এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারীদিবস ঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম ঃ কিছু সংযোজন

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২২৫২ বার পঠিত
  • ঘরকন্না ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প

    যে জীবন ফড়িং-এর দোয়েলের, মানুষের সাথে তার যে দেখা হয় না, সেকথা জানাই ছিল। কিন্তু যেসব জীবন মানুষের-মানুষীরই, তাদের আশেপাশেই থেকেও সেইসব জীবনের সাথেও যে মানুষের আসলে দেখা হয় না, তাও মাঝে মাঝে এমনভাবে জানতে পেরে অবাক হতে হয়।
    এই ক’দিন আগে আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রবন্ধ ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে দেবেন না কেন ?’ পড়ে নানাজনের কাছ থেকে পাওয়া মতামতগুলো পড়তে পড়তে কথাগুলো মনে হল। সেদিনটা দোলের ছুটির পরের দিন, কাগজের প্রিন্ট বেরোয় নি তাই লেখাটা শুধু আবাপ’র ওয়েব সংস্করণেই বেরিয়েছিল, যাঁরা পড়েছেন তাঁরা প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষিত, উচ্চবিত্তও। এবং মহিলারা বেশির ভাগই কর্মরতা। তাই এই লেখা, এই ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে’র ধারণা হয়তো সরাসরি তাঁদের জন্য নয়। যে মধ্যবিত্ত / নিম্ন মধ্যবিত্ত গৃহবধুদের কথা ভেবে এই লেখা, তাঁদের হয়ত এই লেখা পড়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু তাঁদের যে আমরা একেবারেই চিনি না, এমনও তো নয় ! কিন্তু দেখা গেল এই লেখা যাঁরা পড়েছেন সেই পাঠকগোষ্ঠীর সিংহ ভাগ মহিলা ও কিছু পুরুষ এই ব্যাপারটায় নানাভাবে আপত্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। লেখকের কাছে প্রতিটি মতামতই মূল্যবান, বিরুদ্ধ মতামত বেশীই মূল্যবান কারণ তা প্রায় টর্চের আলোর মত যেকোন ধারণার অন্ধকার কোণায় আলো ফেলে দেখিয়ে দেয় তার ভুল ভ্রান্তি। উল্টোদিকে বিরুদ্ধ মত যারা পোষণ করেন, লেখকেরও দায় থাকে তাঁদের বোঝার ভুল থাকলে তা ধরিয়ে দেওয়া।
    তাই প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো গৃহশ্রমের / গৃহকর্মের মূল্যায়নই এই লেখার মূল কথা। গৃহকর্ম বলাই বেশী ভালো কারণ ততটা শ্রমসাধ্য নয় কিন্তু অনেকটা যত্ন ও ভালোবাসা (এবং আত্মত্যাগ) মেশানো যে সব ছোট ছোট কাজ একটা ঘর কে সংসার করে তোলে আর গৃহবধু কে পরিচারিকার থেকে আলাদা করে সেগুলোর কথাও এখানে ভাবা হয়েছে। সেই গৃহকর্ম যাতে একটা সম্মানজনক পেশায় পরিণত হতে পারে এবং গৃহবধুও নিজেকে বঞ্চিত না ভাবেন বা ‘আমি তো কিছু করি না’ জাতীয় হীনম্মন্যতায় না ভোগেন, সেই জন্য তাঁর একটা নিয়মিত বেতনের কথা ভাবা, যেটা তাঁর স্বামীর বেতনের একটা অংশ (ধরুন ২০%)হিসেবে নিয়মমাফিক সরাসরি তাঁর কাছে আসবে (যেভাবে ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে আসে)। স্বামী এখানে এমপ্লয়ার নন, দাতা তো ননই, তাঁর রাজী হওয়া না হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেভাবে ট্যাক্স, পি এফ এর টাকা কাটা যায় সেই ভাবেই নিয়মমাফিক তাঁর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন কাটা হবে (অবশ্যই যদি স্ত্রী চাকরী না করেন)। সেই বেতন ঘরের কাজের দরুণ মহিলাটির নিজস্ব উপার্জন, আর এই উপার্জনই তাঁকে স্বনির্ভর করে তুলবে। নিজের ছোটখাটো চাহিদার জন্য স্বামীর কাছে হাত পাততে হবে না, কৈফিয়ৎ দিতেও হবে না। একজন গৃহবধু সসম্মানে বলতে পারবেন ‘আমি ঘরের কাজ করি’।
    এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অজস্র যুক্তি ও আপত্তির মধ্যে প্রথমই হল, গৃহবধুর আর আলাদা করে কাজ কি ? ঘরের সব কাজই তো পরিচারিকা করেন, বাচ্চাকে পড়ান টিউটর আর স্কুলে নিয়ে যায় পুলকার বা স্কুলবাস। তাছাড়াও এইসব মহিলারা স্বামীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতখরচা পান, তাতেই তাদের শখ-আহ্লাদ দিব্য মিটে যায়। আর খাওয়া-পরা সমেত সংসারের বড় খরচ তো পুরুষটির(স্বামী)উপার্জন থেকেই হয়, এর পর আবার মাইনে কিসের ! এই কথাগুলো পড়েই মনে হয়েছিল আমরা কবে খিড়কি থেকে সিংহদুয়ারের বাইরের পৃথিবীটা চিনতে শিখব ! অথচ আমরা যে একেবারেই সংবেদনশীল নই তাও নয়, গায়ক অভিজিৎ যেদিন রাস্তায় থাকা মানুষদের গালাগাল দিয়েছিলেন, সেদিন আমরা তাঁকে ছেড়ে কথা বলিনি। বাড়ির পরিচারিকাদের এমনকি যৌনকর্মীদেরও শ্রমিকের সম্মান দেওয়া নিয়ে আমরা ভাবি। তাহলে গৃহবধুদের ব্যাপারে আমরা এত উদাসীন কেন !
    আসলে আমরা অনেকেই নিজেদের চাকরী করা জীবনটা দেখতে পাই, পাশের বাড়ির / ফ্ল্যাটের গৃহবধুর আরামের জীবনটা দেখতে পাই আর দেখতে পাই নীচের তলার বাসিন্দা আমার ‘কাজের মাসি’র কঠিন জীবনটা। এর বাইরে মধ্যবিত্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন উপার্জন স্তরের বাসিন্দা যে গৃহবধুরা তাঁদের জীবনটা আমরা দেখতেই পাই না। এই শহর কলকাতায় আমাদের আশেপাশেই তাঁরা থাকেন, কোনো একটা সরকারী ইস্কুলের গেটের কাছে ছুটির সময়টা একটু দাঁড়াবেন, বাচ্চাদের নিতে আসা মায়েদের কথায় কান দেবেন, তাঁদের চেহারা-সাজগোজের দিকে নজর দেবেন, বুঝতে পারবেন গৃহবধু কাকে বলে। একপর্ব রান্নাবান্না সেরে বরকে কাজে পাঠিয়ে বাচ্চাকে নিতে এসেছেন, গিয়ে বাকি রান্নাটা সারতে হবে, ফেরার পথে হয়ত এটা ওটা বাজারও করে নিতে হবে। ঠিকে কাজের লোক একটা এঁদেরও আছে, বাসন মেজে ঘর মুছে কি সপ্তাহে একদিন কিছু কেচে দিয়ে যায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। রোজকার কাচাকাচি, ঘরগোছানো, বাচ্চাকে স্নান করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, জামা কাপড় ইস্ত্রী করা, অতিথি আপ্যায়ন, অসুখে সেবা, এই সব কাজ এঁরা নিজের হাতেই করেন। এই ডিউটি নিয়ে কিছু বলার নেই, এঁদেরও নেই, আমারও নেই কিন্তু দিনের শেষে এঁরা কেন নিজেদের ‘স্বনির্ভর’ মনে করবেন না, উপার্জনের প্রশ্নে মাথা নীচু করে থাকবেন, সেই প্রশ্ন আমাকে ভাবায়। কারণ এটাই বাস্তব, পয়লা বৈশাখে নিজের মাকে একটা শাড়ী দিতে গেলে এই মহিলাদের বরের কাছে হাত পাততে হয়, আর হাত পাতলেই সব সময় হাত ভরে এমনও নয়। এই জীবনটা ‘আমাদের’ নয়, কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের ওই প্রান্তে যে বিরাট সংখ্যক মহিলা বাস করেন যাদের স্বামীরা ছোটখাটো চাকরী বা ব্যবসা করেন, তাঁদের জীবনটা এইরকমই।
    কিন্তু নিয়ম যদি করতেই হয় তাহলে তা সকলের জন্যই করতে হবে আর তাতে আখেরে কিছুটা যাতে সুরাহা হয় সেটাই দেখতে হবে। স্বামীর মাইনের / উপার্জনের কিছু নির্ধারিত অংশ যদি স্ত্রী-র হাতে আসে আর মহিলাটি যদি তার থেকেই পরিচারিকার মাইনে দেন তাহলে একটা কিছুটা সুরাহা হতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে যিনি বেশির ভাগ কাজ নিজের হাতে করেন আর যাঁর সব কাজ পরিচারিকা করে দেয় তাঁদের মধ্যে উপার্জনগত ভাবে একটা তফাৎ থাকবে। স্বামীকে আর আলাদা ভাবে বৌকে হাত-খরচ দিতে হবে না, আর স্ত্রীও নিজের এই উপার্জনের কতটা সংসারে খরচ করবেন, কতটা নিজের হাতে রাখবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন। কিন্তু তাঁকে স্ব-নির্ভর বা উপার্জনক্ষম নন একথা আর বলা যাবে না কারণ মাসের শেষে তাঁর হাতেও নিয়ম করেই কিছু টাকা আসছে আর সেই টাকাটা তাঁর স্বামী দিচ্ছেন না। এই কথাটিই এই ব্যবস্থার মূল কথা আর এই কথাটা হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে তাই আবার লিখতে হল।
    কিন্তু যাঁরা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মতামত দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বুঝতেই পারছেন না, বাড়ির কাজ যা অনেকটা নিজের জন্যও করা, যা ভালবেসে করা তার জন্য মাইনে কেন ! পুরুষেরা কেউ কেউ আরও এক পা এগিয়ে বলেছেন যে মাইনে থেকে ভাগ দিতে হলে তো কাজের লোক রাখলেই হয়, বিয়ে করার দরকার কিসের ! আর মেয়েরা অনেকেই একটা কথা বলেছেন যে সংসারের পেছনে একজন মহিলার যা অবদান তা কি টাকা দিয়ে মাপা যায় ! অর্থাৎ নিজের সংসারে কাজ করে টাকা নিতে তাঁদের ‘ইগো’তে লাগছে। আবারও বুঝিয়ে বলি, দেখুন, একটা রাস্তায় যানজটের জন্য দেরী হলে সেই দেরীর দরুণ ক্ষতিটুকুও অর্থমূল্যে মাপা যায় কারণ তা দেশের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। ওপরে যেসব কাজের তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা সমেত একটা পূর্নাঙ্গ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে গৃহবধুরা যে তাকে তাকে সুষ্ঠু ভাবে চালান, সেটা কাজের মানুষটির(পড়ুন পুরুষটির)উৎপাদনশীলতাকে ও কর্মক্ষমতাকে নিশ্চই প্রভাবিত করে কিন্তু সেই বিরাট পরিমাণের শ্রম আমাদের অর্থনীতিতে উহ্যই থেকে যায় যুগের পর যুগ তার কোন ‘মূল্যায়ন’ হয় না, এটা কতটা সঙ্গত সেটা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। সংসারের ‘সমস্ত’ কাজের জন্য কাজের লোক রাখা এমনিতেই সম্ভব নয়, যতটা রাখা সম্ভব তার জন্যও খরচের অঙ্ক বিরাট। কিন্তু সেই খরচ দিয়েও একজন গৃহবধুর মত পরিষেবা পাওয়া যায় না, এইটা ছেলেদের ও মেয়েদের সবাইকেই বুঝতে হবে। সেভাবে দেখতে গেলে কোনো পেশাতেই পেশাগত দক্ষতা, যত্ন ও ভালোবাসা টাকা দিয়ে মাপা যায় না; যে যত্ন নিয়ে একজন আদর্শ ডাক্তার একটি শিশুর জন্ম ঘটান বা যে ভালোবাসা নিয়ে একজন শিক্ষক কঠিন বিষয়কে সহজ করে শেখান তাও কি টাকায় মাপা যায় ? তবু সেই সব পেশার ক্ষেত্রেই আমরা আর্থিক মূল্যায়নকে মেনে নিয়েছি কারণ এ ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। তাই গৃহকর্মকে একটা পেশা হিসেবে সম্মান দিলে তার মূল্যায়নের কথাও ভাবতে হবে।
    কিন্তু হয়নি এযাবৎ। আর সেই জন্যই কেউ গৃহকর্মকে পেশা হিসেবে ভাবতে পারেন না আর সেই ভাবেই সংসারের ছোটবড় কাজগুলো অকিঞ্চিৎকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সে কাজগুলো না করলে যে চলবে এমনও নয়। খেতে আপনাকে হবেই, গৃহবধু রান্না না করলে রান্নার লোক রাখা, না হলে হোম ডেলিভারী। রান্নার লোকের ওপর তদারকি না করলে রান্না খারাপ, তেল বেশি, পরপর ক’দিন খারাপ / একঘেয়ে রান্না খেলে একদিন বাইরের খাওয়া চাইই। তার মানে রান্না-খাওয়া ব্যাপারটা একেবারে এলেবেলে নয়, কিন্তু যখন তা বাড়ির বৌটি করছেন তখন আমরা সেটা আলাদা করে ভাবছি না। সেই রকমই অন্যন্য কাজও। কাউকে না কাউকে সেগুলো যত্ন করে করতেই হয়, না হলে পরিবারের ধারণা দাঁড়ায় না। তাই বিয়ে করাটা নারী-পুরুষ কারুর কাছেই সমাজসেবা নয়, নারীর যেমন নিরাপত্তা চাই, পুরুষেরও দিনের শেষে নিজের সংসার নিজের ভালোমন্দ দেখার মানুষ দরকার।
    তবে এখানে ঘরের কাজ মূলতঃ মেয়েরা করেন এবং পুরুষ বাইরেই কাজ করেন বলেই বার বার ‘গৃহবধু’ বলা হয়েছে, তবে আসলে এটা গৃহশ্রমের মূল্যায়নের গল্প। তাই যে নারী বাইরে কাজ করতে চান করুন, যে পুরুষ ঘরে কাজ করতে চান করুন (সেই ‘কি’ আর ‘কা’ এর গল্প), বেতনের নিয়মটা আলাদা কিছু হবে না কারুর জন্য। দুজনেই বাইরে কাজ করলে ঘরের কাজ তাঁরা কিভাবে করবেন সেটা নিজেরাই ঠিক করবেন কারণ সে ক্ষেত্রে মহিলাটিরও নিজের মত জানানোর যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। কিন্তু ঘরের তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলো সে মেয়েরা করুন বা ছেলেরা করুন, কাজ হিসেবে যে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটাই মনে করানোর জন্য এবং তাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য এই নিয়ম।
    গৃহশ্রমের এইভাবে মূল্যায়নকে যারা সরাসরি স্বীকার বা অস্বীকার করতে পারেন না দেখা গেছে তারা এর বাস্তবায়ন নিয়ে ভয়ানক চিন্তিত। যেমন গৃহবধু যদি ‘মাইনে’ পান তাহলে ইনক্রিমেন্ট, পি এফ, গ্রাচুইটি, ইত্যাদি কি ভাবে হবে, সি-এল, ই-এল এর সুযোগ থাকবে কিনা, আরো ভালো ‘মাইনে’ পেলে গৃহবধুর চাকরী বদলানোর সুযোগ থাকবে কিনা ইত্যাদি। বোঝাই যাচ্ছে এর অনেক কিছুই স্রেফ বিরোধিতা করার জন্য বলা, কিন্তু লেখকের দায় থাকে সব প্রশ্ন নিয়েই ভাবার। তাই এই ধরনের সমস্যারও কিছু সমাধানের কথা ভাবতে হয়। স্ত্রীর বেতন যেহেতু স্বামীর বেতনের একটা অংশ হিসেবে আসবে, সে ক্ষেত্রে স্বামীর আয় যেমন যেমন বাড়বে, স্ত্রীরও সেই অনুপাতেই বাড়বে, পেনশনও পাবেন সেই ভাবেই। কিন্তু দেশের সমস্ত চাকরীর শর্ত যেমন একরকম নয়, সেইরকম এই চাকরী থেকে ‘ছাঁটাই’ এর প্রশ্ন নেই কারণ বর এর এমপ্লয়ার নন, মহিলাই বা চাকরী ‘বদলানো’-র কথা ভাবতে পারবেন কি করে, নিজের স্বামী সন্তান ছেড়ে অন্য সংসারে অন্য স্বামী-সন্তানের মাঝখানে ফিট করে যাওয়া কি বাস্তব সম্মত কথা হল ! যাঁরা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা সম্ভবতঃ এত কিছু না ভেবেই বলেছেন। কিন্তু এর পর থেকে এইরকম প্রশ্ন করার আগে আশা করব একটু ভেবে করবেন। আর সি-এল-ই-এল ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলব আপনি যেমন অফিসে প্রয়োজনমত ছুটি নেন, গৃহবধুও দরকার মত নেবেন, তখন ঘরের কাজ কিভাবে হবে তা তিনিই ঠিক করবেন। তবে এই সব অনেক প্রশ্নই অবান্তর কারণ গৃহবধু পরিচারিকা নন, নিজের দায়িত্বেই তিনি সংসারের নানাদিক দেখে থাকেন। বিনা পারিশ্রমিকেই। শুধু পারিশ্রমিক নিলেই তাঁকে ভাড়া করার কাজের লোকের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। গৃহবধুকে তাঁর জায়গায় রেখে তাঁর পরিষেবাকে সম্মান জানাবার জন্যই এই ভাবনা।
    এই নিয়ম চালু হতে গেলে প্রাথমিকভাবে হয়তো অনেক মেয়েরা নিজেরাই এই পারিশ্রমিক নিয়ে চাইবেন না। কিছুটা চক্ষুলজ্জা (নিজের সংসারে কাজ করে পয়সা নেবো ! ছিঃ, লোকে কি বলবে ), কিছুটা ইগোয় লাগা (আমার দায়িত্ব কি টাকায় মাপা যায় !) যে কথা আগে বললাম। কিন্তু ‘সাফারার’ এর মতামত নিয়ে নিয়ম চালু করতে গেলে হয়তো সতীদাহ-বিধবা বিবাহ-বহুবিবাহ কিছুই রদ করা যেত না। কিন্তু যখনি একটা নিয়ম চালু হয়, কিছু মানুষ তার সুবিধে পেতে শুরু করেন, তখনই আস্তে আস্তে সেটা অর্থবহ হয়ে ওঠে। তার বাস্তবায়নের নানা সুবিধে অসুবিধেও তখনই সামনে আসে আর তার সংশোধনেরও রাস্তা খোলা থাকে। কিন্তু প্রস্তাবটা গোড়ায় বিনাশ করে দিলে এ সব কিছুই আর হয়ে ওঠে না।
    গৃহশ্রমের মূল্যায়নের এই মডেল একটি ধারণা মাত্র। মানে এটা নিয়েও যে ভাবা দরকার আর এভাবেও যে ভাবা যেতে পারে, সেইটা জানানো। এভাবেই যে হতে হবে তা কোথাও দাবী করা হয়নি কিন্তু কিভাবে হতে পারে সেইটা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কিন্তু মজার কথা হল, যাঁরা বিরোধিতা করেছেন তাঁরা কেউ কিন্তু কোনও সমাধান দেননি, শুধু নানারকমের প্রশ্ন তুলে ঠাট্টা-তামাশা করেই কর্তব্য সেরেছেন। তবু এই অবকাশেই এই বিষয় নিয়ে দু-চারটে কথা আবারও লেখার সুযোগ হল, এটাই বা কম কি !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২২৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 127.194.12.131 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১১:০৪52147
  • আবার অনেক চাকুরিরতাই এরপরেও চাকুরি চালান।

    আমি তো বুঝতে পারছিনা, আপনারা কোনটা বলতে চাইছেন, যেটা হয় না যেটা হলে ভাল হয় ? মেয়েদের তিন চার বছরের ব্রেক নেওয়া দরকার বা ভাল, এটাই কি বলতে চাওয়া হচ্ছে ? নইলে মেয়েদেরই যে বেশিরভাগ সময়ে কাজ ছাড়তে হয়, পুরুষেরা এখনো এনিয়ে কম দায়িত্ব নেন, বিশেষ করে অমাদের দেশে, সে আর নতুন বা অজানা কথা কী ? কথা হল, সেটাকে সমস্যা মনে করা হচ্ছে নাকি দিব্বি ব্যবস্থা ? সমস্যা মনে হলে তার সমাধান প্যাটার্নিটি লিভের বহুল প্রচলনে, কাজকর্মের আরো শেয়ারিং এ। এর সমাধান নিশ্চয় একজনকে ( এবং সেটা মেয়েদেরকে, বলা বাহুল্য, তবে মেয়ে না হলে কলৈত সিচুয়েশনে পুরুষ হলেও আপত্তি তুলতাম), বাইরের কাজ ছেড়ে নিজের সংসারের কাজ ও পুরো বেবি সিটিং করতে হবে, এমনটা না ? কারুর সেটা করার ইচ্ছে থাকতেই পারে, আবারো বলছি, তাই নিয়ে আপত্তি করবো না, মন্তব্যও না। তাঁকে যা কাজ করতে হয় তাকে সম্মান দিয়েও বলছি, এটাই আদস্ড়, এটাই করতে হবে, না করলে চলবে না, এমনটি আর কিছুতে হবেনা, অপরিহার্য , বিকল্পহীন, এইসব বলে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করলে আপত্তি তুলব বা অতিরিক্ত সম্মান দিতে পারব না।

    পুরো একটা ট্রেন্ডই দেখতে পাচ্ছি, ঘরের কাজ ঘরে থেকে করা অবশ্যপ্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার , বাইরের কাজ না করাকে নানাভাবে জাস্টিফাই করার চেষ্টা চলছে, যেটাতে আতঙ্কিত বোধ করছি বলে এত কিছু লেখা। নইলে এর আগে আমি উল্টে গৃহশ্রমকে সম্মান দেওয়ার পক্ষ নিয়েই বলতাম। কোন কিছু মাস্ট না হলেই সেই কাজের মূল্য থাকএ না, বা সম্মান করা হয়না, এমনটাও নয়, একথাও পষ্ট করে দি।
  • pi | 127.194.12.131 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১১:০৮52148
  • প্যাটর্নিটি লিভ বহু বছর আগেই টিআয়েফাআরে চালু হতে দেখেছিলাম। জানিনা এখন কীরকম কী কেস। কতজায়গায় আছে।
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১১:২০52149
  • পাই,
    "বাইরের কাজ না করাকে নানাভাবে জাস্টিফাই করার চেষ্টা চলছে," আর "তাঁকে যা কাজ করতে হয় তাকে সম্মান দিয়েও বলছি," এই দুটো একসাথে যায় না... কাজটা হয় তুমি ফালতু মনে কর, তাই জাস্টিফাই করার চেষ্টায় আপত্তি, আর নয়ত সেটা লেজিটিমেট কাজ মনে কর, সেক্ষেত্রে তোমার মতে সেটা জাস্টিফায়েড ই, তাহলে জাস্টিফিকেশনের চেষ্টায় আপত্তি বা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু থাকে না।

    আর কবিতা লেখা মাস্ট না হলেও সেটাকে লোকে সম্মান করে এ তো আমরা সবাই ই জানি, গৃহশ্রম যে সেই জায়গায় নেই সেটাও ও নিশ্চয়ই আমরা সবাই ই একমত।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১১:২৭52165
  • সেই মন্ত্র কি বাংলায় হয়? মানে আমি তো শুনিওনি, বুঝিওনি।
  • pi | 127.194.12.131 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১১:৪৯52150
  • একেবারেই নয়। হয় অপরিহার্য ভাব, নয়তো ফালতু, হয় পুজো করব , নয়তো কাজের সম্মাবটুকুও দেবনা, এরকম বাইনারিতে একেবারেই বিশ্বাসী নই।

    আর এটা তো এতবার স্পষ্ট করে লিখলাম, বোঝা যাওয়া উচিত, কেউ নিজের ইচ্ছায় এই কাজ করতেই পারেন, তাঁর চয়েজকে বা যা পরিশ্রম করছেন এর জন্য, তাকে আমি সম্মান করি, কিন্তু তাই বলে এই কাজটা এই মোডে এভাবে না হলে চলবেই না, এটা কেন বলতে হবে ?

    আর সেটা বললে, মানে যদি তুই সেটা বলিস, তাহলে কি তুই ( কোনো একজনের ) ঘরের কাজ করা বা বাইরের কাজ না করা মাস্ট বলছিস না ? কারুর জন্যই বাইরের কাজ না করে ঘরের কাজ করা মাস্ট বলে প্রিচ করা হলে আতঙ্কিত হবার জায়গা থাকে বইকি।
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১২:০৩52151
  • আমি তো আমার মত এখানে আদৌ লিখিনি...
    আমি গৃহশ্রমই রেগুলার টাইম অকুপেশন এই ব্যাপারটাকে ফালতুই মনে করি...
    গৃহশ্রম কে অপরিহার্য মনে করি, কিন্তু তার জন্য গৃহশ্রমিক থাকা দরকার মনে করি না।
  • sosen | 184.64.4.97 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১২:৩৬52114
  • হ্যাঁ, আমি বেকার থাকার অধিকার চাই! ভেউ
  • | 11.39.49.16 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১২:৪৪52152
  • এগজ্যাক্টলি ডিসি, পুরো আলোচনাটাই জেন্ডার স্টিরিওটাইপিং ঘেঁষা , যেটায়াবার আমার খুব আপত্তি।

    বাকী কাল লিখব।
    ও হ্যাঁ আমাদের কোংএ ১৫ দিন ছুটি পিতৃত্বের।
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১২:৫০52153
  • আমি কুনো ছুটি পাইনি ঃ( তখন অন্য কোং এ কাজ করতাম সেখানেও ছিল না, এখন যেখানে কাজ করি সেখানেও নেই। তবে দুদিন নাকি তিনদিনের ছুটি নিয়েছিলাম, সেটা এমনি সিএল। আমার মাবাবা ছিল, কয়েকদিনের মধ্যে শাশুড়িও চলে এসেছিলেন। মহা হৈচৈ বেধে গেছিল ঃ) তবে রাত্তিরের ডিউটি যে কতো দিয়েছি সে আর মনে নেই।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৩52167
  • না শুনে বা বুঝে থাকলে এগ্রিমেন্ট ইনভ্যালীড ঃ))
  • pi | 127.194.2.38 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১৮52170
  • স্বর্ণেন্দু, আচ্ছা।
    তবে আমি গৃহশ্রমকেও এককথায় অপরিহার্য বলতে পারিনা, মানে এটাকে খুবই সাবজেক্টিভ মনে করি। কতটা কাজ করলে ঠিকঠাক কাজ হয়েছে, সেই অংশটা। অনেক উদাঃ দেওয়া যেতে পারে, একটা ছোট উদাঃঃ ধরা যাক, কেউ মনে করলো ঘরটা পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখা দরকার ও তার জন্য শ্রম দিল। এবার কেউ মনে করতেই পারে যে অত কিছু গোছানো দরকার নেই। এবার কেউ গুছিয়ে না রাখলে প্রথমজনের ক্ষেত্রে কম কাজ হল, আবার গুছিয়ে রাখলে দ্বিতীয়জনের রেসপেক্টে এই গোছানোটা অপরিহার্য নাও মনে হতে পারে।

    S, আপনি তো এখনকার পরিস্থিতি বল্লেন। আগে বলেছিলেন ৩-৪ বছরের ব্রেক। তো ৩-৪ বছরের উইথ পে ম্যাটার্নিটি লিভের ও দাবি করবেন ? এমনিতে আপনি এক বছরের ম্যাটার্নিটি লিভের কথা লিখেছেন, আমি বলবো, সেটা কমিয়ে বাবাদের জন্য প্যাটর্নিটি লিভ নয় কেন , বা দুজনের জন্যই অপশনাল ক'রে দেওয়া নয় কেন ? যার যেমন দরকার, ইচ্ছা, লিভ নিয়ে থাকলেন।
    পে পাওয়াটাই তো সবসময় বড় কথা নয়, সবার চাহিদাও তাই থাকে না। ধরা যাক, কোন মেয়ে রিসার্চ করছে, তার জন্য এক বছর বসে যাওয়া কাজের থেকে অনেক পিছিয়ে যাওয়া, অর্ধেক পে পেলেও সেটা সে নিলে খুশি হবে এমন নাও হতে পারে, উল্টোদ্লে বাবরাও ছিউটি পেতে পারেন, এই অপশন থাকলে সমশ্যার সমধান আরো বেটার হয় মনে হয়।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:০৯52168
  • সেকি আলোচানা কি এখানেই শ্যাস।
  • Tirjak | 11.39.56.231 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ১০:১৬52169
  • naa naa S, লিখছি অবিলম্বেই। রোব্বারের দুপুর গৃহবধুরাও কিন্চিত ভাতঘুমে...
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ১২:০৩52166
  • দশরথের কেস করেছেন, ব্ল্যাংক চেকে সই করেছেন। ঃ-)
  • 0 | 123.21.68.19 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪১52190
  • ওপরের পোস্টে দেওয়া কেস দুটোয় রায়ের খুঁটিনাটি এখানে পেয়ে যাবেন।
    ১) জয়বন্তীবেনের কেস : http://judis.nic.in/supremecourt/imgs1.aspx?filename=42349
    ২) রেণু আগরোয়ালের কেস : http://supremecourtofindia.nic.in/scr/2010_v%209_pii.pdf

    একটা ব্যাপার হলো যে, কোনো একটা ঘরের কাজের ভ্যালুয়েশন তো সব পরিস্থিতিতেই এক হওয়া উচিত। সেটার দাম ইউনিভার্সালি সমান হওয়া উচিত। ধরা যাক (যদিও কিভাবে এ'সব সাবজেক্টিভ লেবারের অদ্ভুত ভ্যালুয়েশন করা সম্ভব কেজানে!!), সেটা হলো x টাকা। এবারে এই টাকাটা তো সবরকম আয়ের পরিবারের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ কখনোই নয়! কারুর কাছে বেশী, কারুর কাছে কম।
    এ'রকম ভাবে ঘরের কাজগুলোর ভ্যালুয়েশন করাটা যে প্র্যাক্টিকালি অসম্ভব সেটা কিন্তু বিভিন্ন সময়ে এপেক্স্‌ কোর্টের নানান রায়ে বারবার বলা হয়েছে। ওপরের লিংকগুলো ফলো করলেই জানা যাবে।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:১১52171
  • @de
    "হ্যাঁ, প্পন ডিপেন্ডেন্টের যা সংজ্ঞা লিখলো তাতে গৃহবধূর বাপ-মাও তো ইনক্লুডেড। তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেবার কথাও গৃহবধূর ভাবা উচিত।"

    কি ভাবে ? একজন গৃহবধু কিভাবে অন্য ডিপেন্ডেন্টদের কথা ভাবলে আপনিসঠিক ভাববেন ? নিশ্চই আর্থিক ভাবে নয়, কারণ গৃহবধু নিজেই আর্থিকভাবে স্বনির্ভর নন। এছাড়া অন্য যে ভাবেন না সে কথা আপনাকে কে বলল ?

    "চাকুরীরতা মহিলাদের জন্যও কিছু আইন হলে পারে! গৃহবধূদের চেয়ে অনেক বেশী চাপ বরং তাদের নিতে হয়। ঘরে-বাইরের পুরোপুরি চাপ।"

    হ্যাঁ, কি রকম আইন চান একটা প্রস্তাবের খসড়া করুন না ! কিন্তু আপনার কথা থেকে একটা তথ্য পাওয়া গেল 'ঘরে-বাইরের চাপ'। মানে 'ঘরের চাপ' ব্যাপারটা আছে। ওদিকে পাই তো ঘরের কাজের চাপ ব্যাপারটা স্বীকারই করে না। মানে গৃহবধু ছড়াই যদি গৃহকর্ম দিব্যি চলতে পারে, তাহোলে খমোখা আপনিই বা কেন গুচ্ছ বাইরের কাজের পর ঘরের চাপ নেন ! যদি বলেন পাইয়ের কথার দায়িত্ব আপনার নয়, তাহলে অবশ্য অন্য কথা।

    কিছু মনে করবেন না গৃহবধুদের বিষয়ে আপনার মন্তব্য বড্ড একমাত্রিক। এক্কেবারে আগেকর দিনের কর্তাব্যক্তিদের মত 'সারাদিন ঘরে থেকে করো তো ঐ, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার তো করতে হয় না...' এই ধাঁচের।
  • Ekak | 212.62.91.53 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪৯52172
  • চাপ কেন থাকবেনা । আবার চাপ নেই ও । যে পরিবার এ বাইরে থেকে আসা রোজগার যত বেশি সেই পরিবারের ঘরের "কাজ এর চাপ " তত কম । কারণ তারা কাজের লোক , ওয়াশিং মেশিন , ভ্যাকুয়াম ক্লীনার , "আজ আর রাঁধতে ইচ্ছে করছেনা " উপলক্ষে হোম ডেলিভারি এগুলো অতি সহজেই এফর্দ করতে পারে । কাজেই সেরকম পরিবারে সো কলড গৃহকর্ম অতি অতি কম । একটা টপ লেভেল ম্যানেজমেন্ট থাকে শুধু ।

    এদিকে যে পরিবারে বাইরে থেকে আসা রোজগার টাই কম সেখানে সে কি বিশাল গৃহকর্ম সে আর বলে বোঝানো সম্ভব নয় । কারণ সমস্ত মাইক্রো লেভেল ওয়ার্ক করতে হয় সে যেই করুক । দু-চার হাজার দিয়ে কাজের লোক রাখাও সম্ভব না , রোজ রোজ হোম ডেলিভারি অসম্ভব ।

    অর্থাত আপনাদের এই সাধের মডেল এ ঠিক করা "উপকৃত " হবে বোঝা সম্ভব না :) যে কেস এ দরকার সেখানে এলাওএনস তাদের এফর্দ করা অসম্ভব , আর যে কেস এ সহজেই এফোর্ড করা সম্ভব তাদের দরকার নেই। পরে রইলো মাঝের একটা ক্রসিং জোন।

    এতরকম বিপরীত মন্তব্য ও ঐকারণেই পাচ্ছেন :) কেও একটা উদ্যোগ নিয়ে কার্ভ এঁকে দেখিয়ে দিন তো , কাজ এ দেবে ।
  • de | 69.185.236.55 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৯52173
  • তির্য্যক - আমি গৃহবধূ কনসেপ্টটাই তুলে দেওয়ার পক্ষে! আপনার এইসব মডেল ইঃ এবং তাই নিয়ে পর্বে পর্বে ফিরে আসা লেখা আমার কোন কাজেরই মনে হয় না!

    গৃহবধূ ছাড়া ঘরের চাপ সামলানো সম্ভব নয়? লোকে অবিবাহিত/তা থাকে না? তারা কি করে সামলায়?

    গৃহকাজের জন্য পয়সা পাওয়া গেলে মেয়েরা আর স্বনির্ভর হতে চাইবে না। প্রত্যেকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হোক, এটাই চাওয়া!

    আপনার মডেলে গৃহকাজকে শুধুই মেয়েদের জন্য দেগে দেওয়া আছে, পাই সেটারই বিরোধিতা করছে। এছাড়াও আর্থিক পরিস্থিতি ইঃ বিষয়ক অসংখ্য প্রশ্ন আছে।

    একমাত্রিক সোজাসাপ্টা মন্তব্য করে গেলাম - পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে গোল ঘুরতে আমি ভালোবাসি না!
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৩২52174
  • @ পাই,
    "তাঁকে যা কাজ করতে হয় তাকে সম্মান দিয়েও বলছি, এটাই আদস্ড়, এটাই করতে হবে, না করলে চলবে না, এমনটি আর কিছুতে হবেনা, অপরিহার্য , বিকল্পহীন, এইসব বলে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করলে আপত্তি তুলব বা অতিরিক্ত সম্মান দিতে পারব না।"

    বার বার গ্লোরিফিকেশন বা অতিরিক্ত সম্মানের কথা কেন তুলছ বুঝতে পারছি না। আর সম্মনটাই বা কোথায় দিচ্ছ ? নিজেই বলছ, তোমার মতে, গৃহবধুদের শ্রম আদৌ অপরিহার্য নয়, তাদের ছাড়াও সংসার দিব্যি চলে যায়। কেউ পুজো করতে বলে নি, কেউ মহিমান্বিত করতে বলে নি কিন্তু তাদের শ্রমকে অপরিহার্য বললে তোমার মনে হচ্ছে তাদের 'মহিমান্বিত' করা হচ্ছে, এর পরেও বলতে হবে তুমি সম্মান দিচ্ছো ! তাহলে সম্মান না দিলে আর কি বলতে হত ? প্রাপ্য সম্মানটা দিলে গৃহবধুদের সমস্যাটা বুঝতে হত। কিন্তু আসলে বার বার অলোচনাটা চলে যাচ্ছে যারা বাইরে কাজ করেন তাঁদের সমস্যা ও সমাধানের দিকে। অর্থাত গৃহবধুদের সমস্যাতা আদৌ কোনো সমস্যাই নয় !

    "পুরো একটা ট্রেন্ডই দেখতে পাচ্ছি, ঘরের কাজ ঘরে থেকে করা অবশ্যপ্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার , বাইরের কাজ না করাকে নানাভাবে জাস্টিফাই করার চেষ্টা চলছে, যেটাতে আতঙ্কিত বোধ করছি বলে এত কিছু লেখা। নইলে এর আগে আমি উল্টে গৃহশ্রমকে সম্মান দেওয়ার পক্ষ নিয়েই বলতাম। কোন কিছু মাস্ট না হলেই সেই কাজের মূল্য থাকএ না, বা সম্মান করা হয়না, এমনটাও নয়, একথাও পষ্ট করে দি।"

    এই আলোচনায় প্রথম থেকেই তোমাকে গৃহশ্রমের মূল্যায়নের পক্ষে একটিও কথা বলতে দেখি নি। আর বিভিন্ন সময়ে তুমি বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন তুলেছো, কোথাও কোথাও অন্যায় অভিযোগও করেছ (আরও অনেকেও করেছেন)। তাই কি হলে তুমি কি করতে তা বোঝা বড়ই কঠিন কারণ তুমি শুধু বিরোধিপক্ষ হিসেবেই তর্ক করছ। তাতে এমনিতে অসুবিধেও কিছু নেই কিন্তু কি হলে বা কবে তুমি এর পক্ষে কথা বলতে সেই কথা অবান্তর। হ্যাঁ, কোনোকিছুকে তোমার বিচারে প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে গেলেও তার ভালোমন্দ নিয়ে নিরপেক্ষ মতামত দিতে হয়। সারাক্ষণ শুধু অপরিহার্য নয়, মহিমান্বিত করা হচ্ছে এইসব বলে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া যায় না। কোথায় দরকারী কতটুকু দরকারী, সেটাও উল্লেখ করতে হয়। যদি কেউ অপরিহার্য বলে থাকেন তাহলে কেন বলছ্নে সেটা জেনে নিয়ে তার বিরুদ্ধে যুক্তি দিতে হয়, নাহলে কোনো ভুলই ধরা পড়ে না।

    অন্যায় অভিযোগের এক নম্বর হল জেন্ডার স্টিরিওটাইপিং। বার বার বলা হয়েছে সাধারণভাবে মেয়েরা করেন বলে এখানে মেয়েলী বা গৃহবধু শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বা নিয়মটি তে মেয়েদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মেয়েদেরই করা উচিত বা পারা উচিত এমন ধারণা কোথাও নেই, এক্জন পুরুষের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম একই ভাবে প্রযোয্য হবে যদি তাঁর স্ত্রীই শুধু বাইরে কাজ করে উপার্জন করেন। দুনমবর অভিযোগ যেটা ওপরে আছে, মেয়েদের বাইরে কাজ করার বিপক্ষে মতামত তৈরী করা হচ্ছে। কোত্থাও এটা বলা হয়নি, মূল লেখায় বা অনুসারী আলোচনায় বার বার লেখা আছে যে যাঁরা বাইরে কাজ করেন করবেন কিন্তু কেউ যদি ঘরের কাজই করতে চান (মহিলা / পুরুষ) বা বাইরে উপযুক্ত কাজ পাননি, তাতে সংসারে তো তাঁর কাজটা অর্থহীন হয়ে যায় না। তাহলে তাঁর শ্রমের মূল্যায়নের কি ব্যবস্থা হল ? এতে আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ তো দেখি না !
  • pi | 74.233.173.58 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৩৬52175
  • তাহলে তো বিরোধীমত থাকতেই পারবেনা , যা বোঝা গেল। প্রস্তাবকে সমর্থন না করলে কিছুই বলা যাবে না। সেটা আগে বলে দিলে চুপ করেই থাকতাম।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪১52176
  • সোজাসাপ্টা মন্তব্য করার নামে ভুল ভাল বলা যায় না @de। মূল লেখায় লিখেছি, এক্ষুণি ওপরে লিখলাম, অজস্রবার লিখেছি, আবারও লিখছি কোথাও কিচ্ছু মেয়েদের জন্য দেগে দেওয়া নেই, সাধারণভাবে মেয়েরা করেন বলে মেয়েদের কথাই বলা আছে, কিন্তু এই নিয়ম পুরুষের জন্যও একই ভাবে প্রয়োগ করা হতে পারে যদি তিনি ঘরের কাজ করেন। পাইয়ের কথার ভিত্তিতে না লিখে নিজে পড়ে দেখলে পারতেন, এমনকি সংযোজনটাতেও উল্লেখ করা আছে কি & কা-র উদাহরণ সমেত।
  • pi | 127.194.2.38 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪৭52177
  • আমার নামে উল্টোপাল্টা কথা না বসালেই বহাল হয়।

    ঘরের কোন চাপ নেই একথ আমি কোথায় বলেছি দেখিয়ে দেবে একটু ? কোট ক'রে ?

    কোন কাজ কাউকে না কাউকে ( মহিলা বা পুরুষ) ঘরে থেকেই করতে হবে, এরকম অপরিহার্যতা জুড়ে দেওয়া আর ঘরের কাজের কোন দরকারই নেই, এদুটোর মধ্যে যে আকাশ পাতাল তফাত আছে, সেটা সেরকম চেষ্টা না করলেও বোঝা যাওয়া উচিত।

    আর বারবার এটা বলে কোন লাভই নেই যে, শুধু ঘরে আটকে রাখার কথা হচ্ছে না। অপরিহার্য বললে কেউ একজন ঘরে আটকা পড়বেই। ভাবতে ভাল না লাগলেও, অপরিহার্য বলার সাথে সাথেই এটা ইম্প্লায়েড হয়ে যাচ্ছে। এটা খুব সাধারণ যুক্তি। তবে তোমার মডেলে অসুবিধে থাকলেই সেটা এক্সপ্রেস করা যাবে না, য বুঝেছি। তাই আর বোঝানোর চেষ্টা করবো। ইতি দিলাম।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:১৪52178
  • @পাই,

    বিরোধিমত দেওয়া যাবে না কে বলল ? (কোট করতে বলছি না ঃ-)। প্রায় সবাই দিচ্ছেন। কিন্তু বিরোধিমতে ভুল থাকলে সেটা ধরানো যাবে না এমনও তো নয় !
    "ঘরের চাপ নেই" ঠিক এই কথাটা না বল্লেও তুমি বার বারই বলেছো অপরিহার্য নয়। তা অপরিহার্য নয় যখন তখন 'দে' সেই ঘরের চাপ নেন কেন সেটাই জানতে চেয়েছিলাম।

    বকি কথা পরে লিখছি।
  • de | 69.185.236.52 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:২৮52179
  • তাহলে তো হয়েই গেলো - যখন অন্ততঃ ৫০% গৃহবর পাওয়ার একটা পসিবিলিটি তৈরী হবে তখন নাহয় টই খুলে লিখবেন, তখন আবার তক্কো করবো। একতরফা গৃহবধূ পাওয়ার সুবিধেজনক পরিস্থিতি থেকে তক্কো চালানো মুশকিল!
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৫৮52180
  • কিন্তু জেন্ডার স্টিরিওটাইপিংএর স্টিরিওটাইপ অভিযোগটা তো টিকলো না ! আর স্বীকারও করে ফেল্লেন এখনও ৫০% গৃহবর (এই শব্দে বোধহয় কারুর অপত্তি নেই !) পাওয়ার পরিস্থিতি এখনও নেই, মানে...নাহ, আর মানে টানে নিয়ে টানাটানি নয় !
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:০০52181
  • পাই, আমার প্রস্তাবটা ছিলো মায়েদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২২52182
  • স্বর্ণেন্দু লিখেছেন, দেখলাম গৃহশ্রম অপরিহার্য কিন্তু গৃহশ্রমিক নয়। গৃহশ্রম যদি অপরিহার্য হয় (পাই কি বলো ?) তাহলে সেই শ্রম দেবে কে ? মানে সোজাসুজি প্রশ্ন, ঘরের কাজ করবে কে ? গৃহকর্ম নাকি গৃহবধু ছড়া দিব্যি চলে যায়। কিন্তু কাজ তো এমনি এমনি হয়ে যাবে না, সেই প্রশ্নের উত্তর কেউ সরাসরি লিখবেন না, কিন্তু উত্তরটা জানা। কাজের লোক। মানে পরিচারিকাতন্ত্র উত্সাহিত হোক আপত্তি নেই, মেয়েরা / ছেলেরা নিজের ঘরের কাজ প্রফেশন্যালি করলেই আপত্তি। এইখানে এসে একটা প্রশ্ন রাখতে ইচ্ছে করছে, ঘরের কাজ ও বাইরের কাজের এই মোটা দাগের শ্রেণীবৈষম্যটা কতখানি যুক্তিগ্রাহ্য ? কিছু বাইরের কাজের নমুনা দিয়েছিলাম বোধহয় ডিসি-র পোস্টের উত্তরে, তাদের বেতনের হারের কথাও লিখেছিলাম (আপনারা কেউ বোধহয় সেইসব জগতের কথা জানেন না !) সেই কাজের থেকে ঘরের কাজ কতখানি পিছিয়ে ? পাই & দে যে এত আতঙ্কিত, বেতনক্রম চালু হলে মেয়েরা বাইরের কাজ না করে ঘরের কাজ করায় উতসাহিত হবে, ঘরের কাজ (মানে রান্নাবান্না-বাচ্চার দেখাশোনা-ঘরগোছানো-কাচাকাচি ইত্যাদি) যা অপরিহার্য তা সবরকম 'বাইরের কাজ'এর চেয়ে এতটা নিম্নশ্রেণীর বলে ভাবা হচ্ছে কেন ? নিজের ঘরের রান্না করলেই সেটা খারাপ আর অন্যের বাড়িতে রান্না করে দিয়ে এলে সেটাই খুব উন্নত, নিজের বাচ্চাকে পড়ালে সেটার কোনও মূল্য নেই সেটা হলে তুমি স্বনির্ভর হতে পারবে না (কারণ আর্থিক মূল্য নেই / পাবে না) অন্যের বাচ্চাকে পড়িয়ে এলে সেটা স্বনির্ভরতা হবে, এই স্টিরিটইপিংটা কেন ?

    কতগুলো কথা সবাই জানে কিন্তু সব সময় স্বীকার করে না। যেমন যাঁরা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের যদি ঘরের কিছুটা কাজ করতে হয়, তবে নিজেদের ওপর চাপ প্রচুর থাকে (যেটা দে বলে ফেলেছেন), অথবা একাধিক বাইরের লোকের ওপর ভরসা করতে হয় (পাই যেটাকে দিব্যি চলে যাওয়া বলেছেন)। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সব কাজ ঠিক ঠাক নাও হতে পারে। এগুলো সবই দুজনে চাকরী করা পরিবারের সমস্যা, বহু-আলোচিত, যা থেকে ঐ সংসার না কেরিয়ার এইসব দ্বন্দের জন্ম। এখন বাইরের কাজটা যদি একজনের 'কেরিয়ার' হয়, তা যদি সংসারে যথষ্ট সাশ্রয় করে তো সে সেই কাজটাই করবে। কিন্তু যদি তার কোনোটাই না হয়, তাবে ঠিক কি কারণে আমি শুধু আক্ষরিক অর্থে 'বাইরে' বেরোবর জন্য একজনকে পরিচারিকাতন্ত্রের ওপর ভরসা করতে উত্সাহিত করব, আর সেটাই প্রগতির চেহারা হবে এটাই আমার প্রশ্ন।

    নিয়মের বাস্তবায়ন নিয়ে অরিন্দম একেবারে বাস্তব জায়গা থেকে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে ব্যাপারটা একেবারে অসম্ভব নয়। খুব কম মানুষ এই ব্যব্স্থার সুবিধে পাবে বলে যারা দুঃখ করছেন, তাঁদের বলি যাবতীয় সরকারি সুবিধেই তো খুব কম লোক পায়, তাই বলে কি আর পে-কমিশন আটকে থাকে ?

    পাই, প্রথম থেকেই তুমি এই আলোচনাটা পার্সোন্যালি নিয়েছো, তাই কালেক্টিভ মতামতের উল্লেখ করাকে সরাসরি তোমাকে 'ঠোকা' বলে মনে হয়েছে। কিন্তু ঘটনাটা হল কিছু মতামতের উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে তোমার মতামতটাও পড়ে যায়। এটা ব্যক্তি তোমাকে 'ঠোকা' নয়। যাইহোক তোমাকে পার্সোন্যালিই বলছি, ঘরে থাকাটা 'আটকে থাকা' কিনা, সেটা বলে দেওয়াও তো একরকমের স্টিরিওটাইপিং। এই লেখা এটারই বিপক্ষে। আর সম্মান এক্টা খুব আব্স্ট্রাক্ট ধারণা, কিন্তু দিনের শেষে নিজের উপার্জন যে কোনও মানুষের অত্মবিশ্বাস, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায়। তাই আথিক স্বনির্ভরতার কোনো বিকল্প নেই। কেউ বাই চয়েস, বা পরিস্থিতির দরুণ ঘরে থাকলেই সে যেন এই স্বনির্ভরতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্যই এই ভাবনা।
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২৫52191
  • "স্বর্ণেন্দু লিখেছেন, দেখলাম গৃহশ্রম অপরিহার্য কিন্তু গৃহশ্রমিক নয়। গৃহশ্রম যদি অপরিহার্য হয় (পাই কি বলো ?) তাহলে সেই শ্রম দেবে কে ? মানে সোজাসুজি প্রশ্ন, ঘরের কাজ করবে কে ? গৃহকর্ম নাকি গৃহবধু ছড়া দিব্যি চলে যায়। কিন্তু কাজ তো এমনি এমনি হয়ে যাবে না, সেই প্রশ্নের উত্তর কেউ সরাসরি লিখবেন না, কিন্তু উত্তরটা জানা। কাজের লোক। "-----------

    আমি যা লিখেছি সেইটার মানে বোঝা কি এতটাই শক্ত? মনে হয় না। তবু আরো পরিষ্কার করে লিখি, আমার গাছে নিয়মিত জল দিতে হয়, সেই শ্রমটা দেওয়া অপরিহার্য, কিন্তু সেই পরিশ্রমটা এতটা নয় যে তার জন্য সেইটা একটা মানুষের ফুল টাইম অকুপেশন হতে হবে।
    একটা বাড়ির টোটাল কাজ ওই গাছে জল দেওয়ার তুলনায় অনেক বেশী বটে, কিন্তু তাও একজনের ফুল টাইম অকুপেশন হওয়াটা জাস্টিফাই করার পক্ষে যথেষ্ট নয় বলে মনে করি। আশা করি এইবারে বুঝতে অসুবিধে নেই।

    আর "ঘরের কাজ করবে কে ? ", এই সোজাসুজি প্রশ্নের সোজাসুজি উত্তর, নিজে বা নিজেরা।

    " গৃহকর্ম নাকি গৃহবধু ছড়া দিব্যি চলে যায়।" -- একদম যায়, যদি না গৃহকর্ম বলতে স্পেসিফিক্যালি বাচ্চা সামলানো বলতে চেয়ে থাকেন ( সেই বিষয়ে কিছু বলব না, কারণ নিজের এখনো হয়নি)। আপনার ঘরের কাজের লিস্ট এ ওই বাচ্চা সামলানো বাদে বাকি সবকটা, এবং তার সঙ্গে বাজার, বাসন মাজা, ঘর ও বাথরুম পরিষ্কার করা, আলো কেটে গেলে পালটানো ইত্যাদি আরো অনেকগুলোই নিজে করি। আমি অন্য একটা দেশে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে একা থাকি, ফ্ল্যাট ৫০০ বর্গ ফুট মত, স্থানীয় ভাষা একটু আস্তে না বললে শুনে বুঝতে পারি না, খুব বেসিক কিছু এবং তাও ভাঙ্গা ভাঙ্গার বেশী বলতে পারি না। আমার একটা রেগুলার টাইম কাজ আছে, এমনই কাজ যেটাকে নিজেরা ঠাট্টা করে ফুল টাইম বলি, কারণ তাতে বাড়ি ফেরার বা কাজ করার সময়-অসময় নেই, অথচ কেউ ওভারটাইমের পয়সা দেয় না। কাজের লোকের প্রশ্নই নেই। আমার অ-গৃহ বধূ ৭৫০ কিমি দুরের আর একটা দেশে ঠিক এমনভাবেই থাকে। তার গৃহবর ছাড়া ও আমার গৃহবধূ ছাড়া দিব্য ঘর-কন্না চলে। যখন এ ওর কাছে যাই তখন কাজ অর্ধেকের কম হয়ে যায়, কারণ ভাগাভাগিতে এমনিই অর্ধেক, আর একার জন্যে করার থেকে দুজনের জন্য করতে একই কাজ গায়ে লাগে কম।

    আর আমি বড় হয়েছি যৌথ পরিবারে, যেখানে ঠাকুমা-মা-কাকিমা সবাই গৃহবধূ, তাই গৃহবধূদের প্রতি কোন বিদ্বেষ আমার নেই। আর সেই বাড়িতেও কাজের লোক ছিল না, তাই উত্তর কলকাতার নিম্ন-মধ্যবিত্ত যৌথ পরিবারে গৃহবধূদের কতটা কাজ করতে হয় সে সম্পর্কে দিব্য ধারণা আছে।

    আশা করি আর কিছু বুঝতে অসুবিধে নেই।
  • সে | 198.155.168.109 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২৯52183
  • আরে বাবা, সবাই মিলে ঘরের কাজকর্ম করলেই তো হয় তির্যকদিদি।
  • সে | 198.155.168.109 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৩৪52184
  • আপনি কি ডেটা কালেক্ট করছেন, কতজন পক্ষে কতজন বিপক্ষে এই ব্যাপারে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন