এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  খবর  খবর্নয়

  • সুটিয়ার কথা - পর্ব ১

    রিণিতা মজুমদার লেখকের গ্রাহক হোন
    খবর | খবর্নয় | ২৪ আগস্ট ২০১৩ | ৪৯২৮ বার পঠিত
  • উত্তর ২৪ পরগণা জেলার এক ছোট্ট গ্রাম সুটিয়া। কলকাতার থেকে আড়াই ঘন্টার দূরত্বে, বাংলাদেশ সীমান্তের শেষ গ্রাম জাদুডাঙা থেকে এক ঘন্টার দূরত্বে। চাষবাসই এখানকার প্রধান জীবিকা, জনসংখ্যার একটা অংশ জমির মালিক, অন্য অংশ ভাগচাষী অথবা রোজ খাটা জনমজুরের দল। এদের বড় অংশেরই কোনও অস্তিত্ব নেই রাজ্যের জনসংখ্যার হিসেবে, বেশির ভাগই সীমান্তপারের অনুপ্রবেশকারী শ্রমিক। এ ছাড়া স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী আছেন যাঁরা মূলত সারের ব্যবসা, কেরোসিনের ডিলারশিপ, এবং বাংলাদেশ সীমান্তের চোরাচালানের সাথে যুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই এইসব ব্যবসায় সহায়তা করে স্থানীয় গুন্ডা, স্থানীয় পুলিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা, যারা প্রত্যেকে লাভের বখরা পেয়ে থাকে নিয়মিত।

    উত্তর ২৪ পরগণার বারাসাত জেলার গাইঘাটা থানার অন্তর্গত এই সুটিয়া গ্রাম। একে ঘিরে আছে কুটিপাড়া, গজনা, বিষ্ণুপুর, পাঁচপোতা, গোবরডাঙা, ফৌদকাঁটি, ঠাকুরনগর, শিমূলকুর, ঝাউতলা, বাদেখাটুয়া, তেপুলাবরাপাড়া, গাইঘাটা, মালচাঁদপুর এবং বলদেঘাটা গ্রাম। গোবরডাঙা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন, শিয়ালদা থেকে দু ঘন্টার রাস্তা।

    গ্রামের বাসিন্দারা বেশির ভাগই ১৯৭১এর যুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশ থেকে আসা উদবাস্তুদের দল। বেশির ভাগই তথাকথিত নিচু জাত, দুই ধর্মের মানুষই আছেন এখানে। ১৯৯১ সাল থেকে এখানে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে সুশান্ত চৌধুরি আর বীরেশ্বর ঢাল নামে দুই বহিরাগত গুণ্ডা, যারা এসেছিল নাগপুর আর বলদেঘাটা গ্রাম থেকে। সেই থেকেই এরা এখানে তোলাবাজি, মুক্তিপণ আদায়, বাংলাদেশে চোরাচালানের মাল থেকে মুনাফা ইত্যাদি নানাবিধ দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত। ১৯৯৮ সাল থেকে সুশান্ত চৌধুরির ক্ষমতা বাড়ে, তার দলে আরও কিছু দুষ্কৃতীদের দল যুক্ত হয়। দুই গুণ্ডা মিলেই তাদের তোলাবাজির কারবার জমিয়ে তোলে, স্থানীয় ব্যবসায়ী, দোকানদার এবং বাসিন্দা এদের কাছ থেকে এরা নিয়মিত তোলা আদায় করত এদের স্থানীয়ভাবে ব্যবসা করতে দেবার বিনিময়ে। দুজনেই বাইরের লোক হলেও অবিলম্বে এরা সুটিয়ায় জমিয়ে বসে, এবং নিজেদের দলে স্থানীয় হতাশ, কাজ-না-পাওয়া ছেলেপুলেদের ভেড়াতে শুরু করে। এই স্থানীয় ছেলেদের বেশির ভাগই এই সব দলের "ইনফর্মার" হিসেবে কাজ করত। দেখতে দেখতে ছোটখাটো তোলাবাজির ঘটনা বাড়তে বাড়তে ২০০০ সাল নাগাদ এই সব বড় আকার ধারণ করে, এবং এর সাথে যুক্ত হয় গণধর্ষণের মত ঘটনাবলী। এর মূলে ছিল এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চালুন্দি নদীর বন্যায় সুটিয়া এবং আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়েন। বেশ কয়েকটি গ্রাম হতশ্রী হয়ে পড়ে। এই সময়ে সরকারি এবং বেসরকারি ত্রাণসাহায্য এসে পৌঁছয় এবং সেইসব বিলিব্যবস্থার কাজে লাগে স্থানীয় ছেলেরা। এর পরে যা হয়, ধীরে ধীরে তারা নিজেরাই সেই সব রিলিফের মাল সরাতে থাকে, এবং সুশান্ত আর বীরেশ্বরের সহায়তায় তাদের গুণ্ডাবাহিনি এই সব গ্রামে তাদের দৌরাত্ম্য শুরু করে। গুন্ডাবাহিনি রিলিফের দখল নেয় এবং তারাই স্থানীয় স্কুল পালানো, কর্মহীন, হতাশ কমবয়েসী ছেলেদের নিজেদের দলে নিয়োগ করতে শুরু করে, ক্রমে সুটিয়া এবং আশপাশের সমস্ত গ্রামের রিলিফ সেন্টারের দখল তারা নিয়ে নেয়, এবং তাদের সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয় পুরো এলাকায়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে তারা তোলাবাজি আর অত্যাচার চালাত, লোকাল ইনফর্মারদের সাহায্যে তারা স্থানীয় পরিবারগুলো সম্বন্ধে খবর জোগাড় করত, তারপরে বাইকবাহিনী নিয়ে চড়াও হত সেই পরিবারের ওপর, মহিলাদের অত্যাচার এবং ধর্ষণ করত, তারপরে টাকা দাবি করত। কখনও দাবির কম টাকা নিয়েই তারা খুশি হয়ে যেত, কখনও কখনও তারা বাধ্য করত পরিবারটিকে নিজেদের আংশিক জমিজিরেত বেচে টাকা তুলে দেবার জন্য। পুলিশে খবর দিলে মেরে ফেলার হুমকি দিত তারা। কখনও তারা লাগাতার কয়েক দিন ধরে কোনও একটি বাড়িকে ঘিরে থাকত, কাউকে বেরোতে দিত না যতক্ষণ না তাদের দাবি মানা হত। সবাই জানত, স্থানীয় পুলিশের সাথে তাদের যথেষ্ট বোঝাপড়া ছিল এবং দুই গুণ্ডাবাহিনির নেতাই বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় পুষ্ট ছিল, তাদের ধরা সোজা ছিল না। মেয়েদের তারা ধরে নিয়ে যেত নাগবাড়ি এলাকায় একটা ছোট পরিত্যক্ত ঘরে, তারপরে সেখানে তার ওপর অত্যাচার চালাত। একটিমাত্র কেসে আমি জনৈক সারভাইভারের নিজের মুখ থেকে শুনেছি সেই অত্যাচারের কাহিনি, বাকি কেসগুলো আমি শুনেছি অন্যদের মুখ থেকে এবং লোকাল থানার এফআইআর থেকে। আমি আবার সুটিয়া যাব আরও বিস্তারিত জানতে।

    মাত্র ৩৫টা কেস ডকুমেন্টেড হয়েছে, স্থানীয়দের মতে প্রকৃত কেসের সংখ্যা আরও অনেক, অনেক বেশি, সবই চাপা দেওয়া হয়েছে, কারণ অত্যাচারিতারা নিজেরাই মুখ খুলতে রাজি হন না অনেক সময়ে। আমি কয়েকটি কেসের ক্ষেত্রে কেস নম্বর দিয়েছি, সব দেওয়া গেল না কারণ সেটা একটা বিশাল সময়সাপেক্ষ কাজ হত। আমার প্রকাশিতব্য বইতে আমি সমস্ত কেস সম্পূর্ণরূপে লিখব যা আমি তথ্য সংগ্রহ এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এক এক করে জোগাড় করেছি। সুটিয়াবাসীদের কাছে এ আমার শপথ।

    সময়-সারণীঃ

    ২০০১-২০০২ - কিছু মহিলা মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভকে ধর্ষণ করা হয় (সংখ্যা পাওয়া যায় নি)। তাঁরা যখন সুটিয়া এসেছিলেন, তাঁদের টেনে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের মাঠে, সেখানে ধর্ষণ করা হয় তাঁদের। কোনও এফআইআর হয় নি এ ব্যাপারে, শ্রী ননীগোপাল পোদ্দারের জুলাই ২৭, ২০১৩-র বক্তব্য অনুযায়ী লেখা।

    ২০০১ - তেরো-চোদ্দ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়। সে থাকত তার মা আর ভাইয়ের সাথে, পুঁতির গয়নার কাজ করে দৈনিক মজুরিতে তাদের দিন চলত, দারিদ্র্যসীমার নিচের বাসিন্দা। গুন্ডাদের দল জোর করে মেয়েটিকে ধরে নিয়ে যায় এক নির্জন জায়গায় কোনও এক ধানক্ষেতের মাঝে, জোর করে তাকে মদ খাওয়ানো হয় যতক্ষণ না সে বেহুঁশ হয়ে পড়ে, তারপরে চারজন মিলে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। পরদিন তাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং হুমকি দেওয়া হয় পুলিশ বা অন্য কাউকে খবর দিলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এর পর আবার দ্বিতীয়বার অন্য এক দিন তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় "সুখসাগরের ভিটে" নামে পরিচিত সুটিয়ার একটা নির্জন জায়গায়, এবং আবার তার ওপর গণধর্ষণ চালানো হয়। নগ্ন অবস্থায় তার ছবি তোলা হয়। মেয়েটির মামাকেও হুমকি দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানতে পারলে তাদের প্রাণে মেরে দেওয়া হবে। চারদিন ধরে মেয়েটির ওপর অত্যাচার চালানো হয়, তারপরে আবার সে ছাড়া পেলে তাদের পরিবার রাতারাতি সুটিয়া ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।

    ২০০১ - হিতলাল বায়েন নামে এক ব্যক্তি যিনি এখন প্রতিবাদ মঞ্চের সদস্য, তাঁর নিজের পরিবারের ওপর হওয়া অত্যাচারের কথা বলেন। তাঁর বাচ্চাকে ছুঁড়ে ফেলা হয়, স্ত্রীকে নির্মমভাবে পেটানো হয়। নন্দ হালদার নামে একজন বলদেঘাটা গ্রামের ঘরে ঘরে ঢুকে মহিলাদের নগ্ন করে ছবি তুলতে থাকে। গীতা বিশ্বাস নামের এক বয়স্কা মহিলা এবং শ্যামল বৈদ্য নামে এক ফটোগ্রাফার তাকে এই কাজে সাহায্য করত। গীতা বিশ্বাস মহিলাদের, বিশেষত সুন্দরী মহিলাদের ভুলিয়ে ভালিয়ে এই নন্দ হালদারের কাছে নিয়ে আসত, তারপরে শ্যামল বৈদ্য তাদের জামাকাপড় খুলে ফটো তুলে তাদের ছেড়ে দিত। এর পর গুন্ডাদের দল সেই সব ছবি লাখ টাকার অঙ্কে বাইরে বিক্রি করত।

    ২০০১ - নাগবাড়ি এলাকায় এক মহিলা নিজের বাড়িতে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হন। তাঁকে প্রথমে অপহরণ করা হয়, তারপরে এইখানেই আবার নিয়ে এসে তাঁকে নগ্ন করে ছবি তোলা হয়, সাথে যথারীতি হুমকি দেওয়া হয়, কাউকে খবর দিলে সুটিয়াতে তাঁকে টিকতে দেওয়া হবে না। পরদিন তারা আবার আসে, তাঁকে তুলে নিয়ে যায় বলদেঘাটায়, তিনদিন আটকে রেখে তাঁর ওপর অত্যাচার চালানো হয়। (এফআইআর এবং মহিলার মৌখিক জবানবন্দীর ভিত্তিতে লিখিতঃ কেস নং IPC 159/02)।

    ২০০২ - ১৪ বছরের একটি মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়। মেয়েটির মা বাড়ি বাড়ি কাজের লোক হিসেবে কাজ করতেন। সুশান্ত চৌধুরির দল পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে তাঁকে তাঁর শরীর বিক্রি করতে বলে। রাজি না হওয়ায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, জোর করে অ্যালকোহল খাওয়ানো হয়, ফলস্বরূপ তাঁর শরীর থেকে রক্তপাত শুরু হয়।

    ২০০১ - এক অল্পবয়েসী অবিবাহিতা মহিলাকে নাগবাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, নগ্ন করে ধর্ষণ করা হয়, এবং সেই অবস্থাতেই বন্দী রাখা হয়। ধর্ষণের ভিডিও রেকর্ডিংও করে রাখা হয়।

    ২০০১ - গণধর্ষণের পরে সবার সামনে এক মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানো হয়, নরপশুরা তাঁর যোনিতে আইসকিউব ঢুকিয়ে উল্লাস অনুভব করতে থাকে। আরেক মহিলা স্বামীর সঙ্গে রিক্সায় চেপে মছলন্দপুর থেকে তাঁর বাপের বাড়ি সুটিয়ায় আসছিলেন, পথে ভাড়া নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে রিক্সাওলার কিছু বচসা হয়। সেই সময়ে গুন্ডা দলের এক ইনফর্মার ওখান দিয়ে যাচ্ছিল, সে গিয়ে দলটিকে খবর দেওয়া মাত্র গুন্ডারা এসে এই দম্পতিকে ঘিরে ধরে, এবং দাবি করতে থাকে এরা নাকি আসলে সত্যিকারের স্বামী-স্ত্রী নয়, অতএব এদের একসঙ্গে থাকা "অনৈতিক"। জোর করে তাদের রিক্সা থেকে নামিয়ে ছেলেটিকে বেদম পেটানো হয়, এবং প্রকাশ্য রাস্তায় ফেলে মেয়েটিকে নগ্ন করে এবং তারপরে ধর্ষণ করে এবং তারও পরে যোনিতে আইসকিউব ঢুকিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে। এর পরে তাদের কাছ থেকে গুণ্ডাবাহিনি পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। দম্পতিটির পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। অনেক অনুনয় বিনয়ের পরে দশ হাজার টাকায় রফা হয়, এবং টাকা দেবার পরে তাদের ছাড়া হয় (কেস নং 160/02)।

    ২০০২ - সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক মহিলা গোবরডাঙায় ট্রেন থেকে নামেন দুই সন্তান সমেত। বাচ্চাদুটির তেষ্টা পেয়েছিল, তিনি জলের খোঁজ করছিলেন। দুটি কোকের বোতল কেনেন তিনি, বাচ্চাদের হাতে দেন, এর পর তাঁরা বাসে ওঠেন। পুরো ব্যাপারটাই ইনফর্মাররা নজর করছিল, খবর পৌঁছে যায় যথাস্থানে, মাঝরাস্তায় বাস থামিয়ে ওই মহিলাকে বাচ্চাসমেত নামানো হয়, পাশের ধানক্ষেতে নিয়ে গিয়ে তাঁকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করা হয়, তৃষ্ণার্ত বাচ্চাদের হাত থেকে কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল ছিনিয়ে নিয়ে তারা নিজেরা খেয়ে নেয়।

    ২০০২ - আরও এক মহিলার গণধর্ষণ হয়, স্বামীকে বেঁধে রেখে পেটানো হয়। সুটিয়ার কাছে বিষ্ণুপুরের ঘটনা। মহিলাটি প্রাথমিকভাবে বিধবা ছিলেন এবং সম্প্রতি এক বিপত্নীক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন। গুণ্ডাদের দল একদিন তাদের বাড়িতে চড়াও হয় এবং অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ আনে, স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রী-র ওপর গণধর্ষণ চালায়। তার পরে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে দম্পতিটির কাছ থেকে। তাদের কাছে অত টাকা ছিল না। গুণ্ডারা তখন নজর দেয় তাদের সামান্য একটু জমির ওপর। সেই জমি বিক্রি করে তাঁরা পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন। এক বছর পর স্বামীটি মারা যান। এর মধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে দলটিকে পুলিশ গ্রেফতার করে, কিন্তু বয়ানের কিছু আইনি অসঙ্গতিতে তারা অনায়াসে বেল পেয়ে যায়।

    ২০০২ - সুটিয়ার কাছে গাজনা গ্রামে এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়, তারপরে নগ্ন করে তার ছবি তোলা হয়। দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় এদের বাড়ি এসেছিলেন, ইনফর্মার সেই খবর পৌঁছে দেয় যথাস্থানে, এর পর দলবল এসে চড়াও হয় মেয়েটির বাড়ি, অভিযোগ করে আগন্তুকের সঙ্গে মেয়েটির অবৈধ সম্পর্ক আছে। এর পরেই ঘটে গণধর্ষণ এবং তারপরে এক স্থানীয় ফটোগ্রাফারকে ডেকে এনে মেয়েটির নগ্ন ছবি তোলা হয়। ফটোগ্রাফারকে ছবি তুলতে রাজি না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এর পর পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করা হয় এবং কুড়ি হাজার টাকায় রফা হয় (কেস নং IPC 161/02)।

    ২০০২ - সুটিয়ায় এক মায়ের সাথে রাগারাগি করে বড় ছেলে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। দুদিন পরে ছেলেটির মা, ছেলেটির মামাকে এই খবর দেন। মামা আসেন ছেলেটির বাড়িতে। ইনফর্মারের মাধ্যমে পুরো খবর পৌঁছে যায় গ্যাংএর কাছে, তারা আসে এবং একই পদ্ধতিতে প্রথমে দাবি করে ছেলেটির মামা এবং মায়ের মধ্যে "অবৈধ" সম্পর্ক আছে, তারপরে মহিলাকে টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে, এর পরে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। পরে কুড়ি হাজার টাকায় রফা হয়।

    ২০০৩ - একটি চোদ্দ বছরের মেয়েকে (নাম ধরা যাক, ক) ধর্ষিতা হতে হয় তার বাবার চোখের সামনে। ১৯ বছরের একটি ছেলে, (ধরা যাক, তার নাম খ) ক-এর দিদির প্রেমে পড়ে। ক-এর দিদি প্রত্যাখ্যান করে, খ তবু হাল ছাড়ে না। ক-এর মা-বাবা ছেলেটিকে ডেকে তাঁর মেয়ের কাছে আর আসতে বারণ করে দেন। খ এতে অপমানিত বোধ করে এবং গুণ্ডাদের দলে যোগ দেয়। ইতিমধ্যে ক-এর বাবা নিজের বাড়ির কিছু সারাইয়ের কাজকর্ম শুরু করেন। এই পরিবারটি বাংলাদেশ থেকে ১৯৭১ সালে চলে আসা, সেই থেকেই এঁরা এই এলাকাতেই বসবাস করছেন। ২০০৩এ আর্থিক অবস্থার কিছু উন্নতি হয়, হাতে কিছু পয়সা আসে, ক-এর বাবা তাই বাড়ির সংস্কারে মন দেন, কিছু ঘর বাড়ান। একদিন রাতে খ বাইকে চেপে দলবল নিয়ে ক-এর বাড়িতে হামলা করে। দরজা জোর করে খুলে ঢুকে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে ক-এর বাবার কাছে, কারণ তারা লক্ষ্য করেছিল, ক-এর বাবার হাতে কিছু পয়সা এসেছে। তারা আরও হুমকি দেয় যে পয়সা না পেলে তাঁর দুই মেয়েকেই ধর্ষণ করা হবে। মেয়েদুটির মা পেছনের দরজা দিয়ে পালান, এবং তাদের ন'বছরের ভাইও পালিয়ে এক সম্পর্কিত ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। অসহায় বাবা যখন জানান যে তাঁর পঞ্চাশ হাজার টাকা দেবার সামর্থ্য নেই, গুণ্ডারা তখন বড় মেয়েকে মারতে শুরু করে, মেয়েটির তখন ১৮ বছর বয়েস। এর পর চারজনে মিলে ছোট মেয়েটিকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে, তাদের বাবার চোখের সামনেই। বড় মেয়েটি তখন অসুস্থ ছিল, তার অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন হবার ছিল, সে একটু জল চায়। গুণ্ডারা জল দিতে অস্বীকার করে এবং সমানে তাকে মারধোর করতে থাকে। মারধোর এবং গণধর্ষণের পর দলটি পুলিশকে না-জানানোর হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। দলের কয়েকজন আড়াল থেকে পরিবারটির ওপর নজর রাখছিল, তারা দিনরাত বাড়ির চারপাশে পাহারা দিত, কাউকে বাড়ি থেকে বেরোতে দিত না। ফলে ক-এর দিদিকে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন না, এমনকি নিজেদের দোকান বাজার যাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। তিনদিন পরে গুণ্ডাদের নজরদারিতে ঢিলেমি পড়ে, এই সুযোগে পরিবারটি ঘর থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এখন ক-এর বিয়ে হয়ে গেছে এবং সে একটি দশ বছরের ফুটফুটে বাচ্চার মা। প্রতিরোধ মঞ্চের আজ সে একজন সামনের সারির সদস্য। নিহত বরুণ বিশ্বাসের নামে শপথ নিয়েছে সে, এই অন্যায়ের প্রতিশোধ সে নিয়ে ছাড়বে (কেস নং IPC 158)।


    অনুবাদঃ শমীক মুখোপাধ্যায়


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • খবর | ২৪ আগস্ট ২০১৩ | ৪৯২৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Rinita Mazumdar | 81.222.170.27 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০২:২০77234
  • আমর সোব্চেয়ে ইন্তেরেস্তিঙ্গ লাগে জে এই ঘোতোন গুলো ইস জুস্ত থে সুর্ফে, ফ্রোম ্হত ঈ গোত ফ্রোম গৈঙ্গ থেরে, সোর্ত ওফ লিকে এক্ত োলোনিঅল মেথোদোলোগ্য উসে কোরে, জেত ফেমিনিস্ত মেথোদোলোগ্য থেকে একেবরে ভিন্নো। কিন্তু অমি জোখোন ফেমিনিস্ত মেথোদোলোগ্য উসে কোর্লম তোখোন দেখ্লম, জে ইেস্তুঔস রপে ইস নো লেস্স, এতই পত্রিঅর্চ্য।।। ততে দিয়ে দেঅথ পেনল্ত্য ইস নোত থে সোলুতিওন।। ফেমিনিস্ত সোলুতিওন ওন্নো সেত এখনে দিুস্স কোর জবে ন।।।
  • Rinita Mazumdar | 81.222.170.27 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০২:৩১77235
  • Sorry I wrote the last post half in bengali and half in English, so it is illegible. I wanted to say what I find most interesting is that this is just the surface of everything; my research methodology was somewhat colonial, going and seeing the surface, not the magical writing pad, when I used feminist methodology, however, it seems incestuous rape surpasses the so called "public rape". State involvement and death penalty is definitely not the answer, the feminist answer lies somewhere else this is not a place to discuss it....
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০২:৫০77236
  • সচদার ভুল হচ্ছে। নিকটজনের কথা আগে একজন বলেছেন বলে রঞ্জনদা আনলেন। রঞ্জনদার কথা শুনে মনে হচ্ছে, ফাঁসি উনি একটা কারণেই চাননা, কারণ রিট্র্যাক্ট করা যায় না। কিন্তু ভিক্টিমের নিকট মানুষজনের সাথে কথা বার্তা বলেই কী দেশের আইন ঠিক হবে? সেটাই তো মনে হল। সেটা কী ঠিক হবে?

    আর এই 'আমি সুশীল' টাইপ এর পাবলিক এর কথা-বার্তা খুবই বিরক্তিকর। যাগগে, একথা শুনেও উনি আবার এই রকমই আরেকসেট কথা বলবেন, কাজেই সেটা ইগ্নোর করব। একবার অন্ততঃ জানিয়ে গেলাম।

    Comment from sch on 30 August 2013 22:22:41 IST ঃ এই পোস্টটাকে পুরোপুরি ক দিলাম।
  • sch | 126.203.179.84 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০৩:৪৫77237
  • কৃশাণু আমি কিন্তু একবারও বলতে চাইছি না যে মেয়েটির বাবা মা চাইছেন বলেই ফাঁসি দিতে হবে। আইন আইনের পথে যাবে। দরকার হলে তার সংশোধনের পথ দ্রুত বার করতে হবে। আইন তো সমাজের জন্যে - তাই সমাজের ডাইনামিজম মাথায় রেখে আইনকে বদলাতে হবে। সেটা আইনের রক্ষকদের হাতে ছেড়ে দিলাম

    আমার শুধু বক্তব্য ছিল যে কাছের মানুষের অনুভূতি কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুব তীব্র হয়। শোক যুক্তি মানে না। সেখানে প্রতিশোধ স্পৃহার থেকেও বোধহয় একটা ইচ্ছে হয় যে চলে গেছে তার প্রতি যে অপরাধ হয়েছে সেটা যেন বিচার পায়।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০৩:৪৯77238
  • একমত।
  • s | 82.182.68.149 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০৪:২৭77239
  • আগেও বলেছি আবারও বলছি, আমি এক্ষেত্রে কল্লোলদার সংগে একমত নই। সামাজিক আন্দোলন, শিক্ষা, চেতনা বিস্তার সব কিছু করা যেতেই পারে কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা উচিৎ কঠিন শাস্তি। মোলেস্টেশনের জন্য যাবৎজীবন, রেপের জন্য ক্যাস্ট্রেশন, একাধিক রেপ, গনধর্ষণ, ভিক্টিমের মেজর শারিরিক ক্ষতি করা, খুন ইঃ জন্য স্ট্রেট ফাঁসি। আর যারা এব্যাপারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে মদত দিয়েছেন তাদের যাবজ্জীবন। বিচার আর শাস্তি ঘোষনা চাই ম্যাক্সিমাম এক বছরের মধ্যে। পুলিশ FIR না নিলে বা প্রাশাশনিক বা রাজনৈতিক কোন বাধা এলে, যারা জারা ইনভলভড প্রত্যেকের অন্তত ৫ বছরের জেল।
    দেখুন না বছর দিয়েক এই পদ্ধতি নিয়ে, যে হারে রেপ হচ্ছে তাতে ২ বছরে কম করেও ২০০-৩০০ কেসে এই শাস্তি অ্যাপ্লাই করা যাবে। রেপ নির্মূল হয়ত হবে না কিন্তু সংখ্যায় কমবে এটা গ্রান্টি।
  • s | 82.182.68.149 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০৪:২৯77240
  • * প্রাশাসনিক
    * যারা
  • cm | 127.97.243.126 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০৫:১০77241
  • ফাঁসির দাবী করে দয়া দেখানো হচ্ছেনাতো? ঢিল ছুড়ে মারলে বা অন্য কোন মধ্যযুগীয় পন্থা নিলে কেমন হয়? বিশেষ করে যারা কড়া কড়া শাস্তি চাইছেন তাদের চোখের সামনে দেওয়া গেলে কেমন হয়?
  • ranjan roy | 24.99.49.2 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ০৮:০০77242
  • হ্যাঁ, সিএম; পাব্লিকলি পাথর ছুঁড়ে মারা হবে আর সবাইকে ভীড় করে দাঁড়িয়ে দেখতে বাধ্য করা হবে। এটা তালিবানিরা করে বটে! মধ্যযুগেও এই ব্যাপারটা ছিল।

    হ্যাঁ, ধার্মিক অনুশাসন ওলা দেশে চুরি করা হাত কেটে ফেলার বিধান আছে। সেই নীতির লজিক পরম্পরায় এখানেও কেউ কেউ ধর্ষণে ক্যাস্ট্রেশনের কথা বলছিলেন।

    ব্ল্যাংকি,
    না, আদৌ ধর্ষকদের নীতি শিক্ষা দিয়ে শুদ্ধিকরণে বিশ্বাসী নই। যাবজ্জীবন কারাবাসের ফলে কেউ যদি ভাবার সময় পায় ও অনুতপ্ত হয় সেটা উপরি ফাউ। সেটা পাওয়া লক্ষ্য নয়।
    যবজ্জীবন কারাবাসের লক্ষ্য ওই ভয়ংকর জীবটিকে সমাজ থেকে castrated করে রাখা যাতে ও আর কারো কোন ক্ষতি করতে না পারে।

    আসলে শুরু থেকেই তোমাদের মনে হয়েছে যে প্রাণদন্ডের বিরুদ্ধে , সে কোন শাস্তিরই বিরুদ্ধে, তা নয়।

    কেউ আমাকে স্বজনহারানোদের কাছে গিয়ে প্রাণদন্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে জ্যান্ত ফিরে আসা যায় কি না experiment করতে বললেন না?
    তাঁকে বলছি ওপরে রিণীতা মজুমদারের পোস্ট দেখুন। যিনি প্রাণদন্ডের বিরুদ্ধে, কিন্তু অনায়াসে সুটিয়া গিয়ে তত্থ্য সংগ্রহ করছেন ও করবেন। কারণ শাস্তি কি হওয়া উচিৎ এ নিয়ে মতভেদ থাকলেও ক্ষমতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দোষীদের শাস্তি দেয়ার প্রয়াসের ব্যাপারে রিণীতা, শহীদ বরুণ বিশ্বাস ও প্রতিবাদী মঞ্চ একই জায়গায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে।
    আসলে আমরা এই প্রাণদন্ড নিয়ে এখানে কথা বলে টইকে বিপথগামী করছি। রিণীতা ইশারা করছেন।
    আরে, আগে তো দরকার দোষীদের ধরা ও দ্রুত বিচার করে শাস্তি দেয়া-- সেটা প্রাণদন্ড হোক বা না হোক! টইটা সেই জন্যে।
    আইনে যতদিন প্রাণদন্ড আছে ততদিন প্রাণদন্ড হবেই , আমি চাই বা না চাই। কিন্তু তাদেরই হবে যাদের সত্যি সর‌্যি ধরা হবে, এবং সাক্ষীদের প্রটেক্শন দিয়ে দ্রুত বিচার হবে। সেটাই তো হচ্ছে না। আসুন, সেটা কেন হচ্ছে না, কি করা উচিত-- সেটা নিয়ে কথা বলি।
    কেউ সুশীলদের থেকে শিখবেন নাকি দুঃশীলদের থেকে, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত চয়েস।
    আর প্রাণদন্ড নিয়ে আলাদা টই আছে, তাতে ডেটা দেওয়া আছে যে অধিকাংশ দেশেই প্রাণদন্ড উঠে গেছে। এমনকি এবার সিপিএম ও প্রানদন্ডের বিপক্ষে সওয়াল করেছে।
    আসুন, মূল লেখায় ফিরি।
  • বিশ্বজিৎ মিত্র | 233.223.151.138 (*) | ৩১ আগস্ট ২০১৩ ১২:৫৫77230
  • আমি বরুণ বিশ্বাস স্মৃতিরক্ষা কমিটির সম্পাদক। কেউ দয়া করে রিনিতা মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগের উপায় জানান, তবে খুব ভাল হয় ।
  • anirban | 34.5.197.153 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৩:২৮77244
  • সুশান্ত, বীরেশ্বররা কি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল? আর এই ভয়ানক অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক দল কি প্রতিবাদ/প্রতিরোধের কোনো চেষ্টা করেছিল?
  • ইনাসি | 212.142.80.234 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৩:৩৫77245
  • রঞ্জন রায়> ধন্যবাদ। আমি সহমত।
  • কল্লোল | 111.63.169.12 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৫:৪০77246
  • ছোট স।
    কঠিন আইন অপরাধকে কোনভাবেই আটকায় না। উদাহরন খুন। খুন প্রমাণ হলে শাস্তি ফাঁসী বা যাবজ্জীবন। তাতে খুন কমেছে?
    আমি কোথাও বলিনি যে ধর্ষণকারীর শাস্তি চাই না। আমি নীতিগতভাবে মৃত্যুদন্ডের বিরোধী। তাবলে অপরাধ করলে শাস্তি তো হতেই হবে। আমি মনে করি নির্ভয়া কেসে "নাবালক"টির আরও বেশী সময়ের কারাদন্ড হওয়া উচিৎ ছিলো। সেই ছিলো সবচেয়ে নৃশংষ।
    শাস্তির সাথে অপরাধ কমানো বা বন্ধের ততো কোন সম্পর্ক নেই।
    শাস্তি তা যত কঠিনই হোক তাতে অপরাধ কমে না, বন্ধও হয় না। বিশেষ করে ধর্ষণের মতো অপরাধ, যার মূলে রয়েছে আমার আপনার বাড়ি-সমাজের শিক্ষা। মেয়েরা অবহেলার পাত্র - এটা আমাদের চারপাশ ক্রমাগত আমাদের বুঝিয়ে চলেছে। যৌনতা বিশেষতঃ মেয়েদের যৌনতা নিয়ে হাজার রকমের ট্যাবু, পুরুষদের এক চরম যৌন হেজিমনির জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। কেন বলুনতো ভিড়ের মধ্যে কোন নারীর শরীর যদি কোন পুরুষ শরীরের সংস্পর্শে আসে, তাতে নারীটি ভয়ার্ত হয়, লজ্জা পায়। কোই পুরুষটি তো লজ্জা বা ভয় পায় না!! বড়জোর অস্বস্তি বোধ করে।
    মেয়েদের সতীত্ব হয়। যা গেলে নাকি মেয়েদের আর কিছুই থাকে না। ছেলেদের সতীত্ব!! ফাগোল!!! ছক্কা নাকি?
  • maximin | 69.93.253.100 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৮:০৯77247
  • sickening. It was tough even to read this. I can imagine what you felt like Rinita. Appreciate your tenacity of purpose. Salute.
  • প্রাসঙ্গিক | 233.231.39.206 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৮:১২77248
  • ...কিন্তু এই যে আমরা এসেছি প্রতিবাদ করতে, বিষয়টা আরো গভীর, আরো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু যুক্ত আছে, আমরা ত বিগত ক’দিন ধরেই করছি প্রতিবাদ। যখন সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথনকে হত্যা করা হল, শীলা দিক্ষিত বললেন যে মেয়েটি রাতে বাইরে বেরিয়েছিল, ভোর ৩টায় সে বাইরে ছিল, সে বেশী ‘এ্যাডভেঞ্চারাস’ ছিল!

    তাই আমরা বলতে এসেছি যে মেয়েদের অবশ্যই অধিকার আছে এ্যাডভেঞ্চারাস হবার। আমরাও এ্যাডভেঞ্চারাস হব। হ্যাঁ আমরা রেক্‌লেস হব। আমরা র‌্যাশ হব। আমরা আমাদের ‘সেইফটি’ অটুট রাখতে কিচ্ছু করবনা। আমাদের বলতে এসোনা কোন পোষাক আমরা পরবো না পরবো। রাতের ক’টা বাজলে আমরা বাইরে বেরতে পারব, দিনের বেলায় কিভাবে বেরবো, সাথে কত জনকে নিতে হবে—এইসব আমাদের বলতে এসোনা।

    ...নীরজ কুমার যখন পুলিশ কমিশনার হলেন, প্রেস কনফারেন্স করলেন, বললেন যে রেপ কেসে পুলিশ আর কিই বা করতে পারে? প্রথম তিনি বললেন যে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তারাই ধর্ষণ করেন যারা মহিলাটির সুপরিচিত। তিনি ঠিকই বলেন, ঘটনা তা’ই। কিন্তু, তাই যদি হয় তাহলে কি তাদের পাকড়াও করাটা আরও সহজ হয়ে যায়না? আর যাই হোক, মেয়েটি যদি জানেই কে তাকে ধর্ষণ করেছে তাহলে তাকে ধরাটাতো আরও সহজ হয়ে যায়। আমরা তো পুলিশকে বলছিনা যে কেন তুমি রেপ আটকাওনি। আমরা প্রশ্ন তুলছিঃ শাস্তি পাবার হার, যা ১৯৭১ সালে ছিল ৪৬% আর এখন কমতে কমতে ২৬% হয়েছে, এর জন্য কে দায়ী? এটা আমাদের দেখিয়ে দেয় যে এক আতঙ্কজনক গ্যাপ বর্তমান, পুলিশী তদন্তে এই গাফিলতি...

    ধর্ষনের কেস কি করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে তার কোন পদ্ধতিই নাই। একটাই পদ্ধতি বুঝি আছে... যদি আপনি থানায় যান আর বলেন যে আপনি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাহলে প্রথমেই ওনারা যা বলবেন তা হ’ল এফ আই আর কোরোনা। চারিদিক থেকে, এমনকি থানার বাইরে থেকেও, লোকজন এসে বোঝাতে শুরু করবে “অভিযোগ দায়ের কোরোনা” । যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি পদাধিকারীদের ক্ষমতাসিঁড়ি বরাবর ওপরে পৌঁছাবেন এবং বলবেন যে উমুক ছাত্র সংগঠন বা তুমুক নারী সংগঠন থেকে আপনি এসেছেন ততক্ষণ কিচ্ছুটি হবেনা। এ একদম মামুলি ব্যাপার দাঁড়িয়েছে, গোটা দিল্লীতে এমন একজন মহিলাও খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ যিনি জানেননা যে এই পদ্ধতিটাই আসলে পুলিশ ফলো করে, কোনও রুল বুকে লেখা নেই, কিন্তু এটাই রেগুলার প্র্যাক্টিস।

    আরও একটি বিষয়, যা নীরাজ কুমার ওই প্রেস কনফারেন্সে বলেন, যে, রাতের বেলা মেয়েদের একা বেরন উচিত না, কাউকে সাথে নেওয়া উচিত, যদি তুমি রাত্রি ২টার সময় বেরাও, তাহলে কীভাবে তুমি আশা করো যে পুলিশ তোমাকে বাঁচাতে আসবে?...

    ...যদি তার ইচ্ছে হয় বাহির হতে, যদি সিগারেট কিনতে দরকার পড়ে তার, যদি একটু খোলা হাওয়া খেয়ে আসতে চেয়ে থাকে সে, তাহলে সেই ইচ্ছা আকাঙ্খাকে মেয়েটির অপরাধে পর্যবসিত করে দেওয়া চলবেনা। আমরা ওই ডিফেন্সিভ বাচন শুনতে চাইনা যে— মেয়েরা ঘর ছেড়ে বের হয় কাজের জন্য, আহা বেচারী, কী আর করবে, বাধ্য হয়েছে বাড়ি ছেড়ে বেরতে। আমরা বিশ্বাস করি যে মেয়েদের স্বাধীনতা —তা সে গৃহ অভ্যন্তরেই হোক বা তার বাইরে, দিনেই হোক বা রাতে, যা ই সে পরিধান করুক— স্বাধীনতাটা গুরুত্বপূর্ণ এবং এই স্বাধীনতা, ভয়ের গণ্ডি থেকে স্বাধীনতা, অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে।
    এইটাই চাইছি আমরা।

    ...এই সিকিউরিটি শব্দটা, আমরা মেয়েরা যেটা সর্বদাই শুনে থাকি আমাদের পরিবারে, নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে, প্রিন্সিপালের কাছে, ওয়ার্ডেনের কাছে, আমরা সবাই জানি সিকিউরিটি বলতে কি বোঝান হয়— তুমি নিজে ঠিকঠাক চলাফেরা করো। তুমি বাড়ি ফেরো। এইভাবে ওইভাবে পোষাক পরোনা। স্ব-অধীনতার শর্তে ভর করে বাঁচতে চেওনা— সেইফ থাকা বলতে তারা এটাই বুঝিয়ে থাকে। সমাজের সমস্ত পিতৃতান্ত্রিক প্রথা ও বিধিনিয়মের পাহাড় জমিয়ে মেয়েদের দেয়া হয় ‘প্রটেকশন’ হিসাবে এবং আমরা তা সর্বৈব প্রত্যাখ্যান করছি, আমরা জানিয়ে দিতে চাই যে আমরা যা চাইছি ওগুলো তা নয়।

    নারীর ওপর হিংসার বিরুদ্ধে দিল্লী পুলিশ এক প্রচার আভিযান চালাচ্ছে, আইটিওর আসপাশে আপনারা তার হোর্ডিং দেখে থাকতে পারেন... মেয়েদের ওপর চলা হিংসা বিরোধী এই বিজ্ঞাপনে একটিও মেয়ে নাই! আছে একজন পুরুষ ফিল্ম এক্টর, ফারহান আখতার, যে বলছেঃ পুরুষ হও, মেয়েদের রক্ষা করতে আমার সাথে যোগ দাও।
    তাই আমি বলতে চাই যে,
    যে ভ্রাতা তার ভগ্নির মুণ্ডুটা কেটে নেয় সে অন্য সম্প্রদায়ে বিয়ে করেছিল বলে, সে কি পুরুষ হিসাবে ভ্রাতা হিসাবে তার ডিউটিই পালন করছেনা?

    পৌরুষ জাহির কি মেয়েদের ওপর চলা হিংসার সমাধান, নাকি ওটাই মূল কারন? এবিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা খুব জরুরী।

    সারা দেশে, নারী আন্দোলনের বাইরের জগতে আমরা এটাই দেখি, সরকারী কাঠামোর ভিতরে, পুলিশ সংগঠনে, রাজনৈতিক দল বা বিচার বিভাগ, সর্বত্র ... যখনই তারা মেয়েদের সুরক্ষার কথা বলেন তখনই আসলে সুনির্দিষ্টভাবে পিতৃতান্ত্রিক সুরক্ষার কথাই বলছেন। তারা বলছেননা নির্ভয় স্বাধীনতার কথা, মেয়েদের এক নিঃশর্ত স্বাধীনতার কথা।

    ...সিসিটিভি ক্যামেরা, মৃত্যুদন্ড, বা কেমিক্যাল ক্যাস্ট্রেশন ওইসব ঘটনার প্রত্যুত্তর হতে পারেনা। আমাদের ক্রোধ নিশ্চয় যুক্তিযুক্ত, কিন্তু ওই ধরনের “সমাধানগুলো” নিয়ে আমার শঙ্কা। সমস্যাটা যদি হয় শাস্তি পাবার হার, তাহলে মৃত্যুদন্ড কি কাজে আসবে? শাস্তি পাবার হার খুবই কম, কারন রেপ বিষয়ে আপনাদের সমগ্র পদ্ধতিতে কোথাও রেপের অভিযোগকে সিরিয়াসলি নেয়া হয়না।

    ...এই রেপ কালচার, উচ্চকোটির মানুষদের দ্বারা তার বৈধকরন—যেমন কেপিএস গিলের মত লোক বলেন যে রেপ হয় কারন মেয়েরা টাইট পোষাক পরে—বিশাল সংখ্যক মানুষ যারা এই ধরনের কথা বলে...যদি আমরা তা বদলাতে চাই তাহলে আমাদের অবশ্যই ধর্ষন বিষয়টিকে একটি রাজনৈতিক ইস্যু বানাতে হবে।

    মেয়েদের ওপর যে ভায়োলেন্স চলে সে বিষয়ে মেয়েরা কি বলছে তা আমাদের আরও বেশী চর্চায় আনতে হবে। এবং সরকারকে তা শুনতে হবে।

    পার্লামেন্টে বসে কুম্ভীরাশ্রু বর্ষন করে আর পার পাওয়া যাবেনা। শুধু মৃত্যুদন্ড মৃত্যুদন্ড বলে চিতকার করে আপনারা কিছু সমাধান করতে পারবেননা।

    আমার বেশ মজা লাগে যখন দেখি মৃত্যুদন্ড চেয়ে বিজেপিই সবচেয়ে বেশী চেঁচাচ্ছে, কিন্তু যেসব রাজ্যে তারা ক্ষমতায় আছে সেখানে তাদের নিজেদের গুন্ডাবাহিনী হয়রানী করে সেইসব মেয়েদের যারা জীন্স পরে বা যাদের মুসলিম বা খ্রীস্টান বয়ফ্রেন্ড আছে, এবং মেয়েদেরকে হিন্দু কালচার, মূল্যবোধ হেনাতেনার বাহক হ'তে ব'লে হুমকি দেয়...
    ...এটা লজ্জার যে মেয়েদের অধিকার নিয়ে যারা লড়ছেন তাদের ওপর আক্রমন হানতে সরকার ও পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত আর তারা সর্বদাই যুক্তি প্রদান করে ধর্ষকদের সপক্ষে।

    #দিল্লীতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাওকালে কবিতা কৃষ্ণানের বক্তব্যের অংশ, ডিসেম্বর ২০১২, নয়া দিল্লী
  • ranjan roy | 24.99.67.222 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৯:০৫77249
  • @প্রাসংগিক,
    সহমত।
    নারীকে পৌরুষের সুরক্ষা দিয়ে শিভালরাস নাইট হওয়ার চেয়ে বেশি দরকার নারীর ব্যক্তিত্ব ও শরীরের স্বাধীনতাকে স্বীকার করা, সম্মান দেয়া।
    কেন রাস্তাঘাটে একলা মেয়ে দেখলে তাকে সাহায্যের অজুহাতে লোভের হাত এগিয়ে আসে?
    আর রিণীতার পোস্টে যেটা আছে যে বাইরে যে পরিমাণ ঘটনা ঘটে তার চেয়ে অনেক বেশি ঘটে ঘরের ভেতরে, যেখানে মেয়েরা নাকি নিরাপদ!
    ভীড়ের মধ্যে কেন লোভের হাত? এটা যদি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হত তাহলে অনুরূপ ভাবে মেয়েরাও ভীড়ের মধ্যে পুরুষ শরীরের উষ্ণতা হাতড়ে বেড়াত, তা তো হয় না।
    দরকার আমাদের লজ্জা পাওয়ার, লজ্জিত হওয়ার। তা হই না।
    নারীর শরীর-মন কে জোর করে অধিকার করা যায় না, যাবে না--- এই বোধটা আমাদের ছোটবেলা থেকে চেতনায় আনতে হবে।
  • cb | 41.6.135.19 (*) | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১১:৩৮77250
  • "নারীকে পৌরুষের সুরক্ষা দিয়ে শিভালরাস নাইট হওয়ার চেয়ে বেশি দরকার নারীর ব্যক্তিত্ব ও শরীরের স্বাধীনতাকে স্বীকার করা, সম্মান দেয়া" -> কুর্ণিশ জানাই
  • RB | 108.221.88.121 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৫:১৬77251
  • এই কল্লোল বাবু কি স্বঘোসিত আন্তেল? অমি অনেক গুলো ভিন্ন ভিন্ন লেখা এ ওনার মন্তব্য দেখ্লাম। জ্যুক্তি র চেয়ে স্রোতের বিপরিতে গিয়ে হাত তালি কুরানোর চেস্থা তাই সর্বাত্মক মনে হোলো। দাদা , নিজের ঘরের লোকের ওপর দিয়ে না গেলে অনেক বরো বরো কথা বলে পীথ চাপ্রানি পেতে ভালো লাগে। ভগোবান না করুন , আজ আপ্নার এক্দম নিজের কারুর সাথে এমন হোলে এতো উদারতা কোথাএ থাক্ত দেখ্তাম।
  • siki | 131.243.33.212 (*) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৫:২১77252
  • RB,

    ভগবান করেছিলেন। আরেক স্বঘোষিত "আন্তেল" রঞ্জন রায়-এর পোস্ট পড়ে দেখুন, ওপর থেকে ১৯ নম্বর মতামত। তারপর ভেবে দেখুন ব্যাপারটা উদারতা না আঁতলামি না বিবেচনাবোধ, কোন ক্যাটেগরিতে ফেলতে পারবেন।
  • ranjan roy | 24.97.56.119 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:১২77253
  • RB,
    ভিন্নমত হওয়া তো স্বাগত, গণতন্ত্রে কাম্য।
    সব শেয়ালের এক রা' শুধু বোরিং নয়, অস্বাস্থ্যকর, ফ্যাসিবাদের বীজতলা তৈরি করে।
    কিন্তু দরকার ধৈর্য্যের সঙ্গে অন্যপক্ষের যুক্তি ও তথ্যগুলোকে পাল্টা তথ্য ও যুক্তি দিয়ে নস্যাৎ করা। কিন্তু আক্রমণ বক্তব্যকে করুন, ব্যক্তিকে নয়। কল্লোল বা যে কেউ স্বঘোষিত বা কোন জাতের আঁতেল না ছিটেল -- সে দিয়ে কি হবে? আর গুরুর হাততালির বাজারে দাম ?ঃ))

    দেখুন না, নিউক্লিয়ার এনার্জি নিয়ে টইয়ে অনির্বাণ ও পিটি কেমন সুন্দরভাবে দুই বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়েও তথ্য-যুক্তি দিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন। আমার মত অদীক্ষিত লোকেরাও আগ্রহের সঙ্গে পড়ছে, ঋদ্ধ হচ্ছে।
    কেউ কাউকে ব্যক্তি-আক্রমণ করছেন না। আপনিও সেই ভাবেই কল্লোলের বিরোধী বক্তব্য রাখুন না!
  • s | 182.0.249.87 (*) | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১১:৪২77254
  • কল্লোলদার পোস্টের (01 September 2013 11:10:08 IST) উত্তরেঃ
    ধর্ষন সামাজিক রোগ - একদম একমত। কিন্তু শাস্তি বিষয়ে একমত নই।
    ধর্ষন করলে কঠিন শাস্তি হবে এই বার্তাটাই মানুষের কাছে যাচ্ছে না। পুলিশের নিস্ক্রিয়তা, রাজনৈতিক স্বার্থপরতা, অর্থনৈতিক বা লোকবল এবং সমাজের চাপ কোনো না কোনো কারনে যে ভিক্টিম সে ও তার পরিবার ধর্ষকের থেকে বেশি সাফার করছে। এই পুরো প্রসেসটাই বদলানো দরকার। ধর্ষনের কেসে কোনো ব্যক্তি (সে পুলিশ বা প্রশাসন হোক, রাজনৈতিক দাদা হোক বা ধর্মীয় দাদু হোক) যদি নিজের কর্তব্য না করে তাহলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিৎ।
    আর ধর্ষকের হয় ক্যাসট্রেশন বা ভিক্টিম মারা গেলে মৃত্যুদন্ড। ১০০% কেসে।

    এই যেমন আমেরিকায় স্পিড লিমিট ক্রস করে ধরা পড়লে ১০০% কেসে তোমাকে ১০০ থেকে ১০০০ ডলার ফাইন দিতে হবে, ঠিক তেমনই ধর্ষনের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা লাগু করা উচিৎ।
    যতদিন না এই বোধ আসবে যে, আমার পাশের বাড়ীর ছেলেটা রেপ করে ফাঁসি হয়েছে, অথবা অমুক কোটিপতির ছেলে রেপ করাতে লিঙ্গচ্ছেদ হয়েছে, অমুক নেতাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে, ততদিন সেই শিরশিরে ভয় আসবে না যে আমার টার্কি চাপল তো মেয়ে পেলেই টানার চেষ্টা করলে আর মাত্র তিন মাসে আয়ু নিয়ে চলতে হবে, তদ্দিন আপনি যতই লোকশিক্ষা দিন সেটা মগজের সেই বিশেষ স্নায়ুতে আঘাত করতে পারবে না।
    এই দশবছর কেস চলার পর ৫ বছরের জেল, যেখানে পয়সা দিয়ে অনেক কিছু আরাম করা যায়, এভাবে প্রকৃত শাস্তি হয় না।
  • s | 182.0.249.87 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০২:৪৭77256
  • 'কর্তব্য' বোধহয় ঠিক শব্দ নয়, তবে বলতে চেয়েছি, ধর্ষনের কেসে বাইরের কেউ কোনো নেগেটিভ ইনফ্লুয়েন্স করার চেষ্টা করলে (যেমন পুলিশকে তদন্ত করতে না দেওয়া, ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দেওয়া ইত্যাদি) তাদেরও নন বেলেবেল অফেন্স ও কঠিন শাস্তি হওয়া উচিৎ।
  • Anirban | 218.54.5.222 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৩:৪০77257
  • আমেরিকায় কি speeding বন্ধ হয়েছে?
  • কল্লোল | 111.63.227.137 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৪:৪২77258
  • ছোট স।
    আমি কিন্তু শুধু ধর্ষনের ক্ষেত্রেই নয়, যে কোন অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ডের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে বহু বহু কথা হয়ে গেছে। আলাদা একটা টইও আছে। একটু খুঁজে পড়ে নিন।
    অনির্বানের 12 September 2013 09:10:32 IST 218.54.5.222 পোস্টটি দেখুন। তার উত্তর দিন।
    ধনঞ্জয়ের ফাঁসীই তো হয়েছিলো। তারপরে কতটা ধর্ষন ও খুন কমেছে তার কোন হিসাব আছে আপনার কাছে?
    আসুন আমি আপনি আমাদের সন্তানদের শেখাই - অন্যের শরীরকে সম্মান করতে। একমত না হলেও অন্যের মতকে সম্মান করতে। এবং অবশ্যই একইসাথে একমত না হলে তর্কও করতে।

    আরবি। হ্যাঁ আমি ভাবা প্রাকটিস করি। নাহ, ভগবান অতো দয়া আমায় করেন নি। তবে আমার বন্ধু ও তার স্ত্রীকে করেছিলেন। গৌতম ও টুলটুলি। টুলটুলির বোন একজন পুরুষের হাতে অ্যাসিডক্রান্ত হয়ে মারা যায়। মামলায় ছেলেটির সাজা হয়। কিন্তু যখন গৌতম-টুলটুলির অ্যাডভোকেট সাজার দাবী করেন, খুব জোর দিয়ে দাবী করেছিলেন - আমার মক্কেল মৃত্যুদন্ড চান না। আপনি চাইলে আমি আপনার মেইলে গৌতম-টুলটুলির ফোন নম্বর দিতে পারি। বা আপনি কলকাতায় থাকলে নিজে গিয়েও দেখা করে নিতে পারেন।

    আর হ্যাঁ তর্কটা তর্ক করার মতো করেই করুন। নইলে বোঝা যায় যুক্তি ফুরিয়ে গেছে - খুব করুণ লাগে।
  • cm | 127.216.45.9 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৭:০১77259
  • কেউই দেখি অপরাধীর ভেতরে অপরাধবোধ জাগিয়ে তোলার কথা বলেনা, ওটি না হলে যেকোন শাস্তি অর্থহীন। আর ওটি হলে তা চরম শাস্তির রূপ নেয়।
  • Blank | 180.153.65.102 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৮:১৯77260
  • ধনঞ্জয়ের ফাঁসী টা র কোনো এফেক্ট থাকে না - কারন ওটা হয়েছিল বহু বছর পরে। ইমিডিয়েট ফাঁসি হলে তবে ইমপ্যাক্ট তৈরী হতে পারতো। যারা মৃত্যুদন্ডের পক্ষে সওয়াল করছেন তারা সবাই ইমিডিয়েট মৃত্যুদন্ডের কথাই বলছেন, দশ বছর পরে ফাঁসি হওয়া আর না হওয়া একই ব্যপার।
  • Blank | 180.153.65.102 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৮:২৩77261
  • আম্রিকার ইয়ো পাবলিক রা স্পিডিং করে অনেক ভেবে চিন্তে, ক্যালকুলেট করে - যেখানে স্পিডিং করে ধরা পরার প্রোবাবিলিটি অনেক কম তেমন জায়গায়। এর জন্য ইয়ো পাবলিকরা নানা রকম টিপস নেয়, ডেটা শেয়ার করে নিজেদের মধ্যে।
  • ranjan roy | 132.168.65.169 (*) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১০:০৮77262
  • ব্ল্যাংকি,
    এগজ্যাক্টলি! " যেখানে স্পিডিং করে ধরা পরার প্রোবাবিলিটি অনেক কম তেমন জায়গায়!"
    কোন অপরাধ ( রেপ, খুন বা স্পীডে গাড়ি চালানো) কম না হওয়ার একটি নৈমিত্তিক কারণ (efficient cause) হল ধরা না পরা, বা পরলেও শাস্তি না পাওয়া, বা পেলেও দেরি করে পাওয়া।
    আমরাও দাবি করছি রেপ এর ক্ষেত্রে দ্রুত , (first track court) বিচার , দ্রুত শাস্তি। মৃত্যুদন্ড নয়।
    কারণ, আইনানুযায়ী মৃত্যুদন্ড (rarest of the rare) হওয়ায় এগজিকিউশনের আগে অনেক লম্বা প্রক্রিয়া ও সিরিজ অফ অ্যাপীলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
    Criminal Procedure Code দেখুন। দেবেন্দ্র সিং খালসা ও অন্যান্য কেস দেখুন। শেষ সময়েও মাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকেই। তাই--
    এটাও প্রাণদন্ডের বিরোধিতার একটা কারণ।
    material cause অবশ্যই আমাদের নারী ও নারীশরীরের অধিকার নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গী।

    তাই চাই অনাবশ্যক প্রশ্ন ও প্রক্রিয়াকে সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত বিচার ও আজীবন কারাবাসের সাজা।

    ধনঞ্জয়ের ক্ষেত্রে আর একটা কারণ---বেশ কিছু লোক ও আইনজ্ঞ মনে করেন ও নির্দোষ ছিল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন