এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • চিন্টুর মুম্বাইদর্শন

    উদয়ন ঘোষচৌধুরি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৬ জুন ২০১৫ | ৪৪৭১ বার পঠিত
  • শিবাংগী বলেছিল, এ শহরে ডিসেম্বরেও ফ্যান চালাতে হয়। হাঁ করেছিল চিন্টু। হাঁ-করা তার পুরনো অভ্যেস। হাভাতে এক শহরতলীর হাঘরে, উঠে এসেছে ধ্যাবড়া এক চাকরি নিয়ে। চাকরিটা তার ‘ধ্যাবড়া’ মনে হয়, প্রায়ই যখন আগাগোড়া বাংলা মিডিয়মকে অনুবাদ আর উচ্চারণ গার্গল করে টিম কনফারেন্সে স্লাইড-শো’র আঁচে ট্যাঁস ভাষায় ডেমো দিতে হয়। এই ‘ট্যাঁস’-টাও এত হুহু বদলে চলেছে, সেটাও সে সাঁতরে ধরার চেষ্টা করে। প্রাথমিক মোলাকাতে লোকজন এমন ভাব দ্যাখায়, যেন ‘হাই বাডি’ বলে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। সঙ্গে ‘হট’, ‘খিউল’ (ইয়ে, কুল), ‘ওয়াও’-এর গুঁতো। ভারতবর্ষ লড়ে যাচ্ছে এখানে পৌঁছতে; আর এরা লড়ছে ইউকে, স্টেটস, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া পৌঁছতে। প্রতি দ্বিতীয় নাগরিক মানত রেখেছে, ‘শিকে ছিঁড়ে ভিসা পেড়ে দাও, মা!’ স্বপ্নাদেশ আসলেই, বিয়ার টেনে শিরডি কিম্বা জুতো ব্যাকপ্যাকে গুঁজে সিদ্ধিবিনায়ক। ভূগোল আর হিন্দি সিনেমা থেকে চিন্টু জেনেছিল, বম্বে, থুড়ি, মুম্বাই (বালাবাবুর চ্যালারা চ্যালাকাঠ বানাতে পারে) সমুদ্রতীরের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল। হররোজ উপচে ওঠা মানুষ আর গাড়ির ভিড় ওই ধারণাটাকে উষ্ণতার নাতি বানিয়ে ছেড়েছে। পিক আওয়ারের লোকাল ট্রেনে পাবলিক একটা নাটবল্টু পেলেও নিজেকে টাঙিয়ে দ্যায়। কোনও কোনও রাউডি রাঠোড় যদিবা ভেতরবাগে সেঁধোয়, ভিড়ের ঠ্যালায় বাকি পথটা ফিল্মফেয়ারের ত্রিভঙ্গ স্ট্যাচু। এক-একটা হ্যান্ডেলে সতেরোটা হাত। কানের লতিতে ঘাম গড়ালে বা কুঁচকিতে ফুসকুড়ি উশখুশোলে চোখ বুজে স্রেফ ইষ্টদেবতা স্মরণ। নাস্তিকরা অবশ্য সেটাকে গার্লফ্রেন্ডের স্মার্ট খুনসুটি ভেবে নেয়।

    চিন্টুর টিমে একঝাঁক ছটফটে মেয়ে। শিবাংগী, শালিনী, পুনম, ডোরিন, ময়ূরী। উইকএন্ডে তারা প্ল্যান বানায় পিকনিকের। সিবিচের পাশে এক ওয়াটার পার্ক। শহরে নতুন এবং সঙ্গীহীন চিন্টুকেও ডেকে নেয় ওরা। তরঙ্গ-উচ্ছলিত এতগুলো যুবতী জলকেলিতে একযোগে – রোমাঞ্চ-হিল্লোলে সে তো প্রায় হাফ-সেদ্ধ! অফিস-ক্যাবের গোলমাল থাকায় একাকী পুনমকে একবার রাত সাড়ে-বারোটায় পৌঁছে দিতে যায় ওর ফ্ল্যাটে। পুনমের মা ভিনদেশি ছেলেটিকে আপন আত্মীয়ের মতো মেনে নেন। এখানের মানুষের এটাই ধর্ম। এই শহর এভাবেই সকলকে নিজের করে নেয়। কলোনিয়াল প্রথামাফিক বসকে ‘স্যার’ বলতে হয় না। তারা নিজেরাই বলে দেন সরাসরি নাম ধরে ডাকতে। কোম্পানির আরএনডি ম্যানেজার, কাজ শেষে একদিন, রাত আড়াইটেয় চিন্টুকে নিয়ে যান এলাকা চেনাতে। উদ্ধত আলো আর উদ্দাম বাজনাওলা একটা বাড়ির সামনে সে আবার হাঁ। যশ চোপড়ার পোস্টারেও এত এত সুন্দরী একসঙ্গে দ্যাখেনি লাইফে! ম্যানেজার ফিসফিসোয়, “অপ্সরা নয়, ওরা বার ড্যান্সার!” হিন্দি ফিল্মে যদিও আজও খলবলাচ্ছে ‘আও রাজা’ বা ‘ফ্যাবিকল’ জাতীয় সিকোয়েন্স – আসলি মুম্বাইতে ওরা বহুদিনই হাপিশ। নানা অন্ধকার ধান্দায় ছড়িয়ে পড়েছে নিউ মুম্বাই আর থানে সংলগ্ন এরিয়ায়। মূল শহরে রমরমিয়ে পাঁচতারা যৌনব্যবসা, বিজনেস ট্যুরে কনভেন্ট এডুকেটেড এসকর্ট অথবা টোয়েন্টি-ফোর বাই সেভেন চাইলেই আপনার রুমে ম্যাসাজ হেভেন। আসলে এসব ‘ক্লিনমুম্বাই’ শুচিবাইয়ের সাইড এফেক্ট। যেমন, ফৈজাবাদের তেওয়ারি। ফোর্টের ফুটপাথে চা বেচত। রাতারাতি তাড়া খেয়ে, বউ-বাচ্চাকে গাঁওয়ে ছেড়ে, এখন মালাডে জুতো পালিশ করে। রাত্রে একটা দোকানের হাতায় শোয়। দোকানদার দয়া করে বারান্দার কোণাটুকু ছেড়েছে। চিন্টু দেখেছে, এ শহরে চা-দোকানের থেকে শুঁড়িখানা অনেক বেশি। এমনকি চোলাই খাওয়ারও যে সুসজ্জিত বার হতে পারে, তা-ও সে এখানেই জেনেছে। আরও অদ্ভুত, প্রায় প্রতিটি বারের নামকরণে হিন্দুয়ানি আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া। দেবীকৃপা বিয়ার পাব। সাঁইসন্ত লেডিজ বার। হরিপ্রসাদ পারমিট রুম।

    ‘ক্লিনমুম্বাই’-এর থিওরি মেনে বেশির ভাগ নতুন কোম্পানি বাড়তে থাকা মুম্বাইতে। গালভরা প্রি-লেজুড় ‘সাবার্ব’ কিম্বা ‘গ্রেটার’। পাওয়াইতে হিরানন্দানি। গোরেগাঁওতে রাহেজা। আইরোলিতে মাইন্ডস্পেস। বছর দশেক আগেও পাত্তা না-পাওয়া জায়গারা পাহাড়-জঙ্গল মুড়িয়ে বিশ-বাইশতলা ঘাড়ে উঠে গেছে জাতে। কোনও কোনও ম্যানগ্রোভ এরিয়ায় প্লাস্টিকের ডাঁই ঢেলে ঢেলে হয়ে চলেছে রেসিডেন্সিয়াল অ্যাপার্টমেন্টের হুড়ুদ্দুম কাজ। ফুট পঞ্চাশেক নিচেই হয়ত পাওয়া যাবে চোরাগোপ্তা খাঁড়ি। কিছু ভূবিজ্ঞানীর ধারণা, বহু বহু বছর আগে এখানে ছিল সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা এখন সমুদ্রের নীচে। অশোকের পরবর্তী বৌদ্ধরা বেছেছিল এখানের নির্জন চরাচর। কানহেরি আর মহাকালির গুহাগুলো এখনও চিন্টুকে পৌঁছে দ্যায় সেই আদিগন্ত অপার চিরকালীন ভারতবর্ষে। শ’দেড়-দুই বছর আগেও তো জায়গাটা টুকরো টুকরো সাতটা দ্বীপ ছিল। স্থানীয়রা পেশায় ছিল মেছুড়ে। ক্রমে বন্দর এল। পর্তুগিজ আর ইংরেজ এল। শুরু হল ব্রিজ বেঁধে বেঁধে জুড়ে দেওয়া। পাহাড়ের পেট ফাটিয়ে ট্রেনপথ। দেশভাগের আগে-পরে এল কিছু লড়াকু উদ্বাস্তু, পরে তাদের কেউ কেউ হয়ে উঠল সেলিব্রিটি। আশির দশক থেকে পুরনো চালি আর খোলি, যা ছিল প্রধানত মিল-শ্রমিকদের আবাস, সস্তা দরে কিনে চারিপাশে ছড়িয়ে দেওয়া হল বিল্ডিং। টাওয়ার। দাদারকেও এক সময় ‘সাবার্ব’ বলা হত। সেটা ছাড়িয়ে হল বান্দ্রা। জুহুতে বসতি বেড়ে বেড়ে ছুঁয়ে দিল আন্ধেরি। এক সময় বোরিভেলিও আর ব্রাত্য রইল না। এখন তো ওয়েস্টার্ন লাইনে এগোতে এগোতে মিরা রোড-ভাইন্দর পেরিয়ে ভিরার অব্দি প্রায়-মুম্বাই। আর সেন্ট্রাল লাইন কল্যান ছাড়িয়ে হাত রেখেছে কারজাত-কাসারার দিকে। হার্বার লাইনে কয়েক বছর আগের ভাসি-পানভেলকেও চেনা দায়। খারগারে এসে গেছে নতুন এয়ারপোর্ট। চিন্টু চোখ বুজলে দেখতে পায়, দিন-কে-দিন জায়গাটা যেন লম্বাটে লেড়ো বিস্কুট, যার দক্ষিণ আর পশ্চিম অনবরত ডুব মারছে আরবীয় চায়ের গ্লাসে। আচ্ছা, ভিজতে ভিজতে বিস্কুটটা যদি আধখানা ভেঙে যায় গ্লাসের ভেতর? বা, ভগবান নামের বাচ্চাটা একদিন টুক করে এক টুকরো চাখে? চিন্টু চমকে উঠে চোখ খুলে ফ্যালে। সামনে নতুন বিল্ডিঙের জন্যে কাটা হচ্ছে পাহাড়। ট্রাক-বোঝাই পাথর চলেছে মাল্টিন্যাশনাল সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে। দগদগে পাহাড়ের ঘা চুঁইয়ে নামছে পাথুরে জল। গুম গুম শব্দে বিশাল একটা চাঁই খুলে পড়ে পাশের টাওয়ারের পার্কিং-এ। দুটো গাড়ি তুবড়ে যায় পলকে। সিকিউরিটি হাত নাড়ে, “সব ঠিক হ্যায়, সাব।” দড়ি-ঘেরা ব্যারিকেডে উঁকি মেরে, পরে চিন্টু দেখেছে, শুকনো লাল ছোপ। রক্তের দাগ কি না, কেউ কারুর কাছে জানতে চায়নি।

    এ শহরের বেশ কয়েকটা মিডিয়াখ্যাত দুর্যোগ সে দেখেছে। ২০০৫-এর ২৬শে জুলাই। মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টি গোটা মুম্বাইকে ধস্তে দিয়েছিল। লাইট, খাবার, ফোনের নেটওয়ার্ক – কিছুই নেই। প্রোডাকশন ফ্লোরে অফিসের ভিপি থেকে হাউসকিপার – ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে ঠায় জেগে, সারা রাত বসে। জল ফুরিয়ে যাওয়াতে উনিশতলার টয়লেট দুর্গন্ধে মাৎ। জানলা দিয়ে বোতল বাড়িয়ে বৃষ্টি ধরে খেতে হচ্ছিল। রাস্তায় আটকে যাওয়া গাড়ির ভেতরেই মারা গেছিল অনেকে। হাইওয়ের ধারে জোগেশ্বরির খাটালে বেঁধে রাখা মোষেরা মারা গেছিল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। পরবর্তী দিন পনেরো হাইওয়ের দু পাশে মৃতদেহের পচা বদবু এলোমেলো হাওয়ায় জানান দিত। ২০০৬-এর ১১ই জুলাই। সিরিয়াল ট্রেন ব্লাস্ট। সন্ধে থেকে বন্ধ এ শহরের লাইফলাইন। সারা রাত। সাধারণ নাগরিকেরা পথের দু ধারে নেমে এসে কাজফিরতি মানুষদের নাগাড়ে বিলোচ্ছিল চা-জল-খাবার। পরের সকালে আবার সবকিছু নর্মাল। মানুষ আবার যে যার কাজে স্বাভাবিক। ২০০৮-এর ২৬শে নভেম্বর। কাসাভ-কাহানি। সিএসটি স্টেশন চত্বরে লাগাতার ফায়ারিং। সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতি, প্রকৃতি, আর হালের টেররইজম – অনেকেই ব্লেড মেরেছে মুম্বাইয়ের গোড়ালিতে। ঘেঁটি টিপে চুবিয়েছে জলে। তবু সে ঘাড় নোয়ায়নি। কোনও কিছুই ভাঙতে পারেনি এখানের ‘চরৈবেতি’ প্রাণ। চিন্টু বুঝেছে, চলতে থাকাই এ শহরের মন্ত্র। এ শহরের দর্শন।

    এমনকি ভিখিরিদেরও শিফট বদলায় এখানে। যে স্কাইওয়াকের নীচে সকালে কোলে-বাচ্চা মহিলা, সন্ধেয় সেখানে হাত-বাঁকা অন্য কেউ। আমেদাবাদের কীর্তি বুঝিয়েছিল, অফিসমুখো ম্যাডামজিদের মায়া টানতে মা-শিশুর কৌশল, আর সুজ্যি ডুবলে রঙিন-ফুর্তির বাবুদের করুণার ময়দান খিঁচতে বিকলাঙ্গ। এ শহর বোঝে, ঠিকঠাক কায়দা জানলে ভিক্ষেটাও কি করে ব্যবসা হয়ে যায়। হোয়াইট গোল্ডের ব্যবসা ছিল জিগনেশদের। ঝাড় খেয়ে বেচে দিয়েছে। ড্রয়িংরুমের ডিভান তুলে মাতাল জিগনেশ একদিন দেখিয়েছিল কাঁচা টাকার বান্ডিল, থরে থরে সাজানো। ওরা এখন ক্রিকেট বেটিং-এ টাকা লাগায়। এখানের কলেজে-পড়া ছেলেমেয়েরাও আওড়ায় সেনসেক্স আর নিফটির ঘোরপ্যাঁচ। বাড়ির নির্ভরতা এড়িয়ে ওরা চায় নিজে কিছু করতে। পঙ্গু বাবাকে অবসর দিয়ে উনিশ বছরের দিশা চাকরি করে, করেসপনডেন্সে এমসিএ। নিজের বিয়ের খরচ সে নিজেই জমায়। অথবা একুশ বছরের রাকেশ। চাকরি নয়, সে স্বপ্ন দ্যাখে, একদিন হবে এক শেয়ার ব্রোকিং হাউসের মালিক। চিন্টু হাঁ করে দ্যাখে, মানুষ দিব্যি এখানে তরকারি কেনার প্লাস্টিকে লাখ লাখ টাকা মুড়ে হাতে ঝুলিয়ে ঘোরে। হয়ত ও পাশের লোকটার পকেটেই রয়েছে কোটি টাকার টুকরো হিরে। যে কোনও ফ্ল্যাটের ডিলে কত যে ব্ল্যাকমানি লেনদেন হয়, তার ইয়ত্তা নেই। তবু এই যে ধিংকাচিকা ধোয়ামোছা শহর, এই যে নিয়ত আদেখলা ‘মার্চ-অন’ ভিড়, এই যে জনগণবৈভবনায়কজয়হে – এসবের আড়াল-কাহিনি? হ্যাঁ, চিন্টু জানে, ওই সামনের গলিমুখে যে লোকটা রক্ত মেখে মুর্গি কাটে মেশিনের মতো, ও আসলে বাঙালি। চিন্টুর মতো শহুরের সামনে নিজের ভাষা বলতে লজ্জা পায়। ছোট ছোট রেস্টুরেন্টগুলোতে সতেরো-আঠেরোর যে ছেলেগুলো নুডলস আর পাউভাজি সার্ভ করে – ওদের কারও বাড়ি মেদিনীপুরে, কেউ হয়ত মুর্শিদাবাদের। মাল্টিস্টোরিডের গায়ে ঝুলে ঝুলে প্লাস্টার মারে যে চেকপ্যান্ট – ওর বাড়ি খুলনা। এ শহরে, এ দেশে ওর কোনও পরিচয় নেই। পা পিছলে পড়ে মাথা ফেটে মরলেও কনট্রাকটরের কোনও দায় নেই হিসেব দেওয়ার। ওর রোগা বউটা গজিয়ে-ওঠা ফ্ল্যাটগুলোতে বাসন মাজে। ফাঁক পেলে খয়েরি দাঁত দেখিয়ে হাসে সিকিউরিটি গার্ড, শুতে চায়। বউটা ফ্যালফেলিয়ে যায়।

    আটতলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে চিন্টু এসব দ্যাখে। দূরে, অনেক দূরে, দ্যাখে, শচীনকত্তা হাত নেড়ে গান তোলাচ্ছে কিশোরকে। পাগলাটে কিশোর সিল্কের লুঙ্গিতে শিশু হয়ে আছে। ওদিকে রাহুল পেয়েছে এক নতুন ধুন, হারমোনিয়মে ক্রমাগত প্যাঁ দিচ্ছে সে। পাশের জানলায় দেবানন্দ বিশাল আয়নায় মুখস্থ করছে ‘গাইড’-এর ডায়লগ। আর রাজেশ ঘাড় বাঁকিয়ে বলে চলেছে, “বাবুমোশাই, জিনা হ্যায় তো বম্বেমে, মরনা হ্যায় তো বম্বেমে।” আচ্ছা, ওদের মাথার পেছনে ওই যেটা জ্বলছে, ওটা কি ফ্লাডলাইট? না, চাঁদরাত এটা? এখান থেকে চাঁদ বোঝা যায় না, জানলায় ধাক্কা খায় উলটোদিকের বিল্ডিং। কমপ্লেক্সের ছাদে হুটহাট উঠে পড়া বারণ। চাঁদ দ্যাখার জন্যে নীচে নামে চিন্টু। নবরাত্রি চলছে। সোসাইটির একফালি উঠোনে ধাঁই ধাঁই বাজছে বক্সের গান। দেশাইয়ের গিন্নি আর প্যাটেলের বউয়ের সঙ্গে ডান্ডিয়া নাচছে চৌরাশিয়া। এইবার ঢুকে পড়েছে কেরালার ডি’সুজা। ওই তো দৌড়ে আসছে সুব্রমনিয়মের মেয়ে। এসে পড়ছে চণ্ডীগড়ের বলওন্ত। গোল ছন্দে নেচে চলেছে ওরা। তালে তালে উঠছে লাঠির শব্দ। কেউ চেয়ারে, কেউ দাঁড়িয়ে তালি দিচ্ছে। চিন্টুর সামনে ঘুরে চলেছে আজকের অর্ধেক ভারতবর্ষ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৬ জুন ২০১৫ | ৪৪৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sinfaut | 71.1.39.90 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৪:৩০67331
  • বহুদিন পরে গুরুতে কারও লেখা পড়ে এত ভালো লাগছে। খুব খুব ভালো।
  • সিকি | 192.69.195.225 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৪:৩৯67332
  • পাগলা, পাগলা। আগে বাঢ়ো, কায় ঝালা?
  • byaang | 132.178.240.48 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৪:৫৪67333
  • লেখাটা খুব খুব ভালো লাগল। শহরটাও আমার বড় প্রিয়।
  • নির | 212.78.26.26 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৬:৪৩67334
  • মুম্বই নিয়ে আমিও একদিন লিখব। ভারতবর্ষের সবচেয়ে সভ্য শহর। আমার মতে এমনকি দিল্লিও তার ঝা চকচকে ইন্ফ্রাস্ত্রাকচার নিয়েও মুম্বইয়ের সঙ্গে তুলনায় আসে না। কলকাতা ইত্যাদির কথা না তোলাই ভালো।
  • ranjan roy | 132.180.215.190 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৭:১৬67335
  • চমৎকার লেখা!
  • | 183.17.193.253 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৮:০৮67336
  • লেখাটা দিব্য।এই শহরটাতে যতবার গেছি, ট্রেনে চড়া ছাড়া সব সময় ভালো লেগেছেঃ)
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৬ জুন ২০১৫ ০৮:২৭67337
  • বম্বে এল, বম্বে ভেলভেট এলো না ? কোলাবা এলাকা ?
  • kumu | 132.161.242.212 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০২:১০67346
  • লেখা সম্বন্ধে ১৫ ৪৯ এ বলা হয়েছে।
    "অযথা বকবক ও ফ্রী পরামর্শ "শুনে একটু অবাক হলাম।যাক,সাবধান হয়ে গেলাম।
  • Bratin | 122.79.37.14 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৩:০৬67347
  • কেন লেখা ভালো না লাগলেও কি বলতে হবে
    "আহা কী অসাধারণ লিখেছেন দাদা, একদম ফাটিয়ে দিয়েছেন" ঃ))))
  • sinfaut | 69.94.112.75 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৩:৪০67348
  • ব্রতীন, লেখক এমন আকাঙ্খা কোথাও প্রকাশ করেননি। একটু পড়ে (পুরো লেখা না শুধু কমেন্ট সেকশন পড়লেও চলবে) কমেন্ট করলে এমন ভিত্তিহীন কথাবার্তা শুনতে হয়না।
  • a x | 60.171.26.111 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৩:৫২67349
  • লেখার গতি, দেখার চোখ, ভালো লাগল।
  • pi | 233.176.11.73 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৩:৫৭67350
  • তুই আমাকে চিনিস তো বটেই ঃ)। এখানে ক'দিন লিখলে নিক নিয়ে সমস্যাও আর হবে না। চেনা পরিচয় হয়ে যাবে। তবে নতুন অনেকেরই এই নিয়ে অস্বস্তি হয় দেখেছি।

    যাই হোক, না তাজের কথা বলিনি, কোলাবার থেকে কাফ প্যারেডের ঐ ফুটপাথের একদিকময় হরেকরকম্বা পসরার সারি, অন্য পাশে নামি দামি দোকান। অনেকটা হাতিবাগানের মতই হয়তো । আবার নয়ও। ঐ ফুটপাথের দোকানগুলোর একটা আলাদা চরিত্রের জন্য বোধহয়। দোকানগুলোর মধ্যে একটা প্যাটার্ন। ভীষণরকম এথনিক প্যাটার্ন। এবং একটার সাথে অন্যটা কোথাও যেন একটা কোঅর্ডিনেটেড। শান্তিনিকেতনের বাটিক প্রিন্টের পাশের দোকানে কাশ্মীরের রঙীন কৌটো, হয়তো গোরখপুরের পিতলের মোমদানির পাশে আরো কোন নাম না জায়গার কাঠের লম্বা ছাইদানিসহ ধূপ রাখার পাটাতন, ছোট বড় মেজ মাপের গ্রামাফোনের পাশাপাশি অজন্তার পাথরের রংবেরংএর গাছ। জরি চুমকি বসানো কোলাপুরি চপ্পলের পাশাপাশি যত রাজ্যের জাংক গয়নাপত্তর। মূলত শেষেরটার টানেই যেতে শুরু করে নেশায় পড়ে গেছিলাম পুরো চত্বরটারই। জাস্ট এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরতে। চাখতে আর গন্ধ নিতে।
    বলবেন, হাতিবাগান , গড়িয়াহাটেও অম্নি কত জাংক হার দুল গয়নাপাতির দোকান। কিন্তু সে চত্বর অমন নয়। প্লাস্টিকের মগ, ছাঁকনি, ক্লিপ, অ্যালুমিনিয়ামের খুন্তি, সাঁড়াশি, প্লাস্টিকের টেবিলক্লথ, চিনা খেলনা.. এসবে কোন প্যাটার্ন তৈরি হয়না, নেশা ধরেনা, চটকা ভেঙে যায়। অম্নি স্ট্রেচ আর কোথাও পাইনি।

    বম্বে ভেলেভেটে অবশ্য এসব আসেনি। সেখানে ছিল এই ফুটপাথের স্ট্রেচ যেখানে শেষ হল, সেই রিগাল থেকে তার পাশে হাত পা ছড়ানো রাস্তাগুলো। সন্ধে হয়ে গেলে, অনেক রাত হয়ে গেলে মাঝে মাঝে সেখানে যেতাম। হাঁটতে, কিম্বা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে।ওখানকার রাস্তা দিয়ে তখন ক্বচ্চিৎ কদাচিৎ একটা তিন চারটে সোঁ সোঁ করে বেরিয়ে যাওয়া গাড়ি। শেষ দোতলা বাস। লোকজন নেই বললেও চলে। চারদিকে দিনের ব্যস্ত আপিসবাড়ি গুলো একেবারে নিজ্ঝুম , গথিক শৈলীর স্থাপত্যে অম্নি চুপচাপ থাকাই মানায় ভাল, আর, হ্যালোজেন আলো ধুইয়ে দিচ্ছে চওড়া কালো গ্রানাইট পাতা রাস্তা। ঐ পাথরে পা রাখলেই মনে হত, এর নিচে অনেক গল্প চাপা। ওখানে পা রাখলে একটা দুটো শব্দ শোনা যেত, একদিন , দু'দিন , যত বেশি বেশি যাচ্ছিলাম, তত বেশি বেশি করে শব্দ। আর পাওয়া যেত গন্ধ। কিন্তু গল্পগুলো সব শুনতে পাওয়ার আগেই ওখান থেকে ফুড়ুৎ হয়ে গেলাম। হ্যালোজেন আলোয় ছবি তোলার নেশা তৈরি হওয়ারও আগে। কিম্বা হয়তো, পরে যখন নেশা ধরলো, তখন ঐ জায়গাটাকেই খুঁজতাম, অন্য সব শহরে।
    তারপর থেকে আর ওখানে যাইনি।
    এই সেদিনের আগে।
    বম্বে ভেলভেট দেখতে দুম করেই এক দুপুরে একলা চলে গেছিলাম, প্রায় অচেনা শহরের অচেনা এক হলে। কোন কাগজে বম্বের একটা ছবি দেখে। সিনেমা তো না, ছবি দেখতে। হল তো না, কবেকার এক পুরানো বাড়ি। কতবছরের পুরানো কে জানে, ক্ষয়িষ্ণু মার্বেলের সিঁড়ি বেয়ে উঠছি যখন, তখনি গন্ধটা নাকে এসে লেগেছিল। গন্ধ বেয়ে বেয়েই হলের মধ্যে ঢুকে যাওয়া। ঢুকে দেখি সেই সব শব্দগুলো স্ক্রিনের উপর, জড়ো হয়ে সেই পাথর চাপা গল্পগুলো বলে যাচ্ছে। তবে, আমি তো দেখছিলাম ছবি। বা বলা ভাল তুলছিলাম। প্রায় একলা হলে বসে আমি সিনেমার ছবি তুলে গেলাম। এতদিন বাদে, অবশেষে সেই হ্যালোজেন আলোর রাত্তিরগুলোকে খুঁজে পেলাম। বম্বের সেই রাস্তাগুলোয়। গল্প আর জ্যাজে মাখামাখি , হ্যালোজেন বৃষ্টিতে রং মাখা এই ছবিগুলো।
    ক্লিশে ? হয়তো।









  • | 24.99.208.167 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৪:০৪67351
  • সিঁফো, আমি আমার পছন্দের/খুব পরিচিত/ রেকোমেন্ডেড ছাড়া অন্য লোকের কারোর লেখা পড়ি না।

    তাই এই লেখা টি ই পড়ি নি। কুমু দি কে বলার ভঙ্গি আমার পছন্দ হয় নি। তাই লিখেছি। কোন সমস্যা?
  • sinfaut | 69.94.112.75 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৪:১৭67352
  • সমস্যাটি আগের পোস্টেই লিখেছি, কিন্তু এখানে আর হ্যাজাবো না।
  • | 24.99.208.167 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৪:২২67353
  • সেটাই ভালো
  • S | 109.27.138.238 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৪:৩৭67354
  • লেখাটা পড়লাম। ভালো লেখা। মুম্বাইতে অনেকদিন কাটিয়েছি, তাই আরো ভালো লাগলো। শুধু দুতিনটে জিনিস মিস হয়েছে মনে হোলো। সাউথ মুম্বাই, সেলেবদের ছড়াছড়ি (বান্দ্রা পস্চীম থেকে লোখানওয়ালা পর্য্যন্ত বিশেষ করে), আর সব কিছুর প্রচন্ড দাম (এইটা কোলকাতা থেকে গেলে প্রথমেই ফিল করবে)।
  • বিপ্লব রহমান | 129.30.32.245 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৪:৫৫67355
  • পরিস্থিতির বিবরণ খুব চমৎকার। রীতিমতো পাকা হাতের লেখা।

    জয় বাবা চিনটু নাথ!
  • h | 127.194.251.49 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৫:০৭67356
  • এই লেখাটা আমার মনে কোনো দাগ কাটেনি। ভালো মন্দ কিসুই লাগে নি।

    বম্বে এবং মুম্বাই দুটো শহর সম্পর্কে ই আমারো একটা দুর্বলতা আছে। এই লেখকের মতই কসমোপোলিটান চেহারা তার একটা কারণ। আর বিচিত্র ব্রুটালিটি একটা রয়েছে শহরটার, সেটাও হয়তো একটা কারণ। প্রিয় শহর সম্পর্কে লেখা বেরোলে চোখে পড়ে।
  • | 24.97.188.27 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৫:১০67357
  • খাসা লাগল লেখাটা।

    আমাদের ছোটবেলায় বোম্বের সাথেই জুড়ে বলা হত বোম্বে-পুনা, বোম্বের লোক অবসরের পর পুনায় এসে বাড়ী বানিয়ে থাকত অনেকেই। তো সেই শান্তশিষ্ট, ঠান্ডা পুণেতে হয়ে গেল প্রায় ৬ বছর। এতদিনেও কেন যেন একবারও বোম্বে যেতে ইচ্ছে করে নি, আমি খুব ব্যস্ত, লোকজনে ভরা জয়গা তেমন পছন্দ করি না, সেটা একটা কারণ হতে পারে।

    তবে কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য যেমন এই লেখাটায় আছে, অবিকল পুণেতেও দেখেছি।
  • শঙ্খ | 127.194.232.249 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৫:১২67338
  • বাঃ
  • রৌহিন | 233.223.135.163 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৫:১৩67358
  • সুন্দর ঝরঝরে লেখা। পাই এর লেখা এবং ছবিগুলোও দারুন। এটা ওটা সেটা বাদ গেছে তো বটেই - ওই কটা প্যারায় পুরো মুম্বই ধরে ফেলেছেন এমন দাবী বা আশা লেখকও করেছেন বলে মনে হয় না। যেটুকু নিয়ে লিখেছেন তার আন্তরিকতাটুকু ভালো লেগেছে। পাই যেমন বম্বে ভেলভেট আর কোলাবার কথা বললে, আমারও ওই কোলাবার কথাতেই একটা বিষয় বলতে ইচ্ছে করছে - লিওপোল্ড। ডিটেলে যাচ্ছি না - শুধু নামটুকুই রসিকজনের কাছে যথেষ্ট হবে আশা করি। এখানেই প্রথম বীয়ারের পীচার দেখি ও চাখি।
    আরেকটা কথা - কেউ একজন দেখলাম বলেছেন ট্রেন ছাড়া বাকি মুম্বাই ভালো লাগে - (আমার বুঝতে ভুল হয়ে থাকলে দুঃখিত)। আমার কাছে ট্রেন হল বম্বের সেরা অভিজ্ঞান। আসল মুম্বাই, তার স্পিরিট এই ট্রেনের কামরায় - ভিড়ের ঠেলায়।
  • উদয়ন | 126.193.136.147 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৫:২২67359
  • pi

    হ্যাঁ, ওই জায়গাটা অবশ্যই অন্য মন টেনে নেয়। সম্ভবত 'সরফরশ' ফিল্মে ওখানের একটা দোকান দেখিয়েছিল। আর 'বম্বে ভেলভেট' বলতে আমি বুঝেছিলাম বম্বে থেকে মুম্বাই হয়ে ওঠার পর্যটন।
  • kumu | 11.39.35.180 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৫:৫০67360
  • আমার কাছে এই লেখাটির সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এই জ্ঞানলাভ যে- কোন লেখার নীচের কমেন্ট কেবলমাত্র ঐ লেখাটি নিয়েই হওয়া বাঞ্ছনীয়।সাধারণ ভাবে মজা করেও তার বাইরে একটি লাইন লিখলে সেটি অযথা বকবকের পর্যায়ে পড়ে ও বেকার।

    তবে এখন দেখছি বম্বে ভেলভেট,ট্রেন,কোলাবা ইত্যাদি অনেক কিছু নিয়েই সুন্দর লেখা হয়েছে।
  • pi | 233.176.8.176 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৬:০১67361
  • রৌহিন, হ্যাঁ, লিওপোল্ডস ! পিচার বিয়ার ছাড়াও আরেক আকর্ষণ ছিল আপেল চিকেন ঃ)
    আর রেস্তোরাঁতে খাবারের থেকেও বেশি অ্যাম্বিয়েন্সের টান আমার। লিওপোল্ডে সেটা খুব ইউনিক ছিল। যদ্দুর মনে পড়ে, ওটা ছিল পর্তুগীজ। আর ছিল চার্চগেটের কাছে একটা হুঁকো খাওয়ার ঠেক । সেও ব্যাপক। এখনো আছে কিনা জানিনা।
    তবে বিয়ারের কথায় মনে পড়লো, কোলাবা অঞ্চলে ছিল গোকুল। অলির একটি কিছুটা নিম্নতর ইক্যুভ্যালেন্ট বলা যেতে পারে। তার সামনের রাস্তা ছিল মুসলিম বাবুর্চিদের রাস্তায় তন্দুরি, রোটি এসবের পরের পর পর ঠ্যালাগাড়িতে স্টল। সেসবের স্বাদ দেবভোগ্য ছিল, বলা বাহুল্য। কিন্তু কী জানি একটা নাম ছিল একটা বিখ্যাত দোকানের , বড়া কী একটা .. নাঃ, শহরটা বহুদিন ছেড়েছি, বুঝতে পারছি ঃ(

    আর মুম্বইয়ের ট্রেন আমারো মতে মুম্বইয়ের স্পিরিট। লেডিস কম্পার্টেমেন্টে জেনেরেলের মত অত দুঃসহ ভীড় হতনা বলে সেই স্পিরিট ফিল করার সহজতরও হয়েছিল। তার সাথে নন আপিস টাইমে বহুবার চড়েছি বলে ট্রেন অভিজ্ঞ্তা মোটের উপর সুখকর। আর পুরো ট্রেন সিস্টেম দারুণ সিস্টেমেটিক, সময়ানুগ বলে তো বটেই। উঠলে লোকজন দেখতে দেখতে , নানাজনের টুকরো টাকরা কথাবার্তা শুনতে শুনতে, ইমিটেশনের হার দুল দেখতে দেখতে কিনতে কিনতে কখন যে সময় কেটে যেত ! আমাদের এখানকার লোক্যাল ট্রেনের কামরার আবহের সাথে মিল আছে কিছু, কিন্তু একটা ফারাক চোখে পড়ার মত। ওখানে বেশিরভাগ মেয়েই চাকরি করতে আসছে যাচ্ছে। পব তে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ছাড়া যাঁরা থাকেন , তাঁদের অনেকেই চাকরি করতে যাচ্ছেন, এমনি না। কিছু অবশ্যই থাকে। কিন্তু মুম্বইতে মোটামুটি সবাই তাই। আগে লিখেওছিলাম, মুম্বইতে বা মহারাষ্ট্রের অনেক জায়গাতেই চাকুরিরতা মেয়েদের সংখ্যা অনেক বেশি। মেয়েরা চাকরি করবেনা, এটাই অনেকের কাছে খুব অস্বাভাবিক দেখেছিলাম।

    কে যেন বললেন, খুব বড়লোকের জায়গা। সে তো বটে। কিন্তু খুব মজার জায়গাও বটে। খুব বড়লোক আর গরীবের সহব্স্থানের জন্য। কাফ প্যারেডের ওখানে আকাশছোঁয়া দামের আকাশছোঁয়া ফ্ল্যাট বা আম্বানির প্রাসাদের উল্টোদিকেই তো সমুদ্রের ধারে জেলেপট্টি ঃ)
  • pi | 233.176.8.176 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৬:০৫67362
  • কুমুদির কমেন্টটা তো মজা করেই ছিল, লেখার নিচে আড্ডাছলে এরকম তো আসতে পারেই বলে মনে হয়েছে।
  • সিকি | 192.69.195.225 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৬:৩৫67363
  • আড্ডার ছলটা এখানে একটু পুরনো সাবলীল লোকজন ছাড়া ধরতে পারা মুশকিল। আমার মনে হয়, নিতান্তই একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সবার প্রতিক্রিয়া এক রকমের হয় না।
  • pi | 233.176.8.176 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৬:৪৬67364
  • আমারো মনে হয় ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। নতুন লোকজনের এটা ধরতে অসুবিধে হতে পারে। নিক নিয়েও। এনিয়ে বেশ কয়েকজনের কাছে শুনলাম, যারা একেবারেই নতুন, নানাপ্রকার নিক নিয়ে ঠিক স্বচ্ছ্ন্দ হন। আস্তে আস্তে আশা করি হয়ে যাবেন।
  • Bratin | 122.79.37.14 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৬:৫০67365
  • নতুন বা পুরোনো যাই হোক তার মনের ভাব প্রকাশের ভাষা র ক্ষেত্রে প্রত্যেক কে আরো যত্নবান হতে হবে।এটা আমার মনে হয় পাই।
  • san | 11.39.34.223 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৭:০৭67339
  • দিব্যি লেখা
  • উদয়ন | 160.107.176.12 (*) | ২৭ জুন ২০১৫ ০৮:০৭67340
  • pi বাবু / বাবুনি (এখানের তুমুল বিষয়, কার সঙ্গে কথা হচ্ছে, ভগা জানে)

    বম্বে ভেলভেট-এর টুকরো ছোঁয়া বোধহয় ৩ নং প্যারাতে রয়েছে। আর কোলাবা এলাকা, তাজ হোটেল, ভিটি, মন্নত, বা প্রতীক্ষা - এগুলো বম্বে চেনার পক্ষে, আমার মনে হয়, বহুব্যবহৃত ও ক্লিশে। যেমন, কলকাতার পক্ষে পার্ক স্ট্রিট আর হাওড়া স্টেশন। অবশ্য এটা ব্যক্তিগত মত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন