এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নীলকরের দালালী

    Debabrata Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৯৬৩৭ বার পঠিত
  • আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী ,শ্যামের নাম ‘ কানাই ‘ রেখে রেজ্জাক মোল্লার নেতৃত্বে রাজ্যে চুক্তি চাষ শুরু হতে চলেছে । চুক্তি চাষ কথাটি যেহেতু সিঙ্গুর ,নন্দীগ্রাম পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে বিপদজনক সেহেতু এই প্রকল্পটির নাম রাখা হয়েছে পার্টিসিপেটারি ফার্মিং - অংশগ্রহণ মূলক চাষ । আনন্দবাজারের এই খবর যদি সত্য হয় তাহলে শাসকের পালটি খাওয়া শুরু ,তাও এমন এক ভদ্রলোকের হাত ধরে যিনি বিগত সরকারের সময়ে সমস্ত কৃষক বিরোধী কাজকর্মের পাণ্ডা ছিলেন । আদিবাসি জমি ,খাস জমির চরিত্র বদল করে হাজার হাজার একর জমি উনি উত্তর দিনাজপুর ,জলপাইগুড়ি এলাকায় চা বাগানের মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা বানিয়েছিলেন । ওদিকে যখন সিঙ্গুর নিয়ে ধুন্ধুমার হচ্ছে তখন চুপে চাপ হিন্দ মোটরের জমি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ল্যান্ড থেকে ‘ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং কমার্সিয়াল ‘ এই চরিত্রে পরিবর্তিত করবার কারিগর ইনি । মাত্র সাড়ে দশ কোটি টাকার বিনিময়ে হিন্দ মোটরের ৭৪৩ একর জমির রায়তি স্বত্ব বিড়লাদের হাতে তুলে দেওয়ার রূপকার ইনি । এনার চতুরতার ফলে হিন্দ মোটর বন্ধ করে দিয়ে হাউসিং করতে বিড়লাদের আজ আর কোন অসুবিধা নেই ।

    তবে বর্তমান শাসকের এই পালটি খাওয়ার চতুর প্ল্যান এবং ধারাবাহিকতা বুঝতে গেলে আমাদের একটু পেছনের দিকে যেতে হবে । ভারতের কৃষি পন্য’র মার্কেট নাকি বদ্ধ জলার মত যেখানে কৃষক এবং উপভোক্তার মধ্যে হাজারো স্তর । ফড়ে ,আড়তদার ,হোল সেলার ,রিটেলারের হাত ঘুরে একটি কৃষিপণ্য যখন প্রকৃত উপভোক্তার হাতে পৌঁছায় তখন তাতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ মূল্য যুক্ত হয় কিন্তু সেই বর্ধিত মূল্যের অধিকাংশই মধ্যস্বত্ব ভোগীরা আত্মসাৎ করে, উৎপাদক চাষি এবং সাধারণ উপভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তা চাষি এবং উপভোক্তার স্বার্থ রক্ষার এই মহান উদ্দ্যেশ্য কে সামনে রেখে,বিশ্বায়িত পুঁজির কাছে ভারতের কৃষিব্যবস্থার ক্রমাগত আত্মসমর্পণের সূত্রপাত হিসাবে ২০০৩ সালে তৎকালীন কেন্দ্রের এন ডি এ সরকার কৃষি ক্ষেত্রে রিফর্মের নামে কৃষি বিপণন সম্পর্কিত একটি মডেল আইন বা দিক নির্দেশিকা প্রস্তুত করে । সেই মডেল আইনের মুল তিনটে বিষয়গুলি ছিল ঃ-

    ১, মার্কেট কমিটি নিয়ন্ত্রিত কৃষক মান্ডি ছাড়াও প্রাইভেট সংস্থাগুলিকে কৃষক মান্ডি বা পাইকারি বাজার তৈরি করবার অধিকার দেওয়া দরকার - অর্থাৎ বর্তমান আড়ৎদার নিয়ন্ত্রিত কৃষক বাজার বৃহৎ এবং ব্যক্তিগত পুঁজির কাছেও উন্মুক্ত করা হোক ,এই বিপুল মধ্যস্বত্ত ভোগীদের মার্কেট শেয়ারে বৃহৎ পুঁজিকেও ভাগ বসাতে দেওয়া হোক ।
    ২, কৃষকের থেকে দেশীয় ,বিদেশীয় সংস্থা এবং যে কেউ যদি কৃষি পণ্য প্রত্যক্ষ ক্রয় করতে চায় তাহলে সেই অধিকার প্রদান করা উচিৎ - যেহেতু কৃষক ফড়ে ,আড়ৎদার ইত্যাদির মাধ্যমে বাজারে ফসল বেচতে বাধ্য সেহেতু তারা উপযুক্ত মূল্য পায়না আর ফড়ে ,আড়ৎদারদের লাভের কারনে উপভোক্তাও বেশী দাম দিতে বাধ্য থাকে কিন্তু এই সমস্ত বৃহৎ রিটেল চেন বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি যদি কৃষকের থেকে সরাসরি কৃষি পণ্য কিনতে পারে তাহলে কৃষক ন্যায্য দাম পাবে এবং মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের লাভের অংশ এড়িয়ে রিটেল চেন বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি সস্তায় উপভোক্তাকে কৃষিপণ্য সরবরাহ করতে পারবে । দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবেনা ইত্যাদি ।
    ৩, চুক্তি চাষের অধিকারের স্বার্থে আইন তৈরি করা বা অ্যামেন্ড করা জরুরী। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত ভারত এখন উচ্চমানের কৃষিপণ্য কেনবার মত আর্থিক সামর্থ্যের অধিকারী তাঁদের স্বার্থে যদি মোটা চালের বদলে সুগন্ধি বাসমতী চাল ,বা বিশেষ ধরনের আলু ,উৎকৃষ্ট হাইব্রিড টম্যাটো , লেটুস পাতা ইত্যাদি চাষি নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট গুনমান অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারে তাহলে কৃষক স্বাচ্ছ্যলের মুখ দেখতে পারে ইত্যাদি । সেক্ষেত্রে অবশ্য বীজ ,সার ,হরমোন, কি চাষ হবে এবং টেকনোলোজি প্রাইভেট কোম্পানিগুলিই নির্দিষ্ট করে দেবে ।

    আদতে এই দিকনির্দেশের মুল লক্ষ্য ছিল দেশের কৃষি বিপণন ব্যবস্থা সরাসরি দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করা । আসলে কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে ডান -বাম নির্বিশেষে শাসকদলগুলির মধ্যে এক ধরনের ঐক্যমত বর্তমান যা মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও বিশ্বায়নবাদী নীতির দ্বারা নির্দেশিত । আর তাই বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে আত্মসমর্পণ করে ২০১৪ সালের পুর্বে ভারতের প্রায় ১৭টি রাজ্য এই মুল তিনটে বিষয়কেই তাঁদের কৃষি বিপণন ব্যবস্থার মধ্যে ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে । যে সমস্ত রাজ্য ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই দিকনির্দেশ গ্রহণ করেনি তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য উৎপাদন কারি রাজ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গ ।

    আমাদের অনেকেরই মনে আছে বুদ্ধ বাবুর নেতৃত্বে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্য জুড়ে চুক্তি চাষ চালু করবার একটি প্রয়াস চালায় । কিন্তু সেই সময়ে ফরোয়ার্ড ব্লক যাদের হাতে রাজ্যের কৃষি বিভাগ এবং কৃষক মান্ডি গুলি পরিচালনার ক্ষমতা ছিল তারা এবং বিভিন্ন শরিকেরা চুক্তি চাষ চালু করবার বিপক্ষে তীব্র প্রতিবাদ করে । বিভিন্ন ছোট রাজনৈতিক দল ,অরাজনৈতিক সংগঠন এমনকি তৎকালীন তৃনমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে চুক্তি চাষের বিরোধিতায় রাস্তায় নামলে বুদ্ধ বাবু মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি ,রিল্যায়েন্স ফ্রেস ,স্পেন্সার ,মোর , বিগ বাজার এই দু চারটি বৃহৎ কোম্পানিকে কৃষিপণ্য নিয়ে ব্যবসা করবার শর্তসাপেক্ষ অনুমতি প্রদান করে চুক্তি চাষের প্রজেক্ট হিমঘরে পাঠাতে বাধ্য হন । তবে চুক্তি চাষ চালু করবার ক্ষেত্রে এইসব বিক্ষোভ মুল বাধা ছিলোনা ,পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের কোন কৃষক দরদী বিকল্প পন্থা বা বদান্যতাও ছিলোনা । সেই সময়ে যে আইনের বলে বাংলার কৃষি পণ্যের বাজার কর্পোরেট আগ্রাসন থেকে নিষ্কৃতি পায় তা হোল তৎকালীন APMC অ্যাক্ট । ১৯৭২ সালে পাস হওয়া এবং ১৯৮০ সালে সংশোধিত রাজ্যের কৃষক স্বার্থরক্ষার এই আইনের বলে APMC কে এড়িয়ে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেনা বা ভিন্ন রাজ্য থেকে সস্তায় কিনে এ রাজ্যে বিক্রি করা সম্ভব ছিলোনা । আর সেই অ্যাক্ট সংশোধন না করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রস্তাব এবং চুক্তি চাষ আইনসংগত ভাবে পশ্চিমবঙ্গে চালূ করা অসম্ভব ছিল । তাই বুদ্ধ বাবুর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিব্যবস্থা রিফর্মের নামে কৃষি বিপণন ব্যবস্থা সরাসরি দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা থেকে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় ।

    কিন্তু আধুনিক পুঁজির যুগে পুঁজি তো আর পশ্চিমবঙ্গের মত অন্যতম গুরুত্বপুর্ন এবং বিপুল কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী রাজ্যে কৃষিপণ্য বিপণনের মত লাভজনক ব্যবসা থেকে হাত গুটিয়ে থাকতে পারেনা । পুঁজি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান পথ যদি "accumulation through expansion" হয় তাহলে পুঁজি বৃদ্ধির আরেক সহজ পথ "accumulation through encroachment" বটে । এখন পুঁজি সবসময়েই বিভিন্ন বৃহৎ এবং ক্ষদ্র ক্ষেত্রে বর্তমান যখন এই সমস্ত ক্ষেত্রে যেমন রাষ্ট্রীয় উৎপাদন এবং পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার ( আমাদের দেশের কৃষি /হস্তশিল্প যার অন্যতম ) বাইরের ক্ষেত্র গুলিকে বাদ দিয়ে বা তাদের অবস্থানে বিঘ্ন না ঘটিয়ে বিভিন্ন রেটে ,বিভিন্ন সেক্টরে পুঁজির বিকাশ হয় তখন মুল স্রোতের অর্থনীতিবিদেরা সেই ব্যবস্থা কে "accumulation through expansion" বলেন । কৃষি ক্ষেত্রে পুঁজির এই বিকাশ পেছনের দরজা দিয়ে বীজ ,সার ,ট্রাক্টর ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ,বিভিন্ন রাজ্যে বহুকাল ধরে প্রবেশ করছে । কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এতদিন তা উৎপাদন ,বিপণন ক্ষেত্র অধিগ্রহণ করেনি । কিন্তু এর সাথে সাথে পুঁজি বৃদ্ধির একটা বিকল্প এবং সহজ রাস্তা আছে যাকে অনেক অর্থনীতিবিদেরা “accumulation through encroachment" বলছেন । সস্তায় রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি কিনে নেওয়া , দুর্বল ফ্যাক্টারি কিনে নেওয়া , অন্যের উৎপাদনের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণে আনা ,পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার বাইরে থাকা জগতের দখল নেওয়া এবং এই পথে পুঁজির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের পুঁজি বৃদ্ধির অন্যতম পথ । বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রে বিশেষত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে সরকারী ”সম্পত্তির disinvestment" এবং নগণ্য মূল্যে সরকারী সম্পত্তির “ privatization" পাবলিক ইউটিলিটি সমূহের দখল - হসপিটাল ,স্কুল ,জল ,বিদ্যুৎ,খনি ,পোর্ট ,টেলিকম এবং সর্বশেষে বীজ ,সার , কৃষিপণ্য বিপণন , চুক্তি চাষের মাধ্যমে নগণ্য মূল্যে বিপুল জমি অধিগ্রহণ ,কৃষকের স্বার্থ রক্ষার আইন বাতিলের মাধ্যমে পুঁজির “accumulation through encroachment”এর ক্ল্যাসিক উদাহরণ ।

    এখন পশ্চিমবঙ্গে এই বাধা দূরীকরণের অন্যতম উপায় APMC অ্যাক্টের সংশোধন ,আর এই ক্ষেত্রে তৃনমূল সরকার দেশী -বিদেশী সংস্থাগুলির প্রতি দুই বাহু প্রসারিত করতে কার্পণ্য বোধ করেনি । তৃনমূল সরকার তাদের বাস্তব আভিজ্ঞতা থেকে বুদ্ধ বাবুর বা বামফ্রন্টের সময়ের APMC অ্যাক্টের দুর্বলতা বিষয়ে অবগত ছিল । মমতা দেবীর নেতৃত্বাধীন তৃনমূল সরকার জানত যে APMC অ্যাক্ট সংশোধন না করে পশ্চিমবঙ্গে চুক্তি চাষ , মার্কেট কমিটি নিয়ন্ত্রিত কৃষক মান্ডি ছাড়াও প্রাইভেট সংস্থাগুলিকে কৃষক মান্ডি তৈরি করবার অধিকার দেওয়া এবং কৃষকের থেকে দেশীয় ,বিদেশীয় সংস্থার কৃষি পণ্য প্রত্যক্ষ ক্রয় করবার অধিকার প্রদান করা সম্ভব নয় । আর তাই ক্ষমতায় আসবার মাত্র তিন বছরের মাথায় ,বিভিন্ন দেশীয় এবং ভিনদেশী পুঁজিপতি সংস্থাদের মেসেজ দেওয়ার উদ্দ্যেশ্যে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের মাধ্যমে অত্যন্ত তাড়াহুড়োয় ,অভুতপুর্ব দ্রুততায় ,পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার একটি এক বেলার বিশেষ অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে Agricultural Produce Marketing ( regulation) amendment Act ২০১৪ বিল পাস করা হয় । উল্লেখ্য এই বিল সমস্ত বিরোধী দল বিরোধিতা করলেও বিলটির সমর্থনকারী বিরোধী পক্ষের একমাত্র বিধায়ক ছিলেন বিজেপির শমিক ভট্টাচার্য মহাশয় । কেননা উভয়েরই স্বার্থ একী সূত্রে গাঁথা ।

    এই বিলে চুক্তি চাষের বিষয়ে নীরবতা অবলম্বন করলেও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় সমস্ত প্রস্তাব যেমন প্রাইভেট সংস্থাগুলিকে কৃষক মান্ডি তৈরি করবার অধিকার ,কৃষকের থেকে দেশীয় ,বিদেশীয় সংস্থার কৃষি পণ্য প্রত্যক্ষ ক্রয় করবার অধিকার মেনে নেওয়া হয় । এই আইনের বলে সরকার ব্লক পর্যায়ের কৃষিপণ্যের বাজারগুলির নিয়ন্ত্রণ বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দিতে পারবে । বেসরকারি সংস্থাগুলি সরাসরিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে কোন সরকারী নিয়ন্ত্রন ছাড়াই যে কোন পরিমাণ কৃষিপণ্য কিনতে পারবে । বেসরকারি সংস্থাগুলি জেলাস্তরে বৃহৎ কৃষিবাজার খুলতে পারবে । বিনিয়োগকারীরা কমিশন এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবে এবং সরকারকে একটি বাৎসরিক ফি’র পরিবর্তে যে কোন পরিমান কৃষিপণ্য কেনা , মজুত করা ,প্রক্রিয়াকরণ এবং বিক্রি করবার অধিকার পাবে । মাত্র অর্ধেক দিবসের এক সংক্ষিপ্ত আলোচনার অবশেষে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে ‘ মা মাটি মানুষের সরকার ‘ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার ভিত্তি স্থাপিত করেছিলেন ।

    ২০১০ সালে বিধানসভায় দেওয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে আমরা জানতে পারে যে সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বৃহৎ এবং মাঝারি কৃষিপণ্যের বাজার ছিল ৪৮৯টি ,এর মধ্যে APMC আইনের আওতায় বৃহৎ বাজার ছিল ৩৭টি এবং মাঝারি বাজার ছিল ১৮৪টি অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত বাজারের সংখ্যা ছিল ২৬৮টি ,তা ছাড়াও যেখানে কৃষকেরা সরাসরি কৃষিজাত পণ্য বিক্রি করে থাকেন এইরকম গ্রামীণ বাজারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০০এর মত । এই নিয়ন্ত্রিত বা অনিয়ন্ত্রিত দুই ধরনের বাজারেই বহু পারস্পরিক সম্পর্ক এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কেনাবেচা ,আদান প্রদান হয় ,অসংখ্য ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই এই ব্যবস্থার মাধ্যমে জীবনধারণ করে । তৃনমূল সরকারের আমলে এই নিয়ন্ত্রিত এবং অনিয়ন্ত্রিত বাজারের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই APMC অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে তছনছ করে দেওয়ার ভিত্তি ইতিমধ্যে স্থাপিত হয়েছে । ২০১৪ সালের APMC অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বলে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুপ্রবেশ পুঁজির “accumulation through encroachment” ক্ষুদ্র চাষি ,কৃষিপণ্য বিপননের ওপর নির্ভরশীল গ্রামের প্রান্তিক মানুষের জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার রাস্তা ইতিমধ্যে তৈরি করেছে । যদিও তৃনমূল মন্ত্রী জানিয়েছেন যে কৃষিপণ্যের বাজার কেবলমাত্র দেশীয় পুঁজিপতিদের জন্য খোলা হচ্ছে রাজ্যে বিদেশী পুঁজিকে কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা অথচ আমরা সকলেই জানি যে ওয়ালমার্ট ,টেস্কো ইত্যাদিরা এদেশীয় পুঁজিপতি রিলায়েন্স ,ভারতী ,আদানি ,টাটা ,বিড়লার হাত ধরে কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশ করবে । বাজারের সেরা অংশ ডিপ পকেটের ক্ষমতায় ঝাড়াই ,বাছাই ,প্যাকেটবন্দি হয়ে ঢুকে যাবে এয়ারকনডিশন্ড শপিংমলে বা রপ্তানির বাজারে । বিক্রি হবে চতুর্গুণ দামে ,কৃষকের এলাকা দখল করে লাভ করবে পুঁজি,বাজারে পড়ে থাকবে ঝরতি পরতি বাতিল কৃষিপণ্য । আর তাই ২০১৪ সালে এই আইন পাস হওয়ার সাথে সাথে রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় রিলায়েন্স ১০ একর বা অধিক পরিমান জমি বৃহৎ কৃষিবাজার খোলবার জন্য কিনে রাখতে শুরু করে ।

    ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিধানসভার তৎকালীন বিরোধী দল নেতা এবং বর্তমানের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ বাবু পশ্চিমবঙ্গে খুচরো ব্যবসায় দেশী -বিদেশী বৃহৎ পুঁজির অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আনেন ,যাতে সমস্ত কর্পোরেট সংস্থার খুচরো এবং পাইকারি ব্যবসার লাইসেন্স বাতিলের দাবী তোলা হয় অথচ মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে তারই সরকার APMC অ্যাক্ট সংশোধন করে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজারে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুপ্রবেশের রাস্তা সুগম করে তোলেন । মা মাটি সরকারের এই দ্বিচারিতা এবং কৃষক বিরোধী অবস্থান নিয়ে বিরোধী দলের হল্লাচিল্লা তো দূরের কথা -উন্নয়নের জোয়ারে ভেড়ার পালের মত দলত্যাগ দেখবার মত ।

    তা ২০১৪ সালে APMC অ্যাক্ট সংশোধনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজারে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুপ্রবেশের রাস্তা সুগম করে দিলেও ,বা পিপিপি মডেলে ব্লকে ব্লকে হিমঘর তৈরি করে বৃহৎ পুঁজিকে প্রবেশের রাস্তা দেখালেও পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজার খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়নি । হয়ত তার অন্যতম কারন ছিল কেন্দ্রে এবং রাজ্যে আসন্ন নির্বাচন , রাজ্যে বিরোধী দলের উপস্থিতি এবং তৃনমূল সরকারের কৃষক বন্ধু মুখোশ । আর তা ছাড়াও তৃনমূল সরকার বুদ্ধ বাবুর সরকারের তুলনায় যে যথেষ্ট বিচক্ষণ তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত । যদিও খুব ধীরে পরিকল্পিত উপায়ে এই নূতন আইনের বলে বর্তমানে পেপসিকো ,আই টি সি , ইউনিলিভার ইত্যাদি কোম্পানি চুক্তিচাষ বা মান্ডি থেকে ইতিমধ্যে কৃষকের ফসলের অনেকটাই তুলে নিয়ে যাচ্ছে । পেপসিকো’'লেজ’' পোট্যাটো চিপসের জন্য এক বিশেষ ধরনের আলু চুক্তি চাষের মাধ্যমে কৃষকদের থেকে ক্রয় করছে এবং কাঁচামালের সারাবছর সরবরাহ নিশ্চিত করতে পশ্চিমবঙ্গের হিমঘর গুলিতে বিপুল পরিমান জায়গা অগ্রিম লীজ নিয়ে রাখছে এর ফলে সাধারণ চাষি ফসল উঠলে হিমঘরে জায়গা না পেয়ে কম দামে তাদের ফসল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন । তৃনমূল সরকারের আইনে ভর করে ধীরে ,সকলের দৃষ্টির অগোচরে কিন্তু নিশ্চিত পন্থায় পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজার এই আইনের বলে ক্রমে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে ।

    পুঁজিপতিদের চাপে এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় তৃনমূল সরকার তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত কাজ করবার জন্য জমি বিগত দফায় ইতিমধ্যে প্রস্তুত করেছেন । APMC অ্যাক্ট ইতিমধ্যে সংশোধিত । পেপসি ,আই টি সি ইত্যাদি কোম্পানির চুক্তি চাষের ট্রায়াল রান সমাপ্ত। মোদী সাহেবের প্রিয় পাত্র আদানি পশ্চিমবঙ্গে ফর্চউন কোম্পানিকে সামনে রেখে একের পর এক তেলের মিল আর ডাল ভাঙ্গার ফ্যাক্টারি কিনে নিচ্ছে । রাজ্য বিরোধী শূন্য । বিভিন্ন ডোল এবং প্রকল্পের মাধ্যমে জন দরদী ভাবমুর্তি প্রতিষ্ঠিত । সদ্য সিঙ্গুর রায় ভাবমুর্তিতে স্টেরয়েড যুক্ত করেছে । কেবল যা প্রয়োজন ছিল তা হল একজন দক্ষ ,চতুর এবং বিশ্বস্ত ম্যানেজার । যিনি অবলীলায় কেউটেও ধরতে পারেন । আর তাই সুপরিকল্পিত ভাবে রেজ্জাক মোল্লার নিযুক্তি । রেজ্জাক মোল্লা কে মন্ত্রী করবার উদ্দেশ্যও তাই -কৃষকের জমি কি করে এবং কিভাবে হাতাতে হবে এ বিষয়ে ইনি পোস্ট ডক্টরেট । বিগত সরকারের সময়ে তার প্রতিভা প্রমাণিত । আর রেজ্জাক মোল্লা এসেই কাজে নেমে পড়েছেন ,শুরু করেছেন চুক্তি চাষের পক্ষে ,নব্য নীলকরদের পক্ষে দালালী । মাঝে মাঝেই আওয়াজ দিচ্ছেন ,জনতার প্রতিক্রিয়া মাপছেন আর অত্যন্ত দ্রুততায় বৃহৎ কৃষকদের নিয়ে কৃষক গোষ্ঠী সৃষ্টি করছেন যাদের সঙ্গে বৃহৎ কোম্পানিগুলি চুক্তি চাষের আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত করবে । অতি শীঘ্র রিলায়েন্স যে সমস্ত জমি রাজ্যের প্রতিটি জেলায় কিনে রেখেছে সেই সমস্ত জমিতে পুঁজি নিবেশের ঘোষণা করলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই ।

    চুক্তি চাষের ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে কৃষকের রক্ত নিংড়ে নেওয়ার যে আধুনিক সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত ,পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বাইরে থাকা ভারতের যে গ্রামীণ সমাজ , সেই সমাজের দখল এবং নিয়ন্ত্রণ বৃহৎ পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার যে চক্রান্ত তা আমাদের রাজ্যে রচিত হচ্ছে বিগত দুই বছর ধরে । মুখে কৃষক দরদী কথা কিন্তু অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের কোটি কোটি কৃষিজীবী ও কৃষির ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন জীবিকা লুঠের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তৃনমূল সরকার । নীল চাষ ,তামাক চাষ , আফিম চাষের মত চুক্তি চাষের ধারাবাহিকতার গায়ে নূতন জোব্বা পড়িয়ে কঙ্কাল ঢাকবার প্রয়াস আজকে নূতন উদ্যমে শুরু হয়েছে সমস্ত রাজ্যগুলি জুড়ে । আর জি এস টি , শিশুশ্রম বিল সমর্থক সরকারের কাছ থেকে এই পন্থা অস্বাভাবিক নয় । বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিকে সম্পুর্ন আত্মসমর্পন করবার রাস্তা প্রায় সমাপ্ত ।

    একদিকে বিভিন্ন পন্থায় রাজ্য বিরোধী শূন্য করে দিয়ে গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে একছত্র আধিপত্য কায়েম ,অন্যদিকে কর্পোরেট জগতের কাছে কৃষিকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার এই এজেন্ডা এখন বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদের কাছে পুঁজি বৃদ্ধির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ আর এই পথ প্রশস্ত করবার ক্ষেত্রে মোদী এবং মমতা একজোট ।

    অবশেষে পুঁজিবাদ দীর্ঘজীবি হউক ।।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৯৬৩৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 132.174.114.159 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:২৪51510
  • আমারও কোন প্রশ্ন নেই। আমার মনে হয় ফার্ম সেক্টরে বড়ো ইনভেস্টমেন্ট হওয়া দরকার, প্রাইভেট প্লেয়ারদেরও আসা দরকার। আর দেবব্রতদা লিখেছেন ১৮টা রাজ্যে এইমতোই পলিসি তৈরি বা এক্সিকিউট হচ্ছে। গুড।
  • গোল্লা | 190.179.142.19 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:১০51511
  • বৃহৎ চাষি রা গ্রূপ বানিয়ে চুক্তি চাষ করলে করুক না আপত্তি তো কিছু দেখছি না -সেও তো একধরণের সমবায় । আর প্রাইভেট ফার্ম যদি শিল্পের জন্যে সরাসরি কৃষকের থেকে বাজারদরে যে কোনো পরিমান জমি কেনায় আপত্তি না থাকে তাহলে "সরাসরি কৃষকের থেকে যে কোন পরিমান শস্য কেনবার ,বেচবার ,ষ্টক করবার এবং প্রক্রিয়াকরণের অধিকার" নিয়েও আপত্তি নেই। জমির মালিকানা তো চাষির ই থাকবে । কৃষিক্ষেত্র লাভজনক হোক । 18 টা রাজ্যে চলছে ,শুধু কংবিজেপি তো নয় আঞ্চলিক বিভিন্ন দল যারা উপর্যুপরি জনতার ভোটে জেতে তারা ও স্থানীয় দরকারে কাস্টোমাইয করে ইমপ্লিমেন্ট করছে। সবেতেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ জূজূ দেখলে হাসি পায়। আমিও ডিসির সাথে একমত "ফার্ম সেক্টরে বড়ো ইনভেস্টমেন্ট হওয়া দরকার, প্রাইভেট প্লেয়ারদেরও আসা দরকার"।
  • Debabrata Chakrabarty | 59.32.16.66 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৪০51512
  • ফার্ম সেক্টরে বৃহৎ পুঁজি যাতে ঢুকতে পারে তার জন্যই তো ২০০৩ সাল থেকে ধারাবাহিক প্রয়াস -আর মূল লেখাতে তো লিখেইছি যে এইসব আইন আসলে নব্য নীলকরদের দালালী বা দেশের কৃষি বিপণন ব্যবস্থা সরাসরি দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করা । আসলে কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে ডান -বাম নির্বিশেষে শাসকদলগুলির মধ্যে এক ধরনের ঐক্যমত বর্তমান যা মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও বিশ্বায়নবাদী নীতির দ্বারা নির্দেশিত । তবে তাতে কৃষক যে মারা যাবে , দলে দলে ঋণ গ্রস্ত হবে , শিশু শ্রমিকের ব্যাপক ব্যবহার হবে , আত্মহত্যার হার বাড়বে ,এ বিষয়ে সন্দেহ নেই । বিভিন্ন রিপোর্ট সেই কথাই বলছে । এর মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশের কৃষির ভয়ঙ্কর চিত্র নিয়ে সেই রাজ্যেরই একটি সরকারী রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেছি ।

    কৃষিতে বৃহৎ পুঁজির আগমন তখনই স্বাগত যদি তা কৃষি এবং সংখ্যাগুরু কৃষকের জীবনের উন্নতি ঘটায় , কতিপয় মুষ্টিমেয় চাষি এবং কর্পোরেট কোম্পানির স্বার্থে দেশের সম্পদ বেচে দেওয়া , দেশের ৮৫% লোকের জীবনযাপন তছনছ করে দেওয়া কোন শুভ বুদ্ধির দৃষ্টান্ত হতে পারেনা । ভারতের কৃষক এবং কৃষি বিভিন্ন পন্থায় বিপদগ্রস্ত আর কন্ট্রাক্ট ফারমিং সেই বিপদ ত্বরান্বিত করবে মাত্র । কন্ট্রাক্ট ফারমিং বা বৃহৎ পুঁজি আমাদের দেশের কৃষকের জীবনের মানের উন্নয়ন ঘটিয়েছে এমত কোন উদাহরণ নেই । বরং উল্টো উদাহরণ ভূরি ভূরি ।
  • PT | 213.110.242.5 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৪৩51513
  • আসলে সমস্যা সেই আগের মতই। পূর্ব-নির্ধারিত সিদ্ধান্তকে কিছু বাছাই করা তথ্য দিয়ে খাড়া করানোর প্রচেষ্টা। যে দেশে হাজার হাজার কৃষক এমনিতেই আত্মহত্যা করে সেখানে চুক্তি চাষে আর ইতর বিশেষ কি হবে? যে সামান্য তথ্য পব-র ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে তাতে তো মনে হচ্ছে চুক্তি চাষীরা কোন কোন ক্ষেত্রে এমনি চাষীদের চাইতে নিশ্চিন্তে আছে। তাছাড়া চুক্তি-চাষ লাভজনক না হলে চাষী কিসের জন্যে চুক্তি বদ্ধ হবে?

    এমনিতেই নাকি চাষ বিশেষ লাভ জনক ব্যবসা নয়, পরিবারের সংখ্যাবৃদ্ধির কারণে মাথাপিছু জমির পরিমাণও কমছে। সেক্ষেত্রে চাষের জমিতে শিল্প হতে দেওয়া যাবে না, চাষীকে চুক্তি চাষও করতে দেওয়া যাবেনা-এইসব যদি তাত্বিকদের অবস্থান হয় আর সরকার যদি সেই মত নাচতে থাকে তাহলে চাষীকে হয় আত্মহত্যা করতে হবে নাহয় ২ টাকা কিলোর ভিক্ষাপাত্র নিয়ে আজীবন কাটাতে হবে।

    (পেপসির প্রচারে নীল রঙের প্রাধান্য বেশী বলে নীলকর শব্দের প্রয়োগ হয়েছে কিনা কে জানে।)
  • Debabrata Chakrabarty | 59.32.16.66 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:২৩51514
  • " আসলে সমস্যা সেই আগের মতই। পূর্ব-নির্ধারিত সিদ্ধান্তকে কিছু বাছাই করা তথ্য দিয়ে খাড়া করানোর প্রচেষ্টা।" না তা নয় বুদ্ধ বাবু যেহেতু চুক্তি চাষের প্রয়াস করেছিলেন সুতরাং তাহা স্বার্থক কৃষক উন্নতির সোপান এই ধারনা গজাল দিয়ে গেঁথে দেওয়া - দুঃখিত । ভারতে বিগত দুই দশক ধরে জিডিপি প্রায় ৭% হারে বাড়লেও কৃষিতে বৃদ্ধির হার মাত্র ২% , কিছু কিছু খাদ্য শস্যে নেগেটিভ গ্রোথ । হয় আপনি কৃষির সমস্যা খোলা মনে তথ্যের আধারে বোঝবার চেষ্টা করেননা ,কেন হাজারে হাজারে কৃষক আত্মহত্যা করছে আর কি ভাবেই বা কর্পোরেট কৃষি পণ্য নিয়ে ব্যবসা করা সংস্থা গুলি লাভ করছে তার কারন কি , নতুবা এই বিষয়ে হাজারো স্টাডি বিষয়ে অবগত নয় , তা না হলে এই ধরনের হালকা মন্তব্য করতেন না ।
    স্বাধীনতার প্রায় ৭০ বছর পরে আজকে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা ১৯৫০ এর সময়ের থেকে বেশী । কৃষি পণ্যের মূল্য বছর বছর ধরে বেড়ে চললেও সেই লাভ ওঠাচ্ছে রিটেলার এবং হোলসেলার আর কৃষকের চাষের খরচ দিন কে দিন বেড়ে চলেছে সার ,বীজ ,কীটনাশক ইত্যাদি কারনে । কৃষক ঋণ গ্রস্ত ,তাঁদের সামনে কোন বিকল্প আয়ের সঠিক ভদ্রোচিত উপায় নেই ,দলে দলে মাইগ্রেট করতে বাধ্য হচ্ছে , দিনেরপর দিন আরও প্রান্তিক অবস্থানে পৌছাচ্ছে আর আপনি বলছেন চুক্তি চাষ ঠিকই আছে ?

    আপনার প্রশ্ন তাছাড়া চুক্তি-চাষ লাভজনক না হলে চাষী কিসের জন্যে চুক্তি বদ্ধ হবে? বাধ্য হয়ে হবে ঠিক যে রকম নীল চাষ ,আফিম চাষ ,তামাক চাষ বাধ্য হয়ে করত । কৃষক কে নিংড়ে নেওয়া হচ্ছে বলেই আত্মহত্যার হিড়িক এটা কোন বিচ্ছিন্ন রাজ্য ভিত্তিক উপসর্গ নয় । তার পেছনে কেন্দ্র এবং রাজ্যের ভ্রান্ত নীতি এবং পুঁজির কাছে আত্মসমর্পণ দায়ী ।
  • PT | 213.110.242.7 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩২51527
  • "BT কটন এদেশে আসবার পুর্বেও হাজার বছর ধরে এর থেকেও খারাপ ইরিগেশন ব্যবস্থায় চাষি তুলার চাষ করত"

    সেতো করতই। সেটাও ঐ প্রবন্ধে উল্লেখ করা আছে।
    কিন্তু হাজার বছর আগে মাথাপিছু জমির পরিমাণ কত ছিল আর কতগুলো পেট ভরানোর প্রয়োজন হত সে কথাটাও পাশপাশি মনে রাখলে ভাল হয়।
    আগে গোবর দিয়ে যত চাষ হত ইউরিয়া ইত্যাদি দিয়ে তার চাইতে অনেকগুণ বেশী ফসল ফলানো গিয়েছে। কিন্তু মঙ্গলায়ন হওয়ার পরেও----"To meet the demand of fertiliser in the ongoing kharif season, the government has contracted 2 million tonnes of urea import for delivery by the end of this month." (জুন ২০১৬)
    অর্থাৎ কিনা নিজেদের প্রয়োজনীয় ইউরিয়াটাও নিজেরা বানাতে পারিনা। অহেতুক বিদেশী কোম্পানির ঘাড়ে দোষ দিয়ে বিপ্লবীয়ানা দেখিয়ে কি লাভ? ইউরিয়া ইম্পোর্ট বন্ধ হলে তো হাজারটা সিঙ্গুর-উৎসব করেও ভাতের যোগান দেওয়া যাবেনা।
  • দেবব্রত | 57.15.22.166 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৮51529
  • পুর্বেই লিখেছি BT কটন নিয়ে বহু লেখা আছে,কেবল বীজের দাম নয়, বীজের দাম কম রাখবার জন্য হাজারে হাজারে শিশু শ্রমিক ইত্যাদি, সেই প্রসঙ্গ এই লেখার বিষয় নয়।
    আর ইউরিয়া কেন তার সাথে কলের লাঙল পোকা মারা বিষ ইত্যাদির মাধ্যমেও কৃষি উতপাদন বেড়েছে তার সাথে জলে আর্সেনিক,জমির বন্ধ্যাত্ব,টপ সয়েল এর ইরোশন,জমির উর্বরাশক্তি হ্রাস,এবং কৃষকের আত্মহত্যার মহামারী নিসচই গন্যে আছে।
    একে বলে প্রযুক্তির কাউন্টার প্রোডাক্টিভিটি আর অর্থনিতীর ভাষায় ডিমিনিশিং রিটার্ন। যেখানে শত মন তেল পোড়ালেও রাধা আর নাচেনা। সেই কারনেই শত চেষ্টা স্বত্বেও বিগত দু দশকে কৃষি তে মাত্র ১-২% গ্রোথ এবং সাধারন মানুষ এর পাতে কম প্রোটিন (ডাল)। এই তথ্য যে আদতে ইউরিয়া দিয়ে চাষ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা যে আদতে কুফল উতপাদন করে সেই দিকে আমাদের দৃষ্টিপাত করতে বাধ্য করে।

    এখন গরিব চাষি'র রক্ত নিংড়ে পুঁজির এবং দালাল রাজের শ্রীবৃদ্ধি'র অন্যতম পথ চুক্তি চাষ বলেই এই প্রবন্ধের নাম 'নীলকরের দালালী। তা সে যুগে নীলদর্পন অনুবাদ করবার দায় মধুসূদন এর থাকলেও এযুগে চুক্তি চাষ মহান বলে কুযুক্তি সাজানোর অভাব সিপিএম এরও ছিলনা আর তৃনমুলের ও নেই।
  • দেবব্রত | 57.15.22.166 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৮51528
  • পুর্বেই লিখেছি BT কটন নিয়ে বহু লেখা আছে,কেবল বীজের দাম নয়, বীজের দাম কম রাখবার জন্য হাজারে হাজারে শিশু শ্রমিক ইত্যাদি, সেই প্রসঙ্গ এই লেখার বিষয় নয়।
    আর ইউরিয়া কেন তার সাথে কলের লাঙল পোকা মারা বিষ ইত্যাদির মাধ্যমেও কৃষি উতপাদন বেড়েছে তার সাথে জলে আর্সেনিক,জমির বন্ধ্যাত্ব,টপ সয়েল এর ইরোশন,জমির উর্বরাশক্তি হ্রাস,এবং কৃষকের আত্মহত্যার মহামারী নিসচই গন্যে আছে।
    একে বলে প্রযুক্তির কাউন্টার প্রোডাক্টিভিটি আর অর্থনিতীর ভাষায় ডিমিনিশিং রিটার্ন। যেখানে শত মন তেল পোড়ালেও রাধা আর নাচেনা। সেই কারনেই শত চেষ্টা স্বত্বেও বিগত দু দশকে কৃষি তে মাত্র ১-২% গ্রোথ এবং সাধারন মানুষ এর পাতে কম প্রোটিন (ডাল)। এই তথ্য যে আদতে ইউরিয়া দিয়ে চাষ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা যে আদতে কুফল উতপাদন করে সেই দিকে আমাদের দৃষ্টিপাত করতে বাধ্য করে।

    এখন গরিব চাষি'র রক্ত নিংড়ে পুঁজির এবং দালাল রাজের শ্রীবৃদ্ধি'র অন্যতম পথ চুক্তি চাষ বলেই এই প্রবন্ধের নাম 'নীলকরের দালালী। তা সে যুগে নীলদর্পন অনুবাদ করবার দায় মধুসূদন এর থাকলেও এযুগে চুক্তি চাষ মহান বলে কুযুক্তি সাজানোর অভাব সিপিএম এরও ছিলনা আর তৃনমুলের ও নেই।
  • PT | 213.110.242.7 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৪৫51530
  • এইসব রেটোরিক থেকে বেরোতে পারলে আলোচনা হওয়া সম্ভব। এই আলোচনাতে তিনো-সিপিএমের বিশেষ জায়গা নেই। ইউরিয়া, কীটনাশক ইত্যাদি বাদ দিয়ে 1.25 billion ভারতীয়কে খাওয়ানোর অন্য কোন ব্যবস্থা বিপ্লবীদের জানা আছে কি?
  • PT | 213.110.242.21 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩২51516
  • "আমাদের রাজ্যেও তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের কৃষি সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করতে নিয়োগ করেন আমেরিকান কোম্পানি ম্যাকেন্সিকে , যাঁদের নিদান ছিল চুক্তি চাষ৷ খবর রটতেই রাজ্য জুড়ে গেল গেল রব৷ এ বার বহুজাতিক কোম্পানির কবলে পড়ে কৃষি যাবে রসাতলে , বেহাত হবে জমির মালিকানা৷ হইচই -এর ঠেলায় চুক্তিচাষ সেঁধলো ঠান্ডা ঘরে৷ হায় ! কেউ একবার পড়েও দেখল না কী আছে চুক্তি চাষের ড্রাফ্ট এগ্রিমেন্টে , তলিয়ে ভাবল না দেশের আইনে কোনও কর্পোরেট সংস্থার কৃষি জমির মালিক হবার প্রতিবিধান আছে কি না৷ অবশেষে ফিরে এল সেই চুক্তিচাষ৷ তবে ঘোমটার আড়ালে অন্য নামে , ‘পার্টিসিপেটরি ফার্মিং ’৷ "
    http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=26649&boxid=142914741

    চাষীদের জন্যে সুখবর! আপাততঃ ব্যাগড়াবাদীরা পিছু হটেছে। সিঙ্গুরেও যদি এমনটা হত........
  • কল্লোল | 116.206.148.157 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৪৮51531
  • মেলাবেন তিনি মেলাবেন। ক্ষমতা মেলাবে। তবে খেলা এখনো বকি। আর ৫ বছর থাকলে "শিল্প"এর জন্য হাঁকুপাঁকু হবে বাঁদিকের রাস্তাতেই। তখন বাম-তৃণ ভাইভাই লাগবে।
    সেসব কারো কারো কাছে রেটোরিক লাগবে। তাতে সত্য চাপা থাকবে ন।
    অন্যদিকে বিজেপি বিরোধী ফ্রন্ট তো আছেই।
  • দেবব্রত | 57.15.22.166 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:৩১51517
  • লেখক রাজ্যের প্রাক্তন কৃষি অধিকর্তা। বুদ্ধ বাবু এবং রেজ্জাকের খাস লোক কি বেসুরা গাইতে পারেন?
  • এলেবেলে | 11.39.36.77 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:৪৫51532
  • গুরুর এই টইয়ে এবং অন্যত্র সর্বদা যাঁরা টেকনোলজি-টেকনোলজি করে নাপান তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন যে পৃথিবীতে চাষবাসের ইতিহাস প্রায় ১০ হাজার বছরের আর আধুনিক কৃষিবিজ্ঞান মেরেকেটে দু’শো বছরের পুরনো । টেকনোলজির পীঠস্থান জাপানের জনৈক মাসানবু ফুকুওকার ‘একটি তৃণখন্ডে বিপ্লব’বইটি এলেবেলে কোনও এককালে পড়েছিল (এলেবেলে ইঞ্জিরি খুব একটা বোঝেনা কিনা ) । গুরুর এলিটরা মানে যাঁরা শাক বলতে লেটুস আর সব্জি বলতে বেলপেপার, ব্রকোলি বা বেবিকর্ন বোঝেন ; যাঁরা ফল হিসেবে কেবল অ্যাভোকাডো, কিউই কিংবা স্ট্রবেরি কেনেন ; যাঁরা ৮৫ টাকা কেজি অর্গ্যানিক রাইসের সাথে আলট্রা ভার্জিন অলিভ তেলে সাঁতলানো স্যামন সাপ্টিয়ে স্বাস্থ্য সামলান তাঁরা এর ইংরেজি ভার্সন ‘The One-Straw Revolution’ বইটার পাতা উল্টে দেখলেও দেখতে পারেন ।

    আর যাঁরা দেবব্রতর রেটোরিক নিয়ে নাক সিঁটকান ক্ষীইইই আশ্চর্য তাঁদের অনেকেই ‘পূর্ব-নির্ধারিত সিদ্ধান্তকে কিছু বাছাই করা তথ্য দিয়ে খাড়া করানোর প্রচেষ্টা’ না বলে মুখটি অবধি আঁচান না ! এটা দেবব্রতর প্রায় সব লেখার প্রেক্ষিতেই বলার একচেটিয়া ‘অব্বেশ’টি অনেকের মধ্যেই বর্তমান !!
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:০২51533
  • কল্লোলদা
    তিনো সিপিএমের বাইরে গিয়ে সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করা যায়।
    Throughout the 19th century the demand for nitrates and ammonia for use as fertilizers and industrial feedstocks had been steadily increasing.
    তারপরে পুঁজিপতিদের চক্রান্তে এইসব ঘটেঃ
    Haber.... demonstrated... process in the summer of 1909 by producing ammonia from air..... The process was purchased by the German chemical company BASF, which assigned Carl Bosch the task of scaling up Haber's tabletop machine to industrial-level production. He succeeded in 1910. Haber and Bosch were later awarded Nobel prizes, in 1918 and 1931........
    Ammonia was first manufactured using the Haber process on an industrial scale in 1913.......
    তো কি হইল?
    synthetic nitrogen fertilizer produced by the Haber Process is credited with feeding a third to half the present world population. In fact about half the nitrogen in each of our bodies is there thanks to the Haber Process.
    অর্থাৎ কিনা এই পুঁজিপতিদের দৌলতে আমি, তুমি, দেবব্রতবাবু, মেধা পাটেকর, বেচারাম মান্না ও কৃষক নেত্রী বেঁচে-বত্তে আছি ও আছে ও আছেন। আর এইসব ঘটে গিয়েছে ১৯১৭-র দুনিয়া কাঁপানো দশদিনের আগেই!!

    আগের সরকারের সিদ্ধান্তগুলোকে এইজন্যেই সমর্থন করি যে তারা যুক্তিবাদী রাস্তাতেই হেঁটেছিল-যে রাস্তায় হাঁটা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। যারা নিজেদের বিপ্লবী বলে ভাবছে তারা এই টেকনোলজি-নিয়ন্ত্রিত সিদ্ধান্তের প্রয়োগ-পদ্ধতি নিয়ে নাড়াচাড়া করছে মাত্র!!

    তাই অভিশাপ যদি দিতে হয় তো হেবার সাহেবকে দাও আর ব্যাগড়াবাদীদের বলি কেমিস্টদের ওপরে ভরসা রাখতে। হেবারের মতই কোন একজন কিছু একটা আবিষ্কার করে পুনরায় খাদ্য উৎপাদনের সুরাহা করবে।
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:০৪51534
  • কল্লোলদার উদ্দেশ্যে লেখা গপ্পকথা এলেবেলের জন্যেও।
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:৪৮51518
  • এখন তো ব্যাগড়াবাদীদের রমরমা। তাদের দিয়েই লেখালে হত!! কিন্তু এইটা বরাবরই হয়ে চলেছেঃ
    "খবর রটতেই রাজ্য জুড়ে গেল গেল রব৷ এ বার বহুজাতিক কোম্পানির কবলে পড়ে কৃষি যাবে রসাতলে , বেহাত হবে জমির মালিকানা৷ হইচই -এর ঠেলায় চুক্তিচাষ সেঁধলো ঠান্ডা ঘরে৷ হায় !
    ****কেউ একবার পড়েও দেখল না কী আছে চুক্তি চাষের ড্রাফ্ট এগ্রিমেন্টে.......*****

    সম্ভবতঃ আগের সরকারের কেউ কেউ চাষীদের স্বার্থরক্ষার ব্যাপারে অনেক বাম ও ব্যাগড়াবাদীদের চাইতে এগিয়ে ছিলেন। সেটা ক্রেমে ক্রেমে বোঝা যাবে।
  • amit | 69.102.68.134 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:৫০51519
  • শুধু বুদ্ধ বাবু এবং রেজ্জাক-কে গাল না দিয়ে PT -দার আসল প্রশ্নোর উত্তর দেওয়া হোক না ?

    "সারা ভারতের মোট চাষের কতটা এখন চুক্তি-চাষের অন্তর্ভুক্ত? আর সেই শতাংশ দিয়ে হাজার হাজার চাষীর আত্মহত্যার সম্পুর্ণ (আংশিক হলেও চলবে) ব্যাখ্যা পাওয়া যায় কিনা!!"
  • দেবব্রত | 57.15.22.166 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৭:৫৬51520
  • PT এই সময়ের যে লিংক তা আপনি দিলেন কবে বেড়িয়েছে লেখাটি , আজকের ই পেপারে পেলাম না ।
  • দেবব্রত | 57.15.22.166 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৮:০২51521
  • PT বাবুর প্রশ্নের উত্তর ২৩সে সেপ্টেম্বর দেওয়া আছে - যে রকম লেখা হয়েছিল ঃ

    " কেবল চুক্তি চাষ এ মনোনিবেশ না করে যদি সামগ্রিক পলিসি চেঞ্জের বিষয়টি দেখেন যেমন

    1, কর্পোরেট কে মার্কেট কমিটির নিয়ন্ত্রণ ছাড়া নিজস্ব মার্কেট খুলতে দেওয়ার অধিকার ।
    2, সরাসরি কৃষকের থেকে যে কোন পরিমান শস্য কেনবার ,বেচবার ,ষ্টক করবার এবং প্রক্রিয়াকরণের অধিকার
    3, চুক্তি চাষের অধিকার
    ৪, বিপুল পরিমান সরকারী ,বেসরকারি জমি নামমাত্র মূল্যে কর্পোরেটদের দেওয়ার অধিকার
    ইত্যাদি ইত্যাদি ,এবং এই ভাবে ভারতের কৃষিক্ষেত্র যা এতদিন পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার বাইরে ছিল তাকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার গ্র্যান্ড প্ল্যানের সামগ্রিক চিত্র পাওয়া সম্ভব । চুক্তি চাষ কৃষিকে পুঁজির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার একটা দিক মাত্র ।"

    সুতরাং কৃষকের আত্মহত্যা এবং ভয়ঙ্কর চিত্রের কারনের সাথে সবকটি সম্পর্ক জড়িত ,সাথে সারের দাম , বীজের দাম ( BT কটন ) চুক্তি চাষ এবং ব্যপক শিশু শ্রমিক ।
  • PT | 213.110.242.21 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৮:৫৭51522
  • আমি তো আজকের এই সময় থেকেই লিং দিয়েছি......

    BT তুলো প্রসঙ্গে এই নিবন্ধটি প্রণিধানযোগ্যঃ
    No, GMOs Didn't Create India's Farmer Suicide Problem, But…
    http://www.motherjones.com/tom-philpott/2015/09/no-gmos-didnt-create-indias-farmer-suicide-problem

    ব্যাগড়াবাদীদের সমস্যা হচ্ছে যে তাঁরা মস্তিষ্কের চাইতে হৃদয়ের ব্যবহারটা বেশী করেন। কিন্তু .....in long run wre are all dead and gone-তাই যে চাষী তার চাষীজীবনে উৎপন্ন ঢ্যাঁড়শের দাম পাচ্ছে না সে কি করবে?
  • দেবব্রত | 57.15.22.166 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ১১:৫২51523
  • " তাই যে চাষী তার চাষীজীবনে উৎপন্ন ঢ্যাঁড়শের দাম পাচ্ছে না সে কি করবে?" কেন চুক্তি চাষ !!
    BT কটন এদেশে আসবার পুর্বেও হাজার বছর ধরে এর থেকেও খারাপ ইরিগেশন ব্যবস্থায় চাষি তুলার চাষ করত , দেশি তুলা -যা আমাদের দেশের আবহাওয়ার উপযোগী , এবং সেই তুলার বীজের দাম ছিল প্রায় শূন্য। বিভিন্ন কারনে দুর্ভিক্ষ ছিল কিন্তু গন আত্মহত্যা ছিলোনা । বর্তমানে উচ্চ ফলনের লোভে , মার্কেটিং ইত্যাদির কারনে ভারতে'র তুলার বাজারের ৯৫% BT কটনের কব্জায় । বীজ পয়সা দিয়ে কিনতে হয় দাম ১২০০ টাকা প্রতি ৪০০ গ্রামের প্যাকেট , এই নিয়ে বহু লেখা পত্তর হয়েছে সেই বিষয়ে উৎসাহী যে কেউ খুঁজলেই পেয়ে যাবেন । ভারতের কৃষি অত্যন্ত বিপদ গ্রস্ত অবস্থায় -কেবল GM তুলা বীজ তার একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র । চুক্তি চাষ আরেকটা অংশ । সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচণার সুযোগ এই প্রবন্ধের অংশ নয় । ভবিষ্যতে দেখা যাবে । আশার কথা এইটাই ধীরে ধীরে দেশি কটনের চাষ ফিরে আসছে ।
  • Ekak | 53.224.129.53 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ১১:৫৯51524
  • দিচ্ছেন যখন রিসেন্ট খবর দিন । গভ রিসেন্ট প্রাইস ক্যাপ করেছে। এখন বিটির চারশো গ্রামের প্যাকেট সাড়ে ছশো গ্রেড ওয়ান আর চোষ গ্রেড টু । সরকার চাইলে চাপ দিয়ে আরও কমাতে পারবে ।
  • Ekak | 53.224.129.53 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ১১:৫৯51525
  • আটশো গ্রেড টু ।
  • Ekak | 53.224.129.53 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ১২:০৩51526
  • ফলন বাড়ানো প্রয়োজনীয় সেটা অস্বীকার করলে চলবেনা । এখন বিদেশী কোম্পানি তাদের গবেষণার খরচ -টেক ফী সব তুলছে তৃতীয় বিশ্বের চাষিদের দুইয়ে । অথচ এই গবেষণার ফলের একটা অংশমাত্র তারা পায় ।

    তা আমাদের বীজ গবেষণা কেন্দ্রগুলো কি আঁটি চুষছে বলতে পারেন ?প্রশ্নটা তো এই নয় যে জেনেটিক মডিফায়েড এ যাবো কি যাবো না । প্রশ্নটা এই যে আমাদের দুইয়ে বিদেশী কোম্পানিকে বড়োলোক করে কতটা লাভ । তো এদেশে এতো কমিশন -এতো চেয়ারম্যান -এতো একাডেমিকস , এর পরেও কৃষি গবেষণায় এরকম পিছিয়ে ক্যানো ? সেই প্রশ্নটা কে করবে ? সব জায়গায় হাওয়াকল খাড়া করে সমাধান খুঁজলে হবে ? তাতে নিজেদের অযোগ্যতা ঢাকা পর্বে হয়তো , সমাধান আসবে না ।
  • দেবব্রত | 212.142.76.198 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১৫51544
  • নিশ্চয়ই - কি মুস্কিল ১৮৫০ এ বিশ্বায়ন আরও বেশী ছিল - টেরিফ বিহীন ইম্পোর্ট /এক্সপোর্ট । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবশেষে টেরিফ এবং বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা লাগিয়ে তা বিশ্বায়নের পুর্ব যুগে পৌঁছায় এখন এইটুকু না জানলে নীল চাষ নামক চুক্তি চাষের সঙ্গে বুদ্ধ -মমতা -বিজেপির চুক্তিচাষের সাদৃশ্য বোঝা সম্ভব নয় । তাকে কৃষকের পরিত্রাতা মনে হওয়া সম্ভব । যেমন আপনের হচ্ছে PT বাবু । ঘেঁটে আপনি যে গেছেন সে আমি জানি চুক্তি চাষ এবং বাঁকি যে সমস্ত প্রসঙ্গ এই প্রবন্ধে উল্লেখিত তার সমর্থনের অর্থ বিজেপি - মমতা'র সাথে একাসনে বসা । সে তো বুদ্ধ বাবু বহুদিন ধরেই সেই কোল আলো করে বসে আছেন । ঝেড়ে কেশে দিলেই হয় ।

    আর কি অপুর্ব প্রশ্ন - " তো নীলকর সাহেবরা চলে যাওয়ার পরেও ১৯৪৬-১৯৪৭ সালেও তেভাগা কেন? তখন তো "আমরাই" দখল নিয়েছি সব কিছুর। আর এই দশকেই বা চুক্তি চাষের মধ্যে দিয়ে চাষীকে যেতে হচ্ছে কেন এখন তো ঐ চাষীরাই তাদের শাসক নির্বাচন করছে। অর্থাৎ কিনা "আমরাই" ক্ষমতায়!!" বোঝো সিঙ্গুরের জমি টাটা কে দেওয়া হবে না বাটা কে , দেশে রিটেলে FDI হবে না হবেনা , চুক্তি চাষ হবে কি হবেনা - পঞ্চায়েত ডেকে ঠিক হয় !
  • PT | 213.110.242.20 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৪৮51545
  • দাঁড়ান, দাঁড়ান!! আপনিই প্রথম তাত্বিক বোধহয় যিনি ৯০ দশকের পরের বিশ্বায়ন আর নীলকরদের জমি দখল করে নীল চাষ করানোকে একই মাপকাঠিতে ধরছেন। আপনার তত্বের বিশ্বায়ন ও তার ওপরে কয়কটি থিসিস না লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে তক্কে ক্ষান্ত দিলাম। কেননা হাঁস আর শজারু মিশিয়ে শুধু হাঁসজারুই হয়!!

    আপনার সমস্ত সিদ্ধান্তই পূর্ব-নির্ধারিত। তাই আপনি বিজেপি--মমতা-আর সিপিএমকে যে এক আসনে বসাবেন সেটা যবে থেকে আপনার লেখা পড়ছি তবে থেকেই জানি। কিন্তু এই সহজ কাজটি করার জন্য তথ্যকে এত বাছাই আর বিকৃত করার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না।

    তবে জেনে রাখুন চুক্তি চাষই হবে কেননা আমরা চাষীদের উৎপাদন বাঁচানোর জন্যে যথেষ্ট হিমঘর বানাইনি। BT কটন আসবেই কেননা আমরা চাষীদের জন্য উন্নতমানের তুলোর বীজ তৈরি করিনি। আর ইউরিয়া ইত্যাদি সারের ব্যবহার আরো বাড়বে কেননা এই বিপুল পরিমাণ মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার অন্য কোন পদ্ধতি আবিষ্কার করিনি। আর চাষের জমিতেই যে শিল্প হবে সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা কেননা চাষীর ছেলেপুলেদের বাঁচানোর জন্যে আমরা অন্য কোন রাস্তা খুঁজে দেখিনি।
  • দেবব্রত | 212.142.76.198 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৫৯51546
  • একক বাবু যে সত্যই বেশি বোঝেন পুর্বে এ বিষয়ে কিঞ্চিৎ সন্দেহ থাকলেও বর্তমানের দুটি পোস্ট পড়ে সে বিষয়ে সন্দেহর নিরসন হোল ।

    তা এই প্রবন্ধে ঠিক কোথায় ধরে নেওয়া হোল “ ভারত হলো শোষিত নিপীড়িত বাকি বিশ্ব এসে তার পেছন মেরে যাচ্ছে “ ? বর্তমান প্রবন্ধটি তো মমতা দেবীর পেছনের দরজা দিয়ে প্রথমে APMC অ্যাক্ট সংশোধন করে এবং পার্টিসিপেটারি ফার্মিং এর নামে চুক্তি চাষের প্রয়াসের কথা এবং বামপন্থীদের ডানপন্থীদের সাথে গলা জড়াজড়ির কথা ।

    আর “ বিশ্বজোড়া ক্যাপিটালিমের মধ্যে নিজের গবেষণাকেন্দ্র নিয়েও কিছু করার নেই “ না নেই । ইহা নিয়তিবাদ নয় ইহাই সত্য , তথ্য সেই কথাই বলে - ভারতে কৃষি গবেষণার পেছনে ক্রম হ্রাসমান অর্থ নিবেশ সেই কথাই বলে । যেখানে কতিপয় কর্পোরেটের বিশ্বজুড়ে মনপলি অধিকার স্থাপনের প্রশ্ন সেখানে স্থানীয় গবেষণা হতে দেবে কেন ? সার থেকে বীজ ,কীটনাশক থেকে ওষুধ , মিডিয়া থেকে গাড়ি প্রায় সমস্ত কিছুর ওপরেই ‘ কর্পোরেটের বিশ্বজুড়ে মনপলি ‘ কেউ চোখ বুজে থাকলে প্রলয় থেমে থাকেনা স্যার । ভারতের পুঁজিপতিরা কেন প্রতিবেশী দেশের মার্কেট দখল করতে পারছেনা থেকে বাকি বাক্যবন্ধ নিয়ে বলবার কিছু নেই কারন তার জন্য যে বিশ্লেষণী গভীরতা প্রয়োজন তা অনুপস্থিত । যদিও একেবারে নেই তা নয় ভারতীয় সাইকেল /মোটরসাইকেল ইত্যাদির বাজার প্রতিবেশী দেশ শুধু নয় আফ্রিকা মুলুকেও মেজরিটি মার্কেট শেয়ার দখল করে আছে - সে যাই হউক এই প্রবন্ধের অংশ নয় সুতরাং বিশদে যাওয়ার ইচ্ছা নেই ।

    “ আমরা ছাগলের পাল সেই দর্শন পড়ে ভাবছি আগ্রাসন করা অপরাধ “ আহা আগ্রাসন করা অপরাধ কেন হবে? কসাইয়ের পেশা মাংস কাটা আর সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির স্বভাব আগ্রাসন ,এখন কোন দৃষ্টিতে দেখছি বা আগ্রাসনের ফলে আদতে কি হয়েছে বিশ্বজুড়ে বা হয়ে চলেছে সেই বোধ সকলের সমান নয় । এখন আগ্রাসনের ফলে বা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে চুক্তি চাষ প্রবর্তনের ফলে কৃষকের হাল মহারাষ্ট্র বা অন্ধ্রের মত হতে চলেছে বলে আমি মনে করি । অসার আস্ফালন করে লাভ নেই , কে কলোনিয়াল অপ্রেস্ড কমপ্লেক্স এর আশ্রয় ছেড়ে বেরোতে পারেনা সেই নিয়ে গবেষণা করেও লাভ নেই - ১৯৯০ এর সময় থেকে আধুনিক কৃষি পলিসির ফলে যার মধ্যে চুক্তিচাষ অন্যতম দেশে কৃষকের অবস্থার উন্নতি হয়েছে ,আত্মহত্যা গল্প কথা , কৃষক দুবেলা দুধে ভাতে আছে সেই নিয়ে একটা লেখা লিখলেই ল্যাঠা চোকে নতুবা হাওয়ায় পতঙ্গ ওড়ানো এবং বাইট খচ্চা ছাড়া অন্য কিছু হয়না ।

    আর অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে বলেই লেখার বিষয় নিয়ে তথ্য এবং যুক্তি সঙ্গত কাউন্টার না করে -ব্যাক্তি দেবব্রত কলোনিয়াল অপ্রেস্ড কমপ্লেক্স এর শিকার না অন্যকিছু সেই নিয়ে ফেসবুক সুলভ গবেষণা । তবে যাই হউক প্রবন্ধটি পড়ুন আর না পড়ুন ব্যক্তি দেবব্রত কে নিয়ে যে যৎকিঞ্চিত গবেষণা করেছেন দেখে যারপরনাই প্রীত হইলাম ।
  • Ekak | 53.224.129.53 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:১০51535
  • ধুর ধুর আবার সেই হাওয়াযাকল খোঁজার চেষ্টা । আমার দেশে আমি যদি বীজ-সার নিয়ে গবেষণা করে উন্নত বিকল্প বানাতে না পারি , বিদেশের ক্ষতিকে বিকল্পের কাছে হাত পাতা চেহারা গত্যন্তর নেই । দেশে কেন সেসব হলোনা বলুন । বাইরের লোক এসে বাজার পুরো কন্ট্রোল করবে শোষণ ও করবে এটা বোঝার জন্যে সাতকাহন প্রবন্ধ পড়ার দরকার নেই ।

    দেশে বিকল্প হচ্ছেনা কেন তার কারণ বিশ্লেষণ করুন । যেখানেই সমস্যা দেখবেন সেখানেই দাও ফিরে সে অরণ্য বলে হাঁক দেওয়া একদম ফাঁকা বুলি । এসব আর্গুমেন্ট কে শুনবে ? দেশে এতো কৃষিবিদ্যার মাস্টার্স অথচ কৃষিভিত্তিক শিল্প নেই , এতো এতো ডক্টরেট বেরোয় বীজ গবেষণা -কৃষির উপর , তাহলে বিদেশের দিকে তাকিয়ে পরে থাকতে হচ্ছে কেন ? কেন এখন থেকেই স্কলার রা বাইরে চলে গিয়ে ফারদার গবেষণা করছে ?

    নিজের দিকে আঙ্গুল তোলা কঠিন । সবেতেই, ওইইইইই দেখো বিদেশী শোষক বলে সস্তার পেইনকিলার বেচা অনেক সহজ ।
  • এলেবেলে | 11.39.36.243 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৮:১২51536
  • সেই গোল গোল ঘোরা অব্যাহত !

    দেবব্রত লিখেছেন — ‘প্রচলিত চাষ এবং কৃষি পদ্ধতি বদলে কেউ টম্যাটো,কেউ আলু,কেউ ফুল বা কর্পোরেট সংস্থার সাথে চুক্তি অনুযায়ী চাষ করতে শুরু করেন । প্রথমে কিছুদিন লাভ পেলেও দামী বীজ,সার ,হরমোন ইত্যাদির চাপে ক্রমে লাভের পরিমান কমতে থাকে চাষী ঋণের ভারে জর্জরিত হতে থাকেন । কর্ণাটকে টম্যাটো, পাঞ্জাবে ধান এবং আলু ,পশ্চিমবঙ্গে আলু’র চুক্তি চাষে একই চিত্র' । আরও লিখেছেন ‘পাঞ্জাবে এখন ৮০০০০ -৯০০০০ টাকা একর পিছু চাষীর মাথায় ঋণ’
    ঠিক তথ্য হলে স্বীকার করুন নতুবা পাল্টা তথ্য দিয়ে ওঁকে ধুইয়ে দিন । বেশ আলফানিউম্যারিক্যাল কিছু লিখে টিখে এটা যে আদৌ নীলকরের দালালি নয় সেটা রেফারেন্স সহ সাবস্ট্যান্সিয়েট করার দায়িত্ব নিন । ফালতু ‘বিপ্লবী’, ‘ব্যাগড়াপন্থী’ ইত্যাদির খোপে পুরতে চাইছেন কেন বারবার ? চুক্তিচাষ দারুণ কারণ আমরা বলছি দারুণ এরকম শুনতে শুনতে এলেবেলের হঠাৎ ওই অ্যাকোয়াগার্ডের ফেরিওলাদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে কেন কে জানে !

    ‘আসলে কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে ডান -বাম নির্বিশেষে শাসকদলগুলির মধ্যে এক ধরনের ঐক্যমত বর্তমান যা মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও বিশ্বায়নবাদী নীতির দ্বারা নির্দেশিত । তবে তাতে কৃষক যে মারা যাবে ,দলে দলে ঋণ গ্রস্ত হবে ,শিশু শ্রমিকের ব্যাপক ব্যবহার হবে ,আত্মহত্যার হার বাড়বে ,এ বিষয়ে সন্দেহ নেই । বিভিন্ন রিপোর্ট সেই কথাই বলছে’
    শালা তিনপাতা জুড়ে অ্যাতো অ্যাতো কমেন্ট উপচে পড়ল কিন্তু কেউ বলছেও না রিপোর্টগুলো ভুলে ভরা আর পালটা রিপোর্টও পাচ্ছিনা যে চুক্তিচাষকে জড়িয়ে ধরে ‘বাঁহো মে চলে আ’ গাইতে পারি প্রাণখুলে !!
  • PT | 213.110.242.23 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৮:৩২51537
  • আমি বেশ কিছু লিং দিয়েছি যেখান থেকে মোট্টে প্রমাণিত হয়না যে চুক্তি চাষের কারণে কৃষক আত্মহত্যা করছে। এমনকি BT তুলোর জন্যেও আত্মহত্যা হচ্ছে এমনটাও সন্দেহাতীত সিদ্ধান্ত নয়। আঅর আগের দেওয়া লিং-এ চাষীদের লাভের হিসেবও পড়ে নেবেন।

    "কৃষক যে মারা যাবে ,দলে দলে ঋণ গ্রস্ত হবে ,শিশু শ্রমিকের ব্যাপক ব্যবহার হবে ,আত্মহত্যার হার বাড়বে....."
    এইসব ধ্যাষ্টামো বন্ধ হোক!
    বিশ্বায়ন যখন ছিল না তখন তেভাগা হয়েছে আর তারো আগে নীল বিদ্রোহ হয়েছে। আর শিশু শ্রমিক? এর পরের বারে যখন কোন বিয়ে বাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে যাবেন তখন প্যান্ডেলের পেছনে কতজন শিশু শ্রমিক আছে গুণে তারপরে ফিসফ্রাইতে কামড় দেবেন। কিংবা যাদব্পুরের চায়ের দোকানে চায়ের কাপে বিপ্লবের আগে কটা বাচ্চা ওখানে কাজ করে দেখে নেবেন, কেমন? তারা বিশ্বপুঁজির ফসল নয়।

    সর্বোপরি দেশের কৃষক বা শিশুকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেশের সরকারের। "মানুষ কোন ভুল করে না" এই জাতীয় আপ্তবাক্য মেনে নিলে এটাও মেনে নিতে হবে যে তারা এই রকম সিস্টেমই চায় যেখানে বাইরের লোক এসে তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে পয়সা বানিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন