এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারীদিবস ঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম ঃ কিছু সংযোজন

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৩২৭ বার পঠিত
  • ঘরকন্না ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প

    যে জীবন ফড়িং-এর দোয়েলের, মানুষের সাথে তার যে দেখা হয় না, সেকথা জানাই ছিল। কিন্তু যেসব জীবন মানুষের-মানুষীরই, তাদের আশেপাশেই থেকেও সেইসব জীবনের সাথেও যে মানুষের আসলে দেখা হয় না, তাও মাঝে মাঝে এমনভাবে জানতে পেরে অবাক হতে হয়।
    এই ক’দিন আগে আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রবন্ধ ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে দেবেন না কেন ?’ পড়ে নানাজনের কাছ থেকে পাওয়া মতামতগুলো পড়তে পড়তে কথাগুলো মনে হল। সেদিনটা দোলের ছুটির পরের দিন, কাগজের প্রিন্ট বেরোয় নি তাই লেখাটা শুধু আবাপ’র ওয়েব সংস্করণেই বেরিয়েছিল, যাঁরা পড়েছেন তাঁরা প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষিত, উচ্চবিত্তও। এবং মহিলারা বেশির ভাগই কর্মরতা। তাই এই লেখা, এই ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে’র ধারণা হয়তো সরাসরি তাঁদের জন্য নয়। যে মধ্যবিত্ত / নিম্ন মধ্যবিত্ত গৃহবধুদের কথা ভেবে এই লেখা, তাঁদের হয়ত এই লেখা পড়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু তাঁদের যে আমরা একেবারেই চিনি না, এমনও তো নয় ! কিন্তু দেখা গেল এই লেখা যাঁরা পড়েছেন সেই পাঠকগোষ্ঠীর সিংহ ভাগ মহিলা ও কিছু পুরুষ এই ব্যাপারটায় নানাভাবে আপত্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। লেখকের কাছে প্রতিটি মতামতই মূল্যবান, বিরুদ্ধ মতামত বেশীই মূল্যবান কারণ তা প্রায় টর্চের আলোর মত যেকোন ধারণার অন্ধকার কোণায় আলো ফেলে দেখিয়ে দেয় তার ভুল ভ্রান্তি। উল্টোদিকে বিরুদ্ধ মত যারা পোষণ করেন, লেখকেরও দায় থাকে তাঁদের বোঝার ভুল থাকলে তা ধরিয়ে দেওয়া।
    তাই প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো গৃহশ্রমের / গৃহকর্মের মূল্যায়নই এই লেখার মূল কথা। গৃহকর্ম বলাই বেশী ভালো কারণ ততটা শ্রমসাধ্য নয় কিন্তু অনেকটা যত্ন ও ভালোবাসা (এবং আত্মত্যাগ) মেশানো যে সব ছোট ছোট কাজ একটা ঘর কে সংসার করে তোলে আর গৃহবধু কে পরিচারিকার থেকে আলাদা করে সেগুলোর কথাও এখানে ভাবা হয়েছে। সেই গৃহকর্ম যাতে একটা সম্মানজনক পেশায় পরিণত হতে পারে এবং গৃহবধুও নিজেকে বঞ্চিত না ভাবেন বা ‘আমি তো কিছু করি না’ জাতীয় হীনম্মন্যতায় না ভোগেন, সেই জন্য তাঁর একটা নিয়মিত বেতনের কথা ভাবা, যেটা তাঁর স্বামীর বেতনের একটা অংশ (ধরুন ২০%)হিসেবে নিয়মমাফিক সরাসরি তাঁর কাছে আসবে (যেভাবে ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে আসে)। স্বামী এখানে এমপ্লয়ার নন, দাতা তো ননই, তাঁর রাজী হওয়া না হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেভাবে ট্যাক্স, পি এফ এর টাকা কাটা যায় সেই ভাবেই নিয়মমাফিক তাঁর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন কাটা হবে (অবশ্যই যদি স্ত্রী চাকরী না করেন)। সেই বেতন ঘরের কাজের দরুণ মহিলাটির নিজস্ব উপার্জন, আর এই উপার্জনই তাঁকে স্বনির্ভর করে তুলবে। নিজের ছোটখাটো চাহিদার জন্য স্বামীর কাছে হাত পাততে হবে না, কৈফিয়ৎ দিতেও হবে না। একজন গৃহবধু সসম্মানে বলতে পারবেন ‘আমি ঘরের কাজ করি’।
    এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অজস্র যুক্তি ও আপত্তির মধ্যে প্রথমই হল, গৃহবধুর আর আলাদা করে কাজ কি ? ঘরের সব কাজই তো পরিচারিকা করেন, বাচ্চাকে পড়ান টিউটর আর স্কুলে নিয়ে যায় পুলকার বা স্কুলবাস। তাছাড়াও এইসব মহিলারা স্বামীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতখরচা পান, তাতেই তাদের শখ-আহ্লাদ দিব্য মিটে যায়। আর খাওয়া-পরা সমেত সংসারের বড় খরচ তো পুরুষটির(স্বামী)উপার্জন থেকেই হয়, এর পর আবার মাইনে কিসের ! এই কথাগুলো পড়েই মনে হয়েছিল আমরা কবে খিড়কি থেকে সিংহদুয়ারের বাইরের পৃথিবীটা চিনতে শিখব ! অথচ আমরা যে একেবারেই সংবেদনশীল নই তাও নয়, গায়ক অভিজিৎ যেদিন রাস্তায় থাকা মানুষদের গালাগাল দিয়েছিলেন, সেদিন আমরা তাঁকে ছেড়ে কথা বলিনি। বাড়ির পরিচারিকাদের এমনকি যৌনকর্মীদেরও শ্রমিকের সম্মান দেওয়া নিয়ে আমরা ভাবি। তাহলে গৃহবধুদের ব্যাপারে আমরা এত উদাসীন কেন !
    আসলে আমরা অনেকেই নিজেদের চাকরী করা জীবনটা দেখতে পাই, পাশের বাড়ির / ফ্ল্যাটের গৃহবধুর আরামের জীবনটা দেখতে পাই আর দেখতে পাই নীচের তলার বাসিন্দা আমার ‘কাজের মাসি’র কঠিন জীবনটা। এর বাইরে মধ্যবিত্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন উপার্জন স্তরের বাসিন্দা যে গৃহবধুরা তাঁদের জীবনটা আমরা দেখতেই পাই না। এই শহর কলকাতায় আমাদের আশেপাশেই তাঁরা থাকেন, কোনো একটা সরকারী ইস্কুলের গেটের কাছে ছুটির সময়টা একটু দাঁড়াবেন, বাচ্চাদের নিতে আসা মায়েদের কথায় কান দেবেন, তাঁদের চেহারা-সাজগোজের দিকে নজর দেবেন, বুঝতে পারবেন গৃহবধু কাকে বলে। একপর্ব রান্নাবান্না সেরে বরকে কাজে পাঠিয়ে বাচ্চাকে নিতে এসেছেন, গিয়ে বাকি রান্নাটা সারতে হবে, ফেরার পথে হয়ত এটা ওটা বাজারও করে নিতে হবে। ঠিকে কাজের লোক একটা এঁদেরও আছে, বাসন মেজে ঘর মুছে কি সপ্তাহে একদিন কিছু কেচে দিয়ে যায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। রোজকার কাচাকাচি, ঘরগোছানো, বাচ্চাকে স্নান করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, জামা কাপড় ইস্ত্রী করা, অতিথি আপ্যায়ন, অসুখে সেবা, এই সব কাজ এঁরা নিজের হাতেই করেন। এই ডিউটি নিয়ে কিছু বলার নেই, এঁদেরও নেই, আমারও নেই কিন্তু দিনের শেষে এঁরা কেন নিজেদের ‘স্বনির্ভর’ মনে করবেন না, উপার্জনের প্রশ্নে মাথা নীচু করে থাকবেন, সেই প্রশ্ন আমাকে ভাবায়। কারণ এটাই বাস্তব, পয়লা বৈশাখে নিজের মাকে একটা শাড়ী দিতে গেলে এই মহিলাদের বরের কাছে হাত পাততে হয়, আর হাত পাতলেই সব সময় হাত ভরে এমনও নয়। এই জীবনটা ‘আমাদের’ নয়, কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের ওই প্রান্তে যে বিরাট সংখ্যক মহিলা বাস করেন যাদের স্বামীরা ছোটখাটো চাকরী বা ব্যবসা করেন, তাঁদের জীবনটা এইরকমই।
    কিন্তু নিয়ম যদি করতেই হয় তাহলে তা সকলের জন্যই করতে হবে আর তাতে আখেরে কিছুটা যাতে সুরাহা হয় সেটাই দেখতে হবে। স্বামীর মাইনের / উপার্জনের কিছু নির্ধারিত অংশ যদি স্ত্রী-র হাতে আসে আর মহিলাটি যদি তার থেকেই পরিচারিকার মাইনে দেন তাহলে একটা কিছুটা সুরাহা হতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে যিনি বেশির ভাগ কাজ নিজের হাতে করেন আর যাঁর সব কাজ পরিচারিকা করে দেয় তাঁদের মধ্যে উপার্জনগত ভাবে একটা তফাৎ থাকবে। স্বামীকে আর আলাদা ভাবে বৌকে হাত-খরচ দিতে হবে না, আর স্ত্রীও নিজের এই উপার্জনের কতটা সংসারে খরচ করবেন, কতটা নিজের হাতে রাখবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন। কিন্তু তাঁকে স্ব-নির্ভর বা উপার্জনক্ষম নন একথা আর বলা যাবে না কারণ মাসের শেষে তাঁর হাতেও নিয়ম করেই কিছু টাকা আসছে আর সেই টাকাটা তাঁর স্বামী দিচ্ছেন না। এই কথাটিই এই ব্যবস্থার মূল কথা আর এই কথাটা হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে তাই আবার লিখতে হল।
    কিন্তু যাঁরা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মতামত দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বুঝতেই পারছেন না, বাড়ির কাজ যা অনেকটা নিজের জন্যও করা, যা ভালবেসে করা তার জন্য মাইনে কেন ! পুরুষেরা কেউ কেউ আরও এক পা এগিয়ে বলেছেন যে মাইনে থেকে ভাগ দিতে হলে তো কাজের লোক রাখলেই হয়, বিয়ে করার দরকার কিসের ! আর মেয়েরা অনেকেই একটা কথা বলেছেন যে সংসারের পেছনে একজন মহিলার যা অবদান তা কি টাকা দিয়ে মাপা যায় ! অর্থাৎ নিজের সংসারে কাজ করে টাকা নিতে তাঁদের ‘ইগো’তে লাগছে। আবারও বুঝিয়ে বলি, দেখুন, একটা রাস্তায় যানজটের জন্য দেরী হলে সেই দেরীর দরুণ ক্ষতিটুকুও অর্থমূল্যে মাপা যায় কারণ তা দেশের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। ওপরে যেসব কাজের তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা সমেত একটা পূর্নাঙ্গ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে গৃহবধুরা যে তাকে তাকে সুষ্ঠু ভাবে চালান, সেটা কাজের মানুষটির(পড়ুন পুরুষটির)উৎপাদনশীলতাকে ও কর্মক্ষমতাকে নিশ্চই প্রভাবিত করে কিন্তু সেই বিরাট পরিমাণের শ্রম আমাদের অর্থনীতিতে উহ্যই থেকে যায় যুগের পর যুগ তার কোন ‘মূল্যায়ন’ হয় না, এটা কতটা সঙ্গত সেটা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। সংসারের ‘সমস্ত’ কাজের জন্য কাজের লোক রাখা এমনিতেই সম্ভব নয়, যতটা রাখা সম্ভব তার জন্যও খরচের অঙ্ক বিরাট। কিন্তু সেই খরচ দিয়েও একজন গৃহবধুর মত পরিষেবা পাওয়া যায় না, এইটা ছেলেদের ও মেয়েদের সবাইকেই বুঝতে হবে। সেভাবে দেখতে গেলে কোনো পেশাতেই পেশাগত দক্ষতা, যত্ন ও ভালোবাসা টাকা দিয়ে মাপা যায় না; যে যত্ন নিয়ে একজন আদর্শ ডাক্তার একটি শিশুর জন্ম ঘটান বা যে ভালোবাসা নিয়ে একজন শিক্ষক কঠিন বিষয়কে সহজ করে শেখান তাও কি টাকায় মাপা যায় ? তবু সেই সব পেশার ক্ষেত্রেই আমরা আর্থিক মূল্যায়নকে মেনে নিয়েছি কারণ এ ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। তাই গৃহকর্মকে একটা পেশা হিসেবে সম্মান দিলে তার মূল্যায়নের কথাও ভাবতে হবে।
    কিন্তু হয়নি এযাবৎ। আর সেই জন্যই কেউ গৃহকর্মকে পেশা হিসেবে ভাবতে পারেন না আর সেই ভাবেই সংসারের ছোটবড় কাজগুলো অকিঞ্চিৎকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সে কাজগুলো না করলে যে চলবে এমনও নয়। খেতে আপনাকে হবেই, গৃহবধু রান্না না করলে রান্নার লোক রাখা, না হলে হোম ডেলিভারী। রান্নার লোকের ওপর তদারকি না করলে রান্না খারাপ, তেল বেশি, পরপর ক’দিন খারাপ / একঘেয়ে রান্না খেলে একদিন বাইরের খাওয়া চাইই। তার মানে রান্না-খাওয়া ব্যাপারটা একেবারে এলেবেলে নয়, কিন্তু যখন তা বাড়ির বৌটি করছেন তখন আমরা সেটা আলাদা করে ভাবছি না। সেই রকমই অন্যন্য কাজও। কাউকে না কাউকে সেগুলো যত্ন করে করতেই হয়, না হলে পরিবারের ধারণা দাঁড়ায় না। তাই বিয়ে করাটা নারী-পুরুষ কারুর কাছেই সমাজসেবা নয়, নারীর যেমন নিরাপত্তা চাই, পুরুষেরও দিনের শেষে নিজের সংসার নিজের ভালোমন্দ দেখার মানুষ দরকার।
    তবে এখানে ঘরের কাজ মূলতঃ মেয়েরা করেন এবং পুরুষ বাইরেই কাজ করেন বলেই বার বার ‘গৃহবধু’ বলা হয়েছে, তবে আসলে এটা গৃহশ্রমের মূল্যায়নের গল্প। তাই যে নারী বাইরে কাজ করতে চান করুন, যে পুরুষ ঘরে কাজ করতে চান করুন (সেই ‘কি’ আর ‘কা’ এর গল্প), বেতনের নিয়মটা আলাদা কিছু হবে না কারুর জন্য। দুজনেই বাইরে কাজ করলে ঘরের কাজ তাঁরা কিভাবে করবেন সেটা নিজেরাই ঠিক করবেন কারণ সে ক্ষেত্রে মহিলাটিরও নিজের মত জানানোর যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। কিন্তু ঘরের তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলো সে মেয়েরা করুন বা ছেলেরা করুন, কাজ হিসেবে যে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটাই মনে করানোর জন্য এবং তাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য এই নিয়ম।
    গৃহশ্রমের এইভাবে মূল্যায়নকে যারা সরাসরি স্বীকার বা অস্বীকার করতে পারেন না দেখা গেছে তারা এর বাস্তবায়ন নিয়ে ভয়ানক চিন্তিত। যেমন গৃহবধু যদি ‘মাইনে’ পান তাহলে ইনক্রিমেন্ট, পি এফ, গ্রাচুইটি, ইত্যাদি কি ভাবে হবে, সি-এল, ই-এল এর সুযোগ থাকবে কিনা, আরো ভালো ‘মাইনে’ পেলে গৃহবধুর চাকরী বদলানোর সুযোগ থাকবে কিনা ইত্যাদি। বোঝাই যাচ্ছে এর অনেক কিছুই স্রেফ বিরোধিতা করার জন্য বলা, কিন্তু লেখকের দায় থাকে সব প্রশ্ন নিয়েই ভাবার। তাই এই ধরনের সমস্যারও কিছু সমাধানের কথা ভাবতে হয়। স্ত্রীর বেতন যেহেতু স্বামীর বেতনের একটা অংশ হিসেবে আসবে, সে ক্ষেত্রে স্বামীর আয় যেমন যেমন বাড়বে, স্ত্রীরও সেই অনুপাতেই বাড়বে, পেনশনও পাবেন সেই ভাবেই। কিন্তু দেশের সমস্ত চাকরীর শর্ত যেমন একরকম নয়, সেইরকম এই চাকরী থেকে ‘ছাঁটাই’ এর প্রশ্ন নেই কারণ বর এর এমপ্লয়ার নন, মহিলাই বা চাকরী ‘বদলানো’-র কথা ভাবতে পারবেন কি করে, নিজের স্বামী সন্তান ছেড়ে অন্য সংসারে অন্য স্বামী-সন্তানের মাঝখানে ফিট করে যাওয়া কি বাস্তব সম্মত কথা হল ! যাঁরা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা সম্ভবতঃ এত কিছু না ভেবেই বলেছেন। কিন্তু এর পর থেকে এইরকম প্রশ্ন করার আগে আশা করব একটু ভেবে করবেন। আর সি-এল-ই-এল ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলব আপনি যেমন অফিসে প্রয়োজনমত ছুটি নেন, গৃহবধুও দরকার মত নেবেন, তখন ঘরের কাজ কিভাবে হবে তা তিনিই ঠিক করবেন। তবে এই সব অনেক প্রশ্নই অবান্তর কারণ গৃহবধু পরিচারিকা নন, নিজের দায়িত্বেই তিনি সংসারের নানাদিক দেখে থাকেন। বিনা পারিশ্রমিকেই। শুধু পারিশ্রমিক নিলেই তাঁকে ভাড়া করার কাজের লোকের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। গৃহবধুকে তাঁর জায়গায় রেখে তাঁর পরিষেবাকে সম্মান জানাবার জন্যই এই ভাবনা।
    এই নিয়ম চালু হতে গেলে প্রাথমিকভাবে হয়তো অনেক মেয়েরা নিজেরাই এই পারিশ্রমিক নিয়ে চাইবেন না। কিছুটা চক্ষুলজ্জা (নিজের সংসারে কাজ করে পয়সা নেবো ! ছিঃ, লোকে কি বলবে ), কিছুটা ইগোয় লাগা (আমার দায়িত্ব কি টাকায় মাপা যায় !) যে কথা আগে বললাম। কিন্তু ‘সাফারার’ এর মতামত নিয়ে নিয়ম চালু করতে গেলে হয়তো সতীদাহ-বিধবা বিবাহ-বহুবিবাহ কিছুই রদ করা যেত না। কিন্তু যখনি একটা নিয়ম চালু হয়, কিছু মানুষ তার সুবিধে পেতে শুরু করেন, তখনই আস্তে আস্তে সেটা অর্থবহ হয়ে ওঠে। তার বাস্তবায়নের নানা সুবিধে অসুবিধেও তখনই সামনে আসে আর তার সংশোধনেরও রাস্তা খোলা থাকে। কিন্তু প্রস্তাবটা গোড়ায় বিনাশ করে দিলে এ সব কিছুই আর হয়ে ওঠে না।
    গৃহশ্রমের মূল্যায়নের এই মডেল একটি ধারণা মাত্র। মানে এটা নিয়েও যে ভাবা দরকার আর এভাবেও যে ভাবা যেতে পারে, সেইটা জানানো। এভাবেই যে হতে হবে তা কোথাও দাবী করা হয়নি কিন্তু কিভাবে হতে পারে সেইটা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কিন্তু মজার কথা হল, যাঁরা বিরোধিতা করেছেন তাঁরা কেউ কিন্তু কোনও সমাধান দেননি, শুধু নানারকমের প্রশ্ন তুলে ঠাট্টা-তামাশা করেই কর্তব্য সেরেছেন। তবু এই অবকাশেই এই বিষয় নিয়ে দু-চারটে কথা আবারও লেখার সুযোগ হল, এটাই বা কম কি !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৩২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • আরেকটি সমাধান | 178.26.197.46 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২০52223
  • উঁহু, কম আয় বেশি আয় গৃহের শ্রম ইত্যাদি কূট কচালিতে ঢোকার দরকারই নেই তো।
    এমনকি সেপারেট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও বাধ্যতামূলক নয়।

    শুধুমাত্র আইন অনুযায়ী, এটা স্বামী স্ত্রীকে বিয়ের মন্ত্র পড়ার সময় জানানো হোক যে যতদিন বিবাহিত অবস্থায় একসঙ্গে থাকবে, ততদিন মোট আয়ের উপরে তোমাদের দুজনের অধিকার ৫০-৫০।(বিয়ের সময় অনেক হাবিজাবি মন্ত্র পড়ানো হয় যেগুলো একটাও কাজের না।) ব্যাস। এবারে তারা নিজেরা ঠিক করে নেবে কে কি ভাবে কোন খাতে কতটা খরচ করবে। যেমন, একজন স্পাউসের বাবা মার পেন্সন আছে, তাদের তেমন সাপোর্টের দরকার নেই। কিন্তু অন্যজনের বাবা মা পুরোপুরি নির্ভরশীল। সেই অনুযায়ী বোঝাপড়া হবে।

    আসল ব্যপার হল, দুই বিবাহিত পার্টনারের সমান অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দরকার, সব ব্যপারেই সমান অধিকার দরকার। মানসিকভাবে দুই স্পাউস এইটা মেনে নিতে পারলেই তো মিটে যায় ঝামেলা। কে কি কাজ করবে সেগুলো যে যার সংসারের দরকারমতন নিজেরা বোঝাপড়া করে নেবে।

    আর গৃহকাজকে সম্মান করতে শেখাটা আপনি হয় যখন সেইসব গৃহকাজ নিজেদের ঘাড়ে এসে পড়ে। বাচ্চা বয়স থেকে জেন্ডার নির্বিশেষে বাড়ির কাজের কিছু কিছু দায়িত্ব দিলে অনেকটা কাজ হয়।

    এইসব সমাধান অবশ্যি কোনোটাই অরিজিনাল নয়। সবই আম্রিগা থেকে ধার করা। হেঁহেঁ।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৬52224
  • এইবারে একখান কতা বলি। বিয়ে নামক ব্যাপারটিতে এইসব প্যাঁচ যত বাড়াবেন বিয়ে থেকে প্রেম তত উড়ে যাবে।
  • Ekak | 53.224.129.50 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩১52225
  • ওপরের পোস্ট টা কেমন "নহিলে খরচ বাড়ে " টাইপ হলো না ? :) বিয়ের জন্যে প্রেম প্রয়োজনীয় নয় । মানে থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে । নট উইদিন প্যাকেজ ।
  • hu | 140.160.143.221 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৩52226
  • এই ৫০-৫০ সমাধানটাই এখনও পর্যন্ত একমাত্র ঠিকঠাক লাগলো। এটা কি রিমিদি? হাই-ফাইভ!
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৬52227
  • একটা প্রবলেম আছে। কিন্তু এখনই বলবোনা।
  • dc | 132.174.119.59 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৮52228
  • "শুধুমাত্র আইন অনুযায়ী, এটা স্বামী স্ত্রীকে বিয়ের মন্ত্র পড়ার সময় জানানো হোক যে যতদিন বিবাহিত অবস্থায় একসঙ্গে থাকবে, ততদিন মোট আয়ের উপরে তোমাদের দুজনের অধিকার ৫০-৫০"

    এটা তো এখনই আছে না? মানে সংসারের মোট যা ইনকাম (একজন করুক বা দুজনে মিলে) তার ৫০-৫০ ভাগীদার দুজনেই, কারন সংসারটা যৌথভাবে দুজনেরই।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৪52231
  • সেক্ষেত্রে শুধু একটা ছোট্টো চেন্জ করলেই সব সমস্যার সমাধানঃ

    বিয়ের পরে স্বামি ও স্ত্রীর জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রাখতে হবে। সেইখানেই দুজনের সব রেগুলার ইনকাম ডিপোজিট হবে ও খরচ হবে।
  • দ্রি | 159.202.47.181 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৪52230
  • আরো একটা সলিউশান বলি?

    দুটো ফ্যামিলি-উইথ-গৃহবধু যারা মোটামুটি কাছাকাছি থাকেন, তারা পেয়ার আপ করুন।

    ধরুন ফ্যামিলি এ, আর ফ্যামিলি বি। ফ্যামিলি এর গৃহবধু নিজের বাড়ির গৃহকর্ম না করে ফ্যামিলি বির গৃহকর্ম করুন, এবং তার বদলে পারিশ্রমিক নিন, ধরুন মাসে চল্লিশ হাজার টাকা। আর ফ্যামিলি বির গৃহবধু ফ্যামিলি এর গৃহকর্ম করেও পারিশ্রমিক নিন মাসে চল্লিশ হাজার টাকা।

    ব্যাস শোধবোধ। সবাই তাঁর কাজের পারিশ্রমিক পেলেন। মনও অত খারাপ হল না।

    শুধু এই ক্ষেত্রে গৃহবধুদের আয়ে ট্যাক্স বসালে চাপ। পুরো মডেল ফেল করবে।
  • Ekak | 53.224.129.50 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৪52229
  • ওরকম মৌখিক ৫০-৫০ তো সবাই সর্বর্ত্র বলে আজকাল বিয়ের সময় । মানে একেবারে সেই গ্রাম্য "ভাত কাপড়ের ভার নিলুম " বলা জনতা বাদদিয়ে । তা দিয়ে আদৌ ৫০-৫০ হয় নাকি ?

    আর দ্বিতীয়তঃ : ৫০ পার্সেন্ট ই বা ক্যানো যদি সত্যিই শ্রমের মূল্য হয় । হতেই পারে স্বামী ভদ্রলোক একজন উদাস ধুপকাঠি ওয়ালা বা আঁতেল আকাদেমি । তাই বলে তাঁর বাড়ির কাজের পেছনে , পঁচিশ কাপ চা করে দেওয়া থেকে শুরু করে জামার বোতাম সব মিলিয়ে স্ত্রী এর শ্রম স্বামীর তিনগুন বেশি দেখতে গেলে । সেক্ষেত্রে বেশি টাকা স্ত্রী কে নয় ক্যানো ? মানে নেহাতই যদি শ্রমের মূল্য হিসেব করেন ।

    নইলে , হিসেব ফিসেব কাটিয়ে দিলে , এই ট্যাহা তোমার আমার , সে ঠিকই আছে । মুখে মুখেই ।
  • Ekak | 53.224.129.50 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৭52232
  • পরের বাড়ি গৃহকর্ম করা মানে তো চাগ্রি :))) সে তো দ আর দে কবে থেকে বলছেন , পবন্ধ লেখক এর পছন্দ হচ্ছে না ।
  • সে | 198.155.168.109 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৯52233
  • দুদিনে উড়ে যাবে সব টাকা। বেহিসাবী খরচ হবে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট হলে। মাস ফুরোনোর আগেই চুলোচুলি হবে।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫১52234
  • যাহ, দ্রিদা ও দেখছি আমারই মতন বোঝেইননি , নিজের ঘরের কাজ হল গে নিজের ঘরের কাজ। আর কারো দ্বারা অমনটি হবে না কো ! আর নিজের ঘরের কাজ নিজে করা মাস্ট, ঐ যাকে বলে অপরিহার্য !
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৯52235
  • দ্রির সলিউশনের আরো একটা মোর ডেলিগেন্ট অ্যাপ্রোচঃ

    এ ও বির হাউসোয়াইফ/হাউস-হাসবেন্ড নিজের নিজের বাড়িতেই কাজ করলেন ("নিজের ঘরের কাজ হল গে নিজের ঘরের কাজ"), কিন্তু একে অন্যের বাড়ি থেকে মাইনে পেলেন ঃ))
  • kc | 198.71.212.136 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৬52236
  • ধুস, সব সুখী জীবনের জোর করে বানানো সমস্যা, আর ততোধিক জোর করে বানানো ঢপের সলিউশন। যেখানে আজও ঠিক করে ম্যারিটাল রেপের সলিউশন এলনা,( যেটা মানবিকতার মেইন ডেফিনেশনকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে, ) সেখানে এসব বক্কাবাজি নেহাৎ পাতা ভরানো।
  • দ্রি | 159.202.47.181 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৭52237
  • এভাবে দেশের জিডিপিও বাড়বে।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৮52238
  • কেসি, সেইজন্যেই তো অনেক আগেই লিখেছিলাম - কোনটা প্রবলেম আর কোনটা সিম্পটম?
  • Ekak | 53.224.129.50 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৯52239
  • যদ্দিন রেপ শব্দের সঙ্গে ম্যারিটাল জোড়া হবে তদ্দিন সমাধান ও আসবে না । রেপ মানে রেপ । তার আবার ম্যারিটাল কি । কবে শুনব রেভলিউশনারী রেপ , রেপ এস ফর্ম অফ প্রোটেস্ট এসব ও শব্দ হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে ।
  • | 24.97.56.45 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১০52240
  • যাহ দ্রি বোঝেন নি বোঝেন নিইই :-))
  • aka | 80.194.3.213 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১১52241
  • যাহ টুকলি, অন্তত ৫০%ক্রেডিট আমার প্রাপ্য।

    ব্যপারটা হল বিবাহিত থাকার সময়ে যা কিছু স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি প্রাপ্তি হবে তাতে দুজনের ইকোয়াল ভাগ থাকবে সে যৌথ অ্যাকাউন্টেই থাক বা নিজস্ব অ্যাকাউন্টেই থাক বিয়ের মন্ত্র বা সই হওয়ার পরে যত টাকা জমবে বিয়ে ভাঙ্গলে তার ওপর দুজনের ৫০ শতাঙ্গশ অধিকার।

    বিয়ে চলাকালীন কিকরে খরচ চালাবেন হাতখরচা চালাবেন তার হিসেব নিকেশ করে নিন। তাতেও আইন হলে খুব মুশকিল, ভারতে অত আদালতই নেই।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১২52242
  • হুম তা হবে। এখন গৃহকর্মের অউট্পুটের প্রায় পুরোটাই হিসাবের বাইরে।
  • Ekak | 53.224.129.50 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৫52243
  • এ তো ডিভোর্স এর আইন :) এইসব "ভাগ " গুলো রিয়ালাইস হচ্ছে তখন ই যখন কিনা সম্পর্ক ভাংছে । তার আগে ওটা জাস্ট সো কল্ড ফিফটি পার্সেন্ট । রিয়ালায়সেব্ল রাইটস নয় । এখানে তো চলন্ত বিয়ে নিয়ে কথা হচ্ছে ।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৮52244
  • চলন্ত বিয়ে? ঃ))
    এনিওয়ে, সেক্ষেত্রে তো রোজ রোজ হিসাব নিতে হবে কোর্টকে। ধরাই হয়েছে যে এইগুলো ঠিক ঠাক না হলে তখন ডিভোর্সের দিকে এগোবে।
  • dc | 132.174.119.59 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২৭52245
  • "ফ্যামিলি এর গৃহবধু নিজের বাড়ির গৃহকর্ম না করে ফ্যামিলি বির গৃহকর্ম করুন। আর ফ্যামিলি বির গৃহবধু ফ্যামিলি এর গৃহকর্ম "

    কিন্তু তাহলে তো এ ফ্যামিলির গৃহবধূকে বি ফ্যামিলির গৃহে গিয়ে থাকতে হবে আর ভাইসি ভার্সা। সেটা একটু ইসে মতো হয়ে যাবে না?
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২৮52247
  • হ্যাঁ গৃহ একটা আর বধু আরেকটা।
  • dc | 132.174.119.59 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২৮52246
  • মানে আমার কোন আপত্তি নেই, ব্যপারটা বললাম এই আর কি।
  • aka | 208.91.7.14 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৪২52248
  • আমার গৃহের "বধু" একজন "গৃহবধু"
    অন্য গৃহের "গৃহবধু" আবার আমার বধু"
    কিন্তু সেই গৃহের "বধু" আমার "গৃহবধু"

    বঙ্গের শত বধুর উপাখ্যান। (বাকি কবিতাটা একক লিখবে)
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৫৭52206
  • এইবারে আমিও লিখবোঃ
    "ঘরের যে সমস্ত কাজ গৃহবধূরা করেন প্রত্যেকটা কাজই চাকুরীবধূরাও করে থাকেন। বরং অনেক বেশী করেই করেন।"
    এইটা কোত্থেকে জানা গেল?

    "আর শুধু "সংসারে সাশ্রয়" করার জন্য সবাই বাইরে কাজ করতে বেরোয় না - কাজটাই কারো কারো কাছে ইম্পরট্যান্ট হয় -"
    এইটা পড়ে শোলের ঠাকুরের কথা মনে পড়ে গেলো ঃ))

    "রান্নাবান্না বাসন ধোয়া এইসব পারেন না, তাই বিয়ে করেছেন।"
    এবাবা, এইসব কাজের জন্য বিয়ে না করে অন্য অপসানগুলো ট্রাই করলেই তো হতো। অনেক সস্তা অপশান।
  • sosen | 177.96.14.251 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:০৩52249
  • বরের এমপ্লয়ারের কাছ থেকে টাকা আসবে ব্যাপারটা বুঝ্লাম না। মানে কিভাবে ইম্প্লিমেন্ট হবে বুঝলাম না। যে সব বরেরা স্যালারি পান না? স্বনিয়োজিত? ট্যাক্স দেওয়ার নিম্নসীমায় রোজগার করেন?

    ৫০-৫০ ব্যাপারটা চিরকালই অকথিত আছে, জানবেন পুরোটাই দাতার উপর নির্ভরশীল। এসবের চাইতে গৃহশ্রম কমিয়ে ফেলার উপায়(মানুষ দিয়ে নয়, যন্ত্র দিয়ে) সহজলভ্য হোক, মায়া ঢেলে কাপড় কাচিয়ে ও বাসন মাজিয়ে মেয়ে ছেলে কারোর জীবন আরো ভারাক্রান্ত করে লাভ কি?
    আমি আবার ঐরকম ৬-৯টায় কাজ করা অনেক মহিলাকেই চিনি, টেম্পারামেন্টে তাঁরা গৃহবধূই, বাড়ি ফিরে রান্নাও করেন, অন্তত ভাতটা বা রুটিটা, বাসনমাজার লোক আছে, ছেলেমেয়ে ইস্কুল থেকে ফিরে চাবি দিয়ে দরজা খুলে সকালে পাট পাট করে রেখে যাওয়া খাবার খেয়ে নেয়, সেইসবও ঐ গৃহ-চাকুরিবধূই সকালে গুছিয়ে রেখে যান, হয়তো চারটেয় ওঠেন। বেসরকারী চাকরি করলে কখনো হয়তো সন্তানের ছোটো থাকার সময়ে ব্রেক ন্যান, সরকারী করলে ন্যান না। কমপ্লেন করেন, শরীর অসুস্থ হয়, স্বামী ৫০-৫০ হেল্প সর্বদা করেন না, কিন্তু সব মিলিয়ে সংসারের রাশ অনেকটা হাতে থাকে, অনেক কর্তৃত্ব বাড়ে, স্বামীর কিছু হলে অতলে তলিয়ে যাবেন এই অবস্থা হয়না। নিজের পৃথিবী বাড়ে বলে খবরাখবর বেশি রাখেন, স্বাস্থ্যের য্ত্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন, এইসব প্রয়োজন। ঘরের চার দেওয়াল বড্ড কম পরিসর। সব গৃহবধূদের কিছু না কিছু অর্থকরী কাজে, যার মাইনে, সময়, কিচ্ছু ঘরের অন্য মানুষদের সঙ্গে জড়িত নয় সেরকম কাজে উদ্বুদ্ধ করাই ভালো, পিছন পানে টানা নয়। তারপর যদি কেউ বাড়িতে শুধু গৃহশ্রমে নিয়োজিত থাকতে চান, সেটি একটি পার্টনারশিপের চয়েস, ঐটুকু জায়গা পারস্পরিক থাকাও দরকার।
    এইসব আর কি।
  • Robu | 11.39.36.78 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:১৭52250
  • ক।
  • আইন চাই | 178.26.197.46 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:১৯52251
  • উঁহু, ভারতে, যতদূর জানি, খাওয়াপরা দেবার আইন আছে, কিন্তু ৫০-৫০ অধিকারের আইন নেই।

    গৃহশ্রম আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দুটো রিলেটেড হলেও এক সমস্যা নয়। সমাধানও এক নয়। গৃহশ্রম কমালেই কি আর গৃহবধূ কিম্বা গৃহ-চাকুরিবধূদের সম্মান কিম্বা সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা বাড়বে? তির্যকের লেখায় তো মনে হয় সমস্যাটা এখানেই যে একটি পরিবারে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে শ্রমের সমান বন্টন নেই, সমান অর্থনৈতিক অধিকার নেই, সমান সম্মান নেই, সমান সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা নেই।

    ৫০-৫০ ব্যপারটা হল অধিকারের।
    আইন পাশে না থাকলে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন