষা একটি জাতির সংস্কৃতির আধার । ভাষার উপর কোপ পড়লে সাংস্কৃতিক শোষনের পথ প্রশস্থ হয় । শোষিত হতে হতে একসময় দেখা যাবে বাংলা ও বাঙালীয়ানার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে । বিশ্ব-সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বাংলার কোন জায়গায় থাকবে না । বহির্দেশের মানুষ "ভারত" বলতে শুধু বুঝবে হিন্দি ভাষা, হিন্দি সাহিত্যে আর গো-বলয়ী চালচলন । বাংলা আর বাংলার সংস্কৃতি এভাবে খাবি খাবে, আর আমরা চোখের সামনে দেখব ? মেনে নেব ? এটা মেনে নেওয়া যায় ?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ জুন ২০১৯ | ১৯৬২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • এলেবেলে | 230123.142.67900.116 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৫:২৮49040
  • কেন বেকার টানছেন? বক্তব্যটার আগে পরে কী কী কথা আছে একটু দেখে নিন না নিজে। ওই বামের ভোট রামে যাওয়ার কপিরাইট 'নাকি' আমার শুনে যিনি হাহা হেসেছিলেন তাঁর সাহায্য নিতে পারেন। এইরকম প্রচুর কথার পিঠে কথা আপনি বলে গেছেন নামোল্লেখ না করেই। সেসব কাকে বা কাদের বলা হচ্ছে তা না বোঝার মতো নাদান এখানে কেউ নেই। আর হ্যা, যদি সত্যি বই ছাপান ব্লগের লেখা বা এলেবেলের মন্তব্য, তাহলে স্রেফ বলবেন। লেখার দরকার পড়বে না ব্লগের নীচে। বিনা পয়সায় দিয়ে দেব। প্রমিস।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৫:৩২49041
  • "যদি সত্যি বই ছাপান ব্লগের লেখা বা এলেবেলের মন্তব্য, তাহলে স্রেফ বলবেন। লেখার দরকার পড়বে না ব্লগের নীচে। বিনা পয়সায় দিয়ে দেব।"
    আইনত ঐভাবে দেওয়া যায়্না।
  • T | 342323.191.01.151 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৫:৪৪49042
  • উফফফ ঃ)))) টোটাল পুরো টোটাল...হ্যা হ্যা হ্যা
  • এলেবেলে | 230123.142.67900.116 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৫:৫৩49043
  • আপনি বলবেন সরাসরি আমাকে, আমি দিয়ে দেব। তাতে আইন বাঁচবে? বাঁচলে বলবেন নাহয়।
  • sm | 2345.110.344512.32 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:০৪48963
  • বেশী বাংলা শিখেও লাভ নেই।ক্লাস ইলেভেন-টুয়েলভে সাইয়েন্স পড়ার সময় দেখলাম ,বাংলায় দুটো পেপার।বাংলা ভাষার ও সংকৃতির পক্ষে যথেষ্ট টান থাকা সত্বেও বুঝিনি দুটো পেপার রাখা কোন মর্কটের মাথা থেকে বেরিয়েছে?কোন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষাতেই বাংলার জন্য আলাদা নাম্বার বরাদ্দ নেই যেখানে !দেশাত্মবোধ আর সংস্কৃতি প্রীতি দেখানোর জন্যি কি এই আজব সিলেবাস!কে জানে!
    ক্লাস এইতেও অস্থি গোদাবরী তীরে ,মুখস্ত করার সময় ও বুঝিনি সংস্কৃত ঠিক কোন কাজে লাগবে।
    এর চেয়ে দু চার পাতা চাইনিজ শেখালে কাজে দিতো।
    আমি তো এখনো হিন্দিতে নাম্বার পড়তে পারি না।
    মাইলস্টোন গুলো হিন্দিতে লেখা শুরু হলে, কি হবে ভেবেই শিউরে উঠতেছি।
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:১৯48964
  • এসেম

    আপনি সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা করেছেন আমার মন্তব্যের। আমি আদৌ ইংরেজি শেখানোর বিরোধী নই, পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের জানলা বন্ধ রেখে কেবলমাত্র ভারতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান পড়ানো হোক - তারও পক্ষপাতী নই। কিন্তু সমস্যাটা অন্য। আপনি তিনটে ভাষার মধ্যে দুটো ভাষায় অত্যন্ত দক্ষ - আপনার মাতৃভাষা এবং ইংরেজি। হিন্দি গান বা সিনেমা আপনি আমার মতোই ভালোবাসেন কিন্তু একটু আধটু বলতে পারলেও লিখতে-পড়তে পারেন না। আপনাকে নিয়ে তো ভাষা আগ্রাসনের ব্যাপারটা বোঝা যাবে না। ভাষা আগ্রাসনের ব্যাপারটা তখনই বোঝা যাবে যখন বাংলায় থেকেও বাঙালি (সে তামিল-বিহারি-বাঙালি-নেপালি-রাজবংশী-সাঁওতালি যাই হোক না কেন) বাংলা ভাষা পড়ারই সুযোগ পাবে না বা নেবে না।
  • sm | 2345.110.895612.113 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:২৮48966
  • লাস্ট প্যারাগ্রাফটা বোঝা অন্তত আমার কম্ম নয়।
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:২৮48965
  • এলসিএম

    আপনার সঙ্গে গুরুর পাতায় আলোচনার সুবাদে আপনাকে একজন প্রাজ্ঞ প্রবীণ বলেই মনে হয়েছে। শুধু আপনাকে এবং এই সুযোগে অন্যদেরও মনে করিয়ে দিই ১৯৮০ সাল অবধি বাংলায় মাধ্যমিক স্তর অবধি তিনটে ভাষায় পাশ করা বাধ্যতামূলক ছিল এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা ছিল ৪০০ নম্বরের। এমনকি এখনও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বেস্ট ফাইভ চালু হলেও বাংলা-ইংরেজিতে পাশ করা বাধ্যতামূলক

    আমি নিজে আর ডি-র বিশাল ফ্যান, সেই ক্লাস নাইন থেকে। তো তাঁকে যাঁরা আড্ডি-ফাড্ডি বলে 'চোর' বলছেন তাঁদের এবং নৌশাদ-এস ডি-মদনমোহনের কতগুলো গান 'চুরি করা' সেটা দেখার জন্য এই অতি বিশ্বস্ত সাইটটার হদিশ দিয়ে গেলাম। বিস্তর খুঁজেও তাঁরা আর ডি-র ৫০টা গানও 'চুরি করা' বলতে পারেননি!

    http://www.itwofs.com/
  • lcm | 900900.0.0189.158 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৩৫48967
  • এলেবেলে,
    আবার ঠিক। হেক্কেবারে ঠিক বলেছেন। বাংলা,ইংরেজি,সংস্কৃত/হিন্দি - মাধ্যমিকে বাধ্যতামূলক ছিল। তিনটি ভাষা "বাধ্যতামূলক" ছিল। আমার এক্দম মনে ছিল না।
    তিনটে কেন অনেক দেশের স্কুলে চারটে ভাষাও অনেকে শেখে, বুঝতেও পারছেন আমার খটখটানি ঐ "বাধ্যতামূলক" অংশটি নিয়ে। যদিও আগে ছিল, পশ্চিমবঙ্গেই ছিল।
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৩৮48968
  • আচ্ছা আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করি।

    ১. এন বিশ্বনাথন নিপাট বাঙালি, তাঁর ছেলে অশোক বিশ্বনাথনও তাই। খড়গপুরে বেশ কয়েকটা স্কুল আছে যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রথম ভাষা তামিল এবং দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি। বাংলা পড়ার সুযোগই নেই। একই অবস্থা যাঁরা প্রথম ভাষা হিসাবে নেপালি-সাঁওতালি-হিন্দি-উর্দু-ওড়িয়াকে বেছে নিয়েছেন সরকারি স্কুলগুলোতে। এটা হচ্ছে যাঁরা ইংরেজি মাধ্যমে না পড়লেও ক্লাস ওয়ান থেকে ইংরেজি শেখার সুযোগ পান।

    ২. আর একটা শ্রেণি আছে যাঁরা তাঁদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে ভর্তি করেন। সেখানে আপনি দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা নিতেও পারেন, না-ও নিতে পারেন। অর্থাৎ বাধ্যতামূলক নয়।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৪৩48969
  • "বিস্তর খুঁজেও তাঁরা আর ডি-র ৫০টা গানও 'চুরি করা' বলতে পারেননি!"

    একজন খুনিকে জিগ্যেস করা হচ্ছে যে সে ৫০ জনকে খুন করেছে, তার কি শাস্তি হওয়া উচিত?

    খুনির বক্তব্যঃ হুজুর, কত লোককে যে খুন করলাম না, সেইটা আপনার নজরে পড়ছে না?
  • dc | 232312.164.673423.14 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৪৬48970
  • আড্ডি-ফাড্ডি ৫০ টা গান চুরি করেছেন না ৫০০ টা নাকি ৫০০০ টা তার হিসেব করে কি হবে? ওনারা যে গানগুলো দিয়ে গেছেন, আর কিশোর-লতা-আশা-রফি-মহেন্দ্র কাপুররা যে গানগুলো গেয়ে গেছেন সেগুলো একেকটা হীরের টুকরো। সারাজীবন ধরে শুনেও আড্ডি-ফাড্ডি দের গানগুলো পুরনো হয়না ঃ-)
  • lcm | 900900.0.0189.158 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৪৯48972
  • আগ্রাসনের ব্যাপারটা নানা ডাইমেনসন আছে।

    যেমন ধরুন একটি রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের তিনটে ভাষা শিখতে হচ্ছে বাধ্যতামূলকভাবে, এবং, আর একটি রাজ্যে দুটি ভাষা। এর ফলে অন্য বিষয়গুলিতে বেশি সময় দেবার সুযোগ পাচ্ছে এক রাজ্যের স্টুডেন্টরা। এটি পরিষ্কার বৈষম্য।

    এরপর ধরুন, কেরলে স্টুডেন্টরা - মালয়ালি, ইংরেজি, হিন্দি - শিখতে থাকল স্কুলে। এর এক দশক পরের থেকে, কেরলে হিন্দি সিনেমার দর্শক, হিন্দি গানের শ্রোতা এখনকার থেকে তুলনামূলকভাবে বাড়বে। এই প্রসঙ্গে এখানে হিন্দি সিনেমা/গানের কথা এসেছে। এবং, এর সঙ্গে যেটি হবে সেটি হল - মালয়ালি সিনেমা/গানের একটি লোকাল কমার্শিয়াল মার্কেট আছে, সেটি একটু চিড় খাবে। ঠিক যেমন ধরুন, পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে, আজ ৯ কোটি দর্শক-শ্রোতার যে মার্কেট সেখানে হিন্দি সিনেমা-গান ভাল ব্যবসা করছে। এর সঙ্গে কিন্তু উৎকর্ষের সম্পর্ক নেই। হিন্দি সিনেমা-গান দারুণ কোয়ালিটির জিনিস হতেই পারে, কিন্তু মার্কেটটা ভাষার সঙ্গে জড়িত।

    এর পরে আসছে ধরুন ন্যাশনাল টিভি ও সম্প্রচার ব্যবস্থা। হিন্দি বিজ্ঞাপণ দিয়ে ন্যাশনাল লেভেলের কোম্পানি ব্যবসার পরিধি আরও সহজে বাড়াতে পারবে। সারা ভারতের বিজ্ঞাপণ ধরার জন্য শুধু ক্রিকেটের টাইম স্লটের ওপর নির্ভর করতে হবে না বড় কোম্পানিগুলিকে। আঞ্চলিক ছোট ব্যবসা পাল্লা দিয়ে পেরে উঠবে না।

    তারপর, আছে সংস্কৃতি। এখানেও প্রশ্নটা উৎকর্ষের নয়। প্রশ্নটা আধিপত্যের।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৪৯48971
  • চুরি করার জন্য লোককে শাস্তি পেতে হয়। সুজোগ থাকা সত্ত্বেও যথেষ্ট পরিমাণ চুরি না করার জন্য বলিউডেই একমাত্র লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
  • dc | 232312.164.673423.14 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৫৩48973
  • S, আর্ডি দের সত্যি শাস্তি দেওয়া উচিত ঃ-)
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৫৬48974
  • আড্ডি-ফাড্ডির ওই ৫০টা 'চুরি'র কতগুলো ব্লাটান্ট কপি, কতগুলো খানিকটা নেওয়া, কতগুলো ইন্সপিরেশন, কতগুলো শুধু একটু অংশ নিয়ে চরম ইমপ্রোভাইজেশন সেটা বুঝতে গেলে সামান্য সহিষ্ণু হতে হয়। প্রযোজক সংগীত পরিচালককে জোর করছেন কিনা (মেহবুবা মেহবুবা - শোলে) সেগুলো টুকটাক জানার ধৈর্য রাখতে হয়। কিছুই না করে স্রেফ নিদান হাঁকলে উন্নাসিকতা প্রদর্শন বই অন্য কিছু হয় না।
  • dc | 232312.164.673423.14 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৬:৫৭48975
  • এই যে আরেকটা চোর, রভি। ইনিও ছিলেন সুরকার, এনার সুরারোপিত একটা আনমোল রতন মহেন্দ্র কাপুরের গাওয়াঃ

  • lcm | 900900.0.0189.158 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:০৩48976
  • এই টই-তে হবে না।
    ঐ যে ওয়েব সাইটের লিংক এখানে দিয়েছেন অনেকে, যেখানে কপি করা গানের লিস্ট আছে, ওর মধ্য একটি সাইটে এককালে আমি সময় দিয়ে বেশ কিছু গান শুনেছিলাম। কিছু কিছু গানের সুর এক্কেবারে হুবুহু কপি, মানে সুর লিফ্টিং --- আর অনেক গান শুনে বোঝা মুশকিল ঠিক কোন জায়গায় কি কপি হয়েছে। এর কারণ হল, মিউজিক্যাল নোটে জায়গায় জায়গায় সাদৃশ্য থাকা স্বাভাবিক। সুতরাং, ঠিক অমনভাবে বলা যায় না।

    আর, এই টই-এ প্রাসঙ্গিক ও নয়। মানে যেটা বলছিলাম, যে হিন্দি ভাষার আগ্রাসনের আলোচনায় হিন্দি গানের উৎকর্ষ বা মৌলিকত্ব অপ্রাসঙ্গিক।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:০৪48977
  • আমার উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা আর ইংরেজি সিলেবাস খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছিলো। প্রচুর খাটাখাটনি করে, বুদ্ধি দিয়েই বানিয়েছিলো। কিন্তু তার সঙ্গে একগাদা সায়েন্স সাবজেক্ট থাকায় সমস্যা হয়ে গেছে। প্রচুর চাপ।

    কাজে অনেক কিছুই লাগেনা। যতজন সায়েন্স পড়েন, তাঁদের মধ্যে কার কার কোসেক এক্সের ইন্টেগ্রেশন কাজে লেগেছে? বা ক্যালকুলাস? আমি হলফ করে বলতে পারি যে বেশিরভাগ ইন্জিনিয়ারদেরও কাজে লাগেনা। আমি ইন্জিনিয়ারিং পড়ার পরে আইটিতে কাজ করেছিলাম। কিচ্ছু কাজে লাগেনি। আবার লাগতে শুরু করে যখন পরে অন্য লাইনে পড়াশুনা করতে যাই।

    তেমনি চর্যাপদ জেনেও কিছু কাজে লাগেনা মনে হয়। কিন্তু নিজেকে, নিজের জাতিকে, নিজের ভাষাকে জানাটা আমি জীবনের অঙ্গ বলেই মনে করি। তাই সেগুলো জানাও জরুরী। কিন্তু সিলেবাসের সঠিক বন্টন হওয়াটা জরুরী। দুটো ক্লাসে সব পড়ানোর কোনও মানে হয়্না।
  • dc | 232312.164.673423.14 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:০৭48978
  • আর শংকর জয়কিষান, এরা আবার দুজন মিলে চুরি করেছে! এই দুই চোরের একটা ইমর্টাল গানঃ

  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:১০48980
  • এলসিএম, আমি এই 'হিন্দি ভাষার আগ্রাসনের আলোচনায় হিন্দি গানের উৎকর্ষ বা মৌলিকত্ব অপ্রাসঙ্গিক' ব্যাপারটার সঙ্গে একশো শতাংশ সহমত। এখানে দুটো জিনিস প্যারালালি চললে একটু অসুবিধাই হচ্ছে। দেখুন পশ্চিমবঙ্গে বাংলা সিনেমার প্রসার এবং হিন্দি সিনেমার আগ্রাসন রুখতে অনেক ব্যবস্থাই নেওয়া যায়। সিনেমা হলগুলোতে নির্দিষ্ট সপ্তাহের স্প্যান বেঁধে দিয়ে বাংলা ছবি চালানো, মাল্টিপ্লেক্সের প্রাইম টাইমে তার প্রদর্শন, হিন্দি সিনেমার ক্ষেত্রে আলাদা প্রমোদকরের হার -- এগুলো নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।

    যেহেতু ডিসি আমার অত্যন্ত প্রিয় মহেন্দ্র কাপুরের প্রসঙ্গটি তুলেছেন তাই এলসিএম-এর সঙ্গে সহমত হয়েও তাঁর এই অমূল্য গানগুলো এখানে না রেখে পারলাম না! 'চুরি' - সব 'চুরি'!!






  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:১০48979
  • অন্যে জোড় করলো/ চাপ দিলো, আর একজন নামজাদা সঙ্গীত পরিচালক চুরি করে ফেললেন? মৌলিকতার এর থেকে বড় উদাহরণ আর হয়্না।

    আমি কারোর বিশাল ফ্যান, অতেব তিনি মহান। এর থেকে কার উন্নাসিকতার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে?
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:১৬48981
  • কে বলেছে ফ্যান হলেই তাঁকে মহান বলতে হবে? কোথায় বলেছে? হাওয়ায় যুদ্ধ করে লাভ আছে? মৃণাল সেনের মতো বাঘা পরিচালক প্রযোজক হেমন্ত মুখার্জির চাপে নীল আকাশের নীচে-তে গান রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং যথেষ্ট বিরক্ত ছিলেন ব্যাপারটা নিয়ে। একজন পেশাদার সংগীত পরিচালক সব সময় তাঁর ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে পারেন? আপনি নিজে পারেন আপনার পেশায়/
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:২০48982
  • ডিসি, আর্ডিদের শাস্তি না হলেও চলবে। তবে লোকেরা একটু কম মহান মহান চেঁচালেই চলে।

    এখানে যে যুক্তিতে তক্কটা হচ্ছে সেটা বেশ মজার। একজন সুরকারের ৫০টা গান চুরি পাওয়া গেছে। তাহলে বাকি গানগুলো তো চুরি না। আরো ৫০টা দেখিয়ে দিলে লোকে বলবে বাকিগুলো তো চুরি না। একজন সুরকার কত শতাংশ গানের সুর চুরি করলে তাকে মহান না বলে চোর বলা যাবে জানতে পারলে ভালো হয়।
  • dc | 232312.174.2390012.75 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:২১48984
  • তাহলে S কে মহেন্দ্র কাপুরের একটা গান শোনাই ঃ-)

  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:২১48983
  • "আপনি নিজে পারেন আপনার পেশায়?"
    পারি।
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:২৩48985
  • ওই ছেঁদো যুক্তি আউড়ালে সবচেয়ে বড় 'চোর' রবীন্দ্রনাথ, যদিও তিনি পেশাদার ছিলেন না!
  • dc | 232312.174.2390012.75 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:২৭48986
  • S, আর্ডি কটা গান চুরি করেছেন আর কটা করেননি সেটা আমার কাছে একেবারে ইম্মেটিরিয়াল। আমি অনেক ছোটবেলার থেকেই ওনার বা অন্য লেজেন্ডারি সুরকারদের অনেক গান আবিষ্কার করেছি অন্য কোথাও থেকে চুরি করা। এই টইতে একটা গান দিয়েছিলাম, "চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে যো দিল কো", ওটা ছোটবেলার থেকে আমার ভীষন প্রিয় গান। কলেজে পড়তে একদিন হঠাত ভয়েস অফ অ্যামেরিকায় শুনতে পেয়েছিলাম ওটার অরিজিনাল সুরটা। ইনটারনেটে এসব লিস্ট বেরনোর বহু আগে থেকে জানি অনেক সুরকারেরই অনেক গান চুরি করা। সিমপ্লি ডাজন্ট ম্যাটার - এই গানগুলো একেকটা হীরের টুকরো, এগুলো বাদ দিয়ে বেঁচে থাকার মানে হয়না।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:২৯48987
  • এটাকে যার ছেঁদো যুক্তি মনে হয়, সে কপিরাইট ব্যপারটাই বোঝেন না।

    এখানে যাঁরা রিসার্চ করেন বা মৌলিক লেখা লেখেন, তাঁদের মধ্যে কে কে তার কাজ সাইটেশান ছাড়া ডিস্ট্রিবিউট করতে রাজী আছেন, একবার হাত তুলে দেখিয়ে দিলে ভালো হয়।
  • dc | 232312.174.2390012.75 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৭:৩২48988
  • বাই দি ওয়ে, মহেন্দ্র কাপুরের প্রসঙ্গ যখন এলোই...

    আমাদের বাড়িতে আমার মা রফির প্রবল ভক্ত। রফি সাহেবের গান না শুনলে মার চলে না, মার মতে রফির থেকে আগে কাউকে রাখা যায় না। আর আমি আবার কিশোরের বেশী ফ্যান। মাঝে মাঝে মাকে খ্যাপাই এই বলে, মা, রফি তো রফি, কিন্তু কিশোরও কি কিছু কম যায়? তা এ নিয়ে খাওয়ার টেবিলে মাঝে মাঝেই তর্ক হয়। আবার মাঝে মাঝে দুজনেই একমত হয়ে যাই যে মহেন্দ্র কাপুরের কিছু গানও এমন যে এই দুজনের থেকেই কম না। চোখ বন্ধ করে শুনতে হয়, প্রাণ ভরে ওঠে ঃ-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন