এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বসন্ত এসে গেছে ...

    সিকি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ মার্চ ২০১৭ | ৪৩৪৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • গল্পটা ঠিক গুরমেহরকে নিয়ে শুরু হয় নি। শুরু হয়েছে তার দুদিন আগে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রামজাস কলেজে দুদিনব্যাপী ডিবেটের অনুষ্ঠান ছিল, বিষয় ছিল প্রতিবাদের সংস্কৃতি। তো, সেই ডিবেটের দ্বিতীয় দিনে আমন্ত্রিত বক্তা ছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার, উমর খালিদ।

    এই অবধি পড়েই নিশ্চয়ই আন্দাজ করে নিয়েছেন কেন অচল সিকি আবার এক বছর বাদে বসে গেছে মন কি বাত লিখতে? বিচ্ছিন্নতাবাদী, রাষ্ট্রবিরোধী, আফজল গুরুর সমর্থক, “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে” বলে স্লোগান দেওয়া “ভামপন্থী” উমর খালিদকে সেদিন বলতে না দেওয়ায় সিকি নিশ্চয়ই প্রচণ্ড ব্যথিত? নিশ্চয়ই ফ্রিডম অফ স্পীচ নিয়ে সাতকাণ্ড লিখতে বসেছে আজ?

    নাঃ, সেই রকমের ব্যথা পাবার মত কিছু হয় নি। তেমন কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে আমি আজ লিখতে বসি নি। বিজেপি যে আদর্শে দীক্ষিত রাজনৈতিক দল, তাদের জাতীয়তাবাদের ধারাপাত মহারাষ্ট্রের একটি বিশেষ শহরে যে দলটি দ্বারা রচিত হয়, তাদেরই ছাত্র সংগঠন এবিভিপি যে এর চেয়ে কোনও উন্নত প্রক্রিয়ায় ভিন্নস্বরকে চুপ করিয়ে দিতে শেখে নি, সে আমরা আজ থেকে নয়, অনেক অনেক আগে থেকে জেনে এসেছি। এর চেয়ে উন্নত শিক্ষা এদের নেই, তাই এ বিষয়ে বিশেষ কিছু না বলাই ভালো। মুশকিল হয়ে গেল মাঝখান থেকে গুরমেহর কৌরের একটি ছোট পোস্টার হাতে ছবি বাজারে প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায়। এবিভিপির সুশিক্ষিত ছাত্রদের হাতে মার খেয়ে তখন দিল্লি ইউনিভার্সিটির একাধিক ছাত্রছাত্রী জখম, একজন অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারা হয়েছে, তিনি এখন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ইন্টারনাল ইনজুরি নিয়ে – বেশ একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে ফেলা গেছে, আর কোনও শালা এই শুওরের বাচ্চা কমিউনিস্ট দেশদ্রোহীদের রামজাস কলেজে দ্বিতীয়বার আনার কথা ভুলেও ভাববে না, সেই সময়ে কিনা – মাত্র কুড়ি বছর বয়স্ক একটা মেয়ে হাতে একটা পোস্টার নিয়ে ছবি তুলে সোশাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিল – যাতে লেখা, এবিভিপি, আমি তোমাদের ভয় পাই না, আমি একা নই – সারা ভারতের ছাত্রছাত্রী আমার সাথে আছে? ভাবা যায়?

    মানে, এবিভিপি বা আরএসএস – এমনিতেই অত্যধিক মাত্রায় ফিউডাল মনোবৃত্তির দল, মনুবাদকে মাথায় নিয়ে চলে, এদের দলের মেয়েরাও আদর্শ ভারতীয় নারীর সংস্কৃতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেন, যার পরিণতি হিসেবে আমরা পাই ইয়েল কলেজ থেকে পাশ করে মন্ত্রী হওয়া দুর্গাভক্ত শ্রীমতি স্মৃতি ইরানী জাতীয় রুচিশীল সংস্কৃতিবান মহিলাদের, সেখানে একটি কচি খুকি, হুট্‌ করে বলে বসল কিনা, নট অ্যাফ্রেড অফ এবিভিপি? এমনি কোনও মেয়ে বললে হয় তো ভারতমাতার নামে জয়ধ্বনির নিচে চাপা পড়িয়ে দেওয়া যেত আওয়াজটা, কিন্তু এই মেয়েটি আবার এমনি যে-সে মেয়ে নয় – রীতিমত শহিদের বেটি। এর বাবা, মনদীপ সিং ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের শহীদ। ও, ও, সরি, সরি, মাপ করবেন, ভারত সরকার “শহীদ” শব্দটি সরকারিভাবে গ্রাহ্য করে না। মৃত সৈন্য মনদীপ সিং।

    ভাবছেন, ইয়ার্কি মারছি? আজ্ঞে না, ইয়ার্কি নয়, খাঁটি সত্যি কথা। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনির কোনও কর্মী, কোনও রকমের অ্যাকশনে যদি মারা যান, তাঁকে সরকারের তরফ থেকে “শহীদ” আখ্যা দেবার কোনও অবকাশই নেই – মাত্র তিন মাস আগে লোকসভায় দাঁড়িয়ে এই তথ্যটি দিয়েছেন, আর কেউ নয়, স্বয়ং গৃহরাজ্যমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।

    "The ministry of defence has informed that the word ‘martyr’ is not used in reference to any of the casualties in Indian armed forces. Similarly, no such term is used in reference to the central armed police forces and Assam Rifles personnel who are killed in action or on any operation."

    ৬ই ডিসেম্বর, ২০১৬, লোকসভায় দাঁড়িয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এই বক্তব্য রাখেন মাননীয় মন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু, যা লোকসভার রেকর্ডে রাখা রয়েছে। তো, সেই হিসেবে কারগিল যুদ্ধে “মৃত” সৈনিক মনদীপের কন্যা গুরমেহরের এই বয়ান ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে ন্যাশনালিজমের ঠিকাদারদের, কারণ এতদিন অবিসংবাদিতভাবে তারা নিজেরাই মনে করত সেনাবাহিনির গর্ব আর দেশের সম্মান রক্ষা করার একমাত্র হর্তাকর্তাবিধাতা, ন্যাশনালিজমের দেশব্যাপী একমাত্র ঠিকাদার, সেখানে একজন মৃত সৈনিকের মেয়ে কিনা, দেখা যাচ্ছে, আরেকটা ভিডিও দিয়ে রেখেছে সোশাল নেটওয়ার্কে – যাতে সে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে দেখাচ্ছে, তাতে লেখা অনেক কিছু, তার মধ্যে লেখা ইংরেজিতে ন’টি শব্দ – বাংলা করলে দাঁড়ায়, পাকিস্তান আমার বাবাকে মারে নি। মেরেছে যুদ্ধ।

    আর যায় কোথায়! কলেজ ক্যাম্পাসে এবিভিপির নিজেদের জাতীয়তাবাদী লজ্জা নিবারণের একমাত্র ডুমুরপত্র ছিল এই “ভারতীয় সেনা, শহীদ হবার জন্য বর্ডারে দাঁড়িয়ে রাত জাগছে” রেটোরিক, সেইটাও কিনা ছিনিয়ে নিয়ে গেল জালন্ধরের এক তরুণী, তাও আশপাশের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মরসুমে? অতএব, নামিয়ে দাও নিজেদের পুষে রাখা আইটি সেল, যারা ইদানিং “আইএসআই” স্বীকৃতি পেয়েছে – জানেন নিশ্চয়ই? এ আইএসআই ভারতীয় মানক ব্যুরো নয়, পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সাথে যোগসাজস পাওয়া গেছে বিজেপির আইটি সেলের কর্মীদের, পরপর ধরা পড়েছে তারা।

    ভিডিওটি নতুন নয়। এটি প্রথম ফেসবুকে দেওয়া হয় গত বছর এপ্রিল মাসে, Voice of Ram পেজ থেকে, যেটি চালায় রাম সুব্রহ্মনিয়ম নামে এক যুবক। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তার পেজের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে শান্তির বার্তার আদানপ্রদান করা। সেই পিসকিপিং প্রসেসের মধ্যে দিয়েই এসেছিল গুরমেহরের এই ভিডিওটি। আমি যে হেতু শুরু থেকেই এই পেজটির ফলোয়ার, তাই ভিডিওটি তখনই আমার চোখে পড়েছিল, দেখেছিলাম, শেয়ার করেছিলাম নিজের ফেসবুক ওয়ালে, ভালো লেগেছিল বেশ। একটা মেয়ে তার নিজের জীবনদর্শনের পরিবর্তনের কথা বলছে নীরবে, যা কিনা অনেকটা আমারও মনের কথা। গত বছর মন কি বাত বাড়তি পর্বে আমি হুবহু এক কথাই লিখেছিলাম, দেশ কি মারে? দেশ মারে না। যে আতঙ্কবাদ, উগ্রপন্থার দোষে দোষী বানানো হচ্ছে পাকিস্তানকে, সেই উগ্রপন্থার বলি কি তারা নিজেরা নয়? কম রক্ত ঝরে সে দেশে? নেহাত দেশটার নাম পাকিস্তান, তাই ফেসবুকে “মার্কড সেফ” খেলা জমে ওঠে না, “জে সুইস করাচী” ট্যাগলাইনে ভরে ওঠে না ফেসবুকের প্রোফাইল। মারে কিছু স্বার্থান্বেষী যুদ্ধবাজ রাজনীতিবিদরা, তাদের বীরত্ব দেখানোর তাগিদে, দেশের মধ্যে “জাতীয়তাবাদ”এর সুড়সুড়ি দিয়ে দেশের লোককে ক্ষেপিয়ে তোলার তাগিদে। সেনসেশন তৈরি করা হয় দেশভক্তির নামে, দু দেশেই, ঘৃণা ম্যানুফ্যাকচার করা হয়, তার পরিণতি হিসেবে এক দিক মদত দেয় উগ্রপন্থায়, অন্যদিক বছর বছর তার সামরিক অস্ত্রসম্ভার বাড়িয়ে চলে। যুদ্ধ হলেও সেনা মরে, যুদ্ধ না হলেও মরে। দু দিকেই।

    সে কথা থাক। হচ্ছিল গুরমেহরের কথা। প্রায় ছ মাস আগের একটি ভিডিও, যাতে উনিশ বছুরে তরুণীটি বলছে, দু বছর বয়েসে বাবাকে হারিয়েছি, বাবা কী জিনিস জানতে পারি নি। খুব রাগ হত, পাকিস্তান আমার বাবাকে মেরেছে – মনে করতাম। আমার যখন ছ বছর বয়েস, একটা ছুরি নিয়ে এক বোরখা পরা মহিলাকে মারতে গেছিলাম, মনে করেছিলাম আমার বাবার মৃত্যুর জন্য সে-ই দায়ী। তার পরে মা আমাকে বোঝায়। এখন বুঝি, পাকিস্তান মারে নি আমার বাবাকে, মেরেছে যুদ্ধ। চাইলে এই সমস্ত যুদ্ধ এড়ানো যেত, এড়ানো যায়। আমি এখন তাই শান্তির পক্ষে কথা বলি। যদি শত্রুতা ভুলে আমেরিকা আর জাপান বন্ধু হতে পারে, দু দুটো বিশ্বযুদ্ধের তিক্ত স্মৃতি ভুলে গিয়ে জার্মানি আর ফ্রান্স বন্ধু হতে পারে, তা হলে আমরা কেন পারব না?

    কেউ বিশেষ দ্যাখে নি। জাতীয়তাবাদী ভক্তের দলের চোখ এড়িয়ে গেছিল এই ভিডিওটা। কোনও শোরগোল ওঠে নি তখন, অথচ, “অ্যান্টিন্যাশনাল” শব্দটাকে কয়েন করে তখন দিল্লি সমেত গোটা দেশ উত্তাল। বেশ কয়েক মাস আগে ছাড়া পেয়েছে কানহাইয়া, উমর খালিদ, অনির্বাণ, তাদের বিরুদ্ধে সিডিশনের একটি চার্জও প্রমাণ করা যায় নি, তাতেও ভক্তদের হুঙ্কার থামানো যায় নি, এদিকে উরিতে তখন ঘটে গেছে সন্ত্রাসবাদী হামলা, কাশ্মীরে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে মারা গেছে বুরহান ওয়ানি, মাত্র দেড় মাস আগে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ ঘোরালো ছিল।

    কিন্তু গুরমেহরকে কেউ চিনত না তখন। সমস্ত ফোকাস তখনও ছিল জেএনইউয়ের দিকে, তাই কে গুরমেহর, কী উদ্দেশ্যে তার ভিডিও বানানো হয়েছে, কেউই খোঁজ রাখে নি। আমি নিজেও ভুলে গেছিলাম নামটা। মনে পড়ল যখন এই কদিন আগে, টানা তিনদিন সভ্য জগত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পরে আমি আবার নেট কানেকশনের জগতে ফিরে এসে পুরনো ফেসবুকের স্টেটাস পড়তে শুরু করলাম, ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি। ততদিনে এবিভিপি তাদের অতিপ্রিয় মনুস্মৃতির বাতলানো পথে মেয়েটিকে “ঠোস জওয়াব” দেওয়া শুরু করে দিয়েছে। শুনলাম গ্রাফিক চিত্রসহ তার কাছে মেসেজ গেছে, কী ভাবে তাকে রেপ করা হবে। এত বড় সাহস, যে তার শহীদ বাবা শুধু নয়, দেশের যাবতীয় আর্মি জওয়ানদের অপমান করে? বলে কিনা এবিভিপিকে ভয় করে না, এবিভিপির বিরুদ্ধে কথা বলে? ততদিনে ভক্তের দল খুঁজে পেয়ে গেছে সেই ছ’মাসের পুরনো ভিডিও, তার আগেপিছের কোনও কথা নিয়ে তো ট্রোল করা চলে না, তাই বেছে নেওয়া হল ন’টি শব্দ, পাকিস্তান ডিড নট কিল মাই ড্যাড, ওয়ার কিলড হিম। ট্রোলের বন্যা বয়ে গেছে, “রসিক” হিসেবে টুইটারে খ্যাত ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ তাঁর রসবোধের পরিচয় দিয়ে দিয়েছেন টুইটারে, সেটিকে রসিকতা মনে করে শেয়ার করে ফেলেছেন আর এক বলিউডের অভিনেতা। কিরেন রিজিজু বড় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তখন, মেয়েটির মন কে বিষাক্ত করল, শালা লেফটিস্টগুলো করেছে নিশ্চয়ই, নইলে কেন বীর শহীদ সেনানীদের এই মেয়েটি অপমান করবে? লক্ষ্য করুন, সেই কিরেন রিজিজু, যিনি তিন মাস আগেই লোকসভায় দাঁড়িয়ে অন রেকর্ড বলেছেন, “শহীদ” শব্দটি মৃত ভারতীয় সেনাদের ক্ষেত্রে ভারত সরকার অনুমোদন করে না।

    আক্রমণের লক্ষ্য যখন একটি মেয়ে, তখন তো আক্রমণ করা অনেক সহজ হয়ে দাঁড়ায়। খানকি মাগী বল্‌, ওর শরীরের বাঁকের বিশদ বর্ণনা দে, জড়িয়ে দে ওর নাম র‍্যান্ডম কোনও একটা ছেলের সাথে, তা সে যে বয়েসের হোক না কেন, ধর্ষণের হুমকি দে, এতে যা সুখ পাওয়া যায়, সে সুখ তো অন্য কিছুতে মেলে না।

    গুরমেহর আজ পরিচিত মুখ, চাপে পড়ে গুরমেহরের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বাধ্য হয়েছে দিল্লি পুলিশ, তার পরেও সে দিল্লি ছেড়ে আপাতত চলে গেছে পঞ্জাবে নিজের বাড়িতে।

    আমরা, যারা তত-পরিচিত-নই সাধারণ মানুষরা, যারা একই রকম ভাবে সোশাল নেটওয়ার্ক সাইটে বিচরণ করি, তাদের সুরক্ষার ভার কে নেয়?

    গুরমেহরের খুব কাছাকাছি ধরণের একটা ঘটনা ঘটে গেল আমারই পরিচিত সার্কলে। দু বছর আগে এক ব্যক্তি রামকৃষ্ণ-সারদামণি-বিবেকানন্দ-নিবেদিতার সম্ভাব্য যৌনজীবন নিয়ে একটা পোস্ট করেছিল ফেসবুকের একটা ক্লোজড গ্রুপে। যদিও ঠিক মুখরোচক কেচ্ছা বানানোর উদ্দেশ্যে সেটা সে লেখে নি, বরং সেই ধরণের কিছু লেখাপত্তর নিয়ে বাজারে ইতিমধ্যেই দু তিনটে বই আছে, কিন্তু ভক্ত তো ভক্ত। পূজ্য ভগবানের যৌনজীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া তাঁরা মেনে নেবেন কেন? এই কলকাতা শহরেই অনেকদিন আগে বাংলা দৈনিকের রবিবাসরীয়র শয়ে হয়ে কপি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, কারণ সেখানে সেই সপ্তাহের বিষয় ছিল নেতাজির বিয়ে এবং এমিলিয়া শেঙ্কলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় থেকে পরিণয়ের কাহিনি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, যিনি নাকি মরেন নাই, ঘরেও ফেরেন নাই, তিনি বিবাহ করিতে পারেন, এইটা হজম করবার মত পাচনশক্তি তখনকার ভক্তদের ছিল না। নেতাজি যেমন বিয়ে করতে পারেন না, তেমনি লেনিনের নিতম্ব থাকতে পারে না (কোনও এক সিনেমায় লেনিনের চরিত্রটির পেছনদিক নগ্ন অবস্থায় দেখানো হয়েছিল, তাতে লেনিনভক্তরা খচে গেছিল বেদম), রামকৃষ্ণ বা সারদামণিরও যৌনজীবন থাকতে পারে না।

    কিন্তু কেউ যদি ভুল করে লিখে ফেলে সেই সব নিয়ে? নব্বইয়ের দশকে কাগজ পোড়ানো হয়েছিল, কিন্তু এখন তো সোশাল মিডিয়ার যুগ। হরদম সেখানে বসছে ক্যাঙারু কোর্ট, নেমিং অ্যান্ড শেমিংএর আসর, আর কোনও পুরনোই এখানে পুরনো হয় না। কোনও এক ভক্তের চোখে পড়ে সেই দু বছর আগের পোস্টটি, তিনি সেটির স্ক্রিনশট নিয়ে হিংস্রভাবে শেয়ার করতে শুরু করেন, এবং এক দিনের মধ্যে শুধু ফেসবুক নয়, আরও বিভিন্ন সোশাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মে সেই স্ক্রিনশট ভাইরাল করে দেওয়া হয়। ফলে, বিভিন্ন ধরণের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত ভক্তের দল ছেলেটির মুণ্ডু চাইতে শুরু করে, কেউ অতি সাবধানে তার বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর খুঁজতে শুরু করে, এবং আক্রমণের লক্ষ্য অচিরে খুঁজে নেয় সম্ভাব্য মহিলা টার্গেটদের। তার স্ত্রী, তার মা, তার বোনকে নিয়ে মুখরোচক যৌনগন্ধী কমেন্ট চারদিকে ছড়াতে তো শুরু করেই, ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গেছিলাম, এ সমস্তকিছুই হয় প্রথমে গণহারে রিপোর্ট করে তার প্রোফাইল সাময়িকভাবে ডিঅ্যাক্টিভেট করানোর পরে, যখন ছেলেটির নিজের তরফে ডিফেন্ড করবার মত কোনও প্ল্যাটফর্মই আর নেই। এর পরে আক্রমণ শুরু হয় যে গ্রুপে দু বছর আগে কমেন্টটি পোস্ট হয়েছিল, সেই গ্রুপের সঞ্চালিকার ওপর। যেহেতু তিনি লিঙ্গচিহ্নে মেয়ে, অতএব, আক্রমণের পদ্ধতিটা স্বাভাবিকভাবেই সহজ হয়ে যায়। রেপ থ্রেট থেকে শুরু করে এমন সুন্দর পানু ছড়া বানিয়ে বাজারে ছাড়া হয়, যাতে আরো আরো বেশিমাত্রার লোক মজা লুটতে পারে। ভার্চুয়ালি একটা মেয়েকে যতরকম ভাবে বুলি করা সম্ভব, সবই করা হল। আর এইসব ছড়া-কবিতা, কোনও অর্ধশিক্ষিত গোঁয়ারগোবিন্দের লেখা নয়, রীতিমত উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির যৌথ রচনার ফসল।

    ভক্তি, অন্ধই হয়। যে জিনিস তর্কের মাধ্যমে, আলোচনার মাধ্যমে, এমনকি দরকার হলে শালীন বাদানুবাদের মাধ্যমেও নিষ্পত্তি করে ফেলা যায়, ভক্তেরা সেখানে ব্যবহার করে লাঠি, ইঁট, বেল্ট, আর ভার্চুয়াল ট্রোল ব্রিগেড। ছোট করে বলতে গেলে, ভায়োলেন্স। আলোচনায় লাগে যুক্তির প্রয়োগ, ভক্তি তো যুক্তির পথে হাঁটে না।

    এমন কি, এ নিয়ে সরব হবার পরে এ-ও শোনা গেছে, ইঁট ছুঁড়লে তো ভাই পাটকেল খেতেই হবে। অমন নোংরা একটা জিনিস লিখলে তো ব্যাকল্যাশের জন্য তৈরি থাকতেই হবে। ভক্তদের সেন্টিমেন্টকে আক্রমণও করবে, তারপরে পালটা গালাগাল বা রেপ থ্রেট বা ডেথ থ্রেট খেলে বা তোমার নামে পানু ছড়া লিখে শেয়ার করলে তুমি আঁচল আঙুলে পাকিয়ে নাকে কাঁদবে, দুটো তো একসাথে চলে না বাপু!

    তাই হবে হয় তো। বাক্‌স্বাধীনতা, ফ্রিডম অফ স্পীচ বলে একটা শব্দবন্ধ আছে বলে জানি, কিন্তু কোনখানে, কতদূরে তার সীমারেখা, কখন সেটা বাক্‌স্বাধীনতা আর কখন সেটা অ্যাবিউজ, কে তা নির্ধারণ করবে? মানুষের ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধির ওপরেই সেসব নির্ভর করে বলে জানি, তবে আজকালকার দিনে বিচারবুদ্ধিরও এত বেশিমাত্রার ভ্যারিয়েশন দেখা যায়, মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে অবাক হতেও ভুলে যাই।

    ছেলেটির লেখাটি আপত্তিকর ছিল, মেনে নিলাম। সে যা লিখেছিল, সেটা রামকৃষ্ণ-সারদামণি-বিবেকানন্দ ভক্তদের আহত করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল, এবং সেটার প্রতিবাদ প্রতিবাদের ভাষাতেই করা যেতে পারত। ইন ফ্যাক্ট, ছেলেটি পরে জানিয়েছিল, সে কেন লিখেছিল সেই লেখাটি – ফেসবুকের সেই গ্রুপে কিছু উগ্র সদস্য মহম্মদকে নিয়ে যৌনগন্ধী কটূক্তি করে চলেছিল। এই ছেলেটি তাতে আপত্তি জানালেও তাতে লাভ হয় নি, ছেলেটি তাতে জানায় যে এতে মুসলমানদের সরাসরি অনুভূতিতে আঘাত হানা হচ্ছে। তাতেও সেই মহম্মদ-ব্যাশিং তো কমেই না, বরং চলতে থাকে। তাদের একটা শিক্ষা দেবার জন্য ছেলেটি তখন এই লেখাটি লেখে, রামকৃষ্ণ-সারদামণিকে নিয়ে, এইটা বোঝাবার জন্য যে তাদের সম্মাননীয়, আরাধ্য কাউকে নিয়ে কটূক্তি করলে সেটা কতটা আঘাত হানতে পারে অনুভূতিতে। এবং, আবারও, লেখাটি কাল্পনিক কিছু ছিল না, বাজারচলতি দু তিনটি বইয়ে এই নিয়ে বিস্তারিত চর্চাও আছে। বইগুলি খোলাবাজারেই কিনতে পাওয়া যায়।

    কিন্তু ভক্তরা তো ক্রিটিসিজম পড়েন না – তাঁরা ভক্তিমার্গেই বিচরণ করেন। অতএব, যা হবার তাই হল। প্রথমে ছেলেটির বলার প্ল্যাটফর্ম কেড়ে নেওয়া হল, তারপরে শুরু হল তার পরিবারের লোকজনকে জুড়ে স্ল্যান্ডারিং, এর পরে লেখাটি “পোস্ট হতে দেওয়ার” অপরাধে সঞ্চালিকার নামে সিরিজের পর সিরিজ আদিরসাত্মক চুটকি, ছড়া। কে না জানে, এই পদ্ধতিতে একটা মেয়েকে যত সহজে “কাত” করে দেওয়া যায়, যে অনির্বচনীয় ধর্ষকাম মর্ষকাম অনুভূত হয়, তেমনটি আর কোনও কিছুতে হয় না!

    ভার্চুয়াল দুনিয়ায় দিল্লি পুলিশও নেই, আর কিরেন রিজিজু বা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও বাংলা পড়েন বলে শুনি নি – ফলে এ রকম হাজার হাজার সাইবার বুলিয়িংএর ঘটনা ঘটে যেতেই থাকে লোকচক্ষুর আড়ালে।
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
    যাক গে। হচ্ছিল গুরমেহরের কথা, আর ছাত্রদের প্রোটেস্ট মার্চের কথা। আমি তখন একলা বেরিয়ে পড়েছিলাম আমার বাইক নিয়ে, বরফের দেশে। ফেরার পথে, ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি, যখন ফোনের নেটওয়ার্ক পেলাম, জানলাম কী কী হয়ে গেছে রামজস কলেজে, জানলাম কী কী ভাবে ছ’মাসের পুরনো পোস্ট তুলে এনে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে গুরমেহরকে, এমনকি এর পরেও নিজেদের দেশভক্তির প্রমাণ দেখাতে এক মেগা সাইজের জাতীয় পতাকা মাথার ওপর বিছিয়ে ধরে এবিভিপি এক প্রস্থ মিছিলও করে ফেলেছে ইউনিভার্সিটির নর্থ ক্যাম্পাসে। এবিভিপির হাতে আক্রান্ত শিক্ষক, প্রশান্ত চক্রবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁর শরীরের ভেতরে ক্ষত তৈরি হয়েছে ছাত্রদের লাথি খেয়ে। প্রতিবাদে দিল্লি ইউনিভার্সিটির সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পথে নামবে ২৮শে ফেব্রুয়ারি। জমায়েত হবে এসজিটিবি খালসা কলেজের সামনে।

    আমি বাড়ি পৌঁছবো ২৭ তারিখ রাতে। একদিন বাড়তি ছুটিও রয়েছে হাতে। অতএব, যেতেই হবে।

    সাড়ে বারোটায় ছিল জমায়েতের সময়, তাও পৌঁছতে পৌঁছতে পৌনে দুটো বেজেই গেল। বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোবার পরে পরেই পুলিশের আধিক্য ছিল চোখে পড়ার মত। ছাত্র মার্গ, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ ক্যাম্পাসের মুখ্য এন্ট্রান্স, সেখানে প্রতিটা মোড়ে মোড়ে মোটা মোটা ভেস্ট পরা দিল্লি পুলিশ, সমস্ত রাস্তা ব্যারিকেড দেওয়া, কোনও গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, অবশ্য পায়ে হেঁটে চলে যাওয়াই যাচ্ছে। চারদিকে অল্পবয়েসী ছেলেমেয়েদের ভিড়, অভিমুখ এক দিকেই।

    পরিচিত যে জনের থেকে মিছিলের খবর পেয়েছিলাম, তাকে ফোন করে জানলাম খালসা কলেজ থেকে মিছিল এগিয়ে এসেছে, এই মুহূর্তে তারা আছে রামজস কলেজের সামনে।

    রামজস পর্যন্তও এগোতে হল না, দেখা হয়ে গেল মিছিলের সঙ্গে। সে এক দৃশ্য বটে, দেখামাত্র বঙ্কিম হয়ে বলতে ইচ্ছে করে – এ যৌবনজলতরঙ্গ রোধিবে কে? হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী একজোট হয়ে স্লোগান দিচ্ছে, এবিভিপি গো ব্যাক, গো ব্যাক গো ব্যাক। খানিক এগোতেই পরের ঝাঁকের মুখে হইহই করে এই মরশুমের নতুন স্লোগান – আরে এবিভিপি, কাহে so creepy? দিল্লির ছাত্রছাত্রীদের মিছিলের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যেটা সাধারণত পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মিছিলে দেখা যায় না – সেটা হচ্ছে ডফলি। এক একটা ঝাঁক একটা ডফলি নিয়ে তাতে তাল তোলে, আর সেই তালে তালে চলতে থাকে স্লোগান। তার সাথে চলে হাততালি। হাতের তালে তালে কয়েক হাজার তরুণ তরুণীর একটা সমুদ্র তখন ছাত্র মার্গে আছড়াচ্ছে, গর্জাচ্ছে। তারই মাঝে অন্যরকমের তাল, কান পেতে শুনলাম সেই ঝাঁকে কোরাস চলছে – দেখনা কিতনা তাকত আজ বাজু-এ-কাত্‌ল মেঁ হ্যায়, সরফরোশি কি তমন্না অব্‌ হমারি দিল মে হ্যায়।









    দুদিন আগে এই রাস্তা দিয়েই লম্বা একটা জাতীয় পতাকা নিয়ে এবিভিপির মিছিল বেরিয়েছিল, নিজেদের ন্যাশনালিজম প্রমাণ করতে। কতজন ছিল সেই মিছিলে? জানি না, আমি ছিলাম না সেদিন, তবে আজকের ভিড়ের সাথে নিশ্চয় তুলনীয় নয় সেই মিছিল। আজ ধারেকাছে নেই কোনও এবিভিপির ছাত্র? …

    রাস্তা জুড়ে মিছিল চলেছে, দুপাশে মোটা দড়ি নিয়ে কর্ডন করে সাথে সাথে চলেছে দিল্লি পুলিশের দল, আমি ছিলাম বাঁদিকের ফুটপাথে, সেখানে অন্যান্য সাধারণ মানুষজনের সাথে আমিও ছিলাম, পাশ থেকে মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও তুলছিলাম, হঠাৎ শুনতে পেলাম আমার পেছনদিক থেকে গুটিকয় ছেলে বেশ আবেগের সঙ্গে স্লোগান লাগাচ্ছে, বন্দে মাতরম, ভারত মাতা কি জয়।

    স্লোগানটা আমি একা শুনতে পাই নি, আমার পাশ দিয়ে মিছিলের যে অংশটা চলে যাচ্ছিল, তারাও শুনতে পেয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে তালির রিদমটা জোরদার হয়ে গেল – আরে এবিভিপি, কাহে সো ক্রিপি? আরে এবিভিপি, কাহে সো ক্রিপি?

    ভারতমাতার সন্তানেরা একেবারে ফুস্‌ হয়ে গেল। মিছিল এগোতে থাকল, আমরা ঢুকলাম আর্টস ফ্যাকাল্টির চত্ত্বরে। সেখানে তখন মেলা বসে গেছে। হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী। মাথা গুণে শেষ করা যাচ্ছে না। চত্বরের মাঝে বিবেকানন্দের মূর্তির নিচে তখন চলছে বক্তৃতা। বক্তব্য রাখছেন যাঁরা, তাঁদের কাউকেই আমি চিনি না, তার মধ্যে একজনকে চিনলাম, তিনি দিল্লি ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর (DUTA) প্রেসিডেন্ট নন্দিতা নারায়ণ। হাসতে হাসতে বলছিলেন, এই এবিভিপির ছাত্ররা, এরাও তো আমার ছাত্রই, সন্তানতুল্য, বলতে বাধ্য হচ্ছি, এদের ইম্যাজিনেশন পাওয়ার বড় কম। এরা দেশপ্রেমী আর দেশদ্রোহীর বাইরে কিছুই বোঝে না, যে কোনও বিষয় নিয়ে এদের সামনে আনলে এরা সেটাকে এই দুভাবেই বিচার করার চেষ্টা করে, এর বাইরে এরা কিছুই বোঝে না, বুঝতে চায় না।

    আরেকটি ছেলে, বোধ হয় আইসা বা অন্য কোনও দলের সম্পাদক, সুন্দর মার্জিত বক্তব্যে জানিয়ে গেল তার প্রতিবাদ, বার বার বলল, ওরা মারপিটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, কিন্তু আমরা মারপিটে যাবো না, আমরা ওদের বার বার আলোচনায় ডাকব, ওরা আমাদের আলোচনায় অংশ নিতে বাধা দিলেও আমরা ওদের আলোচনায় অংশ নিতে ডাকব। আর সবার আগে আমরা সব্বাই মিলে ওদের জানিয়ে দেব, এবিভিপি, যতই গায়ে হাত তোলো, আমরা তোমাদের ভ-য় পা-ই না। মুহূর্তে কয়েক হাজার জনতার ঠোঁট নড়ে উঠল একসাথে –

    নহী ডর কিসি কা আজ
    নহী ডর কিসি কা আজ
    নহী ডর কিসি কা আজ, এক দিন –
    ও হো, মন মে হ্যায় বিশ্বাস
    পুরা হ্যায় বিশ্বাস,
    হম হোঙ্গে কামিয়াব, এক দিন।













    আস্তে আস্তে কিছু চেনা মুখের দেখা পাচ্ছি এবারে। শুদ্ধব্রতদার সাথে আগে ফোনে কথা হয়েছে, ভার্চুয়ালি আমরা যুক্ত, সামনাসামনি আলাপ হয় নি কখনও, আজ ছোট করে আলাপচারিতাটা সেরে নিলাম। সামনে দেখলাম শেহলা এসেছে, কানহাইয়া এসেছে, উমর খালিদকে দেখতে পেলাম না যদিও, বিবেকানন্দ মূর্তির নিচে তখন বক্তৃতা শুরু করেছেন যোগেন্দ্র যাদব। এই মানুষটি যখন কথা বলেন, মুগ্ধ হয়ে শুনতে হয়।

    কী বললেন উনি? আমি আর কী বলব? নিজেই শুনে নিন।



    এর পরে বললেন ডি রাজা, সীতারাম ইয়েচুরি, সমস্ত তো শোনার সময় হয়ে উঠল না – শেহলার বক্তৃতাও শোনার ইচ্ছে ছিল, শুনে আসা গেল না – আমার ফেরার সময় হয়ে এল, আর বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। ধীরে ধীরে পিছিয়ে এলাম। ভিড় তখন ছড়িয়ে গেছে আর্টস ফ্যাকাল্টির চত্বরে। বেশির ভাগ জনতাই তখনও বক্তৃতা শুনছে, কিন্তু ইতিউতি ছেলেমেয়েরা গোল হয়ে বসে গান ধরেছে –

    অ্যায় শ্‌শালা –
    আভি আভি হুয়া য়কীঁ,
    কী আগ হ্যায় মুঝ মে কহিঁ
    হুয়ি সুবহ্‌, ম্যায় জল্‌ গয়া
    সুরজ কো ম্যায় নিগল গয়া
    রু-ব-রু রোশনি …

    আরেক দল তখন রঙীন চক বিলি করছে ছেলেমেয়েদের মধ্যে, আর ছেলেমেয়েরা তাদের মনের কথা উজাড় করে লিখছে চত্বরের মেঝেতে। আর খুশিতে মাথা নাড়াচ্ছে রঙীন ফুলের দল।














    ফিরে আসার পরে খবর পেলাম, জমায়েত ভাঙার পরে আইসার দুজন ছাত্রকে গেটের বাইরে একলা পেয়ে বেদম পিটিয়েছে এবিভিপির দুই কীর্তিমান। প্রশান্ত আর বিনায়ক। পুলিশের সামনেই। পুলিশ অবশ্য হস্তক্ষেপ করায় বেঁচে যায় ছেলেদুটি। এবিভিপির এই দুই গুণ্ডাকে পুলিশ আপাতত গ্রেফতার করেছে, আর নিজেদের মুখ বাঁচাতে এবিভিপি তাদের পার্টি থেকে বহিষ্কৃত করেছে আজ।

    দিনের শেষে, এমন একটা ঢেউয়ের সাক্ষী হতে পেরে নিজেরই খুব ভালো লাগছিল। আমি নিজেই গুণগুণিয়ে গান গাইছিলাম, আমার খুব প্রিয় গান –

    স্লোগান দিতে গিয়ে, আমি ভিড়ে গেলাম দলে,
    গলায় তেমন সুর খেলে না,
    হোক বেসুরো পর্দা বদল,
    তবুও আমি সবার সাথে মিলিয়ে দিলেম গলা –
    ঘুচিয়ে দিয়ে একলষেঁড়ে চলা।
    জুটলো যত আমার মত
    ঘরের খেয়ে বনের ধারে মোষ তাড়ানোর উল্টো স্বভাব
    মোষ তাড়ানো সহজ নাকি?
    মোষের শিংয়ে মৃত্যু বাঁধা
    তবুও কারা লাল নিশানে
    উশ্‌কে তাকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ে
    স্লোগান।


















    +++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

    গতকাল (৪ঠা মার্চ) দিল্লিতে এরই সূত্র ধরে হয়ে গেল আরেকটি প্রতিবাদ মিছিল। মান্ডি হাউস থেকে পার্লামেন্ট স্ট্রিট পর্যন্ত, সিটিজেন্স প্রোটেস্ট মার্চ।

    বেশি লেখার তো কিছু নেই, ছবিগুলোই সব কথা বলে দেবে। বেঙ্কাইয়া নাইডু সেদিন বলছিলেন না, এইবারে "আজাদী" বললেই সিডিশনের চার্জ লাগিয়ে দেবেন? ... কাল পার্লামেন্ট স্ট্রীটের সমস্ত পিচ রাস্তা ছাত্রছাত্রীরা ভরিয়ে দিয়েছিল আজাদীর স্লোগানে, রঙবেরঙের চক দিয়ে। যেদিকে তাকাও, খালি লেখা "আজাদী", "আজাদী", "আজাদী"।





























































































    এর সাথে শেহলা রশিদের গান, উমর খালিদের বক্তৃতা, সীতারাম ইয়েচুরি, নিখোঁজ নাজীবের মা - আর সেদিন দিল্লি ইউনি-তে যারা এবিভিপির হাতে আর পুলিশের হাতে মার খেয়েছিল তাদের স্পিচ, সব মিলিয়ে রইল এই কোলাজ।


















    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ মার্চ ২০১৭ | ৪৩৪৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • a | 132.177.37.124 (*) | ০৩ মার্চ ২০১৭ ১১:৪৪60934
  • নন্দিতা র মত কেও সমর্থন জানালাম।ফেইসবুক এর লেখা র রেফারেন্স এখানে কেন।
  • শাক্যজিৎ | 233.223.143.253 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০২:১৩60978
  • আমাকে ডিফেন্ড করতে হবে না । এসব ঝামেলা শুরু হবার পরেই আমি একটা স্টেটমেন্ট দিয়েছিলাম, ২১শে ফেব্রুয়ারি । সেটা এখানে কপি পেস্ট করে দিচ্ছি । এর পরেও কীসের এত স্ল্যান্ডারিং আমি জানি না । ইপ্সিতাদির কাছেও ক্ষমা চাইছি, আমার জন্যেই ওকে এই হেনস্থায় পড়তে হল বলে ।

    দুই বছরেরও বেশি আগে গুরুচণ্ডালি গ্রুপে করা আমার একটি পোস্ট দুম করে এখন ভাইরাল হয়ে গেছে। রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ ইত্যাদিদের নিয়ে করা সেই লেখাটিতে প্রচুর মানুষ ক্ষুব্ধ। যেহেতু ফেসবুকের বাইরে আছি তাই আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারছি না। এই লেখাটি দিলাম নিজের বক্তব্যকে পর্যালোচনা করবার উদ্দেশ্যে।

    প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি রামকৃষ্ণ নিবেদিতা ইত্যাদিদের নিয়ে কিছু মন্তব্য করায় যেসব মানুষের খারাপ লেগেছে তাঁদের কাছে। কাউকে আঘাত দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল না এরকম বাজে কথা বলে লাভ নেই। অবশ্যই আঘাত দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু সেটা অগণিত রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ ভক্তদের নিখাদ শ্রদ্ধার জায়গাটাকে নয়। সেই কারণেই তাঁদের শ্রদ্ধাটুকুকে অসম্মান করবার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। এই বিষয়ে বিস্তারে পরে লিখছি।

    তাহলে আঘাত করবার উদ্দেশ্যটা কাদের ছিল? গুরুচন্ডালি অনলাইন দুনিয়াতে বাংলা সাহিত্য চর্চার সম্ভবত বৃহত্তম প্লাট্ফর্ম। কিন্তু সেই সময়কালে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা এই গ্রুপটাকে নিজেদের রণক্ষেত্রের আখড়া বানিয়ে তুলেছিল। কোনো তাত্বিক বিতর্ক নয়, বরং পরস্পরের উদ্দেশ্যে অশ্লীল আক্রমণ এবং খেউড় যার বেশিরভাগটাই যৌনগন্ধী। দিনের পর দিন হজরত মুহম্মদের যৌনজীবন নিয়ে বিকৃত চর্চা হয়েছে এখানে। আমরা সমমতাবলম্বীরা ব্যাপারটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখিনি। বরং হিন্দু মৌলবাদ যে ভারতবর্ষে ক্রমবর্ধমান বিপদ হিসেবে উপস্থিত হচ্ছে, সেটার উপসর্গ হিসেবে দেখেছিলাম। এবং মডারেট রেটরিক দিয়ে সেই হিংস্র কণ্ঠ্স্বরকে থামানো যাচ্ছিল না । একটাই উপায় হতে পারত, তাদেরকে আঘাত করা। যেসব কাল্টকে তারা চর্চা করে এসেছে সেই কাল্টকে আক্রমণ। পদ্ধতিটা ভুল ছিল, এখন মানি। একটা সমাজের সবথেকে এগিয়ে থাকা মানুষদের আক্রমণ করে নামিয়ে আনবার পদ্ধতিতে মৌলবাদ দমন করা যায় না। কিন্তু ভুল ছিল পদ্ধতিটাতেই। আঘাত করবার উদ্দেশ্য্তে নয়। কাজেই আবারো একবার ক্ষমা চেয়ে নিলাম, সঠিক উপায়ে আঘাত করতে না পারার জন্যে ।

    রামকৃষ্ণ বা বিবেকানন্দের মূল্যায়ন তাহলে কী হবে? রামকৃষ্ণ সেই সমাজের সবথেকে এগিয়ে থাকা শ্রুড একজন বুদ্ধিজীবি ছিলেন। ব্রাহ্ম্ধর্মের অন্তর্দ্বন্দ্বে দিশেহারা, এবং মিল বেন্থাম লক পড়ে ও সর্বোপরি ইয়াং বেংগল-অক্ষয় দত্তদের প্রভাবে নাস্তিকতার দিকে ঝুঁকতে থাকা বাংগালীকে ইউরোপীয় মধ্যযুগের মডেলের ভক্তিবাদের দিকে টেনে নিয়ে গেলেন একজন সম্পূর্ণ নিজের ক্যারিশমাতে। এবং এই স্কুলের উজ্জলতম ছাত্র হিসেবে দেখা দিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। সুনীল গংগোপাধ্যায় তাই যথার্থ লিখেছিলেন, নরেন্দ্রনাথ দত্ত যেদিন দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরে চাকরি চাইতে এসে তার বদলে জ্ঞান ভক্তি ও বৈরাগ্য চেয়ে ফেললেন, সেদিন সেই নাস্তিক যুবকের একটিমাত্র `মা` ডাকে তিনখানা ব্রাহ্ম সমাজ এবং অক্ষয় দত্তদের নিরীশ্বরবাদের পতন ঘটেছিল। ওই একটি ডাকেই সূচিত হয়ে গিয়েছিল একটি জাতির আগামী দেড়শ বছরের চিন্তাজগতের একমাত্র না হলেও একটি প্রধান মডেল। তো এই যে মানুষজন, এঁদের জীবনি পাঠ করলে একটা গোটা জাতির ভাংগাগড়া পাঠ করা যায় । কিন্তু প্রত্যেক যুগে এগিয়ে থাকা মানুষদের মধ্যে প্রচুর স্ববিরোধীতা এবং অস্থিরতা দেখা যায়। বংকিমের ছিল, রবীন্দ্রনাথের ছিল। টলস্টয়ের স্ববিরোধীতা লেনিনের ধৈর্য্য্চ্যুতি ঘটিয়েছিল। বিবেকানন্দ এই অস্থিরতার ব্যতিক্রম নন। প্রচণ্ড সেকিউলার চিন্তার পাশাপাশি হিন্দু-তোষণের লেখা লিখেছেন। একবার প্রগ্রেসিভ হয়েছেন, পরমুহূর্তেই দুই পা পিছিয়ে গেছেন। রামকৃষ্ণের রিপ্রেসড হোমো-ইরটিসিজম থেকে মৃগিরোগ হতেও পারত, এবং সেখান থেকেই কালীমূর্তি দেখবার হ্যালুসিনেশন শুরু, এই অনুমান আমি প্রথম করিনি। জেফ্রি কৃপালের কালী'স চাইল্ড একটি বহুচর্চিত বই । সেখানে এই বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা আছে। আবার এই বইটিকে নেগেট করে স্বামী ত্যাগানন্দ একটি গ্রন্থ লিখেছেন, নাম রিভিজিটিং কালী`স চাইল্ড। এই দুই বইতেই দুখানা পরস্পরবিরোধী স্পেকুলেশন আছে। সোমনাথ ভট্টাচার্য্য তাঁর কালীস চাইল্ডঃ সাইকোলজিকাল এন্ড হার্মোনিউটিকাল প্রবলেম্স লেখাটিতে রামকৃষ্ণের রূপান্তরকামী বৈশিষ্ট্গুলি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন এবং এগুলির শিকড় হিন্দু ধর্মের লোকায়ত সেক্টগুলির রিচুয়ালের মধ্যে খুঁজতে চেয়েছেন। ১৯৯১ সালে নরসিংহ শীল তাঁর `রামকৃষ্ণ পরমহংসঃ আ সাইকোলজিকাল প্রোফাইল` গ্রন্থে দেখিয়েছিলেন ওনার ভরসমাধি জাতীয় জিনিসগুলি ছোটবেলার কোনো সেক্সুয়াল ট্রমা থেকে ঘটার সম্ভাবনা ছিল। আরো লেখার কথা বলা যায়। আর বলছি না। এই লেখাগুলোর লাইন মেনেই আমিও স্পেকুলেটই করেছি মাত্র। এবং এই রিপ্রেসড হোমো-ইরটিসিজম যদি সত্যিও হয়ে থাকে তার জন্য রামকৃষ্ণের অবদান বুদ্ধিজীবি হিসেবে তুচ্ছ হয়ে যায় না। কেউ কেউ বলছেন পুরনো যুগের মানুষজন নিয়ে এমন লেখা উচিত নয়। রামকৃষ্ণ বা নরেন্দ্রনাথ দত্ত ইম্পরটান্ট ফিগার কারণ তাঁরা সেই যুগটির প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তাঁরা পুরনো যুগের মানুষ বলে নয়। না হলে পুরনো যুগের একজন পকেটমারের ছবিতে দুবেলা ধুপধুনো দিয়ে প্রণাম করতে হয়।

    বিবেকানন্দ আর নিবেদিতার প্রেম বিষয়ে সুনীল গাংগুলি আগেই লিখে গেছেন। আমি নতুন করে কিছু লিখিনি। প্রেমটুকু থাকলেও তাঁদের গ্রেটনেস কমে না। নিবেদিতা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হাতে প্রথম অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। এই বিপ্লবী নারীই আবার হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম প্রচার করেচেন। এই দুখানা দিকই সত্যি, এবং পরস্পরের পরিপূরক। বাদবাকিটুকু, সারদা ইত্যাদি বিষয়ে কিছু বলবার নেই। ওটুকু লেখা হয়েছিল আঘাত করবার উদ্দেশ্যেই । সাধারণ অনেক মানুষজনের ভাল লাগেনি। তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, আগেই বলেছি।

    এবার প্রশ্ন, আমি যদি রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেক্টটির প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হতাম, যদি বাস্তবেও তুমুল অশ্রদ্ধার মনোভাব দেখাতাম, তাহলেও কি আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো লজিকাল হত? আপনার শ্রদ্ধা প্রকাশ করবার অধিকার আছে, আমার আছে অশ্রদ্ধা প্রকাশ করবার অধিকার। আমরা বাকস্বাধীনতার কথা বলি। যে বাকস্বাধীনতা অন্যের বিশ্বাসে আঘাত না হানে, সেই নিরামিষ বাকস্বাধীনতা দিয়ে আমি কী করব? "রবীন্দ্রনাথ মহান কবি ছিলেন" আর "গোলাপের রং কি কুচি কু সুন্দর" এটুকু বলবার জন্য বাকস্বাধীনতার দরকার পড়ে না। আমার বাকস্বাধীনতা আপনার বিশ্বাসে আঘাত করে চুরমার করবে। তার উত্তরে আপনি আমাকে ধুইয়ে দিন, পেজ খুলুন, আমার বিরুদ্ধে লেখা নামান। কিন্তু রাষ্ট্র লেলিয়ে দিতে পারেন না। খুনের হুমকি, অফিসে মেরে ফেলবার হুমকি দিতে পারেন না। আমার ব্য্ক্তিগত জীবনকে পাব্লিক স্পেকুলেশনের বিষয় করতে পারেন না। পুলিশে কম্প্লেইন করা অথবা পাব্লিক শেমিং করতে পারেন না। তাতে আপনি আমাকে আঘাত করছেন, আমার বক্তব্যকে নয়। আজ আপনারা এত রেগে গেছেন রামকৃষ্ণ সেক্টকে নিয়ে যৌনগন্ধী লেখা নেমেছে বলে। বিশ্বাস করুন, এগুলোই আসিড টেস্ট। আপনার বিশ্বাসের ওপর কুৎসিত আঘাত নেমে আসলেও আপনি আমাকে আর আমার প্রকাশিকাকে নিয়ে পর্নো লিখবেন কি লিখবেন না, রাষ্ট্র লেলিয়ে দেবেন না কি দেবেন না, সেটাই ঠিক করে দেবে আপনি প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের তর্ক্প্রিয় ধারাটির সেরিব্রাল ঐতিহ্যের অনুগামী, না কি নরেন্দ্র মোদী বা আইসিস আল কায়েদার অনুগামী-- যারা চার্লি হেবদো ঘটায়, হুসেনকে দেশ ছাড়া করে।

    লেখাটি কি নিম্ন মানের রসিকতা ছিল? অবশ্যই নিম্নমানের। আমি নিজেই এখন আর ওরকম লেখা লিখব না। কিন্তু নিম্নমানের লেখা নামানোর জন্য কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো যায় না। যদি যেত, তাহলে দুই দিনে জামাত এবং আরএসএস-এর চিন্তন শিবিরে মোমবাতি জ্বালাবার লোক পাওয়া যেত না। কাজেই সেই প্রশ্নে যাচ্ছি না। আমি ক্ষমা চেয়ে নিলাম সাধারণ মানুষ যাঁরা মৌলবাদী নন তাঁদের কাছে। তাঁদের বাঁচিয়ে অন্যদের আঘাত করবার পন্থা আবিষ্কার করতে পারিনি, এই জন্যে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি নিম্নমানের লেখা লেখবার জন্য। লেখাটির কোয়ালিটি নিয়ে আমি নিজেই লজ্জিত। চেষ্টা করব ভবিষ্যতে নিজেকে উন্নত করতে। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি অন্যদের হয়েও, যাঁরা লেখাটিকে পছন্দ করেছিলেন, তাতে কমেন্ট করেছিলেন। এবং অতি অবশ্যই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সেই সব মানুষদের হয়ে, যাঁরা সুভাষ বোসের বিয়ের খবর প্রচার করে, সিনেমাতে লেনিনের নিতম্ব দেখিয়ে অথবা হজরত মুহম্মদকে নিয়ে কার্টুন এঁকে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।
  • কল্লোল | 116.216.146.132 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৪:৫৬60979
  • ফেবুকিয় ব্যাপার স্যাপার নিয়ে আমি খুব ওয়াকিবহাল নই। এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা যদি নিতান্তই না নেওয়া যায়, তো এগুলো উপেক্ষা করি আমরা।
    এসব নিয়ে আর একটা কথাও নয়। যে যেখানে যা পারে পোস্ট করুক, তাতে কার কি এসে যায়!!
  • $$$ | 127.194.205.149 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৪:৫৮60948
  • একটা ওয়েব সাইটে শুধু নিজের মতামত লেখার লেখার জন্যেই অভিজিৎ রায় আর গুচ্ছ লোক খুন হয়ে গেছেন। তাঁদেরকে কেউ আরেকটি ওয়েব সাইটে বা তাঁদের ওয়েব সাইটেই বিরুদ্ধমতের প্রবন্ধ লিখে ফেয়ার গেম অফার করেনি। কোনটা হওয়া উচিত, এই আলোচনাটা এখন নিষ্ঠুর রকম হাস্যকর, যখন কোনটা হওয়া উচিত নয়-এর চূড়ান্ততম নিদর্শনগুলি অলরেডি ইন প্লেস। কিভাবে নিরাপদে থাকা যায় সেই ভাবনাটা নিজেকেই ভাবতে হচ্ছে।

    এমনকি বিরুদ্ধমতের প্রবন্ধ লিখলেও তার অ্যাপ্রোচ পদ্ধতি নিয়ে চূড়ান্ততম আপত্তি থেকেই যাচ্ছে। কেউ মহম্মদের মেমে নামালে তাকে রামকৃষ্ণের মেমে অফার করতে হবে এই অব্ধি গ্রান্টেড হলে, ওর মেমেতে এটা ছিল না এর মেমেতে সেটা কেন এল - এ চলতেই থাকবে। তুল্যমূল্য নিক্তি মেনে বিরুদ্ধাচারণ বিচার এক অসম্ভব ব্যপার। বিরুদ্ধাচারণ কয়েক ফুট কম উগ্র না হলে বিরুদ্ধাচারণেরও বিরুদ্ধাচারণ থাকবে - সেটাও সমমানের উগ্রই হবে আশঙ্কা করাই যায়। উগ্রতা কয়েক ফুট বেশি হয়ে গেলেই - ফেয়ার গেম অফার করা হচ্ছে না বলা যেতেই পারে, তবে মনে রাখা ভাল জিনিসটা সত্যিই তো আর গেম নয়। সেক্ষেত্রে গান্ধিগিরি লেভেলে নেমে আসতে হয়, নৃশংস ধর্ষনের প্রতিবর্ত ক্রিয়া হিসেবে মোমবাতি জ্বালা যেতে পারে।

    স্যোশাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেট এখন আর দশক পূর্ববর্তী বাড়ির বারান্দাবৎ নিরাপদ স্থান নয়, এ বোধ যত শিঘ্র জাগ্রত হয়, মঙ্গল। এটি ভার্চুয়ালও ঠিক নেই আর। একটি প্যারালাল সমাজবাস্তব। আপনার সিভি যত সহজে গুগুল খুঁজে দিতে পারবে ততোধিক সহজে আপনার বাড়ির ঠিকানাও। ফেসবুক থেকে ততোধিক সহজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে আপনার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ মানুষজনদের - পরক্ষণেই তাঁদের অবস্থান, ঠিকানা। এই অবস্থায় আপনার নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি ব্যবহৃত শব্দের যে কোনো চূড়ান্ততম রিপার্কেশনের দায়িত্ব শেষ অবধি আপনার নিজের ওপরেই বর্তায়। কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে একথা বলার আর কোনো মানে থাকেনা যে এটা হওয়া উচিত ছিল না।

    অ্যানোনিমিটির অধিকার, ব্যক্তিগত তথ্য গোপনের অধিকার এর জন্য সওয়াল করুন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।

    নইলে একজন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে বাস্তব জগতে আপনি নিজের ও ঘনিষ্ঠদের জন্যে যে পরিমান হ্যারাসমেন্টের রিস্ক হ্যান্ডেল করছেন, ইন্টারনেটকে তার চেয়ে কম বিপজ্জনক ভাবাটা আপনার অপরিণতির পরিচয়। বিরুদ্ধাচারণের সীমা নির্ণয়ের চেষ্টা বা এক্সপেক্টেশন রাখা দুর্বলতাই মনে হয়।
  • রৌহিন | 233.223.134.142 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৪:৫৯60980
  • আমার হয়ে ক্ষমা চাওয়ার কোন প্রয়োজন দেখিনা। আমি লেখাটা লাইক করেছিলাম। কমেন্টও সম্ভবতঃ। এবং আবার ওরকম লেখা এলে আবারো লাইক করব। ক্ষমা চাইছি না।
    যথেষ্ট বাজে বকা দেখছি। ইপ্সিতাকে যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ব্যক্তিগত স্কোর সেটলের ইচ্ছাও তাতে মিশে আছে এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। যারা এটাকে জাস্টিফাই করছেন তাদের নিজেদেরই ভেবে দেখতে বলব।
    কাল্ট ফিগারদের নিয়ে খিল্লি করার সঙ্গে যারা ব্যক্তিগত আক্রমণকে গুলিয়ে ফেলেন, শুধু ব্যক্তিগত নয়, বেছে বেছে মেয়েদের, সে এতে জড়িত থাক বা না থাক, টেনে এনে পালটা দেবার কথা ভাবেন এবং ভাবান, তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার তো প্রশ্নই নেই।
  • সিকি | 132.177.192.150 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৫:১৩60949
  • আমি অ্যাক্টিভিস্ট নই।

    যতক্ষণ পর্যন্ত আমি কোনও ভুল করছি না জ্ঞানত, ততক্ষণ আমি অ্যানোনিমিটিতে যেতে চাই না।
  • | 116.210.223.46 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৫:৩৩60950
  • গুরমেহেরের সাথে যা হয়েছে আর ঈপ্সিতার সাথে যা হয়েছে দুটো আমার চোখে অবিকল এক লেগেছে। আরো কাছাকাছি সময়ে হওয়ার জন্যই এক লেগেছে।

    ঈপ্সিতা শাক্যজিতের লেখা সমর্থন না করেও শাক্যর বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রমণের প্রতিবাদ করে নিজে আক্রমণ এবং ভার্বাল লাঞ্ছনার মুখে পড়েছে। গুরমেহের ABVPর আক্রমণের প্রতিবাদ করে একইরকম ভার্বাল লাঞ্ছনার মুখে পড়েছে। গুরমেহেরের ক্ষেত্রে পরিমাণটা অনেক অনেক বেশী কারণ আক্রমণ এসে ক্ষমতার সর্বোচ্চ স্তর থেকে। ঈপ্সিতার ক্ষেত্রে আমার অনুমান বিভিন্ন লুকানো রাগ এই সুযোগে জ্বালা মিটিয়েছে।
    তা এই দুটো ঘটনা বেশ চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে বিরুদ্ধ স্বর কোনও 'মেয়ে'র দিক এলে কী ভাবে সেটাকে ট্রীট করে থাকে ভারতীয় বীর পুঙ্গবগণ (ও তৎসহ কিছু বীর নারীও)।

    ব্লগটা প্রথম পড়েই যেটা মনে হয়েছিল আসবে বলে , এই ব্লগের মন্তব্যের ঘরে সেই সুরও যথারীতি এসেছে; 'পুলিশ' ইত্যাদি সত্ত্বেও ঈপ্সিতার ওপরে ভার্বাল আক্রমণকে জাস্টিফাই করার একটা প্রচ্ছন্ন চেষ্টা।
  • dc | 132.174.117.71 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৫:৪৩60951
  • $$$ এর সাবধানবাণী মনে ধরল, বিশেষ করে এইজন্য যে ইন্টারনেট এখন আর একেবারেই অ্যাননিমাস নয়। অনেকবার দেখেছি, ফোনে কারুর সাথে কিছু নিয়ে কথা বললাম, তারপরেই ক্রোম ব্রাউজার সেটা নিয়ে অ্যাড দেখাল। প্রথমদিকে বেশ কয়েকবার মনে হয়েছে নিতান্তই কয়েন্সিডেন্স, কিন্তু এখন একটু সন্দেহ হয়। কিংবা হোয়াটসয়াপে কিছু নিয়ে লিখলাম, তারপরেই সেই বিষয়ে অ্যাড চলে এলো। গুগল ট্র্যাকিং কোন লেভেলে গেছে সে নিয়ে সত্যিই সন্দেহ হয়।

    কতো সময়ে কতো কি লিখব ভাবি কিন্তু লিখিনা। এক দুবার লিখেও ফেলেছি, কিন্তু আর পোস্ট করিনি। ব্যক্তিগতভাবে আমি চূড়ান্ত বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, এও মনে করি কেউ কিছু বললে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করারও অধিকার আছে - পাল্টা যুক্তি দিয়ে, পার্সোনাল অ্যাটাক না করে, ভায়োলেন্সের ভয় না দেখিয়ে। কিন্তু অতি মূল্যবান কথাঃ "কোনটা হওয়া উচিত, এই আলোচনাটা এখন নিষ্ঠুর রকম হাস্যকর, যখন কোনটা হওয়া উচিত নয়-এর চূড়ান্ততম নিদর্শনগুলি অলরেডি ইন প্লেস। কিভাবে নিরাপদে থাকা যায় সেই ভাবনাটা নিজেকেই ভাবতে হচ্ছে"।

    সেই পুরাকালে ইন্টারনেট সম্বন্ধে বলা হতো, ইটস আ জাঙ্গল আউট দেয়ার। এখন কিন্তু এই জঙ্গল বাড়ী অবধি চলে এসেছে।

    ডিঃ ইন জেনারাল লিখলাম, সিকির পোস্টের প্রেক্ষিতে নয়।
  • $$$ | 127.194.205.149 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:০৪60952
  • "আপনি' শব্দটা 'প্লেসহোল্ডার'। একজন অ্যাক্টিভিস্ট যে রিস্ক নেন, অ্যাকটিভিস্ট না হলেও "আপনি" সেই রিস্ক নিচ্ছেন এটাই বলার ছিল। স্যোসাল মিডিয়াতে। "আপনি" শাক্যজিৎ হোক বা গুরমেহের বা সিকি। আর সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে বাকিরা, অবধারিত।
  • pi | 57.29.128.167 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:১৬60953
  • যেহেতু আমার প্রসঙ্গ এসেছে, আমি এটা নিয়ে দেওয়ালে যা লিখেছিলাম, এখানেও দিয়ে গেলাম। আমাকে এর বিরুদ্ধে এফ আই আর করতে হবে, অভিযোগ করতে হবে সেসবই বুঝলাম, আমার ক্রস, সেতো আমাকেই বইতে হবে, অন্য লোকজন আবার কেন এনিয়ে আপত্তি তুলতে যাবেন , কিন্তু প্রশ্ন হল, এগুলো কেন এল ? এই যাঁরা বলছেন, খুঁচিও না বাপু, খুব সাবধান। তো, আমি ঠিক কি খুঁচিয়েছিলাম ? এটা মনে হয়না, এরা এসব করতই, সুযোগের অপেক্ষায় ছিল ? আর সুযোগটা যেকোন অজুহাতে আসতে পারে ( অনেকে অবশ্য এই প্রতিক্রিয়া আসা জাস্টিফায়েডই মনে করছেন, মহাপুরুষদের নিয়ে হলে অন্যদের নিয়েও করাই উচিত বা হলে কিছু বলার নেই ইঃ ইঃ), অনেকে এসব না বলেও , সব দেকে শুনেও হিরণ্ময় নীরবতা পালন করে যাচ্ছেন ( অবশ্যই সবাই নন)।
    আর আরো দিলাম, আরেকটা প্রশ্ন করতে। এই যে বললেন না, না খোঁচাতে, তো সে কথাটাও অনেকে বলছেন, এফ আই আর করে আর না খোঁচাতে। তাহলে আরোই নাকি এইসব আসবে।

    তাই আপনারা যাঁরা নানাবিষয়ে পরস্পরের সাথে একমত হচ্ছেন, তাঁরাই দেখবেন আপনাদের নানা বক্তব্যের মধ্যে পরস্পরবিরোধিতা আছে কিনা।

    ও হ্যাঁ, আপানদের জ্ঞাতার্থে আরো একটি তথ্য। আমাকে বা গুরুকে এর সাথে গুরুতে কাশ্মীর কি জে এন উ তে লেখা নিয়ে জড়িয়ে দেশদ্রোহিতার তকমা দিয়েই হোয়াটসাপে মেসেজ ভাইরাল হয়েছে বলে দেকেছি শুনেছি। তো, কী কী কথা বললে কোথায় কোথায় কী কী প্রতিক্রিয়া আসতে পারে ভেবে কী কী করবেন না, বলবেন না, তার একটা লিস্টি বানিয়ে ফেলতে পারেন। বানাতে বানাতে লিস্টিটা এতই বড় হয়ে যেতে পারে যে কথাই বন্ধ করে দিতে পারে, এটা খালি খেয়াল রাখবেন একটু।

    আর হ্যাঁ, আজ আমার কি অন্যদের সাথে হচ্ছে বলে যাঁরা এখনো নিজের ঘরে তো আগুন লাগেনি বলে নিশ্চিত আছেন, তাঁদের জন্য নিম্যুলার রইলেন।

    ---------

    ক'টা কথা ক'দিন ধরে বলব বলব করেও সময় হয়ে ওঠেনি। কয়েকটা পোস্ট ও কিছু প্যাটার্ন দেখে। কিঞ্চিৎ ইতস্ততঃবোধ ও ছিল। যে পোস্টগুলো নিয়ে বলার, সেগুলো এতটাই কাদামাখা যে ঘাঁটাঘাটি করতে ইচ্ছে করছিল না, লোকের সামনে সেগুলো নিয়ে আসতেও, যদিও দেওয়ালে দেওয়ালে শেয়ার হয়ে লোকজনের সামনে আসার বাকি তেমন কিছু নেই, তবু নিজে হাতে সে নোংরা বইতে কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছিল তো বটেই।
    তারপর ভেবে দেখলাম, ঠিক এই অস্বস্তিটাই তো চাওয়া হয়েছিল। চাওয়া হয়েছিল, এমন কিছু করা, এমন কিছু বলা ( সোশ্যাল মিডিয়ায় বলাটুকুই করা যায় বলে সেখানেই সীমাবদ্ধ আছে হয়ত, বাস্তবে কী করবে জানিনা) যাতে একটি মেয়ে অস্বস্তি,আর অশ্লীলতার অভিঘাতে, যৌন আক্রমণের থ্রেটের ভয়ে কুঁকড়ে যায়। চুপ করে যায়। চুপ করিয়ে দেওয়া যায়। কারণ হয়তো তার কথা বলা নিয়েই সমস্যা।
    ভেবে দেখলাম, চুপ করে গেলে তাদের উদ্দেশ্যই সাধিত হয়ে যাবে।
    ভেবে দেখলাম, সেটা হতে দিয়ে লাভ নেই, বরং তাতে ক্ষতি আরো বেশি।
    ভেবে দেখলাম, কেউ মিথ্যে গল্প বেঁধে খেউড় করলে সেটা প্রকাশ্যে আনতে লজ্জা তো আমার না, যারা এগুলো বলছে , তাদের।
    ভেবে দেখলাম, ঘুরে দাঁড়ানোই।।।
    এই এতদিন ধরে নানাপ্রকার হেনস্থায় মেয়েদের 'সম্মান'হানি কেন হবে, মেয়েরা সেটাকে অসম্মানের, লজ্জার কেন ভাববে , কেন মুখ লুকাবে, কেন এই নিয়ে নিজে বিনাকারণে যন্ত্রণায় জর্জরিত হবে, কেন সমাজের কাছে হয় নিন্দামন্দ নয় আহাউহুর পাত্রী হবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলা্র পরে নিজেই যদি সেগুলো কাটাতে না পারি, এইসব কথা বলা সমাজকে মাই ফুট না বলে, তাহলে তো এতদিন নেহাত মুখেই জগৎ মারলাম !
    নিজের কাছে মুখ দেখাতে পারার জন্যই কথাগুলো বলা দরকার।
    তো, কথা হল, যে কথাগুলো নিয়ে তথাকথিত আপত্তি ( যদিও দুবছরের পুরানো পোস্ট আগা মাথা লেজা বাদ দিয়ে খুঁড়ে বের করে এনে দেওয়া এবং পরের বক্তব্য জেনেশুনে বাদ দেওয়ার পিছনে যে অন্য পরিকল্পিত অভিসন্ধি কাজ কর্রেছে, তা বলাই বাহুল্য , তো সেখানে নোংরামিও পরিকল্পিতভাবেই হবে সেটা বলাও), সেই কথাগুলো আমি বলেছি , বা, এমনও না, কথা বা বলাকে সমর্থন করেছি। সেই পোস্ট নিয়ে আমার বক্তব্য তখনো যা ছিল, এখনো তাই। এই শক থেরাপি দিয়ে লাভ হয়না, তাতে অনেক বেশি মানুষকে আলিয়েনেট করে দেওয়া হয় মনে হয়। এই মত আমি আগেও অনেকবার রেখেছি। কিন্তু স্তম্ভিত হয়ে গেছিলাম, কারুর বক্তব্য প্রকাশের প্রতিক্রিয়ায় তাকে মারার হুমকি দেখে,খিস্তিখেউড়ের বন্যা দেখে আর মুখ বন্ধ করে দেবার নানাপ্রকার ব্যবস্থা নেওয়া দেখে। মুখ খুলেছিলাম তার বিরুদ্ধে, মুখ খুলেছিলাম, তার পুরো বক্তব্য ঠিক করে তুলে না ধরার বিরুদ্ধে, এই বক্তব্য নিয়ে তার যা যা ডিসক্লেইমার দেওয়ার আছে, সেগুলো না দেবার বিরুদ্ধে, যে প্রেক্ষিতে লেখা, তাকে পুরোপুরি ছেঁটেকেটে দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে একটা প্রচারের বিরুদ্ধে। আর এইগুলো আমি বলামাত্রই আমাকে নানা ইঙ্গিত করার বিরুদ্ধে।
    ফল হল,ঘোষণা দিয়ে আর পরিকল্পনা করে খিস্তি এবং খেউড় শুরু হল আমাকে ঘিরে। দেওয়ালে দেওয়ালে গ্রুপে গ্রুপে পর্নোগ্রাফি লেখা শুরু হয়ে গেল আমাকে নিয়ে। বা একেবারেই এই ঘটনার সাথে সম্পর্কহীন কাউকে নিয়ে। হ্যাঁ, সেই কেউটা ইনভ্কোযারিএবয়ালি ন মহিলাই। কোন মহিলাকে জড়িয়েই। কিছু জায়গায় এই ডিসক্লেইমার দিয়েই, যে এগুলো গল্প। কিন্তু তাতে কী। একটা মেয়েকে জড়ানো, তাকে নিয়ে এই রসিয়ে রসিয়ে চর্চা করে, তাকে দিয়ে নিজেদের কিছু বিকৃত সুখ চরিতার্থ করে আমোদটুকু অ নেওয়া গেল, এটা কম কী ? একটা মেয়েকে এসব বলে চুপ করিয়ে দেবার ক্ষমতা দেখানো এল, এটা কম কী ?
    রইল অজস্র এমনি পোস্টের থেকে সামান্য কয়েকটির স্ক্রিনশট।
    ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা লোকজনের চেহারার এই দিকটা এখনো যাঁরা দেখননি, দেখতে পাবেন। তথাকথিত মৌলবাদী যাঁরা নন, তাঁদের আপাতভদ্র মুখোশের আড়ালের মুখটা । যদিও যাঁরা ফেকের আড়াল থেকে আরো জঘন্য স্ল্যাণ্ডারিং নামিয়েছেন, তাঁদের নমুনা এখনি পেশ করলাম না, মুখোশ ধরে এখনি টানাটানি করলাম না।
    নানাপ্রকারের মৌলবাদীদের নানাপ্রকারের আক্রমণ এই প্রথমবার না,
    কিন্তু এখনকার এই কাণ্ডে কিছু জিনিস চোখে লাগল আর কিছু জিনিস আবারো চোখে পড়ল, সেটা বোধহয় একটু চোখে আঙ্গুল দিয়েই দেখানো দরকার। কিছু প্রশ্নও ।
    ১। আমি যে কারণে মুখ খুলেছিলাম, সেই কারণে বা তার থেকে এবিষয়ে অনেক বেশি কড়া মতামত রেখেছিলেন , বা মূল পোস্টের সমর্থনে বক্তব্য রেখেছিলেন, এমন লোক কিন্তু কম ছিল না। কিন্তু তাঁদের নিয়ে এই স্ল্যাণ্ডারিং ধস নামে নি, খিস্তি কিছু এসে থাকলেও এরকম গণখেউড় খামারি কিছুই না। এদের বেশিরভাগ লোককেই আমি চিনিনা, জীবনে ইন্টারাক্ট অব্দি করিনি !
    কারণটা হয়তো খুব সিমপ্ল।
    তাঁরা মহিলা নন ।
    কোন বিষয়ে কিছু বলতে এলে কোন মেয়ের নিজের বক্তব্যই যে সেটা হতে পারে, সেই ব্যক্তির প্রতি মহিলা বলে আকর্ষণ বা দরদ ছাড়াও সেই মেয়েটির নিজস্ব ভাবনা, বক্তব্য থাকতে পারে, এটা বুঝতে খুব অসুবিধে হয় বলে বা বুঝতে না চাওয়ার শতাব্দীপ্রোথিতলালিত জগদ্দল পাথরটা বসে আছে বলে ?
    এমনকি যাঁরাএই ঘটনায় কোনভাবেই যুক্ত না, সম্পর্কের কারণে তাঁদের নাম য় জড়াল, তাঁদের নিয়েও খেউড় নামল ।
    কারণটা হয়তো খুব সিমপ্ল।
    তাঁরা মহিলা ।
    ২। কিছু বিখ্যাত ব্যক্তির ব্যক্তিজীবনচর্চা নিয়ে যাঁদের এত আপত্তি বলে জানিয়েছিলেন, তাঁরা তার থেকেও অনেক খারাপ চর্চা, ব্যক্তিজীবন নিয়ে গাল গল্প পানু বানিয়ে চর্চা, কেচ্ছা, সেইসব নিয়ে রগরগে আলোচনা আমার মত কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে অত্যন্ত আনন্দের সাথে করে গেলেন।
    ৩। আপত্তি তোলা আরেক অংশ এই স্ল্যাণ্ডারিং কে রীতিমতন উসকে দিলেন, মানে নিজে হাতে, নিজের দেওয়ালে করে নোংরামো করে পাব্লিক মেজে কাদা ফেললেন না আরকি , অন্যদের উসকানি দিয়ে নিজেদের চুলকানির উপশম করলেন। লাঠি না ভেঙ্গে সাপ মতা ইত্যাদি প্রভৃতি মনে পড়ে গেল।
    ৪। আপত্তি তোলা আরেক অংশ সেইসব আলোচনা থেকে হেব্বি আমোদ নিলেন। নিজেদের দেওয়াল সাফ রইল। উসকানি টানি দিলেন না। কিন্তু যেখানে এসব চলছে, সেখানে ্মজাটা নিয়ে এলেন। বেশ মজার ব্যাপার কিন্তু।
    ৫। রবীন্দ্রনাথ, মাও , কাস্ত্রো কি আর অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিকে নিয়ে কোন চর্চাতে কিন্এতু এনাদের কোন আপত্তি, অসুবিধে কখনো দেখিনি, এমনিকি তাতে অংশ নিতেও দেখেছি। মেরে ফেলার হুমকি টুমকি , কি লেখক বা তার পরিবার বন্ধুদের নিয়ে এমন চর্চা এসব কিছুও দেখিনি।
    ৬। যাঁরা দুবছরের আগের পোস্ট নিয়ে প্রভূত আপত্তি তুলেছিলেন কিন্তু আমাকে বা অন্যদের নিয়ে এসব চর্চায় অংশ নিলেন না, তাঁদের সিংহ ভাগকেই ( অবশ্যই বেশ কিছু ব্যতিক্রম আছে) কিন্তু এনিয়ে কোন আপত্তিও করতেও দেখা গেল না! বা কেউ কেউ আপত্তি করলেও কথা প্রসঙ্গে এসব এসে পড়লে যেটুকু না করলে নিজের ইমেজে চোনা পড়তে পারে, সেটুকুও।প্রসঙ্গ এলে, য় হ্যাঁ, এটাও খারাপ কিন্তু বলে বাঁহাতে পুজোর ফুলটা ছুঁড়ে রাখলেন। যেরকম উদ্যোগ নিয়ে মৃত মহাপুরুষের সম্মান বাঁচাতে নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে দেওয়ালে দেওয়ালে সুতো খুলে ফেলছিলেন, মর্টাল মানব মানবীর জন্য তার ছিটেফোঁটাও বরাদ্দ হলনা।
    আবার কেউ কেউ অন্য লোকে শোরগোল তুললে এসব স্ল্যাণ্ডারিং কে খারাপ বললেও তার 'প্রেক্ষিত জনিত জাস্টিফিকেশনটা দেখিয়ে দিতে ভুললেন না।
    ৭। যাঁদের ঐ পোস্ট নিয়ে কোন আপত্তি সে অর্থে ছিল না ( এমনকি এঁদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেরা লাইক টাইক য় দিয়েছিলেন, কেই কেউ ওই পোস্ট সারকাজম করে লেখা হলেও নিজেরা অনেকে হয়তো সত্যিও মনে করে্ন) এবং যাঁদের মধ্যে অনেকেই প্যাট্রিয়ার্কি বা মিসোজনি নিয়ে পান থেকে চুন খসলে, বা না খসলেও খসে যাবার অনিচ্ছা বা ইচ্ছাকৃত ভ্রমে প্রতিবাদ করে থাকেন, এসব দেখে টেখেও ( যাঁরা দেখননি তাঁদের কিছুই বলার নেই), সেই সব স্বঘোষিত নারীবাদরক্ষাকারীরা কিম্বা নানা বিষয়ে সদাসতর্ক সদাসর্বদা নিরপেক্ষ রেফারিগিরি করা লোকজন এ ব্যাপারে হিরণ্ময় নীরবতা দেখালেন বা কোথাও কথা উঠলে না না এসব ভাল না বলে মন্তব্য করেই দায় সারলেন। আকাডেমিক বিতর্ক থেকেও ব্যক্তিকে মিসোজিনিস্ট বলে বুঝে ফেলে দাগিয়ে দেওয়া দেওয়াল কাঁপানো আন্দোলনের ছিঁটেফোঁটাও এই সব সত্যি মিসোজিনির কেসে কিন্তু দেখা গেলনা।
    হতে পারে, সব মিসোজিনি নয় সমান। সবার প্রতি মিসোজিনি নয় সমান।
    পুঃ এসবের ব্যতিক্রমও অনেককে দেখেছি, পরিচিত অপরিচিত নির্বিশেষে। প্রতিবাদ , ধিক্কার জানাতে দেখেছি। প্রকাশ্যে বা পিছনে থেলে। পাশে থেকে। সেটাই মানুষের উপর থেকে বিশ্বাস হারাতে দেয় না। পৃথিবীটাকেও আফটার অল ভালই জায়গা ভাবতেও।
    আর অনেকেই কিছুই জানেন না, তাঁদের নিয়ে কিছুই বলার নেই, বলাই বাহুল্য।
    কতিপয় স্ক্রিনশট রইল। কতই বা দেব ? আরো কত এরকম এসেছে, সে হয়তো জানিওনা। এগুলো, বন্ধুরা যা পাঠিয়েছে, তার মধ্যে অল্প কিছু।
    আর কিছু নমুনা দিলাম না এখন, যেগুলো মুখোশের আড়াল থেকে এসেছে ( আর সেইজন্যই সন্দেহ হয় পরিচিতদের মধ্যে থেকে যাঁরা এই ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টায় ছিলেন, কিম্বা মাছ ধরার জন্য জলটা ঘোলা করেছিলেন ) । সেগুলো এর থেকেও অনেক কুৎসিত, কদর্য। সেগুলো তোলা রইল। আপাততঃ।




  • dc | 132.174.117.71 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৩৩60954
  • সত্যি, লোকজনের কি জঘন্য মানসিকতা হয়।
  • i | 213.158.53.235 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৩৫60955
  • জঘন্য মানে চরম জঘন্য।
  • অ্যাক্রোম্যান টুলা | 37.63.160.96 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৪২60956
  • স্লোগান দিতে গিয়ে আমি ভিড়ে গেলাম "গানে"

    এইসব গানের কথা ভুল লিখলে হেব্বি রাগ হয়।
  • সিকি | 132.177.192.150 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৪৬60957
  • ইশ, বিচ্ছিরি ভুল! :(

    আমার ব্লগে শুধরে নিচ্ছি। এখানে তো সম্ভব নয়।
  • কল্লোল | 116.206.148.9 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৫৫60958
  • ঈপ্সিতাকে নিয়ে এই সব বদামোগুলোর শেষ চাই। ঈশানকে নিয়ে তো এসব হলো না!! জমবে না ঈশান পুরুষ বলে!!
    গুরমিতকে যারা আক্রমন করছে, তাদের তো চিনি। কিন্তু গুরুর ফেবুতে এরা কারা? পুলিশে যাওয়া যায় না? একজন মহিলাকে আর কিভাবে যৌন হেনস্তা করা যায়!!
    ছিঃ
  • কল্লোল | 116.206.148.9 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৫৭60959
  • গুরমেহের। গুরমিত নয়।
  • S | 184.45.155.75 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৬:৫৯60960
  • সিকির লেখা ভালো লাগলো। ছবি গুলো সহ। আরো ভালো লাগলো সেই লেখার একটি অংশ নিয়ে অনেকের আপত্তির কথা পড়ে। নন্দিতা দেবী ও পাঠক খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে লিখেছেন। কারোর লেখা ভালো না লাগলে বা কুৎসিত লাগলেও সেই নিয়ে সমালোচোনা করুন, বলুন খাজা লেখা, যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে দিন কেন ও কোথায় ভুল, লিন্ক দিন ইত্যাদি - যেমন আপনারা দুজনে করেছেন এই লেখাটিতে; বেশ করেছেন। কিন্তু এখন যদি সিকিবাবুর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কেউ পরে যায় তবেই মুশকিল। আমার মনে হয় সিকিবাবু এই লেখাটিতে সেইটিই বোঝানোর জন্য একটি উদাহরণ দিয়েছেন। আমার মনে হয় উনি আরো ভালো উদাহরণ দিতে পারতেন। তাহলে এই লেখাটির গুরুত্ব কমতো নয়।

    মিছিলটি ছিলো গুন্ডামোর বিরুদ্ধে। আপনি যদি গুন্ডামোর বিরুদ্ধে হন, তাহলে আপনি নিস্চই এই মিছিলের অংশ হবেন।

    আর পাইদেবীর উদ্দেশ্যে বলবোঃ যে কয়েকজনের ফেসবুক পোস্ট আপনি কপি পেস্ট করেছেন, তার মধ্যে একজনকে খুব ভালো চিনতাম একসময়। অনেক সময় কাটিয়েছি তার সাথে। তার যে এমন অধঃপতন হয়েছে জেনে খুব খারাপ লাগছে। আজকে পরিচয় বা কানেকশন থাকলে হয়তো ফোন করে বলতাম আপনার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। তার ব্যক্তিগত জীবন সম্বন্ধে লিখে আমিও তাদের মতনই ভুল করবোনা। শুধু বলবো, ইগনোর করতে - দে আর নোবডি।
  • a | 69.102.5.84 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:০০60961
  • সিরিয়াস্লি এরা কারা? প্রবল প্রতিবাদ করে গেলাম। ধরে ধরে ক্যালাতে হয়। অয়ন
  • dc | 132.174.117.71 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:০২60962
  • এগুলো নিয়ে অবশ্যই পুলিশে হ্যারাসমেন্টের কমপ্লেন করা উচিত। পাই ম্যাডাম আর শাক্যজিত, দুজনেরই।
  • S | 184.45.155.75 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:০৫60963
  • ও এখানে একটা কথা লিখে দিই, নইলে লোকে ভুল বুঝবে। আমি ফ্রি স্পিচের পুজারী। আর এটাও মনে করি ফ্রি স্পিচের কোনো লিমিট হয়না। কিন্তু ফ্রি স্পিচ কোথায় পার্সোনাল অ্যাটাকে পরিনত হচ্ছে সেইটুকু বোঝার মতন বুদ্ধি আর মানসিকতা আমার আছে বলেই মনে করি। আর তখন আমার ফ্রি স্পিচের মাধ্যমে সেই অ্যাটাককে তিরস্কৃত করবো।
  • pi | 174.100.177.10 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:১৫60964
  • কল্লোলদা, কতবার বলব, এগুলো গুরুর ফেবুতে না। এগুলো ফেবুর দেওয়ালে দেওয়ালে। যাদের বেশিরভাগকে আমি চিনিওনা, জীবনে ইন্টারাক্ট অব্দি করিনি। এবং এখনো হয়ে চলেছে। আমি কয়েকজনকে ব্লক করে দেবার পরে আরো বেশি করে। এই লেখাটা দেবার পরে শুনেছি আরো নতুন উদ্যোগে।
    লোকে বলছে এফ আই আর করলে ফেক থেকে চলবে এসব। অলরেডি ফেক থেকে এর থেকে অনেক বেশি জঘন্য পোস্ট এসে গেছে।
  • amit | 149.218.12.174 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:১৯60965
  • কিন্তু আবার একটা বেসুরো প্রশ্ন: এই নোংরা স্ল্যান্ডারিং এর বিরুদ্ধে পুলিশ এ এখনো কমপ্লেইন করা হচ্ছে না কেন ? সেটা কি শুধুই ক্ষমাসুন্দর মানসিকতার জন্য ? নাকি যে হেট স্পিচ টার কথা বলা হচ্ছে এখানে, যেটাকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে এতো কাদা ছোড়াছুড়ি, পুলিশ এ গেলে সেটাও তদন্তের জন্য উঠে আসতে পারে, সেটার জন্য ? যদি মনে হয় নিজে কোনো ভুল করা হয়নি, তাহলে আইনের আশ্রয় নিতে ক্ষতি কোথায় ?
  • pi | 174.100.177.10 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:২২60966
  • আপনার জন্যেই প্রথম প্যারায় একটা প্রশ্ন আছে। সেটাও কি আবার করতে হবে ?

    আর গেলে অনেককিছু নিয়েই যাওয়া উচিত। এখানে ঐ হিন্দমোটর এটাল সুতোর কিছু পোস্টও নিয়ে যাবার পরামর্শ দিয়েছিল লোকজন। ঃ)

    আর এতবার বলার পরেও না শুনে বা বুঝে থাকলে আবারো শুনুন, আমি না ঐ পোস্টটা ডিফেন্ড করিনি। যদিও এতেও বুঝবেন বলে মনে হয়না।
  • dc | 132.174.117.71 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:২৩60967
  • "লোকে বলছে এফ আই আর করলে ফেক থেকে চলবে এসব"

    নাও হতে পারে। পুলিশ যদি দুয়েকটা প্রোফাইলের মুখোশ খুলে দেয় তাহলে হয়ত অন্যরা থেমে যাবে। তাছাড়া অনেক সময়ে একই ব্যক্তি একাধিক ফেক বানায়, কাজেই একজন পুলিশের নোটিস পেলে কয়েকটা ফেক প্রোফাইল থেমে যাবে।
  • amit | 149.218.12.174 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:৩০60968
  • "গেলে অনেক কিছু নিয়ে যাওয়া উচিত"। কিন্তু আমার সিম্পল প্রশ্ন তো সেটাই ? যাওয়া হচ্ছে না কেন ? নিশ্চয় একটা হেট স্পিচ এর উত্তর আর একটা হেট স্পিচ দিয়ে হতে পারেনা। অন্তত সভ্য দেশে সেই রাস্তায় হাঁটে না কেও।
    যাই হোক, যখন বেশি বুদ্ধিধর কেও ধরে নেন আগে থেকে, অন্যদের বোঝার ক্ষমতা কম, বোঝালেও বুঝবে না, তখন আমার সীমিত বুদ্ধি নিয়ে আমি আমার দিক থেকে থামলাম।
  • sch | 55.251.235.73 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৮:৩৫60969
  • আপনেরা কি পাগল। এই লেখাগুলো নিয়ে কোর্টে যাবেন? কিছুই দাঁড়াবে না। একটা লেখাতেও পাইকে ট্যাগ করা নেই। দীপ্তরূপের লেখায় নাম অন্য আর সুমন্ত্র'র লেখায় ডিস্ক্লামার দেওয়া। কি করে প্রমাণ করবেন এই ঈপ্সিতা পালকে নিয়েই এটা লেখা। কিছু পর্ন স্টোরি সাইটে যান - দেখবেন বাংলা সিনেমার নায়িকাদের নিয়ে এরকম অজস্র নোংরা লেখা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের তো তাহলে দিলে দশটা করে মামলা করতে হত। করছে?

    যদি কেউ ইনবক্সে নোংরা গালি দিয়ে থাকে, বা কোনো থ্রেট কল দেয় - ওকে। এই স্ক্রীণ শটে ** হবে।

    যদি হিট ব্যাক করতে চান - দেখুন এদের স্ত্রী-রা FB তে আছেন কি না- তাদের ট্যাগ করে স্ক্রীন শটগুলো দিন। তবে তাতেও প্রবলেম হবে না - এরা সবাই মার্কেটিং এর লোক - কথা বেচে খায়। ঠিক বুঝিয়ে দেব গুল গাপ্পা। নিজেদের ক্রুসেডার প্রমাণ করবে।
  • পিনাকী | 95.229.73.124 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৮:৪২60970
  • হেট স্পীচ এখানে কোদ্দিয়ে এল?

    আর দেশে ব্লাসফেমি আইন আছে, দেশে সিডিশনেরও আইন আছে। কোন কনটেক্স্টে সেটা প্রয়োগ করা যায়, আর কখন যায় না - এগুলো অত স্পষ্ট কিছু না। এটা পাঠককে লিখলাম। কাল্ট ফিগারের যৌনতা নিয়ে স্পেকুলেট করলেই সেটা ব্লাসফেমি কিনা - সেটা অত সহ সহজে বলা যায় না। আর তিনজন মানুষ একসাথে থাকলেই তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক থাকবে এটা লেখক ধরে নেন নি। তিনি খচরামো করে লিখেছেন। যাদের সাথে তাঁর সেই সময় তর্ক চলছিল তাদেরকে 'এরকম লিখলে কেমন লাগবে?' বলে একটা এক্স্ট্রীম উদাহরণ হিসেবে লিখেছিলেন হীট অফ দ্য মোমেন্টে। সচেতনভাবে কুৎসা করার জন্য লেখাটা লেখা হয়েছিলনা বলেই জানি। যদিও যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা ব্যবহার করতে চাইছে তারা সেভাবেই সেটাকে দেখাতে চাইছে।

    আর শক থেরাপি প্রসঙ্গে বলার, যেহেতু এক্ষেত্রে লেখক নিজে একটা জিনিস বিশ্বাস না করেও জাস্ট তর্কের খাতিরে এক্স্ট্রীমে গেছেন, তাই এই শক থেরাপিটা খুব কার্যকরী নয়। অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু তার মানে কোনো ক্ষেত্রেই শক থেরাপি কাজ করে না এমনও নয়। যেকোনো নতুন ভাবনা যা চালু বিশ্বাসের উল্টোদিকে দাঁড়ায় সেটা প্রাথমিক ভাবে 'শক' হিসেবেই আসে। তার জন্য লোককে আক্রমণও ফেস করতে হয়। যুগে যুগে হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর মধ্যে দিয়েই সমাজ এগিয়েছে। কাজেই জাস্ট লোকে 'শকড' হবে বলে মানুষ নিজে যা বিশ্বাস করে বা সতযি মনে করে সেটা বলতে পারবে না - এটা সবসময় খুব কাজের কথাও নয়।
  • sch | 55.251.235.73 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৮:৫৮60971
  • পিনাকী -
    এই জিনিসটা নিয়ে যতো ঘাঁটা যাবে ততো ওই মেরুকৃত মানুষদের আনন্দ হবে। কিন্তু একটা কথা ভেবে দেখুন রামকৃষ্ণের ভাবসমাধিকে নিউরোলজিক্যাল দিসওর্ডার দিয়ে ব্যাখ্যা করা, বা তার নারী ভাবে সাধনাকে ক্রসড্রেসিং এর আলোয় দেখে তার পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা এগুলো কিন্তু মেডিক্যাল সায়েন্সের ওপর ভিত্তি করে কিছু বিহেভেরিয়াল প্যাটার্নের বিশ্লেষণ। শাক্য সাদা কালো কালিতে যা ইখেছেন - সেটা কিন্তু ঠিক জোকসও না, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যাও না - জাস্ট কিছুটা নোংরা কথা - যেটার উদ্দেশ্য ওনার মতে শক থেরাপী। উনি কিন্তু এই কথাটা লেখেন নি - যদি এরকম বলি তো কেমন লাগবে? হয়তো এতোটা এক্সপ্লিসিট হবার দরকার বোধ করেন নি

    ভালো করে ভেবে দেখুন - যারা চাড্ডী না - কিন্তু যাদের কাছে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ একটি প্রিয় চরিত্র (ঠিক যেমন লোকে মার্ক্স বা জ্যোতিবাবুকে শ্রদ্ধা করে) তাদের কাছে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই জিনিসটা খারাপ লাগবে।

    তাদের কাছে কিন্তু একটা ছবি তুলে দেওয়া হবে যে গুরুতে এগুলোর চর্চা হয়। এই মানুষগুলো কিন্তু অকারণে গুরু সম্বন্ধে বিরূপ হবেন। একটা প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে এটা কি গুরুর পক্ষে খুব ভালো হবে?

    যদি শাক্য বা পাই আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন - নিন (যদিও আমার এখনও মনে হয় প্রকাশিত এভিডেন্সই সব হলে তা যথেষ্ট না )। কিন্তু আমার মনে হয় গুরুর পাতায় এই আলচনা থামালেই ভালো। সিকির লেখাটাও অকারণে ডি ফোকাসড হয়ে গেল। গুর মেহেরের কেস আর শাক্যর কেস এক না - গুর মেহের কিন্তু কোনো কাউন্টার শক থেরাপি করে নি । তার নিজের অনুভূতি জানিয়েছে
  • $$$ | 127.194.205.149 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৯:০৩60972
  • "আপনি" চাইলে বাজারে হারিয়ে যাওয়া চাবি বাড়ির সামনে খুঁজতেই পারেন, কিন্তু খুঁজে না পেয়ে হতাশা উদ্গীরণ করতে করতে যদি সত্যিই ভুলে যান চাবিটা আসলেই বাজারে হারিয়েছিল তবে আপনার জন্যই দুঃখ হবে।

    আপনি একটি প্রত্যক্ষ রাজনীতির অংশ। আপনি মৌলবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। আপনি একটি বা একাধিক প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের কর্মপদ্ধতির উপর অ্যাজেন্ডার উপর আঘাত আনছেন। সেই রাজনীতির সমর্থকদের ভিত নাড়িয়ে দিতে চলেছেন তাদের স্বার্থসিদ্ধির প্রধান সরঞ্জামে আঘাত করছেন - আর প্রত্যাঘাতটি ফেয়ার হবে আশা করছেন! আপনি প্রতিপক্ষের আক্রমণের পদ্ধতি নির্ধারণ করতে চাইছেন বা বলা ভাল কিভাবে আক্রমণ করা অনুচিত সেই মর্মে সওয়াল করছেন - যখন সম্ভাব্য নিষ্ঠুরতম বা সর্বোচ্চ ভায়ঙ্করতম প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা অমূলক নয়! কিছু মানুষ শুধু প্রবন্ধ লেখার জন্য খুন হয়েছেন। সেই সঙ্ঘের নারীরা এখনও অরক্ষিত শঙ্কিত। বোঝা দরকার গুরু বা যেকোনো সাইটে, ফেসবুকে, নিজের ব্লগে নিজের মত প্রকাশ করে প্রবন্ধ লেখা আর ত্রিশূল তলোয়ার চাপাতি সজ্জিত আক্রমণোদ্যত মবের সামনে প্ল্যাকার্ড ফেস্টুন হাতে দাঁড়ানোয় - আজকের দিনে কোনো প্রভেদ নেই। একটা মাঠে বক্তৃতা দিয়ে আপনি চার পাঁচশো উপস্থিত শ্রোতা চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারেন, কিন্তু ইন্টারনেটে সেই বক্তব্য একান্তে পোস্ট করেও আপনি মুহূর্তে সামগ্রিক বিশ্ববাসী অডিয়েন্সের সামনে সেই একই কাজ করছেন, অনাগত ভবিষ্যতের অগণিত দিন ব্যপী, প্রতিদিন। যে, যেদিন আপনার লেখা পড়বে সে সেইদিনের আপনার অডিয়েন্স। সেই মুহূর্তেই আপনার জন্য বরাদ্দ থাকতে পারে একটি হাততালি অথবা বুলেট। শুধু আপনার জন্যেই নয়, আপনি আপনার নেট-অস্তিত্বে যাদের আপনার সাথে সম্পর্কিত বলে চিহ্নিত রেখেছেন, তাঁদের সকলকে আপনি আপনার কাজটির জন্য একই ভাবে রিস্কে রাখছেন। জেন্ডার, ভালনারেবিলিটি, অপাপবিদ্ধতা অপ্রাসংগিক। আমায় ঢিল মারল কেন, টিটকিরি দিল কেন, চুল টানল কেন - মুখে কথা বলেছি - মুখে কথা বলে উত্তর আশা করি, নিজে খিস্তি দিইনি, খিস্তি প্রত্যাশা করিনা - এসব তুল্যমূল্য নিক্তি মেনে বিরুদ্ধাচারণ বিচার এক অসম্ভব ব্যপার। আবার বলি, আপনি শুধুমাত্র নিজের মত প্রকাশ করছেন না, সেই মত একই সঙ্গে কিছু প্রচণ্ড ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিস্তারপথের তিলমাত্র হলেও বাধা, যা একইসঙ্গে যূথবদ্ধ বিদ্রোহ প্রতিবাদ সংগঠনের ক্ষমতা রাখে। আপনি রাজনীতির ময়দানে নেমে গেছেন, চান বা না-চান। আপনার প্রতিটি বাক্য আপনার অবস্থানের - সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থানের - পরিচিতি বহন করে। তা কাদের শঙ্কিত করে তুলছে, তারা কিভাবে প্রত্যাঘাত আনবে - এ এক অসম্ভব স্পেকুলেশন।

    আপনি যদি নিজে নিজের সেই পদক্ষেপটি এখনও চিনতে না পেরে ভেবে থাকেন - এ তো এমন কিছু নয়, শুধু ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে সাধারণ কর্তব্য বা সাধারণ বন্ধুকৃত্য - এর প্রত্যাঘাত এমন মারাত্মক হবে কেন ! তবে, যেমন বললাম, আপনার জন্যেই দুঃখ হবে - কারন আপনি এখনো উপলব্ধি করেন নি আপনার চাবি হারিয়েছে বাজারে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন