এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মহাগুণের গপ্পোঃ আমি যেটুকু জেনেছি

    সিকি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ জুলাই ২০১৭ | ২২৬৯ বার পঠিত
  • মহাগুণ মডার্ণ নামক হাউসিং সোসাইটির একজন বাসিন্দা আমিও হতে পারতাম। দু হাজার দশ সালের শেষদিকে প্রথম যখন এই হাউসিংটির বিজ্ঞাপন কাগজে বেরোয়, দাম, লোকেশন ইত্যাদি বিবেচনা করে আমরাও এতে ইনভেস্ট করি, এবং একটি সাড়ে চোদ্দশো স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাট বুক করি। এবড়োখেবড়ো জমির মধ্যে একেবারে কিছু-নেই অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে মাথা তুলতে আমি দেখেছি। নিয়মিত যেতাম উইকেন্ডে। ধূলো-রাবিশ আর মেশিনপত্তরের মধ্যে থেকে ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়ালো একের পর এক কুড়ি তলা, চব্বিশ তলা টাওয়ার। অসমান জমিতে চকচকে টাইল আনল সমান ভাব। মহাগুণ মডার্ণের হোয়াটস্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপেও আমি যুক্ত ছিলাম বহুদিন। নিয়মিত বিল্ডারদের সাথে আলাপ আলোচনা করা, প্রতিবাদ করা ডিজাইন ভায়োলেশনের, প্রাইস এসক্যালেশনের, এবং বিল্ডারের অপরিসীম ঔদ্ধত্যের সামনাসামনি হওয়া - সমস্ত আমি ব্যক্তিগতভাবে ফেস করেছিলাম। একদিন-দুদিন, একমাস দু মাস নয়, দীর্ঘ তিন থেকে সাড়ে তিন বছর। আর পাঁচটা "রেপুটেড" বিল্ডার যেমন হয়, মহাগুণ তার কোনও ব্যতিক্রম ছিল না, আজও নয়। তাদের বাঁদরামি এবং অন্যায় ঔদ্ধত্যের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, যে আমার পক্ষে ব্যক্তিগত মূল্যবোধের সঙ্গে আপোষ করে চলা আর সম্ভব হয়ে উঠছিল না। আমি পজেশন পাবার কয়েক মাস আগে ফ্ল্যাটটি বেচে দিই।

    সবাই তা দেয় নি। অনেকের কাছেই সেটা ছিল নিজের প্রথম ঘর, ভাড়াবাড়ির টানাপোড়েন থেকে মুক্তি পেতে চাইছিল বেশির ভাগই, আমার ক্ষেত্রে অন্তত সে সমস্যাটা ছিল না। দু হাজার পনেরো সাল নাগাদ, আমি মহাগুণ মডার্ণের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি। এর পর মহাগুণ মডার্ণ ফ্ল্যাটের পজেশন দেওয়া শুরু করে, আমার এক ছোটবেলার বন্ধুও সেখানে থাকে, ফলে যাওয়া আসাও অব্যাহত ছিল। এই তো মে মাসেই গেছিলাম ওদের বাড়ি।

    তো, মোদ্দা যেটা বলবার ছিল, মহাগুণ মডার্ণ হাউসিং সোসাইটির একজন বাসিন্দা আমি হলেও হতে পারতাম, নিজের ইচ্ছেতেই হই নি। তবে না হলেও ওখানকার অন্তত শ খানেক রেসিডেন্টকে আমি চিনি। দীর্ঘ তিন বছরের পরিচয়।

    আজ যখন এই লেখাটা লিখতে বসেছি, বিশ্বাস করুন, আমি ওদের একজনের সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করি নি। আমি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণভাবে রিলাই করছি এখনও পর্যন্ত খবরে যতটুকু বেরিয়েছে, এবং এই ঘটনার মধ্যে সরাসরি ইনভলভড আছেন, এমন কয়েকজনের ব্যক্তিগত বয়ানের ওপর।

    যে কোনও হাউজিং সোসাইটির চারপাশে ঝুগ্‌গি ঝোপড়ি গজিয়ে ওঠে, গজিয়ে ওঠে অনুসারী বস্তি, যেখান থেকে সেই সদ্যনির্মীত আবাসনের কাজের লোকেদের সাপ্লাই হয়। এরা কারা? কোথা থেকে আসে?

    আসে সারা ভারত থেকে। যেখানে যেখানে খাবারের অভাব পড়ে। পিপলি লাইভ দেখেছেন? নাত্থা কীভাবে পৌঁছে গেছিল সিনেমার শেষে, দিল্লি শহরের আবাসন তৈরির ভিড়ে? তেমনি এরা আসে। এরা আসে ঝাড়খণ্ড থেকে, দক্ষিণ বাংলা থেকে, উত্তর বাংলার সমস্ত বন্ধ হয়ে যাওয়া চা-বাগানগুলো থেকে, আসে আসাম থেকে, নাগাল্যান্ড থেকে। আসে উত্তরপ্রদেশ থেকে, রাজস্থান থেকে।

    আসে বাংলাদেশ থেকে।

    শুনুন, প্রথমেই চমকে উঠবেন না। আছে। এই সুবিশাল দিল্লি এনসিআর, নয়ডা-গুরগাঁও-ফরিদাবাদ-গাজিয়াবাদ মিলে যে বিশাল বিশাল জনবসতি, তার সোসিও-ইকোনমিক লেয়ারের একদম নিচের স্তরে এরা চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঢোকে। সহজে এদের ধরতে পারা যায় না, কারণ হিন্দিভাষীরা বাংলা অ্যাকসেন্টের হিন্দি শুনে একেবারেই ধরতে পারে না আগত ব্যক্তিটি এপার বাংলার না ওপার বাংলার। এরা রিকশা চালায়, জোগাড়ের কাজ করে, লোকের বাড়িতে কাজ করে। এদের বৌদের সর্বাঙ্গে দারিদ্রের চিহ্ন থাকলেও সিঁথিতে সিঁদুর আর হাতে প্লাস্টিকের শাঁখাপলা খুব বেশিমাত্রায় প্রকট থাকে। যাতে সহজেই তাকে "হিন্দু" বলে চেনা যায়।

    এদের আমি দেখেছি, দেখে আসছি। এদের আমি চিনি। কোথায় বাড়ি, প্রশ্ন করলে বলে কালিয়াচক, রায়গঞ্জ, নাকাশীপাড়া, হলদিবাড়ি, বনগাঁ ... মালদা, দিনাজপুর, শিলিগুড়ি। আমার লা-জবাব দিল্লি বইতে এদের নিয়ে সামান্য লিখেছিলাম, মনে আছে? আমার বাড়ি ছিল বসিরহাটে, আমার বাড়ি আছিল বনগাঁয়? আমি দীর্ঘ দিল্লিপ্রবাসে কখনও কাউকে বলতে শুনি নি - আমার বাড়ি হুগলিতে, হাওড়ায়, মেদিনীপুরে, বীরভূমে, বাঁকুড়ায়। একটিও না।

    বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘুদের একটা এক্সোডাস কিন্তু হয়েই চলেছে দীর্ঘদিন ধরে, একদম স্টেডি ফ্লো-তে। একটু নিরাপত্তা, একটু পয়সা রোজগার, আর একটু নিশ্চয়তার আশায় এরা কাঁটাতার পেরিয়ে আসে, ভারতে ঢুকে প্রথমে ব্যবস্থা করে একটি ভোটার কার্ডের। সীমান্ত এলাকাগুলিতে কীভাবে ভোটার কার্ডের ব্যবস্থা হয় তা অনেকেই জানেন, সে বিষয়ে আমি বিস্তারিত যাচ্ছি না, তবে একটা ভারতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা হয়ে গেলেই এরা ছড়িয়ে পড়ে সারা ভারতের শহরগুলোতে - দিল্লি ভোপাল মুম্বই পুণা চেন্নাই বেঙ্গালুরু। কলকাতার শহরতলিতেও ছড়িয়ে পড়ে এরা, যাদের দেখেই জয় গোস্বামীর সেই সব অবিস্মরণীয় কবিতা, ওপরে যে লাইনটা লিখলাম - সেইটা, কিংবা ঘুমপাড়ানি মাসিপিসির কবিতা (চাল তোলো গো মাসিপিসি, লালগোলা বনগাঁয়)।

    দিল্লিতে এদের ডায়ালেক্ট দেখে পার্থক্য করতে পারি আমরা, যারা বাঙালি। আমি একটু বেশিই পারি কারণ মালদা মুর্শিদাবাদ জলপাইগুড়ি এইসব জায়গায় বেশ কিছুকাল থাকার কারণে আমি এই সব এলাকার ডায়ালেক্ট সম্বন্ধে সম্যকভাবে পরিচিত। মেদিনীপুরেও থেকেছি, সেখানকার ডায়ালেক্টও আমার চেনা। তাই, চিনতে পারা যায়। দিল্লির স্থানীয়রা চিনবে না। কারণ তারা বাংলা ভাষা আর তার ডায়ালেক্টের রকমফের, কোনওটাই বোঝে না।

    জোহরা বিবি সত্যিই বাংলাদেশের "ইমিগ্র্যান্ট" নাকি ভারতের নাগরিক, আমার জানা নেই। সে তর্কে আমি যেতে চাইও না। ছবি দেখেছি, ফেসবুকে পোস্ট পড়েছি, জোহরার আত্মীয় পরিজন প্রতিবেশিরা হাতে আধার কার্ড নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন, যা ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণ। আগেই বলেছি, আমার ব্যক্তিগত অ্যানেকডোট অনুযায়ী এই আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড বানানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে একজন সীমা পার করা মানুষকে ভারতীয় বানিয়ে তোলা হয় তার পয়সা আর তার রাজনৈতিক আনুগত্যের বিনিময়ে, তাই হাতে আধার কার্ড দেখে আলাদা করে কিছু প্রমাণ করবার দায় আমার নেই। এটা একটা গ্রে এরিয়া - বর্ডারলাইন কেস। বাংলাদেশি হতেও পারে, না হতেও পারে। তর্কের খাতিরে এটুকু ধরে নেওয়া যেতেই পারে, সঠিক পরিচয়পত্রের জোরে জোহরা এবং তার সহযোদ্ধারা সকলেই ভারতীয়, ঠিক যতটা ভারতীয় আমি নিজে। আমার নিজের কাছেও ঐ একই পরিচয়পত্রেরা রয়েছে। দেশ, নাগরিকত্ব - এই বিষয়গুলো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে খুব একটা আবেগাপ্লুত করে না বলে আমি এই বিষয় নিয়ে একেবারে মাথা ঘামাতে চাইছি না। যা-ই হোক, এরা এতদিন এখানে কাজ করেছে একটা গেটেড সিকিওরিটিতে, নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়েই এদের গেটপাস বানাতে হয়েছে, মহাগুণ মডার্ণের (বা ফর দ্যাট ম্যাটার, যে কোনও গেটেড আবাসনের, আমি যেখানে থাকি এখন, সেখানকারও) সিকিওরিটি সেই পরিচয়পত্র ভেরিফাই করেই তাদের গেটপাস বানিয়েছে। এবং বিভিন্ন সোসাইটি আবাসনের একাধিক ফ্ল্যাটবাড়িতে তারা দীর্ঘদিন কাজ করে এসেছে, কোনও ঝামেলা ছাড়াই। সুতরাং এতদিন বাদে একটা ঝামেলা হবার পরে এখন "ওঁরাঁ বাঁংলাঁদেঁশিঁ" বলে নাকে কাঁদলে, আমার বিরক্তিই আসে।

    এবার ঘটনায় আসা যাক। আগেই বলেছি, মহাগুণ মডার্ণের অন্তত একশো জন রেসিডেন্টকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। দিল্লি এনসিআরের আপওয়ার্ডস শাইনিং জনতা যেমন হয়ে থাকেন, এঁরা তেমনই। ইয়োগা করেন, পতঞ্জলির প্রোডাক্ট কেনেন, আবাসনের পাশে এককালে "কবরিস্তান" ছিল বলে আবাসনের রেট পড়ে যেতে পারে কিনা সে নিয়ে আতঙ্কিত থাকেন, এবং ভাষার ভিত্তিতে জোট বাঁধেন, ঘোঁট পাকান - বাঙালিরা দুর্গাপুজো, মারাঠিরা গণেশ চতুর্থী এবং উত্তর ভারতীয়রা শেরাওয়ালি মাতা কি চৌকি। ধর্মবিশ্বাস এখনও এ দেশে শেষ কথা বলে, সে বাঙালিই হোক কি দিল্লিওয়ালা।

    আমি তখন অনেক বেশি ঠোঁটকাটা ছিলাম। মহাগুণ মডার্ণ তৈরি হয়ে উঠতে তখনও দেড় বছর বাকি, গাছেকাঁঠালগোঁফেতেল মোডে ভবিষ্যতের বাসিন্দাদের তখন হোয়াটস্যাপে আলোচনার বিষয় হয়েছিল, বিল্ডারকে বলে যদি সোসাইটি কমপ্লেক্সে একটি রামলালার মন্দির বানিয়ে নেওয়া যায়। প্রস্তাব রেখেছিলেন একজন, সোৎসাহে সমর্থন করেছিলেন অন্যরা "মন্দির হম ওহিঁ বনায়েঙ্গে" বলে। তার পরে বিস্তর বাদানুবাদ হয় এবং প্রতিবাদ করেছিলাম একমাত্র আমিই। "মন্দির হম ওহিঁ বনায়েঙ্গে" শব্দবন্ধগুলো আমাকে আজও হন্ট করে বেড়ায়, আমি ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম এই ফ্রেজটা পড়ে।

    নাম যে হেতু প্রকাশিত হয় নি, আমি তাই জানি না যে বাসিন্দার ফ্ল্যাটে ঘটনাটি ঘটেছে, তাকেও আমি চিনি কিনা। এখন, যখনই কোনও ঘটনা ঘটে, মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হল ঘটনায় কোনও একটা পক্ষ অবলম্বন করে ঘটনার বিশ্লেষণ করা, হয় রেসিডেন্টদের পক্ষে, নয় জোহরাদের পক্ষে। আমি সজ্ঞানে দুদিকই পর্যালোচনা করবার চেষ্টা করছি, যতটা নিরপেক্ষভাবে হওয়া সম্ভব।

    বাসিন্দাদের বক্তব্য অনুযায়ী, জোহরা চুরির কথা স্বীকার করেছিল, এবং গৃহকর্ত্রী তাকে দাঁড় করিয়ে বলেন, ঠিক আছে, তোকে সিকিওরিটির হাতে তুলে দিয়ে আসব, ওরা যা করার করবে, তুই এইখানে চুপটি করে দাঁড়া, আমি ঘর থেকে দুপাট্টাটা নিয়ে আসছি। এই বলে তিনি পাশের ঘরে যান, এবং দুপাট্টা নিয়ে বাইরের ঘরে ফিরে এসে দেখেন এই মওকায় জোহরা ভেগেছে। পরে জানা যায় সে সেই টাওয়ারেই আরেকজন প্রবীণ মহিলার বাড়িতে লুকিয়ে ছিল সারারাত। তাকে থাকতে দেওয়া হয়, রাতের খাবার দেওয়া হয়, সকালে চা রুটিও দেওয়া হয় এবং তার পরে সিকিওরিটিকে খবর দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সিকিওরিটি জোহরাকে নিয়ে মহাগুণ মডার্ণের গেটের বাইরে বের করে দিয়ে আসে।

    জোহরার বাড়ির লোকের বক্তব্য অনুযায়ী, সারারাত জোহরাকে ঐ ফ্ল্যাটেরই বাথরুমে বন্দী করে রাখা হয়েছিল, মারা হয়, অ্যাবিউজ করা হয়। সকালে আধমরা অবস্থায় তাকে সিকিওরিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়, জামাকাপড় ছেঁড়া ছিল।

    এর পর পুলিশ আসে, তারা জোহরার স্বামীকে বলে, ওর চিকিৎসা দরকার, আগে ওকে হাসপাতালে ভর্তি করাও, চলো আমরাই ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসছি, তার পরে এখানে এসে দেখছি কী করা যায়।

    জোহরা হাসপাতালে ভর্তি হয়, ইতিমধ্যে জোহরার গ্রাম থেকে কয়েকশো উত্তেজিত লোক এসে মহাগুণের গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে, এবং যে বাসিন্দার বাড়িতে জোহরার নির্যাতন হয়েছে, তাদের ফ্ল্যাটে যাবার চেষ্টা করতে থাকে। সিকিওরিটি বাধা দেবার উদ্দেশ্যে শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি চালায়। পরিস্থিতি ঘোরালো হয় এর পরেই, এন্ট্রান্সের কাচের আবরণ টুকরো টুকরো করে ভেঙে ফেলা হয়, এবং মারমুখী জনতা ঢুকে পড়ে গেটেড সোসাইটির ভেতরে, যার নাম - মহাগুণ মডার্ণ।

    প্রশ্ন ওঠে অনেকগুলো, এই পর্যন্ত শুনলে। প্রথমত, কাজের লোক চুরি করেছে, এইটাই একটু অবিশ্বাস্য লাগে, বিশেষত ঠিকে কাজের লোক, যারা রোজ আসে, কাজ সেরে চলে যায়, আবার পরের দিন আসে। যে ফ্ল্যাটে কাজ করে, সেই ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের বিশ্বাস রাখা এদের কাজের একটা প্রধান শর্ত। নইলে এরাও টিকতে পারবে না। প্রোফাইলিংএর যুগে একজনের অসততার মাশুল দিয়ে বসে পুরো কমিউনিটি। বাড়িতে ঠিকে কাজের লোক যারাই রাখেন, তারাই জানেন এইটুকু বিশ্বাস এদের ওপর সবসময়েই রাখা হয়। সেইখানে একজন ঠিকে কাজের লোক, জোহরা, যেখানে সে অনেকদিন ধরেই কাজ করছে বলে জানতে পারছি আমরা, সে টাকা চুরি করছে, এইটা ভাবাটা একটু বেশি রকমেরই অবিশ্বাস্য ঠেকছে আমার।

    অসঙ্গতি দুই, ধরে নিচ্ছি, জোহরা চুরি করেছে, টাকা চুরির কথা স্বীকারও করেছে। আপনারাই বলুন, সামনে স্বীকার করা একজন চোরকে আপনি কি কখনও বলবেন, এইখানেই দাঁড়া, কোত্থাও যাবি নি, আমি ঘর থেকে ওড়নাটা নিয়েই আসছি, নিয়ে এসে তোকে সিকিওরিটির হাতে দেব? দেখুন, আমি হলে প্রথম যেটা করতাম, সদর দরজায় ছিটকিনি লাগাতাম, আর ফোন করে সিকিওরিটিকে ঘরে ডাকতাম। মহাগুণ মডার্ণের প্রত্যেকটা ফ্ল্যাটে ইন্টারকম আছে, আর সেটা আছে সদর দরজার একদম কাছ ঘেঁষেই। আমি নিজে ওখানে একাধিকবার গেছি বলেই এটা আমি জানি। সুতরাং, মালকিনের বক্তব্য বা সামগ্রিকভাবে বাসিন্দাদের বক্তব্যটাও আমার খুবই কমজোরি লাগছে।

    অসঙ্গতি তিন, যে প্রবীণ মহিলার বাড়িতে জোহরা নাকি রাতে শেল্টার নিয়ে ছিল, তিনি একবারও জিজ্ঞেস করলেন না কী ব্যাপার, কেন শেল্টার চাইছে, তিনি জাস্ট এমনি এমনিই তাকে রাতে নিজের ফ্ল্যাটে থাকতে দিলেন, খাবার দিলেন এবং সকাল হবার পর চা রুটি খাইয়ে তবে তাকে সিকিওরিটির হাতে তুলে দিলেন? আপনি ঐ জায়গায় থাকলে কী করতেন? খবর নেবার চেষ্টা করতেন না, কী হয়েছে? ইন্টারকমে ফোন করে সিকিওরিটিকে রাতেই ডেকে আনতেন না? সিকিওরিটি কি রাতে ঘুমোয়? আর তিনি কোথায়? তাঁর কোনও বক্তব্য এখনও সামনে এল না কেন?

    অন্যদিক থেকে ভাবলেও, একটা জিনিস কেবলই আমার মনে হচ্ছে, কিছু তো একটা হয়েছিল। নইলে ঘটনাটা শুরু হল কী করে? মারধোর অ্যাবিউজ হোক বা না হোক, পুরো ঘটনাটার একটা তো ট্রিগার থাকবে। একটি মেয়ে যে রোজ রোজ একটা বাড়িতে আসছে কাজ করতে, হঠাৎই একদিন কেন সেই বাড়ির লোকের সাথে এই লেভেলে ঝামেলা তৈরি হয়ে যাবে?

    হয় তো এসব ভাবা, তদন্ত করা পুলিশের কাজ, কিন্তু পরের ঘটনাগুলো আরও চমকপ্রদ। পুলিশ দাঙ্গা বাঁধানো, খুনের চেষ্টা এবং আরও কী কী সব ধারায় কেস রুজু করে তেরো জনকে অ্যারেস্ট করেছে। আজ্ঞে হ্যাঁ, ডিটেন নয়, অ্যারেস্ট, যাদের মধ্যে একটি পনেরো বছরের বাচ্চাও আছে। বাচ্চাটি জোহরার ছেলে। গ্রেফতার হওয়া সকলেই জোহরা যেখান থেকে আসে, সেই পাশের গ্রামের ছেলে। আরও বহুজনকে ডিটেন করেছে, ঐ গ্রাম থেকেই। কিন্তু যে লোকটির বিরুদ্ধে এই মব, এই ভায়োলেন্স, তাদের বিরুদ্ধে কী তদন্ত হয়েছে বা কী স্টেপ নেওয়া হয়েছে, কিছুই জানা যায় নি এখনও পর্যন্ত।

    খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আউটরেজ এখন সর্বত্রই। ক্লাস অ্যাঙ্গল, পলিটিকাল অ্যাঙ্গল, রিলিজিয়াস অ্যাঙ্গল সব মিলেমিশে একাকার। একদল বলছেন এই সব হাইরাইজ সোসাইটিতে থাকা শাইনিং লোকগুলো এই রকমেরই হারামী হয়। এদের বাড়ি থেকে বের করে এনে প্যাঁদানো উচিত।

    শুনে ভয় পাই। মরমে মরে যাই। আমরা, যারা সবসময়ে বলে বেড়াই - জেনেরালাইজ কোরো না, একটা গোষ্ঠীতে থাকা মানেই সবাই এক রকমের হয় না, ওপরে লেখা আওয়াজগুলো তাদেরই কারুর কারুর মধ্যে থেকে আসছে। আমি নিজেও একজন হাইরাইজে থাকা "শাইনিং" লোক। ক্লাস কনফ্লিক্টে তা হলে আমাকেও বাড়ি থেকে বের করে প্যাঁদানো জায়েজ হয়ে যাবে! আমিও তো মহাগুণ মডার্ণের বাসিন্দা হতেই পারতাম।

    লোকটি যদি জোহরাকে সত্যিই ঐভাবে মারধোর করে বাথরুমে বন্দী করে রেখে থাকে সারারাত, তা হলে তা নৃশংস। আইন মেনে কঠিনতম শাস্তি সে পাক, এই দাবি আমি করছি। কিন্তু যারা মবের মধ্যে থেকে আওয়াজ তুলল - লোকটির বউকে নিয়ে এসে ধর্ষণ করা হোক, লোকটির বাচ্চাকে বের করে এনে খুন করা হোক (সত্যিই এই আওয়াজগুলোও উঠেছিল), সেই সব বক্তব্যের প্রায় কোনও নিন্দেই কিন্তু চোখে পড়ল না। আমার কোটাটুকু আমি পূর্ণ করে দিই এইখানেই, আমি এই রেপ কালচার খুন কালচারও এনডর্স করি না। যে বা যারা এই আওয়াজ তুলেছিল সেদিন, তাদেরও চিহ্নিত করা হোক, এবং তাদেরও যথাযোগ্য শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

    শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী, যাঁরা দুঃসময়ে জোহরাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সেদিনের মারমুখী জনতাকে যাঁরা শান্ত করেছিলেন নিজেদের একক প্রচেষ্টায়, তাঁদের 'বিষাক্ত আগাছা' বলে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে আরএসএস, এবং তাদের চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী তারা ধর্মের খেলা খেলতে শুরু করেছে। জোহরা যেহেতু ধর্মচিহ্নে মুসলিম, এবং তদুপরি বাংলাভাষী, অতএব সে বাংলাদেশের ইমিগ্র্যান্ট, এবং তাকে যারা তোল্লাই দিচ্ছে, তারা সমাজের শত্রু, হিন্দুত্বের শত্রু। সামাজিকভাবে সমস্তরকম একঘরে করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাদের ওপর, নিজের সন্তানকে স্কুলে পাঠাবার পর্যন্ত সাহস করতে পারেন নি তাঁরা গত পরশু।

    এবং প্রোফাইলিং শুরু হয়েছে সমস্ত হাউসিং সোসাইটিতে। "ব্যান বাংলাদেশী ওয়ার্কার্স"। কীভাবে এঁরা "বাংলাদেশি" চেনেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না, দুটি মাত্র অভিজ্ঞান, বাংলাভাষী এবং মুসলমান - এর মানেই বাংলাদেশি, স্থানীয় লোকজনের কাছে। আর এই একটি স্লোগানের মাধ্যমে সবাইকে একটা মেড-ইজি সমাধান খাইয়ে দেওয়া হল, বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টদের দূরে সরিয়ে রাখলেই এই ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনা আর ঘটবে না কোনও আবাসনে। কেউ চুরি করবে না, কাউকে সারারাত আটকে রেখে মারধোর করলেও তার বস্তির লোক এসে ঝামেলা করবে না বড়লোকদের আঙিনায়। এক কথায় এদের আর্থিক সুরক্ষা, নিশ্চয়তা সমস্ত শেষ করে দেওয়া হল। এমনিতেই অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা এই হাউস-মেড বা ঠিকে কাজের লোকেদের জন্য কোনও ন্যূনতম মজুরি সংক্রান্ত আইনই নেই।

    এর সঙ্গে চলছে পুলিশের ধরপাকড়। নয়ডা পুলিশ এই সব ক্ষেত্রে কী রকমের এবং কতটা সক্রিয় হতে পারে, তা আমরা দেখেছি অনেকদিন আগে, নিঠারির কাণ্ডের সময়ে। সুপ্রিম কোর্ট হিয়ারিংএর সময় মন্তব্য করেছিল, (নয়ডা) পুলিশ কুকুরের স্তরে নেমে গেছে। নয়ডা পুলিশের সক্রিয়তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি আরুশি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সময়েও। নয়ডা পুলিশের মহানুভবতার প্রমাণ আমার ব্যক্তিগত স্তরে আছে। নয়ডা সেক্টর বাষট্টির পুলিশ চৌকি প্রভারী কৈলাশ শর্মার সঙ্গে আমার দীর্ঘ বাকবিতণ্ডা ভুলতে আমার অনেক বছর সময় লাগবে হয় তো, নেহাতই তা একান্ত ব্যক্তিগত বলে তার বিবরণ এখানে দিলাম না।

    নয়ডা পুলিশ আবার সক্রিয় হয়েছে। মহাগুণ বিল্ডারও তাদের হাউসিংএর রেপুটেশন বজায় রাখতে মরিয়া, এক শ্রেণীর বাসিন্দাদেরও মানসিকতা ঠিক সেই ধরণেরই, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার, প্রশাসন, পুলিশ, বিল্ডার সকলেই বিজেপির হাতে, এমতাবস্থায় আরএসএসের মাঠে নামাটা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। প্রথম তিন দিন জোহরার স্বামী লাগাতার হুমকি পেয়েছেন পুলিশের কাছ থেকে, কারণ মূলত তাঁর কথাতেই গ্রামের লোকজন জড়ো হয়েছিল মহাগুণ মডার্ণের গেটের সামনে। রাত তিনটের সময়ে তাদের গ্রামে হামলা করে নয়ডা পুলিশ, তুলে নিয়ে যায় একাধিক জনকে, যার মধ্যে ছিল জোহরার পনেরো বছরের ছেলেও। তাকে অবশ্য পরদিন ছেড়ে দেয় পুলিশ, গাড়ি থেকে রাস্তায় নামিয়ে দেয়, কারণ মাইনর ছেলেকে পুলিশ কাস্টডি দিলে পুলিশ নিজে কেস খেয়ে যেত। কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে তেরোজন।

    সামনের লড়াইটা আরও কঠিন। লড়াই তো শুধু চিহ্নিত "অপর পক্ষে"র বিরুদ্ধে নয়, লড়াই সদাসর্বদা নিজের সাথেও, নিজের লোকের সাথেও। আমরা, যারা লড়াইয়ের প্রতিপক্ষকে চিহ্নিত করার সাথে সাথে তাদের বাড়ি থেকে বের করে গণহারে "প্যাঁদানোর" কথা বলি, প্রতিপক্ষের বাড়ির মেয়েদের রেপের হুমকি দিতে শুরু করি, প্রতিপক্ষকে হাতের সামনে পেলে তাকে মেরে সবার সামনে ঝুলিয়ে দেবার পক্ষে সওয়াল করি। নিদেন পক্ষে হাত মুচড়ে ভেঙে দেবার স্বপ্ন দেখি, যাতে প্রতিপক্ষ কখনও বিরিয়ানি খেতে না পারে।

    কথাগুলো কখনও বলা দরকার ছিল। আজ বললাম। বলছিলাম না, লড়াইগুলো নিজেদের সাথেও?


    ** শেষতম সংযোজনঃ গ্রেফতার হওয়া তেরো জনের মুক্তির জন্য সব রকমের চেষ্টা চলছে। সোমবারের মধ্যে সেশনস কোর্টে জামিন না পাওয়া গেলে হাইকোর্টে মুভ করার কথা ভাবা হচ্ছে। এদিকে "ব্যান বাংলাদেশি মেড" ক্যাম্পেন চালানো আপওয়ার্ডলি শাইনিং বাসিন্দাদের অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। গত চার দিনে নিজেদের বাসন মেজে আর বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে, তাঁরা এখন নিজ নিজ সোসাইটির ম্যানেজমেন্ট এবং সিকিওরিটিদের সাথে সেটলমেন্টে এসেছেন, সঠিক আইডি কার্ড থাকলে সেই সমস্ত কাজের লোকদের আবার কাজে বহাল করা হোক। মহাগুণ মডার্ণেও সিগনেচার ক্যাম্পেন শুরু করা হয়েছে "মেড"দের কাজে পুনর্বহাল করার উদ্দেশ্যে। মেডরা ফিরে আসছেন, এবং জোহরাও নতুন কাজ পেয়ে গেছে। মহাগুণ মডার্ণেই।

    মজদুর কামগার ইউনিয়ন এবং আরও কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রেফতার হওয়া লোকেদের মুক্তির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ জুলাই ২০১৭ | ২২৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • avi | 57.11.9.186 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৬61345
  • ভালো।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:০২61346
  • একটা ছোট কথা মনে হয় - ধরা যাক, প্রচুর বাংলাদেশী ভারতে ঢুকছে, এবং মুসলিম বাংলাদেশীই ঢুকছে। ধরা যাক কেন, ঢুকছে তো বটেই। রুজি রুটি-র জন্য মানুষ দেশান্তরী হয়, সাধ করে কেউ নিজের ভিটে মাটি ছাড়ে না। এরা অন্য দেশে এসে বেঁচে থাকার জন্য কঠিন লড়াই করছে। যাদের সাথে এদের পেশাগত প্রতিযোগিতা, স্থানীয় খেতে খাওয়া মানুষজন, তারা খাপ্পা হলে তাও বোঝা যায়, কিন্তু উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত-দের সমস্যাটা কোথায় - কি এসে যায় আমার বাড়ীতে যিনি কাজ করছেন , তার ন্যাশনালিটি নিয়ে, কর্মদক্ষতা-ই তো বিবেচ্য হওয়া উচিত।

    না কি ধর্মের দৃষ্টিকোণ-টাই মুখ্য? বাংলাদেশী হিন্দু বাড়ির কাজ করলে ঠিক আছে, মুসলিম হলেই না জায়েজ?
  • অভিষেক | 52.110.183.90 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৫61347
  • বাহ! জোহরা আবার কাজ পেয়ে গ্যাছেন।এটা বেশ ভালো লাগার মতন খবর।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৭61348
  • বলতে ভুলেছি, সিকি-র লেখাটা খুবই ভাল লেগেছে, ব্যালেন্সড লেখা।

    'নয়ডা সেক্টর বাষট্টির পুলিশ চৌকি প্রভারী কৈলাশ শর্মার সঙ্গে আমার দীর্ঘ বাকবিতণ্ডা' - এটা জানতে আগ্রহী, সম্ভব হলে লিখো কখনও।
  • Mila | 22.5.49.74 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৫:৫৩61349
  • এমপ্লয়ার এর নাম তো মিডিয়া তে অভায়লাবলে
    মার্চেন্ট নেভি অফিসার মোহিত শেঠি স্ত্রী স্কুল টিচার হরসুল শেঠি
  • mila | 22.5.49.74 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৫:৫৯61350
  • ১২ তারিখ সকালে অন্য টাওয়ার থেকে সিকিউরিটি পরিবৃত হয়ে জোহরার বেরিয়ে আসার সিসিটিভি ফুটেজ ও আছে, যেটা ওই প্রবীণ মহিলার ভার্সন কে এন্ডোর্স করছে
    সিসিটিভি ফুটেজ নকল হলে আলাদা কথা
    আর এইসব কারণে কমন প্রপার্টি ভ্যান্ডালাইজ করাকে একদল মানুষ গ্লোরিফাই করছেন, যেটা খুব আশংকাজনক
  • mila | 22.5.49.74 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৬:১০61351
  • জোহরার স্বামী আব্দুল সাত্তার ঘটনার দিন রাত্রি থেকে পলাতক, সেক্ষেত্রে প্রথম তিনদিন লাগাতার হুমকি পেলেন কিভাবে?
  • ইন্দ্রাণী | 37.63.219.125 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৬:১৭61352
  • কয়েনের দু'পিঠ ই দেখতে পেলাম , তার সাথে কিছু জঞ্জালও(ধর্মীয় রাজনীতি)।ভয়, আশঙ্কা, খারাপ লাগা সবের মধ্যে শেষ খবরটিতে একটু যেন স্বস্তি পেলাম।
  • সিকি | 132.177.99.24 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৬:৩৮61353
  • ১। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী জোহরাকে গাড়ির বুটের মধ্যে সারারাত আটকে রাখা হয়েছিল, যেটা পরে জানা গেছে সত্যি নয়।
    ২। কমন প্রপার্টিকে ভ্যান্ডালাইজ করাকে এন্ডর্স কেউ করে নি, যদি কারুর মনে হয় সেইটা করা হয়েছে এই লেখার মাধ্যমে, তা হলে আমি অপারগ।
    ৩। জোহরার স্বামী ঘটনার রাত থেকে একেবারেই পলাতক নয়। একেবারেই নয়। পরদিন জোহরাকে যখন আহত অবস্থায় মহাগুণ মডার্ণ থেকে ফেরত আনা হয়, তখন গ্রাম থেকে মব ডেকে এনেছিলেন জোহরার স্বামীই। ঘটনার দিন দুই পরে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, কারণ পুলিশ অনবরত তাঁকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। রাত তিনটের সময়ে দরজা ভেঙে কারুর পনেরো বছরের ছেলেকে পুলিশ ভ্যানে করে তুলে নিয়ে গেলে "ইনসাফ" নামক বস্তুটির প্রতি লোকজনের আস্থা এমনিতেই একটু কমে যায়, এরা তো খেটে খাওয়া, আইন না জানা, লেখাপড়া না জানা মানুষ।
    জোহরার স্বামী পলাতক নন, তাঁকে সরিয়ে রাখা হয়েছে, কারণ গ্রামে এখনও রোজ রাতে পুলিশ হানা দিচ্ছে এবং পুরুষমানুষ দেখলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে।
  • সিকি | 132.177.99.24 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৬:৪৩61354
  • ঘটনার মধ্যেও ঘটনা আছে। গ্রাউন্ডের পেছনে আছে ব্যাকগ্রাউন্ড। এই মহাগুণ মডার্ণ যখন তৈরি করা হচ্ছিল, কোনওভাবে পড়ে গিয়ে একজন মহিলা লেবার মারা যান।

    মহাগুণ পুলিশকে মাত্র দু হাজার টাকা দিয়ে কেস সেটল করে নেয়। এখন জোহরাদের হয়ে লড়ছেন যে দুজন, তাঁরা সেই সময়ে সর্বশক্তি দিয়ে এর প্রতিবাদ করেন, পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, এবং মূলত তাঁদের প্রচেষ্টার ফলেই মৃত মহিলার পরিবারকে শেষমেশ চার লাখ টাকা দিতে বাধ্য হয় মহাগুণ।

    ফলে একটা বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হয়ে ছিল। এইবারেও মব যখন মহাগুণের গেটে পৌঁছয়, তখন জোহরার স্বামী মোবাইলে এই দুজনকেই ফোন করেন। এই দুজন যখন মহাগুণের গেটের সামনে এসে পৌঁছন, তখন পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে বেরিয়ে গেছে। মব প্রথমে মারমুখী ছিল না। মহাগুণের সিকিওরিটি শূন্যে বন্দুক থেকে তিন রাউন্ড ফায়ার করে, এর পরেই মব ক্ষেপে যায় এবং বাইরের কাচের দরজা ইত্যাদি ভেঙে ফেলে। এই দুজন সেখানে সেই সময়েই পৌঁছে নিজেদের একক চেষ্টায় সেই বিশাল মবকে শান্ত করেন।
  • Renegade | 127.96.248.27 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৬:৪৫61355
  • Mila বলে একজনের কিছু কমেন্ট দেখলাম।

    ১. প্রবীণ মহিলার বাড়ীতে জোহরা কেন থাকতে চাইল, তা তিনি কোন অজ্ঞাত কারণে জিজ্ঞেস করেন নি। ওটা বাড়ী না ধর্মশালা?
    ২. ১৭০০০ টাকা চুরি করে জোহরা কমপ্লেন করতে যাওয়ার সময় পালিয়ে গেল। বাড়ীর মালকিন সোসাইটির আপিস বা পুলিশ কাউকেই জানালেন না। রাতে জোহরার স্বামী পুলিশ নিয়ে গেলেও তাদেরও বলা হল না। একদম খাপে খাপ।
    ৩. জোহরার স্বামী ঘটনার রাত থেকেই পলাতক নন। পরের দিন ছেলেকে ছাড়াতে তিনি থানায় যান। আর হুমকি তার ছেলে ও পড়শী মারফতো জানানো যায়।
    ৪. হিন্দুস্তান টাইমসের চিত্র থেকে দেখা যায় জামা ছেঁড়া জোরহা কে তিন পুলিশ চ্যাংদোলা করে নিয়ে আসছে। আর সরকারী ডাক্তার যা ওষুধ দিয়েছেন, সবই ব্যাথার।
  • সিকি | 132.177.99.24 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৬:৪৮61356
  • সরি, একটু ভুল লিখেছি, মহিলা লেবার মারা যাবার ঘটনাটা মহাগুণে হয় নি, ওটা হয়েছিল ওর পাশেই আরেকটি নির্মীয়মান আবাসনে।
  • mila | 22.5.49.74 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৭:১০61357
  • আমার বাড়িতে যিনি কাজ করেন ( যদি কেউ করেন, আমার বাড়িতে কেউ করেননা), তিনি যদি এক রাত্রি শরীর খারাপ হওয়ার কারণে থেকে যেতে চান, থাকতে দেওয়াটা খুব স্বাভাবিক, তার জন্যে ধর্মশালা হতে হয়না
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৯:১৩61358
  • কিন্তু, জোহরা তো ঐ প্রবীণ মহিলার বাড়িতে কাজ করতেন না, অন্য এক বাড়ীতে করতেন।

    সেক্ষেত্রে জোহরা নিজের এমপ্লয়ারের বাড়ীতে না থেকে কেন অন্য একজনের বাড়ীতে থাকতে চাইলেন - এ প্রশ্ন ওঠা তো স্বাভাবিক।
  • Saswati dutta | 57.30.232.150 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০১:০৫61359
  • এখর আমর ভলো লেগেচে।দেতইল্স ও তথ্যোসম্রিধো।বন্গ্লভসি মইদ্স দের দিনোলিপি এর অগে এতো প্রন্জোল ভবে কোথও পোরিনি।।। অহগুন কন্দেন চুরি সোত্তি হোএচিলো কিন যনিন।অমি ণৈদ এক্তি উলে গতেদ সোিএত্য তে বস Kওরি।এখনে কজ উরু ও এসে অর্থথ সোিএত্য তে প্রোবেশ কোরর অগে ফেমলে গুঅর্দ মইদ্স দের দেহো তল্লসি কোরে আবর ঔত হোবর সময়ো সেই ণিয়োম।।টই ওনে হৈ মহগুন এও এই প্রোেস্স থত কোথ ।।ট সত্তেও চুরি কিভবে হোলো ত ইস্বর ই জনেন।।

    অহগুন পরোবোর্তি এফ্ফে্ত।এর জোন্নো অমদের সোিএত্য তে মইদ দের গুঅর্দ শ্রূম উসে কোর্তে দেওঅ হোচেন।।Kওনো কোনো রেসিদেন্ত অন্গ্ল ভসি দের বিয়োগ বন্ধো কোর্তে বোল্চেন।।।Rুরল উর্বন মিগ্রতিওন এর জোন্নো হে বিপুল সন্খ্যক বন্গ্লভসি ণR এ ওদ্দ জোব কোরে তদের জিবিক সমোসস এর সম্নে এসে হেল্প।।
  • mila | 22.5.49.74 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০২:২৫61366
  • @ সিকি -
    আমি আপনার বক্তব্য বুঝতে পারিনি তা নয়, কিন্তু আপনি অন্যদিকের সম্ভাবনাতা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন|
    ১।দ্বিতীয় মহিলার বাড়ি থেকে জোহরাকে পাওয়া গেছে কিনা, সেটা সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রমান করা সম্ভব (যেটা এন ডি টি ভি অনুযায়ী, পুলিশ কে জমা দেওয়া হয়েছে), এবার এই দ্বিতীয় মহিলার বাড়িতে জোহরাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছিল কিনা, উনি কেন আশ্রয় দিলেন, ডাক্তার ডাকেননি কেনো - এইসব প্রশ্ন গুলো প্রাসঙ্গিক, যখন মেনে নেওয়া হবে যে জোহরা ওই দ্বিতীয় মহিলার বাড়ি ছিলেন, নতুবা মহাগুন মডার্নের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ফুটেজ ডক্টরিং এর কমপ্লেন করা দরকার
    ২।"আমি হইলে কী করিতাম"- এই প্রশ্ন এসেছে "প্রবীণ মহিলার বাড়ীতে জোহরা কেন থাকতে চাইল, তা তিনি কোন অজ্ঞাত কারণে জিজ্ঞেস করেন নি। ওটা বাড়ী না ধর্মশালা?"- এর পরিপ্রেক্ষিতে, কেনো থাকতে চাইলো সেটা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল বলেই খবরে প্রকাশ, এবং সেই কারণে বাড়িতে থাকতে দেওয়া আমার কাছে খুব স্বাভাবিক লেগেছে, সেটাই মন্তব্য করেছিলাম|
    ৩। স্বামী পুলিশ এর বক্তব্য অনুযায়ী পলাতক, আজকের স্ক্রলএর খবর থেকে কোট করছি "So far, the police has arrested 13 men – all relatives of the domestic workers. It is still looking for Bibi’s husband who has gone into hiding. "
    ৪|৩) "সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা মিলা বুঝেও বুঝতে পারেন নি, অরণ্যদা ওপরে লিখে দিয়েছেন, যে বাড়িতে জোহরা কাজ করত, সে বাড়িতে সে রাতে ছিল না বলে দাবি করেছেন বাড়ির মালিক। "- জোহরা ওখানে একাধিক বাড়িতে কাজ করতেন, যার বাড়িতে উনি রাত্রে ছিলেন বলে মহাগুন মডার্ন দাবি করেছে, তার বাড়িতেও উনি কাজ করতেন এমনতাই নিউস রিপোর্টে দেখলাম| অরণ্যদা বোধহয় বলেছেন উনি মোহিত/হারসুল শেঠীর বাড়িতে রাত্রে ছিলেননা এমনটা বাড়ির মালিক দাবি করেছেন |
    লিংকটা থাকলো
    https://scroll.in/article/844166/in-the-class-conflict-unfolding-in-noida-union-minister-makes-it-clear-he-stands-with-flat-owners
  • সিকি | 158.168.96.23 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৫:০৫61360
  • মিলা হয় তো বক্তব্যটা বুঝতে পারেন নি, নয় তো বুঝতে চাইছেন না।

    ১) ঠিকে কাজের লোকরা আসে আশপাশের এলাকা থেকে। তাদের বাড়ি এমন কিছু দূরে হয় না যেখানে শরীর খারাপ হলে ফিরে যাওয়া যায় না, রাতে কারুর বাড়িতে থেকে যেতে হয়।

    ২) যদি শরীর খারাপও হয়, তা হলেও সিকিওরিটিকে জানিয়ে রাখাটা নিয়ম। দরকার হলে ডাক্তার ডাকা যেত, যদি অতই দয়ার শরীর হত, বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়াও যেত। অন্ততপক্ষে মহিলাটির বাড়ির কারুর মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাদের কাউকে ডেকে নিয়ে আসা যেত। জোহরার স্বামীর কাছে মোবাইল ছিল।

    একটি বাড়িতে একজন ঠিকে কাজের মহিলাকে রাতে রেখে দেওয়া, মানবিক কারণেই হোক বা অমানবিক কারণে, কোনওটাই স্বাভাবিক নয়।

    ৩) সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা মিলা বুঝেও বুঝতে পারেন নি, অরণ্যদা ওপরে লিখে দিয়েছেন, যে বাড়িতে জোহরা কাজ করত, সে বাড়িতে সে রাতে ছিল না বলে দাবি করেছেন বাড়ির মালিক। গৃহকর্ত্রী দুপাট্টা নিতে যাবার অছিলায় ভেতরের ঘরে যান, সেই ফাঁকে জোহরা সেই বাড়ি থেকে পালায়, এবং সে নাকি সেই টাওয়ারেরই অন্য এক প্রবীণ মহিলার বাড়িতে সে রাতটা শেল্টার নেয়, রাতের খাবার খায়, সকালে চা রুটিও খায়। আমার সন্দেহ এই দ্বিতীয় প্রবীণ মহিলাটিকে নিয়েও।

    এখানে "আমি হইলে কী করিতাম" জাতীয় বক্তব্য একেবারেই খাপ খায় না। যা করা স্বাভাবিক ছিল, তা করা হয় নি।
    ---------------------------------------
    শাশ্বতী দত্ত হয় তো প্রথমবার গুরুতে লিখছেন, একটু ধরে লিখুন, নইলে কিছুই বোঝা গেল না। ফেসবুক থেকে বাংরেজি কপিপেস্ট করলে এখানে বোঝা যায় না।
  • শিবদাস ঘোষ | 122.110.5.231 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৫:৫৩61361
  • এই শাইনিং দের সকাল বিকেল বিচুটি পাতা লাগিয়ে পেঁদানো উচিত । জয় লেনিন ।
  • paps | 125.187.46.187 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৭:৪৪61367
  • সিকি এবং পাই এর লেখায় যে লেভেলের সততা ফুটে ওঠে তা আমাকে মাঝে মঝে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দেয়।
  • d | 144.159.168.72 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৮:০৪61362
  • সিকি,

    মহাগুনে সহায়তাকর্মীদের বডি ফ্রিস্কিঙ্গ হয় না প্রত্যেক টাওয়ারে? আর খাতায় এন্ট্রি এক্সিট আলাদা করে প্রত্যেক টাওয়ারে?

    আর জোহরা বিবি কি জোহরা নামে মানে ওর মুসলমান পরিচিতির নামেই কাজ করত? একেবারে বাচ্চামত মেয়ে মনে হল তো ছবি দেখে। আমার গুরগাঁওতে থাকার সময় দেখেছি বাংলাদেশের মুসলমান হলে এঁদের হিন্দুমত নামটা এঁরা বলেন সাধারণত। শ্রাবনীও সেইরকম লিখেছিল।
    তবে এখন তো গেতেড কমিউনিটিগুলোতে পুলিশ ভেরিফিকেশান মাস্ট, সেক্ষেত্রে আধার ভোটার আইডির নাম জানবেই সবাই।
  • d | 144.159.168.72 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৮:০৪61363
  • আর হ্যাঁ লড়াইটা সবসময় নিজের সাথেও। (Y) (Y)
  • সিকি | 158.168.96.23 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৮:৪২61364
  • জোহরা বিবি জোহরা নামেই কাজ করত।

    শ্রাবণীর লেখাটা মনে আছে। ব্যাপার হচ্ছে, কোন মুসলমান তার মুসলমান পরিচয়েই থাকবে, আর কোন মুসলমান হিন্দু মহিলার ডিসগাইসে থাকবে, এর পেছনে অনেকগুলো ফ্যাক্টর আছে। আমি এখন যেখানে থাকি সেখানেও সেলিনা, আয়েষা ইত্যাদি মেয়েরা স্বনামেই কাজ করে। ডিপেন্ড করছে, এরা কোথায় কোন ঘেটোতে থাকে, এবং যে এলাকায় তারা কাজ করে সেখানকার জনতার মাইন্ডসেট কী রকম। অনেক পুরনো অপমান, অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা ইত্যাদি অ্যানেকদোটের মধ্যে দিয়ে গিয়েও মুসলমান মেয়েরা হিন্দু মেয়ের ডিসগাইস নেয়।

    বসুন্ধরা এনক্লেভ এলাকায় যখন ভাড়া থাকতাম, তখন এই রকম হিন্দু সাজা মুসলমান দেখেছি। এরা আসত একটু পাশেই নিউ অশোক নগর নামক বস্তি থেকে। সেটি মূলত হিন্দুপ্রধান বস্তি, এমনকি সেখানে তাদের নিজস্ব কালীবাড়িও আছে। ঐ এলাকায় যত ঠিকে কাজের মহিলা আমি দেখেছি সক্কলেরই চোখে পড়ার মত বেশিমাত্রায় সিঁদুর এবং ঐ শাঁখাপলা - র‌্যাদার, পলাশাঁখা। রেশমা সেখানে শর্মিলা নামে কাজ করত। আমি সেখানে যে বাড়িতে ভাড়া থাকতাম, সেই বাড়ির ওনার একবার কথায় কথায় জানিয়েছিলেন তিনি আমার পদবি দেখেই আমাকে ভাড়া দিয়েছেন। একটি মুসলমান ফ্যামিলিও ভাড়া নিতে এসেছিল, তাদের তিনি ভাড়া দেন নি।

    বডি ফ্রিস্কিং হয় না। সঙ্গে ব্যাগ/থলি বা কোনও জিনিস থাকলে সেগুলোর তল্লাশি হয়, এবং কিছু জিনিস নিয়ে গেলে (অনেকেই ঘরের পুরনো জিনিস কাজের লোককে দিয়ে দেন) সেগুলো লিখিয়ে আনতে হয়, ফোনে ভেরিফিকেশন হয়, তবে ছাড়ে। শরীরে তল্লাশি হয় না বলেই জানি, তবে মহাগুণ মডার্ণে আলাদা নিয়ম আছে কিনা, জানি না।
  • সিকি | 158.168.96.23 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৮:৪৩61365
  • ঠিকে কাজের লোকের পিভি হয় না। চব্বিশ ঘন্টার মেড রাখেন যাঁরা, তাঁদের পিভি করিয়ে রাখতে হয়।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৮:৫২61368
  • মিলা-র লিঙ্ক থেকে মাননীয় মন্ত্রী-র মন্তব্য পড়লাম। এতই ন্যক্কারজনক যে কিসু কওনের নাই।

    শাইনিং ইন্ডিয়া-তে গরিব-গুর্বো গুলো বড়ই আইসোর, তাদের ঝেঁটিয়ে কোথাও বিদায় করা গেলেই মন্ত্রী মশায় খুশী হন। এদিকে আবার বাড়ীতে সার্ভেন্ট দরকার, কি যে করা ..
  • aranya | 83.197.98.233 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৫61369
  • 'It is clear that a group of people got together with the intent to injure and kill and they should be bohoked under those sections and under the Goonda Act. I assure you that they will not get bail for years to come.'

    - মন্ত্রী বলেছেন। দুটি প্রশ্ন -

    ১। কিছু বিল্ডিং-এর কাঁচ ভেঙেছে, এর মধ্যে 'হত্যার অভিপ্রায়' কোদ্দিয়ে এল?

    ২। জাস্ট কাঁচ ভাঙার জন্য জামিন-অযোগ্য ধারায় বছরের পর বছর আটকে রাখা যায়?

    কিছু মিস করছি মনে হচ্ছে
  • buka | 186.10.104.240 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৭61370
  • 'bohoked' মানে কী?
  • aranya | 83.197.98.233 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৮61371
  • booked
  • সিকি | 158.168.96.23 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৯61372
  • মিস আমরা সবাই করছি অরণ্যদা, এবং এই জন্যই এদের আটকে রাখা সম্ভব হবে না বেশিদিন।

    ভাবো একবার, পাঁচশো জনের একটা মব এসে হাজির হল, উল্টোদিকে গুটিকয় রেসিডেন্ট, কয়েকজন সিকিওরিটি, যারা পরে নিরাপত্তার আশংকায় পুলিশ ডাকে। তার আগে তিন রাউন্ড শূন্যে ফায়ার করে, যার পরেই ভাঙচুর শুরু হয়।

    একটিও রেসিডেন্ট, একটিও সিকিওরিটি, এবং একটিও পুলিশ এই ঘটনায় আহত হন নি। কারুর গায়ে একটাও আঁচড় অবধি পড়ে নি। জাস্ট কয়েকটা কাচ ভেঙেছে, আর হয় তো কিছু ইটপাটকেল পড়েছে, তাও কারুর গায়ে পড়ে নি।

    এর পরে মবের ওপর লাগানো হয়েছে আইপিসি ৩০৭। হত্যার প্রচেষ্টা।

    আমরা অনেক কিছুই মিস করছি। আপাতত গ্রেফতার লোকেদের ছাড়ানোর চেষ্টা চলছে, আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়িই তারা বেল পেয়ে যাবে। দেখা যাক।
  • aranya | 83.197.98.233 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫৪61373
  • ছাড়ানো গেলেই ভাল, প্রহসনের চূড়ান্ত হচ্ছে, কিছু কাঁচ ভাঙার জন্য ..

    শিবঠাকুরের আপন দেশে, নিয়ম কানুন সর্বনেশে
  • de | 24.139.119.172 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৯:২৭61374
  • সত্যিই প্রহসন -
    কি বিচিত্র দেশ!
    লেখাটার আপডেট থাকুক একটু - আজ কাগজে পড়লাম মমতা ব্যান্যার্জী প্রতিনিধি দল পাঠাচ্চেন এঁদের সাহায্য করার জন্য!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন