এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • গণিত, সৌন্দর্য্য ও অমরত্ব

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ৩১ মে ২০১৪ | ৫৯৯৪ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • আমি গণিতবিদ নই – কিন্তু গণিত ভালোবাসি। গণিতজ্ঞদের দিকে তাকাই সম্ভ্রমের চোখে – আর ঠিক এই কারণেই পাশের গ্রামে ফিরোজ, বন্ধু সুমন এরা ছিল আমার ঈর্ষা মিশ্রিত বিষ্ময়ের পাত্র। তাই এই লেখা শুরু করার আগেই সাফাইটা গেয়ে দিই – বলে রাখি যে এই প্রবন্ধ কোন নতুন তথ্য দেবার জন্য নয়, নয় কোন গালভরা গবেষণার গল্প বলার জন্য। এটা নিছকই সেই সব তথ্য, ঘটনা আর নাম সমৃদ্ধ, যা অনেক সময় আমরা খেয়াল করি না। অর্থাৎ ধরুন আপনি নিজের জামাটি রোজ পড়েন, কিন্তু সেই জামায় কয়টা বোতাম আছে তা কখনো খেয়াল করেছেন কি? এই লেখাও তেমন হবে আর কি! কিছু বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে গেলে ভুগতে হয় তথ্যে অপ্রতুলতায় – কিন্তু গণিত নিয়ে লিখতে গেলে ব্যাপারটা উলটো। এখানে তথ্যের প্রাচুর্য্য এতো বেশী যে সংক্ষেপে কিছু লেখাই মুশকিল! প্রচুর বই, রিপোর্ট, জার্নাল ছাড়াও তো আজকাল হাতের কাছে রয়েছে ইন্টারনেট! তাই অনুমান করছি যে এখানে যা লিখব তার অনেক কিছুই আপনারা ইন্টারনেট থেকে যাচাই করে নিতে পারবেন। অনেকের মত আমারও ছিল গণিতবিদদের জীবন নিয়ে একটা কৌতূহল – কেমন করে তাঁরা কাজ করেন, বাস্তবের সাথে তাঁদের যোগ কতখানি বা তাঁদের গবেষণা আমাদের জীবনের সাথে কতটা সরাসরি যুক্ত – এই সব প্রশ্ন ভাবতে ভাবতেই এই লেখার সূত্রপাত।

    কোনখান থেকে শুরু করবে বুঝতে পারছি না। সমস্ত বিজ্ঞানীদের মধ্যে যাঁরা গণিতের সাথে যুক্ত তাঁদের নিয়ে এত উপকথা, এত রটনা যে তার থেকে কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যে খুঁজে বের করাই মুশকিল। তাহলে আসুন একটা গল্প দিয়েই শুরু করা যাক।

    এক মনোরম গ্রীষ্মের সকালে তিন বন্ধু মিলে স্কটল্যান্ডের এক গ্রামের ধার দিয়ে ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন। বন্ধুদের মধ্যে একজন ছিলেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানী, এক জন পদার্থবিদ ও অপর জন গণিতজ্ঞ। হঠাৎ ট্রেনের পাশে মাঠে চরতে থাকা একটি কালো ভেড়াকে দেখে জ্যোর্তিবিজ্ঞানী বলে উঠলেন – কি আশ্চর্য!, স্কটল্যান্ডের সব ভেড়াই দেখি কালো। এই কথার প্রতিবাদ করে পদার্থবিদ বলে উঠলেন – না, না – স্কটল্যাণ্ডের কেবল কিছু ভেড়ার রঙ কালো। এইসব শুনে তাঁদের গণিতজ্ঞ বন্ধু আকাশের দিকে তাকিয়ে গম্ভীরভাবে বলে উঠলেন – এই ভেড়াটা দেখে আমরা কেবল এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, স্কটল্যান্ডে একটা মাঠ আছে ন্যূনতম পক্ষে, সেই মাঠে একটা ভেড়া চড়ে বেড়াচ্ছে, যেই ভেড়ার একটি দিক ন্যূনতম পক্ষে কালো।

    গণিতবিদ মানেই খুঁতখুঁতে, বাস্তবের সাথে যোগহীন, আপন ভোলা একটি মানুষের ছবি আমাদের মনে ভেসে ওঠে। এটা অনেক সময় সত্যি – আবার অনেকের ক্ষেত্রে নয়। স্বল্প পরিসরে ইতিহাস বলা সম্ভব নয়, এমন কি বিখ্যাত গণিতজ্ঞদের কেবল নাম মাত্র উল্লেখ করতে গেলেই অনেক জায়গার দরকার হবে। তাই আমরা এই আলোচনতে কেবল ‘সংখ্যাতত্ত্বের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকব। অনেকের মতে গণিতের এই শাখাটাই নাকি সবচেয়ে আকর্ষনীয়। হতেও পারে বা, তবে যেটা অনস্বীকার্য সেটা হল আমাদের জীবনে সংখ্যার অবদান। সেই বিষ্ময়কর সাদৃশ্য নিয়ে আমরা পরে বিস্তারিত আলোচনাতে যাব।

    মানুষ চিরকাল ধরে গণিত সমন্ধীয় দুটি অনন্ত জিজ্ঞাসা নিয়ে বসে আছে – গণিতের প্রকৃতি (Nature of Mathematics) আর গণিতের দর্শন (Philosophy of Mathematics)। বিজ্ঞানের যে কোন শাখার এবং তার সাথে গণিতেরও বিশেষ কোন প্রশ্নের উৎপত্তি জানতে হলে আমাদের সেই প্রাচীন যুগে ফিরে যেতেই হবে। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে, যেই সভ্যতা যত উন্নতি করেছে তার মনে ছিল ততই অনুসন্ধিৎসা আর নতুন কিছু খুঁজে বার করার উদগ্র ইচ্ছা। গণিতের উন্নতিতে সেই রকমই প্রাচীন দুটি সভ্যতা ছিল মিশরীয় এবং ব্যাবিলনীয়। সংখ্যাতত্ত্বেই হোক আর জ্যামিতির কোন বিষয়েই হোক, এদের ভিত্তি এখনও অনেক সময় সেই হাজার হাজার বছর আগেই আবিষ্কৃত তত্ত্বের উপর নির্ভর করে। আর ঠিক এখানেই প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার অবদানও কম নয়। আমার তো মাঝে মাঝে এখনও শূন্য লেখার সময় অবচেতন মনে গর্বিত হয়ে উঠি এই ভেবে যে এটা আমাদেরই দান! সে যাই হোন, আরও অনেক কিছু সাথে মানুষ জিজ্ঞাসা করে এসেছে যে – গণিত কি উদ্ভাবিত (invent) হয়েছিল নাকি মানুষ কেবল সংখ্যাগুলো আবিষ্কার (discover) করেছিল?

    গণিতের উন্নতি কি মানুষের চিন্তাধারার উপর নির্ভর করেই না করেই হয়ে চলেছে? এর উত্তর হয়তো কোনদিনও সম্পূর্ণ ভাবে পাওয়া যাবে না। তবে কোন এক বিখ্যাত মনীষী সুন্দরভাবে বলেছিলেন, “তুমি একজন দার্শনিককে জিজ্ঞাসা কর যে ‘দর্শন’ কি? বা একজন ঐতিহাসিককে ‘ইতিহাস’ কি? এবং তুমি দেখবে যে, এর উত্তর দিতে তাদের কোন অসুবিধাই হচ্ছে না। এদের মধ্যে কেউই তার নিজের বিষয়ে এগোতে পারবে না যদি সে না জানে কিসের সন্ধানে সে ঘুরছে। এবার সেই একই প্রশ্ন কর একজন গণিতবিদকে, ‘গণিত’ কি? সে যদি সত্যিই সৎ উত্তর দেয় তাহলে দেখবে সে বলছে এই প্রশ্নের উত্তর সে জানে না, কিন্তু এই না জানা তাকে গণিত নিয়ে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে না। এর থেকে বড় কথা আর কি হতে পারে?”

    আমি হয়তো অঙ্ক তত ভালো জানি না – কিন্তু তাতেও তো এই প্রবন্ধে অঙ্ক নিয়ে ধস্তাধস্তি আটকাচ্ছে না!

    এটাতো আমরা সবাই জানি যে, লক্ষ্য ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না – অনন্ত তার জিজ্ঞাসা আর অনন্ত তার উৎসাহ। সেই কবে থেকেই আমরা চলেছি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে। আগে মানুষ প্রকৃতিকে ঈশ্বর বলে পূজা করেছে, তারপর যত দিন গেছে প্রকৃতির খেয়ালিপনার উত্তর খুঁজতে আমরা নিয়োজিত হয়েছি। প্রকৃতি কি সত্যই কোন সূত্র মেনে চলে? সেই প্রাচীনকাল থেকে আজকের Theory of Everything পর্যন্ত আমরা সেই চরম সত্যের সন্ধানে ব্যপৃত। আর সেই সন্ধানে আমাদের হাতিয়ার হল গণিত। খাতার উপর ছোট ছোট আঁকা আঁকি আমাদের বলে দেয় পদার্থের চরম কাঠামো, গ্রহতারার গতিপথ, এমন কি আমাদের দেহের গঠনও। এগুলো সবই ঘটনা আর তার কারণ হতে পারে, কিন্তু ব্যাখ্যা নয়। কেন মেনে চলবে গ্রহ-তারা, অণু-পরমাণু আমাদের গ্রথিত সূত্র? কেন পৃথিবী নাচবে গণিতের সাথে তাল দিয়ে? এগুলো কি কেবলই ঘটনার সমানুপাত, নাকি অন্য কোন গোপন যোগ সত্যি আছে এদের মধ্যে? বাস্তবের একটা অভ্যাসই হল মানুষের কল্পনার সাথে পাল্লা দেওয়া – আমরা যে পরিকল্পনা করেছি তার থেকে বিচ্যুত হওয়া। কিন্তু একমাত্র গণিতি মনে হয় সেই নিয়মের বিষ্ময়কর ব্যতিক্রম যা কিনা নিয়মটাকেই প্রমাণ করে। গণিতের সূত্র মেনেই চারশো বছর পর ধূমকেতু আবার দেখা যায় তার চিহ্নিত জায়গায়। তাহলে নিয়মটি কি? এই সব ভেবেই কি আমরা আজও এই প্রবাদ বাক্যটি ব্যবহার করি – Mathematics is the finest language in the world?

    পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সংখ্যা-পাগল গোষ্ঠীর খোঁজ পাওয়া যায় গ্রীসে খ্রীঃ পূঃ ষষ্ঠ ও পঞ্চম শতাব্দীতে। আমরা আধুনিক দুগে কম্পিউটারের সামনে বসেও মাঝে মাঝে সংখ্যার আচরণে ঘাবড়ে যাই, তা হলে সেই প্রাচীনকালে লোকেরা সংখ্যা নিয়ে আদিখ্যেতা করবে এতে আর আশ্চর্য কি? গ্রীসের ঐ প্রাচীন গোষ্ঠীকে বলা হত পিথাগোরিয়ান। এরা সংখ্যার ব্যবহারে এতই চমৎকৃত ছিল যে জীবনের সবকিছুই এরা সংখ্যা দ্বারা চালিত বলে মনে করতে শুরু করে। এদের বিশ্বাস ছিল প্রত্যেক বস্তুই আদতে সংখ্যা এবং এই সব সংখ্যা হল বাস্তবের মূল ভিত্তি। সমস্ত জিনিসই নাকি সংখ্যার সাহায্যে বিশ্লেষণ করা যাবে, কিন্তু সংখ্যাকে আর অন্য কিছু দিয়ে বিশ্লেষণ করা যাবে না! এ সেই অনেকটা ভগবান বিশ্বাসের মত ব্যাপার। সব কিছুই ভগবানের সৃষ্টি – তাহলে ভগবানের সৃষ্টিকর্তা কে? এদের বিশ্বাস মত কেবলমাত্র কোন বিশেষ বস্তু গণিতের সূত্র মেনে চলে তা নয় – সমগ্র জগত, তাতে প্রত্যেক বস্তুই সংখ্যার দ্বারা চালিত। এ পর্যন্ত ঠিক ছিল, কিন্তু এরা এরপর ‘ন্যায়বিচার’, ‘সুযোগ’ – এই সব অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিসও সংখ্যা দিয়ে ব্যাখ্যা শুরু করে। এর পর বলাই বাহুল্য এদের পিথাগোরাস ভ্রাতৃসংঘ বেশীদূর এগোয় নি। যদি সত্যই সবকিছু সংখ্যা স্বারা নির্মিত হয়, তাহলে বাস্তবের সঠিক প্রকৃতি বোঝার জন্য আমাদের দরকার হবে সংখ্যাদের চর্চা, তাদের ধর্ম, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদি। এগুলো হতেই পারে আমাদের দৈনন্দিন কাজের সাথে সম্পর্ক-বিবর্জিত, যাকে আজকাল Pure Mathematics বলা হয়। তবে পিথাগোরাস সংঘের মূল দূর্বলতা ছিল সংখ্যাদের জীবিত বস্তুর মত বিচার করা।

    এর পর আসে Platonism – যে মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন প্লেটো। এর মূল ভিত্তি ছিল তাঁর বিশ্বাস যে, আমরা গণিতের তত্ত্ব আর সত্যতা কেবল খুঁজে বের করি মাত্র। সংখ্যারা আমাদের আবিষ্কার নয় – তারা আগে থেকেই বর্তমান, সেই কোন দ্বীপ আবিষ্কারের মত। এই সব দেখে শুনেই মনে হয় চার্লস ডারউইন মন্তব্য করেছিলেন, “গণিতজ্ঞ একজন অন্ধ ব্যক্তি মাত্র – যে অন্ধকার ঘরে একটি অস্তিত্ত্ববিহীন কালো বেড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে”।

    তাহলে সংখ্যদের এমন কি বৈশিষ্ট যে প্রাচীনকাল থেকে মানুষ তার উপর এত আকর্ষণ বোধ করে আসছে? কিছু নমুনা দেওয়া যাক বিশ্লেষণ করে। আসুন একটা সংখ্যা শ্রেণী লিখে ফেলি,

    [ক্রমশঃ]
    1, 1, 2, 3, 5, 8, 13, 21, 34, 55, 89 …

    চেনা চেনা লাগছে? এই শ্রেণীটিকে বলা হয় Fibonacci’s series। লিওনার্দো ফিবোনাচি এই শ্রেণীটি প্রথম আবিষ্কার করেন। এই শ্রেণীর একটা সংখ্যা পাওয়া যায় তার ঠিক আগের দুটিকে যোগ করে। যেমন, 1 + 1 = 2, 1 + 2 = 3, 3 + 5 = 8, 5 + 8 = 13 ইত্যাদি।

    দেখতে এমনিতে সাদামাটা, কিন্তু মজা হচ্ছে কোন সংখ্যাকে তার আগেরটা দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যাবেঃ

    2/1=2.0, 3/2 = 1.5, 5/3=1.67, 8/5=1.6, 13/8=1.625, 21/13=1.615, 34/21=1.619, 55/34=1.618, 89/55=1.618

    সংখ্যাদের মান যত বড় হবে, অনুপাত ততই এগিয়ে আসবে নির্দিষ্ট মানে – যেটা হল 1.618 । এই সংখ্যাটাকে বলা হয় Golden Ratio (স্বর্ণ অনুপাত)। এই সংখ্যা আমাদের জীবনে এবং চারপাশের জিনিসের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে আছে যে এটাকে মনে করা হয় ভগমানের সৃষ্টি। গাণিতিক উপায়ে পাওয়া যেতে পারে একটা সরলরেখাকে ভাগ করে। একটা সরল রেখাকে বড় আর ছোট ভাগে ভাগ করা হল। ভাগটা এমন ভাবে হওয়া চাই যেন ছোট ভাগের সাথে বড় ভাগের অনুপাত, বড় ভাগের সাথে সম্পূর্ণ সরলরেখার ভাগের অনুপাতের সমান হয়, অর্থাৎ, a/b = (a+b)/a = 1.618 [দেখুন সাথের ছবি 1A]।

    <[url=

    <

    1.618 সংখ্যাটির মজা হচ্ছে এটি দিয়ে 1 কে ভাগ করলে পাওয়া যায় (1/1.618) = 0.618

    প্রাচীন গ্রীসে এই সংখ্যার আকর্ষণ এতই বেশী ছিল যে স্থপতিরা এটি তাদের কাজে ব্যবহার করতে শুরু করেন। সবচেয়ে বড় উদাহরন হল পার্থেনন। আমরা সবাই এর ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখেছি [দেখুন সাথের ছবি 1B]। এখন যদি একটা কল্পিত আয়তক্ষেত্র আঁকা হয় এর সবচেয়ে বাঁ দিকের থাম বা পিলার থেকে ডানদিকের থাম এবং নীচ থেকে চূড়া পর্যন্ত, তাহলে দেখব সেই আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত প্রায় 1.618। এছাড়া পার্থেননের একদম সামনে কিছু আয়তক্ষেত্র দেখা যায় যাদের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের অনুপাতও Golden Ratio –র কাছাকাছি।

    শুধু স্থাপত্যশিল্প নয়, চিত্রকলাতেও এই অনুপাতের ব্যবহার অনেক। এমন শোনা যায় লিওনার্দো দা ভিঞ্জি নাকি এই ‘অনুপাত’ একান্তই ভালোবাসতেন। তার প্রমাণ পাওয়া যায় অবশ্য সেই বিখ্যাত ‘মোনালিসা’ ছবিতে। ছবিটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 1.618 [দেখুন সাথের ছবি 1C]। তাছাড়া যদি একটি আয়তক্ষেত্র আঁকা হয় মোনালিসার ঠিক মুখমণ্ডলে তবে তার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত হবে সেই Golden Ratio। এছাড়া আরো অনেক বিখ্যাত ছবিতেও (যেমন লাষ্ট সাপার, দ্যা সেইন্ট) Golden Ratio ব্যবহার লক্ষণীয়।

    এতো না হয় গেল মানুষের এই অনুপাত ব্যবহারের কথা। প্রকৃতিতেও Golden Ratio এত জায়গাতে চোখে পড়ে যে, মাঝে মাঝে সত্যই ভাবতে ইচ্ছে করে ভগবান একজন গণিতজ্ঞ! Golden Ratio মনে হয় প্রকৃতিরও ভালোবাসার সংখ্যা। আর এটাও ঠিক যে, যে সমস্ত আকার Golden Ratio মেনে চলে – সেগুলি বেশ নয়ন সুখকর হয়। কেন? আমি জানি না – হয়ত বা কেউই না!

    শামুক, শাঁখ দেখেছেন তো? শাঁখের পেঁচানো আকৃতি তো দেখতে বেশ লাগে। আসুন দেখি যে Fibonacchi series থেকে কি করে এমন আকার আসতে পারে। প্রথমে একক দৈর্ঘ্যের একটি বর্গক্ষেত্র আঁকুন। তারপাশে আরেকটা। তাহলে পাশাপাশি দুটি বর্গক্ষেত্রে মোট দৈর্ঘ হল দুই একক। আবার দুই একক বাহু বিশিষ্ট একটি বর্গক্ষেত্র আঁকুন ঠিক ওদের উপর। তাহলে এখন একটি নতুন বর্গক্ষেত্র হল যার বাহুর দৈর্ঘ্য হল তিন একক। এই ভাবেই এঁকে যান। এবার সাথের ছবি 1D এর মতন কোন গুলি পরস্পর যোগ করুন। কি পাচ্ছেন? একটা শাঁখের আদল না?

    আমরা তো পাইন গাছের ফুল দেখেছি (Pine Cone), কেমন সব চক্রাকারে সাজানো থাকে। যদি একটি বিশেষ চক্র (spiral) ধরে গুণতে থাকেন, তাহলে দেখবেন ওরা সংখ্যায় 21, 34, 55 ইত্যাদি – আশ্চর্য্য না? শুধু তাই না – যদি মাছ, ফড়িং, কচ্ছপ, পাখী এদের চারিদিকে একটি আয়তক্ষেত্রে আঁকেন, তাহলে অনেকক্ষেত্রে দেখা যাবে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 1.618, অর্থাৎ জীবজগতের অনেক প্রাণীর আকারই Golden Ratio অনুযায়ী!
    মানুষের এক প্রিয় সহচর ঘোড়া – তার শরীরে তো Golden Ratio-র ছড়াছড়ি।

    অন্য অনেক প্রাণির মত মানুষের দেহেও Golden Ratio-র ছাপ রয়ে গেছে। সাথের ছবি 1E থেকে বোঝা যায় আমরা কতখানি সংখ্যার দ্বারা চালিত। কিছু কিছু হলিউডের তারকাকে (বা তাদের মুখের) বিশ্লেষণ করে Perfect Face বলা হয়ে থাকে। সেই Perfect Face-এও স্বর্ণ অনুপাত। মুখের লম্বা ও চওড়ার অনুপাত বিষ্ময়কর ভাবে Golden Ratio মেনে চলে।

    কত উদাহরণ দেব? কত সোসাইটি তৈরী হয়েছে যারা এই Golden Ratio-র উপস্থিতি খুঁজে বেড়াচ্ছে আমাদের চারিদিকে এবং আমাদের মধ্যে। যাঁরা এই বিষয়ে বিশদ জানতে ইচ্ছুক তাঁরা কেবল google.com এ গিয়ে Golden Ratio কথাটি টাইপ করে দেখবেন। তথ্যের ঠেলায় অস্থির হয়ে উঠবেন। তবে আন্তরিক পরামর্শ দেব যে, বেশী ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না – ভগবানে বিশ্বাসী না হলে এরপর থেকে বিশ্বাসী হতে শুরু করবেন। আমাদের চারপাশ ঠিক ছিল, কিন্তু আমাদের ভিতর নিয়ে টানাটানি করে তাঁরা কি বের করেছেন তার কিছু উদাহরন দেবার লোভ সামলাতে পারলাম না। আমাদের কান টেনে দেখানো হয়েছে কানের স্পাইরালটা Fibonacci series থেকে পাওয়া। DNA-এর প্রস্থচ্ছেদ করেছেন – তাতে নাকি Golden Ratio! তবে হৃদয়ের যে ধাক্কাটি সামলাতে পারি নি, সেটা হল Heart Beat এর বিশ্লেষণ! এতেও Golden Ratio [দেখুন সাথের ছবি 1F]। । এঁরা বনে জঙ্গলে তছনছ করে Golden Ratio-র প্রয়োগ খুঁজছেন। হাতের কাছে সূর্যমুখীর spiraling গুণে গুণে দেখিয়েছেন তাতে হয় 34 নয় 55 টা spiral আছে। বাকি কিছু উদাহরন,

    ৩ পাপড়ি যুক্তঃ লিলি, আইরিস
    ৫ পাপড়ি যুক্তঃ বাটারকাপ, ওয়াইল্ড রোজ, লার্কস্পার
    ৮ পাপড়ি যুক্তঃ ডেল্‌ফিরিয়ামাস
    ১৩ পাপড়ি যুক্তঃ কর্ণ মেরিগোল্ড, সিনেরারিয়া, রোগওয়ার্ট
    ২১ পাপড়ি যুক্তঃ ব্ল্যাক-আইড সুজান, অ্যাষ্টার
    ৩৪ পাপড়ি যুক্তঃ প্ল্যান্টেইন, পাইরেথ্রাম

    এদের বেশীর ভাগই আমি চোখে দেখি নি, আপনিও না দেখে থাকলে ঘাবড়াবার কিছু নেই, তবে এরা সত্যিই আছে। ছবি দেখতে চাইলে চলে যানঃ

    http://www.math.smith.edu/~phyllo/Gallery/Pages/Frameset.htm

    সংখ্যা নিয়ে আলোচনায় আবার পরে ফিরে আসা যাবে – এবার একটু মুখ ফেরানো যাক গণিতবিদদের দিকে। এই স্বল্প পরিসরে কারও জীবনী বর্ণনা করা যাবে না আর সেটাই ইচ্ছেও নেই আমার। তাই আসুন কিছু গালগল্প করে সময় কাটানো যাক। এই ইন্টারনেট প্রসারের সাথে সাথে মানুষের একটা প্রবণতা চলে এসেছে ভোটাভুটি করার। কম সময়ে বেশী লোকের কাছে পৌঁছবার কুফল আর কি! সব বিষয়েই ভোট – শতাব্দীর সেরা অভিনেতা, সেরা খেলোয়াড়, সেরা মণীষী, সেরা সব কিছু বেছে নেবার প্রতিযোগীতা। তাই সেরা গণিতজ্ঞ বিষয়টাই বা বাদ থাকে কেন! কিছু কাল আগে নাকি এই রকম একটা ভোটাভুটি হয়েছিল সর্বকালের সেরা তিন গণিতজ্ঞ বেছে নেবার জন্য। এক বাছাটা বেশ বিতর্কিত হয়ে যেত বলেই মনে হয় এই তিনজন বেছে নেওয়া হয়। অনুপান করতে পারেন এই তিনজন কারা হতে পারেন?

    সবচেয়ে আশ্চর্য হল এই বেছে নেওয়া নিয়ে বেশী বিতর্ক হয় নি – মানে সিদ্ধান্তটা সর্বসম্মতই বলা যায় আর কি! প্রথম দুজনের নাম অনুমান করা খুব একটা কঠিন নয়। প্রথম জন আর্কিমিডিস (২৮৭ খ্রীঃ পূঃ – ২১২ খ্রীঃ পূঃ), দ্বিতীয় জন নিউটন (১৬৪২-১৭২৭) আর তৃতীয় জন হলেন গাউস বা গস্‌ (১৭৭৭-১৮৫৫)। প্রথম দুজনকে আমরা প্রায় সবাই ছেলেবেলা থেকে নাড়াচাড়া করে আসছি। একদম ছোটবেলায় তাদের গল্প আর তার পরে তাদের আবিষ্কৃত সূত্র নিয়ে আমরা কিছু না কিছু মাথা ঘামিয়েছিলাম। তৃতীয়জন হয়ত তেমন পরিচিত নন আপমর জনসধারণের কাছে। আর্কিমিডিস আর নিউটন নিয়ে নতুন করে বলবার মত গল্প আমার কাছে নেই। তাই গস্‌কে নিয়েই একটু ফেনানো যাক। ও হ্যাঁ, শুধ একটা কথা – বই পত্র পড়ে যা জানা গেছে তাতে করে এই প্রমাণিত হয় আমাদের মনের ভিতর আঁকা গণিতবিদের ছবিটা নিউটনের সাথে ঠিক খাপ খায় না! নিউটন আপন ভোলা ছিলেন না, ছিলেন না অগোছালো। বরং তিনি ছিলেন এর ঠিক উলটো! নিজের কাজ সম্পর্কে অনেক সচেতন ছিলেন তিনি। আর তাঁর গোছালো স্বাভাবের জন্য আখেরে আমাদের লাভই হয়েছে! গোছালো না হলে কেউ কি ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা’র প্রথম পান্ডুলিপি দূর্ঘটনা বশতঃ আগুনে পুড়ে গেলে, আবার নতুন করে পুরোটা লেখেন!

    কার্ল ফ্রেডরিক গস্‌ জন্মগ্রহন করেন ১৭৭৭ সাথে এক দরিদ্র পরিবারে। এক কথা প্রায়শই বলা হয়ে থাকে যে যাঁরা পরবর্তী জীবনে অসাধারণ হবেন তাঁরা নাকি ছেলেবেলা থেকেই তার নিদর্শন দিতে শুরু করেন। গস্‌ও এর ব্যতিক্রম নয়। তিনি নাকি মাত্র তিন বছর বয়সেই বাবার হিসাবের ভুল ধরেছিলেন। তবে সবচেয়ে মজার গল্পটা হল গসের যখন ছয়-সাত বছর বয়স তখন স্কুলের ক্লাসে খুব বদমাইশি করেছিলেন। মাষ্টার মশাই বিরক্ত হয়ে বলেন সব ছেলে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত যোগফল বার করার পর আবার খেলতে যেতে পারবে। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে এই কঠিন অঙ্ক ঐ বাচ্চাদের অনেকক্ষণ ব্যস্ত রাখবে। তাঁকে অবাক করে দিয়ে গস্‌কে খানিক পরেই মাঠে খেলা করতে দেখা যায়। মাষ্টার মশাই জানতে চান গস্‌ যোগ করেছিলান কিনা? দ্রুত জবাব আসে গসের কাছ থেকে যোগফল হল ৫০৫০। বিষ্মিত হয়ে তখন মাষ্টার মশাই জানতে চান এত তাড়াতাড়ি গস্‌ এটা করলেন কিভাবে! গস্‌ নাকি এটা খুবই সোজা ভেবেছিলেন। তিনি যোগ করেছিলেন এই ভাবে –

    [ক্রমশঃ]

    [url=



    প্রথম একটি লাইন ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত লিখে, তারপর ঠিক তলায় ১০০ থেকে ০ পর্যন্ত লিখেছিলেন।

    ০ ১ ২ --- ৯৮ ৯৯ ১০০
    ১০০ ৯৯ ৯৮ --- ২ ১ ০

    এখন প্রতিটি কলামের যোগফল হচ্ছে ১০০। তাহলে ১০১ টি কলামের মোট ১০১*১০০, আর প্রতিটি কলাম পুনরাবৃত্ত হয়েছে, অতএব ২ দিয়ে ভাগ। এই ভাবে মোট যোগফল (১০১*১০০)/২ = ৫০৫০ – খুবই সহজ!

    রহস্যময় আচরণে কিন্তু গস্‌ গণিতজ্ঞ হবার সব শর্তই পূর্ণ করেছিলান। তাঁর মৃত্যুর ৪৩ বছর পর একটি ডায়েরী উদ্ধার করা হয় তাঁর নাতির কাছ থেকে। এই ডায়েরীতে ১৪৬ টি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য লেখা ছিল যেগুলি গস্‌ জীবিত অবস্থায় কোনদিন প্রকাশ করেন নি। পরে দেখা গেছে বিংশ শতাব্দীর অনেক বড় বড় গাণিতিক তত্ত্বই নাকি এই ডায়েরীর সাথে কোন না কোন ভাবে যুক্ত। ডায়েরী প্রকাশ না করে তবে কি গণিতের অগ্রগতি কয়েক বছর পিছিয়ে দিয়েছিলেন গস্‌? তাঁর বিস্তৃত অবদান লেখা এখানে সম্ভব নয় লেখা, হয়ত আরো অনেক বছর লাগবে গস্‌কে পরিপূর্ণ ভাবে জানতে। সব ভেবে দেখেই বোধ হয় এই প্রতিভাবানকে Prince of Mathematician বলা হয়ে থাকে। গণিতের অন্য শাখার মত সংখ্যাতত্ত্বেও গস্‌ এর অবদান অবিষ্মরণীয়।

    এবার তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে বিজ্ঞানের অন্য শাখায় না হয় কৃতিত্বের পুরস্কার স্বরূপ নোবেল পুরস্কার আছে, গণিতের বেলায় তেমন কিছু চালু আছে কি? ছোটবেলায় আমরা সবাই জানতাম নোবেল প্রাইজের তালিকায় গণিত বিষয়টি নেই। একটু বড় হবার পড় জানতে ইচ্ছে করত কেন নেই! অনেক গল্প চালু আছে এই নিয়ে। সেগুলির সংক্ষিপ্ত সার হলঃ

    •আলফ্রেড নোবেল নাকি গণিত বা Theoretical Science নিয়ে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন না।
    •নোবেল পুরস্কার কেবল মাত্র সেই সব আবিষ্কারকেই যাদের সঙ্গে মনুষ্য সভ্যতার Practical যোগ আছে।
    •আলফ্রেড নোবেল নাকি প্রেমে ব্যর্থ হয়ে গণিতের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলান। তিনি যাকে ভালোবাসতেন সেই মেয়েটি নাকি একজন গণিতবিদকে বিবাহ করে। তাই নোবেল গণিতকে পুরষ্কারের তালিকার বাইরে রেখেছিলেন।

    এই সবের সত্য মিথ্যা হয়তো কোন দিনই যাচাই করা যাবে না, তবে লোকপ্রবাদের পাল্লায় তৃতীয় কারণটাই ভারী!

    আর একটু বড় হয়ে জানতে পরেছিলাম যে গণিত শাখায় নোবেল পুরস্কারের সমতূল্য হচ্ছে Field Medal যেটা International Mathematical Union -এর পক্ষ থেকে প্রতি চার বছর অন্তর এক বা একাধিক গণিতজ্ঞকে দেওয়া হয় তাঁদের কৃতিত্বের জন্য।
    এছাড়াও অনেক পুরস্কার চালু আছে যেগুলি পাওয়া যেতে পারে কোন একটি বিশেষ সমস্যা সমাধানের জন্য। যাঁরা উৎসাহি তাঁরা এই ওয়েবসাইটে খোঁজ নিতে পারেনঃ



    এখানে একটি পুরস্কারের তালিকা আছে যেটিকে বলা হয় Clay Institute Millennium Prize Problems. সমস্যাগুলির মধ্যে Riemann Hypothesis –ও আছে। এটি বর্তমান আধুনিক সভ্যতার একটি বিশেষ অঙ্গ কম্পিউটার এর সাথে যোগ রাখে বলে এটিকে নিয়ে আমরা ঈষৎ নাড়াচাড়া করব। কিছু বছর আগে পর্যন্ত যে তিনটি সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক ব্যক্তি মাথা ঘামিয়েছেন, সেগুলি হল Fermat’s Last Theorem, Riemann Hypothesis আর Goldbach Conjecture। এর মধ্যে Fermat’s Theorem কিছু বছর আগে প্রমাণ করেছেন অ্যান্ড্রু ওয়াইল্‌স। তিনি এই সমস্যা সমাধানের জন্য পেয়েছেন Wolfskehl Prize – যার পুরস্কার মূল্য ১০০,০০০ জার্মান মার্ক। অনেকেই জানেন Fermat Last Theorem কি – এই নিয়ে প্রচুর লেখালিখি হয়েছে, কিন্তু যাঁরা ভুলে গেছেন তাঁদের একটু মনে করিয়ে দেওয়া যাক। দেখতে কিন্তু এই সমস্যাটি নিতান্তই সরল। Fermat –কে বলা হত Prince of Amateurs, কারণ তিনি ছিলেন আদতে একজন ফরাসী আইনজ্ঞ, যিনি আবসর সময়ে অঙ্ক করতেন। যাইহোক সমস্যাটি হলঃ
    Xn + Yn = Zn, যেখানে X, Y, Z, n সবই ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা। n-এর মান 2-এর থেকে বড় হলে (n>2) এর নাকি কোন সমাধান নেই বা উল্টোভাবে বলতে গেলে n>2 হলে X, Y, Z – এর পারস্পরিক সম্পর্কটি সত্যি নয়!

    দেখতে প্রচন্ড সরল। কিন্তু এটাই আমাদের ৩০০ বছরের বেশী সময় ব্যস্ত রেখেছিল। সবাই ভেবেছিল এটার প্রমাণ খুবই সহজ আর তার কারণ ছিল Fermatএর নিজের একটি উক্তি। তাঁর বইয়ের মার্জিনে তিনি লিখে রেখেছিলেন এর একটি চমৎকার সমাধান তিনি পেয়েছেন, কিন্তু জায়গার অভাবে তিনি লিখতে পারছেন না। তাই এই ছোট্ট সমস্যাটি সমাধান করতে ওয়াইলস্‌ নিয়েছিলেন প্রথমবার ১৭০-১৮০ পাতা, আর একবার সংশোধনের পর সেটা দাঁড়িয়েছিল ২০০-এর কাছাকাছি।

    তবে এই পুরস্কার হাতছাড়া হয়েছে বলে আপনি হতাশ হবেন না। কারন হাতের কাছেই রয়েছে Goldbach Conjecture। এর সমাধান করতে পারলে $ 1,000,000 আসবে আপনার পকেটে – আর তাছাড়া এটা দেখতেও বেশ সহজ। আপনাকে শুধু প্রমাণ করতে হবে, যে কোন জোড় পূর্ণ সংখ্যা (Even Integer) – কে দুটি মৌলিক সংখ্যার (Prime Number) যোগফল হিসাবে লেখা যায়। যেমন,

    ৪ = ২ + ২
    ৬ = ৩ + ৩
    ৫০ = ৩১ + ১৯
    ১২০ = ৭৯ + ৪১

    লেগে পড়ুন – শুধু মনে রাখবেন ১৯৯৮ সালে কম্পিউটারের সাহায্যে দেখানো গেছে সম্পর্কটি ৪০০,০০০,০০০,০০০,০০০ পর্যন্ত সত্যি!

    এবার ছোট্ট করে Riemann Hypothesis-এর আলোচনাটি সেরে ফেলা যাক। এটা অপেক্ষাকৃত জটিল। যাঁরা আরো জানতে ইচ্ছুক এর সম্পর্কে তাঁদের জানাই প্রচুর বই পাওয়া যায় – শুধু লাইব্রেরী যাবার অপেখা। না যেতে চাইলে সেই এর আশ্রয় নিতে পারেন। আর যাঁরা বাংলায় পড়তে চান তাঁদের জানাই কিছু বছর আগে পুজো বার্ষীকি দেশ পত্রিকায় পথিক গুহ-র লেখা “সুন্দরী, সুধাপাত্র ও অমরত্ব” – এর এই নিয়ে খুব সুন্দর আলোচনা আছে।

    মৌলিক সংখ্যার আচরণ আমাদের দীর্ঘদিন বিষ্মিত করেছে। এদের আচরণ কি সত্যি অসংলগ্ন – নাকি এরাও মেনে চলে শৃঙ্খলা! অনেকেই চেষ্টা করেছেন এমন কোন সূত্র আবিষ্কার করতে যা দিয়ে মৌলিক সংখ্যা সম্পর্কে পূর্বাভাস করা যায়! গস্‌ নিজেও চেষ্টা করেছিলেন। এমন কোন সূত্র পাওয়া যাবে কি যা দিয়ে আমরা মৌলিক সংখ্যা গঠন করতে পারব যত বড় ইচ্ছা? কিংবা বলতে পারব দুটি নির্দিষ্ট সংখ্যার মধ্যে কতগুলি মৌলিক সংখ্যা থাকতে পারে? তা নিয়ে রিম্যান এমন একটা সূত্রের প্রস্তাবনা করেছিলেন যা দিয়ে নাকি মৌলিক সংখ্যার আচরণ খুব ঘনিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। সেই Function কে বলা হয় Riemann Zeta Function। এটা প্রমান করা গেলে নাকি সংখ্যাদের তুঘলকি আচরন সব ঠান্ডা করে দেওয়া যাবে।

    তা রিম্যান হাইপোথিসিস নিয়ে এত হৈ চৈ করার কি আছে? আসলে Prime Number আর Cryptography পরস্পর নির্ভরশীন। Cryptography নামটা চেনা চেনা লাগছে? এটা আর কিছুই নয়, এটা একটি পদ্ধতি যা দিয়ে গোপনীইয় তথ্যের আদান প্রদান করা হয়। এবং শুধু মাত্র তথ্যের প্রপাকই তার উদ্ধার করতে পারবেন। অর্থাৎ বাকিদের কাছে এটা থাকবে লুকানো। এই যে আমরা ইন্টারনেট-এ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি তার সুরক্ষাও নির্ভর করে মৌলিক সংখ্যার উপর। ১৯৭৭ সালে তিনজন ছাত্র Ron Rivest, Adi Shamir, আর Leonard Adleman এই ইন্টারনেট সুরক্ষার জন্য Algorithm আবিষ্কার করেছিলেন। এই পদ্ধতিতে দুটি বৃহৎ মোউলিক সংখ্যাকে গুণ করে একটা সংখ্যা পাওয়া যায়, যাকে বলা হয় চাবি (Key)। এই বড় সংখ্যাটাই আমরা ইন্টারনেটে আদানপ্রদান করি। আর এই মৌলিক সংখ্যাগুলি আপনার ক্রেডিট কার্ড বা অন্য কোন তথ্যের সংকেত বহন করে। তাহলে বুঝতে পারছেন পুরো বিষয়টির সুরক্ষা নির্ভর করে কত সহজে ঐ বড় সংখ্যাটিকে (Key) উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে। যত বড় সংখ্যা হবে, তার উৎপাদক বিশ্লেষণ হবে তত কঠিন, অর্থাৎ আপনি তত সুরক্ষিত! তবে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, যে দুটি মৌলিক সংখ্যা আমরা প্রথমে গুণ করেছিলেন তারা আদৌ মৌলিক কিনা! কি ভাবে পরীক্ষা করব না? আমাদের গর্বের বিষয় যে ভারতের Indian Institute of Technology, Kanpur এর প্রফেসর আগরওয়াল এবং তাঁর ছাত্র নীরজ আর নীতিন এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা দিয়ে কোন সংখ্যা মৌলিক কিনা যাচাই করা যাবে। কিন্তু মনে রাখবেন এই পদ্ধতিতে মৌলিক সংখ্যা তৈরী করা যাবে না কিন্তু!

    আর বেশী লিখতে পারছি না – তাই এবার আমাদের বাস্তব জীবনে গণিতের বিষ্ময়কর ব্যবহারের উদাহরন দিয়ে লেখা শেষ করব ভাবছি। যাঁরা বিশদে জানতে চান তাঁরা এখানে খোঁজ করতে পারেন - সত্যই অসাধারনঃ



    ধরুণ আপনি যখন বাজার করেন, তখন কোন দ্রব্যের দাম লেখা থাকে তার উপর কয়েকটি সাংকেতিক দাঁড়ির (Bar Code) সাহায্যে এখানে ব্যবহার করা হয় Modular Arithmatic। তারপর এই যে চোখ স্ক্যান করে ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার সময়েও এই গণিত। Probability Theory – র সফল প্রয়োগ। আবার ভাবুন সেই Travelling Sales এর সমস্যাটির কথা। মনে করুন আপনি কতগুলি বিশেষ শহর ভ্রমন করতে চান পৃথিবী জুড়ে। তাহলে কিভাবে ভ্রমন করলে আপনি সব শহরগুলিতেই একবার করে যাবেন, কিন্তু সবচেয়ে কম দূরত্ব অতিক্রম করবেন। সেখানেও গণিত। মানচিত্রে কত রঙের বাহার দেখি আমরা – এক দেশের এক রঙ। তাহলে কতগুলি বিভিন্ন রঙ ব্যবহার করলে পাশাপাশি দুটি দেশ কখনো এক রঙের হবে না। আমরা যে কাগজ দিয়ে নানা জিনিস বানাই খেলার ছলে (Origami) সেখানেও জ্যামিতিক ভাঁজের খেলা। মহাকাশে বিশাল আয়তনের টেলিস্কোপ পাঠানোর সময় কিভাবে সবচেয়ে ছোট আয়তনে ভাঁজ করা যাবে – উদাহরন দিয়ে শেষ করা যাবে না।

    তবে শেষ করা যেতেই পারে এক বিখ্যাত ব্যক্তির উক্তি দিয়ে। কার উক্তি আমি বলব না – এটা আপনার গুগুলের সাহায্য না নিয়ে কার হতে পারে সেটা ভাবুন – কে বা কারা করতে পারে এমন উক্তিঃ

    Poets do not go mad, but chess players do; mathematicians go mad, and cashiers; but creative artists very seldom. I am not, as will be seen, in any sense attacking logic; I only say that this anger lie in logic, not in imagination.
    সংখ্যা নিয়ে খেলা করলেই কি গণিতবিদ হওয়া যায়? আমরা সবাই তো সংখ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া করি, তাহলে আমরা সবাই কি গণিতজ্ঞ? তা আমি বলতে পারব না, তবে আপনি নিশ্চয় গণিতজ্ঞ যদিঃ

    •পাই-এর (Pi) মান পঞ্চাশ দশমিক স্থান পর্যন্ত আপনার মুখস্থা থাকে
    •আপনি কোন না কোন সময় Fermat’s Theorem প্রমাণের চেষ্টা করে থাকেন
    •আপনি অন্ততঃ দশ রকম ভাবে পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রমাণ করতে জানেন
    •আপনার টেলিফোন নম্বর দুটি মৌলিক সংখ্যার যোগফল
    •যদি আপনার স্ত্রীকে আপনি কোন ঘনিষ্ট মুহুর্তে বলেন যে তাঁর চুলগুলি সোজা এবং পরস্পর সমান্তরাম
    •গাড়ি কিনতে গিয়ে যদি বিক্রেতাকে বলেন, আমি লাল গাড়িটা অথবা নীল গাড়িটা নেব। এবং তার সাথে যোগ করেন, তবে দুটো গাড়ি একসাথে নয়!

    তথ্যসূত্রঃ
    1.Men of Mathematics – E.T. Bell
    2.Of Men and Numbers: The Story of the Great Mathematicians – Jane Muir
    3.Fermat’s Last Theorem – Amir Aczel
    4.On the Shoulder of Giants – Stephen Hawking
    5.The Emperor’s New Mind – Roger Penrose
    6.Pi in the Sky – John D Barrow
    7.The Last Problem – E.T. Bell
    8.Mathematical Scandals
    9.পথিক গুহর লেখা আনন্দবাজার ও দেশে প্রকাশিত প্রবন্ধ সকল।

    [ক্রমশঃ - দেব কিনা বুঝতে পারছি না]
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ৩১ মে ২০১৪ | ৫৯৯৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • swarnendu | 138.178.69.138 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:২৬72828
  • i নিয়ে লিখতে চাইছিলুম যেটা সেটা হল i কে রহস্যময় কিছু ভাবাটা অঙ্কের প্রতি গদগদ ভক্তিভাব থেকে আসা খানিক...
    আমাদের অতি পরিচিত ইউক্লিডিয়ান দ্বিমাত্রিক সমতল, R^2, তার ওপর কিছু বাড়তি স্ট্র্যাকচার চাপালেই আসে। বিষয়টা এইটা যে ওতে একটা 'গুণ' ডিফাইন করা সম্ভব, যাতে ঐ R^2 একটা অ্যালজেব্রা হয় ( এইটা বাদে শুধুই ভেক্টর স্পেস ) আর তারপর দেখা যে সেই 'গুণ' টার একটা 'ইনভার্স' আছে... সেইটে ধরলেই এইবারে একটি ফিল্ড পেলুম... আর যেকোনো ফিল্ডেই ঘাত নেওয়া আর ঘাতমূল বার করা সম্ভব ( raising to the power আর extracting the ( n-th ) root of ) । এভাবে দেখলে (-1,0) র 'বর্গমূল' হচ্ছে (0,1) আর (0,-1). লক্ষ্য করুন এই 'গুণ' একদমই 'বাস্তব' একটা প্রক্রিয়া... একটা পয়েন্টের পজিশন ভেক্টরটাকে একটু ঘোরানো আর তারপর সেটাকে টেনে লম্বা বা চেপে বেঁটে করা ছারা আর কিছু করা হচ্ছে না।
  • swarnendu | 138.178.69.138 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:২৯72830
  • কোনও রহস্যময় কোনও i ছাড়াই কমপ্লেক্স অ্যালজেব্রা, আয়ানালিসিস পুরোটাই পাওয়া যায়।
  • gabeT | 122.79.37.95 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:২৯72829
  • ঐ স্পেসিফিক উদাহরণগুলো কি অ্যাবসলিউট ট্রুথকে ভায়োলেট করছেনা?
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:৩৯72831
  • i এর গণিতে হ্যামিল্টন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। বলা যায় যে quaternion algebra তৈরী না হলে আধুনিক পদার্থবিদ্যার গাণিতিক ভিত তৈরী হতো না। এই নিয়ে কিছু আলোচনা করা যায়?
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:৪১72832
  • "ঐ স্পেসিফিক উদাহরণগুলো কি অ্যাবসলিউট ট্রুথকে ভায়োলেট করছেনা?"

    আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভালো হয়।
  • gabeT | 122.79.39.150 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:৪৬72833
  • আমি CH বা FP এদের কথা বলছি। ওরা অবশ্য ঠিক এক গোত্রের নয়। যেকোন একটি নিয়ে আলোচনা শুরু করুন। আট তারিখের পর যুতসই কম্পু থেকে আপনার দেওয়া লিঙ্ক অবশ্যই পড়ব। আপাতত কদিন মোবাইলে চালাচ্ছি।
  • N | 132.164.185.242 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:৫০72797
  • "এই উদাহরণটা ঠিক মনে হচ্ছে না - "মাধ্যাকর্ষন পদার্থবিদ্যার একটি সূত্র, কিন্তু সূত্রটি দাঁড়িয়ে আছে গণিতের কিছু নিয়মের ওপর ভর দিয়ে।" মাধ্যাকর্ষণ গণিতের সূত্র দিয়ে আবিস্কার হয়নি, ফিজিক্সের অবসার্ভেবল ল। তার একটা গাণিতিক 'রূপ' আছে ঠিকই কিন্তু সেটার ভিত্তি 'ন্যাচারাল ইভেন্টের' মধ্যে নিহিত।"

    হয়তো ঠিকমতো বুঝাতে পারিনি। মাধ্যাকর্ষণ নিশ্চয়ই একটি অবসার্ভেবল সূত্র (এম্পিরিকাল ল)। কিন্তু আমি এর গাণিতিক চেহারার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম। কারণ আমাদের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান পুরোটাই গণিত নির্ভর। খেয়াল করে দেখুন, আপনি যদি ইউক্লিডিয়ান জিওমেট্রি ব্যবহার করতে চান তো আপনি নিউটোনিয়ান মাধ্যাকর্ষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন। কিন্তু যেই আপনি নন-ইউক্লিডিয়ান জিওমেট্রিতে চলে এলেন, অমনি আইনস্টাইনিয়ান মাধ্যাকর্ষনে চলে এলেন। (আইনস্টাইন রাইম্যানিয়ান জিওমেট্রির সাহায্যে আপেক্ষিকতা প্রমান করেছিলেন)। আবার এখন বিজ্ঞানীরা মনে করছেন কোয়ান্টাম মেকানিক্স আর সাধারণ আপেক্ষিকতার সমন্বয়ে যে নতুন মাধ্যাকর্ষণ সূত্র তৈরী হবে, তার জন্য নতুন কোন জিওমেট্রিক কনসেপ্ট দরকার। পেনরোজ, যিনি একাধারে বিখ্যাত গনিতবিদ ও পদার্থবিদ, ও আরো অনেকে এই নতুন জিওমেট্রি তৈরী করার চেষ্টা করছেন। তাই বলছিলাম যে মাধ্যাকর্ষণ একটি অবসার্ভেবল বা এম্পিরিকাল সূত্র তো বটেই, কিন্তু এর রূপরেখা স্থির করে দিচ্ছে গণিত।

    "গণিতের সূত্র কি দর্শকনির্ভর? দর্শকনির্ভর হলেও/না হলেও কি সেগুলো 'সবসময়' সত্যি? একদিক দিয়ে দেখলে গণিতের সূত্র সংজ্ঞানির্ভর। সেটা যদি ধরে নেন"

    না, আমি বা আমরা এই ধরে নেওয়ার জায়্গায় নেই। গণিতবিদরা মোটামুটি বেশীর ভাগ "গাণিতিক প্লেটোনিজম"এ বিশ্বাসী, যেখানে বলা হয় যে গণিতের সূত্র দর্শকনির্ভর নয় আর এগুলো সবসময় সত্যি (ইউনিভার্সাল ট্রুথ)। কিন্তু উল্টোদিকেও বহু মতামত আছে আর কগনিটিভিস্ট রাও প্লেটোনিস্টদের জোরালো আক্রমন করছেন (অবশ্য দুদিকেই উগ্রপন্থীদের অভাব নেই)।
  • N | 132.164.185.242 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০২:৫৮72798
  • "ইউক্লিড ধরে নিলেন যে দুটো সমান্তরাল রেখা কখনো মিলিত হতে পারে না। সেখান থেকে প্রমাণ করা গেল যে ত্রিভুজের তিনটে কোণের সমষ্টি একশ আশি ডিগ্রী। এখন ইউক্লিড কি পৃথিবী থেকে মঙ্গম পর্যন্ত দুটো সমান্তরাল রেখা এঁকে দেখেছিলেন যে তারা জুড়ে যায় কিনা? দেখেননি, ধরে নিয়েছিলেন মাত্র। এই ধরাটা ভুল হতে পারে। সেই জন্যেই এমন ত্রিভুজ পাওয়া যায় যাদের কোণগুলোর যোগফল একশ আশি ডিগ্রীর কম বা বেশি।"

    অভ্যু ঠিক বলেছেন, গণিতের সূত্র প্রমান করার জন্য ফিজিকাল এক্সপেরিমেন্ট দরকার হয়্না। কাউকেই পৃথিবী থেকে মঙ্গল যেতে হয়্না, একটুকরো কাগজ আর পেন্সিলই যথেষ্ট। সেইজন্যই পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বা অন্যান্য ধারাগুলোকে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান (natural science) বলা হলেও গণিতকে বলা হয়্না, কারন প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এম্পিরিকাল।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:০৩72799
  • অভ্যু খানিক কইয়া দিসে।
    গণিত হইল জেনারালাইজেশন।
    সমকোণী ত্রিভূজের a² + b² = c² -- খুব ছোট্ট, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র, মাঝারি, বিশাল, অতিকায় যে কোনো সাইজের, আকাশ/মর্ত্য/পাতাল যে কোনো জায়গায় -- দ্বিমাত্রিক কোনো তলে সমকোণী ত্রিভূজের ক্ষেত্রে ইহা সত্য। 4² + 3² = 5² হেইডা প্রমাণ করা সহজ, কিন্তু যুক্তিজালে হেইডা প্রমাণ করা যে শুধু (4,3,5) নয়, যে কোনো সমকোণী ত্রিভূজের ক্ষেত্রেই ইহা সইত্য। ইহাই হইল ট্রুথ।

    বা, যেমন ধরো পাই - হগ্গলে জানে পাই হইল গিয়া কোনো বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত। কিন্তু এই অনুপাত যে কোনো বৃত্ত, তা সে দামড়া সাইজের, বা ক্ষুদ্র পুটকির ন্যায় - যে কোনো বৃত্তের ক্ষেত্রেই পরিধিকে ব্যাস দ্বারা ভাগ করিলে একই ফল হয় (৩.১৪১৫৯....) - তার মানে তো এই নয় যে গণিতজ্ঞরা কোটি কোটি বৃত্ত বানাইয়া ভেরিফাই কইর‌্যা দ্যাখসেন যে ইহা সইত্য কিনা। যুক্তিজালে ইহা প্রমাণ করসেন যে, এই অনুপাতটি ধ্রুবক। ইহা সইত্য - ট্রুথ। ইহাই গণিত।
  • aka | 34.96.239.132 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:০৮72800
  • ফুটকি = গণিত
    পুটকি কিন্তু গণিত নয়।

    ইহা প্রমানেবল। ঃ)
  • aka | 34.96.239.132 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:০৯72801
  • বহুদিন পর এইডা একখান লে পরাক্কা টই হইছে। আর এই বিজেপি, সিপিএম, তিনো নেওয়া যাচ্ছিল না।
  • swarnendu | 138.178.69.138 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:৩৫72834
  • N বাবু,
    অ্যালজেব্রা আমার বিষয় নয়, তাই বড্ড কম জানি quaternion algebra নিয়ে...... কেউই এগিয়ে না এলে তখন একটু চেষ্টা করতে পারি ......
  • swarnendu | 138.178.69.138 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:৩৯72835
  • gabeT বাবু,
    FP কন্সেপচুয়ালি খুব কঠিন নয়... কিন্তু CH একদম অন্য জন্তু...
  • Atoz | 161.141.84.164 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:৫৬72836
  • N, লোবাচেভস্কির জ্যামিতি নিয়ে জানতে চাইছিলাম, মাত্র একটা স্বতঃসিদ্ধ একটুখানি পাল্টে দিলে গোটা স্ট্রাকচার বদলে যাচ্ছে---এই ব্যাপারটা এক্টু ডিটেলে জানতে চাইছি।
    তাহলে স্বতঃসিদ্ধগুলো এত জোরদার? এগুলো আসে কোথা থেকে? এগুলোকে কি প্রমাণ করা যায়? গোডেল এই নিয়ে কী যেন বলতেন না?
  • swarnendu | 41.164.232.232 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৩:৫৭72802
  • দারুণ আলোচনা চলছে... দু কলম লিখতে ভারী লোভ হচ্ছে...লিখব।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৪:১১72837
  • গবেট, কিন্তু CH বা FP দিয়ে "ইউনিভার্সাল ট্রুথ" এর অ্যাসাম্পশন ভায়োলেট করা যেতে পারে, এরকম ভাবছেন কেন? আবার স্ট্যানফোর্ড থেকে উদ্ধৃত করিঃ

    Despite his efforts Cantor could not resolve CH. The problem persisted and was considered so important by Hilbert that he placed it first on his famous list of open problems to be faced by the 20th century. Hilbert also struggled to resolve CH, again without success. Ultimately, this lack of progress was explained by the combined results of Gödel and Cohen, which together showed that CH cannot be resolved on the basis of the axioms that mathematicians were employing; in modern terms, CH is independent of ZFC.

    This independence result was quickly followed by many others. The independence techniques were so powerful that set theorists soon found themselves preoccupied with the meta-theoretic enterprise of proving that certain fundamental statements could not be proved or refuted within ZFC. The question then arose as to whether there were ways to settle the independent statements. The community of mathematicians and philosophers of mathematics was largely divided on this question. The pluralists (like Cohen) maintained that the independence results effectively settled the question by showing that it had no answer. On this view, one could adopt a system in which, say CH was an axiom and one could adopt a system in which ¬CH was an axiom and that was the end of the matter—there was no question as to which of two incompatible extensions was the “correct” one. The non-pluralists (like Gödel) held that the independence results merely indicated the paucity of our means for circumscribing mathematical truth. On this view, what was needed were new axioms, axioms that are both justified and sufficient for the task. Gödel actually went further in proposing candidates for new axioms—large cardinal axioms—and he conjectured that they would settle CH.

    আমরা গণিত সম্পর্কে যা কিছু জানি আর ভবিষ্যতে জানব সেই সব কিছুই তো "ইউনিভার্সাল ট্রুথ" এর মধ্যে পড়ে! "ইউনিভার্সাল ট্রুথ" ফলসিফাই করার একটা উপায় হলো, আমাদের মহাবিশ্বের এমন কোন জায়গা খুঁজে বার করা যেখানে গণিতের সূত্রগুলো খাটেনা। মানে সেই জায়গাটা নোন-ম্যাথামেটিকাল (বা অন্তত কখনো কখনো নোন-ম্যাথামেটিকাল)। তাহলে বলা যেতে পারে যে "গাণিতিক প্লেটোনিজম" এর ইউনিভার্সাল ট্রুথ আদতে ইউনিভার্সাল নয়। মুশকিল হলো আমাদের natural sciences পুরোপুরি গণিত নির্ভর, এমনকি গণিত বাদ দিয়ে আমরা বিজ্ঞানকে ভাবতেও পারিনা। তাই এরকম নোন-ম্যাথামেটিকল কোন কনসেপ্ট হওয়া বাস্তবে সম্ভব কিনা, বা আমাদের মহাবিষ্বে এটা "allowed" কিনা তাও আমরা এখনো জানিনা।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৪:১২72838
  • *gabeT
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৪:১২72839
  • *নন-ম্যাথামেটিকাল
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৪:১৭72840
  • Atoz গোডেল এই নিয়ে যা বলতেন সেসব কথা মোটা মোটা বইতে লেখা আছে, তার অর্ধেক আমার মাথায় ঢোকে না। এখনকার মতো খাই আর ঘুমাই গিয়ে ঃ)
  • Atoz | 161.141.84.164 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৪:২৪72841
  • আহা, N , জম্পেশ খেয়ে দেয়ে একঘুম দিয়ে উঠেই নাহয় লিখবেন। ঃ-)
  • swarnendu | 41.164.232.232 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৪:২৬72803
  • নাহ লোভ সামলাতে পারা গেল না... ছোট প্রশ্নটা রেখেই ফেলি... "যুক্তিজালে ইহা প্রমাণ করসেন যে, এই অনুপাতটি ধ্রুবক।"--এইটা ঠিক বুঝলাম না... মানে হয় বৃত্ত কি আমরা জানি ধরে নিলে এটা বৃত্ত সম্পর্কে একটা অবজারভেশন ই , আর নইলে বলতে হয় বৃত্তের সংজ্ঞাটাই এমন যে তাতে এইটা অন্তর্নিহিত । এর আবার প্রমাণ কি?
    আর একটা কথা, গনিতে ট্রুথ কন্ডিশনাল, কিন্তু সেটা নিয়ে বোধহয় প্লেটোনিজম এর কথাটা নয় ঠিক... বরং এই কন্ডিশনাল স্ট্রাকচারটা কেন কাজে লাগে... কেন চারপাশের বাস্তবতা সেই স্ট্রাকচারটা মেনে চলে সেইটা বোধহয়... দুটো সহজ উত্তর হল ১) বাস্তবতার স্ট্রাকচারটাই এইরকম , অর্থাৎ এই স্ট্রাকচারটা নিজেও বাস্তব অথবা ২) বাস্তবতা এমনই হতে হত কিনা জানা নেই, কিন্তু আমরা যেভাবে বাস্তবতা দেখি, ভাবি সেইটার স্ট্রাকচারটা এইরকম ।
    আবার এই ২) এর একটা ২ প্রাইম হতে পারে... একমাত্র এই স্ট্রাকচারটা দিয়েই আমাদের পক্ষে অসীম জটিল বাস্তবতার একটা সসীম, ভবিষ্যতবাণী বার করা সম্ভব এমন উপযোগী ধারণা পাওয়া সম্ভব।
    আমার দর্শনের জ্ঞান সুবিধের নয়, তবে ১) টাই বোধহয় গোদাভাবে প্লেটোনিজম, ২) টা প্রিন্সিপল আর ২ প্রাইমটা জানি না নাম আছে কিনা... না থাকলে ইভোলুশনারি অ্যানথ্রপিক প্রিন্সিপল বলা যাক।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৫:০৯72804
  • স্বর্ণেন্দু আপনার (২) প্রতিপাদ্যটি বোধায় কগনিটিভিজমের একটা রূপ। এরা বলে যে সমস্ত মানুষের কগনিটিভ প্রসেসগুলিকে চারটি বেসিক ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

    বস্তুসমূহ একত্র করা, সেগুলো দিয়ে এক বা একাধিক নতুন বস্তু তৈরী করা, একটি মান দ্ন্ড ব্যবহার করা, আর সরলরেখায় এগনো/পেছনো।

    এই ইমেজ স্কিমা-র থেকেই আমাদের যাবতীয় গণিতের উত্পত্তি, কাজেই ফিলজফি অফ ম্যাথামেটিক্স বুঝতে গেলে মানুষের কগনিটিভ প্রসেসগুলিকে বুঝতে হবে। এরা মনে করে যে গণিতের কোন আলাদা অস্তিত্ব নেই। গণিত সবসময়ে সঠিকভাবে আমদের বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে কারন আমাদের মস্তিষ্ক এই কগনিটিভ প্রসেস ব্যবহার করেই আমাদের চারপাশের জগতটাকে অনুভব করে। গাণিতিক প্লেটোনিস্টরা শুধুমুধু একটা রহস্যময় "গণিত জগত" বানিয়ে তুলেছে।

    বলা বাহুল্য প্লেটোনিস্টরাও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়, তারাও গাদাব্ন্দুক নিয়ে এদের আক্রমন করছে।
  • T | 24.139.128.15 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৫:৫১72842
  • R^n এবং ইউক্লিডিয়ান স্পেস কিন্তু এক নয়। R^n একটি ভেক্টর স্পেস যার সাথে ইনার প্রোডাক্ট আর নর্ম জুড়লে সেটি ইউক্লিডিয়ান স্পেসে পরিণত হয়। ইউক্লিডিয়ান স্পেস কখনোই লিনিয়ার অ্যালজেব্রা ওভার আ ফিল্ড নয়। কারণ ইনার প্রোডাক্ট অ্যাসোসিয়েটিভ নয়। R^n এর উপর আরো কিছু স্ট্রাকচার চাপিয়ে তাকে অ্যালজেব্রা ওভার এ ফিল্ড বানানো যেতে পারে। এইরকমই ছিল না?
  • দেব | 59.136.169.15 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৬:০৬72805
  • স্বর্ণেন্দু বৃত্ত সম্বন্ধে যা বললেন সেই দুটো কথাই 'ঠিক'। এটা একটা অবসার্ভেসন, ঠিক। আবার এটা দাঁড়িয়ে আছে বৃত্তর সংজ্ঞার ওপরে। কিন্তু বৃত্তর সংজ্ঞাটা হচ্ছে এই - আপনি কোন সমতলে একটা বিন্দু নিলেন। এবার ওই বিন্দুটা থেকে ওই তলের ওপরে সমদূরত্বে অবস্থিত সবকটা বিন্দু কে একটা বক্ররেখা দিয়ে যোগ করলে যেটা পাবেন সেইটা হল বৃত্ত। এই সংজ্ঞার থেকে আপনি প্রমাণ করতে পারবেন যে পরিধি ও ব্যাসার্ধর অনুপাত একটা ধ্রুবক। অর্থাৎ এটা সরাসরি বলে দেওয়া নেই, কিন্তু যে সংজ্ঞাটা দেওয়া হয়েছে তার থেকে চলে আসছে।

    এই সেই প্রমাণ - http://math.wikia.com/wiki/Proof:_Pi_is_Constant
  • gabeT | 122.79.38.64 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৬:১২72843
  • কোহেন তো বলছেন তার কাজ প্রশ্নটা সেটল করছে। আর একদম শেষে কি একটু ভুল আছে? CH বা তার নেগেশন যেকোন একটাকেই তো জুড়তে পারি।
  • gabeT | 122.79.38.64 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৬:১২72844
  • কোহেন তো বলছেন তার কাজ প্রশ্নটা সেটল করছে। আর একদম শেষে কি একটু ভুল আছে? CH বা তার নেগেশন যেকোন একটাকেই তো জুড়তে পারি।
  • Atoz | 161.141.84.164 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৬:৪১72845
  • কিন্তু নিউটনের তো আলোর গতির ধ্রুবত্ব বিষয়টা নেওয়া ছিল না তাঁর তত্ত্বে, মানে ঐ মিনকাউস্কি স্পেসটাইমের ঐ ডম্বরুর মতন ব্যাপারটা, পাস্ট লাইট কোণ, ফিউচার লাইট কোণ আর এলসহোয়ার ওরকমভাবে ভাগ করা ছিল না নিউটনের স্পেস, তাহলে কী করে সে বলবে ?
  • swarnendu | 41.164.232.232 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৭:১৪72846
  • T বাবু,
    "R^n এবং ইউক্লিডিয়ান স্পেস কিন্তু এক নয়। R^n একটি ভেক্টর স্পেস যার সাথে ইনার প্রোডাক্ট আর নর্ম জুড়লে সেটি ইউক্লিডিয়ান স্পেসে পরিণত হয়।"
    একদম ঠিক।
    "ইউক্লিডিয়ান স্পেস কখনোই লিনিয়ার অ্যালজেব্রা ওভার আ ফিল্ড নয়।"
    এখানে একটু ভুল হল। লিনিয়ার অ্যালজেব্রা সাবজেক্ট । অ্যালজেব্রা ওভার আ ফিল্ড , অ্যালজেব্রা মানে একটা ভেক্টর স্পেস যেখানে দুটো ভেক্টর গুণ করে আর একটা ভেক্টর পাওয়া যায়। ইনার প্রোডাক্ট দুটো ভেক্টরকে একটা স্কেলারে নিয়ে যায়, তাই সেটা অ্যাসোসিয়েটিভ হতেও পারে না, তাই দিয়ে অ্যালজেব্রা হওয়া না হওয়াও হয় না।
    n=1 আর n=2 তে অ্যালজেব্রা স্ট্রাকচার দেওয়া যায় ( রিয়েল আর কমপ্লেক্স নাম্বারের গুণ দিয়ে )।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৭:১৭72806
  • তাইলে দেখো, পাই কেনো ধ্রুবক - তাহা প্রমাণ করিতে গিয়া লিমিট, অ্যাপ্রোক্সিমেশন টু ইনফিনিটি... .... হেইসব লাগল।

    আর্কিমিডিস বুঝতে পারছিলেন যে পাই ধ্রুবক, একটা ব্যাখ্যা দিয়াছিলেন, অ্যাপ্রোক্সিমেট রেঞ্জ (২২৩/৭১ থেকে ২২/৭ ) বাহির কইর‌্যা ফ্যালছিলেন।

    কিন্তু তার পরে প্রচুর যুক্তিজাল, এবং কয়েক শত বত্সর কাইট্যা গেছে, পাই ধ্রুবক প্রমাণ হইসে (ওপরে দেব-এর লিংক)।
    যদিও অনেক আগেই আন্দাজ হইসিল যে পাই হইল গিয়া ইর‌্যাশানাল নাম্বার - কিন্তু তাহা প্রমাণ হইল গিয়া উনবিংশ শতাব্দীতে।

    এই যে যুক্তি পরম্পরা থেকে নতুন যুক্তির নির্যাস, শত শত বছর ধইর‌্যা - ইহাই গণিত।
  • T | 24.139.128.15 (*) | ০২ জুন ২০১৪ ০৭:২৮72847
  • ওফ, অ্যালজেব্রা ওভার আ ফিল্ড কে 'লিনিয়ার অ্যালজেব্রা ওভার আ ফিল্ডও' বলে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন