এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • বিজ্ঞান-মনস্কতার অ-আ-ক-খ # এক

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৮৩৯১ বার পঠিত
  • ফেসবুকে বছর দুয়েক আগে একটা খবর পড়ে চমকে উঠেছিলাম। বিহারের একটি গ্রামে বাবা-মা তাদের দুই যমজ কন্যার একজনকে পুড়িয়ে মেরেছে আর একজনকে সুস্থ করে তোলার অভিপ্রায়ে। সন্তানদুটি দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগছিল। কিছুতেই ভালো হচ্ছিল না। শেষে তারা নিরুপায় হয়ে এক তান্ত্রিক বাবার কাছে যায়। সে পরামর্শ দেয়, ভগবান নাকি কোনো কারণে সেই বাবা-মার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে এদের ফেরত চাইছে। তাই ওরা ভালো হচ্ছে না। হবেও না। অন্তত একজনকে ভগবানের কাছে ফেরত দিতে হবে। তাহলেই একমাত্র অপর সন্তানটি সুস্থ হয়ে উঠবে। তারপরেই একদিন বড় সড় আয়োজন করে হোমানল জ্বালিয়ে গায়ে তেল ঢেলে একটি মেয়েকে পুড়িয়ে মারে সেই অশিক্ষিত বাবা আর মা নিজের হাতে। লোকজন জানাজানি হতেই কেলেঙ্কারির এক শেষ। তান্ত্রিক বাবা তারপর থেকে ফেরার হয়ে যায়। অথবা হয়ত মন্ত্রবলে অদৃশ্য?

    অনেক রাত বলে সেদিন দুই চোখ কচলে ভালো করে খবরটা আরও কয়েকবার পড়েছিলাম। তারপর দেওয়ালের ক্যালেন্ডারের দিকে দৃষ্টি ফেলে দেখলাম। না। ঠিকই আছে। ২০১৪। একবিংশ শতাব্দের বেশ ভেতরেই ঢুকে এসেছি আমরা। অথচ . . .

    [ক] বিজ্ঞানমনস্কতা?

    তখন মনে হয়েছিল, বিজ্ঞান-মনস্কতা নিয়ে বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মী হিসাবে প্রকাশ্য দরবারে আবার দুচার কথা বলার চেষ্টা করা উচিৎ। হয়ত কিছু কাজ হতে পারে। মানুষের মধ্যে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু হতে পারে।

    তবে সেই সঙ্গে একথাও মনে হল, বিজ্ঞান-মনস্কতা কাকে বলে এই প্রশ্ন এখনকার দিনের একটা বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের পত্রিকার পাতায় উত্থাপন করা বেশ বিপজ্জনক। পাঠকরা যথেষ্ট মনঃক্ষুণ্ণ হতে পারেন। উত্তেজিত হয়ে বলতেই পারেন, “আরে মশাই, আজকাল আমরা ভূত-প্রেত মানি না, ঠাকুর দেবতা মানি না, প্রায় কোনো আচার-বিচারে নেই, বন্ধুদের খেতে বসে জাতপাত বিচার করি না, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা করি না, ল্যাপটপ মোবাইল ডাটাকার্ড দিয়ে সারা দুনিয়ার সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখি, আর আমাদের আপনি এখন বিজ্ঞানমনস্কতা শেখাতে বসেছেন? যান যান, ফালতু নিজের আর আমাদের কাজের সময় নষ্ট করবেন না। এর থেকে বরং সোনা ব্যাঙ নিয়ে কিছু লিখুন। বাচ্চাদের কাজে লাগতেও পারে।”

    এটা তেমন ভুল কথাও কিছু তো নয়। উপর থেকে দেখলে মনে হয়, ভারতীয় সমাজ মনে হয় বেশ আধুনিক হয়ে উঠেছে। আধুনিক হয়ে ওঠার সাথে বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়ারও যে একটা সিধা-সম্বন্ধ আছে তা তো আর কেউ অস্বীকার করতে পারেন না। অসুখবিসুখ হলে আজকাল সাধারণত অজ পাড়াগাঁয়ের লোকেও জল-পড়া তেলপড়ার দিকে যায় না। সরকারি হাসপাতালেও যায় না। শহরের নামিদামি প্রাইভেট হাসপাতালেই ছোটে। ডাক্তারবাবুদের পরামর্শ মতো নানারকম টেস্ট করায়, অন্তত করাতে আপত্তি করে না। প্রচুর ভিজিট দিয়ে নামডাকওয়ালা স্পেশালিস্ট ডাক্তার দেখায়। তাঁদের প্রেস্ক্রিপশন অনুযায়ী দামি দামি ওষুধপত্র কেনে। শুধু ট্যাক্সিওয়ালা বা অটোওয়ালা নয়, রিকশাওয়ালার হাতেও আজাকাল মোবাইল দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, শুধু ভিভিআইপি-রাই নয়, আমাদের মতো সাধারণ ছাপোষা গেরস্ত লোকেরাও এখন জীবনের প্রতিটি ইঞ্চিতে প্রতিটি মুহূর্তে বিজ্ঞানকে জড়িয়ে এবং মানিয়ে নিয়েছে। এরকম অবস্থায় শিক্ষিত মানুষদের সামনে যদি বলি বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে কিছু বলব, তাঁরা ভালোমন্দ কিছু মনে তো করতে পারেনই। তার জন্য তাঁদের কাউকে দোষ দেওয়া উচিৎ না।

    কিন্তু আবার কিছু টুকরো টুকরো ঘটনার স্মৃতি এমনভাবে মনে ভিড় করে আসে, তাদেরকেও তাড়ানো যায় না যে। ওই বিহারের ঘটনাটা যেমন। কিংবা এই যে তার কিছুদিন আগে, সেই বছর, ডাঃ নরেন্দ্র দাভোলকর মহারাষ্ট্রে আততায়ীদের হাতে নৃশংসভাবে প্রকাশ্য রাজপথে খুন হয়ে গেলেন। তাঁর অপরাধ, তিনি বহুদিন ধরে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে শুধু আন্দোলন করছিলেন তা নয়, রাজ্য সরকারকে দিয়ে একটা কুসংস্কার বিরোধী আইন প্রবর্তন করাতেও চেষ্টা করছিলেন যাতে মন্ত্রতন্ত্র বুজরুকি দিয়ে লোক ঠকানো না যায়। যাতে বিহারের মতো—

    [খ] বাংলা কিন্তু এগিয়ে

    বিহারে অমনটা ঘটতে পারে। মহারাষ্ট্রেও সম্ভব। তাই বলে বাংলায়? কদাচ নয়, কুত্রাপি নয়। অন্তত বেশ কিছু শিক্ষিত মানুষকে আমি এরকম কথা বলতে শুনেছি। তাঁরা সত্যিই বিশ্বাস করেন, বাংলা অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় শিক্ষায় চেতনায় যুক্তিবোধে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে আছে। প্রয়োজনের তুলনায় তা কম হতে পারে। কিন্তু কুসংস্কারের নিরিখে আমরা বাঙালিরা সামান্য হলেও বৈজ্ঞানিক মনোভাবনার দিকে এগিয়ে রয়েছি।

    তাই কি? এই আপত্তিটা আবার আমি মানতে পারলাম না। কেন তা বলবার জন্যই এত ধানাই পানাই করছি। একে তো কুসংস্কারের কোনো অভাব নেই আমাদের চারপাশে, বাড়িঘরে, আত্মীয় স্বজন পরিচিতদের মধ্যে। ভাদ্র বা পৌষ মাসে বিয়ে করেন, ছেলের পৈতে দেন, বাচ্চার মুখেভাত হয়—এমন ঘটনা আজ অবধি আমার পোড়া চোখে পড়েনি। শুধু বিহার নয়, বাংলারও মফস্বল বা গ্রামগঞ্জের রাস্তায় গাড়ি নিয়ে চলতে চলতে এপার থেকে ওপারে রাস্তা ডিঙিয়ে বেড়াল চলে গেলে গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষা করেন না, এরকম গাড়িওয়ালা মালিক এবং/অথবা ড্রাইভার খুব বেশি দেখেছি বলে আমি দাবি করতে পারব না। আর সর্বোপরি, বিজ্ঞানমনস্কতা মানে তো শুধু কুসংস্কার থেকে মুক্তি নয়, জীবনের আরও নানা আনাচে-কানাচে যুক্তি ও বিজ্ঞানবোধের প্রয়োগ। সেই হিসাব করলে আমরা কোথায় পড়ে আছি দেখা উচিৎ না?

    কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম কলকাতার আশেপাশের মফস্বলের একটা বড় স্কুলে। বিজ্ঞান অবিজ্ঞান কুসংস্কার ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে বক্তৃতা দেবার কর্মসূচি ছিল। অনেক দিন ধরে এসব নিয়ে আমি বিজ্ঞান আন্দোলনের একজন কর্মী হিসাবে নানা জায়গায় বক্তৃতা দিতে গিয়েছি। ঘন্টা দেড় দুই সময় পেলে এই বিষয়ে খুব জমিয়ে বলতে পারি, যেখানে যাই একেবারে চুটিয়ে বলি, বলার মাঝখানে এবং শেষে শ্রোতাদের তরফে প্রচুর হাততালি পাই। সভার শেষে নিজের ভেতরে একটা কেমন তৃপ্তিবোধ কাজ করে, মনে হতে থাকে, দেশের যাবতীয় কুসংস্কারকে যেন একেবারে হিটলারি ব্লিতস্ক্রিগ-কায়দায় যুদ্ধ করে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি।

    সেদিনও আমার সেরকমই মনে হয়েছিল। দিনটা ছিল কৃষ্ণা পক্ষের চতুর্থী, সন্ধের দিকে যখন আমরা বেরতে যাচ্ছি, তখনও চাঁদমামা পুবাকাশে আকাশে উদিত হননি। কিছুই না ভেবে খুব সাদামাটা ভাবে কাছাকাছি একজন ছাত্রকে দেখতে পেয়ে জিগ্যেস করলাম, পুব দিকটা কোন দিকে। ছেলেটি আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ। মুখের ভাবে মনে হবে ওকে আমি রাজা আলেকজান্দারের জন্মদিন কবে জিগ্যেস করেছি। যা তার জানার কথা নয়। আর এটা যে তার জানার কথা নয় তা আমার তো অন্তত জানা থাকার কথা। অতঃপর সে একজন শিক্ষক মহাশয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল, যদি কোনো হাত পা মাথার নড়াচড়ার ইসারায় কিছু আভাস পাওয়া যায়। না, হল না। কোনো শিক্ষকই এতটা ছেলেমানুষি ব্যাপারে নিজেকে জড়াতে চাইলেন না। নিজেকে কেমন যেন উজবেক মনে হল। কুসংস্কার-টুসংস্কার নিয়ে যাদের জন্য এত লড়াই করলাম, সেই সব সৈন্যসামন্তরা যে পূর্বদিক কোনটা এখনও তাই জানে না।

    একজন শিক্ষিকা এগিয়ে এসে আমাকে তাড়াতাড়ি বললেন, “না স্যর, আসলে ছাত্ররা তো কেউ আর এতক্ষণ স্কুলে থাকে না। তাই স্কুল ক্যাম্পাসে চাঁদ কোন দিকে ওঠে দেখেনি। ইন ফ্যাক্ট, আমরা কেউই তা দেখিনি বা লক্ষ করিনি।”

    তা বটে। অকাট্য যুক্তি! স্কুলের ছাত্ররা কিংবা শিক্ষকরা যদি কখনও স্কুলের ক্যাম্পাসে চাঁদ উঠতে না-ই দেখে থাকে, তাহলে স্কুলের ক্যাম্পাসের পূর্ব দিক চিনবে কী করে?

    . . . একজ্যাক্টলি!

    যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকবৃন্দ, আপনারা এবার মনে মনে যা ভাবছেন, আমি বুঝেছি। আমিও এই প্রশ্নে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত।

    দিনের বেলায় সূর্যকে দেখে তো পুব দিকটা চেনার কথা। চাঁদের জন্য তো আর আলাদা কোনো পূর্ব দিক নেই। তাও কি ছাত্ররা দেখেনি? সেই সব মাস্টারমশাই এবং দিদিমনিরা দেখেননি? সেই দেখার কথা মনে পড়ল না? কিন্তু এক ধরনের কাপুরুষোচিত লজ্জায় এই প্রশ্নটা কেন জানি না কিছুতেই আমি সেদিন ওনাদের কাউকে উদ্দেশ করে আমি আর জিগ্যেস করে উঠতে পারলাম না। আমার ধারণা, আপনারাও কেউ তখন ওখানে থাকলে করতে পারতেন না। আমার মতোই আপনাদেরও অনেকের চোখের সামনে ভেসে উঠত আমাদের স্কুলগুলোতে ভূগোল শিক্ষার নিত্যকর্মপদ্ধতি। পুস্তক পাঠ। লক্ষ্মীর পাঁচালি পাঠের মতন করে পঠন এবং তারই ভিত্তিতে পরীক্ষণ। ক্লাশে মৌখিক প্রশ্নোত্তর। পরীক্ষার খাতায় লিখিত উত্তর। টিক ক্রস হ্যাঁ না ঠিক ভুল। শূন্যস্থান পূরণ। সেই অনুযায়ী নম্বর। ভালো রেজাল্ট, মাঝারি ফল, খারাপ নম্বর। নদী পাহাড় পশ্চিম বঙ্গ এশিয়া আফ্রিকা কৃষ্ণ সাগর আন্টারকটিকা সাহারা নায়াগ্রা—সব আমরা ছাত্ররা উত্তরপত্রে লিখে দিয়ে থাকি কিছুই স্বচক্ষে না দেখে, না বুঝে। না, সব জায়গায় গিয়ে গিয়ে চাক্ষুস দেখার প্রশ্নই ওঠে না। আমি সে কথা বলছি না। কিন্তু মানচিত্রে বা ছবিতেও তো দেখা যায়। দেখানো যায়। তাও দেখিনি। আজও কেউ দেখে না। দেখানো হয় না। দরকার হয় না। সূর্য যে পুব দিকে ওঠে তা বলা বা জানা বা খাতায় লেখার জন্য পুব দিক কোনটা না জানলেও যে চলে—এই মহৎ উপলব্ধিই আমাদের ভূগোল শিক্ষার প্রথম ও প্রধান কথা। এমনকি শেষ কথাও।

    প্রাথমিক স্তরের স্কুলপাঠ্য ভূগোলে খানিকটা জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটা বুনিয়াদি পরিচয় দেওয়া থাকে। বছরের বিভিন্ন সময়ে এক আধবার ছাত্রদের সন্ধ্যা বা রাতের আকাশ দেখানোর উদ্যোগ নিয়ে বইতে পড়া জিনিসগুলোকে, কৃত্তিকা শ্রবণা কালপুরুষ ধ্রুব তারা মঙ্গল বৃহস্পতি শুক্রকে চিনিয়ে দেওয়া, খুব কষ্টকর নয়। কিন্তু সেটুকুও হয় না। যে বাবা-মা স্কুলে ক্লাশ না হওয়া নিয়ে মাস্টারমশাইরা ভাল করে পড়াচ্ছেন না বলে প্রতিবাদে সমালোচনায় সোচ্চার, তাঁরাও এই ব্যাপারে চুপচাপ। বাড়িতে প্রাইভেট টিউটর এসে ভূগোল পড়ালে তিনিও সন্তানকে আকাশ চেনাচ্ছেন কিনা তা নিয়ে তাঁরা আদৌ ভাবিত নন। মাথা উপরে তুলে কিছু দেখা নয়, মাথা নিচু করে টেবিলের উপরে বই খাতার পৃষ্ঠায় নজর দিতেই তাঁরা ছেলেমেয়েকে শেখাতে চান। সাধে কি আর আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের অনেকের নজরই নীচের দিকে চলে যায়?

    আর এইজন্যই আমরা প্রায় কেউই জানি না আমরা যাকে আমাদের ডান হাত বলি সেটা কেন দক্ষিণ হস্ত। বাঁ হাতকে কেন দক্ষিণ হস্ত বলা হল না? তা কি নিতান্তই কাকতালীয়?
    চলুন, এবার একটা অন্য দৃশ্যপটে যাওয়া যাক।

    এক বন্ধুর বাড়িতে গেছি। তাঁর পুত্র, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, মন দিয়ে সোচ্চারে ইতিহাসের পড়া মুখস্থ করছিল, “আলেকজান্দার বন্দি রাজা পুরুকে প্রশ্ন করিলেন, আপনি আমার নিকট কীরূপ ব্যবহার আশা করেন? পুরু বীরের মতো উত্তর দিলেন, একজন রাজা আর একজন রাজার সহিত যেরূপ ব্যবহার আশা করিয়া থাকে। এই কথা শুনিয়া আলেকজান্দার খুশি হইয়া পুরুকে মুক্তি দিলেন এবং ভারতবিজয় সফল করিয়াও তা অধিকার না করিয়াই দেশে ফিরিয়া গেলেন।” মনে পড়ে গেল, আমরাও ছোট বেলায় এই রকম ইতিহাস কাহিনি মুখস্থ করেছি, পরীক্ষার খাতায় লিখেছি, ভালো নম্বরও পেয়েছি। অনেক কাল পরে কিঞ্চিত বুদ্ধিশুদ্ধি হওয়ার পর আমার মনের মধ্যে একটা নিরীহ প্রশ্ন জেগেছিল, এ কি সত্যিই সম্ভব? হাজার হাজার মাইল রাস্তা ঠেঙিয়ে—আর রাস্তা মানে তো এখনকার মতো বাঁধানো পাকা সড়ক নয়, বনজঙ্গল নদী পাহাড় মালভূমির ভেতর দিয়ে কোনোরকম পায়ে চলার সরু পথ—তার মধ্য দিয়ে সুদূর ম্যাসিদনিয়া থেকে পঞ্জাব পর্যন্ত কষ্ট করে এসে স্রেফ পুরু রাজের বীর কাব্যরসে মুগ্ধ হয়ে গিয়ে একজন দিগ্বিজয়ী রাজা নব অর্জিত ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যাবে? এল কেন তবে এ্যাদ্দুর? এ কি বিশ্বাসযোগ্য?

    তখন আবার আমার মনে হয়েছিল, না, ইতিহাস পড়তে হলে, পড়ে বুঝতে হলে, হাতের সামনে সংশ্লিষ্ট ভূগোল বইও খুলে রাখতে হবে। আলেকজান্দার কেন চলে গিয়েছিল বুঝতে হলে পশ্চিম এশিয়ার, ভূমধ্যসাগর থেকে শতদ্রু নদীর পাড় পর্যন্ত, ভৌত মানচিত্রটা খুলে দেখতে হবে। তখন সন্দেহ দেখা দেবে, সেই প্রাচীন কালে অতদূর থেকে ওই মানচিত্রওয়ালা জায়গাগুলো পেরিয়ে ম্যাসিদনিয়ার সিংহাসনে বসে পারস্য আফঘানিস্তান ধরে রেখে পঞ্জাব শাসন করা গ্রিকদের পক্ষে আদৌ সেইকালে সম্ভব ছিল কিনা। আর এইভাবে ইতিহাস পড়তে শিখলে তখন বোঝা যাবে, পুরুর সেই বহুপঠিত সংলাপটি সাহিত্যের ইতিহাসের পক্ষে অতি উপাদেয় উপচার হলেও ইতিহাস সাহিত্যের পক্ষে একেবারেই কোনো লোভনীয় উপাদান নয়। এতে আমাদের জাতীয় আবেগে সুড়সুড়ি দিতে সুবিধা হয় ঠিকই, কিন্তু বুদ্ধির গোড়ায় ধুনো দেওয়ার ধুনুচির আগুন শিক্ষাজীবনের একেবারে শুরুতেই নিবিয়ে দেওয়া হয়।

    এইভাবে ইতিহাস পাঠ করতে শিখলে তবেই বোঝা যাবে, কেন সুলতান বা মোগল আমলের সম্রাটরা দিল্লি থেকে এগিয়ে পূর্বদিকে যতটা রাজ্য বিস্তার করেছে, দক্ষিণ দিকে ততটা যায়নি কেন। স্থলপথ ধরে সাম্রাজ্য বিস্তার বা রক্ষা যে সুবিধাজনক নয়, নদী বা সমুদ্রপথ ধরে এগোনোই যে তখনকার পক্ষে সুবিধাজনক ব্যবস্থা ছিল, এবং সেই অনুযায়ীই যে বিহার বা বাংলার দিকে যত সহজে তারা আসতে পেরেছে, দক্ষিণে তত সহজে যেতে পারত না—এটা বোঝা যাবে।

    সোজা কথায় বলতে গেলে, ইতিহাস ভূগোলও আমাদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পড়া এবং পড়ানো উচিৎ, কিন্তু আমরা পড়িও না, পড়াইও না। বিজ্ঞানমনস্কতা এখানেও প্রতিদিন মার খেয়ে চলেছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৮৩৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • bip | 183.67.3.44 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:৪২51357
  • কম্পিটিভ মার্কেট এবং ক্যাপিটালিজমের বিকাশ ঠিক ঠাক না হওয়া পর্যন্ত বাংলায় বিজ্ঞানমনস্কতার উন্নতির আশা দেখি না। বাংলার সব চাকুরিদাতা মারোয়ারীরা -যার কুসংস্কার এবং সব ধরনের বদ সামন্ততান্ত্রিক ধারা গুলো অব্যাহত রেখেছে। চালক শ্রেনি হনুমান চল্লিশার মাল হলে-বাকিরা কি হবে?

    বিজ্ঞান মনস্কতার উদ্ভব ইউরোপে হয়েছিল বিজ্ঞান মনস্ক মানুষের চাহিদার জন্য-যারা বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন করতে পারবে। বাংলা বা ভারতের ব্যবসা চালায় কম্প্রেদর বা ট্রেডার শ্রেনী। এখানে মার্কেট পুরোটাই রিগড। ফলে বিজ্ঞান মনস্ক উদ্ভাবনী মানুষের চাহিদা নেই বাজারে।

    বিজ্ঞান মনস্ক স্কিল্ড লেবারের চাহিদা তৈরী হলে বিজ্ঞান পরিশদের দরকার হবে না। মার্কেট নিজেই তৈরী করে নেবে বিজ্ঞান মনস্কতা। কিন্ত তা হবার না যদ্দিন না পর্যন্ত প্রতিযোগিতার মার্কেট তৈরী হয় ঠিক ভাবে। ধণতন্ত্রের ঠিক ঠাক বিকাশ হলে, এগুলো অটোমেটিক্যালি তৈরী হবে।
  • SS | 160.148.14.3 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:০৯51358
  • হায়, বাঙালীদের এমনই দুরবস্থা যে হনুমান চালিশার মাল ছাড়া আর কেউ চাকরিও দিচ্ছে না।
    তবে বিপ কি জানেন আমরা এলিমেন্টারি স্কুলে যে অঙ্ক শিখি সেটা হচ্ছে মানি ম্যাথ - ট্রেডার শ্রেণির তৈরি ?

    Money math
    5+4=9
    For people all over the world, this first approach triggers memories of elementary school. Students study addition, then subtraction, followed by multiplication and so on.
    There are word problems: You have four apples, and your mother gives you five more. How many apples do you have?
    Here, the primary goal is calculation and prediction.
    This is the dominant approach to teaching math today, and it has been for centuries.
    To understand why, Harouni returns to Recorde's textbook. Immediately after acknowledging math's bad reputation, Recorde — who invented the equals sign — defended math's importance.
    "It is the ground of all men's affairs," Recorde wrote. "No communication without it can be long continued, no bargaining without it can be duly ended, nor no business that man hath justly completed."
    No matter how corrupting math may be, Recorde argued, accountants, administrators, traders and merchants needed to know it. And so, merchants created little schools where their children could learn math.
    In Europe, these schools were called reckoning schools. There was one fee to learn addition, another to learn division by a two-digit number, another for fractions.
    Reckoning schools were first seen in Italy in the 1300s, but soon merchants from other places wanted their children to learn too. As a result, reckoning schools started springing up elsewhere, following trade routes.
    But Harouni says that this money math — critical for commerce and administration — is not the only way to teach math. It's not always 5+4=9. Indeed, he says there are two other equally valid approaches.

    বাকিটা জানতে হলে এই রিপোর্টটা পড়ে দেখুন -
    Why We Learn Math Lessons That Date Back 500 Years

    http://www.npr.org/sections/ed/2016/07/23/486172977/a-history-lesson-when-math-was-taboo
  • cm | 127.247.96.63 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৫৬51359
  • আপনারা পৈতে ছেড়ে গাড়ি নিয়ে আলোচনা করুন এযুগে ওটা বেশি প্রাসঙ্গিক। পৈতের কাজ এখন গাড়ি দিয়ে হয়।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.240.99.73 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১০:৩৯51318
  • অশোকবাবু,

    আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই এই জন্যে যে, আপনার মতো একজন বিজ্ঞান মনস্কতা সম্পন্ন মানুষ - এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছেন ।

    আমাদের শিক্ষার প্রসার স্মার্টফোনের অ্যাপ ইত্যাদি পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে । যে কোনও খবর হাতের মধ্যে ! আমাদের বাড়িতে যিনি কাজ করেন, তিনি ফোনের একটা বোতাম টিপেই তার বাড়িতে ফোন করেন । তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম - সে অন্য বোতামগুলো চেনে কিনা ! আমি শুনে অবাক হয়েছিলাম - সত্যিই সে কিন্তু সব বোতামগুলো চেনে না ! তাহলে ফোন করে কিকরে ? তাকে কেউ বাড়ির নম্বরটা শেভ করে দিয়েছে ও তিনি সেই বোতামটাকেই ব্যবহার করেন !

    শিক্ষিত আমরা হয়েছি ঠিকই । কারন সঠিকভাবে জানি - আজ মঙ্গলবার বা শনিবার । আজ থোর মোচা খাওয়া যায় না ! আজ বাড়িতে কাচাকুচি করা যায় না ! বাড়িতে ছোট্ট শিশু থাকলেও ঠাকুরমা বাড়িতে মাংস ঢুকতে দেয় না । সপ্তাহে বেশীরভাগ দিনই নাকি নিরামিষ । শিশুটি খুবই দুর্বল । দৌড়তে গেলেই পড়ে যায় !

    জীবন-ধারনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধর্মের দোহাই পেছন থেকে টেনে রাখে এমনভাবে যে মানুষ এগুবে কিকরে ! এদিকে প্রায় প্রত্যেক শিশুই তিন বছর বয়েস থেকেই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলেই যাতায়াত শুরু হয়েছে ! অথচ বাড়ির মধ্যেই আমাদের অশিক্ষার ও ধর্মের নামে এইসব উদ্ভট ধারনার চাষ !

    আপনার উল্লিখিত প্রতিটি ঘটনা - বড় নির্মমভাবে সত্যি ! এখানেও ডাইনী পড়ানোর ঘটনা প্রায়ই ঘটে । স্কুলে তো ভুতের উপদ্রব হয়ই !

    আপনি অনুগ্রহ করে এই বিষয় নিয়ে এখানে লিখতে থাকুন । আমার মতো আরও অনেক তথাকথিত শিক্ষিত লোকে কিছু কিছু শিখতে পারি ! - আমার মনে হয় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা - খুবই প্রয়োজনীয় !

    মনোজ
  • d | 144.159.168.72 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:০১51319
  • গত সপ্তাহেই বোধহয় 'এই সময়'তে খবর বেরিয়েছিল নিউ টাউনে ভাল রেজাল্টের আশায় তান্ত্রিকের কাছে গিয়ে ক্লাস নাইনে পড়া একটা বাচ্চামেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
    আশ্চর্য্য এদের মনে একবার প্রশ্নঐ আসে না যে তান্ত্রিক যদি ভাল রেজাল্ট করাতেই পারবে তবে নিজে তান্ত্রিকগিরি করে কেন!!

    সে যাই হোক, পৈতে' ব্যপারটাকে আপনি কুসংস্কার মনে করেন না? আমার তো এটা একটা চরম অসভ্য ও অশ্লীল প্রথা বলে মনে হয়।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.240.99.73 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:১৮51320
  • ডি,

    এখনও পর্যন্ত দেখেছি - এই সময় - পত্রিকায় - খবরগুলো বের হয় !

    পৈতে তো অবশ্যই একটা কুরুচিকর ও অসত্য চিহ্ন ! পৈতে পরেই কি আমি ব্রাহ্মন তথা ব্রহ্মত্ব পেয়ে গেছি ! - এরকম ভাঁওতা দিয়ে তো অনেক কাল কাটল ! আরও আছে । রাস্তায় চলতে চলতে প্রায় প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালেই আথা ঠোকা ! প্রতিটা দেওয়ালের গায়েই বা গাছের গায়েই পৃথিবীর যাবতীয় দেব দেবী বাস করে ?

    মনোজ
  • d | 144.159.168.72 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:২৯51321
  • আরে আপনাকে না লেখক, অশোক মুখোপাধ্যায়কে জিগ্যেস করেছিলাম পৈতের কথা।

    যাই হোক আপনি পৈতেকে অসভ্য ও কুরুচিকর মনে করেন, আবার পরেনও! মানে ঠিক বুঝলাম কি?
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.240.99.73 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:৩৭51322
  • আরে আপনি কি লেখার মধ্যে দিয়ে দেখতে পাচ্ছেন নাকি ! আপনার তো বেশ দিব্য দৃষ্টি আছে বলতে হবে !

    দেওয়ালে মাথা ঠোকা বন্ধ করলেই সব বুঝতে পারবেন ! বিষয়টাতে ধ্যান দিন !

    সব ভটচাজই যে পৈতে পড়া পুরুত - না হতেও পারে !

    মনোজ
  • সিকি | 165.136.80.163 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:৪২51323
  • ইয়ে, পৈতে কোনও পাঠ্যপুস্তক নয় - পৈতে "পরে", পড়ে না।

    সে যাই হোক, মনোজ ভট্টাচার্য কী করে জানলেন যে দ দেওয়ালে মাথা ঠোকে, আর দ-ই বা কী করে জানল যে মনোজ ভট্টাচার্য পৈতে পরেন - কোনওটাই বুঝলাম না।
  • সিকি | 165.136.80.163 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:৪৬51324
  • মানে, আরেকবার পড়ে যা বুঝলাম - ঠিকঠাক ব্রাহ্মণ হলে বা ব্রহ্মত্ব পেয়ে গেলেই পৈতে পরা জাস্টিফায়েড হয়ে যায়, এ রকমই কি বলতে চাইছেন?
  • Debabrata Chakrabarty | 59.32.16.169 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:১৬51325
  • " ভাদ্র বা পৌষ মাসে বিয়ে করেন, ছেলের পৈতে দেন, বাচ্চার মুখেভাত হয়—এমন ঘটনা আজ অবধি আমার পোড়া চোখে পড়েনি। " এই বাক্যবন্ধে পৈতে' ব্যপারটা কুসংস্কার কি কুসংস্কার নয় এই প্রসঙ্গ টি আসেনি মনে হয় ' দ' । বরং আমার মনে হোল অশোক বাবু বলছেন যে যেসমস্ত অনুষ্ঠান অধিকাংশ বাঙালী শুভ বলে মনে করে বিয়ে ,পৈতে ,অন্নপ্রাশন ,গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি কেবল কুসংস্কারের কারনে ভাদ্র বা পৌষ মাস এড়িয়ে চলেন ।
  • | 116.221.134.7 (*) | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:৫৯51326
  • আরে এ আবার কোথাকার কলকতলার ঝগরুটে জুটল!!
    দেখুন মনোজ ভট্টাচার্য্য, আপনি লিখেছেন "পৈতে পরেই কি আমি ব্রাহ্মন তথা ব্রহ্মত্ব পেয়ে গেছি !" "আমি" এই সর্বনামটি বাংলাভাষায় নিজের জন্য ব্যবহার করা হয়। সেইজন্যই জানতে চেয়েছিলাম। (কপি টু সিকি)
    মনে হচ্ছে একেবারে প্রাণীবিশেষের ল্যাজে পা দিয়ে ফেলেছি। বেশ, ভবিষ্যতে 'মনোজ ভট্টাচার্য্য' নামের কোনও নিকের সাথে মিথষ্ক্রিয়ায় যাওয়ার আগে এই অহেতুক ধেয়ে এসে গালিগালাজ করাটা মাথায় রাখবো।
  • aka | 34.96.86.249 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩২51360
  • একটু কম হইল, আর একটু হলে বেশ হত।
  • T | 24.100.134.80 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৩51361
  • একক ও রঞ্জনদাকে,

    একক, তুমি ধর্মসূত্রের যে উল্লেখ করছ তার সময়কাল আনুমানিক খ্রীস্টপূর্ব ৬০০-৩০০। মূলতঃ, ধর্মসূত্র অর্থাৎ আইন গ্রন্থ, গৃহসূত্র অর্থাৎ গার্হস্থ্য আচার সংক্রান্ত গ্রন্থ এবং পাণিনির ব্যাকরণ, এই তিনটে থেকে সে যুগের রীতিনীতির কিছু হদিশ মেলে। এইসময়কালে মূলতঃ নানান টীকা তৈরী হচ্ছে ও ব্যাখ্যা। কিন্তু তার আগেকার ব্যাপারগুলোও দেখতে হবে।

    উপনয়নের সবচেয়ে প্রাচীন উল্লেখ পাওয়া যায় অথর্ববেদে। যেখানে একজন যুবককে নতুন জীবনে প্রবেশ (উপ- নী) করাচ্ছেন একজন শিক্ষক। এই উপনীত যুবকই হচ্ছেন ব্রহ্মচারী। কিন্তু ইন্টারেটিংলি এখানে বর্ণের কোনো উল্লেখ নেই। এইখানে একটা হাইপোথিসিস (অলটেকর, এডুকেশন ইন এনশিয়েন্ট ইন্ডিয়া, এটা ক্রস রেফঃ) খাড়া হচ্ছে যে, প্রাচীন সমাজে শিক্ষার ভার পুরোহিতদের কাঁধে ন্যস্ত ছিল এবং উপনয়নের মাধ্যমে তাঁরা সেটা শুরু করতেন। প্রথমদিকে এই অক্ষরশিক্ষার ব্যাপারটা কেবল পুরোহিত এবং অলরেডী শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে থাকলেও ক্রমশঃ সেটি সমগ্র আর্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, ইঙ্কলুডীং শূদ্র জনগোষ্টী। সংহিতা (তৈত্তিরীয়) এবং ব্রাহ্মণ (শতপথ) এইগুলোতে কিন্তু সেসময় শূদ্রদের শিক্ষার অধিকার স্বীকৃত।
    অন্য হাইপোথিসিস হচ্ছে এটা ঠিক অক্ষরশিক্ষার ব্যাপার নয়, র‍্যাদার আর্য সমাজভুক্ত করার মতো ব্যাপার। দীক্ষারীতি জাতীয় ব্যাপার আর কি। সেইসময়কার প্রাচীন ইরানে আহুর মাজদার র সম্প্রদায়ে কাউকে ইঙ্কলুড করা হ'ত এইরম দীক্ষা দিয়ে, স্পার্টাতেও।
    তো, যেটাই ঠিক হোক না কেন, প্রথম দিকে দেখা যাচ্ছে যে আর্য জনগোষ্টীর শূদ্র সদস্যরাও উপনয়ন ও ব্রহ্মচর্যের মতো দীক্ষা আচার পালন করতেন।

    কিন্তু গল্পটা শুরু হচ্ছে বৈদিক পর্বের উপান্তে। ছান্দোগ্য উপনিষদ / শ্রৌতসূত্র ইতাদিতে তিন বর্ণের জন্য উপকরন প্রক্রিয়াদির কথা সুনির্দিষ্ট কিন্তু শূদ্রেরা বাদ। মোস্ট প্রবাবলি ততদিনে বিশাল সংখ্যক শূদ্র জনগোষ্টীকে মোটামুটি অসংগঠিত লেবার ক্লাসে কনভার্ট করা হয়ে গিয়েছে। এইটা কেন বলছি তার কারণ কিছু কিছু শূদ্র শ্রেণীকে তখনও এই উপনয়ন বা যাগ যজ্ঞের অধিকার প্রদান চলছিল। যখন যাদেরকে সাইজ করতে পেরেছে আর কি। তারপর জনগোষ্টী যত শ্রেণীবিভক্ত হয়ে পড়েছে ততই এই উপনয়ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এক বিশেষ জনগোষ্টীর বিশেষ অধিকার। আগে ইরাণের উদাহরণ দিলাম এই কারণে যে এইটা ইরাণেও ঘটেছে। হুইতী শ্রেণীকে এই অধিকার দেওয়া হয়নি। এবং স্পেসিফিক্যালি বলা যায় যে, দীক্ষা প্রথাই বহুলাংশে শূদ্রদের সামাজিক অবনমনে সাহায্য করেছে।

    এই গল্পের তৃতীয় স্তরটা হচ্ছে যে ব্রাহ্মণরা কিন্তু এতদিন অসবর্ণ বিয়ে করতে পারতেন। যেমন ব্যাসদেব ছিলেন জেলেনীর ছেলে। প্রায় বারোজন ঋষিদের পাওয়া যাচ্ছে যাদের মায়েরা কোনো না কোনো শূদ্রবর্ণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। জনগোষ্টী সুস্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার পর এই শূদ্র জননীর ব্যাপারটা ব্রাহ্মণদের ভাবিয়ে তোলে। মনে হয় উপনয়ন সেই সময় হয়ে দাঁড়ায় ব্রাহ্মণদের কাছে সামহাউ ইতর যোনি অ্যানসেস্টর থেকে মুক্তিলাভের পথ, যেটাকে পরবর্ত্তীতে, মানে আফটার টু হান্ড্রেড ইয়ারস ধর্মসূত্রে, ধামা চাপা দেওয়া হবে আধ্যাত্মিক ও শারীরিক বিভাজন ইত্যাদির নাম করে।
  • Ranjan Roy | 132.162.116.133 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:০০51362
  • কেয়াবাৎ, T, কেয়া বাৎ!!

    এইধরণের informed আলোচনাই কাম্য।

    এইখানে একটু অ্যাড করতে চাই।
    হিন্দু ধর্মসূত্রগুলো অনুযায়ী অনুলোম বিবাহ ( অর্থাৎ পিতা উচ্চবর্ণ ও মা নিম্নবর্ণ ) সিদ্ধ।
    এখানে সন্তানের জাতি ধরা হবে পিতার নিম্ন, মায়ের থেকে উচ্চ (অ্যারিথমেটিক মীন!।)
    কিন্তু পিতা নিম্নবর্ণ ও মা উচ্চবর্ণের হলে সেটি প্রতিলোম বিবাহ--অসিদ্ধ। এই বিবাহের সন্তান হবে বর্ণসংকর, বাস্টার্ড!!
    আপনি যা উদাহরণ দিয়েছেন সবই ওই অনুলোম বিবাহ। শাস্ত্রে বা পুরাণকথায় প্রতিলোম বিবাহের স্বীকৃত উদাহরণ চোখে পড়েনি। কেউ দেখলে জানাবেন।
    কথিত নিম্নবর্ণের লোকের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি এটা নিয়ে ওদের ক্ষোভ আছে। ওদের চোখে এই ব্যব্স্থার নিগলিতার্থ হল উচ্চবর্ণের পুরুষ ইচ্ছে করলে নিম্নবর্ণের স্ত্রীকে ভোগ করতে পারবে (মহাভারতে পরাশর- সত্যবতী বা ব্যাসদেব-বিদুরের মা উপাখ্যান), অথচ, উচ্চবর্ণের স্ত্রীর নিম্নবর্ণের পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হলে দাঙ্গা হয়ে যাবে।
    এমনি ঘটনা একাধিক হিন্দি বলয়ে আমার সমকালে ঘটেছে। আবার Maya Angelou এর I Know Why The Caged Bird Sings এ দেখছি কৃষ্ণাঙ্গদের সঙ্গে আম্রিকায় শ্বেতাঙ্গরা বিশ্বযুদ্ধের আগের দিনগুলোতে (এখন জানিনা) ঠিক একই ব্যবহার করত। কালোরা সাদা মেয়েদের গায়ে হাত দিলে তাদের মরতে হবে।
  • জাতপাত | 105.128.43.164 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৯51363
  • ধর্মীয় অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সবরকম জাতিপ্রথাই উঠে যাক । পাঁচহাজার টাকা দিলে তবে হোটেলে থাকতে পারবে - এ হল অর্থনৈতিক ছুঁৎমার্গ । কিংবা অটো চালাতে তৃণমূল বা সিপিএম (জায়গামত) হতে হবে ।
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:০৮51364
  • in Mahabharata. King Yayati married a Brahmin woman Devayani
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১২51365
  • "কালোরা সাদা মেয়েদের গায়ে হাত দিলে তাদের মরতে হবে।"
    গায়ের রং কালো এমন এয়ার হোস্টেস ভারতে এখনো চোখে পড়ে?
    বিদেশে দ্বিতীয়/তৃতীয় জেনারেশন ভারতীয়ঃ সাদা চামড়ার সঙ্গে সংসার পাতে। কালোদের (আফ্রিকান ইত্যাদি অরিজিন) সঙ্গে?
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:১০51366
  • ওসব কথা বলে লাভ নাই পিটি। রেসিজম আমাদের মনে।
    লোকেfsথেকে থেকেই পৈতে,পাগড়ি এসবের দিকে তাগ করে ঢিল ছোড়ে।
    আমি মুখে নাস্তিক,লিবারেল নামের পরে পদবি রাখি ব্যানার্জি।আমি কম্যুনিস্ট কিন্তু পদবি ভট্চাজ,বসু ইত্যাদি।
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:২০51367
  • তো পদবীটা বাদ দেবেন কি করে? কয়েক হাজার জ্যোতি বা বুদ্ধদেব পাওয়া যাবে।
    কিন্তু "রেসিজম আমাদের মনে" যদি সত্যি হয় তাহলে আমার নামের ল্যাজে ইসলাম কি ভট্টাচার্য থাকলে কি-ই বা আসে যায়?
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:৫৮51368
  • সেইজন্যই তো বলি পৈতে তে কি আসে যায়।আর পদবি না রেখে পেছনে গ্রামের নাম বা বাবার নাম রাখলেও চলে।
    সাউথ এর লোকেরা করে তো!
    আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েও তো কালো তকমা ঘুচলো না!
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:০৭51369
  • ইস্যুটা কি?
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:১৭51370
  • আপ্নে জানেন?রেসিজম কি?ঈশ্বর আছে কিনা?না না কম্যুনিস্ট রা কেন মন্দিরে পুজো দেয় ?
    ঠিক কি ইস্যু টা বলুন তো দেখি!
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:১১51372
  • নামের মধ্যেই তো পৈতে ঝুলছে! সেইটে বাদ দিক আগে! গলার পৈতে তো ব্যক্তিগত ব্যাপার, জামা খুলিয়ে কে দেখতে যাবে! কিন্তু প্রিভিলেজ তো নামের সঙ্গে সঙ্গেই আসছে! বিভেদ বিভাজন ইত্যাদিও সেখান থেকেই তো!
    রামজীবন চাটুজ্জে হয়ে যাক রামজীবন করালীপুত্র, কালীকৃষ্ণ সেনশর্মা হয়ে যাক কালীকৃষ্ণ গোবিন্দপুত্র----ইত্যাদি ইত্যাদি। কিংবা পদবী একেবারেই বাদ দেওয়া হোক, সবার ফার্স্ট নেম লাস্ট নেম দুটোই দেওয়া নাম হোক।
    কিন্তু এসব নিয়ে বহুবার আলোচনা আগেও হয়ে গিয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। তাতে কারুর কিছু আসবে যাবে না, সমাজে যে জিনিসের গ্রহণযোগ্যতা আছে, সমাজের পাওয়ারফুল লোকেরা চাইছে বলেই আছে।
  • kd | 212.142.75.2 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:১১51371
  • অশোকবাবু,
    আপনার "কুসংস্কার" শব্দটির সর্বত্র ব্যবহার আমাকে বিস্তর পীড়া দিচ্ছে। আমি যদি কোন সংস্কার মেনে চলি (ধরুন পৈতে পরা) কিন্তু তার ফলে পৃথিবীতে অন্য কারুর কোন ক্ষতি হলো না (পৈতের সেই আদ্যিকালের "গ্ল্যামার" এযুগে আছে?), সেটা কেন কুসংস্কার হিসেবে ক্লাসিফায়েড হবে। হ্যাঁ, কাউকে পুড়িয়ে মারা অবশ্যাই। ওটা ছাড়া আপনার লিস্টের আর কোনটাই তো "কু" মনে হলো না।

    দ,
    পৈতের ওপর এত রাগ কেন? ওর ইউটিলিটি যদি জানতে, হিংসেয় জ্বলেপুড়ে মরতে। উদাঃ পিঠ চুলকোনো, পাজামার দড়ি ছিঁড়ে গেলে স্টপগ্যাপ সল্যুশন, ইটিসি।

    ব্যাপারগুলোকে একটু অন্যভাবে দেখা যায় না? আমি মনে করি, এইগুলি যখন সমাজে ইন্ট্রোডিউস্ড হয়, তখন এ'গুলির সোশ্যাল বা হেল্থ ইম্প্লিফিকেশন ছিলো, কিন্তু আম জনতাকে বাধ্য করার জন্যে ধর্মের মোড়ক পরানো। (যেমন ক্যাথলিকদের শুক্রবার মাংস খাওয়া বারণ)। আনফরচুনেটলি, ভবিষ্যতে সেই প্রয়োজনীতা আর না থাকলেও প্রথাগুলি যায় নি (হয়তো আগের পণ্ডিতেরা আসল কারণটি ঠিকমতো ডকুমেন্ট করেন নি)। হয়তো তাই এই সব সংস্কার জায়গা বিশেষে আলাদা।
    তার ওপর "ইন্দির ঠাকরুণ" ফ্যাকটার তো আছেই।ঃ)
  • abcd | 233.223.151.229 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৪৫51373
  • @Atoz,
    বর্ণাশ্রম, জাতিভেদপ্রথার ঘোর বিরোধী আমি। কিন্তু আপনার দেওয়া নাম সংক্রান্ত সলিউশনটাকেই একটু অন্যদিক থেকে দেখতে ইচ্ছে করি।
    হায়ার এডুকেশনের দিকেই আপাতত তাকাই, দেশের যে সমস্ত বড় বড় ইন্সটিটিউট, ইউনিভার্সিটি, ল্যাব আছে সেখানে "উচ্চবর্ন" আর "নিম্নবর্ণে"র মানুষের রেশিও কিন্তু ওভারঅল দেশের মধ্যে উচ্চবর্ন আর নিম্নবর্ণের মানুষের রেশিও-এর সঙ্গে মেলে না। হায়ার এডুকেশনে খুব খুব কমই নিম্নবর্ণের দেখা মেলে। কারণটা শুধুমাত্র নামের মধ্যে মুখোপাধ্যায়, বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি ব্যবহার করা নয় নিশ্চয়ই মানেন? এটা একটা ডমিনেশন, তা সে কতটা কালচারাল, কতটা পলিটিকাল বা অন্যান্য তা গবেষণারই বিষয় প্রায়।

    আমার বক্তব্য যদি কোনও "এতদিন-ধরে-দলিত-পরিচয়-নিয়ে-আসা-ব্যক্তি" আপনার নামের নিয়ম ("সবার ফার্স্ট নেম লাস্ট নেম দুটোই দেওয়া নাম হোক।") চালু হওয়ার পরে বলেন যে, তিনি ওই নিয়ম মানবেন না। তিনি তাঁর পূর্ব পরিচয়েই বাঁচতে চান। তিনি প্রাচীনকালের নিয়ম অনুযায়ী দলিত গোষ্ঠীতে পড়তেন, শুধুমাত্র তার জন্য তাঁকে আজও কেন আর এক বর্ণের মানুষের কাছে ডমিনেটেড থাকতে হবে? আর সেই ডমিনেশন থেকে পালাবার পথ পেতে নাম পাল্টে ফেলতে হবে? কেন তিনি, তাঁর মতো আরও অনেকে এতদিন ধরে যে ডমিনেশন সয়ে এসেছেন সেই ইতিহাস নাম বদলে ঢেকে ফেলা হবে, অর্থাৎ, ভবিষ্যত কেন চিনবে না অত্যাচারিতদেরও?
    ব্যাপারটার সলিউশন শুধু নাম পাল্টে হবে না বলেই মনে হয়। নাম পাল্টালে আদৌ কোনও সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে কিনা এটাও প্রশ্ন।
    @অশোক বাবু সমাধানের দিকটায় একটু কিছু বললে ভালো হয়।
  • sm | 233.223.157.71 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৫৮51374
  • ওই ডমিনেশনের ব্যাপারটাই বুঝলাম না।উচ্চ বর্ণের লোকেরা কি পথ আটকে রেখেছে? নিন্মবর্ণের লোকেদের জন্যই তো কোটা সিস্টেম চালু আছে। আপনি কি কোটা সিস্টেম সমর্থন করেন?
    আর অত্যাচারিত আর অত্যাচারী কারা?
    ধরাযাক আমি উচ্চ বর্ণের; আমি কি অত্যাচারী?
    আমি আমার টাইটেল মুখোপাধ্যায়/বসু/মিশ্র উল্লেখ করছি, মানে অত্যাচারী ছিলাম বা আমার পূর্বপুরুষ অত্যাচারী ছিল সেটা বোঝানোর জন্য বা বোঝা যাচ্ছে বলে?

    উল্লেখ্য অশোক বাবুর নামের পাশেও মুখোপাধ্যায়।;-)))
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৪০51375
  • ওহে এবিসিডি, পদবী ত্যাগ করে ঐ ফার্স্ট নেম লাস্ট নেম দুই ই দেওয়া নামের লুঙ্গি গামছা নিয়ে চলতে আপত্তি দলিত দের যত না হবে, তার চেয়ে শতগুণ আপত্তি আসবে চট্টো, মুখো, বন্দ্যো, ভটচাজ্জি, চক্কোত্তিদের থেকে। কারণটা বুঝতে পারছেন?
    ঘুরিয়ে নাক দেখিয়ে লাভটা কী? ও পদবী টদবীও থাকবে, রেসিজমও থাকবে, ডিস্ক্রিমিনেশনও থাকবে। যার যেখানে সুবিধে সে সেখানে করে খাবে। মাঝে মাঝে একটু "বিপ্লবী বিপ্লবী ভাব, বিপ্লবের অভাব" করে এইরকম সব আলুচান্না হবে।
    ঃ-)
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৫১51376
  • আমি কারণ টা সত্যি বুঝনি।কারণ মুখার্জি/ব্যানাজী রেখে আখেরে তো বিশেষ লাভ হচ্ছেনা।
    ধরুন কারোর পদবি দাস, রায় বা চৌধূরী।সে বামুন, না কায়েত না তপশিলি কি করে বুঝবেন?
    সব ই হতে পারে।
    রেসিজম তো আছেই। মনের মধ্যে লুকিয়ে।
    থেকে থেকেই খুঁচিয়ে দেওয়া আমাদের পলিটিশিয়ান দের স্বভাব।
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৫৪51377
  • "Comment from PT on 11 September 2016 12:50:42 IST 213.110.242.8 (*) #"
    পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে জানাই আমার খুব পরিচিত একজন অ্যামেরিকান বাঙালী পরিবারের ছেলে একটি কালো অ্যামেরিকান মেয়েকে বিয়ে করেছে। তাদের একজোড়া বাচ্চাও হয়েছে। নাতি নাতনি নিয়ে আমার পরিচিত দাদাবৌদি খুব খুশি। ছেলের বিয়েও দিয়েছিল ঘটা করে, নাতি নাতনির অন্নপ্রাশনও করেছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন