এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা

  • বেঙ্গল কেমিক্যাল: স্বপ্ন বিকিয়ে যায়

    রবীন মজুমদার
    আলোচনা | ০৩ আগস্ট ২০২১ | ৫০০৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • আজ ২রা আগস্ট, ২০২১, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্মদিন। ২০১০ তাঁর সার্ধশতবর্ষ পেরোনোর পর বাঙালি আবার বিস্মরণের শিকার হয়েছে। সারা জীবনের আত্মত্যাগ, বিপুল সামাজিক ও দেশব্রতী কর্মকান্ডের পর এই সার্থক বিজ্ঞানীর সঠিক মূল্যায়ন হয় না। সমসাময়িক অন্যান্যদের নিয়ে তাও যেটুকু চর্চা, প্রফুল্ল চন্দ্রকে নিয়ে সেটুকুও অনুপস্থিত। তাঁর প্রতিষ্ঠিত এ দেশের প্রথম ভারী রাসায়নিক শিল্পের কারখানা সরকারি খাতায় দেউলিয়া ঘোষণা হয়েছে, তার বিকিয়ে যাবার দিনও সমাগত সেই কথা মনে রেখে আচার্যের ১৬২তম জন্মদিবসে গুরুচন্ডা৯ প্রকাশ করছে এক গুচ্ছ প্রবন্ধ। এই আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি, এই আমাদের দীর্ঘশ্বাস!
    আজ, ২রা আগস্ট, ২০২১, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের ১৬১ তম জন্মদিন। অনেকেই অনেকভাবে তাঁকে স্মরণ করছেন।
    কিন্তু আমাদের এইসব পুজো এবং ব্রত পালনের মত জন্মদিবস পালনের ফাঁক ও ফাঁকির ফোকর গলে হারিয়ে যায় প্রফুল্লচন্দ্রের স্বপ্নের সব নির্মাণ। বিশেষ করে বেঙ্গল কেমিক্যালের কথাই আজ একটু বলি।
    প্রফুল্লচন্দ্র ছিলেন স্বপ্নদর্শী ; স্বপ্ন দেখতেন অনেক। কল্পনা তাঁর ডানা মেলে উড়ত ইতি উতি। কিন্তু তিনি সেগুলোকে উড়ে গিয়ে ফুরিয়ে যেতে দেন নি বরং রীতিমত পরিকল্পনা ভাঁজতেন কীকরে সেগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যাবে।
    অকৃতদার প্রফুল্লচন্দ্রের ছেলে- মেয়েও ছিল!
    বেঙ্গল কেমিক্যাল ছিল তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বপ্ন, তাঁর ধ্যান জ্ঞান জুড়ে ছিল সেই স্বপ্নের আসন।তাঁর নিজের কথায়, ছাত্ররা তাঁর ছেলে আর বেঙ্গল কেমিক্যাল মেয়ে।
    তা সেই মেয়েকে তিনি তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন। পিতার এবং মাতার ভূমিকা সংহত হয়েছিল তাঁর একার মধ্যে। তাঁরই পরিচর্যায় সেই মেয়ে হয়ে ওঠে সুন্দরী অথচ বুদ্ধিমতী – স্বয়ংসম্পূর্ণ, স্বাবলম্বী, সবুজ।চারপাশের মানুষের গৃহস্থালি, পানীয় জল, শিক্ষা– স্বাস্থ্য– কৃষি সব কিছুতেই তার পরশ পায় পড়শী মানুষ।ভিতর থেকে সবুজ হয়ে উঠে সমসাময়িক মানুষের বিবিধ চাহিদা পূরণ করেও ভবিষৎ প্রজন্মের শিক্ষা– পরিবেশের ভিত তৈরি করা, এসবই ছিল বেঙ্গল কেমিক্যালের বৈশিষ্ট্য।শতাব্দী পারের নব্য জ্ঞানে আজ আমাদের বোঝার কথা যে এইসব হলো সবুজ শিল্পেরই বৈশিষ্ট্য।
    এক লাফে এমনি এমনি এমনটা হয় নি। পেছনে ছিল, শুধু স্বপ্ন নয়, অনুসন্ধান, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং পরিকল্পনা।
    মাস মাইনে থেকে জমানো সামান্য মূলধন সম্বল করে, নিজেরই ভাড়াবাড়িতে পত্তন হয় (১৯০১), বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস ওয়ার্কস (BCPW) এর।পরে রূপান্তরিত হয় অংশীদারী লিমিটেড কোম্পানিতে - বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড। দীর্ঘ চার দশক ধরে অভিভাবক হিসেবে প্রফুল্ল চন্দ্রের তত্বাবধানে সফলতার নতুন নতুন উচ্চতায় ওঠে ভারতের প্রথম নিজস্ব ভারী রাসায়নিক ও ঔষধ শিল্প।
    আমরা বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণ হিসেবে গণ্য করি যে সময়কে, প্রফুল্লচন্দ্র তারই এক প্রতিভূ।ইউরোপের নবজাগরণের সঙ্গে তুলনীয় নাই হতে পারে আমাদের নবজাগরণ, হওয়া উচিত নয় এবং সম্ভবও নয়।
    কিন্তু বিজ্ঞান-কারিগরি ও শিল্পের আমূল পরিবর্তন কে বাদ দিয়ে কোনো রকম নবজাগরণের কথাই ওঠে না।সেদিক থেকে দেখলে নিজেদের মত করে বিজ্ঞান ও কারিগরি জ্ঞানের আত্তীকরণ করে, নিজেদের সমাজ সংস্কৃতি ইতিহাসের সঙ্গে সুসমঞ্জস ভারী শিল্পের পথিকৃৎ বলতে হয় প্রফুল্লচন্দ্রকেই। তিনি যেন প্রাচ্যের পার্কিন (স্যার উইলিয়াম হেনরি পার্কিন, কৃত্রিম জৈব রঞ্জক পদার্থের সংশ্লেষণ পদ্ধতির প্রথম উদ্ভাবক এবং শিল্পপতি, ইউরোপীয় শিল্প বিপ্লবের নতুন ঘরানার প্রতিনিধি - বিজ্ঞানী এবং শিল্পপতি)। কিন্তু না, আমাদের ভাবনায় নবজাগরণ আসতে পারে, 'স্বদেশী শিল্প' হতে পারে, কিন্তু 'পুঁজি ‘ ‘শিল্প ' এসব হতে পারে না।আমরা বরং আক্ষেপ করেছি, এ হে, প্রফুল্লচন্দ্রের মত একজন ঋষিতুল্য মানুষ কিনা পুঁজিপতি বনে গেলেন!
    একটু বিপথে চলে যাচ্ছি বোধহয়।বেঙ্গল কেম-এর মত একটা উদ্যোগ যে শুধুমাত্র একটি উৎপাদনশিল্প, একটি কারখানা নয়, তার উপযোগিতা যে শুধু লাভ ক্ষতির হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না, সেটা আমরা বোঝার চেষ্টা করলাম না! প্রফুল্লচন্দ্রের মৃত্যুর পরেও কিছুদিন রমরমা বজায় ছিল।কিন্তু তারপরেই রুগ্নতা প্রকাশ পেতে থাকে, ক্রমশ প্রকট হয়। অবশেষে (১৯৮০-৮১) কেন্দ্রীয় সরকার এটিকে পুরোপুরি অধিগ্রহণ করে নতুন নামে - বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড (BCPL)- অভিহিত করে। সম্প্রতি দু তিন বছর ধরে খবর, 'অলাভজনক' এই সংস্থার অব্যবহৃত জমি সম্পদ ইত্যাদি বিক্রি করে দেওয়া হবে, কোম্পানির বিলগ্নিকরণ করা হবে। সরকার আর বোঝা টানতে রাজি নয়।' নবরত্ন’ বলে একসময় যেসব উদ্যোগ ঘিরে গর্ব করা হতো, তারাও এই বেসরকারিকরণ - বিলগ্নিকরণের তালিকাভুক্ত! কাজেই বি সি পি এল এর কর্মচারীরা যতই হাই কোর্টে মামলা করে আপাত স্বস্তি লাভ করার মতো অন্তর্বর্তী আদেশ লাভ করুন, যতই কিছু মানুষ মিছিল মিটিং পত্রাঘাত করুন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার যেন অবিচলিত। বাজারে নিলামে উঠেছে বি সি পি এল নামক এক অলাভজনক সরকারি সংস্থা। আসলে নিলামে উঠেছে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের
    মেয়ে, তাঁর স্বপ্ন, তাঁর ভালোবাসা। নিলামে উঠেছে আমাদের অস্তিত্বের, স্থিতিশীলতার, আত্মনির্ভরতার ভিত্তি।এইসব আবেগ, গর্ব স্বপ্নের তো কোন বাজারমূল্য নেই, যেমন নেই কিছু পরিবেশ পরিষেবার, ঐতিহ্যের, সংস্কৃতির; অন্তত, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
    তেমনটা অস্বাভাবিক নয়।কিন্তু এই কলকাতার, এই বাংলার যেসব সারস্বত প্রতিষ্ঠান আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা অবদানে জন্ম নিয়েছে, গড়ে উঠেছে বা পুষ্ট হয়েছে, সেই প্রেসিডেন্সি কলেজ ( এখন বিশ্ববিদ্যালয়), ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি, কলকাতা বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি – প্রতিষ্ঠানগতভাবে তাঁদের বক্তব্য বা অবস্থান কেন এসময় টের পাওয়া যাচ্ছে না?কোথায় তাঁরা?
    ব্যক্তির বা সাধারণ মানুষের আবেগ খুবই মূল্যবান, কিন্তু বেঙ্গল কেমিক্যালের তো চাই বিশেষ বিশেষ দক্ষতা ভিত্তিক বৌদ্ধিক ইনপুট।প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগেই সেসব পাওয়া সম্ভব।
    তা যদি না হয়, প্রতুলদার ( প্রতুল মুখোপাধ্যায়) গান – আলু বেচো ছোলা বেচো…. ও বন্ধু … তোমার স্বপ্ন বেচো না…) শুনে বুকের কন্দরে চিন চিন করলেও স্বপ্নেরা বিকিয়েই যাবে, নিলামে উঠবে! নতুন শব্দবন্ধে জব্দ হতে থাকবে নিজস্বতা, জাতি বা আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য বা স্বাধীনতা।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৩ আগস্ট ২০২১ | ৫০০৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Amit | 121.200.237.26 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৭:৫৭496436
  • ওকে। দ্যাট মেকস সেন্স। 

  • Saswati Basu | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:১৪496439
  • "সমস্যা এটাই যে কোনো কিছুকে যতই থিওরি বলা হোক , সেটা যদি কোথাও সুকসেসফুলি ইমপ্লিমেন্ট করা নাই যায় , উদাহরণ দিয়ে প্রুফ না করা যায় ,দিনের শেষে সেটা থিওরি থাকেনা , জাস্ট ওপিনিয়ন বা হাইপোথিসিস হয়েই রয়ে যায়। 


     

    এর মানে এই নয় যে তত্ত্বটা বা ওপিনিয়ন টা ভুল. কিন্তু প্রমান সাপেক্ষ। যতদিন না প্রমান হচ্ছে। "

     

    এটা  সার  কথা বলেছেন অমিত ।

  • Ramit Chatterjee | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:১৯496440
  • স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশ গুলোতে হেলথকেয়ার, এডুকেশন এগুলো ফ্রি ও সরকার পুরোপুরি চালায়। এছাড়া সোশ্যাল সিকিউরিটি র দায়িত্ব ও সরকারের। সেটা ভালো চলছে এবং রেসাল্ট চোখের সামনেই আছে।

  • সম্বিৎ | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:২৬496442
  • ব্যবসার কথা হচ্ছে।

  • Kallol Dasgupta | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:২৭496443
  • সরকারের হাতে থাকলে অপদার্থতায় ভরে যাবে সংস্থা আর বেসরকারী হাতে থাকলে সেগুলো "পদার্থ" হয়ে যাবে এটা একটা সযত্নে লালিত পুঁজিবাদী মিথ। যে "থান ইঁট মার্কা" পেপার গুলোর কথা বললেন সেই গবেষণার স্পনসর কারা দেখুন, তাহলেই অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। সরকার কোন সমসাত্বিক বস্তু নয়। সরকার নানা রকম। সোভিয়েৎ রাশিয়ায় প্রথম দিকে (নেপ-এর আগে) যখন মানুষের সোভিয়েৎ-এর হাতে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছিলো তখনকার সাহিত্য পড়ুন। নীপার নদীর বাঁধ, গোত্রান্তর - এই সব গাথায় প্রমাণ আছে মানুষের উদ্ভাবনশীলতার। সরকার শেষ কথা নয়, শেষ কথা মানুষ, মানুষের সমাজ। তাদের উদ্ভাবনশীলতা অসীম, কারণ কাজগুলো তাদের জীবনের সাথে জড়িত, তাই তারা এমন সব উপায় ভাবতে পারে যা মাইনে করা কর্মীরা কদচিৎ ভাবে। চিনের প্রথম দিকেও এমন উদাহরণ বিরল নয়। যখন সোভিয়েৎ প্রযুক্তিবিদেরা দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হলো, তখন চীনের মানুষ প্রকল্পগুলোকে সফল করেছে। সরকার নয় মানুষ। দুঃখজনকভাবে চীন, রাশিয়াসহ সব সমাজতান্ত্রিক দেশই পরে রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের রাস্তায় হাঁটে, যা এক সোনার পাথরবাটি মাত্র। তাতে ৭০/৮০ বছরের মধ্যে যা হবার তাইই হয়েছে। এই গুরুচন্ডা৯তেই কানাডায় থাকেন এক গুরুচন্ডাল ভাই তার কিউবা ভ্রমণের কথা লিখেছিলেন। আজও কিউবাতে ৬০এর দশকের মোটর গাড়ি চলে, কারন তাদের দেশে মোটর কারখানা নেই, আর, তারা বাইরে থেকে মোটরগাড়িয় আনায় নি। একটা গোটা দেশের পরিবহন ব্যবস্থা চলছে তাতেই। কি ভাবে ? মানুষের উদ্ভাবনী শক্তিতে। সরকার কেমন ? তার দৃষ্টিভঙ্গীর উপর নির্ভর করে তা। বাকি রইলো বেসরকারী সংস্থা। তাদের চুরি চামারিতাদের আমলাতান্ত্রিকতা তো প্রবাপ্রতিম। আপার লেভেল ম্যানেজমেন্ট কর্মচারী  ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, তাতে সংস্থার ক্ষতি হয় আর তার দায় বয়ে বেড়ায় সাধারণ কর্মচারী - অ্যাপ্রাইজালের সময় তাদের রেটিং-এর শতাংশ হার কমে যায়। গত বছর ১০০% এর মাইনে বাড়ার হার ছিলো ১০% এবার ক্ষতি হয়েছে তাই সেটা নেমে গেলো % এ। মানে একজন পরিচালকবর্গের ঠিক করা মাপকাঠিতে তার কাজ ১০০% ভালো ভাবে করেও গত বছরের থেকে কম টাকা পাবে। কেন ? পরিচালকবর্গ কোন একটা মাল তৈরী করা বা বেচার কায়দার ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সেটা ভুল ছিলো, যাতে সাধারণ কর্মচারীর কোন মতামত দেবার জায়াগাই ছিলো না। এবার বলা হবে আপার লেভেল ম্যানেজমেন্টের মাইনে বাড়ার হারও তো কমে গেল। ঠিক। কিন্তু মজাটা ওখানেই - ৪০ হাজার টাকার % আর ৪লক্ষ টাকার % এক নয়। ৪০ হাজার টাকার % বাড়লে একজনের মাসের মাইনে দাঁড়ায় ৪১হাজার ৬০০ টাকা। আর  লক্ষ টাকার % বাড়লে তার মাসের মাইনে দাঁড়ায় ৪লক্ষ ১৬হাজার টাকা। দুজনকেই একই মূল্যে বাজার থেকে জিনিস কিনতে হয়। সেখানে আপার লেভেল  ম্যানেজমেন্টের বা সাধারণ কর্মচারীর ক্ষেত্রে দামের কোন তফাৎ হয় না।  কাজেই সরকার চালালে খারাপ আর বেসরকারী হলেই ভালো - এসব গল্পও পুরোনো হয়ে গেছে। 

  • সম্বিৎ | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:৩৬496444
  • ধুর, কল্লোলদা কিসের সঙ্গে কিসের তুলনা করছ! সরকারি সংস্থায় আমলাতন্ত্র বেসরকারির থেকে অনেক বেশি। সেখানে আপার ম্যানেজমেন্ট নেই? তারা ভুল করে না? তাদের ভুলের খেসারত সাধারণ কর্মীরা দেয়না? 

  • dc | 122.164.221.35 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:৩৮496445
  • যাক তাহলে এই সিদ্ধান্তে আসা গেল যে সরকারের উচিত বেঙ্গল কেমিকাল কোন প্রাইভেট entrepreneur কে বিক্রি করে দেওয়া। সংস্থাটি লাভে চলছে, তাই সরকার ভালো দামও পাবে। (আমার মতে) 

  • dc | 122.164.221.35 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:৪৩496446
  • এই যাঃ কল্লোলবাবুর পোস্ট দেখিনি। আসলে টাইপ করে রেখেছিলাম, তারপর অন্য একটা কাজ করে পোস্ট করেছি :-)


    "সরকার শেষ কথা নয়শেষ কথা মানুষমানুষের সমাজ"


    ১০০% একমত। ​​​​​​​সেজন্যই ​​​​​​​আমি ​​​​​​​সরকারের ​​​​​​​ওপর ​​​​​​​ভরসা ​​​​​​​করি ​​​​​​​না, ​​​​​​​ইন্ডিভিজুয়াল ​​​​​​​এর ​​​​​​​ওপর ​​​​​​​বা entrepreneureal এবিলিটির ​​​​​​​ওপর ​​​​​​​ভরসা ​​​​​​​করি। ​​​​​​​ 

  • Kallol Dasgupta | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:৪৫496447
  • আবারও বলছি - সরকার মানে একটা অচল অনড় ধারনা নয়। সরকার নানা রকমের। কাজেই তার আমলাতন্ত্রের ফারাক আছে। মোদীর সরকার আর ফিদেলের সরকার এক নয়, একভাবে কাজ করে না। কিন্তু কর্পোরেট মোটামুটি একই ধাঁচের। 

  • Kallol Dasgupta | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:৪৯496448
  • ডিসি - মানুষ ইন্ডিভিজুয়াল কিন্তু আমি মানুষের সাথে মানুষের সমাজের কথাও বলছি। সেটা কালেক্টিভ। সরকার নানা রকম,সেটা তার দৃষ্টিভঙ্গীর উপর নির্ভর করে। সে কতটা মানুষের উপর ক্ষমতা ন্যস্ত করে সেটাই মাপকাঠি। 

  • Ranjan Roy | ০৫ আগস্ট ২০২১ ০৯:৫২496449
  • সম্বিতের সঙ্গে একটা বিষয়ে একমত। সরকারি সংস্থায়, অন্ততঃ ভারতে, কেমন একটা গয়ংগচ্ছ ভাব। ইনোভেশনের কোন পুরস্কার নেই, কোন মোটিভেশন নেই। আবার আরেক দিকে বিজয় মালিয়ার সংস্থা কেন ভোগে গেল? সেটাও ভাবা দরকার। চেষ্টা করা উচিত যাতে যেকোন সংস্থা নিজের পায়ে, বিনা ভর্তুকি দাঁড়ায়। লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন ব্যাপার না হয়।


      আবার খাদ্য সুরক্ষা ও হেলথ কেয়ার ইস্যুতে দরকার হলে ভর্তুকি দিতে হবে। গোটা ইউরোপ ও আমেরিকার কৃষি সরকারের সাবসিডির ঠেকোর জোরে দাঁড়িয়ে আছে। এবং স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলোতে হেলথ কেয়ার ও শিক্ষা মাল্টিন্যাশনালের বদলে সরকারি  সাপোর্টে ভাল চলছে।


    একটা মিথ ভাঙা দরকার। প্রাইভেট মানেই ক্যাপিটালিজম আর  সরকারি মানেই সোশ্যালিস্ট--এরকম নয়। বিনিয়োগের অপর্চুনিটি কস্ট ও এফিশিয়েন্সি ফ্যাক্টর দেখা উচিত।

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ১০:১২496450
  • সরকারি সংস্থায় গয়ংগচ্ছ ভাব সেটাও একটা ​​​​​​​রিলেটিভ ​​​​​​​ব্যাপার। সব জায়গায় এক নাও হতে পারে । ​​​​​​​আমি ​​​​​​​ইন্ডিয়ায় একটা ​​​​​​​সরকারি ​​​​​​​তেলের ​​​​​​​সংস্থায় ৭ ​​​​​​​বছর কাজ ​​​​​​​করেছি। তারপর একই ক্ষেত্রে বাইরের দেশে। তুলনা করলে ​​​​​​​কিছু ​​​​​​​কিছু ​​​​​​​জিনিস ​​​​​​​খুবই ​​​​​​​সাবস্টেন্ডার্ড সন্দেহ নেই। আবার ​​​​​​​অনেক জায়গায় ডিসাইন বা ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রজেক্ট ​​​​​​​ডিসিশন ​​​​​​​যথেষ্ট কম্পিটিটিভ ​​​​​​​লেগেছে ​​​​​​​আমার ​​​​​​​কাছে বাইরের সাথে তুলনায় । ​​​​​​​উল্টোদিকে ​​​​​​​মাঝে ​​​​​​​কলকাতায় ফিরে এক ​​​​​​​বছর ​​​​​​​একটা ​​​​​​​​​​​​​​মাল্টিন্যাশনাল কন্সালটেন্সি ​​​​​​​তে ​​​​​​​সেই ​​​​​​​এক ​​​​​​​ফিল্ডে ​​​​​​​কাজ ​​​​​​​করতে ​​​​​​​গিয়ে কিছু  ​​​​​​কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিশন মেকিং এ পুরো ড্র্যাগ ​​​​​​​মনে হয়েছে। এসবই ​​​​​​​আমার ​​​​​​​নিজের ​​​​​​​অবসেরভেশন। ​​​​​​​অন্য ​​​​​​​কারোর ​​​​​​​অন্য ​​​​​​​হতেই ​​​​​​​পারে। 


    এই যে একটা হোমোজেনাস থট প্রসেস , সরকারি মানেই ইনেফিসিয়েন্ট বা বেসরকারি মানেই এফিসিয়েন্ট বা বাজারের হাতে সব ছাড়লে দারুন হবে বা  সরকারের হাতে সব থাকলে ভালো হবে -এই প্রেমিস টাকেই চ্যালেঞ্জ করা দরকার মনে হয়। এসব ক্ষেত্রে ওয়ান সাইজ ফিটস অল সল্যুশন পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয়না। 

  • dc | 122.164.221.35 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ১০:১৪496451
  • কল্লোলবাবু, আমি ইন্ডিভিজুয়ালিটিতে একটু বেশী বিশ্বাস করি, কালেকটিভিটিতে একটু কম। তবে এটা একেকজনের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গীর ব্যাপার, এতে ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​সাথে ​​​​​​​একমত। ​​​​​​​

  • কৌশিক সাহা | ০৫ আগস্ট ২০২১ ১৫:৪৬496457
  • @Kallol Dasgupta 


    "সোভিয়েৎ রাশিয়ায় প্রথম দিকে (নেপ-এর আগেযখন মানুষের সোভিয়েৎ-এর হাতে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছিলো তখনকার সাহিত্য পড়ুন। নীপার নদীর বাঁধগোত্রান্তর - এই সব গাথায় প্রমাণ আছে মানুষের উদ্ভাবনশীলতার।"


    সাহিত্যে গাথা  পড়ার চাইতে মনে হয় প্রকল্পের   balance sheet পড়া অধিক ফলপ্রসূ । উত্তর  Soviet আমলে ​​​​​​​এই সকল প্রকল্প ​​​​​​​নিয়ে আর্থিক ফলাফল    ​​​​​​​সামাজিক প্রভাব  ​​​​​​​ও ​​​​​​​পরিবেশগত ​​​​​​​নানা ​​​​​​​প্রশ্ন উঠেছে , এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে জবাব  কিন্তু ইতিবাচক নয়। Aral সাগর , যা  পৃথিবীর দুটি স্থলমধ্য সাগরের একটি ছিল , soviet যুগের কৃষি  নীতি অনুসারে বুজিয়ে ফেলা হয়। আর্থিক লাভ ক্ষতির হিসেবে না গিয়েও বলা যায় ,  ভূপৃষ্ঠ এবং পরিবেশের  এ ক্ষতি অপুরণীয়। 


    আরেকটি তাত্ত্বিক  কথা মনে হয়। মানুষ আদৌ উদ্ভাবন করে শুধুই কি সৃষ্টিসুখের উল্লাশে ​​​? না কি অনেকগুলি  ​​​​​​​রৌপ্যচক্রের ​​​​​​​আশায়? মানুষ  ​​​​​​​কি উদ্ভাবনের আনন্দ লাভ করার  ​​​​​​​জন্যে ভারবাহী  তক্তার ​​​​​​​তলায় গোলাকার ​​​​​​​পাথর ​​​​​​​রেখেছিল, না জীবন ধারণের আরেকটি সাধন হিসেবে? "মাইনে করা কর্মীরাও" জীবন ধারণই  করে থাকে , সে কারণেই তারা উদ্ভাবন করে থাকে , এবং যথেষ্ট চিন্তা ও যত্ন সহকারে করে থাকে। 


    "কিউবাতে ৬০এর দশকের মোটর গাড়ি চলেকারন তাদের দেশে মোটর কারখানা নেইআরতারা বাইরে থেকে মোটরগাড়িয় আনায় নি। একটা গোটা দেশের পরিবহন ব্যবস্থা চলছে তাতেই। "


    এই ​​​​​​​দাবিটি ​​​​​​​ঠিক ​​​​​​​নয়। 


    Cubaর  ক্ষুদ্র ​​​​​​​আয়তনের ​​​​​​​কারণে  সেদেশের  ​​​​​​​পরিবহন ​​​​​​​ব্যবস্থার ​​​​​​​জটিলতা ​​​​​​​খুব বেশি নয়। কিন্তু ​​​​​​​তাও ​​​​​​​জানাই ​​​​​​​যে সেদেশের ​​​​​​​গণপরিবহণ যান ​​​​​​​সকল , যথা bus, lorry, taxi গুলি ​​​​​​​সোভিয়েত ​​​​​​​আমলে USSR থেকে ​​​​​​​আমদানী করা ​​​​​​​মডেল। ​​​​​​​এখন আধুনিকীকরণের ​​​​​​​জন্য ​​​​​​​তারা চীন ​​​​​​​দেশ ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​bus, lorry, taxi  আমদানী করে। পুরাতন মডেলের মার্কিনি গাড়িগুলি ব্যক্তিগত মালিকানায় ।  এ সকল গাড়ির মেরামতের জন্য পুরাতন  soviet আমলের গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। মনে রাখতে হবে যে এই মার্কিনি মডেলের গাড়িগুলি গণপরিবহণ ব্যাবস্থায় অংশঃ নয়। 


    "কিন্তু মজাটা ওখানেই - ৪০ হাজার টাকার আর ৪লক্ষ টাকার এক নয়। ৪০ হাজার টাকার বাড়লে একজনের মাসের মাইনে দাঁড়ায় ৪১হাজার ৬০০ টাকা। আর  লক্ষ টাকার বাড়লে তার মাসের মাইনে দাঁড়ায় ৪লক্ষ ১৬হাজার টাকা। "


    আমি ​​​​​​​জানি ​​​​​​​না  corporate ব্যবস্থার ​​​​​​​সহিত আপনার ​​​​​​​কী ​​রকম  পরিচয় ​​​​​​​আছে। ৪% ​​​​​​​বেতন ​​​​​​​বৃদ্ধি সমগ্র কোম্পানির বেতন ​​​​​​​বৃদ্ধির ​​​​​​​হারের ​​​​​​​গড়। ​​​​​​​তার ​​​​​​​মানে ​​​​​​​এই ​​​​​​​নয় ​​​​​​​যে ​​​​​​​প্রত্যেক ​​​​​​​কর্মীর বেতন ​​​​​​​৪% ​​​​​​​হারেই ​​​​​​​বেড়ে ​​​​​​​থাকবে। ​​​​​​​কোম্পানি গত বছরের ​​​​​​​লাভ ​​​​​​​ক্ষতি ​​​​​​​ও শেষের ​​​​​​​মূল্যবৃদ্ধির ভিত্তিতে চালু ​​​​​​​বছরের ​​​​​​​শ্রম খাতে ​​​​​​​ব্যয়ের জন্য ৪% ​​​​​​​বেশি budget নিয়েছে। ​​​​​​​কিন্তু ​​​​​​​যেহেতু ​​​​​​​নীচের job grades এর ​​​​​​​সংখ্যা ​​​​​​​বেশি এবং ​​​​​​​মাথাপিছু ​​​​​​​মাইনে ​​​​​​​কম ​​​​​​​তাই ​​​​​​​বেতন ​​​​বৃদ্ধির হার ​​​​​​​৪% ​​​​​​​এর বেশি ​​​​​​​রাখা ​​​​​​​হয়। Senior job grades এ ​​​​​​​লোকের ​​​​​​​সংখ্যা ​​​​​​​কম ​​​​​​​ও ​​​​​​​মাথাপিছু ​​​​​​​মাইনে ​​​​​​​বেশি ​​​​​​​হবার কারণে কম ​​​​​​​হারে ​​​​​​​বেতন ​​​​​​​বৃদ্ধি করা ​​​​​​​হয়। ​​​​​​​গড়ে শ্রম খাতের খরচ ​​​​​​​৪% ​​​​​​​বাড়ে ​​​​​​​কিন্তু Senior job grade​​​​​​​ এ মাইনে হয়তো ০.৫-১% বাড়ে।  ব্যবসায় লাভ ক্ষতি সম্বন্ধে ভবিষ্যৎবাণী অনেক ক্ষেত্রেই খাতে না। তাই বেতন বৃদ্ধির হারে হ্রাস বৃদ্ধি হতেই পারে।  

  • dc | 122.178.151.141 | ০৫ আগস্ট ২০২১ ১৫:৫৭496459
  • ইয়ে কল্লোলবাবুর পোস্ট নিয়ে অনেক কিছু লিখব ভেবেছিলাম, কিন্তু দেখলাম উনি নিজেই লিখেছেন "দুঃখজনকভাবে চীনরাশিয়াসহ সব সমাজতান্ত্রিক দেশই পরে রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের রাস্তায় হাঁটে"। 


    তো চীন আর রাশিয়া নিজেরাই পুঁজিবাদি দেশ হয়ে গেল, আমি আর লিখে কি করবো, এই ভেবে কাটিয়ে দিলাম। "আই রেস্ট মাই কেস" আর কি :-)

  • Kallol Dasgupta | ০৬ আগস্ট ২০২১ ১০:৪০496495
  • কৌশিকবাবু,


    বড় বাঁধ পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক সেকথা ১৯১৭/১৮/১৯/২০তে জানা ছিলো না। তখন উন্নয়নের নামে এমননেক কাজ পৃথিবী জুড়েই হয়েছে যা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে। সে নিয়ে বিতর্ক নয়। বিতর্কটা সরকারী সংগঠনের কাজে উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োগ হওয়া না হওয়া নিয়ে। সেটা হয়েছিলো রাশিয়ায় ও চীনে। 


    মানুষ যখন কোন সরকারী প্রকল্পের কাজে তাদের অংশ নেয়, বিশেষ করে যে এলাকায় প্রকল্পটি হচ্ছে সেই এলাকার মানুষ, আর তাদের যদি সে প্রকল্পের কাজে মতামত দেবার স্বাধীনতা থাকে তাহলে যে উদ্ভাবনী শক্তি কাজ করে তা শুধু মাস মাইনের জন্য নয়। কারন প্রকল্পটা সফল হলে তাদের জীবন পালটে যাবে, সেই জায়গা থেকে। এটা শুধু রুজি রোজগারের বিষয় নয়। বড় অর্থে বেঁচে থাকা, পরের প্রজন্মকে একটা সমৃদ্ধ দেশ দিয়ে যাওয়া। সেখানে উদ্ভাবন দুটো পয়সা রোজগারের চিন্তা থেকে আসে না। 


    কিউবার পরিবহন নিয়ে আমার কথার সূত্র - গুরুচন্ডা৯র একটি লেখা, যা একজন এই বছর খানেক বা বছর দুয়েক আগে কিউবা বেড়াতে গিয়ে লিখেছিলেন। আপনি যা লিখলেন তাতে আমার মতের অনেকটাই সমর্থন পাচ্ছি।


    আমি সারা জীবন ইউনাটেদ স্পিরিটস-এ কাজকরেছি আইটি-তে। একেবারে শেষ দিকে অ্যাক্সেঞ্চারে যেতে হয়েছিলো। লাভ ক্ষতি আগে থেকে ভবিষ্যতবাণী করা যায় না, এটা যেমন ঠিক, তেমনি কোন বছর ক্ষতি হলে খতিয়ে দেখা গেল ম্যানেজমেন্টের ভুল সিদ্ধান্তে সেটা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সাধারণ কর্মচারী কেন ভুগবে ? তাদের রেটিংএর উপর পাওনা শতাংশের হার কেন কমবে ? আর দিনের শেষে মানুষ টাকা নিয়ে ঘরে ফেরে শতাংশ নিয়ে নয়। তাই বশী মাইনেওয়ালাদের কম শতাংশেও যা টাকা পায় তা কম মাইনেওয়ালাদের ক্ষেত্রে খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।    


    এটুকুই বলার ছিলো


    ডিসি, হ্যাঁ রাশিয়া, চীন সহ প্রায় সব সমাজতান্ত্রিক দেশই রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের পথে হঁটেছে, কারন স্বয়ং মার্কস ঐ দাওয়াইটি বাৎলেছিলেন  ওটিকে "সমাজতন্ত্র" ভেবে। গোড়াতেই গলদ ছিলো চিন্তায়। তাতে মার্কসের দোষ-গুণ কিছু দেখছি না। আসলে তাঁর সময় তিনি যেভাবে সমাজবিকাশকে দেখেছেন, সেটা বড়ই বেশী লিনিয়ার। তাই পুঁজি ও বাজারের বাইরে ভাবতে পারেন নি, ঐ লাইনেই ভেবেছিলেন পুঁজি রাষ্ট্রীয় হয়ে গেলে হয়তো পুঁজি তার চরিত্র পাল্টাবে। সেটা যে হয় না, তা বোঝেননি। হয়তো ভারতচর্চা আরও নিবিড়ভাবে করার সুযোগ পেলে ভাবতে পারতেন, পুঁজিবাদ, ইউরোপীয় সামন্তবাদের বাইরেও একধরণের ব্যবস্থা হতে পারে। পরে ভেরা জাসুলিচকে লেখা না পাঠানো চিঠিতে তার কিছু ঝলক আছে।   

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৬ আগস্ট ২০২১ ১১:১৩496496
  • সরকারি ভার্সেস বেসরকারি  ইনোভেশন বা এবিলিটি নিয়ে বেশ কিছু কথা এসেছে নানা মন্তব্যে। ভাবলাম তাতে একটু ধুনো দিয়ে যাই। টাইম পাস্ আর কি। থিওরি ভার্সেস থিওরি যখন চলছে। 


    পেট্রোনাস একটি মালয়েশিয়ান সরকারি সংস্থা , ইন্ডিয়ার ওএনজিসি বা ইন্ডিয়ান অয়েল এর মতো। আর রয়াল ডাচ শেল দুনিয়ার সব থেকে বড়ো শেয়ার হোল্ডিং তেল কম্পানি এক সময়ের, এখনো নম্বর ২।  তো ফ্লোটিং এলএনজি নিয়ে বেশ কয়েকটা কোম্পানি গত কয়েক বছর রিসার্চ করছে - যারা একটু আধটু তেল গ্যাসের খোঁজ রাখেন -তারা ভালো বুঝবেন এটার ইম্পর্টেন্স। তো গত দু বছরে পেট্রোনাস সুকসেসফুলি ওদের প্রথম ফ্লোটিং এলএনজি কমিশন করে ফেলেছে। দ্বিতীয়টা বানাচ্ছে এখন। আর শেল একটা বানিয়েছে ঠিকই।  কিন্তু এখনো ট্রাবলশুটিং করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রোডাকশন আর ঠিক হয়না কিছুতেই। (এই লেখাটা দেখলে সুকি হেভি খচে যাবে)।


    সরকারি আমলাপনা বা অপদার্থতা বনাম  বেসরকারি এফিসিয়েন্সি ??  না কী এক্সেপশন প্রুভ্স দা রুল ?হবে হয়তো। 


    ১৯৬০-৮০ এ এপার্থেইড ব্লকের কারণে সাউথ আফ্রিকাতে কেও তেল সাপ্লাই দিতে চাইতোনা। ওখানকার সরকারি কোম্পানি সাসোল কয়লা থেকে তেল কনভার্সন রিফাইনারি বানায় ( অরিজিনাল টেকনোলজি যদিও জার্মান )। ওখানে বেশ কটা বেসরকারি তেল কোম্পানি থাকতেও তারা কেও এগোতে চেষ্টা করেনি  বা পারেনি যাই হোক। এক সময় সাসোল কমপ্লেক্স দুনিয়ার সবথেকে বড়ো কেমিকাল ম্যানুফ্যাকচারার ছিল। এখন নয় যদিও। 


    স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর কথাও এসেছে বেশ কবার। নরওয়ে সভরেন ফান্ড নিশ্চয় জানেন সক্কলে ? এই ফান্ডের দৌলতে আজকে নরওয়ে দুনিয়ার ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটা। এই ফান্ড টা এলো বা এতো বড়ো হলো কিকরে ? ১৯৬০-এ নর্থ সি তে তেল আবিষ্কার হয়। তখনকার নরওয়ের সরকারি তেল কোম্পানি স্ট্যাটওয়েল র তেলের প্রফিটের একটা বড়ো অংশ দিয়ে নরওয়ে সরকার এই সভরেন ফান্ডটা বানায়। এই ফান্ড দুনিয়া জুড়ে বহু জায়গায় বা মার্কেটে ইনভেস্ট করে। এইভাবে ৬০ থেকে ৯০-স -এই ৩০-৪০ বছরে ইনভেস্ট -রেইনভেস্ট করে করে আজকে নরওয়ে এই জায়গায়। এদের সোশ্যাল সিকিউরিটির একটা কান্ট্রিবিউশন এই ফান্ডের ইন্টারেস্ট বা প্রফিট থেকে আসে এখন। 


    তো নরওয়ে সরকার বোকার মত সরকারি তেল কোম্পানি বানাতে গেলো কেন ? ক্যাপিটালিস্ট বা মার্কেট ইকোনমির নিয়ম মেনে তখন এক্সক্সন -মোবিল বা শেল বা চেভরণ কে ডেকে অয়েল ফিলড গুলো নিলামে চড়ালেই তো পারতো। কিসব বোকার মতো কীর্তিকলাপ। 

  • dc | 122.178.147.255 | ০৬ আগস্ট ২০২১ ১১:৪৪496497
  • কল্লোলবাবু, আপনি যে সরকারি প্রকল্পে উদ্ভাবনের কথা বলছেন তার সাথে entrepreneurial প্রকল্প বোধায় সমান মাপকাঠিতে এনে তুলনা করা যায়না। উদ্ভাবনী শক্তি তো মানুষের অন্তর্নিহিত জিনিস, সে সরকারি প্রকল্পেও থাকবে, কোম্পানি চালানোতেও থাকবে, দৈনন্দিন জীবনেও থাকবে - আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা একটু অন্য। আমি বলতে চাইছি মার্কেটে কমপিট করতে গেলে যে উদ্ভাবন দরকার (প্রোডাক্ট, সার্ভিস, বা প্রসেস যাতেই হোক না কেন), সেটা আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সহজে হয় না, যতোটা entrepreneur এর চালানো কোম্পানিতে হয়। একটা ছোট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ (কোম্পানির লিডারশিপ টিম) যে অ্যাজিলিটি দেখাতে পারে, সেটা সরকারের পক্ষে সম্ভব না, কারন বাই ডেফিনিশান সরকার চালানোর জন্য বুরোক্রেসি দরকার। এর ভালো উদাহরন হলো আইবিএম - কোম্পানিটা এতো বড়ো হয়ে গেছিল যে প্রায় সরকারি বুরোক্রেসির সমতূল্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে কমপিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ হারিয়ে ফেলেছিল, মাইক্রোসফটের মতো ছোট কোম্পানির কাছে মার্কেট শেয়ার হারিয়েছিল। আবার মাইক্রোসফটও পড়ে এতো বড়ো হয়ে গেছিল যে গুগলের মতো ছোট কোম্পানির কাছে মার্কেট শেয়ার হারিয়েছিল। 

  • Kallol Dasgupta | ০৬ আগস্ট ২০২১ ১৩:৩৪496499
  • ডিসি। অনেকটাই একমত। কর্পোরেট যেমন একরকমের হয় না আবার "অন্যরকম" কর্পোরেট পাল্টেও যায় অবস্থা বিশেষে। সরকারও ঠিক তেমন। ভারতের সককারী কাজে সাধারণ মানুষের ভূমিকা নেই। একটা টিউবোয়েল কোথায় বসবে সেটা ঠিক করে বিডিও বা তার সাথে মিলে পঞ্চায়রৎএর মাথারা। এই পঞ্চায়েৎ মাথারা মানুষের নির্বাচিত তারা আর সাধারণ মানুষ নয় তারা সুবিধাভোগী শ্রেণী। তাদের ঘিরে একটা চামচা বলয় থাকে তারাও দেখতে সাধারণ মানুষের মতোই কিন্তু সাধারণ নয়। অথচ টিউবওয়েল কোথায় বসানো হবে সেটা ঠিক করা উচিৎ সেই এলাকার সাধারণ মানুষের সভা। সেটা যে সরকার নিশ্চিত করে তার সাথে আর একটা আমলা-নেতা-চামচানির্ভর সরকার গুণগতভাবে আলাদা। কর্পোরেটের একটা সমস্যা আছে। তাকে বাড়তেই হবে। সেটাই তার ধর্ম। কোন কর্পোরেট এটা বলতে পারে না চাহিদা এবং সম্ভাবনা থাকা সত্বেও আমরা আর বিনিয়োগ করবো না আর বাড়বো না। আর কর্পোরেট কর্মচারীদের নিজের জিনিস নয়। সেটা একান্তই বিনিয়োগকারীর। ফলে কর্মচারী যা করে সেটা কর্তব্যের জায়গা থেকে। সে টাকা পায় তাই তার নৈতিক ও আইনী দায়িত্ব কাজ ঠিক মত করার। প্রোডাকশন বা মার্কেটিং/সেলস প্রসেসে প্রবলেম হলে যতক্ষন না তার পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে ততোক্ষন সে তা দিতে পারে না। 


    একটা গল্প বলি। এটা বেসরকারী সংস্থার গল্প। আমি মদের কোং-এ কাজ করতাম আইটিতে। সে আদ্যিকালের   আইটি  ৮০র দশকে। ফলে ডিস্টিলারীতে নানা প্রকার ঝামেলা লেগেই থাকতো। ডিস্টিলারীগুলো খুব প্রত্যন্ত জায়গায় হওয়ার ফলে ডেটা এনন্ট্রি অপারেটার লোকাল থেকেই নিতে হতো। তারাই আইটি চালাতো। ফলে আমাকে প্রায়ই ডিস্টিলারিগুলয় যেতে হত। জায়গাটির নাম হাথিদা। মধ্য বিহার। মোকামা ও বারৌনী ব্রিজের মাঝামাঝি, গঙ্গার ধারে। একবার ঝামেলা মেটানোর কাজে গেছি। ওদিকে মহা হৈচৈ। লাইন থেকে রোজ মদের বোতল চুরি হয়। সিকিউরিটিও জড়িত বোঝাই যাচ্ছে কিন্তু প্রমাণ করা যাচ্ছেনা। ম্যানেজমেন্ট ক্যামেরা লাগালো। সে সব আদ্যিকালের ভিডিও ক্যামেরা যার রেকর্ডিং হতো আইটি রুমে রাখা ভিডিও টেপে,তখনো সিডির যুগ নয়। ক্যামেরা তো শপ ফ্লোরের মাথায় বসেছে ঠিক গেটের ওপরে। বের হতে গেলেই মুখ দেখা যাবে। যেদিন ক্যামেরা বসলো সেই দিন আমি ওখানে ছিলাম। পরদিন সক্কালে টেপ চালিয়ে দেখা গেলো - দুটো বস্তা হেঁটে হেঁটে ঢুকলো। তারা লাইনের শেষে তখনো প্যাক না হওয়া ভরা বোতল নিলো। বেরিয়ে আসার সময় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে সামান্য ঠুমকা দিলো। তাতে দেখা গেলো বস্তায় চোখের জায়াগায় দুটো ফুটো। লাও এবার ধরো !! নিম্নাঙ্গে পায়ে জুতো,যা কোম্পানীর দেওয়া ফলে ওরম জুতো কায়েকশ লোকের আছে।  


    এই হলো উদ্ভাবন। দারু.খেতেই হবে বিনি পয়সায়। কি দিয়ে আটকাবি আয় !!!!!

  • dc | 122.178.147.255 | ০৬ আগস্ট ২০২১ ১৩:৪৩496500
  • কল্লোলবাবু, গপ্পোটা ভারি মজার আর বস্তাচোরদের সেলাম - আমি হলেও ঠিক ওভাবেই মদ চুরি করার উপায় বার করতাম :-)


    "কর্পোরেটের একটা সমস্যা আছে। তাকে বাড়তেই হবে। সেটাই তার ধর্ম। কোন কর্পোরেট এটা বলতে পারে না চাহিদা এবং সম্ভাবনা থাকা সত্বেও আমরা আর বিনিয়োগ করবো না আর বাড়বো না।"


    এখানে আপনার ​​​​​​​সাথে একমত, ​​​​​​​যদিও ​​​​​​​এটা ​​​​​​​আমার ​​​​​​​ঠিক ​​​​​​​সমস্যা ​​​​​​​মনে ​​​​​​​হয়না। ​​​​​​​কোম্পানির ​​​​​​​কাজ ​​​​​​​হলো ​​​​​​​প্রফিট ​​​​​​​ম্যাক্সিমাইজেশান, ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​করার ​​​​​​​জন্যই ​​​​​​​ইনভেস্টররা ​​​​​​​তার শেয়ার কেনে। ​​​​​​​ধরুন ​​​​​​​আমি ​​​​​​​ক ​​​​​​​কোম্পানির ​​​​​​​শেয়ার ​​​​​​​কিনলাম, ​​​​​​​তো ​​​​​​​আমি ​​​​​​​চাইব ​​​​​​​ক ​​​​​​​কোম্পানির ​​​​​​​ম্যানেজমেন্ট ​​​​​​​যেন ​​​​​​​আমাকে ​​​​​​​যতোটা বেশী সম্ভব ​​​​​​​রিটার্ন ​​​​​​​দেয়, ​​​​​​​নাহলে ​​​​​​​আমি ​​​​​​​ক ​​​​​​​এর ​​​​​​​শেয়ার ​​​​​​​বেচে ​​​​​​​দিয়ে ​​​​​​​খ ​​​​​​​এর ​​​​​​​শেয়ার ​​​​​​​কিনবো। 


    আর কোম্পানি নানারকম হয়, সরকারও নানারকম হয়, সে তো অবশ্যই। ইট টেকস অল কাইন্ডস :-)

  • সম্বিৎ | ০৬ আগস্ট ২০২১ ২০:৫৪496505
  • ডিদি যা বলছেন, এবং যেরকম কম্প্যাক্ট করে বলছেন। তারপরে আমি আর কিছু যোগ করার নেই। আমার ধারণা কর্পোরেট আর সরকারির তফাত মূলতঃ মোটিভেশনে। কর্পোরেটে লাভ বাড়লে ডিরেক্টলি পকেটে আসবে। ক্ষতি হলে নিজে জি-তে যাবে। সরকারিতে অমন সোজাসাপ্টা ইকুয়েশন নেই। 

  • সম্বিৎ | ০৬ আগস্ট ২০২১ ২০:৫৪496506
  • ডিদি না, ডিসি।

  • sm | 42.110.140.96 | ০৬ আগস্ট ২০২১ ২২:০১496507
  • today’s advanced economies, private firms undertake the bulk of research and development. The business sector’s share of total R&D spending ranges from 60% in Singapore to 78% in South Korea, with the United States closer to the higher end, at 72%. But it is the public sector that provides the essential social, legal, and educational infrastructure that sustains private R&D.


    Innovation in the private sector depends crucially on government funding of basic science and research labs. It relies on scientific talent trained in universities supported by public funds. The state provides innovators with monopoly rights through the patent system, and ensures the private appropriation of returns to R&D through labor and contract law. Not least, private R&D is heavily subsidized by the state through tax credits and other policies.

  • সম্বিৎ | ০৬ আগস্ট ২০২১ ২২:৫২496508
  • তবে "সরকারি সংস্থায় ইনোভেশন হয়না"টা মিথ। স্পেস রিসার্চ - শেষ ক'বছর বাদ দিলে সব সরকারি। ডিফেন্স রিসার্চও। দেশে DRDO, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস এরকম সরকারি সংস্থার ইনোভেশন তো প্রবাদপ্রতিম। এদেশেও NASA, DARPA এদের কাজ। DARPA অবশ্য ইনোভেশনের প্রচুর কাজ ইউনিভার্সিটিকে আউটসোর্স করে দেয়।

  • Amit | 121.200.237.26 | ০৭ আগস্ট ২০২১ ০২:৫৭496516
  • আমরা হয়তো এটাকে লিনেয়ারলী সরকারি ভার্সেস বেসরকারি দ্বন্দে দাঁড় করাতে চেষ্টা করছি। বক্তব্যটা ঠিক সেটাও নয়। একজন ইন্ডিভিজুয়াল ইনভেস্টর হিসেবে যেকেউ চাইবে ম্যাক্সিমাম রিটার্ন। সেক্ষেত্রে পাশের জন খেতে পেলো কিনা সে কথা কেও ভাবেনা বা ভাবার দরকারও নেই । এখানে একজন শেয়ার মার্কেট ইনভেস্টর , একজন জুয়াড়ি , একজন পোকার প্লেয়ার- একজন মাঠের রেসুরে - একজন রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর -ইন প্রিন্সিপাল কারোর মধ্যে ডিফারেন্স নেই। যে যে যার মতো করে নিজের রিসোর্স কাজে লাগিয়ে বা লোন রিস্ক নিয়ে নিজের প্রফিট বা রিটার্ন ম্যাক্সিমাইজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রাইভেট এনটিটি বেটার রিটার্ন দিলে একশোবার এনারা তাদের কাছেই যাবেন । এতে কোনো দ্বিমত নেই। তারা যেদেশে ইচ্ছে যে কোনো মার্কেটে ইচ্ছে যেতে পারেন - এই স্বাধীনতা টাও তাদের আছে । 100-% একমত। 


    কিন্তু একটা দেশের সরকার তো শুধু কয়েকজন ইনভেস্টর র জন্যে হওয়া উচিত নয় (আজকে হচ্ছে,সেটা অন্য কথা). দেশ বলতে যদি একটা জিওগ্রাফিকাল এনটিটি-ই বোঝানো হয় , সেই দেশ জিওগ্রাফিকাল র বাউন্ডারি বাঁচাতে প্রতি বছর একগাদা লোকের প্রাণ যায়, তাহলে একটা দেশ র সরকারের ও সেই বাউন্ডারি র মধ্যে থাকা সবকটা লোকের গ্রেটার গুড বা লং টার্ম লাইফ বেটারমেন্ট এর জন্যে একটু কাজ ও করা উচিত। আর ন্যাচারাল রিসোর্স যেখানে আছে , সেখানে লোক্যাল লোকজনকে সেই বেনিফিট এ সামিল করা দরকার যেহেতু তাদের সকলের পক্ষে যেকোনো দেশে বা যেকোনো মার্কেটে যাওয়ার ক্ষমতা টা নেই - এই কনসেপ্ট থেকেই মূলত পাবলিক সেক্টর কোম্পানি গুলো তৈরী হয়েছিল সব দেশে। শুধু প্রফিট এর জন্যে নয়। 


    আজকে স্টিল সিটি বলতে যেগুলো বোঝায় -রুরকেল্লা দুর্গাপুর ভিলাই বোকারো ইত্যাদি এই জায়গাগুলো ১৯৫০-র আগে কি ছিল আর আজকে কি হয়েছে - এটা দেখলে হয়তো একটু বোঝা যাবে। এই কোম্পানিগুলো সত্যি প্রচুর ইনেফিসিয়েন্টলি চলেছে , অনেক ভালো ভাবে চালানো যেত- অনেক বেশি ইনভেস্টর রিটার্ন পাওয়া যেত -সব সত্যি মেনে নিয়েও একটা কথা কিন্তু বলা যায়  যে এই সমস্ত জায়গায় অসংখ্য ম্যাংগো লোকজনের ইন জেনারেল লাইফ অনেকটা বেটার হয়েছে গত পঞ্চাশ বছরে। যেটা হয়তো এগুলো পাবলিক সেক্টর হিসেবে না থাকলে হতোনা. অবশ্য এটাও আমার মতামত মাত্র -উল্টোটাও নিশ্চয় হতেই  পারতো।  কিন্তু সেই স্কেলে উদাহরণ- একটা বা কয়েকটা বেসরকারি কোম্পানি এসে সেখানকার মেজরিটি পপুলেশনের লাইফস্টাইল ইম্প্রুভ করে দিচ্ছে - ইন্ডিয়ার অন্য কোথাও সেরকম আছে কি ?। 


    জামশেদপুর টাও  এক্সসেপশন -ই , ইন ফ্যাক্ট টাটা ইন্ডাস্ট্রির সোশ্যাল কমিটমেন্ট অন্য স্কেল র হয়তো পাবলিক সেক্টর এর থেকেও বেটার কিছু ক্ষেত্রে। ইন্ডিয়ায় অন্তত অন্য কোনো প্রাইভেট কোম্পানি এই স্কেলে আসেনি এখনো অবধি। আর মেনলি শহর বেসড আইটি বা বিপিও ইন্ডাস্ট্রি কে এর মধ্যে আদৌ ধরাই যায়না। 


    অবশ্যই এটাই একমাত্র রাস্তা নয়। যেসব দেশে ম্যাচিউরড মার্কেট আছে , সোশ্যাল সিকিউরিটি আছে , একটা এস্টাব্লিশড & এফিসিয়েন্ট লিগাল সিস্টেম আছে , প্রপার এবং লেস করাপ্ট ট্যাক্স সিস্টেম আছে , সেখানে প্রাইভেট কোম্পানি গুলোর বা ইন্ডিভিজুয়াল ট্যাক্স রিটার্ন থেকে পাওয়া পয়সা সেই দেশের সরকার এফিসিয়েন্টলি কাজে লাগাতেই পারে ফর গ্রেটার গুডস - ফর ইনফ্রা ডেভেলপমেন্ট , শিক্ষা স্বাস্থ্য , সোশ্যাল সিকিউরিটি ইত্যাদি। তার অজস্ৰ উদাহরণ আছে নানা দেশে। কিন্তু সেসব দেশের তুলনায় এসব ক্ষেত্রে ইন্ডিয়া কোথায় ? তলানির দিকে থাকবে হয়ত ? 


    ইন্ডিয়ার মতো দেশে যেখানে ম্যাসিভ স্কেলে ওয়েলথ ইনকোয়ালিটি, সোশ্যাল ডিসক্রিমিনেশন , ঝড়ঝড়ে লিগ্যাল আর অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম , জিরো সোশ্যাল সিকিউরিটি , ১০০-% করাপ্ট পলিটিক্যাল সিস্টেম - সেখানে সরাসরি ডেভেলপড দেশের মডেল চালানোর আগে এই ফ্যাক্টরগুলো কিছুটা ওয়ে ইন করার দরকার বলে আমার মত । সবকিছু সরকারি করার কথা হচ্ছেই  না আদৌ। কিন্তু মালিয়া-মোদীরা ব্যাঙ্কের পয়সা মেরে যাতে ব্যাঙ্ক ফেল করে ম্যাংগো লোককে পথে বসাতে না পারে সেই স্টেপগুলো নেওয়াও জরুরি। সেটা আর হচ্ছে কোথায় ?এক্ষেত্রে যদিও কংগ্রেস বা বিজেপি সব সরকারই ডাহা ফেল। 


    আজকে ডেভেলপড দেশে একটা ব্যাঙ্ক বা কোম্পানি ফেল করে গেলে লোকের লাইফ সেভিংস হয়তো চলে যাবে। কিন্তু সে না খেয়ে মরবেনা। সোশ্যাল সিকিউরিটি পেমেন্টে অন্তত পাউরুটি খেয়ে থাকতে পারবে। পাশাপাশি গত বছর ইন্ডিয়ায় মইগ্রান্ট লেবার দের হাজার মাইল হেটে বাড়ি ফেরাটা মনে করেন একটু। 


    কল্লোলদা একটা দরকারি কথা বলেছেন। আল্টিমেটালি দেশের লোক আর সরকার -এটাই ডিসাইডিং ফ্যাক্টর  ফাইনালি। নরওয়ে তেলের প্রফিট কাজে লাগিয়ে সভরেন ফান্ড বানিয়ে আজকে ধনীতম দেশগুলোর মধ্যে একটা।আবার দুনিয়ার ওয়ান অফ দা বেস্ট সোশ্যাল সিকিউরিটি সিস্টেম চালায়। এর উল্টোদিকে নাইজেরিয়া বা লিবিয়া অনেক বেশি তেলের সম্পদ নিয়েও আজকে কোথায় দাঁড়িয়ে। এবার ইন্ডিয়া এই দুটো অপোজিট পোলের কোনটার কাছে দাঁড়িয়ে বা কোনদিকে যেতে পারে ভেবে দ্যাখেন। 

  • Ramit Chatterjee | ০৭ আগস্ট ২০২১ ০৯:৩৯496522
  • @amit আপনি ব্যাপার টা খুব ভালো এক্সপ্লেন করেছেন। ইন্ডিয়া তে ফ্রি মার্কেট ইকোনমি চালানোর জন্য সরকারের তরফ থেকে যে রেগুলেশন থাকা দরকার তা নেই বলেই সব কিছু বেসরকারি হাতে  ছেড়ে দেওয়া ভীষন ক্ষতিকর ও ভয়ংকর। 


    খাদ্য পণ্য: আকছার ভেজাল মেশানো হয়, ফসলে বিষাক্ত কেমিক্যালএর উপস্থিতি তো পুরোনো খবর। মিনিমাম কোনো হেলথ গাইডলাইন মেনে চলা নেই। ফেক অর্গানিক প্রডাক্ট চলছে। কালকেই বড় বাজারে ফেক 


    স্বস্থ্য : কোনো রেগুলেশন নেই বা থাকলেও তার এনফোর্সমেন্ট নেই। অর্ধেকের বেশি নার্সিং হোমের কোনো পরিকাঠামো ই নেই ঠিকঠাক। পুরো লোক ঠকানো বিজনেস চলে, যা ইচ্ছে বিল হয়। ঝোপ বুঝে কোপ।


    শিক্ষা : সরকারি স্কুল না থাকলে দেশের 65% বাচ্চা পড়তে পারতো কিনা সন্দেহ। বা পড়তে পারলেও পড়াতে গিয়ে বাবা মা অসীম ধারদেনা য় পড়ে নিঃস্ব হতো, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে র মতো


    লাইফস্টাইল প্রডাক্ট : অর্ধেক আয়ুর্বেদিক প্রডাক্ট ফেক। তার কোনো চেকিং নেই। কসমেটিক প্রডাক্ট কতটা ক্ষতিকর হতে পারে তার কোনো গবেষণা নেই সরকারের তরফে বা সাধারণ কে অবহিত করা নেই। অভারোল সিচুয়েশন খুব খারাপ।


    উইথ আউট রেস্ট্রিকসন ফ্রি মার্কেট দেশের মানুষের জন্য ভয়ঙ্কর।

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন