এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • নারীদিবসঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০১৫ | ৭৫৮৭ বার পঠিত
  • হ্যাঁ, নারীকে নিয়েই কথা আসে সারাবছর, অজস্র কথা। জীবন এফোঁড়-ওফোঁড় করে চলে যায় নানারঙের কথা। সেইসব কথার পিঠে চড়ে আসে ভাবনারা। প্রশ্নেরা। ঘুরে বেড়ায় আলগোছে। নারীদিবসের আশেপাশে এইসব ভাবনাগুলো জমাট বাঁধে, মাথায় চড়ে বসে।  আমাদের তাগাদা দেয় পুরোনো পড়া ঝালিয়ে নিতে। আর সেই পুরোনো পড়া পুরোনো ভাবনা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতেই কোথাও কোথাও নতুন কথাও জুড়ে যায় জায়গামত। এবারের পুরোনো পড়া ঝালানোর সময়েই পড়লাম স্বাতী ভট্টাচার্যের ‘ঘরোয়া’ (আনন্দবাজার পত্রিকা, ৮ই মার্চ)। খোদ নারীদিবসে দাঁড়িয়ে একজন নারীই যখন মেয়েদের ‘গুছিয়ে সংসার করার মোহে’র দিকে আঙুল তোলেন, তখন একটু ধাক্কা খেতে হয় বইকি, মানে এইটা ঠিক পুরোনো পড়ার সিলেবাসের মধ্যে ছিল না তো বরং (এই সাংবাদিকের লেখা) যেসব পুরোনো পড়া মনে পড়ে যায়, সেখানে উনিই সওয়াল করে এসেছেন মেয়েদের ঘরোয়া কাজের মূল্যায়নের পক্ষে; সারামাসের রান্নার লোকের মাইনের সঙ্গে বা বারো ঘন্টার আয়ার মাইনের সঙ্গে ড্রাইভার বা মিস্ত্রীর মাইনের একেবারে সোজাসুজি তুলনা করেছেন। তাহলে কি দুটোই সত্যি ! এইখান থেকে শুরু হয়ে যায় আমাদের লেখাপড়াশোনা যার সরল অর্থ হল আজকের পড়ার মধ্যে নতুন ও পুরোনো সবরকমের কথাই থাকবে, নারী ও আনাড়ি সকলের কথাই নামে ও বেনামে থাকবে।


     


    মেয়েলী ও ঘরোয়া


    তবে মেয়েদের যাবতীয় ‘মেয়েলী’ কাজকারবারের মূল্যায়নের কথা উঠলে প্রথমে একতরফা চাট্টি কথা শুনতেই হবে। কারণ সোজা কথাটা হল, যুগ যুগ ধরে যেসব কাজ মেয়েরাই পেরে এসেছে আর করে এসেছে সংসারে সেগুলোকে যথেষ্ট মূল্যবান বলে কেউ ভাবেন নি আর তার কোনও স্বীকৃতিও সেভাবে দেননি। বাড়ির পুরুষটি বাইরে কাজ করেন, তাঁর কাজটা গুরুত্বপূর্ণ, তাঁর বিশ্রাম এমনকি তাঁর বিনোদনটিও গুরুত্বপুর্ণ। কিন্তু বাড়ির মহিলাটিকে ‘হাউসওয়াইফ’ থেকে ‘হোমমেকার’ যে নামই দিন না কেন তাঁর কাজটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন, আর কতটুকু স্বীকৃতি দিয়েছেন, সে প্রশ্নটা এবার নিজেকেই করুন। সেটা কাপড়ে সূক্ষ্ম ফোঁড় তুলে নকশা তোলাই হোক কি রোজকার থোড়-বড়ি-খাড়ার মধ্যে থেকেই বিচিত্র পদের রান্না হোক, বা বড়ি-আচার-উলবোনা-আলপনা থেকে ঘরদোর পরিপাটি সাজিয়ে রাখা্র নিপুণ ঘরকন্না হোক। ভেবে দেখেননি এই কাজগুলোও নেহাৎই প্রয়োজনভিত্তিক নয়, এদেরও কিছু নান্দনিক মূল্য আছে, এদের পেছনেও কিছু চিন্তা-ভাবনা-সৃজনীশক্তি খরচা হয়, যা সকলের ক্ষেত্রে ঠিক একইরকম নয়। অর্থাৎ ওই যে সর্ষেবাটা-মোচাকাটা থেকে শুরু করে সুগোল ধপধপে লুচি সমেত যা যা আপনি ‘আহা মায়ের হাতে কি চমৎকার হত !’ ভেবে এখন আপ্লুত হয়ে পড়েন, আর ভাবেন ঠিক মায়ের মত কেউ পারে না, ভেবে দেখবেন যখন নিয়মিত সেগুলো পেয়েছেন, তখন সেগু্লো কতটা দামী ভেবেছিলেন, আর তার জন্য  মাকেই বা তখন কতটুকু ধন্যবাদ দিয়েছিলেন ? আর আপনার ঘরে যে মহিলা ‘মায়ের মত’ পারেন না, তিনি যা যা পারেন সেটাই বা এখন কতটুকু মনো্যোগ দিয়ে লক্ষ্য করেন ? তিনি সারাদিন বাইরে না গিয়ে ঠিক কি কি করেন, বিশ্রাম পেলেন কিনা বা ইচ্ছে থাকলেও কি কি করে উঠতে পারলেন না, সে খবরই বা কতটা রেখেছেন ? খেয়াল করলে দেখবেন দুদিনের জায়গায় তিনদিন একঘেয়ে রান্না খেতে হলে বা ঘরদোর অপরিস্কার বা অগোছালো থাকলে আপনারও ভালো লাগছে না, লাগার কথাও নয়। তখন আপনিই বলে উঠছেন (উচ্চগ্রামে কিম্বা মনে মনে) ‘সারাদিন কি যে করে’। কিন্তু যখন সব কিছু ঠিক ঠিক চলে তখনও মনে করেন ‘সারাদিন তো ঘরেই থাকে...’ অর্থাৎ ঘরের কাজটা ঠিক যেন কোনও কাজই নয়। আপত্তিটা এখানেই। 


    না, এই আলোচনায় কর্মরতা মেয়েদের কথা এখনই আনছি না। আর মনে রাখতে বলছি যে এই লেখা একটা বিস্তৃত মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে লেখা যেখানে মেয়েরা মূলতঃ ঘরের কাজ করেন এবং সব ঘরের সব কাজই করেন। তাই যে সব উচ্চশিক্ষিত নেটিজেন এই লেখা পড়ছেন আশা করব তাঁরা নিজের পরিবারের সঙ্গে মিল না পেলেই এই সব কিছুকে যেন কষ্টকল্পনা ভেবে বসবেন না। 


    যে কথা বলছিলাম, এই আলোচনা মেয়েদের ওপর সংসারের চাপ নিয়ে নয়, চাপ পুরুষের ওপরও কিছু কম নয়। শ্রম বন্টনের নিয়ম মেয়েরা (বা যিনি ঘরে থাকেন) তিনি ঘরের কাজ করবেন, এর মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। কিন্তু সেই কাজকে এবং সেই সম্পর্কিত দক্ষতাকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়াটা যে এক রকমের অজ্ঞতা, সেটাই এখানে বলবার কথা। মেয়েরা যে স্রেফ ‘হৃদয়তাপের ভাপে ভরা ফানুস’ তাদের হি-হি হাসি কিম্বা চোখের জল, সকলই নেহাৎ অকারণ, তাতে বিশেষ মনোযোগ না দিলেও চলে, এই ধারণা বংশানুক্রমে চারিয়ে গেছে সমাজে। মেয়েদের শাড়ি-গয়নার আলোচনাই হোক বা রান্নাবান্না বা শাশুড়ি-ননদের নিন্দে, সবই শুধুমাত্র ‘মেয়েলী’ বলেই যেন তা ছেলেদের গাড়ির ‘মডেল’(উভয় অর্থেই) বা বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে আলোচনা কি অফিসের বসের / সহকর্মীদের নিন্দেমন্দ থেকে ইতরগোত্রীয়। অথচ যে যে জগতে থাকে সে তো সেই জগতের কথাই আলোচনা করবে, কোন জগতটাই তো মিথ্যে নয়, অর্থহীনও নয়, এর মধ্যে উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ আসছে কোথা থেকে ? সেসব কেউ ভেবে দেখে না। এমনকি মেয়েরাও না।


     


    বাইরে আসা


    হ্যাঁ, ভেবেচিন্তেই বললাম। মেয়েলী গুণপনাকে এই যে পাইকারী হারে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, এই অবহেলা পেতে পেতেই একটা সময়ে মেয়েরাও নিজেদের ‘মেয়েলী গুণ’গুলোকে (এবং মেয়েলী কাজগুলোকে) মূল্যহীন ভাবতে শুরু করেছে। ‘নিজের পায়ে দাঁড়ানো’র কথা ভাবতে শুরু করেছে যার একমাত্র অর্থ হল বাইরে বেরিয়ে ‘পুরুষের মত’ উপার্জন করা। আজ যে মেয়েরা চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ-পঞ্চাশের কোটায়, তারা যে একদিন সংসারের প্রয়োজনে নয়, নিজের প্রয়োজনেই দলে দলে বেরিয়ে এসেছিল, তার একটা কারণ কিন্তু এই যে তাদের শিশুকালে অনেকেরই মায়েরা ভেবেছেন তাঁর মেয়ে যেন তাঁর জীবন না পায়। অর্থাৎ শুধুমাত্র সংসারের ‘থ্যাঙ্কলেস জব’-এই মেয়েরা আটকে থাকুক সেটা মেয়েরাই (মানে মায়েরাই) চাননি, চেয়েছেন যে কাজ অর্থমূল্যে বিচার হয় সেইরকম কিছু করতে। যার ফল হল আজকের কর্মরতা মহিলা প্রজন্ম, যাঁরা সংসার ও চাকরী মোটামুটি নিপুণভাবেই সামলে নেন কিন্তু হয়তো ওই তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলোর জন্য খুববেশী সময় দিতে পারেন না। একটা সময় অবধি যেটা অলিখিত নিয়ম ছিল, অর্থাৎ মেয়েরা শুধু ঘরের কাজ করবে, সন্তানের দেখাশোনা করবে, সেটা নিঃসন্দেহে খুব খারাপ ছিল। সেই নিয়ম চুলোয় গেছে, মেয়েরা স্বাধীনভাবে কাজকর্ম করছে, নিজের বিদ্যেবুদ্ধির সদব্যবহার করছে, এর কোনও বিকল্প হয় না। কিন্তু এইখানে এসে একটা প্রশ্ন খুব তীব্র হয়ে ওঠে, স্বাধীন হতে গেলে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে গেলে বাইরে এসেই কাজ করতে হবে কেন ? বাইরে কাজ করেন না যে মহিলা, তিনি কি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নেই ? যাঁর নিরন্তর সেবা বা পরিষেবাটুকু বাদ দিয়ে তাঁর সংসার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না, তিনি বাইরে না বেরোনো অবধি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন এমনটা ভাবতে পারেন না কেন ! তার মানে শুধু বাইরে বেরিয়ে উপার্জন না করা অবধি একজন নারী যথার্থ স্বাধীন হচ্ছেন না, তাঁর গুণাবলীর এমনকি মতামতেরও কোনও মূল্য থাকছে না, যদিচ তিনি গৃহকর্ম দ্বারা সংসারকে একরকম ধারণ করেই আছেন। এতদ্বারা গৃহকর্মের মূল্যের যে অবনমন হচ্ছে ব্যাপারটা কি সত্যিই ততটাই অর্থহীন ? দারুণ রান্না বা সেলাই করতে পারা, ঘর সাজাতে পারা, গান গাইতে পারা, এইসবের কি সত্যিই কোনও মূল্য নেই ! 


    হ্যাঁ, ততটাই অর্থহীন না হলেও ততটাই মূল্যহীন, যতক্ষণ না সেটা অর্থমূল্যে বিচার হচ্ছে। না হলে এত বছরে এত কিছু বদলে গেল কিন্তু কেউ শুধু সংসারের কাজ করাকে একটা পেশা হিসেবে দেখতে শিখল না কেন ? আর যিনি নিজে সংসারের উনকোটি কাজ করে চলেছেন, তিনিই বা কেন ‘আমি কিছু করি না’ জাতীয় হীনমন্যতায় ভোগেন ? কেনই কোন মহিলার স্বামী ঘরের কাজ করলে তিনি সেটা স্বীকার করতে লজ্জা পান ? আমি বেশ কয়েকজন মধ্যবিত্ত বাড়ির মহিলার কথা জানি, যাঁরা শুধু ‘নিজের হাতে রোজগার’ করার তাগিদে কেউ দিনের শেষে ব্লাউজে বোতাম পরাচ্ছেন, কেউ কোন কোম্পানীর প্রসাধন সামগ্রীর এজেন্সী নিয়েছেন, কেউ কোন ব্যাঙ্কের জনসংযোগ বাড়াবার জন্য ফোন করছেন। এই কোন কাজই তাঁদের বিশেষ পারদর্শীতার চর্চার জন্য নয়, ভালবেসে করা কাজ নয়, এই কাজ করে যা হাতে আসে তা সংসার খরচে বিশেষ সুবিধে ঘটাবার মত নয়, কিন্তু সেটা তার ‘নিজের রোজগার’। সেইটুকু রোজগারের সময় বার করার জন্য তাঁরা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন, স্বামী-ছেলেমেয়েদের কাছে হয়তো নানারকম কথাও শোনেন, কিন্তু তাঁরা জানেন এইটা ছেড়ে দিলে তাঁর নিজের উপার্জন কিছু থাকবে না। স্বামীরা হরদম বলবেন ‘তুমি কাজটা ছেড়ে দাও, ওইটুকু টাকা আমিই তোমায় দেব’, কিন্তু আসলে তা দেবেন না। কারণ গৃহশ্রম অ-মূল্য নয়, মূল্যহীন। সেইটুকু উপার্জন না করতে হলে সেই মহিলা হয়তো সেই সময়ে নিজের শখেই কিছু সেলাই করতেন, নতুন কিছু রান্না করতেন, ঘর সাজাতেন, বা গান নিয়ে বসতেন, কিন্তু সেই ‘মেয়েলী’ কাজের কোনও অর্থমূল্য নেই, তা তাঁকে স্বাভাবিক মুক্তি দিতে পারেনি, তাই তাকে বিসর্জন দিতে হল স্রেফ উপার্জনের চাপে। অথচ সেই মেয়েদের হাতের তৈরী বড়ি-আচার-নাড়ু-পিঠে বা হাতে সেলাই করা আসন-কাঁথা-সুজনিই আপনি কিনে আনছেন মেলা থেকে, কিঞ্চিৎ গর্বিত হয়েই দেখাচ্ছেন সবাইকে, তখন তা অবশ্যই ‘মূল্যবান’।


     


    আসল কথাটিঃ বেতনক্রম


    যাঁরা ভাবছেন এইবার ঝোলা থেকে বেড়াল বেরোল বলে, তাঁদের সবিনয়ে জানাই, এক্কেবারে ঠিক কথা ভেবেছেন, এই বেড়ালটিকে যথাস্থানে বের করার জন্যই অর্থাৎ গৃহশ্রমকে সবৈতনিক করে তোলার দাবীকে যুক্তিযুক্ত ও যাথাযথভাবে পেশ করার জন্যই এত গৌ্রচন্দ্রিকা। একান্ত বাসনাটি হল যে এই ব্যাপারটি নিয়ে একটু ‘সলিড’ চিন্তাভাবনা হোক। কারণ এই বিষয়টা নিয়ে মূলতঃ কথা ছোঁড়াছুঁড়িই শুনতে পাই, কিন্তু গঠনমূলক বাস্তবসম্মত কিছু প্রস্তাব অন্ততঃ আমার চোখে পড়েনি। বরং এই প্রশ্ন উঠলেই সবাই গেল গেল রব তোলেন যেন এই বিষয়টির পণ্যায়ন হলেই সামাজিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়বে, গৃহকর্ম যে ভালোবাসার বিনিময়মূল্যে দেওয়া-নেওয়া হয় তা নষ্ট হবে। কিন্তু ভেবে দেখুন গায়ক, লেখক, বিজ্ঞানী, শিল্পী সবাই যদি পারিশ্রমিকের বিনিময়েই ভালোবাসার কাজ করে থাকেন তবে ঘরের কাজের ক্ষেত্রে আলাদা হবে কেন ? উপরন্তু গৃহকর্ম সবৈতনিক হলে মেয়েদের এই ‘নিজের পায়ে দাঁড়ানো’র জন্য বাইরে বেরোনোর দরকার কমবে আর সংসারের কাজে সময় দেওয়া বা ভালবাসাও বাড়বে বই কমবে না। তবে হ্যাঁ, কারণে অকারণে ‘রোজগার তো করতে হয় না, তাহলে বুঝতে!’ বলার কু-অভ্যেসটা আপনাকে ছাড়তে হবে। সত্যি বলতে কি ৫২ গুন ৭ দিন সংসারের ‘ভালবাসার দাবী’ যাঁরা মেটাচ্ছেন দিনের শেষে তাঁদের মুখে ‘ভূতের বেগার খাটার’ হতাশা তো কখনো না কখনো বেরিয়েই আসে, তাই মনকে চোখ না ঠেরে তাঁর প্রাপ্যটা স্বীকার করেই নিন না ! 


    তবে বেতনের পরিস্কার একটা কাঠামো থাকা দরকার। এটা স্পষ্ট হওয়া দরকার যে এটা তার বেতন, উপহার বা হাতখরচা নয় আর স্বামী এখানে দাতা নয়। যে ভাবে স্বামীর অবর্তমানে তার পেনশন স্ত্রীর কাছে আসে, ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে খোরপোষের টাকা আসে, তেমনিই যেকোন বিবাহিত পুরুষের বেতনের একটা অংশ তার স্ত্রীর কাছে আসবে যেটা ঘরের কাজ করার জন্য তাঁর বেতন, তাঁর নিজস্ব উপার্জন। তিনি যদি ঘরের কাজের জন্য পরিচারিকা রাখতে চান তো সেই বেতন থেকেই পরিচারিকার মাইনে হবে। (ফলে পুরুষটিও কিছুটা শান্তি পাবেন এই ভেবে যে তাঁর অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে)। কিন্তু এছাড়া সেই টাকা মহিলাটি কিভাবে খরচ করবেন, কি কিনবেন, কাকে দেবেন সেটা তাঁর ব্যাপার। মহিলাটি চাকরী করলে এই বেতন বন্ধ হয়ে যাবে, সে ক্ষেত্রে ঘরের কাজ তাঁরা দুজনে ভাগ করে করবেন না ‘আউটসোর্স’ করবেন, সেটা নিজেরা ঠিক করবেন। তবে হিসেব মত ‘আউটসোর্সিং’-এর খরচ দুজানেরই দেওয়া উচিৎ। এই পদ্ধতি মেনে চললে যে মহিলা নিজের হাতে সব করেন এবং যিনি সব কাজের জন্যই কাজের লোকের ওপর নির্ভর করেন তাঁদের মধ্যে নিজস্ব উপার্জনের ভিত্তিতে একটা তফাৎ থাকবে, সেটাও যুক্তিযুক্ত। আর যদি কোন সংসারে মহিলাটি বাইরে কাজ করেন, এবং স্বামীটি ঘরে থাকেন, তবে একইভাবে তাঁর বেতনের একটা অংশ তাঁর স্বামীর কাছে বেতন হিসেবে আসবে, সেটাও কোনোভাবেই ‘বৌ-এর পয়সায় খাওয়া’ হিসেবে বিবেচ্য হবে না। 


    এই লেখায় ভুল বোঝার বহু সুযোগ আছে, সে সব মাথায় রেখেই লিখছি। এই লেখা থেকে কেউ যদি মেয়েদের চাকরী করার বিরোধি বা মেয়েদের গৃহকর্ম অভিমুখী হবার দরকারী জাতীয় কোন বার্তা পান তো সেটা নেহাৎই লেখকের বোঝানোর ত্রুটী। এমনকি এই লেখা সরাসরি নারী-পুরুষ মেরুকরণের কোনো ধারণাকেও প্রশ্রয় দিচ্ছে না। সাধারণভাবে মহিলারাই গৃহকর্ম করেন বলে এখানে বার বার মহিলাদের কথাই আসছে কিন্তু এর মূল উপজীব্য হল গৃহকর্ম। গৃহশ্রমকে একেবারেই গুরুত্বহীন ভাবার যে সামাজিক নির্মাণ সেটা এবং তার প্রভাব (মূলতঃ মেয়েদের ওপর) নিয়ে এই লেখায় একটু চিন্তাভাবনা করার চেষ্টা হয়েছে। যে মেয়েরা বাইরে কাজ করতে চান, নিজেকে প্রমাণ করতে চান করুন, কিন্তু যারা জমিয়ে সংসার করতে ভালবাসেন তাঁরাও যেন নিজের পায়ে না দাঁড়াবার হীনমন্যতা থেকে বেরোতে পারেন। আর সে জন্য তাঁদের নিজস্ব মেয়েলী গুণপনাগুলোকে বিসর্জন দিতে না হয়। 


     


    বিপদসঙ্কেত


    এই পদ্ধতি একেবারে ত্রুটিহীন এমন দাবী করা যায় না এবং সমস্ত পদ্ধতির মতই এখানেও কিছু ধোঁয়াশাপূর্ণ জায়াগা থাকবে, সেগুলোও একটু ভেবে রাখা ভালো। যেমন কোন কোন কাজ ঠিক গৃহশ্রমের মধ্যে পড়বে, সেটা ঠিক করাই সবচেয়ে কঠিন। যাঁরা ব্যাবসা করেন তাঁদের স্ত্রীরা বেতন কিভাবে পাবেন বা গৃহবধুটি যদি কাজের ক্ষেত্রে বাড়ির অন্যন্য সদস্যের (শাশুড়ি, ননদ)সাহায্য নেন তবে বেতন ভাগাভাগি কি ভাবে হবে সেটা নিয়েও পরিস্কার করে কিছু ঠিক করা মুস্কিল । তাছাড়া গৃহ-পরিষেবা ক্রয়যোগ্য হলে পুরুষটির দাবী হয়তো বেড়ে চলবে, উল্টোদিকে মেয়েদের ‘পারব না’ বলার সুযোগ কমে যাবে। এতে মেয়েদের ওপর চাপ কার্যতঃ বেড়ে যেতেও পারে। তবে আমার ধারণা একটা মানুষ কতটা ‘ডিম্যান্ডিং’ হবেন সেটা কিছুটা তাঁর চরিত্রগত। যিনি এমনিতে নিজের টুকিটাকি কাজ করে নেন, শুধুমাত্র স্ত্রী মাইনে পাচ্ছে বলেই নিজে জলটুকুও ঢেলে খাবেন না, এমনটা হবার কথা নয়। আর তেমন হলে সেই প্রতিবাদ মহিলাটিই করবেন, তিনি তো স্বাবলম্বী। 


    তবে ওই যে কথা বলা আছে ওই ‘ঘরোয়া’ প্রবন্ধে, যে মেয়েদের চুটিয়ে সংসার করার এক তীব্র আকর্ষণ, সেটা কিন্তু সমস্যার আর একটা দিক। ওই ‘ঘরোয়া’ বিষয়ে কথা বলেছিলাম অনেকের সঙ্গে, দেখা গেল পুরুষেরা অনেকেই রে-রে করে উঠলেও লেখাটার সঙ্গে মেয়েরা (ব্যক্তিগত অভজ্ঞতার মাপে) বিভিন্ন মাত্রায় একমত, মানে এই সংসারের ঝুল ঝাড়া-কাপড় কাচা-পর্দার সঙ্গে চাদরের রঙ মেলানো (কাজগুলো ঠিক এইই নয় সব সময়, বদলে যায় এক নারী থেকে অন্য নারীতে) এতে মনে প্রসারতা বাড়ুক না বাড়ুক মেয়েদের কাছে যে এগুলো খুব জরুরী এবং সেই জরুরী ভাবাটা মেয়েদের এগিয়ে যেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, সেটা মেয়েরা কেউ  সরাসরি অস্বীকার করতে পারছেন না। এই কাজগুলো চলনসই ঘরনের অর্থকরী হয়ে উঠলে মেয়েরা অনেকেই হয়তো বাইরের জগতের ‘চ্যালেঞ্জিং’ কাজে সেভাবে দলে দলে এগিয়ে নাও যেতে পারেন। আবার যেহেতু স্বামীর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন হচ্ছে, তাই স্ত্রীকে চাকরী করতে না দেওয়াটা স্বামীর অধিকারের মধ্যে পড়ে যেতে পারে (মানে স্বামী সেটা ভেবে ফেলতে পারেন !)। সেটা কি তথাকথিত ‘নারীমুক্তি’র বিরোধী হয়ে উঠবে বা বাইরের জগতে যে নারী-পুরুষ সাম্য আস্তে আস্তে গড়ে উঠছে, তাকে টাল খাইয়ে দেবে ? বিশেষ করে ততটা অর্থকরী নয় এমন যে কাজগুলো মূলতঃ সময় কাটাবার জন্যই মেয়েরা করে থাকেন, যেমন বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুকল্যাণেরই তো কাজ বেশীর ভাগ, সেসবও যদি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়, সেও তো খুব ভালো হবে না ! অনেক সময় মেয়েরা প্রথম দিকে কাজের জগত থেকে সরে দাঁড়ালেও, সংসারের চাপ কিছুটা কমলে আবার কাজের জগতে ফিরে আসতে চান, বেতনক্রম চালু হয়ে গেলে সেই তাগিদটাও কমে যাবে না তো ! 


    তবে এইসব প্রান্তিক সমস্যার কথা ভেবে তো কেন্দ্রীয় সমস্যাটাকে দুরে সরিয়ে রাখা চলে না। আসলে একটা পদ্ধতি বাস্তবায়িত হতে শুরু না করলে তার ত্রুটিগুলো বোঝা যায় না, সমস্যাগুলোরও মোকাবিলা করা যায় না। তাই সাহস করে মেয়েদের বেতন দেওয়াটা চালু করে না ফেললে কিচ্ছু বোঝা যাবে না। তাই আসুন আমরা এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা শুরু করি, কারণ আজকের আলোচনাই কালকের তুলোধোনা (বিরোধি-পক্ষকে) হয়ে উঠবার ক্ষমতা রাখে !


    পুনশ্চঃ আগেই বলেছি এই লেখা আসলে অনেকের লেখা। অনেকের মতামত, বক্তব্য শুধুমাত্র গুছিয়ে তোলা, তাই একে বলা যায় আসলে লেখা-পড়া-শোনা। এই বিষয়টা নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, জোরদা্র তক্কাতক্কি যাই হোক সব সেই অ্যাকাউন্টেই জমা ড়বে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১০ এপ্রিল ২০১৫ | ৭৫৮৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • mandira | 88.144.161.64 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৪:০৩86481
  • আসল কথা হল যেদিন ঘরকন্যা রা সারা মাসের খরচ মেটার পর, যার ই রোজগার হোক না কেন, বাকী টাকা থেকে অর্ধেক কোনো বাধা মনের দিক থেকে হলেও , নিতে পারবেন সেদিন হয়তো কিছুটা সাম্য হবে । অবশ্যই আমার মতামত মাত্র ।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৪:৫১86463
  • বোঝাতে পারিনি মনে হয়।

    যাঁরা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের অনেকের ক্ষেত্রেই এই সমস্ত কাজের জন্য গৃহসহায়িকা থাকেন। তো, প্রশ্ন ছিল, সেইসব গৃহসহায়িকার বেতন কি বাড়িতে থেকে এইসব একই কাজ করা গৃহবধূর বেতনের চেয়ে কম হবে? কম হলে সেটা কি ভালবাসার ফ্যাক্টরের জন্য কম হবে ? আমার বরং উল্টো বক্তব্য ছিল, যে গৃহবধূ যেটা করছেন, তার কিছুটা নিজের জন্যেও।

    আর একটা কথা, বিয়ের সময় যাঁরা ঘরোয়া শিক্ষিত পাত্রী চান, তাঁরা শুধু ঘরের দেখভালের জন্য চান বললে মেয়েদেরও বোধহয় খারাপই লাগবে। কাজের লোক দিয়ে চালানো কেন নয়, কেন বিয়ে, তাতে ঘরের দেখভাল বাদে অন্য ফ্যাক্টরগুলোর কথা না বললে।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৫:২৮86464
  • প্রথমে মনে করুন কোনো গৃহসহায়িকা নেই, তাহলে কি গৃহবধুর মাইনে পাওয়া টা সঙ্গত মনে হচ্ছে ? আগে সেটার উত্তরটা ভাবুন। যদি সেটাও 'না' হয় তাহলে আর গৃহসহায়িকার কথা টেনে এনে লাভ নেই। (গৃহবধুর 'নিজের জন্য কাজ' ফ্যাক্টরটা তো এখানেও একই থাকছে)। সে ক্ষেত্রে আমি জানতে চাইব যে তাহলে কি আপনি মনে করেন যে গৃহবধুদের কাজের মূল্যায়ন নিয়ে আলাদা করে কিছু ভাবার নেই ? যদি থাকে তা হলে আপনার ভাবনাটা জানতে চাইব।
    যদি উত্তরটা 'হ্যাঁ' হয় তাহলে এবার বধুর সব কাজের জন্য ২৪ গুণ ৭ সহায়িকা রাখতে হলে (যদিও বাস্তবে সেটা সম্ভব নয়) সেই খরচটা হিসেব করে দেখুন তা স্বামীর উপার্জনের (ধরুন উপার্জন ৩৫,০০০ টাকা, একজন হাইস্কুল শিক্ষকের মাইনে) কত পারসেন্ট হয়। সেই টাকাটা বঊটির হাতে মাইনে হিসেবে এলে আপত্তিটা ঠিক কোথায়, জানতে চাইছি।

    'শুধু' দেখভালের কথা হচ্ছে না, কিন্তু অনেকেই চান যে বৌ উপার্জন না করে সংসার করুক। সেটা ভালো না মন্দ সেটা এখানে আলোচনার নয়। এ কথাটা বলতে হল আপনার কথার উত্তরে, ঐ যে বার বার গৃহসহায়িকার বেতনের সঙ্গে তুলনা করর জন্য। বৌয়ের সার্ভিস যে পরিচারিকর সার্ভিসের চেয়ে আলাদা, সেটা বোঝাতে।

    আসলে দেখুন গৃহবধুদের মাইনে অনেকটা বাসে লেডিস সিটের মত। সব মেয়েদের দরকার নেই কিন্তু অনেকের খুব দরকার, তাদের জন্য ব্যবস্থা করতে গেলে কিছু মেয়ে যাদের ততটা দরকার নেই, তারাও এর আওতায় চলে আসবে।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৫:৩১86465
  • আমি তুলনাটা এভাবে করিইনি।
    গৃহবধূদের মাইনে দেওয়া হবে ধরে নিয়েই তো প্রশ্নগুলো করছি।
    যদি দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে কোন বাড়িতে ( যেখানে হয়তো দুজনেই বাইরে কাজ করে) পূর্ণ সময়ের গৃহসহায়িকা আর কোন বাড়িতে একই কাজ করা ঘরকন্যার বেতন কতটা এক বা আলাদা হবে, হলে কী গ্রাউণ্ডে, সেটা জানতে চাইছিলাম।
  • ti | 24.139.222.45 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৬:৩৩86466
  • ঠিক, আমারই একটু বুঝতে ভুল হয়েছিল। যাই হোক মোদ্দা কথাটা খুব একটা আলাদা নয়, এই যা !
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৮:১৬86467
  • এটা সদ্য পেলাম। এখানে থাক
    http://progress2015.org/#chapter2
  • ja bujlam | 127.218.12.206 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৯:২৮86468
  • যে মেয়েটি একটা ৪০হাজারি বা তার চেয়ে বেশি ইনকামি পাত্র পটাতে পেরেছে, তার হক হল একতা ভালোমতো বেতন পাওয়া, সে বাড়ীতে বেশীরভাগ কাজ কাজের লোক করে দিলেও। কিন্তু যে মেয়েটির কপালে ১০হাজারি বা তার কম জুটেছে আর বাড়ীতে ডিপেন্দেতের সম্খ্যা বেশী থাকায় ঐ টাকায় কোনোক্রমে চলে, তার বেতন নিয়ে ভাবার দরকার নেই, সে বাড়ীর বেশীর ভাগ কাজ তকে করতে হলেও।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১০:৩১86469
  • 'দুজন মহিলার স্বামী আলাদা মাইনে পাচ্ছেন তার জন্য তাদের জীবনযাত্রার মান আলাদা হচ্ছে এটা যদি আমাদের মেনে নিতে হয় তো তাদের স্ত্রীরাও আলাদ মাইনে পাবে এটা মেনে নেওয়া এমন বড় কথা হল কি ?'

    ---

    একই কাজ করে বা বেশি কাজ করে কেউ মাইনে কম পেলে অন্য চাকরি খোঁজারও চেষ্টা করে থাকেন। তো, এরকম ভাবে সবই ঐ চাকরি দিয়ে তুলনা টানলে তাহলে একথাও চলে আসবে, নিম্ন অর্থনৈতিক স্তরে ঘরে প্রচুর কাজ করে খুব কম বেতন পেলে , সচ্ছল পরিবারে অনেক কম কাজ করে অনেক বেশি বেতনের চাকরির অপশন থাকছে না কেন ?
    এই মডেলে কোথাও একটা গণ্ডগোল হচ্ছে।
  • একক | 24.96.81.22 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:০৭86470
  • সেই গোলগোল গোলগোল করে একই জায়গায় এসে দাঁড়ালো :( এটা একটা ক্লোস্ড মডেল যেখানে এফিসিয়েন্সি ট্রান্সফারেবল নয় সেখানে অন্য কে কী বেতন পায় সেটা তুলনারও কোনো অর্থ নেই ।এটা আদৌ কোনো চাকরি নয় । জাস্ট একটা হাতখরচ । বেকার বেতন-ফেতন টেনে বিস্তার না করলে সোজা কথা সোজা ভাবে বোঝা যেত ।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:১৪86471
  • ঘরকন্যাদের নিজেদের খরচের জন্য রোজগেরে স্বামীর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হলে এবং সেটাই নিয়ম হলে সেটা অবশ্যই বাজে ব্যাপার। কিন্তু সেটার সমাধান এই বেতন মডেলে দেখছিনা।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:১৭86472
  • তুলনাটা নেহাতই বোঝাবার জন্য। আর তুলনার জন্য তো ভাবনা নয়, যে শুধু তুলনা দিয়েই ভাবনার সারবত্তা বোঝানো যাবে ! প্রত্যেক সিস্টেমের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে। আমি বোধহয় আগেও বলেছি, এই ক্ষেত্রে সবকিছু আমাদের প্রচলিত ধারণার সঙ্গে ফিট করবে এমনই বা হতে হবে কেন ? প্রয়োজনে আমাদের ধারণাকে বদলে নিতে হবে। এখানেও আমাদের চাকরীর প্রচলিত ধারণার সঙ্গে সঙ্গে যেসব শব্দ / ধারণা উঠে আসে, গৃহবধুর মাইনের সঙ্গেও ঠিক সেই সব কথাই উঠে আসবে, এটাই ভাবতে হবে কেন ?
    শুধু মাইনে পাচ্ছে বলেই তো গৃহবধু কাজের লোক হয়ে যাচ্ছে না যে তার ক্ষেত্রেও ওই বেশি বেতনের চাকরী ইত্যাদি কথা চলে আসবে। এখানে 'অপশনের' প্রশ্ন আসছে কি করে, কে কাকে অপশন দেবে !
    তর্কের খাতিরে যদি ধরেই নিই, বাস্তব কি বলে, একজন গৃহবধুর 'বেশি মাইনের বাড়িতে' 'গৃহবধুর চাকরী' পাওয়া সম্ভব ? আর পেলেই সে স্বামী-ছেলেমেয়ে ছেড়ে সেখানে চলে যাবে ! এখন মাইনে পায় না বলেই যায় না ? গৃহবধুদের সম্পর্কে কি সত্যিই এইরকম ধারণা না কি স্রেফ তর্কের খাতিরে এগুলো ভাবা !

    এই মডেল বা কোনো মডেলই একেবারে ফ্ল-লেস ভাবে আনা যায় না, কাজ শুরু হবার পর আস্তে আস্তে সমস্যা গুলো বোঝা যায়। তবে মাইনে পেলে কি কি সমস্যা তা তো অনেক শুনলাম, এইবার আপনাদের দিক থেকে মাইনে না পাওয়াটাকে একটু জাস্টিফাই করা হোক। মানে কি সত্যিই গৃহবধুদের শ্রম নিয়ে ভাবার কিছু নেই, ওরা ভালই আছেন। সেটা মনে করলে সেটাই বলুন, না হলে শুধু মাইনে পাওয়ার সমস্যাগুলই শুনছি কেন ?
  • একক | 24.96.81.22 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:৩৩86473
  • জাস্টিফাই আবার কী ? আপনিও তো তর্ক করার জন্যেই মডেল খাড়া করেছেন । যদি কোনো কিছুর সংজ্ঞা বদলে থাকেন তাহলে তার একটা ডেফিনিশন এখানে দিয়ে দিন ।সেই সংজ্ঞা ধরেই আলোচনা এগোবে ।
    ক্লোস্ড সিস্টেমে ওয়েজেস হয়না ।কারণ এখানে একজন কর্মীর এফিসিয়েন্সি ত্রান্স্ফারেবল নয় ।তার কাছে অন্য অপশন নেই । ক্লোস্ড সিস্টেমে বার্টার চলে । মানি নয় ।এগুলো বেসিকস ।
    আপনি যদি এর বাইরে যেতে চান তাহলে আগে ওয়েজেস মানে কী ,মানি মানে কী এগুলো এক এক করে লিখুন । "মাইনে" শব্দের অর্থ নিজের মত করে তৈরী করলে সেটা ব্যাখ্যা করার দায় ও তো আপনার ।
  • mandira | 88.150.156.206 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:৪৭86474
  • আলোচনা ভালো হলেও সেই এক ক্থাই ফিরে ফিরে আসছে। আমার দুই সহপাঠী ডাক্তার ব্ন্ধু দেরও দেখেছি একই ভাবে ঘরে থাকা বন্ধুটি সব একা হাতে করতো যতো দিন মেয়েটি চাকরি না শুরু করে।তারপর তার বরও দিব্যি ঘরের কাজ করতে লাগলো কোনোরকম অনুরোধ ইত্যাদী না করতেই। তার আগেমেয়েটি নিজেই বলতো " আহা ও খেটে খুটে এসেছে"। সে নিজেও যে সারাদিন দুটি শিশু নিয়ে সব কি্ছু একা করে এলো তার দাম সেনিজেই দিতে চায় নি। এদের কি সত্যি আর জাগানো যায়?
  • একক | 24.96.81.22 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:৫৪86475
  • সেটাই ব্যাপার । ঘরের কাজ ৫০-৫০ হবে । সে কে বাইরে কাজ করছে কে করছেনা দেখার কোনো দরকার নেই । কিছু পাবলিক জল গড়িয়ে খেতে পারেনা বলে "মূল্য ধরে" দেবে এটা ভুলভাল ।সেক্ষেত্রে কাজের লোক রাখুক নিজের ফিফটি পার্সেন্ট কমপেনসেট করার জন্যে ।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১১:৫৮86476
  • একক ও পাই,
    আপনারা জানেন আমাদের দেশে কিছু টেনিওর ট্রাক পজিশন আছে যার নাম 'সায়েন্টিস্ট'। সেই পজিশনে যারা কাজ করেন, তারা পি-এইচ-ডি হোল্ডার, পোস্ট ডক হোল্ডার, সায়েন্টিস্টের সব কাজই করেন কিন্তু তারা একটা ফিক্সড স্যালারী পান, কোনও স্কেল, ইনক্রিমেন্ট, প্রোমোশন, অ্যাপাইজাল, এইচ আর এ, কিছছু নেই, মাইনেটাও অনেক সময়ে সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসসিয়েটের চেয়ে সামান্য কম। কিন্তু যারা রিসার্চ ভালোবাসেন তারা সেই সব পজিশেন চাকরী করছেন তো, অন্যদের বেতনের সঙ্গে তুলনাই ত শেষ কথা নয়, সেটা অন্য অনেক কিছুর থেকে ভাল মনে করছেন বলেই তো করছেন ! তাই আপনাদের ধারণার সঙ্গে বর্ণে বর্ণে না মিললেই সেটাকে 'হাতখরচা' বলে ডিমীন করা কি সাত্যিই কোথাও পৌঁছে দেয়, বা আপনারা কি সত্যি কোথাও পৌঁছোতে চাইছেন ? তা না হলে এই মডেলে শুধু কি নেই, কি নয়, কি সমস্যা তাই নিয়েই কথা শুনছি কোনো সমাধানের রাস্তা দেখছি না কেন !

    যাই হোক নামে কিছু এসে যায় না, হাতখরচাই বলুন আর বেকার ভাতাই বলুন দিনের শেষে ঘরকন্যাদের হাতে নিয়ম করে কিছু টাকা তুলে দেওয়াই তো উদ্দেশ্য, সেটা হলেই হল ! পাই অবশ্য সেটাও দেখতে পাচ্ছেন না, কিন্তু সে ক্ষেত্রে স্বামীর বেতনের একটা অংশ নিয়ম করে বৌয়ের হাতে দেওয়ার দাবী যা এই মডেলের মূল কথা সেটা কি জন্য কে জানে !
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১২:০৭86477
  • কেউ সারাদিন বাইরের কাজ করলো, কেউ ঘরে থাকলো। সেখানে ঘরের কাজ কেন ৫০-৫০ হবে বুঝলাম না। মানে কেউ করতেই পারেন, ইচ্ছে হলে, কিন্তু এটা নিয়ম কেন হতে হবে, আর তার ভিত্তিই বা কী ? দু'জনে বাইরের কাজ করলে ৫০-৫০ ভাবা যায়। আর এতো সম্পর্কের ব্যাপার, চুক্তি বদ্ধ কিছু না, এখানে ৫০ ৫০ ও অত নিক্তি মেপে হয় নাকি, নাকি সব কাজকম্ম অত ওয়েট সহকারে মাপা যায় ! হওয়া উচিত মিউচ্যুয়াল অ্যাড্জাস্টমেন্ট থেকে। কেউ বাইরের কাজ না করলেও তাঁর হাত খরচ এমনিই প্রাপ্য, বাড়ির কাজের হিসেব মেপেও নয়, আর সেটা বেতন হিসেবেও নয়। আর এই প্রাপ্য, এটাও আমার মনে হয় মিউচ্যুয়াল অ্যাড্জাস্টমেন্ট থেকেই আসা উচিত।
  • একক | 24.96.81.22 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১২:১৬86478
  • আমি জানতুম আপনি এবার ভাতা প্রসঙ্গে আসবেন । তাহলে আপনি এটাও নিশ্চই জানেন যে কোন প্রজেক্টে কত ফান্ড আসে ,কোথায় কত ভাতা এটা স্কলার রা রীতিমত খোঁজ রাখেন এবং তাঁদের কাছে যথেষ্ট অপশন থাকে সেরকম কাজে যোগ দেওয়ার ।কাজেই ভাতা যুক্তিটা জাস্ট যায়না ,পাবলিক হাতে কত পাবে সিওর না হয়ে দুমদাম জয়েন করেনা ।একেবারে বাচ্চা পাবলিক হলে ।আর সত্যি কথা বলতে একাডেমিয়া তে জাস্ট আন্ডার কভার এবিউস চলে । গাইড বেসরকারী প্রজেক্ট থেকে কামায় একদিকে অন্যদিকে রিসার্চার রাত জেগে পরে থাকে শেষ অবধি একটা একাডেমিক স্বীকৃতির জন্যে । এই সিস্টেম কে আদর্শ ভাবার কোনো কারণ দেখিনা ।

    আর এইসব ডিমীন-ফিমিন বলে আদতে কোথাও কিছু পৌছাচ্ছে না ।এটা আইদার বেতন,বেতন হলে কিভাবে বেতন সেটা স্পষ্ট করে লিখুন না । খামোখা দুধ বলে পিটুলিগোলা গেলাবার চেষ্টা করছেন ক্যানো ? বেতন না হলেও আদতে কী সেটাও স্পষ্ট হওয়া দরকার ।

    আর "ঘরকন্যা দের হাতে কিছু টাকা তুলে দেওয়া" যদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে এরকম ভেগ (অস্পষ্ট অর্থে ,খারাপ নয়) উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো মডেল আদৌ দাঁড়ায় কী ? "বেতনক্রম" ইত্যাদি বলার তো কোনো প্রয়োজন ছিলনা তাই না । হাতখরচ খারাপ কথা কী ? একচুয়ালি মাসমাইনে যেটা আসছে ওটা তো ফ্যামিলিতে টোটাল মানি ইনপুট ।সেখান থেকে দুজনেই যেরকম সামর্থ্য বুঝে হাতখরচ সরিয়ে নিক যেটা কিনা কমন কস্ট নয় । সেটা নিয়ে সমস্যা নেই । ইনফ্যাক্ট মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার এ তাই হয় । কিন্তু কোনো নিয়ম করে তো এটা করতে পারবেন না ।যেই মুহুর্তে নিয়ম করতে যাবেন অমনি ওয়েজেস ,ভ্যালুএসন এসব এসে পরবে । যেগুলোর সমাধান এই মডেলে নেই । মডেল বলেই এত প্রশ্ন আসছে ।নইলে আসতো না ।
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১২:২১86479
  • স্ত্রীর নিজের ঘরের কাজকে চাকরির সাথে তুলনা করলে এসব কথা তো আসবেই। কোনটা 'ডিমীন' করা হল বুঝলাম না।

    দু'জনের একসাথে থাকার ব্যাপার, সেখানে বিয়ের আগে ঠিক কেন দুজনের কে কী চায়। সংসারের টাকা, আমার তোমার, আলাদা আলাদা এই ব্যাপারটাও ঠিক বুঝিনা। রোজগারের টাকা ( সে একার হোক, , দোকার হোক) দু'জনে মিলে, দুজনের ও পরিবারের অন্যদের জন্য খরচ হবে, বেসিক ব্যাপার এটাই বুঝি।
    বিয়ের আগে থেকেই কেউ চাকরি করতে চায়না জানালে বা অন্যজন চায়না বউ করুক বলে, তাতে বউয়ের কোন সমস্যা না থাকলে , সেটা তাদের ব্যাপার। খরচটা সংসারের সবার জন্যেই হবে, এই ধারণা, নর্মটা চালু হোক না, অসুবিধে নেই তো। রাষ্ট্র থেকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিয়ম বেঁধে দেবার দরকার আছে ?
  • একক | 24.96.81.22 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ১২:৩৩86480
  • আমিও এভাবেই বুঝি । ফ্যামিলি একটা স্মল কমিউনিটি ।সেখানে টোটাল মানি ইনপুট যা আসছে দুজনেই আলোচনা করে খরচ ও সেভিংস করো ।মিটে গ্যালো । হাতখরচ নিতে হলে দুজনেই নাও ।ওটা একটা পার্ট যার খরচের ক্ষেত্রে আলোচনা করতে বাধ্য নই ।
  • নিধি | 126.203.129.156 (*) | ০৭ মে ২০১৫ ০৫:১৯86482
  • ঐ সাজুনী মাগীটা আমাকে
    যে কী বলতে চায় বৌদি ঠিক ঠাওর পাইনা
    বলে কি তুমি যত ঘরের কাজ কর
    টাকায় তার দাম জানো ... বলে কি
    মাইনে নিলে নাকি আমার রোজগার
    আমার ভাতারের চেয়ে বেশি হ্ত।
    তা ঘরের কাজে মাইনের কথা ওঠে কী করে বল
    আমি তো আসলে ঘরের টান বুনে রাখি
    পুরুষটার জন্য ... নইলে সে ঘরে আসবে কেন
    নইলে তো সে বাঁশি বাজাতে বাজাতে
    হারিয়েই যাবে গো এক পালা থেকে আরেক পালা
    একদল থেকে আরেক দল আর বাজারে কি
    মেয়েছেলে শরীলের অভাব বল ঘরের কি বালাই
    তবু ঘর না থাকলে মানুষ কি হারিয়ে যেত না...
    ঐ সাজুনী মাগীটাকে জিগগাসা কোর না বৌদি

    প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা। সকল সাজুনে ও ভাটুনেদের জন্য। :p
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ০৭ মে ২০১৫ ০৭:০৪86484
  • এই তর্কটা এখানে থাক।
    http://www.debate.org/opinions/should-housewives-be-paid

    বাইরে নানা দেশে মোটামুটি কত শতাংশ মহিলা গৃহবধূ হন ? দেশ অনুযায়ী কোন ট্রেন্ড আছে ?
  • tirjak | 24.139.222.45 (*) | ০৭ মে ২০১৫ ০৭:৫৫86483
  • বোঝা গেল কবিতা সত্য কথা বলে (তবে শেষ কথা তো বলে না ! )...
  • tirjak | 24.139.222.45 (*) | ০৮ মে ২০১৫ ১০:৪৩86485
  • বাপরে ! ৪১% মানুষ ভাবে গৃহবধুদের মাইনে পাওয়া উচিত !!!
  • cm | 127.247.96.162 (*) | ০৮ মে ২০১৫ ১২:২৯86486
  • গৃহবধূ মাইনে পাবেন কেন? কাজ করার জন্য না কাজ না করার জন্য? নাকি বিয়ে করার জন্য?
  • pi | 233.176.13.49 (*) | ২৬ জুলাই ২০১৫ ০৪:২৪86487
  • এই সার্ভেটা সেদিন দেখলাম।

    http://timesofindia.indiatimes.com/india/64-of-urban-Indian-women-busy-with-housework-study-reveals/articleshow/44796358.cms

    ..Around 64% of urban women are engaged in domestic work compared to 60% in rural areas among women aged 15 and above, according to the latest National Sample Survey Organization (NSSO) report....Interestingly, around 34% rural women expressed willingness to accept other work if it was made available to them at home, while only 28% in urban areas said the same.

    আর এও দেখলাম, ঘরকন্যাদের % ক্রমে বাড়ছে ।
  • pi | 192.66.37.132 (*) | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৫:২৮86488
  • শেষ প্যারায় বলা অনেক পয়েন্টই আমার, যদিও এরকম সামারিতে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না বা উল্টো মানে যাচ্ছে। য্তই ঠোকো না কেন, সবেতেই স্টিক করে থাকছি এবং সেটাকে আসল অন্ধকার মনেও করছিনা ঃ)

    'একটি প্রগতিশীল ইন্টারনেট পত্রিকায় প্রস্তাবটা পেশ করার পর, উচ্চশিক্ষিত পাঠকদের কাছ থেকে মতামত পাওয়া গেল: ১) গৃহবধূদের তো বিশেষ কিছু কাজ নেই, সবই পরিচারিকারা করেন (এ ভাবনা মূলত কর্মরতা মহিলাদের); ২) সংসার তো নিজের, নিজের কাজ করার জন্য মাইনে কেন; ৩) গৃহবধূর কাজ তো পরিচারিকার কাজেরই মতো, তার মাইনে কেন পরিচারিকার চেয়ে বেশি হবে; ৪) বরের মাইনের ওপর নির্ভর করে না থেকে নিজে যা পারে উপার্জন করলেই তো হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাৎ, এলজিবিটি, সংখ্যালঘু, এমনকী পরিচারিকাদের সমস্যাও যাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, গৃহবধূদের সমস্যার সঙ্গে তাঁরা মোটেই রিলেট করেন না। এখানেই আসল অন্ধকার।'

    http://www.anandabazar.com/editorial/why-you-are-not-giving-money-for-household-works-1.340216
  • pi | 192.66.37.132 (*) | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৫:৪৫86489
  • তবে, এই তর্কের ফলে কিছু মডিফিকেশন এসেছে হয়তো।
    এই জায়গাটা পড়ে মনে হল।

    'মহিলাটি ঘরের কাজের জন্য সহায়িকা রাখলে সেই বেতন থেকেই সহায়িকার মাইনে হবে। (ফলে পুরুষটিও কিছুটা শান্তি পাবেন এই ভেবে যে, তাঁর টাকাটার পুরোটা জলে যাচ্ছে না)। কিন্তু, এ ছাড়া সেই টাকা মহিলাটি কী ভাবে খরচ করবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার। এই পদ্ধতি মেনে চললে, যে মহিলা নিজের হাতে সব করেন এবং যাঁর অনেক পরিচারিকা আছে, তাঁদের মধ্যে নিজস্ব উপার্জনের ভিত্তিতে একটা যুক্তিযুক্ত তফাতও থাকবে। আর যদি কোনও সংসারে শুধু মহিলাটিই বাইরে কাজ করেন, তবে একই ভাবে তাঁর স্বামীও বেতন পাবেন, আর সেটাও কোনও ভাবেই ‘বউ-এর পয়সায় খাওয়া’ হবে না।'

    একটা প্রশ্ন আবারো করবো ( আগে করেছি বলেই মনে হচ্ছে)। এক ই কথা পুরুষদের জন্য বলা নয় কেন ? মানে, পুরুষেরও তো এই সব কাজ ভাল লাগতেই পারে। ঘরকন্নার কাজ মানেই ঘরকন্যা মনে হওয়া, মেয়েলি কাজ বলা আর সেটা মেয়েরাই ভাল পারবে বা মেয়েরাই সেটা চায় বলা ( পুরুষদের কথা না বলা থেকে সেরকম মেসেজই যায়) আরেকটা স্টিরিওটাইপিং ই মনে হয়। সেই অন্য টইতেও দেখেছিলা, যে যে কাজটা ভাল পারে , করুক না র উদাহরণ প্রসঙ্গে মায়ের রান্না করা ও বাবার পড়ানোর উদাহরণ এসেছিল। এর রিভার্স রোলটা নিয়ে হয়তো অনেকে দ্বিমত পোষণ করবেন না, কিন্তু সেটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উঠে আসে না কেন ?

    আমার তো মনে হয় এই ঘরের বা বাইরের কাজ ভালো বা খারাপ লাগালাগির কাঁচা বায়োলজি ছেলে বা মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান হবে। বাকি এই স্কিউড চয়েজ বলে যা আমরা দেখি, সেটা সানিই। সেই সানি থেকেই 'মেয়েলি' কাজ মেয়েরাই করবে বা মেয়েরাই ভাল পারবে বা তাদের ভালো লাগবে ধরে নেওয়া হয়।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:১৭86490
  • শোনা কথাঃ গুজরাতী ফ্যামিলিতে কিন্তু পুরুষরা টাকা ইনকাম করে এসে বাড়ির মহিলাদের দেয়। মহিলারাই ঠিক করেন কতটা সবজি আনাজ আনা হবে, আর কতটা কোথায় ইনভেস্ট করা হবে।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:২১86491
  • শুধু গুজরাতি কেন, অন্য অনেক পরিবারেই তাই হয়।
  • S | 202.156.215.1 (*) | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৮:৪৬86492
  • সেসব পরিবারে কি হবে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন