এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নভেম্বর ২০১৭

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ নভেম্বর ২০১৭ | ৯৫২৫ বার পঠিত
  • ষাট বা সত্তর সম্পর্কে প্রত্যক্ষজ্ঞান নেই, তবে আশির দশক মোটামুটিভাবে ছিল শ্রেণীসংগ্রামের যুগ। মানে ভারতের বামঘরানার লোকজনের চিন্তনে। ফ্রান্সে ১৯৬৮ সালের বিপ্লব প্রচেষ্টা তখন অতীত। সেসব উত্তাল সময়ে অদ্ভুত তত্ত্বের জন্ম হয়েছে জানা ছিল। কিন্তু সেগুলো খায় না মাথায় দেয় তা নিয়ে কারো বিশেষ মাথাব্যথা ছিলনা। সত্তরের দশকে সোভিয়েতকে সাম্রাজ্যবাদী বলা হয়েছিল, তাও কারো অজানা ছিলনা, কিন্তু সেসব খুব জোরেসোরে বলার লোকটোক ছিলনা। তখন বিশ্বশান্তির চ্যাম্পিয়ন ব্রেজনেভের যুগ। 'সোভিয়েত দেশ' আর 'সোভিয়েত নারী' দেখ উচ্ছ্বসিত হবার সময়। তখন স্পষ্টতই আফগানিস্তান পর্যন্ত সমাজতন্ত্র এসে গেছে। মুজতবা বর্ণিত সেই পিছিয়ে পড়া কাবুলের রমনীরা পর্দা ছুঁড়ে ফেলে মিনিস্কার্ট পরে শহর দাপায়। লাদেন বা মুজাহিদিনদের নামও কেউ শোনেনি। দশ-পনেরো বছরের মধ্যে সোভিয়েত সেনা দেশে ফিরে যাবে,আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন চালু হবে, নাজিবুল্লার লাশ ট্রাকের পিছনে বেঁধে ছ্যাঁচড়াতে ছ্যাঁচড়াতে নিয়ে গিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে শহরের চৌমাথায়, তখন কেউ এসব বললে লোকে নির্ঘাত পাগল ভাবত। তখন আমাদের তৃতীয় দুনিয়ায় দ্বিমেরু বিশ্ব ছিল চিরসত্য, বামপন্থীরা ছিলেন কট্টর, স্রেফ অর্থনীতিতে বিশ্বাসী। সব্বাই। সিপিএম মনে করত, বিপ্লব না করলে কিসুই হবেনা, একটা অঙ্গরাজ্যে সীমিত ক্ষমতায় কিছু করা যায়না। লোকে টিপ্পনি কাটত, সেই জন্য সিপিএম কিছুই করেনা। ইতস্তত গম্ভীর নকশালরা সমালোচনা করত, তাহলে ক্ষমতায় আছ কেন, কেনই বা বামফ্রন্টকে চোখের মনির মতো রক্ষা করতে হবে? এসবই তখন বিতর্ক ছিল। এর বাইরে একটু আধটু লিঙ্গ, জাতপাত। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন ১৯৮৯ সালে, তার আগে পর্যন্ত মন্ডল কমিশন নিয়ে বিশেষ কেউ মাথা ঘামাতনা। টুকটাক তর্কাতর্কি হত। যেমন, কোন গ্রুপ নাকি বিহারে বলেছে কাস্ট স্ট্রাগলই আসলে ক্লাস স্ট্রাগল, এই নিয়ে কথাবার্তা। সেও নির্দোষ ব্যাপার। অর্থাৎ শ্রেণীই আসল, এই নিয়ে কোনো মতপার্থক্য নেই, কিন্তু জাতই কি আসলে ভারতে ক্লাস? এই নিয়ে ছুটকো মতপার্থক্য। এছাড়াও ছিলেন মহিলা সমিতিরা, কিন্তু শ্রেণীর লেজুড় হয়ে। অর্থাৎ শ্রেণী সংগ্রাম মিটে গেলে অসাম্য টসাম্য এমনিই উবে যাবে। আর সমকামিতা নিয়ে তাত্ত্বিকভাবে ছিল নীরবতা। কিন্তু ঘরোয়া ফিসফাস আলোচনায় শোনা যেত ওগুলো "বিকৃতি"।

    নব্বইয়ে গপ্পোটা বদলাল। মুক্তিকামীদের অচঞ্চল পূর্ব ইউরোপ, সোভিয়েত ভেঙে পড়ল। যাঁরা সোভিয়েতকে স্বর্গরাজ্য মনে করতেন, তাঁদের তো স্বর্গ হইতে পতন হলই, যাঁরা "সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ" মনে করতেন, তাঁরাও বুঝভুম্বুল হয়ে গেলেন। হবারই কথা। কারণ গল্পেও এরকম হয়না। পরশু দিন পর্যন্ত যিনি পার্টির মহাশক্তিধর সর্বেসর্বা ছিলেন, একদিন সাতসকালে তিনি সদর দপ্তরে নিজেই তালা মেরে ঘোষণা করলেন, আজ হইতে দোকান বন্ধ, এ নেহাৎই ইয়ার্কি হতে পারে, কিন্তু সিরিয়াস সমাজতন্ত্র বা সিরিয়াস সাম্রাজ্যবাদ, কারো পক্ষেই এই জিনিস ঘটানো, অ্যাবসার্ড। কিন্তু অলীক হলেও ঘটনাটা ঘটল। আমরা যারা একটু আধটু বাম চিন্তাভাবনা করতাম, তারা অনাথ হলাম ঠিকই, কিন্তু তাতে আরেকটা প্রবণতা তৈরি হল, আমরা প্রশ্ন করতে শিখলাম। যেকোনো ফর্মের ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হলাম। আপ্তবাক্য অমান্য করা শুরু হল। "সোভিয়েত একটি স্বর্গরাজ্য" জাতীয় ঈশ্বরবিশ্বাস প্রশ্নচিহ্নের সামনে পড়ল। "শ্রেণীই মূল" -- ধারণাটা চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ল। 'অপর'এর মতো পত্রিকা বেরোতে শুরু করল। সুমনের গান এল মার্কেটে, আর সেই ষাট থেকে তুলে আনা হল আলথুসার ইত্যাদিদের। সিপিএম তখনও দেয়ালে দেয়ালে "মার্কসবাদ সর্বশক্তিমান, কারণ ইহা সত্য" লিখে চলেছে ঠিকই, কিন্তু ভিত নড়ে গেছে, লিনিয়ারিটিকে প্রশ্ন করা শুরু হয়ে গেছে। জেন্ডার, কাস্ট, সমকামিতা, এরা কেন চিন্তার জগতে প্রান্তিক হয়ে থাকবে, কেন শ্রেণীই একমাত্র মূল হবে, এসব প্রশ্ন উঠছে। যদিও পুরোনো বুজুর্গরা কড়া ভাবে সেসব সামলাচ্ছেন, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে কিছু একটা বদল আসবেই। আমরা ঘেঁটে গেছি, রাজনীতির স্লোগানের বদলে লেখালিখি চিন্তাভাবনাই বেশি হচ্ছে। বস্তুত, আমি ব্যক্তিগতভাবে এইসময়টাতেই লিখতে শুরু করি। আমাদের অনেকেই।

    এইভাবেই নব্বই গেল। ২০০০ এ এসে বোঝা গেল, নব্বইয়ে শুধু সোভিয়েত ভাঙেনি, শুরুতে নরসিংহ রাও আর শেষে অটলবিহারি বাজপেয়িও ছিলেন। শুরু হয়ে গেছে শাইনিং জমানা। আন্তর্জাতিক স্তরে ফ্রান্সিস ফুকোয়ামা ইতিহাসের শেষ ঘোষণা করে দিয়েছেন। দেশেও তাই। শুরু হয়ে গেছে এক নতুন যুগ, যাকে চিন্তার ভুবনীকরণের যুগ বলা যায়। ভারতীয় আইটি কোম্পানিরা হই হই করে আমেরিকার কাজ ধরছে। ওয়াই-টুকে নামটা মুখে মুখে ঘুরছে। কলকাতাতেও ঝপাঝপ খুলে যাচ্ছে মল। সল্টলেক সিটি সেন্টার চালু হল ২০০০ এর পরে। তার আগে থেকেই শাইনিং দের জয়জয়কার। এমনকি বামপন্থী মহলেও। সরকারি বামপন্থীদের মধ্যে জ্যোতি বসু অস্ত যাচ্ছেন, বুদ্ধদেববাবু ক্ষমতায় আসছেন। খবরের কাগজে শোনা যাচ্ছে অশ্রুতপূর্ব এক শব্দবন্ধঃ ব্র‌্যান্ড বুদ্ধ। মধ্যবিত্তের অ্যাসপিরেশন তৈরি হচ্ছে, সেটাই ক্রমশ চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে। পুরো ব্যাপারটাই বেশ অদ্ভুত। একদিকে আমরা রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে তত্ত্বচিন্তা-লেখালিখি করছি, অন্যদিকে রিয়েল পলিটিকে জায়গা করে নিচ্ছে মধ্যবিত্ত শাইনিং আকাঙ্খা। দুটো কিরকম হাতে হাত ধরে চলছে। একদিকে আমরা "শ্রেণী" নামক বিষয়টার একাধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন করছি, গোঁড়ামি নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি করছি, আর শাইনিং রা ক্লাস বস্তুটাকেই বাতিল করে দিচ্ছে। কার অ্যাজেন্ডা কে সমর্থন করছে করছে বলা খুব মুশকিল।

    এই চলল ২০০৬ অবধি। তারপরই সেই কান্ড, যার নাম সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম। ২০০৬ থেকে ২০১১। মধ্যবিত্ত শাইনিংপনার বিরুদ্ধে ব্যাকল্যাশ। চিন্তার ভুবনীকরণ, আপাতদৃষ্টিতে কিছুদিনের জন্য স্থগিত। রাজনীতি থেকে এতদিন যারা দূরে ছিল, সবাই পক্ষ নিয়ে ফেলল। সিপিএম বিরোধিদের আক্ষরিক অর্থেই রামধনু জোট। এমনকি বামপন্থীদেরও। কেউ মমতাকে মুক্তিসূর্য বলছেন, কেউ মমতা-বিরোধী কেউ মাওপন্থী, কেউ মাও বিরোধী, কেউ লিবারেটারিয়ান, সব মিলিয়ে একটা ছাতা। উল্টোদিকে সিপিএমের ছাতাটাও ছিল রামধনু। যদিও পার্টি একটাই, কিন্তু তার দুখানা প্রান্ত। একদিকে কেউ শাইনিং , অন্যপ্রান্তে কেউ একেবারে আজিজুল হকের মতো বিপ্লবী। মাঝামাঝি সব রকমের শেডের চিন্তাভাবনাও, সেই ছাতার নিচে। এই গপ্পো চলল ২০০৯ পর্যন্ত, যখন লোকসভা ভোটে সিপিএম হারল পশ্চিমবঙ্গে। তখনই দেয়ালের লিখন দেখা যাচ্ছিল। তারপর ২০১১ অবধি ঘোলা জলের গতিজাড্য। যে ভোটে বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম যখন হারল। সে তো খুব সাম্প্রতিক ইতিহাস, বিশদে লেখার কিছু নেই।

    কিন্তু সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত থাকতে গিয়ে আমরা যেটা দেখিনি, সেটা হল, ২০০৬ এর আগে যে প্রবণতার কথা বলেছিলাম, অর্থাৎ, চিন্তার ভুবনীকরণ, সেটা একেবারেই থেমে ছিলনা। আমরা "শ্রেণী" নামক বিষয়টার একাধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন করছি, গোঁড়ামি নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি করছি, আর শাইনিং রা ক্লাস বস্তুটাকেই বাতিল করে দিচ্ছে, এই যে প্রবণতা, এটা এই বিবাদের মধ্যেও গতি পেয়েছে। এবং সেটা আর ঠিক স্থানীয় নয়। গপ্পোটা আন্তর্জাতিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। লেফট শব্দটা আর তেমন শোনা যাচ্ছেনা, শোনা যাচ্ছে লেফট লিবারাল। সেটা বস্তুত "লিবারাল" এর সমার্থক, লেফট আর কোথাও নেই। ১৯৯০ এ আমরা যারা প্রশ্ন তুলছিলাম, শ্রেণীর একাধিপত্য নিয়ে, কেন লিঙ্গ, জাত এরা জায়গা পাবেনা আলোচনায়, তারা অবাক হয়ে দেখলাম, মূলস্তরের আলোচনা থেকে শ্রেণী ব্যাপারটাই ক্রমশ হাওয়া হয়ে গেছে। পড়ে আছে জেন্ডার, কাস্ট আর রেস।
    ভারতবর্ষে এটা স্পষ্ট করে দেখা গেল ২০১০ সালের পরে। ২০১২ সালে দিল্লিতে ঘটে গেল জঘন্যতম এক গণধর্ষণের ঘটনা, যার মিডিয়া প্রচারিত নাম নির্ভয়া কান্ড। দিল্লিতে সে ঘটনার পর সঙ্গত কারণেই ব্যাপক বিক্ষোভ হল। ২০১৬ সালে আত্মহত্যা করলেন রোহিত ভেমুলা। সে নিয়েও দেশব্যাপী তুমুল আলোড়ন হল। সেটাও সঙ্গত কারণেই। কিন্তু এই দুটি ঘটনার পর দেখা গেল মূল ধারার অ্যাকটিভিজম ক্রমশ কেবলমাত্র জাত এবং লিঙ্গ নির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে অ্যাকটিভিজমও ব্যাপকার্থে জেন্ডার এবং কাস্ট আপরাইজিং কিছু না। মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়ায় একটি করে শত্রু খুঁজে বার করে নেমিং এবং শেমিং -- বড়ো কাজ বলতে এটা। শ্রেণী-টেনি তো হাওয়া বটেই, লিংগ এবং জাত নিয়েও দীর্ঘমেয়াদী কোনো চিন্তা নেই, শুধুই চটক। মজা হচ্ছে, এই অ্যাকটিভিটিস্টদের অনেককেই উত্তাল সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে, পস্কো আন্দোলনে, এমনকি আদিবাসী উচ্ছেদ নিয়েও কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি। সেটা অপরাধ না, কিন্তু প্রবণতা হিসেবে এটা ইন্টারেস্টিং। এই অ্যাটিভিজমটা এক অর্থে বিশুদ্ধ শাইনিং, সেটা খানিক হয়তো এর থেকে বোঝা যায়।

    আন্তর্জাতিক স্তরেও দেখলাম একই গপ্পো। ওই ২০১১ র পরেই। এরকম সমাপতনের নিশ্চয়ই কোনো গভীর কারণ আছে, কিন্তু সেটা এখানে আলোচ্য না। যা দেখলাম, সেটাই বলি। ২০১১ র পশ্চিমবঙ্গ যেমন সশরীরে দেখেছি, তার পরের আমেরিকাটাও চোখে দেখলাম। সেখানেও লেফট-লিবারাল ডিসকোর্স থেকে ক্লাস উবে গেল। তবে কাস্ট নয়, এখানে জায়গা নিয়ে রেস আর জেন্ডার। টিম হান্ট পর্ব (সে অবশ্য আমেরিকা নয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক তো) দেখলাম। একই গপ্পো। শাইনিং রা লেফট লিবারালদের ঠিকা নিয়ে নিয়েছেন। সেখানেও ব্যাকল্যাশ হল। বার্নি স্যান্ডার্স হারলেন, এবং ট্রাম্প জিতলেন। ক্লাস বিবর্জিত, শরৎচন্দ্রের মেজদার মতো কড়া ও পলিটিকালি কারেক্ট, রেস - জেন্ডার সর্বস্ব ক্লিন্টন ক্যাম্প প্লেটে করে সাজিয়ে দিলেন জয়। "উনি মহিলা তাই ফেমিনিস্ট"। "ওবামা ওনার পক্ষে তাই উনি কালো লোকেদেরও পক্ষে"। এই রকম যুক্তি সাজানো হল। কিছু সজোরে কিছু ফিসফিসিয়ে। এবং বলাবাহুল্য ক্লাস ব্যাপারটা হাওয়া। শুরু হয়েছিল নব্বইয়ে, এই বলে, যে, ক্লাস বা অর্থনীতি কেন একা রাজার পার্ট নেবে। শেষ হল, ক্লাসকে বিসর্জন দিয়ে। অর্থনীতিকে চুলোর দোরে পাঠিয়ে। বার্নি স্যান্ডার্সের প্রাইমারিতে লড়া একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ছিল। এরকম শেষ ঘটেছিল ১৯৬৮ সালে, যখন ববি কেনেডি ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষীয়দের হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন। পিছনে ছিল বামঘরানার গোটা বেবি বুমার প্রজন্ম। সেবার কেনেডিকে থামিয়েছিল আততায়ীর গুলি। এবার আর তার প্রয়োজন হলনা। লিবারালরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে থামিয়ে দিলেন বার্নিকে। বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।
    এদেশ হোক, আর ওদেশ, লিবারালদের অ্যাকটিভিটির মধ্যে শাইনিংত্ব দুটো ব্যাপারে প্রবল। এক, শ্রেণী বা অর্থনীতির অনুপস্থিতি। দুই, অসহিষ্ণুতা। দীর্ঘ দীর্ঘদিন ধরে, অন্যান্য ঘরানার থেকে বামপন্থার একটা পার্থক্য ছিল (সোভিয়েত বা চিনের কথা বলছিনা, ওগুলো দেখিনি), সেটা হল প্রশ্ন চিহ্ন। অর্থনীতি কেন চরম? প্রশ্ন করা যেত। কেন জেন্ডার বা রেসকে হিসেবে ধরবনা? প্রশ্ন করা যেত। কেন সিঙ্গুরে শিল্পায়ন করতেই হবে? প্রশ্ন করা যেত। উত্তপ্ত বাদানুবাদ হত, হবেই, কিন্তু প্রশ্ন করা যেত। মানে এমন কোনো হেজিমনি ছিলনা, যাতে প্রশ্ন করা যাবেনা। কিন্তু এখন এরকম একটা মতাদর্শগত আধিপত্য তৈরির প্রক্রিয়া চলছে, যেখানে প্রশ্ন করা যায়না। "কেন হিলারি ফেমিনিস্ট? মেয়ে হলেই কি ফেমিনিস্ট হয় নাকি?" প্রশ্ন করতে লোকে ভয় পাচ্ছে, কারণ, "আপনি বাবা ততটা লিবারাল না" স্ট্যাম্প পড়ে যাবে। "কেন কালো মানুষ বা মেয়ে হলেই নিপীড়িত ধরব?" খুব ভ্যালিড প্রশ্ন। কিন্তু করা যাবেনা। এর সঙ্গে দুটো ইয়ার্কি যোগ করলে তো, ওরে বাবা টিম হান্ট কান্ড হবে। ছহি লিবারালপনা একেবারে ধর্মপালনের সমগোত্রীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর আদর্শ রোলমডেল হিসেবে সামনে আসছেন হিলারি ক্লিন্টনের মতো মানুষরা, যাঁরা যুদ্ধবাজ হোন, আমেরিকান 'মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স' এর পোস্টার গার্ল হোন, স্রেফ লিঙ্গচিহ্ন এবং লিবারাল বুলির জন্যই 'আদর্শ'।

    ২০১৭ সালে ইন্টারনেটে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে "মিটু" নামক একটি ক্যাম্পেন শুরু হল আমেরিকা থেকেই। সেটাকে আরও "র‌্যাডিকাল" পথে "হিম টু"তে নিয়ে চলে যাওয়া হল। এই র‌্যাডিকাল পরিবর্তনের পিছনে রয়েছেন ক্রিস্টিন ফেয়ার, যিনি একদা আমেরিকার ইরাক এবং মূলত আফগানিস্তানে ড্রোনযুদ্ধ চালানোর প্রবল পক্ষপাতদুষ্ট ভিলেন (অসত্য ভাষণের দায়েও অভিযুক্ত) হিসেবে তৎকালীন "র‌্যাডিকাল" মহলের কাছে ভীষণ ভাবে সমালোচিত ছিলেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অনাবাসী "দলিত" অ্যাকটিভিস্ট প্রকাশ করে ফেললেন সেই বহুল প্রচারিত তালিকা। সেখানে প্রায় সমস্ত "অভিযুক্ত" ব্যক্তিই বাম ঘরানার। এই ঘটনা একেবরেই আপতিক নয়, বরং প্রায় প্রতীকিই, কারণ, লিবারাল গোষ্ঠীরা অবিকল একই জিনিস ঘটিয়ে চলেছেন দেশ এবং পৃথিবী জুড়ে। তাঁরা "পলিটিকালি কারেক্ট" হবার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। মুখোশধারী বিভীষণ খুঁজে বেড়ানোর কাজে সময় ব্যয় করে চলেছেন। এটাকেই তাঁরা অ্যাকটিভিজম বলছেন। তাঁরা বার্নি স্যান্ডার্সের শ্রেণীভিত্তিক রাজনীতিকে সরাসরি আক্রমণ করছেন লিঙ্গ এবং জাতির ভিত্তিতে (বার্নি ব্রো - এই কয়েনেজ থেকেই যেটা পরিষ্কার)। এবং কারেক্টনেসের যুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন করছেন ক্রিস্টিন ফেয়ার বা হিলারি ক্লিন্টনকে। যাঁদের উপস্থাপনা খুবই "কারেক্ট" হলেও বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে তলানিতে। লেনিনের সঙ্গে রোজা লুক্সেমবার্গের তুলনা শোনা যাচ্ছে, একদম লিঙ্গচিহ্নের প্রশ্নেই। নভেম্বর বিপ্লব আসলে একটি সামরিক অভ্যুত্থান মাত্র, এরকম থিয়োরাইজেশনও শোনা যাচ্ছে। যেমন শোনা যাচ্ছে "সাবল্টার্নরা আসলে কথা বলিতে পারেনা" আসলে একটি ব্রাহ্মণ্যবাদী চক্রান্ত। কারেক্টনেসের চক্করে মোহাবিষ্টরা এর বিরুদ্ধে কিছু বলতেও পারছেননা। যেহেতু "সেনসেশন" তৈরিও নাকি একটি রাজনৈতিক প্রকল্প। আর ফাঁকতালে ছিপ নিয়ে যাচ্ছে চিলে। এই ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসেও একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে আমেরিকার পঞ্চাশ শতাংশ মতো মানুষ বিশ্বাস করেন "লিবারাল মিডিয়া" ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বানিয়ে কথা বলে।

    লেফট লিবারালদের অজস্র বিভাগ, টুকরো, চুলোচুলির পরেও লোকে একটি কারণেই সমঝে চলত। তা হল, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা। নভেম্বর বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তিতে প্রশ্ন এই, যে, সেটুকুও আর থাকবে কী?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ নভেম্বর ২০১৭ | ৯৫২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:২৭60155
  • জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশনও যে স্টেটাস কুও মেইন্টেইন করার একটা ছক সেটা না বুঝলে তো মুশকিল।

    আম্রিগাতে জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশনের বিরুদ্ধে আইন আছে। সিইওকে বেশি মাইনে দেওয়ার বিরুদ্ধে নেই। ওবামা মনে হয় একটা আনার চেস্টা করেছিলেন - কাজে দেয়নি।
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:৩৩60156
  • "ক্লাস ভেদে পার্থক্য আছ্হে তো কী"

    এটা আমি কোথাও লিখিনি। আরেকটু ভালো করে পড়ুন।
  • SS | 160.148.14.151 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:১৮60170
  • sm,
    DC যে লিংক দিয়েছেন, সেই সার্ভের লিংক আমি কাল দিয়েছিলাম -
    https://www.elephantinthevalley.com/

    আন্য কিছু লিংক ও কাল দিয়েছিলম -
    Sexual harassment scandals have been rocking the tech industry – but we've seen this all before
    http://www.businessinsider.com/sexual-harassment-scandals-tech-industr
    y-2017-7

    Sexual harassment in Silicon Valley: have we reached a tipping point?
    https://www.theguardian.com/technology/2017/jul/09/silicon-valley-sexu
    al-harassment-women-speak-up

    Women in Tech Speak Frankly on Culture of Harrasment
    https://www.nytimes.com/2017/06/30/technology/women-entrepreneurs-spea
    k-out-sexual-harassment.html

    MONEY, POWER & SEXUAL HARASSMENT
    http://money.cnn.com/technology/sexual-harassment-tech/

    What is Silicon Valley's problem with women?
    http://www.wired.co.uk/article/tesla-sexism-lawsuit-harassment-uber

    একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের ঘটনা খুবই আন্ডাররিপোর্টেড। রিপোর্ট হলে বেশির ভাগ সময়েই যে মহিলা রিপোর্ট করছেন তার চাকরি যায়। তবে আশার কথা, এই কালচার বদলাচ্ছে।
    ইদানিং কালের মধ্যে সবচেয়ে শোরগোল ফেলেছিল সুজান ফাওলারের ব্লগ। ইনি উবারের ইন্জিনিয়ার ছিলেন। প্রথমে এইচার কে জানিয়েছিলেন হ্যারাসমেন্টের ঘটনা। কোন লাভ হয় নি। তারপর চাকরি ছেড়ে এসে ব্লগে সব ঘটনা জানান।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৮:১৩60157
  • ' ক্লাস ভেদে পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু তাতে ঠিক কি প্রমাণ হচ্ছে সেটা বোঝা যাচ্ছেনা।'

    এটার মানে কী তাহলে ? ক্লাসভেদে পার্থক্য থাকা আর সেই থাকাটাকে জেন্ডার ডিসকোর্সে না আনা নিয়েই এত কথা।
  • xxx | 90.254.154.99 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৮:২৮60171
  • "রিপোর্ট হলে বেশির ভাগ সময়েই যে মহিলা রিপোর্ট করছেন তার চাকরি যায়।"

    এটা কোথাকার কথা হচ্ছে? আমেরিকার? ভারত কি তাহলে এগিয়ে গেছে? কিছুদিন আগে আমাদের কোম্পানিতে একটি মেয়েকে প্রোপোজ করে রিফিউজড হওয়ার পরেও ফোনে এবং ইমেলে বিরক্ত করে চলার জন্য চাকরি গেল একটি ছেলের। মেয়েটি এসেমেস এবং ইমেল এভিডেন্সসহ এইচার এবং ম্যানেজারকে জানানোর এক দিনের মধ্যে। এটা ভারতের কথা বলছি। এটা কি ব্যতিক্রম ধরব তাহলে? আমরা মেল এমপ্লয়ীরা এগুলোকে জিরো টলারেন্স কর্পোরেট পলিসি বলেই জানি। এবং খুব ব্যতিক্রম বলে শুনিনি। খুব নিচুতলার এমপ্লয়ী আর খুব উঁচুতলার ম্যানেজারের বেলায় এরকম সম্ভবনা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু তাদের ইন্টারসেকশন হওয়াও তো খুব দৈনন্দিন ব্যাপার নয়। একজন মেল এমপ্লয়ী হিসেবে এটা বলতে পারি অফিসে একটি মেয়ের সাথে দুর্ব্যাবহার করে পার পেয়ে যাওয়া যায় - এরকম কোনো ভাবনাচিন্তার আবহ আমার পরিচিত মেল কলীগদের মধ্যে কখনই দেখি নি, সে তারা নারীবর্জিত বন্ধুবান্ধবের হোয়াটসয়াপ গ্রুপে যতই সেক্সিস্ট জোক টোক শেয়ার করুক না কেন। অফিসে এসব করা যায় না, করলে চাকরিটি যাবে এবং এই কারণে চাকরি গেলে অন্যত্র চাকরি পাওয়া অসুবিধে হতে পারে - এই ভয়টাও ভালোমত আছে। কাজেই "রিপোর্ট হলে বেশির ভাগ সময়েই যে মহিলা রিপোর্ট করছেন তার চাকরি যায়" - এটার সাথে নিজের ভারতীয় অভিজ্ঞতা একেবারেই মেলাতে পারলাম না।
  • S | 202.156.215.1 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৮:৫৬60172
  • আপনি খুব ভাগ্যবান যে আপনার অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র ভালোর মধ্যেই সীমিত থেকেছে।

    https://qz.com/1072013/why-its-good-indian-companies-led-by-woman-ceos-are-reporting-more-sexual-harassment-cases/

    In the fiscal 2016-17, up to 621 complaints were registered at 90 out of the top 100 companies listed on the BSE. Meanwhile, out of the top-10 companies with highest number of such complaints, eight are either from the financial or the IT sectors.

    About 59% of woman employees do prefer female bosses. A survey by the Indian National Bar Association (INBA) conducted earlier this year, found that of the 6,047 participants (both male and female), 38% said they’d faced harassment at the workplace. Of these, 69% did not complain about it.
  • de | 69.185.236.53 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৮:৫৬60158
  • জিএস্টির ৩১ সদস্যের প্যানেলের একজনও মহিলা নন - ফলস্বরূপ সিঁদুর, টিপ, কাজল অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী হিসেবে জিএসটি মুক্ত আর স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলাসবহুল সামগ্রী হিসেবে জিএসটির আওতায়! ছাগল কি আর গাছে ফলে!
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৯:১৬60159
  • সিইও ভিপি মিডিয়া হলিউডের কথা এসেছে এটাই দেখাতে যে আম্রিগার ওয়েল্দি ক্লাসেও যদি ডিসপ্যারিটি হ্যারাসমেন্ট থাকে, তাহলে সাধারণ ক্ষেত্রে কি অবস্থা।

    দুটো রোগ - দুটোর চিকিৎসা আলাদা। অন্তত আম্রিগার ক্ষেত্রে। গত ইলেক্শনে বার্ণী আর হিলারী দুজনেই ওয়েজ গ্যাপ কমানো আর মিনিমাম ওয়েজ বাড়ানোর কথা বলেছিলেন। ওবামা মিনিমাম ওয়েজ বাড়ানোর চেস্টাও করেছিলেন। কিছু ব্লু স্টেটে বাড়ানো-ও হয়েছিলো।

    কেউ বলছেনা মেরিসা মেয়ারের স্যালারি বাড়িয়ে ওয়েজ গ্যাপ কমাতে। যারা গুলিয়ে দিয়ে দুটোর কোনোটাই হতে দিতে চান না, তারা সেরকম ভাবেই ইন্টারপ্রিট করে লোককে বিভ্রান্ত করে দেয়।
  • xxx | 90.254.154.67 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৯:২৪60174
  • দেখুন এখানে আইটি কোম্পানির সাধারণ কালচার নিয়ে কথা হচ্ছে। আপনার দেওয়া লিংক্গুলো কি আইটি কোম্পানির এরকম কোনো সাধারণ কালচারের কথা বলছে যেখানে "রিপোর্ট হলে বেশির ভাগ সময়েই যে মহিলা রিপোর্ট করছেন তার চাকরি যায়"? নিজেই পড়ে দেখুন না। ডিসক্রিমিনেশন, জেন্ডার স্টিরিওটাইপ, সেক্সিজম - এই সমস্যাগুলো নেই তো কেউ দাবী করে নি। কিন্তু যা আছে যতটুকু আছে ততটুকু বলাই ভালো নয় কি? সার্ভে হোক আর যাই হোক তাকে তো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সাথে কিছুমাত্র হলেও মিলতে হবে, নাকি? দেশের বাসে ট্রেনে মেয়েদের যে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ফেস করতে হয়, সেটা সার্ভের রেজাল্ট না দেখলেও লোকে অবিশ্বাস করবে না। কিন্তু আবার আইটি কোম্পানিতে র‌্যাম্পান্ট সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট হয় আর রিপোর্ট করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদেরই চাকরি যায় - এটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সাথে একেবারেই মেলে না। এই যদি আবার আপনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কথা বলেন, বা ইঁটভাটার কথা বলেন, বা পুলিশবিভাগের কথা বলেন - সেসব জায়গায় হয়তো পুরো হিসেবটাই অন্যরকম। উল্টো। সব জায়গায় সমস্যার নেচার তো এক নয়।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৯:৫০60160
  • সেপ্টেম্বরের গোড়া অব্দি কমার্স আর শিল্পমন্ত্রী ছিলেন নির্মলা সীতারামন ঃ(
  • S | 202.156.215.1 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১০:১৪60175
  • শুধু আইটি সেক্টর নিয়েই আলোচনা? কারণটা অবশ্য বুঝলাম না।

    বাকি কথার যা মানে বুঝলাম তা হলো সার্ভে রেজাল্ট যাই বলুক, আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে না মিললে আর তার দাম নেই?
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১০:১৮60176
  • এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি তে মেয়েদের অবস্থা কীরকম খুবই জানা দরকার। সিনেমা টিভির অভিনয় ই শুধু না, সিরিয়ালের স্ক্রিপ্ট যারা লেখেন, এই যে বিভিন্ন চ্যানেলে চব্বিশ ঘন্টা প্রোগ্রাম চলে, এসব জায়্গায় যারা কাজ করেন, তাদের ক্ষেত্রে অবস্থাটা কীরকম?
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১০:১৯60177
  • সাংবাদিকতার পেশায় মহিলাদের অবস্থা কীরকম?
  • xxx | 93.250.170.158 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১১:১৪60178
  • আমার একার অভিজ্ঞতা বলিনি। এখানে অনেকেই আইটিতে চাকরি করেন। তাঁদের মধ্যে অনেক মহিলাও আছেন। কোনো ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ চিত্র একরকম হলে সেটা নিশ্চয়ই অনেকের অভিজ্ঞতার সাথে মিলবে।

    আইটি বা হাইটেক ইন্ডাস্ট্র্রির জেন্ডার সমস্যার চরিত্র ইঁটভাটার সাথে একরকম নয় - এটা বোঝানোর জন্য আইটির আলোচনা। অন্ততঃ আমি এরকমই বুঝেছি। আপনি কী বুঝে লড়ে যাচ্ছিলেন এতক্ষণ আমি জানি না। আপনার কি মনে হচ্ছিল যে পৃথিবীর কোথাও ওয়ার্কপ্লেসে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট হয় না, বা জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশন উবে গেছে - এরকম দাবী করছে কেউ? আমার তা মনে হয় নি। পৃথিবীর সর্বত্র শ্রেণী নির্বিশেষে মেয়েদের সমস্যাটা এক - এরকম একটা সরল গোলগাল ধারণাকে প্রশ্ন করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে আমার।
  • ??? | 116.208.88.32 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১১:১৮60179
  • আবার সেই গরুর রচনা!
  • dc | 132.174.107.55 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ১২:৪৪60162
  • গোড়ায় গলদ হয়েছে কমরেড। এটা নিউজ না ভিউজ?
  • sm | 52.110.203.201 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫১60215
  • তাহলে কি ধরে নেওয়া যাবে কোম্পানি বড় হলে নারীর নিরাপত্তা অনেকটা সুরক্ষিত কিন্তু ছোট হলে যৌন হেনস্থা চলতেই থাকবে?
    উন্নত দেশ গুলো যেখানে নারীর ওপার যৌন হেনস্থায় জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হয় সেখানে দিনের পর দিন এতো নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার শিকার হন কি করে?
    নার্সিং জবে পে গ্যাপ কি করে হয়?যেখানে ট্রেনি ,স্টাফ,নার্স ম্যানেজার,মেট্রন সব্বাই প্রায় মহিলা।পুরুষ নার্সের সংখ্যা হাতে গোনা।
    গত একশো বছর ধরে কিন্তু নার্স কর্মীরা নাইট ডিউটি করে চলেছেন।কোনো অসুবিধের কথা শোনা যায় না তো। আই টি তেই বা রাত্তিরে ডিউটি করতে এতো বায়নাক্কা কেন?
  • পাই | 57.29.253.72 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৩60185
  • আবার সেই তথ্য ছাড়া একই ভাট, জেন্ডার সমস্যা সব ক্লাসে 'সমানভাবে' আ্ছে, সমানভাবে নাকি কোয়ান্টিটেটিভ না! তাহলে জেন্ডারসমস্যা সব ক্লাসেই আছে বললেই তো হয়!
    আর সেক্ষেত্রে ছায়ার সাথে যুদ্ধ করাই বা কেন, কেউ তো বলেনি নেই!!
  • pi | 57.29.253.72 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২২60186
  • বাকি কথা আর লিখলাম না, xxx বলে দিয়েছেন।
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩60187
  • ১) বড় চাকরীতে হ্যারাসমেন্ট আছে বা ডিসক্রিমিনেশন আছে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে? বা কতটা আছে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে?

    ২) বাকিরা তথ্য দিয়ে লিন্ক দিলো।

    ৩) কই কোথায় ডেটা? ঐ লিন্কে কিছুই তো নেই? আপনি পুরো রিপোর্ট পড়ে আসুন (এটা এখানকার পুরোনো চাল - অনেকেই বোধয় ভাবেন যে একটু বড় রিপোর্ট হলে কেউ পড়েনা)। ইত্যাদি।

    ৪) বাকিরা আবার লিন্ক দিলো। কোটেশান করে তুলে দিলো।

    ৫) আইটিতে কতটা আছে? ভারতীয় আইটিতে কতটা আছে? আরো স্পেসিফিক ডেটা চাও যতক্ষন না লিন্ক আসা থামছে। আমার এক্সপিরিয়েন্স আলাদা। অর্থাৎ ঐ ডেটার দাম নেই।

    ৬) বাকিরা আবারো তথ্য দিয়ে লিন্ক দিলো।

    ৭) কিন্তু আইটি আর ইঁটভাটায় কি সমান হয়? আপনি সীতার বাবা ইত্যাদি।

    ৮) ২, ৪, আর ৬ এর লিন্কগুলো কিন্তু ১, ৩, আর ৫ এর জবাবে দেওয়া হয়েছে এটাই দেখানোর জন্য যে হ্যারাসমেন্ট আর ডিসক্রিমিনেশন সর্বত্রই আছে। এটা দেখানোর জন্য নয় সে এক্দম ইকুয়ালি আছে।

    এটাই কি যুক্তি যে আগে ইঁটভাটায় সমস্যা সমাধান হবে, তারপরে আইটিতে? বা তুমি মামনি লাখ বেলাখ মাইনে পাও তাই চুপ করে থাকো। বা হলিউডের সেলিব্রিটি যখন হয়েছো, অতেব তুমি কখনো নারীদরদি হতেই পারোনা কারণ তুমি শ্রেনী শত্রু। তাইলে তো মুশকিল।
  • পাই | 24.139.221.129 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৪60188
  • যেগুলো আপনাকে বলা বয়, সেগুলোর নিজের ঘাড়ে টানেন কেন তো জানা নেই।
  • ??? | 212.142.78.67 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৫60189
  • নিন অ আ ক খ করে লিখে দিই, আইটিতে কজন আছেন আর ইঁট ভাঁটায় কজন আছেন? এদের রেশিও কত হবে মনে হয়? এই এক জ্বালা আইটির বাইরে যারা তারা মানুষ নয়।
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩১60190
  • সেরেছে এখানে যে কখন কাকে কোন কথাটা বলছে।

    ??? এটা কি আমাকে বললেন? আমি নিজেই কিন্তু আইটিতে নেই। নিজেকে অমানুষ বলবো? হতেই পারে।
  • dc | 132.164.231.81 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৩60191
  • যাক আলোচনাটা অবশেষে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার থেকে বেরিয়ে রেশিওতে এসেছে ঃ)
  • Ishan | 202.189.128.15 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৫২60216
  • হাঃ এইচ আর। ড্রেসকোড আছে তো লিখলামই। এইচারের কাজ সেটা কমিউনিকেট করা। সেও করে। কিন্তু ইমপ্লিমেন্টেশন? যেকোনো আইটি হাবে পনেরো মিনিট ঘুরে আসুন, দেখতেই পাবেন। ইমপ্লিমেন্ট করার কথা ম্যানেজারদের, তারা ওসব ঝামেলায় জড়ায়না।

    আর বলিউড প্রসংগটার সঙ্গে ফক্স নিউজের কোনো যোগ নেই। বলিউডি হিরোদের এবং হিরোইনদেরও লার্জার দ্যান লাইফ ইমেজ বানানো হয়েছে। তাঁরা নিজেরাও মনে হয় সেটায় বিশ্বাস করেন। তাঁরা যত্রতত্র কৃপা বিতরণ করে থাকেন, এবং কেউ তাঁদের 'না' বলতে পারে এটায় বিশ্বাস করেননা। 'সাধারণ মানুষ'এর এই সিনড্রোম নেই।

    মিডিয়ায়ও হ্যারাসমেন্ট খুবই স্বাভাবিক। মানে কমন সেন্স থেকে যা মনে হয়। সমস্ত ইন্ডাস্ট্রিরই একটা কালচার থাকে। অ্যাড বা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির কালচার, যা শুনে আসছি, পেশাগত সম্পর্কেই এরতার সঙ্গে শুয়ে পড়া খুব কমন। মিডিয়া এবং এন্টারটেনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে। এসব করতে গেলে চাট্টি লাইন টপকানো হবেই, কিছু কুইড প্রো কো হবেই। হেনস্থাও হবে। যদিও পুরোটাই শোনা কথার ভিত্তিতে বলা, কিন্তু সেটুকুর ভিত্তিতে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক কিছু লাগেনা। পুরোটাই ইন্ডাস্ট্রি কালচার। সেটাও সর্বদা খুব সাদাকালো কিছু না।

    আইটিতে এই কাল্চার কখনও ছিলনা। ছোটো কোং হোক বা বড়। ফলে আইটিতে ব্যাপারটা এত কমন হবার চান্সও খুব কম। কমন সেন্স থেকে যা মনে হয়। সিনেমা বা মিডিয়ায় 'পেশার লোকের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যাবেনা' -- এই বোঝাপড়ায় লোকজনকে আনাই অসম্ভব। পুরুষ নারী নির্বিশেষে। ওগুলো স্কুপ নিউজের সোর্স। ওগুলো গ্ল্যামার বাড়ায়। ওগুলোই আবার হেনস্থার দিগন্ত খোলে। আইটিতে প্রথম থেকেই এর উল্টো কালচার। কেউ কারো সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেনা এমন না, কিন্তু তার একটা এথিক্স মোটামুটি স্বীকৃত। এথিক্সের বাইরে যেতে হলে লুকিয়ে চুরিয়ে করতে হয়। এই কালচারের তফাতটা একটা খুব বড় ব্যাপার। আর আল্টিমেটলি আইনকানুন তো লার্জ স্কেলে কিছু আটকায়না বা চালু করেনা। করে কালচার।

    আর আরেকটা ব্যাপার, মিডিয়া বা আইটি, যাই হোক, আমার কাছে বেশ অস্বস্তিকর। একজন পুং বা মহিলা, তাঁকে আমি দায়িত্ব দিচ্ছি পঞ্চাশটা লোক সামলাতে। নানা ক্রিটিকাল জিনিস সামলাতে। অজস্র লোকের সঙ্গে মিশে নানা সমস্যার সমাধান করতে। এবার একজন মহিলা, তিনি কার্যক্ষেত্রে এতগুলো কাজ করবেন, কিন্তু নিজের একটা সমস্যার কথা রিপোর্ট করতে পারবেননা, এ হলে খুবই মুশকিল। যদি এইটুকুই না পারেন, তো তাঁর উপর আমি ভরসা কর্ব কিকরে, যে তিনি পঞ্চাশটা লোকের প্রবলেম ঠিকঠাক রিপোর্ট করবেন? এ তো ঠিক ট্র্যাডিশনাল নতুন বৌ নয়, যে, বুক ফাটবে কিন্তু মুখ ফুটবে না। তাঁর সমস্যা তাঁকেই রিপোর্ট করতে হবে। একটা কনডিউসিভ এনভায়রনমেন্টেও যদি তিনি সেটা না পারেন, তো প্রতিকূল অবস্থা সামলাবেন কীকরে? মানে, আন্ডার রিপোর্টিং এত হচ্ছে, এবং মহিলাদের সবসময় প্রটেক্ট করে না চললে ঠিকঠাক রিপোর্ট পাওয়া যাবেনা, এ ধরে নিতে হলে তো কাজকর্ম দেওয়াই সম্ভব না।
  • ঈশান | 183.24.110.20 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:৩৫60192
  • মানে, এই লিবারালদের অবস্থা দেখে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারিনা। ইকনমিক টাইমসের রিপোর্টের হেডলাইন দেখে বললাম আর কী। "যৌন হেনস্থা কেসের ২৬% বৃদ্ধি।" পার্সেন্টেজের হিসেবে ভুল কিছু নেই। তবে মানে যদি উইপ্রোই ধরেন, একটা দুলাখ কর্মীর কোম্পানিতে (আরও বেশিই হবে, চেক করতে ল্যাদ লাগছে), জাস্ট ১১১টা না কটা হেনস্থার অভিযোগ। উইপ্রোর এইচ আর বোধহয় বোধহয় বলেননি, কিন্তু ইন্ফির এইচার বলেছেন, উইপ্রোতেও আলাদা কিছু হবার কারণ নেই, যে, এর বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তথ্যগতভাবে এটা যদি কিছু দেখায়, সেটা আগেই বলেছি, আইটিতে যৌন হেনস্থা বিরল। এবং যেকটা হয় তারও দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। ইন্ডাস্ট্রিটার এর জন্য প্রশংসা প্রাপ্য। যৌন হেনস্থার ২৬% বৃদ্ধি, এটা এখানে হেডলাইন করা স্রেফ পাবলিককে চমকে দেওয়া ছাড়া আর কিচ্ছুনা। মশলা বিতরণ, যাকে বলে।

    এই সংখ্যাটা আমার অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলে। এখন, সম্ভাবনা হিসেবে এটা হতেই পারে, যে, এর পরেও প্রচুর আন্ডার রিপোর্টিং আছে। সেটা এস্টাবলিশ করতে গেলে দুটো জিনিস করা যেতে পারে। এক, একটা কমপ্রিহেনসিভ সার্ভে দরকার, ওই ধরুন এনএইচএফএস টাইপের। অথবা, চেনাশুনো মানুষদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যেতে পারে। তা, এই দুইনম্বরটা পাওয়া যাচ্ছেনা। আইটির বড় মাঝারি কোম্পানির কোনো লোক এই কথা বলবেনা, যে, যৌন হেনস্থায় তার কোম্পানিতে জিরো টলারেন্স নেই। ওই টিসিএস, ইনফির এইচাররাই বলেছেন সে কথা, ফলে বাকি রইল সার্ভে। কালকে একটা লিংক পেয়েছিলাম, দুবার। একবার এসেস দিয়েছিলেন, আরেকবার ডিসি। আমার ধারণা, তক্কো হচ্ছে বলে চটপট সার্চ করে ওটা খুঁজে বার করা। নইলে নিজেরা একটু পড়তেন। ওটা কোনোভাবেই কোনো সার্ভে হিসেবে কোয়ালিফাই করেনা, এবং ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে আইটির গপ্পো তো নয়ই। আজকে লাইভল র আরেকটা লিংক পেলাম, সেটা নিয়ে কী বলব জানিনা। শুধু একটাই অনুরোধ, লিংকগুলো দেবার আগে একটু পড়ে টড়ে নেবেন, নইলে এতটা পড়ে বেকার টাইম নষ্ট হয়।

    ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে মিনিমাম ধারণার অভাব থাকলে এই কথাবার্তাগুলো বলা যায়। এইটুকু জেনে রাখুন, আইটিতে প্রতিটি বড় এবং মাঝারি কোম্পানিতে, ম্যান্ডেটারি হ্যারাসমেন্ট ট্রেনিং হয়। আজ নয়, অনেকদিন ধরে। জিরো টলারেন্স পলিসি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু প্রতিটি কর্মীকে গুছিয়ে বলা হয়। এবং কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগও করা হয়। অভিযোগকারি(ণী)র চাকরি যাবার কোনো সিন তো নেইই, পলিসিতে স্পষ্ট করে এও বলা থাকে, যে, অভিযোগ জানানোর জন্য কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবেনা। প্রতিশোধমূলক আচরণ হচ্ছে মনে হলে আরেকদফা অভিযোগ করা যেতে পারে। এগুলো বলা হয়, এবং মেনে চলা হয়। এরপরেও আর কী করা যেতে পারে আমি ঠিক জানিনা।

    এই পলিসি এমনকি দৈনন্দিন জীবনেও প্রভাব ফেলে। আমি যদি আজকে একটা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে আপিসে যাই, আমার বস আমাকে তাড়িয়ে দেবে। কিন্তু যেকোনো আইটি কোং এ যান, দেশে কিংবা বিদেশে, মেয়েরা সেইরকম পোশাক পরে আসছে, দেখবেন। ড্রেসকোড নেই তা নয় কিন্তু, কিন্তু লোকজন মহিলাদের ড্রেস নিয়ে কিছু বলে ঝামেলায় জড়াতে চায়না। যদি হ্যারাসমেন্ট হয়ে যায়। এটা একেবারে বাস্তব।

    এর কোনোটাতেই আমার কোনো আপত্তি নেই। ড্রেসকোড আমি পছন্দ করিনা, সুন্দরী মেয়েদের দেখলেও ভালোই লাগে। জিরো টলারেন্স পলিসিও খুব ভালো জিনিস। তাতেও কোনো আপত্তি নেই। আপত্তি হল চিত্রটাকে পলিটিকাল কারেক্টনেসের খাতিরে দেখানোয়। এবং তারপর গরু রচনার মতো বলে চলা, এখন অনেকটা উপকার হয়েছে, কিন্তু আরও পথ হাঁটা বাকি। আমি জানিনা, এত কিছুর পরেও, একজন উচ্চশিক্ষিতা মহিলা যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে অভিযোগ জানাতে পারছেননা, এইটা স্রেফ পলিটিকাল কারেক্টনেসের স্বার্থে বলে চলা কতটা যুক্তিযুক্ত। আর শিক্ষিত আলোকপ্রাপ্ত মহিলাদের এতটাই দুদুভাতু ভাবা এবং তাঁদের নিজেদের ভাবতেও এনকারেজ করা কতটা মহিলাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গী।

    হ্যাঁ, এখানে প্রশ্ন হতে পারে, আমি আইটি নিয়ে লড়ে যাচ্ছি কেন? অন্য কি কোনো ইন্ডাস্ট্রি নেই? একশবার আছে। কিন্তু আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার কারণেই আইটি বলেছিলাম। বলেছিলাম আইটিতে যৌন হেনস্থা বিরল। সেখান থেকেই এতটা গড়াল। তবে সামগ্রিক চিত্রটা, বিশেষ করে আমেরিকায় ওয়েজ গ্যাপ নিয়ে লিখব বলেছিলাম, সেটা লিখব। পলিটিকাল কারেক্টনেসের মোহ যে কী সব্বোনাশ করছে সেটার একটা ক্লাসিক স্টাডি ওটা। আজ আর হবেনা, কাল। আজ শুধু এইটুকুই লিখি, যে ওয়েজ গ্যাপের আসল রিপোর্ট কোনটা এটা না এস না না জানায় যারপরনাই আশ্চর্য হচ্ছি। দুনিয়া কি স্রেফ গুগল সার্চের উপর চলছে আজকাল?

    পুঃ আরেকটা কথায় আজকাল ভারি মজা পাই। এখানেও পেলাম। "হলিউড কিংবা বলিউডেই এই, তো বাকিদের কী হাল", এইসব শুনলেই বলতে ইচ্ছে করে বলিউডেই সবার তিনটে করে বিয়ে? তাহলে সাধারণ মানুষরা না জানি কটা করে করে। :-)
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:৪৭60193
  • "কিন্তু লোকজন মহিলাদের ড্রেস নিয়ে কিছু বলে ঝামেলায় জড়াতে চায়না।"

    আমি আইটিতে থাকা কালিন (মহিলাদের) ড্রেস কোড নিয়ে এইচ আর থেকে মেইল করা হয়েছিলো।

    আর আপনি যেসব পলিসির কথা বলছেন, ট্রেনিঙ্গের কথা বলছেন সেসব আজকাল সব দেশি বিদেশি বড় কোম্পানিতে আছে। শুধু আইটি নয়।

    ঈশানদা, সত্যিই আসল রিপোর্টটা একটু দিলে ভালো হয়।
  • S | 184.45.155.75 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:০২60194
  • ""হলিউড কিংবা বলিউডেই এই, তো বাকিদের কী হাল", এইসব শুনলেই বলতে ইচ্ছে করে বলিউডেই সবার তিনটে করে বিয়ে? তাহলে সাধারণ মানুষরা না জানি কটা করে করে। ঃ-)"

    ঈশানদা, এটা পুরো ফক্স নিউজ মার্কা কথা হয়ে গেলো। সত্যিই বামেদের "বিশ্বাসযোগ্যতা" নিয়ে প্রশ্ন উঠছে আমার মনে।

    তাও বুঝিয়ে দিইঃ
    ইকনমিকালি নিচু ক্লাসে ডিস্ক্রিমিনেশন বাড়ে না কমে? আপনার "প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা" কি বলে? আর বিয়ের সংখ্যার সাথেই বা ক্লাসের কোরিলেশন কি? বাড়ে না কমে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন