এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারী-ধর্ষণ সম্পর্কে দু’চার কথা যা আমরা জানি অথবা জানিনা

    অবন্তিকা লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৭ আগস্ট ২০১৫ | ৮১৬২ বার পঠিত
  • [কেন 'নারী-ধর্ষণ' তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, তাই প্রথমেই শিরোনাম সম্পর্কে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলে রাখি, যেহেতু ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি ধর্ষণ ব্যাপারটা জেন্ডার-নিউট্রাল একটা ইস্যু, যেহেতু ভারতে ধর্ষণের সংজ্ঞার আরও আরও পরিমার্জন কাম্য বলে মনে করি, আর এই লেখাটা কেবলমাত্র মহিলাদের ধর্ষণ প্রসঙ্গেই একটা ওভারভিউ, তাই এ হেন নাম l
    লেখাটা প্রাথমিকভাবে লিখেছিলাম মার্চ মাসে, রাণাঘাট কাণ্ড ও সুজেটের মৃত্যুর অব্যবহিত পর l একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের কারণে শেষমেষ হয়নি l তারপর বেশ কিছুদিন যাবৎ লেখাটা জাস্ট পড়েই ছিল l জয়ন্ত দা পত্রিকার জন্য লেখা চাইলে বলি, ধর্ষণ সম্পর্কিত একটা লেখা হাতে আছে, কিন্তু সেটা স্বাস্থ্যের বৃত্তের জন্য কতটা উপযুক্ত হবে জানিনা l অরুণার মৃত্যু ও আরও সামান্য কয়েকটি তথ্যের সংযোজন করে, ওনাকে পাঠাই l উনি কয়েকদিনের মধ্যে জানান লেখাটা অগস্ট ইস্যুর কভার স্টোরি করতে চান l
    কারো কারো পক্ষে যেহেতু পত্রিকার কপি সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না, তাই জয়ন্ত দার অনুমতিক্রমে লেখাটা ব্লগে দিলাম l উপরন্তু সাইটের মানুষজনের মনোজ্ঞ মতামত পেলে নিজের জানার পরিধিও, বলা বাহুল্য, ব্যপ্ত হবে l
    লেখাটার জন্য গুরুচন্ডা৯-র 'প্রসঙ্গ ধর্ষণ' বই থেকে কয়েকটি তথ্য নিয়েছিলাম, তাই এই সুযোগে সৈকতদা আর ঈপ্সিতাকেও ধন্যযোগ l ]



    সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটের জনপ্রিয় গ্রুপে একখানা সুতো খোলা হয়েছিল l একটি নগণ্য সমীক্ষা l জানতে চাওয়া হয়েছিল- গ্রুপের মহিলা সদস্যরা গত ২০১৪ সালের ৩৬৫ দিনে ঠিক কতবার ইভটিজিং-এর মুখোমুখি হয়েছেন l রাস্তায়, অফিসে, বাজারে, কলেজে, পাবলিক ট্রান্সপোর্টেবিবিধ নোংরা মন্তব্য, খারাপ দৃষ্টিবা গায়ে হাত- এ সমস্তই মাথায় রেখে স্রেফ একটা সংখ্যার উল্লেখ l বলা বাহুল্য, উত্তরগুলো ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো l মহিলাদের কাছ থেকে জবাব আসছিল- ‘অসংখ্যবার, গোনা সম্ভব নয়’, ‘মানেটা কী? মোর দ্যান হান্ড্রেড টাইমস আই গেস!’, ‘প্রায় প্রত্যেকদিনই কিছু না কিছু’- জাতীয় l এবং পুরুষরা কেউ বিস্মিত হচ্ছিল, কেউ বিশ্লেষণ করতে চাইছিল এরকমটা কেন, আর কেউ কেউ জানতে চাইছিল খারাপ দৃষ্টি - ভালো দৃষ্টির তফাৎ করা যায় কীভাবে l না l সত্যিই এমন কোনো মানদণ্ড নেই বটে l পুরো ব্যাপারটাই ভুক্তভোগীর অনুমান বা দৃষ্টিভঙ্গী-নির্ভর l প্রসঙ্গত, একটা গল্প মনে পড়ে গিয়েছিল l বলি...২০০৮ সালে, আমেরিকান উড়ানে ২১ বছর বয়সী এক তরুণী ঘুমোতে ঘুমোতে যাচ্ছিল l ঘুম ভাঙার পর লক্ষ্য করল, জনৈক পুরুষ সহযাত্রী তার দিকে হাসি হাসি মুখে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে l মেয়েটি সন্দিগ্ধ হলো ও আবিষ্কার করল ওই পুরুষটি তার দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করছে l পরিশেষে মেয়েটির চুলে বীর্যপাতও করে ফেলল l এরোপ্লেনটি নামার সাথে সাথে ভিকটিম পুলিশ ডেকেছিল, ও পরবর্তীকালে ক্ষতিপূরণও চেয়েছিল l তরুণী জানিয়েছিল, সহযাত্রীর দৃষ্টিযে ‘স্বাভাবিক’ ছিল না, সেটা প্রথম থেকেই আন্দাজ করছিল সে l ঘটনা সামান্য হোক বা সাজানো, ভিড় বাসে বৃদ্ধের করস্পর্শ স্নেহসূচক নাকি যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ, এ তারাই বোঝে যারা অহরহ এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির শিকার l মহিলার প্রোফাইল পিকচারে অন্তর্বাসের দৃষ্টিগোচরতা নিয়ে অবলীলায় মন্তব্য করাও তো একপ্রকার ইভটিজিং-ই, সে কমেন্টকর্তা ‘মজা করেই’ লিখে ফেলুক অথবা ‘ভুল করে’ ! মহিলাদের প্রতি এইসব ছোটোখাটো যৌন হেনস্থাই কিন্তু বড় বড় আকার নিতে সক্ষম l এমনকি ধর্ষণ করতে বা ধর্ষণে ইন্ধন যোগাতেও l

    এ দেশে ক্রমে ক্রমে পরিবর্তিত ও পরিমার্জিত ধর্ষণের সংজ্ঞা অপরাধীদের সাজা দেওয়ার পথকে প্রশস্ত করছে ঠিকই, কিন্তু সার্বিকভাবে ঘটনার বাহুল্যকে কমাতে পারছে কি? কী বলছে স্ট্যাটিসটিক্স? কী কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? স্রেফ আর স্রেফ সংখ্যাতত্ত্ব? সম্প্রতিআন্তর্জালে ভাইরাল হয়ে যাওয়া, লেসলি উডউইন-এর তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া’জ ডটার’-এর সূত্রে নির্ভয়া কাণ্ডে অভিযুক্ত মুকেশ সিং-এর সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়ে পড়ল l নির্ভয়া ও তার পুরুষসঙ্গী ১৬ই ডিসেম্বর ২০১২-র রাতে যে মিনি বাসটিতে ওঠে, মুকেশ তার চালক ছিল l ধরা পড়ার পর প্রাথমিকভাবে সে অভিযোগ অস্বীকার করে, কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় তার বয়ান মিথ্যে প্রমাণিত হয় l বক্তব্যে মুকেশ জানায়,“ধর্ষিত হওয়ার সময় মেয়েটির উচিত ছিল না পাল্টা প্রতিরোধ জানানো l বরং মুখ বুজে থাকা ও ধর্ষণ করতে দেওয়া উচিত ছিল l তাহলেই তাকে ‘করে’ ছেড়ে দেওয়া হতো আর ওই ছেলেটাকে (সঙ্গী) শুধুমাত্র মারধর করা হতো l এক হাতে তো তালি বাজে না, সবসময় দুটো হাতই লাগে l একজন ভদ্র মেয়ে কখনও রাত্তির ন’টার সময় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় না lযেকোনো ধর্ষণকাণ্ডে ছেলেটির (ধর্ষকের) চেয়ে মেয়েটির (ধর্ষিতের) দায় অনেক বেশি থাকে l ছেলে আর মেয়ে কখনও সমান হয়না l ঘরের কাজকর্ম, পরিবারের দেখভাল এইসব মেয়েদের কাজ, রাত্তিরবেলা ডিস্কোয় যাওয়া, বার-এ যাওয়া, খারাপ কাজ করে বেড়ানো বা বাজে পোশাক পরা নয় l আসলে মাত্র ২০ শতাংশ মহিলাই ভালো হয় যারা এগুলো করে না l (ধর্ষকের) ফাঁসির আদেশ হলে পুরো পরিস্থিতিটা মেয়েদের পক্ষে আরো খারাপ হতে পারে l আগে ধর্ষণ করার সময় বলা হতো- আরে ছেড়ে দে, এ কাউকে বলবে না; এখন ধর্ষণ করার পর ছেলেরা, মানে যারা দুষ্কৃতী গোছের, ধরা পড়ার ভয়ে মেয়েটাকে খুন-ই করবে l মেয়েগুলো মরে যাবে…” (সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ) l মুকেশের বক্তব্য সমাজের চেহারাটাকে আরেকটু স্পষ্ট করে দিল l বোঝা গেল, বিভিন্ন সামাজিক স্তরে আর্থ-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষিত নির্বিশেষে, মানুষ (মানে পুরুষ, এমনকি নারীও) এই জাতীয় অশিক্ষার শিকার, যা ধর্ষণ ঘটায় এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণকে প্রশ্রয় দেয় l

    কাকে দিয়েছি রাজার পার্ট !!!
    ....................................
    ১) ১৬ই ডিসেম্বর ২০১২-র দিল্লি-গণধর্ষণ প্রসঙ্গে ডিফেন্স-এর উকিল এ.পি.সিং:
    যদি আমার নিজের মেয়েবা বোন বিয়ের আগে যৌনতা করত এবং মাঝরাতে ছেলেদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াত আমি তাকে ফার্মহাউসে নিয়ে গিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারতাম l এইরকম ঘটনা ঘটতেই দিতাম না l সমস্ত অভিভাবকেরই এরকম মানসিকতা থাকা উচিত l
    ২) বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ:
    আমাদের (হিন্দুদের) উচিত মুসলিম মহিলাদের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে তাদের ধর্ষণ করা l
    ৩) উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়াম সিং যাদব:
    ছেলেরা তো ছেলে l ওমন ভুল করে থাকে l আরে বন্ধুত্ব চলে গেলেই মেয়েরা ছেলেদের ওপর ধর্ষণের অভিযোগ আনে !
    ৪) মুম্বই-এর পুলিশ কমিশনর সত্যপাল সিং:
    পঠনপাঠনের মধ্যে সেক্স এডুকেশন ঢোকানোর ফলে দেশে মহিলাদের প্রতি অপরাধ বাড়ছে l
    ৫) পুরীর শঙ্করাচার্য:
    এককালে ভাইবোনেরা একসাথে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানো সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটত না l এখন মানুষের আবেগ, আদর্শ সবকিছুই বদলে গেছে l আমাদের সংস্কৃতি আমাদের শেখায় মহিলাদের সম্মান করতে- যে নারীরা আমাদের মা, বোন l এমন ভয়ানক ঘটনা (দিল্লিকাণ্ড) নিশ্চয় একদিনে ঘটে না l মানুষ উন্নয়ন ও আধুনিকতার নামে সভ্যতা-সংস্কৃতির সংকীর্ণ রেখাটিকে অতিক্রম করে বলেই ঘটে l
    ৬) মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বাবুলাল গৌর:
    পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে মহিলারা জিন্স-টিশার্ট পরে ঘুরে বেড়ায়, পুরুষদের সাথে নাচানাচি করে, মদ খায়- সেটা তাদের কালচার l ওসব ওই দেশে চলে, এ দেশে নয় l এখানে এখানকার রীতিনীতি মেনে চলাই ভালো l
    ৭) গোয়ার এমএলএ বিষ্ণু বাঘ:
    যদি মডেলরাও এসে পার্লামেন্টে যোগ দিতে থাকে তাহলে তো গোটা পার্লামেন্ট-এই ফ্যাশন শো বসে যাবে ! মালাইকা অরোরা, রাখি সাওন্ত-এর মতো ফ্যাশন দুনিয়ার মহিলারা ভোটে জিতে পার্লামেন্টে ঢুকে পড়লে দেশে দাঙ্গাও বেঁধে যেতে পারে l
    ৮) সমাজবাদী পার্টির এমএলএ আবু আজমি:
    অবিবাহিত নারী পুরুষদের মধ্যে যৌন সম্পর্ককে আইনত অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত l আমার স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে গ্রামীণ ভারতে শহুরে দেশের তুলনায় ধর্ষণের ঘটনা অনেক কম ঘটত l
    ৯) স্বঘোষিত ঈশ্বরের দূত আশারাম বাপু:
    শুধুমাত্র পাঁচছ’জনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই l ধর্ষিতা ও ধর্ষণকারী উভয়েই সমান অপরাধী l আক্রান্ত হওয়ার আগে মেয়েটির উচিত ছিল ধর্ষণকারীদের ভাই বলে ডাকা এবং করুণাভিক্ষা করা l এটা তার সম্মান ও জীবনকে রক্ষা করতে পারত l এক হাতে কি তালি বাজে ? বাজে না বোধ হয় l
    ১০) জামাত-ই-ইসলামি-হিন্দ:
    কো-এডুকেশন সিস্টেম বন্ধ হওয়া উচিত এবং মেয়েদের জন্য পৃথকভাবে সমস্ত স্তরে শিক্ষার সুযোগ তৈরী হওয়া উচিত l শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের পরিশীলিত পোশাক চালু করা উচিত l
    ১১) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রেসিডেন্ট অশোক সিংহল:
    ব্রিটিশ আমলের আগে মহিলাদের সতীত্ব অটুট থাকত l এই মডেলদের জন্যই এখন তা বিঘ্নিত হয়ে গেছে l
    ১২) ছত্তিশগড় মহিলা কমিশনের চেয়ার-পারসন বিভা রাও:
    মহিলারা শরীর প্রদর্শনের মাধ্যমে পুরুষদের অপ্রীতিকর ক্রিয়াকলাপে প্রলুব্ধ করে l মেয়েরা বুঝতে পারছে না কি ধরণের বার্তা তারা সমাজের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে l
    ১৩) বিএসপি নেতা রাজপাল সৈনি:
    মহিলা ও শিশুদের হাতে ফোন দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই l ফোন তাদের মনকে বিক্ষিপ্ত করে l আমার মা, স্ত্রী, বোন সকলেই তো ফোন ছাড়া দিব্যি কাটিয়েছে l
    ১৪) খাপ পঞ্চায়েত নেতা জিতেন্দ্র ছাতার:
    দারিদ্র্য, নেশাগ্রস্ততা বা যুব সমাজের খারাপ মেলামেশা ধর্ষণের মূল কারণ l তবে চাউমিন খেলেও হরমোনের সমস্যা দেখা দেয় যা ধর্ষণের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ l
    ১৫) হরিয়ানার খাপ পঞ্চায়েত সদস্য সুবে সিং:
    আমার মনে হয় মহিলাদের ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করে নেওয়া উচিত যাতে স্বামীরা তাদের যৌন চাহিদা মেটাতে পারে l এর ফলে তাদের আর অন্য পুরুষের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না l এভাবেই ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব l
    ১৬) কংগ্রেসের এমপি সঞ্জয় নিরুপম, স্মৃতি ইরানীর উদ্দেশে:
    কাল পর্যন্ত পয়সার জন্য টিভিতে নাচ দেখাত, আর আজ ভোট বিশ্লেষক হয়ে গেল!
    ১৭) বিজেপি নেত্রী হেমা মালিনী, মহিলাদের উদ্দেশে:
    যেখানে ইচ্ছে হয় বেরিয়ে পড়বেন না l যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে l আক্রান্ত হতে পারেন l ভগবান কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে বাঁচাতে এসেছিলেন l কিন্তু আমরা তো ততখানি আধ্যাত্মিক নই যে ঈশ্বর আমাদেও বাঁচাবেন !
    ১৮) সিপিএম-এর এমপি অনিল বসু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি:
    তৃণমূলের ভোটের খরচের জন্য উনি কোন্ ভাতারের কাছ থেকে ২৪ কোটি টাকা নিয়েছিলেন?
    ১৯) তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী কাকলি ঘোষদস্তিদার:
    পার্ক স্ট্রিটের ঘটনা সম্পূর্ণ আলাদা। এটা ধর্ষণের কোনও ঘটনাই নয়। ওই মহিলার ও তাঁর খদ্দেরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জের l
    ২০) বৈবাহিক ধর্ষণকে আইনত অপরাধ স্বীকারের মাধম্যে বিল-টিকে সংশোধনের জন্য ডিএমকে-র এমপি কানিমোজির চিঠির উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হরিভাই পারাথিভাই চৌধুরীর বক্তব্য:
    অশিক্ষা, বিবিধ সামাজিক রীতিনীতি, ধর্মীয় বিশ্বাস ও অন্যান্য নানাবিধ কারণে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসাবে স্বীকার করা সম্ভব নয়, কারণে ভারতীয় প্রেক্ষিতে বিবাহ একটি পুণ্য বিষয় l

    হ্যাপি নিউ ইয়ার
    .....................
    চলতি বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারি বহু প্রতীক্ষিত রাজীব দাস হত্যা মামলার ফল ঘোষণা হলো l দিদি রিঙ্কু দাস-কে শ্লীলতাহানি, বেআইনি অস্ত্র রাখা, এবং দিদিকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসা ষোলোবছর বয়সী রাজীবকে গুণে গুণে সতেরো বার ছুরির আঘাতে খুন করার অপরাধে মিঠুন দাস, বিশ্বনাথ চ্যাটার্জী ও মনোজিত বিশ্বাস-কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত, মূল ঘটনার ঠিক চার বছর পর l কেস রিপোর্টেড না হওয়ার ফলে বা হলেও প্রমাণের অভাবে কিংবা প্রশাসনিক ঔদাসীন্যের কারণে পুরো ব্যাপারটাই ধামা চাপা পড়ে যাওয়ায় ধর্ষকদের একটা বড় অংশের কলার তুলে ঘুরে বেড়ানোর আধিক্যে, এ হেন দু’চারটে দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত যে কিছুটা হলেও আমাদের পুনরুজ্জীবিত করে তা নিয়ে সন্দেহ নেই l তবে একটা কেসের সুরাহা হতে না হতেই ঘটে যায় আরো একগুচ্ছ ঘটনা l
    বছর পড়তে না পড়তে গোটা দেশ জুড়ে আরো কিছু ধর্ষণের খবর l ১)২৬শে ফেব্রুয়ারি এআইআইএমএস-এর জনৈক ডাক্তারের বিরুদ্ধে দক্ষিণ দিল্লিতে পঁচিশ বছর বয়সী সিকিম নিবাসী একটি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল l২)উত্তর প্রদেশের মোতিপুরওয়া গ্রামে ১৬ বছরের একটি দলিত-কন্যার ধর্ষিত মৃতদেহ পাওয়া গেল গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় l ভিকটিমের বাবার অনুমান, ওই গ্রামেরই দুজন যুবক তার মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করে l ৩)মহারাষ্ট্রের লোনাভালার একটি রিসর্টে সাত বছরের শিশুর মৃতদেহ পাওয়া গেল, মেয়েটি নিখোঁজ থাকার দুদিন পর l আংশিক অন্ধত্বে আক্রান্ত এই শিশুটি গিয়েছিল আত্মীয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণে l তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় l ৪)উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে একইসাথে দুই শিশুকন্যাকে (পরস্পর তুতো বোন) ধর্ষণ করে পাড়ারই এক বছর পঞ্চাশেকের প্রৌঢ l৫)কোলকাতায় বিজেপি-র পার্টি অফিসে একটি পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সতেরো বছর বয়সী জনৈক যুবককে l৬)হরিয়ানার রোহতক গ্রামের গণধর্ষণ কাণ্ড- একটি আঠাশ বছর বয়সী মেয়ে তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায় যখন তার দুটো হাত, বেশ কিছু অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ ও শরীরের বাঁদিকটা পশুতে খেয়ে গেছে l মেয়েটিরদেহে লাঠি ও পাথর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রবল মারধর করে অচেতনও করে দেওয়া হয়েছিল l এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আটজন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং নবম ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে l৭)দিল্লির নিজামুদ্দিনে একটি স্কুলের বত্রিশ বছর বয়সী এক ফিজিকাল ইন্সট্রাকটর ছয় বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ l ৮)পুরুলিয়ার জনৈক স্কুল-বাস ড্রাইভারকে,চার বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় l৯)জয়পুরে উনিশ বছর বয়সী একটি জাপানি মহিলা পর্যটককে ধর্ষণ করে চব্বিশ বছরের যুবক l অপরাধ স্বীকার করার পর সাতজন বন্ধুর সহায়তায় সে শহর ছেড়ে পালায় l অবশেষে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ এবং দোষীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় l ১০)মালদা জেলার কালিয়াচকে ন’ বছরের একটি শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করে তেত্রিশ বছরের যুবক l১১)মার্চ মাসের মধ্যরাতে রানাঘাটের একটি কনভেন্ট স্কুলে বাহাত্তর বছরের জনৈক সিস্টারকে গণধর্ষণ করা হয় l ঘটনায় আরো তিনজন সিস্টার দুষ্কৃতীদের দ্বারা গুরুতর আহত হয়েছিল l রানাঘাটের কাণ্ডের দিনেই, এন্সেফেলাইটিস-এ মারা গেল লড়াকু মেয়ে সুজেট জর্ডন, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্ক স্ট্রিটে ঘটে যাওয়া বহুচর্চিত ও বিতর্কিত গণধর্ষণ কাণ্ডের সেই ভিকটিম, দুই শিশুকন্যা ও অসমাপ্ত ‘কেস’-কে পিছনে রেখে l ১২) সম্প্রতি, মে মাসে, আর জি কর হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই মাঝরাতে ২৪ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হাসপাতালে কর্তব্যরত দুজন লিফ্টম্যান l
    ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে, দেশে প্রতিদিন গড়ে বিরানব্বই থেকে তিরানব্বই জন মহিলা ধর্ষিত হয়ে চলেছে l এবং চুরানব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি(/রা) ভিকটিমের পূর্বপরিচিত l

    ধর্ষণ ও ধন-তন্ত্র
    ...................
    ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো ১৯৭১ সাল থেকে ধর্ষণের খতিয়ান নথিভুক্ত করতে শুরু করে l জানা যাচ্ছে, সে বছর রিপোর্টেড রেপ কেসের সংখ্যা ছিল ২৪৮৭ l আইপিসি-৩৭৬ ধারায় ২০১৩ সালে দেশের সবকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে রিপোর্টেড রেপ কেসের সংখ্যা ৩৩৭০৭l২০১২-র রিপোর্টেড রেপ কেসের সাপেক্ষে এই সংখ্যা ৩৫.২ শতাংশ বেশি !আবার গত ১০ বছরের খতিয়ান দেখলে জানা যায়, ২০০৩ থেকে ২০১৩-এ রিপোর্টেড রেপ কেসের শতাংশের হার বেড়েছে ৯১.৮ ! এই বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বলা যায়, এক- সত্যিই ধর্ষণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, দুই- ধর্ষণের হার যা ছিল তাই আছে, কিন্তু মহিলাদের মধ্যে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা বা সোশাল স্টিগমা-গুলোকে অতিক্রম করে অপরাধীদেরদের প্রতি অভিযোগ জানানোর প্রবণতা বাড়ছে l ‘স্লাট শেমিং এন্ড ভিকটিম ব্লেমিং’, মানে ঘটনা যাই ঘটে থাকুক না কেন আসলে তো মেয়েটি মাঝরাত্তিরে একা বেরিয়েছিল, আসলে তো মহিলার পোশাক বড্ডবেশি খোলামেলা ছিল কিংবা আসলে তো ও মেয়ে নয় মেয়েছেলে- এইসব মিথ ভেঙে প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হচ্ছে বহু মহিলাই l ২০১৩ সালে দেশে রিপোর্টেড ইনসেস্ট রেপ কেসের সংখ্যা ছিল ৫৩৬ ও আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪৮ l ইনসেস্ট রেপের ক্ষেত্রেও আশির দশকে বাড়ির ছোট বৌমাকে শাশুড়ি যেমনটা বোঝাতে সমর্থ হতেন- আহা নিজেরই তো শশুরমশাই, অমন হয়ে থাকে, তুমি বাপু পাঁচকান কোরো না- মেয়েরা কিছুটা হলেও এখন ক্রমে ক্রমে উপেক্ষা করতে চাইছে বা পারছে এইসব পরোক্ষ হুমকিকে l তবে,একটা ধর্ষণ ঘটে যাওয়ার পর ধর্ষকের শাস্তি যতটা জরুরি, ততটাই গুরুত্বপূর্ণধর্ষণের উৎসগুলোকে খুঁড়ে বার করা l ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাবাসেরভয় দেখিয়ে ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার ঘটনা আটকানোর থেকে অধিক কার্যকরী সার্বিক সচেতনতার বোধ তৈরি করা l বহু ক্ষেত্রেই ছোটবেলা থেকে মেয়ে ও ছেলেদের পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শুরু করানোর বা আলাদা পরিবেশে বড় করার ফলে শিশুমনে একটা অদ্ভুত ধারণা পুষ্ট হতে থাকে যে মেয়েরা ভিনগ্রহের জীব l তাদের প্রত্যঙ্গের বেড়ে ও গড়ে ওঠা ছেলেদের থেকে বিলকুল আলাদা এবং আশ্চর্য এক রহস্যের জালে আবৃত l বয়ঃসন্ধিতে সেই কৌতুহল আরো চরমে পৌঁছয় l বাড়ির কিশোরটি যুবতী বুয়ার পাতিয়ালায় রক্তের ছিটে দেখে বিচলিত ও সন্দিগ্ধ হয়ে ওঠে l অধিকাংশ মধ্য-চিত্তের পরিবারেই তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে কেউ বোঝাতে আসে না, এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা, ঠিক যেমনটা ওই নাইট ফলস-ও l বোঝালে, অপরাধবোধ ও অপরাধের প্রবণতা কমত বৈ বাড়ত না l নারী-পুরুষ-ভিন্নলিঙ্গ বহিরঙ্গে পৃথক, শারীরবৃত্তীয় কারণে আলাদা, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষিতে সেসব ডিসক্রিমিনেশন-কে অতিক্রম করা উচিত, এই বোধটা মানবিক বিকাশের এক্কেবারে শুরু থেকে কোথাও মাথার ভেতর রোপণ করা দরকার l প্রশ্ন উঠতেই পারে, মধ্যপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে কোএডুকেশন কালচার এবং অত্যাবশ্যক সেক্স এডুকেশনএকটি ষোলো বছরের মেয়েকে স্কুলমুখী করে তোলার পক্ষে পরিপন্থী হয়ে উঠবে না কি? বলা বাহুল্য এ পরিবর্তনও একদিনে ঘটবে না l কিন্তু সর্বাগ্রে তো প্রতীত হতে হবে শিক্ষার কান্ডারীদেরও, যারা বদলটা আনতে পারবে !
    ২০১৩-র রিপোর্টে, রিপোর্টেড রেপ কেসের সংখ্যা ৩৩৭০৭ হলেও ভিকটিমের সংখ্যা কিন্তু ৩৩৭৬৪ l এই পরিসংখ্যানকে বয়সের নিরিখে ভাগ করে দেখা গেছে: ১০ বছর বয়স পর্যন্ত ধর্ষিত নারীর সংখ্যা ১৫৮৪, ১০-এর বেশি বয়স থেকে ১৪ বছরের মধ্যে ২৮৪৩, ১৪-র বেশি বয়স থেকে ১৮ পর্যন্ত ৮৮৭৭, ১৮-র অধিক থেকে ৩০ অবধি ১৫৫৫৬, ৩০-এর বেশি থেকে ৫০ পর্যন্ত ৪৬৪৮, ৫০-এর ঊর্ধে ২৫৬ l স্পষ্টতই ১৮ থেকে ৩০ এই বয়সকালকে রিপোর্টের ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল ধরা যেতে পারে l কারণটা বোধ করি এই যে, ভারতীয় (অপ)সংস্কৃতিতে যৌবনের কনসেপ্ট মূলত এই বয়সের পরিসরে সীমাবদ্ধ l গয়নার বিজ্ঞাপনে কচি মেয়েটি যেমন মায়ের চুড়ি হাতে গলিয়ে রমণী হয়ে উঠতে চায়, তেমনই মধ্যবয়সী নারীকে সাবান মাখিয়ে বয়স কমানোর চেষ্টা চালানো হয় এবং স্তাবকের কণ্ঠ থেকে ভেসে আসে- আপকো দেখকে তো উমর কা পাতা হি নহি চলতা ! একটা বড় সংখ্যক মূল ধারার ঝিনচ্যাক দিশি ছবিতে নায়িকার বয়স কিচ্ছুতেই তেইশের বেশি হয়না l গোটা বিপণনের দুনিয়া যৌবন বেচতে বদ্ধপরিকর l এবং যারা খাচ্ছেতাদের কাছে ‘পূর্ণযৌবনা’ নারীকে সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য হিসেবে পরিবেশন করার অদম্য প্রয়াস l ফলত এরাই ‘টার্গেট’ l আর উন্নয়নশীল দেশে পূর্বোল্লিখিত কনসেপ্ট-এর সাথে ভার্জিনিটি-র পাঞ্চ মিশিয়ে দিলে ১৪ থেকে ১৮-র ভীতিপ্রদ সংখ্যার ব্যাখ্যাটা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে ওঠে l ১৬ই ডিসেম্বর ২০১২-র দিল্লি কাণ্ড সমাজের পক্ষে একটা কালো দিক হলেও ধর্ষণের সংজ্ঞায় তা কিছুটা আলো দেখাতে পারলো l এই ঘটনার অব্যবহিত পরে সরকারের পক্ষ থেকে নিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত জাস্টিস যে.এস ভার্মা-র তত্ত্বাবধানে গঠিত কমিটির সিদ্ধান্তে ২০১৩ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি আইপিসি-৩৭৫ ধারায় বেশ কিছুটা (উত্তর)আধুনিকতার ছোয়াঁচ লাগলো lআমরা জানলাম, ধর্ষণ শব্দটা শুধুমাত্র যোনি ও লিঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখার বিষয় নয় l আরো কিছু বয়সসীমা ও শর্তের তারতম্য ঘটানো হলো পরিমার্জিত সংজ্ঞায় l তবে ম্যারাইটাল রেপ এখানেও অপরাধ হিসেবে গণ্য হলো না l ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র ২০১২-র রিপোর্টে আমরা দেখেছি দেশে মোট ১০৬৫২৭ জন মহিলা গৃহনির্যাতন (আইপিসি ৪৯৮ এ)-র শিকার l এখানে পশ্চিমবঙ্গের স্থান দ্বিতীয়তে অর্থাৎ ত্রিপুরার পরেই l যেখানে ডোমেসটিক ভায়োলেন্স-এর পরিসংখ্যান এ হেন, সেখানে বৈবাহিক ধর্ষণের সংখ্যাও যে বিপুল হবে তা সহজেই অনুমেয় l
    যৌনাচারে নারীটি নিয়ন্ত্রিত হবে তার পুরুষটির দ্বারা, এই মিথ-এর কারণেই বোধ করি ম্যারিটাল রেপ-কে শুধুমাত্র ‘রাফ সেক্স’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার একটা কালচার আগেও ছিল এবং এখনও আছে l নাহলে রাষ্ট্র দ্বারা নির্ধারিত পুরুষতান্ত্রিক পরিবার-পরিকাঠামোর সুখী সুখী ইমেজ ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ার অবশ্যম্ভাবী সম্ভাবনাথেকে যায় l ১৯৭৫ সালে কেমব্রিজ ডকুমেন্টারি ফিল্মস-এর জন্য মার্গারেট লাজারাস ও রেনার উন্ডারলিচ ‘রেপ কালচার’ নামে একটি তথ্যচিত্র বানান যেখানে নারী ও পুরুষ উভয়কেইধর্ষণ করার যে প্রবণতা তাকে ‘স্বাভাবিক’ বলার বিরুদ্ধে অভিমত প্রকাশ করা হয় l ছবিটা ধর্ষণের ধারণাকে প্রথম সংজ্ঞায়িত করার স্বীকৃতি পায় lপ্রসঙ্গত মনে পড়ে যাচ্ছে এর ঠিক ত্রিশ বছর পরে, ২০০৫ সালে ভারতে মুক্তিপ্রাপ্ত‘মাতৃভূমি’ ছবিটির কথাও যা একইসাথে ফিমেল ফিটিসাইড, ডাওরি, ম্যারাইটাল রেপ, ইনসেস্ট রেপ ও ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স-এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল l মোদ্দা কথাটা হলো উৎস যাই হোক না কেন, আর্থসামাজিক সমস্যা, জাতিবিদ্বেষ, লিঙ্গবৈষম্য, ধর্মীয় ভেদভাব, হোমোফোবিয়া, যুদ্ধ পরিস্থিতি, পর্নোগ্রাফি, মানসিক বিকার ইত্যাদি প্রভৃতি, মূল লক্ষ্য কিন্তুআঘাত করার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতাপ্রদর্শন l পাওয়ার এক্সারশন l বীরভোগ্যা পৃথিবী ও রূপমুগ্ধা নারী- এই কনসেপ্ট থেকে যেমন একজন বলশালী রাজা ভূমি দখল করার পর জমিতে তলোয়ার পুঁতে জাহির করতো ওই পরিসরের ওপর তার কতৃত্ব, একজন পুরুষও নারীর মুখ, যোনি, পায়ু অথবা শরীরের যেকোনো ছিদ্রে লিঙ্গ বা অন্যকোনো বস্তুর প্রবেশ ঘটিয়ে তার ক্ষমতাকে প্রদর্শন করায় l পেনিট্রেশন- মাটি হোক বা রমণী, গ্রোথিত করার মাধ্যমে তার ওপর ক্ষমতাশীলের অধিকারপ্রয়োগ l অথচ শুধু ধর্ষণ কেন, আমরা যাকে স্বাভাবিক যৌনাচার বলে জানি, সেখানেও এই পুরুষতন্ত্র ও ক্ষমতাপ্রদর্শনের রাজনীতি l কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নততর গবেষণা জানায়, নারীর অরগ্যাজম ‘কেবলমাত্র’ পেনিট্রেশন কেন্দ্রিক- এটাও স্রেফ একটা মিথ !
    সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে যে একক ব্যক্তির দ্বারা ধর্ষণের সাথে সাথে গণধর্ষণের ঘটনাও অনেক বেশি ঘটছে lগবেষণা বলছে এর পেছনে কারণগুলো মূলত যৌনতার অধিকারপ্রয়োগ, বিনোদন ও শাস্তি দেওয়ার প্রবণতা l একজন পুরুষ এককভাবে ধর্ষণ করাকালীন যতখানি বলপ্রয়োগ করতে সক্ষম, দলবদ্ধ অবস্থায় তার আঘাত করার ক্ষমতা বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যায় l গণধর্ষণের ক্ষেত্রে সাধারণত তিনজন বা তার বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে যারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়সে তরুণ l বলা বাহুল্য, এ বিষয়টি অনেক বেশি হিংসাত্মক এবং যৌন অত্যাচারের পাশাপাশি অযৌন অত্যাচারও করা হয় ভিকটিমকে l যুদ্ধ বা দাঙ্গার পরিস্থিতিতে মহিলাদের গণধর্ষণের মাধ্যমে ভিকটিম ও তার কম্যুনিটিকে ভয় দেখানোর জন্য ব্যাপক হারে গণধর্ষণের প্রবণতা দেখা গেছে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে l তবে সাধারণভাবে, যুবসমাজের বেকারত্ব আর নেশাগ্রস্ততাকে গণধর্ষণের বড় কারণ বলে দাবি করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা l আর যারা গণধর্ষিত হচ্ছে তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিম্ন মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র পরিবারের সদস্য l কেননা সামাজিক কারণেই তাদের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ও সাহস বহুলাংশে কম l আমাদের দেশে এখনও আলাদা করে গণধর্ষণের রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়না l হলে দেখা যাবে সার্বিক পরিস্থিতির মতোই গণধর্ষণের ঘটনাও ক্রমবর্ধমান l

    না-ফুরোনো গল্পগুলো
    ............................
    বড় বেদনার বোধও ক্রমে ঝাপসা হয়ে আসে l মেয়েটির স্বজনেরা, এমনকি সে নিজেও শরীর-মনের ক্ষতগুলোর সাথে অভ্যস্ত হয়ে যেতে থাকে ধীরে ধীরে l আর আমরা যারা খবর কাগজের পাতায় ঘটনার বিবরণ পড়লাম, দু’চারদিন ভেতরে ভেতরে কোথাও আগুনটুকু জ্বলল, তারাও দ্রুত ফিরে যেতে চাই পরিচিত স্বাভাবিকতায় l টানা বিয়াল্লিশটা বছর ভেজিটেটিভ স্টেটে অরুণা শানবাগ পড়ে ছিল হাসপাতালের বিছানাতে l ১৯৭৩ সালের ২৭শে নভেম্বর সোহনলাল বাল্মীকি নামে সরকারি হাসপাতালের এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী পঁচিশ বছর বয়সী একটি নার্সকে গলায় কুকুরের চেন বেঁধে সোডোমি অর্থাৎ পায়ুছিদ্র দিয়ে ধর্ষণ করে l সেই নার্স, মানে অরুণার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, ব্রেন স্টেম ও সারভাইকাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কর্টিকাল ব্লাইন্ডনেস ঘটে l সোহনলালের কেবল সাত বছরের হাজতবাস হয় ‘ডাকাতি ও খুনের চেষ্টার অপরাধে’, কেননা আইপিসি-৩৭৬ অনুযায়ী সোডোমি-র মাধ্যমে ধর্ষণকে তখন ধর্ষণ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হতো না l গত ১৮ই মে ২০১৫ তে, অরুণা ‘মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’ lযদিও তার অস্তিত্বের, চেতনার, মৃত্যু ঘটেছিল বহু বছর আগেই l
    বিহারের দেওঘর থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে পারারিয়া গ্রামে এক রাতে উনিশজন আদিবাসী মহিলা ধর্ষিত হয় l নিমিয়া, রাধিয়া, দারিয়া, সুমিয়া ও ভগবতিয়া, পারারিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে (১৯৮৮) মাত্র এই পাঁচজন ছিল অভিযোগকারী l যে ষোলো জনের বিরুদ্ধে কোর্টে যায় এই মহিলারা, তারা সকলেই ছিল পুলিশকর্মী, চৌকিদার ও হোমগার্ড l ধর্ষণের সাথে সাথে মারধর ও তাদের বাড়িতে লুঠতরাজও চলে l অভিযোগ দায়ের করা সত্বেও ধর্ষিতদের যথাযথ মেডিকেল পরীক্ষা হয়না l সরকারি পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় l এবং পরবর্তীকালে ওই পাঁচজন মহিলাকে প্রতারক হিসেবে সাব্যস্ত করা হয় l বলা হয়, মিথ্যাচারের জন্য এরা যেকোনো কিছু করতে পারে কারণ হাজার টাকা এদের কাছে সত্যিই অনেক l
    ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গায় অসংখ্য মুসলিম মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় যার হিসাব কেউ দেয়নি আজ পর্যন্ত l
    ২০০৩ সালে একজন আঠাশ বছর বয়সী সুইস ডিপ্লোম্যাট-কে তার নিজের গাড়িতে ধর্ষণ করা হয় l ধর্ষিত তার বিবৃতিতে বলে- ধর্ষকদের একজন অনর্গল ইংরিজিতে কথা বলে যাচ্ছিল l এমনকি তাকে প্রশ্ন করছিল সুইজারল্যান্ড সম্পর্কে, আর সম্ভবত ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে তাকে জ্ঞানও দিচ্ছিল !
    মণিপুরের বত্রিশ বছর বয়সী মেয়ে মনোরমাকে আসামের সৈন্যরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহীদের’ সঙ্গে যোগাযোগের অপরাধে l কয়েক ঘন্টা পর তার বিক্ষত শরীর পাওয়া যায় l মনোরমার তলপেট ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল অসংখ্য বুলেটের আঘাতে l সালটা ২০০৪ l
    ২০০৯ সালে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের সোপিয়ান টাউনে দুটি তরুণীকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয় l প্রতিবাদে টানা সাতচল্লিশ দিন সশস্ত্র আন্দোলন ও ধর্মঘট চলে l
    মাওবাদীদের সংবাদপ্রেরক সন্দেহে ২০১১-র অক্টোবর পর্যন্ত সোনি সোরি-কে ছত্তিসগড়ের জেলে আটকে রাখা হয় l জেল থেকে বেরোনোর পর সোনি সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানায়, বন্দী থাকাকালীন তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছিল ও তার যোনিপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল পাথর l
    ২০১২ সালে উত্তর প্রদেশের একটি থানার ভেতরে সোনম নামে চোদ্দ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় l
    ২০১৩ সালে কলকাতা থেকে কুড়ি কিলোমিটার দূরে কামদুনি গ্রামে কুড়ি বছর বয়সী কলেজ পড়ুয়াকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় l ন’জন অভিযুক্তের মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ l আপাতত তদন্দের ভার সিবিআই-এর হাতে l ভিকটিমের পরিবার ও বন্ধুরা বিচারের অপেক্ষায় l
    এমন আরো একগুচ্ছ জানা অজানা ঘটনা নিয়ত ঘটে চলেছে চারপাশে l তার কতগুলো কেস রিপোর্টেড হচ্ছে? ঠিক কতগুলো ঘটনার মীমাংসা হচ্ছে? কতজন অভিযুক্ত শাস্তি পাচ্ছে? ‘তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ’–এর চক্করে একাধিক প্রমাণ লোপাট হয়ে যাবে l উচ্চবংশের ছেলে দলিতের মেয়েকে ধর্ষণ করে না- এমন হাস্যকর কিছু যুক্তি সাজিয়ে বেমালুম ছাড়া পেয়ে যাবে ধর্ষক l অমুক যখন শাস্তি পেল না তখন আমাদেরই বা কে কী করবে- এমন মনোবল নিয়ে ধর্ষণে উদ্যত হবে আরো আরো পুরুষ l ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটবে ভিকটিম ও তার পরিবারের l কোনো কোনো ধর্ষিত অর্থের বিনিময়ে কন্যাসন্তানের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করতে চাইবে l অন্তত এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় সেই চাওয়াটুকু জাস্টিফায়েড l আর যাদের হাতে ভুবনের ভার, দেখাই যাচ্ছে,নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তাদের একটা বড় অংশ চরম পুরুষতান্ত্রিকতা, ক্ষেত্রবিশেষে চূড়ান্ত অশিক্ষার শিকার l রিপোর্টের ভিত্তিতে সামাজিক অবক্ষয়ের কাটাছেঁড়া চলবে, চলবে সামাজিক অবক্ষয়ের ভিত্তিতে রিপোর্টের কাটাছেঁড়াও l বয়স উনিশ লিখে যে পনেরো বছরের মেয়েটিকে শহর কোলকাতা থেকে মাত্র তিরিশ কিলোমিটার দূরে বিয়ে দিয়ে দিল তার মা-বাবা, ইনসেস্ট রেপের খতিয়ানে তার বয়স কিন্তু রইলো উনিশই l ১৮ থেকে ৩০-এর এই লম্বা ঘরটিকে কেন ১৮ থেকে ২৪ এবং >২৪ থেকে ৩০–এ ভাগ করা হলো না, প্রশ্ন থেকে যাবে l জানা হবে না, আঠেরো বছরের কমবয়সী একটি ছেলে যদি গণধর্ষণে সামিল হয় এবং পূর্ণাঙ্গ ধর্ষণে সক্ষম হয় তাহলে শাস্তি ঘোষণার সময় তাকে কেন দেখা হবে একজন নাবালক হিসেবেই? এক্ষণে প্রশ্ন উঠবে সাবালকত্বের মাপকাঠি, ভোটাধিকার, মদ্যপান, বিবাহের বয়স এবং রাষ্ট্র কতৃক নির্ধারিত অন্যান্য নানাবিধ মাইলস্টোন নিয়েও l বরং আজ থাক l উত্তর খোঁজা যাবে অন্য কোথাও... অন্য কোনোখানে...
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৭ আগস্ট ২০১৫ | ৮১৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৫:৩৬68105
  • আত্মরক্ষার পদ্ধতির সেপ্সিফিক পরামর্শ যখন দিচ্ছেন, সেটা তো একটা মডেল বটেই। নইলে তো যে যা পারে করুক, বলতেন, আমি যেমন বলি। :-)

    আত্মরক্ষার নানা পরামর্শ আম্রিকায় নানা সূত্রে পাই। টিভি ইত্যাদিতে। সেও একটা মডেল। তার মূল কথা হল, আক্রান্ত হলে কনফ্রন্টেশনে না যাবার চেষ্টা কোরো। এমনকি বাড়িতে চোর ঢুকলেও পাকড়াতে যেওনা। কারণ তাদের কাছে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র থাকতে পারে। বরং অ্যাভয়েড করে যত তাড়াতাড়ি পারো পুলিশকে জানাও। কনফ্রন্টেশনে যাওয়ার ট্রেনিং পুলিশের আছে, ইত্যাদি।

    এটা, এই সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্টের দেশের পরামর্শ। যেখানে আত্মরক্ষার অধিকার স্বীকৃত। সেইজন্যই ওই দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, যেটা উপরে পাই দিয়েছে, পড়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। এমনিতে পুলিশ দুচাট্টি ক্যারাটে ক্যাম্প ক্যাম্প করলে আমার কিছুই বলার নেই। কিন্তু দশদিনের ক্যাম্পে কী কী হয় শুনুন একবার। Further to empower women through exposure (demonstration) and training in techniques of Martial Arts, Self-defense training was started in the year-2002 by this unit. During the Self Defence training the participants are also being trained how to make use of things like Dupatta, Pen & Handbags to protect themselves from attacks by anti social elements, chain or bag snatching, criminal assault etc. We also trained them to protect/defend themselves from acid attack and terrorist attack. The training helps in building up the self esteem of students/women so that they do not feel vulnerable & humiliated.

    অ্যান্টিসোশাল এলিমেন্ট থেকে শুরু করে টেররিস্ট অ্যাটাক ঠেকানোর উপায় সবই শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে দশ দিনের ক্যাম্পে। এতে নিজেদের হাতটি মূলত ক্লিন রাখা হচ্ছে। নিজের ম্যাও নিজে সামলাও ইত্যাদি। এটা মডেল নয় তো মডেল কোনটা?

    এ প্রসঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন জাগল। এই ট্রেনিং তো দেখছি ২০০২ তে শুরু হয়েছে। লাখে লাখে মেয়ে ট্রেনিং পেয়েছে। এতদিনে তো ফল ফলবার কথা। তারপরেও দিল্লিতে নির্ভয়া হল। তারপরেও শুনি ধর্ষণ ক্রমবর্ধমান। কেন?
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৫:৪৫68106
  • সমাধানের মডেল হিসেবে তো প্রোজেক্ট করা হয়, পুলিশ থেকে শুরু করে এই টইতেও হয়েছে। সমাধান হিসেবে প্রোজেক্টেড মডেলে আপত্তি। কেউ শিখতে চাইলে, শিখলে শিখুক না।খারাপ তো কিছু না।

    আগে একটা টই তে লিখেছিলাম, এখানেও থাক।
    এভাবে আত্মরক্ষার দায়িত্ব মেয়েদের নিজেদের নেওয়া উচিত , এতে আপত্তি কেন করছি।
    মেয়েটি খুব সাহসের কাজ করেছে, অনেক বাহবা দেবো, সেসবই ঠিক আছে, কেউ শিখতে চাইলেও অবশ্যই শিখুক। ভাল কথা। কিন্তু আমার সমস্যা হয় দরকারি, উচিত এই শব্দগুলি নিয়ে। সমস্যা হয় যদি বলা হয় এটা শেখা উচিত, প্রত্যেকের জন্য দরকারি , শেখা বা শেখানো বাধ্যতামূলক করা উচিত বললে তো আরোই হবে, তার কারণ, এতে করে, এটাকে সমাধান বলে প্রিচ করলে, মনে হয় দায়িত্বটা মেয়েদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আত্মরক্ষা কর্তব্য, এই লাইনে যদি একবার প্রোজেক্টেড হয়ে যায় তো সেই কর্তব্যের দোহাই পেড়ে পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব লঘু হয়ে যাবে, এবং তাকে একটা বৈধতা দেওয়া হয়ে যাবে, সমস্যা এখানে লাগে। আর শারীরিক ভাবে কারুর থেকে কম দক্ষ হওয়াকে সত্যিই কোন অক্ষমতা মনে করিনা। আর আরো দুটি কারণে সমস্যার মনে হয়।
    এটাকে এক্সটেন্ড করে ভাবতে গেলে।
    এক। আক্রমণকারী ছেলেরাও কুংফু , ক্যারাটে শিখতে পারে। তখন পাল্টা কীভাবে প্রস্তুত করতে হবে ? উন্নততর কুংফু , কারাটে শিখে ? তারপর ছেলেরাও সেটা শিখতে শুরু করলো, তখন ?
    দুই। আক্রমণকারীরা অস্ত্র রাখলো। তাকে কীকরে মোকাবিলা করতে বলা হবে ? নিজেরা অস্ত্র রেখে ?
    এগুলো শুধু বাস্তব সমস্যা তাই নয়, বেসিক্যালি এখানে তখন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কনসেপ্টও আসতে পারে, সেইজন্য সমস্যার মনে হয়। এটাকে প্রেসক্রিপশন হিসেবে বাতলালে সমস্যার মনে হয়।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৫:৫১68107
  • আবার যৌন হেনস্থার সাথে চুরিকে গুলিয়ে ফেল্লেন বোধায়।

    আমেরিকায় চোর ঢুকলে তাকে পাকড়াতে না গিয়ে পুলিশকে খবর দেবার পরামর্শ দেওয়া হয়। যৌন হেনস্থার বেলাও একই পরামর্শ দেওয়া হয় নাকি? কেউ যৌন হেনস্থা করতে এলে কিছুটি বাধা দেওয়া দিও না, বিনা বাধায় সব করতে দিও। তবে সব হয়ে গেলে চটপট গিয়ে পুলিশকে জানাতে ভুলোনা। এরকম পরামর্শ যদি আমেরিকায় দেওয়া হয় তো বলতেই হয় যে আমেরিকা একেবারে স্বপ্নরাজ্য হয়ে গেছে।

    During the Self Defence training the participants are also being trained how to make use of things like Dupatta, Pen & Handbags to protect themselves from attacks by anti social elements, chain or bag snatching, criminal assault etc. এটা আমার পড়ে ভালো লাগল। এটাও বলতে চাইছিলাম, যে ক্যারাটেই একমাত্র কৌশল না, অনেকভাবেই আত্মরক্ষা করা যায় উপায় জানা থাকলে।

    "তারপরেও দিল্লিতে নির্ভয়া হল। তারপরেও শুনি ধর্ষণ ক্রমবর্ধমান। কেন?" কারন বোধায় এখনো খুব কম শতাংশ মেয়েই এগুলো শেখে। সেইজন্যই এই উদ্যোগগুলো বাড়লে ভালো হয়।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৫:৫৭68108
  • "আক্রমণকারী ছেলেরাও কুংফু , ক্যারাটে শিখতে পারে। তখন পাল্টা কীভাবে প্রস্তুত করতে হবে ?"

    বোধায় নিজেই জানেন যে এটা স্লিপারি স্লোপ আর্গুমেন্ট। ধর্ষন সবসময়ে প্রিপ্ল্যান্ড ভাবে করা হয়না। অনেক সময়ে ঝোঁকের মাথায় বা হাতে সুযোগ এসেছে তখন করা হয়। কাজেই শুধুমাত্র রেপ করতে চাই এই ভাবনা থেকে ছেলেরা ক্যারাটে শিখবে আর তাও কয়েক বছর ধরে প্র্যাক্টিস করবে এটা ভেবে নেওয়াটা বেশ কঠিন।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৫:৫৯68109
  • "বেসিক্যালি এখানে তখন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কনসেপ্টও আসতে পারে"

    আত্মরক্ষার্থে যে কেউ যেভাবে আক্রমনের মোকাবিলা করতে পারে। আইনে সেই অধিকার স্বীকৃত। আত্মরক্ষার্থে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যেতেই পারে। এতে কি অসুবিধে হবে বুঝলাম না।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:০৯68110
  • গুলোবো কেন, ওটা উদাহরণ ছিল। যৌন হেনস্থা আটকানোর উপায় ছোটো থেকেই শেখানো হয় তো। যেমন কেউ প্রাইভেট পার্টে হাত দিলে রিপোর্ট করো। স্ট্রেঞ্জরদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হোয়োনা। অচেনা লোকের কাছে লিফট নিয়োনা। বিপজ্জনক জায়গায় একাকী ঘোরাফেরা কোরোনা। স্পেসিফিকালি কেউ আক্রমন করতে এলে, আত্মরক্ষার চেষ্টা কোরোনা, নিশ্চয়ই কেউ ই বলেনা। কিন্তু জোরটা অ্যাভয়েড এবং রিপোর্ট করায়।

    পদ্ধতিগুলোর সঙ্গে আমি ভয়াবহ একমত তা নয়। সেটা অন্য গপ্পো। কিন্তু কথা হল, দুষ্কৃতীরা অস্ত্রে ও শক্তিতে তোমার চেলে বলীয়ান হবে ধরে নিয়েই বাকি সুপরামর্শগুলি দেওয়া হয়। এখানে যা দেখছি, দশদিনের ট্রেনিং ক্যাম্পেই দুষ্কৃতীদের ঢিট করে দেবার মতো শক্তি জন্মে যাবে ধরে নিয়ে একটা মডেল তৈরি করা হয়েছে। সেটা আকাশ কুসুম কল্পনামাত্র, বলার অপেক্ষা রাখেনা।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:১৪68111
  • ইয়ে উদাহরনগুলো ঠিকঠাক দিলে একটু সুবিধে হয় আরকি।

    কিন্তু জোরটা অ্যাভয়েড এবং রিপোর্ট করায় - আরো একবার, এটা চুরি ডাকাতিতে খাটে, যৌন হেনস্থায় না।

    এখানে যা দেখছি, দশদিনের ট্রেনিং ক্যাম্পেই দুষ্কৃতীদের ঢিট করে দেবার মতো শক্তি জন্মে যাবে ধরে নিয়ে একটা মডেল তৈরি করা হয়েছে। সেটা আকাশ কুসুম কল্পনামাত্র, বলার অপেক্ষা রাখেনা - একদম একমত। দশদিনের ক্যাম্পে এরকম পুরো ট্রেনিং দেওয়া যায়না। সেইজন্যই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে স্কুল লেভেল থেকে শেখানোর বা অন্তত দুয়েক বছর শিখতে যাতে ঠিকমতো ট্রেনিংটা পাওয়া যায়।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:১৭68112
  • আরেকটু লিখে দি।

    কিন্তু জোরটা অ্যাভয়েড এবং রিপোর্ট করায় - আরো একবার, এটা চুরি ডাকাতিতে খাটে, যৌন হেনস্থায় না। কারন অনেক সময়েই এমন অবস্থা হয় যে অ্যাভয়েড করার আর উপায় থাকে না। তখন ঘুরে দাঁড়াতেই হয়। আর তখন কোন কৌশল জানা থাকলে বা ব্যাগে কিছু থাকলে সেটা কাজে লাগতেও পারে।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:২১68113
  • চুরি ডাকাতিতেও সবসময় খাটেনা। ছিনতাই ইত্যাদিতে তো নয়ই। অনেকসময় ড্রাগের সামান্য পয়সার জন্য খুন হয়। যাতে কোনো সাক্ষী না থাকে। যৌন হেনস্থাতেও তাই। কিছু ক্ষেত্রে অ্যাভয়েড করা যায়, কিছু ক্ষেত্রে যায়না। কেউ জোর করে গাড়িতে তুলে ধর্ষণ করবে ভাবলে কোনো ভাবেই অ্যাভয়েড করা যায়না। এগুলো আমরা সবাই জানি তো। :-)
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:২৬68114
  • সবাই জানি বলেই যে সেটা নিয়ে কিছু করবো না সেটা কিন্তু কেউ বলে দেয়নি ঃ-)

    আত্মরক্ষার কৌশল শিখলেও যে সব সময়ে আমি পার পেয়ে যাবোনা সেটা আমি জানি। কিন্তু তার জন্য কিছুই শিখবো না সেটাও ভুল। কারন কিছু শিখলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো পার পেয়ে যেতে পারি।
  • apps | 11.39.137.126 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:২৮68115
  • পাই, এটার সোর্স দেওয়া যায়? জরুরি l
  • pi | 233.176.59.142 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৩০68117
  • না;, আপনি মোটেও ঠিকঠাক পড়ছেন না। ছেলেরা রেপ করার জন্য আরাটে শেখে এরকম ফালতু যুক্তি আদৌ দিলটা কে ? ওটা আপনার রিডিং এর ভুল।
    ঘটনা হল, ছেলেরা কারাটে কুংফু শেখে, আর মেয়েদের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় শেখে। এটাও দেশেরই পরিসংখ্যান। তো, প্রশ্ন ছিল, কারাটে শেখা ছেলেরা রেপ করলে কী হবে ?

    আর দ্বিতীয় কথা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য কি তাহলে অস্ত্র সঙ্গে রাখার নিদানও দেবেন ? আফটার অল , তাতে আত্মরক্ষা হবে। আইন হাতে তুলে নেওয়া এই প্রসঙ্গে এসেছে।

    আর তৃতীয় আরেকটা কথাও বাদ গেছে। মেয়েদের এই আত্মরক্ষা করা উচিত, এসবের টেকনিক শেখা উচিত, এসব ঔচিত্যবোধ থেকে এরপর কোন মেয়ে সেগুলো না করলে ও যৌন নির্যাতনের শিকার হলে, তার জন্য মেয়েটির উপর দোষও বর্তাতে পারে। ভিক্টিম ব্লেমিং এর আরেক ফর্ম হয়তো তখন দেখবো, অমুক মেয়ে কেন রেসিস্ট করতে পারেনি ইঃ।

    যা হোক, এখানে এনিয়ে অনেক তর্ক হয়েছিল, থাকলো।
    http://www.guruchandali.com/guruchandali.Controller?portletId=8&porletPage=2&contentType=content&uri=content1441711647875&contentPageNum=1#.VhQEr_mqqko

    আর টাইপাতে পারছিনা, হাতে হেব্বি ব্যথা।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৩০68116
  • একশবার শিখবেন। যার শেখার ইচ্ছে, তিনি একদম শেষ স্তর পর্যন্ত মার্শাল আর্ট শিখতেই পারেন। সে অতি উচ্চাঙ্গের ব্যাপার, আমার সে নিয়ে কোনো আপত্তিই নেই। কিন্তু দশ দিন ট্রেনিং দিয়ে "এবার খুঁটে খাও" বলাটা একটা ফলস সেনস অফ সিকিউরিটি তৈরি করে। বরং সত্যিই সেলফ ডিফেন্স ট্রেনিং দিতে হলে বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষা দিতে হয়। সেটা সম্ভবও নয়, আর কাম্য তো নয়ই।
  • সে | 94.75.173.148 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৩৩68118
  • উঃ ল্যামডা টু গুড। অনেক অনেক ক দিলাম আপনাকে।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৩৭68119
  • কিন্তু দশ দিন ট্রেনিং দিয়ে "এবার খুঁটে খাও" বলাটা একটা ফলস সেনস অফ সিকিউরিটি তৈরি করে। - একদম একমত। সেজন্যই পুলিশের ওপর ডিপেন্ড না করাটাই বোধায় ভালো। নিজের স্কুল কলেজে বা ইন্স্টিটুটে ট্রেনিং নেওয়াটাই ভালো। ওটে ঠিকমতো ট্রেনিং পাওয়া যায়। এই দশ দিনের সামার ক্যাম্প টাইপের ট্রেনিংয়ে সত্যিই কি হয় তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

    "আর দ্বিতীয় কথা ছিল, আত্মরক্ষার জন্য কি তাহলে অস্ত্র সঙ্গে রাখার নিদানও দেবেন ? আফটার অল , তাতে আত্মরক্ষা হবে। আইন হাতে তুলে নেওয়া এই প্রসঙ্গে এসেছে।"

    পেপার স্প্রে অস্ত্র তো বটেই! ব্যাগে পেপার স্প্রে তো রাখা যেতেই পারে! আর নিজেকে বাঁচানোর জন্য তো হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়া আইনত স্বীকৃত। কেউ আমাকে রেপ পরতে এলে আমি অতি অবশ্যই নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারি আর অতি অবশ্যই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারি।

    "ঘটনা হল, ছেলেরা কারাটে কুংফু শেখে, আর মেয়েদের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় শেখে। এটাও দেশেরই পরিসংখ্যান। তো, প্রশ্ন ছিল, কারাটে শেখা ছেলেরা রেপ করলে কী হবে ?"

    সত্যি তো। ক্যারাটে শেখা ছেলেরা রেপ করলে কি হবে এই নিয়ে খানিক ভাবি তাহলে।
  • সে | 94.75.173.148 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৪৭68120
  • যেকোন মার্শাল আর্টের শিক্ষায় সর্বর্প্রথম শেখায় আক্রমন না করতে। আত্মরক্ষা করাই মূল লক্ষ্য। এটা জানেন তো?
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৪৮68121
  • "সেজন্যই পুলিশের ওপর ডিপেন্ড না করাটাই বোধায় ভালো। নিজের স্কুল কলেজে বা ইন্স্টিটুটে ট্রেনিং নেওয়াটাই ভালো।"

    এই যে মডেলটা দিলেন, সেটাতেই প্রথম থেকে আপত্তি। পুলিশের উপরে ডিপেন্ড না করে নিজের আত্মরক্ষার ভার নিজে তুলে নাও। পুলিশেরও শান্তি, ঝামেলা মিটল।

    এটা আবার ঠিক ফিজিবলও না। পয়সা দিয়ে ক্যারাটে শেখার পরিকাঠামো সারা ভারতবর্ষেই খুব অপ্রতুল। লোকের ওই কাজে আলাদা করে ব্যয় করার মতো পয়সা আছে বলেও মনে হয়না। এটা ফিজিবল শুধু শহুরে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের জন্য।
  • সে | 94.75.173.148 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৬:৪৯68122
  • তা ই বা কম কীসে?
  • PP | 174.67.157.213 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৭:৪৯68123
  • ল্যামডা,
    "সেজন্যই পুলিশের ওপর ডিপেন্ড না করাটাই বোধায় ভালো। নিজের স্কুল কলেজে বা ইন্স্টিটুটে ট্রেনিং নেওয়াটাই ভালো।"
    পুলিশ তবে আছে কি জন্যে? ঘুস খাওয়ার জন্যে?
  • :( | 69.160.210.3 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৭:৪৯68095
  • সে-র লেখার কমেন্ট বলতে এইসবঃ
    ==================================

    Lama ।

    Arpan উফ্ফ্ফ্ফ।

    s দারুন লেখা। মনে মনে আমরাও সে'র সংগে ঐ হোটেলে গেছিলাম, ঐ রুমে ঢুকেছিলাম আর পালিয়ে আসছিলাম।
    জানি সব ইচ্ছে পূরণ হয় না, কিন্তু কোথাও যদি এই গপ্পোটাতে ঐ ভৈশ আর রাকেশের পশ্চাৎদেশে ক্যাঁত ক্যাঁত করে তিনটে লাথি মারার ছোট্ট একটা ঘটনা থাকত, তাহলে রাগটা একটু কমত।

    Ishani দমবন্ধ করে পড়ছিলাম | সোনার ...না না , প্ল্যাটিনামের দোয়াত -কলম হোক ! আর , দ্বিতীয় পর্ব শুরু হোক !

    Tim লেখার স্টাইল এত টানটান, আহা! সেলাম। এটা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লেখা, তাই "কোন প্রশ্ন নয়"। ফিকশন হলে ঘটনাবলী নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ও কাটাছেঁড়ার সুযোগ ছিলো। ঃ-)

    ranjan roy সেলাম!
    লেখা তো বটেই, ওই প্রেজেন্স অফ মাইন্ড, ইনিশিয়েটিভ আর অদম্য ইচ্ছে!

    lcm শেষটা যা ভাবছিলাম তাই হয়েছে।

    Amit Sengupta টানটান লেখা। UNPUTDOWNABLE. আরও চাই।

    kiki অসাধারন লেখা।

    stuti উত্তেজনায় ভরপুর টানটান লেখা ।আরও লিখুন ।
    আচ্ছা একা মিঃ ভৈশের সাথে যাবার আগে একবার মনে হল না বিপদ হতে পারে । আপনার উপস্থিত বুদ্ধি সত্যি প্রশংসনীয় ।

    BC দুর্দান্ত লেখা ! আরও 'চাগ্রীর গপ্পো' পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

    de উফ! বাঁচা গেলো --- চিন্তা ধরিয়ে দিয়েছিলেন-

    কিন্তু পার্স হারিয়ে মাস চললো কি করে? পয়সা কড়ি সব ওতেই ছিলো না?

    Atoz না না, শুধু বাসভাড়া আর সামান্য অতিরিক্ত টাকা পার্সে ছিল বললেন তো!
    বাকী টাকা ঘরেই ছিল। ঃ-)
    কিন্তু বাকী পড়া সেই গোটা মাসের মাইনেটা দিল না ভৈশ আর? মেরে দিল নাকি?
    সেইদিন ঐ ছয়তলা না সাত্তলার হোটেলঘরে ভৈশ আর রাকেশে মিলে নির্ঘাত মহিষ-ষাঁড়ের লড়াই লড়েছে। ঃ-)

    মোহর চাকরীর গপ্পো পড়ে একটা ছোট্ট ঘটনা মনে পড়ে গেল। ....

    দ একসাথে পুরোটা পড়ে ফেললাম। টইএর বিভাগ চয়নের সাথে গল্পের মিলমিশ দারুণ। পড়তে একেবারে টানটান লেগেছে।
    আমার পড়ে মনে হল এটা বোধহয় একেবারে সে'র নিজস্ব অভিজ্ঞতা নয়। আর হলেও রাশিয়া যাবার আগে।

    kiki ইয়ে, এগুলো কি সে-র নিজের গপ্পো? সে-র এই ধরনের চাগ্রী দরকার না হবার ই কথা ছিলো, যে রাশিয়া থেকে পড়াশুনা করে বাইরে কাটিয়ে এসেছে , এবং প্রখর বুদ্ধিমতি, মানে আমার তাই ধারনা আর কি। যাহোক গপ্পো হোক। আর একটু সাহস এদিকে সাপ্লায়িত হোক, সামনের বছর একাই ব্যাকপ্যাক নিয়ে বেরিয়ে পরার ইচ্ছে আছে। সবাই হাসবে , কিন্তু একা কোথাও গিয়ে এখন ও থাকিনি। বাকি সাহসিনীরাও একটুস সাহস দিও।ঃ)

    potke দ, আম্মো এটাই ভাবছিলাম ঃ), ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করা যাবে না ভেবে চেপে ছিলাম।

    Atoz পরেই, পরেই তো! গল্পের মূল চরিত্র মেয়েটি তো বিলেত টিলেত দেখে এসেছে বলছিল, সেই যে উইন্ডসর এর কথার সময়! তখন সে ভাবছিল ইংল্যান্ডে কেম্ব্রিজ আর অক্সফোর্ড দেখেছে।

    Atoz অক্সফোর্ড না, কেম্ব্রিজ আর লন্ডনের কথা ভাবছিলো। এখুনি ফিরে পড়ে দেখলাম আবার। ঃ-)

    $ রাশিয়ান ভাষায় ডায়রিও লিখেছিলো। ফ্লুয়েন্ট। আশাভঙ্গ, কি-করবো-জানি-না পাজলড অবস্থা। নিশ্চিত সোভিয়েত ভাঙার পরের। ফিরে এসে। এখন জানা যাচ্ছে সেটা ১৯৯৬। পরে। কিন্তু অবাক হচ্ছি মেয়ের উল্লেখ নেই কোথাও।

    Atoz ছিয়ানব্বুই কী করে বোঝা গেল? জন্মভূমি টিভি সিরিয়াল এর উল্লেখ থেকে?

    দ চাকরির গপ্পে খামোখা মেয়ে, ছেলে মাসি পিসে এসব থাকতে যাবে কেন? :-O

    কল্লোল আমি জানি না, কিন্তু বিশ্বাস করি এটা সে'র নিজের কথা। বিবাহবিচ্ছিন্ন একলা মায়ের ঝঞ্জাট আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। চাগ্রী? মিথ্যা তথ্য দিতে রাজি না থাকলে, চাগ্রী, বাড়িভাড়া, পাড়া, মুদীর দোকান কি কি সব হয় কিছুটা জানি। আর সে তো অবিবাহিত একলা মা।

    sosen সে তো লিখে দিয়েছেন
    " লিখবো। কিন্তু একটা কথা। এখানে সব চরিত্রই কাল্পনিক। "
    তাইলে আর রাশিয়া নিয়ে টানাটানি কেনো।
    আফটারনুনে ফোং করে কি হোলো???

    DB ঐ লোকদুটো কিছু নাই করতে পারতো। ভিলেন বানানো হচ্ছে কেন?
    ============================

    তো, এই সব পড়ে সে-র এই বক্তব্যটা বোঝা মুশকিলঃ

    "পাঠককুল খুব উপভোগ করেছিলো সেই গল্প। "লড়াইয়ের গল্প আরো আসুক" গোছের দাবী এসেছিলো। সেট পড়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। পাঠপ্রতিক্রিয়া। ফার্স্ট অফ অল এতই গাণ্ডু পাঠক যে কোনটা লড়াইয়ের গল্প আর কোনটা আয়না আর কোনটা সমাজের পোকা, তফাৎ করতে জানে না। খুব রেলিশ করছে। কেউ কেউ আবার পরমা সিনেমার দীপঙ্কর দে র সংলাপ হুবহু বলে ফেলেছিলো।
    ওকে মেরে ফেলবে?
    আরে না না!
    স্তম্ভিত লাগে। হ্যাঁ স্যার। রাগও হয়। লেখাপড়া শিখেও মানুষ কেন অ্যাতো মূর্খ, সেইটে ভেবে রাগ হয়।"
  • TB | 118.171.131.189 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৯:৫৪68124
  • তো এই হচ্ছে ব্যাপার।

    দুদলই মনে করে যে সরকার হচ্ছে একটা অপদার্থ, ঘন্চুপনা এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়।

    এখন, একদলের বক্তব্য, আমি বরং চাট্টি ক্যারাটে এবং দৌড় শিখে নি।
    আরেক্দল বলছে, সরকারকে তো পয়্সা দিচ্ছি ঐসব করে আমায় বাঁচাবার জন্যে। ঐ সময়্টায় আমি সরকারকে গুঁতোবো তারা যদি না ক্যারাটে শেখে।

    দুদলের বক্তব্যেই দম আছে। দুজনেই কাজে লেগে যান। আমার এসবের মধ্যে থাকলে চলবে না, বিস্তর কাজ আছে। এখন গুলি খেলতে যেতে হবে, তারপর আছে ইঁদুরের গর্ত খোঁজা, বেলুনবেচা বাদ দেওয়া যাবে না।
  • AP | 24.139.222.45 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৯:৫৮68096
  • সেই তো সেই সময় এই 'স্তম্ভিত' হয়ে যাবার কথা জানাননি। সেই উপভোগ সেই পাঠপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনো বিরূপ প্রোতিক্রিয় তো দেখিনি। পরবর্তী কাহিনীগুলো বেশ জমিয়েই পরিবেশন করেছিলেন। তাই নিয়ে বহু প্রশংসা স্যালুট ও পিঠ চাপড়ানিও গ্রহণ করেছিলেন। তখন পাঠককুলকে এমন মূর্খ গান্ডু ইত্যাদি কেন মনে হয়নি, সেটাই ভেবে দেখার।

    সে-র এই যা খুশি তাই বলে গালাগাল দেওয়া, মতের মিল না হলেই কাউকে ধান্দাবাজ ইত্যাদি বলা অতীব বিরক্তিকর ও আপত্তিকর।
  • আহা | 218.87.237.201 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ১১:৩০68097
  • ক্ষমার চক্ষে দেখুন মহায়রা। ওনার একেকটা ফেজ আসে এমন, হঠাৎ স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন আর প্রচীন গরল ওগরান। পরে খোঁজ নিলে দেখা যায় গরল ছিলই না অমৃতভাণ্ডে। তখন ইনি খুব রেগে বলেন - আমি আর লিখবই না, কিংবা একেবারে চুক্করে যান।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০২:০৭68125
  • কেন, অস্ত্র বলতে বন্দুক রাখা হলে অসুবিধে হয়ে যাচ্ছে, তাই না ? ঃ)

    সেটার জন্য সওয়াল করছেন না কেন, এখনো বুঝতে পারছিনা। আত্মরক্ষার জন্য এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে ?

    আর কোনটাকে সমাধানের মডেল বললে আপত্তি, কেউ নিজেরা সেগুলো করলে আপত্তি নেই, এটা বা বোঝার মত শিশি বোতল ব্যাপার তো নয়, না বুঝতে চাইলে আলাদা কথা।

    তবু আরেকবার শেষ চেষ্টা করি। কোন মেয়ে আত্মরক্ষা করার জন্য যা কিছু শিখতে পারে, তাই নিয়ে কিছু বলাই হচ্ছে না, কিন্তু আত্মরক্ষার দায় মেয়েদের উপর চাপালে আপত্তি, মেয়েরা আত্মরক্ষর জন্য কারাটে কুংফু শিখে নিক, তাহলে কমে যাবে, মেয়েদের এগুলো শেখা দরকার, শেখা উচিত, বাধ্যতামূলক, এগুলো শেখা ছাড়া আর উপায় নেই, বা এসব শেখাটাই উপায়, এইসব বললে আপত্তি।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৩৫68126
  • "পুলিশের উপরে ডিপেন্ড না করে নিজের আত্মরক্ষার ভার নিজে তুলে নাও। পুলিশেরও শান্তি, ঝামেলা মিটল।"

    শেষের বাক্যটা কেন জুড়ে দিলেন বুঝলাম না। বেশ কয়েকবার বলেছি যে পুলিশের কাজ পুলিশকে করতে হবে আর সেটা যেন করে সেই দাবীও তুঅলতে হবে। আত্মরক্ষা শেখা মানে পুলিশ নিস্ক্রিয় হয়ে বসে যাবে এটা কেন ভেবে নেওয়া হচ্ছে সত্যিই বুঝতে পারছি না। এই দুটো মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ না।

    "পয়সা দিয়ে ক্যারাটে শেখার পরিকাঠামো সারা ভারতবর্ষেই খুব অপ্রতুল। লোকের ওই কাজে আলাদা করে ব্যয় করার মতো পয়সা আছে বলেও মনে হয়না। এটা ফিজিবল শুধু শহুরে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের জন্য।"

    সব পোস্ট পড়েননি বোধায়। Comment from . on 05 October 2015 14:57:05 IST 15.2.65.224 পোস্টটা পড়ে নিতে অনুরোধ করলাম। অনেকগুলো ডিসক্লেমার দেওয়া আছে। তবে পরিকাঠামো কম এটা যেমন ঠিক, তেমনি মেয়েরা আস্তে আস্তে শিখতে শুরু করলে পরিকাঠামো বেটার হবে এটাও ঠিক। কোনকিছুই একদিনে হয়ে যায়না, ডিমান্ড আর সাপ্লাই একসাথেই এগোয়।

    "পুলিশ তবে আছে কি জন্যে? ঘুস খাওয়ার জন্যে?"

    সত্যি কঠিন প্রশ্ন। আমাদের দেশেপুলিশের ভূমিকা দেখলে মনে এই প্রশ্ন আসবেই। পুলিশের রিফর্ম আনার জন্য, বিভিন্ন অপরাধ রোধে আরো সক্রিয় হওয়ার জন্য সবাইকেই আন্দোলন করতে হবে। আর পাশাপাশি আত্মরক্ষার কৌশল জানা বা ব্যাগে পেপার স্প্রে ইত্যাদি রাখার পরামর্শ দেওয়াটাও দরকার। কারন বিপদের সম্মুখিন হয়ে পড়লে তো আর এই প্রশ্ন করে লাভ নেই, তখন নিজের লড়াই নিজেকে লড়তেই হবে।
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৪৫68127
  • "সেটার জন্য সওয়াল করছেন না কেন, এখনো বুঝতে পারছিনা"

    আপনার পছন্দমতো সওয়াল আমি কেন করবো সেটাও বুঝতে পারছিনা ঃ-)

    তবে বন্দুকের কথা আপনি তুললেন বলে জানিয়ে রাখি, পেপার স্প্রে বিক্রি লিগাল আর একবারে কেনা যায়। বন্দুক রাখতে হলে লাইসেন্স লাগে, সেটা বেশ দীর্ঘ আর জটিল প্রক্রিয়া। আরেকবার ডিসক্লেমার দিয়ে দি, আপনি বন্দুকের কথা তুললেন বলেই এটা লিখলাম।

    "কিন্তু আত্মরক্ষার দায় মেয়েদের উপর চাপালে আপত্তি" - কেউ চাপাচ্ছে নাকি? আমি তো চাপাইনি। আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি যে আত্মরক্ষার কৌশল শেখাটা বাধ্যতামূলক না। কেউ চাইলে শিখবে, কেউ না চাইলে শিখবে না।

    " মেয়েদের এগুলো শেখা দরকার, শেখা উচিত, বাধ্যতামূলক" - আমি বলিনি, আপনি তর্কের সুবিধের জন্য এগুলো চাপাচ্ছেন।

    "এগুলো শেখা ছাড়া আর উপায় নেই, বা এসব শেখাটাই উপায়" - আমি বলিনি, আপনি তর্কের সুবিধের জন্য এগুলো চাপাচ্ছেন।

    আত্মরক্ষার নানান কৌশল আছে, শুধু ক্যারাটে বা পেপার স্প্রে না, অনেক ভাবেই নিজেকে বাঁচানো যায়। সেগুলো শেখার পরামর্শ দেওয়া যেতেই পারে। (বাধ্যতামূলক না, পরামর্শ)। এই সব কিছুর পরেও পুলিশের দায়িত্ত্ব অপরাধ কমানো। যারা আত্মরক্ষার কৌশল শিখেছেন আর যারা শেখেননি সবাইকেই প্রোটেকশন দেওয়া পুলিশের কর্তব্য, এতে কোন দ্বিমত নেই। তবে যারা আত্মরক্ষার কৌশল শিখছেন তারা কোন বিপদে পড়লে যে নিজেদের বাঁচানোর সঠিক চেষ্টা করতে পারবেন তাতেও কোন দ্বিমত নেই।

    আমি যে কথাগুলো বলিনি সেগুলো আমার মুখে না ব্সানোর অনুরোধ করলাম (দাবী না)।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৫৭68128
  • এই টইতে খালি আপনাকে লিখছি, এরকম ভেবে নিলেন কেন বলুনতো ?
    সব কথা নিজের গায়ে টানবেন না, দেখবেন, নিজের মুখে কথা বসনো মনেও হচ্ছে না। ঃ)
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:০৯68129
  • ওহো তাহলে তো কোন অসুবিধা নেই। তবে Comment from pi on 07 October 2015 07:37:18 IST এটা বোধায় আমাকেই করা হয়েছিল কারন অস্ত্রের কথাটা তার আগের আমার পোস্ট ধরেই এসেছে। আমার বুঝতে ভুলও হতে পারে।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:১৮68130
  • অস্ত্রর কথা নিয়ে তো আপনি বলেননি ওটা আপনার মুখে বসানো হয়েছে।

    আর যা যা নিয়ে আপত্তি করেছি, সেগুলো শুধু নানা জায়গাতেই না, এখানেই ( এই ব্লগ ও অন্যান্য টই, ভাট) অনেকে লিখে গেছেন। আশা করি, সেগুলো নিয়ে আপত্তি থাকলে সেটা লিখতে পারি। এই ইস্যুতে কোথায় কেন আপত্তি। আশা করি, তাতে আপত্তি করবেন না ঃ)
  • /\ | 152.4.206.228 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:২৪68131
  • আসল বিষয় ছেড়ে পরস্পর দ্বন্দের দিকে এগোচ্ছে, তাই আপাতত আমার দিকে থেকে আর কিছু অ্যাড করার নেই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন