এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা

  • বেঙ্গল কেমিক্যাল: স্বপ্ন বিকিয়ে যায়

    রবীন মজুমদার
    আলোচনা | ০৩ আগস্ট ২০২১ | ৫০৯২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • আজ ২রা আগস্ট, ২০২১, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্মদিন। ২০১০ তাঁর সার্ধশতবর্ষ পেরোনোর পর বাঙালি আবার বিস্মরণের শিকার হয়েছে। সারা জীবনের আত্মত্যাগ, বিপুল সামাজিক ও দেশব্রতী কর্মকান্ডের পর এই সার্থক বিজ্ঞানীর সঠিক মূল্যায়ন হয় না। সমসাময়িক অন্যান্যদের নিয়ে তাও যেটুকু চর্চা, প্রফুল্ল চন্দ্রকে নিয়ে সেটুকুও অনুপস্থিত। তাঁর প্রতিষ্ঠিত এ দেশের প্রথম ভারী রাসায়নিক শিল্পের কারখানা সরকারি খাতায় দেউলিয়া ঘোষণা হয়েছে, তার বিকিয়ে যাবার দিনও সমাগত সেই কথা মনে রেখে আচার্যের ১৬২তম জন্মদিবসে গুরুচন্ডা৯ প্রকাশ করছে এক গুচ্ছ প্রবন্ধ। এই আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি, এই আমাদের দীর্ঘশ্বাস!
    আজ, ২রা আগস্ট, ২০২১, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের ১৬১ তম জন্মদিন। অনেকেই অনেকভাবে তাঁকে স্মরণ করছেন।
    কিন্তু আমাদের এইসব পুজো এবং ব্রত পালনের মত জন্মদিবস পালনের ফাঁক ও ফাঁকির ফোকর গলে হারিয়ে যায় প্রফুল্লচন্দ্রের স্বপ্নের সব নির্মাণ। বিশেষ করে বেঙ্গল কেমিক্যালের কথাই আজ একটু বলি।
    প্রফুল্লচন্দ্র ছিলেন স্বপ্নদর্শী ; স্বপ্ন দেখতেন অনেক। কল্পনা তাঁর ডানা মেলে উড়ত ইতি উতি। কিন্তু তিনি সেগুলোকে উড়ে গিয়ে ফুরিয়ে যেতে দেন নি বরং রীতিমত পরিকল্পনা ভাঁজতেন কীকরে সেগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যাবে।
    অকৃতদার প্রফুল্লচন্দ্রের ছেলে- মেয়েও ছিল!
    বেঙ্গল কেমিক্যাল ছিল তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বপ্ন, তাঁর ধ্যান জ্ঞান জুড়ে ছিল সেই স্বপ্নের আসন।তাঁর নিজের কথায়, ছাত্ররা তাঁর ছেলে আর বেঙ্গল কেমিক্যাল মেয়ে।
    তা সেই মেয়েকে তিনি তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন। পিতার এবং মাতার ভূমিকা সংহত হয়েছিল তাঁর একার মধ্যে। তাঁরই পরিচর্যায় সেই মেয়ে হয়ে ওঠে সুন্দরী অথচ বুদ্ধিমতী – স্বয়ংসম্পূর্ণ, স্বাবলম্বী, সবুজ।চারপাশের মানুষের গৃহস্থালি, পানীয় জল, শিক্ষা– স্বাস্থ্য– কৃষি সব কিছুতেই তার পরশ পায় পড়শী মানুষ।ভিতর থেকে সবুজ হয়ে উঠে সমসাময়িক মানুষের বিবিধ চাহিদা পূরণ করেও ভবিষৎ প্রজন্মের শিক্ষা– পরিবেশের ভিত তৈরি করা, এসবই ছিল বেঙ্গল কেমিক্যালের বৈশিষ্ট্য।শতাব্দী পারের নব্য জ্ঞানে আজ আমাদের বোঝার কথা যে এইসব হলো সবুজ শিল্পেরই বৈশিষ্ট্য।
    এক লাফে এমনি এমনি এমনটা হয় নি। পেছনে ছিল, শুধু স্বপ্ন নয়, অনুসন্ধান, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং পরিকল্পনা।
    মাস মাইনে থেকে জমানো সামান্য মূলধন সম্বল করে, নিজেরই ভাড়াবাড়িতে পত্তন হয় (১৯০১), বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস ওয়ার্কস (BCPW) এর।পরে রূপান্তরিত হয় অংশীদারী লিমিটেড কোম্পানিতে - বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড। দীর্ঘ চার দশক ধরে অভিভাবক হিসেবে প্রফুল্ল চন্দ্রের তত্বাবধানে সফলতার নতুন নতুন উচ্চতায় ওঠে ভারতের প্রথম নিজস্ব ভারী রাসায়নিক ও ঔষধ শিল্প।
    আমরা বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণ হিসেবে গণ্য করি যে সময়কে, প্রফুল্লচন্দ্র তারই এক প্রতিভূ।ইউরোপের নবজাগরণের সঙ্গে তুলনীয় নাই হতে পারে আমাদের নবজাগরণ, হওয়া উচিত নয় এবং সম্ভবও নয়।
    কিন্তু বিজ্ঞান-কারিগরি ও শিল্পের আমূল পরিবর্তন কে বাদ দিয়ে কোনো রকম নবজাগরণের কথাই ওঠে না।সেদিক থেকে দেখলে নিজেদের মত করে বিজ্ঞান ও কারিগরি জ্ঞানের আত্তীকরণ করে, নিজেদের সমাজ সংস্কৃতি ইতিহাসের সঙ্গে সুসমঞ্জস ভারী শিল্পের পথিকৃৎ বলতে হয় প্রফুল্লচন্দ্রকেই। তিনি যেন প্রাচ্যের পার্কিন (স্যার উইলিয়াম হেনরি পার্কিন, কৃত্রিম জৈব রঞ্জক পদার্থের সংশ্লেষণ পদ্ধতির প্রথম উদ্ভাবক এবং শিল্পপতি, ইউরোপীয় শিল্প বিপ্লবের নতুন ঘরানার প্রতিনিধি - বিজ্ঞানী এবং শিল্পপতি)। কিন্তু না, আমাদের ভাবনায় নবজাগরণ আসতে পারে, 'স্বদেশী শিল্প' হতে পারে, কিন্তু 'পুঁজি ‘ ‘শিল্প ' এসব হতে পারে না।আমরা বরং আক্ষেপ করেছি, এ হে, প্রফুল্লচন্দ্রের মত একজন ঋষিতুল্য মানুষ কিনা পুঁজিপতি বনে গেলেন!
    একটু বিপথে চলে যাচ্ছি বোধহয়।বেঙ্গল কেম-এর মত একটা উদ্যোগ যে শুধুমাত্র একটি উৎপাদনশিল্প, একটি কারখানা নয়, তার উপযোগিতা যে শুধু লাভ ক্ষতির হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না, সেটা আমরা বোঝার চেষ্টা করলাম না! প্রফুল্লচন্দ্রের মৃত্যুর পরেও কিছুদিন রমরমা বজায় ছিল।কিন্তু তারপরেই রুগ্নতা প্রকাশ পেতে থাকে, ক্রমশ প্রকট হয়। অবশেষে (১৯৮০-৮১) কেন্দ্রীয় সরকার এটিকে পুরোপুরি অধিগ্রহণ করে নতুন নামে - বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড (BCPL)- অভিহিত করে। সম্প্রতি দু তিন বছর ধরে খবর, 'অলাভজনক' এই সংস্থার অব্যবহৃত জমি সম্পদ ইত্যাদি বিক্রি করে দেওয়া হবে, কোম্পানির বিলগ্নিকরণ করা হবে। সরকার আর বোঝা টানতে রাজি নয়।' নবরত্ন’ বলে একসময় যেসব উদ্যোগ ঘিরে গর্ব করা হতো, তারাও এই বেসরকারিকরণ - বিলগ্নিকরণের তালিকাভুক্ত! কাজেই বি সি পি এল এর কর্মচারীরা যতই হাই কোর্টে মামলা করে আপাত স্বস্তি লাভ করার মতো অন্তর্বর্তী আদেশ লাভ করুন, যতই কিছু মানুষ মিছিল মিটিং পত্রাঘাত করুন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার যেন অবিচলিত। বাজারে নিলামে উঠেছে বি সি পি এল নামক এক অলাভজনক সরকারি সংস্থা। আসলে নিলামে উঠেছে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের
    মেয়ে, তাঁর স্বপ্ন, তাঁর ভালোবাসা। নিলামে উঠেছে আমাদের অস্তিত্বের, স্থিতিশীলতার, আত্মনির্ভরতার ভিত্তি।এইসব আবেগ, গর্ব স্বপ্নের তো কোন বাজারমূল্য নেই, যেমন নেই কিছু পরিবেশ পরিষেবার, ঐতিহ্যের, সংস্কৃতির; অন্তত, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
    তেমনটা অস্বাভাবিক নয়।কিন্তু এই কলকাতার, এই বাংলার যেসব সারস্বত প্রতিষ্ঠান আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা অবদানে জন্ম নিয়েছে, গড়ে উঠেছে বা পুষ্ট হয়েছে, সেই প্রেসিডেন্সি কলেজ ( এখন বিশ্ববিদ্যালয়), ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি, কলকাতা বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি – প্রতিষ্ঠানগতভাবে তাঁদের বক্তব্য বা অবস্থান কেন এসময় টের পাওয়া যাচ্ছে না?কোথায় তাঁরা?
    ব্যক্তির বা সাধারণ মানুষের আবেগ খুবই মূল্যবান, কিন্তু বেঙ্গল কেমিক্যালের তো চাই বিশেষ বিশেষ দক্ষতা ভিত্তিক বৌদ্ধিক ইনপুট।প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগেই সেসব পাওয়া সম্ভব।
    তা যদি না হয়, প্রতুলদার ( প্রতুল মুখোপাধ্যায়) গান – আলু বেচো ছোলা বেচো…. ও বন্ধু … তোমার স্বপ্ন বেচো না…) শুনে বুকের কন্দরে চিন চিন করলেও স্বপ্নেরা বিকিয়েই যাবে, নিলামে উঠবে! নতুন শব্দবন্ধে জব্দ হতে থাকবে নিজস্বতা, জাতি বা আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য বা স্বাধীনতা।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৩ আগস্ট ২০২১ | ৫০৯২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • প্রতিভা | 2401:4900:104c:2889:0:5c:cf52:3901 | ০৩ আগস্ট ২০২১ ০৮:০০496351
  • আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ওপর লেখকের দীর্ঘ দিনের গবেষণামূলক ও বিশ্লেষণী কাজ বার বার মুগ্ধ করে। আপনার নিরলস প্রচেষ্টা জয়ী হোক ! 

  • dc | 122.174.182.78 | ০৩ আগস্ট ২০২১ ০৯:১৬496355
  • সরকারের উচিত অবিলম্বে বেঙ্গল কেমিকাল আর অন্যান্য ব্যবসা বিক্রি করে দেওয়া। সরকারের কাজ সরকার চালানো, ব্যবসা চালানো না। 

  • Ranjan Roy | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৪:০৯496361
  • ডিসি,


    সরকারের কাজ তো অনেক কিছু। তারমধ্যে বাজারকে ডিমান্ড বাড়িয়ে সচল রাখাও। সে আলাদা চর্চার বিষয়।


    কিন্তু জীবন বীমা এবং বেঙ্গল কেমিক্যাল গেইল ইত্যাদি সংস্থা যদি লাভে চলে তাহলে তাদের বিক্রি কেন করতে হবে? এই যুক্তিতে কী রিজার্ভ ব্যাংককেও বিক্রি করা উচিৎ?


    আজকে গোটাবিশ্ব জুড়ে কোভিড মহামারীর হাল দেখে হেলথ কেয়ার ব্যাপারটা সরকারের দায়িত্বে আনার দাবি উঠছে না কি? শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্যের যোগান নাগরিকদের জন্যে সুনিশ্চিত করা সরকার চালানোর মধ্যে পড়ে না? যত রিসার্চ ইন্সটিট্যুট চালানোকে কী বলবেন? ব্যবসা করা নাকি সরকার চালানোর অঙ্গ?

  • dc | 122.174.182.78 | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৫:২১496365
  • রঞ্জনদা, বাজারে ডিম্যান্ড বাড়িয়ে সচল রাখার কাজ একেবারেই সরকারের না। ওটা একেবারেই বাজারের কাজ, বা বাজারে যারা পার্টিসিপেট করছে তাদের কাজ। কোন জিনিসের ডিম্যান্ড যদি কমে যায় তো তার বাজার আস্তে আস্তে কমে গিয়ে এক সময়ে উঠে যায়। আবার কোন নতুন জিনিস বা সার্ভিস তৈরি হলে তার নতুন বাজার তৈরি হয়। এর মধ্যে সরকারের নাক গলানোর কোন দরকার নেই। 


    বেঙ্গল কেমিকাল লাভে চললেও অবশ্যই সরকারের সেটা বিক্রি করে দেওয়া উচিত, কারন ব্যবসা করা সরকারের কাজ না। ওটা প্রাইভেট প্লেয়ারদের করা উচিত। 


    রিজার্ভ ব্যাংক হলো গিয়ে সেন্ট্রাল ব্যাংক, যা সরকারের নিজের অংশ। সরকার নিজের অংশ বিক্রি করতে পারেনা। 


    শিক্ষা আর স্বাস্থ্য অবশ্যই সরকারের দেখা উচিত, অন্তত একটা স্টেজ অবধি খুব কম দামে শিক্ষা আর স্বাস্থ্যর ব্যবস্থাও করা উচিত :-)

  • হেহে | 2a0b:f4c2:1::1 | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৫:৩১496366
  • লোকের হাতে টাকার জোগান বাড়িয়ে মার্কেট সচল রাখা সরকারের কাজ না। কিন্তু কিছু গাড়ল ক্যাপিটালিস্ট দেশ অর্থনীতিবিদদের ভুল পরামর্শে করোনার সময় এই রাস্তা ধরেছে।

  • Anindita Roy Saha | ০৩ আগস্ট ২০২১ ১৬:৩২496369
  • রাজনৈতিক তরজা নয় , বেঙ্গল কেমিকাল (ও প্রফুল্লচন্দ্র) সম্পর্কে একটি সুন্দর প্রতিবেদন। 

  • Ranjan Roy | ০৩ আগস্ট ২০২১ ২৩:১৪496377
  • ডিসি,


    " বাজারে ডিম্যান্ড বাড়িয়ে সচল রাখার কাজ একেবারেই সরকারের না। ওটা একেবারেই বাজারের কাজ, বা বাজারে যারা পার্টিসিপেট করছে তাদের কাজ"।


    ভাই, আমি অর্থনীতির সেকেল ছাত্র, এবং নিম্নমেধার। কেইন্সের 'জেনারেল থিওরি' কিন্তু ঠিক উল্টোটাই বলে অর্থাৎ  বাজার  না পারলে এটা সরকারের কাজ।   কারণ বাজার ভগবান নয়, তার কোন ইনভিজিবল হ্যান্ড নেই।মেলাবেন তিনি মেলাবেন আশ্বাস ব্যর্থ হয়ে যায়। 


    তাই ২০০৮-৯ সালে লেম্যান ব্রাদার্স পরবর্তী ক্রাইসিসে সেই ফেডারেল ব্যাংক অথবা আপনার ভাষায় সরকারকে নাক  গলিয়ে টেনে তুলতে হোল।


    অমর্ত্য সেন, কৌশিক বসু, রঘুরাম রাজনেরা এই বোধবুদ্ধি থেকেই ভারত সরকারকে বলছেন ডাইরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফারের মাধ্যমে বাজারে এফেক্টিভ  ডিমান্ড তৈরি করতে। অল্পকালে ফিস্ক্যাল ডিসিপ্লিনকে গোলি মেরে সম্ভাবিত ইনফ্লেশনকে মধ্যকালে উৎপাদন বাড়িয়ে ব্যালান্স করতে। কারণ উন্নত ইকনমির বাজার আর থার্ড ওয়ার্ল্ডের বাজার আলাদা, মোর ডিমান্ড ড্রিভেন।


    সেসব কাটান দিলাম। আপাতত পিসি রায়ে মনোনিবেশ করাই সঙ্গত। 

  • Ramit Chatterjee | ০৪ আগস্ট ২০২১ ০০:৫৫496385
  • একটা জিনিস বোঝার দরকার আছে,  ব্যবসার আকারে চললেও সবকিছু ব্যবসা নয়। কিছু কিছু জিনিস সার্ভিস। এই যেমন গাড়ল দেশের কথাই বলি। কিছু দিন আগেই কথা উঠছিল usps বা মার্কিন পোস্টাল সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হোক কারণ সেটি লসে চলছে। যেহেতু এরা বিভিন্ন কাজ প্রতি চার্জ করে থাকে কেউ কেউ ওটাকে ব্যবসা ভাবতে পারেন। কিন্তু এটা ভীষন এসেনশিয়াল সার্ভিস যার সুবিধা নিউ ইয়র্কের লোকেরা ততটা না পেলেও আমেরিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য এটা ডেলিভারি র একটা বিশাল মাধ্যম। এই দূর দুরান্তে ডেলিভারি করা মোটেও সস্তা হয় না সরকারের পক্ষে তবুও করে কারন প্রাইভেট প্লেয়ারদের খেলতে দিলে তারা আইদার ওই মাঠে খেলতে যাবেই না বা ভীষন টাকা চার্জ করবে যা এফোর্ড করা মুশকিল যার ফলশ্রুতিতে ওইসব জায়গায় ডেলিভারি বন্ধ হওয়ার সামিল হবে।


    তেমনি bsnl ও একটা সার্ভিস, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যংক গুলোও একটা সার্ভিস। ওই ব্যংক গুলো না থাকলে যে সব জায়গায় ব্যবসা করা লাভ জনক না, সেখানে কেউ ব্যবসা করতে যাবে না। তেমনি বেঙ্গল কেমিক্যাল একটা সার্ভিস হতে পারে যেখানে ন্যায্য মূল্যে সঠিক জিনিস পেতে পারে মানুষ, নকল স্যানিটাইজার, ফেক আয়ুর্বেদিক ফিনাইল এসব কিনে না ঠকে সঠিক জিনিস স্বচ্ছ ভাবে কিনে ক্রেতা উপকৃত হবে।

  • সুমিত চক্রবর্তী | 2401:4900:314e:51f3:9491:a2af:f285:e3bf | ০৪ আগস্ট ২০২১ ০৯:৫৮496395
  • লেখাটি পড়ে ভালো লাগল।তবে 'প্রাচ্যের পার্কিন' শুনে ভালো লাগল না।তুলনামূলক আলোচনা কোনো বিষয়কে বুঝতে সাহায্য করে।কিন্তু কেউ 'প্রাচ্যের সেক্সপিয়ার',কেউ 'প্রাচ্যের নেপলিয়ন' এই শব্দবন্ধের মধ্যে পশ্চিমমুখি দীনতাই যেন ফুটে ওঠে। 

  • সুমিত চক্রবর্তী | 2401:4900:314e:51f3:9491:a2af:f285:e3bf | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১০:২২496397
  • কেউ একজন যথার্থ বলেছেন,'ব্যবসা করা সরকারের কাজ না।সরকারের কাজ প্রশাসন চালান'।তবে একটা জিনিস উনি বলতে ভুলে গেছেন।একটা ব্যবসা লাভজনক হয়ে ওঠা অব্দি সরকারের চালান উচিত।যখনই সেটা লাভজনক হবে সরকারের উচিত কোনো 'ঘনিষ্ঠ' পুঁজিপতিকে সেটা দিয়ে দেওয়া,যাতে তিনি ব্যবসার মাধ্যমে জনগণের সেবা,যেমন কর্মসংস্থান ইত্যাদি করতে পারেন।আর জনগণের টাকা যখন তাঁরা ঋণ নেবেন ব্যঙ্ক থেকে তখন ঋণ মুকুব করে দিতে হবে কারণ তাঁরা জনগণের সেবার উদ্দেশ্যে সেটা নিয়েছেন।আর যখন তাঁরা কর্মচারিদের টাকাপয়সা ঝেড়ে দেবেন, তখন, পুলিশ আমলা বিচারপতি জেলখানা সহযোগে প্রশাসন চালিয়ে বিশৃঙ্খলা চালান কর্মচারিদের সায়েস্তা করাও সরকারের কাজ।আর পুঁজিপতিদের যখন জমি দরকার হবে প্রশাসন চালিয়ে জমি দখল করে দেওয়াটাও সরকারের কাজ।

  • Kallol Dasgupta | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১০:২৬496398
  • সেভাবে ধরলে ব্যাংক চালানোও সরকারের কাজ নয়। কিন্তু, সরকারটা কে ? মানুষের নির্বাচিত করা কিছু লোকজন যাদের মানুষ ভোট দিয়ে পাঠিয়েছে সরকার গড়তে কিছু প্রতিশ্রুতির উপর ভিত্তি করে। সরকার যেহেতু মানুষের কাছে দায়বদ্ধ, তাই তার ভালোমন্দ দেখার দায়িত্বও সরকারের। এটা সরকারের কাজ ওটা নয় এরকম কিছু হয় না। ব্যবসা চালানো সরকারের কাজ নয়, আর ব্যবসা ডুবলে তাকে পাব্লিকের পয়সা দিয়ে "উদ্ধার" করা সরকারের কাজ, এসব ঢপবাজি আজ আর চলে না। মানুষ সুস্থভাবে খেয়ে পরে মাথার উপর ছাদ নিয়ে নিরাপদে বাঁচবে - এটা নিশ্চিত করাই সরকারের কাজ। তার জন্য যা যা করতে হয়ে সবই সরকারের কাজ। বাজার তো তৈরী করা বিষয় মাত্র ৩০০ বছরের। তার আগে ৩০ লক্ষ বছর ধরে মানুষ মানুষ হয়েছে, প্রায় ১০হাজার বছর ধরে "সভ্য" হয়েছে। তাতে "বাজার", "পুঁজি" কোনটাই লাগে নি।   

  • Somenath Guha | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১০:৪৮496399
  • এখন অবধি এমন পুঁজিপতি তো দেখলাম না ব্যবসা করে জনগণের সেবা করেছে। সেবামূলক পুঁজিবাদ বা philanthropic capitalism বিল গেটসের সৌজন্যে ইদানিং ভালো খাচ্ছে। এই অক্সিমরণ এর আড়ালে সে আগে যা উপার্জন করত তার কয়েক গুণ বেশি এখন করছে। আমাদের আম্বানি সাহেব ইই লাইন ধরছেন। উনি নিদান দিয়েছেন 2041 এর মধ্যে বৈষম্য কমে যাবে।

  • Subhro Bhattacharyya | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১০:৫২496400
  • শুধু বেঙ্গল কেমিক্যাল এর হিসেবেই যদি বলি তো এই কোভিড জমানায় যখন বিভিন্ন স্যানিটাইজার বা অক্সিজেনের চাহিদা অনেক বেড়েছে তখন এইরকম কোনো সরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তা কি দেশবাসীর জন্য সঠিক দাম ও মানের তৈরী করা যেত না? এরকম আরো অনেক কিছুই করা যেতে পারে বা পারত যাতে প্রতিষ্ঠানের উন্নতি হয় এবং গরীব মানুষ এর সাধ্যের মধ্যে তা আনা যায়। সদিচ্ছার অভাব থাকলে অবশ্য কিছুই করা যায় না। মিথ্যাচার করে ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সব কিছু বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া ই কি সরকারের একমাত্র কাজ?

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১১:৩৯496401
  • যেটুকু আমার নিজের দেখা: ক্যাপিটালিস্ট দেশ গুলোতেও সেখানের গভট গুলো সবকিছু বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়না। শিক্ষা স্বাস্থ্য- চাইল্ড কেয়ার -ওল্ড এজ কেয়ার শুধু নয়। সোশ্যাল সিকিউরিটি তো ছেড়েই দিলাম। আরও  অনেক কিছুই সরাসরি কন্ট্রোল না করলেও ইনডিরেক্টলি কড়াভাবে কন্ট্রোল করে . যেমন সুপারমার্কেট গুলোতে ডিম্ , দুধ ময়দা-চিনি  এসব ডেলি নিডস গুলোর দাম শক্ত হাতে কন্ট্রোল করে যাতে সেগুলো ম্যাংগো লোকের আয়ত্তের মধ্যে থাকে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোথাও বেসরকারি হলেও সেগুলোর ভাড়া ইচ্ছেমতো বাড়াতে দেয়না। ওভার দা পিরিওড একটা ইনক্রিমেন্টাল ইন্ক্রিস এলাও করে। 


    সিঙ্গাপুর - যেটা নাকি গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম এর সাফল্যের টপ ক্লাস উদাহরণ , সেখানেও সরকার থেকে ফেয়ার প্রাইস সুপারমার্কেট চেন চালায় যাতে ডেলি নিডস জিনিসের দাম নাগালের মধ্যে থাকে।  পাশাপাশি গুচ্ছ গুচ্ছ প্রাইভেট সুপারমার্কেট ও দিব্যি ব্যবসা চালায়। কাউকে তো সেরকম নালিশ করতে দেখিনি। অবশ্য আমার দেখা খুবই সীমিত। 


    যেটা জানার ইচ্ছে : পুরোপুরি ব্যবসা মুক্ত সরকার বা ১০০-% মুক্ত-বাজার ইকোনমির উদাহরণ আছে কি যেটা সুকসেসফুলি চলছে -? 

  • dc | 122.174.192.72 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৩:০৭496404
  • রঞ্জনদা নিশ্চিন্ত থাকুন, আমি একেবারেই নিম্ননিম্নমেধা ছাত্র, মানে চিরকাল লাস্ট বেঞ্চির ছাত্র :)


    আর অন্য সবাইকে বলার এই যে আমি ক্যাপিটালিজম আর ফ্রি মার্কেট সমর্থন করি, আমার পোস্টও সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। আমি  ইন জেনারাল মনে করি সরকারের কাজ হলো রেগুলেটরি, ব্যবসা করা উচিত প্রাইভেট সেক্টরের অর্থাত ক্যাপিটালিস্টদের আর সরকারের উচিত সেই ব্যবসাগুলো বা সেই বাজারগুলো নিয়ন্ত্রন করা যাতে সেগুলো যতোটা সম্ভব ফেয়ার আর এফিসিয়েন্ট থাকে। কেন মনে করি সরকারের ব্যবসায়ে যাওয়া উচিত না? কারন সরকার একটা বুরোক্রেসি, সরকারি কর্মীরা কখনোই প্রাইভেট entrepreneur মতো ইনোভেটিভ আর অ্যাজাইল হতে পারবে না, প্রোডাক্টিভ হতে পারবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। যদি পারতো তো টয়োটা প্রোডাকশান সিস্টেম কোন দেশের সরকার উদ্ভাবন করতো, লিন বা অ্যাজাইল ফ্রেমওয়ারকও সরকার উদ্ভাবন করতো ইত্যাদি। এসব নিয়ে গাদাগুচ্ছের কেস স্টাডি আর পেপার আছে, গুগল করলেই পেয়ে যাবেন। আর কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ নিয়ে পোর্টার এর থান ইঁট মার্কা বইগুলো তো আছেই। 


    আরও একটা কারনে সরকারের ব্যবসা চালানো সম্ভব না, কারন ব্যবসা করার মূল উদ্দেশ্য প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশান, সেটা সরকার করতে পারেনা। আর সরকারের কখনোই কোন ক্ষতিজনক ব্যবসায়ে ইনভেস্ট বা সাহায্য করা উচিত না। লিভ অ্যান্ড লেট ডাই হলো সেরা পলিসি, ব্যবসায়ীর যা রিস্ক সব তার নিজের, সেইমতো ব্যবসা করবে। ২০০৮ এ যখন সিটিব্যাংক আর অন্য কিছু সংস্থাকে বেইলাউট করা হয়েছিল আর সরকার টু বিগ টু ফেল পলিসি আমদানি করেছিল, তখন অনেক ক্যাপিটালিস্টই আপত্তি জানিয়েছিল। আমার মতে যেকোন কোম্পানি, যতো বড়ো বা যতো ছোটই হোক না কেন, সেটার লাভ বা ক্ষতির দায়িত্ব শুধু তার ম্যানেজমেন্ট আর শেয়ারহোল্ডার এরই হওয়া উচিত। 


    আর সবার শেষে বড়ো করে ডিসক্লেমারঃ ওপরে যা কিছু লিখলাম সবই আমার ব্যক্তিগত মত। আমার পরামর্শ যদি কেউ নিতো তো এরকম পরামর্শ দিতাম। বাস্তবে কেউ আমার পরামর্শ নেয় না (ভাগ্যিস!) :-)


    অমিতবাবুকেঃ পুরোপুরি ব্যবসা মুক্ত সরকার বা ১০০-% মুক্ত-বাজার ইকোনমির উদাহরণ আছে কি যেটা সুকসেসফুলি চলছে -? 


    এরকম একটা ​​​​​​​সরকারও ​​​​​​​সারা ​​​​​​​পৃথিবীর ​​​​​​​কোথাও ​​​​​​​নেই। ​​​​​​​কারন ​​​​​​​পারফেক্ট ​​​​​​​ফ্রি ​​​​​​​মার্কেট একটি ​​​​​​​থিওরেটিকাল ​​​​​​​বস্তু, ​​​​​​​বাস্তবে ​​​​​​​তার ​​​​​​​যতোটা ​​​​​​​কাছে ​​​​​​​যাওয়া ​​​​​​​যায় ​​​​​​​সেই ​​​​​​​চেষ্টা ​​​​​​​করা ​​​​​​​উচিত ​​​​​​​(আমার ​​​​​​​মতে)। ​​​​​​​

  • Amit | 193.116.77.177 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৫:০১496406
  • সমস্যা এটাই যে কোনো কিছুকে যতই থিওরি বলা হোক , সেটা যদি কোথাও সুকসেসফুলি ইমপ্লিমেন্ট করা নাই যায় , উদাহরণ দিয়ে প্রুফ না করা যায় ,দিনের শেষে সেটা থিওরি থাকেনা , জাস্ট ওপিনিয়ন বা হাইপোথিসিস হয়েই রয়ে যায়। 


    এর মানে এই নয় যে তত্ত্বটা বা ওপিনিয়ন টা ভুল. কিন্তু প্রমান সাপেক্ষ। যতদিন না প্রমান হচ্ছে। 

  • dc | 122.174.192.72 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৫:২৯496407
  • অমিতবাবু ঠিক বলেছেন। পারফেক্ট ফ্রি মর্কেট একটি হাইপোথেটিকাল বস্তু, বাস্তবে তার যতো কাছাকাছি যাওয়া যায় ততো ভালো। যেমন ১৯৯০ সালে আমাদের দেশে লাইসেন্স রাজ আর সরকারি মনোপলি অনেকটা কমিয়ে এনে ইকোনমি কিছুটা লিবারালাইজ করা হয়েছিল, যার জন্য মনমোহন সিং কে আমার মতো লোকরা দেশের সেরা ফাইনান্স মিনিস্টার মনে করে। কিন্তু সেই লিবারাইজেশান প্রসেস কমপ্লিট হয়নি, তাই চেষ্টা করা উচিত যাতে সেই প্রসেসটা যেন থেমে না যায়। 

  • Amit | 193.116.77.177 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৬:২০496410
  • এগেন, ঘুরে ফিরে এই প্রশ্নটাই উঠে আসে যে যেটা আদৌ কোথাও প্রুফ করা যায়নি বা ইমপ্লিমেন্ট করা যায়নি বলে স্বীকার করা হচ্ছে , সেটার কাছাকাছি পৌঁছনো হলে এন্ড রেজাল্ট ভালোই হবে -এই সিদ্ধান্তে পৌঁছনো হচ্ছে কিভাবে ? 

  • dc | 122.174.192.72 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৭:২৩496412
  • এটা তো সোজা প্রশ্ন! 


    এই সিদ্ধান্ত আমার ব্যক্তিগত, অর্থাত কিনা এটা আমার ব্যক্তিগত মত :-)


    (তার স্বপক্ষে অনেক পেপার টেপার ইত্যাদি আছে, ক্যাপিটালিজমের ফলে বিগত কয়েক দশকে পৃথিবীর বহু দেশের বড়ো জনসংখ্যার কোয়ালিটি অফ লাইফের উন্নতি হয়েছে, অনেক লোক আগের থেকে অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দে বাস করছে, এসব নিয়ে অনেক স্টাডি আছে, আইএমএফ আর ওয়ার্লড ব্যাংকের ওয়েবসাইটে অনেক কান্ট্রি রিপোর্ট আর ডেটা আছে, তবে সেসব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেক সময় লাগবে, তাই অতোসবের মধ্যে যাওয়ার দরকার নেই)। 

  • Ramit Chatterjee | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৯:২৬496417
  • DC আপনি বলছেন লিবারালাইজেশন কমপ্লিট হয় নি। কি ভাবে তা কমপ্লিট হবে আপনার মনে হয় ? শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেচে

  • dc | 122.174.192.72 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৯:৫৩496419
  • আমার মনে হয় না "লিবারাইজেশান" কখনো কমপ্লিট হবে বলে। 


    যেমন ধরুন ১৯৯৩ সালে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট কনভার্টিবিলিটি আনা হয়েছিল, অর্থাত এক্সচেঞ্জ রেটের ওপর সরকারো নিয়ন্ত্রন তুলে নেওয়া হয়েছিল। পাতি বাংলায় রুপিকে অনেকটা কনভর্টিবল করা হয়েছিল, সরকারের (মানে আরবিআইয়ের) নিয়ন্ত্রন কমানো হয়েছিল। নিঃসন্দেহে খুব ভালো পদক্ষেপ ছিলো (অমিতবাবু চেপে ধরার আগেই বলি, আমার মতে)। কিন্তু সেই প্রসেসটা এখনো সম্পূর্ণ করা হয়নি, কারন এখনো ক্যাপিটা অ্যাকাউন্ট কনভার্টিবিলিটি আনা হয়নি। কাজেই ইকোনমিক রিফর্ম একটা চলমান প্রসেস (আমার মতে)। লক্ষ্য হওয়া উচিত সরকার যতোটা সম্ভব ব্যবসার থেকে সরে এসে রেগুলেটরের রোল প্লে করে।  রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা তো অবশ্যই বিক্রি করে দেওয়া উচিত, কিন্তু তার সাথে আরও অনেক কিছু রিফর্মস আছে যেগুলো আনা দরকার। 


    আর এই বিজেপি সরকার কখনোই লিবারালাইজেশানের দিকে যেতে পারবে বলে মনে হয়না। কয়েক বছর আগে যেমন রিটেল সেক্টরে এফডিআই আটকে দিল। আবার এখন ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ আটকে রেখেছে। এসবই ভুল ডিসিশান (আমার মতে)। 

  • Ranjan Roy | ০৪ আগস্ট ২০২১ ২১:৩০496420
  • এজন্যেই ডিসি ও একককে পছন্দ করি, সিরিয়াসলি।


    গোল গোল কথা নয়, পেটে খিদে মুখে লাজ নয়। নিজের বিশ্বাসের কথা সোজাসুজি বলে। হিন্দিতে বললে- বিনা লাগ লপেট!


    ডিসির শেষ প্যারার অবজার্ভেশনের সঙ্গে অনেকটাই একমত।

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৩:৩৬496425
  • কারোর মতামত নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। যার যার মতামত তার তার কাছে ঠিক। সমস্যা সেখানেই আসে যেখানে নিজের মত টাকেই অবসোলুট এবং এক মাত্তর সল্যুশন বলে ক্লেম করা  হয়। ইকোনমিক্স ঠিক ফিজিক্যাল সাইন্স নয় যে ল্যাবে স্ট্যান্ডার্ড কন্ডিশনে এক্সপেরিমেন্ট করে করে রেপিটেডলি একই রেজাল্ট প্রুফ করা যাবে এবং সেটার থিওরি প্রুফ করা যাবে। এগুলো অনেকগুলোই derived থিওরি  এবং প্রোবাবিলিটি বেসড এপ্রোচ। যত বেশি স্যাম্পল সাইজ তত বেশি রিলিয়াবিলিটি। তার মধ্যেও ডিফারেন্ট সোশ্যাল ফ্যাক্টর গুলো ওয়ে ইন করা দরকার যেটা বিনায়ক সেনরা বলে থাকেন ওনাদের রান্ডমইজেড ট্রায়ালে র সময়। 


    কিছু দেশে পার্সিয়ালি (ধরা যাক ৫০-% বা ৬০-% ) ওপেন ইকোনমি ইমপ্লিমেন্ট করা হয়েছে সেখানে ভাল রেজাল্টস এসেছে। এবার সেই কটা দেশের রেজাল্ট নিয়ে এটাই এই মুহূর্তে বলা যায় যে এই ধরণের ইমপ্লিমেন্টেশন হলে তার সাকসেস প্রোবাবিলিটি এতো -%।এবার স্যাম্পল সাইজ  যত বাড়বে , তার সাকসেস প্রোবাবিলিটিও পাল্লা দিয়ে বাড়বে। সেম লাইক ভ্যাকসিন ফেজ ১/২/৩ ট্রায়ালস। 


    স্টাটিস্টিক্যালি  তার মানেই এই কনক্লুশন নয় যে  বাকি সমস্ত দেশে সেই এক ৫০-৬০ % ইমপ্লিমেন্ট করলে ১০০-% কেস এ একই রেজাল্টস আসবে। আবার এটাও নয় যে আগের দেশগুলোতে ৫০-৬০-% এর জায়গায় ৮০-৯০-% ইমপ্লিমেন্ট হলে সেই দেশগুলোর সাকসেস রেট একই থাকতো। বরং এসব ক্ষেত্রে প্রতিটা দেশের সোশ্যাল কন্ডিশন , কালচার , সোশ্যাল ইমব্যালান্স ডিসক্রিমিনেশন এসব ফ্যাক্টর ইন না করে ডাইরেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন করা জাস্ট হাতুড়ে প্রেসক্রিপশন মনে হয় (এইটাও আমার মত মাত্তর )। 


    যে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক বা আইএমএফ থার্ড ওয়ার্ল্ড এর দেশগুলোকে ফার্ম মার্কেট উন্মুক্ত করে দিতে বলে তারাই আবার আমেরিকা বা ইউরোপে হিউজ ফার্ম সাবসিডি নিয়ে নীরব থাকে। যেখানে এসব দেশগুলো হেলথ কেয়ার বা পাবলিক এডুকেশন বা সোশ্যাল সিকিউরিটির এর পেছনে হিউজ ট্যাক্স ফান্ড দেয় , সেখানে থার্ড ওয়ার্ল্ড এর দেশগুলোকে এসব ক্ষেত্রে খরচ কমাতে বলে। যে সিঙ্গাপুর সরকার আজকে ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোকে পেছনে ফেলে দেয় ইন্ডাস্ট্রি টেনে আনতে তারাই আবার সরকারি ফেয়ারপ্রাইস শপ চালায়। তাই এতো খরচ সত্ত্বেও আমেরিকায় পোস্টাল সার্ভিসকে টিকিয়ে রাখা হয় বা তোলার আগে পাবলিক ওপিনিয়ন চাওয়া হয়। 


    ২০০৮ জিএফসি ক্রাইসিস এ পাবলিক ট্যাক্স ফান্ডেড গভট বেল আউট যেমন অনেক ক্যাপিটালিস্ট অপোজ করেছিল , তেমনি অনেক বেশি সংখ্যায় ক্যাপিটালিস্ট সেই বেল আউট প্যাকেজ নেওয়ার জন্যে লাইন দিয়েছিলো। এবার কি  করা উচিত ছিল সেটা যেমন ওপিনিয়ন তেমনই সেটা করা হলে কি কি হতে পারতো সেসবই স্পেকুলেশন। ফ্যাক্টস নয়।


    যেমন বহু ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি ইনফ্লেশন রিস্ক নিয়েও করোনার সময়ে লক ডাউন করে লোকজনকে লক ডাউন এলাউন্স দিয়ে বাঁচিয়েছে। মিক্সড রেজাল্টস।  অনেক দেশেই- ইতালি ইউকে জিডিপি শ্রিঙ্ক করে গেছে।  আবার কিছু দেশ - আমেরিকা বা  অস্ট্রেলিয়া সাস্টেইন করতে পেরেছে এখনো অব্দি ইনফ্লেশন একটু বাড়লেও। উল্টোদিকে ইন্ডিয়া র মোদী সরকার  কোনোরকম ক্যাশ ইঞ্জেকশনের ঝামেলায় যায়নি। পাচ কিলো চাল আর এক কিলো ডাল দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলেছে। রেজাল্ট সবার সামনে। 


    এবার এতো মিক্সড রেজাল্ট র থেকে কি কোনো অবসোলুট কনক্লুশন এ আসা যায় ? কালকে অস্ট্রেলিয়ান ইকোনমি বসে  যেতেই পারে ডিউ তো ভেরিয়াস ফ্যাক্টরস । তার মানে কি এই যে এই সময়ে সোশ্যাল সিকিউরিটি এলাউন্স ভুল ছিল ? বা কালকে ইন্ডিয়ার জিডিপি পাহাড়ে চড়লে বলা যায় যে লোকজনকে কিছু না দেওয়াই ঠিক ছিল ? 


    সেই জন্যেই সাকসেসফুল ফুল মার্কেট ইকোনমির উদাহরণ চাওয়া। ওপিনিয়ন তো ডাইম এ ডজন পাওয়া যায়। 


    যাকগে পিসি রয় তে বা বেঙ্গল কেমিকাল এ ফেরা যাক। অনেক বেলাইন করেছি। 

  • সম্বিৎ | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৩:৫৫496426
    • Amit | 193.116.77.177 | ০৪ আগস্ট ২০২১ ১৫:০১496406
    • সমস্যা এটাই যে কোনো কিছুকে যতই থিওরি বলা হোক , সেটা যদি কোথাও সুকসেসফুলি ইমপ্লিমেন্ট করা নাই যায় , উদাহরণ দিয়ে প্রুফ না করা যায় ,দিনের শেষে সেটা থিওরি থাকেনা , জাস্ট ওপিনিয়ন বা হাইপোথিসিস হয়েই রয়ে যায়। 

       

      এর মানে এই নয় যে তত্ত্বটা বা ওপিনিয়ন টা ভুল. কিন্তু প্রমান সাপেক্ষ। যতদিন না প্রমান হচ্ছে। 

    সরকারের ব্যবসা চালান - দেশের পরে দেশে এই জিনিস ইম্পলিমেন্ট করার চেষ্টায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রমাণ যে হয়নি তাইই নয়, অপ্রমাণ হয়ে গেছে।

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৪:৫৩496429
  • কিন্তু আমার বক্তব্য তো আদৌ সরকারের সুকসেসফুলি ব্যবসা চালানো বা না চালানো নিয়ে নয়। সবকিছু বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া টাই একমাত্তর ওয়ে অফ ডেভেলপমেন্ট কিনা - সেটা নিয়ে। 


    আর সুকসেসফুলি হোক বা নাহোক , ডেভেলপড দেশগুলোতেও যে সরকার অনেক কিছু র কন্ট্রোল নিজের হাতে রাখে বা নিজে চালায় তার উদা অলরেডি দেওয়া আছে। 

  • সম্বিৎ | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৫:২৩496430
  • আমার আবার মনে হয় - সব মার্কেটের হাতে ছেড়ে শুধু রেগুলেশন সরকারের হাতে রাখা। আধাখ্যাঁচড়া থাকলেই ক্রোনি ক্যাপিটালিজম চলবে। 

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৫:২৫496431
  • সেটারই তো উদা চাইছি 

  • সম্বিৎ | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৬:৩৪496432
  • কোনটার উদাহরণ, আধাখ্যাঁচড়া থাকলে ক্রোনি? বর্তমান ভারত, আবহমান অ্যামেরিকা - বেসিকালি সব ক্যাপিটালিস্ট ইকোনমিই তো ক্রোনি।

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৭:৩৪496433
  • নন ক্রোনি পারফেক্ট বাজার ইকোনমির ​​​​​​​উদা ​​​​​​​চাইছি। ​​​​​​​আর ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​যদি কোথাও ​​​​​​​নাই ​​​​​​​থাকে , তাহলে ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​হলেই  ​​​​​​​সব ​​​​​​​ভালো ​​​​​​​হবে - এই ​​​​​​​ক্লেম ​​​​​​​এর ​​​​​​​ভ্যালিডেশন ​​​​​​​কোথায় ​​​​​​​? 

  • সম্বিৎ | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৭:৪৬496435
  • নেই। যেমন সরকার চালালে ভাল হবে, তারও উদাহরণ নেই। থিওরি ভার্সেস থিওরি।

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন