এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা

  • কলিম খান, গরুর রচনা ও তর্কশীল বাঙালি

    দেবতোষ দাশ লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৭ জুন ২০১৮ | ৭৮৬৭ বার পঠিত
  • অকস্মাৎ আকাশ হইতে টুপ করিয়া কলিম খানের আবির্ভাব ঘটিল এই বঙ্গদেশে এবং তিনি নিত্যনতুন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে সুধীবৃন্দকে চমকে দিচ্ছেন, ব্যাপার এমন নয়। যাস্ক, পাণিনি ও অন্যান্য কোষকার, প্রাচীন ভারতবর্ষের ভাষা-বিষয়ক জ্ঞানভাণ্ডারের হোতা। নীরব নিষ্ঠায় একালে এঁদের অনুসরণ করেছেন 'বঙ্গীয় শব্দকোষ' প্রণেতা হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলিম খান এই সমৃদ্ধ কিন্তু বিস্মৃত জ্ঞানভাণ্ডারের যোগ্য উত্তরাধিকার। কিন্তু কলিম কেবল ভাষাতত্ত্ব নিয়ে থেমে থাকলেন না, পুনরুদ্ধার-করা শব্দতত্ত্ব নিয়ে ঢুকে পড়লেন প্রাচীন ভারতবর্ষের ইতিহাসে। এই ঢুকে-পড়াটাই হয়ে গেল বিপজ্জনক। একে অন্তর্ঘাত হিসেবেই চিহ্নিত করা যায়। কেমন সেই অন্তর্ঘাত? উদাহরণ ইস্তেমাল করে দেখা নেওয়া যাক। ‘গো’ নিয়ে ইদানিং যথেচ্ছ গরু খোঁজা চলছে, আমরা এই ‘গো’ শব্দটি দিয়েই শুরু করতে পারি।

    হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর 'বঙ্গীয় শব্দকোষ'-এ 'গো' শব্দের ৪১টি অর্থ দিয়েছেন। তার মধ্যে একটি অর্থ গরু। এছাড়া গো মানে বৃষরাশি, সূর্য্য, চন্দ্র, ইন্দ্রিয়, ঋষিবিশেষ, গায়ক, গৃহ, পৃথিবী, আকাশ ইত্যাদি। প্রথমেই গো শব্দের অর্থ দিয়েছেন বাক্যের সাহায্যে - যে যায়। কেবল গো-এর ক্ষেত্রে নয়, বেশিরভাগ শব্দের ক্ষেত্রেই তিনি বাক্য-অর্থ দিয়েছেন। তারপর দিয়েছেন তার অন্যান্য প্রতিশব্দ। কেন এমন করলেন তিনি? বর্তমানে চালু আমাদের কোনও বাংলা অভিধানে তো এই রীতি মানা হয় না! তাহলে? ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ মন্থন করে কলিম খুঁজে পেলেন এর উত্তর। এক্ষেত্রে হরিচরণ নিশ্চল নিষ্ঠায় অনুসরণ করেছেন আমাদের দেশের প্রাচীন বৈয়াকরণদের। তাঁর পূর্বসূরীদের। আমাদের দেশে শব্দের মানে শব্দের বাইরে ছিল না, ছিল শব্দের ভেতরেই। শব্দের ভেতর থেকে অর্থ-নিষ্কাশন একটি কৌশল, প্রাচীন ভারতে এই কৌশলের নাম 'নির্বচন'। শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করে যা করতে হয়। আমাদের বাংলা ব্যাকরণের সমাস ও তার ব্যাসবাক্য নির্ণয়ের মধ্যে যার কিছুটা ভগ্নাংশ এখনও রয়ে গেছে। শব্দের ভেতরের অর্থটিকে বাক্যের সাহায্যেই প্রকাশ করা হয়। বৌদ্ধযুগের 'অমরকোষ' এই কাজটি করেছেন নিখুঁতভাবে। পরে অন্যান্য কোষকারগণ এই রীতিই মেনেছেন।

    সমাজের অগ্রগতির সঙ্গে বাচক-অর্থ বা অন্যান্য প্রতিশব্দের মাত্রা বেড়েছে, পেছনে পড়ে গেছে 'বাক্য-অর্থ'। হরিচরণও নিষ্ঠার সঙ্গে তাই করেছেন। শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করে যে বাক্য-মানে বেরোয় সেই বাক্যটি লিখেছেন। তারপর এক এক করে দিয়েছেন অন্যান্য বাচক-অর্থ বা প্রতিশব্দ। সেই প্রতিশব্দ প্রদানেও তিনি স্বেচ্ছাচারী হননি। ওই অর্থ তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন, সেইসূত্রও উল্লেখ করেছেন তিনি। কোনও অর্থই তাঁর স্বকপোলকল্পিত নয়। ভারতীয় উপমহাদেশে যত কোষগ্রন্থ ও অভিধান রচিত হয়েছিল, প্রায় সবগুলিই তিনি অনুসরণ করেছেন।

    যাস্ক, পাণিনি, মুগ্ধবোধ, অমরকোষ, শব্দকল্পদ্রুম, মেদিনীকোষ ইত্যাদি সবই তিনি আত্মস্থ করেছিলেন। বেদ-পুরাণ-রামায়ণ-মহাভারত, সাংখ্য-যোগ-তন্ত্রবিষয়ক গ্রন্থাদি থেকে রবীন্দ্রকাব্য পর্যন্ত নানা গ্রন্থে শব্দসমূহের ব্যবহার অধ্যয়ন করে তিনি তাদের অর্থ সরবরাহ করেছেন। একটি শব্দের বহু অর্থ, আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি, তিনি কেবল সততার সঙ্গে তা লিপিবদ্ধ করেছেন। হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগানোর মতো কলিম খান শব্দ ও তার শেকড় খুঁড়ে বের করতে চাইলেন ইতিহাস। একটি সচল ভাষা তো ধারণ করে ইতিহাস। গো শব্দের ৪১টি অর্থ তো একদিনে তৈরি হয়নি! সমাজবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয়েছে নানা অর্থ। কয়েক হাজার বছরের ঐশ্বর্য এই অর্থভাণ্ডার। মহাপুরুষ হরিচরণ তাঁর বঙ্গীয় শব্দকোষে ৪১টি শব্দের পুরো তালিকাটাই লিপিবদ্ধ করেছেন। আর এইযুগের স্বেচ্ছাচারী অভিধানকারেরা 'গো'-এর ৪০টি অর্থ ফেলে কেবল 'গো মানে গরু' লিখে দিলেন। ছিঁড়ে ফেললেন আমাদের অসীম উত্তরাধিকারের সূত্রগুলো। কলিমের ভাষায়, একেই বলে 'বাপের নাম ভুলিয়ে দেওয়া'। এইভাবে আমরা নিজেরাই নিজেদের অ-নাথ করেছি, করে চলেছি।

    আমরা যে হ্যাঁগো, ওগো, কীগো ইত্যাদি বলি কথায় কথায়, কেন বলি? এই ‘গো’টি কে বা কারা? এই গো মানে কি গরু? স্ত্রী স্বামীকে বলছেন, হ্যাঁগো আজ অফিস যাবে না? বা চাষি মাঝিকে বলছেন, ওগো তুমি কোথা যাও কোন বিদেশে, বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে। এখানে গো মানে নিশ্চয়ই গরু নয়! স্ত্রী স্বামীকে বলছেন, ও গরু আজ অফিস যাবে না? বা চাষি মাঝিকে গরু বলে সম্বোধন করছেন, এমন নিশ্চয়ই নয়! তাহলে কী? হরিচরণ অনুসরণ করে কলিম বলছেন, এখানে গো মানে গামী, 'হে গামী'-অর্থে সম্বোধন করা হচ্ছে চলমান কারুকে।

    যে যায়, সেই তো 'গো'। তার মানে, প্রতিটি গামী বা চলমান সত্তাই 'গো'। আমাদের পূর্বসূরী বাংলাভাষিগণ যে সমস্ত গামীকে গো শব্দে চিহ্নিত করেছেন, তার সংখ্যা তাই অনেক। সেগুলিকে বিচার করতে গিয়ে দেখা যায়, অতি উচ্চ মার্গের গামী যেমন রয়েছে, অতি নিম্ন মানের গামীও তেমনি রয়েছে।

    কলিম নির্দিষ্ট করছেন, গো শব্দের সর্বোচ্চ অর্থ হল তত্ত্বজ্ঞান ( theoretical knowledge ) এবং সর্বনিম্ন অর্থ হল গরু (cow)। মাঝে রয়েছে অনেক প্রকার অর্থ; সেগুলির মধ্যে ‘হে গামী’ (হ্যাঁগো, ওগো) অর্থে শব্দটির ব্যবহার সর্বাধিক। দ্বিতীয় স্থান ‘পণ্য’ অর্থে গো শব্দটির ব্যবহার। কালীপ্রসন্ন সিংহ মহাভারত-এ বলছেন – ‘গো প্রভৃতি পবিত্রতা- সম্পাদক পদার্থসমূহের মধ্যে সুবর্ণই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ।’ তার মানে, এক কালে গরু বিনিময়ের মাধ্যম বা মুদ্রা রূপে ব্যবহৃত হত। টাকা সচল হয়, অচলও হয়; সচল টাকা তো ‘গো’ হবেই। মুদ্রারূপে ব্যবহারের কারণে সেই গো-এর ব্যবহারের আধিক্য ছিল স্বাভাবিক।

    ধরা যাক আরও দু'একটা শব্দ এবার, যেমন - গবেষণা। ছোটবেলায় সন্ধি করেছিলাম, গো + এষণা = গবেষণা। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের 'বাঙ্গালা ভাষার অভিধান'-এ দেখতে পাচ্ছি এষণা অর্থ ১. গমন বা ২. অন্বেষণ বা ৩. ইচ্ছা। গো যদি গরু হয় তাহলে কি গবেষণা মানে গরুর গমন বা গরু খোঁজা/অন্বেষণ বা গরু বিষয়ক ইচ্ছা বোঝাবে? তা তো বোঝায় না! গবেষণার অর্থ জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস দিয়েছেন, কোনও বিষয়ের তত্ত্ব নিরূপণার্থ অনুসন্ধান। ইংরাজিতেও বলে রিসার্চ, যেখানে সার্চ বা অনুসন্ধান শব্দটি আছে। নির্বোধ গো-রক্ষক কোনও সঙ্ঘ, স্নিফার সারমেয়র মতো ফ্রিজে গরু খুঁজতে পারেন, কিন্তু একজন পিএইচডি স্কলার নিশ্চয়ই পাঁচ বছর ধরে গরু খোঁজেন না! তাহলে এই ‘গো’ কী? এখানে খুব স্পষ্ট, গো মানে কেবল গরু নয়। তত্ত্ব-কথাও বোঝায়।

    কিন্তু আমরা কিছুতেই বুঝব না, আমাদের বৈয়াকরণ ভাষাতাত্ত্বিক পণ্ডিতরাও বুঝবেন না! তাঁরা গো অর্থ কেবল গরুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবেন। ফলত পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার সামলাতে না-পেরে আমরা আজ দীন ভিখারি। আর এই সুযোগ নিয়ে 'ধর্ম বেওসায়ী ভক্ত'বৃন্দ গো-রক্ষা বাহিনী গড়ে ফেলেছেন পাড়ায় পাড়ায়। গরু-খেকো যবন ও ম্লেচ্ছদের ঢিট করে, দরকার হলে খুন করে, গরুকুলকে রক্ষা করতে হবে!

    যেমন গোবর্দ্ধন শব্দটি, যে বা যিনি গো-বৃদ্ধি করেন; অথবা, এখানে গো অর্থ পণ্য বা প্রোডাক্ট। গোবিন্দ = যিনি সর্ব প্রকারের গো-গণ বিষয়ে বিদিত। তিনি হলেন শ্রীকৃষ্ণ। গোবিন্দের সর্বোচ্চ অর্থ, যিনি তত্ত্বজ্ঞান-সমূহের রস দান করেন এমন এক বৃহস্পতি বা তত্ত্বদর্শী। গোবিন্দের সর্বনিম্ন অর্থ, যে রাখাল চাইলে ভাল দুধ জোগাতে পারে। কলিম তাই বলেন, গোবিন্দ'র গো কেবল গরু হলে অনর্থের আর সীমা থাকে না!

    গোস্বামী শব্দের গো মানে কী? যাঁরা গো-গণের স্বামী তাঁরাই গোস্বামী। এখানে গো মানে তত্ত্ব। গোস্বামী শব্দের সর্ব্বোচ্চ অর্থ, যিনি মানবজাতির অর্জিত জ্ঞানসম্পদের মুকুটমণি তত্ত্বসমূহের অধিকারী। সর্বনিম্ন অর্থে, যিনি গরুসমূহের অধিকারী বা মালিক। গোস্বামী'র গো যদি গরু হয় তাহলে রূপ গোস্বামী, সনাতন গোস্বামী কারা? গরুর পাইকার? আমাদের বঙ্গীয় ভাষাবিদেরা কী বলেন? একই নিয়মে, অতএব, গোবর-গোমূত্র বলতে সে গরুর মলমূত্রই বোঝে, এবং যেহেতু প্রসাদ হিসেবে খাওয়ার নিদান আছে, সবাইকে তা খেতেও হবে! আমরা ভাবি, নিঃসন্দেহে ঐ গোবর-গোমূত্রের ভিতরে অলৌকিক শক্তি আছে। অতএব, গোপথ্যি ও পঞ্চগব্য নিয়ে শেষমেষ ‘রাজসূয় যজ্ঞ’ শুরু হয়ে যায়। শুরু হয় রামদেবের রমরমা। কলিম খান বিস্মিত হন, এ কেমন শাইনিং ইণ্ডিয়া, যেখানে লোকেরা গরুর মলমূত্র খায় এবং প্যাকেটে ও বোতলে ভরে লেবেল সেঁটে বিক্রি করে? মহিষ, গাধা, ছাগল, ভেড়া সকলের দুধ খায় এরা, মাংসও খায় কিন্তু তাদের মলমূত্র খায় না। ওদিকে গরুর দুধ ও মলমূত্র সবই খায় কিন্তু তার মাংস খায় না!

    জ্ঞান ও জ্ঞানচর্চাকারীদের ভালোর জন্য বোঝাতে যে ‘গো-ব্রাহ্মণ হিতায়’ কথাটি বলা হত, এখন তার মানে দাঁড়িয়েছে, গরুর ও ব্রাহ্মণের ভালোর জন্য! যে ব্রাহ্মণ ব্রহ্মজ্ঞানের অধিকারী, ভারতবর্ষে যাঁর অর্জন বিশাল, ভাগ্য তাকে কিনা, নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাল গরুর সমান মর্যাদায়!

    এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গো-মাতা শব্দের অর্থ-বিপর্যয়। গো-মাতা তো সুরভি, বশিষ্ঠের কামধেনু নন্দিনীর মা। সে তো কেবল দুধ, মাখন, মণ্ডা, মিঠাই প্রসব করত না; অস্ত্রশস্ত্র এবং সৈন্যসামন্তও প্রসব করতে পারত। কেননা, নন্দিনী তো আসলে মহর্ষি বশিষ্ঠ পরিচালিত বিপুল বাহ্যসম্পদ উৎপাদনকারী এক বলিষ্ঠ সম্প্রদায়। গো-মাতার সে সব অর্থ আমরা স্রেফ ভুলে গেছি। এখন গো-মাতা মানে যে-গরুর দুধ খাওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা হল, যার দুধ খাওয়া হয়, তাকেই 'মাতা' বললে ছাগ-ভেড়া-গাধা-মহিষ-উট সবাইকেই 'মাতা' বলতে হয়; কেননা তাদের সকলের দুধও আমরা খাই। তাদের মাংস খেলেও তো 'মাতা'র মাংস খাওয়া হয়! না, সে সব যুক্তি-তর্কের অবকাশ নেই। ‘গো’ শব্দের অর্থকে শুধুমাত্র গরুতে স্থির করে নিশ্চল করে দিলে যে-যে দুর্গতি হওয়া সম্ভব তা সবই হয়েছে বা হয়ে চলেছে।

    এইসব প্রশ্ন করলে আমাদের ভাষাত্ত্বাতিক পণ্ডিতরা নিশ্চুপ থাকেন। এড়িয়ে যান। যে মহাপুরুষ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সার্দ্ধ-শতবর্ষ পালন হল ২০১৭ সালে, তাঁর অভিধান সাহিত্য অ্যাকাডেমির সম্পদ হলেও, পণ্ডিতরা এই অভিধান পড়তে সরাসরি বারণ করেন। এক শব্দের বহু অর্থ তাঁরা মেনে নিতে পারেন না। অ্যাকাডেমিক জগৎ ছাত্রছাত্রীদের এই সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে। কারণ, এটা মেনে নিতে পারে না পুঁজিও। বাজারের দুনিয়ায় এক শব্দের বহুরৈখিক অর্থ হলে বড় গোলমাল। ক্রেতা-বিক্রেতা দুজনেই পড়েন বিপদে। ক্যাপিটাল তা মানবে কেন? তাঁর চাই এক শব্দের একটাই অর্থ।

    বহুত্ব বা বহুরৈখিকতা পুঁজির পক্ষে বাধাস্বরূপ। ফলত, পুঁজির দালাল শিক্ষাকেন্দ্রগুলি হরিচরণকে ব্রাত্য করে রাখে। নমো-নমো করে জন্মের ১৫০ বছর তারা পালন করে বটে, তবে তা 'পূজা'র উদ্দেশ্যেই, তাঁকে অনুসরণের বিন্দুমাত্র আগ্রহ তাদের নেই। এক দেশ, এক জাতি, এক ধর্ম, এক আইনের ধারক-বাহকেরাও তাই চায়, বহুরৈখিক ভারতীয় সংস্কৃতি ধ্বংস হোক। পুঁজি, শিক্ষাকেন্দ্র আর মৌলবাদীদের এক নির্বিকল্প গাঁটবন্ধন গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে দাপাচ্ছে, হরিচরণের মতো মহর্ষির স্থান সেখানে কোথায়! কলিম খান এই অন্যায় গাঁটবন্ধনকে চিহ্নিত করলেন। ফলত, তাঁকেও ব্রাত্য করল অ্যাকাডেমি।

    এই বিকারগ্রস্ত সময়ে কলিম প্রায়ই বলতেন, ধর্মীয় মৌলবাদীদের হাত থেকে এই বাংলাকে রক্ষা করছে তিনটি শক্তি। কী সেই ত্রিশক্তি? বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি ও রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, একটি সরোবর কত বড়ো ছিল, বোঝা যায় সেটি শুকিয়ে গেলে। আমরা সেই শুকনো সরোবরের তীরে দাঁড়িয়ে আছি এখন। ট্র্যাজেডি হল, এখনও বুঝতে পারছি না বা চাইছি না ক-ত জল ছিল একদা সেই সরোবরে। ভাষা ও সংস্কৃতির বিপুল উত্তরাধিকার হারিয়ে আমরা আজ ভিখারি। সুযোগ পেয়ে গো-রক্ষকদের তাণ্ডব তো চলবেই! রবীন্দ্রনাথ তাঁর 'সভ্যতার সংকট'-এ লিখেছিলেন 'অতীতের সঙ্গে ভারতের নৃশংস আত্মবিচ্ছেদ'। নৃশংস শব্দ ছাড়া এই আত্মবিচ্ছেদকে সত্যিই বর্ণনা করা যায় না। আমরা ঐশ্বর্যহীন হয়েছি স্বেচ্ছায়, ফলত প্রতি পদে পদে সহ্য করতে হবে 'মুর্খ ভক্ত'দের তাণ্ডব। কলিম-বর্ণিত ‘ত্রি’ফলা’র ফলাগুলো নষ্ট করেছি বা করে চলেছি অহরহ। নিজেদের শক্তিহীন করে শত্রুর সঙ্গে লড়াই করব কীভাবে?

    ঠিক এই সন্ধিক্ষণেই, কলিম খান যখন ক্রমশ প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন, চিরবিদায় নিলেন তিনি অকস্মাৎ। উপেক্ষা বা ব্যঙ্গ, এই সময় কোনও শস্ত্রই তাঁর দিকে না-ছুঁড়ে, তাঁর ভাবনা-ভুবনে সামান্য অনুপ্রবেশ করলে ক্ষতি কী? একটু চর্চা, ভাব-বিনিময় কি তর্কশীল বাঙালি করতে পারে না? অবশ্য বাঙালির সঙ্গে ‘প্রগতিশীল’ বা ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ খুব যায়, কিন্তু তর্কশীল? আপনি কী বলেন?


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ১৭ জুন ২০১৮ | ৭৮৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | 7845.29.457812.250 (*) | ২০ জুন ২০১৮ ১২:৩৬84404
  • " কলিম খান...প্রভাত রঞ্জন সরকার ...আনন্দ মার্গ...আমরা বাঙালী...বাংলা পক্ষ ...হিন্দু সংহতি ....বিশ্ববাংলা...আরএসএস...!"

    এই কানেকশন টা ঠিক হজম হলনা। আর এস এস আবার কবে বা`ংলার পক্ষে হল? বরং উলটো তো!

    এইচদার শেষ পোস্টে এই স`ংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে একমত।
  • ss | 7845.15.4534.208 (*) | ২১ জুন ২০১৮ ০৪:৪৬84414
  • গুণিজনকে গড় করিয়া ক্রিয়া-বর্ণভিত্তিক (ক্রিব)বিশ্লেষণকে পূর্বপক্ষ ধরিয়া, "ভারতীয়"(?) দর্শনের দস্তুর মেনে পূর্বপক্ষ-খণ্ডন ও উত্তরপক্ষ স্থাপিত হইল।

    প্রথম খেপ:

    পূর্বপক্ষ: নাম আর নামীর সম্পক্ক অবাধ বা যাচ্ছেতাই (আর্বিট্রারি)নহে। (এটা এনাদের মানে ক্রিববাদীদের সবচেয়ে বড়ো দাবি)

    উত্তরপক্ষের আপত্তি:
    দ্যোতিত/চিহ্নিত বস্তু (signified, object) এবং দ্যোতক/চিহ্ন (signifier)-এর মধ্যে সম্পক্ক অবশ্যই যাচ্ছেতাই তথা প্রতিভাসিক। একই দ্যোতিতের জন্য একাধিক চিহ্ন বা দ্যোতক ব্যবহার করাই হয়; নাম আর নামী, দ্যোতক আর দ্যোতিত, চিহ্ন আর চিহ্নিত বস্তু "প্রাকৃতিক" ভাবে গায়ে গায়ে লেপ্টে থাকে না। এ বলে বাগ বা বাঘ তো ও বলে তাইগাল বা টাইগার। স্যসুরের নাম করিলে আপুনারা প্রাচ্য-সেন্টু দিবেন, তাই ঠাকুরের কতায় কোই।ঠাকুর বলেন যে জল, পানি, ওয়াটার, একোয়া ইত্যাদি যাই বলো না কেন জল হলো গিয়ে জল!

    নমুনা-স্বরূপ লালন সাঁই-এর একটা গান বলি:

    "আপনার আপনি ফানা হলে সে ভেদ জানা যাবে। কোন নামে ডাকিলে তারে হৃদাকাশে উদয় হবে।। আরবী ভাষায় বলে আল্লাহ ফারসীতে কয় খোদাতালা। গড বলিছে যীশুর চেলা ভিন্ন দেশে ভিন্নভাবে।। মনের ভাব প্রকাশিতে ভাষার উদয় এ জগতে। মনাতীত অধরে চিনতে ভাষাবাক্য নাহি পাবে।। আল্লাহ হরি ভজন পূজন এ সকল মানুষের সৃজন। অনামক চেনায় বচন বাগেন্দ্রিয় না সম্ভবে।।"

    "আরবী ভাষায় বলে আল্লাহ ফারসীতে কয় খোদাতালা। গড বলিছে যীশুর চেলা ভিন্ন দেশে ভিন্নভাবে।" (সম্ভবত) লালনের ভাষা-বিষয়ক এই মন্তব্য ওনাদের আবিষ্কৃত তত্ত্ব দিয়ে কিভাবে ব্যাখ্যা করবো? মানে আল্লাহ, গড, খোদাতালা একই লোককে বোঝাচ্ছে, কিন্তু বর্ণ আর ধ্বনি ভিন্ন ভিন্ন। এবারে বর্ণভিত্তিক বিশ্লেষণ কিভাবে করবো? মর্নিং স্টার আর ইভিনিং স্টার একই জিনিষকে বোঝায় কি করে? "শিবানী" (শিবের বৌ)আর "পার্বতী" (পর্বতের মেয়ে) আলাদা মানে, অথচ একই নারীকে বোঝাচ্ছে (ফ্রেগের denotation আর connotation বিষয়ক আলোচনা দেখতে পারেন)। তাহলে শ্বশুরমশাই-এর নাম বিস্কুট হবে না কেন?

    আপুনাদের ন্যায় ব্যুৎপত্তিবাদীরা অবশ্য মনে করেন যে শব্দকে বিশ্লেষণ করলেই বস্তুকে পাওয়া যাবে। তাঁরা মনে করেন প্রথম যে বস্তুর নামকরণ করেছিল, সে বস্তুকে ঠিকঠাক চিনেই নামকরণ করেছিল। তাঁরা নাম আর নামীকে সম্পৃক্ত ভাবেন। নাম আর নামীর সম্পক্ক না-যাচ্ছেতাই(non-arbitrary) ভাবার পেছনে যে হেত্বাভাস আছে, প্রকৃতি-সংস্কৃতি (প্রকৃতি-সংস্কৃতি দ্ব্যণুক [binary] সমস্যা আপাতত মুলতুবি/deferred) গোলানোর সমস্যা আছে, তারে কয়, "ফ্যালাসি অফ মিসপ্লেসড কংক্রিটনেস"! (আপুনারা জদুগোড়ায় গিয়া "তেজস্ক্রিয়" শব্দের বিশ্লেষণ করুন, আরাম পাইবেন).

    "প্রথম যে বস্তুর নামকরণ করেছিল, সে বস্তুকে ঠিকঠাক চিনেই নামকরণ করেছিল।"-- এমন উচ্চারণ প্রসঙ্গে সক্রাতিস-এর একটি সংলাপ না উদ্ধার করে পারছি না:

    SOCRATES: Well, but do you not see, Cratylus, that he who follows names in the search after things, and analyses their meaning, is in great danger of being deceived?
    CRATYLUS: How so?
    SOCRATES: Why clearly he who first gave names gave them according to his conception of the things which they signified — did he not?
    CRATYLUS: True.
    SOCRATES: And if his conception was erroneous, and he gave names according to his conception, in what position shall we who are his followers find ourselves? Shall we not be deceived by him?
    CRATYLUS: But, Socrates, am I not right in thinking that he must surely have known; or else, as I was saying, his names would not be names at all? And you have a clear proof that he has not missed the truth, and the proof is — that he is perfectly consistent. Did you ever observe in speaking that all the words which you utter have a common character and purpose?
    SOCRATES: But that, friend Cratylus, is no answer. For if he did begin in error, he may have forced the remainder into agreement with the original error and with himself; there would be nothing strange in this, any more than in geometrical diagrams, which have often a slight and invisible flaw in the first part of the process, and are consistently mistaken in the long deductions which follow. [after some further discussion] How real existence is to be studied or discovered is, I suspect, beyond you and me. But we may admit so much, that the knowledge of things is not to be derived from names. No; they must be studied and investigated in themselves.
    CRATYLUS: Clearly, Socrates.

    Plato
    Cratylus
    Trans. Benjamin Jowett

    প্রথম নামকরণ যিনি করেছেন, তিনি যদি বস্তুকে না বুঝে থাকেন বা প্রতারণা করে থাকেন, তাহলে শব্দের আসলি মানে (?) বের করে কি আমরা বস্তুকে পাবো? ব্যক্তিনিন্দা না করে সরাসরি জবাব দিন মোহাই। আপনাদের এই না-যাচ্ছেতাই তত্ত্ব

    আমাদের প্রতিভাসে আসক্ত করছে; (এখানে ঠিকঠাক পরিভাষা হবে বৈখরীর [জেগে জেগে বকবক করা] প্রতিভাস)
    অধিবিদ্যার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে;
    বর্ণ আর শব্দের দৈব উৎপত্তি তত্ত্বের (divine orgiin theory)দিকে টানছে;

    ধরুন, আমি খেটেখুটে বের করলাম, language শব্দটা এয়চে ল্যাটিন "lingua" শব্দ থেকে, মানে "জিভ"! আজ (যখন জেনে গেছি সসীম শব্দ দিয়ে অসীম বাক্য নির্মাণ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বা মগজের গণনাভিত্তিক বা আলগোরিদমিক কার্যক্রম) যদি ভাষার এরকম সংজ্ঞার্থ দিই, তাহলে ঘোড়ায় হাসবে।

    প্রসঙ্গত, পিটার বিকসেলের একটা গপ্পের কথা মনে পড়ছে, "টেবিল হলো টেবিল". সেখানে কথা কওয়ার সামাজিক প্রথা তথা চুক্তি (social pledge) ভেঙে এক বুড়ো বানিয়ে তোলে তার প্রাইভেট ভাষা: টেবিলের নাম দিলো গালচে, গালচের নাম দিলো দেরাজ...

    এবার একটা গপ্পো (anecdote):
    "ব্যাঘ্র" শব্দটির ক্রিয়াভিত্তিক শব্দার্থব্যাখ্যা কি হইবে তাহা লইয়া চিন্তা করিতে করিতে আমার নাওয়া-খাওয়া-ঘুম লোপাট পাইল। ইদানিং জগতে কি ঘটিতেছে বা না ঘটিতেছে তাহারও খপর (য.Sic) রাখিতে পারিতেছি না। বহু অভিধান ঘাঁটিয়া যেসকল মানে পাইলাম তাহা নিম্নরূপ:
    ১. Monier-Williams তাঁর অভিধানের ১০৩৬ পাতায় 'ব্যাঘ্রা' প্রবিষ্টির মানে করেছেন, "to scent/smell out (Patanjali on Panini iii, I, 137 বার্তিক i)"
    ২. জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস জানাচ্ছেন, "বি-আ+√ঘ্রা (গন্ধন গ্রহণ করা)" [১৬৫২ পাতা]
    ৩. হরিচরণ বাঁড়ুজ্জেও ব্যুৎপত্তি দিয়েছেন বি-আ+√ঘ্রা।.....

    এরকমটি নাকি শ্রদ্ধেয় পাণিনি ভাবিয়াছিলেন বলিয়া কথিত আছে। শুধুমাত্তর এই একটি √ঘ্রা-এর উপর নির্ভর করিয়া তিনি ভাবিলেন যে ঘ্রাত হয় (to scent/smell out) বা বিশেষভাবে আঘ্রাত হয় সে কি অন্যকে খাদ্য হিসাবে বিবেচনা করিবে? সেকি অন্য কিছু করিতে পারে? এমত চিন্তা করিয়া পাণিনি, অন্যের বারণ সত্ত্বেও, নাকি শ্বাপদসংকুল অরণ্যে নির্ভয়ে প্রবেশ করিয়াছিলেন এবং ব্যাঘ্র দ্বারা হত হইয়াছিলেন। আমরা তাঁহার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।

    এই আনেকডটটি জানিয়া যখন আমি শোকে মুহ্যমান, তখন হঠাত সক্রাতিস আসিয়া কহিলেন, 'যে বস্তুর প্রথম নামকরণ করিয়া ছিল, সে যে ঠিকঠাক করিয়াছিল, তাহার গ্যারান্টি কি?'
    আমি নিরুত্তর থাকিলাম।"

    সাহেবধনীরা বলেন, '"গুড় গুড়" বললে যেমন মুখ মিষ্টি হয় না, "হরি হরি" বললেও হরি এসে উপস্থিত হন না।'

    ক্রমশ....
    দ্বিতীয় খেপ: বর্ণভিত্তিক মানে-খণ্ডন এবং logocentric বাচন (আপনাদের এমন কচ্কচি ভালো লাগলে তবেই লিখবো। আমার লেখায় গুরুচন্ডালি দোষ আর 'বানাম' ভুল গুরুচন্ডা৯-র সৌজন্যে--)

    পুষ্পিকা: দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রায় পুরোটাই তাঁর এফবি পোস্ট থেকে টুকে মেরে দেওয়া!
  • ss | 7845.15.785612.111 (*) | ২১ জুন ২০১৮ ০৫:৫৫84410
  • (*) # - এর social history of work নিয়ে কটা কথা প্রথমে

    একটা প্রাসঙ্গিক কাজ:
    বুদ্ধদেব বসুর
    "একটি জীবন"
    এক অভিধানকারের জীবনী!
    কার্যগতিকে তিনি হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
    চলচ্ছবি: রাজা মিত্র (১৯৮৮)
    কে বলে তিনি ব্রাত্য?
    (সম্ভবত কিছু হুজুগে আনপাড়)
    আমার পেশাদারি জীবনে, ভারত আর জাপানে, কাজ করতে গিয়ে তাঁর ২ খণ্ড অভিধান সদাই পাশে ছিল।
    কিন্তু, ভাগ্যিস কলিম খান ছিলেন না! মরে যেতুম তা'লে।

    আর ছিল Monier Monier-Williams-এর বহু পুরোনো কাজ Sanskrit-English Dictionary (১৮৯৯)। এই কাজটা একটু উল্টেপাল্টে দেখলে খান-চক্কোত্তির কাজ পাতে দেওয়ার মতো মনে হবে না।

    আরো ছিল Emile Benveniste-এর Dictionary of Indo-European Concepts and Society (১৯৬৯)
    এই কিতাব দেখাশোনা এবং পড়া না থাকলে কলিম খানে মজে যাবেন কেউ কেউ।

    ভাষার গাঁঠ কেটে ইতিহাস উদ্ধারের তরিকা (linguistic palaeontology) না জেনে কাজে হাত দিলে বিপদ ভারি। গো-এষণায় literature survey (আগে কী কাজ হইয়াছে না হইয়াছে দেখিয়া লইতে হয় তো! তারপরই তো গো-এষকের সমস্যাপাত! আগের কাজ বা পূর্বপক্ষ খণ্ডন না করে গো-এষক নবীন অবদানের দাবি জানাতে পারেন না।)

    আমরা যারা পুরাণ-ইতিহাস-ভাষা নিয়ে দামোদর কোশাম্বি (যেমন, চতুর্মার্গের পাশে কেন কোণঠাসা দেবী?) থেকে রণজিৎ গুহ (যেমন, রাহুর বেত্তান্ত) পড়ে ফেলেছি, তারা খান-চক্কোত্তি দেখে খ্যাক খ্যাক!
  • h | 340123.99.121223.133 (*) | ২১ জুন ২০১৮ ০৮:০০84411
  • ss কে অনেক ধন্যবাদ বইগুলোর রেফারেন্স এর জন্য। কিন্তু আমি যেটা চাইছিলাম, ss আর দেবাশীস বাবু র কাছে খানিকটা আবদারের দাবি ই করছিলাম, জাস্ট এই সাইটের পাঠক হিসেবে, সেটা হল স্পেসিফিক আপত্তি র জায়গা গুলো নিয়ে একটু উদা সহ বিশেষণাত্মক মাথাপিছু কয়েক প্যারা।

    আমরা পদ্ধতিগত ডিনানসিয়েশন পাচ্ছি, সেতো ঠিক ই আছে। এই বিষয়ে আপত্তির কোন কারণ দেখি না। কিন্তু সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধাকারে সিস্টেমিক ইভ্যালুয়েশন/ডেসিমেশন কোনোটাই পাচ্ছি না।

    এগুলো বিখ্যাত কাজ সন্দেহ নেই। কোশাম্বি র কাজ কে আলাদা করে ভাষাতত্ত্বের কাজ বলা যায় কিনা আমি নিশ্চিত নই। কলিম খানের রচনার তিনটে দিক, একটা শব্দার্থ/ভাষা, আরেকটা পোলিটিকাল রচনাগুলো (যেগুলোর আমি যে খান কয়েক পড়েছি বেশ দুর্বল), আরেকটা হল ইতিহাসের সোর্স সংক্রান্ত, তিনটে ভাগে মূল আপত্তি গুলো যদি প্রবন্ধাকারে পাওয়া যেত ভালো হত।

    আমি কলিম খানের ব্যাপারে আমার মূল আপত্তি গুলো সিস্টেমেটিকালি নথিবদ্ধ করছি। মূল ইন্টারেস্টিং অংশটাও বলছি। আমার মনে হয় অনেকের ই যেটা ভুল হচ্ছে দেবতোষ বাবুর লেখা বা সোমনাথ রায়ের লেখার সম্পর্কে আপত্তি আর কলিম খানের সম্পর্কে আপত্তি টা আরেকটু খেয়াল করে আলাদা করে প্লেস করলে ভালো হত।

    ১ - ব্যক্তিগত ভাবে , কলিম খানের ইন্টারেস্টিং দিক যেটা আগেও বলেছি, সেটা হচ্ছে , দৈনন্দিনের যে কাজ (ক্রিয়া) সেটা ভাষা গঠনে কতটা গুরুত্ত্বপূর্ণ সেটা সম্পর্কে একটা আগ্রহের বিষয় হিসেবে তৈরী করা। কেন ইন্টারেস্টিং সেটাও বলছি। আমি সম্পূর্ণ অশিক্ষিত হওয়ার ফলে, আমার এ ব্যাপারে বলতে কোন লজ্জা বিশেষ নেই। সংস্কৃত গ্রামার ধরুন আমরা স্কুলে বা বাড়িতে যতটুকু পড়েছি, সেটা হল কোডিফিকেশন অ্যাতেম্প্ট হিসেবে পড়েছি, ভাষাটা আমাদের মুখের ভাষা না হওয়ার কারণে শ্ব্দরূপ ধাতুরুপ এর আইনের ফলিত রূপ হিসেবে ভাষাটাকে দেখতে শিখেছি। তার বদলে ক্রিয়া কর্ম কে ভিত্তি করে ভাষার গঠন বোঝার প্রচেষ্টা আমার কাছে কৌতূহল জাগিয়েছিল। সেটা হয়তো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটার সীমাবদ্ধতা। আরেকটা কথাও মনে হয়েছিল, খুব সোজা একটা করোলারি, জীবনে দু চারটে বামপন্থী মিছিল মিটিং করলে, এই প্রশ্ন যেকোনো মানুষের মধ্যেই উঠবে, জ্ঞানচর্চার বিষয় হিসেবে ভাষা চর্চা স্ট্যান্ডার্ডাইজ্ড হওয়ার আগেই তো কথ্য বা লিখিত ভাষা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, চলন দিয়েও ভাষা এনরিচড হচ্ছে, তাহলে কর্মী মানুষের দৈনন্দিন কাজের বা পেশার একটা ভূমিকা থাকছে ভাষার গড়ে ওঠায়, এবং ন্যাচারালি জ্ঞানচর্চায়, তাইলে আমার স্ট্যান্ডার্ডাইজ্ড গ্রামারে তার স্বীকৃতি কোথায়। কৌতুহলের সেটাই মেন কারণ।
    ২। এবার সমস্যা গুলি, কলিম খানের রচনায় ডিসপ্রোপোরশনেট মাপে বাঙালি ন্যাশনালিজম উপস্থিত। এ মানে পরতে পরতে। মাঝে মাঝেই বিরক্তিকর। কিন্তু মাথা ঠান্ডা করে ভেবে দেখা যেতে পারে, বাঙালি ন্যাশনালিজম সিঞ্চিত চিন্তার সমস্যা কি প্রখ্যাত স্বীকৃত ভাষাতাত্ত্বিক দের ছিল না? বাঙলা ছাড়াও, অন্য ভারতীয় ভাষা র ক্ষেত্রেও এ সমস্যা ছিল। হিন্দী উর্দু কন্ট্রোভার্সি র উদাহারণ আগের একটা পোস্টে দিয়েছি। ভারতীয় ভাষা গুলির সঙ্গে সংস্কৃতের সরাসরি যোগাযোগের দাবী, প্রাচীনত্ত্বের, জ্ঞানচর্চার বিশুদ্ধতার দাবী, প্রতিযোগিতমূলক বিবর্তনের প্রাচীনতার দাবীর র সঙ্গে কি মিশে যায় নি? অসংস্কৃত শিকড় গুলি কতটা গুরুত্ত্ব পেয়েছে? মানে রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে বামপন্থার প্রভাব আকাডেমিয়াতে একটা ব্যাপক আকার ধারণ করার আগে? এই য রসগোল্লা প্রসঙ্গে, ঐতিহ্যশালী ভাষা প্রসঙ্গে বাংলা ওড়িয়ার লড়াই, এই বোকা বোকা লড়াই গুলোর কোন দায় ই কি সুনীতিবাবুদের প্রতিষ্ঠিত আলোচনাপদ্ধতির মধ্যে নেই?

    ৩। কলিম খানের রাজনৈতিক রচনা আমার কৌতুহল উদ্রেক করতে পারে নি। মানে কিসুই হয় নি দু চারটে যা পড়েছি। একটা মনে পড়ছে, চৈতন্য র সময়ের ভাষার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যবহৃত রাজনৈতিক ভাষার একটা তুলনা, এবং এটাকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা বিশেষতঃ স্বল্পশিক্ষিত মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তার কারণ হিসেবে দেখানো। এটা সলিড কষ্টকল্পিত লেগেছিল। একজন আধুনিক পলিটিশিয়ান, যিনি মনে করেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বা আলোচনা পদ্ধতি উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে র সহায়ক নয় , তাঁর সঙ্গে চৈত্নয়ের আন্দোলনের ইতিহাসের তুলনাটা খুব ই কষ্টকল্পিত লেগেছিল।

    ৪। জেনেরালি দ্বিতীয় ইসু টার ই করোলারি হিসেবে বলা যেতে পারে, ঊনবিংশ শতকে, ন্যশানলিজম এর বাড় বাড়ন্ত র সময়ে গড়ে ওঠা তত্ত্ব চর্চার যে সব পদ্ধতি গড়ে উঠছে, তাঅর প্রভাব আকাডেমিয়া পঞ্চাশের দশক থেকেই কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে, এবং এইটাই তথাকথিত জাতীয়তাবাদী এবং কনট্রারিয়ান লিবেরাল দের মূল বিতর্ক। তো এই ভাষাতত্ত্ব চর্চায় একটা 'রেশিয়াল অ্যাবোড' এর খোঁজ থেকে কলিম খানের রচনা মুক্ত না। মানে এখনকার লিবেরাল রা শুধু এই জন্যেই হয়তো পড়তে চান না, হেজে যান। তার রাজনৈতিক কারণটাও মোটামুটি পরিষ্কার। কে আর নতুন করে, জাতীয়তাবাদ কে মান্যতা দিতে চায়, এমনিতেই প্রাণ ওষ্ঠাগত।

    যতটা সম্ভব অবজেকটিভ ভাবে বললাম। আশা করবো যাঁরা এইটাকে আলোচনার যোগ্য মনে না করেই দু চারটে পোস্ট দিয়ে ফেলছেন, তাঁরা কলিমের রচনা সম্পর্কে পদ্ধতি আর মতাদর্ষের বাইরে স্পেসিফিক ভাষার আলোচনার ব্যাপারে মূল আপত্তি গুলো সাধারণের জন্য একটু সহজ করে লিখে ফ্যালেন, গরীবের উপকার হয়। গোল্গোল আউটসাইডার বনাম আকাদেমিয়া বা কেন্দ্রীয় ধনতন্ত্র বনাম রাজ্যের কর্মযজ্ঞ বা ভারতীয়ত্ত্ব বনাম আকাদেমিয়া এই সব কথা কে অ্যাভয়েড করে যতটুকু স্পেসিফিক আপত্তি রাখা যায় আর কি।
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২১ জুন ২০১৮ ০৮:১৬84415
  • পিতলের কলসীর নাম সুকল্যাণ, দিনলিপির নাম দ্রোহহরি, চিলেকোঠার নাম উল্লম্ফন, জানালার নাম কপোতপালিয়া, চিরুণীর নাম সুনীতিস্তোত্র .... ঃ-)
  • h | 340123.99.121223.133 (*) | ২১ জুন ২০১৮ ০৮:৩২84412
  • ৪ নং লেখার সময় একটা কথা বলতে ভুলে গেছি। পিনাকি যে রিডিকিউলাস উদা টা দিয়েছে, কমোডিটি ঃ-))) এটা নিয়ে সেদিন আতোজ ও বেশ মজা করেছে, মেগাস্থানেশ ইত্যাদিঃ-) ইন্দো ইউরোপিয়ান ভাষা র মধ্যেকার প্রাচীন যোগাযোগ , এবং প্রতিটি ভাষার আধুনিকতম ফর্মে বিভিন্ন শব্দের রুটে সর্বদা প্রকট থাকবে, এই দাবীটা ইটসেল্ফ বিচিত্র এবং সরাসরি ঊনবিংশশতকীয় বদভ্যাস, যখন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা কে সভ্যতার তুলনামূল প্রাচীনত্ত্বের বিশুদ্ধতার দাবীতে ব্যবহার করা হত। সেই কমলাকান্তের বিপদ আপদ গল্পের মত, অর্থাৎ কি হে ইউরোপীয় তুমি আমায় কি শেখাবে, আমরা প্রচীন সভ্যতা র উতারসুরী, এবং এতটাই প্রাচীন, ৭০০ ৮০০ বছরের মুসলমানেরা আমাদের ভাষা কে একটুও প্রভাবিত করে নি।
    ফাইনালি , কলিম খানের রাজনৈতিক রচনার একটা কষ্টকল্পিত সিন্থেসিস প্রচেষ্টা আছে, একটু ট্র্যাডিশনাল ভারতীয় বামপথী, একটু নিম্নবর্গ মতাদর্শ, একটু বিশুদ্ধ জাতীয়বাদ, একটু থিয়োরী অফ কালচার ইত্যাদি মিশিয়ে একটা ন্যারেটিভ আর্গুমেন্ট তৈরী করার প্রচেষ্টা। আমার সরাসরি বক্তব্য হল, এটা রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের কাজে লাগতে পারে, কিন্তু তত্ত্ব চর্চায় কাজে লাগে কিনা, আমি পার্সোনালি নিশ্চিত নই। আবার এও মনে করি না, রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠন ও অপরাধ কিসু না, তবে সেটা রাজনৈতিক ক্রিয়া কর্মে সীমাবদ্ধ রাখলেও চলে।

    তবে এন্ড অফ ডে, ঐ জে বল্লাম, গ্রামার তৈরী তে কর্মের জগতের, কর্মীর জগতের, পেশার ক্রাফটের স্বীকৃতির প্রচেষ্টা, ঐটা ইন্টারেস্টিং লাগে। স্পেসিফিক উদা সহ তাত্ত্বিক আপত্তির অপেক্ষায় রইলাম।
  • তাতিন | 340123.110.234523.20 (*) | ২১ জুন ২০১৮ ০৯:৫৩84413
  • কলিম খান নিয়ে একদিকে দাবি এলঃ আমরা বাঙালি-বাংলাপক্ষঃ (মুসলিম বিদ্বেষ)

    আরেকদিকে একজন বাংলার অধ্যাপক ফেসবুকে সমালোচনা লিখলেনঃ
    ওঁর তত্ত্ব অনেকটা বন্দে বাংলা-র,মত নিরর্থক শব্দবন্ধ।বন্দে,সংস্কৃত।বাংলা,বাংলা।বন্দে বাংলা-র মতই ওনার বঙ্গদর্শন।বাঙালি জাতিসত্তা এবং বাঙালি ভাষাসত্তা যে ধর্মীয় বাস্তবতায় একই গতিতে চলবে এমন কোনো কথা নেই।আর যদি চলেও,(কার্যত আপনারা সম্প্রীতির যে ক্ষেত্রগুলি দেখেন,সেখানে চলেছেও)তাকে আর্যনৃকুলের ও আর্যভাষাকুলের ফাণ্ডামেণ্টাল হেজিমনি থেকে বিচ্ছিন্ন করা অসম্ভব বলেই বোধ করি।বাংলাদেশের অর্ধশিক্ষিত বা উদ্দেশ্যমূলক ঐতিহাসিকরা উর্দুর সঙ্গে বাংলার,বা আরবীর থেকে বাংলার দ্বন্দ্বকে লুপ্ত করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে,ঐতিহাসিক শব্দবিদ্যাকে এড়িয়ে সংস্কৃত বনাম বাংলার যে প্রকল্প হাজির করেছেন,কলিম খানের তথাকথিত ব্যাকরণ তারই এক দুর্বলতর সম্প্রসারণমাত্র।
    এর অতিরিক্ত,এই বিষয়ে কিছুই বলার নেই। ঃ (অর্থাৎ আরবী-সংশ্লেষ)

    এই দ্বিতীয় আস্পেক্টটা এখানে কারুর চোখে পড়বে হয় ত
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:০৬84436
  • ঃ-)))) তা যথা আজ্ঞা ঃ-)))))

    ss আরো লিখুন তর সইছে না। আপনি কিচ্ছু না ভেবে লিখুন, আপনি প্রবন্ধ আকারে পরে এডিট করে নেবেন। কিন্তু আপাতত ফর্মালাইজ করতে গিয়ে আমাদের বেশি অপেক্ষা করাবেন না। প্লিজ। প্রশ্ন টশ্ন পরে করব। বা প্রয়োজন না হলে করব না।

    বাকিরা ও লিখুন, আমরা তো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। বিশ্বাস করুন আদ্যপান্ত পড়ে নেব। আমি অন্তত ব্যস্ত নই, দেশ চালাই না। ইন্টারেস্টিং মাল পেলে পড়ার জন্য অনেক সময়। সম্ভাব্য লেখকেরা ,ল্যাদ খারাপ জিনিস, খাবেন না, সুগার হবে ;-)
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:০৭84417
  • "বিন্দুবিসর্গ" বইটা পড়েছ ছোটাইদি? কলিম খানের তত্ত্বের উপরে ভিত্তি করে থ্রিলার ধরণের উপন্যাস।
    শুরুর দিকে এই তত্ত্বে বেশ চমৎকৃত হচ্ছিলাম, তারপরে কেসিপাল কেসিপাল ঠেকতে থাকে, ভরত ভর্তুকী, অর্জুন হোয়াইট মানি, কৃষ্ণ ব্ল্যাক মানি, দক্ষেরা বিতাড়িত হয়ে মিশরে চলে গেলেন, পিরামিড বানালেন এইরকম সব অদ্ভুত অদ্ভুত ব্যাপার বের হচ্ছে দেখে। ঃ-)
  • i | 783412.157.89.253 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:১২84418
  • না, আমি সত্যি কলিম খানের ভাবনার জগতে ঢুকতে চাইছি। না বুঝে না জেনে কোনো বিতর্কে নয়। তাই ভাষাতত্ত্বের সিরিয়াস বই পড়তে চাইছি।
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:১৬84419
  • এখানে মন্তব্যপুঞ্জ পড়ে মনে হল একমাত্র ss ভাষাতত্ত্ববিদ। উনি হয়তো সিরিয়াস বইয়ের তালিকা দিতে পারবেন।
    ss এর আলোচনা আর মন্তব্য মন দিয়ে পড়ছি।
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:৫১84420
  • ss এর লেখা সুন্দর লেগেছে। তাতিনের সিত কমেন্ট ও ভালো লেগেছে। তবে তাতিনের লেখায় একটা চিন্তার ছাপ পাই বলে আরেক্টু লিখলে আরেকটু ভালো। ,Ss একটা আস্তো পোসোন্দো লিখলে ভালো হয়। দেবাশীস বাবু, বিদ্যুত বাবু ও লিখুন। আপনাদের আপত্তি র কথা।

    এই টইতে একটা প্রস্তাব হল দিন পনেরো সময় দেওয়া যাক, এর মধ্যে যে যা লিখলেন, সব শেষে দেবতোষ বাবু ডিফেন্স এ কিছু লিখ্লেন , তার পরে এই টই ক্লোজার এ যেতে পারে। এটা জাস্ট প্রস্তাব কোনো নিয়ম কিসু না। কিন্তু বস যারা সিরিয়াসলি এনগেজ করলেন সবাই কে ধন্যবাদ।আরো হোক, আমরা শিখি। এক্টা সাবধানবাণী দিয়ে যাই, পাই কিন্তু পোসোন্দো না পেলে বাড়িতে গুন্ডাও পাঠাতে পারে, ;-) জাস্ট কিডিঙ্গ ঃ-)))
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:৫৩84421
  • *পোবোন্দো ঃ-))))
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০১:৫৫84422
  • *তাতিনের ছোটো কমেন্ট
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০২:০৪84437
  • এগুলো বলা উচিত ন, এখনো পর্যন্ত থ্যাংক গড ঝগড়া ঝাঁটি হয় নি। মানুষ শোনার শেখার চেষ্টা করছে, বা অন্তত করবে কিনা ভাবছে। মোটামুটি মেরিট অফ আর্গুমেন্ট এর ভিত্তিতেই কথা হচ্ছে। খুব রেয়ার সোশাল নেটওয়ার্কিং এ। আই নো আই অ্যাম সাউন্ডিং লাইক আ লাউজি মোনালিসা অ্যাজ হোস্টেস, কিন্তু মেরিট অফ আর্গুমেন্ট এর ভিত্তিতে আলোচনা এত রেয়ার, যে খানিকটা ওভারপ্রোটেকটিভ বোধ করছি।
  • dc | 342323.228.9002312.9 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০২:১৬84438
  • কলিম খানের নাম আগে শুনিনি, এখানে গুরুতেই প্রথম শুনলাম। তবে বিভিন্ন জনের কমেন্ট পড়ে মনে হচ্ছে এনার ক্র্যাকপট হবারই চান্স বেশী। একটা প্রশ্ন, কলিম খানের কোন অ্যাকাডেমিক কনট্রিবিউশান আছে কি?
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৩:০৫84423
  • ইন্দ্রাণীদি একটা কথা ছিল। সেটা হল এই ধরণের আলোচনা য় কচকচি ইজ নট এন্টায়ারলি অ্যাভয়েডেবল। কারণ কলিম খান দের তাত্ত্বিক প্রোজেক্ট, মানে অ্যাট বেস্ট অফ টাইমস , পোলিটিকাল কনোটেশন কে অ্যাভয়েড করছে না, তার অনুরাগী রা অটো ডাইডাকটিক পজিশন থেকে শুরু করে পুরো প্রোপোজালটাকেই কচকচি ফর্মেই আনছেন, তর্ক তো কচকচিময়।
  • modi | 5689.248.782323.163 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৩:২০84424
  • এই টইটা তখন থেকে পড়ছি। আরো একটা টই মনে হয় কলিম খানকে নিয়ে খোলা হয়েছিল, সেটাও দেখেছি।

    জীবন সংক্ষিপ্ত, পড়ার ও জানার বিষয় অনেক। তার মধ্যে আহার নিদ্রা ও অন্যান্য জৈবিক কাজে কর্মে অনেক সময় যায়। তাতেই পড়ার বিষয় বাছাই না করলে চলে না। এখন অবধি এমন কোন কারণ দেখলাম না যার জন্য অন্য বই বাদ দিয়ে কলিম খান পড়তে পারি।

    গোরু শব্দের অনেক অর্থ জানা জিনিষ। সেখানে কলিম খানের অবদানটা ঠিক কি বোঝা গেল না। আমি এখানে অ্যাকাডেমিক অবদানের কথা বলতে চাইছি। প্রচারক বা ইভ্যানজেলিস্টের কাজে আমার আগ্রহ নেই।

    এ বাদেও ওনার মেথডলজি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন। সেখান থেকেই মনে হয় কেসি পালের সাথে তুলনাটা আসছে।

    কেউ কি এই দুটো (ওনার নতুন অবদান + পদ্ধতিবিচার) নিয়ে কিছু বলতে পারেন?
  • i | 783412.157.89.253 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৩:৩৪84425
  • হনুজী,
    অবশ্যই। সে তো হবেই।
    আমি একেবারেই নিজের কথা বলেছিলাম। এই ক্ষেত্রে আমার স্ট্যান্ড হল এই যে তর্কে অংশগ্রহণ করতে পারি ( সরাসরি কি পাঁচিলে) কিন্তু তার আগে পড়তে চাই কারণ কলিম খানের ভাবনার জগতটা বুঝতে চাইছি ।
  • h | 2345.110.9002312.104 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৪:২৫84426
  • মোদিজি র দাবী টি একটু অদ্ভুত , পরিশ্রম করবেন না অথচ ক্ষীরে আগ্রহ
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৫:৪৮84439
  • হানুদা মোনালিসা? হি হি হি ঃ-)
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৫:৫৭84440
  • কেউ প্লীজ সুকুমারের চলচিত্তচঞ্চরীর ওই শ্রীখন্ডবাবুর কবিতাটা দিন।
    "খন্ডিত গোধন মন্ডল অবনী ...."
    ঃ-)
  • modi | 7878.247.128912.162 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৬:০৭84427
  • হ-জী, আমার কিন্তু কোন দাবী নেই। পরিশ্রম করব না এমন কোন কথাও নেই। আমার যেটা সমস্যা সেটা সব পাঠকেরই সমস্যা, কোনটা পড়ব সেটা ঠিক করা।

    আমি বলতে চাইছি, এখন অবধি কলিমবাবুর কাজ নিয়ে এখানে যা দেখলাম তাতে (অন্য লেখা বাদ দিয়ে) ওনার লেখার পেছনে সময় দেবার কারণ দেখছি না। অথচ ওনার কিছু প্যাশনেট অনুগামী আছেন বুঝতে পারছি যারা ওনার কাজ প্রচার করতে আগ্রহী। আমার বক্তব্য এই অনুগামীদের কাছে, বুঝিয়ে বলুন কেন আমি কলিমবাবুর লেখা পড়ব। তারা যদি বলেন কাটিয়ে দিতে তো আমি কাটিয়েই দেব।
  • h | 340123.99.121223.134 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৬:৩২84428
  • অনুগামীরা প্রচারক ভূমিকা অবলম্বন করে কাটিয়ে দিতে কেন বলবেন বোঝা গেল না, এত আলসে হলে হয় ঃ-))))), আবার প্রচার ও পসন্দ না ঃ-)))) কি ল্যাদ বাবাঃ-))) দেখুন ভাষাতত্ত্বে বা অন্ত্ত এটিমোলোজি তে আগ্রহ পেলে শুধু কলিম খান বা শুধু কলিম খান সম্পর্কে গুরুচন্ডালি তে প্রকাশিত লেখা বা শুধু অনুগামী দের প্রচারক ভূমিকায় কনফেসন বা পুনরায় প্রচার এগুলো পড়বেন না ধরে নিয়েই বলা, বিষয় টায় সাসটেনড ইনটারেস্ট থাগলে পড়ুন, নইলে আর কথায় কাম কি ঃ-)))))
  • ss | 7845.15.8934.86 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৮:১২84429
  • সংযোজন: (দ্বিতীয় খেপ নহে)

    যা বুইলুম, গুরু গম্ভীর ঠাঁই নহে (এটা গুরুর ঘোষিত সিদ্ধান্ত), অথচ আমি গেরাম্ভারি কথা কয়ে ফেলছি। তাই দ্বিতীয় খেপে যাওয়ার আগে তাই একটু মজা করি। অর্থাৎ একটা ব্রেক নিচ্ছি--চেঞ্জে যাচ্ছি--মনে হচ্ছে রিলিফের কাজ করবে ।

    ১.

    ক্রিববাদীরা যে অমোঘ প্রশ্ন তোলেন, তাহা চন্দ্রবিন্দু চমৎকারভাবে পেশ করিয়াছে। গানটা এই ক্যাঁচালের মধ্যে শুনে নিন ইউটিউব খুলে। খানিকটা অংশ দিয়ে দিলুম:

    সবই তো বুঝলাম
    জ্ঞানের হেনতেন, কিন্তু
    তাতিন তোমার নামটা, তাতিন হলো কেন?
    ......
    নব জল ধর পটল থাকতে
    তাতিন হলো কেন?
    তাতিন তোমার নামটা, তাতিন হলো কেন
    ওয়ানচু দ্রিঘাংচু থাকতে
    তাতিন হলো কেন?
    ........
    রজনীপাম দত্ত থাকতে
    তাতিন হল কেন?
    তা একটা দুই থাকতে
    তা তিন হলো কেন
    সতীন কিংবা পুতিন থাকতে
    তাতিন হল কেন?

    ২.

    এবারে অনুরোধ, মার্কসসাহেবের একটা অসম্পূর্ণ উপন্যাস পড়ার: Scorpion and Felix ( গুগল সার্চে অনায়াসলভ্য)। সবটা না পড়লেও চলবে, শুধু ২১ নম্বর অধ্যায় (Philological Broodings) কাফি।

    বাংলায় এই উপন্যাসের ভাষ্যও পেয়ে যাবেন আন্তর্জালে: “ঐতিহাসিক শব্দবিদ্যা ও কার্ল মার্কস -এর একটি উপন্যাস” [Comparative Philology and a Novel by Karl Marx]-দিয়ে গুগলে সার্চ মেরে দেখুন।

    দিব্যি কেটে কৈছি, আপনাদের দিব্য কাজে লাগবে। প্রাণখোলা হাসিও হাসতে পারবেন, আবার ভাষাতত্ত্বে হামাগুড়িও দিতে পারবেন।

    ব্যুৎপত্তিবাদীদের (ক্রিববাদীরা এনাদের মধ্যেই পড়েন) নিয়ে এমন তামাশা দেখিনি মোহাই!

    ৩.

    কে বলে দেখিনি? রবিবাবু কম যান নাকি!

    প্রথমে বাচস্পতির কথা কোই:

    "আমার ‘অদ্ভুত-রত্নাকর’ সভার প্রধান পণ্ডিত ছিলেন বাচস্পতি মশায়। প্রথম বয়সে পড়াশুনা করেছিলেন বিস্তর, তাতে মনের তলা পর্যন্ত গিয়েছিল ঘুলিয়ে। হঠাৎ এক সময়ে তাঁর মনে হল, ভাষার শব্দগুলো চলে অভিধানের আঁচল ধরে। এই গোলামি ঘটেছে ভাষার কলিযুগে। সত্যযুগে শব্দগুলো আপনি উঠে পড়ত মুখে। সঙ্গে সঙ্গেই মানে আনত টেনে। তিনি বলতেন, শব্দের আপন কাজই হচ্ছে বোঝানো, তাকে আবার বোঝাবে কে। একদিন একটা নমুনা শুনিয়ে তাক্‌ লাগিয়ে দিলেন। বললেন, আমার নায়িকা যখন নায়ককে বলেছিল হাত নেড়ে ‘দিন রাত তোমার ঐ হিদ্‌‌‌‌‍‌হিদ্ হিদিক্কারে আমার পাঁজঞ্জুরিতে তিড়িতঙ্ক লাগে’, তখন তার মানে বোঝাতে পণ্ডিতকে ডাকতে হয় নি। যেমন পিঠে কিল মেরে সেটাকে কিল প্রমাণ করতে মহামহোপাধ্যায়ের দরকার হয় না।"

    খেয়াল করুন,
    অভিধানের আঁচল ধ'রে চলে যে ভাষা, সে আদতে গোলামি করে (কেউ কেউ বলবেন, ভাষার জেলখানায় আমরা কয়েদি) আর এটা ঘটেছে ভাষার কলি(ম)যুগে।
    আমরা এই যে কথা কোই, সংলাপে মাতি, এর জন্য পন্ডিতকে তলব করতে হয় না!
    "যেমন পিঠে কিল মেরে সেটাকে কিল প্রমাণ করতে মহামহোপাধ্যায়ের দরকার হয় না।"
    "শব্দের আপন কাজই হচ্ছে বোঝানো, তাকে আবার বোঝাবে কে..." --কথার ওপর কথা কওয়া বা বকবক করার ওপর বকবক করা আদতে meta-বকবক। ট বর্ণের অর্থ যদি করি "টঙ্কারণ" ("কি করে জানলুম এমন মানে? মেথডোলজি বাৎলাও দেখি!) , তাহলে এবার গলা ছেড়ে গাইবো, "পিনাকেতে লাগে ট"! "টঙ্কার" বলার আর দরকার নেই তো! এমন meta-বকবক যে চক্রক দোষে দুষ্ট তা আর এনারা জানবেন কবে?

    সাধে কি আর তাতাদাদা ভাবুকদাদার মুখ দিয়ে কয়েছেন:

    "অর্থ! অর্থ তো অনর্থের গোড়া!
    ভাবুকের ভাত-মারা সুখ-মোক্ষ-চোরা;
    যত সব তালকানা অঘামারা আনাড়ে
    'অর্থ-অর্থ' করি খুঁজে মরে ভাগাড়ে!
    (আরে) অর্থের শেষ কোথা কোথা তার জন্ম
    অভিধান ঘাঁটা, সে কি ভাবুকের কম্ম?
    অভিধান, ব্যাকরণ, আর ঐ পঞ্জিকা—
    ষোল আনা বুজরুকী আগাগোড়া গঞ্জিকা।
    মাখন-তোলা দুগ্ধ, আর লবণহীন খাদ্য,
    (আর) ভাবশূন্য গবেষণা— একি ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ?"

    রবিবাবুর এই লেখাটি পড়ে হেব্বি লাগলো আর সময়-উপযোগীও মনে হল, কেনোনা, রবিবাবুর সময়েও যে ক্রিববাদীরা ছিলেন সেটা মালুম হল এমন একটা লেখায়।
    রবিবাবুর কথাতেই আমার মোটিভ ব্যক্ত করি: " সম্প্রতি তিনি (পণ্ডিত মহাশয়) বর্ণমালার গূঢ় অর্থ বাহির করিয়াছেন অথচ তাহাতে কাহারো সর্বনাশ করা হয় নাই এই নিমিত্ত তাহা সংক্ষেপে পাঠকদের উপহার দিব।"

    জীবন ও বর্ণমালা

    আমাদের পণ্ডিত মহাশয়ের এমনি খরদৃষ্টি (বলা বাহুল্য, “খরদৃষ্টি’ ষষ্ঠী তৎপুরুষ নহে) যে তাঁহার দৃষ্টির সম্মুখে একটি তৃণ পর্যন্তও এড়ায় না। তিনি সকলেরই মধ্যে গূঢ় অর্থ দেখিতে পান। যে যেমন ভাবেই কথা কহুক-না কেন, তিনি তাহার মধ্য হইতে এমন একটি ভাব বাহির করিতে পারেন, যাহা বক্তার ও শ্রোতার মনে কস্মিন কালেও উদয় হয় নাই। ইহাকেই বলে প্রতিভা! প্রতি সামান্য কথার অসামান্য অর্থসকল বাহির করিয়া সংসারে তিনি এত অনর্থের উৎপত্তি করিয়াছেন যে, এ বিষয়ে কেহ তাঁহার সমকক্ষ হইতে পারে না! সাধারণ যশের কথা! এই অতি উদার মহৎ গুণ প্রতিপদে চালনা করিতে করিতে দৈবাৎ মাঝে মাঝে এক-একটা অতি নিরীহ কার্যও তিনি সাধন করিয়া থাকেন। সম্প্রতি তিনি বর্ণমালার গূঢ় অর্থ বাহির করিয়াছেন অথচ তাহাতে কাহারো সর্বনাশ করা হয় নাই এই নিমিত্ত তাহা সংক্ষেপে পাঠকদের উপহার দিব।

    এই পণ্ডিত-প্রবর আজ পঁচিশ বৎসর, বর্ণজ্ঞানশূন্য শিশুদের কর্ণধার হইয়া তাহাদিগকে জ্ঞান-তরঙ্গিণী পার করিয়া আসিতেছেন। যদি কোনো শিশু বিস্মৃতির ভাটায় এক পা পিছাইয়া পড়ে, তবে তাহার কর্ণ ধরিয়া এমন সুন্দর ঝিঁকা মারিতে পারেন যে, সে আর এগোইবার পথ পায় না। “উঃ’ “ইঃ’ “আঃ’ প্রভৃতি স্বরবর্ণগুলি অতি সহজে, সতেজে ও সমস্ত মনের সহিত উচ্চারণ করাইবার জন্য তিনি অতি সহজ কতকগুলি কৌশল উদ্ভাবন করিয়াছেন। অতএব বর্ণমালা সম্বন্ধে ইহার কথাগুলি বিনা উত্তরে শিরোধার্য করা উচিত।

    লিখিত ভাষা-বিশেষ পড়িবার জন্য যে বর্ণমালা বিশেষ উপযোগী তাহা নহে। তাহাতে জাতীয় জীবন প্রতিবিম্বিত থাকে। একটা উদাহরণ দিলেই সমস্ত স্পষ্ট হইবে। ইংরেজদের ও আমাদের বিবাহ পদ্ধতির কী প্রভেদ, তাহা দেখিতে মনুও খুলিতে হইবে না, ইতিহাসও পড়িতে হইবে না; বর্ণমালা অনুসন্ধান করিয়া দেখো, বাহির হইয়া পড়িবে। ইংরেজী বর্ণমালায় ‘L’অক্ষরের পর ‘M’অর্থাৎ Love-এর পর Marriage। আমাদের বর্ণমালায় “ব’-এর পর “ভ’ অর্থাৎ বিবাহের পর ভালোবাসা। ইহার উপরে আর কথা আছে? আসল কথা এই, সমাজ যে নিয়মে গঠিত হয়, বর্ণমালাও সেই নিয়মে গঠিত হয়।

    যাহা হউক, কয়েক বৎসর ধরিয়া পণ্ডিত মহাশয় তাঁহার বিশাল নাসাগহ্বরে এক-এক টিপ করিয়া নস্য নামাইয়াছেন ও বর্ণজ্ঞান-সমুদ্র হইতে এক-এক রাশি রত্ন তুলিয়াছেন। পাঠকদিগকে তাহার নমুনা দেওয়া যাইতেছে।

    আমাদের বর্ণমালায় পাঁচটি বর্গ আছে, আমাদের জীবনেও পাঁচ ভাগ আছে, কবর্গ, চবর্গ, টবর্গ, তবর্গ, পবর্গ, শৈশব, কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়, বার্ধক্য।

    কবর্গ, অর্থাৎ শৈশব। (ক)-দা, (খে)লা, (গ)লা, (ঘা) লাগা ও উ আঁ (ঙ) করা; ইহার অধিক আর কিছুই নহে।

    চবর্গ, কৈশোর। এখন আর গিলিতে হয় না, (চি)বাইতে শিখিয়াছে; গড়াইতে হয় না, (চ)লিতে শিখিয়াছে; (ছু)টাছুটি করিতে পারে। সামাজিকতার বিকাশ আরম্ভ হইয়াছে পাঁচ জন সমবয়স্কে মিলিয়া (জ)ড়ো হইতে শিখিয়াছে। কিন্তু প্রথম সামাজিকতার আরম্ভে (ঝ)গড়া হইবেই। অসভ্যদের মধ্যে দেখো। তাহারা একত্র হইয়া ঝগড়া করে, ঝগড়া করিতেই একত্র হয়। দ্বন্দ্ব শব্দের অর্থ মিলন ও বিবাদ উভয়ই। সামাজিকতা শব্দের অর্থও কতকটা সেইরূপ। বালকেরা ঝগড়া আরম্ভ করিয়াছে। এবং পরস্পরের মধ্যে ঈঁ অঁ(ঞ) নামক একটা কুঁজ-বিশিষ্ট বক্র-ভাবেরও তদনুযায়ী মুখভঙ্গির আদান-প্রদান চলিতেছে।

    টবর্গ বা যৌবন। এইবার যথার্থ জীবনের আরম্ভ। ইহা পাঁচ বর্গের মধ্যবর্গ। ইহার পূর্বে দুইটি বর্গ জীবনের ভূমিকা; ইহার পরে দুইটি বর্গ জীবনের উপসংহার। এবং এই বর্গই জীবন। এইবার (ট)লমল করে তরী; এ পথে যাইব কী ও পথে যাইব? পথে বিষম (ঠে)লাঠেলি; ভিড়ের মধ্যে সকলেই পথ করিয়া লইতে চায়! (ঠো)কর খাইতেছে (ঠে)কিয়া শিখিতেছে বা শিখিতেছে না। বন্ধন আরম্ভ হইতেছে; যশের (ডো)রে, প্রেমের (ডো)রে, চির-উদ্দীপিত আশার (ডো)রে মন বাঁধা পড়িতেছে। যশেরই হউক আর অপযশেরই হউক, চারি দিকে (ঢা)ক (ঢো)ল বাজিতেছে। চোখে নিদ্রা নাই, মাঝে মাঝে (ঢু)লিয়া থাকে মাত্র। ইহা একটি ডাকাডাকি হাঁকাহাঁকির কাল। যৌবন কাল টঠ অক্ষরের ন্যায় কঠিন দৃঢ়প্রতিষ্ঠ। “ক’ ও “চ’-র ন্যায় কচি নহে “ত’য়ের ন্যায় শিথিল নহে, “প ফ’য়ের ন্যয় একেবারে ওষ্ঠাগত নহে।

    তবর্গ বা প্রৌঢ়। “ট’য়ে যাহা কঠিন ছিল, “ত’য়ে তাহা শিথিল (ত) লতোলে হইয়া পড়িয়াছে। এখন (ত)লাইয়া বুঝিবার কাল। যৌবনে উপরে উপরে যাহা চক্ষে পড়িত, তাহাই খাঁটি বলিয়া মনে হইত, এখন না (ত) লাইয়া কিছু বিশ্বাস হয় না। মনের দরজায় একটা (তা)লা পড়িয়াছে। যৌবনে এক মুহূর্তের তরে দ্বার বন্ধ করা মনে আসিত না; সেই অসাবধানে বিস্তর লোকসান হইয়াছে, এমন-কি, আস্ত মনটি চুরি গিয়াছে এবং সেই ডাকাতির সময় মনের সুখ শান্তি সমুদয় ভাঙিয়া চুরিয়া একেবারে নাস্তানাবুদ হইয়া গিয়াছ। কেহ-বা হারানো মন ভাঙাচোরা অবস্থায় উদ্ধার করিতে পারিয়াছেন, কেহ-বা পারেন নাই, আস্তে আস্তে দুয়ারে তালা লাগাইয়াছেন। ইঁহাদের মন (থি)তাইয়া আসিয়াছে, এক জায়গায় আসিয়া (দাঁ)ড়াইয়াছেন; মত বাঁধিয়াছেন, সংসার বাঁধিয়াছেন, ছেলেমেয়েদের বিবাহে বাঁধিয়াছেন। মাঝে মাঝে একটা একটা (ধা)ক্কা খাইতেছেন; (যৌবনের ন্যায় সামান্য ঠোকর খাওয়া নহে) উপযুক্ত পুত্র মরিয়া গেল, জামাই যথেচ্ছচারী হইয়া গিয়াছে, দেনায় বিষয় যায় যায়। অবশেষে তাহার মন (ন)রম হইয়া আসিয়াছে, তাহার শরীর মন (নু)ইয়া পড়িয়াছে। তবর্গে লোকে (তা)স্‌ খেলে, (তা)মাক খায়, (দা)লানে বসিয়া (দ)লাদলি করে, (নি)ন্দা করে ও (নি)দ্রা যায়। যৌবনে ঢুলিতে মাত্র, এখন (নি)দ্রা আরম্ভ হইয়াছে। যাহা হউক, দন্ত্য ন শেষ হইল, দন্তেরও শেষ হইল।

    পবর্গ বা বার্ধক্য। প্রৌঢ়ে যাহা নুইতে আরম্ভ করিয়াছিল, এখন তাহার (প)তন হইল। পতিত বৃক্ষকে যেমন সহস্র লতায় চারি দিক হইতে জড়াইয়া ধরে, তেমনি সংসারের সহস্র (ফাঁ)দে বৃদ্ধকে চারি দিক হইতে আচ্ছন্ন করে; ছেলে, মেয়ে, নাতি নাতনী ইত্যাদি। (বি)রাম, (বি)শ্রাম। (ভ্রা)ন্তি, (ভ)য়, (ভ)র, (ভি)ক্ষা ও অবশেষে (ম)রণ। ঢোলা নয়, নিদ্রা নয়, মহা নিদ্রা।

    মানুষ (ক)(র্ম)-ক্ষেত্রে নামিল– ক হইতে আরম্ভ করিল, ম-য়ে শেষ করিল। কাঁদিয়া জন্মিল, ক্রন্দনের মধ্যে অপসারিত হইল। কিন্তু মানুষের এই সমগ্র জীবন আরম্ভ ক-বর্গের মধ্যে প্রতিবিম্বিত আছে। ক-বর্গে কী কী আছে? কাঁদা, খেলা, গেলা, ঘা লাগা ও উঁ আঁ করা। প্রথম কাঁদা, শৈশবের ক্রন্দন, দ্বিতীয় খেলা, কৈশোরের খেলা। তৃতীয় গেলা অর্থাৎ ভোগ, যৌবনের ভোগ। চতুর্থ ঘা লাগা, প্রৌঢ়ের শোক। পঞ্চম উঁ আঁ করা, বৃদ্ধের রোগ; বৃদ্ধের বিলাপ। জীবনের ভোজ অবসান হইলে যে-সকল ছেঁড়া পাত ভাঙা পাত্র, বিক্ষিপ্ত উচ্ছিষ্ট ইতস্তত পড়িয়া থাকে, তাহাও ক-বর্গের মধ্যে গিয়া পড়ে, যথা–(কা)ঠ, (খা)ট, (গ)ঙ্গার (ঘা)ট ও বিলাপের উঁ আঁ শব্দ। আরম্ভের সহিত অবসানের এমনি নিকট সম্বন্ধ।

    অ আ প্রভৃতি স্বরবর্ণগুলি আমাদের জীবনের অনুভাবসমূহ। এগুলি ব্যতীত কোনো ব্যঞ্জনবর্ণ দাঁড়াইতে পারে না। জীবনের যে-কোনো ঘটনা ঘটুক-না তাহার সহিত একটা অনুভাবের স্বরবর্ণ লিপ্ত আছেই। কখনো বা তৃপ্তিসূচক আ, কখনো বা তীব্র যন্ত্রণা-সূচক ই, কখনো বা গভীর যন্ত্রণাসূচক উ, আমাদের ঘটনার ব্যঞ্জনবর্ণে যুক্ত হয়। মর্ত্য-জীবনের বর্ণমালায় সমুদয় ব্যঞ্জনবর্ণের সহিত অভাব-সূচক “অ’ লিপ্ত থাকে। তাহাই তাহার মূল সহচর। অদৃষ্ট আমাদের এই-সকল অক্ষর সাজাইয়া এক-একটা গ্রন্থ রচনা করিতেছে। কাহারো বা কাব্য হয়, কাহারো বা দর্শন হয়, কাহারো বা ছাড়া ছাড়া অর্থহীন কতকগুলা অক্ষর-সমষ্টি হয় মাত্র, দেখিয়া মনে হয়, তাহার অদৃষ্ট হাত পাকাইবার জন্য চিরজীবন কেবল মক্‌শো করিয়াই আসিতেছে, পদরচনা করিতে আর শিখিল না। এই সকল রচনার খাতা হাতে করিয়া বোধ করি পরলোকে মহাগুরুর নিকটে গিয়া একদিন দাঁড়াইতে হইবে; তিনি যাহাকে যে শ্রেণীর উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন, উত্তীর্ণ করিয়া দিবেন।

    বিষয়টা অত্যন্ত শোকাবহ হইয়া দাঁড়াইল। আমাদের আলংকারিকেরা বিয়োগান্ত নাটকের বিরোধী। তবে কেন আমাদের বৈয়াকরণিকেরা এমনতরো বিয়োগান্ত করুণ রসোদ্দীপক বর্ণমালার সৃষ্টি করিলেন? কিন্তু পাঠকেরা ভুলিয়া গেছেন, আমাদের সাহিত্যে পাঁচ অঙ্কেই নাটক শেষ হয় না, আরো দুটো অঙ্ক বাকি থাকে। পাঁচটা বর্গেই আমাদের বর্ণমালা শেষ হয় না, আরো দুটো বর্গ থাকে। মরণেই আমাদের জীবন-পুস্তকের সমাপ্তি নহে; তাহা একটা পদের পর একটা দাঁড়ি মাত্র। অমন কত সহস্র পদ আছে, কত সহস্র দাঁড়ি আছে কে জানে? অবশিষ্ট দুটি বর্গের কথা পরে বলিব; আপাতত পাঠকদিগকে আশ্বাস দিবার জন্য এইটুকু বলিয়া রাখি “হ’য়ে আমাদের বর্ণমালা শেষ। হ অর্থে হওয়া, মরা নহে। অতএব বিলাপ করিবার কিছুই নাই। আমাদের ব্যঞ্জনবর্ণ আমাদের নাটকের ন্যায় (কাঁ)দায় আরম্ভ (হা)সায় শেষ।

    আমাদের বর্ণমালা “অহং’ শব্দের একটি ব্যাখা। অ-য়ে ইহার আরম্ভ, হ-য়ে ইহার শেষ!

    ভারতী, আশ্বিন-কার্তিক, ১২৮৮

    এরকম প্যারোডির কি প্যারডি (বানামের তফাৎ স্বেচ্ছাকৃত। heterogarphy যুগ যুগ জিও।) হয়?



    কথা দিচ্ছি, যদি এখানে এইভাবে খেপ মারতে দেন, লাইসেন্স দেন, তা'লে সমস্ত খেপ সম্পাদনা করে পোবোন্দো বানিয়ে দেব।

    [কিন্তু, মনে হচ্ছে সময় নষ্ট। ক্রিববাদীরা অলংকারশাস্ত্রের অভিধা, লক্ষণা, ব্যঞ্জনা বোঝেন না, কেবল obscure মাল নিয়ে মাথা ঘামান। মানেতত্ত্বের অ আ ক খ শেখানোর সময় কোথায়? কিন্তু, এটা স্পষ্ট যে বাংলাবাজারে ভাষাতত্ত্বের লোকজন জনপরিসর থেকে বিচ্ছিন্ন, নইলে এমন অ-তত্ত্ব নিয়ে এতো মাথা ঘামানো হতো না!)
  • i | 452312.149.562312.78 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৮:৩১84430
  • তর্কের জন্য হনুজী, অন্যান্যরা রয়েছেন। আমি আগেই কয়েছি, না পড়াশোনা করে কিছু বলতে পারছি না।
    এই পোস্টটা করছি এস এস, আপনার বলার ভঙ্গিতে মুগ্ধতা জানাতে। আগের পোস্টের পূর্বপক্ষ উত্তরপক্ষ করে লেখা শুরু করা, এই পোস্টে কী অনায়াস বিচরণ চন্দ্রবিন্দু থেকে স্করপিয়ন, রবীন্দ্রনাথ থেকে সুকুমার।
    আপনি লিখতে থাকুন।পড়ব।
  • র২হ | 232312.167.123412.35 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৮:৫২84431
  • ছোটাইদি সাজেশন চেয়েছেন, সে আমি পারবো না, কিন্তু বইয়ের লিস্টি একটা দিতে পারি, যদি কাজে লাগে-

    http://www.grontho.com/tag/কলিম-খান/
  • একক | 3445.224.9002312.49 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৯:১৯84432
  • এসেসের লেখা ভাল্লাগছে । ঠিক এই সুকুমার এর লাইনগুলোই মনে পড়ে ব্যুৎপত্তি নিয়ে মাথা খারাপ করা জনতাকে দেখলে ।
    ভয় হয় যে এরা একদিন এক ঈশ্বরতত্ব হাজির করবেন :(:(
  • h | 230123.142.01900.180 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ০৯:৫৭84433
  • আমরা ইউজার মাত্র, লাইসেন্স দেওয়ার কে? আপনার (এবঙ্গ সবারি) যা খুশি যতক্ষন খুশি লিখুন , সম্পাদক এদিকে বড় একটা আসেন না, সম্পাদিকাকে লাস্ট সুমাত্রায় দেখা গ্যাছে
  • modi | 676712.70.780123.2 (*) | ২২ জুন ২০১৮ ১২:৪৫84434
  • আমাদের বর্ণমালা “অহং’ শব্দের একটি ব্যাখা। অ-য়ে ইহার আরম্ভ, হ-য়ে ইহার শেষ!

    ঃ-))))))
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন