এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • হোমিওপ্যাথি এবং তার দর্শন বিষয়ে কিছু কথা

    Bishan Basu লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ৬৫২১ বার পঠিত
  • মডার্ন মেডিসিনের ছাত্র হিসেবে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে কিছু ভাবনার কথা লিখেছিলাম অনেকদিন আগে।

    কথাগুলো প্রাসঙ্গিক বোধ করায় আরেকবার শেয়ার করলাম।

    প্রথমেই জানাই, আমি মডার্ন মেডিসিন প্র‍্যাক্টিশনার, ওরফে এলোপ্যাথি চিকিৎসক আর অন্য চিকিৎসাপদ্ধতি বিষয়ে খুব একটা বিশেষ জানি না। আর, সেই না জানার জন্যেই, অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি বিষয়ে আমি খুব একটা কথাবার্তা বলতে চাই না।

    হোমিওপ্যাথি নিয়ে আমার খুব একটা জ্ঞানগম্যি আছে এমন নয়। আর সেইজন্যেই, এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে নিকটজনের অসুস্থতার তদারকি হবে, এইটা আমার কাছে গ্রহণীয় নয়।

    কিন্তু, সরকার পয়সা খরচ করে এই চিকিৎসাশাস্ত্র পড়ান, এই ব্যবস্থায় শিক্ষিত চিকিৎসকদের সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নিয়োগও করেন।

    কাজেই, এই ব্যবস্থা যদি একেবারেই ভুল হয় বা ভ্রান্ত বিজ্ঞান হয়, তাহলে এর পেছনে অর্থব্যয় জাতীয় সম্পদের অপচয়। তাই না?

    অতএব, বিতর্ক জরুরী।

    দ্বিতীয়ত, কোনটা বিজ্ঞান, আর কোনটা নয়, সেই নিয়েও আমার স্পষ্ট ধারণা নেই। কিন্তু, ওই যে, পপারের বিজ্ঞান-তাই-যাকে-ভুল-প্রমান-করা-সম্ভব অর্থাৎ ফলসিফায়েবিলিটি, যেকথা অর্ক বলেছে, সেই কথাটি আমারও মনে ধরে। তর্ক শুরুর আগে, কিছু সাধারণ সূত্র মেনে নেওয়া থাকে। এটিও তেমন। তাই, উদাহরণ দিই,জ্যোতিষশাস্ত্র আমার কাছে অবিজ্ঞান।

    এখন, আজ থেকে দুশো বছরেরও বেশী আগে, ইউরোপে স্যামুয়েল হ্যানিম্যানসাহেব হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার যে গোড়াপত্তন করেছিলেন, তা ছিলো, আক্ষরিক অর্থেই বৈপ্লবিক।

    আসুন, দেখি, হ্যানিম্যানসাহেব তাঁর সেই অর্গ্যানন অফ মেডিসিন বইয়ে কী কথা বলে গিয়েছেন।

    সরাসরি ইংরিজিতেই উদ্ধৃত করলাম।

    Aphorism 1 : The physician’s high and only mission is to restore the sick to health, to cure, as it is termed.

    Aphorism 2 : The ideal cure is rapid, gentle, permanent and removes the whole disease in the shortest, least harmful way.

    Aphorism 3 : If the physician understands what is curable in disease, and understands what is curative in medicines, and understands how to apply the medicines to the disease, and knows how to remove conditions which prevent the patient from getting well, he is a true physician.

    Aphorism 4 : He is likewise a preserver of health if he knows the things that derange health and cause disease, and how to remove them from persons in health.

    Aphorism 5 : Pay attention to the exciting cause AND the fundamental cause including the patient’s character, activities, way of life, habits, etc.

    Aphorism 6 : There is no need for metaphysical speculation. Diseases are the totality of the perceptible symptoms.

    Aphorism 7 : To cure, you only need to treat the totality [NOT symptomatic palliation; a single symptom is not the disease].

    প্রথম সাতখানি পরিচ্ছেদে যে কথা বলা হয়েছে, তার মূল নির্যাস, চিকিৎসকের কর্তব্য, উপসর্গ দেখে সমগ্র মানুষটিরই চিকিৎসা করা, তাঁকে নীরোগ করা আর যতো দ্রুত সম্ভব আরোগ্যে ব্রতী হওয়া। উপসর্গ দেখে রোগনির্ণয়ের সময়, চিকিৎসক মাথায় রাখবেন রোগীর জীবনযাপন-অভ্যাস-চরিত্র ইত্যাদি আর আরোগ্যের লক্ষ্য হবে রোগের মূলগত নিরাময়, বা বলা ভালো, রোগের নির্মূল। যে চিকিৎসক যথার্থভাবে জানেন রোগের কতোখানি নিরাময়যোগ্য, ওষুধ কতোখানি কার্যকরী, আর জানেন অসুখ-অনুসারে ওষুধের প্রয়োগবিধি, তিনিই সুচিকিৎসক। এর পাশাপাশি সুস্থ মানুষের স্বাস্থ্য বজায়ে চিকিৎসকের ভূমিকা যেভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা তো শিরোধার্য।

    কথাগুলোর যাথার্থ্য নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ, বোধহয়, নেই। বিশেষ করে, যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিচারের পরে বর্তমান পরিস্থিতিতে কথাগুলো অনুধাবন করি।

    বর্তমান এলোপ্যাথির তখন শৈশব। রক্তক্ষরণ বা ব্লাডলেটিং সেই আমলের সবচাইতে কার্যকরী চিকিৎসা। অন্যদিকে ভেসালিয়াস-হার্ভের হাত ধরে প্রাপ্ত শারীরবৃত্ত-শারীরিক অন্তর্গঠনের প্রাথমিক পাঠ পেয়ে রোগের চিকিৎসা ক্রমশই সামগ্রিক মানুষ থেকে প্রত্যঙ্গের দিকে সরে আসছে।

    অর্থাৎ, একদিকে চিকিৎসা হয়ে উঠছে নৈর্ব্যক্তিক আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষয়ে উদাসীন, অন্যদিকে সেই চিকিৎসার কার্যকারিতা নিয়েও প্রচুর প্রশ্ন।

    তামার খনি অঞ্চলে মজুরদের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তিতিবিরক্ত হ্যানিম্যান প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির উপর বিশ্বাস হারালেন। আর, শুরু করলেন নিজস্ব চিকিৎসাপদ্ধতি, যা কিনা এক ভিন্ন চিকিৎসাদর্শনও বটে। যে দর্শনে খন্ড খন্ড করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নয়, চিকিৎসা হবে সমগ্র মানুষটিরই, আর সেই চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে ন্যূনতম ওষুধ।

    লক্ষ্য করুন, হ্যানিম্যানের লেখা বইটির প্রথম নাম কিন্তু, অর্গ্যানন অফ দ্য র‍্যাশানাল আর্ট অফ হিলিং। এইখানে র‍্যাশানাল কথাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইদানিং তো হোমিওপ্যাথি থেকে যুক্তিটা হারিয়ে যাচ্ছে, তাই না?

    এই চিকিৎসাব্যবস্থার শুরু কিন্তু হ্যানিমানের আগেই। ভিয়েনার আন্তন ভন স্টর্কের পথ ধরে এগিয়ে হ্যানিম্যান এই চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা সুসংহত রূপ দিয়েছিলেন।

    কিন্তু, প্রশ্ন এইটাই, প্রচলিত চিকিৎসার বিপক্ষে গিয়ে নতুন ভাবনার যে বৈপ্লবিক দুঃসাহস, তা এই বিগত দুশো বছরে দমবন্ধ জলাশয়ে পরিণত হলো কোন পথে!!

    আঠেরোশো সালে তো রসায়ন এমনধারা এগোয় নি। কাজেই, এক লিটার জলে এক ফোঁটা ওষুধ ঢেলে খুব করে ঝাঁকালে, আর তার পরে তার মধ্যে আরো ক’লিটার জল মেশালে, তার মধ্যে যে আর ওষুধ থাকে না, এই কথা বিজ্ঞান দিয়ে জানার সুযোগ হ্যানিম্যানের হয়নি। অনুমান করা কঠিন নয়, কার্যকরী ওষুধের অভাব আর ভালো-করতে-না-পারো-খারাপ-কোরোনার গ্যালেন-হিপোক্রেটিয় নীতিই হ্যানিম্যানকে বাধ্য করেছিলো এরকম ভাবতে।

    কিন্তু, তারপরেও, দুশো বছর ধরে, হাজারে হাজারে হোমিওপ্যাথ কেন তাঁদের চিকিৎসাপদ্ধতিটিকে বিজ্ঞানের সূত্রে বাঁধতে চেষ্টা করলেন না, এর উত্তর আমার কাছে নেই।

    হ্যানিম্যানসাহেব তো নিজেই নিজের কথাকে বেদবাক্য বলে ধরে থাকেন নি। তাঁর অর্গ্যানন প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮১০ সালে। জীবদ্দশাতে তিনি এর পরিমার্জন করেন বেশ কয়েকবার। শেষবার ১৮৪২ সালে। প্রকাশিত হয় বহুবছর পরে সেই ষষ্ঠ সংস্করণ। প্রথম আর ষষ্ঠ সংস্করণের ফারাক বিস্তর।

    তাহলে, তাঁর অনুসারীরা, সেই অর্গ্যাননকেই অভ্রান্ত বেদ-কোরাণ বলে থেমে থাকলেন কেন? কেন প্রশ্ন করার, পরীক্ষা করার যুক্তিবোধ হোমিওপ্যাথি থেকে হারিয়ে গেল? বা, আরো রূঢ় ভাষায় বললে, কেন হোমিওপ্যাথি থেকে মেধা বিদায় নিলো?

    হ্যাঁ, একটা কারণ নিশ্চয়ই অর্থাভাব। প্রাতিষ্ঠানিক নেকনজর থেকে হোমিওপ্যাথি চিরকালই বঞ্চিত। কিন্তু, এইটা তো একমাত্র কারণ হতে পারে না। প্রতিষ্ঠানবিরোধী চিকিৎসাপদ্ধতি যে প্রাতিষ্ঠানিক আনুকূল্য পাবে না, এ তো জানাই কথা। কিন্তু, সেই অভিমানে, হোমিওপ্যাথি বিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবে, এ কেমন কথা!!

    একথা অনস্বীকার্য, যে, বিগত শতকের শুরু থেকেই, এলোপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসাব্যবস্থাকে দূরে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তার আগে পর্যন্ত, যেমন ধরুন মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে, সবকটি চিকিৎসাব্যবস্থাকে সমান গুরুত্ব দিয়েই পড়ানো হতো। আর চিকিৎসাশিক্ষা ছিলো, প্রকৃত অর্থেই, ইন্টারডিসিপ্লিনারি। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ক্যানসার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপির সূচনা এক হোমিওপ্যাথি ছাত্রের হাতেই।

    কিন্তু, ঊনবিংশ শতকের শেষে রকফেলার-কার্নেগীর প্রচুর পেট্রোরাসায়নিকজাত ওষুধ বিক্রির বাজার তৈরীর জন্যে, মেডিকেল পাঠক্রমের “আধুনিকীকরণ” জরুরী হয়ে পড়লো। আব্রাহাম ফ্লেক্সনারের নেতৃত্বে ঢেলে সাজানো হলো মেডিকেল শিক্ষাক্রম। একমাত্র এলোপ্যাথী পেলো মডার্ণ মেডিসিনের তকমা। বাকি সবাই দুয়োরানী। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা পরে কখনো করা যাবে। অবশ্য, এই ঘটনায় আমাদের অবাক হওয়া সাজে না। এর বহু আগেই, ব্রিটিশরাজ, পরিকল্পিতভাবেই, আমাদের যুগযুগান্ত ধরে পরীক্ষিত চিকিৎসাব্যবস্থাকে ব্রাত্য করে এলোপ্যাথিকেই ধ্রুব সত্য জ্ঞান করতে শিখিয়েছে। সেই আলোচনা করার সুযোগও এখন নেই।

    মোটকথা, প্রাতিষ্ঠানিক আনুকূল্য ব্যতিরেকে, অর্থসংস্থানের অভাবে গবেষণা থেমে থাকলে বহতা নদীতুল্য চিকিৎসাপদ্ধতি মজা ডোবায় পরিণত হয়। আর মেধার যোগানও কমে যায়। হোমিওপ্যাথিও ব্যতিক্রম নয়।

    তবে, বিজ্ঞানসম্মত একটি চিকিৎসাপদ্ধতির সম্মান পেতে গেলে, বিজ্ঞানের অন্তত সাধারণ নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। হোমিওপ্যাথি কি তার থেকে সরে আসছে না?

    হ্যাঁ, আমিও মানি, র‍্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল বাদ দিয়ে জগত মিথ্যা, এও এক মৌলবাদ। তথাকথিত প্রমাণনির্ভর চিকিৎসার নামে চিকিৎসার প্রতি অংশে আজ ওষুধকোম্পানির আধিপত্য প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা পাচ্ছে। এভিডেন্স-বেসড হওয়ার নামে চিকিৎসাই হয়ে উঠছে নৈর্ব্যক্তিক, আর এই পথে চললে চিকিৎসকের অপ্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। বিকল্প মডেলের খোঁজ আমাদেরও প্রয়োজন।

    কিন্তু, হোমিওপ্যাথরা কীভাবে ভাবছেন?

    আবারও না হয় হ্যানিম্যানসাহেবের কথায় আসি।

    Aphorism 22 : But as nothing is to be observed in diseases that must be removed in order to change them into health besides the totality of their signs and symptoms, and likewise medicines can show nothing curative besides their tendency to produce morbid symptoms in healthy persons and to remove them in diseased persons; it follows, on the one hand, that medicines only become remedies and capable of annihilating disease, because the medicinal substance, by exciting certain effects and symptoms, that is to say, by producing a certain artificial morbid state, removes and abrogates the symptoms already present, to wit, the natural morbid state we wish to cure. On the other hand, it follows that, for the totality of the symptoms of the disease to be cured, a medicine must be sought which (according as experience shall prove whether the morbid symptoms are most readily, certainly, and permanently removed and changed into health by similar or opposite medicinal symptoms1) have the greatest tendency to produce similar or opposite symptoms.

    অর্থাৎ, সেই ওষুধই কার্যকরী, যা সুস্থ মানুষের দেহে আলোচ্য অসুখের উপসর্গ তৈরি করতে পারবে।

    কিন্তু, এরপর হ্যানিম্যান বলেন,

    For the purpose of cure, the morbidly depressed vital energy possesses so little ability worthy of imitation since all changes and symptoms produced by it in the organism are the disease itself. What intelligent physician would want to imitate it with the intention to heal if he did not thereby sacrifice his patient?

    না এইতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। সেই যুগে, অসুখ মানে ভাইটাল এনার্জির গোলযোগ, অর্থাৎ মহাপ্রাণীটিরই সমস্যা, এই ধারণা সব প্যাথিতেই চালু ছিলো।

    কাজেই, এই যুক্তি মেনে, অসুস্থ রোগীকে গবেষণার গিনিপিগ বানাতে হোমিওপ্যাথদের মানা আছে।

    হ্যাঁ, এও মেনে নিলাম, হোমিওপ্যাথি এক সম্পূর্ণ ভিন্ন চিকিৎসাদর্শন। জীবনবিজ্ঞানের গবেষনায় যেমন গাণিতিক সূত্র শেষ কথা বলে না (যেমনটি বলে পদার্থবিদ্যায়), এলোপ্যাথির গবেষণা যে পথে চলে, সেই পথে হোমিওপ্যাথি নাও চলতে পারে?

    কিন্তু, তাহলে তাঁদের চলার পথটি কি? হোমিওপ্যাথ বন্ধুরা একটু খুলে বলবেন প্লীজ?

    হ্যানিমানসাহেব, তাঁর লেখায় প্রায়শই বলেছেন, এই দর্শন, শল্যচিকিৎসায় নিরাময় হয় না, এমন অসুখের জন্যে। তা, যাঁরা চিকিৎসার নামে সার্জিক্যাল রোগ দেরী করে জটিলতর করেন, তাঁরা হ্যানিম্যানকে মানছেন তো??

    হ্যানিম্যানসাহেব তো যথাসাধ্য দ্রুত নিরাময়ের কথা বলেছিলেন। আপনিও মানেন তো?

    আর ওষুধে কাজ হচ্ছে কিনা, সেই গবেষণাই বা কোন ধারা মেনে?

    এলোপাথাড়ি তর্কের পথ ছেড়ে যুক্তিসংগত বিতর্ক-আলোচনায় আসুন। বর্তমান স্বাস্থ্যসংকটের মুক্তির পথ তো একমাত্র কথোপকথনেই। আর কথোপকথন তো যেকোনো জায়গাতেই শুরু হতে পারে। তাই না?

    Some relevant quotes from William Osler, one of the doyens of modern medicine, to put this debate in proper context :

    “No regular physician would ever admit that the homeopathic preparations, ‘infinitesimals,’ could do any good as direct curative agents; and yet it was perfectly certain that homeopaths lost no more of their patients than others. There was but one conclusion to draw– that most drugs had no effect whatever on the diseases for which they were administered.”

    "Ask not what kind of illness the patient has, ask what kind of patient has the illness.....… No one individual has done more good to the medical profession than Hahnemann"

    “It is not as if our homeopathic brothers are asleep; far from it, they are awake (many of them at any rate) to the importance of the scientific study of disease.

    “It is distressing that so many good men live isolated in a measure from the great body of the profession. The grievous mistake was ours: to quarrel with our brothers over infinitesimals was a most unwise and stupid thing to do.”

    But....are the present day homeopaths doing the same?? Are they really following science??? And benefitting patients????

    The debate is on.

    P.S. যে প্রসঙ্গে এই লেখাখানা আরেকবার পোস্ট করা হলো, সেইটা "এই সময়" সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি উত্তর-সম্পাদকীয়। আমারই লেখা।

    মডার্ন মেডিসিন, ওরফে অ্যালোপ্যাথি, বাদ দিয়ে বাকি সবকিছুকেই একধারসে অবিজ্ঞান বলে দাগিয়ে দেওয়া অন্যায্য মনে হয়েছিলো।

    আবার, এই কথাটিকে গাণিতিক সমীকরণ ধরে বিপরীতটিও সত্যি, তা নয়। অর্থাৎ, এই কথার অর্থ এমন নয়, যে, অন্যান্য চিকিৎসাপদ্ধতির সবগুলিই বিজ্ঞানসম্মত, কার্যকরী ও উপযুক্ত। আমার বক্তব্য, আগেই জাজমেন্টাল না হয়ে এঁদের কথাও শুনুন। অন্তত শুনে দেখতে তো ক্ষতি নেই।

    সেই লেখাটাও এইখানে জুড়ে দিলাম। (প্রসঙ্গত, শিরোনামটি আমার দেওয়া নয়। তদজাত বিভ্রান্তির দায় আমি নিতে চাইছি না। পুরো লেখাটা, প্লীজ, পড়ে দেখুন।)

    http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=46548&boxid=37902
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ৬৫২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Debasis Bhattacharya | 340112.51.9004512.126 (*) | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৯49921
  • বাঃ, সম্ভাব্য সব কথাই এসেছে লেখাটিতে । হিস্ট্রি অফ মেডিসিন, ফিলোজফি অফ সায়েন্স, খণ্ডাখণ্ডবাদের দ্বন্দ্ব, র‍্যান্ডমাইজ্‌ড্‌ কন্ট্রোল্‌ড্‌ ট্রায়ালের মৌলবাদ, আধুনিক চিকিৎসার নৈর্ব্যক্তিকতা ............ । এক কথায়, হোমিওপ্যাথিতে যে রোগ সারে না, এবং এটি যে একটি বিশুদ্ধ ভুয়ো চিকিৎসা, এই তুচ্ছ কথাটা বাদ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কতাবাত্রা যা যা হতে পারে তার সবই হয়েছে । এবার আসুন, জমিয়ে তক্কো করি ।
  • Bishan Basu | 785612.40.8967.241 (*) | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৫49922
  • আমি আমার মতো করে ভেবেছি। আপনার ভাবনাও স্বাগত।

    কোনটা "বিশুদ্ধ ভুয়ো চিকিৎসা" জানিনা, কিন্তু কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি নিজেকে বিশুদ্ধ এবং সম্পূর্ণ বিজ্ঞান বলে দাবী করলে, তার মধ্যে সত্যির থেকে বেশী বাণিজ্য লুকিয়ে থাকে, এইটুকু বুঝেছি।

    আমি যুক্তির কথা বুঝি, কিন্তু চরমপন্থী যুক্তিবাদী নই। অতএব, একই ধরণের পদ্ধতি মেনে একবার সিরাম কোলেস্টেরল কমাতে স্ট্যাটিনের গুরুত্ব প্রমাণিত হলে এবং তার কয়েকবছর পরেই স্ট্যাটিন ক্ষতিকর ও খাবারের সাথে সিরাম কোলেস্টেরলের সম্পর্কহীনতা প্রমাণিত হলে, নিখাদ বিজ্ঞানের চাইতে বিশুদ্ধ ধান্দাবাজিই চোখে পড়ে।

    হোমিওপ্যাথি কার্যকরী কিনা, সে বিষয়ে নিদান হাঁকার আমি কেউই নই। এর কার্যকরিতা প্রমাণের জন্যে কোন পদ্ধতি আঁকড়ে ধরবেন, সেই কথা হোমিওপ্যাথরাই ভাবুন।

    আমি এই পদ্ধতির চিকিৎসক নই। এবং নিজের বা নিকটজনের চিকিৎসা হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে করাবো, এমনও নয়।

    এই পদ্ধতির মধ্যেকার যুক্তির অভাবগুলো বলেছি। প্রতিযুক্তিও স্বাগত।

    সামান্য ডাক্তার আমি। হাইকোর্টের বিচারক হতে পারিনি। কাজেই, একেবারে ফাইনাল ভার্ডিক্ট দিয়ে উঠতে পারিনি, এ আমার ব্যর্থতা।

    চিকিৎসার একটা মূল কম্পোনেন্ট ভরসা এবং আস্থা। প্লাসিবো এফেক্টও কিছু কম কার্যকরী নয়। সেইখানে হোমিওপ্যাথির সাফল্য প্রশ্নাতীত। ভুয়ো-জালি-লোক ঠকানো ইত্যাদি বলে উড়িয়ে দিতে চাইলে তো এই সাফল্য থেকে শিক্ষার সম্ভাবনাটি প্রথমেই শেষ হয়ে যায়।

    আবারও বলি, হয়তো চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসজাত নিশ্চয়তাবোধের অভাবের জন্যেই, নিদান হাঁকার চাইতে কথোপকথনের উপর আমার ভরসা, একটু হলেও, বেশী।
  • কুশান | 342323.176.01.94 (*) | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৬49923
  • ইন্টারেস্টিং লেখা। ভাববার মতো জায়গাটি ধরেছেন। আমি নিজে চিরকাল এই ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি, যে হোমিওপ্যাথির ব্যাপারটা আসলে কী? যারা এর বিরোধী, তারা একে সম্পূর্ণ ধুয়ে দ্যান। যারা এর পক্ষে তারা ওই ঝাঁকানোর সঙ্গে পাওয়ার বেড়ে যাওয়া, রুগী বুঝে ব্যবস্থা, যে কোনো ওষুধ দেওয়া যেতে পারে, এসব বলেন। কিন্তু, অনেক উত্তর পাওয়া যায় না।
    ৮০ র দশকের বেতারে হ্যানিম্যান এবং এলোপ্যাথ বনাম হোমিওপ্যাথির দ্বন্দ্ব নিয়ে একটা চমৎকার নাটক শুনেছিলাম। আমার মাতামহ একটি গ্রামে হোমিও প্র্যাকটিস করতেন। দূর দুরান্তের গ্রাম থেকে লোকে আসত। ফিস ছিল এক টাকা। কারুর কারুর জন্য ফ্রি। দাদু প্রচুর পড়তেন। সময় দিতেন। ফলে এই ব্যাপারটা নিয়ে একটা আগ্রহ আজও রয়ে গেছে। যদিও এসব নিয়ে কুড়ি বাইশ বছর বয়সে অবৈজ্ঞানিক বলে চেঁচামেচি করেছি। তবে আজকাল আর কিছুই ওড়াতে পারি না। মনে হয়, একটু ভেবে দেখি না।
    ডেফিনিটলি আমি আজও মনে করি না জ্যোতিষ ও আংটি কোনো বিজ্ঞান। কিন্তু, হোমিও তো দীর্ঘদিন, সরকার অনুমোদিত কলেজের কোর্স। এমনকী হোমিওর যারা ছাত্র, তাদের এনাটমি সহ অনেক কিছুই শিখতে হয়। সেক্ষেত্রে আপত্তির জায়গাটা কোথায়?
    তাছাড়া এলোপ্যাথির আজকে যেটা মনে হচ্ছে সঠিক, পাঁচ বছর পরে সেটা বাতিল হয়ে যাচ্ছে। তাহলে ঠিক কি ভুল এটা তো ধ্রুব কিছু নয়।
    বিষাণকে ধন্যবাদ। নতুন আলোয় দেখানোর জন্য।
  • sm | 2345.110.014512.6 (*) | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:১৮49925
  • প্রচুর এলোপ্যাথি ঔষধ আছে যা বিস্তর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এর পর,মার্কেটে ছেড়ে উঠিয়ে নেওয়া হয়েচে।এর মধ্যে এন্টিবাইওটিক্স,এন্টি এলার্জি,এন্টি ওবেসিটি,এন্টি ডিপ্রেসান্ট,এন্টি এপিলেপ্টিক সবধরণের ঔষধ আছে।
    তারা বেশ কিছু ক্ষতি করার পর, তবে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।মূল কারণ,বৃহৎ ফার্মা কোম্পানির চাপ ও ঔষধের কার্যকারিতা সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞান।অর্থাৎ ঠিক কিভাবে ঔষধ টি কাজ করছে ,সে সম্পর্কে আরো বিশ্লেষণ ও গবেষণার প্রয়োজন ছিল।আরো ট্রায়াল,আরো সেফটি প্রোফাইল চেক করার দরকার ছিল।
    এটাই কিন্তু মডার্ন সায়েন্স।ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া।
    চিকিৎসার অন্যান্য শাখা গুলিকেও অনুরূপ ট্রায়াল এর মধ্য দিয়ে যাওয়া উচিত।কিন্তু হোমিওপ্যাথির একটি নিজস্ব সমস্যা আছে।
    হোমিওপ্যাথি কে যতবার চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে,তারা বলতে চেয়েছে ,তাদের শাস্ত্র ,মানুষের শারীরবৃত্তীয়ও পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা করে।অর্থাৎ ডায়াবিটিস এর ক্ষেত্রে এলোপ্যাথির মতো সুগার কমানোর চেয়েও বেশি ফোকাস হবে ওই ব্যক্তির শারীরবৃত্তিও পরিবর্তন, যা নাকি ডায়াবিটিস এর কমপ্লিকেশন বা জটিলতা গুলির বিরুদ্ধে সফল হবে।
    সুতরাং ব্যক্তিগত মতামত বা এনেকডোট এক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা।
    ব্যক্তিগত ভাবে ক্রনিক পেইন,চর্ম রোগ,সর্দি কাশি,এগুলোতে অনেকে আরাম পান বলে থাকেন।
    ভারতে হোমিওপ্যাথি চর্চা হয়,সরকারি কলেজ আছে।স্বীকৃতিও আছে।
    সরকারের উচিত বড় বড় স্টাডি কনডাক্ট করে এর এফিক্যাসী যাঁচাই করে নেওয়া।
  • pinaki | 0189.254.455612.105 (*) | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৯:১৬49926
  • জলের মেমরি, বা জলে কার্যকরী মলিকিউলের ছাপ থেকে যাওয়া - এ তো এখনও প্রমাণ হয়নি যদ্দূর জানি। সেই থিওরি নিয়ে কি কোনো গবেষণা চলছে? বা কারুর কিছু জানা আছে শেষ কী খবর এই বিষয়ে? এছাড়া আমার আর একটা প্রশ্ন আছে। বাজারে যে হোমিওপাথি ওষুধগুলো সবসময় পাওয়া যায়, মানে যেগুলোতে মা/মাসী/পিসিদের খুব ভালো 'কাজ হয়' বলে শুনি, সেগুলো কি সত্যিই ওরকম প্রচুর প্রচুর লঘুকরণের মাধ্যমে বানানো ক্লাসিকাল হোমিওপ্যাথি ওষুধ? নাকি সেগুলো হোমিওর নামে আসলে গাছগাছড়া থেকে বানানো কিছু আয়ুর্বেদ টাইপের ওষুধ? যেমন ধরা যাক ক্যালেন্ডুলা। এটা কেটে যাওয়া জায়গায় রক্ত বন্ধ করতে বেশ কার্যকরী শুনেছি। এবার এটা নিশ্চিতভাবে প্ল্যাসিবো নয়। এটা সত্যিই কাজ করে কি করে না যাচাই করাও খুবই সহজ। আমার ব্যক্তিগত ধারণা এটা কাজ করে। যদিও কোনো স্টাডি আমি করি নি। ছোটবেলায় কখনও সখনও লাগানোয় কাজ হয়েছে বলেই মনে পড়ে। তবু সেটাকে যদি গুরুত্ব না-ও দিই, আমার 'কাজ করে' বলার পিছনে যুক্তিটা উল্টো দিক থেকে। মানে এটা যেহেতু প্ল্যাসিবো হওয়া সম্ভব নয়, তাই একেবারেই কাজ না করলে এটা বাজারে চলত না। তো এটা কি আদৌ ঐরকম অতিরিক্ত লঘু করা হোমিওপ্যাথি? নাকি গাছগাছড়াজাত উপকারী মলিকিউলপরিপূর্ণ একটি ওষুধ? কেউ জানে? একই কথা বলা যায় আর্নিকা, থুজা, নাক্সভমিকা, পালসাটিলা - যেগুলো লোকে এমনকি ডাক্তার না দেখিয়েও নিজেরা নিজেরাই খায় টায় বাজার থেকে কিনে। সেগুলোর কেসটা ঠিক কী? সেগুলোয় উপস্থিত মলিকিউল নিয়ে কোনো স্টাডি কি হয়েছে? দেবাশীষবাবু জানেন কিছু?
  • Bishan Basu | 785612.40.341212.240 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৪49935
  • Primum non nocere নীতি মেনে চলতে হলে ক্যানসারের চিকিৎসা করা মুশকিল। কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি, দুইয়েরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রচুর। কিন্তু, অসুখ বেড়ে যাওয়ার চাইতে খারাপ তো কিছুই নয়। বইয়ের ভাষায়, no adverse effect can be deadlier than disease recurrence. কাজেই, ক্যানসারের চিকিৎসার সময় হিপোক্রেটিসকে একটু সরিয়ে রেখেই ভাবতে হয়।
  • কুশান | 342323.176.12.142 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৬49927
  • পিনাকী, কোথাও শুনেছিলাম, সত্য মিথ্যা জানিনা ন্যানো পার্টিকল নাকি খুব বেশি ডাইলুট দ্রবণে কাজ করে এবং হোমিওর ব্যাপারটাও নাকি ওইরকম অতিলঘু দ্রবণে কার্যকরী। ওই মেমরি শব্দটাও আমি শুনেছি। কিন্তু এগুলো নিয়ে প্রশ্ন করে খুব স্পষ্ট উত্তর পাইনি।

    এক বন্ধু রিসেন্টলি বলল যে, এলোর ওষুধের সাইড এফেক্ট দূর করতেও হোমিও কার্যকরী। বিশেষত anti depressant বা anti psychotic drug.
    কিন্তু সেক্ষেত্রেও কীভাবে কাজ করে তার কোনো সদুত্তর পাইনি।
  • Debasis Bhattacharya | 561212.187.4534.32 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৯49936
  • মাননীয় বিষাণবাবু, একজন আধুনিক চিকিৎসক হয়েও "হোমিওপ্যাথি কার্যকরী কিনা, সে বিষয়ে নিদান হাঁকার আমি কেউই নই" ঘোষণা করার মত অসামান্য বিনয় প্রকাশের পরও যে বলতে পেরেছেন, "জ্যোতিষশাস্ত্র আমার কাছে অবিজ্ঞান", এতে বোঝা যায় বিনয়ের মতই আপনার কৃপাও অসামান্য । দুটো একসাথে কীভাবে পারেন সেটা আপনার কাছ থেকে জেনে নিয়ে অজ্ঞতা নিরাময়ের আশায় থাকব । আশা করি, এ নিয়ে অতি মূল্যবান দুচার কথা এই থ্রেডে শুনতে পাব ।

    আপাতত বলি, 'বিশুদ্ধ ভুয়ো চিকিৎসা" কাকে বলে সেটা খুব কঠিন প্রশ্ন বোধহয় নয়, অন্তত আপনার মত একজন প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের কাছে । যে চিকিৎসায় আদৌ রোগ সারে না, কিন্তু সারছে বলে দাবি করা হয়, সেটাই ভুয়ো চিকিৎসা । এখন, যদি আপনি মনে করেন যে হোমিওপ্যাথিতে রোগ সারলেও সারতে পারে, তাহলে নিশ্চয়ই আপনার কাছে তেমন তথ্য আছে । আমাদেরকে যদি খুব অযোগ্য বলে মনে না হয়, তো সেইসব তথ্য সরবরাহ করে সমৃদ্ধ করবেন ।

    আপাতত বরং আমি একটু বলে নিই, হোমিওপ্যাথিতে কেন রোগ সারার কথা নয়, এবং হোমিওপ্যাথি কীভাবে এক মৌলিক অযুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে । আমার মত অবিশেষজ্ঞ লোক যখন এই কথাটা গুছিয়ে লিখতে পারছে, তার অর্থ অতি সহজ --- এই অযুক্তিটা বুঝতে বিশেষজ্ঞতা লাগে না, স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান ও যুক্তিবোধই যথেষ্ট ।
  • Debasis Bhattacharya | 561212.187.4534.32 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫১49937
  • কে বলল হোমিওপ্যাথিতে রোগ সারে না,হোমিওপ্যাথিতে হয়না এমন কিছুই নেই । হোমিওপ্যাথিতে যদি বিশ্বাস থাকে,তো শিশি থেকে গুলি বার করুন আর খান,হাজার হোক তেতো তো আর নয় । পেট কনকন,মন কেমন,পরীক্ষা ফেল,বউ পালানো --- সব সেরে যাবে ওই মিষ্টি গুলি চুষে চুষে খেলে । আর তার ওপর, ওই যে, কোনও সাইড এফেক্ট নেই ! এই বাজারে কম সুবিধে, বলুন না ? কয়েক বছর আগে ব্রিটেনে খোলা রাস্তায় একদল প্রতিবাদী ছাত্র সর্বসমক্ষে শিশি শিশি হোমিও-গুলি খেয়ে দেখিয়েছেন,এতে লাভ বা ক্ষতি কিছুই হয় না (ইয়ে, রোগির পকেট থেকে কিছু টাকা অবিশ্যি হোমিওপ্যাথের পকেটে যায়)।

    হোমিও-প্রেমী এই পর্যন্ত পড়েই চমকে ঊঠে বলবেন, অ্যাঁ, লাভ হয় না আবার কি কথা ? বললেই হল হয় না, আলবাত হয় । আমি নিজের চোখে হোমিওপ্যাথি করে কত লোককে সেরে যেতে দেখেছি । কতশত লোক যে সুফল পেয়েছে, খোঁজ নিয়েছেন কোনওদিন ?

    এখন, মুশকিল কি জানেন, এই "অনেকে সুফল পেয়েছেন" কথাটা অনেকটা "আমার মেজোপিসি নিজের চক্ষে রান্নাঘরে ভূত নাচতে দেখেছে" গোছের । এইসব কথাবার্তা যে বিশেষ কাজের না,এইটা সর্বাগ্রে বুঝতে হবে ।
    কে ঠিক কি দেখেছেন তা খুঁটিয়ে না জেনে মন্তব্য করা উচিত না । মানুষ যা 'দেখে' বলে ভাবে আর আসলে যা দেখে, এই দুটোর মধ্যে প্রায়শই বড়সড় ফাঁক থাকে,বিজ্ঞানীরা জানেন । সেই জন্যেই তো সাধারণ দেখাশোনার ওপর পুরো ভরসা না করে সতর্ক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা । তবে কিনা,আসল কথাটা হচ্ছে, যা বলছেন ঠিক তাইই যদি দেখেও থাকেন,তাতেও কিন্তু হোমিওপ্যাথির কার্যকারিতা প্রমাণ হয়না । আপনাদের নিজস্ব দাবি অনুযায়ী,আপনারা দেখেছেন,কোনও একজন হোমিও-ওষুধ খেলেন (ঘটনা 'ক')এবং তারপর সেরে গেলেন (ঘটনা 'খ')। তা থেকে আপনাদের সিদ্ধান্ত,'ক'-ই 'খ'-এর কারণ । যুক্তিশাস্ত্রের বই যদি খোলেন তো দেখবেন,এ ধরনের যুক্তি হচ্ছে কুযুক্তি,সংক্ষেপে এর নাম 'পোস্ট হক ফ্যালাসি'। পুরো ল্যাটিন নাম হচ্ছে 'পোস্ট হক,এর্গো প্রপ্টার হক’,অর্থাৎ,'অমুকটা তমুকের আগে ঘটেছে,অতএব অমুকই তমুকের কারণ'। কেন যে এটা কুযুক্তি,সেটা একটু ভাবলে নিজেই বুঝবেন । উঁহু, ল্যাটিন নাম দেখে ভয় পাবার দরকার নেই । ধরুন একটা ফলন্ত তালগাছে একটা কাক বসে আছে,এবং কাকটা হঠাৎ উড়ে গেল,আর সঙ্গে সঙ্গে একটা পাকা তালও ধপ করে নিচে পড়ল । এখন,এ থেকে কি আপনি সিদ্ধান্তে আসতে পারেন যে,কাকটা যেহেতু তাল পড়ার আগেই উড়েছে,অতএব ওটাই তাল পড়ার কারণ ? বোধহয় পারেন না । একই কারণে,হোমিওপ্যাথি খাবার পরে কোনও কিছু সেরে গেলেই সেটা হোমিওপ্যাথির কারণেই সেরেছে এটা প্রমাণ হয়না । এরকম প্রমাণ করার জন্য এক সুদীর্ঘ প্রমাণ-প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়,তার নাম 'র‍্যান্ডমাইজ্‌ড্‌ ডাব্‌ল্‌ ব্লাইন্ড কন্ট্রোল্ড্ ট্রায়াল'। আধুনিক ওষুধ এভাবেই প্রমাণিত হয়,কিন্তু কোনও হোমিওপ্যাথিক ওষুধই এভাবে প্রমাণিত নয় ।

    হোমিওপ্যাথি অবশ্য শুধুই কেজো ফলাফল নয়, তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার কথাও বলে থাকে, যদিও গোলমাল আছে সেখানেও । না,'Like cures like' জাতীয় সাধারণ নীতিবাক্যের কথা বলছি না, ওগুলো তো অভিজ্ঞতামূলক আপ্তবাক্য গোছের,সেখানে ‘বৈজ্ঞানিক’ ব্যাখ্যার সচেতন ভাণ নেই । কিন্তু, আধুনিক 'ব্যাখ্যা'-র নাটক আমাদের দেখা আছে । জাক বঁভঁনিস্ত (Jacques Benveniste) আর লুক মঁতাইঁয়ে-র (Luc Montagnier) রোমহর্ষক গল্প শুনেছেন কি ? মঁতাঁইয়ে-র প্রলাপ ও বুজরুকি অতিশয় সুবিদিত,ওয়েবসাইটেও সুপ্রাপ্য । সব তথ্যই আজ নখের ডগায়,কাজেই লিঙ্ক দেওয়া বৃথা । নিজেই গুগল করে দেখে নিন । নামের উচ্চারণ যতটা পারা যায় মূলানুগ করে দিলাম,আর ইংরিজি বানান যোগ করলাম । গুগল-এ খুঁজতে সুবিধে হবে ।

    আমি বরং এখানে হোমিওপ্যাথিক ব্যাখ্যার পদ্ধতিগত দিক নিয়ে কিছু বলি । আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা যখন কোনও ওষুধের কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করবার চেষ্টা করে,সে ব্যাখ্যা সফল বা ব্যর্থ যাই হোক না কেন,হোমিওপ্যাথিক ব্যাখ্যার সাথে তার একটা সহজ কিন্তু মৌলিক পার্থক্য থাকে । আধুনিক বিজ্ঞানে এ রকম ব্যাখ্যার প্রশ্ন তখনই আসে যখন কার্যকারিতার অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হই । আর হোমিও-শাস্ত্র সেই 'কার্যকারিতা'-র ব্যাখ্যা দিতে চায়,আসলে যার অস্তিত্বই প্রমাণ করা যায়নি ।

    বিজ্ঞানের সঙ্গে অবিজ্ঞানের অনেক তফাতের কথাই আমরা শুনে থাকি, কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ তফাত সাধারণত উল্লেখ করা হয় না --- সত্যিকারের বিজ্ঞানগুলো সবই পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে যুক্ত । কোনও একটি বিশেষ বিজ্ঞানের তথ্য বা তত্ত্ব দাঁড়াতেই পারবে না, যদি অন্য এক বিজ্ঞানের সর্বজনগ্রাহ্য সত্যের সাথে তার অসমাধানযোগ্য এক বিরোধ বাধে । বাস্তব জগৎটা যেহেতু একটাই, আর বিভিন্ন বিজ্ঞান যেহেতু তারই বিভিন্ন দিকের খোঁজ,সেহেতু এটা হতেই হবে । সেইজন্যেই আমরা সুদূর নক্ষত্রে জীবনের উপাদান দেখে নিশ্চিন্ত হই,এবং রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় রসায়ন ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যার সাহায্য নিতে পারি । যুক্তিশাস্ত্রের এই সব নিয়ম বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-কলা সবেতেই মানতে হয়,কারণ সবই এই একটি মাত্র যৌক্তিক জগতেরই অন্তর্গত । ঠিক সেই কারণেই,হোমিওপ্যাথি মূলগতভাবে সন্দেহজনক কারণ তা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের সাথেই সঙ্গতিপূর্ণ নয় । আমাদের জানা ফিজিক্স আর কেমিস্ট্রি যদি সত্যি হয়, তবে হোমিওপ্যাথিতে রোগ সারার প্রত্যাশা ছেড়ে দেওয়াই ভাল, কারণ হোমিওপ্যাথির ওষুধের উপাদান যে পরিমাণ পাতলা করা হয় তাতে গোটা শিশিতে এক কণাও ওষুধ থাকবে না । তাই,হোমিওপ্যাথি রোগ সারাতে পারেনা শুধু এটুকু বললে আসলে কিছুই বলা হয় না,বলতে হয় হোমিওপ্যাথির রোগ সারাবার কোনওদিনই কোনও কথা ছিল না। যদি হোমিওপ্যাথি আদৌ রোগ সারাতে পারত, তো তাতে আমাদের জানাচেনা বিজ্ঞানগুলো সবই মিথ্যে হয়ে যেত ।

    কেউ কেউ আবার বলেন, হোমিওপ্যাথিকে মানতে হবে, কারণ অমুক মস্ত লোক, তমুক নোবেল লরিয়েট বিজ্ঞানী, হবুচন্দ্র রাজা এবং তাঁর গবুচন্দ্র মন্ত্রী, এঁরা সকলেই হোমিওপ্যাথি মানেন । এখানে জানা দরকার, বড় বড় লোকেদের দেখিয়ে কিছু প্রমাণ করতে যাওয়া যুক্তিশাস্ত্রে নিষিদ্ধ,তাকে বলে 'অ্যাপিল টু অথরিটি'।

    অনেকের প্রশ্ন, আধুনিক চিকিৎসা-ব্যবস্থায় তো অনেকই অযুক্তি অমানবিকতা প্রতারণা এইসব আছে, রুগীরা চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায়শই ধনেপ্রাণে মারা যাচ্ছেন । তাহলে হোমিওপ্যাথি গ্রহণযোগ্য হবে না কেন ?
    এর উত্তর কঠিন হলেও অসম্ভব নয় । আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার এইসব ত্রুটিগুলো অবশ্যই প্রতিবাদযোগ্য, এবং প্রতিবাদ হচ্ছেও। আধুনিক চিকিৎসকরাই তো সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ করছেন, প্রতিবাদীরা সংখ্যায় যতই নগণ্য হোন না কেন । তাঁরা না প্রতিবাদ করলে তো আমরা এইসব অব্যবস্থার কথা ভাল করে জানতে ও বুঝতে পারতামই না । এমনকি, চিকিৎসক না হয়েও আপনি প্রতিবাদ করতে পারেন,করা উচিতও বটে । কিন্তু এগুলো ঘটছে বলেই হোমিওপ্যাথরা মানুষকে চিকিৎসার নাম করে বেচারা রুগিদেরকে অ্যালকোহল আর চিনি খাওয়াবেন,এ কেমন কথা বলুন তো ?

    হ্যাঁ, ভুলকে ভুল আর বুজরুকিকে বুজরুকি বলুন, কারণ সেটা বলবার অধিকার একশোবার আছে --- আমার আপনার সবারই । সোজা কথাটা সোজাভাবে বললে বিনয়ের কোনও ঘাটতি হয়না,অহঙ্কারও প্রকাশ করা হয় না ।
  • Debasis Bhattacharya | 561212.187.4534.32 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৪49938
  • হোমিওপ্যাথির অকার্যকারিতা নিয়ে কত সব কথাবার্তা হয়ে গেল, ইউরোপে একের পর এক দেশে সরকার হোমিওপ্যাথি থেকে হাত তুলে নিচ্ছে, নিশ্চয়ই আপনি তার খবর রাখেন । আসলে, হোমিওপ্যাথিতে পরিসংখ্যানগত 'প্রমাণ' পাওয়া গেছে বলে যা যা বলা হয় তার সবই মিথ্যে । এ সমস্ত 'পেপার' সাধারণত হোমিওপ্যাথরা নিজেরাই লেখেন, যার গবেষণার মান অত্যন্ত নিচু । 'ডাবল ব্লাইন্ড' পরীক্ষানিরীক্ষার কঠোর নিয়মকানুন তাঁরা আদৌ ঠিকঠাক মানেন না । অসংখ্য পরীক্ষানিরীক্ষার ফলাফল থেকে মোদ্দা কথাটি জানতে যে 'মেটা-অ্যানালিসিস' বা 'সিস্টেমেটিক রিভিউ' করা হয়, তাতে নিচু মানের কারণে এইসব গবেষণাকে বিবেচনাই করা হয়না । আর, ভাল মানের গবেষণা যা যা হয়, তার ফলাফল সাধারণত শূন্যই আসে । এইসব সমীক্ষার ফলাফল 'কক্‌রেন ডেটাবেস'-এ পাওয়া যায়, দেখে নিতে পারেন । হ্যাঁ, নামি জার্নালে বেরোনো বিরল দুয়েকটি গবেষণাপত্রও আছে, যাতে হোমিওপ্যাথির কার্যকারিতার দাবি করা হয়েছে, এবং হোমিওপ্যাথরা তাঁদের লেখাপত্রে কুমির ছানার মত সেগুলোকেই বার বার তুলে ধরতে থাকেন । কিন্তু, নামি জার্নালে এইসব বেরনোর পরই তার কড়া সমালোচনা হয়, এবং তার ফলাফল অগ্রণযোগ্য বলে অচিরেই বাতিল হয়, কিন্তু সে সব কথা চেপে গিয়ে হোমিওপ্যাথরা ওই দু-একটি ব্যাঙের আধুলি সম্বল করে বিকট হইচই লাগান ।
  • sm | 2345.110.014512.6 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৮49928
  • বিষান বাবু, আপনি বরঞ্চ কনভেনশনাল কেমোথেরাপি -এর কার্যকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লিখুন।অনেকএর মতে,এতে প্রচুর ক্ষতি হয়।
    এই সম্পর্কে আপনার মতামত লিখুন।
  • b | 4512.139.6790012.6 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৬49939
  • দেবাশিস বাবুর ব্যারামটা চেনা। হোমিওপ্যাথিতে অবিশ্বাস। থুজা ৩০। সকালে, খালিপেটে, ৭ দিন।
    অবিশ্বাসী মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্যে। ঐ সাতদিন ডাবের জল, অড়র ডাল আর পাকা পেঁপে খাবেন না।
  • b | 562312.20.2389.164 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩২49929
  • বিষাণাবাবুর কথায় একমত, কিন্তু সবটা না। এস এম উপরে অনেকটাই লিখে দিয়েছেন।
    ফার্মা কোম্পানীর চাপ না থাকলেও, মানুষের শরীর নামক অত্যাশ্চর্য্য যন্ত্র সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। শত ক্লিনিকাল ট্রায়াল করলেও কিছুটা অজানা থেকেই যায়। কাজেই ডিসপিরিন একবার হিরো থেকে ভিলেন হয়, কখনো তার উল্টোটা। কিন্তু এভাবেই এগোনো। নান্যপন্থাবিদ্যতে।
    আর কিভাবে কাজ করে এই কথাটা অ্যালোপ্যাথির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ধরুন এখন সব জায়গাতেই বলে, ওবেসিটি কমালে ক্যান্সারের , বা বিশেষ কিছু ক্যান্সারের, হার কমবে। এখন তার শারীরবৃত্তীয় যোগসূত্র এখনো ভালোভাবে জানা যায় নি। কিন্তু সেই যোগসূত্র না জানা গেলেও ডাক্তার/ জনস্বাস্থ্য আধিকারিক নিশ্চয় হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। ভেবে দেখুন, একটা সংখ্যাতাত্ত্বিক কোরিলেশনকে কজেশনের পর্য্যায়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সেটা উপেক্ষা করা প্রায় আত্মহত্যার সামিল।
  • sm | 2345.110.234512.53 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:২৭49931
  • এই রিপোর্টিং টা যদিও গল্পের মতন কিন্তু পড়লে ভালো লাগবে।
  • sm | 2345.110.344512.29 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:৫১49932
  • এই রিপোর্টিং টা যদিও গল্পের মতন কিন্তু পড়লে ভালো লাগবে।
  • Bishan Basu | 785612.40.0123.154 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:০১49933
  • সবাইকে ধন্যবাদ, সুচিন্তিত মতামতের জন্য।

    ১. র‍্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল, এখনও পর্যন্ত চিকিৎসার কার্যকারিতা যাচাইয়ের যতোগুলি পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং সবচাইতে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু, এর কিছু অনিবার্য দুর্বলতাও আছে।

    কাজেই, এইটার বদলি অন্য কিছু উপায় আছে কিনা, সেইটাও খুঁজে চলা কর্তব্য।

    ২. অনিবার্যভাবেই মাল্টিসেন্ট্রিক ট্রায়াল কন্ট্রোলড - ইন্ডাস্ট্রি দ্বারাই কন্ট্রোলড। নতুন ওষুধ বাজারে আসার পদ্ধতিটিও আজব। দুটি পজিটিভ ট্রায়ালের তথ্য থাকলেই ছাড়পত্র পাওয়া যায়। এবং মাথায় রাখুন, ট্রায়ালের ফল নেগেটিভ হলে কোম্পানি অনায়াসেই সেই ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করে না, কেননা তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

    ৩. নতুন ড্রাগ পরীক্ষিত হয়, অধিকাংশক্ষেত্রেই এবং আরও বিশেষ করে দুরারোগ্য ব্যাধির ক্ষেত্রে, প্লাসিবোর এগেইনস্টে। অর্থাৎ ট্রায়ালের তথ্যানুসারে, জানা যায়, নতুন চিকিৎসা প্লাসিবোর তুলনায় ভালো কিনা। এখন যে চিকিৎসা চালু আছে, তার তুলনায় ভালো কিনা, এই পরীক্ষা করার ঝুঁকি, সাধারণত, কোনো কোম্পানিই নেন না ওষুধ বাজারে আনার মুহূর্তে। কিন্তু, অনায়াসে সেই নতুন ওষুধ অ্যাকাডেমিক বডি-র রেকমেন্ডেশন পেয়ে যায় কয়েকমাসের মধ্যেই। এবং চিকিৎসকেরা প্রায়শই সেই গাইডলাইন মানতে বাধ্য, কেননা আদালতে গাইডলাইন কেন মানেন নি, তা প্রমাণ করা দুঃসাধ্য, বিশেষত একজন অচিকিৎসকের সামনে।

    বছরদুয়েকের মধ্যে এরকম অনেক ওষুধই বর্তমান চিকিৎসার তুলনায় অকার্যকরী প্রমাণিত হয়, বা বিপজ্জনক বলে জানা যায়, এবং বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে অবশ্য কোম্পানির লাভটি সুরক্ষিত হয়ে গিয়েছে।

    সবমিলিয়ে, অন্তত বর্তমান ব্যবস্থার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিকল্প ভাবা জরুরী।

    লেখাটির এই অংশ নিয়েই বেশীর ভাগ ভুলবোঝাবুঝি। তাই, স্পষ্ট করে বললাম।

    হোমিওপ্যাথির উপর আমার খুব একটা আস্থা আছে, তা নয়। নিজের বা পরিজনের চিকিৎসার জন্যেও আমি তাঁদের দ্বারস্থ হই, এমন নয়।

    কিন্তু, বিপুল সংখ্যার মানুষ এই চিকিৎসাপদ্ধতির উপরে আস্থা রাখেন, সুফল পেয়েছেন বলে দাবি করেন। ন্যানোটেকনোলজি ইত্যাদি দিয়ে হোমিওপ্যাথিকে জাস্টিফাই করার অধুনা যে প্রয়াস চলেছে, সেইটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় না।

    হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদেরই ভেবে দেখতে হবে, তাঁরা ঠিক কোন পথে নিজেদের চিকিৎসাপদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাই করবেন।

    পুনঃ - ক্যানসার কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি নিয়ে পরে কোনো এক সময় অবশ্যই লিখবো।
  • sm | 2345.110.344512.29 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১০:৫৭49934
  • আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতিও বেশ জটিল। ধরুন একজনের অস্টিওআর্থ্রাইটিস হয়েছে। বাংলায় যাকে বাত বলে। বিভিন্ন জয়েন্টে পেইন।
    এখন এই অসুখের কোন কিউরেবল চিকিৎসা নেই। যা করা যেতে পারে তা, হলো এনালজেসিক্স বা ব্যথা উপশম কারি মেডিসিন।লংটার্ম ইউজ করলে কিডনির সমূহ ক্ষতি।
    হু এর ডেফিনিশন মতে ,স্বাস্থ্যের মূল লক্ষ হলো ফিজিক্যাল,মেন্টাল ও সোশ্যাল ওএলবিয়িং। এক্ষেত্রে ব্যথার ঔষধ দিয়ে চিকিৎসক সঠিক কাজ করছেন,অন্য দিকে চিকিৎসক হবার সময় হিপোক্রেটিক ওথ ঠিক মতো পালন হচ্ছে না।যা কিনা নির্দেশ করে রোগীর ভালো না করো,অন্তত ক্ষতি করো না।
  • Debasis Bhattacharya | 340112.51.9004512.117 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৩49940
  • হে হে । আর, তারপর কোস্টোকাটিন্য তকন হলে কে দেকবে, অ্যাঁ ?
  • b | 562312.20.2389.164 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৪49941
  • চায়্না ৩০। ঐ ঐ ঐ। রসগোল্লা, নিমপাতা আর আলকাতরা।
  • সুব্রত রায় | 342323.176.671212.120 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৭49942
  • বিষাণবাবুর রান্নার হাতটি চমৎকার! হোমিয়োপ্যাথির একটা গুলির সাথে এক চামচ কুন, আধা চামচ পপার আর সিকি ফোঁটা উত্তরাধুনিকতা মিশিয়ে উত্তম খিঁচুড়ি রেঁধেছেন। কেবল মুশকিলটা হল ফোড়নের মতন করে মাঝেমধ্যে ডিসক্লেমার জুড়ে দিয়েছেন। এমনকি, 'এই সময়'-এ নিজের লেখার শিরোনামটুকুর দায়ও অন্যের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। খুবই রক্ষে যে, এখনও গোটা লেখাটির দায় ঘাড় থেকে নামাননি। তবে অচিরে যে সে সম্ভাবনা নেই, তা জোর গলায় বলা যাচ্ছে না!
  • সুব্রত রায় | 5645.123.4512.98 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৩49949
  • বিষাণবাবু, আপনি ঠিকই লিখেছেন। আমি ছোটোখাটো পত্র-পত্রিকায় দু’-একটা লেখা লিখলেও খবরকাগজে কখনও উত্তর-সম্পাদকীয় লিখিনি। খুব রক্ষে, আপনার মতো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি! তবে কী জানেন, ওই যে কুন-পপার-উত্তরাধুনিকতার অনুপানের কথা লিখেছিলাম...সেটাতেই বোধহয়...বড়োই কনফিউশান। বেচারা সম্পাদক! তবে ফেসবুকের ওপর খামোকা এতটা খাপ্পা না হলেই পারতেন। উঠতি লেখককূলের মকশো করার জন্য বেড়ে জায়গা ওটা। আর সত্যিই কি আপনি বিশ্বাস করেন যে, ভাট পরিবেশনের কোনো নির্দিষ্ট স্থান-কাল-পাত্র আছে?

    যাক্ গে। প্রথমদিককার মন্তব্যে জলের স্মৃতিশক্তি নিয়ে কিছু কথা উঠেছিল, তা নিয়ে কয়েকটা কথা বলা যাক। ১৯৮৮ সালে নেচার পত্রিকা কিঞ্চিৎ টালবাহানার পর এমন একটি গবেষণাপত্র ছেপে দেয়, যা গোটা বিজ্ঞানীমহলকে নাড়া দিয়ে যায়। ফ্রান্সের সম্মানজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান INSERM-এর একদল বিজ্ঞানী দাবি করেন যে, ১০^-১২০ মাত্রায় লঘু অ্যান্টি-IgE অ্যান্টিবডির দ্রবণ আমাদের রক্তে বিশেষ এক প্রকারের শ্বেতরক্তকণিকায় উপস্থিত ইমিউনোগ্লোবিন ই নামক অ্যান্টিবডির সাথে বিক্রিয়া করে হিস্টামিন নিঃসরণ ঘটিয়েছে। যেহেতু এই মাত্রায় লঘু দ্রবণে অ্যান্টি-IgE অ্যান্টিবডির একটি অণুও থাকার কথা নয়, তাই গবেষকদের তরফে এই বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, সম্ভবত দ্রবণের লঘুকারকের মধ্যে অ্যান্টিবডির ‘স্মৃতি’ থেকে যায়, যা এই বিক্রিয়ার সাড়া দিতে প্রণোদিত করে। গবেষণাদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন জাক বঁভনিস্ত। গবেষণাটির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দিয়েছিল হোমিয়োপ্যাথি ওষুধ প্রস্তুতকারক বহুজাতিক কোম্পানি বইরোঁ। এই আজগুবি ফলাফল ও ততধিক চমকপ্রদ ব্যাখ্যায় গবেষকদলের পাশাপাশি নেচার-ও বিজ্ঞানীমহলে তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। পরীক্ষাটি পুনঃসম্পাদনের দাবি ওঠে। নেচার-এর তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার সামনে বঁভনিস্তে নিজের গবেষণাগারে পরীক্ষাটি পুনরায় ঘটালেও ফলাফল পূর্বপ্রকাশিত ফলের সাথে মেলে না। কিছুকালের মধ্যে বিশ্বের নানা প্রান্তের গবেষণাগার থেকেও বঁভনিস্তের দাবি অসমর্থিত হওয়ার খবর আসতে থাকে। কয়েক বছরের মধ্যে বঁভনিস্তের স্বরূপ প্রকাশ পায়, যখন তিনি ইন্টারনেট বা টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে জলকে ‘পোটেনটাইজ’ [হোমিয়োপ্যাথির ধারণা, পর্যায়ক্রমে ভেষজকে লঘু করে ও ঝাঁকুনি দিয়ে শক্তি বাড়ানোর আজগুবি প্রক্রিয়া] করার দাবি করেন। এই দাবিটির জন্য তিনি অবশ্য দ্বিতীয়বারের জন্য Ig-Nobel পুরষ্কারটি হাসিল করেন!

    লুক-আঁতোয়া মঁতান্যিয়ের দাবি আরও চমকপ্রদ। ২০০৯ সালে এইড্‌স ভাইরাস আবিষ্কারের কৃতিত্বের সহ-অধিকারী নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানী দাবি করেন যে, তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের আকারে একটি ডিএনএ দ্রবণ থেকে পাশের পাত্রের জলের মধ্যে ডিএনএ-এর প্রতিলিপি প্রেরণ করা যায়। এতে নাকি বিশুদ্ধ জলের মধ্যে তৈরী হয় ‘অতি সূক্ষ্ণ ছাপ’ বা ‘ন্যানোস্ট্রাকচার’। এই গবেষণাপত্র ছাপানোর জন্য তিনি নিজেই এক জার্নাল চালু করেন ও তার সম্পাদক হয়ে বসেছিলেন।

    হ্যানিম্যান অ্যাভোগ্যাড্রোর ব্যাপারে জানতেন না। Organon-এর ৫ম সংস্করণেও (১৮৩৩) তিনি লিখেছেন যে, পদার্থকে যতই লঘু করা হোক না কেন, তাতে কিছু-না-কিছু অবশিষ্ট থেকে যায়। এর কারণ হল, অ্যাভোগ্যাড্রোর গবেষণা ১৮১১ সালের হলেও তা জনসমক্ষে আসে অনেক পরে, ১৮৬০ সাল নাগাদ। সেই থেকে হোমিয়োপ্যাথ অস্বস্তির শেষ নেই! হাইড্রোজেন বন্ডিং, E = mc^2, জলের স্মৃতিশক্তি, ন্যানোস্ট্রাকচার..ক্ষ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশপাথর!
  • pi | 2345.110.894512.243 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫৬49943
  • এটা তো বাজে ব্যক্তি আক্রমণ হল! বক্তব্যে দ্বিমত থাকলে কোথায় কেন আপত্তি তা বলুন না!
  • Debasis Bhattacharya | 781212.194.2389.12 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৯49944
  • না, রসিকতা বা বিদ্রূপ, আর ব্যক্তি-আক্রমণ --- এ দুটোর মধ্যে সীমারেখা অনেক সময়ে অস্পষ্ট হয়ে যায় সে কথা সত্যি, তবু দুটোর মধ্যে গুরুতর তফাত আছে বলে মনে করি । কোনটা বৈধ সীমার মধ্যে 'হার্ড ট্যাক্‌ল্‌', আর কোনটা অবৈধ 'ফাউল', সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যুক্তি দিয়ে নির্ধারণ করা যায় ।

    pinaki, আপনি আমাকে কিছু প্রশ্ন করেছেন। এ বিষয়ে অল্প যা কিছু জানি তা অবশ্যই বলব ।
  • Bishan Basu | 785612.40.78.63 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:২৩49950
  • সুব্রতবাবু, ঘটনাগুলো আমার অজানা নয়।

    ইন ফ্যাক্ট, লেখাতেও কিন্তু বলেছি, তাঁদের চিকিৎসাপদ্ধতিকে ভ্যালিডেট করার জন্যে কোন পদ্ধতি তাঁদের পছন্দ, হোমিওপ্যাথরা জানান। সেই সময়ের বিচারে হ্যানিম্যানের ভাবনার কিছু বৈপ্লবিক দিক থাকলেও, পরবর্তীতে কোনোপ্রকার ভাবনাচিন্তার অভাবে হোমিওপ্যাথি বদ্ধ জলায় পরিণত হয়।

    হ্যানিম্যানের সময় এলোপ্যাথিও খুব সাঙ্ঘাতিক কিছু এগিয়ে ছিলো না। কিন্তু, পরবর্তীতে তার গতিপথ চমকপ্রদ।

    হ্যানিম্যানের মূল সমস্যা, আমার মনে হয়েছে, চিকিৎসা বিষয়ে দার্শনিক ভাবনাকে বিজ্ঞানের পায়ে দাঁড় করানোর চেষ্টাই করেন নি। এবং পরবর্তী ক্ষেত্রেও অন্য কোনো হোমিওপ্যাথ সেই চেষ্টার ধার ধারেন নি।

    দেবাশিসবাবু যে কথা বলেছেন, বিজ্ঞানের বাকি উপধারার বিকাশের সাথে তাল মেলানো, সেও হয়নি। আপনিও অ্যাভোগাড্রো নাম্বারের উদাহরণ দিয়েছেন। কোনো হোমিওপ্যাথেরই মাথায় আসেনি, এই নতুন আবিষ্কারের পর চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবার কথা।

    এখন সরকারি খরচে যদি হোমিওপ্যাথিকে জিইয়ে রাখতেই হয়, তাহলে তো ভ্যালিডেশনের কোনো পথ দেখতে হবে। ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পথে যদি আস্থা না রাখেন, তো বেশ কথা। কিন্তু, পথটি তো বলুন। এইটুকুই প্রশ্ন হোমিওপ্যাথদের প্রতি।
  • Bishan Basu | 785612.40.451212.216 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:৫৭49945
  • দেবাশিসবাবুর কোনো বক্তব্যের সাথেই দ্বিমত পোষণ করিনা।

    হ্যাঁ, হোমিওপ্যাথির পক্ষে কোনো ক্লিনিকাল ট্রায়ালজাত প্রমাণ নেই। কিন্তু, সমস্যা হলো, হোমিওপ্যাথরা এই ট্রায়ালেই বিশ্বাস করেন না। তাহলে ভ্যালিডেশনের ঠিক কোন পথে তাঁরা ভরসা করেন, সেইটাই জানতে চেয়েছি।

    বর্তমান পরিস্থিতিতে র‍্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়ালের খামতিগুলো নিয়ে আগেই লিখেছি পৃথক একটি মন্তব্যে।

    আমার প্রশ্ন একটাই, হোমিওপ্যাথির উপর এতো লোকের ভরসার কারণ কী? শুধু কুসংস্কার বা মেজপিসির ভূত দেখা বলে এড়িয়ে গেলে ব্যাপারটা সরল হতে পারে, কিন্তু প্রশ্নের উত্তর হয় না।

    উত্তরটা তাই হোমিওপ্যাথদের কাছ থেকেই জানতে চেয়েছি।

    আবারও বলি, হোমিওপ্যাথির উপর কোনো বিশেষ আস্থা বা দুর্বলতা কোনোটাই আমার নেই। কিন্তু, প্রশ্নটা আছে।

    আর, দেবব্রতবাবুর তোলা বিজ্ঞানের বিবিধ ধারার মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের যে প্রসঙ্গটি, সেটি এই আলোচনা থেকে এক বিশেষ পাওয়া। খুবই গুরুত্বপূর্ণ ওই কথাটা।

    ধন্যবাদ।

    পুনঃ - সুব্রতবাবুর বোধহয় খবরের কাগজে লেখালিখির কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতা নেই। থাকলে জানতে পারতেন, লেখাগুলিকে যথেচ্ছ এডিট করা হয়ে থাকে এবং প্রায় কোনো ক্ষেত্রেই লেখকের শিরোনাম সম্পাদক মহাশয় বজায় রাখেন না।

    প্রায়শই এমন শিরোনাম জুড়ে দেওয়া হয়, যা থেকে লেখকের মূল অভীষ্টের বিপ্রতীপ বার্তা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

    নিজের লেখাকে disown করার বদভ্যেস আমার বিশেষ নেই। কেননা, আমার একটু পড়াশোনা করেই আলপটকা লেখার অভ্যেস নেই। বিষয়টা নিয়ে পড়ে, ভেবে তারপরেই লিখি। মোটা মাথায় বুদ্ধির খামতি থাকতে পারে, কিন্তু ভাবনার আন্তরিকতায় ঘাটতি থাকে না।

    এই লেখাও ভেবেই লেখা। এই সময়-এরটিও তাই।

    প্লীজ, সনির্বন্ধ অনুরোধ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাট বকার সাথে লেখালিখিকে গুলিয়ে ফেলবেন না।
  • অনেক মানুষের | 9001212.56.670112.141 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:৩৯49946
  • গ্রহরত্ন, তাবিজ, আংটিতেও ভরসা আছে। তাহলে এত লোকের ভরসার জন্য সেগুলোকেও বৈধতা দিতে হয়।
  • | 340123.99.121223.133 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:৪৫49947
  • বিষাণ এর লেখা কনসিস্টেন্টলি ভালো লাগে। পড়ি ও পড়াই। বিষয় শুধু না, শুধু ভাষা এবং ক্লিয়ার অ্যান্ড অবভিয়াস কমপ্যাসন এর কারণেই ভালো লাগে কখনো কখনো। কিন্তু এই বিষয়ে মন দেবার টাইম কেন পেলেন জাস্ট জানি না। অ্যালোপ্যাথির খরচ, পড়ার খরচ, কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির মত পদ্ধতির নানা পার্শ্বক্রিয়া এবং সম্ভবত মৌলিক ভ্রান্তি, বৈজ্ঞানিক রিসার্চের থেকে বিজ্ঞানমনষ্কতার ক্রমবর্ধমান দূরত্ত্ব, পাবলিক ফান্ডিং এর হাত থেকে মেডিকাল এবং ফার্মাকোলোজির গবেষণার বেরিয়ে যাওয়া, প্রাইভেট ইনশিয়োরেন্সের বাংলা ও সবিনয় চুরি , প্রকৃতি র সম্পর্কে কনভেনশনাল নলেজ দুধ পানি আলাদা না করার রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক প্রবৃত্তি, প্রশিক্ষিত কেয়ার পেশাদার দের অভাব , বার্ধক্য বা বিশেষ বিশেষ অসুখের দীর্ঘস্থায়ী পরিষেবার সমস্যা, এসব আছে বলে এসব বুজরুকি চলছে। যত্তসব। বিজ্ঞান বা শাস্তর হিসেবে তুলনমামূলক আলোচনাটা মূলত সময় নষ্ট, তবে জনস্বাস্থ্য প্রচারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে একটা প্রয়োজন হয়্তো আছে।

    তবে চারিদিকে যুদ্ধু যুদ্ধু অর্গাজমিক চিৎঅকারের সময়ে অফ অল থিংস হোমিওপ্যাথি নিয়ে আলোচনাটা একধরণের বিচিত্র রসিকতা হতে পারে, সেটা মজার ই। হোমিও প্যাথি ইন টাইম অফ কলেরা অ্যান্ড স্ক্রিমেজ। ঃ-)))
  • Bishan Basu | 785612.40.451212.216 (*) | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৯:২৬49948
  • আপনার কথাগুলোর সাথে অনেকটাই সহমত।

    হয়তো আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির ক্রমশ ইমপার্সোনাল এবং ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়া উল্টোপিঠেই এইসব চিকিৎসাপদ্ধতির বাস, বেড়ে ওঠা।

    আবারও বলি, আমার মূল কথাটা ছিলো দর্শনগত। চিকিৎসার দর্শন। আধুনিক চিকিৎসার ক্রমাগত টুকরো করার বিপরীতে অখন্ড মানুষটার চিকিৎসা। এই দর্শনের আবেদন এখনও অটুট।

    কিন্তু, এই দর্শনটিকে বিজ্ঞানের পায়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা কখনোই তেমনভাবে হয়ে ওঠেনি। সেটা হলো না কেন? এখন বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার আর সুযোগ আছে কি?

    খেয়াল করুন, প্রশ্নগুলো হোমিওপ্যাথদেরই করা হয়েছে।

    তথাকথিত এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির গতিপথের ফারাকটা খেয়াল করতে চেয়েছি।

    গ্রহরত্ন-তাবিজে ভরসার তুলনায় হোমিওপ্যাথির উপরে ভরসার কিছু ফারাক চোখে পড়েছে এতোদিনের ডাক্তারিজীবনে। কেননা, বহু মানুষই এসে বলেছেন, যে, হোমিওপ্যাথি খেয়ে তাঁরা ভালো আছেন (হয়তো পুরোপুরিই প্লাসিবো এফেক্ট) - কিন্তু, অনেক আশা নিয়ে তাবিজ-মাদুলির শেষে খুব ভালো আছেন, এমনটা বেশী লোককে বলতে শুনিনি।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন