এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ভাতের থালায় লুকিয়ে আছে সাদা শয়তান

    Gautam Mistri লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৮ মে ২০১৬ | ২১৪৬১ বার পঠিত
  • ইংরেজী ভাষায় একটা প্রবচন আছে – “The whiter the bread, the sooner you’re dead”, অর্থাৎ রুটি (প্রকারান্তরে ভাত) যত সাদা হবে আপনি তত তাড়াতাড়ি মারা যাবেন। ভাত সাদা হবে নাতো কি লাল হবে? ভ্রূ কুচকে গেলেও প্রস্তাবটা তেমনই। কিছু কিছু দেশে লাল ভাতের কদর সাদা ভাতের চেয়ে বেশী। চীনদেশে ও থাইল্যান্ডে লালভাতের চাহিদা আছে। শ্রীলঙ্কায় পাঁচতাড়া হোটেলেও ভাত চাইলে লালভাতই পাওয়া যাবে। অন্যান্য তৃণভোজী প্রানীরা ঘাসপাতা বেছে খেলেও শস্যদানা এযাবৎ আস্তই খেয়ে এসেছে, এখনও তাই খায়। বেশী বুদ্ধিমান প্রানী হিসেবে মানুষ প্রথম কি করেছিলো জানা নেই। কালের বিবর্তনে মানুষ ক্রমশঃ ঘাস জাতীয় গাছের বীজ অর্থাৎ ধান ও গমের খোসা ছাড়িয়ে খাবারের স্বাদ পেয়ে গেল। এতে যদিও খাবার চিবানো আর হজম করা সহজ হল আর শস্যবীজের খোসার মধ্যে থাকা তেল জাতীয় পদার্থের বর্জনের ফলে শস্যবীজের অধিক সময়ের জন্য সংরক্ষনের সুবিধা হয়ে গেল। তেল জাতীয় পদার্থ মিশ্রিত শস্যদানার গুঁড়ো হাওয়ার সংস্পর্শে এলে বেশীদিন অবিকৃত থাকে না। একবিংশ শতাব্দীর উন্নত প্রযুক্তির অধিকারী মানুষের খাবারের টেবিলে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশই শস্যবীজের দখলে। প্রাতরাশের রুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, স্যান্ডউইচ বা গ্রামবাংলার পান্তা; মধ্যাহ্নভোজের ভাত বা রুটি, বিকালের জলখাবারের মুড়ি, বাদাম, চপ, কাটলেট, পিৎজা, পাস্তা আর রাতের খাবারের রুটি বা ভাত — এই গুলোই খাবারের প্রধান অংশ। সঙ্গের পদগুলো বৈচিত্র্যময় হলেও পরিমাণের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাধান্য পায় না।ভাত বা রুটি আমাদের প্রধান খাবার; যদিও পৃথিবীর কোন কোন জনগোষ্ঠীর খাবারের থালায় মাঝেমধ্যে প্রধান খাদ্য হিসেবে আলুর দেখা মেলে। তা সে চালই হোক বা গমই হোক, ঘাস জাতীয় শস্যদানার অবিকৃত গঠন একই রকম।

    বর্তমানে প্রচলিত ধান থেকে চাল বানানোর মেশিনে ধানের বাইরের খোসা (ব্রান) আর মধ্যবর্তী অংকুর বা বীজযুক্ত আবরণ (জার্ম) ছাড়িয়ে ভেতরের সাদা (এন্ডোস্পার্ম) অংশটি ব্যবহারের জন্য আলাদা করা হয়। চাল ও আটার সওদাগরেরা প্রায় ২৫ ধরণের রাসায়নিকের সন্ধান জানেন যার দ্বারা এরপরে একে আরও চকচকে, লোভনীয় ও সুস্বাদু বানানো হয়। ধান গাছের নিজের বংশবৃদ্ধির জৈবিক প্রয়োজনের অংকুরটি হল মাঝের “জার্ম” অংশটি। তাকে রক্ষা করার জন্য ও অঙ্কুরোদগমের সময় প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগায় বাইরের খোসাটি। ভেতরের সাদা যে অংশটি আমরা চাল হিসাবে বেছে নিই সেটা মামুলি ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ বর্জিত জটিল শর্করা। চালের তুষে বাইরের খোসা আর মাঝের প্রাক- অঙ্কুর (জার্ম) থাকে। ভবিষ্যতের শিশু উদ্ভিদটির বীজের (মূলতঃ প্রোটিন) পুষ্টির প্রয়োজনীয় সংকেতওয়ালা জিন এই মধ্যেকার আবরণে থাকে।বাইরের খোসায় থাকে প্রতিরক্ষার বর্ম হিসাবে ফাইবার, ভিটামিন আর প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ। মধ্যেকার এন্ডোস্পার্ম অংশ, যেটাকে আলাদা করে পরিশোধিত চাল অথবা সাদা আটা আর ময়দা খাবার জন্য ব্যবহার করা হয় সেটা নিছক শর্করা। বীজ থেকে জন্মানোর পরে সদ্য অঙ্কুরিত উদ্ভিদটির পাতা সৃষ্টির আগে পর্যন্ত (অর্থাৎ যখন নবঅঙ্কুরিত উদ্ভিদটি সালোকসংশ্লেষের বা photosysthesis মাধ্যমে খাদ্য প্রস্তুতের জন্য অপরিণত) উদ্ভিদের শর্করার প্রয়োজন মেটায় ভেতরের এন্ডোস্পার্ম অংশটি।

    শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট অপেক্ষাকৃত সস্তা আর আসক্তি উদ্রেককারী খাবার। তাই সহজে আমাদের খাবারে বড় অংশের অংশীদার হয়ে পড়ে। যত চকচকে সুদৃশ্য লম্বাদানার পালিশ করা পরিশোধিত চালের ভাত হবে, পেট ভরানোর জন্য তত বেশী পরিমানের ভাতের প্রয়োজন হবে আর তাড়াতাড়ি হজম হয়ে আবার খিদে পাবে। শর্করা জাতীয় খাবারে আসক্তি আমাদের অগোচরে ঘটে যায়। মিষ্টির দোকানের প্রতি আকর্ষন একরকমের প্রাদুর্ভাবের মত আমাদের আগ্রাস করেছে যদিও এটা আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি নয়। ঘটনাচক্রে শর্করা জাতীয় খাবারের প্রতি এই আসক্তি সচেতন পশ্চিমী দুনিয়ার প্রতিপত্তিবান নাগরিকদের চেয়ে আমাদের মত গরিব দেশগুলোর (ধনী দরিদ্র সবার) মধ্যে বেশী পরিমানে দেখা দেয়। গত শতাব্দীর আটের দশকের জনপ্রিয় হলিউডের চলচিত্র “প্রেটি উওম্যান”-এর একটা দৃশ্যের কথা প্রাসঙ্গিক। বিলাসবহুল হোটেলের পেন্টহাউসের প্রাতরাশের টেবিলে ধনী নায়ক গরীব নায়িকার সামনে সযত্নে চয়ন করে রাখা ফল, বেরি আর সসেজ-স্যালামি পুর্ণ দুটো থালা পেশ করলেন। প্রিয় নায়কের ভালোবাসা মেশানো সুষম খাবারের প্রাতরাশের থালা ঠেলে ফেলে,নায়িকা দূরে রাখা ঝুড়ি থেকে ময়দা-মাখন-মিষ্টির সংমিশ্রণে তৈরী মিষ্টি পাউরুটি তুলে নিলেন।

    আমাদের মত গরিব গুর্মোর দেশে “ভিক্ষার চাল কাড়া না আকাড়া” এই ধরণের তর্কের অবকাশ আছে। সস্তার খাবার হিসাবে শর্করা আমাদের প্রয়োজন, মুস্কিল হয় এতে আসক্তি জন্মে গেলে। শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার জন্য খাদ্যে অন্যান্য খাদ্যাংশের মত নির্দিষ্ট পরিমাণে শর্করাও প্রয়োজন। খিদে পেলে খাবারের বন্দোবস্ত তো করতেই হয়। মনে রাখতে হবে, আগের কিস্তির খাবার কেবল পেট (পাকস্থলি) থেকে জায়গা খালি করে রক্তে মিশেছে। ফলেই খিদে পেয়েছে। আগেকার খাবারের যে অংশটি তখনও খরচ করা যায়নি, কেবল রক্তে ভেসে বেড়াচ্ছে, সেটা যাবে কোথায়? খাবারে শর্করার আধিক্যে প্রথমে অব্যবহৃত শর্করা সীমিত পরিমাণে যকৃতে (লিভার) গ্লাইকোজেন হিসাবে জমা হয়। যকৃতের ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেলে, অব্যবহৃত শর্করা চর্বি হিসাবে শরীরের অপ্রিয় জায়গা গুলোতে জমা হতে থাকে। তাই পেট ভরাতে হবে এমন খাবার দিয়ে, যেটা পেটে অনেকক্ষণ থাকবে, দেরীতে হজম হবে ও দেরীতে খিদে পাবে, ইতিমধ্যে চর্বি হিসাবে জমা হবার জন্য দাঁড়ানো গ্লুকোজের লাইন লম্বা করবে না।

    পুনরাবৃত্তির দোষ এড়ানোর জন্য শর্করার গ্লুকোজে পরিণত হবার হার (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) আর গ্লুকোজে পরিণত হবার পরিমাণ (গ্লাইসেমিক লোড)-এর বিস্তারিত আলোচনা এড়ালাম। শ্বেতশুভ্র পঞ্চবিষের প্রথম পর্বে (চিনি যখন বিষ) এর আলোচনা পাওয়া যাবে। আমাদের খাবারের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শর্করা জাতীয় খাবার থেকে বেছে নিতে হবে, আর সেই শর্করা হবে তন্তু (ফাইবার), ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ জটিল শর্করা। আস্ত শস্যদানা সেই প্রয়োজন ভালোভাবেই মেটায়।যে কারণে চিনি দুষ্ট, সেই কারণে সাদা, চকচকে, সরু, লম্বা সুগন্ধিত পরিশোধিত চালও সমমাত্রায় ক্ষতিকারক। সোজা কথায় বলতে, মূলতঃ দুটি কারণে মেশিনে ছাটা চকচকে সাদা চালের ভাত, ময়দা আর বাজারে উপলব্ধ সব রকমের বেকিং করা খাবার (পাউরুটি, কেক, কেক, বিস্কুট, কুকিজ, প্যাটিস, সিঙ্গারা, নিমকি ইত্যাদি) বর্জনীয়। প্রথমতঃ এসব খাদ্যের মূল উপাদান শস্যদানার বাইরের আবরণের ফাইবার (তন্তু) ও ঠিক তার নীচের অংশের (বীজ বা র্জাম) ভিটামিন ফেলে দেওয়া হয়েছে, পড়ে রয়েছে কেবল শর্করা (empty calorie)। দ্বিতীয়তঃ, খাবারে যত পরিশোধিত শর্করা থাকবে সেটা তত তাড়াতাড়ি হজম হবে অর্থাৎ গ্লুকোজে পরিণত হবে, রক্তে চিনির মাত্রা তত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে (উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের জন্য) তন্তুবিহীন হবার জন্য অধিক পরিমাণে শরীরে গ্লুকোজ জমতে থাকবে (উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডের জন্য)। অব্যবহৃত গ্লুকোজ চর্বিতে পরিণত হতে থাকে, পরে দীর্ঘ সময়ের অভুক্ত থাকাকালীন সময়ে শক্তি যোগানোর জন্য। কিন্তু সেই অভুক্ত অবস্থার অবকাশ আর ইহ জীবনে আর হয়ে ওঠে না।

    এক বা দুই পুরুষ আগেও খাবারের থালায় ঢেঁকিছাঁটা চাল থাকতো, প্রাতরাশে চিড়ে, মুড়ি, থাকতো। বরিশালের বালাম চালের কথা শুনেছেন? লালচে ঢেঁকিছাঁটা বালাম চালের খ্যাতি আছে। ঘরোয়া এবং নিকট প্রতিবেশী দেশের সেই খাদ্যসংস্কৃতি অবহেলা করে দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা পশ্চিমী খাবারের বাছাই করা ক্ষতিকারক খাবারগুলো গ্রহণ করেছি। স্বাস্থ্যহানিকর বিস্কুট, পাউরুটি ও অজস্র বেকিং করা খাবার, চটজলদি খাবার, মেশিনে ছাঁটা সুদর্শন সুঘ্রাণযুক্ত চালের ভাত আমাদের খাবারের মূখ্য অংশ। ইদানিং কালে যে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের বাড়বাড়ন্তের কথা শোনা যাচ্ছে তার প্রধাণ কারন বিকৃত খাদ্যাভ্যাস। আঠারোশো খ্রিস্টাব্দে বিদেশে যন্ত্রচালিত ধান ও গম ভাঙা কলের আবিষ্কার হয়েছিলো। বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে সেই প্রযুক্তি আমাদের গ্রাস করে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পালটে দিয়ে। বংশ পরম্পরায় আমাদের রোগ সৃষ্টিকারী জিনের পরিবর্তন করে আমাদেরকে দুনিয়ার সবচেয়ে হৃদরোগের ও ডায়াবেটিসের মত মারণ রোগের উপযোগী করে তুলেছে। আরও কারণ আছে, তবে খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা মূখ্য। আমরা পেটে যা ঢোকাচ্ছি, তাই দিয়েই তৈরী হচ্ছে আমাদের পার্থিব এই শরীর। কখনো কখনো পরিশোধিত শস্যদানা বা তার থেকে প্রস্তুত খাদ্যবস্তুতে অতিরিক্ত ভিটামিনের অন্তর্ভুক্তির (enriched, fortified) কথা বলা হয়ে থাকে। সেটা পরিমাণে প্রাকৃতিক পরিমাণের চেয়ে কম ও মানের দিক দিয়ে সেগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের।এখন বাজার ব্রাউন পাউরুটিতে ছেয়ে গেছে, তারমধ্যে অধিকাংশই কেবল রঙ করা সাদা পাউরুটি মাত্র।

    তাহলে উপায় কি?
    গম জাতীয় শস্যদানা থেকে প্রস্তুত আটার ক্ষেত্রে পূর্ণদানা থেকে প্রস্তুত খাবার, রুটি ইত্যাদি ব্যবহারে অসুবিধা নেই। কেবল বাদামি রঙ দেখে পূর্ণদানার পাউরুটি চেনা যাবে না, প্যাকেটের ওপরে “whole grain” লেখা আছে কিনা দেখে নিতে হবে। কৃত্রিম উপায়ে পালিশ করা নয়, মোটা দানা লালচে চালের ভাতই শ্রেয়। পেট ভরানোর জন্য এই চালের ভাত পরিমাণে কম লাগে বলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। সুস্বাদু, সুদর্শন আর সুগন্ধিত নয় এই সব কারন ছাড়াও পূর্ণদানার শস্য থেকে তৈরী খাবার বেশী চিবোতে হয় বলেও অনেকের এটা অপছন্দ। মনে রাখতে হবে, এটা এগুলোর গুণ হিসাবে দেখা উচিত। বেশী চিবোনোর জন্য খেতে সময় বেশী লাগলে আমাদের ভক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রক মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস সক্ষমভাবে কাজ করতে পারে। ওজন বশে রাখায় এটা বেশ কাজে আসে। তন্তুসমৃদ্ধ আস্তদানার গমের আটা ও মোটা লালচে চালের ভাত অনেকক্ষণ পাকস্থলীতে থেকে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বহুক্ষন ধরে শক্তি যোগাতে থাকে, কৃত্রিমভাবে তাড়াতাড়ি খিদে পায় না। সঙ্গে অঙ্কুরিত ছোলা এবং ডাল (সবুজ খোসাওয়ালা মুগ, বিনস) জাতীয় খাবার থাকলে ভালো হয়। পরিভাষায় একে লেগুমস (legums) বলা হয়ে থাকে। এতে যথেষ্ট তন্তু ও প্রোটিন থাকে। পূর্ণদানার শস্যবীজকে আমরা ভালো শর্করা বলব। ভালো শর্করায় অতিরিক্ত গুণ হিসাবে পাওয়া যাবে রোগপ্রতিরোধকারী এন্টিঅক্সিডেন্টস, “ই” ও “বি” শ্রেণীর ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর বহুশৃঙ্খলের অসম্পৃক্ত স্নেহ জাতীয় খাদ্যাংশ (polyunsaturated fatty acid)।

    পরিশোধিত শস্যদানা থেকে প্রস্তুত প্রক্রিয়াকৃত খাবারে (যেমন পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, কুকিজ, চানাচুর, পাস্তা, নূডলস, পিৎজা ইত্যাদি) তন্তু ও ভিটামিনবিহীন শর্করা থাকে সেটা আমাদের শরীরে চিনির মত কাজ করে। এই ধরনের চাল বা আটা / ময়দা থেকে প্রস্তুত করা খাবার রক্তে সুগারের ও ট্রাইগ্লিসারাইডের (এক ধরনের রক্তে প্রবাহমান স্নেহ জাতীয় পদার্থ) মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ও পেটে চর্বি জমতে থাকে। এর সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায় আর ওজন বেড়ে যাবার জন্য হাঁটু ও অন্যান্য অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ বা অতিমাত্রায় প্রকট ধরণের নিরাময়ের অযোগ্য বাতের রোগ (osteo-arthritis) সৃষ্টি করে। বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম ডেভিসের মতে পরিশোধিত শস্যদানা একটি নিখুঁত মধুমাখা বিষ, যেটা নেশা ধরায় আর তিল তিল করে নিশ্চিতভাবে হৃদরোগ আর ডায়াবেটিসের মত অনিরাময়যোগ্য রোগের দিকে ঠেলে দেয়। সাদা পাউরুটির দুটি স্লাইস ছ’চামচ চিনি আর একটা চকলেটের বারের চেয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা বেশী পরিমাণে বাড়ানোর ক্ষমতা ধরে।

    আমাদের প্রপিতামহগণ হলদে সোনালি গমের আটা আর লাল মোটাদানার ভাতে ক্ষুন্নিবৃত্তি করে স্বাস্থ্যখাতে নিয়ন্ত্রিত খাতে বেশ বেঁচে বর্তে ছিলেন। বিগত পঞ্চাশ বছরে জিনের ওপর খোদকারী করে উচ্চফলনশীল খর্বাকৃতি শস্যের বিপ্লবের মাধ্যমে স্বল্পসময়ে অনেক বেশী করে শস্যদানা উৎপাদন করে শস্যভান্ডার গড়ে তুলেছি। ফলে অদূর ভবিষ্যতে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা এড়ানো গেছে। অধিক ফলনশীল শষ্যের স্বাস্থ্যের উপর নিরাপত্তার নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা করা হয়নি। নতুন ধরণের এই গমে “পরিবর্তিত ধরণের গ্লায়াডিন (gliadin)” নামে একধরনের প্রোটিন থাকে যেটা গম জাতীয় খাবারের গ্লুটেন (gluten)-এর সমগোত্রীয়”। গ্লুটেন এন্টেরোপ্যাথি নামে একধরনের আন্ত্রিক রোগ ছাড়াও গ্লায়াডিন আমাদের মস্তিষ্কে আফিং (morphine) জাতীয় রাসায়নিকে রূপান্তরিত হয়ে “ভালো লাগা” (feel good effect) ধরনের নেশা ধরায় ও খিদে বাড়ায়। দেখা গেছে, পরিশোধিত সাদা আটা ও ময়দার খাবার দিয়ে পেট ভরাতে হলে দৈনিক প্রায় ৪০০ কিলোক্যালোরি বেশী খাওয়া হয়ে যায়।২০০৪ সালের এক গবেষণায় (Ludwig 2004, Lancet), লাল আটার চেয়ে সাদা আটায় ইঁদুরদের পেটে ৭১ শতাংশ বেশী চর্বি জমে যায়।

    দীর্ঘমেয়াদী ভাবে সাদা শস্যদানা খাওয়ার জন্য খাবার অব্যবহিত পরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উচ্চমাত্রায় পৌঁছে যায়।এমতাবস্থায় রক্তের বিশেষ কিছু প্রোটিনের সাথে শর্করার বিক্রিয়ায় (glycation) “এডভান্সড গ্লাইকেসন প্রোডাক্টস (AGP)” তৈরী হয়ে যায়। এডভান্সড গ্লাইকেসন প্রোডাক্টস রক্তনালীর প্রদাহের (inflammation) এক অন্যতম কারণ। অধুনা প্রকট হয়ে আত্মপ্রকাশ করা বিভিন্ন হৃদরোগ ও সেরিব্রাল স্ট্রোকের কারণ হিসাবে পরিশোধিত শস্যদানা একটা প্রধান নিয়ন্ত্রক। এই ধরনের শ্বেতসার (শর্করা, কার্বোহাইড্রেট) খাবার ফলে উদ্ভুত উচ্চ মাত্রার রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রন করার জন্য অধিক মাত্রায় ইনসুলিনের ডাক পড়ে। দীর্ঘসময় অতিমাত্রায় ইনসুলিনের প্রভাবে শরীরের কোষসমূহে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে (insulin resistance)। এর অবধারিত ফল হিসাবে পেটে এক বিশেষ ধরনের ক্ষতিকারক সক্রিয় চর্বি জমতে শুরু করে। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ হল এর অন্তিম পরিণতি।

    আমাদের খাবারের মূখ্যভাগ হিসাবে অপরিশোধিত শস্যদানার ফাইবার বা তন্তু রক্তে চিনির মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়ানোর সুফল ছাড়াও আরও উপকার করে। মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে। ঝাড়ুদারের ভূমিকা পালন করার মত পৌষ্টিক তন্ত্রের রোগজীবানু ও অন্যান্য ময়লা সাফ করে। বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়। অন্ত্র থেকে রক্তে কোলেষ্টেরলের মিশ্রণ কমায়। অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগের প্রকোপ হ্রাস করে। শস্যদানা সমৃদ্ধ খাবার রক্তে অম্লতা বাড়িয়ে দেয়, যেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য হাড়ের থেকে ক্যালসিয়ামের ডাক পড়ে। হাড়ের ক্যালসিয়াম কমে গেলে হাড় ভেঙ্গে যাবার প্রবনতা বেড়ে যায়।

    খাবারের শস্যদানার নির্বাচনের সময় তার সঙ্গে অংকুরিত ডাল ও ছোলা জাতীয় খাবার (স্প্রাউট, লেগুম) অন্তর্ভুক্ত করলে বিশেষ লাভ হবে। এতে প্রয়োজনীয় ফাইবারের সাথে সাথে ভিটামিন ও বেশ খানিকটা প্রোটিনও পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক ভিটামিন কৃত্রিম রাসায়নিক উপায়ে প্রস্তুত ভিটামিনের চেয়ে বেশী কাজে আসে। অংকুরিত শস্যদানার শর্করা খাবারের থালায়ই মলটোজে পরিণত হয়ে হজমের প্রথম ধাপ পেরিয়ে থাকে। বদ হজমের সম্ভাবনা নির্মূল করে। খাবারে শস্যদানার সাথে কাঁচা বাদাম জাতীয় খাবার মিশিয়ে খাবার প্রস্তুত করলে বিশেষ উপকার হয়। এতে রক্তে চিনির মাত্রা কমে ও উপকারী অসম্পৃক্ত ফ্যাট পাওয়া যায়, যেটা রক্তের ক্ষতিকারক লঘু ঘনত্বের কোলেস্টেরল কমায়।

    খাবারে শস্যদানা মুখ্য অংশ অধিকার করে থাকলেও এর অপরিহার্যতা সব বৈজ্ঞানিকগন স্বীকার করেন না। কৃষি-প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আগে আদিম মানুষ শস্যদানা ছাড়াই জীবিকা নির্বাহ করত। শস্যদানার এই বিকৃত রূপে অভ্যস্ত হবার পিছনে ব্যবসায়িক ষড়যন্ত্র আছে। পরিশোধিত শস্যদানায় মধ্যেকার জার্মের অংশ না থাকার জন্য গুদামে আর খাবারের দোকানের আলমারিতে বহুদিন পর্যন্ত শস্যদানা সংরক্ষন করা যায়। আসলে আমরা শস্যদানা ছাড়াই বেশ সুস্থ থাকতে পারি। সেটা বড় বিপ্লব। যতক্ষন না সেটা সম্ভব হচ্ছে, শস্যদানার পরিমাণ কমানো ও তার গুনমান পরিবর্তন করা জরুরি। রান্নাঘরে এই বিপ্লব করতে পারলে আমাদের শরীর আমাদের প্রচেষ্টা কে অনেক ধন্যবাদ দেবে। “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে”-প্রবচন টা ভুলে ভরা। কোন মা যেন এটা বিশ্বাস না করে। ইস, আমার স্কুল জীবনে আমাকে যদি এ সব কথা বিশ্বাস জাগানোর মত করে কেউ বলতো!

    একনজরে
    পূর্ণদানার শস্যবীজের উপকারিতাঃ
    ১। ত্রিশ শতাংশ সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনা কম।
    ২। পঁচিশ শতাংশ ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কম।
    ৩। ত্রিশ শতাংশ হৃদরোগের সম্ভাবনা কম।
    ৪। স্থূলতা হ্রাস।
    ৫। হাঁপানির প্রকোপ কম।
    ৬। বিভিন্ন প্রদাহজনিত (inflammatory disease) রোগের বোঝা কম।
    ৭। রক্তচাপ বশে রাখা সম্ভব।
    ৮। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে চিরতরে মুক্তি।
    ৯। বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম।
    ১০। সুস্থসবল দাঁত ও মাড়ি।

    যে কারণে পরিশোধিত শস্যদানা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে
    ১। তন্তু বা ফাইবার ও ভিটামিন বর্জিত
    ২। সাদা আটা ও ময়দায় ক্ষতিকারক গ্লুটেন ও গ্লায়াডিনের উপস্থিতি
    ৩। সুদৃশ্য ও সুগন্ধযুক্ত করার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিকের ও ব্লিচিং পদার্থের ব্যবহার
    ৪। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডের বৈশিষ্টের জন্য খাবার সাথে সাথে দ্রুত ও উচ্চমাত্রায় রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি। এর ফলে প্রথমের দিকে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি ও পড়ে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা হ্রাস।

    পরিশোধিত শস্যদানার বিকল্পঃ
    ১। পূর্ণদানার গমের আটা
    ২। বাদামি পাউরুটি, বহুরকমের শস্যদানা (multi-grain) থেকে প্রস্তুত (মাখন বা ভোজ্যতেল বিহীন) (নরম রং করা বাজার ছেয়ে যাওয়া ব্রাউন ব্রেড নয়)
    ৩। অপেক্ষাকৃত মোটাদানা ও লালচে চালের ভাত (কৃত্রিম উপায়ে পালিশ না করা)
    ৪। চিড়ে, মোটা চালের মুড়ি
    ৫। অংকুরিত ছোলা ও খোসাসহ ডাল
    ৬। ভুট্টা, বাজরা, জোয়ার, ওট

    গৌতম মিস্ত্রী, কোলকাতা, ২৮শে মে, ২৯১৬
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৮ মে ২০১৬ | ২১৪৬১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দেবব্রত | 212.142.91.188 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৩২53863
  • কনফার্মড চাড্ডি মানে যারা গণেশের প্লাস্টিক সার্জারি করেন ইত্যাদি - আপনি কি ওই দলে নাঃ সুতরাং মতামত চালু থাক - কিন্তু Icm দা ওই অরণ্য ধ্বংসের রেট তো ' গ্রিন রিভোলিউশন' চালু হওয়ার পরে বেড়েছে , তার আগে তো ফরেস্ট কভার অনেক গুন বেশী ছিল । পাঞ্জাবে বর্তমানে মাত্র ৪% ফরেস্ট এবং তাও রাস্তার ধারে /আলের ধারে লাগানো ইউক্যালিপটাস গাছের সংখ্যা ধরে । অঙ্ক তো মিলছেনা ।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৩২53862
  • আমেরিকায় খাদ্য শস্য নষ্টের মূল কারণ হল এখন এমন অবস্থা এসেছে, ঠিক যতটা খাবার লাগবে ততটাই উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু তাও অতিরিক্ত উৎপাদন হয়, এবং খাবার নষ্ট হয়। আর একটা ব্যাপার আছে। এই যে নষ্টের হিসেব এতে মানুষের খাদ্যাভাসের একটা ব্যাপার আছে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার কিনে রাখা এবং পরে সে সব ফেলে দেওয়া - শুধু খাবার নয় ফোন থেকে জুতো মাত টিভি পর্যন্ত - যে কোনো জিনিস , প্রাচুর্যের এই জীবনযাত্রা আর এক কারণ।

    এখন আমেরিকায় একটি প্রধান জাতীয় সমস্যা হল ওবেসিটি। এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান (৩৫%, প্রায় ৭৮ মিলিয়ন) ওবিস(obese) অ্যাডাল্ট। ওবিস কিন্তু ওভারওয়েটের-ও ওপরে, বিশাল বপু। দেখা গেছে লো-ইনকাম পপুলেশনের মধ্যে ওবিস % বেশি। যে হিসেবে হাঙ্গার % হিসেব করা হয়, তাতে এরাও আসেন, এবং এদের খাবার যোগাড় করতে সমস্যা হয়। ক্ষুধার্ত মানুষ বলতে আমরা যে ছবির সঙ্গে অভ্যস্ত, হাড় জিরজিরে চেহারা - সেই রকম হাঙ্গার এখানে খুবই কম।
  • দেবব্রত | 212.142.91.188 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৩৮53864
  • Icm ধরাযাক আপনি ঠিক বলছেন -আমি ইহকালে একবারই আমেরিকা গিয়েছি । কিন্তু ভারতে গ্রিন রেভলিউসনের ফলাফল কিঞ্চিৎ বললাম পাঞ্জাবের কথা , ওখানেই শুরু হয়েছিল কিনা । ফিলিপিন্স কিছু বলেছি আর পেপার লিংক এই রকম

    India tops world hunger list with 194 million people: UN report http://dnai.in/cIj9 via @dna তাহলে গ্রিন রেভলিউসনের সুফল কোথায় গেল ?
  • প্লেন অঙ্ক | 198.154.74.31 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৪১53865
  • দয়া করে আমায় রেহাই দিন।
    ওই " গ্রিন রিভোলিউশনের ফলে ১০০ একর জমিতে ৬ টন চাল" হতে যা নাইট্রোজেন ও ফসফরাস যোগাতে হয়েছে তার জন্যে নাইট্রেট আর ফসফেট মাইনিং এ কত একর জঙ্গল গেছে, pesticide ও herbicide গুলোর জন্যে কত একর গেছে, soil degradation এ soil এর water catching ability কমে গিয়েই বা কত একর জঙ্গল জলের অভাবে শুকিয়ে গেল, সেগুলো ছাড়া আপনি যা দিচ্ছেন, তাকে হিসেব নয়, ছেনালি কয়। সে করুন, কিন্তু আমার নামে চালাবেন না।

    আর গ্রিন রেভোলিউশন এ ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলো ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে ১০০ একরে ৪ টন চাল হলে + আরো কিছু ৩ টন ডাল + ২ টন সরষে + ৫০০ কিলোলিটার দুধ + ১ টন মাছ হলে
    জঙ্গলে ভাগ পড়ত কিনা সে বিষয়েও আমাকে ও agroecology, agroforestry, sustainable agriculture ইত্যাদি ভাইবোনদের জিগান। আপনার চোখের ঠুলিটির দায় আমাদের নয়।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৪২53866
  • দেবব্রত,
    হ্যাঁ, জঙ্গল তার পরেও ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু যেটা হয়েছে, ওভার ইউজ্‌ড হয়েছে, প্লান্‌ড্‌ ইম্‌প্লিমেন্টেশন হয় নি।
    যেমন ধরো - পাঞ্জাব-এর কথা। যেহেতু, গ্রিন রিভোলিউশনে এক একর জমিতে প্রায় আড়াই গুণ উৎপাদন হতে থাকল, আর পাঞ্জাবের চাষীরা অন্য রাজ্যের তুলনায় একটু অবস্থাপন্ন ছিল এবং সরকারি বদান্যতাও (লোন ইত্যাদি) বেশি পেল (ফার্মিং ইকুইপমেন্ট এসব তো খরচসাপেক্ষ বটে) -- তো তখন তিন গুণ উৎপাদনের নেশায় পাঞ্জাবের প্রায় সব জমি চাষে চলে গেল। পাঞ্জাবের চাষীরা মারুতি কিনতে লাগল, সারা দেশ ব্রেড বোল বলে বাহবা দিতে থাকল। এটা অবশ্যই বিশাল ভুল, আজ টের পাওয়া যাচ্ছে। অল্প জমিতে বেশি উৎপাদনের সুযোগ মানে এই নয়, যেখানে যা জমি আছে সব লাগিয়ে দাও।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৪৯53867
  • প্লেন অংক,
    ব্যাপারটা তখনকার পরিস্থিতিতে ভাবতে হবে। ১৯৫০ সালে, এশিয়াতে জনসংখ্যা সাংঘাতিক রেটে বাড়ছে। যেমন এখন আফ্রিকাতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পঙ্গপাল - শস্যের টানাটানিতে মহাদেশ নাকাল।

    অফ্‌ কোর্স, কেমিক্যাল ফার্টিলাইজার যোগাতে হয়েছে, তার জন্যে মাইনিং হয়েছে --- এবং আনপ্লান্‌ড্‌ ইম্প্লিমেন্টেশনের জন্যে সয়েল ইরোশন হয়েছে ---
    কিন্তু, আমেরিকা/রাশিয়ার জাহাজে কবে গম আসবে, তবে দু মুঠো জুটবে, সেই আশায় মানুষকে বসে থাকতে হয় নি। সে বড় যন্ত্রণা।
  • দেবব্রত | 212.142.91.188 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৫১53868
  • Icm দা ঃ- গ্রিন রেভলিউসনের আইডিয়াল , ভারতের খাদ্য ভাণ্ডার পাঞ্জাবে " that an average farmer in what is the country's food bowl has a debt of Rs 50,211 per acre. Combine this with natural calamities like unseasonal rains and pest attacks like that of the whitefly last year, and you have a perfect recipe for disaster." কেন ? উন্নত বীজ উচ্চ ফলনশীল গম উৎপাদন করতে কৃষিতে যা খরচ হয় দাম পাওয়া যায় তার থেকে কম । পাঞ্জাবের চাষিরা প্রতি একরে ১৮৫ কিলোগ্রাম সার ব্যবহার করতে বাধ্য ,ভারতের গড় ৮৫ কেজি । জয় বিজ্ঞান ? ঋণ মাথা পর্যন্ত , জলে এবং খাদ্যে আর্সেনিক , আত্মহত্যা ভয়ংকর লাভ বীজ ব্যবসায়ীর - জয় বিজ্ঞান ?
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৫:৫৯53869
  • "... অন্য পদ্ধতিতে ১০০ একরে ৪ টন চাল হলে + আরো কিছু ৩ টন ডাল + ২ টন সরষে + ৫০০ কিলোলিটার দুধ + ১ টন মাছ হলে..."

    ঠিক। কিন্তু কি সেই পদ্ধতি ১৯৫০ সালে?

    কোন পদ্ধতিতে ১৯৫০ সালে চালের উৎপাদন একর প্রতি ২ টন থেকে ৪ টন হত - তখন হাতের কাছে কিছু ছিল না।

    আরো অনেক অনেক জমি না নিয়ে কি করে ২ টন সর্ষে হবে, বা, ৩ টন ডাল হবে --- কিভাবে একই জমিতে উত্পাদন বাড়ানো যাবে তাও ছিল অজানা।

    পঙ্গপালের হাত থেকে শস্য বাঁচানোর সহজ উপায়ও ছিল না।

    চাষী এবং গরিব মানুষের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল উন্নত মানের বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক ওষুধ - এই সব।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:০৩53870
  • দেবব্রত,
    তুমি যে সমস্যা গুলির কথা লিখেছ, সেটা কিন্তু মূলত আর্থসামাজিক সমস্যা, অসম বন্টন ব্যবস্থার সমস্যা, সরকারি নীতির সমস্যা।
    এ জিনিস শুধু চাষীদের ক্ষেত্রে হয়েছে তা নয়, শিল্পশ্রমিক-রাও এই অবিচারের শিকার হয়েছে - যুগ যুগ ধরে।
    পৃথিবীর সব দেশে চাষীদের কিন্তু এই সমস্যা হয় নি, যদিও প্রায় সব দেশই মোটামুটি একই উত্তততর পদ্ধতিতে চাষ করেছে এই টাইম পিরিয়ডে।
  • দেবব্রত | 212.142.76.183 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:০৭53827
  • Icm বলছেন " দেবব্রত,
    ৭০-৮০ ব্ছর আগে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল, তা এখন আর প্রযোজ্য নয় - এমন হতেই পারে। " ফিলিপিন্সের ক্ষেত্রে আজকের বাস্তবতার কথা বলা হচ্ছে যেখানে চাষিরা ওই বিশ্বব্যাপী ধান গবেষণা এবং গ্রিন রেভলিউসন এর হোতাদের অবিলম্বে ধ্যাস্টামো বন্ধ করে দেশ ছাড়তে বলছেন - তাঁদের পথ অবলম্বন করে কি কি হয়েছে তা ওপরের পোস্টে সংক্ষেপে বর্তমান ,

    " ডিসি যে উদাহারণ দিয়েছে, এমন অনেক ফেমিন তো আটকানো গেছে।" গুরুর পাতায় না এলে জানতেই পারতাম না মৃত ম্যালথাস এবং তার তত্ব নিয়ে আজও কেউ আলোচনা করে । এই বিষয়ে অমর্ত্য সেন মহাশয়ের একটি বই আছে " Poverty and Famines: An Essay on Entitlement and Deprivation’. যে ১৯৪২ -১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ খাদ্য শস্য সঙ্কটের জন্য নয় বরং হোর্ডিং এর জন্য ,অসম বণ্টনের জন্য ঘটেছিল - বর্তমান পৃথিবীতে প্রতি বছর ৩০ মিলিয়নের অধিক জনসংখ্যা অপুষ্টির কারনে মারা যায় আমাদের দেশের ৩০% শতাংশ মানুষ (সরকারী হিসাবে ) আদপেটা খায় - তা খাদ্য শস্যের অভাবের জন্য নয় নিসচই ।

    " সাড়ে সাতশো কোটি মানুষের খাবার কোথা থেকে আসবে তা নিয়ে গবেষণা চলছে দুনিয়া জুড়ে, আবার কোনো বৈজ্ঞানিক রিভোলিউশন হবে।" অনেক হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই বৈজ্ঞানিক রিভোলিউশনএর ঠেলায় পৃথিবী জুড়ে খাদ্যশস্য উৎপাদন ১৫% শতাংশ কমে গেছে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫% কমে যাবে,পশ্চিমবঙ্গে এখন হেক্টর পিছু ১১৫ কেজি রাসায়নিক সার ব্যবহৃত হয় জাতীয় গড়ের তুলনায় ৩৫ কেজি বেশী ,পাঞ্জাবে ১৮৫ কেজি প্রতি হেক্টর -ইহাকে স্টেরয়েড দিয়ে পারফরমান্স বলে । শ্যালো টিউবওয়েলের ঠেলায় পশ্চিমবঙ্গের এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আর্সেনিক আর ফিলিপিন্স এ কি হয়ছে ইতিমধ্যে উল্লেখিত । যেটা প্রয়োজন তা হোল সামাজিক রিভোলিউশন যাতে ওই অসম বণ্টন এবং হোর্ডিং আটকানো যায় ।

    " এই যে এখানে গৌতমববু এত নিঃখুতভাবে আলোচনা করছেন - ব্যাড কার্ব, গুড কার্ব - ডিটেইল্‌সে - এও এক রিভোলিউশন।" এটার প্রয়োজনই হতোনা যদিনা তথাকথিত গ্রিন রেভলিউসন না হত - সারা পৃথিবীতে এখন মাত্র গুটি কয়েক প্রকারের খাদ্যশস্য এবং গুটি কয়েক প্রজাতির শস্য উৎপাদন হয় এবং তার প্রত্যেকটাই ব্যাড কার্ব,এ ভর্তি polycultures এর বদলে monocultures ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলোজির ইহাই ভবিতব্য । গ্রিন রেভেলিউসন এক কথায় ঃ- " from legume to wheat to wasteland."
  • দেবব্রত | 212.142.91.188 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:১১53871
  • অ্যা Icm দা একেবারে মনের কথাটি বলেছেন ' গ্রিন রিভোলিউশনে এক একর জমিতে প্রায় আড়াই গুণ উৎপাদন হতে থাকল, -- তো তখন তিন গুণ উৎপাদনের নেশায় পাঞ্জাবের প্রায় সব জমি চাষে চলে গেল। পাঞ্জাবের চাষীরা মারুতি কিনতে লাগল, সারা দেশ ব্রেড বোল বলে বাহবা দিতে থাকল। এটা অবশ্যই বিশাল ভুল, আজ টের পাওয়া যাচ্ছে।" এইটাই সমস্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলোজির সমস্যা - ধরুন ১৯৭০ এর দশকের কথা এদিকে ঢাউস সব তেল খাওয়ার রাজা আমেরিকান গাড়ি অন্যদিকে তেলের ক্রাইসিস , দুর্ভিক্ষের মত অবস্থা - এসে গেলো জাপানি এফিসিয়েন্ট গ্রিন ইঞ্জিন 'The Fuel saved by the 1980 ’s doubling of US new Car -efficiency was promptly offset by the greater number of cars and more driving …. Global car registration have been growing more than twice as fast as population - 50 million cars in 1954 , 350 million in 1989 , 500 million in 1997 & 1.1 billion in 2015 “ বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড ৪০৮পিপিএম । জয় বিজ্ঞান ।

    আর তাছাড়া ' এটা অবশ্যই বিশাল ভুল, আজ টের পাওয়া যাচ্ছে।" যখন টের পাওয়া যাচ্ছে তখন' গ্রিন রেভেলিউসনের পেছনে বাইট খচ্চা করে লাভ কি ?
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:১৩53828
  • দেবব্রতর জন্য, গুরুর পাতা থেকে আরো জানুন -

    - In 1968, Indian agronomist S.K. De Datta published his findings that IR8 rice yielded about 5 tons per hectare with no fertilizer, and almost 10 tons per hectare under optimal conditions. This was 10 times the yield of traditional rice.

    - In the 1960s, rice yields in India were about two tons per hectare; by the mid-1990s, they had risen to six tons per hectare.

    - In the 1970s, rice cost about $550 a ton; in 2001, it cost under $200 a ton. India became one of the world's most successful rice producers, and is now a major rice exporter, shipping nearly 4.5 million tons in 2006.
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:১৫53829
  • হ্যাঁ, ফেমিন-এর কারণ খাদ্যবন্টন হয়। আবার তীব্র খাদ্যসংকট-ও হয়। যেরকম, আফ্রিকা-তে হয়।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:২০53830
  • "যেটা প্রয়োজন তা হোল সামাজিক রিভোলিউশন যাতে ওই অসম বণ্টন এবং হোর্ডিং আটকানো যায় "

    ঠিক কথা। কিন্তু ১২২ কোটি লোকের খাবারই যদি তৈরি না হয়, ধরুন যদি মেরে কেটে ৯০ কোটি মানুষের খাদ্য উৎপাদন হয়, তাহলে তো সুষম বন্টন ব্যবস্থা দিয়ে খাদ্যসংকট আটকানো যাবে না।
  • dc | 132.174.185.54 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:২২53831
  • খাদ্যবন্ট্ন, মানে ফার্ম ইনপুটস/আউটপুটস এর সাপ্লাই চেন তো আরো উন্নত করতেই হবে, এব্যাপারে একমত। এর সাথে রিটেল সাপ্লাই চেনকেও জুড়তে হবে, ডেটা মাইনিং জুড়তে হবে। এগুলো করলে আস্তে আস্তে হোর্ডিং, অসম বন্টন, গুদামে পড়ে পড়ে পচে যাওয়া, এসব কমে আসবে।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:২৪53872
  • ভুলটা তো সেই টেকনলজির নয়। (১৯৫০-১৯৯০) সারা পৃথিবীতেই এই টেকনলজি (হাই ইল্ড সিড, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ফার্মিং ইকুইপ্মেন্ট....) ব্যবহার হয়েছে ফার্মিং-এ। অনেক জায়গায় লাগামহীন অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ হয়েছে। সেই সব জায়গায় আজ বেশি সমস্যা।
  • dc | 132.174.185.54 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৬:৩৩53832
  • মানে ভারতে সাপ্লাই চেন ইম্প্রুভমেন্ট হচ্ছেনা এরকম বলতে চাইনি, আগের থেকে আমাদের লজিস্টিক্স মুভমেন্ট অনেকটা উন্নতি করেছে তো বটেই। তবে আরো অনেক ইম্প্রুভমেন্টের স্কোপ আছে। রিটেল সেক্টরে যে ম্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে, তার ফলে লাস্ট মাইল কানেকটিভিটি বেটার হচ্ছে, দেশের নানান জায়গায় ফুলফিলমেন্ট সেন্টার তৈরি হচ্ছে এগুলো ভালো দিক। এই ব্যবস্থাটা কৃষিক্ষেত্রেও আরো বেশী করে আনতে হবে।
  • এলেবেলে | 11.39.36.219 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:০১53873
  • ভারতের সবুজ বিপ্লব নিয়ে দু’চার কথা :

    ১. ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত — ব্রিটিশরা ভারতে food crops এর বদলে industrial crops উৎপাদনে জোর দিয়েছিল । ভারতের মানুষ অভুক্ত থাকবে কিনা তা নিয়ে মাথাব্যথা না করে ভারতের মাটি থেকে মুনাফা অর্জনই ছিল তাদের লক্ষ্য । ফলে এদেশে আখ, তুলো, চা, পাট এবং তামাক চাষের জন্য চলে গেছিল প্রচুর জমি । খেয়াল করলে দেখা যাবে প্রায় প্রত্যেকটা চাষেই জল লাগত অঢেল এবং সাথে সাথে মাটির উর্বরতাও নষ্ট হত । বাংলায় ধানচাষের বদলে জোর করে নীলচাষের কথা আর আলাদা করে বলার দরকার নেই । এই কারণেই স্বাধীনতার পর ভারত ও পাকিস্তান দুদেশেই খাদ্যশস্য উৎপাদনের জমির পরিমাণ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় কম ।

    ২. বহুজাতিক শোষণ — ব্রিটিশ যাওয়ার ২০ বছর কাটতে না কাটতেই এল আমেরিকা । ভারতের মানুষকে পেট ভরে খেতে দেওয়ার স্বপ্ন দেখানো হল । তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা চটজলদি সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় বিভোর হলেন । ফলে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ছক কষা হল শোষণের নতুন পদ্ধতির । সবুজ বিপ্লবের চারটে মন্ত্র – HYV বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং প্রচুর জল । চাষি বীজ বাছাইয়ের স্বাধীনতা হারিয়ে বহুজাতিকের কেনা গোলাম হল, পাশাপাশি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক কোম্পানিগুলোর একচেটিয়া ব্যবসা করার নতুন বাজার হল, দেশ জুড়ে গড়ে উঠল একের পর এক প্রাণঘাতী ড্যাম । মেক্সিক্যান সেমি-ডোয়ার্ফ প্রজাতির গমের পরীক্ষাক্ষেত্র হল পাঞ্জাবের উর্বর মাটি । কাশ্মীরের আপেল কলকাতার মাটিতে ফলবে কিনা সেকথা ভাবাই হলনা । শেষ করে দেওয়া হল দেশীয় প্রজাতির সঙ্গে দেশীয় কৃষিপদ্ধতিরও । সারের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে লাগল, পাল্লা দিয়ে বাড়ল কীটনাশকের পরিমাণও । ১৯৮১-৮২ সালে পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় ব্যবহৃত হয়েছিল দেশের ১৮ % রাসায়নিক সার ( দেশের মাত্র ৬% crop area ) । আর ভারতে বর্তমানে বার্ষিক কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ ৯০ হাজার টন । প্রাথমিক সাফল্য দেখা দিলেও ফসলের পরিমাণ কমতে লাগল হু হু করে । ১৯৭২-৮৭ সময়ে পাঞ্জাবে গমের উৎপাদন বৃদ্ধি মাত্র ২.৩২% । ফলে আরও সার, আরও কীটনাশক এবং আরও জল । এই অশুভ চক্রকে তাই বলা হল – ‘Green Revolution was little more than a new colonial movement allowing high-tech companies in industrialized countries to exploit developing nations’.

    ৩. কৃষির অসম বিকাশ — যেহেতু সবুজ বিপ্লবে পুরো জোরটাই পড়েছিল চাল ও গমের ওপর তাই স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ফসল ( ডাল, তৈলবীজ ) উপেক্ষিত হল । ১৯৬৭-৬৮ নাগাদ ডালের উৎপাদন ছিল ১.৩৯%, ১৯৯৪-৯৫ তে তা কমে দাঁড়ায় ০.৭৯ % ।

    ৪. সবুজ বিপ্লব কতটা সবুজ — পাঞ্জাবকে ইউক্রেনের সাথে তুলনা করে ‘রুটির ঝুড়ি’ বলা হচ্ছে কিন্তু পাঞ্জাবের total crop area টা হিসেবে আসা দরকার । এটাও জেনে রাখা ভালো যে আজ পর্যন্ত দেশের মাত্র ৪০% ( চল্লিশ ) crop area য় সবুজ বিপ্লব তার থাবা বসিয়েছে । কাজেই সবুজ বিপ্লবই খাদ্যসমস্যা মেটানোর একমাত্র সমাধান মনে হলেও তথ্য তা বলছেনা । বরং তথ্য বলছে মাটিতে অম্লত্ব বৃদ্ধির জন্য ভারতের ৭ মিলিয়ন হেক্টর কৃষিজমি পতিত জমিতে পরিণত, দেশের প্রায় ২৫% জমি ভূমিক্ষয়ের রোগে জর্জরিত । আর্সেনিক প্রসঙ্গ তো এখানে এসেছেই ।

    ৫. অতএব বিকল্প — অবশ্যই জৈব সারের বহুল ব্যবহার একটা উপায় । ১৯৯০-এর পর থেকে দক্ষিণ ভারতের অনেক রাজ্য সরকারি ভাবে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে । ২০০০ সালে ভারত সরকার National Programme on Organic Product ( NPOP ) নামে কর্মসূচী চালু করেছে । কেন জৈব সার ? গবেষণায় দেখা গেছে জৈব সার পরপর কয়েক বছর প্রয়োগের ফলে মাটিতে স্থায়ীভাবে উর্বরতা তৈরি হয়, মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ে ও অম্লত্ব কমে এবং বন্ধুপোকার বংশবৃদ্ধি ঘটে । কী পরিমাণ জৈব সার ? প্রথম বছর ২৫:৭৫, তারপরের বছরগুলিতে ৫০:৫০, ৭৫:২৫ এবং শেষে ১০০:০ ( জৈব সার:রাসায়নিক সার ) । ফসল বৈচিত্রও আরেকটি বিকল্প । দরকার নতুন চিন্তার এবং তা প্রয়োগের সরকারি সদিচ্ছার ।

    ড. স্বামীনাথন, যাঁকে ভারতের সবুজ বিপ্লবের অন্যতম কান্ডারী ভাবা হয়, কিন্তু দেশ জুড়ে এখন সবুজ বিপ্লবের কুফল সম্পর্কে নানা কাজ করেন, প্রবন্ধ লেখেন ।

    তর্ক চলতে থাকুক, এগুলোও মাথায় থাক ।
  • দেবব্রত | 212.142.76.183 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:১০53833
  • সাপ্লাই চেন বাড়ালে " হোর্ডিং, অসম বন্টন এসব কমে আসবে " ? না কমবেনা , সাপ্লাই চেনের সাথে তার সম্পর্ক নেই সম্পর্ক মুনাফার সাথে , ৪২ এর মন্বন্তরে বাঙলায় খাদ্য শস্য গুদাম ভর্তি ছিল । অমর্ত্য সেনের " Poverty and Famines: An Essay on Entitlement and Deprivation’. পড়ুন দুর্ভিক্ষের পেছনে রাজনীতি পরিষ্কার হলেও হতে পারে । সাপ্লাই চেন / রিটেল সাপ্লাই চেন উন্নতি হোলে সুন্দরবনের চিংড়ি সাপ্লাই চেনের দৌলতে পৌঁছে যাবে গড়িয়াহাটের বাজারে - মালদার আম পৌঁছে যাবে সিংগাপুর , চাষি কুচো চিংড়ি আর আঁটি চুষবেন আমরা কলাপাতার ওপরে বরফের চাঙ্গড়ে সুশোভিত ল্যাংড়া আর মালাইকারী খেতে খেতে ঢেঁকি ছাঁটা চাল কেন মিড ডে মিলে দেওয়া হচ্ছেনা তার জন্য সরকারের বাপ বাপান্ত করব । কিন্তু ভুলেও হাইব্রিড ধানের চাষের বিরুদ্ধে একটিও কথা বোলবনা ।

    ভারতে ১২০ কোটি লোক কে খাওয়ানোর জন্য স্টেরয়েড দিয়ে পারফরম্যান্স বাড়ানো ব্যাড কার্ব ভর্তি হয় ধান নয় গম নতুবা আলু - বিপুল জল , বিপুল অরণ্য ধ্বংস , বিপুল রাসায়নিক সারের বিন্দুমাত্র প্রয়োজন নেই । কেবল শস্য বিচিত্র বজায় রাখুন - আমাদের দেশে একগলা জলে ধান এবং খটখটে আবহাওয়ায় রাগি / জোয়ার হওয়ার মত শস্য বৈচিত্র্য বর্তমান । দয়া করে IR8 বলবেন না ।

    একদা গ্রিন রেভলিউসনের শো কেস পাঞ্জাবের হাল ঃ-
    " Punjab is slowly turning into a graveyard for farmers. According to a study conducted by three universities, Punjabi University Patiala, Guru Nanak Dev University, Amritsar and Punjab Agriculture University, Ludhiana, more than 10,000 farmers committed suicides during past 15 years. While 4686 farmers who died between 2000-2011 had consumed poison, 2240 farmers died of other reasons, including drug addiction."
    ভারতে ৪২% জমিতে চাষবাস হয় আর পাঞ্জাবে ৮৪ % জমিতে , পাঞ্জাবে বর্তমানে ৪% অরণ্য বেঁচে আছে এবং তার ৮০% ইউক্যালিটাসের মত গাছ । ওই যে বললাম " from legume to wheat to wasteland."
  • দেবব্রত | 212.142.91.188 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:১২53874
  • Icm দা আপনি আবার মনের কথা বললেন " সারা পৃথিবীতেই এই টেকনলজি (হাই ইল্ড সিড, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ফার্মিং ইকুইপ্মেন্ট....) ব্যবহার হয়েছে ফার্মিং-এ। অনেক জায়গায় লাগামহীন অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ হয়েছে। সেই সব জায়গায় আজ বেশি সমস্যা।" টেকনোলোজি আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনলজি ভিন্ন , ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলোজিতে লাগামহীন অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ হবেই । পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটাই শর্ত ' গ্রোথ ' । আপনি শুধু আমেরিকার ' বিল বোর্ড ' গুলিতে কত পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয় তার হিসাব টা দেখবেন । অনেক দেশের সমস্ত বিদ্যুৎ চাহিদার থেকে বেশী । ১,১ বিলিয়ন গাড়ি আর প্রতিবছর 78মিলিয়ন নূতন গাড়ি যোগ হয়ে চলেছে অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগের চূড়ান্ত । তাতেও মাত্র ১% জিডিপি ফল করতে পারে বলে কোয়েটো প্রোটোকল বাতিল । সুতরাং আমাদের টেকনলজিকাল বিপ্লবের প্রয়োজন নেই -সামাজিক বিপ্লবের প্রয়োজন নতুবা সমস্যা বাড়বে বই কমবেনা । যাই হোক গৌতম বাবুর লেখা হাইজ্যাক করার জন্য আমি সমেত সব্বাইকে ধন্যবাদ ।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:১৩53834
  • কিন্তু পাঞ্জাবে গ্রিন রিভোলিউশন না হলে তো ১৯৬১-র খাদ্যসংকটে সারা দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যেত। বিশ্রী ব্যাপার হত। পাঞ্জাব ভারতের ব্রেড বাস্কেট। সোভিয়েতের যেমন ছিল ইউক্রেন, ভারতের তেমনি ছিল পাঞ্জাব।
  • dc | 132.174.185.54 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:১৮53835
  • সাপ্লাই চেন ইমপ্রুভ করলে খাদ্যের অপচয়ও কমবে, একই শস্য ফলিয়ে বেশী লোক খেতেও পাবে। ডিপ, অটোমেটেড সাপ্লাই চেন বানালে শস্যর ডাইভার্সিটিও বাড়ানো যাবে, ডিফারেন্ট টাইপের শস্য ডিফারেন্ট টাইপের কনসিউমারের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। মানে কৃষি আর কনসিউমার, দুদিকেই সেগেমেন্টেশান বাড়ানো যাবে, ডাইভার্সিফিকেশান বাড়ানো যাবে। আমি রাগি খেতে চাইলে রাগি খেতে পাবো, গোয়ার চাইলে জোয়ার, বাজরা চাইলে বাজরা, ধবধবে সাদা চাল চাইলে সেটাই, লাল চাল চাইলে লাল চাল। সেগেমেন্টেশান বাড়লে অ্যাভেইলেবল চয়েসও বাড়বে। সেজন্যই চাষের প্রোডাক্টিভিটি আর সাপ্লাই চেন, দুটো নিয়েই চিন্তাভাবনা চলছে, অল্পবিস্তর ইনোভেশনও হয়ে চলেছে।
  • debbort | 212.142.91.188 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:২০53875
  • ও হ্যা , এলেবেলে কে ' ক ' এবং প্লেন অঙ্ক কেও ।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৩০53876
  • "...টেকনোলোজি আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনলজি ভিন্ন , ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলোজিতে লাগামহীন অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ হবেই..."

    ঠিক, ...corporization of anything is more about corporate business, less about anything else; technology is just a medium....
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৪৬53877
  • এলেবেলের পয়েন্ট গুলো ঠিক, এক নম্বর তো ঠিক বটেই।

    কিন্তু ২,৩,৪ নং হল যা বলছিলাম, ভুল প্ল্যানিং, টেকনলজির অপপ্রয়োগ, প্রাইভেট কর্পের কন্ট্রোল... সর্বোপরি গভর্নমেন্ট পলিসি।

    এবং ঠিক -- "দরকার নতুন চিন্তার এবং তা প্রয়োগের সরকারি সদিচ্ছার" ।

    ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া স্থাপিত হয় ১৯৬১ সালে। ১৯৭৮ এ আরো কটি - হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার, ন্যাশনাল ফার্টিলাইজার, রাষ্ট্রীয় কেমিক্যাল ফার্টিলাইজার... এইসব রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থাও আছে.... ভারত সরকারের একটি মিনিস্ট্রি অফ কেমিক্যাল্‌স এন্ড ফার্টিলাইজার - ডিপার্টমেন্টও আছে। তারা কি করল।

    আর সবুজ বিপ্লব একমাত্র অপশন নয়, কিন্তু প্রচুর দেশ বিভিন্ন ফর্মে (নিয়ন্ত্রিত এবং সুপরিকল্পিত) এর প্রয়োগ করেছে এবং সফল হয়েছে।
  • দেবব্রত | 212.142.76.183 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৫০53836
  • " কিন্তু পাঞ্জাবে গ্রিন রিভোলিউশন না হলে তো ১৯৬১-র খাদ্যসংকটে সারা দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যেত।" না যেতনা কেন যেতনা তার জন্য অমর্ত্য সেন । বরং গ্রিন রেভেলিউসনের ফলেই পাঞ্জাবে কৃষকের দেনার দায়ে আত্মহত্যা আর ব্যাড কার্ব ভর্তি সাদা চাল ।পাঞ্জাবের ১২টি জেলায় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে জলে আর্সেনিক । ' গ্রিন রিভোলিউশন '
  • dc | 132.174.185.54 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৫৫53837
  • ইয়ে নেম ড্রপিং না করে এই নিয়ে যে বিতর্ক আছে সেটা হাইলাইট করা উচিতঃ

    To some modern Western sociologists and writers, increasing food production is not synonymous with increasing food security, and is only part of a larger equation. For example, Harvard professor Amartya Sen claimed large historic famines were not caused by decreases in food supply, but by socioeconomic dynamics and a failure of public action.[51] However, economist Peter Bowbrick disputes Sen's theory, arguing that Sen relies on inconsistent arguments and contradicts available information, including sources that Sen himself cited.[52] Bowbrick further argues that Sen's views coincide with that of the Bengal government at the time of the Bengal famine of 1943, and the policies Sen advocates failed to relieve the famine.[52]

    https://en.wikipedia.org/wiki/Green_Revolution
  • dc | 132.174.185.54 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৫৬53839
  • তাছাড়া অমর্ত্য সেন ১৯৬১ পরবর্তী গ্রিন রিভোলিউশান নিয়ে কি বলেছেন সেটাও দেবব্রতবাবু জানালে ভালো হয়।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৫৬53838
  • অমর্ত্য সেন তো খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে কিছু বলেন নি।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ মে ২০১৬ ০৭:৫৭53840
  • এই তো, ডিসি খানিক ক্লিয়ার করে দিয়েছেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন