এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • বিজ্ঞান-মনস্কতার অ-আ-ক-খ # এক

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৮৫২৪ বার পঠিত
  • ফেসবুকে বছর দুয়েক আগে একটা খবর পড়ে চমকে উঠেছিলাম। বিহারের একটি গ্রামে বাবা-মা তাদের দুই যমজ কন্যার একজনকে পুড়িয়ে মেরেছে আর একজনকে সুস্থ করে তোলার অভিপ্রায়ে। সন্তানদুটি দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগছিল। কিছুতেই ভালো হচ্ছিল না। শেষে তারা নিরুপায় হয়ে এক তান্ত্রিক বাবার কাছে যায়। সে পরামর্শ দেয়, ভগবান নাকি কোনো কারণে সেই বাবা-মার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে এদের ফেরত চাইছে। তাই ওরা ভালো হচ্ছে না। হবেও না। অন্তত একজনকে ভগবানের কাছে ফেরত দিতে হবে। তাহলেই একমাত্র অপর সন্তানটি সুস্থ হয়ে উঠবে। তারপরেই একদিন বড় সড় আয়োজন করে হোমানল জ্বালিয়ে গায়ে তেল ঢেলে একটি মেয়েকে পুড়িয়ে মারে সেই অশিক্ষিত বাবা আর মা নিজের হাতে। লোকজন জানাজানি হতেই কেলেঙ্কারির এক শেষ। তান্ত্রিক বাবা তারপর থেকে ফেরার হয়ে যায়। অথবা হয়ত মন্ত্রবলে অদৃশ্য?

    অনেক রাত বলে সেদিন দুই চোখ কচলে ভালো করে খবরটা আরও কয়েকবার পড়েছিলাম। তারপর দেওয়ালের ক্যালেন্ডারের দিকে দৃষ্টি ফেলে দেখলাম। না। ঠিকই আছে। ২০১৪। একবিংশ শতাব্দের বেশ ভেতরেই ঢুকে এসেছি আমরা। অথচ . . .

    [ক] বিজ্ঞানমনস্কতা?

    তখন মনে হয়েছিল, বিজ্ঞান-মনস্কতা নিয়ে বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মী হিসাবে প্রকাশ্য দরবারে আবার দুচার কথা বলার চেষ্টা করা উচিৎ। হয়ত কিছু কাজ হতে পারে। মানুষের মধ্যে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু হতে পারে।

    তবে সেই সঙ্গে একথাও মনে হল, বিজ্ঞান-মনস্কতা কাকে বলে এই প্রশ্ন এখনকার দিনের একটা বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের পত্রিকার পাতায় উত্থাপন করা বেশ বিপজ্জনক। পাঠকরা যথেষ্ট মনঃক্ষুণ্ণ হতে পারেন। উত্তেজিত হয়ে বলতেই পারেন, “আরে মশাই, আজকাল আমরা ভূত-প্রেত মানি না, ঠাকুর দেবতা মানি না, প্রায় কোনো আচার-বিচারে নেই, বন্ধুদের খেতে বসে জাতপাত বিচার করি না, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা করি না, ল্যাপটপ মোবাইল ডাটাকার্ড দিয়ে সারা দুনিয়ার সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখি, আর আমাদের আপনি এখন বিজ্ঞানমনস্কতা শেখাতে বসেছেন? যান যান, ফালতু নিজের আর আমাদের কাজের সময় নষ্ট করবেন না। এর থেকে বরং সোনা ব্যাঙ নিয়ে কিছু লিখুন। বাচ্চাদের কাজে লাগতেও পারে।”

    এটা তেমন ভুল কথাও কিছু তো নয়। উপর থেকে দেখলে মনে হয়, ভারতীয় সমাজ মনে হয় বেশ আধুনিক হয়ে উঠেছে। আধুনিক হয়ে ওঠার সাথে বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়ারও যে একটা সিধা-সম্বন্ধ আছে তা তো আর কেউ অস্বীকার করতে পারেন না। অসুখবিসুখ হলে আজকাল সাধারণত অজ পাড়াগাঁয়ের লোকেও জল-পড়া তেলপড়ার দিকে যায় না। সরকারি হাসপাতালেও যায় না। শহরের নামিদামি প্রাইভেট হাসপাতালেই ছোটে। ডাক্তারবাবুদের পরামর্শ মতো নানারকম টেস্ট করায়, অন্তত করাতে আপত্তি করে না। প্রচুর ভিজিট দিয়ে নামডাকওয়ালা স্পেশালিস্ট ডাক্তার দেখায়। তাঁদের প্রেস্ক্রিপশন অনুযায়ী দামি দামি ওষুধপত্র কেনে। শুধু ট্যাক্সিওয়ালা বা অটোওয়ালা নয়, রিকশাওয়ালার হাতেও আজাকাল মোবাইল দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, শুধু ভিভিআইপি-রাই নয়, আমাদের মতো সাধারণ ছাপোষা গেরস্ত লোকেরাও এখন জীবনের প্রতিটি ইঞ্চিতে প্রতিটি মুহূর্তে বিজ্ঞানকে জড়িয়ে এবং মানিয়ে নিয়েছে। এরকম অবস্থায় শিক্ষিত মানুষদের সামনে যদি বলি বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে কিছু বলব, তাঁরা ভালোমন্দ কিছু মনে তো করতে পারেনই। তার জন্য তাঁদের কাউকে দোষ দেওয়া উচিৎ না।

    কিন্তু আবার কিছু টুকরো টুকরো ঘটনার স্মৃতি এমনভাবে মনে ভিড় করে আসে, তাদেরকেও তাড়ানো যায় না যে। ওই বিহারের ঘটনাটা যেমন। কিংবা এই যে তার কিছুদিন আগে, সেই বছর, ডাঃ নরেন্দ্র দাভোলকর মহারাষ্ট্রে আততায়ীদের হাতে নৃশংসভাবে প্রকাশ্য রাজপথে খুন হয়ে গেলেন। তাঁর অপরাধ, তিনি বহুদিন ধরে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে শুধু আন্দোলন করছিলেন তা নয়, রাজ্য সরকারকে দিয়ে একটা কুসংস্কার বিরোধী আইন প্রবর্তন করাতেও চেষ্টা করছিলেন যাতে মন্ত্রতন্ত্র বুজরুকি দিয়ে লোক ঠকানো না যায়। যাতে বিহারের মতো—

    [খ] বাংলা কিন্তু এগিয়ে

    বিহারে অমনটা ঘটতে পারে। মহারাষ্ট্রেও সম্ভব। তাই বলে বাংলায়? কদাচ নয়, কুত্রাপি নয়। অন্তত বেশ কিছু শিক্ষিত মানুষকে আমি এরকম কথা বলতে শুনেছি। তাঁরা সত্যিই বিশ্বাস করেন, বাংলা অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় শিক্ষায় চেতনায় যুক্তিবোধে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে আছে। প্রয়োজনের তুলনায় তা কম হতে পারে। কিন্তু কুসংস্কারের নিরিখে আমরা বাঙালিরা সামান্য হলেও বৈজ্ঞানিক মনোভাবনার দিকে এগিয়ে রয়েছি।

    তাই কি? এই আপত্তিটা আবার আমি মানতে পারলাম না। কেন তা বলবার জন্যই এত ধানাই পানাই করছি। একে তো কুসংস্কারের কোনো অভাব নেই আমাদের চারপাশে, বাড়িঘরে, আত্মীয় স্বজন পরিচিতদের মধ্যে। ভাদ্র বা পৌষ মাসে বিয়ে করেন, ছেলের পৈতে দেন, বাচ্চার মুখেভাত হয়—এমন ঘটনা আজ অবধি আমার পোড়া চোখে পড়েনি। শুধু বিহার নয়, বাংলারও মফস্বল বা গ্রামগঞ্জের রাস্তায় গাড়ি নিয়ে চলতে চলতে এপার থেকে ওপারে রাস্তা ডিঙিয়ে বেড়াল চলে গেলে গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষা করেন না, এরকম গাড়িওয়ালা মালিক এবং/অথবা ড্রাইভার খুব বেশি দেখেছি বলে আমি দাবি করতে পারব না। আর সর্বোপরি, বিজ্ঞানমনস্কতা মানে তো শুধু কুসংস্কার থেকে মুক্তি নয়, জীবনের আরও নানা আনাচে-কানাচে যুক্তি ও বিজ্ঞানবোধের প্রয়োগ। সেই হিসাব করলে আমরা কোথায় পড়ে আছি দেখা উচিৎ না?

    কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম কলকাতার আশেপাশের মফস্বলের একটা বড় স্কুলে। বিজ্ঞান অবিজ্ঞান কুসংস্কার ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে বক্তৃতা দেবার কর্মসূচি ছিল। অনেক দিন ধরে এসব নিয়ে আমি বিজ্ঞান আন্দোলনের একজন কর্মী হিসাবে নানা জায়গায় বক্তৃতা দিতে গিয়েছি। ঘন্টা দেড় দুই সময় পেলে এই বিষয়ে খুব জমিয়ে বলতে পারি, যেখানে যাই একেবারে চুটিয়ে বলি, বলার মাঝখানে এবং শেষে শ্রোতাদের তরফে প্রচুর হাততালি পাই। সভার শেষে নিজের ভেতরে একটা কেমন তৃপ্তিবোধ কাজ করে, মনে হতে থাকে, দেশের যাবতীয় কুসংস্কারকে যেন একেবারে হিটলারি ব্লিতস্ক্রিগ-কায়দায় যুদ্ধ করে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি।

    সেদিনও আমার সেরকমই মনে হয়েছিল। দিনটা ছিল কৃষ্ণা পক্ষের চতুর্থী, সন্ধের দিকে যখন আমরা বেরতে যাচ্ছি, তখনও চাঁদমামা পুবাকাশে আকাশে উদিত হননি। কিছুই না ভেবে খুব সাদামাটা ভাবে কাছাকাছি একজন ছাত্রকে দেখতে পেয়ে জিগ্যেস করলাম, পুব দিকটা কোন দিকে। ছেলেটি আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ। মুখের ভাবে মনে হবে ওকে আমি রাজা আলেকজান্দারের জন্মদিন কবে জিগ্যেস করেছি। যা তার জানার কথা নয়। আর এটা যে তার জানার কথা নয় তা আমার তো অন্তত জানা থাকার কথা। অতঃপর সে একজন শিক্ষক মহাশয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল, যদি কোনো হাত পা মাথার নড়াচড়ার ইসারায় কিছু আভাস পাওয়া যায়। না, হল না। কোনো শিক্ষকই এতটা ছেলেমানুষি ব্যাপারে নিজেকে জড়াতে চাইলেন না। নিজেকে কেমন যেন উজবেক মনে হল। কুসংস্কার-টুসংস্কার নিয়ে যাদের জন্য এত লড়াই করলাম, সেই সব সৈন্যসামন্তরা যে পূর্বদিক কোনটা এখনও তাই জানে না।

    একজন শিক্ষিকা এগিয়ে এসে আমাকে তাড়াতাড়ি বললেন, “না স্যর, আসলে ছাত্ররা তো কেউ আর এতক্ষণ স্কুলে থাকে না। তাই স্কুল ক্যাম্পাসে চাঁদ কোন দিকে ওঠে দেখেনি। ইন ফ্যাক্ট, আমরা কেউই তা দেখিনি বা লক্ষ করিনি।”

    তা বটে। অকাট্য যুক্তি! স্কুলের ছাত্ররা কিংবা শিক্ষকরা যদি কখনও স্কুলের ক্যাম্পাসে চাঁদ উঠতে না-ই দেখে থাকে, তাহলে স্কুলের ক্যাম্পাসের পূর্ব দিক চিনবে কী করে?

    . . . একজ্যাক্টলি!

    যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকবৃন্দ, আপনারা এবার মনে মনে যা ভাবছেন, আমি বুঝেছি। আমিও এই প্রশ্নে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত।

    দিনের বেলায় সূর্যকে দেখে তো পুব দিকটা চেনার কথা। চাঁদের জন্য তো আর আলাদা কোনো পূর্ব দিক নেই। তাও কি ছাত্ররা দেখেনি? সেই সব মাস্টারমশাই এবং দিদিমনিরা দেখেননি? সেই দেখার কথা মনে পড়ল না? কিন্তু এক ধরনের কাপুরুষোচিত লজ্জায় এই প্রশ্নটা কেন জানি না কিছুতেই আমি সেদিন ওনাদের কাউকে উদ্দেশ করে আমি আর জিগ্যেস করে উঠতে পারলাম না। আমার ধারণা, আপনারাও কেউ তখন ওখানে থাকলে করতে পারতেন না। আমার মতোই আপনাদেরও অনেকের চোখের সামনে ভেসে উঠত আমাদের স্কুলগুলোতে ভূগোল শিক্ষার নিত্যকর্মপদ্ধতি। পুস্তক পাঠ। লক্ষ্মীর পাঁচালি পাঠের মতন করে পঠন এবং তারই ভিত্তিতে পরীক্ষণ। ক্লাশে মৌখিক প্রশ্নোত্তর। পরীক্ষার খাতায় লিখিত উত্তর। টিক ক্রস হ্যাঁ না ঠিক ভুল। শূন্যস্থান পূরণ। সেই অনুযায়ী নম্বর। ভালো রেজাল্ট, মাঝারি ফল, খারাপ নম্বর। নদী পাহাড় পশ্চিম বঙ্গ এশিয়া আফ্রিকা কৃষ্ণ সাগর আন্টারকটিকা সাহারা নায়াগ্রা—সব আমরা ছাত্ররা উত্তরপত্রে লিখে দিয়ে থাকি কিছুই স্বচক্ষে না দেখে, না বুঝে। না, সব জায়গায় গিয়ে গিয়ে চাক্ষুস দেখার প্রশ্নই ওঠে না। আমি সে কথা বলছি না। কিন্তু মানচিত্রে বা ছবিতেও তো দেখা যায়। দেখানো যায়। তাও দেখিনি। আজও কেউ দেখে না। দেখানো হয় না। দরকার হয় না। সূর্য যে পুব দিকে ওঠে তা বলা বা জানা বা খাতায় লেখার জন্য পুব দিক কোনটা না জানলেও যে চলে—এই মহৎ উপলব্ধিই আমাদের ভূগোল শিক্ষার প্রথম ও প্রধান কথা। এমনকি শেষ কথাও।

    প্রাথমিক স্তরের স্কুলপাঠ্য ভূগোলে খানিকটা জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটা বুনিয়াদি পরিচয় দেওয়া থাকে। বছরের বিভিন্ন সময়ে এক আধবার ছাত্রদের সন্ধ্যা বা রাতের আকাশ দেখানোর উদ্যোগ নিয়ে বইতে পড়া জিনিসগুলোকে, কৃত্তিকা শ্রবণা কালপুরুষ ধ্রুব তারা মঙ্গল বৃহস্পতি শুক্রকে চিনিয়ে দেওয়া, খুব কষ্টকর নয়। কিন্তু সেটুকুও হয় না। যে বাবা-মা স্কুলে ক্লাশ না হওয়া নিয়ে মাস্টারমশাইরা ভাল করে পড়াচ্ছেন না বলে প্রতিবাদে সমালোচনায় সোচ্চার, তাঁরাও এই ব্যাপারে চুপচাপ। বাড়িতে প্রাইভেট টিউটর এসে ভূগোল পড়ালে তিনিও সন্তানকে আকাশ চেনাচ্ছেন কিনা তা নিয়ে তাঁরা আদৌ ভাবিত নন। মাথা উপরে তুলে কিছু দেখা নয়, মাথা নিচু করে টেবিলের উপরে বই খাতার পৃষ্ঠায় নজর দিতেই তাঁরা ছেলেমেয়েকে শেখাতে চান। সাধে কি আর আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের অনেকের নজরই নীচের দিকে চলে যায়?

    আর এইজন্যই আমরা প্রায় কেউই জানি না আমরা যাকে আমাদের ডান হাত বলি সেটা কেন দক্ষিণ হস্ত। বাঁ হাতকে কেন দক্ষিণ হস্ত বলা হল না? তা কি নিতান্তই কাকতালীয়?
    চলুন, এবার একটা অন্য দৃশ্যপটে যাওয়া যাক।

    এক বন্ধুর বাড়িতে গেছি। তাঁর পুত্র, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, মন দিয়ে সোচ্চারে ইতিহাসের পড়া মুখস্থ করছিল, “আলেকজান্দার বন্দি রাজা পুরুকে প্রশ্ন করিলেন, আপনি আমার নিকট কীরূপ ব্যবহার আশা করেন? পুরু বীরের মতো উত্তর দিলেন, একজন রাজা আর একজন রাজার সহিত যেরূপ ব্যবহার আশা করিয়া থাকে। এই কথা শুনিয়া আলেকজান্দার খুশি হইয়া পুরুকে মুক্তি দিলেন এবং ভারতবিজয় সফল করিয়াও তা অধিকার না করিয়াই দেশে ফিরিয়া গেলেন।” মনে পড়ে গেল, আমরাও ছোট বেলায় এই রকম ইতিহাস কাহিনি মুখস্থ করেছি, পরীক্ষার খাতায় লিখেছি, ভালো নম্বরও পেয়েছি। অনেক কাল পরে কিঞ্চিত বুদ্ধিশুদ্ধি হওয়ার পর আমার মনের মধ্যে একটা নিরীহ প্রশ্ন জেগেছিল, এ কি সত্যিই সম্ভব? হাজার হাজার মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে—আর রাস্তা মানে তো এখনকার মতো বাঁধানো পাকা সড়ক নয়, বনজঙ্গল নদী পাহাড় মালভূমির ভেতর দিয়ে কোনোরকম পায়ে চলার সরু পথ—তার মধ্য দিয়ে সুদূর ম্যাসিদনিয়া থেকে পঞ্জাব পর্যন্ত কষ্ট করে এসে স্রেফ পুরু রাজের বীর কাব্যরসে মুগ্ধ হয়ে গিয়ে একজন দিগ্বিজয়ী রাজা নব অর্জিত ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যাবে? এল কেন তবে এ্যাদ্দুর? এ কি বিশ্বাসযোগ্য?

    তখন আবার আমার মনে হয়েছিল, না, ইতিহাস পড়তে হলে, পড়ে বুঝতে হলে, হাতের সামনে সংশ্লিষ্ট ভূগোল বইও খুলে রাখতে হবে। আলেকজান্দার কেন চলে গিয়েছিল বুঝতে হলে পশ্চিম এশিয়ার, ভূমধ্যসাগর থেকে শতদ্রু নদীর পাড় পর্যন্ত, ভৌত মানচিত্রটা খুলে দেখতে হবে। তখন সন্দেহ দেখা দেবে, সেই প্রাচীন কালে অতদূর থেকে ওই মানচিত্রওয়ালা জায়গাগুলো পেরিয়ে ম্যাসিদনিয়ার সিংহাসনে বসে পারস্য আফঘানিস্তান ধরে রেখে পঞ্জাব শাসন করা গ্রিকদের পক্ষে আদৌ সেইকালে সম্ভব ছিল কিনা। আর এইভাবে ইতিহাস পড়তে শিখলে তখন বোঝা যাবে, পুরুর সেই বহুপঠিত সংলাপটি সাহিত্যের ইতিহাসের পক্ষে অতি উপাদেয় উপচার হলেও ইতিহাস সাহিত্যের পক্ষে একেবারেই কোনো লোভনীয় উপাদান নয়। এতে আমাদের জাতীয় আবেগে সুড়সুড়ি দিতে সুবিধা হয় ঠিকই, কিন্তু বুদ্ধির গোড়ায় ধুনো দেওয়ার ধুনুচির আগুন শিক্ষাজীবনের একেবারে শুরুতেই নিবিয়ে দেওয়া হয়।

    এইভাবে ইতিহাস পাঠ করতে শিখলে তবেই বোঝা যাবে, কেন সুলতান বা মোগল আমলের সম্রাটরা দিল্লি থেকে এগিয়ে পূর্বদিকে যতটা রাজ্য বিস্তার করেছে, দক্ষিণ দিকে ততটা যায়নি কেন। স্থলপথ ধরে সাম্রাজ্য বিস্তার বা রক্ষা যে সুবিধাজনক নয়, নদী বা সমুদ্রপথ ধরে এগোনোই যে তখনকার পক্ষে সুবিধাজনক ব্যবস্থা ছিল, এবং সেই অনুযায়ীই যে বিহার বা বাংলার দিকে যত সহজে তারা আসতে পেরেছে, দক্ষিণে তত সহজে যেতে পারত না—এটা বোঝা যাবে।

    সোজা কথায় বলতে গেলে, ইতিহাস ভূগোলও আমাদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পড়া এবং পড়ানো উচিৎ, কিন্তু আমরা পড়িও না, পড়াইও না। বিজ্ঞানমনস্কতা এখানেও প্রতিদিন মার খেয়ে চলেছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৮৫২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • আরো | 125.112.74.130 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৩51327
  • সাত পাকে ঘুরে যজ্ঞ করে বা চার্চে গিয়ে বা কাজী ডেকে বিয়ে করাটাও কুসংস্কার , মাথায় ফেজ টুপি, পাগড়ি গলায় তাবিজ হাতে কড়া ও কুসংস্কার ।
  • | 116.221.134.7 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৪51328
  • দেবব্রত,

    হ্যাঁ সেটা বুঝতে পারছি।
    দেখুন আমি ব্যক্তিগতভাবে বিয়ে বা গৃহপ্রবেশের থেকে পৈতেটাকে বেশী অশ্লীল ক্ষতিকারক মনে করি। এটা একেবারে সরাসরি রেসিজম প্রোমোট করে। এবার অশোকবাবু পন্ডিত মানুষ, প্রচুর পড়াশোনা করে খেটেখুটে লেখেন। সেইজন্য ওনার পয়েন্ট অব ভিউটা জানতে চাইছি। মানে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় হিন্দুবিয়ের সম্প্রদানের কুৎসিৎ মন্ত্রগুলো বা পৈতেপ্রথা নিয়ে আমরা যারা নিজেদের বিজ্ঞানমনষ্ক মনে করি তাদের আরো অনেক বেশী ভোক্যাল হওয়া দরকার।
  • | 116.221.134.7 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৪51329
  • দেবব্রত,

    হ্যাঁ সেটা বুঝতে পারছি।
    দেখুন আমি ব্যক্তিগতভাবে বিয়ে বা গৃহপ্রবেশের থেকে পৈতেটাকে বেশী অশ্লীল ক্ষতিকারক মনে করি। এটা একেবারে সরাসরি রেসিজম প্রোমোট করে। এবার অশোকবাবু পন্ডিত মানুষ, প্রচুর পড়াশোনা করে খেটেখুটে লেখেন। সেইজন্য ওনার পয়েন্ট অব ভিউটা জানতে চাইছি। মানে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় হিন্দুবিয়ের সম্প্রদানের কুৎসিৎ মন্ত্রগুলো বা পৈতেপ্রথা নিয়ে আমরা যারা নিজেদের বিজ্ঞানমনষ্ক মনে করি তাদের আরো অনেক বেশী ভোক্যাল হওয়া দরকার।
  • sinfaut | 11.23.148.202 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৩51330
  • "কোথাকার কলকতলার ঝগরুটে"
    "প্রাণীবিশেষের ল্যাজে পা"
    আর তারপর, "অহেতুক ধেয়ে এসে গালিগালাজ "।

    কারণ, মনোজবাবুর একটা লাইনঃ "দেওয়ালে মাথা ঠোকা বন্ধ করলেই সব বুঝতে পারবেন ! "

    দমদি, একটু নিজের দিকে আয়না ধরে দেখো। যেটা ধেয়ে আসাও না, গালিগালাজও না, সেটাকে নোংরা আক্রমণ করে নিজে দুখানা গালাগাল দিয়ে দিলে! হাউ ওয়ান্ডারফুল!!
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৪৬51331
  • পৈতে কেন অসভ্য,অশ্লীল ,কুরুচিকর,অসত্য কেন মনে হয় জানতে পারলে বাধিত হতাম।
  • | 116.221.134.7 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৫51332
  • সিঁফোঁ , না শুইধু একলাইন নয়। তবে এই নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নই।

    এসেম, কারণ এটা সরাসরি জাতিভেদকে প্রোমোট করে তাই।
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৮51333
  • কেন জাতিভেদ প্রমোট করে ? ধরা যাক একজন নারী। সে তো পৈতে পরে না।তাহলে সে যদি জন্মসূত্রে ব্রাম্হনী হয় তো সে কি পৈতে ছাড়াই জাতিভেদ প্রমোট করলো?
    দ্বিতীয়ত,ধরাযাক রামকৃষ্ণ পৈতে ধারী ব্রাম্হন, আর বিবেকানন্দ পৈতে হীন কায়স্থ।তো পৈতে নেই বলে কি বিবেকানন্দ অন্য জাতি বা তাকে নিচ চোখে দেখে লোকজন ?
    আর জাত তো মানুষের মনে। যারা অ ব্রাম্হন তারা কি নিজেদের সমাজে ছোট মনে করে? কেন মনে করে?
    ব্রাম্হন এর পুজো দেবার অধিকার আছে বলে? তা, পুরুত ঠাকুর ডেকে পুজো না দিলেই হয়?
    এমনিতে তো সমাজে যার পয়সা বেশি তার সম্মান। হোটেলে খেতে গেলে পয়সা না থাকলে পৈতে ধারী বামুন কে বার করে দিয়ে যার পয়সা আছে সে যে জাত ই হোক খাবার সার্ভ করা হবে।
    কিন্তু তবুও পৈতে অশ্লীল , কুরুচিকর,কেন; এসবের মানে বুঝলুম না।
  • অন্যমনষ্ক | 77.55.114.84 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৮51334
  • শীর্ষেন্দু্র মতো লেখকরা ছোটদের মধ্যে কুসংস্কার (ভুতপ্রেত আর ইলজিসিটি) আর বড়দের মধ্যে বর্ণাশ্রম প্রমোট করেছেন সচেতন। এসব তারই ফল।
  • dc | 132.164.54.202 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৬51335
  • পৈতে বামুনগিরির ভিসিবল সিম্বল, তাই জাতিভেদ প্রথা প্রোমোট করে।

    বিয়ের পরে মেয়েটিকে সিন্দুর পরতে বাধ্য করলে, পলা ইত্যাদি পরতে বাধ্য করলে সেটা আরেকটা অশ্লীল আর কুরুচিকর প্র্যাক্টিস।
  • Arpan | 101.214.5.87 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪২51336
  • "এমনিতে তো সমাজে যার পয়সা বেশি তার সম্মান"

    সে তো এখন হয়েছে। চিরকালই কি আর তাই ছিল কালিদা? তবে কেন বর্ণাশ্রমের চিহ্নকে বহন করে নিয়ে যাওয়া?
  • Arpan | 101.214.5.87 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৫51337
  • আর ভারতে অর্থনৈতিক বিভাজনও বর্ণভিত্তিক বিভাজনকে ভিত্তি করেই তো ঐতিহাসিকভাবে গড়ে উঠেছে। অর্থের জোরে সামাজিক উত্তরণ তাও এক প্রজন্মে অনেক সময় হয় না।
  • cm | 127.247.96.94 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০৪51338
  • পৈতে না তুলে সবার জন্য চালু করতে পারেন। বলে দেওয়া ভাল পৈতে মানে ঐ একদিন আত্মীয় বন্ধু এক হয়ে যে যেমন পারেন আনন্দ আর কি। এতে আপত্তি থাকলে অবশ্য সব সমান করার বিপ্লব ছাড়া গতি নাই।
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০৮51339
  • এক এক করে উত্তর দেই।ধর্ম মানেই ভিসিবল।যাতে কিনা লোকজন আকৃষ্ট হয়।সব ধর্মেই তাই। যে প্রিস্ট তার ড্রেস কোড আলাদা;এমনটা হয়েই থাকে।
    যদি আপত্তি থাকে তাহলে ধর্ম টাকেই তুলে দেবার পক্ষে সওয়াল করতে হয়। হিন্দু মাত্রেই বর্ণাশ্রম সম্পর্কে অবহিত।কেউ আপনাকে মানতে বাধ্য করছে না তো!যদি মনে হয় পৈতে পড়লে প্রিভিলেজড তাহলে দুটাকার পৈতে কিনে পরে নিলেই হয়।কুনো আইনি বাঁধা নেই তো!
    আপনার মনে বোধ হয় মেইন প্রশ্ন পুজো করতে পাবার অধিকার। সেইটা পুরুত না ডেকে নিজে করে নিলেই তো হয়।
    আর সিঁদুর , শাঁখা,পলা যদি ভালো না লাগে পড়বেন না।
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১২51340
  • Cm , যথার্থই বলেছেন।
  • dc | 132.164.54.202 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৩51341
  • নাঃ পুজো করার অধিকার নিয়ে আমার কোন প্রশ্ন নেই কারন আমি পুজোই করিনা।
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:২০51342
  • তো আপনার আপত্তি টা কোথায়?একজন জন্মসূত্রে শিখ- সে পাগড়ি পড়েনা বা রীতিনীতি মানে না,তো আর একজন পড়লে তার কি আপত্তি হতে পারে এবং কেন?
  • Ashoke Mukhopadhyay | 127.194.35.115 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৪১51343
  • এক কথায় দারুণ সাড়া দেখতে পাচ্ছি। প্রবল উৎসাহ পাচ্ছি। আর সাহস। আপনাদের মন্তব্যগুলোকে ধরে ধরে আলোচনা না করে কয়েকটা অভিপাদ্য (issue) ধরে সংক্ষেপে কিছু কথা বলি।
    পৈতে (উপনয়ন) কিংবা বিবাহিত নারীর সিঁদুর ব্যবহার—এগুলোর কোনোটাই খুব প্রাচীন প্রথা নয়। বৈদিক তো নয়ই। বৈদিক-ঔপনিষদিক সাহিত্য অনুসারে শূদ্র বাদে সকলেই দ্বিজ—অর্থাৎ, গার্হস্থ্যে প্রবেশের আগে একটা কিছু দীক্ষা প্রাপ্তির (দ্বিতীয় জন্মের) অধিকারী। সম্ভবত, বিভিন্ন বৈদিক সম্প্রদায়ের লোকেরা অবৈদিক (মঙ্গোলয়েড/দ্রাবিড়/অস্ট্রিক, ইত্যাদি) গোষ্ঠীর লোকেদের যুদ্ধবিগ্রহে পরাজিত করে তাদের কাজের লোক বা শ্রমিক বানিয়ে “শূদ্র” আখ্যা দিয়েছিল। তখন দ্বিজদের ধারণ করতে হত কোমরে এক টুকরো ফিতের মতো মেখলা। পরে (সময় জানতে চাইবেন না, আমার বিদ্দে ধরা পড়ে যাবে) মেখলা ধীরে ধীরে নারীর অঙ্গভূষণ হয়ে ওঠে, আর ব্রাহ্মণদের মধ্যে পুরোহিতদের আধিপত্য বৃদ্ধির ফলে তারা বাকি সমস্ত বর্ণের (এবং বৌদ্ধদের) থেকে নিজেদের আলাদা করতে উপনয়ন, পৈতে, ইত্যাদি সংস্কার তৈরি করে নেয়। আর এর জন্য যে ধর্মীয় প্রকরণ তা গ্রহণ করে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের কিছু আচার আচরণ থেকে (কেশমুণ্ডন, উপবাস, নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ, ইত্যাদি)।
    বিবাহিত নারীর অলঙ্কারের ধরনে বিবাহ-উত্তর জীবন চিহ্নিত হত। সিঁদুর ছিল তান্ত্রিক ও কাপালিকদের একচেটিয়া প্রতীক দ্রব্য। আসলে এ ছিল উর্বরতা যাদু ক্রিয়ানুষ্ঠানের অনুপান। নানা কারণে এই সব ধর্মীয় আচার মূল ধারা থেকে প্রান্তীয় প্রথায় পরিণত হয়। দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়টি নিয়ে তাঁর “লোকায়ত দর্শন” গ্রন্থে অনেকটা আলোচনা করেছেন। যদিও, আমার মনে হয়, তা যেন অসমাপ্ত থেকে গেছে। যাই হোক, যেহেতু ভৈরবীরাও সিঁদুর ব্যবহার করত, কোনো একটা সময় (আমার ধারণা, মুসলিম রাজত্বের শুরুতে) হিন্দু বিবাহিত মহিলারা স্বেচ্ছায় এবং/অথবা অনিচ্ছায় সিঁদুর পরতে শুরু করে। এর পেছনেও জবরদস্তি বা পুরুষতান্ত্রিক চিহ্নিতকরণ নয়, উর্বরতা সূচক যাদুর প্রভাবই গোড়াতে প্রধান কারক ছিল বলে মনে হয়। আরও পরে, মুসলিম অভিজাতদের মহিলাদের জন্য বোরখা, পর্দাপ্রথা, ইত্যাদির দেখাদেখি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেও ঘোমটা, ঘুঙট, উড়নি, ইত্যাদির আবির্ভাব ঘটে। সিঁদুরও ধীরে ধীরে পুরুষতন্ত্র তথা জবরদস্তির প্রতীক হয়ে ওঠে।
    খুবই আশ্চর্যের, হিন্দু বিবাহে সিঁদুর দানের সময় যে মন্ত্র পাঠ করা হয়, সেটা ঋগ্‌বেদে সিন্ধু নদীর স্তবগান হিসাবে রচিত।
    উপরের প্রতিটি বাক্যেরই ভাবসম্প্রসারণের অবকাশ এবং চাহিদা আছে। মেটানো সম্ভব কিনা সব পক্ষকেই ভেবে রাখতে হবে।
    মন্তব্যকারী উৎসাহদাতাদের সবাইকেই ধন্যবাদ!!
  • রৌহিন | 113.42.126.220 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:০১51344
  • পৈতের বিরুদ্ধে প্রথম এবং প্রধান আপত্তি - তার কনসেপ্টে। উপনয়ণের ফলে ব্যক্তি "দ্বিজ" হয় - অর্থাৎ তার দ্বিতীয় জন্ম হয়। এই "দ্বিতীয়" জন্ম জরুরী কেন? কারণ তার প্রথম জন্ম নারীর যোনি থেকে - তাই তা অশুচি। এই কনসেপ্ট যদি ঘৃণ্য না হয় তাহলে ঘৃণার থাকার দরকার কি?
    দ্বিতীয়তঃ কেবল পুরুষই উপনয়ণের অধিকারী - তাই এটা বৈষম্যমূলক, অতএব অবশ্য বর্জনীয় প্রথা।
    তৃতীয়তঃ, শুদ্রের (পরবর্তীকালে সকল অব্রাহ্মণের) পৈতের অধিকার নেই - এটা কাস্ট সিস্টেমের সরাসরি ধারক ও বাহক। অতএব বর্জনীয়।
    চতুর্থতঃ ধর্ম নিজেই আজকের পৃথিবীতে মিউজিয়ামে থাকার কথা - তার সংক্রান্ত যে কোন প্রথাই তাই এমনিতেই বর্জনীয়।
  • একক | 53.224.129.51 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২৩51345
  • এই যে কারন গুলো বললেন এর ভিত্তি কী ?

    1) দ্বিজ শব্দের উল্লেখ প্রথম আছে ধর্মসুত্রে । শারীরিক জন্ম ও আধাত্মিক জন্মের পার্থক্য বোঝাতে । এর মধ্যে নারীর যোনি ইত্যাদি উল্লেখ কোথাও নেই । নারী যদি বর্জনীয় হতো তাহলে দ্বিজত্বপ্রাপ্তির পর মায়ের কাছ থেকে প্রথম মাধুকরী গ্রহণের রীতি থাকতোনা
    ২) পুরুষগণ শুধু অধিকারী এটা ঘটনা । কিন্তু পৈতে ব্যাপারটাই হলো কার্য সম্পর্কের পরিচায়ক , যে লোকটা কী কাজ করে । মেয়েদের ঘরের বাইরে কাজ করার প্রচলন বলুন বা অধিকার ছিলোনা । কাজেই কেন কোনো মেয়ে শিক্ষয়ত্রী নেই বা মেয়ে লেখিকা নেই প্রশ্ন করাও যা মেয়েদের কেন পৈতে হতোনা প্রশ্ন করাও তাই । এর থেকে শুধু এইটুকু প্রশ্ন উঠতে পারে যে , মেয়েরাও তাহলে পৈতে নিক বা নিচ্ছেনা কেন ।
    3) শূদ্রের পৈতের অধিকার নেই কে বলেছে ? যজ্ঞপবীত হবে কার্পাস নির্মিত । ক্ষত্রিয়ের উপবীত ঘোড়ার লেজের লোমের । বৈশ্যের উপবীত রেশমের এবং শূদ্রের উপবীত পশুর নাড়ির । এখানে খেয়াল করুন কোনটা দেখতে সুন্দর বা দামি প্রাধান্য পাচ্ছেনা । কাদের কাছে কোনটা বেশি সহজলভ্য সেটা পাচ্ছে । রেশমের পৈতে সবচে দামি কিন্তু তা বারংবার পরিবর্তনের দরকার হয়না । এদিকে যজ্ঞপবিত একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই বর্জন করে নতুন গ্রহণ করতে হয় । তাই সস্তা -টিকাও কার্পাস ।
    এবার বাকি উপবীত গুলো মধ্যযুগের পরে আর থাকেনি , যজ্ঞপবীত থেকে গেছে । কেন গেছে সেটা আলাদা তর্ক ।
    4) ধর্ম ও মিউজিয়াম নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই , কারন ধর্ম না থাকলেও কাজের ভিত্তিতে ফ্র্যাটার্নীতির রিকগনিশন থেকেই যাবে । উকিলের শ্যামলা বা গ্রাজুয়েট এর ক্লোকের মতো । এগুলো ধর্মের স্পিরিচুয়াল দিক না । রিচুয়ালিস্ট দিক । এপ্লিকেশন থাকলে থাকবে , সে মুখ ধর্ম না থাকলেও । এপ্লিকেশন না থাকলে উঠে যাবে যেমন ধর্ম থেকেও বাকি জাতি দেড় পৈতে উঠে গেছে ।
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২৬51346
  • আপনার চতুর্থ পয়েন্ট ছাড়া বাদবাকি যুক্তি গুলো পানসে লাগলো। নাতির পৈতে পরার রেওয়াজ নেই,তাতে একজন নারীর ব্রাম্হন হতে আটকায় কি
    শূদ্র পৈতে পড়ুক না। পৈতে পড়া চালু করুক।রাখি পরার মতন সব জাতি/বর্ণের লোক ই পোর্টের থাকুক।কুনো অসুবিধে নেই তো?
    আর নারীর যোনি যদি অশুচি হয়;তো পৈতের সময় আর একজন নারী ই তো ভিক্ষে মা হন।
  • Ranjan Roy | 132.176.247.59 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২৯51347
  • এসএম,
    ব্রাহ্মণের স্ত্রী সম্বোধনে ব্রাহ্মণী হলেও উপনয়ন না হওয়ায় ব্রাহ্মণ হন না। কারণ, উপনয়নের পরই মানুষের "দ্বিতীয় জন্ম" হয়, তখন তাঁরা দ্বিজ হন।
    সেই কারণে কোন নারী ব্রাহ্মণ হতে পারেন না। ব্রাহ্মণের স্ত্রী বা কন্যা হলেও না। তাই তাঁরা বেদমন্ত্র "ওঁ" উচ্চারণের অধিকারী হন না। সমস্ত অব্রাহ্মণ ও শূদ্রের মত ব্রাহ্মণীকেও "ওঁ" এর বদলে "নমঃ" বলতে হয়।
    ( দূর্গাপূজোর অঞ্জলির সময় অনেক প্যান্ডেলেই পুরুতমশায় এটি বলে সবাইকে সতর্ক করেন, হয়ত আপনি খেয়াল করেন নি।)
    তাই কোন নারীকে বেদপাঠের অধিকার দেওয়া হয় নি।
    দু'দশক আগে কোলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে জনৈক অরূন্ধতী দেবী বেদ/উপনিষদ পাঠ করলে সেখানে উপবিষ্ট পুরীর শংকরাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী তাঁকে ধমকান ও অমঙ্গল হবে বলে অভিশাপ দেন। সেই খবর ছবিসহ দেশ/আবাপ ও অনেক পত্রিকায় বেরিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।
    পৈতে অবশ্যই জাতিভেদের দ্যোতক।
    যেমন ফকরুদ্দিন বা আবুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেই ভারত রাষ্ট্রে মুসলিমদের অবস্থা খুব ভালো এমন সিদ্ধান্তে আসা যায় না। তেমনি বিবেকানন্দ বা ব্যতিক্রমী কিছু উপবীতহীন ব্যক্তিমানুষের উদাহরণে মূল ব্যাপারটা পালটে যায় না।
  • রৌহিন | 113.42.126.220 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৩51348
  • একক,
    প্রথম পয়েন্টটার রেফারেন্স এখন নেই - কিন্তু পড়েছিলাম এটা মনে আছে। যাই হোক আপাতত ওই পয়েন্টটা ফিরিয়েই নিলাম যেহেতু রেফারেন্স নেই। কিন্তু আবার করে "আধাত্মিক জন্মে"র কী প্রয়োজন, কেন, সেই প্রশ্নটা রয়েই গেল।
    বাকি পয়েন্টগুলোর ক্ষেত্রে, আপনি সেগুলো "কেন ছিল" তার ব্যখ্যা দিয়েছেন। আমি "কেন থাকা উচিৎ নয়" সেই আর্গুমেন্টে গিয়েছি।
  • rabaahuta | 84.90.235.53 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৪51349
  • 'দূর্গাপূজোর অঞ্জলির সময় অনেক প্যান্ডেলেই পুরুতমশায় এটি বলে সবাইকে সতর্ক করেন, হয়ত আপনি খেয়াল করেন নি' - আমি এটা কখনো দেখিনি, খেয়াল করিনি না, দেখিইনি। মানে নিশ্চই শাস্ত্রে আছে, তবে আমার দেখা পুরুতঠাকুররা হয় সাম্যবাদী, নয় অজ্ঞ, নয় বাটামের ভয়, কিন্তু নারী পুরুষ ব্রাহ্মণ চন্ডাল নির্বিশেষে একই মন্ত্র বলিয়েছেন, এমনকি আগরতলা রামকৃষ্ণ মিশনেও তাই দেখেছি, এরপর অবশ্য আর অঞ্জলির অনুষ্ঠানে দাঁড়াইনি। ব্রাহ্মণ পুরুষরা অন্য মন্ত্র বলবেন বললে ঐখানেই বাওয়াল দিয়ে দিতাম না?

    তবে কিনা এত কথা বলে আর কি হবে, ধর্ম থাকবে আর ডিস্ক্রিমিনেশন থাকবেনা এ আবার হয় নাকি।

    ইনফ্যাক্ট ধর্ম ব্যাপারটাই ঝামেলার আখড়া, পালন বা বিরোধীতা যাই করতে যাই আপদ। ত্রিপুরার তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী অনিল সরকারের বাড়ির পোষা নেড়ি কুকুরের নাম ছিল ব্রাহ্মণ। সেই নিয়ে কি গুজগুজ।
  • Ranjan Roy | 132.176.247.59 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৪51350
  • একক,
    তোমার উদাহরণেই স্পষ্ট যে পৈতে জাতিসূচক এবং বর্ণাশ্রমের স্মারক চিহ্ন। তাই চার জাতের চাররকম পৈতে।
    প্রশ্ন এই শতকেও কি আমরা এই চিহ্নগুলো ধারণ করব?
    আর চাইলেই কি কেউ অন্য জাতের মত পৈতে পরতে পারে? পরার সময়ের অনুষ্ঠানগুলো করতে পারে? যে জাতের চিহ্ন তারা মানবে? যদি তারা নাই মানে বা আমাকে তাদের সম্প্রদায়ের একজন বলে মনে না করে তো আমি খামোকা একগাছি সূতো ধারণ করতে যাব কেন? কিসের আশায়?
    হিন্দিবলয়ে কোন নিম্নবর্ণের মানুষ উচ্চবর্ণের ধর্মীয় লোকাচার পালনের চেষ্টা করলে দাঙ্গা হয়ে যায়।
    খুব সাধারণ ঘটনা। গ্রামীণ সমাজে ব্রাহ্মণকে কেউ প্যার লাগুঁ (পায়ে পড়ি গো!) বললে বদলে "খুশ রহো!" বলা নিয়ম।
    আমি জানতাম না। তাই আমিও কেউ সম্বোধন করলে তাকে খুশ রহো বলতাম। কদিন পরে আমার ব্রাহ্মণ কলিগরা ( একছাদের নীচে থাকি, একসঙ্গে মেস করে খাই) আমাকে ছেঁকে ধরল। --কেন আমি অব্রাহমণ হয়েও ব্রাহ্মণের যোগ্য সম্বোধন করে অন্যায় ভাবে সম্মান আদায় করছি!
    ওরা আমাকে বলল-- তুমি উত্তরে বলবে "জয় রামজী কে!" এটাই ব্যবহারিক কোড।
    তাহলেই অন্যেরা বুঝে যাবে যে তুমি ব্রাহ্মণ নও। এটার যেন অন্যথা ন হয়!
  • একক | 53.224.129.51 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৫১51351
  • এই শতকে আমরা করবোনা তার কারণ আলাদা । এখন আর কেও একটাই কাজ ধরে পরে থাকেনা বা পরিবারপ্রথা মেনে কাজ নির্দিষ্ট হয়না ।

    ধরুন একজন স্কলার সে পিএইচডি করলো মানে একচুয়ালি ব্রাহ্মণ , এবার কোনো সংস্থার হয়ে চাকরি করছে মানে শূদ্র আবার চাকরি ছেড়ে নিজের কনসালটেন্সি খুলে বসলো মানে বৈশ্য , এবার এরকম লাইফে সে দুদিন অন্তর পৈতে বদলাবে নাকি :):) সেটা হাস্যকর । এখন কেও এসব করতে বলছে না । আমি শুধু বলেছি যে এখন যেটা কারণহীন সেটা এখনকার হিসেবেই অকারণ বলে ছেঁটে বাদ্দিন । এখনকার ইকোনোমিক্স এবং সোশ্যাল ডায়নামিক্স দিয়ে মধ্যযুগের পৈতের কারণ কে গালাগাল দেওয়া বোকাবোকা ব্যাপার ।

    পুজো বাদ্দিয়ে দিন , যজ্ঞপবীতের দরকার থাকবেনা । ধুও উড়িয়ে যজ্ঞ করবো ( লোকে আবার ফ্ল্যাটের মধ্যে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার তা তোয়ালে চাপা দিয়ে রাখে ) এদিকে উপবীত নিয়ে ক্যাচাল এটার তো মানে নেই ।
  • sm | 53.251.88.119 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৫৫51353
  • রঞ্জন বাবু,ক্লিয়ার হলো না।মূল কথা ছিল পৈতে জাতিভেদ প্রমোট করছে। তা,আমি নারীর উদাহরণ দিলাম।একজন মুখোপাধ্যায় নারী , কে যদি তার ধর্ম ও জাতি বা বর্ণ জিগানো হয় ;তো সে কি বলতে পারে?ধর্ম হিন্দু আর জাতি/বর্ণ হিসাবে ব্রাম্হন।কোনো আপত্তি?
    আপনার প্রশ্নের মূল উদ্দেশ্য বোধ হয় পৈইতে ধারী কোনো বামুনের জন্মসূত্রে প্রাপ্ত ধর্মীয় রীতি নীতি অনুযায়ী কিছু ক্ষমতার ওপর। কি তাই তো? তো আপনি যদি অ ব্রাম্হন হিন্দু হন তো বামুনদের ইগনোর করুন। বেদ পাঠ ফাট না করতে পারলে তো পৃথিবী উল্টে যাবে না!
  • রৌহিন | 113.42.126.220 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৫৫51352
  • এককের এই শেষ মন্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত
  • একক | 53.224.129.51 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:০১51354
  • পুরো ব্যাপারটা "পৈতে " তে আটকে রাখলে বুঝতে পারবেননা । জল ঘোলা হবে শুধু । মুখ প্রশ্নটা হচ্চে ইভোলিউশন অফ সোশিও ইকোনোমিক ইন্সাইনিয়া । এই ইন্সাইনিয়া গুলো যুগে যুগে পাল্টাতে পাল্টাতে যায় । এবং যুগে যুগে কেও সেটা নিয়ে ঢাক পেটাতে ভালোবাসেন । কেও বাসেন না । অনেক ডাক্তার ফেসবুক একাউন্টে ডাক্তার লিখে রাখে । এটাও ইন্সাইনিয়া । এগুলো দিন দিন অনেক কমপ্লেক্স ফর্ম পাচ্ছে , পরিবর্তন হচ্ছে । এই জায়গাটা ইন্টারেস্টিং । এরই মধ্যে যেহেতু পুজো -চর্চা থেকে গ্যাছে তাই একেবারে মধ্যযুগের ইন্সাইনিয়া হিসেবে পৈতেও থেকে গ্যাছে ।
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:১৯51355
  • কে কি মনে করলো তাকে ইম্পর্টেন্স দেব কেন?
    ধরুন হোস্টেল এ দক্ষিণ ভারতীয় ব্রাম্হন আমাকে বললো, তুমি বা বাঙালিরা কেমন বামুন হে-তোমরা মাছ/মাংস খাও?
    তো আমি তাকে উত্তর দিলাম, ভালোই তো কোলকাতা গিয়ে মন্দির করলে তোমাকে পুরুত করবো। খরচ কম লাগবে কারণ বাগানে ছেড়ে দিলে তুমি ঘাস পাতা চিবিয়ে খেয়ে নেবে। এই বলে মুরগির ঠ্যাং চিবুতে লাগলাম
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:১৪51356
  • একক, হ্যাঁ তো, এখনও বদলায়, আইডি কার্ডটা বদলায়। হুঁ হুঁ, এসব চাকরি বাকরির ব্যাপার, ইয়ার্কি না। ঃ-)
    এককালে মনে হয় এইসব পৈতেগাছা তাগা তাবিজ এইসব আসলে আইডি কার্ডের মতন জিনিস ছিল। রাজসভায় কাজ করে হয়তো, বা হয়তো গ্রামেই কাজ করে, তো, বড়োসড়ো মীটিং এ একটা কিছু তো দেখাতে হবে! নইলে ভীষণ কনফিউশন হতে পারে।
    ঃ-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত প্রতিক্রিয়া দিন