এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  ইতিহাস

  • রাশিয়ায় জাতিভিত্তিক গণউচ্ছেদের ইতিহাস

    সুদীপ্ত পাল
    আলোচনা | ইতিহাস | ০১ মার্চ ২০২২ | ৫৮৩৯ বার পঠিত | রেটিং ৪ (৫ জন)

  • ক্রিমিয়াতে যে তাতাররা একসময় প্রধান ও প্রায় একমাত্র জনগোষ্ঠী ছিল সেই তাতাররা এখন ক্রিমিয়ার জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মাত্র। কীভাবে? জারদের যুগ থেকে ক্রিমিয়ার রুশিকরণ শুরু। তারপর ১৯৪৪ সালের মে মাসের একদিন কয়েক ঘণ্টার নোটিশে প্রায় দু’লক্ষ ক্রিমিয়ান তাতারকে একের পর এক মালগাড়িতে বসিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে উজবেকিস্তানের জনবিরল অঞ্চলগুলিতে। ক্রিমিয়ান তাতারদের স্থান দখল করল রুশরা।

    কৃষ্ণ সাগরের তীরে কাল্মিকিয়া হল ইউরোপের একমাত্র বৌদ্ধপ্রধান প্রদেশ। ইউরোপের একমাত্র স্থানীয় বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী হল কাল্মিক – এরা মোঙ্গোলিয় উৎসের মানুষ। ১৯৪৩ সালে বারো ঘণ্টার নোটিশে কাল্মিকিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এক লক্ষ কাল্মিকদের প্রায় প্রত্যেককেই, পাঠানো হয় তিন হাজার কিলোমিটার দূরে মধ্য সাইবেরিয়ায়। কয়েক দশক পর অবশ্য তারা মাতৃভূমিতে ফেরার সুযোগ পায়। তাদের ১৭৫টি মন্দির ইতোমধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, মারা গেছে উচ্ছিন্ন জনসংখ্যার ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ মানুষ।

    ১৯৩৭ সালে সাইবেরিয়ার পূর্বপ্রান্তে বসবাসকারী প্রায় দুই লক্ষ কোরিয়ানকে সরিয়ে পাঠানো হয় কাজাকস্তান ও উজবেকিস্তানের জনবিরল অঞ্চলগুলিতে। প্রায় ছ’হাজার কিলোমিটার দূরে। একইভাবে লিথুয়ানিয়ান ও ফিনিশদের রাশিয়ার পশ্চিম প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা হল সাইবেরিয়ার পুবদিককার জনবিরল অঞ্চলগুলিতে।

    পূর্বকথা:

    নূতন সোভিয়েত সরকারের জাতি-উচ্ছেদ নীতি কিন্তু পুরোনো জার শাসিত রুশ সাম্রাজ্যেরই ধারাবাহিকতা। ১৮৬৪ থেকে ১৮৭০ সালের মধ্যে ককেশাসের সারকেসিয়ান মুসলিমদের ৮০ থেকে ৯৭ শতাংশের বিতাড়ন হয়, যার শিকার হয় প্রায় আট থেকে পনেরো লাখ মানুষ, যার অর্ধেক মারা যায়।

    ঊনবিংশ শতকেই পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন উচ্ছেদের সূচনা হয়। সেই যুগে রাশিয়ার সামরিক পরিসংখ্যানবিদরা রীতিমত এই নিয়ে গবেষণা করে স্ট্রাটেজি বানাতেন – কোথা থেকে কাকে সরানো উচিত! A. Maksheyev, N. N. Obruchev আর V. A. Zolotarev – এই তিনজন পরিসংখ্যানবিদের কাজ এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল। তাঁদের কাজের ধারায় যেটা পাওয়া যায়, সেটা হল “অবিশ্বাসযোগ্যতার ভৌগোলিক অভিমুখ”। এই কাজের জন্য মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় – স্লাভিক (রুশ এবং সমজাতীয় ভাষাগোষ্ঠীগুলি) ও অ-স্লাভিক (পশ্চিম ইউরোপীয়, মধ্য এশীয়, ইহুদি, ও ককেশাস পর্বতীয় জাতিগুলি)। তারপর কোন ভৌগোলিক অঞ্চলে কাদের অনুপাত কীরকম – তার ভিত্তিতে অঞ্চলগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য ও অবিশ্বাসযোগ্য বলে চিহ্নিত করা হয়। তারপর হত অবিশ্বাসযোগ্য অঞ্চলগুলিকে বিশ্বাসযোগ্য বানানোর প্রক্রিয়া – মূলত রুশিকরণের মাধ্যমে।

    ১৯৪৪ সালের উচ্ছেদের অনেক আগেই ক্রিমিয়ান তাতারদের সংখ্যা প্রায় একশ’ শতাংশ থেকে চৌত্রিশ শতাংশে নেমে আসে জারতন্ত্রের শেষদিকে (১৮৯৭ সালের আদমশুমারি), আর প্রায় কুড়ি শতাংশে ১৯৩৯ সালের আদমশুমারিতে। সেটা শূন্যের কাছাকাছি চলে আসে ১৯৪৪-এর উচ্ছেদের পর।

    ১৮৯১ সালে মস্কো থেকে ইহুদিদের তিন চতুর্থাংশকে বিতাড়ণ করা হয়। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জার্মান এবং অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ানদের বিতাড়ন করা হয় – দেশ থেকে নয়, দেশের মধ্যেই মস্কো বা সেন্ট পিটার্সবার্গের মত অঞ্চল থেকে সরিয়ে উরাল বা সাইবেরিয়ার মত জায়গায় পাঠানো হয়। স্থানান্তরের খরচ উচ্ছিন্ন মানুষের নিজেদের, সেটা বহন করতে না পারলে তাদের যুদ্ধবন্দী হিসেবে পরিবহন করা হবে। তার পরের চার বছরে পোলিশ এবং ইহুদিদের উপরও কোপ পড়ে। প্রায় তিন লক্ষ ইহুদিকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে অভ্যন্তরবর্তী অঞ্চলগুলোতে পাঠানো হয়। তাদের বাড়ি ও দোকানপাট স্থানীয় লোকেরা দখল করে নেয়।

    বিশ্বযুদ্ধের শুরু থেকে বিশ্বযুদ্ধের মাঝে সংঘটিত রুশ বিপ্লবের সময় অবধি ৭৪ লক্ষ মানুষের গণউচ্ছেদ হয়। এদের মধ্যে দশ লক্ষ মানুষকে দেশ থেকে বিতাড়ন করা হয়েছিল, আর বাকি প্রায় চৌষট্টি লক্ষ মানুষ ছিল রিফিউজি – নিজের দেশেই রিফিউজি!



    গণপ্রতিস্থাপনের আংশিক মানচিত্র - ১


    নূতন সোভিয়েত ইউনিয়নের উচ্ছেদের কাহিনী:

    বিপ্লব-পরবর্তী রাশিয়া এবং সোভিয়েত গঠনের পরবর্তীকালের গণউচ্ছেদগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় – শ্রেণিভিত্তিক, জাতিভিত্তিক এবং ধর্মমতভিত্তিক। এই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু জাতিভিত্তিক উচ্ছেদ, তবে সংক্ষেপে বলে দিই – শ্রেণিভিত্তিক উচ্ছেদের মূল শিকার ছিল কুলাক (স্বাধীন চাষী) ও কসাক (প্রভাবশালী স্থানীয় যোদ্ধাশ্রেণি) – এই দুই দল।

    ১৯১৯ থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি মূলত স্তালিনের উদ্যোগে এই উচ্ছেদগুলো হয়। ১৯২০-র দশকে কসাক উচ্ছেদ ও ১৯৩০-র দশকে কুলাক উচ্ছেদের দিকে জোর দেওয়া হয়েছিল। ১৯৩৫ থেকে জতিভিত্তিক উচ্ছেদ শুরু হয়। ফিন বা ফিনিশ জাতি দিয়ে শুরু।

    ‘ইঙ্গরিয়ান ফিন’রা বাস করত ফিনল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি। রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার জন্য সীমান্ত পরিষ্কার করার নাম করে এদের প্রায় ৩৫০০ পরিবারকে পাঠানো হয় তাজিকিস্তান, কাজাকস্তান ও পশ্চিম সাইবেরিয়ায়। প্রায় একই সময়ে, মার্চ ১৯৩৫ নাগাদ, ইউক্রেন থেকে হাজার দশেক পরিবারকে পাঠানো হয় কাজাকস্তানে, যার বেশিরভাগই ছিল পোল ও জার্মান। এরপর ১৩০০ জন কুর্দকে আর্মেনিয়া ও আজেরবাইজানের সীমান্ত অঞ্চলগুলো থেকে সরানো হয় কাজাকস্তান ও কিরগিজস্তানে।

    এরপর ১৯৩৭ সালে সাইবেরিয়ার পূর্ব দিক থেকে কোরিয়ানদের উচ্ছেদ শুরু হয়। একটা বড় সংখ্যক কোরিয়ান জনগোষ্ঠী এখানে উনবিংশ শতক থেকে বসবাস করছিল। এটা রুশ জমি ছিলও না, মূল রাশিয়া থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। প্রায় ১৬৭,০০০ কোরিয়ান এই অঞ্চলে বাস করত। এছাড়া কয়েক বছর আগে থেকে জাপান নিজের কোরিয়ান মানুষদের বিতাড়ন শুরু করে – যারা পূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের সাখালিন অঞ্চলে চলে আসে। প্রাভদা সংবাদপত্র, যেটি রুশ কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ছিল, সেখানে ২৩ এপ্রিল ১৯৩৭-র পত্রিকায় দাবি করা হয় – পূর্ব সাইবেরিয়ার চিনা ও কোরিয়ান মানুষেরা জাপানিদের চর। এটা একটা প্রোপাগান্ডা ছিল কোরিয়ানদের শত্রু হিসেবে দেখানোর। ২৫ অক্টোবর ১৯৩৭ তারিখে ১২৪টি ট্রেনে প্রায় ১৭০,০০০ মানুষকে কাজাকস্তান পাঠানো হয়। এদের প্রায় পুরোটাই কোরিয়ান, কিছু চিনাও ছিল।

    এই সবক’টি উচ্ছেদের ক্ষেত্রেই লক্ষণীয়, যে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা বা সীমান্ত সুরক্ষার অজুহাত দেওয়া হয়েছিল।

    সোভিয়েতের বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতি, উপজাতি ও আদিবাসীদের গণপ্রতিস্থাপনের ফলে, স্তালিনের আমলে প্রায় ষাট লক্ষ মানুষের গণউচ্ছেদ হয়েছিল। এই সংখ্যাটা বিশাল, কারণ এরা তুলনামূলক ভাবে ছোট ছোট জাতি, এবং এরা সংখ্যায় খুব বেশি ছিল না। অনেক ক্ষেত্রেই একেকটা জাতির প্রায় কুড়ি থেকে একশ’ শতাংশ মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল তাদের বাসভূমি থেকে। এই ষাট লক্ষ জাতিভিত্তিক উচ্ছেদ ছাড়াও আরো দেড় কোটি মানুষের শ্রেণিভিত্তিক উচ্ছেদ হয়।

    উচ্ছিন্ন জাতিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল – চেচেন ও ইঙ্গুশ (মোট পাঁচ লক্ষ), ইঙ্গ্রিয়ান ফিনিশ (চার লক্ষ), জাপানি ও কোরিয়ান (মোট ছয় লক্ষ), ইউক্রেনিয়ান (দুই লক্ষাধিক), তিনটি বাল্টিক জাতি (দুই লক্ষ), ক্রিমিয়ান তাতার (দুই লক্ষ), কাল্মিক (এক লক্ষ), আজেরি (এক লক্ষ), বিভিন্ন তুর্কি, তাতার, ককেশাস পার্বত্য জাতি, ইহুদি, বিভিন্ন ইউরোপীয় জাতি, ইত্যাদি।



    গণপ্রতিস্থাপনের আংশিক মানচিত্র - ২



    জাতিচরিত্রের পরিবর্তন আরেকরকম ভাবে:

    উচ্ছেদের পাশাপাশি আরেকটি প্রক্রিয়া একটা অঞ্চলের ডেমোগ্ৰাফি বদলায়। মানুষের আগমন বা আনয়ন। এছাড়া জন্ম ও মৃত্যুহারের তারতম্যও।

    কাজাকস্তানে কাজাকরা জনসংখ্যায় কমতে কমতে ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছিল। কারণ ছিল – সোভিয়েতের বিভিন্ন প্রান্তের অন্য জাতিদের বলপূর্বক আনয়ন বা স্বেচ্ছায় কর্মসূত্রে আগমন, যাযাবর কাজাকদের অপসারণ এবং দু’টি বড়মাপের মনুষ্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ।

    ডনবাস অঞ্চল, যার মধ্যে ডনেৎস্ক আর লুহানস্ক – এই দু’টি প্রদেশ আছে, যারা ইউক্রেন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এবং যাকে ঘিরে এখন (২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে) রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে, তার ইতিহাস দেখা যাক। এই ডনবাস অঞ্চল অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অবধি আংশিকভাবে ইউক্রেনিয়ান কসাকদের (Cossack Hetmanate) অধীনে ছিল আর আংশিকভাবে ক্রিমিয়ান তাতার খানেদের খানাতভুক্ত ছিল। রুশ সম্রাজ্ঞী ক্যাথরিনের আমলে এই অঞ্চল রুশদের দখলে আসে। শিল্প বিপ্লবের ফলে এই অঞ্চলের কয়লাখনিগুলোর দিকে রুশ নজর পড়ে ও রুশিকরণ শুরু হয়। ১৮৯৭ সালের রুশ সরকারি নথি অনুযায়ী, এখানকার জনসংখ্যার ৫২% স্থানীয় ইউক্রেনিয়ান আর ২৯% রুশ ছিল।

    সোভিয়েত যুগের তিনটি ঘটনা এই অঞ্চলের রুশিকরণকে আরো জোরদার করে। এক, ১৯৩২-৩৩ সালের হোলোডোমর দুর্ভিক্ষ যাতে ইউক্রেনিয়রা অনেক বেশিমাত্রায় মারা যায় রুশদের তুলনায় (কারণ ইউক্রেনিয়ানরা কৃষিকাজে বেশি যুক্ত ছিল আর স্বাধীন চাষীদের উপরে সোভিয়েত সরকারের কোপ বেশি পড়েছিল যেটাকে dekulakization বলা হয়)। দুই, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর পর এই অঞ্চলের পুনর্গঠনের জন্য বেশি বেশি করে রুশদের আনা শুরু হয় রাশিয়া থেকে। তিন, ১৯৫৮-৫৯ সালের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার যা স্কুলগুলো থেকে ইউক্রেনিয়ান ভাষা মুছে দেয় ও রুশ ভাষা চাপানো হয়।

    ২০০১ সালের ইউক্রেনিয়ান আদমশুমারি অনুযায়ী, ডনবাস অঞ্চলের ৬০ শতাংশের কাছাকাছি মানুষ জাতিগতভাবে ইউক্রেনিয়ান, ৪০ শতাংশের কাছাকাছি রুশ। কিন্তু ভাষাগতভাবে চিত্রটা উল্টো। প্রায় সত্তর শতাংশ মানুষ নিজেদের রুশভাষী হিসেবে পরিচয় দেয়।

    মোটকথা, ডনবাস অঞ্চলের রুশিকরণ – যা জারদের যুগে শুরু হয়েছে, আর সোভিয়েত আমলে আরো জোরদার ভাবে হয়েছে – সেটা একটা বড় কারণ ডনবাসের চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর রাশিয়ায় যোগদানের দাবির। অতীতের এই রুশিকরণকে কাজে লাগিয়েই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে।

    মোটকথা, কাজাকস্তান বা পূর্ব ইউক্রেনে উচ্ছেদের পাশাপাশি রুশদের আনয়ন বা আগমনের ফলেও জাতিচরিত্রের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মনে রাখতে হবে, যে রুশরা এইসব অঞ্চলে এসেছিল, তারাও অনেকেই শ্রেণিভিত্তিক উচ্ছেদের শিকার ছিল।

    উচ্ছেদের পর:

    উচ্ছিন্ন মানুষদের মৃত্যুহার স্বাভাবিকভাবেই অনেক অনেক বেশি ছিল। দশ থেকে পঁয়তাল্লিশ শতাংশ অবধি মৃত্যুহার ছিল। জাতিভিত্তিক গণউচ্ছেদের ফলে পাঁচ থেকে দশ লক্ষ মৃত্যু হয়েছিল। এর মধ্যে কোনো কোনোটিকে বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারি ভাবে গণহত্যার আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ক্রিমিয়ান তাতার, চেচেন ও ইঙ্গুশদের উচ্ছেদকে গণহত্যার আখ্যা দেওয়া হয়েছে ইউক্রেন, কানাডা, লিথুয়ানিয়া, লাটাভিয়া ও ইউরোপীয় সংসদের তরফ থেকে।

    স্তালিন-পরবর্তী যুগে এই ধরনের গণউচ্ছেদ বন্ধ হয়। কোনো কোনো জাতিকে তাদের মাতৃভূমিতে ফেরার সুযোগও দেওয়া হয়।

    প্রশ্ন আসে, এই উচ্ছেদগুলোর তথ্য কীভাবে বাইরের জগতের কাছে আসে, বিশেষ করে যেখানে উচ্ছিন্ন জাতিগুলোর মধ্যে শিক্ষার প্রসার, প্রচারমাধ্যমের অ্যাকসেস – সবই কম ছিল? আটের দশকের বিভিন্ন রাশিয়ান গবেষকদের গবেষণার মাধ্যমে এগুলো জনসমক্ষে আসে। কেন্দ্রীয় আর্কাইভে কম তথ্য থাকলেও বিভিন্ন আঞ্চলিক সরকারি আর্কাইভে এই বিষয়ে অনেক তথ্য নথিভুক্ত ছিল। এছাড়া সোভিয়েত সরকারেরই বিভিন্ন নথি – যেমন জনসংখ্যার পুরোনো রেকর্ড, আলাদা আলাদা সময়ের মানচিত্র – এগুলো অনেকটাই সাহায্য করে ইতিহাসের পুনর্গঠন করতে।

    এই উচ্ছেদগুলোর পিছনে উদ্দেশ্য কী ছিল? রাশিয়া তথা সোভিয়েতের, বিশেষ করে সাইবেরিয়া অঞ্চলের আয়তন তার জনসংখ্যার নিরিখে অনেক অনেক বড়। ঠান্ডার জন্য অনেক অংশই জনবিরল, কিন্তু কাঠের একটা বড় উৎস এই অঞ্চলগুলো। কাঠ উৎপাদনের জন্য এই অঞ্চলগুলোতে বসত তৈরির পরিকল্পনা ছিল, আর দরকার ছিল স্বল্পমূল্যের শ্রমের। কাঠ ব্যবহার করে তৈরি হতে শুরু করল রেললাইন – তার জন্যও সস্তায় শ্রমিক দরকার। কলকারখানার জন্যও দরকার শ্রমিক, তার জন্যেও স্বাধীন চাষীদের পরাধীন বানানো জরুরি ছিল। যে জাতিগুলোর কাছে চাষের জমি ছিল, তাদের জমির দিকে সরকারের নজর ছিল। এছাড়া প্রান্তিক ও সংখ্যালঘুদেরকে শোষণ করাও সহজ। এই জাতিগুলোর অনেকের কাছেই বড় রাষ্ট্রশক্তির সঙ্গে লড়বার মত প্রযুক্তি ও রসদ ছিল না।

    এছাড়া অন্যান্য অজুহাতের মধ্যে ছিল – এই জাতিগুলোর রেড আর্মিতে যোগ না দেওয়ার অভিযোগ (যদিও অনেক রেড আর্মির সদস্য বা তাদের পরিবারেরা বাস্তুহারা হয়েছিল), সীমান্ত খালি করা দেশের নিরাপত্তার জন্য, উচ্ছেদের ফলে খালি হয়ে যাওয়া জায়গাগুলোর পুনর্জনবসতিকরণ, দেশদ্রোহিতার অভিযোগ, স্বাধীন চাষীরা রপ্তানি অতিরিক্ত মাত্রায় করে – এরকম অভিযোগ। স্তালিনের ভয় ছিল, যে প্রান্তিক জাতিগুলি আক্রমণকারী অন্য দেশগুলিকে, যেমন জার্মানি বা জাপানকে, সাহায্য করতে পারে।

    আবার এই উচ্ছিন্ন জাতিগুলোর অনেকেই নিকট অতীতে অন্য প্রতিবেশী জাতিদের শোষণ করেছে – সেটা অস্বীকার করা যায় না, যেমন ক্রিমিয়ান তাতারদের শাসকগোষ্ঠী অর্থাৎ খানেরা ক্রীতদাস ব্যবসায়ে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিল।

    ক্রিমিয়ান তাতারদের মধ্যে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন আমেত খান সুলতান। সোভিয়েত বিমানবাহিনীর একজন ডেকোরেটেড বিমান যোদ্ধা ছিলেন, সোভিয়েতের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান দু’বার পেয়েছেন। কিন্তু তাতে কী! তাতারদের উৎখাতের সময় তাঁর পরিবারকেও ছাড় দেয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা। আমেত খানের মা তাতার, বাবা দাগেস্তানি মুসলিম ছিলেন। শেষ অবধি দাগেস্তানি বংশপরিচয়ের উপর ভিত্তি করে আমেত খান ও তাঁর বাবা-মা কে ছাড় দেওয়া হয়। যাই হোক, আমেত খান নিজেকে তাতার বলেই পরিচয় দিতেন। রাজনৈতিক ভাবে ক্রিমিয়ান তাতারদের পুনর্বাসনের সপক্ষে লড়াই করেছেন, নিজের পাসপোর্টে নিজের ন্যাশনালিটি ক্রিমিয়ান তাতারই লিখে গেছেন চিরদিন, অনেক পারিপার্শ্বিক চাপ থাকা সত্ত্বেও। তাঁর মৃত্যুর পর সোভিয়েত সরকার বরাবরই চেষ্টা করেছে তাঁর স্মৃতির বি-তাতারীকরণ করার। তাঁকে একাধিক জায়গায় দাগেস্তানি হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। তার উদ্দেশ্য একটাই – আমেত খানের স্মৃতির বি-তাতারীকরণের মাধ্যমে ক্রিমিয়ার ইতিহাসের বি-তাতারীকরণ করা, যেন তাতাররা ক্রিমিয়ার কেউ ছিলই না!

    স্তালিন-পরবর্তী যুগে এই উৎখাতক্রিয়া বন্ধ হলেও, সবাই নিজের স্বভূমিতে ফেরার সুযোগ পায়নি। যেমন মেসকেটিয়ান তুর্কদের মেসকেটিয়ায় ফেরার সুযোগ দেওয়া হয়নি, তাদের আজেরবাইজানি বলে চিহ্নিত করে আজেরবাইজানের এক প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাল্মিকরা অনেকাংশেই ফিরেছে কিন্তু আবার নূতন করে গড়ে তুলতে হয়েছে তাদের বৌদ্ধ শিল্প-সংস্কৃতি। ক্রিমিয়ান তাতাররা আংশিকভাবে ফিরেছে, কিন্তু ফিরেছে নিজের মাটিতে সংখ্যালঘু হয়ে।




    তথ্যসূত্র:

    ১. Against Their Will: The History and Geography of Forced Migrations in the USSR, by Pavel M. Polian (এটি একটি রুশ বইএর অনুবাদ - অনেক খুঁটিনাটি বিশদ এখানে আছে)

    ২. এই উচ্ছেদগুলোর বিষয়ে নিজস্ব উইকি পেজগুলি, বিশেষ করে -
    ক) Population transfer in the Soviet Union
    খ) Historical background of the 2014 pro-Russian unrest in Ukraine




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০১ মার্চ ২০২২ | ৫৮৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • &/ | 151.141.85.8 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৩৮504569
  • পাপ আবার কী? নিয়েৎশে না কে যেন বলেই দিয়েছিল, 'আমার জোর আছে, বুদ্ধি আছে, যোগ্যতা আছে, ইত্যাদি আরও অনেক কিছু আছে, আমি যত আপদ বান্দর খ্যাদাইয়া মুল্লুক দখল করি। এইভাবেই যোগ্যতমের উদ্বর্তন ঘটে। ' মানে ঠিক এই কথা না, তবে ভাবখান এই। ঃ-)
  • &/ | 151.141.85.8 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৪১504570
  • আগে তো রীতিমতন ঢাকঢোল পিটিয়ে দিগ্বিজয়ে বের হত চেঙ্গিজ টেঙ্গিজ রা, তৈমুর টৈমুররা। পথে সব ঘ্যাঁচাং ফু করতে করতে।
  • &/ | 151.141.85.8 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৪২504571
  • এইসব দিগ্বিজয় ইত্যাঃ তখন ছিল বড় বড় রাজার ক্ষাত্রধর্ম পালন।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:e08b:d433:af2a:cb77 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৪৩504572
  • এই অর্থে সারভাইভ্যাল অফ ফিটেস্ট বললে আর রাশিয়াকে নিয়ে এত কথা কিসের? সেক্ষেত্রে তো আমি বলব ভারতীয় হিসেবে রাশিয়া আমার কোন ক্ষতি করেনি, ইউরোপীয়রা করেছে। অতএব আমার সারভাইভ্যাল ভেবে আমি রাশিয়ার পক্ষে ও ইউরোপের বিপক্ষে দাঁড়াব।
  • S | 2605:6400:30:fa92:5f11:1ed9:9615:fcc6 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৪৫504573
  • ইয়োরোপেও নিজেদের মধ্যে কয়েক সহশ্রাব্দি ধরে মারামারি করে গেছে। পরে ইয়োরোপ সেই নৃসংশতা কয়েক্গুন বাড়িয়ে বাকী প্রায় প্রত্যেকটা মহাদেশে এক্সপোর্ট করেছে।

    আর ঐতো জাপানীরাও খুব নৃশংস ছিলো, ইনকারা এই করতো, আফ্রিকানরা যুদ্ধ করতো, ইন্ডিয়াতে কাস্ট সিস্টেম মারাত্মক এগুলো সবই ওয়েস্টের কুকীর্তির লেজিটিমেসি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। আগে যেমন বলতো যে নেটিভদের সভ্য করতেই নাকি কলোনিয়ালিজমের চাষ। কালোদের দাস করে না রাখলে ওরা নাকি খুব লেজী, কাজ করবে না। এখনও এগুলো ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন প্রকারে। যেমন মধ্যপ্রাচ্যে তেলের লোভে ন্যাটোর যুদ্ধ লেজিটিমেট করা হয় ওরা মহিলাদের সন্মান দেয়্না এইসব দেখিয়ে। এগুলো জাস্ট অজুহাত, আছিলা।
  • dc | 122.161.222.219 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৪৭504574
  • আর রোমানরাও মনে হয় প্রচুর লোক মেরেছিল। ইজিপশিয়ানরাও। 
  • s | 100.36.157.137 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৫৩504575
  • হ্যাঁ, হিংস্রতার তুলনা করলে কেউ কারোর চেয়ে কম বা বেশী নয়। জাপান শুনলেই পিক্চার পোস্টকার্ডের মত পাহাড়, বাগান, চেরি ব্লসম এই সব মনে হয়। কিন্তু জাপান কোরিয়ার সাথে যে অ্যাট্রসিটি চালিয়েছে, সেসব পুরোটা শোনা বা পড়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। পাকিস্তান - বাংলাদেশ, হুটু আর টুটসি, টার্কি-আর্মেনিয়া, ভিয়েত্কং আর কিছুদিন আগেও আইসিসের কার্যকলাপ ইয়েজিদি কমিউনিটির সাথে ইউরোপকে বেশ কয়েক গোল দিতে পারে।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:e08b:d433:af2a:cb77 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৫৬504576
  • শাসক সর্বত্রই নৃশংস। কিন্তু ইউরোপ সেই নৃশংসতা সারা পৃথিবী জুড়ে করেছে, সাথে লুটতরাজ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পুরোপুরি ধ্বংস।
     
    অন্যরা যা করেছে সেটা লোকালাইজড। এখন যদি বলেন নৃশংসতা লোকালাইজড কিনা ম্যাটার করেনা। ও সবই সমান। তাহলে আমার দিক থেকে আর কোন কথা নেই।
  • s | 100.36.157.137 | ০৩ মার্চ ২০২২ ২৩:৫৯504577
  • "এই অর্থে সারভাইভ্যাল অফ ফিটেস্ট বললে আর রাশিয়াকে নিয়ে এত কথা কিসের? সেক্ষেত্রে তো আমি বলব ভারতীয় হিসেবে রাশিয়া আমার কোন ক্ষতি করেনি, ইউরোপীয়রা করেছে। অতএব আমার সারভাইভ্যাল ভেবে আমি রাশিয়ার পক্ষে ও ইউরোপের বিপক্ষে দাঁড়াব।"
    হুম, তাহলে এই যুক্তি অনুসারে সব ইউরোপীয়ান আর আমেরিকা কনাডার নাগরিকেরা রাশিয়ার বিপক্ষে আর ইউরোপের পক্ষে। চলুক যুদ্ধ।
  • s | 100.36.157.137 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:০৪504578
  • আমার কাছে নৃসংশতা লোকাল না গ্লোবাল ম্যাটার করে না। নম্বর তাও একটা মাপকাঠি হতে পরে, মানে দশজন মরল না এক হাজার মরল। যত বেশী মৃত্যু আর আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি, তত ভয়াবহ।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:e08b:d433:af2a:cb77 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:১২504579
  • এটাই পয়েন্ট। যুক্তির এই ধারাটাকে বলে রিডাকশন টু অ্যাবসার্ড। অর্থাৎ সারভাইভ্যাল অফ দি ফিটেস্টের আইডিয়া এখানে খাটে না।
     
    "হুম, তাহলে এই যুক্তি অনুসারে সব ইউরোপীয়ান আর আমেরিকা কনাডার নাগরিকেরা রাশিয়ার বিপক্ষে আর ইউরোপের পক্ষে। চলুক যুদ্ধ।"
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:e08b:d433:af2a:cb77 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:১৬504580
  • সেটা ধরলে তো পশ্চিমের পাপ হয়তো অনেক বেশিই হবে। তবে সংখ্যা এস্টিমেট করাটা সহজ নয় বলেই গ্লোবাল ইমপ্যাক্ট প্রক্সি হিসেবে নিয়েছি।
     
    • s | 100.36.157.137 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:০৪504578
    • আমার কাছে নৃসংশতা লোকাল না গ্লোবাল ম্যাটার করে না। নম্বর তাও একটা মাপকাঠি হতে পরে, মানে দশজন মরল না এক হাজার মরল। যত বেশী মৃত্যু আর আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি, তত ভয়াবহ।
  • S | 2605:6400:30:fa92:5f11:1ed9:9615:fcc6 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:২১504581
  • দুটো বোমা ধরে হিসাব শুরু করুন।
  • S | 51.75.161.78 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৪২504583
  • বেঙ্গল ফেমিন কি ধরা হবে?
  • বুশ | 104.148.30.74 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৪৩504584
  • দেখুন ইরাক আফগানিস্তান ধরে মোটে 493,500। যেখানে বাংলায় মারাঠা আক্রমনে 400,000। ফলে বুশকে বাদ দিন।
     
    চীনকে ধরেছেন? এই দেখুন Taiping Rebellion (28,284,271), Transition from Ming to Qing (25,000,000)।
     
    উদিকে আর্মেনিয়ান জেনোসাইড বাদ দেবেন না। চটপট ফয়সালা করে ফেলুন।
  • ফেমিন | 104.148.30.74 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৪৫504585
  • All famines in India under British influence 24,750,000
  • ওনলি বেঙ্গল ফেমিন | 104.148.30.74 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৪৭504586
  • 10,000,000
  • নন্দীগ্রাম | 104.148.30.74 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৪৯504587
  • নন্দীগ্রাম ধরেছেন? ১৪ জন।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:e08b:d433:af2a:cb77 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৫৪504588
  • এই সব এস্টিমেটগুলোই কোশ্চেনেবল। ধরুন বাংলার তাঁত শিল্প ধ্বংস করার ফলে লোকের জীবিকার উপর যে এফেক্ট, এবং তার জন্য মৃত্যু। সেটা এস্টিমেটে নেই, থাকা খুব মুশকিলও। ইরাক যুদ্ধ, আফগানিস্তান এই সবের ক্ষেত্রেই কথাটা খাটে।
     
     
  • ভুলভাল লিস্ট | 94.140.114.174 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৫৫504589
  • জেনোসাইড লিস্টে আমেরিকা কই? লিস্টের ওপরের দিকে জার্মান, সোভিয়েত, কম্বোডিয়া, রাশিয়া, ওটোমান। বাজে লিস্ট।
  • S | 2605:6400:30:fb03:b137:4c52:b2b1:2c98 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৫৫504590
  • সিরিয়াসলি? লাশের হিসাব হচ্ছে?
  • আছে রে বাপু | 162.218.229.82 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৫৭504591
  • European colonization of the Americas (34,047,026)
  • S | 2605:6400:30:fb03:b137:4c52:b2b1:2c98 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০০:৫৯504592
  • যাহ জিতে গেছে!!!!
  • বেশ | 162.218.229.82 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০১:০০504593
  • পলিটিশিয়ান যদি লাশের হিসেব ছেড়ে জনজীবনে প্রভাব দেখতে চান, তবে দেখুন ইউরোপীয়রা মেরেছে, আবার রেলও বসিয়েছে। হুটু-টুটসিদের মধ্যে খুনোখুনি ছাড়া কিচু উবগার হয়েচে কি? অর্থাৎ বেনিফিট ইউরোপীয়দের দিকে।
  • তালিবান | 162.218.229.82 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০১:০২504594
  • আম্রিগা আফগানিস্তানে গেল, ওখানকার মেয়েরা রাস্তায় বেরোতে পারল। তালিবানদের দেখুন। খারাপ সবাই, তবে কেউ কেউ সুদুই জানোয়ার।
  • S | 2605:6400:30:fb03:b137:4c52:b2b1:2c98 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০১:১০504595
  • উইকি থেকেঃ ১৮২০তে ইন্ডিয়ার জিডিপি গ্লোবাল জিডিপির ১৬%। ইয়োরোপিয়ানরা এলো। ১৯৪০এ ৬%।

    আর ঐ রেলের গুল্পটার জন্যই শশী থারুরের লেকচারটা শুনতে হবে। বহু দেশ আছে যেগুলো কলোনী হয়নি, কিন্তু রেল আছে।
  • আরে | 162.218.229.82 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০১:২১504596
  • রেল পছন্দ না হলে পেলেন ধরুন। যন্ত্রপাতি, টেকনলজি, ল অ্যান্ড অর্ডার, সতীদাহ রদ।
     
    শশী থারুর পন্ডিত মানুষ। কিন্তু ভারত শিল্পবিপ্লবের বাসটা মিস করে গেছিল, কারন ব্রিটিশরা বাসের তলায় ফেলে দিয়েছিল, ও নেহাতই বাজে কথা। জিডিপির গুল্প বিস্তারিত পড়ুন গুরুরই একটা লেখায়ঃ https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=19063
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:e08b:d433:af2a:cb77 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০১:২৩504597
  • জনজীবনে প্রভাবেও লাশের হিসেব আসে। একটা পিপলের লাইভলিহুড ধ্বংস করলে তাতে লাশের হিসেব আসে বৈকি। আবার ধরুন চীনের সাথে আফিম যুদ্ধ। সেটায় সরাসরি যত লোক করেছিল তার চেয়ে বেশী লোক মরেছিল ইন্ডাইরেক্টলি।
     
    রেলের কথাটা নিয়ে শশী থারুরের ভিডিওটা দেখে নিন। টেকনোলজি যদি বলেন তো ভারত থেকে ডেসিম্যাল সিস্টেম আরব হয়ে ইউরোপে গিয়েছিল। বারুদ কাগজ এসব চীন থেকে গিয়েছিল। টেকনোলজি বলে কলোনিয়ালিজমের ইভিল জাস্টিফাই করা যায় না।
     
    লিখতে লিখতে মাথায় এল। কম্পিউটার এসেছে স্বাধীন ভারতে। ইন ফ্যাক্ট সোভিয়েত থেকে। তার জন্য কলোনি দরকার হয়নি।
  • আসলে | 169.197.143.22 | ০৪ মার্চ ২০২২ ০১:২৪504598
  • ওরাও মিসাইল ছোড়ে, আমরাও অগ্নিবান ছুঁড়ি। পার্থক্য হল ওরা অঙ্ক কষে ছোড়ে, আমরা নারকোল ফাটিয়ে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন