এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  কাঁটাতার

  • ৫০ বছরে বাংলাদেশ যা পারে, ভারত পাকিস্তান এবং পশ্চিমবঙ্গ ৭৫ বছরে তা কেন পারে না?

    ইমানুল হক
    পড়াবই | কাঁটাতার | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১৫৩৯৬ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৮ জন)
  • ১৯৪৭ উত্তর ভারতবর্ষ জন্ম দিয়েছিল নতুন কিছু শব্দবন্ধের। এই প্রবীণরা কখনও স্বাধীনতা বলেননি, বলেছেন পার্টিশন, তৃতীয় বিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যে শব্দ ভারতের অবদান। পার্টিশনের হাত ধরে এসেছে উদ্বাস্তু। রিফিউজি কলোনি। তারও পরে এসেছে অনুপ্রবেশ। বসেছে কাঁটাতার। এসেছে এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইন। শুরু হয়েছে "বৈধ-অবৈধ" বিচার। শোনা যাচ্ছে, নতুন শব্দবন্ধ, "অবৈধ অনুপ্রবেশ"। যাঁরা বিচার করছেন, তাঁদের বিচার কে করে। এসব শব্দের, আখ্যানের জন্ম হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দেশভাগের এই আদি পাপ, মুছে দেবার আপ্রাণ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, এভাবেই থেকে গেছে বেদনায়, ভাষায়, আখ্যানে। থেকে গেছে, এবং এখনও যাচ্ছে। সেই আখ্যানসমূহের সামান্য কিছু অংশ, থাকল পড়াবই এর 'কাঁটাতার্' বিভাগের দ্বিতীয় সংখ্যায়।


    লেখা।

    দু অক্ষরের শব্দ।
    কিন্তু ব্যাপ্তি বিশাল।
    লেখার কোনো মূল্য নেই যদি না তাতে দর্শন থাকে। দর্শন মানে ভিন্ন চোখে দেখা ও একটি জীবন দর্শন। যে জীবন দর্শন না দেখাকে দেখতে বলে, অথবা দেখাকে ভিন্ন চোখে দেখতে শেখায়।

    অমল সরকার পেশায় সাংবাদিক, নেশায় জীবনপড়ুয়া।
    তিন দশকের বেশি সাংবাদিক জীবন। রাজনীতি অর্থনীতি সমাজের গভীরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ভারতের দুই তৃতীয়াংশ রাজ্য নির্বাচন ইত্যাদি কাজে গেছেন। গেছেন একাধিকবার বাংলাদেশ। পাকিস্তানে যান নি। কিন্তু পাকিস্তান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন মনস্ক ভাবে।

    অমল সরকার একটা বই লিখেছেন, আমার দেশ আমার দ্যাশ
    দেশভাগ ও পরবর্তী কুফল সুফল-- দুই আছে তাঁর আলোচনায়। ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশ এবং অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ আছে তার আলোচনায়।

    স্বাধীনতার পরও পশ্চিমবঙ্গ শিল্প, শিক্ষা  ও কর্মসংস্থানে অন্য অনেক রাজ্যের চেয়ে এগিয়েছিল। পিছিয়ে পড়ল। কেন? মূলত, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি। যে সরকারই দিল্লিতে এসেছে, কংগ্রেস, জনতা বা বিজেপি-- কেউই পশ্চিমবঙ্গের ভালো চায় নি। মাশুল সমীকরণ নীতি, লাইসেন্স দিতে গড়িমসি, প্রাপ্য টাকা না দেওয়া, ভারি শিল্প দুর্গাপুর ছাড়া আর কোথাও সেভাবে না গড়া, পশ্চিমবঙ্গের কয়লা দূরে গেলে সস্তা হবে, আর তুলো দূর থেকে পশ্চিমবঙ্গে আনলে দামি হবে-- এইসব কারণে পশ্চিমবঙ্গ মার খেয়েছে। এটা শুধু শ্রমিক অসন্তোষ বা বাম আন্দোলনের দায় নয়। শুধু ৩৪ বছরকে দোষ দেওয়া ঠিকনয়,মনে করেন লেখক।

    আর রাজ্যের যে-সব নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী হয়েছেন তাঁদের মধ্যে গণি খান চৌধুরী, অজিত পাঁজা ও  মমতা  বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া রাজ্যের জন্য কেউ তেমন কাজ করেন নি। এবং আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  ছাড়া বাকি দলের বড় নেতারা সর্বভারতীয় হতে চেয়ে গায়ে যাতে বাঙালি ও প্রাদেশিক ছাপ না লাগে তার দিকে নজর  রাখতে গিয়ে বাংলার ক্ষতি করেছেন। ১৯৭৭-১৯৮৬ বামফ্রন্ট বিশেষত, অশোক মিত্র বাংলার তপথা রাজ্যের অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি সরকার ছাড়লেন।পরে কম্ল। ১৮৮৪-এ ন্তুন শিল্পনীতি। নতুন ভাবনা।

    অশোক মিত্র পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনার জন্য যাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব  ছিলেন, সেই প্রণব মুখার্জি রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনিই তো আটকে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের টাকা, প্রক্রিয়া। গুজরাট ও রিলায়েন্সের স্বার্থে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের লাইসেন্স প্রাপ্তি ২০ বছর আটকে রেখেছিল কে এবং কারা? কটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন রাজ্যের প্রভাবশালী কংগ্রেস বা বিজেপি নেতারা-- নিজের এলাকায়। পশ্চিমবঙ্গের একটা নেতিবাচক প্রবণতা হল, প্রাকৃতিক বিপর্যয় অন্য রাজ্যে সব দল কেন্দ্রীয় সহযোগিতা চেয়ে দিল্লিতে দরবার করে। এ-রাজ্যে সরকারি দলকে বিপদে ফেলতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে থাকা দল সবসময়ই বিরোধিতা করে। বলে, টাকা দিও না।

    রণজিৎ রায়ের পর সাংবাদিক  অমল সরকার বই লিখে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন, কীভাবে বাংলা বঞ্চিত। অশোক মিত্র, তপন মিত্র, অশোক দাশগুপ্তরাও বাংলার বঞ্চনা নিয়ে লিখেছেন। অমল সরকার একটা আস্ত বই লিখে ফেলেছেন বাংলার বঞ্চনা নিয়ে।

    তিনি দেখিয়েছেন, ১৯৭৭ এর অবস্থা থেকে বামফ্রন্ট সরকার অনেকটা এগিয়েছিল রাজ্যকে। কিন্তু অসীম দাশগুপ্তের ঘাটতি শূন্য বাজেট নীতি, দিল্লিতে বছর বছর টাকা ফেরৎ যাওয়া, এই খাতের টাকা ওই খাতে খরচ করা, বেতন পেনশন ও ঋণশোধে  সিংহভাগ ব্যয়, কেন্দ্র থেকে প্রাপ্য ঠিক মতো ও সময়ে না পাওয়া, ভোটের ভয়ে কর না বসানো, বিক্রয়কর আদায়ে ঢিলেঢালা ভাব, কেন্দ্রীয় বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ কম আসা, সর্বোপরি স্থিতবস্থার রাজনীতি -- রাজ্যের উন্নয়নের বাধা।  ২০১৩ তে একটা আন্তর্জাতিক সমীক্ষা হয়, তাতে ৮১টি বিষয়ে তুলনামূলক বিচার করে ভারতের ৩৪ টি রাজ্যের একটা পর্যায়ক্রম করা হয়। তাতে পশ্চিমবঙ্গের স্থান দাঁড়ায় ২১।

    ২০১১ তেও তাই ছিল। তবে ২০২০তে অনেক  এগিয়েছে রাজ্য। লেখক জানাচ্ছেন, 'ইন্ডিয়া টুডে'-র সমীক্ষা অনুযায়ী বেস্ট পারফরমিং স্টেটের বিচারে পশ্চিমবঙ্গের স্থান এখন ১০। এবং বেস্ট ইমপ্রুভড স্টেটের বিচারে চতুর্থ। 

    বইটিতে অজস্র তথ্য, পরিসংখ্যান আছে। আগ্রহী পাঠক দেখতে পারেন। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মানদণ্ডের বিচিত্র পরিসংখ্যান মিলবে  বইয়ে।

    লেখক লিখেছেন: বর্তমানকে জানতে, বুঝতে সুদূর এবং নিকট দুই অতীতকেই জানা জরুরি। সেই জানতে ও জানাতে লিখেছেন আটটি লেখা। এক জাতি, দুই দেশ, ধর্মনিরপেক্ষতা-স্বাধিকার-সাম্য এবং বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু ও রক্তাক্ত বাংলা, অনুপ্রবেশ-তোষণ-এনআরসি-সিএএ এবং বিভাজনের রাজনীতি, বাংলা-বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ, সোনার বাংলা ও এক বাবা ও মেয়ের কাহিনি, সোনার বাংলা সোনার পাথরবাটি, বাংলাদেশ: আমরা যা শিখতে পারি ।

    অমল সরকারের পূর্বপুরুষ পূর্ব বঙ্গের মানুষ। দেশভাগের আগেই চলে আসা। এই ধরনের পরিবারের সদস্যদের লেখায় অনেক সময় নস্টালজিয়া বা হা-হুতাশ বড় হয়ে দেখা দেয়। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে।

    কিন্তু অমল সরকার এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের ব্যতিক্রমী।

    দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ ৭৫ বছর পার করল। আর বাংলাদেশ দুটো দেশভাগ দেখেছে। দ্বিতীয় দফায় তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। নতুন রাষ্ট্র। সমস্যা লাখ লাখ। কারখানা নেই তেমন। ভারি শিল্প নেই। বিপুল খনিজসম্পদ নেই। সোনার ভাণ্ডার নেই। বিদেশি মুদ্রা আসে দান হিসেবে। সেই দেশ  বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন, আত্মত্যাগ ও তাঁর কন্যার শাসনকালে এবং সবচেয়ে বড় সম্পদ মানবসম্পদ নিয়ে কীভাবে এশিয়ার সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি হারের দেশ হয়ে উঠল -- এটা দেখিয়েছেন অমল সরকার।

    দু পাড়েই বাংলা ও বাঙালি।
    বাংলাদেশ পারল পশ্চিমবঙ্গ  কেন পারল না?
    জানতে বুঝতে পড়তে হবে 'আমার দেশ আমার দ্যাশ'।

    ভারতের উন্নতি কেন থেমে গেল? পাকিস্তানে কেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্ম হল না, আর মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ না ঘটলে বাজার ও শিল্পের বিকাশ ঘটে না।
    অর্থনৈতিক উন্নয়ন অসম্ভব। দেখিয়েছেন অমল সরকার।
    বাংলাদেশ যে যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তানে। বঞ্চনা, অবকাঠামো, অনুন্নয়ন, বিমাতৃসুলভ মনোভাব-- সবকটির শিকার ভারতে পশ্চিমবঙ্গ।
    তাহলে পূর্ব পাকিস্তান  কেন পূর্ব বঙ্গ থেকে বাংলাদেশ হতে পারল?
    কারণ তাঁরা মেনে নেয় নি, এবং মনে নেয় নি।

    পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের বড় অংশ দিল্লির কাছে সর্বভারতীয় হয়ে ওঠার দায় দেখাতে হয়েছে। ফলে বিধানচন্দ্র রায় থেকে জ্যোতি বসু বঞ্চনার কথা বলেও চুপ করে আপোস করতে হয়েছে।

    মুজিবুর রহমান 'বঙ্গবন্ধু' হয়ে ওঠার আগেই ছয় দফা দাবি তোলেন। তোলেন পূর্ববঙ্গের নিজস্ব মুদ্রা, মুদ্রাভাণ্ডার ও  নিজস্ব রিজার্ভ ব্যাংকের কথা। কেন্দ্রীয় সরকারের কেন অর্থমন্ত্রী থাকবে? এগুলো তো থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। সোভিয়েত ইউনিয়নে তো তাই হয়েছে। তাই উন্নতি করতে পেরেছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন মুজিবুর রহমান। অমল সরকার মুজিবুর রহমানের সংসদ ভাষণ, ছয় দফার দাবি অনুপুঙ্খভাবে তুলে এনে দেখিয়েছেন পূর্ব বঙ্গ কীভাবে বঞ্চিত।

    'আমার দেশ আমার দ্যাশ' বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৭২।
    লেখা মাত্র  আটটি। কিন্তু প্রতিটি লেখায় অজস্র উপপ্রসঙ্গ, স্মৃতিচারণ, অভিজ্ঞতা, পাঠ, মত বিনিময়, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, সমাজদর্শন, ভিন্নতর বীক্ষা ও দিশার বিপুল হদিস মিলবে। এই বইয়ের সব লেখার সঙ্গে আপনি একমত নাও হতে পারেন, বিশেষ করে, আপনার নিজের মত তৈরি থাকলে তো বটেই, কিন্তু বইটি পাঠ শেষ করে আপনাকে ভাবতে হবে-- আগের ভাবনায় কতটা দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন। বা পারা উচিত নাকি আরেকবার পড়তে শুরু করবেন তর্ক করবেন বা তুলবেন বলে। এ বই তর্ক তোলার, তর্ক থামানোর নয়।

    বইটির উৎসর্গ পত্রে নাম আছে রণজিৎ রায়, দেবাশিস ভট্টাচার্য, পরিমল সরকারের।

    রণজিৎ রায় অতীতের নামী সাংবাদিক। পশ্চিমবাংলা কীভাবে বঞ্চিত হচ্ছে দিল্লির মসনদীদের হাতে, ধ্বংসের পথে বাংলা, বলে জানিয়েছিলেন তিনি। মাশুল সমীকরণ নীতি, লাইসেন্স রাজ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশি টাকা নিয়ে গিয়ে কম টাকা ফেরৎ দেওয়া, বিমাতাসুলভ আচরণ-- অনুপুঙ্খভাবে দেখিয়ে দিয়েছিলেন রণজিৎ রায়। বাঙালি তাঁকে মনে রাখে নি। একদিন দিল্লির বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। আর কোনো খবর পাওয়া পায় নি। তিনি স্মৃতিভ্রষ্ট না বাঙালি-- প্রশ্ন ওঠে। রণজিৎ রায়ের উত্তরসূরী হিসেবে কাজ করেছেন অনেকটাই অমল সরকার। যদিও আরো অনেক তথ্য দরকার। আরো বিস্তারিত আলোচনা। এই বিষয়ে আরেকটি পৃথক বই লেখার দাবি রইল।

    সাংবাদিকতার বিশ্বকোষ দেবাশিস ভট্টাচার্য। অমল সরকার এবং দুজনেই তাঁর সহকর্মী ছিলাম। তখন এবং পরে বহু বিষয়ে তিনি দিক নির্দেশনা দেন। এই বইয়ে দেবাশিস ভট্টাচার্যের সহকর্মের ও সহমর্মের পরিচয় কিছুটা মিলবে।।

    বইয়ের প্রথম লেখা শুরু স্মৃতিচারণ দিয়ে। উদ্বাস্তু কলোনির অভিজ্ঞতা। কিন্তু এখানে চোরা মুসলিম বিদ্বেষ নেই। দেশভাগ নিয়ে বহু লেখাতেই যা অনিবার্য বিষয়।
    ভালভভরা রেডিও ছিল কলোনির প্রধান আকর্ষণ। পাকা বাড়ি বলতে স্কুল। সালমান রুশদির  'স্যাটানিক ভার্সেস' এবং 'হ্যারি পটার'-এর প্রকাশক রিচার্ড চারকিন ঢাকা ক্লাবে এক সকালের প্রাতরাশে বলেছিলেন, উদ্বাস্তু কোনো দেশের বিপদ নয়, দেশের সম্পদ।
    তাঁরা নতুন বসতির উন্নয়ন ও দেশের অগ্রগতিতে যথেষ্ট সহায়তা করেন।
    ইউরোপ থেকে শুরু করে সব দেশের ক্ষেত্রেই এটা সত্য।
    আমাদের বাংলায় শিক্ষা সংস্কৃতির বিকাশে উদ্বাস্তু পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা অপরিসীম।
    যেকোনো কলোনি এলাকা দেখবেন, বিদ্যালয় পাবেন একাধিক। নাটক খেলার সংস্থাও চলে জোর কদমে।
    এবং এঁরা এটা করে থাকেন মানসিক শক্তির জোরে।

    নিজের মায়ের উদাহরণ দিয়েছেন লেখক। আজকের দিনে 'সমাদৃত' কেন্দ্রীয় বাহিনী পুলিশের সহযোগিতায় নকশাল আন্দোলনের সময় ঘর থেকে যুবকদের রাতে তুলে নিয়ে যেত। এঁরা অনেকেই ফিরতেন না।
    মেজদার খাতায় লেখা ছিল কেমিস্ট্রির ফর্মুলা, তাকে বোমা বানানোর ফর্মুলা ধরে তরুণ সুবিমল সরকারকে ধরে নিয়ে যাবে উল্লসিত বাহিনী। শিকার পাওয়া গেছে।
    মায়ের অসাধারণ সাহস আর জেদের কাছে হার মানতে হয়।

    এই উদ্বাস্তু কলোনির কাছে মুক্তিযুদ্ধ এক নতুন বার্তা নিয়ে আসে। ঘরে ঘরে উচ্চারিত হয় মুজিবুর রহমানের নাম।
    তারপর বাংলাদেশ ও ভারতে পরিবর্তন এল। মুজিবুর রহমান নিহত হলেন।
    ইন্দিরা গান্ধী পরাজিত হলেন ভারতে।
    কলেজ বা বিভিন্ন বাড়ির দেওয়ালগুলো উঠল রাজনীতি ও অর্থনীতির বুলেটিন। দেওয়াল লিখন তখন নিছক ভোট দিন আর সম্মেলন সমাবেশের বিজ্ঞপ্তিতে পরিণত হয় নি‌।

    কেন্দ্র রাজ্যের পুনর্বিন্যাসের দাবিতে রাজ্যে গড়ে উঠল আন্দোলন। জ্যোতি বসু  প্রমোদ দাশগুপ্ত অশোক মিত্র তাকে অন্য ভাষা দিলেন। জ্যোতি বসু বললেন, খানিকটা যেন মুজিবের স্বরেই, কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে টাকা ছাপানোর মেশিন আছে। ওদের যখন ইচ্ছে টাকা ছাপিয়ে নেয়। রাজ্য সরকারকে ভাগ দেয় না। আর রাজ্য সরকারের হাতে টাকা ছাপানোর মেশিনও নেই।'
    স্বর আরেকটু উঁচু পর্দায় যেতে পারত। গেলে দেশের মঙ্গল হতো। গেল না। কারণ সর্বভারতীয় হতে চাওয়ার দায়।

    অমল সরকার লিখেছেন: কংগ্রেস, বিজেপি যখন যে দল ক্ষমতায় থেকেছে, রাজ্যগুলিকে শোষণ করেছে। রাজ্যগুলিকে একদিকে রাজস্বের ভাগ কমিয়ে দিয়ে বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার সীমা স্থির করে দেওয়ার পাশাপাশি নানা শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যে হাজার হাজার কোটি টাকা ( এখন লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা; গত সাত বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণ বেড়েছে ৪৯ লাখ কোটি থেকে বেড়ে এক কোটি দুই লাখ  কোটি টাকা)  ঋণ নিচ্ছে তা নিয়ে জবাবদিহির বালাই নেই।

    রেডিওর সামনে সত্তর দশকে মুজিবুর রহমানের কথা শুনে লেখকের মনে পড়েছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বীরত্বের কথা। 
    সাংবাদিকতা করতে এসে আরো বেশি করে চেনেন বাংলাদেশকে, এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে এ-দেশের মানুষের অজ্ঞতা ও নির্দিষ্ট ধারণা কে।
    যে ধারণা আসলে অনুকম্পা এবং বিদ্বেষজাত । তার বাইরে যে বাংলাদেশ, আসল বাংলাদেশ-- তাকে ছুঁতে পারেন এক বাংলাদেশি সাংবাদিকের কথায়:
    'আপনি ক্যাবল ইসসা লন।' আপনি কেবল ইচ্ছা করুন। থাকা খাওয়া ফ্রি।  অতিথি হয়ে থাকবেন।

    বাংলাদেশের পাশাপাশি এসেছে এই বাংলার কথা।
    সত্তর দশকে বামফ্রন্টের নেতৃত্বে মাতৃভাষায় শিক্ষাদান আন্দোলন নয়ের দশকের শেষে উল্টোপথে হাঁটতে থাকে। প্রতিক্রিয়ায় জন্ম নেয় 'ভাষা ও চেতনা সমিতি'। অশোক মিত্রসহ বহু প্রতিষ্ঠিত বামপন্থী বুদ্ধিজীবী বামফ্রন্ট সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সরব হলেন। বাংলা ভাষা আন্দোলন গড়ে উঠল। সারাদিন নববর্ষ উৎসব, সারা বাংলা ভাষা উৎসব পালন শুরু হল। এরপর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে 'ভাষা শহিদ স্মারক সমিতি' ও অশোক দাশগুপ্তের নেতৃত্বে 'নবজাগরণ'। কলকাতায় হল বাংলায় নামফলক লেখা অভিযান।

    এর আগেই নয়ের দশকের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গ দেখেছে অযোধ্যায় বাঙালি করসেবক, ইটপূজা। আর লেখক তখনকার অতি শক্তিশালী বিশ্বহিন্দু পরিষদ নেতা অশোক সিঙ্ঘলের মুখে শুনেছেন ভিন্নকথা: আমি তো শুনেছি বাঙালিরা ভগবানে বিশ্বাসী নয়। বাংলা দেখেছে রামনারায়ণ রাম থেকে বাম, রাম সত্য হ্যায়, শুনেছে জয় শ্রীরাম।

    এর পটভূমি যে তৈরি ছিলি তার একাধিক উদাহরণ দিয়েছেন লেখক।
    মুসলিম বৃদ্ধসহ মুসলিমরা  ভোট দিচ্ছেন ১৯৯৮-এ দমদম কেন্দ্রে পদ্মের পক্ষে, আসলে সিপিএমের বিরুদ্ধে-- বাবরি মসজিদ ওখানে ভেঙেছে এখানে তো মসজিদ ভাঙেনি।

    দ্বিতীয় উদাহরণ ট্রেনের। ১৯৯৪-এর।
    নৈহাটি লোকালে দুই তরুণীকে বিরক্ত করছে কিছু অবাঙালি তরুণ। যাত্রীদের কারো কারো প্রতিক্রিয়া: এদের ঘাড় ধরে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত'। কথাকাটাকাটি। গণধোলাইয়ের জোগাড়। তখন তরুণরা বলে উঠল, 'আপলোগ কেয়া সোচতে হ্যায়, হামভি হিন্দু হ্যায়'।
    'বদলে গেল পরিবেশ। ছেড়ে দিন ছেড়ে দিন। এসব বয়সকালের অসুখ।' একটু আগেই তরুণদের মুসলিম ভেবে পাকিস্তান পাঠিয়ে দিতে চাওয়া লোকের গলায় ভিন্ন সুর।

    মনোজগৎ বদলেছে আগে। তারপর রাজনীতির দুনিয়া। উপলব্ধি লেখকের। লেখক আক্ষেপ করেছেন:
    লোকসভা উপনির্বাচনে অন্ধ্র থেকে প্রার্থী হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের নেতা নরসিংহ রাও। অন্ধ্রপ্রদেশে তখন কংগ্রেস বিরোধী এন টি রামা রাও। তিনি বললেন, নরসিংহ রাও তেলেগু জনতার গরিব। আমরা প্রার্থী দেব না। জিতলেন নরসিংহ রাও।
    আর জ্যোতি বসুকে যখন বিজেপি বাদে কংগ্রেসসহ সব বিরোধী দল সাধাসাধি করছে বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ সিপিএম নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দিতে ভোট দিলেন।

    বিজেপির সদর দপ্তরে সেদিন উল্লাস দেখেছিলেন বহু সাংবাদিক।
    বিজেপির সেই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার গড়া। আজ তাঁরা দেশের প্রধান নিয়ন্ত্রক শক্তি।

    ##

    ভারতের বাংলা ও বাঙালির পিছিয়ে পড়া লেখকের আক্ষেপ ও যন্ত্রণার বিষয়। কলকাতায় বাঙালি সংখ্যালঘু হতে দেখেছেন তিনি, রামমোহন রায়ের গ্রামে দেখেছেন তপশিলি জাতির জন্য শ্মশান আলাদা। 
    লক্ষ্য করেছেন, করাচ্ছেন, ১৯৯১ থেকে ২০০১ থেকে বাংলায় হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়, শনি মন্দির থেকে নানা মন্দির ও মসজিদ দ্বিগুণ বেড়েছে।

    আর এখন তো হনুমান মন্দির ক্রমবর্ধমান।
    বর্ধমান গির্জা ও মসজিদও।

    #

    লেখক ভারতের বাঙালি ও বাংলাদেশের বাঙালিকে পরস্পরের থেকে শিক্ষা নিতে বলছেন।
    পশ্চিমবঙ্গে নকশাল আন্দোলন, বাংলাদেশে বাকশাল--নিয়ে লেখকের সিদ্ধান্ত:
    নকশালবাড়ির রাজনীতির মতো এক সকালে উঠে চলো গ্রামে তাই বলে বিপ্লবের ডাক দিলে বিপ্লব হয় না।
    আবার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরে তাঁরা অর্থনীতি সংস্কৃতি স্বাস্থ্য সমাজকল্যাণে এতোটা এগোল স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও ভারত কেন তা পারল না।
    শিশুদের মৃত্যুহার বাংলাদেশে কম,  প্রসূতি মায়ের মৃত্যু কম, গড় আয়ু বেশি, গড় আয় বেশি-- কেন পারলো বাংলাদেশ।
    ইচ্ছাশক্তি ও মনের জোর এবং সদিচ্ছা এবং নিজস্ব জীবনাদর্শ। যা হারিয়ে যাচ্ছে।

    ###

    'বঙ্গবন্ধু ও রক্তাক্ত বাংলা' অধ্যায়ে লেখক বলেছেন: শেখ মুজিব শুধু রক্তাক্ত বাংলার নায়ক নন, তিনি গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রক্তাক্ত যুগসন্ধিক্ষণের নব নায়ক। নতুন ইতিহাসের নির্মাতা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে সন্দেহ নেই।

    আবার 'সোনার বাংলা এবং এক বাবা ও মেয়ের কাহিনি' অধ্যায়ে ' ইন্দিরা গান্ধী, বেনজির ভুট্টোদের মতো শেখ হাসিনা মৌলবাদী ও উগ্রপন্থী শক্তির নিশানায় রয়েছেন'  এই মন্তব্য করে লেখক বলেছেন, হাসিনাকে লড়াই করে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে। ইন্দিরা গান্ধীর সরকারি উন্নয়ন ও হাসিনার উন্নয়নের মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছেন তিনি।

    বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার পাশাপাশি ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ, খনি জাতীয়করণ একাধিক শিল্পের রাষ্ট্রায়ত্তকরণের মতো সাহসী পদক্ষেপ এই উপমহাদেশের ইতিহাসে তাঁকে চিরস্থায়ী আসন দিয়েছে।
    অন্যদিকে হাসিনার সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতি বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ভালো। ভারতের তুলনায় তো যথেষ্ট ভালো। 

    ২০২১ এ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় চলে এসেছে বাংলাদেশ। কেবল ঢাকা নয় তৃণমূল স্তরে উন্নয়ন হয়েছে। গোটা দেশ জুড়ে হাইওয়ে সম্প্রসারণ ঘটেছে, ঢাকা মেট্রোসহ রেলের একাধিক প্রকল্পের সুবাদে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে।
    একের পর এক নদী সেতু নির্মাণ হয়েছে, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়ছে। মাথাপিছু আয় বাড়ায় চীন, জাপান, আমেরিকা বাংলাদেশের বাজার ধরতে আগ্রহী। 

    উল্টোদিকে পাকিস্তান পিছনে পড়েছে। পিছিয়ে পড়ছে ভারতও। বিশ্বব্যাঙ্ক, ইউএনডিপি, এশিয়ান ডেভেলাপমেন্ট ব্যাঙ্কসহ নানা প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান বলছে, 'বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক উন্নতির মতো বিষয়গুলিতে উপমহাদেশের অনেক দেশ এমনকী ভারতের থেকেও এগিয়ে।। বাংলাদেশের মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পেয়েছে লক্ষ্যণীয় হারে'।

    মায়ানমার থেকে নিপীড়িত অত্যাচারিত ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে নিজের ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন শেখ হাসিনা। 
    রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে স্যানিটারি প্যাড বিতরণের গল্প বলেছেন লেখক। বলেছেন রিলিফ নির্ভর দেশ আজ রিলিফ দিচ্ছে। 

    খোকা ইলিশ তথা জাটকা ধরতে না দেওয়ার হাসিনা সরকারের কঠোর নীতির প্রশংসা করেছেন লেখক। এতে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে। ১৬ হাজার কোটি টাকা আসছে ইলিশ থেকে। সামগ্রিক ভাবে মাছ উৎপাদনে উন্নতি চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ  ইংলিশ। প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান বলছে, 'বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক উন্নতির মতো বিষয়গুলিতে উপমহাদেশের অনেক দেশ এমনকী ভারতের থেকেও এগিয়ে।। বাংলাদেশের মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পেয়েছে লক্ষ্যণীয় হারে'।

    ###

    'অনুপ্রবেশ' শব্দটা সত্তর দশকে শোনেননি লেখক। লোকে গর্ব করে বলতেন, বরিশাল আমার দ্যাশ।  ১৯৯০-এর পর শব্দটিকে সুকৌশলে ব্যবহার করা হতো লাগল। ১৯৯৬-এর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সক্রিয় হল,নাম বাদ দিতে।লেখক দেখেছেন, বনগাঁ-তে বস্তা বস্তা নাগরিকত্বের  দরখাস্ত। রেশন কার্ড, ছেলে-মেয়ের জন্ম অশক্ষার প্রমাণপত্র। কিন্তু ভোটাধিকার মিলছে না।    ১৯৯৮ থেকে ' অনুপ্রবেশকারী' আর 'শরণার্থী' বলে বাংলাদেশ থেকে আসাদের ধর্মীয় পরিচয় বড় করে তোলা হল। তাতে কেন্দ্রের উপ্প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি  ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একসুর।
    মতুয়া রাজনীতি, সিএএ--সব বিষয়েই আলোকপাত করেছেন লেখক।

    এসেছে সংখ্যালঘু তোষণের প্রসঙ্গ।লেখক মুজিবুর রহমানের পাকিস্তান সংসদে বক্তৃতা দীর্ঘভাবে উদ্ধৃত করে দেখিয়ে দিয়েছেন,হিন্দু মুসলিমের স্বার্থ অভিন্ন। মানুষ হিসেবে তাঁরা এক। জাতি হিসেবেও। পশ্চিমবঙ্গে 'সংখ্যালঘু তোষণ' চলের কথাটা মিথ--লেখক তথ্যসহ প্রমাণ করেছেন। সরকারি চাকরির ২০ ভাগ মাত্র মেয়ে। তার মধ্যে  মুসলিম মেয়ে অতি নগণ্য। বিজেপি নেতারা অন্য রাজ্যে লক ডাউনের মাঝে রাম মন্দিরের ঘটা করে উদ্বোধন করলেও কোনো রাজনৈতিক দল বা বড় সংবাদমাধ্যম প্রতিবাদ করতে পারে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মমতা মুসলিমদের কোনো অনুষ্ঠানে গেলে অনেকেই লাফিয়ে ওঠেন। লেখক বলছেন, এর পিছনে আছে মুসলিমদের নিয়ে অনীহা।

    এবং বহুদিন ধরে চলে আসা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। লেখকের বক্তব্য, দুর্গাপুজা কালীপূজা ইদ মহরম  কোনো কিছুতেই শুভেচ্ছা জানানো্র রীতি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ছিলনা।এবং মন্দিরে দরগায় যাওয়া। যেটা এখন হচ্ছে। এবং চোখে পড়ছে।  অবশ্যই বামনেতারা ব্যতিক্রম।

    পাকিস্তান নিয়ে অমল সরকারের সাফ কথা মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ নেই। যারা জোতদার তারাই শিল্প-কারখানার মালিক,ব্যাংক বীমার মালিক, তারাই আমদানি-রফতানির মালিক, আবার তারাই সেনাবাহিনী এবং তারাই অসামরিক আমলা।

    ভারতেও সেদিকে আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে।
    এ বই সতর্কতার। এ বই সময়ের। 
    এ বই একজন গবেষক ও সাংবাদিকের।

    কিছু মুদ্রণপ্রমাদ আছে। অল্প পুনরুক্তি আছে। উপেক্ষণীয়। তবু লেখক ও প্রকাশক নজর দিতে পারেন। প্রচ্ছদ, ছাপা,  বাঁধাই ভালো।


    আমার দেশ আমার দ্যাশ
    অমল সরকার
    দে'জ পাবলিশিং, কলকাতা-৭৩
    মুদ্রিত মূল্য - ৩৯৯ টাকা


    বাড়িতে বসে বইটি পেতে হোয়াটসঅ্যাপে বা ফোনে অর্ডার করুন +919330308043 নম্বরে।



    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১৫৩৯৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 122.174.5.20 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১০:৩৯499502
  • "আমাদের বাঙালিদের" - এটা আবার কি বস্তু? এরকম কোন গ্রুপ আছে নাকি? পশ্চিমবঙ্গে এখনো অবধি আমার জানা মতে কারুর আসা বারন নয়। চীনেদেরও নয়। ভাগ্য ভালো পবতে আপনার মতো রেসিস্ট আর জেনোফোব এখনো সবাই হয়ে যায়নি। 
  • | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১১:১১499506
  • বলেছিলাম না ল্যাঞ্জা ইজ আ টাফ থিং ট্যু হাইড। 
     
    একটা দেশের মধ্যে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়াকে অনুপ্রবেশ বলে না। অনুপ্রবেশ শব্দটা ব্যবহার হয় এক দেশ থেকে অন্য দেশে বেয়াইনী প্রবেশ বোঝাতে। বেয়াইনী অর্থে লিগাল ভিসা ছাড়া। 
     
    এছাড়াও ভারত বহু ভাষাভাষি বহু ধর্মাবলম্বী, সম্পূর্ণ নাদতিক, বিভিন্ন জাতি ও জানজাতির বাসভূমি। তাদের প্রত্যেকের অন্য যে কোন অংশে গিয়ে বসবাস জীবনযাপনের অধিকার বজায় থাকুক সেটাই চাই।
     
    আর অত সংস্কৃতি রক্ষার দায় থাকলে ছাগুরা আবার আফ্রিকায় ফেরত  যেতে পারে, কিম্বা গাছে শিম্পাঞ্জি হিসেবে। কারণ উহাই প্রাচীন ও আদি। 
     
    যত্ত জেনোফোব জুটেছে এসে।
  • dc | 122.174.5.20 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১১:১৯499507
  • "ল্যাঞ্জা ইজ আ টাফ থিং ট্যু হাইড" - একদম। আধ ​​​​​​​ঘন্টা ​​​​​​​কথোপকথন, ​​​​​​​তিন ​​​​​​​চারটে ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​করলেই ​​​​​​​আসল ​​​​​​​রূপ ​​​​​​​বেরিয়ে ​​​​​​​পড়ে :d​​​​​​​
  • guru | 103.151.156.33 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১২:১৫499509
  • আমি আসলে শেষ লেখাটি লিখেছিলাম এইটে বুঝতে যে আসলে কে কোনদিকে| দ , হে হে , ডিসি সবাই আমার তোলা এখনো পশ্চিমবঙ্গের মূল সমস্যাটি নিয়েই কোন কথা বলছেননা |amake আপনারা যা খুশি বলতে পারেন কিন্তু এই সমস্যাটি ভারতের সব নন-হিন্দি বেল্টে জায়গাতেই আছে যে  বিহার থেকে আসা হিন্দী ভাষী যাদের জন্য সেই এলাকার স্থানীয় মানুষের নিজস্ব সমাজ অর্থনীতি সংস্কৃতির উপর কুপ্রভাব যা আপনারা আজকে না মানলেও আজকে থেকে ১০-২০ বছর পরে মানতে বাধ্য হবেন যদি আপনারা ততদিন এই পৃথিবীতে থাকেন এবং নিজেদের বন্ধ মনটাকে খোলা রাখতে পারেন |
     
    আপনারা মনে হয় পশ্চিমবঙ্গে বহুদিনে থাকেননা তাই পশ্চিমবংগে বিহারি প্রভাব জানেন না | কয়েকবছর কলকাতায় থেকে একটু দেখুননা আসল পরিস্থিতি|
     
    কলকাতার চীনা প্রভাব যা আছে তা বাঙালী সংস্কৃতির প্রসারে ভীষণ গুরুত্ব পূর্ণ প্রভাব ফেলেছে | কোলকাতাতে চীনা কমিউনিটি এবং তাদের অবদান নিয়ে আমার বেশ পড়াশোনা আছে এবং এদের যেরকম অবদান ছিল কলকাতার সংস্কৃতির উপরে তা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায়না |
     
    যখন ১৯৬২ সালে কলকাতা থেকে এখানকার চীনা কমিউনিটি কে রাজস্থানের কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিলো আপনারা আজপর্যন্ত তা জানেন কি ? না জানলে এই জেনোফোব,ছাগু,কিম্বা গাছে শিম্পাঞ্জি টার কাছ থেকেই জেনে নিন |
  • Amit | 220.235.192.196 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১২:৫৫499514
  • কে কোনদিকে আর কে কে কিসের এজেন্ডা নিয়ে এসেছে সেটা এতক্ষনে সবার কাছেই পরিষ্কার। এতবার বলার দরকারই পড়েনা। প্রথমে বুঝতে একটু ভুল হয়েছিল। এখন আসল রূপ বেরিয়ে পড়েছে। 
  • Somenath Guha | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৩২499517
  • মুশকিল হলো সব দলের মধ্যেই হনুরা ঘাপটি মেরে বসে আছে। rss স্কুলগুলো তো অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত নয় কড়া নজরদারি করা উচিত।
  • guru | 146.196.44.29 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২০:০৭499538
  • দ , হে হে , ডিসি তিনটে দুগু ​​​​​​​বেরিয়ে ​​​​​​​পড়েছে | তাহলে তিনটে দুগু আর তাদের সঙ্গে আমি একা ছাগু | ঠিক আছে দেখা যাক শেষে হাসিটা কে হাসে | তিনটে দুগু না আমি ছাগু !
     
    আজকেই আমার এক বন্ধু ছাগু মধ্য কোলকাতার অন্ততঃ তিনটি হিন্দিভাষী যুবতীর সঙ্গে আলাপ করে দেখেছে ওরা প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে কোলকাতাতে থাকলেও একবর্ণ বাংলা বলতে পারেনা | তিন দুগুরা কি বলবেন এব্যাপারে ? 
     
    দুগুরা অনেকদিন ধরে তো ঠান্ডি ঘরে বসে অনেককে অনেককিছু বলে দিলো এইবার একটু রাস্তায় নেমে দেখুক না বাস্তবতা কাকে বলে !
  • দীপ | 2402:3a80:aa8:2c1a:9897:912b:106e:fc14 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:১২499541
  • দীপ | 2402:3a80:aa8:2c1a:9897:912b:106e:fc14 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:১৮499542
  • আবার উৎসবের মরসুমের সংখ্যালঘুদের উপর অজুহাত দেখিয়ে হামলা শুরু হয়েছে! 
    গোসন্তান ও শূকরশাবক , দুইই চূড়ান্ত ঘৃণ্য ও সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক! আর এক ক্ষেত্রে চুপ থাকলে অন্য সাম্প্রদায়িক শক্তিকে যে বাড়িয়ে তোলা হয়, সে বুদ্ধিটুকু না থাকলে কিছুই বলার নেই!
  • খ্যাক | 2a0b:f4c0:16c:12::1 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:২৩499543
  • গুরুতে লেখেন বিখ্যাত ডিডি ৩৫ না ৪৫ বচ্ছর ব্যাঙ্গালোরে থাকেন। সপাটে জানিয়েছিলেন আজও একবর্ণও কন্নড় বলতে  পারেন না।  কী বুইলে ছাগুরাম?
  • দীপ | 2401:4900:3146:d6c3:b220:99c9:e06f:4a8f | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:২৪499544
  • অথচ এরপরও কেউ কেউ বলবেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের কোনো ‌প্রমাণ নাকি পাওয়া যায়না। তাঁরা ভুলে যান, আজকাল ইন্টারনেটের দৌলতে অনেক তথ্য‌ই খুব দ্রুত চলে আসে!
  • guru | 146.196.44.29 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:৩৮499546
  • @খ্যাক দুগুরাম তুমি ​​​​​​​আবার ​​​​​​​কে ​​​​​​​বাপু ? নতুন ​​​​​​​কোন ​​​​​​​অবতার ​​​​​​​এটি ​​​​​​​তোমার ​​​​​​​দুগুরাম ​​​​​​​? 
  • guru | 146.196.44.29 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২১:৫৩499548
  • @খ্যাক দ , হে হে , ডিসি কোনটা তোমার আসল অবতার দুগুরাম?  তা ​​​​​​​তুমি ​​​​​​​বাপু ​​​​​​​শেষ ​​​​​​​কবে ​​​​​​​কোলকাতাতে ​​​​​​​পা রেখেছো ? বাংলা হরফ লিখতে বলতে পারো নাকি গুগল গুরু ঘেঁটে ঘেঁটে কাজ করো তুমি দুগুরাম ? 
  • | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২৩:২০499553
  • ওব্বাওয়া এও সেই কুবের মাঝি দুধের চাঁছি নাকি? 
     
    ১) আমি লগিন না করে গুরুতে লিখি না। বেনামেও কোনোদিন লিখি নি। প্রয়োজনই পড়ে নি। চাড্ডিকে চাড্ডি আর ছাগুকে ছাগু নিজের নামেই বলি। 
    ২) ডিসিও গুরুতে লিখছেন আজ প্রায় বছর সাতেক। ২০১৪ থেকে আগাগোড়া ডিসি নামেই লিখছেন। 
    ৩) কলকাতার বাইরেও পশ্চিমবঙ্গের একটা বিরাট অংশ আছে। শিলিগুড়ি বা বাঁকুড়া (যদি এসব জায়গার নাম ফাম শুনে থাকেন আর কি) থেকে রোজ কলকাতা যাওয়া সম্ভবও নয় দরকারও পড়ে না। 
    তবে মনোযোগ চেয়ে ল্যাও ল্যাও ফ্যাও ফ্যাও করছেন তাই জানিয়ে রাখি গতকালই গেসলাম। আবার সোমবার যাব। 
    ৪) হেহে নিকে বা খ্যাক নিকে যারা লিখেছেন সেটা আমার ঘাড়ে চাপালে আমি সাইবার হ্যারাসমেন্টে কমপ্লেন করব। ২০১০ সালের টই খুঁজে দেখে নেবেন করেছি।
    ৫) চাড্ডি আর ছাগু দুটো প্রজাতিকেই ঘেন্না করি। হেনোফোবদেরও ঘেন্না করি।  
     
    এরপরে ল্যাও ল্যাও করে মনোযোগ  চাইলেও পাবেন না, কারণ এইরকম মানসিকতার  লোকেদের সাথে এনগেজ করে সময়ের অপচয় করি না। 
  • 4z | 2606:40:490:4144::260:fc16 | ১৩ অক্টোবর ২০২১ ২৩:২৭499554
  • 'ওব্বাওয়া এও সেই কুবের মাঝি দুধের চাঁছি নাকি?' এদ্দিনে চিনলে? 
  • Debanjan Banerjee | ১৪ অক্টোবর ২০২১ ০৯:১৫499566
  • @ দীপ  ইন্টারনেটে শুধু খারাপ খবরই নয় অনেক ভালো খবরও কখনো কখনো সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে পাওয়া যায় | এই খবরটি ​​​​​​​কি ​​​​​​​সাধুবাদ ​​​​​​​জানানো ​​​​​​​যায় ​​​​​​​না ​​​​​​​?
     
  • guru | 103.135.228.163 | ১৪ অক্টোবর ২০২১ ১০:৩১499567
  • @দ "একটা দেশের মধ্যে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়াকে অনুপ্রবেশ বলে না। অনুপ্রবেশ শব্দটা ব্যবহার হয় এক দেশ থেকে অন্য দেশে বেয়াইনী প্রবেশ বোঝাতে।"
     
    দুগুশ্রেষ্ঠ দুগুত্তম আমি ক্ষমা চাইছি আপনার কাছ থেকে হিন্দিভাষীদের ভারতের সমস্ত নন -হিন্দিভাষী রাজ্যে গিয়ে রাজ্যবিস্তার করাকে "অনুপ্রবেশ" বলে বর্ণনা করে | দুগুশ্রেষ্ঠ দুগুত্তম আমি হিন্দিভাষীদের ভারতের সমস্ত নন -হিন্দিভাষী রাজ্যে গিয়ে রাজ্যবিস্তার করাকে  "অনুপ্রবেশ" বলে বর্ণনা  না করে সাম্রাজ্যবিস্তার বা কলোনিয়ালিজম বলে উল্লেখ করলাম | মহান দুগুরাজ আপনার সুচিন্তিত মতামতের অপেক্ষায় রইলো এই অধম ছাগু হেনফোব | 
     
    মাননীয় দুগুরাজ  অধমের অপরাধ ক্ষমা করুন আপনাকে খ্যাক বা হেহে বলার জন্য | আমি আপনারকে "দুগুশ্রেষ্ঠ " উপাধি দিলাম |
  • guru | 103.135.228.163 | ১৪ অক্টোবর ২০২১ ১০:৩৪499568
  • পুনশ্চ অমিত , খ্যাক বা হেহে  তাদেরও এই বিষয়ে ​​​​​​​মতামতের ​​​​​​​অপেক্ষায় ​​​​​​​রইলাম | অবশ্য ​​​​​​​এই ​​​​​​​দুগুরা ​​​​​​​কি ​​​​​​​বলবে ​​​​​​​কে ​​​​​​​জানে ​​​​​​​?
  • guru | 103.135.228.163 | ১৪ অক্টোবর ২০২১ ১০:৪১499569
  • সরি অমিত নয় ডিসি হবে | ডিসি কি বলবে এটা নিয়ে কে জানে আবার ? ডিসির বদলে  অমিতের নামটি বসিয়ে দেওয়া আমার ভুল | 
  • দীপ | 2402:3a80:a8f:9f6d:730c:278a:1d4f:d89 | ১৪ অক্টোবর ২০২১ ১২:৫০499574
  • @দেবাঞ্জন, অবশ্য‌ই। যিনি  সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলেন, রাষ্ট্রশক্তির ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে  অবতীর্ণ হন- তিনি অবশ্য‌ই আমাদের শ্রদ্ধেয়। সর্বদেশে, সর্বকালে তাঁরা আমাদের নমস্য।
    নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা খুব ভালো কাজ করেছেন। সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই রায় অবশ্য‌ই দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ প্রদর্শন করেছে।
  • Debanjan Banerjee | ১৪ অক্টোবর ২০২১ ১৫:১২499575
  • @দীপ বাংলাদেশের এই সংখ্যালঘু নির্যাতন একটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় | ২০২১ সালের এপ্রিলে মোদী সফরের সময় একই ঘটনা দেখা গেছিলো | সেইবারে মূলত চট্টগামে ব্যাপার টা সীমাবদ্ধ ছিল এখন কুমিল্লাতেও ছড়িয়ে পড়েছে | আচ্ছা শেখ হাসিনা তো সবচেয়ে সেক্যুলার ও উপমহাদেশের সবচেয়ে সফল অর্থনীতি চালান তাহলে এই সমস্যা কেন ? এর পিছনে অর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণগুলি কি ? জামায়াত বা হেফাজত বিনপি এরা তো অনেকদিনই নিষিদ্ধ তাহলে কারা এই কাজ করছে ? আপনার মতামত জানবার আগ্রহ রইলো |
  • দীপ | 2401:4900:3146:d6c3:4a41:900d:9c24:230e | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ১৩:৩৪499608
  • @দেবাঞ্জন, আমি আগেই বলেছি বাংলাদেশের ব্যাপারে আমি খুব বেশি জানিনা।সুতরাং কিছু না জেনে আলোচনা করা ঠিক নয়।
    তবে ফেসবুক-ইউটিউব থেকে যেটুকু তথ্য পেয়েছি, তাতে পরিষ্কার বোঝা যায়; বাংলাদেশে ধর্মোন্মাদ মৌলবাদী শক্তি অত্যন্ত শক্তিশালী! এরা সরাসরি সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশ ছাড়ার হুমকি দেয়, সারা বিশ্বে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে খেপিয়ে তোলে। জামাত-বিএনপি নিষিদ্ধ হতে পারে; কিন্তু এই মৌলবাদী শক্তির ক্ষমতা তাতে কমেনি! কুমিল্লার ঘটনা তার‌ই প্রমাণ!
  • Debanjan Banerjee | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৪৬499620
  • @দীপ কিন্তু শেখ হাসিনা এক দশকেরও বেশি ক্ষমতায় থাকার পরেও কেন এই পরিস্থিতি ? তাহলে কি মৌলবাদীদের শেখ হাসিনা নিয়ন্ত্রণ ও সময় সুযোগ মতো ব্যবহার করছেন ? কিন্তু keno? 
  • দীপ | 42.110.137.114 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০১503849
  • দীপ | 42.110.137.114 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০২503850
  • দীপ | 42.110.137.114 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০৪503851
  • বাংলাদেশের পত্রিকার নির্বাচিত অংশ। খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ধারাবাহিকভাবে পূর্ব পাকিস্তান‌ বা বর্তমান বাংলাদেশ‌ থেকে ধারাবাহিকভাবে অভিপ্রয়াণ করেছে। নাহলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শতকরা অনুপাত ধারাবাহিক ভাবে হ্রাস পায়না। আর যে মহাপ্রভুরা জন্মহার হ্রাসের তত্ত্ব নিয়ে এসেছেন, সেই তত্ত্ব শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য কেন তাও ঠিক বোঝা গেলনা!

    বাংলাদেশের মাননীয় বন্ধুদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আগে নিজেদের দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ‌ হিসেবে গড়ে তুলুন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে যথাযথ নিরাপত্তা ও মর্যাদা দিন। তবেই স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি সার্থক হবে।
    তা না করে অহেতুক আত্মম্ভরিতা ও অপরের সমালোচনা চূড়ান্ত বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    আর পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবীরা তো আরো চমৎকার! এঁরা আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি, আফগানিস্তান, ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন নিয়ে অজস্র বাক্যবিন্যাস করতে পারেন, কিন্তু বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কথা উঠলেই এঁরা মৌনব্রত অবলম্বন করেন। তখন সেটা অন্যদেশের ব্যাপার হয়ে যায়!
  • দীপ | 42.110.137.114 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০৫503852
  • পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মহাবিপ্লবী মুখ্যমন্ত্রী (এঁরা আদতে ঢাকার লোক) সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সদা সজাগ, বঙ্কিমের রক্তে সাম্প্রদায়িকতা খুঁজে পান। কিন্তু এই সময় তাঁর দিব্যচক্ষুতে কিছুই ধরা পড়েনা! বরং তসলিমা বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে লিখলে তাঁর ব‌ইকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাঁকে রাজ্য থেকে তাড়ানো হয়। আরেক মহাবিপ্লবী বলে ওঠেন, "পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যদি না চান, তবে তসলিমার পশ্চিমবঙ্গে থাকা উচিত নয়!"
    গণতন্ত্রের অসামান্য নমুনা!

     তসলিমার লেখা থেকে জানা যায়, তৎকালীন কলকাতা পুলিশের কমিশনার (তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহধন্য এই মহাপ্রভু রিজ‌ওয়ানুর কাণ্ডেও যুক্ত ছিলেন) তাঁকে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী চাননা তিনি পশ্চিমবঙ্গে থাকুন, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি যেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে চলে যান! যে বাড়িতে তসলিমা ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিককেও থানায় ডেকে হুমকি দেওয়া হয়‌ তিনি যেন তসলিমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন! অবশেষে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবহার করে তসলিমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়ানো হয়!
    তসলিমার সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা যদি কোন সভ্য দেশে হতো; তবে ঐ উদ্ধত মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনারকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে জেলে পাঠানো হতো! তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলেই এই অসভ্যতা ও ঔদ্ধত্য সম্ভব!

    তবে শুধু এঁরাই নন, আরেক প্রতিভাবান বৃদ্ধ গায়কের কথাও বলতে হয়। বাংলাদেশে ব্লগারদের উপর একের পর এক আক্রমণ হলে ইনি বলেন "দিনের পর দিন প্রফেটকে নিয়ে, ধর্মকে নিয়ে আক্রমণ করলে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতেই পারে!"
    বিজেপি-আর এস এসের যুক্তির সঙ্গে কি অসামান্য মিল!
  • দীপ | 42.110.137.114 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০৭503853
  • বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ সহযোগে দেখানো হয়েছে গত ৭০/৭৫ বছরে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমান বাংলাদেশ‌ থেকে এককোটির‌ও বেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। গত শতকের ইতিহাসে এটি একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অভিপ্রয়াণ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের প্রমাণ এই অভিপ্রয়াণ। 
    মেঘনাদ সাহা, বি আর আম্বেদকর, বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতো বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ বারবার এই নির্যাতন নিয়ে সরব হয়েছেন। আর আজ এই নিয়ে কথা বললে শুনতে হয় "বিজেপির লোক", "হিন্দুত্ববাদী", "ইসলামোফোব"! বিপ্লবের অসামান্য নমুনা!
     
    এককোটির‌ও বেশি বাঙালী অত্যাচারিত হয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে! শুধু ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ২০/৩০ লক্ষ বাঙালীকে খুন করা হয়েছে! হিটলারের নারকীয় অত্যাচারের চেয়ে এইসব ঘটনা কম ভয়ঙ্কর নয়!
     
    কিন্তু এই নারকীয় অত্যাচার নিয়ে আমাদের মহাবিপ্লবীদের মুখ থেকে একটা কথাও শোনা যায়না! কেউ কেউ আবার ব্যঙ্গ করে বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে জানেনা! অসহায় মানুষদের নিয়ে এই ব্যঙ্গ যারা করে, তাদের নরপশু বলতেও ঘৃণা বোধ হয়!
    স্বজাতির সঙ্গে এতো বড়ো বিশ্বাসঘাতকতার নজির পৃথিবীতে বড়োই বিরল! কিন্তু বিশ্বাসঘাতকদের শেষ পরিণতি কখনো ভালো হয়না! মীরজাফর তার অন্যতম প্রমাণ!
  • দীপ | 42.110.137.114 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০৮503854
  • বিশ্ব ইতিহাস নিয়ে চর্চা করা খুবই ভালো, কিন্তু নিজের দেশের ইতিহাস বাদ দিয়ে নয়! জাতীয় সমস্যাকে অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান হয়না। 
    নাজী জার্মানিতে ইহুদী ও অন্যান্যদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে, তা চূড়ান্ত ঘৃণ্য। কিন্তু বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
    কিন্তু তার উপর তথ্যনিষ্ঠ গবেষণা খুব কম‌ই হয়েছে। মহাবিপ্লবীরা এ বিষয়ে নীরব থাকতেই পছন্দ করেন।
    গরীবের দুঃখ, নির্যাতনে কি সরব হ‌ওয়া যায়? "তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্যের রোগ, দরিদ্রের ক্ষুধা কেহ বোঝেনা!" বঙ্কিমের অমোঘ বাক্য!
  • দীপ | 2401:4900:3a11:f973:2e76:2ad9:e29b:8e02 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৪৯503982
  • গতবছর দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার নিয়ে মহাবিপ্লবীদের মত! একটা সামান্য প্রতিবাদ করার ক্ষমতা পর্যন্ত নেই! এঁরা করবেন বিপ্লব! বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের কথাই আবার বলব "জননীর গর্ভের লজ্জা!"
    বিজেপি কেন উঠছে তা বুঝতে কোনো কষ্ট হয়না!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন