এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভোটবাক্স  বিধানসভা-২০২১  ইলেকশন

  • দিমিত্রভ পড়িনি, তবু...

    বিষাণ বসু
    ভোটবাক্স | বিধানসভা-২০২১ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৮৮৫২ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৮ জন)
  • এবারের ভোট অন্য সব বারের থেকে আলাদা, এমন একটা কথা প্রতিবারের নির্বাচনের সময়ে বড় সংবাদমাধ্যমে শুনতে পাওয়া যায়। তাতে একটা স্ববিক্রয়ের দায় থাকে, সত্য কতটা থাকে, বলা মুশকিল। তবে ২০২১ সালের বাংলার ভোটে একটা রকমফের ঘটেছে, তা স্পষ্ট। বিজেপিকে আটকাতে বিভিন্ন মঞ্চ তৈরি হয়েছে, যা সাড়াও ফেলেছে। কোনও নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দল বা ফ্রন্টের ছায়া ব্যাতিরেকে এমন মঞ্চের প্রচার ও প্রসার তীব্র প্রতিক্রিয়ারও জন্ম দিয়েছে, যার জেরে উঠে আসছে বিভিন্ন বয়ান। এই প্রবন্ধ, তেমন সব বয়ানেরই একটি।

    ইতিহাস সাতিশয় বিষম বস্তু। গুছিয়ে ব্যবহার করতে পারলে আপনি যে কোনো পরিস্থিতির পক্ষে কিম্বা বিপক্ষে, দুদিকেই দস্তুরমত যুক্তি দিতে পারবেন। অতীত গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, কিন্তু অতীত নিয়ে পড়ে থাকার চোটে বর্তমানটি গুবলেট হয়ে গেলে মুশকিল।

    এজন্যেই বুদ্ধের বাণীটি মনে রাখাটা কাজের। না বুদ্ধবাবুর নয়, তথাগত বুদ্ধের কথা বলছি। কথাটা হল - অতীত বিগত, ভবিষ্যৎ অনাগত, সুতরাং অজানা - হাতে একমাত্র বর্তমান। অতএব বর্তমানে থাক।

    যেমন ধরুন, জাতীয় কংগ্রেসের ইতিহাস খুঁজলে, বেশিদূর যেতে হবে না - বছর পঞ্চাশেকের মধ্যেই একটা জাজ্বল্যমান জরুরি অবস্থা আছে, ঘরের পাশে বাহাত্তর থেকে সাতাত্তরের ‘জনমুখী’ শাসনের নজির আছে।

    সিপিএম তথা বামফ্রন্টের বিবিধ দমন-পীড়ন অত্যাচারের নজির খুঁজতে অত দূরও যেতে হবে না - দু দশক আগেরই একদম হাতেগরম বিভিন্ন ঘটনা রয়েছে - কলকাতায় যতখানি, প্রচারের অন্তরালে থাকা গ্রামে-মফসসলে তার চাইতে বেশি।

    ইদানিং যাঁরা চমৎকার গণতন্ত্রপ্রেমী এবং সংগ্রামী হোলিয়ার-দ্যান-দাউ হয়ে উঠেছেন, তাঁদের সেই সত্তরের স্বর্ণালি মুক্তির দশকে শ্রেণিশত্রুদের কেমন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিধন করা হয়েছিল, সেকথাও মনে করা যেতে পারে। এবং একথাও মাথায় রাখতে হবে, সামান্য কয়েক বছরেই তাঁরা, রাষ্ট্রশক্তির বিন্দুমাত্র সহযোগিতা ছাড়াই, বেশ কয়েক হাজার মানুষ খুন করে ফেলেছিলেন - যাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশকে ঠিক কোন মানদণ্ডে শ্রেণিশত্রু ভাবা গিয়েছিল, বোঝা মুশকিল।

    অবশ্য, অভিজ্ঞতা বলে, বিরোধী মাত্রেই শ্রেণিশত্রু কিম্বা দেশের শত্রু, সম্ভবত এটা ডান-বাম নির্বিশেষে রেজিমেন্টেড দলের বয়ান। শত্রুর পেছনে কাঠি করে সব রাজনৈতিক দলই। কিন্তু, যেসব দল নিকেশযোগ্য শত্রুকে এমন একখানা মহৎ বিশেষণ দ্বারা তত্ত্বায়িত করতে পারে না, তারা, সম্ভবত, তেমন রেজিমেন্টেড নয়। তারা ওই পুকুরের জলে বিষ মিশিয়ে দেওয়া কিম্বা বিরোধীদের বাড়িতে ধোপানাপিত বন্ধ করা বা বাড়ি জ্বালিয়ে গ্রামছাড়া করা টাইপের কাজের বেশি এগোতে পারে না - এবং চেপে ধরলে কাজটির দায় অস্বীকার করে, অন্তত গর্ব করে কাজটির পক্ষে যুক্তি সাজিয়ে উঠতে পারে না।

    সচেতনভাবেই এখানে মাওবাদীদের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলাম - কেননা, তাঁদের আপাত অবস্থান মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে দূরে। অতিবাম কিম্বা দক্ষিণপন্থী, উভয়পক্ষই, ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে হলেও, তাঁদের সঙ্গে চোরাগোপ্তা যোগাযোগ রাখলেও, সে যোগাযোগের কথা মুখে স্বীকার করতে চান না। ইংরেজিতে যাকে বলে ওন আপ করা, তার বড় অভাব ইদানিং। এমনকি, অন্তত এই রাজ্যে, নির্বাচনী জয়ে বড় ভূমিকা থাকলেও, মাওবাদীদের সঙ্গে প্রায় পাড়ার মস্তানদের মতো ব্যবহার করা হয়েছে - তাঁদের ব্যবহার করে বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হয়েছে - তবুও, তাঁদের রাজনীতির চূড়ান্ত বিরোধী মাত্রেও মানবেন, তাঁদের আদর্শের প্রতি দায়বদ্ধতা ঈর্ষণীয় - ভোটে ব্যবহারযোগ্য গুণ্ডার সঙ্গে তাঁদের আকাশপাতাল ফারাক রয়েছে।

    কাজেই, মোদ্দা কথাটা হল, অতীত খুঁড়তে চাইলে সবার মধ্যেই বিস্তর ইয়ে পেতে পারেন - ইয়ে, অর্থাৎ সুশীল সমাজের ভাষায় জামায় রক্তের দাগ, আর মেঠো ভাষায় পেন্টুলে হলুদ ছোপ, ইংরেজি বয়ান দেশের মাটিতে টানলে দেরাজে কঙ্কাল।

    কিন্তু, ওই যে বললাম, অতীতের প্রসঙ্গ সরিয়ে বর্তমানে আসুন - কেননা, অতীতের ছাপ বর্তমানে রয়ে গেলেও, অতীতটি অতীতই - বিগত।

    বর্তমান, অর্থাৎ ঘটমান বর্তমান।

    দেশে, জরুরি অবস্থার কথা মাথায় রেখেও বলা যায়, প্রায় অভূতপূর্ব একটি দমনমূলক শাসনব্যবস্থা জারি রয়েছে। নাৎসি শাসনের সঙ্গে এই শাসনের তুলনা কিছুটা দূরের কল্পনা হলেও, মূল সুরে বিশেষ প্রভেদ নেই। প্রভেদ বলতে, ইতিহাসের গতিক্রমে পশ্চিমি মডেলে ফ্যাসিবাদ এদেশে এনে ফেলার কাজটা সহজ নয় - বিশেষত এই বহুস্বরের দেশে। তবে, শাসকদলের সদিচ্ছায় খামতি নেই - হিন্দি-হিন্দু জাতীয়তাবাদের র‍্যাঁদা ঘষে বহুস্বরকে একমাত্রিক করা এবং হিন্দু ধর্মের নামে অ্যাব্রাহামিক হিন্দুত্বের একটি ধর্মীয় মডেল খাড়া করে পশ্চিমি ফ্যাসিবাদের মডেলটি এদেশেও প্রয়োগযোগ্য করে ফেলা - প্রকল্পের কাজ অনেকখানিই এগিয়েছে। সাফল্যের পথে বাধা বলতে, যথেষ্ট সংখ্যক রাজ্যে ক্ষমতার অভাব। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, এমনকি মাথাভারি কেন্দ্রের অস্তিত্ব সত্ত্বেও, রাজ্যগুলোকে পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কাজেই, অ্যাজেন্ডা পূরণ করতে হলে, ফ্যাসিস্ট দলের রাজ্যগুলোর সরকারকেও প্রয়োজন। মাঝেমধ্যেই অবশ্য এদেশেও দেশব্যাপী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জরুরি বলে ধুয়ো তোলা হয় - কিন্তু, সে সুদিন তো চট করে এখুনি আসছে না - ততদিন পর্যন্ত নির্বাচনে জিতে রাজ্যগুলোতে ক্ষমতা বাড়ানো বাদ দিয়ে উপায় নেই।

    দু-মাস বাদে এই রাজ্যেও নির্বাচন। ফ্যাসিস্ট দলের গ্র‍্যান্ড প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত এই নির্বাচনও। কাজেই, ফ্যাসিস্ট মডেলটি গ্রহণযোগ্য মনে না হলে, সেই দলটিকে নির্বাচনে ঠেকানো জরুরি।

    আবার রাজ্যের ক্ষমতায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কথাটিও পাড়ার লোককে ডেকে গল্প করে শোনানোর মতো নয়। অগণতান্ত্রিক মানসিকতা সেই দলের প্রতি পদে। সুচিন্তিত কণ্ঠ বা শিক্ষিত স্বরের (ডিগ্রির শিক্ষা নয়, রাজনৈতিক শিক্ষার কথা বলছি) অভাব, সেদলের শিরায়-উপশিরায়। দুর্নীতি ও বিরোধী কণ্ঠকে দমনের মানসিকতা প্রায় মজ্জাগত। পুরোনো খবর কাগজ খুঁজে দেখতে হবে না, একেবারে টাটকা উদাহরণ দিই। দুদিন আগেই চাকরির দাবিতে ছাত্রযুবদের মিছিলে বেপরোয়া লাঠি চালিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী হত্যার ঘটনা - আর গতকালই সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে, যোগ্যতর প্রার্থীকে বঞ্চিত করে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনকে পাইয়ে দেওয়ার হাতে গরম প্রমাণ। আর গ্রামেগঞ্জে স্থানীয় নেতা-গুণ্ডাদের হাতে আমজনতার অতিষ্ঠ হয়ে থাকার কথা তো আছেই। পুরোনো কথা বললে টেট-সারদা-নারদা - আজ যদি মইদুল, তাহলে শাসনের শুরুতেই সুদীপ্ত গুপ্ত, মাঝে আরো কত কত নাম - এককথায় যাকে বলে, গুণে নুন দেওয়ার জায়গাটুকু নেই।

    অর্থাৎ রাজ্যের শাসকও, সরাসরি ফ্যাসিস্ট না হলেও, কোনো অংশে গ্রহণযোগ্য বা কম পরিত্যাজ্য নয়। অতীতের কথা মাথায় রাখলে, এই শাসক দলের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট দলটির সম্পর্ক চিরকালই থেকেছে - কখনও প্রকাশ্য, কখনও অন্তঃসলিলা ফল্গুধারার তুল্য। কিন্তু, আগেই বলেছি, আমরা অতীতের চেয়ে বর্তমানকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছি - এবং অন্তত বর্তমানে, অন্তত প্রকাশ্যে এই দুই পক্ষের সম্পর্ক প্রায় সাপে-নেউলে। তবুও, গত কয়েক মাসে, শাসক দলের এমনকি উঁচুস্তরের নেতারাও যেমন করে দল বদল করে ফ্যাসিস্ট দলে যোগদান করছেন, এবং গিয়েই পুরোনো দলের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট দলের আদি ও নিবিড় যোগাযোগের কথা প্রকাশ্যে আনছেন, একমাত্র আচ্ছন্ন প্রেমিক না হলে, সে বক্তব্যের প্রতি অন্ধ উপেক্ষা দেখানো মুশকিল।

    এমতাবস্থায়, রাজ্যের শাসক ফ্যাসিস্টদের তুলনায় কম বিপজ্জনক কিনা, ঠাণ্ডা মাথায় বিচার করা মুশকিল - অন্তত, যাঁরা সরাসরি আক্রান্ত, তাঁদের পক্ষে তো বটেই। রাজ্যের শাসককে যদি লেসার ইভিল তকমা দিতেই হয়, তাহলে, একেবারে শুরুতেই, তাঁদের যে ইভিল তকমাটুকু প্রাপ্য, সেকথা মেনে নিয়েই আলোচনা শুরু হওয়া জরুরি। সেটুকু না মানতে চাইলে, রাজ্যের শাসককে ক্লিনচিট দিতে চাইলে, অত্যাচারিত এবং বিরক্ত মানুষের মন ছোঁয়া যাবে না - এবং তার সঙ্গে তৃতীয় সম্ভাবনাটির নামে যদি লাগাতার গালিগালাজ চালিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে আপাত-লেসার ইভিলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ ভোট গ্রেটার ইভিলের দিকে সরবে, সরবেই। যেমন ধরুন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার মুহূর্তে ইমাম-পুরোহিত ভাতা কিম্বা ঈদের নামাজে হিজাব পরিহিতা মুখ্যমন্ত্রী অথবা ক্লাবে দুর্গাপুজোর অনুদান যে সরকারি ভুল, সেকথা না বলা গেলে ভাবের ঘরে চুরি করা হয়। আর চুরিটা ভাবের ঘরেই করুন বা অন্যের ঘরে, তেমন মানুষের মুখে নীতির কথা শুনলে, তাকে চোরের মায়ের বড় গলা ভাবাই দস্তুর।

    এমতাবস্থায় মনে করিয়ে দেওয়া যাক, যদি অবস্থান নিতে চান, যদি আগামী নির্বাচনকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্বাস করেন, তাহলে কাকে ভোট নয় বলার পাশাপাশি কাকে ভোট দেবেন, সেকথা জানানোও কর্তব্য। ফ্যাসিস্ট বনাম অগণতান্ত্রিক দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরাচার - এই বাইনারির বাইরেও এই নির্বাচনে তৃতীয় একটি পক্ষ থাকছে, অতীত অগ্রাহ্য করে বিচার করতে পারলে, আমজনতার ইস্যু নিয়ে আপাতত তাঁরাই একমাত্র সরব। তাঁদের আপনার পছন্দ না-ই হতে পারে, কিন্তু আপনার ঠিক কোনটি পছন্দ, সেকথা স্পষ্ট করে জানানো জরুরি। সন্ধ্যাভাষা কাব্য-দর্শনে যতখানি উপযুক্ত, রাজনীতিতে ততখানি নয় - সঙ্কটকালে তো রীতিমতো বিপজ্জনক। আপনার ডেলিবারেট ইচ্ছে ছাড়াই যদি ঠারেঠোরে রাজ্যের বর্তমান শাসকদলকেই ভোট দেওয়ার বার্তা পৌঁছায়, তাহলে সেই ভুল বোঝার দায় শুধুই পাঠক-শ্রোতার 'পরে চাপাতে চাইলে চলবে না - বার্তা যখন আপনি দিচ্ছেন, সেই বার্তা থেকে কে কী সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছেন, সেটুকুর খেয়াল রাখার দায়িত্ব আপনারই নেওয়া কর্তব্য। ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যদি ভাসা-ভাসা বার্তা দেন, তাহলে আপনার দায়বদ্ধতা কিম্বা সেই বার্তার সততা নিয়েই সংশয় থাকে। হরলিক্সের বিজ্ঞাপন শুনে ক্রেতা যদি কমপ্ল্যান কিনতে উদবুদ্ধ হন, তার দায় তো ক্রেতার 'পরে চাপানো মুশকিল - তাই না?

    এখন অবশ্যম্ভাবী প্রশ্ন, ভোটটা দেবেন কাকে?

    আমার দিক থেকে উত্তর, বামেদের। আপনি যদি বলেন, বর্তমান শাসকদলকে - সেটাও বলতে পারেন। শুধু বলি, স্পষ্টভাবে বলুন - যা বলতে চাইছেন, দায়িত্ব নিন। উত্তরটি গ্রহণযোগ্য না-ই হতে পারে - সর্বজনগ্রাহ্য তো কখনোই হবে না - তবুও, স্পষ্ট অবস্থান ও উচ্চারণ জরুরি। শুধুই নেতি নেতি করে আধ্যাত্মিক সত্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকলেও, রাজনৈতিক লক্ষ অর্জন মুশকিল। বিরোধিতা করার মুহূর্তে বিরুদ্ধ কোনো একটি দলের পক্ষে বোতাম টেপা জরুরি। আমার পক্ষে সেই বোতাম বামেদের - আপনি সিদ্ধান্ত নিন, সেই বোতাম কাদের। কিন্তু, যাদেরই হোক, আবারও বলি, স্পষ্টভাষায় বলুন। যাঁরা কথা বলতে পারেন, যাঁরা সেই বলার সুযোগ রক্ষার ব্যাপারে সিরিয়াস, তাঁদের বক্তব্য স্পষ্ট হওয়া জরুরি।

    এরই পাশাপাশি মনে রাখা যাক, বর্তমান ভোটের প্রেক্ষিতে এতশত আলোচনা হলেও, ইতিহাস একটা বহমান প্রক্রিয়া। এন্ড অফ হিস্ট্রি বলে একটি সময়কে যাঁরা দাগিয়ে দিতে চান, তাঁদের ঠিক বামপন্থী বলে ভাবতে পারা মুশকিল। ফ্যাসিবাদী শক্তি যখন দুয়ারে কড়া নাড়ে, একটি নির্বাচনে হারিয়ে দিলেই তারা ন্যাজ গুটিয়ে চিরতরে পালায়, এমন তো নয়। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা দীর্ঘমেয়াদি হতে চলেছে। অতএব, সেই লড়াই এই নির্বাচনের পরেও জারি থাকবে। লড়াইটা অন্য মাত্রা পাবে এই নির্বাচনেই ফ্যাসিস্ট দল জিতে গেলে - আর এই নির্বাচনে বর্তমান শাসকদল ক্ষমতায় টিকে গেলে, লড়াইটা সেই মাত্রায় পৌঁছাবে মাসকয়েক পরে। ফারাক বলতে এটুকুই। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে সব গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ এবং বামপন্থীদেরই - অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারীকে সমর্থন করে ঘরের চালের ফুটোয় কাগজ গোঁজার মতো তাপ্পি সম্ভব, দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাইলে ঘরের চালটিকেই পোক্ত করতে হবে - সেই পোক্ত করার কাজ করতে গিয়ে আপাতত একটু বেশি ভেজার ঝুঁকি থাকলেও কাজটা জরুরি।

    অতএব, অন্তত আমার চোখে, এই মুহূর্তে, সব গণতান্ত্রিক শক্তিরই একই ছাদের তলায় আসা জরুরি। যদি ফ্যাসিবাদের বিপদটিকে সিরিয়াসলি নেন, তাহলে তো বটেই।

    সঙ্কটকাল বলে যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে এই মুহূর্তে একজোট হওয়ার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই হতে পারে না। অতীতের ব্যাগেজ ভুলেই একত্র হওয়া জরুরি। ক্ষমতাসীন বামদল কখন কীভাবে বাম-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছিল, তার বিচারের চাইতেও জরুরি বর্তমান প্রেক্ষিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ। ধনতান্ত্রিক বাজার-অর্থনীতির সময়ে ক্ষমতা এক বিষম বস্তু - আগুনখেকো অতিবাম শ্রমিকনেতাও দক্ষিণপন্থী শাসনের অংশ হয়ে তোলাবাজির মাস্টার হয়ে ওঠেন। আবার দাপুটে "চাষার ব্যাটা", হেলে-কেউটে সংলাপখ্যাত বাম মন্ত্রী, পরবর্তী জমানায় ক্ষমতার আরামকেদারার প্রলোভন এড়াতে পারেন না। কাজেই, ওই যে বললাম, দোষারোপ করতে চাইলে, জামায় রক্ত কিম্বা পেন্টুলে হলুদ ছোপ, কোনোপক্ষেই কোনোটিরই অভাব হবে না। পছন্দ আপনার - দোষারোপই চালিয়ে যাবেন, নাকি সামনের সঙ্কটের মোকাবিলায় হাতে হাত রাখবেন।

    আর দয়া করে যে যেখানে শক্তিশালীর গল্প এখানে টানবেন না। জ্যোতিষচর্চায় আস্থাশীল হলে অন্য কথা, কিন্তু রাষ্ট্রের গোয়েন্দাদপ্তর যখন জনমতের সঠিক আন্দাজ পায় না, আপনি সোশাল মিডিয়ায় বসে সে আন্দাজ পেয়ে যাবেন, এটা একটু বাড়াবাড়ি আশা। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থায়, কারা ঠিক কিসের জোরে আপাত সবল রূপে দৃশ্যমান হয়, সে রহস্য কি একেবারেই অজানা? ঢালাও খরচা-কাটআউট-ট্যাবলো-মাসলপাওয়ার যাদের যেখানে বেশি, আপনি যদি তাঁদেরই পক্ষে থাকতে চান, তাহলে আর খামখা ফ্যাসিস্ট দলটির বিরুদ্ধে অভিমান করে থাকবেন না, প্লীজ - এব্যাপারে তাঁরা প্রায় কিংবদন্তিসম। আর আপনি যদি জনসমর্থনের হিসেবই কষতে চান, তাহলে আরেকবার ভাবুন। যারা তথাকথিত দুর্বল, তারা তো আপনার, আপনাদের সমর্থন পায়নি বলেই দুর্বল। আপনারা পাশে থাকলে, সাত শতাংশ সাতচল্লিশ শতাংশে পৌঁছাবে না কেন? ওই যাকে বলে, বিন্দু বিন্দু জলেই ইত্যাদি ইত্যাদি।

    আলোচনার শেষে জানিয়ে রাখা যাক - যাকে বলে ডিসক্লেইমার - আমি বেসিকালি অশিক্ষিত - খুব গভীর পড়াশোনা আমার নেই। আজকাল খুব দিমিত্রভ নামক এক ভদ্রলোকের নাম শুনি - যিনি নাকি, ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর জন্যে দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে হাত মেলানোর সদুপদেশ দিয়েছিলেন। হতেই পারে, দিয়েছিলেন। বড়সড় মানুষ, ভালো ভেবে ভালো কথাই নিশ্চয়ই বলেছিলেন। আগেই বললাম, আমি অতদূর অবধি পড়ে দেখিনি। কিন্তু, সেখানে কি তিনি ফ্যাসিস্টদের মোকাবিলার স্বার্থে, দক্ষিণপন্থীদের পাশে নেওয়ার (নাকি থাকার) জন্যে বামেদের নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি কাদা ছোড়াছুড়ি জারি রাখার বার্তাও দিয়ে গিয়েছিলেন??


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ভোটবাক্স | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৮৮৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • এলেবেলে | 202.142.96.113 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:১৫102848
  • ডাক্তারবাবু, যাক এবারে অন্তত সিরিয়াস হয়েছেন। ও কিছু না, রোগী হিসেবে আপনাদের এসব চিরপরিচিত তুচ্ছতাচ্ছিল্যে আমরা অভ্যস্ত। যাক গে, আসল কথায় আসি। দেখুন এখানে আমরা যাঁরা মন্তব্য করছি তাঁরা কেউই বিজেপিকে ভোট দেবেন না। তিনোকে দেবেন কি না সেই বিষয়েও সন্দেহ আছে। কিন্তু বাংলার জনগণের রায় তো আর গুরুর মায়াপাতা নির্ধারণ করবে না। গুরু অবশ্য সে দাবিও করেনি। কাজেই বাস্তব প্রেক্ষাপটটা বুঝতে হবে।


    সেটি কিঞ্চিৎ এইরকম --- গত পঞ্চায়েত থেকেই এ রাজ্যে সিপিএম ক্ষয়িষ্ণু এবং পুরো দিশাহারা। তাই লিবারেশন বাদ। মান্নানের সেকেন্ড ফিডল হচ্ছেন সুজন। কোনও যৌথ কর্মসূচী চোখে পড়েনি। ফিশফ্রাই কাণ্ডের পরেও দৌড় গিয়ে দাঁড়িয়েছে সিঙ্গুর থেকে নবান্ন (আগের কুচবিহার থেকে কাকদ্বীপ এখন গপ্পোকথা)। এখন ভোটের আগে কংগ্রেস জোটকে এক অর্থে ডমিনেট করছে। বামেদের দীর্ঘদিনের সঙ্গী সিপিআই-ফব-আরএসপির এই জোট নিয়ে অসন্তোষ আছে। গোদের ওপর বিষফোঁড়া আব্বাস সিদ্দিকি।


    গ্রামেগঞ্জে ভোট বহু আগেই পোলারাইজড হয়ে গেছে। তাঁরা ক্যা-রামমন্দির-তিন তালাক-ফ্যাসিবাদ-পেট্রোলের দাম এসব নিয়ে ভাবছেনই না। তিনো্র বিক্ষুব্ধ হিন্দু ভোট বিজেপিতে যাচ্ছে, বেশ বড় অংশ হিন্দু ভোটও। এই বিভাজনের রাজনীতি বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে আজ পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু হয়নি মানে যে হবে না, তা তো নয়। তাই দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান, জয় শ্রীরামের পাল্টা জয় সিয়ারাম জাতীয় ফালতু জিনিস প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।


    এর বিকল্প সিপিএম নয়। লোকে হয় তিনোকে দেবে নতুবা বিজেপিকে। মাঝখানে তৃতীয় কেউ নেই। বিজেপি যে দুই জেলায় খাতা খুলতে পারবে কি না সন্দেহ, সেখানে লড়াই কং-তিনোতে। সেখানেও সিপিএম নেই। ভোটের সময় হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠা আর বাকি সময় ঝিমুনিতে সময় অতিবাহিত করলে এ জিনিস হবেই।


    কাজেই সংগঠন মজবুত করা জরুরি। নির্বাচনমুখী রাজনীতি একটু তাতে নাহয় কমই হল।

  • Ranjan Roy | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২৭102849
  • "ভোটের সময় হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠা আর বাকি সময় ঝিমুনিতে সময় অতিবাহিত করলে এ জিনিস হবেই।

    কাজেই সংগঠন মজবুত করা জরুরি। নির্বাচনমুখী রাজনীতি একটু তাতে নাহয় কমই হল।"

    --এলেবেলের সঙ্গে এই প্রথম ১০০% একমত। 

    শ্রমিক শ্রেণীর পার্টি, কিন্তু চারটে শ্রমবিরোধী আইন নিয়ে কোন আন্দোলন নেই। কৃষক আন্দোলনটির গতিপ্রকৃতি বুঝতে না পেরে আমরা শুধু সমর্থনে পাশে দাঁড়ালাম। তার সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলন হল না। এমন সুযোগ হেলায় হারালাম।

    ওই আন্দোলন করলে আগামী নির্বাচনে কিছু চান্স আছে। তা না করে "এবার রামে পরের বার বামে" স্বপ্নদেখায় আম ও ছালা দুইই যেতে বসেছে।

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২৮102850
  • @এলেবেলে


    আপনার কথার সাথে এবারে সম্পূর্ণ সহমত (প্রেডিকশন নিয়ে না হলেও)। সংগঠন, যেটা কিনা বামেদের শক্তি ছিল, সে আজ ভ্যানিশ।


    শুধু একটাই আপত্তি জানালাম, রোগীদের সচরাচর তুচ্ছতাচ্ছিল্য আমি করি না। সরকারি হাসপাতালে রোগিদের যেরকম নিজেদের চিকিৎসার প্রতি অবহেলা দেখি, তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে যাই মাঝেমধ্যে - যদিও, সেই মুহূর্তেও তাঁদের সমস্যাগুলোর কথা মাথায় রাখা উচিত, তবু খুব রাগ হয়ে যায়, কেননা ক্যানসারের চিকিৎসায় মাঝে মাসতিনেক বাড়ির সমস্যা বলে গরহাজির থাকলে ডাক্তার হিসেবে খুব অসহায় বোধ হয়। এই রাগটা আমার বাড়ির লোক হলেও করতাম। এটা আমার তরফে সাফাই বা ডিসক্লেইমার।  

  • Kallol Dasgupta | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৪২102851
  • সত্তরের মূল্যায়ণ নিয়ে মাথা ঘামাইনি। সিপিএমের অফিশিয়াল স্ট্যান্ড নকশালদের নিয়ে ঐরকমই। আপনি অন্য রকম ভাবেন, সেটা খুবই আনন্দের কথা। 

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৪৬102852
  • @ কল্লোলদা, আমি তো অফিসিয়াল লোক নই। সদস্য তো দূরের কথা, কুণ্ঠাহীন সমর্থকও সম্ভবত নই।

  • lcm | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৫৩102853
  • কোভিড শাটডাউন সূত্রে অনেক পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে আবার যোগাযোগ হয়েছে, নান জায়্গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আবার নিজেদের খোঁজখবর নিচ্ছি। কয়েকজন কলকাতা শহরের, কয়েকজন জেলার। বেশির ভাগই পারিবারিকভাবে দীর্ঘদিনের বাম ভোটার, দুএকটি পরিবারে পার্টি মেম্বারও ছিল।
    তো একটা জিনিস খেয়াল করলাম আসন্ন রাজ্য ভোট নিয়ে (যদিও খুবই ছোট স্যাম্পেল), শহরের বন্ধুরা বাম-কং ফ্রন্ট নিয়ে আশাবাদী এবং মনে করছেন লড়াই হবে ত্রিমুখী। জেলার বন্ধুরা মনে করেন লড়াই হবে দ্বিমুখী।
    এখানে এলেবেলে, বিষান এবং অন্যান্যদের আলোচনায় একইরকম মনে হল। অবশ্য ভোটের ফলাফল বেরোলে বোঝা যাবে।

  • জয়র্ষি | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:১৮102854
  • কী পরিস্থিতি! আলোচনা শুরু হলো কোথায়, শেষ হলো কোথায়!

  • দেবাশীষ জানা | 150.107.215.121 | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২১102893
  • সম্পূর্ণ একমত। 

  • santosh banerjee | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:১৩103021
  • কোনো প্যাচ পয়জার নেই ।..কোনো কিন্তু যদি নেই ।..বিজেপি আর এই ছোটোলোক মহিলা কে তাড়াতে হবে !!এটা আশু কর্তব্য , এই দুটোই বিপজ্জনক !!! ভোট দেব বাম বাক্সে !!!!

  • Tapas Das | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:৫৬103022
  • বাম বাক্সে ছোটলোক বিরোধী ভোট দেয়ার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করার জন্য অভিনন্দন। 

  • Somnath Roy | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৩৭103025
  • একটা রাজনৈতিক লেখার শিরোনাম ' ডিমিট্রিভ পড়িনি'! আরে বাবা পড়িনি শিরোনামে লেখা এবং সেই নিয়ে তর্ক চালানোর বদলে ডিমিট্রিভ পড়ে নেওয়া বেটার কাজ হত না? সমাজ মাধ্যম এবং বিজেপি মিলে এমন একটা ন্যারেটিভ জন্ম দিয়েছে যে পড়াশুনো না করাটাকেও লোকে জাস্টিফাই করে থাকে!

  • Somnath Roy | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৩৮103026
  • * ডিমিট্রভ*

  • এলেবেলে | 202.142.96.58 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:৫৪103028
  • আপনি বিশ্বাস করেন যাঁরা পুরনো শিক্ষিত বাম তাঁরা দিমিত্রভ পড়েননি! তাঁরা দিস্তে দিস্তে এসব পড়েছেন এবং খোলাখুলি ছোটলোকদের চিহ্নায়িত করতে পেরেছেন।

  • ছোটলোক মহিলা? | 2402:3a80:a2b:ac1e:0:61:9ec9:7101 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৪৪103033
  • @ সন্তোষ ব্যান্যার্জি


    'ছোটলোক মহিলা' বলাটা দারুণ বড় মনের পরিচয় বটে। এছাড়াও বলেন বড়লোক মহিলা হলে কেন ভাল হত যদি বুঝিয়ে বলেন। মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতা করুন না, কিন্তু ছোটলোক মহিলা বলে গাল দেওয়াটা যদি বুঝিয়ে দেন। বিশেষ করে একজন স্বঘোষিত বামপন্থী হিসেবে আপনি ছোটলোক কথাটা গালযোগ্য মনে করেন? 

  • dc | 2405:201:e010:503f:8d77:7c32:8c15:f0eb | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:০৪103034
  • ছোটলোক, নীচু জাত - এই সব কথাগুলো বলতে পারলে বেশ একটা আত্মপ্রসাদ তৈরি হয় আর কি। 

  • Ramit Chatterjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১০:৩৬103035
  • @এলেবেলে ভোট তো এসে গেল, আপনি বলেছিলেন একটা জেলা ভিত্তিক ক্লিয়ার কাট প্রেডিকশন দেবেন, দিন এবার।

  • Ramit Chatterjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১০:৪১103036
  • বাম কে ভোট দিলে কিছু না হোক সুবিধেই তো হওয়ার কথা, কারণ তিনো বিরোধী ভোট যদি ভাগ হয়, তবে রামের ভাগে কম পড়বে। বামের ভোট বামেই দিন, এইটা বল্লেই হবে।


    আর তবে ঠাকুরবাড়ি, তোহা , আব্বাস এইসব কে রাজনীতি তে আনার বি রো ধী তা করছি। ধর্ম ও রাজনীতি আলাদা থাকা বাঞ্ছনীয়।

  • Chayan Mukherjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:১৩103037
  • লেখকের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত। 

  • এলেবেলে | 202.142.71.214 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:৫২103038
  • রমিত, প্রেডিকশন পয়লা এপ্রিল। বিধানসভা সিট ধরে ধরে। এখন বড়জোর জেলাভিত্তিক হতে পারে।

  • Ramit Chatterjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৪১103041
  • বেশ , অপেক্ষায় রইলাম। 


    তবে পয়লা এপ্রিল এর একটা সুবিধা আছে, না মিললে বলে দেওয়া যাবে, জাস্ট জোকিং  :-)

  • Ramit Chatterjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৪৪103043
  • জেলা ওয়াইস একটা নামিয়ে দিন না, কি আছে এপ্রিল ভীষন দূর দূর মনে হচ্ছে। চেঞ্জ তো এদিক ওদিক হতেই পারে। আপাতত যা স্ট্যান্ডিং সেই অনুযাই নামান না। টিভিতে  আর খবরে তো সব ঝোল টেনে লেখা

  • এলেবেলে | 202.142.96.76 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:৩১103044
  • রমিত, যাবতীয় দুয়ো আমার ওপর বর্ষিত হোক। আমি কেবল আপনার কথায় এই জেলাওয়াড়ি প্রেডিকশন করছি। সিদ্দিকির সঙ্গে জোট হবে সেটা ধরে নিয়ে।

     জেলাআসনবিজেপিতৃণমূলজোট
    দার্জিলিং
    কুচবিহার
    আলিপুরদুয়ার
    জলপাইগুড়ি
    উত্তর দিনাজপুর
    দক্ষিণ দিনাজপুর
    মালদহ১২
    মুর্শিদাবাদ২২২০
    নদীয়া১৭১২
    ১০উত্তর ২৪ পরগণা৩৩১৪১৫
    ১১দক্ষিণ ২৪ পরগণা৩১১৯১০
    ১২হাওড়া১৬
    ১৩হুগলি১৮১১
    ১৪পূর্ব বর্ধমান১৬
    ১৫পশ্চিম বর্ধমান
    ১৬পূর্ব মেদিনীপুর১৬১০
    ১৭পশ্চিম মেদিনীপুর১৫
    ১৮ঝাড়গ্রাম
    ১৯বীরভূম১১
    ২০বাঁকুড়া১২
    ২১পুরুলিয়া
    ২২কলকাতা১১১১
    মোট২৯৪১৪৬১০৩৪৫

     

    যদিও সিদ্দিকি বেগড়বাঁই করতে শুরু করেছেন। 

     
  • Ramit Chatterjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৩৪103045
  • ধন্যবাদ। 


    মেদিনীপুর , বীরভূম এগুলো পরে আরও চেঞ্জ হতে পারে। উত্তর 24 পরগনা বিজেপি কি এতটা পাবে ? দেখা যাক। জোটের বড় জয় বলতে গেলে শুধু তবে মুর্শিদাবাদ।

  • Ramit Chatterjee | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৩৭103046
  • সিদ্দিকি কতটা ফ্যাক্টর হতে পারবে এই বার ? মিমও তো তেমন বড় কিছু করতে পারবে বলে আপাতত মনে হচ্ছে না। তবে মিম সিদ্দিকি জোট হতে পারে ।

  • এলেবেলে | 202.142.96.59 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:১৮103050
  • সিদ্দিকি মুসলমান ভোটে ভাগ বসাবে। ফলে দুই চব্বিশে বিজেপি বেশ কিছু সিটে মার্জিনাল ভোটে জিততে পারে। কং মালদা-মুর্শিদাবাদ-উত্তর দিনাজপুর মিলিয়ে ২৮টা আসন পেতে পারে। দার্জিলিঙে অন্যান্য বলতে গোর্খা মুক্তিমোর্চা যদিও সেটা জোটে ধরা হয়েছে। হ্যাঁ, সিদ্দিকি মিমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। 


    আর কোনও ব্যাখ্যা আপাতত দেব না!

  • lcm | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৭103052
  • এই তো, এলেবেলে একটা এস্টিমেট দিয়েছেন। এরকম ফলাফল হলে মনে হচ্ছে হবে, বহুদিনের শখ একবার তিনো-সিপিএম জোটটা দেখার।

  • Du | 47.184.33.160 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:০০103053
  • ভোট যতই একটা ঘোড়ার রেসের চেহারা নিয়ে নিক বিগ মানি আর মিডিয়ার নেতৃত্বে, আদতে কিন্তু ভোট ই ফলের কারন উল্টো টা নয়। অর্থাৎ কেউ জিতবে শুনে তাকে দিতে হবে এমনটা নয়।


    ভোট দেবেন তাকেই যার সঙ্গে আপনি একমত । ভোটে জেতে একজন কিন্তু কে কত ভোট পেলো সেটা রয়ে যায় তাদের পলিসি বা জনপ্রিয়তার প্রমাণ হয়ে। যে জিতল সে ও সেটা মনে রেখেই চলে। সে ক্ষেত্রে আপনার ভোট দুবার হারছে যদি আপনার প্রার্থী যাকে ভোট দিয়ে ছিলেন মরিয়া হয়ে সে হেরে যায়। আর সে যদি জেতে তাও আপনি দুবার হারবেন। কারণ প্রথমত সে আপনার কথা বলবেনা। দ্বিতীয় ত যাকে হারাতে চাইছেন সে ও আপনার ই ভোটের ভরসায় পরের ভোটে আপনার ভোটের প্রার্থী হচছে।


    ভোট দিন নিজের ইচ্ছায়। নয়তো এত খর্চা করে ইলেকশন করা অর্থহীন। সরকারী টিভির যুগে মনে আছে স্লট পেতেন সব প্রার্থী বক্তব্য রাখার। বহুদলীয় গণতন্ত্রের এটাই স্পিরিট। তা না হলে বিলেত আমেরিকার মত বাইনারিতে বন্দদী হতে হবে।


    সব পার্টি তাদের প্রার্থী কেই ভোট দিতে বলুক। 

  • কিন্তু | 37.120.147.90 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:১৮103055
  • দিমিত্রভ কারে ভোট দিতে কইচে হেইডাই মালুম হইল না

  • baam | 2405:201:c007:80fd:7c9b:4a39:2915:953f | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:১৫103067
  • এলেবেলের প্রেডিকশন খারাপ নয়। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:

No Vote to BJP, Vote for left, Naxals for Mamata, CPM for BJP, CPM Against TMC, Vote for TMC, Mamata Bannerjee, BJP CPM Alliance, CPM Congress Alliance, Naxal TMC Alliance
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন