এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ভাতের থালায় লুকিয়ে আছে সাদা শয়তান

    Gautam Mistri লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৮ মে ২০১৬ | ২০৯৭৫ বার পঠিত
  • ইংরেজী ভাষায় একটা প্রবচন আছে – “The whiter the bread, the sooner you’re dead”, অর্থাৎ রুটি (প্রকারান্তরে ভাত) যত সাদা হবে আপনি তত তাড়াতাড়ি মারা যাবেন। ভাত সাদা হবে নাতো কি লাল হবে? ভ্রূ কুচকে গেলেও প্রস্তাবটা তেমনই। কিছু কিছু দেশে লাল ভাতের কদর সাদা ভাতের চেয়ে বেশী। চীনদেশে ও থাইল্যান্ডে লালভাতের চাহিদা আছে। শ্রীলঙ্কায় পাঁচতাড়া হোটেলেও ভাত চাইলে লালভাতই পাওয়া যাবে। অন্যান্য তৃণভোজী প্রানীরা ঘাসপাতা বেছে খেলেও শস্যদানা এযাবৎ আস্তই খেয়ে এসেছে, এখনও তাই খায়। বেশী বুদ্ধিমান প্রানী হিসেবে মানুষ প্রথম কি করেছিলো জানা নেই। কালের বিবর্তনে মানুষ ক্রমশঃ ঘাস জাতীয় গাছের বীজ অর্থাৎ ধান ও গমের খোসা ছাড়িয়ে খাবারের স্বাদ পেয়ে গেল। এতে যদিও খাবার চিবানো আর হজম করা সহজ হল আর শস্যবীজের খোসার মধ্যে থাকা তেল জাতীয় পদার্থের বর্জনের ফলে শস্যবীজের অধিক সময়ের জন্য সংরক্ষনের সুবিধা হয়ে গেল। তেল জাতীয় পদার্থ মিশ্রিত শস্যদানার গুঁড়ো হাওয়ার সংস্পর্শে এলে বেশীদিন অবিকৃত থাকে না। একবিংশ শতাব্দীর উন্নত প্রযুক্তির অধিকারী মানুষের খাবারের টেবিলে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশই শস্যবীজের দখলে। প্রাতরাশের রুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, স্যান্ডউইচ বা গ্রামবাংলার পান্তা; মধ্যাহ্নভোজের ভাত বা রুটি, বিকালের জলখাবারের মুড়ি, বাদাম, চপ, কাটলেট, পিৎজা, পাস্তা আর রাতের খাবারের রুটি বা ভাত — এই গুলোই খাবারের প্রধান অংশ। সঙ্গের পদগুলো বৈচিত্র্যময় হলেও পরিমাণের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাধান্য পায় না।ভাত বা রুটি আমাদের প্রধান খাবার; যদিও পৃথিবীর কোন কোন জনগোষ্ঠীর খাবারের থালায় মাঝেমধ্যে প্রধান খাদ্য হিসেবে আলুর দেখা মেলে। তা সে চালই হোক বা গমই হোক, ঘাস জাতীয় শস্যদানার অবিকৃত গঠন একই রকম।

    বর্তমানে প্রচলিত ধান থেকে চাল বানানোর মেশিনে ধানের বাইরের খোসা (ব্রান) আর মধ্যবর্তী অংকুর বা বীজযুক্ত আবরণ (জার্ম) ছাড়িয়ে ভেতরের সাদা (এন্ডোস্পার্ম) অংশটি ব্যবহারের জন্য আলাদা করা হয়। চাল ও আটার সওদাগরেরা প্রায় ২৫ ধরণের রাসায়নিকের সন্ধান জানেন যার দ্বারা এরপরে একে আরও চকচকে, লোভনীয় ও সুস্বাদু বানানো হয়। ধান গাছের নিজের বংশবৃদ্ধির জৈবিক প্রয়োজনের অংকুরটি হল মাঝের “জার্ম” অংশটি। তাকে রক্ষা করার জন্য ও অঙ্কুরোদগমের সময় প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগায় বাইরের খোসাটি। ভেতরের সাদা যে অংশটি আমরা চাল হিসাবে বেছে নিই সেটা মামুলি ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ বর্জিত জটিল শর্করা। চালের তুষে বাইরের খোসা আর মাঝের প্রাক- অঙ্কুর (জার্ম) থাকে। ভবিষ্যতের শিশু উদ্ভিদটির বীজের (মূলতঃ প্রোটিন) পুষ্টির প্রয়োজনীয় সংকেতওয়ালা জিন এই মধ্যেকার আবরণে থাকে।বাইরের খোসায় থাকে প্রতিরক্ষার বর্ম হিসাবে ফাইবার, ভিটামিন আর প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ। মধ্যেকার এন্ডোস্পার্ম অংশ, যেটাকে আলাদা করে পরিশোধিত চাল অথবা সাদা আটা আর ময়দা খাবার জন্য ব্যবহার করা হয় সেটা নিছক শর্করা। বীজ থেকে জন্মানোর পরে সদ্য অঙ্কুরিত উদ্ভিদটির পাতা সৃষ্টির আগে পর্যন্ত (অর্থাৎ যখন নবঅঙ্কুরিত উদ্ভিদটি সালোকসংশ্লেষের বা photosysthesis মাধ্যমে খাদ্য প্রস্তুতের জন্য অপরিণত) উদ্ভিদের শর্করার প্রয়োজন মেটায় ভেতরের এন্ডোস্পার্ম অংশটি।

    শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট অপেক্ষাকৃত সস্তা আর আসক্তি উদ্রেককারী খাবার। তাই সহজে আমাদের খাবারে বড় অংশের অংশীদার হয়ে পড়ে। যত চকচকে সুদৃশ্য লম্বাদানার পালিশ করা পরিশোধিত চালের ভাত হবে, পেট ভরানোর জন্য তত বেশী পরিমানের ভাতের প্রয়োজন হবে আর তাড়াতাড়ি হজম হয়ে আবার খিদে পাবে। শর্করা জাতীয় খাবারে আসক্তি আমাদের অগোচরে ঘটে যায়। মিষ্টির দোকানের প্রতি আকর্ষন একরকমের প্রাদুর্ভাবের মত আমাদের আগ্রাস করেছে যদিও এটা আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি নয়। ঘটনাচক্রে শর্করা জাতীয় খাবারের প্রতি এই আসক্তি সচেতন পশ্চিমী দুনিয়ার প্রতিপত্তিবান নাগরিকদের চেয়ে আমাদের মত গরিব দেশগুলোর (ধনী দরিদ্র সবার) মধ্যে বেশী পরিমানে দেখা দেয়। গত শতাব্দীর আটের দশকের জনপ্রিয় হলিউডের চলচিত্র “প্রেটি উওম্যান”-এর একটা দৃশ্যের কথা প্রাসঙ্গিক। বিলাসবহুল হোটেলের পেন্টহাউসের প্রাতরাশের টেবিলে ধনী নায়ক গরীব নায়িকার সামনে সযত্নে চয়ন করে রাখা ফল, বেরি আর সসেজ-স্যালামি পুর্ণ দুটো থালা পেশ করলেন। প্রিয় নায়কের ভালোবাসা মেশানো সুষম খাবারের প্রাতরাশের থালা ঠেলে ফেলে,নায়িকা দূরে রাখা ঝুড়ি থেকে ময়দা-মাখন-মিষ্টির সংমিশ্রণে তৈরী মিষ্টি পাউরুটি তুলে নিলেন।

    আমাদের মত গরিব গুর্মোর দেশে “ভিক্ষার চাল কাড়া না আকাড়া” এই ধরণের তর্কের অবকাশ আছে। সস্তার খাবার হিসাবে শর্করা আমাদের প্রয়োজন, মুস্কিল হয় এতে আসক্তি জন্মে গেলে। শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার জন্য খাদ্যে অন্যান্য খাদ্যাংশের মত নির্দিষ্ট পরিমাণে শর্করাও প্রয়োজন। খিদে পেলে খাবারের বন্দোবস্ত তো করতেই হয়। মনে রাখতে হবে, আগের কিস্তির খাবার কেবল পেট (পাকস্থলি) থেকে জায়গা খালি করে রক্তে মিশেছে। ফলেই খিদে পেয়েছে। আগেকার খাবারের যে অংশটি তখনও খরচ করা যায়নি, কেবল রক্তে ভেসে বেড়াচ্ছে, সেটা যাবে কোথায়? খাবারে শর্করার আধিক্যে প্রথমে অব্যবহৃত শর্করা সীমিত পরিমাণে যকৃতে (লিভার) গ্লাইকোজেন হিসাবে জমা হয়। যকৃতের ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেলে, অব্যবহৃত শর্করা চর্বি হিসাবে শরীরের অপ্রিয় জায়গা গুলোতে জমা হতে থাকে। তাই পেট ভরাতে হবে এমন খাবার দিয়ে, যেটা পেটে অনেকক্ষণ থাকবে, দেরীতে হজম হবে ও দেরীতে খিদে পাবে, ইতিমধ্যে চর্বি হিসাবে জমা হবার জন্য দাঁড়ানো গ্লুকোজের লাইন লম্বা করবে না।

    পুনরাবৃত্তির দোষ এড়ানোর জন্য শর্করার গ্লুকোজে পরিণত হবার হার (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) আর গ্লুকোজে পরিণত হবার পরিমাণ (গ্লাইসেমিক লোড)-এর বিস্তারিত আলোচনা এড়ালাম। শ্বেতশুভ্র পঞ্চবিষের প্রথম পর্বে (চিনি যখন বিষ) এর আলোচনা পাওয়া যাবে। আমাদের খাবারের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শর্করা জাতীয় খাবার থেকে বেছে নিতে হবে, আর সেই শর্করা হবে তন্তু (ফাইবার), ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ জটিল শর্করা। আস্ত শস্যদানা সেই প্রয়োজন ভালোভাবেই মেটায়।যে কারণে চিনি দুষ্ট, সেই কারণে সাদা, চকচকে, সরু, লম্বা সুগন্ধিত পরিশোধিত চালও সমমাত্রায় ক্ষতিকারক। সোজা কথায় বলতে, মূলতঃ দুটি কারণে মেশিনে ছাটা চকচকে সাদা চালের ভাত, ময়দা আর বাজারে উপলব্ধ সব রকমের বেকিং করা খাবার (পাউরুটি, কেক, কেক, বিস্কুট, কুকিজ, প্যাটিস, সিঙ্গারা, নিমকি ইত্যাদি) বর্জনীয়। প্রথমতঃ এসব খাদ্যের মূল উপাদান শস্যদানার বাইরের আবরণের ফাইবার (তন্তু) ও ঠিক তার নীচের অংশের (বীজ বা র্জাম) ভিটামিন ফেলে দেওয়া হয়েছে, পড়ে রয়েছে কেবল শর্করা (empty calorie)। দ্বিতীয়তঃ, খাবারে যত পরিশোধিত শর্করা থাকবে সেটা তত তাড়াতাড়ি হজম হবে অর্থাৎ গ্লুকোজে পরিণত হবে, রক্তে চিনির মাত্রা তত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে (উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের জন্য) তন্তুবিহীন হবার জন্য অধিক পরিমাণে শরীরে গ্লুকোজ জমতে থাকবে (উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডের জন্য)। অব্যবহৃত গ্লুকোজ চর্বিতে পরিণত হতে থাকে, পরে দীর্ঘ সময়ের অভুক্ত থাকাকালীন সময়ে শক্তি যোগানোর জন্য। কিন্তু সেই অভুক্ত অবস্থার অবকাশ আর ইহ জীবনে আর হয়ে ওঠে না।

    এক বা দুই পুরুষ আগেও খাবারের থালায় ঢেঁকিছাঁটা চাল থাকতো, প্রাতরাশে চিড়ে, মুড়ি, থাকতো। বরিশালের বালাম চালের কথা শুনেছেন? লালচে ঢেঁকিছাঁটা বালাম চালের খ্যাতি আছে। ঘরোয়া এবং নিকট প্রতিবেশী দেশের সেই খাদ্যসংস্কৃতি অবহেলা করে দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা পশ্চিমী খাবারের বাছাই করা ক্ষতিকারক খাবারগুলো গ্রহণ করেছি। স্বাস্থ্যহানিকর বিস্কুট, পাউরুটি ও অজস্র বেকিং করা খাবার, চটজলদি খাবার, মেশিনে ছাঁটা সুদর্শন সুঘ্রাণযুক্ত চালের ভাত আমাদের খাবারের মূখ্য অংশ। ইদানিং কালে যে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের বাড়বাড়ন্তের কথা শোনা যাচ্ছে তার প্রধাণ কারন বিকৃত খাদ্যাভ্যাস। আঠারোশো খ্রিস্টাব্দে বিদেশে যন্ত্রচালিত ধান ও গম ভাঙা কলের আবিষ্কার হয়েছিলো। বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে সেই প্রযুক্তি আমাদের গ্রাস করে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পালটে দিয়ে। বংশ পরম্পরায় আমাদের রোগ সৃষ্টিকারী জিনের পরিবর্তন করে আমাদেরকে দুনিয়ার সবচেয়ে হৃদরোগের ও ডায়াবেটিসের মত মারণ রোগের উপযোগী করে তুলেছে। আরও কারণ আছে, তবে খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা মূখ্য। আমরা পেটে যা ঢোকাচ্ছি, তাই দিয়েই তৈরী হচ্ছে আমাদের পার্থিব এই শরীর। কখনো কখনো পরিশোধিত শস্যদানা বা তার থেকে প্রস্তুত খাদ্যবস্তুতে অতিরিক্ত ভিটামিনের অন্তর্ভুক্তির (enriched, fortified) কথা বলা হয়ে থাকে। সেটা পরিমাণে প্রাকৃতিক পরিমাণের চেয়ে কম ও মানের দিক দিয়ে সেগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের।এখন বাজার ব্রাউন পাউরুটিতে ছেয়ে গেছে, তারমধ্যে অধিকাংশই কেবল রঙ করা সাদা পাউরুটি মাত্র।

    তাহলে উপায় কি?
    গম জাতীয় শস্যদানা থেকে প্রস্তুত আটার ক্ষেত্রে পূর্ণদানা থেকে প্রস্তুত খাবার, রুটি ইত্যাদি ব্যবহারে অসুবিধা নেই। কেবল বাদামি রঙ দেখে পূর্ণদানার পাউরুটি চেনা যাবে না, প্যাকেটের ওপরে “whole grain” লেখা আছে কিনা দেখে নিতে হবে। কৃত্রিম উপায়ে পালিশ করা নয়, মোটা দানা লালচে চালের ভাতই শ্রেয়। পেট ভরানোর জন্য এই চালের ভাত পরিমাণে কম লাগে বলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। সুস্বাদু, সুদর্শন আর সুগন্ধিত নয় এই সব কারন ছাড়াও পূর্ণদানার শস্য থেকে তৈরী খাবার বেশী চিবোতে হয় বলেও অনেকের এটা অপছন্দ। মনে রাখতে হবে, এটা এগুলোর গুণ হিসাবে দেখা উচিত। বেশী চিবোনোর জন্য খেতে সময় বেশী লাগলে আমাদের ভক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রক মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস সক্ষমভাবে কাজ করতে পারে। ওজন বশে রাখায় এটা বেশ কাজে আসে। তন্তুসমৃদ্ধ আস্তদানার গমের আটা ও মোটা লালচে চালের ভাত অনেকক্ষণ পাকস্থলীতে থেকে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বহুক্ষন ধরে শক্তি যোগাতে থাকে, কৃত্রিমভাবে তাড়াতাড়ি খিদে পায় না। সঙ্গে অঙ্কুরিত ছোলা এবং ডাল (সবুজ খোসাওয়ালা মুগ, বিনস) জাতীয় খাবার থাকলে ভালো হয়। পরিভাষায় একে লেগুমস (legums) বলা হয়ে থাকে। এতে যথেষ্ট তন্তু ও প্রোটিন থাকে। পূর্ণদানার শস্যবীজকে আমরা ভালো শর্করা বলব। ভালো শর্করায় অতিরিক্ত গুণ হিসাবে পাওয়া যাবে রোগপ্রতিরোধকারী এন্টিঅক্সিডেন্টস, “ই” ও “বি” শ্রেণীর ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর বহুশৃঙ্খলের অসম্পৃক্ত স্নেহ জাতীয় খাদ্যাংশ (polyunsaturated fatty acid)।

    পরিশোধিত শস্যদানা থেকে প্রস্তুত প্রক্রিয়াকৃত খাবারে (যেমন পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, কুকিজ, চানাচুর, পাস্তা, নূডলস, পিৎজা ইত্যাদি) তন্তু ও ভিটামিনবিহীন শর্করা থাকে সেটা আমাদের শরীরে চিনির মত কাজ করে। এই ধরনের চাল বা আটা / ময়দা থেকে প্রস্তুত করা খাবার রক্তে সুগারের ও ট্রাইগ্লিসারাইডের (এক ধরনের রক্তে প্রবাহমান স্নেহ জাতীয় পদার্থ) মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ও পেটে চর্বি জমতে থাকে। এর সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায় আর ওজন বেড়ে যাবার জন্য হাঁটু ও অন্যান্য অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ বা অতিমাত্রায় প্রকট ধরণের নিরাময়ের অযোগ্য বাতের রোগ (osteo-arthritis) সৃষ্টি করে। বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম ডেভিসের মতে পরিশোধিত শস্যদানা একটি নিখুঁত মধুমাখা বিষ, যেটা নেশা ধরায় আর তিল তিল করে নিশ্চিতভাবে হৃদরোগ আর ডায়াবেটিসের মত অনিরাময়যোগ্য রোগের দিকে ঠেলে দেয়। সাদা পাউরুটির দুটি স্লাইস ছ’চামচ চিনি আর একটা চকলেটের বারের চেয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা বেশী পরিমাণে বাড়ানোর ক্ষমতা ধরে।

    আমাদের প্রপিতামহগণ হলদে সোনালি গমের আটা আর লাল মোটাদানার ভাতে ক্ষুন্নিবৃত্তি করে স্বাস্থ্যখাতে নিয়ন্ত্রিত খাতে বেশ বেঁচে বর্তে ছিলেন। বিগত পঞ্চাশ বছরে জিনের ওপর খোদকারী করে উচ্চফলনশীল খর্বাকৃতি শস্যের বিপ্লবের মাধ্যমে স্বল্পসময়ে অনেক বেশী করে শস্যদানা উৎপাদন করে শস্যভান্ডার গড়ে তুলেছি। ফলে অদূর ভবিষ্যতে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা এড়ানো গেছে। অধিক ফলনশীল শষ্যের স্বাস্থ্যের উপর নিরাপত্তার নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা করা হয়নি। নতুন ধরণের এই গমে “পরিবর্তিত ধরণের গ্লায়াডিন (gliadin)” নামে একধরনের প্রোটিন থাকে যেটা গম জাতীয় খাবারের গ্লুটেন (gluten)-এর সমগোত্রীয়”। গ্লুটেন এন্টেরোপ্যাথি নামে একধরনের আন্ত্রিক রোগ ছাড়াও গ্লায়াডিন আমাদের মস্তিষ্কে আফিং (morphine) জাতীয় রাসায়নিকে রূপান্তরিত হয়ে “ভালো লাগা” (feel good effect) ধরনের নেশা ধরায় ও খিদে বাড়ায়। দেখা গেছে, পরিশোধিত সাদা আটা ও ময়দার খাবার দিয়ে পেট ভরাতে হলে দৈনিক প্রায় ৪০০ কিলোক্যালোরি বেশী খাওয়া হয়ে যায়।২০০৪ সালের এক গবেষণায় (Ludwig 2004, Lancet), লাল আটার চেয়ে সাদা আটায় ইঁদুরদের পেটে ৭১ শতাংশ বেশী চর্বি জমে যায়।

    দীর্ঘমেয়াদী ভাবে সাদা শস্যদানা খাওয়ার জন্য খাবার অব্যবহিত পরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উচ্চমাত্রায় পৌঁছে যায়।এমতাবস্থায় রক্তের বিশেষ কিছু প্রোটিনের সাথে শর্করার বিক্রিয়ায় (glycation) “এডভান্সড গ্লাইকেসন প্রোডাক্টস (AGP)” তৈরী হয়ে যায়। এডভান্সড গ্লাইকেসন প্রোডাক্টস রক্তনালীর প্রদাহের (inflammation) এক অন্যতম কারণ। অধুনা প্রকট হয়ে আত্মপ্রকাশ করা বিভিন্ন হৃদরোগ ও সেরিব্রাল স্ট্রোকের কারণ হিসাবে পরিশোধিত শস্যদানা একটা প্রধান নিয়ন্ত্রক। এই ধরনের শ্বেতসার (শর্করা, কার্বোহাইড্রেট) খাবার ফলে উদ্ভুত উচ্চ মাত্রার রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রন করার জন্য অধিক মাত্রায় ইনসুলিনের ডাক পড়ে। দীর্ঘসময় অতিমাত্রায় ইনসুলিনের প্রভাবে শরীরের কোষসমূহে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে (insulin resistance)। এর অবধারিত ফল হিসাবে পেটে এক বিশেষ ধরনের ক্ষতিকারক সক্রিয় চর্বি জমতে শুরু করে। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ হল এর অন্তিম পরিণতি।

    আমাদের খাবারের মূখ্যভাগ হিসাবে অপরিশোধিত শস্যদানার ফাইবার বা তন্তু রক্তে চিনির মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়ানোর সুফল ছাড়াও আরও উপকার করে। মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে। ঝাড়ুদারের ভূমিকা পালন করার মত পৌষ্টিক তন্ত্রের রোগজীবানু ও অন্যান্য ময়লা সাফ করে। বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়। অন্ত্র থেকে রক্তে কোলেষ্টেরলের মিশ্রণ কমায়। অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগের প্রকোপ হ্রাস করে। শস্যদানা সমৃদ্ধ খাবার রক্তে অম্লতা বাড়িয়ে দেয়, যেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য হাড়ের থেকে ক্যালসিয়ামের ডাক পড়ে। হাড়ের ক্যালসিয়াম কমে গেলে হাড় ভেঙ্গে যাবার প্রবনতা বেড়ে যায়।

    খাবারের শস্যদানার নির্বাচনের সময় তার সঙ্গে অংকুরিত ডাল ও ছোলা জাতীয় খাবার (স্প্রাউট, লেগুম) অন্তর্ভুক্ত করলে বিশেষ লাভ হবে। এতে প্রয়োজনীয় ফাইবারের সাথে সাথে ভিটামিন ও বেশ খানিকটা প্রোটিনও পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক ভিটামিন কৃত্রিম রাসায়নিক উপায়ে প্রস্তুত ভিটামিনের চেয়ে বেশী কাজে আসে। অংকুরিত শস্যদানার শর্করা খাবারের থালায়ই মলটোজে পরিণত হয়ে হজমের প্রথম ধাপ পেরিয়ে থাকে। বদ হজমের সম্ভাবনা নির্মূল করে। খাবারে শস্যদানার সাথে কাঁচা বাদাম জাতীয় খাবার মিশিয়ে খাবার প্রস্তুত করলে বিশেষ উপকার হয়। এতে রক্তে চিনির মাত্রা কমে ও উপকারী অসম্পৃক্ত ফ্যাট পাওয়া যায়, যেটা রক্তের ক্ষতিকারক লঘু ঘনত্বের কোলেস্টেরল কমায়।

    খাবারে শস্যদানা মুখ্য অংশ অধিকার করে থাকলেও এর অপরিহার্যতা সব বৈজ্ঞানিকগন স্বীকার করেন না। কৃষি-প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আগে আদিম মানুষ শস্যদানা ছাড়াই জীবিকা নির্বাহ করত। শস্যদানার এই বিকৃত রূপে অভ্যস্ত হবার পিছনে ব্যবসায়িক ষড়যন্ত্র আছে। পরিশোধিত শস্যদানায় মধ্যেকার জার্মের অংশ না থাকার জন্য গুদামে আর খাবারের দোকানের আলমারিতে বহুদিন পর্যন্ত শস্যদানা সংরক্ষন করা যায়। আসলে আমরা শস্যদানা ছাড়াই বেশ সুস্থ থাকতে পারি। সেটা বড় বিপ্লব। যতক্ষন না সেটা সম্ভব হচ্ছে, শস্যদানার পরিমাণ কমানো ও তার গুনমান পরিবর্তন করা জরুরি। রান্নাঘরে এই বিপ্লব করতে পারলে আমাদের শরীর আমাদের প্রচেষ্টা কে অনেক ধন্যবাদ দেবে। “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে”-প্রবচন টা ভুলে ভরা। কোন মা যেন এটা বিশ্বাস না করে। ইস, আমার স্কুল জীবনে আমাকে যদি এ সব কথা বিশ্বাস জাগানোর মত করে কেউ বলতো!

    একনজরে
    পূর্ণদানার শস্যবীজের উপকারিতাঃ
    ১। ত্রিশ শতাংশ সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনা কম।
    ২। পঁচিশ শতাংশ ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কম।
    ৩। ত্রিশ শতাংশ হৃদরোগের সম্ভাবনা কম।
    ৪। স্থূলতা হ্রাস।
    ৫। হাঁপানির প্রকোপ কম।
    ৬। বিভিন্ন প্রদাহজনিত (inflammatory disease) রোগের বোঝা কম।
    ৭। রক্তচাপ বশে রাখা সম্ভব।
    ৮। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে চিরতরে মুক্তি।
    ৯। বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম।
    ১০। সুস্থসবল দাঁত ও মাড়ি।

    যে কারণে পরিশোধিত শস্যদানা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে
    ১। তন্তু বা ফাইবার ও ভিটামিন বর্জিত
    ২। সাদা আটা ও ময়দায় ক্ষতিকারক গ্লুটেন ও গ্লায়াডিনের উপস্থিতি
    ৩। সুদৃশ্য ও সুগন্ধযুক্ত করার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিকের ও ব্লিচিং পদার্থের ব্যবহার
    ৪। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডের বৈশিষ্টের জন্য খাবার সাথে সাথে দ্রুত ও উচ্চমাত্রায় রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি। এর ফলে প্রথমের দিকে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি ও পড়ে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা হ্রাস।

    পরিশোধিত শস্যদানার বিকল্পঃ
    ১। পূর্ণদানার গমের আটা
    ২। বাদামি পাউরুটি, বহুরকমের শস্যদানা (multi-grain) থেকে প্রস্তুত (মাখন বা ভোজ্যতেল বিহীন) (নরম রং করা বাজার ছেয়ে যাওয়া ব্রাউন ব্রেড নয়)
    ৩। অপেক্ষাকৃত মোটাদানা ও লালচে চালের ভাত (কৃত্রিম উপায়ে পালিশ না করা)
    ৪। চিড়ে, মোটা চালের মুড়ি
    ৫। অংকুরিত ছোলা ও খোসাসহ ডাল
    ৬। ভুট্টা, বাজরা, জোয়ার, ওট

    গৌতম মিস্ত্রী, কোলকাতা, ২৮শে মে, ২৯১৬
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৮ মে ২০১৬ | ২০৯৭৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 132.174.180.192 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ০৯:৪০53897
  • আমার মনে হয় কিছুটা গর্মেন্টের রেগুলেশান থাকা উচিত, কিছুটা পাবলিক অ্যাওঅ্যারনেস থাকা উচিত, আবার বিগ ক্যাপিটালেরও ইনভেস্ট করা উচিত। মানে আমি তো ক্যাপিটালিস্ট, তাই এভাবেই দেখি। এগ্রিকালচার নিয়ে ব্যাবসা করা খারাপ কিছু মনে হয়না, যতক্ষন সরকার তার রেগুলেটরি রোল প্লে করছে।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ০৯:৪৯53898
  • স্বর্ণেন্দু,
    এই যে Nature ম্যাগাজিন থেকে একটা লিংক দিলাম -
    ...
    Armed with misinformation, debaters have taken to the streets, the supermarkets and social media. With a topic as sensitive and dear to people as the food they eat and give to their children, those who play to the fears, concerns and uncertainty surrounding GM crops often seem to have the upper hand. And the fears are entwined with mistrust of the seed companies. Supporting GM crops can seem a thankless job: it is worthwhile to stand up for good science and the promise that it holds, but defending profit-hungry corporations feels less rewarding.

    Still, there is reason to stand up for the continued use and develop­ment of GM crops. Genetic modification is a nascent technology for which development has moved very quickly to commercialization. That has forced most research into the for-profit sector. Without broader research programmes outside the seed industry, developments will continue to be profit-driven, limiting the chance for many of the advances that were promised 30 years ago — such as feeding the planet’s burgeoning population sustainably, reducing the environmental footprint of farming and delivering products that amaze and delight. Transgenic technologies are by no means the only way to achieve these aims, but the speed and precision that they offer over traditional breeding techniques made them indispensable 30 years ago. They still are today.

    http://www.nature.com/news/fields-of-gold-1.12897
    Fields of gold
    Research on transgenic crops must be done outside industry if it is to fulfil its early promise.
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ০৯:৫৫53899
  • নেচার-এ GM ক্রপ্‌স্‌ নিয়ে এই স্পেশাল সংখ্যার কিছু লেখা পড়া যাবে এখানে, অনেকগুলো আর্টিক্‌ল আছে। ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিক- ধারাবাহিক ভাবে বের করছিল ওয়ার্ল্ড ফুড নিয়ে।

    GM CROPS: PROMISE AND REALITY

    The introduction of the first transgenic plant 30 years ago heralded the start of a second green revolution, providing food to the starving, profits to farmers and environmental benefits to boot. Many GM crops fulfilled the promise. But their success has been mired in controversy with many questioning their safety, their profitability and their green credentials. A polarized debate has left little room for consensus. In this special issue, Nature explores the hopes, the fears, the reality and the future.

    http://www.nature.com/news/specials/gmcrops/index.html?WT.ec_id=NEWS-20130507
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১০:০১53900
  • আর হ্যাঁ, গ্রিন রিভোলিউশন তথা GM ক্রপ্‌স্‌ - এ নিয়ে স্বর্ণেন্দু বা দেবব্রত-র স্ট্রং রিঅ্যাকশনে আমি একটুও আশ্চর্য হই নি --- এটা সাংঘাতিক পোলারাইজ্‌ড্‌ ডিবেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপেই বোধহয় কোনো সিড রিসার্চ ফেসিলিটিতে ভাঙ্গচূড় পর্যন্ত হয়েছিল শুনেছিলাম। আর, ইস্যুটি নায্য কারণেই খুবই সেনসিটিভ্‌। কিন্তু, দুদিকেই শুনতে হবে।
    নেচার বা ন্যাটজিও বা অন্যান্য ম্যাগজিনের আর্টিক্‌ল্‌ গুলো পড়লে সব রকম ভিউ দেখা যাবে।
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১০:০৪53901
  • ছাগল তো লিখিনি আমি কাউকে, আমি সিপিয়েম সমর্থক নাকি?
    যাই হোক, চাড্ডি লিখেছি, আর লিখবো না... কিন্তু হতাশ লাগে বিশ্বাস করুন... শিক্ষিত মানুষ যারা এক মুহূর্তে গুগল করে আমি যা বলছি তার স্বপক্ষে একগাদা জিনিস কয়েক সেকেন্ডে দেখতে পাবেন তাদেরও এই জেগে ঘুমনো দেখে হতাশ লাগে, কারণ যে চাষিরা এইগুলো চাষ করছেন, যাদের এই সংক্রান্ত শিক্ষা বাঁ এগুলো জানার রিসোর্স কোনটাই নেই তাদের না বোঝা তো খুবই স্বাভাবিক এই ভেবে। যদিও আমার এই ভাবনাও আমার টিপিকাল শহুরে মধ্যবিত্ত মানসিকতার ফল অবশ্য, কারণ সত্যিই তো এত রিসোর্স থেকেও যা আপনারা বুঝতে চাইছেন না, মুখ্যু চাষি এতসব ছাড়াই এমনিই বোঝেন, দেনার দায়ে, খিদে পেটে... কিন্তু অসহায়ও, কারণ জোট বাঁধার কথা দুরে থাক, আমার-আপনার মত ভদ্রলোকেরা তাদেরকে শত্রুটা কারা সেটাও চিনিয়ে তো দিচ্ছিই না, বরং গুলিয়ে দিচ্ছি...

    "science marches on." ---- এই নিয়ে তো আপত্তি করিনি dc বাবু, কিন্তু সায়েন্স একটি সমসত্ত্ব গোল-গোল ভাল ভাল জিনিস নয়, Science ও science এর ক্যাম্প division খুবই স্পষ্ট, আশা যে আরও স্পষ্ট হতে থাকবে আগামীতে...big capital তার স্বার্থে science এর প্রোগ্রেস আগেও রুখেছে, এখনো রুখছে, তাদের সায়েন্সে ফান্ডিং এর আড়ালে বস্তুত পেইড প্রোপাগ্যান্ডা মেশিনারি চালায়... সেগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলুন...
    এইটা বুঝুন যে science marches on not because of the big capitals, but in spite of them.....আর সেইটা সুনিশ্চিত করতেই আমাদের চোখকান খোলা রেখে পক্ষ নেওয়া জরুরী।

    agriculture ও environment এ যারাই big capital এর স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন কাজ করছেন, করেন, করবেন ভাবছেন তারা massive systemic discrimination face করেন। ঐ যে lcm লিখলেন, "কই সাথে সায়েন্টিফিক রিসার্চের জন্য তাদেরই ফান্ডিংএর দিকে তাকিয়ে থাকা" ---- যারা এসবে রিসার্চ করেন তারা এদিকে তাকিয়ে থাকেন এ ধারণা ওনার কোথা থেকে হল উনিই বলতে পারবেন, বোধহয় উনি শুধু তাদেরকেই scientist ভাবেন ( that would also explain his conviction/conclusions )..... কিন্তু তারা তাকিয়ে থাকতে পারেন না, কারণ থাকলে পাবেন না... যেটা সবচেয়ে ক্ষতিকর সেটা হল state funding ও এদের দিয়ে বহুলাংশে নিয়ন্ত্রিত, তাই ব্যাপক discrimination face করবেন সবরকমভাবে এটা জেনেই
    তারা কাজ করে যান ।

    "যদি বিষ খেয়ে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যায়, যেমন তেমন বেড়ে যাওয়া নয়, প্রায় ১৫-২০ বছর, " --- এইটা পুরো নির্মল আনন্দ, রামছাগলের ও দাড়ি, রবীন্দ্রনাথের ও দাড়ি কেস। গড় আয়ু বিষ খেয়েই বাড়লর পিছনে যুক্তি কি? ঐতিহাসিক সময়কালের সমাপতন শুধু? আর একই সময়ে ইনইক্যুয়ালিটি বেড়েছে বহুগুণ, পল্যুশন বেড়েছে বহুগুণ, এবং সেগুলো এই বিষ চাষের সাথে কোরিলেশনের যুক্তিও আছে সেইগুলো?
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১০:১৪53902
  • না স্বর্ণেন্দু, বলছি এত গাদা গাদা বিষ খেয়ে মানুষ বছরের পর বছর বেঁচে থাকে কি করে।
    নিঃসন্দেহে কিছু সাইড এফেক্ট আছে প্রমাণিত হয়েছে, এবং কিছু জিনিসের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। কিন্তু, সবুজ বিপ্লবের ফলে সব বিষাক্ত খাবারে বাজার ছেয়ে গেছে - এইটা হল স্ট্রং রিঅ্যাকশন।
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১০:১৭53903
  • আর lcm,
    আপনি এত balanced view তে আগ্রহী যখন ( এই balanced view এর rhetoric আগেও শুনেছি, শুনলেই মজা লাগে, যেন impartially objectively both side এর বক্তব্য দেখা মানেই আপনার conclusion টাও দু-পক্ষের মাঝামাঝি হতে হবে, কোন এক পক্ষের দিকে conclude করলেন কি আপনার ' strong reaction' আর impartial objective conclusion হতে পারে না, mere passionate propaganda ও আপনার judgment clouded হয়ে গেল ) তখন green revolution দিয়ে সারা পৃথিবীর জিন ব্যাঙ্ক লুঠের কথা এলনা কেন বলতে পারেন? IRRI এর seed bank এ প্রায় ১ লক্ষ প্রজাতির ধান আছে, যা agro-giant রা তাদের GM-crop research এ কাজে লাগায়, বাকিদের আওতার বাইরে, আপনি তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে সেগুলো আপনার হাতের বাইরেই থেকে যাবে... সবই এশিয়ায় green revolution এর সময়ে collected, সারা পৃথিবীর প্রায় ৮০০০ বছরের ধান চাষ ও selective breeding এর ফল, তাদের exclusive ownership এ।

    আপনার balance এর পাল্লায় এই তথ্যটা এতক্ষণে একবারও দেখলুম না তো!!!
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১০:৩১53904
  • ব্যালান্স্‌ড নয়, বলতে চেয়েছি সব দিকই শুনলে ক্ষতি কিছু নেই।

    হ্যাঁ, প্রচুর ভ্যারাইটির সিড, এবং ডিএনএ অল্টারেশনের পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলে প্রজাতির সংখ্যা তো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এত অসংখ্য ভ্যারাইটি, সব টেস্ট করতে সময় লাগে। ভালো করে টেস্ট না করে বড় কোম্পানি মার্কেটে নামিয়ে দেয় এবং ডেভলপিং কান্ট্রিগুলোকে অনেক সময় টেস্টিং গ্রাউন্ডের মতন ইউজ করে। এ সবই ঠিক। বড় কোম্পানি এমন করে।
    যেমন, কিছু ড্রাগ টেস্টিং এর বিগ ফার্মাগুলো গরীব দেশে টেস্ট করায়।
  • dc | 132.174.180.192 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১০:৫৭53905
  • সায়েন্স একটা গোলগাল মনোলিথিক এজেন্সি না, এই ব্যাপারে একমত। সেইজন্যই তো ডিবেট, এক্সপেরিমেন্টেশান, এগুলো দরকার আর কাম্য।
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১১:৫৯53906
  • প্রজাতির সংখ্যা তো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছের কথা বলিনি, এই এক লক্ষ প্রজাতির ধান সবই গ্রিন রেভোল্যুশনের আগের... ৮০০০ বছরের মানুষের ধান চাষের অভিজ্ঞতা ও সিলেক্টিভ ব্রিডিং এর মাধ্যমে তিল তিল করে তৈরি জ্ঞানভাণ্ডার, যার সবটা গ্রিন রেভোল্যুশনের নামে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের টাকা ও প্রত্যক্ষ মদতে তৈরি IRRI লুটে নিয়েছে, যাতে চাইলেও আর তারা ( অর্থাৎ মনসান্টোরা ) ছাড়া কেউ সে নিয়ে গবেষণা না করতে পারে।

    দেবলদার সাথে কথা হয়েছে এ নিয়ে বহুবার, গ্রিন রেভোল্যুশনের আগে ওনার এস্টিমেট ভারতে নিয়মিত চাষ হওয়া ধানের প্রজাতির সংখ্যা ছিল ১০,০০০ + , এবং সেটা gross underestimate হতে পারে। গ্রিন রেভোল্যুশনের চক্করে বিশাল অংশে exclusively IR8 চাষ হতে থাকে ( এখনো এরই নেক্সট জেনেরেশন এর ধান, যেমন IR36 চাষ হয় ) , বাকি বহু প্রজাতি সিমপ্লি হারিয়ে গেছে ( তাদের বীজ আজ শুধু লুঠেরাদের সিন্দুকে )। এর মধ্যে বেশিরভাগ প্রজাতি ভীষণভাবে adapted local condition এর সাথে, যেমন পশ্চিম ভারতের কম জল ও আদ্রতা লাগে এমন বহু প্রজাতির ধান।

    দেবলদা এই কাজটাই করেন, ভারতের নানান জায়গায় খোঁজ পেলেই যান, যে চাষিরা কোন প্রজাতি এখনো স্মল স্কেলে চাষ করেন, বীজ সংগ্রহ করেন ও 'বসুধা' য় সেই বীজ চাষ করে বাঁচিয়ে রাখেন। এইভাবে preserve করার technical নাম, in-situ preservation of lineages। লুঠেরাদের seed bank এর সাথে তফাত হল, ঐগুলো যেহেতু চাষ হয় না, তাই সেগুলোর আর evolution হচ্ছে না, lineage গুলো frozen in time, তাদের genetic modification এর কাঁচামাল এখন শুধু।
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১২:০৭53907
  • প্রসঙ্গত পশ্চিমবঙ্গের বসুধা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল, এখন আবার খোলার চেষ্টা করছিলেন, এখনো fully operational নয় বোধহয়, উড়িষ্যারটা চলছে। আর না যেতে পারলেও ওনার সাথে কথা বললেও অনেক কিছু জানা যাবে এ নিয়ে।

    big capital এর trumpet তো বেজেই চলেছে, যাদের টাকার জোর কম তাদের কথাটাও শুনতে হলে যে একটু কান পাততে হবে lcm বাবু, শুধু Nature এর পাতায় দেখলে হবে না যে !
  • dc | 132.174.180.192 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১২:১৮53908
  • এটা মনে হচ্ছে খুব ভালো উদ্যোগ। গ্রিন রেভোলিউশান, জিএম ক্রপ, ইন-সিটু প্রিসার্ভেশান অফ লিনিয়েজ, এই সব রকম এক্সপেরিমেন্টই করে চলা উচিত। ভবিষ্যতে যেটা সফল হবে সেটাই আমরা গ্রহন করবো।
  • দেবব্রত | 212.142.103.9 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ১২:৪৫53909
  • দেখুন সাপ্লাই চেন টা ঠিক করতে পারলেই এইসব খাদ্য সমস্যা , ভুখমারি সমাধান হয়ে যাবে । আর মোদী সাহেব তো কিসব কৃষাণ মান্ডি করছেন শুনলাম , তা ছাড়া চাষি কাশ্মীরের আপেল , সিকিমের এলাচ এবং বাঙলার ঢেঁকি ছাঁটা চাল , সুন্দরবনের চিংড়ি ড্রোনের মাধ্যমে ডাইরেক্ট বাড়িতে পৌঁছে দেবেন শুধু ওই নেটওয়ার্ক টি করা বাকি । ( কে দেয় এনাদের ?)

    অন্যদিকে এক বিঘা'য় ধান তৈরি করতে খরচ এবং সরকারী সংগ্রহ মূল্যের ফারাকের কারনে চাষি ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন ,দক্ষিণবঙ্গের বিপুল ধান চাষের জমি মাছ চাষের জমিতে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে ,(একটু বানতলা পার করে বাসন্তী হাইওয়ের দুদিকে তাকাবেন ) উত্তরবঙ্গে চাষের জমিতে চা বাগান গজাচ্ছে , সিকিমে ৮০% ধান /ভুট্টা চাষের জমি এলাচ খেতে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে , পেঁয়াজ চাষি বাজারে ১ টাকা কিলো দাম পাওয়ায় গন আত্মহত্যা করছে , পাঞ্জাবে ১৯৬৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত চাষি মাত্র ১৯% বেশী দাম পেয়েছে গম উৎপাদনে ,অন্যদিকে খরচ বেড়েছে ৯০%, আর বাবুদের মাইনে ১৫০% শেয়ার মার্কেট ক্রাশ করলে জেটলি কেঁদে ভাসাচ্ছেন আর কেবলমাত্র মধ্যপ্রদেশে ১৫০০০ চাষি সরকারী হিসাবে আত্মহত্যা করেছে বিগত ১০ বছরে ।

    অনেক হয়েছে গ্রিন রেভলিউসনের বাধ্যবাধকতার গল্প , না খেয়ে সব মরে যেত নাকি , ১৯৬২ চিনের সাথে যুদ্ধ ,১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ ,নেহেরু -মহলানবিশের উন্নয়নের উন্মাদনা এবং ব্যাপক কালোবাজারি ভুলে গেলেন ? ১৯৫৯এ বলা হয়েছিল ভাই কৃষি উৎপাদন একটু দেখুন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এবং কৃষি উৎপাদনের হারে কিন্তু সমতা নেই দুর্ভিক্ষ কিন্তু আসন্ন - কিন্তু কে শোনে কার কথা -ভূমী সংস্কার করতে হত তো , জমিদারের দল কংগ্রেস তা করে কি উপায়ে ? গ্রিন রেভলিউসনের শো কেস পাঞ্জাবের চাষের জমি ভারতের মাত্র ৬% , এই নগণ্য জমি দ্বিগুণ নয় চতুর্গুণ উৎপাদন বাড়ালেও ভারতের খাদ্য সমস্যা মেটাতে পারতোনা ,গ্রিন রেভলিউসনের সাফল্যের গল্প অতিকথন , কিন্তু ক্ষতিকর প্রভাব ভয়ঙ্কর - তাহলে খাদ্য সমস্যা মিটল কি করে ? ভালো বর্ষা ,চাষিদের পরিশ্রম এবং স্টেরয়েড দিয়ে পারফরম্যান্সের সমন্বয়ে ।

    বিগত চার বছরে ভারতে ৭,৯০,০০০ হেক্টর কৃষিজমি থেকে চাষ উঠে গেছে ,অত্যাধিক সার , কীটনাশক প্রয়োগে জমি হয়ে পড়ছে অ্যাসিডিক ,ফলনের মাত্রা কমে যাচ্ছে দ্রুত, খাদ্যে কমে যাচ্ছে খাদ্যগুণ ,কেমিকাল ইনটেনসিভ ইয়েল্ড /একর কৃষির দিক নির্দেশ অগ্রাহ্য করছে খাদ্যগুণ/একর এর সম্পর্ক ,ব্যাড কার্ব ভর্তি চাল /গম ডেকে আনছে নানাবিধ অসুখ - এক কথায় আত্মহত্যার গ্যারিন্টিড পথ । কৃষি এই রকমই চলবে আর ঢেঁকি ছাঁটা চাল খেয়ে স্বাস্থ্য কিনবো ৫% লোকের পক্ষে সাময়িক সমাধান হতে পারে কিন্তু ১৫০ টাকা কিলো ডাল ২ টাকা কিলো পেঁয়াজ বেচে তো আর কৃষক খেতে পারবেনা -সুতরাং ওনাদের জন্য থাক পুস্টিহীন স্বাদ হীন আর্সেনিক যুক্ত গম এবং ব্যাড কার্ব ভর্তি চালের যোগান । জয় বিজ্ঞান ।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০২:২৬53931
  • শুনলাম, কেরালাও নাকি ১০০% অর্গ্যানিক হয়ে গেছে বা শিগ্গিরি হতে চলেছে। মিজোরাম আর অন্ধ্রপ্রদেশ ও পিছিয়ে নেই।

    সিকিম নিয়ে সিকিনী ভাল বলতে পারবে। সিকি, সময় পেলে একটু লিখোনা।

    এখানে কিছু রয়েছে ঃ
    https://foodrevolution.org/blog/organic-food-sikkim/

    http://www.sikkimorganicmission.gov.in/

    কোন রাসায়নিক না দিলে, সব্জির স্বাদ যে কত বদলে যেতে পারে, নিজে করে না দেখলে বিশ্বাস হত না। মাটি, পরিবেশের ক্ষতির কথা যদি ছেড়েও দি। অন্য কিছুর কথা ভাবতেই হবেনা ( ভাবাটা বেশ খিল্লি ও খোঁচাযোগ্য ব্যাপারও), নিজেদের ইমিডিয়েট বেনিফিটের জন্যও তো লোকজনের এগুলোর ওপরে জোর দেওয়া উচিত ! এগুলোকে প্রচলিত কৃষিতে ব্যাগড়া না ভেবে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য বিকল্প হিসেবে ভাবা।
  • dc | 132.164.227.1 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০২:৫৪53932
  • অর্গানিক ভেজিটেবিল এর স্বাদ সত্যি ভালো, এনিয়ে কোন দ্বিমতের অবকাশ নেই। আগে কিছু সুপারমার্কেটে আলাদা অর্গানিক সেকশান থাকতো, তবে আজকাল তো দেখছি আলাদা অর্গানিক ভেজিটেবিল স্টোরও খুলেছে। আমাদের বাড়ির কাছে আন্নানগরে এরকম দুয়েকটা স্টোর আছে, ওগুলোতে মাঝে মাঝে যাই। তবে অর্গানিক সব্জির দাম খুব, সবসময়ে খাওয়ার মতো টাকা এখনো হয়নি ঃ(
  • dc | 132.164.227.1 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:০০53933
  • আমি যেটা চেষ্টা করি, অর্গানিক সুপারস্টোর থেকে ফল বেশী কিনি। zespri ব্র্যান্ডের কিউইফল নাকি খাওয়া খুব ভালো, তাছাড়া স্ট্রবেরি, আপেল কলা কমলা গ্রেপ হ্যান ত্যান আরও যা ফল আছে সেগুলো কিনি। আর মাঝে মাঝে মাংস আর ডিম কিনি। সব্জি খুব বেশী কিনিনা, সেগুলোর হেব্বি দাম - আলুর দাম তো বোধায় নব্বুই-একশো টাকা কিলো, অতো দাম দিয়ে কেনা পোষয় না।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:০৬53934
  • সেটা নিয়েই তো এত কথা। গ্রীন ক্যাপিটালিজম তো সেখান থেকেই এসেছিল।

    এসবের দাম এত বেশি কেন হবে, সবার জন্য ( এবং সেই সবার মানে, সবার, শুধু আমার আপনার নয়) এসব কেন হবেনা ইঃ।
  • dc | 132.164.227.1 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:১৫53935
  • অর্গানিক ফার্মিং বেশী বেশী করে হওয়া নিয়ে তো আমার কোন আপত্তি নেই! আমার মতে সবরকম পদ্ধতি বা টেকনোলজিই ট্রাই করে দেখা উচিত, যেটা কাজে দেবে সেটাই অ্যাক্সেপ্ট করা উচিত। এক সময়ে গ্রিন রিভোলিউশান কাজে দিয়েছিল, দুর্ভিক্ষ এড়ানো গেছিল, কিন্তু সেই গ্রিন রিভোলিউশানেই যে আটকে থাকতে হবে তা মোটেও না। নতুন নতুন টেকনোলজি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করে চলতে হবে, যেমন অর্গানিক ফার্মিং, জৈব সার, জিএম ক্রপ ইত্যাদি। যেটা কাজে দেবে সেটা গ্রহন করা হবে। আর রিটেলে সাপ্লাই চেনের মতো এগ্রি বিজনেসেও সাপ্লাই চেন তৈরি হলে ফার্ম প্রোডিউস আরো সহজে কনসিউমারের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। এই কাজটা অ্যামাজন বা বিগ বাস্কেট হয়তো অল্প একটু করছে, তবে আমার মনে হয় এগ্রি ফোকাসড প্রাইভেট প্লেয়ারদের দরকার আছে।
  • এলেবেলে | 11.39.56.125 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:১৭53962
  • @lcm , উঁহু গোলপোস্ট সরাবেন না । ‘প্রতি পাঁচসালা হিসাব, জমির পরিমাণ, জনসংখ্যা এবং হেক্টর পিছু শস্যের উৎপাদন’ চেয়েছি । একটা, শুধু এই একটা বিষয়ে সঠিকটা জানতে পারলেই আমার বাকি সব পয়েন্ট withdraw করে নেব ।

    আমার পোস্টের পর গুরুরই অন্য একটা টইয়ে এটা চোখে পড়ল —

    “১৯৭০-৭১ সালে মাত্র পাঁচ মিলিয়ন হেক্টর থেকে শুরু করে ১৯৮২-৮৩ সাল নাগাদ ১৮ মিলিয়ন হেক্টরেরও বেশি অর্থাৎ মোট ধান চাষের জমির প্রায় অর্ধেক জমি উচ্চ ফলনশীল জাত চাষের আওতায় আনা হয়েছিল...সুতরাং এই শস্য বর্ধিত সেচ এবং বাড়তি এনপিকে (এনঃ নাইট্রোজেন, পিঃ ফসফরাস, কেঃ পটাশিয়াম) সারের একটা ব্যাপক অংশের সুবিধা পেয়েছিল। কিন্তু, উচ্চফলনশীল জাতের আওতায় আসা বাড়তি এলাকার তুলনায়, এবং বাড়তি সার ও সেচের তুলনায় ধান উৎপাদন বেড়েছে কম। উল্লিখিত সময়কালে (১৯৭০-৭১ থেকে ১৯৮২-৮৩) ধান উৎপাদন ৪২.২৩ মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬.৪৮ মিলিয়ন টন। এটা যদি ধরেও নেওয়া হয় যে উচ্চফলনশীল জাত ছাড়া অন্য জাতের ধানের উৎপাদনে কোনো বৃদ্ধি হয় নি এবং যাবতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি হয়েছে কেবল মাত্র উচ্চফলনশীল জাতের জমিতে, তাহলেও আমরা দেখছি ১৩ মিলিয়ন হেক্টর জমি জুড়ে উচ্চ ফলনশীল জাতের চাষ প্রসারিত করে প্রায় ৪ মিলিয়ন টন বাড়তি ফলন পাওয়া গেল। অন্য ভাবে বললে, উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহার করে প্রতি হেক্টরে ০.৩১ টন বৃদ্ধি হলো। এটা তুলনামূলকভাবে ক্ষুদ্র প্রাপ্তি যেটা এমনকী ব্যায়বহুল উচ্চ ফলনশীল জাত চাষের কার্যক্রম এবং তার পরিকাঠামো ছাড়াই সহজেই গ্রামীণ সম্পদকে আরো ভালোভাবে ব্যবহার করেই পাওয়া যেত।”
    এটার উত্তরও দেবেন নাকি ?
  • dc | 132.164.227.1 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:২৩53936
  • ধরা যাক ই মন্ডি ব্যাপারটা কিছুটা সফল হলো, বছর দুয়েক পরে সরকার ভাবলো ই মন্ডির একটা অনলাইন স্টোরফ্রন্ট খুলবে, তাতে আমার মতো কনসিউমাররা সরাসরি অর্ডার দিতে পারবে। এটা হলে বেশ কিছু মিডল লেয়ার এলিমিনেট হবে, ফলে মিডল লেয়ারের মার্কাপও থাকবেনা। সব্জির দামও কমবে, অথচ চাষীও ন্যায্যমূল্য পাবেন (ন্যাযমূল্য মানে মার্কেট নির্ধারিত মূল্য)। আগামী বছর চার পাঁচের মধ্যে এরকম হলে বোধায় অর্গানিক প্রোডিউস আরো সহজলভ্য হবে। তবে ই মন্ডি ব্যাপারটা শুধু সরকারের হাতে থাকলে এটা হবে না, প্রাইভেট প্লেয়ারদের (স্টার্টাপ?) পার্টিসিপেশান জরুরি, নাহলে ইনোভেশান হবেনা।
  • lcm | 60.242.74.27 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:২৯53963
  • গম
    ১৯৫০ঃ ৬৬৩ কেজি/হেক্টর
    ১৯৯০ঃ ২২৭৪ কেজি/হেক্টর
  • lcm | 60.242.74.27 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:৩৬53964
  • চাল,
    ১৯৫০ঃ ৬৬৮ কেজি / হেক্টর
    ১৯৯০ঃ ১৭৫১ কেজি / হেক্টর

    এটা অবশ্য গোটা দেশের, উইকি তথ্য
  • lcm | 60.242.74.27 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৩:৪১53965
  • কিন্তু এসব তো জানা কথা - বৈজ্ঞানিকভাবে তৈরী বীজ, রাসায়নিক সার, পোকা মারা ওষুধ ... এইসব ব্যবহার করলে ফলন বাড়ে। এগুলো এতটাই প্রচলিত ব্যাপার যে এখন এগুলোকেই বলে "কনভেনশন্যাল" ফার্মিং মেথড।
  • সবই | 11.39.38.145 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৪:০১53937
  • বুঝলাম কিন্তু কষা মাংষে রাঙা আলু কি ভাল হবে?
  • মাংস | 11.39.38.145 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৪:০২53938
  • বানান ভুল সহ্য করা যায়না।
  • dc | 132.174.119.27 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৪:০৭53967
  • গ্রিন রিভোলিউশানের ফলে যে য়িল্ড বেড়েছিল সেই তথ্য ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গ (FAO) থেকেও পাওয়া যাচ্ছে।

    BEGINNING in the 1960s, improved, high-yielding varieties of wheat spread quickly across Asia, soon followed by new strains of rice. Within 20 years, almost half the wheat and rice land in developing countries was being sown with the new varieties. In Asia, where the impact of the green revolution was greatest, almost 90 percent of wheat fields were planted with modern varieties and plantings of high-yielding rice had increased from 12 to 67 percent.

    In order to reap the potential of the new seeds, farmers also rapidly increased their use of mineral fertilizers, pesticides and irrigation. Between 1970 and 1990, fertilizer applications in developing countries shot up by 360 percent while pesticide use increased by 7 to 8 percent per year. The amount of land under irrigation increased by one-third. The gains in production were dramatic: world cereal yields jumped from 1.4 tonnes per hectare in the early 1 960s to 2.7 tonnes per hectare in 1989-91. Over the past 30 years, the volume of world agricultural production has doubled and world agricultural trade has increased threefold.

    These rapid gains helped avert a major food crisis in Asia and provided the springboard for rapid economic growth in China, Southeast Asia and South Asia.

    http://www.fao.org/docrep/x0262e/x0262e06.htm

    তবে আমার মনে হয় এই গ্রিন রিভোলিউশানেই আটকে থাকা উচিত না, এহন যে আরো নতুন নতুন টেকনোলজি ব্যবহার হচ্ছে সেটা ভালো দিক।
  • pi | 192.66.17.138 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৪:০৯53939
  • এলেবেলে, ডঃ স্বামীনাথনের সবুজ বিপ্লবের কুপ্রভাব নিয়ে লেখাগুলো একটু পাওয়া যাবে ?
  • দেবব্রত | 212.142.76.55 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৪:১১53968
  • চাল ঃ- রবি
    ২০০০ - ৩০৪২কেজি /হেক্টর
    ২০০৭ - ৩১৪২ কেজি /হেক্টর
    ২০১০ - ৩০৫৩ কেজি /হেক্টর

    দশ বছরে চাল উৎপাদনে বৃদ্ধি ঃ- 0,36% অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি গড়ে প্রতি বছরে ১,৫% বিগত ১০ বছরে ১৫%

    এইটা ভারত সরকারের তথ্য ঃ- এতো মন তেল পুড়িয়ে বিগত দশ বছরে 0, 36%? জয় বিজ্ঞান ।
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ৩১ মে ২০১৬ ০৪:১৬53940
  • আলু চেন্নাই এ ৯০-১০০ কিলো! এখেনে তো ২০-২২ টাকা! পব তো স্বর্গ মহায়! কিন্তু এত দাম কেন? জয়া দির কোল্ড স্টোরেজ নেই?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন