এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  অন্য যৌনতা

  • ছক্কা ঋতুপর্ণ

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | অন্য যৌনতা | ৩১ মে ২০১৩ | ৭১৯৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ১।

    এ সবই নেহাৎ ব্যক্তিগত কথা। ঋতুপর্ণ, হ্যাঁ, ঋতুপর্ণ  ঘোষের কথা বললেই আমার পুরোনো পাড়ার একটা ছেলের কথা মনে পড়ে। যার নামও আমি আজ ভুলে গেছি। শুধু এইটুকু মনে আছে, যে, কতকাল আগে, ছেলেটাকে লেডিস বলে ডাকা হত। ছেলেটা ছোটোখাটো, শান্ত, মুখচোরা। সাতচড়ে রা কাড়েনা। কিন্তু কী অপমানজনক ছিল সেই সম্ভাষণ, বোঝা যেত, যখন পাড়ার ছেলেরা দূর থেকে "এই লেডিজ এদিকে আয়" বলে হুঙ্কার পাড়ত, মেয়েরা মুখ টিপে হাসত, আর শুনলেই ওই গরুর মতো শান্ত চোখেও ক্রোধের ঝিলিক খেলে যেত। বেশিরভাগ সময়েই পাশ কাটিয়ে চলে যেত। শুধু একবার ইট ছুঁড়ে মেরেছিল, মনে আছে। তাতে অবশ্য লেডিজ বলা থামেনি। বরং প্রবল ইংরিজি শিক্ষার তোড়ে, এবং তুমুল উৎসাহে লেডিজের বদলে আবিষ্কার করা হয়েছিল আরেকটা ইংরিজি শব্দ। লেডিজ ফিংগার। যেমত নাকের বদলে নরুণ। আজ ভাবলে বুঝতে পারি, অপমানের জন্য কী যথাযথ ছিল সেই ডাকনাম। মেটাফর হিসেবে তো অব্যর্থ। একদিকে মেয়েলি, অন্যদিকে ঢ্যাঁড়োশ, অর্থাৎ অকর্মার ঢেঁকি। পুরুষের মেয়েলিত্বের এত যথার্থ বর্ণনা এর আগে বা পরে আর কখনও শুনিনি।

    আরও পরে অবশ্য ছক্কা শব্দটা শুনেছি। নপুংসক এর একটু নরম সংস্করণ হিসেবে ব্যবহার করা হত সেটা। মানেটাও একই, অবয়বে পুরুষের মতই, কিন্তু আসল কাজে ছক্কা। পুরুষের "আসল" কাজটা যে কি সে নিশ্চয়ই বলে দেবার দরকার নেই। এফিমিনেট পুরুষের অপরাধের বর্ণনা হিসেবে এটাও ভালো, কিন্তু লেডিজ ফিংগার এর কাছাকাছি আসেনা। তুলনায় অবশ্য অনেক মোটা দাগের ছিল কলেজের সেই ছেলেটির ডাকনাম। কোনো লুকোছাপা মেটাফরের বালাই নেই। তাকে ডাকা হত মাগী নামে। সেটা অবশ্য একদিক থেকে ভালই। আক্রমণটা সরাসরি। হারামজাদা তুই ছেলে নোস তুই একটা মাগী। ব্যস। দ্ব্যর্থবোধকতার কোনো জায়গাই নেই।

    ফিল্ম টিল্ম গোল্লায় যাক, আজকে এই মরে যাবার দিনে, ভাব-গদগদতার দিনে, এ সবই মনে পড়ছে। এসব ছিল কেবল আমাদের নিষ্পাপ আমোদ-আহ্লাদ ও সারল্য। শৈশব কৈশোর ও যৌবনের। পুরুষের এফিমিনেট হওয়া অপরাধ। এ অতি সরল কথা। যা আমরা জ্ঞান হবার আগে থেকেই জেনে নিই।

    ২।

    এসবের অনেক দিন পরে, মনে আছে, যুবক বয়সে দার্জিলিং শহরে বেড়াতে গিয়ে আমি এক ফরেস্ট রেঞ্জারের পাল্লায় পড়ি। পাল্লায় পড়ি কথাটা বলা ভুল, ভদ্রলোক ভারি অতিথি পরায়ণ ছিলেন। বাড়িতে ডেকে রীতিমতো ভুরিভোজ করিয়ে সাহিত্য আলোচনা করেছিলেন, মনে আছে। আমার ভালো লেগেছিল। তিনি ছিলেন প্রজাপতি সংগ্রাহক। জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে প্রজাপতি জমাতেন। নৈশাহারের পরে গর্ব করে দেখিয়েছিলেন, তাঁর প্রজাপতির সংগ্রহশালা। একটা কার্ডবোর্ডের উপর থরে থরে পিন দিয়ে এঁটে রাখা মৃত প্রজাপতি। কী অপূর্ব তাদের ডানা। রঙের বিন্যাস। ভালো করে দেখার জন্য একপা এগোতেই দেখি পিনে আটকানো একটা প্রজাপতির ডানা থিরথির করে নড়ে ওঠে। ওড়ার চেষ্টায়। অবাক হয়ে ভদ্রলোকের দিকে তাকাতেই, তিনি স্মিত হেসে বলেন, ওটা এখনও মরেনি।

    ঋতুপর্ণকে আমরা মারিনি। এমনকি লেডিজ ফিংগারও বলিনি। ছক্কা বলতে পারিনি। মাগী তো নয়ই। কারণ আমরা পরিশীলিত। আমরা ভদ্রলোক। কিন্তু আজকে এই মরে যাবার দিনে, ভাব-গদগদতার দিনে, এটুকু স্মরণ না করলে খুবই অকৃতজ্ঞ ব্যাপার হবে, যে, এই বঙ্গসমাজ, যারা আজ আহা কি ভালো ফিল্মমেকার ছিলেন গো, কী অপূর্ব ছিল তাঁর ঐন্দ্রজালিক ডানার প্যাটার্ন, রঙের বাহার, বলে চোখের জলে ও নাকের জলের বন্যায় গঙ্গা ও যমুনা ভাসিয়ে দিচ্ছে, তারা ভদ্রলোকের জীবদ্দশায় ডানার ছটফটানি দেখে কি আনন্দই না পেয়েছে। "রিনাদি তুই" শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছে। হাঁটার ভঙ্গী দেখে মুখে রুমাল চাপা দিয়েছে। কানের দুলের প্যাটার্ন দেখে গা-টেপাটেপি করেছে। "মেয়েদের মতো ঢং করবে তো হাসব না তো কি?" এই ছিল যুক্তি। সারল্য ও কমনসেন্সে ভরপুর।

    ফিল্ম মেকাররা তো একটু গম্ভীর ও আঁতেল প্রকৃতির হন। ঋত্বিকের কথা ছাড়ুন, তিনি তো ভগবান, মৃণাল সেন কি সত্যজিত রায়কে নিয়ে ক্যারিকেচারের কথা আমরা ভাবিইনি। অপর্ণা সেনের পরিশীলিত ন্যাকামিও কখনও টিভি শো'এর বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়নি। কিন্তু ঋতুপর্ণ? ফিল্ম তো নয়, বেস্টসেলার ছিল তাঁর আইডেন্টিটি। যৌন অভিজ্ঞান, যা, আমরা প্রাপ্তবয়স্করা জানি, যে, নেহৎই ব্যক্তিগত। কিন্তু সেখানে হাত দিতে আমাদের কখনও কোনো কুন্ঠাবোধ হয়নি। ওসব তো অসভ্যতা নয়, জাস্ট আমাদের প্রাপ্তবয়স্কতার আমোদ-আহ্লাদ। টিভি শো'র জনৈক অ্যাঙ্কর তো বিখ্যাতই হয়ে গেলেন স্রেফ ঋতুপর্ণকে নকল করে। অন্য কোনো কারণে নয়, ঋতু এফিমিনেট ছিলেন বলেই না। ভেবে দেখুন, অন্যদের নকলনবিশীর কথা সেরকম মনেই নেই আমাদের, তারা আদতে টিআরপি বেশি পায়ইনি। তাই অ্যাঙ্করের বিশেষ দোষ নেই। ওগুলো আমরা, দর্শকরা খাই। আমরা প্রোটোটাইপে বিশ্বাস করি। কুয়োর মধ্যেই আমাদের বসবাস। সেই আমাদের পৃথিবী। আমাদের প্রগতিশীলতার প্রোটোটাইপ আছে, বিপ্লবের প্রোটোটাইপ আছে, স্বাভাবিকতার প্রোটোটাইপ আছে, পরিশীলনের প্রোটোটাইপ আছে। তার বাইরের কিছু দেখলেই আমরা ছিছি করি। চরিত্রদোষ দেখি। অসামাজিক বলি। লেডিজ ফিংগার বলে ডাকতে চাই। দাবী একটাই, মালটা আমার মতো নয় কেন। ঠিক আমারই মতো নয় কেন। সেটা তার অপরাধ। অতএব প্রকাশ্যে তার প্যান্টুল খোলো। সারল্যের সঙ্গে নেড়েচেড়ে দেখো কেমন করে সে রিঅ্যাক্ট করে। ইঁট-টিট তুলে মারে কিনা।

    তা, এই আবেগ ভ্যাদভ্যাদে বেদনার দিনে, ফিল্ম-টিল্ম গোল্লায় যাক, শুধু প্রজাপতিটির ডানা-কাঁপানো মনে পড়ে। আহা কি ছিল তার রঙের বাহার। কী অপূর্ব সেই ডানার কাঁপন। কি ন্যাচারাল। যেন পাতার উপরে নিজের পালকশরীর বিছিয়ে সে বসে ছিল। শরীরে গেঁথে থাকা পিনটা এতই ছোটো, সেটা চোখেই পড়েনি।

    ৩।

    শিল্প আর শিল্পী নাকি আলাদা। এই আবেগ ভ্যাদভ্যাদে মৃত্যুদিনে সেসব কথা ভাবতে ভালো লাগেনা। এ সব ব্যক্তিগত অনুভূতি বড়ই ব্যক্তিগত। ফিল্ম টিল্ম গোল্লায় যাক, গোল্লায় যাক শিল্পের শবসাধনা, কবিতার বদলে ট্রামে ছেঁচড়ে যাওয়া জীবনানন্দের ডেডবডি মনে পড়ে। সেই দশকে নাকি ওটাই ছিল একমাত্র ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যু। তাকে আপতিক ভাবতে অসুবিধে হয়, যেমন অসুবিধে হয়  ঊনপঞ্চাশ বছর বয়সে একজন সফল ফিল্ম মেকারের মৃত্যু। আসলে তো তাঁকে নেই করে দেওয়া হল। টিভিতে, খবরের কাগজে, সোশাল মিডিয়ায় যত কলকাকলি আর হাহুতাশ দেখি, সব শুধু সিনেমা। সিনেমা সিনেমা আর সিনেমা। লোকটা কোথাও নেই। কিন্তু আজ তো সিনেমার দিন না। একটা লোক মারা গেছে। একজন ব্যক্তি মারা গেছেন। সে শুধু সিনেমা নয়। নিজের আইডেন্টিটিকে সে কখনও সিনেমা দিয়ে ঢাকেনি। মেয়েলি দোপাট্টা পরে কানে দুল ঝুলিয়ে টিভি শোতে এসেছে। যত বয়স হয়েছে তত নরম হয়েছে তার গলার আওয়াজ, আর তীব্রতর হয়েছে তার আইডেন্টিটি। নমনীয়তাকে, নরম স্বরে কথা বলাকে আমরা পুরুষের দুর্বলতা বলে ধরে নিই। কিন্তু ঋতুপর্ণ জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, ব্যাপারটা অতো সোজা নয়। যতগুলো নতুন পুরস্কার ঝুলিতে ঢুকেছে, ততই মেয়েলি হয়েছেন তিনি। ততই নরম হয়েছে তাঁর কণ্ঠস্বর। মেয়েলিপনাকে শক্তি দিয়ে আগলে রেখেছেন। ছুঁড়ে দেওয়া ইঁটগুলোকে, "লেডিস ফিংগার" তাচ্ছিল্য আসবে জেনেও, আঁকড়ে ধরেছেন ওই মেয়েলি আলখাল্লাকে। সেই নরম সাহস, সেই এফিমিনেট দৃঢ়তা ছাড়া ঋতুপর্ণ নেই। হয়না।

    আজ তার মৃত্যুর দিনই ব্যক্তিটি উধাও। আমাদের শ্রদ্ধার ঠেলায়। তার যে আইডেন্টিটি এতদিন জনতার উপহাসের বিষয় ছিল, সংখ্যালঘু একটি অংশের কাছে হয়তো হিরোইজমও ছিল, যে আইডেন্টিটিকে লোকটি কখনও ভয়ে ভক্তিতে বা ধান্দাবাজিতে গোপন করেনি, শত অপমানেও হ্যান্ডব্যাগে চেপে রাখেনি, যে আইডেন্টিটি ছাড়া সে অকল্পনীয় ছিল, আজ সেই আইডেন্টিটিটিই উধাও। তার অপমানের ইতিহাস হাওয়া, তার ডানার ছটফটানি নেই, পড়ে আছে শুধু অন্তরমহল আর শুভ মহরৎ। এই আধা ব্রাহ্ম, আধা নরখাদক একটা সমাজে বুক চিতিয়ে লোকটা দাঁড়িয়েছিল তার জেন্ডার আইডেন্টিটি নিয়ে। ইঁট-পাটকেল খাবে, ক্ষতবিক্ষত হবে জেনেও। এই ভ্যাদভ্যাদে শোকের দিনে শুধু এইটুকুই মনে করানোর, যে, মনে রাখবেন বন্ধুগণ, যে, ছোঁড়া ইঁটগুলির একটি আপনারও ছিল। সেই বাংলা সত্যটিকে ফুলমালায় ঢেকে গায়েব করে দেওয়া যাবেনা। ফিল্ম টিল্ম গোল্লায় যাক, তাকিয়ে দেখুন, টিভিতে দেখে যাকে নিয়ে অবিরত যূথবদ্ধ খিল্লি করেছেন, সেই লেডিজ ফিংগারটিই আসলে ঋতুপর্ণ ঘোষ। সৃষ্টি ও স্রষ্টার যন্ত্রণা এক ও অচ্ছেদ্য। যে কারণে মৃত্যর পরেও আপনার ড্রয়িংরুমে মূর্তিমান অস্বস্তি হয়েই তিনি থেকে যাবেন।  তিনি, ঋতুপর্ণ, মেয়েলি, এফিমিনেট, দুর্বল, রক্তাক্ত ঋতুপর্ণ।

    পুরুষের এফিমিনেট হওয়া অপরাধ। এ অতি সরল কথা। যা আমরা জ্ঞান হবার আগে থেকেই জেনে নিই। এফিমিনেট অর্থে আমরা দুর্বল ও মিনমিনে ভাবি। যা পুরুষের মুকুটে শোভা পায়না। নারী নমনীয় ও শক্তিমতী হতে পারে, কিন্তু পুরুষ নরম ও শক্তিমান? উঁহু। আমাদের প্রোটোটাইপে আটকায়।

    ৪।

    এ সবই ব্যক্তিগত কথা। কিন্তু সবই যখন হচ্ছে এটাও থাক। এ বোধহয় বছর চারেক আগের কথা। আমাদের অফিসে একটি ছেলের নাম ছিল ঋতুপর্ণ। তারও ফিল্মের সঙ্গে কেমন যেন যোগাযোগ। কোন এক প্রযোজকের ছেলে তার ক্লাসমেট ছিল। আমাকে ফিল্ম বানানোর লোভ দেখায় প্রায়ই। সিরিয়াসলি নিশ্চয়ই না। কিন্তু ঠেকে এসব আবোলতাবোল কথা বলব না তো কখন বলব। বড়ো ব্যানারে ফিল্ম বানাব, ঋতুপর্ণকে পাঁচ পার্সেন্ট লভ্যাংশ দেব ইত্যাদি নেহাৎই হাবিজাবি বকি প্রায়ই। কিন্তু সেদিন তেমন মুড ছিলনা। সেদিন আমি বাড়ি থেকে কাজ করছি। ঋতুপর্ণ আগের দিন কাজ না করেই কেটে গিয়েছিল। পরের দিন সাত সকালে, তখন সকাল নটা-টটা হবে, ভারতীয় সফটওয়্যারের হিসেবে সেটা তো ভোরবেলাই, যখন ফোন এল, আমি অবাক হইনি মোটেই। ব্যাপারটা প্রত্যাশিতই ছিল। আমরা যতই হ্যাহ্যা করি, একসঙ্গে চা-বিড়ি খাই, একটা হায়ারার্কির প্রশ্ন থেকেই যায়। সেটা আরও বোঝা যায় তার গলায়। মিনমিনে, প্রায় এফিমিনেট কন্ঠে সে বলে, আমি ঋতুপর্ণ বলছি। আমি গম্ভীর গলায় বলি, বল। আগেই ফোন করব ভেবেছিলাম, সে বলে। আমি বলি, সে তো জানি, করনি কেন? আসলে, সে আরও মিনমিনে স্বরে বলে, ভেবেছিলাম, আগেই করব, কিন্তু করা হয়নি। বেশ তো, বলি আমি, এখন কী বলছ বল। আসলে, সে বলে আরও আগেই করব ভেবেছিলাম, কিন্তু মাঝখানে দিল্লী যেতে হল। দিল্লী? আমি বেজায় অবাক হই। ছোকরা দিল্লী চলে গেল নাকি? কাজের কী হবে? আসলে, দিল্লীতে ন্যাশানাল (না কি একটা যেন) অ্যাওয়ার্ড ছিল।

    আমি শুনে বেজায় বিরক্ত হই। কাজের কথা হচ্ছে। এর মধ্যে ইয়ার্কি টেনে আনার কি দরকার? একটা তেতো মন্তব্য করতে গিয়ে কে জানে কেন থেমে যাই। কোথাও কি কিছু ভুল হচ্ছে? ঋতুপর্ণ তো এরকম আলপটকা কথা বলেনা। তুমি ঋতুপর্ণই বলছ তো? হ্যাঁ, সে কেমন যেন অবাক হয়ে বলে। আমি ঋতুপর্ণ। ঋতুপর্ণ ঘোষ।

    এমনিতে নেহাৎই মজার গল্প। এ নিয়ে পরে আমরা হাসিঠাট্টাও করব। যা লিখতে আজ আর কোনো বাধা নেই। ঋতুপর্ণ বলবেন, এ ধরণের কড়া সম্ভাষণ তিনি ফোন করে বহু বহুদিন কারো কাছে শোনেননি। আমি বলব, মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়, কারণ। কারণ? আমার পেট ডায়ালগ, ম্যান ইজ মর্টাল, অর্থাৎ মানুষমাত্রেরই ভুল হয়।

    এই অদ্ভুতুড়ে দিনে আমার এই মজার গপ্পোটা বারবার মনে পড়ে। কারণ আজ এটা অব্যর্থভাবেই জানি, যে, এ ভুল আমি করতাম না যদি না ফোনের গলার শব্দটি মিনমিনে ও এফিমিনেট হত। পুরুষের নমনীয়তার সঙ্গে শক্তির অভাবের কোথাও একটা যোগ করি আমরা। এ ভূত প্রোটোটাইপিং এর ভূত। সে ভূত খুব সহজে যাবার নয়। আর আজ আমি অব্যর্থভাবে এটাও জানি, যে, এই ম্যান ইজ মর্টাল মানেই মানুষ মরণশীল নয়। অন্তত কেউ কেউ অস্বস্তি হয়েও টিঁকে থাকবেন। কোথাও না কোথাও।

     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ৩১ মে ২০১৩ | ৭১৯৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pinaki | 56.17.190.22 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৮:৫৯76662
  • আর দ্বিতীয়তঃ, পুরুষের নমনীয়তার সাথে শক্তির অভাবের যোগাযোগের প্রোটোটাইপিং আমরা করি তো অবশ্যই, কিন্তু সেই নমনীয়তাটা সত্যিই হায়ারার্কির কারণে এবং কাজে ফাঁকি দেওয়ার অপরাধবোধ থেকে এসে থাকতে পারে। যে কারণে তুমি অফিসের ঋতুপর্ণর ফোন ভেবেছিলে। কিন্তু এফিমিনেট সংক্রান্ত প্রোটোটাইপিংটা এই ঘটনায় অতটা সম্পর্কিত নয় বলে মনে হল। জানিনা বোঝাতে পারলাম কিনা।
  • pinaki | 56.17.190.22 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৯:০০76663
  • লাস্ট পোস্ট সৈকত বন্দ্যোকে।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.202.61 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৯:০১76664
  • 'এ ভুল আমি করতাম না যদি না ফোনের গলার শব্দটি মিনমিনে ও এফিমিনেট হত" - এটা এই বিবৃত ঘটনা থেকে অতটা নিশ্চিতভাবে হয়তো কনক্লুড করা যায় না। যেহেতু এখানে অন্য এক ঋতুপর্ণ পিকচারে ছিল, তাই এই ভুলটা পুরুষলি গলা হলেও হতে পারত -- আমারও তাই মনে হয়েছে। পিনাকীর সঙ্গে সহমত।
  • pinaki | 56.17.190.22 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৯:১৮76665
  • তার মানে আপনি বলতে চাইছেন ঋতুপর্ণ এফিমিনেট ছিলেন না?
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.202.61 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৯:২৭76666
  • 'এফিমিনেট' আবার কী ধরনের কথা? 'মিনমিনে' ছিলেন না, আর্টিকুলেট ছিলেন।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.202.61 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:০১76667
  • সম্ভাব্য কেস আরও ভাবা যায়। সোশাল মিডিয়াতে সরাসরি চেনা ছিল, কারো মধ্যস্থতা লাগে নি, ঋতুপর্ণ ঘোষ সৈকত বন্দ্যোপাধায়কে বলেছিলেন ফোন করবেন, দিল্লি যেতে হল বলে দেরি হয়েছে এবং সেজন্যে ঋতু অ্যাপোলোজেটিক। সেক্ষেত্রেও বলব সোশাল মিডিয়ার সম্পর্কটা ব্যক্তিগত। ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো ঋতুপর্ণর কাছে খুব মূল্যবান ছিল বলে শুনেছি। কিন্তু তাই বলে এতখানি আমতা আমতা করবে? 'আসলে, ভেবেছিলাম, আগেই করব, কিন্তু করা হয়নি, .... আসলে, আরও আগেই করব ভেবেছিলাম .. .. '? যে কেউ এভাবে কথা বলুক, আমি এটাকে 'আমতা আমতা করা'ই বলব, গলার স্বর মিহি হোক অথবা ভারি।
  • প্রণব রায় চৌধুরী | 69.93.192.125 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:১১76668
  • সৈকত বন্দোপাধ্যায়ের ওপরের লেখাটা খুব ভাল লেগেছে । তবে যেহেতু ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুর পরে তার স্মৃতিতে লেখা তাই একটু একপেশে । ঋতুপর্ণ ঘোষের চরিত্র ও মানসিকতার বিশেষত্ত্ব নিয়ে যতটা আলোচনা হয়েছে তাঁর মানুষ হিসাবে সৃষ্টি শীল প্রতিভা নিয়ে ততটা নয় । যদিও তা হয়ত ডিরেক্টলি লেখা হয়নি কিন্তু কেমন যেন মনে হয় তাঁর সৃষ্টির মূল কারণ তাঁর ওই বিশেষত্ত্ব , যেন যদি ওই বিশেষত্ত্ব তাঁর না থাকত তবে তিনি অত বড় মাপের শিল্পী হতেন না । কেমন যেন মনে হয় জীবনানন্দ অত বড় কবি হতেন না যদি তাঁর ট্রামে চাপা পড়ে মারা যাবার মানসিকতা না থাকত । এই সব বিশেষত্ত্ব যদি এঁদের না থাকত তবে কি এঁরা প্রতিভাবান শিল্পী হতেন না বা ওই বিশেষত্ত্বগুলোই কি ওনাদের শিল্পী করেছে ? ওনারা যদি সাধারণ মানুষের মত চরিত্রের ও মানসিকতার হতেন তবে কি তাঁদের শিল্প এই মাপের হোতনা ? তবে আমরা কেন তাঁদের বিশেষত্ত্বগুলোকে প্রাধান্য দেব । কেন ওনাদের সাধারণ যে কোন মানুষের মত করেই দেখব না ।
    কি দরকার আমাদের ঋতুপর্ণ ঘোষের ছক্কা-বিশেষত্ত্বকে তুলে ধরার অন্ততঃ তাঁর মৃত্যুকালীন ও তার পরের সময়ে । আমরা তো শুধু তাঁকে প্রতিভাবান মানুষ হিসাবে দেখে তাঁর শিল্পের জয়গান গাইতে পারি ।

    হ্যাঁ , এই লেখায় খুব একটা নেই তবে তিনি একজন প্রতিভাবান লেখকও ছিলেন । প্রতিদিন কাগজের সাথে রবিবার বলে যে সাপ্লিমেন্ট রবিবারে বেরোত তা ঊনি সম্পাদনা করতেন । প্রত্যেক সংখ্যায় তাঁর একটা ছোট হলেও অনবদ্য লেখা থাকত । যেমন আজকেরটাতেও আছে । http://www.ezinemart.com/robbar/02062013/Home.aspx
    পড়ে দেখবেন । কোথাও কি তাঁর লেখায় তাঁর ছক্কা বিশেষত্ত্বের আভাস পাওয়া যায় ?
    আমি তো তাঁকে প্রতিভাবান বাঙ্গালি হিসাবেই মনে রাখতে চাই ।
    আমার এ বিতর্কিত মন্তব্য আমি লিখতাম না যদি না আজকের কাগজে এই লেখাটা বেরত ।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:১৬76669
  • 'ট্রামে চাপা পড়ে মারা যাবার মানসিকতা ' - মানে?
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.202.61 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:৩১76671
  • আমার আজকের মন্তব্য (13.50.48) 'ঋতুপর্ণ ঘোষ কথোপকথন এভাবে শুরু করেন নি।' এটাকেও কেউ আবার ভুল না বোঝেন, পরিষ্কার করে দিই। এভাবে শুরু করেননি বলতে বুঝিয়েছি, তিনি ইন্ট্রো বা রেফারেন্স দিয়ে শুরু করেন নি।
  • প্রণব রায় চৌধুরী | 69.93.192.125 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:৩১76670
  • [ফিল্ম টিল্ম গোল্লায় যাক, গোল্লায় যাক শিল্পের শবসাধনা, কবিতার বদলে ট্রামে ছেঁচড়ে যাওয়া জীবনানন্দের ডেডবডি মনে পড়ে। সেই দশকে নাকি ওটাই ছিল একমাত্র ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যু। তাকে আপতিক ভাবতে অসুবিধে হয়, যেমন অসুবিধে হয় ঊনপঞ্চাশ বছর বয়সে একজন সফল ফিল্ম মেকারের মৃত্যু। ]

    মূল লেখার কটা লাইন ।
  • cb | 99.231.125.36 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:৩১76672
  • বলা মুশকিল কৃশানু , এই ধরণের মানসিকতা আগে তো কখনো শুনি নাই :p

    তবে বেনিফিট অফ ডাউট দিয়ে বলা চলে হয়্ত আপনভোলা চোখ কান খোলা না রেখে ভাবজগতে বসবাস করা ব্যক্তিটিকে বোঝাচ্ছেন
  • pinaki | 56.17.190.22 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:৩৪76673
  • ম্যাক্সিদির জন্যঃ
    http://en.wikipedia.org/wiki/Effeminacy

    আমি ঠিক বুঝতে পারছি না আপনি বুঝতে ভুল করছেন নাকি ওপিনিয়ন রাখছেন। এফিমিনেসি একটা ট্রেট। যেটাকে এখানে স্বাভাবিক বলা হচ্ছে এবং কোনোভাবে খাটো করা হচ্ছে না। এই ট্রেটের কিছু সিম্পটমের মধ্যে নারীসুলভ গলায় কথা বলাও পড়ে। নারীসুলভ গলাকে 'পুরুষ' এর প্রোটোটাইপিং এর ফ্রেম থেকে 'মিনমিনে' বলা হয়ে থাকে। এবং সেই 'মিনমিনে' গলা একই প্রোটোটাইপিং এর জায়গা থেকে শক্তিহীনতার সমতুল্য বলে ভাবা হয়। এখন ঋতুপর্ণর ক্ষেত্রে তিনি যতই বলিষ্ঠ এবং কনফিডেন্ট ব্যক্তিত্বের হোন না কেন, এফিমিনেট সত্ত্বার কারণে নারীসুলভ গলার স্বর তাঁর ছিল। অর্থাৎ 'মিনমিনে' ছিল। তার মানে তিনি শক্তিহীন ছিলেন - এমন নয়। যদিও আমাদের ভাবনায় এমন গলার স্বর থাকলে তাকে শক্তিহীনই ধরে নেওয়া হয়। সেইটাকেই সমালোচনা করা হয়েছে। ঋতুপর্ণ 'মিনমিনে' ছিলেন একথা বলতে চাওয়া হয় নি, তাঁর গলার স্বর নারীসুলভ অর্থাৎ 'মিনমিনে' ছিল - সেকথা বলতে চাওয়া হয়েছে। কাজেই আমার ধারণা আপনার উত্তেজিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ঃ-) তবে আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে, 'মিনমিনে' শব্দটাকে উদ্ধৃতির মধ্যে রাখলে হয়তো ভালো হত। অথবা মিনমিনের বদলে রিনরিনে স্বর বসালে হয়তো ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো যেত। ঃ-)
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১০:৪০76674
  • সিবি - বাঁচালেন, ঘাবড়ে গেসলুম :-)
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১১:০৬76675
  • যদিও প্রণববাবুর 'মূল লেখার থেকে তুলে দেওয়া কটা লাইন' পড়ে কিস্যুই বোঝা এলো না ট্রামে চাপা পড়ে মারা যাবার মানসিকতা সম্বন্ধে।
  • প্রণব রায় চৌধুরী | 69.93.192.125 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১১:০৯76676
  • হ্যাঁ , ঠিক এটাই । [আপনভোলা চোখ কান খোলা না রেখে ভাবজগতে বসবাস করা ব্যক্তিটিকে বোঝাচ্ছেন] তবে আসলে এই টইয়ের লেখকের এই মানসিকতার সাথে জীবনানন্দের শিল্পীসত্ত্বার যোগসাধনের কথা বলতে চাইছি ।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.202.61 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১১:১১76677
  • ১) It is a term frequently applied to womanly behavior, demeanor, style and appearance displayed by a male.' সেটা তার অবশ্যই ছিল। ছবিতে অভিনয় দিয়ে সে এটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। পাবলিক অ্যাপিয়ারেন্স, যেমন তাকে ইন্টারভিউ করা হলেও সে এটা মেইন্টেইন করত। ভালো লাগত আমার।

    ২) 'The term effeminate is most often used by people who subscribe to the widespread view that males should display traditional masculine traits and behaviours.' এইসব 'পিপলের' মধ্যে আমি পড়ি না। @ পিনাকী
  • ladnohc | 116.209.228.129 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১১:১৫76678
  • নারীসুলভ আর মিনমিনে সমার্থক ন​য়(যদ্দূর জানি)!
  • sosen | 125.241.28.96 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১২:১৩76679
  • ম্যাক্সিমিন, আপনার উপরোক্ত ব্যাখ্যা আর কথোপকথন পড়লাম।
    আমার দুপয়সা দিয়ে যাই। আপনার-ই অন্য একটি পোস্টে পড়লাম, ঋতুর সঙ্গে আপনার কিছুটা পরিচয় ছিল, আপনি-ও একটু স্মৃতিচারণ করেছেন। বোধহয় সৈকত-ও সেরকম কিছু রাখতে চেয়েছিলেন লেখাটিতে।সেটার সাথে মূল লেখার সুরটি তত মেলেনি, যোগাযোগটি যেন একটু কষ্টকল্পিত বা আমি নিজে ততটা কনভিন্সড হইনি (ঘটনার সত্যতা অসত্যতা নিয়ে কনভিন্সড নয়, মূল লেখার সাথে যোগসূত্র নিয়ে)। কিন্তু আপনার অভিযোগের সুরটি যেন ঘটনাটি অসত্য হলেও হতে পারে/ বা কিছুটা অসম্পূর্ণ শোনাচ্ছে সম্পূর্ণ ইতিহাস দিয়ে না লিখলে-এইরকম। সুরটি এরকম না হওয়াই বান্ছনীয়, এখন যেহেতু এরকম সামান্য ঘটনার সত্যতা অসত্যতা যাচাই অবান্তর। এ তো কোনো মারাত্মক আলাপ নয়, সাধারণ ফোনালাপ। যেমন আপনার সঙ্গে তাঁর কথা-বার্তা-ও যাচিয়ে দেখার উপায় নেই। তবে ওই যে " আমি ঋতুপর্ণ বলছি" এই বলে ফোনালাপ শুরু করা, এ তো অনেকেই জানেন। এবং ঋতুর নরম, অনেকক্ষণ ধরে টেনে টেনে কথা বলার অভ্যাস ওভার ফোন অ্যাপোলোজেটিক শোনাতেই পারে।
    লেখক কতটা লিখবেন সেটা তাঁর-ই ব্যাপার। এত আপত্তিকর কিছু নেই এতে, এবং পুরো ব্যাকগ্রাউন্ড জানাবার প্রয়োজন লেখাটিতে দেখছি না। আর যেহেতু মৃত ব্যক্তির কোনো বিশেষ অবমাননা হয়নি, সত্যতা অসত্যতা নিয়ে জেরা করে লেখককে বিব্রত করার মানে হয়না। কন্টেক্স্ট যদি লেখার সঙ্গে সম্পর্কিত হত তাহলে কথা থাকত।
    এইরকম অভিযোগ ছুঁড়ে দেওয়ার আগে আর একটু ভেবে দেখা কর্তব্য।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.253.155 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১২:৩২76680
  • রূপঙ্কর সরকার লিখেছেন 'এই ফোনটা নিয়ে ক'দিন আগে খুব উত্তপ্ত বাদানুবাদ হ'লনা?' এটা আমি পড়েছিলাম। 'ঘটনাটি অসত্য হলেও হতে পারে' -- এরকম অর্থ হবে তা আমি বুঝি নি। এমন কি হতে পারে না যে, লেখার ঐ অংশ প'ড়ে ঋতুপর্ণর জন্যে আমার খারাপ লেগেছে, দুঃখ পেয়েছি? @সোসেন।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.253.155 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১২:৩৬76681
  • তাছাড়া অসত্য ভাবলে আমি এখানে মন্তব্য করতে যেতাম না।
  • sosen | 125.241.28.96 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১২:৪৭76682
  • নিশ্চয়ই হতে পারে। সেক্ষেত্রে সবার কাছে ব্যাপারটি একটু ভুলভাবে ট্রান্সলেট হয়েছে। যাকগে, আপনি তো বলেই দিলেন, অসত্য ভাবেননি, সুতরাং এ নিয়ে আর কি বলার।
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.253.155 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১২:৫৫76683
  • প্রথম মন্তব্য কারেক্ট করে দিই। *অনুচ্ছেদ ৪ যেভাবে লেখা হয়েছে তাতে লেখার গুরুত্ব বাড়ল না, উল্টে ঋতুপর্ণ বিষয়ে ধারণা খারাপই হল।
  • Deb | 125.241.38.23 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০২:০৩76689
  • সৈকত এর লেখাটা পড়ে সত্যি ভালো লাগলো । একটা বিষয়ে আমি একমত , ঋতু দা তার জীবদ্দশায় অনেক মানুষেরই অস্বস্তির কারন ছিলেন । যা কিছু প্রথাবিরোধী , তাতেই তো আমাদের অস্বস্তি ... লাখ লাখ মানুষকে জানি যারা প্রবল অস্বস্তি নিয়েই দেখেছেন "চিত্রাঙ্গদা" বা "আর একটি প্রেমের গল্প" ... কারন তাদের অনিহা ছিল ব্যাক্তি ঋতু দা কে নিয়ে , আপত্তি ছিল ladiesfinger ঋতু দা কে স্বীকার করাতে । এই অনিহা , এই অস্বস্তি , এই আপত্তির বিরুধ্যে ছিল ওনার লড়াই । আজ এই পরিচালক ঋতু দা কে নিয়ে মাতামাতি করার মধ্যে কোথাও সুচারু ভাবে গায়েব করে দেওয়া হছে ব্যাক্তি ঋতু দা কে । এটা জরুরী কারন তার জীবদ্দশায় এই সমাজ ও মানুষের একটা বিরাট অংশ তাকে প্রতিনিয়ত যন্ত্রণা দিয়েছে তার ওই ব্যাতিক্রমের জন্য আর সেটাকে ভুলিয়ে দেবার এই চতুর চেষ্টা কিন্তু তার লড়াইটাকেই হেয় করবে । কোন একজন বলেছেন মির এর জন্যে নাকি ঋতু দা বিখ্যাত হয়েছে , এটা হয়ত মির এর ই অপমান ... যাই হোক আজ আর বোধহয় অস্বীকার করে লাভ নেই যে ঋতু দা কে নকল করে মির একটা সময়ে বেশ TRP কামিয়েছে , মির ভক্ত দের গায়ে লাগলেও এটা সত্যি । সবশেষে একটাই কথা বলি , ঋতু দার ফিল্ম গুলো এমনিতেই বেঁচে থাকবে কারন সেগুলো অধিকাংশই কালজয়ী ... কিন্তু নিঃসঙ্গতা , একাকীত্ব , নীরব কৌতুক আর লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ঋতু দার সোচ্চার ও সদর্প লড়াইটাকে যেন আমরা গায়েব করে না দি .........
  • শঙ্খ | 118.35.9.186 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০২:৩০76690
  • বাঃ ভালো লাগল। চতুর্থ পর্ব একটু বেশিই ব্যক্তিগত ঠেকলো। তবে দ্বিতীয় পর্বের শেষ প্যারা সবচাইতে ভালো লেগেছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই একঘেয়ে তানা নানার বাইরে এই লেখাটা অনেক আলাদা।
  • arindam | 69.93.199.96 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০৩:০৯76691
  • ভাল লাগল। আর পর্ব ৪ ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু তার মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি আমিটুকু কে সূর্যের নীচে ফেলে দেখানো হয়েছে। দম লাগে।
  • sp | 125.253.7.118 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০৯:২২76686
  • খাসা, চাঁছাছোলা লেখা- ভাল লাগলো বললে ঠিক বোঝানো যাবে না, বলা উচিত- সঠিক মনে হল।

    মন্তব্যের "ফোন করেছিল, কেন করেছিল, কথা বলার আগে কলার টিউন শোনা গেছিল কি না" গোত্রীয় মাছি ভ্যানভ্যানানি চূড়ান্ত বিরক্তিকর মনে হল, ধুস্‌ !
  • de | 190.149.51.67 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ১০:২৯76687
  • খুব ভালো লেখা -- লেখার নীচের কমেন্টগুলো অন্য কোথাও হলেই ভালো হতো!
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.215.151 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ১০:৫৭76688
  • নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।
  • Samit Kumar Carr | 127.200.84.197 (*) | ০৪ জুন ২০১৩ ০৩:৩৭76692
  • Saikat babu apnar lekhati bhalo hoeche ebong ami mone kori je bisoytike apni gurutwa diyechen seta niye aro likhben asha kori karon eta niye bharotiyo somaje ekta bitorker proyojon royeche karon amra onekei sei ondho kup theke berie aste parini jeta sotyer opolap othocho progotishilotar ekta mukhosh ete bose achi jetar birudhdhe apni proharo korechen bitorker jonnye seta aro proyojon. Tobe boli apni vadved sobde prog korechen seta kokno kono khetre sothik byabohar holeo dui ekti jaigay tar poriborte onyo sobdyo chayan korle bhalo hoto.
  • শুদ্ধ | 127.194.249.34 (*) | ০৪ জুন ২০১৩ ০৮:২৮76693
  • হলে নাগরিক বাঙালিকে ফিরিয়ে এনেছিলেন মানুষটা। সিনেমায় গল্প বলার যে ধারাটা খাবি খাচ্ছিল সেটা উন্নত হওয়াতে লোকে গল্পটা অন্তত দেখতে পেতেন। পরিস্কার একটা গল্প। একটা সময়ে নিজেই সেই সব গল্প বলার থেকে সরতে চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু আলো তো পড়লো তাঁর অন্য ভূমিকার উপরে বেশী। সেটাই ঠেলে নিয়েছে একটা ব্যাক্তিগত লড়াই করার ইচ্ছেকে। সৈকত এই দিকটাতেই আলো ফেলেছে। এই লড়াইটা করতে করতেই শেষ হয়ে গেলেন। হ্যাঁ, আমিও সৈকতের সঙ্গে একমত যে এই লড়াইটাই কোথাও শেষ করলো মানুষটাকে। বাকীটা পিছিয়ে যাচ্ছিল ওই প্রখর লড়াই-এর কাছে। মিডিয়ার আলোকিত জগতের বাইরের দুনিয়ায় ওটাই তাড়া করছিলো।

    একদম সরাসরি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়েই বলি। এক হবু অভিনেতা ওনার বাড়ি থেকে ফিরে এসে বলেছিল যে শুতে বলেছে বলে সে কাজ করবে না বলে এসেছে। আমি ওনাকে ভীষণ যে চিনতাম এমন না। খুব তাৎপর্য্যপূর্ণ ব্যাক্তিগত কোনো সম্পর্ক হয়নি ওনার সঙ্গে। কিন্তু অনেক বছর এই ইন্ডাস্ট্রিটার সঙ্গে জড়িয়ে থাকার ফলে সত্যি-মিথ্যের চেহারাটা পরিস্কার। ওই হবু অভিনেতাটি অভিনয়ের এক কণাও জানেন না। জানেন পরিচালক ও প্রোডাকশন ম্যানেজারদের দরজায় তেলের বাটি নিয়ে ঘুরতে। সেই সুবাদেই ঋতুপর্ণ অব্দি পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ওকে অভিনয়ে নেওয়ার কোনো কারণ ছিল না। ঋতুও নিতে চাননি তাই। এটা যদি বুদ্ধদেব কিম্বা গৌতম হতেন তাহলে এসে ওই অভিনেতা বলতেন না যে শুতে বলেছে। ঋতু বলেই অনায়াসে বলতে পেরেছিলেন।

    আমি তখন একটি প্রযোজনার পিছনের দিকে কাজ করি। নানা রকমের কাজ। তার সঙ্গে কাস্টিং নিয়েও কাজ করি। আমি ওনাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। বলেছিলাম যেহেতু এর প্রমাণ কেউ চাইতে পারবে না তাই এ কথা অবলীলায় বলছেন। তাতে উনি নানারকমের কথা বলতে থাকেন। আমি তখন ওনাকে বলি যে তাহলে অভিনেতৃ ফোরামের কাছে অভিযোগ জানান। উনি বললেন প্রমাণ নেই তো অভিযোগ কিসের ভিত্তিতে করবেন! দরজা দেখিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরিস্কার প্রোজেক্টের সঙ্গে জড়িত সকলকে বলেছিলাম একে নেওয়া যাবে না।

    না, ঋতুপর্ণকে সিনেমা পরিচালক হিসেবে আমার খুব কিছু মনে হয়নি। তার উপরে ক্রমাগত বড় সড় নাম নিয়ে কাজ করার ধাঁচ ভাল লাগতো না। এগুলো একদম ব্যাক্তিগত ব্যাপার। উনি যা ইচ্ছে হয়েছে করেছেন, আমি সে প্রসঙ্গে বলার কেউ না। কিন্তু পাঠককে জানাতে গিয়েই বললাম যে আমার এই কাজে কোনো বাড়তি সুবিধে পাওয়ার ছিল না। কিন্তু অসম্ভব রাগ হয়েছিল। আমার বোধ-বুদ্ধি বলছে ওই অভিনেতাটি মিথ্যে বলছেন এবং তার প্রমাণ আমার হাতেও নেই। বলছেন কারণ অনেকেই জানতো উনি ঋতুপর্ণর কাজ করবেন। এ প্রচার উনি নিজেই করেছিলেন। সেটা না হওয়াতে এভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছেন। এবং এটা ঋতুপর্ণ বলেই সেটা খোরাক হতে পারছে।

    সে খোরাকের আসরে অন্য লোকেরা ছিলেন না বলতে পারলে ভাল লাগতো, কিন্তু পারছি না। এই অন্যলোকদের অনেককেই দেখেছি সামনে ঋতুদা বলে হামলে পরতে। ন্যক্কারজনক মানুষ এরা! দ্বিচারিতা চেতনায় পাকাপাকি বেঁধে ফেলেছে। সৈকতের কথাকে আমি দৃঢ় সমর্থন দিয়ে গেলাম, যে মানুষটাকে মৃত্যুর দিকে সকলে মিলেই ঠেলেছে আসলে। আমি যদি এমন অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকতে পারি উনি নিজে নিশ্চই এমন আরো জেনেছেন, বুঝেছেন। সে সব বোঝা যে কোনো সামান্য সংবেদনশীল মানুষকেই একলা করে দেবে, দিতে বাধ্য।

    ' টিভিতে, খবরের কাগজে, সোশাল মিডিয়ায় যত কলকাকলি আর হাহুতাশ দেখি, সব শুধু সিনেমা। সিনেমা সিনেমা আর সিনেমা। লোকটা কোথাও নেই। কিন্তু আজ তো সিনেমার দিন না। একটা লোক মারা গেছে। একজন ব্যক্তি মারা গেছেন। সে শুধু সিনেমা নয়। নিজের আইডেন্টিটিকে সে কখনও সিনেমা দিয়ে ঢাকেনি।'- হ্যাঁ সৈকত আমার কাছেও এটাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওনার সিনেমা ও অসামান্যতা নিয়ে কথা বলে অনেকে সিনেমার লোকদের জন্যই আমার একটুকরো তাচ্ছিল্যের হাসি রইলো। মুখ আর মুখোশের ব্যবসা চলতে থাকুক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন